নবম দশম-বাংলা প্রথম-বঙ্গবাণী সাজেশন

এসএসসি বাংলা প্রথম পত্র

বঙ্গবাণী

আবদুল হাকিম [১৬২০১৬৯০]

পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়াদি

কবি সম্পর্কিত তথ্য

জন্ম :  আনুমানিক ১৬২০ সালে সন্দ্বীপের সুধারামপুর গ্রামে আবদুল হাকিম জন্মগ্রহণ করেন।

মৃত্যু : ১৬৯০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

সাহিত্যিক পরিচয়: তাঁর লেখায় মাতৃভাষার প্রতি যে গভীর মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে তা মধ্যযুগীয় প্রেক্ষাপটে এক বিরল দৃষ্টান্ত। তাঁর কবিতায় অনুপম ব্যক্তিত্বের পরিচয় মেলে।

উল্লেখযোগ্য রচনা কাব্যগ্রন্থ: নূরনামা, ইউসুফ জোলেখা, লালমতি, সয়ফুলমুলুক, শিহাবুদ্দিননামা, নসীহনামা, কারবালা ও শহরনামা।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

কবিতা সম্পর্কিত তথ্য উৎস পরিচিতি: কবিতাটি আবদুল হাকিমের ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এ কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে।

মূলবক্তব্য: মধ্যযুগীয় পরিবেশে বঙ্গভাষী ও বঙ্গভাষার প্রতি বলিষ্ঠ বাণীবদ্ধই এ কবিতার দুর্লভ নিদর্শন। এ কবিতায় কবি মাতৃভাষা তথা বাংলা ভাষার প্রতি তার উপলব্দি ব্যক্ত করেছেন। সাধারণ মানুষের সাথে ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে মাতৃভাষাই সবচেয়ে উপযোগী। তাই তো কবি মাতৃভাষায়ই গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেছেন। তবে আরবি, ফারসি ভাষার প্রতি কবির কোনো বিদ্বেষ নেই। কেননা এ ভাষাতেই আল্লাহ ও মহানবির স্তূতি করা হয়েছে। কিন্তু স্রষ্টাকে ডাকার ক্ষেত্রে কোনো ভাষাগত সীমাবদ্ধতা নেই, কেননা সব ভাষাই তার বোধগম্য। কবিতার শেষাংশে কবি এই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে যাদের মনে স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি কোনো অনুরাগ নেই তাদের দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিত।

নামকরণ: এ কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে বলে এর নাম বঙ্গবাণী।

ভাষা  ছন্দঃ এটি মধ্যযুগীয় বাংলা ভাষা ও পয়ার ছন্দে রচিত।

কবিতাটির বিষয়বস্তুর খুঁটিনাটি : ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে- ভাষাপ্রেম, মাতৃভাষাকে নিয়ে কবির মনোভাব। তারাই বাংলা ভাষাকে হিন্দুর অক্ষর মনে করে যাদের মারফত জ্ঞান নেই। কবি দেশ ত্যাগ করতে বলেছেন- যারা মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। আরবি-ফারসি ভাষায় আল্লাহ ও মহানবির স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে। জনসাধারণের সাথে ভাব বিনিময়ের একমাত্র পন্থা মাতৃভাষায় কথা বলা বা লেখা । কবি বংশ ও জন্মপরিচয় সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তাদের প্রতি যাদের স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি অনুরাগ নেই। মধ্যযুগীয় পরিবেশে মাতৃভাষার প্রতি আবদুল হাকিমের গভীর ভালোবাসার নিদর্শন ইতিহাসে বিরল এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কালজয়ী আদর্শ।

১. মাতৃভূমি মাতৃভাষার সাথে নিবিড় সম্পর্কের স্বরূপ: মাতৃভাষাই ভাব প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। মাতৃভাষা বাংলায় বর্ণিত বক্তব্য সহজেই আমাদের মনকে স্পর্শ করে। এ ভাষায় আমাদের প্রাণের প্রবাহ গতিশীল। এ ভাষাতেই আমরা স্বপ্ন সাজাই, কাব্য লিখি। তাই মাতৃভাষা বাংলাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই আমাদের অন্য ভাষার প্রতি আন্তরিক হওয়া উচিত। কারণ যে ভাষা জনগণের বোধগম্য নয়, সে ভাষায় ভাব বিনিময় করা সম্ভব নয়। এ কবিতায় মাতৃভাষার সাথে আমাদের নিবিড় সম্পর্কের গুরুত্ব উপলদ্ধি করে এ বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন কবি।

২. মাতৃভাষার প্রতি কবির মমত্ববোধের পরিচয়: ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল কবি নিজ ভাষাতেই সাহিত্য রচনার পক্ষপাতী। তিনি মনে করেন, মানুষ নিজ ভাষায় স্রষ্টাকে ডাকলেও স্রষ্টা তা শুনতে পান। তার মতে, বংশানুক্রমে এদেশে আমাদের বসতি, এদেশের ভাষায় বর্ণিত বক্তব্য আমাদের মনকে স্পর্শ করে। সুতরাং এ ভাষার চেয়ে হিতকর আর কিছু হতে পারে না। এভাবে কবিতায় নিজ দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি কবির গভীর মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধাশীল মনােভাব প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩. মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের প্রতি কবির মনোভাব: ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি তাঁর গভীর উপলব্ধি ও বিশ্বাসের কথা নির্দ্বিধায় ব্যক্ত করেছেন। বিদেশি ভাষার প্রতি কোনো বিদ্বেষ নেই তার। কিন্তু মাতৃভাষার মাধ্যমে আমাদের বক্তব্য প্রাণ পায় বলে কবি এ ভাষাতেই তার মনের সকল ভাব প্রকাশ করতে চান। তাই যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে তাদের বংশ ও জন্ম পরিচয় সম্পর্কে কবির মনে সন্দেহ জাগে। স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি তাদের এমন বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দেখে আক্ষেপ জাগে তার মনে। এ কারণেই বাংলা ভাষা অবজ্ঞাকারীদের দেশ ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবার আদেশ করেন তিনি।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন–১. আবদুল হাকিমের গ্রামের নাম কী?

উত্তর: আবদুল হাকিমের গ্রামের নাম সুধারামপুর।

প্রশ্ন–২. সর্ববাক্য বুঝতে পারেন কে?

ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

উত্তর: সর্ববাক্য বুঝতে পারেন প্রভু।

প্রশ্ন–৩. ‘নূরনামা‘ কাব্যগ্রন্থটি কে রচনা করেছেন?

উত্তর: ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থটি আবদুল হাকিম রচনা করেছেন।

প্রশ্ন–৪. কবি কাদের অনুরোধে বাংলা কাব্য রচনা করেন?

উত্তর: যারা কিতাব পড়তে জানে না তাদের অনুরোধে কবি বাংলা কাব্য রচনা করেন।

প্রশ্ন-৫. কোন ভাষার ব্যাপারে কবির দ্বিমত নেই?

উত্তর: আরবি, ফারসি, হিন্দি ভাষার ব্যাপারে কবির দ্বিমত নেই।

প্রশ্ন–৬. কবি কাদের দেশ ত্যাগ করতে বলেছেন?

উত্তর: যাদের মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ নেই কবি তাদের দেশ ত্যাগ করতে বলেছেন।

প্রশ্ন–৭. ‘বঙ্গবাণী‘ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: ‘বঙ্গবাণী’ শব্দের অর্থ বাংলা ভাষা।

প্রশ্ন–৮. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় কী প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর: ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন–৯. কবি কোন ভাষায় গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেছেন?

উত্তর: কবি মাতৃভাষায় গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেছেন।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন–১. কবি বাংলায় কাব্য রচনার পক্ষে কী যুক্তি দিয়েছেন?

উত্তর: বাংলাভাষী মানুষের জন্য বাংলায় গ্রন্থ রচনাই উত্তম বলে কবি মনে করেন। সাহিত্য রচনা করে লেখক সাধারণ মানুষের সাথে নিজ মনের সংযোগ ঘটান। যদি সাহিত্য রচনার ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য না হয় তবে এ সংযোগ সম্ভব হয় না। কবির মতে, সাধারণ মানুষের জন্য মাতৃভাষায়। রচিত কাব্যই সবচেয়ে উপযোগী। এ কারণই তিনি মাতৃভাষা তথা বাংলায় কাব্য রচনা করায় মনোনিবেশ করেছেন।

প্রশ্ন–২. বাংলা ভাষা বিদ্বেষীদের কবি কী উপদেশ দিয়েছেন?

উত্তর: কবি বাংলা ভাষা বিদ্বেষীদের দেশ ত্যাগ করার উপদেশ দিয়েছেন। অনেক মানুষই আছে যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে অথচ বাংলা ভাষার প্রতি তাদের কোনো মমতা নেই। এদের বংশ ও জন্মপরিচয় সম্পর্কে কবির মনে সন্দেহ জাগে। এসব মাতৃভাষাবিদ্বেষীদের প্রতি কবির প্রচণ্ড ক্ষোভ। তাই তিনি সখেদে বলেছেন, এসব মানুষের নিজ দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত।

প্রশ্ন–৩. ‘দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে  জুয়ায়’ কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: উক্ত চরণে স্বভাষার প্রতি উদাসীন ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে। মাতৃভাষা মাত্রই সকলের কাছে প্রিয় ও আপন। এ ভাষাতেই তারা মনের সকল আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ করে। কিন্তু এমন কিছু মানুষও আছে যারা মাতৃভাষাকে হেয় জ্ঞান করে। মাতৃভাষার মিষ্টতায় যাদের মন ভরে না তারা শিকড়হীন পরগাছার মতো।

প্রশ্ন–৪. ‘আরবি ফারসি হিন্দে নাই দুই মত‘— বুঝিয়ে লেখো।

উত্তর: কবি মাতৃভাষা ব্যবহারের পক্ষপাতী হলেও আরবি-ফারসি ব্যবহারেও তার কোনো দ্বিমত নেই। কবি সকল ভাষার ঊর্ধ্বে মাতৃভাষাকেই স্থান দিয়েছেন। তাই বলে আরবি-ফারসি ভাষার প্রতি তার কোনো বিদ্বেষ নেই। আল্লাহ ও মহানবির স্তুতি বর্ণনায় এ সকল ভাষার ব্যবহারকে তিনি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন।

প্রশ্ন–৫. ‘মারফত ভেদে যার নাহিক গমন। হিন্দুর অক্ষরে হিংসে সে সবের গণ’- ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞানহীন মানুষেরাই বাংলাকে হিন্দুদের ভাষা বলে কটাক্ষ করে। বাংলাদেশি বা বাঙালিদের কাছে বাংলা ভাষা খুবই আপন ও প্রিয়। ব্যক্তি হিন্দু বা মুসলিম যাইহোক না কেন মাতৃভাষাই তার অনুভূতি প্রকাশের উত্তম পন্থা। কিন্তু একদল ধর্মীয় জ্ঞানহীন সংকীর্ণমনা মানুষ মনে করে। মুসলিমদের আরবি ফারসি ভাষা ব্যবহার করাই উচিত। তাদের ধারণা বাংলা একটি হিন্দুয়ানি ভাষা। ধর্ম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকলে তাদের এ ধারণা হতো না।

ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন–৬. কবির কাব্য রচনার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কবি সাধারণ মানুষকে সাহিত্য পাঠের সুযোগ করে দেয়ার জন্য কাব্য রচনা করেছেন। যে ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য নয়, সে ভাষায় সাহিত্য রচনা করলে তা তারা বুঝতে পারে না। ফলে তারা সাহিত্য পাঠের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। তৎকালীন সময়ে আরবি ফারসি ভাষায় পুস্তক রচিত হতো বলে তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারত না। কবি এ সকল সাধারণ মানুষের জন্য মাতৃভাষায় কাব্য রচনা করছেন যাতে তারাও সাহিত্য পাঠ করতে পারে।

প্রশ্ন–৭. “কিতাৰ পড়িতে যার নাহিক অভ্যাস‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: তৎকালীন সময়ে আরবি-ফারসি ভাষায় সাহিত্য রচিত বলে সাধারণ মানুষের মাঝে সাহিত্য পাঠের অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। কবির সময়কালে সাহিত্য রচিত হতো আরবি-ফারসি ভাষায় অথচ অধিকাংশ সাধারণ মানুষ একমাত্র বাংলা ভাষাই বুঝতে পারত। ফলে তারা সাহিত্য পাঠ করতে পারত না। এ কারণেই তাদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি।

* তথ্যকণিকা *

১. আবদুল হাকিম জন্মগ্রহণ করেন – ১৬২০ সালে।

২. আবদুল হাকিমের জন্মস্থান- সন্দ্বীপের সুধারামপুর গ্রামে।

৩. আবদুল হাকিম ছিলেন- মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান কবি।

৪. আবদুল হাকিমের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ- ‘নূরনামা’।

৫. আবদুল হাকিম রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ : ‘ইউসুফ জোলেখা‘, ‘লালমতি’, ‘কারবালা’, ‘শহরনামা’ প্রভৃতি।

৬. আবদুল হাকিমের কবিতায় পরিচয় মেলে— অনুপম ব্যক্তিত্বের।

৭. স্বদেশের ও স্বভাষার প্রতি অটুট ও অপরিসীম প্রেম ছিল- আবদুল হাকিমের।

৮, মাতৃভাষার প্রতি আবদুল হাকিমের গভীর ভালোবাসার নিদর্শন— ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত।

৯. আবদুল হাকিমের মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা – পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কালজয়ী আদর্শ।

১০. আবদুল হাকিম মৃত্যুবরণ করেন- ১৬৯০ সালে।

১১. কবির কাছে মনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে-যাদের কিতাব পড়ার অভ্যাস নেই।

১২. কবি নিজেকে নিবেদিত করেন-বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় ।

১৩. কবি সবাইকে সন্তুষ্ট করেন-নিজের পরিশ্রমে।

১৪. কবির বিদ্বেষ নেই— আরবি ফারসি ভাষার প্রতি।

১৫. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়- দেশি ভাষা বুঝতে গিয়ে।

১৬. আরবি ও ফারসি ভাষায় লিখিত হয় – আল্লাহ ও নবির ছিফত।

১৭. হিন্দুর অক্ষর বলে বাংলাকে হিংসা করে – যাদের মারফত জ্ঞান নেই।

১৮. যারা বঙ্গে জন্মে বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করে কবি তাদের – জন্মপরিচয় সম্পর্কে সন্দিহান।

১৯. দেশি ভাষা ও বিদ্যায় যাদের মন জুড়ায় না তাদেরকে কবি – দেশত্যাগ করতে বলেছেন।

২০. কবি হিতকর বলে বিবেচনা করেছেন – মাতৃভাষাকে।

২১. ‘হাবিলাষ’ শব্দের অর্থ – অভিলাষ বা প্রবল ইচ্ছা।

২২. ‘ছিফত’ শব্দের অর্থ – গুণ।

২৩. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি রচিত হয় – সপ্তদশ শতকে।

২৪. ‘ভাগ’ শব্দের অর্থ  – ভাগ্য।

২৫. আল্লাহকে সম্যকভাবে জানার জন্য সাধনাকে বলা হয় – মারফত।

২৬. ‘নিরঞ্জন’ শব্দের অর্থ – নির্মল । (আল্লাহ)।

২৭. ‘নিরঞ্জন’ শব্দটি বঙ্গবাণী’ কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে – সৃষ্টিকর্তা’ অর্থে।

২৮. ‘জুয়ায়’ শব্দের অর্থ – জোগায়।

২৯. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবির ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে – শিকড়হীন পরগাছা স্বভাবের লোকদের প্রতি।

৩০. ‘আপে’ শব্দের অর্থ – স্বয়ং।

৩১. মধ্যযুগীয় পরিবেশে বঙ্গভাষী ও বঙ্গভাষার প্রতি বলিষ্ঠ বাণীবদ্ধ কবিতার নিদর্শন – ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা।

৩২. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে – কবির গভীর উপলদ্ধি ও বিশ্বাস।

ICT চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩৩. আল্লাহ ও নবির স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে – আরবি ফারসি ভাষায়।

৩৪. কবি শ্রদ্ধাশীল – আরবি ফারসি ভাষার প্রতি।

৩৫. কবি গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেছেন – মাতৃভাষায়।

৩৬. মাতৃভাষার প্রতি যাদের অনুরাগ নেই কবি তাদের – অন্য দেশে চলে যেতে বলেছেন।

৩৭. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি সংকলিত হয়েছে – ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে।

৩৮. মানুষ স্রষ্টাকে ডাকে – নিজ ভাষায়।

৩৯. সৃষ্টিকর্তা বুঝতে পারেন – সকল ভাষা।

৪০. বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে যাদের বাংলা ভাষার প্রতি মমতা নেই কবি তাদের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন – তাদের বংশ ও জন্ম নিয়ে।

গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতার শেষ চরণ কোনটি?

ক. দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

খ. নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশে ন যায়

গ. বঙ্গদেশী বাণী কিবা যত ইতি বাণী

ঘ. সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি

উত্তর: ক. দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

২. ‘সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় না জানি‘- কবি আব্দুল হাকিম কাদের সম্পর্কে  উক্তি করেছেন?

ক. নিজ দেশ ত্যাগ করে যারা বিদেশ যায়

খ. বাংলাদেশে যারা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করে

গ. দেশি ভাষায় বিদ্যা লাভ করে যে তৃপ্ত নয়

ঘ. যারা বাংলাকে হিন্দুয়ানী ভাষা বলে মনে করে

উত্তর: খ. বাংলাদেশে যারা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করে

উদ্দীপকটি পড়ে ৩  ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ায় বাবা খুশি হয়ে রেডিওতে গান শোনার জন্য সিফাতকে একটি মোবাইল সেট কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুদিন বাদেই সে মন খারাপ করে সেটটা বাবাকে ফেরত দিল। কারন FM চ্যানেলগুলোতে নাকি উপস্থাপকরা বাংলা ভাষাকে ইচ্ছেমতো বিকৃত করে উচ্চারণ করে আর ইংরেজি ভাষার প্রতি গভীর অনুরাগ দেখায়। সিফাতের এটা ভালো লাগে না।

৩. সিফাতের মন খারাপ করার মধ্য দিয়ে ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় আব্দুল হাকিমের যে অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো

i. মাতৃভাষাপ্রীতি

ii. বাংলা ভাষাপ্রীতি

iii. ইংরেজি বিদ্বেষ

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii খ. i ও iii

গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

উক্ত অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে কোন চরণে?

ক. দেশি ভাষে বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ

খ. সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন

গ. দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

ঘ. বঙ্গদেশী বাক্য কিবা যত ইতি বাণী

উত্তর: গ. দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

আবদুল হাকিম কোন শতকের কবি?

ক. পঞ্চদশ                                          খ. সপ্তদশ

গ. ষষ্ঠদশ                                            ঘ. অষ্টাদশ

উত্তর: খ. সপ্তদশ

আবদুল হাকিম কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

ক. ১৫২০ সালে                                   খ. ১৬২০ সালে

গ. ১৭২০ সালে                                   ঘ.১৮২০ সালে

উত্তর: খ. ১৬২০ সালে

আবদুল হাকিম কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

ক. সন্দ্বীপের সুধারামপুর গ্রামে

খ. বর্ধমান জেলার আসানসোল গ্রামে  

গ. পিরোজপুরের শঙ্করপাশা গ্রামে

ঘ. ঢাকার নবাবগঞ্জে

উত্তর: ক. সন্দ্বীপের সুধারামপুর গ্রামে

আবদুল হাকিমের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ কোনটি?

ক. লালমতি                                         খ. নসীহত্যামা

গ. সয়ফুলমুলুক                                 ঘ. নূরনামা কারবালা

উত্তর: ঘ. নূরনামা কারবালা

. ‘শহরনামা‘ কার লেখা?

ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত                   খ. ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর

গ. মহাকবি আলাওল                          ঘ. আবদুল হাকিম

উত্তর: ঘ. আবদুল হাকিম

১০. ‘নূরনামা‘ কোন ধরনের গ্রন্থ?

ক. গল্পগ্রন্থ                                          খ. নাটক

গ. কাব্যগ্রন্থ                                        ঘ. উপন্যাস

উত্তর: গ. কাব্যগ্রন্থ

১১আবদুল হাকিমের কবিতায় কোনটির পরিচয় মেলে?

ক. অনুপম ব্যক্তিত্বের                        

খ. সৎ চরিত্রের

গ. প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার                       

ঘ. অগাধ পাণ্ডিত্যের

উত্তর: ক. অনুপম ব্যক্তিত্বের

১২নিচের কোন কাব্যগ্রন্থটি আবদুল হাকিম লিখেছেন?

ক. নদী ও মানুষের কবিতা                  খ. শিহাবুদ্দিননামা

গ. সোনার তরী                                   ঘ. দোলনচাপা

উত্তর: খ. শিহাবুদ্দিননামা

১৩. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতাটি কোন শতকে রচিত হয়?

ক ষোড়শ                                            খ. সপ্তদশ

গ. অষ্টাদশ                                          ঘ. উনবিংশ

উত্তর: খ. সপ্তদশ

১৪আবদুল হাকিম কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

ক. ১৬১০ সালে                                   খ. ১৬২০ সালে

গ. ১৬৮০ সালে                                  ঘ. ১৬৯০ সালে

উত্তর: ঘ. ১৬৯০ সালে

১৫বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে যারা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করে তাদের সম্বন্ধে কবির অভিমত কী?

ক. তাদের জন্ম পরিচয় ঠিক করা যায় না

খ. তারা মানুষ নামের পরিচয় দানের অযোগ্য

গ. তারা অকৃতজ্ঞতারই পরিচয় দেয়

ঘ. তারা নীচ ও হীন জীবনযাপন করে

উত্তর: ক. তাদের জন্ম পরিচয় ঠিক করা যায় না

১৬দেশীয় ভাষায় কাব্য রচনা করার পেছনে কবির যুক্তি কী?

ক. সাধারণ মানুষের উপকার

খ. দেশি ভাষায় দক্ষতা অর্জন

গ. দেশি ভাষার প্রতি ভালোবাসা

ঘ. দেশি ভাষা সকলের বোধগম্য

উত্তর: ঘ. দেশি ভাষা সকলের বোধগম্য

১৭কবির কাব্য রচনার উদ্দেশ্য কী?

ক. সাধারণ মানুষের তুষ্টি                   

খ. রাজকর্মচারীদের তুষ্ট করা

গ. শিক্ষিত জনকে আনন্দ দান         

ঘ. আত্মপ্রচার করা

উত্তর: ক. সাধারণ মানুষের তুষ্টি

১৮. ‘দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে  জুয়ায়’- কোন ধরনের লোক সম্পর্কে বলা হয়েছে?

ক. সাহসী ও বুদ্ধিমান                         খ. বিভ্রান্ত ও সংকীর্ণমনা

গ. শক্তিশালী ও স্বেচ্ছাচারী                  ঘ. ভদ্র ও অমায়িক

উত্তর: খ. বিভ্রান্ত ও সংকীর্ণমনা

ICT চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১৯কোন ধরনের লোকের প্রতি কবি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?

ক. গোয়ার গোবিন্দের মতো যারা

খ. বিদেশে থাকতে চায় যারা

গ. দেশি ভাষায় পরিতৃপ্ত নয় যারা

ঘ. দেশকে ভালোবাসে না যারা

উত্তর: গ. দেশি ভাষায় পরিতৃপ্ত নয় যারা

২০কবি কাদের ইচ্ছায় বাংলা ভাষায় কাব্য রচনায় নিয়োজিত হয়েছেন?

ক. যাদের কিতাব পড়ার অভ্যাস নেই

খ. যারা সমাজের হর্তাকর্তা

গ. কৃষক শ্রেণির মানুষদের

ঘ. জমিদার শ্রেণির মানুষদের

উত্তর: ক. যাদের কিতাব পড়ার অভ্যাস নেই

২১কবি কীসের দ্বারা সবাইকে তুষ্ট করেন?

ক. কবিতা রচনা করে                         খ. গান রচনা করে

গ. বাংলায় কাব্য রচনা করে               ঘ. হিন্দিতে কাব্য রচনা করে

উত্তর: গ. বাংলায় কাব্য রচনা করে

২২কবির পরিশ্রমে সন্তুষ্ট হয় কারা?

ক. জমিদাররা                                     খ. কৃষকরা

গ. শ্রমিকরা                                        ঘ. সকলেই

উত্তর: ঘ. সকলেই

২৩. আরবি ফারসি ভাষার কীসের প্রতি কবির রাগ নেই?

ক. কবিতার                                         খ. গানের

গ. শাস্ত্রের                                            ঘ. নাটকের

উত্তর: গ. শাস্ত্রের

২৪. ‘কিতাব পড়িতে যার নাহিক অভ্যাস‘- এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?

ক. অশিক্ষিত লোকজন                     

খ. শিক্ষিত লোকজন

গ. বাংলা ভাষাভাষী লোকজন           

ঘ. সাধারণ লোকজন

উত্তর: গ. বাংলা ভাষাভাষী লোকজন

২৫. কবি বাংলায় কাব্য রচনা করেছেন কেন?

ক. তিনি বাঙালি বলে

খ. সাধারণ মানুষের ভাষা বলে

গ. সাহিত্যচর্চার নিয়ম বলে

ঘ. জমিদারদের খুশি করতে

উত্তর: খ. সাধারণ মানুষের ভাষা বলে

২৬কোন ভাষা মানুষ ভালোভাবে বুঝতে পারে?

ক. বাংলা ভাষা                                     খ. সংস্কৃত ভাষা

গ. বিদেশি ভাষা                                   ঘ. দেশি ভাষা

উত্তর: ঘ. দেশি ভাষা

২৭আরবিফারসিহিন্দি এসব ভাষার প্রতি কবির কী নেই?

ক. ভালোবাসা                                     খ. বিদ্বেষ

গ. আগ্রহ                                            ঘ. অনুভূতি

উত্তর: খ. বিদ্বেষ

২৮কোন ধরনের ভাষা নিয়ে কবির দুই মত নেই?

ক. আরবি-ফারসি-উর্দু                        খ. আরবি-ফারসি-হিন্দ

গ. আরবি-মান্দারিন-হিন্দ                   ঘ. হিব্রু-ফারসি-হিন্দ

উত্তর: খ. আরবি-ফারসি-হিন্দ

২৯আরবিফারসি ভাষার প্রতি মানুষের দুর্বলতার কারণ কী?

ক. আল্লাহ নবির গুণগান রচিত হয়েছে বলে

খ. নবির দেশের ভাষা বলে

গ. বিদেশি ভাষা বলে

ঘ. শিক্ষিত লোকজন ব্যবহার করে বলে

উত্তর: ক. আল্লাহ নবির গুণগান রচিত হয়েছে বলে

৩০সকল দেশের মানুষের ভাষা বুঝতে পারেন কে?

ক. কবি                                                খ. জ্ঞানী ব্যক্তি

গ. স্রষ্টা                                                ঘ. শিক্ষক

উত্তর: গ. স্রষ্টা

৩১. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় ‘নিরঞ্জন’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

ক. সৃষ্টিকর্তা                                         খ. কবি নিজেকেই

গ. ধার্মিকদের                                     ঘ. রাজ কর্মচারীকে

উত্তর: ক. সৃষ্টিকর্তা

৩২. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় হিন্দুয়ানী’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

ক. হিন্দুর ভাষা                                    খ. হিন্দুর আচরণ

গ. হিন্দুর পোশাক                               ঘ. হিন্দুর দেশ

উত্তর: ক. হিন্দুর ভাষা

৩৩প্রভু কী বুঝতে পারেন?

ক. ইবাদত-বন্দেগি                              খ. সর্ববাক্য

গ. আরবি ভাষা                                   ঘ. ধার্মিকদের কথা

উত্তর: খ. সর্ববাক্য

৩৪. ‘বঙ্গদেশী‘ বাক্য বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

ক. বাংলাদেশের কথা                          খ. বাংলাদেশের বাক্য

গ. বাংলাদেশের গল্প                           ঘ. বাংলা ভাষা

উত্তর: ঘ. বাংলা ভাষা

৩৫হিন্দুর অক্ষরকে কারা হিংসা করে?

ক. যারা মারফত জানে না                  খ. জমিদাররা

গ. মওলানা সাহেবরা                          ঘ. শিক্ষিত লোকেরা

উত্তর: ক. যারা মারফত জানে না

৩৬. ‘হিন্দুর অক্ষর‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

ক. সংস্কৃত ভাষাকে                             খ. বাংলা ভাষাকে

গ. এদের ভাষাকে                               ঘ. হিন্দুদের লেখাকে

উত্তর: খ. বাংলা ভাষাকে

৩৭বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও যারা বাংলা ভাষাকে অবমূল্যায়ন করে। কবি তাদের সম্পর্কে কেমন মনোভাব পোষণ করেন?

ক. বিরূপ                                             খ. আনন্দিত

গ. দুঃখিত                                           ঘ. পুলকিত

উত্তর: ক. বিরূপ

৩৮. ‘নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ  যায়‘- এখানে কোন ভাব ফুটে উঠেছে?

ক. ভালোবাসা                                     খ. উপদেশ

গ. ক্রোধ                                             ঘ. আদেশ

উত্তর: গ. ক্রোধ

৩৯কবি বংশ পরম্পরায় কোথাকার অধিবাসী?

ক. ভারতের                                         খ. পৃথিবীর

গ. বাংলাদেশের                                  ঘ. এশিয়ার

উত্তর: গ. বাংলাদেশের

জীববিজ্ঞান ত্রয়োদশ অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

৪০বাংলাদেশকে বোঝাতে কবি কোন শব্দটি ব্যবহার করেছেন?

ক. বঙ্গ                                                 খ. বাংলা

গ. বঙ্গবাণী                                          ঘ. দেশ

উত্তর: ক. বঙ্গ

৪১নিচের কোনটিতে ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে?

ক. সে সবে কহিল মোতে মনে হাবিলাষ

খ. সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন

গ. মারফত ভেদে যার নাহিক গমন

ঘ. সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি

উত্তর: ঘ. সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি

৪২কবি আবদুল হাকিমের অটুট  অপরিসীম প্রেম ছিল

i. স্বদেশের প্রতি

ii. ভাষার প্রতি

iii. পরিবারের প্রতি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

৪৩আবদুল হাকিম ছিলেন

i. মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান কবি

ii. মাতৃভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসার বিরল দৃষ্টান্ত

iii. পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কালজয়ী আদর্শ

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ঘ. i, ii ও iii

৪৪আবদুল হাকিম রচিত কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে

i. নূরনামা

ii. ইউসুফ জোলেখা

iii. সয়ফুলমুলুক

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ঘ. i, ii ও iii

৪৫যে ভাষার শাস্ত্রের প্রতি কবির কোনো রাগ নেই

i. উর্দু

ii. আরবি

iii. ফারসি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

৪৬আবদুল হাকিমের লেখা গ্রন্থ হলো–  

i. শিহাবুদ্দিননামা

ii. খোয়াবনামা

iii. নসীহৎনামা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: খ. i ও iii

৪৭যে ভাষার প্রতি কবির দ্বিমত নেই

i. আরবি

ii. ফারসি

iii. হিন্দি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

৪৮কবির মতে যে ভাষায় আমরা সব ভালোভাবে বুঝতে পারি

i. দেশি ভাষা

ii. বাংলা ভাষা

iii. আরবি ভাষা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

৪৯এদেশে জন্মগ্রহণ করেও যারা বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়তাদেরকে উদ্দেশ্য করে কবি লিখেছেন

i. দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

ii. সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি

iii. নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

৫০সকল ভাষা বুঝতে পারেন যিনি

i. আল্লাহ

ii. প্রভু

iii. নিরঞ্জন

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ঘ. i, ii ও iii

৫১. ‘হিন্দুর অক্ষর‘ বলতে যে ভাষাকে বোঝানো হয়েছে

i. বাংলা ভাষাকে

ii. সংস্কৃত ভাষাকে

iii. হিন্দি ভাষাকে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

রসায়ন চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৫২. ‘দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি‘ কবিতার চরণটিতে প্রকাশ পেয়েছে –

i. মাতৃভাষাপ্রীতি

ii. উপদেশ

iii. পরামর্শ

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i                                                      খ. ii

গ. iii                                                    ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i

৫৩. ‘হাবিলাষ‘ শব্দের অর্থ হচ্ছে

i. অভিলাষ

ii. প্রবল ইচ্ছা

iii. হাপিত্যেশ

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

৫৪কবি যেসব স্বভাবের লোকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন

i. মিথুক

ii. শিকড়বিহীন

iii. পরগাছা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

৫৫বঙ্গদেশী বাক্য বলতে কবি বুঝিয়েছেন

i. বাংলা ভাষায় লিখিত বাক্য

ii. বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্য

iii. বাংলা ভাষা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i                                                      খ. ii

গ. iii                                                    ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. iii

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৫৬  ৫৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:

বাংলাদেশে বাড়ি আমার বাংলাদেশে বাড়ি

বাংলাদেশের লাইগা আমি জীবন দিতেও পারি।

৫৬উদ্দীপকের সাথে ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতার কোন চরণের সাদৃশ্য দেখা যায়?

ক. তে কাজে নিবেদি বাংলা করিয়া রচন

খ. যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী

গ. দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি

ঘ. মাতা পিতাসই ক্রমে বঙ্গেত বসতি

উত্তর: ঘ. মাতা পিতাসই ক্রমে বঙ্গেত বসতি

৫৭উদ্দীপক  ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় ফুটে উঠেছে

i. দেশপ্রেম

ii. মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা

iii. মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৫৮৬০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:

কামাল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছে। আরবি, ফারসি, উর্দু ইত্যাদি ভাষায় বিভিন্ন কিতাব পড়েছে সে। এসব পড়তে গিয়ে ভাষাগুলোতে তার বেশ দখল আছে। তবে তার কাছে বাংলা ভাষার মতো এত মধুর আর কোনো ভাষাই নেই।

৫৮কামাল কোন দিক থেকে ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতার কবির সাদৃশ্য?

ক. লেখাপড়া                                       খ. কিতাব পড়া

গ. মাতৃভাষাপ্রীতি                                ঘ. পাণ্ডিত্য

উত্তর: গ. মাতৃভাষাপ্রীতি

৫৯কামালের শেখা ভাষাগুলোর মধ্যে ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে

i. আরবি

ii. উর্দু

iii. ফারসি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: খ. i ও iii

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

৬০. ‘বঙ্গবাণী‘ কবিতার আলোকে উদ্দীপকে কামালকে কী বলা যায়?

ক. শিক্ষিত                                           খ. শিকড়বিহীন

গ. হিন্দুয়ানী                                         ঘ. দেশপ্রেমিক

উত্তর: ঘ. দেশপ্রেমিক

* গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর *

প্রশ্ন : মোদের গরব মোদের আশা মরি বাংলা ভাষা

মাগো তোমার কোলেতোমার বোলে কতই শান্তি ভালোবাসা।

 মরি বাংলা ভাষা।

কি জাদু বাংলা গানেগান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,

গেয়ে গান নাচে বাউলগান গেয়ে ধান কাটে চাষা

বাজিয়ে রবি তোমার বীণেআনল মালা জগৎ জিনে

তোমার চরণতীর্থে মাগো জগৎ করে যাওয়া আসা

 মরি বাংলা ভাষা।

ক. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় ‘নিরঞ্জন’ শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

খ. ‘দেশি ভাষা বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার যে ভাবের প্রতিফলন ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উক্ত ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে উদ্দীপকের কবির চেয়ে আবদুল হাকিমের অবস্থান সুদৃঢ় ও বলিষ্ঠ ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় ‘নিরঞ্জন’ শব্দটি সৃষ্টিকর্তা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

. প্রশ্নোক্ত চরণটির মাধ্যমে মাতৃভাষার মাধ্যমে জ্ঞানচর্চার সুযোগ পেলে আমাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে। মাতৃভাষার সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক বিদ্যমান। এ ভাষাতেই আমরা সবচেয়ে ভালোভাবে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। তাই মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চা করলে তা সহজেই আমাদের বোধগম্য হয়। এজন্য মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চা করার সুযোগ মিললে কিতাবের সারকথা যথার্থরূপে অনুধাবন করা সম্ভব হবে বলে তা আমাদের সৌভাগ্যের কারণ হবে বলে মনে করেন কবি।

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষা বাংলার প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা ও মমত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি আবদুল হাকিম মাতৃভাষার প্রতি তার গভীর অনুরাগের স্বরূপ প্রকাশ করেছেন। কবির মতে, যে ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য নয়, মাতৃভাষার তুলনায় সে ভাষাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। তিনি জানেন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কারণে আরবি, ফারসি প্রভৃতি ভাষাকে লোকে পবিত্র জ্ঞান করে। তাই এসব ভাষার প্রতি কবির কোনো খেদ নেই। কিন্তু এ ভাষাগুলোকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করা সমীচীন বলে মনে করেন না তিনি।

উদ্দীপকের কবিতাংশে মাতৃভাষা বাংলার বন্দনা করা হয়েছে। স্বদেশের ভাষাকে গৌরব ও আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল বলে মনে করেন কবি। কেননা, এ ভাষাতে কথা বলেই আমরা প্রশান্তি লাভ করি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আবেগ-অনুভূতির সুষ্ঠু প্রকাশের জন্য মাতৃভাষাই আমাদের পরম আশ্রয়স্থল। এভাবে বাংলা ভাষার সাথে বাঙালির আত্মিক সম্পর্কের গভীর অনুভূতিই ফুটে উঠেছে উদ্দীপকটিতে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায়ও একইভাবে স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি কবির গভীর মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধাশীলতা প্রকাশ পেয়েছে। এভাবে উদ্দীপকের কবিতাংশে মাতৃভাষার বন্দনার মধ্য দিয়ে আলোচ্য কবিতায় প্রকাশিত কবির ভাষাপ্রীতির দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষা বাংলাকে নিয়ে কবির গভীর উপলব্ধির পরিচয় ফুটে উঠেছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষার প্রতি কবিহৃদয়ের প্রগাঢ় অনুভূতির স্বরূপ ফুটে উঠেছে। পুরুষানুক্রমে আমরা বাংলায় বসবাস করে আসছি বলে এ ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমরা আত্মিক বন্ধনে আবদ্ধ। এজন্য আমাদের কাছে এই ভাষার চেয়ে হিতকর আর কোনোকিছু হতে পারে বলে কবি বিশ্বাস করেন না। একারণে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে যারা অন্য ভাষাকে অধিক গুরুত্ব দেয় এমন হীন প্রবৃত্তির মানুষদের প্রতি তীব্র শ্লেষ প্রকাশ করেছেন তিনি।

উদ্দীপকের কবিতাংশে সুললিত আবেগে কবি তার মাতৃভাষাপ্রীতির দিকটি তুলে ধরেছেন। বাংলা ভাষার গুণমুগ্ধ কবি এ ভাষার অমিয় সুধায় প্রাণ ভরিয়েছেন। কবি লক্ষ করেছেন, দেশের মানুষের প্রাণে প্রশান্তি এনে দেয় বাংলা ভাষা। বস্তুত এ ভাষাকে কেন্দ্র করেই দেশের সকল শ্রেণির মানুষ অভিন্ন সাংস্কৃতিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। আর তাই বাংলাভাষাকে নিয়ে কবির গর্ব হয়। কবির এই প্রগাঢ় অনুভবটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় ফুটে উঠলেও এটিই এ কবিতার একমাত্র দিক নয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মূলসুর হলো মাতৃভাষাপ্রীতি। এ ভাষার সঙ্গে নিজ জন্মস্থান ও নিজস্ব সংস্কৃতির রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ। তাই যেকোনো ব্যক্তির কাছেই মাতৃভাষার চেয়ে হিতকর আর কিছু হতে পারে না। তবে এ কবিতায় কবি মাতৃভাষাকে নিয়ে শুধু তার নিজস্ব উপলব্ধি প্রকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি বরং মাতৃভাষার অবমাননাকারীদের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করেছেন। এক্ষেত্রে স্বভাষার প্রতি যাদের অনুরাগ নেই তাদেরকে তিনি দেশত্যাগ রতে বলেছেন।

মাতৃভাষাকে গভীরভাবে ভালোবাসেন বলেই কবির মনে এমন ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। এ ধরনের বলিষ্ঠ বক্তব্য উদ্দীপকের কবিতাংশে পাওয়া যায় না, যা প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটির যথার্থতা নির্দেশ করে।

পদার্থ বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন : ‘মায়ের ভাষা বাংলা আমার

খোদার সেরা দান

রফিক সালাম বরকতের

বিলিয়ে দেয়া প্রাণ

রক্তে কেনা ভাষা মোদের

রেখো যতন করে

বাংলা ভাষায় কথা বলো

গভীর শ্রদ্ধাভরে।

ক. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?

খ. দেশি ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়।

নিজ দেশী তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়।” – ব্যাখ্যা করো।

গ. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে উদ্দীপকের কবিতাংশে প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গির তুলনা করো।

ঘ. ভাষার প্রতি ভালোবাসা দেশপ্রেমের শ্রেষ্ঠ দিক।’‘বঙ্গবাণী’ কবিতা ও উদ্দীপকের আলোকে বিচার করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে।

. প্রশ্নোক্ত চরণটির মাধ্যমে নিজ ভাষার প্রতি যারা অবহেলা প্রদর্শন করে তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কবি । কবি আবদুল হাকিমের জীবনকালে এক শ্রেণির মানুষ ছিল, যারা নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ছিল সংকীর্ণচেতা। কবি এমন মানুষদের প্রতি নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, যারা একটি দেশে বাস করে সেই দেশের ভাষাকে ঘৃণা করে তাদের সে দেশে বসবাসের কোনো অধিকার নেই। স্বদেশ ও স্বভাষা অবজ্ঞাকারী এমন হীন প্রবৃত্তির মানুষদের তাই দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়াই উচিত।

. মাতৃভাষা বাংলার প্রতি গভীর মমত্ব এবং শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটেছে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা এবং আলোচ্য উদ্দীপকে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তার গভীর উপলব্ধির কথা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মতে, মানুষের সাথে ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে মাতৃভাষাই সবচেয়ে উপাযোগী। তাই কবি দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেন, যাদের মনে স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি কোনো অনুরাগ নেই তাদের দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়াই উচিত। স্বভাষার প্রতি এমন প্রগাঢ় ভালোবাসা ও মমত্ববোধ উল্লিখিত উদ্দীপকের কবিতাংশেও বর্তমান।

উদ্দীপকে কবি মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম মাতৃভাষা বাংলাকে খোদার সেরা দান হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সালাম, বরকত যে ভাষার মান রাখতে প্রাণ দিয়েছেন কবি সে ভাষাকে যত্নে রাখতে বলেছেন। এক্ষেত্রে তার আহ্বান– বাংলাভাষায় কথা বললা গভীর শ্রদ্ধাভরে। বস্তুত ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে উদ্দীপকে উল্লিখিত এমন মন্তব্য অভিন্ন।

কেননা সেখানে মাতৃভাষাকে নিয়ে কবির একান্ত অনুভূতির সার্থক রূপায়ণ ঘটেছে যা তার প্রবল ভাষাপ্রীতিকেই উপস্থাপন করছে। অর্থাৎ মাতৃভাষা বাংলার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ উভয়ক্ষেত্রের মর্মসত্য হিসেবে উঠে এসেছে।

. ‘ভাষার প্রতি ভালোবাসা দেশপ্রেমের শ্রেষ্ঠ দিক।’- ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা ও উল্লিখিত উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ ।

ভাষা কোনো একটি জাতিসত্ত্বার পরিচয়ের মৌলিক উপাদান। বাংলা ভাষায় কথা বলি বলে আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের দেশ। এভাবে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা ও আলোচ্য উদ্দীপকটিতে ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যমে মূলত দেশপ্রেমের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।

উদ্দীপকে কবি মাতৃভাষা বাংলাকে খোদার সেরা দান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বাংলা ভাষার মান রাখতেই প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষাশহিদেরা। তাই কবি এ ভাষাকে সযতনে আগলে রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি মাতৃভাষার প্রতি অপার মমত্ববোধ থেকে সবাইকে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছেন তিনি। ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায়ও মাতৃভাষার প্রতি কবির এমন মনোভাব লক্ষিত হয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি কবির গভীর মমত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়। পাশাপাশি এ কবিতায় মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের প্রতি তীব্র শ্লেষ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার মতে, যাদের স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি বিন্দুমাত্র অনুরাগ নেই তাদের এদেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত। কবির এমন মনোভাব ভাষার প্রতি ভালোবাসাই যে দেশপ্রেমের শ্রেষ্ঠ দিক’- এ বিষয়ের স্বীকৃতি দেয়। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে উদ্দীপকের কবিও তাই ভাষার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও হৃদয়ানুভূতির প্রকাশ করেছেন।

উভয়ক্ষেত্রেই ভাষার প্রতি অনুরাগ প্রদর্শনের মাধ্যমে কবিদ্বয় দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছেন। আর তাই উদ্দীপক ও ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার আলোকে প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন : নানান দেশের নানান ভাষা

বিনে স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা 

কত নদী সরোবর কী বা ফল চাতকীর;

ধারাজল বিনে কভু ঘুচে কি তৃষা?

ক. “হিন্দুর অক্ষর’ বলতে কোন ভাষাকে বোঝানো হয়েছে?

খ. ‘দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি’— বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সমগ্রতাপশী নয়- বিশ্লেষণ করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. ‘হিন্দুর অক্ষর’ বলতে বাংলা ভাষাকে বোঝানো হয়েছে।

খ. শুধু মাতৃভাষাতে কথা বলেই মনের সাধ মেটানো সম্ভব, মনের গৃঢ়ভাব সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত করা সম্ভব- প্রশ্নোক্ত চরণটিতে একথাই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। বংশানুক্রমে এদেশে আমাদের বসতি। তাই মাতৃভাষা বাংলায় বর্ণিত বক্তব্য আমাদের মনকে স্পর্শ করে। বাংলাতে আমাদের ভাবের প্রবাহ গতিশীল বলে এ ভাষাতে বয়োজ্যেষ্ঠগণ আমাদের হিতোপদেশ দেন। আমরা স্বপ্ন সাজাই, কাব্য লিখি— এ ভাষার অমিয় সুধা নিয়ে সফল জীবন গড়ি। আলোচ্য চরণটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।

. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় প্রকাশিত মাতৃভাষার প্রতি গভীর অনুরাগের চিরন্তন অনুভূতির দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি আবদুল হাকিম তার গভীর উপলদ্ধি ও বিশ্বাসের কথা নির্দ্বিধায় ব্যক্ত করেছেন। বাংলা ভাষার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধার ধারক এ কবির আরবি-ফারসি ভাষার প্রতি মোটেই বিদ্বেষ নেই। তবে তাঁর মতে, যে ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য নয়, যে ভাষায় অন্যের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভাব বিনিময় করা যায় না, সে ভাষা পরিহার করে সর্বস্তরে মাতৃভাষা চর্চা করা উচিত। কারণ মাতৃভাষায় বর্ণিত বক্তব্যই আমাদের মনকে গভীরভাবে স্পর্শ করতে পারে।

উদ্দীপকে মাতৃভাষার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। পৃথিবীর তিন ভাগ জল-প্লাবিত হলেও বৃষ্টির জল ব্যতীত চাতকীর তৃষ্ণা মেটে। অনুরূপভাবে নানান দেশে নানান ভাষা প্রচলিত হলেও স্বদেশি ভাষা ভিন্ন অন্য কোনো ভাষায় কথা বলে প্রকৃত আনন্দ ও তৃপ্তি পাওয়া যায় না বলে উদ্ধৃত কবিতাংশের কবি অভিমত পোষণ করেছেন যা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মূল সুর। সেদিক বিবেচনায় উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার অনুভূতিই প্রকাশিত হয়েছে।

. উদ্দীপকটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সমগ্রতাস্পর্শী নয়— মন্তব্যটি যথার্থ।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষার প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে। বিদেশি ভাষা জনসাধারণের বোধগম্য নয় বলে সে ভাষা মনের ভাব পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করার উপযোগী নয়। কিন্তু মাতৃভাষা এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সফল। তাই কবি মাতৃভাষায় কথা বলা ও লেখার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকে শুধু মাতৃভাষাপ্রীতির দিকটিই আলোচিত হয়েছে।

নিজ ভাষার প্রতি গভীর হৃদয়াবেগ প্রকাশে উদ্দীপকের কবিতাংশের কবি চাতকীর রূপকের আশ্রয় নিয়েছেন। চাতকী যেমন বিস্তৃত জলরাশির মাঝেও বৃষ্টির জলের জন্য হাপিত্যেশ করে মরে, তেমনি অনেক ভাষার ভিড়েও মানুষ মাতৃভাষার আশ্রয়ে শান্তি খুঁজে ফেরে। মাতৃভাষাপ্রীতি মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা এবং উদ্ধৃত কবিতাংশে মাতৃভাষার প্রতি যে ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে তা অকপট ও আন্তরিক।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় এ দিকটি ছাড়াও আরও নানা বিষয় উঠে এসেছে। আমাদের উপলব্ধি ও বিশ্বাস এই যে মাতৃভাষাই ভাব প্রকাশের সর্বোকৃষ্ট মাধ্যম। তাই মাতৃভাষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই আমাদের অন্য সব ভাষার প্রতি আন্তরিক হওয়া উচিত। কারণ যে ভাষা জনগণের বোধগম্য নয় সে ভাষায় ভাব বিনিময় করা সম্ভব নয়। মাতৃভাষায় বর্ণিত বক্তব্য আমাদের অন্তরকে স্পর্শ করে বলেই সর্বক্ষেত্রে এ ভাষা প্রচলন করা উচিত।

বাংলা দ্বিতীয় উপসর্গ-বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি আবদুল হাকিম মাতৃভাষার গুরুত্ব উপলদ্ধি করে এ বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া আলোচ্য কবিতায় মাতৃভাষাবিদ্বেষীদের স্বরূপ এবং তাদের হীন মানসিকতার প্রতি তীব্র শ্লেষ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকের কবিতাংশে শুধু মাতৃভাষার প্রতি কবির ভালোবাসা ও ভাবাবেগের দিকটিই ফুটে উঠেছে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ অর্থবহ।

প্রশ্ন :

পরের মুখে শেখা বুলি পাখির মত কেন বলিস

পরের ভঙ্গি নকল করে নটের মত কেন চলিস?

তোর নিজস্ব সর্বাঙ্গো তোর দিলেন ধাতা আপন হাতে

মুছে সেটুকু বাজে হলিগৌরব কিছু বাড়ল তাতে?

আপনাকে যে ভেঙেচুরে গড়তে চায় পরের ছাঁচে।

অলীকফাঁকিমেকি সেজন নামটা তার দিন বাঁচে?

পরের চুরি ছেড়ে দিয়ে আপন মাঝে ডুবে যা রে,

খাঁটি ধন যা সেথায় পাবি আর কোথাও পাবি নারে।

ক. ‘হাবিলাষ’ অর্থ কী?

খ. কবি আবদুল হাকিম বাংলা ভাষা অবজ্ঞাকারীদের ঘৃণা করেন কেন?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সাদৃশ্য আলোচনা করো।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মর্মবাণী ধারণ করতে পেরেছে কি? উত্তরের সপক্ষে মতামত দাও।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. হাবিলাষ অর্থ অভিলাষ বা প্রবল ইচ্ছা।

. বাংলা ভাষা অবজ্ঞাকারীদের স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বলে কবি তাদের ঘৃণা করেন। আরবি ও ফারসি ভাষার প্রতি কবির কোনো বিদ্বেষ নেই। কিন্তু সাহিত্যচর্চার জন্য মাতৃভাষাই যে সর্বোৎকৃষ্ট সে ব্যাপারে তিনি নিঃসন্দিগ্ধ । তাই যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে তাদের বংশ ও জন্ম পরিচয় সম্পর্কে কবির মনে সন্দেহ জাগে। স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি তাদের এমন বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবে কবির মনে খেদ জাগে। এ কারণেই বাংলা ভাষা অবজ্ঞাকারীদের তিনি ঘৃণা করেন।

. আপন সংস্কৃতিকে অবহেলা এবং অন্ধ পরানুকরণের প্রতি শ্লেষ প্রকাশের দিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সাদৃশ্য লক্ষিত হয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি তার গভীর উপলদ্ধি ও বিশ্বাসের কথা নির্দ্বিধায় ব্যক্ত করেছেন। বিদেশি ভাষার প্রতি কোনো বিদ্বেষ নেই তার। কিন্তু মাতৃভাষার মাধ্যমে আমাদের বক্তব্য প্রাণ পায় বলে কবি এ ভাষাতেই তার মনের সকল ভাব প্রকাশ করতে চান। পাশাপাশি এ কবিতায় কবি স্বদেশ এবং স্বভাষা-বিদ্বেষীদের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।

উদ্দীপকের কবিতাংশে স্বকীয়তা বজায় রাখার গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে। কবি মনে করেন, ঈশ্বর যে স্বকীয়তা দান করেছেন তাকে বজায় রেখে চলার মধ্যেই গৌরব নিহিত। কিন্তু তা মুছে ফেলে অপরকে নকল করার মধ্যে কোনো আভিজাত্য নেই। আপনাকে ভেঙে যে নিজেকে অন্যের ছাঁচে গড়ে তুলতে চায় তার মেকি মূর্তি বেশিদিন টিকে থাকে না। নিজের স্বকীয়তার প্রতি বিশ্বাস রাখলে এর মতো খাঁটি ধন কোথাও পাওয়া যাবে না ।

উদ্দীপকের এ ভাবনার সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির ভাবনার মিল রয়েছে। তিনি মনে করেন, মাতৃভাষা সকলের বোধগম্য বলে সাহিত্যচর্চা থেকে শুরু করে জীবনাচরণের সর্বক্ষেত্রে এ ভাষাই ব্যবহার করা উচিত। কেননা অন্য ভাষায় সাহিত্যচর্চা প্রকৃতপক্ষে পরের মুখে শেখা বুলির মতোই কৃত্রিম। এতে লেখকের স্বকীয়তা বজায় থাকে না।

উদ্দীপকের মতো আলোচ্য কবিতার কবিও এমন হীন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র শ্লেষ প্রকাশ করেছেন। এদিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

. নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি মমত্ববোধ ও মাতৃভাষাবিদ্বেষের প্রতি শ্লেষ প্রকাশের সূত্রে উদ্দীপকটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মর্মবাণীকে ধারণ করে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মূলভাব মাতৃভাষাপ্রীতি। এ ভাষার সঙ্গে নিজ জন্মস্থান ও নিজস্ব সংস্কৃতির রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ। কবির মাতৃভাষাপ্রীতি তাই ব্যাপকভাবে নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ হিসেবেই প্রতীত হয়। মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগবশত কবি বাংলা ভাষা-বিদ্বেষীদের তীব্র নিন্দা করেন। তার এ নিন্দা ও ধিক্কার উদ্দীপকের কবিতাংশে উচ্চারিত বক্তব্যের সমান্তরাল।

উদ্দীপকের কবিতাংশের কবি মনে করেন, মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে পরের মুখের বুলিকে তোতা পাখির মতো আওড়ানো বা পরের অঙ্গভঙ্গিকে নটের মতো অনুকরণ করার মধ্যে গৌরবের কিছু নেই। কেননা নিজেকে শিকড়বিচ্ছিন্ন করে অন্যের মতো করে গড়ে তুলতে চাওয়া একধরনের অলীক ভাবনা যার মধ্যে ফাঁকি ছাড়া কিছু নেই। উদ্দীপকের কবিতাংশের এ ভাবনা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাতেও প্রতিফলিত হয়েছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল কবি নিজ ভাষাতেই সাহিত্য রচনার পক্ষপাতী। তিনি মনে করেন, মানুষ নিজ ভাষায় স্রষ্টাকে ডাকলেও স্রষ্টা তা শুনতে পান। যারা স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় তাদের প্রতি তাই কবি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা ব্যক্ত করেছেন। এমনকি তাদের বংশ ও জন্মপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, বংশানুক্রমে এদেশে আমাদের বসতি, এদেশের ভাষায় বর্ণিত বক্তব্য আমাদের মনকে স্পর্শ করে।

সুতরাং এ ভাষার চেয়ে হিতকর আর কিছু হতে পারে না। এ কবিতায় প্রকাশিত নিজ দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি কবির মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধাশীলতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে। সেদিক বিবেচনায় উদ্দীপকটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মর্মবাণীকেই যেন ধারণ করে আছে- একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় ।

প্রশ্ন :

এক.    মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গেত বসতি।

দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি 

দুই.      বাংলার কাব্য বাংলার ভাষা।

মিটায় আমার প্রাণের পিপাসা।

ক. প্রথম চরণ দুটি কোন কবিতার অংশবিশেষ?

খ. মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের কবি দেশত্যাগ করতে বলেছেন কেন?

গ. উদ্ধৃত স্তবক দুটির বক্তব্যে সাদৃশ্য কোথায়? বর্ণনা করো।

ঘ. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা এবং উদ্দীপকে মাতৃভাষার প্রতি চিরন্তন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. উদ্দীপকের প্রথম চরণ দুটি আবদুল হাকিমের ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার অংশবিশেষ।

. স্বদেশ এবং স্বভাষার প্রতি মমত্ববোধ নেই বলে কবি আবদুল হাকিম মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের দেশত্যাগের উপদেশ দিয়েছেন। স্বদেশে থেকে যারা স্বদেশের ভাষার প্রতি বীতরাগ তারা প্রকৃতপক্ষে দেশ ও দেশের ভাষার প্রতি মমতুহীন। তাদের এরূপ হীন মনোভাব লক্ষ করে ব্যথিত হয়েছেন কবি। শিকড়হীন পরগাছা প্রকৃতির এসব মানুষের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করতেই তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে তাদের দেশত্যাগের উপদেশ দিয়েছেন।

. মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ প্রকাশের দিক থেকে উদ্দীপকের স্তবক দুটির সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি আবদুল হাকিম বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চার ওপর সবচেয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এর অন্যতম কারণ, আমাদের পূর্বসূরিদের অর্জিত জ্ঞান ও হিতোপদেশ এ ভাষাতেই সংরক্ষিত আছে। এ ভাষার চর্চা না করলে তা থেকে আমরা বঞ্চিত হব এবং তাদের প্রতি আমাদের অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হবে।

উদ্দীপকে প্রথম স্তবকে পূর্বসরিদের জ্ঞান ও হিতোপদেশ বাংলা ভাষায় সংরক্ষিত হয়েছে বলে এ ভাষাকে হিতকর বিবেচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় স্তবকের কবিতাংশেও বাংলা ভাষায় রচিত কাব্যের গুণগান করা হয়েছে। স্তবকদ্বয়ে ভাষাপ্রীতির মধ্য দিয়ে এভাবেই দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটেছে। প্রথম স্তবকে কবি বংশানুক্রমে এদেশের বাসিন্দা বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আমাদের পিতা-প্রপিতামহের হিতোপদেশসমূহ এ ভাষাতেই বাণীরূপ লাভ করেছে। কবি তাই মনে করেন, এ ভাষার মধ্যেই মঙ্গল নিহিত।

অন্যদিকে দ্বিতীয় স্তবকের কবি বাংলা ভাষা এবং এ ভাষায় রচিত কাব্যের মাধ্যমে তার প্রাণের পিপাসা নিবারণ করেন বলে মত প্রকাশ করেছেন। অন্য কোনো ভাষা কবির প্রাণের পিপাসা মেটাতে সক্ষম নয়। এখানেও মাতৃভাষা বাংলার প্রতি কবিহৃদয়ের অকৃত্রিম দরদ প্রকাশ পেয়েছে।

এদিক থেকে উদ্ধৃত স্তবক দুটির বক্তব্যে সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।

ঘ. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা এবং উদ্দীপকে মাতৃভাষার প্রতি চিরন্তন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে- মন্তব্যটি যথার্থ ।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি ভাষাপ্রীতির অনন্য সাক্ষ্য বহন করে। মধ্যযুগে এমন বলিষ্ঠ বক্তব্যের কবিতা বিরল। কবি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী কবিদের জন্য বাংলা ভাষাকেই কাব্যচর্চার আদর্শ বলে মনে করেন। এ ভাষাপ্রীতির মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে স্বদেশ, দেশের মানুষ ও নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি তার গভীর মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে নির্বাচিত এ কবিতার পঙক্তি দুটোতে কবিতার এ মূলভাব লক্ষণীয়।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় স্তবকেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। উদ্দীপকের প্রথম স্তবকে কবি পিতা-প্রপিতামহের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। এর মধ্য দিয়ে এ ভাষার প্রতি তার অনুপম শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে উদ্দীপকের দ্বিতীয় স্তবকে। সেখানেও মাতৃভাষার উপযোগিতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

‘বঙ্গবাণী” কবিতা ও উদ্দীপকের মৌল প্রেরণা মাতৃভাষার প্রতি কবিদ্বয়ের ভালোবাসা। এ কবিতায় যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে তাদের জন্মপরিচয় সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করেছেন কবি। পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এ ভাষার চর্চাই সবার জন্য হিতকর বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন। ভাষাপ্রেমের একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে উদ্দীপকের কবিতাংশ দুটিতে। প্রথম কবিতাংশের মতো দ্বিতীয় কবিতাংশের কবিও তার মাতৃভাষার প্রতি এতটাই অনুরক্ত যে তার প্রাণের পিপাসা বাংলা ভিন্ন অন্য কোনো ভাষায় মেটে না।

বিষয় ও ভাবের দিক থেকে উদ্দীপকের কবিতাংশদ্বয় এবং ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা এভাবেই সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ অর্থবহ।

বাংলা দ্বিতীয় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নরাসেল  সোহেল দুই বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। রাসেল বাংলাকে খুব ভালোবাসে এবং বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করে। অন্যদিকে সোহেলের বাংলা ভাষা  বাঙালি সংস্কৃতি তেমন পছন্দ নয়। উপরন্তু ইংরেজি জানা নিয়ে সে গর্ব করে। এতে রাসেল ক্ষুব্ধ হয়ে বলেআমরা বাঙালিবাংলা ভাষা আমাদের অহংকার।

ক. আবদুল হাকিম কোন যুগের অন্যতম প্রধান কবি?

খ. মারফত জ্ঞানহীনরা হিন্দুর অক্ষর হিংসা করে কেন?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার প্রেক্ষাপটগত সাদৃশ্য নিরূপণ করো।

ঘ. “রাসেলের উক্তিটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মনোভাবের ধারক”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. আবদুল হাকিম মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান কবি।

. মারফত জ্ঞানহীনরা তাদের অজ্ঞতার কারণে সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত হতে পারে না বলে বাংলা ভাষাকে হিন্দুর অক্ষর বিবেচনা করে হিংসা করে। কবি আবদুল হাকিমের সমসাময়িক কালে বাংলা ভাষাকে অনেকেই অবজ্ঞার চোখে দেখত। এ সময়ের মুসলিম কবিরা আরবি, ফারসি ভাষার প্রতি অধিক অনুরাগী ছিলেন। কবি তাদের এ ধরনের অনুরাগকে অজ্ঞতা বলে মনে করেন। তিনি মনে করেন, মারফত জ্ঞানের অভাবেই বিদ্বেষীরা বাংলা লিপিকে ‘হিন্দুর অক্ষর’ আখ্যা দিয়ে এ ভাষার নিন্দা করে। তাদের এ চেতনা সংকীর্ণতার পরিচায়ক। কবি মনে করেন, যাদের মারফত বা তত্ত্বজ্ঞানের অভাব আছে তারাই আরবি, ফারসির প্রতি অনুরাগবশত বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে।

. মাতৃভাষার প্রতি বিদ্বেষ ও ভালোবাসাপূর্ণ মনোভাবের স্বরূপ তুলে ধরার সূত্রে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার প্রেক্ষাপটগত সাদৃশ্য লক্ষিত হয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটিতে কবি মাতৃভাষার গুরুত্ব আলোচনার পাশাপাশি সমকালীন প্রেক্ষিতে মাতৃভাষার প্রতি কিছু মানুষের অবজ্ঞার চিত্রও তুলে ধরেছেন। প্রদত্ত উদ্দীপকের রাসেল ও সোহেলের মনোভাবের সঙ্গে এদিক থেকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মিল লক্ষ করা যায়। রাসেল ও সোহেল পরস্পর বন্ধু এবং দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তদুপরি মাতৃভাষার বিষয়ে তাদের মনোভাব বিপরীত। রাসেল বাংলা ভাষাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করে, পক্ষান্তরে সোহেল বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করা ছাড়াও ইংরেজি জানে বলে গর্ববোধ করে। মনোভাবের পার্থক্য বিস্তর বলেই রাসেল ইংরেজি নিয়ে সোহেলের মিথ্যা গর্ব প্রদর্শনে ক্ষুদ্ধ ও আহত হয়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার প্রেক্ষিত বিবেচনা করে রাসেল ও সোহেলের মনোভাবের যে পার্থক্য তার স্বরূপ অনুধাবন করা যেতে পারে। সমপর্যায়ের অবস্থানে থেকেও রাসেল ও সোহেলের মধ্যে যেমন মাতৃভাষা বিষয়ক মনোভাবের বৈপরীত্য, একইরকম বৈরী মনোভাব কবির সমকালীন সমাজেও বিদ্যমান ছিল। সমাজের একটি অংশের এমন হীন মনোভাবের প্রেক্ষিতে কবি আলোচ্য কবিতাটির মাধ্যমে তার অবস্থান স্পষ্ট করেন।

এদিক থেকে উদ্দীপকটির সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।

. রাসেলের উক্তিটি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মনোভাবের ধারক মন্তব্যটি যথার্থ ।

সপ্তদশ শতকের প্রেক্ষাপটে সমাজজীবনে, বিশেষ করে ধর্মতত্ত্ব ও ধর্মীয় উপদেশ প্রচারের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বাংলা ভাষা ছিল ব্যাপকভাবে অবহেলিত। ভাষা, ইতিহাস, ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে গভীর জ্ঞান ও দূরদৃষ্টির অধিকারী কবি আবদুল হাকিম সে অবস্থায় মাতৃভাষার মর্যাদাকে বলিষ্ঠতার সাথে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় তুলে ধরেছেন।

উদ্দীপকের রাসেলের মনোভাব প্রকারান্তরে কবির উজ্জ্বল চেতনাবোধেরই প্রকাশ। একজন মানুষের সত্যিকার অহংকার তার আত্মপরিচয়ের মধ্যে নিহিত। মানুষের আত্মপরিচয় লাভের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে বিবেচ্য মা এবং মাতৃভূমি। উদ্দীপকের রাসেল এবং ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির বক্তব্য এই যে আমাদের সংস্কৃতির প্রকৃত গৌরব এ বাংলা ভাষা। তাই বাংলা ভাষার প্রতি অবজ্ঞাকারীদের জন্মপরিচয় সম্পর্কে কবি প্রশ্ন তুলেছেন। তাছাড়া এদেশে জন্ম নিয়েও স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি মমত্ব নেই বলে তাদের দেশ ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। কবি মনে করেন, দেশি ভাষায় প্রদত্ত যেকোনো উপদেশ আমাদের মনকে সহজেই স্পর্শ করে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার প্রসঙ্গ বিবেচনা করলে বাংলা ভাষার প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা লক্ষ করা যায়। প্রদত্ত উদ্দীপকে রাসেলের উক্তির মধ্যেও অনুরুপ মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞার প্রেক্ষিতে কবি যেমন বাংলা ভাষার তাৎপর্য তুলে ধরেছেন, রাসেলও অনুরূপ মানসিকতা ধারণ করে প্রদত্ত উক্তিটি করেছে। বস্তুত বাঙালির জীবনে বাংলা ভাষার চেয়ে অহংকার করার মতো আর কিছু নেই। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ ।

প্রশ্নশিল্পপতি ইকবাল আহমেদ তার চালচলনেকথাবার্তায় ইংরেজিয়ানায় গর্বিত। ছেলেমেয়েদেরও তিনি ইংরেজি স্কুলে পড়ান। স্ত্রী দিনা বাংলা সাহিত্যের অনুরাগীরবীন্দ্রসংগীত  লালনগীতির একান্ত ভক্ত। দিনার মতেবাংলা ভাষা  সংস্কৃতি বাঙালির অস্তিত্নেরই অংশ। এজন্য ইকবাল আহমেদ স্ত্রীর প্রতি বিরক্ত। তিনি স্ত্রীর  মানসিকতাকে অবজ্ঞা  অবহেলার চোখে দেখেন।

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

খ. ‘সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন’— বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকে ইকবাল আহমেদের যে মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে কবির মনোভাব আলোচনা করো।

ঘ. দিনার মানসিকতা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মানসিকতাকেই সমর্থন করে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতাটি ‘নূরনামা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

. সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে ‘নিরঞ্জন’ বলতে কবি বুঝিয়েছেন, যে ভাষাতেই স্রষ্টাকে স্মরণ করা হোক না কেন যেহেতু তিনি সর্বজ্ঞ তাই সকল ভাষাই তিনি অনুধাবনে সক্ষম। মহান সৃষ্টিকর্তার পক্ষে যেকোনোদেশের যেকোনো ভাষাই হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব। কবি মনে করেন, ধর্মজ্ঞানী মাত্রই একথা জানেন যে যেকোনো ভাষায় প্রার্থনা করাতে কোনো সমস্যা নেই। মানুষের ভাষিক ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তারই অনুগ্রহ। ফলে অন্তরের ভক্তি নিবেদনের জন্য যেকোনো ভাষাই কার্যকর হতে পারে। প্রশ্নোক্ত চরণটি দ্বারা কবি একথাই বোঝাতে চেয়েছেন।

. উদ্দীপকের ইকবাল সাহেবের মতো মানুষদের মাতৃভাষার প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের প্রতি ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আবহে বেড়ে ওঠা ইকবাল আহমেদের মতো মাতৃভাষার প্রতি বিরাগ ও বিদ্বেষ পোষণকারী যেকোনো ব্যক্তির প্রতিই কবির। স্পষ্ট ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায়। কবি তাঁর ক্ষুব্ধতার প্রকাশ হিসেবে তাদের বংশ ও জন্মপরিচয় সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।

উদ্দীপকের ইকবাল আহমেদ তার চালচলন, কথাবার্তা ও জীবনধারার ক্ষেত্রে ইংরেজিয়ানায় বিশ্বাসী। ছেলেমেয়েদের তিনি ইংরেজি স্কুলে পড়ান। এমনকি মাতৃভাষা বাংলা এবং বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত থাকায় স্ত্রী দিনার প্রতিও তিনি বিরক্ত। এ বিষয়গুলো থেকে স্পষ্টভাবেই বাংলা ভাষা, বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি তার অবজ্ঞা ও বিদ্বেষ প্রমাণিত হয়। বাবাণী’ কবিতায় এ ধরনের মানসিকতার প্রতি কৰি শ্লেষ প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তার সুস্পষ্ট অভিমত হলো, মাতৃভাষাকে মনে স্থান না দিতে পারলে মানুষদের উচিত মাতৃভূমি ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়া।

কবির এ অভিমতের নেপথ্যে মূলত ইকবাল আহমেদের মতো মানুষদের মানসিকতার প্রতি তীব্র সমালোচনা, ক্ষোভ ও স্পষ্ট ঘৃণা প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. “দিনার মানসিকতা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মানসিকতাকেই সমর্থন করে”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

কবি আবদুল হাকিমের সমসাময়িককালে এদেশের রাজভাষা ছিল ফারসি। ইসলাম ধর্ম-বিষয়ক আলোচনা ও বইপত্রে ছিল আরবি-ফারসি ভাষার প্রাধান্য। এমন প্রেক্ষিতেও কবি জীবনাচরণের ক্ষেত্রে এমনকি ধর্মীয় আলোচনাতেও মাতৃভাষা বাংলার গুরুত্ব গভীরভাবে অনুধাবন করেছেন। তিনি মনে করেন, যেকোনো ভাষাতেই সৃষ্টিকর্তার বন্দনা করা যেতে পারে।

উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পপতি ইকবাল আহমেদের স্ত্রী দিনার সময়কাল ও প্রেক্ষিত ‘বঙ্গবাণী’ কবিতা থেকে আলাদা। তার স্বামী ইংরেজি ভাষা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অন্ধ দাসত্বের শিকার। মাতৃভাষার প্রতি তার বিদ্বেষ ও অবজ্ঞা তাই গোপন নয়। কিন্তু দিন বাংলা সাহিত্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন ফকিরের গানের প্রতি অনুরাগী। তিনি মনে করেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বাঙালির অস্তিত্বেরই অংশ। সে হিসেবে দিনার মানসিকতা স্পষ্টতই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে কবির মানসিকতাকে সমর্থন করে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি তার সমকালীন প্রেক্ষাপটে মাতৃভাষা বাংলার গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে যুগান্তকারী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন। মানুষের সাথে মাতৃভাষার সম্পর্ক তার জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নির্বিশেষে যুগযুগান্তর ধরে কাজ করে। মাতৃভাষার এ গভীর ও বিস্তৃত চেতনাই ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে। কবিতার অন্তরালে এ বিষয়ে কবির মনোভাব ও দিনার মনোভাব উপলব্ধিগতভাবে একই।

সে বিবেচনায় দিনার মানসিকতা কবির মানসিকতাকেই সমর্থন করে। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন : করিম সাহেব বাংলা ভাষাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। তিনি মনে করেনএকটি জাতির শ্রেষ্ঠ পরিচয় হচ্ছে তার ভাষা। হাজার বছরের প্রত্যাশা  হাসিকান্নার ইতিহাস নিয়ে গড়ে ওঠা মাতৃভাষাকে যারা অশ্রদ্ধা করেতারা জননীকেই অশ্রদ্ধা করে। তারা শিকড়হীন পরগাছা। তিনি দুঃখের সাথে আরও বলেনমাতাপিতামহের ভাষা যুগ যুগ ধরে রক্তধারার সঙ্গে মিশে আছে। যে ধারায় গড়ে উঠেছে নিজ ঐতিহ্য  সংস্কৃতি তা নিতান্তই নিজস্ব সম্পদ।  ভাষা পরিত্যাগ করে যারা বিদেশি ভাষার দ্বারস্থ হয় তারা পথভ্রষ্ট।

ক. কবি আবদুল হাকিম কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

খ. বঙ্গবাণী’ কবিতায় হিন্দুর অক্ষর বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের করিম সাহেবের মনোভাবের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মনোভাবের সাদৃশ্য আলোচনা করো।

ঘ. ‘যারা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে তারা জননীকেই অবজ্ঞা করে’- উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. কবি আবদুল হাকিম আনুমানিক ১৬২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

. ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় ‘হিন্দুর অক্ষর’ বলতে কবি বাংলা ভাষাকে বুঝিয়েছেন। বাংলা ভাষার উৎস বৈদিক ভাষা যা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মগ্রন্থ বেদ থেকে এসেছে। তাই কতিপয় অজ্ঞ মুসলিম লেখক বাংলা ভাষাকে হিন্দুর অক্ষর বলে অবজ্ঞা করতেন। আরবি-ফারসি ভাষায় আল্লাহ মহানবি (স.)-এর স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে বলে তারা এ দুটো ভাষাকে অতিরিক্ত শ্রদ্ধা করতেন। আসলে অজ্ঞতা ও সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা বাংলা অক্ষরকে ‘হিন্দুর অক্ষর’ বলে বিবেচনা করতেন।

. মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও এ ভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করার দিক থেকে উদ্দীপকের করিম সাহেবের মনোভাবের সঙ্গে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মনোভাবের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার যুগ ও প্রেক্ষিত উদ্দীপক থেকে ভিন্ন। মধ্যযুগে ধর্মীয় চেতনার বাহন হিসেবে আরবি-ফারসির বহুল প্রচলন ছিল। এ প্রেক্ষিতে ধর্মতত্ত্ব ও দর্শনের গভীর বিশ্লেষণ সাপেক্ষেই কবি মাতৃভাষার তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। মাতৃভাষার গুরুত্বের ব্যাপারে কবির এমন মনোভাবের সঙ্গে উদ্দীপকের করিম সাহেবের মানসিকতার সাদৃশ্য রয়েছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবি মাতৃভাষার প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত। কেননা এ ভাষায় যেকোনো হিতোপদেশ সাধারণ মানুষের কাছে সহজেই বোধগম্য হয়। একইভাবে করিম সাহেবও মনে করেন, একটি জাতির শ্রেষ্ঠ পরিচয় তার ভাষা। মাতৃভাষার প্রতি অবজ্ঞা করাকে কবি কোনোভাবেই সহ্য করতে পারেন না। এমনকি মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের জন্মপরিচয় নিয়ে তিনি সন্দেহ পোষণ করেন এবং তাদের দেশত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

করিম সাহেবও মনে করেন, মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীরা পথভ্রষ্ট এবং তারা পক্ষান্তরে জননীকেই অশ্রদ্ধা করে। দীর্ঘকালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিকাশের ধারায় মাতৃভাষাকে তিনি নিজস্ব সম্পদ বলে মনে করেন। এদিক থেকেও কবির সাথে তার মনোভাব সাদৃশ্যপূর্ণ। কেননা কবিও পুরুষানুক্রমে চলে আসা এদেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের দিকটিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

. ‘যারা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে তারা জননীকেই অবজ্ঞা করে’- ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি যুক্তিযুক্ত।

মানুষের জন্মের সাথে যেমন মায়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য, তেমনই মায়ের মুখের ভাষা অবলম্বন করেই আমরা জগৎসংসারে বেড়ে উঠি। জন্ম ও বিকশিত হওয়ার পেছনে তাই মা ও মাতৃভাষার ভূমিকা সমান্তরাল। ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষা অবজ্ঞাকারীদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ নিয়ে কবি তাদের জন্মপরিচয়ের প্রসঙ্গ টেনেছেন। সুতরাং ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার মর্মার্থ বিবেচনা করলে প্রদত্ত উদ্দীপকের উক্তিটির তাৎপর্য স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়।

মাতৃভাষার সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক মা-মাতৃভূমির মতোই নিবিড়। মাতৃভাষা বংশানুক্রমিকভাবে একটি জাতির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখ মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় বলে তা জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ ও গৌরবের বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। মাতৃভাষাপ্রেমিক করিম সাহেব তাই মনে করেন, মাতৃভাষাকে যারা অশ্রদ্ধা করে তারা জননীকেই অশ্রদ্ধা করে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় মাতৃভাষার তাৎপর্য তুলে ধরে কবি মাতৃভাষার প্রতি অবজ্ঞাকারীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পুরুষানুক্রমে মাতৃভাষায় বিকশিত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি মানুষের জীবনযাপনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। কবি তাই মাতৃভাষার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীদের সম্পর্কে চরম ঘৃণাভরে তাদের জন্মপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। কেননা মাতৃভাষাতেই মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, হিতোপদেশ এমনকি প্রার্থনাও সফল হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে দেশপ্রেমিক মাত্রই মা-মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে এক করে দেখেন।

কেননা মাতৃভূমির অন্ন-জলে লালিত হয়ে মানুষ মাতৃভাষাতেই জ্ঞান সাধনা করে প্রাণবান মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। এ ভাষার মধ্য দিয়ে আমাদের বক্তব্য স্ফূর্তি লাভ করে। তাই মাতৃভাষাকে অবহেলা করা মাকে অবহেলা করারই নামান্তর। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন : জমির মিয়া মালয়েশিয়া গিয়ে বেশিদিন থাকতে পারেনি। কেননা ওখানকার লোকজনের ভাষা সে বোঝে না। সেও নিজের মনের কোনো কথা বলে ওদেরকে বোঝাতে পারে না। মনের ভাব প্রকাশ করতে না পেরে তার অনেক কষ্ট হয়। বাংলা ভাষায় কথা বলতে তার মন সব সময় ছটফট করতে থাকায় দেশে চলে আসতে বাধ্য হয়।

ক. আবদুল হাকিম কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

খ. কবি বাংলা ভাষায় কাব্য রচনা করেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার যে দিকটি প্রকাশিত হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের ভাবধারাই যেন কবি নানা ব্যঞ্জনায় প্রকাশ করতে চেয়েছেন বিশ্লেষণ করো।

 নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. আবদুল হাকিম ১৬৯০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

খ. সাধারণ মানুষের অনুরোধে, সাধারণ মানুষকে খুশি করতে কবি বাংলা ভাষায় কাব্য রচনা করেছেন। কাব্য রচনার পেছনে কবির উদ্দেশ্য থাকে অন্যের কাছে প্রশংসিত হওয়া। কবি যদি জনসাধারণের ভাষা রেখে অন্য ভাষায় কাব্য রচনা করেন তাহলে কেউ তা বুঝবে না। অন্যের কাছে সমাদৃত হওয়া ও গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া সম্ভব হবে না। তাই কবি বাংলা ভাষায় কাব্য রচনা করেছেন।

বাংলা প্রথম পত্র নিমগাছ সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. উদ্দীপকে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি অনুরাগী মনোভাবই ফুটে উঠেছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি কবির গভীর অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। কবি এদেশের জনগণকে আনন্দ দানের জন্য, তাদের বোধগম্য করার জন্য বাংলায় গ্রন্থ রচনা করতে চান। কারণ বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। মাতৃভাষায় বর্ণিত বক্তব্যই আমাদের মর্ম স্পর্শ করে। মাতৃভাষা ছাড়া তার লেখার কোনো মূল্য নেই বলেই কবি মনে করেন।

উদ্দীপকের জমির মিয়া মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর সেখানে তার ভালো লাগে না। সেখানে সে মনের ভাব প্রকাশের জন্য কাউকে পায় না। কারণ সেখানে কেউ বাংলা ভাষা বােঝে না। উদ্দীপকের জমির মিয়ার মাঝে আমরা বাংলা ভাষার জন্য এক তীব্র আকুলতা দেখতে পাই। এই আকুলতা আলোচ্য কবিতার কবির প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে প্রকাশিত হয়েছে।

. উদ্দীপকের ভাবধারায় মাতৃভাষার প্রতি ব্যাকুলতা প্রকাশিত হয়েছে যা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি নানা ব্যঞ্জনায় প্রকাশ করতে চেয়েছেন।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি পুরো কবিতা জুড়েই মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন। তিনি অন্য ভাষার প্রতি বিদ্বেষী নন। কিন্তু বাংলা ভাষার প্রতি অবজ্ঞাকারীকে তিনি কোনােভাবেই ছাড় দিতে চান না। উদ্দীপকের জমির মিয়া মাতৃভাষার প্রতি এতই অনুরাগী যে সে মালয়েশিয়ায় থাকতে পারেনি। সে বাংলায় কথা বলতে না পেরে ছটফট করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই ফিরে আসে। বাংলা ভাষার প্রতি তীব্র অনুরাগ ছিল বলেই তার এইরকম পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়। আলোচ্য কবিতা ও উদ্দীপকে একই ভাবধারার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই।

উদ্দীপকের ভাবধারায় মাতৃভাষার প্রতি তীব্র অনুরাগী এক বাঙালি জমির মিয়াকে দেখতে পাই আমরা। আলোচ্য কবিতার কবিও নানা ব্যঞ্জনায় সেই ভাবধারাকেই প্রকাশ করতে চেয়েছেন। এজন্য তিনি সেই সকল মানুষের কথা বলেছেন যারা বাংলাকে অবজ্ঞা করে। তিনি স্রষ্টার কথা বলেছেন যিনি সবার মাতৃভাষাই বোঝেন। কবি নিজ ভাষায় সাহিত্যচর্চাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন।

এভাবে নানা ব্যঞ্জনায় কবি যে ভাবকে প্রকাশ করেছেন তাই উদ্দীপকের ভাব।

প্রশ্ন–১০ : আবির সারাদিন ভারতীয় টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখে।এখন বাংলা ভাষা তার ভালো লাগে না। হিন্দি ভাষায় অনবরত কথা বলে। মা–বাবা, বন্ধু–বান্ধব সকলের সাথে হিন্দি ভাষাতেই কথা বলার চেষ্টা করে সে। তার বন্ধু তমাল একদিন তার এমন আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করে বলে, তোর ভারতেই চলে যাওয়া উচিত।

ক. কোন শাস্ত্রের প্রতি কবির রাগ নেই?

খ. ‘সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. আবিরের আচরণে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. “তমালের কথা যেন ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ”- কথাটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।

১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. আরবি ফারসি শাস্ত্রের প্রতি কবির রাগ নেই।

. সৃজনশীল প্রশ্ন ৭(খ) নম্বর উত্তর দ্রষ্টব্য।

. আবিরের আচরণে ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার অন্য ভাষার প্রতি অনুরাগে বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করার দিকটি ফুটে উঠেছে।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবি এমন মানুষের কথা বলেছেন যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেও বাংলা ভাষাকে ভালোবাসে না। শুধু যে ভালোবাসে না তাই নয় এরা বাংলাকে অবজ্ঞা করে। তাদের আচরণে তারা বাংলার প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করে। তাদের মনে স্বদেশ ও স্বভাষার প্রতি কোনো অনুরাগ নেই।

উদ্দীপকের আবিরের আচরণে আলোচ্য কবিতার নিজ ভাষার প্রতি উদাসীন ও অবজ্ঞাকারীদের চিত্র ফুটে উঠেছে। আবিরের নিজ ভাষা ভালো লাগে না, বরং হিন্দি ভাষার প্রতিই সে বেশি আকৃষ্ট। তার বাংলা ভাষার প্রতি সেই মমতা নেই, যা আছে হিন্দি ভাষার প্রতি। তার এই নিজ ভাষার প্রতি বিদ্বেষী আচরণ আলোচ্য কবিতায় সেই সকল বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষী মানুষগুলোর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

কবিতায় বলা হয়েছে বাংলা ভাষার প্রতি বিরূপ মনোভাবের মানুষগুলোর কথা। আর আবিরের আচরণও ঠিক তার অনুরূপ।

. তমালের কথা যেন ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ’- কথাটি যথার্থ।

‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কবি এক শ্রেণির মানুষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, যারা বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। কবি এদের বংশ ও জন্মপরিচয় সম্পর্কে সন্দিহান। এরা এই দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশ চলে যায় না কেন- তাই বলেছেন কবি।

উদ্দীপকের আবির নিজ দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনকারী। সে হিন্দি ভাষার প্রতি অনুরাগী, হিন্দি ভাষাই ব্যবহার করতে চায়। আবিরের বন্ধু তমাল তার প্রতি বিরক্ত। সে আবিরকে ভারতে চলে যেতে বলে। অন্য দেশের প্রতি যেহেতু এতোই অনুরাগ তাহলে কেন অন্য দেশে চলে যায় না! আলোচ্য কবিতায় উল্লিখিত বাংলা ভাষার প্রতি অবজ্ঞাকারী ও উদ্দীপকের আবির একই রকম মানসিকতার অধিকারী। আবির হিন্দি ভাষার প্রতি অনুরাগী। তেমনি আলোচ্য কবিতার কবি শিকড়হীন পরগাছা স্বভাবের মানুষ সম্পর্কে বলেছেন। এদের পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি কবি এদের তীব্র ক্রোধে বলেছেন, “নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়।’

যেহেতু দেশের প্রতি তাদের এতই বিরাগ সেহেতু এই সকল মানুষকে কবি এদেশ পরিত্যাগ করে অনত্র চলে যেতে বলেছেন। তাই আলোচ্য কথাটি বাস্তবিকই যথার্থ ।

আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল প্লেলিস্ট

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply