নবম দশম শ্রেণি – বাংলা প্রথম নোট
মানুষ মুহম্মদ (স.)
মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী [১৮৯৬–৪৯৫৪]
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
লেখক সম্পর্কিত তথ্য
জন্ম : মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ১৮৯৬ সালে ১৩০৩ বঙ্গাব্দের ২৮শে ভাদ্র সাতক্ষীরা জেলার বাঁশদহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মৃত্যু : তিনি ১৯৫৪ সালের ৮ই নভেম্বর সাতক্ষীরায় মৃত্যুবরণ করেন।
শিক্ষাজীবন : তিনি কলকাতা বঙ্গবাসী কলেজে বিএ ক্লাসের ছাত্র থাকাকালীন অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন এবং এখানেই তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
কর্মজীবন : মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। তিনি ‘দৈনিক মোহাম্মদী’, ‘মাসিক মোহাম্মদী’, দৈনিক সেবক’, ‘সাপ্তাহিক খাদেম’, ‘সাপ্তাহিক সওগাত’, ‘দি মুসলমান’ প্রভৃতি পত্রিকায় কাজ করেন।
সাহিত্যিক পরিচয় : ওয়াজেদ আলীর রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সহজ-সরল প্রকাশভঙ্গি। তাঁর গদ্যশৈলী ঋজু, রচনা সাবলীল।
প্রবন্ধগ্রন্থ প্রবন্ধগ্রন্থ: মরুভাস্কর।
জীবনীগ্রন্থ: সৈয়দ আহমদ, মহামানুষ মুহসীন, ছোটদের হযরত মুহম্মদ।
অনুবাদকর্ম: স্মার্ণানন্দিনী (ডটার অব স্মার্ণা’র অনুবাদ)।
প্রবন্ধ সম্পর্কিত তথ্য উৎস: ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর ‘মরু ভাস্কর’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। ‘মরু ভাস্কর’ একটি প্রবন্ধ-সংকলন।
মূলবক্তব্য: হযরত মুহম্মদ (স.)-এর ইন্তেকালের পর অনুসারীগণের মধ্যে যে বেদনা ও হতাশা দেখা দিয়েছিল, তা সংবরণ করার জন্য হযরত আবুবকর (রা.) আল্লাহর বাণী ও মহানবি (স.)-এর জীবনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে তাদের প্রচণ্ড শোককে শক্তিতে পরিণত করতে উৎসাহিত করেন। হযরত আবুবকর (রা.)-এর বক্তব্যে সবার বোধোদয় হয়। তিনি মহানবি (স.)-এর জীবনাচরণকে সবার নিকট অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেন। হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন মানুষের নবি। একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে মানুষের পক্ষে যা আচরণীয় তারই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তিনি। তার জীবনের সমগ্রটাই ছিল মানবজাতির কল্যাণে নিয়োজিত। তার ছিল অপূর্ব কান্তশ্রী। তার ব্যবহার ছিল অমায়িক, চরিত্র ছিল নির্মল । শত্রুর নির্মম অত্যাচারে জর্জরিত হয়েও তিনি অভিশাপ দেননি, বরং পাপীদের ভালোবেসেছেন। সত্য প্রচারে তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও অটল। ধৈর্য ও সহনশীলতায় তিনি ছিলেন অনন্য। তিনি ছিলেন নিরহংকার এবং তাঁর জীবনযাপন ছিল অতি সাধারণ। রাজা হয়েও নিঃস্ব কাঙালের বেশে তিনি এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। নেতৃত্ব, সাহস, শৌর্য, ত্যাগ, প্রেম, সাধুতা, সৌজন্য, ক্ষমা, আত্মবিশ্বাস, দূরদৃষ্টি, সমদর্শন প্রভৃতি মানবীয় গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র: হযরত মুহম্মদ (স.), হযরত আবুবকর (রা.), হযরত ওমর (রা.), বিবি আয়েশা (রা.)।
রূপশ্রেণি: মানুষ মুহম্মদ (স.) একটি জীবনচরিতমূলক প্রবন্ধজাতীয় রচনা।
নামকরণ: বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে প্রবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে। প্রবন্ধটিতে মুহম্মদ (স.)-এর মানবীয় গুণাবলি বিশ্লেষণাত্মকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। শিরোনামটি তাই যথার্থ ।
গদ্যরীতি: ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধটিতে সাধু গদ্যরীতি অনুসৃত হয়েছে।
• জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রশ্ন–১. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর ‘মরু ভাস্কর’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন–২. তায়েফের অবস্থান কোথায়?
উত্তর: তায়েফের অবস্থান সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলে।
জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৩. ‘পৌত্তলিক‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘পৌত্তলিক’ শব্দের অর্থ মূর্তিপূজক।
প্রশ্ন–৪. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর জন্ম কত সালে?
উত্তর: মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর জন্ম ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে।
প্রশ্ন–৫. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কত সালে কলকাতা ছেড়ে বাঁশদহ ফিরে আসেন?
উত্তর: মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ১৯৩৫ সালে কলকাতা ছেড়ে বাঁশদহ ফিরে আসেন।
প্রশ্ন–৬. ‘মরু ভাস্কর‘ গ্রন্থের লেখক কে?
উত্তর: ‘মরু ভাস্কর’ গ্রন্থের লেখক মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী।
প্রশ্ন–৭. সকলের মহাযাত্রা কার দিকে?
উত্তর: আল্লাহর দিকেই সকলের মহাযাত্রা।
প্রশ্ন–৮. মহানবি কোন গুণ দ্বারা মানুষের মন আকর্ষণ করেছিলেন?
উত্তর: মানবীয় গুণাবলি দ্বারা তিনি সকলের মন আকর্ষণ করেন।
প্রশ্ন–৯. হযরত মুহম্মদ (স.) মানুষের দ্বারে দ্বারে কীসের বাণী বহন করছেন?
উত্তর: হযরত মুহম্মদ (স.) মানুষের দ্বারে দ্বারে সত্যের বাণী বহন করছেন।
প্রশ্ন–১০. কার শিথিল অঙ্গ মাটিতে লুটাল?
উত্তর: হযরত ওমর (রা.)-এর শিথিল অঙ্গ মাটিতে লুটাল।
প্রশ্ন–১১. আয়েশা (রা.) কার কন্যা ছিলেন?
উত্তর: আয়েশা (রা.) হযরত আবুবকর (রা.)-এর কন্যা ছিলেন।
প্রশ্ন–১২. কার গম্ভীর উক্তিতে সকলের চৈতন্য হয়েছিল?
উত্তর: হযরত আবুবকর (রা.)-এর গম্ভীর উক্তিতে সকলের চৈতন্য হয়েছিল।
প্রশ্ন–১৩. কখনো অভিশাপ দেওয়ার চিন্তা কার অন্তরে উদিত হয়নি?
উত্তর: কখনো অভিশাপ দেওয়ার চিন্তা হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অন্তরে উদিত হয়নি।
প্রশ্ন–১৪. যখন দেখা গেল কোরেশরা সত্যকে গ্রহণ করবে না, তখন হযরত মুহম্মদ (স.) কী করলেন?
উত্তর : যখন দেখা গেল কোরেশরা সত্যকে গ্রহণ করবে না তখন হযরত মুহম্মদ (স.) মদিনায় চলে গেলেন।
প্রশ্ন–১৫. কাদের ছিন্ন মুণ্ডু আনার জন্য বিপুল পুরস্কারের লোভ দেখানো হয়েছিল?
উত্তর: হযরত মুহম্মদ (স.) ও হযরত আবুবকর (রা.)-এর ছিন্ন মুণ্ডু আনার জন্য বিপুল পুরস্কারের লোভ দেখানো হয়েছিল।
প্রশ্ন–১৬. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনায় মজলিসের একপ্রান্তে কে বসে ছিল?
উত্তর: ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনায় মজলিসের একপ্রান্তে একজন অন্ধ বসে ছিল।
প্রশ্ন–১৭. ‘যে বলিবে হযরত মরিয়াছেন, তাহার মাথা যাইবে‘—উক্তিটি কার?
উত্তর: ‘যে বলিবে হযরত মরিয়াছেন, তাহার মাথা যাইবে’ – উক্তিটি বীরবাহু ওমর (রা.)-এর।
প্রশ্ন–১৮. হযরত মুহম্মদ (স.) আবাল্য কী ছিলেন?
উত্তর: হযরত মুহম্মদ (স.) আবাল্য আল-আমিন ছিলেন।
প্রশ্ন–১৯. আবু মা’বদ কী চরাতেন?
উত্তর: আবু মা’বদ মেষপাল চরাতেন।
প্রশ্ন–২০. ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো‘ এই প্রার্থনা করেছিলেন?
উত্তর: ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো’ এই প্রার্থনা করেছিলেন হযরত মুহম্মদ (স.)।
প্রশ্ন–২১. ‘অরাতি‘ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘অরাতি’ অর্থ শত্রু।
প্রশ্ন–২২. ‘সমাচ্ছন্ন‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘সমাচ্ছন্ন’ শব্দের অর্থ অভিভূত।
• অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর •
প্রশ্ন–১. মানুষের একজন হইয়াও তিনি দুর্লভ’– কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: হযরত মুহম্মদ (স.) তাঁর অনুকরণীয় আদর্শ এবং অনন্য সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। হযরত মুহম্মদ (স.) মানব জাতির কল্যাণে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেছেন। সমগ্র মুসলিম সাম্রাজ্যের অধিনায়ক হয়েও তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। ক্ষমা, মহত্ত্ব, প্রেম, দয়া প্রভৃতি উচ্চ মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তাঁর চরিত্র অনন্য মাত্রা লাভ করেছিল। তাঁর সাধনা, ত্যাগ ও কল্যাণ চিন্তা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একজন মানুষের মধ্যে একইসঙ্গে এসব গুণের সমাহার সত্যিই দুর্লভ। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে তাঁর সে দুর্লভ মানবিক সত্তার পরিচয়ই ফুটে উঠেছে।
প্রশ্ন–২. খাদিজা (রহ)-এর হযরত মুহম্মদ (স.)-কে পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর বিশ্বস্ততা, সততা, নিষ্ঠা ও চারিত্রিক মাধুর্য দেখে বিবি খাদিজা (রা.) তাকে পছন্দ করেছিলেন। হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন মহামানব। মানবতার শ্রেষ্ঠ গুণাবলির অধিকারী। তিনি ছিলেন অসাধারণ বিশ্বস্ত, আমানতদার, সদালাপন ও সত্যভাষী। তার দৈহিক সৌন্দর্যও ছিল মানবিক সৌন্দর্যের মতো আকর্ষণীয়। হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, মহানুভবতা হযরত খাদিজা (রা.)-কে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। তাই তিনি তাঁকে সার্বিকভাবে পছন্দ করেন।
প্রশ্ন–৩. অন্ধ লোকটির প্রতি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর বিরক্তির কারণ কী?
উত্তর: অন্ধ লোকটি বক্তৃতার মাঝখানে প্রশ্ন করায় হযরত মুহম্মদ (স.) ঈষৎ বিরক্ত হয়েছিলেন। মক্কার সম্রান্ত লোকদের কাছে হযরত মুহম্মদ (স.) সত্যের বাণী প্রচার করছেন। এমন সময় মজলিসের এক প্রান্তে বসা একজন অন্ধ লোক মহানবি (স.)-এর দু-একটি কথা শুনতে না পেয়ে বক্তৃতার মাঝখানে প্রশ্ন করে থামিয়ে দেয়। প্রবহমান বক্তৃতায় ছেদ পড়ায় অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মুখে সামান্য বিরক্তির ভাব ফুটে ওঠে।
বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৪. তিনি আজ জীবন–নদীর ওপারে চলিয়া গেলেন। এখানে ‘জীবন–নদীর ওপারে‘ কথাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জীবন নদীর ওপারে কথাটির মাধ্যমে মহানবি (স.)-এর মহাপ্রয়াণের কথা বলা হয়েছে।
জীবন-নদীর ওপারে’ বলতে মুহম্মদ (স.)-এর ইহলোক ত্যাগ করে | পরলোকে চলে যাওয়াকে বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ প্রেরিত বিশ্বমানবের ত্রাণকর্তা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরম করুণাময়ের নিকট চলে গেলেন। সে কথাই বোঝানো হয়েছে উদ্ধৃত উক্তিটির মাধ্যমে।
প্রশ্ন-৫. মুহম্মদ (স.)-এর প্রতি শত্রুদের বৈরী আচরণের পরিচয় দাও। উত্তর: মুহম্মদ (স.)-এর প্রতি শত্রুরা লোষ্টাঘাত, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, পাথর নিক্ষেপসহ নানারূপ অন্যায়, অত্যাচার করত। অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত মক্কার বিপথগামী পৌত্তলিকদের মাঝে ইসলামের সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের বাণী প্রচারকালে নানাবিধ বৈরী আচরণের সম্মুখীন হতে হয়েছিল হযরত মুহম্মদ (স.) কে। শত্রুর পাথর নিক্ষেপে বারবার তিনি রক্তাক্ত হয়েছেন। তার চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখা হতো। মক্কার পথে-প্রান্তরে শত্রুরা কাঁটা বিছিয়ে, পাথর নিক্ষেপ করে তাকে নানাভাবে নির্যাতন করত । অসহনীয় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ ও অকথ্য অশ্লীল গালিগালাজ করত।
প্রশ্ন–৬. আমি এমন এক নারীর সন্তান, সাধারণ শুষ্ক মাংসই ছিল যাহার নিত্যকার আহার্য—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: হযরত মুহম্মদ (স.) তার সাধারণত্ব প্রমাণ করতেই উপযুক্ত উক্তিটি উচ্চারণ করেছেন। একদিন সত্যান্বেষী মানুষকে দীক্ষা দেওয়ার সময় একজন মানুষ হযরত মুহম্মদ (স.)-এর নিকট এসে ভয়ে কাঁপতে থাকলেন। হযরত মুহম্মদ (স.) তাকে অভয় দেন। তিনিও যে সাধারণ মানুষ তা তাকে বুঝিয়ে বলেন। তিনি তার দুঃখ বেদনার কথা তুলে ধরতেই উচ্চারণ করেন যে, ‘আমি এমন এক নারীর সন্তান সাধারণ শুষ্ক মাংসই ছিল যাহার নিত্য আহার্য।
প্রশ্ন–৭. মুহম্মদ (স.) একজন রাসুল বৈ আর কিছু নয়।‘ – উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘মুহম্মদ (স.) একজন রাসুল বৈ আর কিছু নয়’- উক্তিটি দ্বারা মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.) এর মরণশীলতাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। হযরত মুহম্মদ (স.)- এর মৃত্যুর পর তার ভক্ত অনুসারীগণ পাগলের মতো কাণ্ড শুরু করলে মহামতি আবুবকর জনতার সাথে দাড়িয়ে। তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, হযরত মুহম্মদ (স.) একজন রাসুল বৈ সে আর কিছু নয়। তার পূর্বে আরও অনেক রাসুল মারা গেছেন। সুতরাং, হযরত মুহম্মদ (স.)এর মৃত্যু অস্বাভাবিক নয়। উক্তিটি দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।
* তথ্যকণিকা *
১. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী জন্মগ্রহণ করেন – ১৮৯৬ সালে ।
২. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর জন্ম – ১৩০৩ বঙ্গাব্দে ।
৩. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর জন্মস্থান – সাতক্ষীরা জেলার বাঁশদহ গ্রাম ।
8. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী পেশায় – সাংবাদিক ছিলেন।
৫. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কাজ করেন – ‘দৈনিক মোহাম্মদী’ পত্রিকায়।
৬. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন – বি.এ. ক্লাসের ছাত্র থাকাকালে ।
৭. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর গদ্যশৈলী – ঋজু ও সাবলীল ।
৮. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর প্রবন্ধগ্রন্থ – মরু ভাস্কর।
৯. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী মৃত্যুবরণ করেন – ১৯৫৪ সালে।
১০. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী মৃত্যুবরণ করেন – সাতক্ষীরায় ।
১১. ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে মুসলমানদের কিবলা ছিল – বায়তুল মুকাদ্দাস ।
১২. সকলের চৈতন্য হলো – হযরত আবুবকর (রা.)-এর উক্তিতে।
১৩. শিথিল অঙ্গ মাটিতে লুটিয়ে পড়ল – হযরত ওমর (রা.)-এর।
১৪. সাফা পর্বতের পাশে বসে – হযরত মুহম্মদ (স.) দীক্ষাদান করেছিলেন।
১৫. হযরত মুহম্মদ (স.) জন্মগ্রহণ করেন – মক্কা নগরীতে।
১৬. হযরত মুহম্মদ (স.) জন্মগ্রহণ করেন – মক্কার শ্রেষ্ঠ কোরাইশ বংশে ৷
১৭. মহানবি (স.) আবাল্য ছিলেন – বিশ্বস্ত, প্রিয়ভাষী, সত্যবাদী।
১৮. আমি রাজা নই, সম্রাট নই, মানুষের প্রভু নই – উক্তিটি হযরত মুহম্মদ (স.) এর ।
১৯. হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্ত মুসলমানদের জন্য ছিল – ঘোর অপমানের ।
২০. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কোন পত্রিকায় কর্মরকত ছিলেন – দৈনিক মোহাম্মদী।
২১. বীরবাহু শব্দের অর্থ – শক্তিধারী ।
২২. ধী শব্দের অর্থ – বুদ্ধি ।
২৩. স্তিতধী শব্দের অর্থ – স্থিরবুদ্ধিসম্পন্ন ।
২৪. বয়ান শব্দের অর্থ – মুখনিঃসৃত বাণী ।
২৫. লোষ্ট্রাঘাত শব্দের অর্থ ঢিলের আঘাত ।
২৬. রাহী শব্দের অর্থ – মুসাফির বা পথিক।
২৭. হুদায়বিয়া – একটি যুদ্ধক্ষেত্র।
২৮. তায়েফ – সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের একটি উর্বর প্রদেশ।
২৯. সাফা ও মারওয়া কাবার নিকটে অবস্থিত – দুটি ছোট পাহাড় ।
৩০. রুধিরাক্ত বলতে বোঝায় – রক্তাক্ত ।
৩১. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মূল বিষয় – মহানবি (স.)- এর মানবীয় গুণাবলি ।
৩২. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের রচয়িতা – মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ।
৩৩. ‘মরু ভাস্কর’ একটি – প্রবন্ধগ্রন্থ ।
৩৪. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি নেওয়া হয়েছে – ‘মরু ভাস্কর’ গ্রন্থ থেকে।
৩৫. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ শিরোনামের রচনাটি একটি – প্রবন্ধ।
৩৬. মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের নামকরণ – বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে।
৩৭. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধটি লেখা হয়েছে – হযরত মুহম্মদ (স.) – কে কেন্দ্র করে ।
৩৮. মানুষের পক্ষে আচরণীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন – হযরত মুহম্মদ (স.) ।
৩৯. মহানবি (স.) সারা জীবন নিয়োজিত ছিলেন – মানবকল্যাণে ।
৪০. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধটি লিখিত হয়েছে – সাধু ভাষারীতিতে।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. সত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হযরত মুহম্মদ (স.) কাদের কাছে উপহাসিত হয়েছিলেন ?
ক. ইহুদিদের খ. পৌত্তলিকদের
গ. খয়বরবাসীদের ঘ. হুদায়বিয়াবাসীদের
উত্তর: খ. পৌত্তলিকদের
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
২. ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর‘ এ উক্তিতে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর কোন গুণটি প্রকাশ পেয়েছে?
ক. সহনশীলতা খ. উদারতা
গ. মহানুভবতা ঘ. বিচক্ষণতা
উত্তর: গ. মহানুভবতা
৩. ‘আমি রাজা নই, সম্রাট নই, মানুষের প্রভু নই। আমি এমনই এক নারীর সন্তান, সাধারণ শুষ্ক মাংসই ছিল যাহার নিত্যকার আহার্য।‘-এ বক্তব্যে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রে ফুটে ওঠা দিকটি হলো—
i. নিরহংকার
ii. বিচক্ষণতা
iii. সত্যনিষ্ঠা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. i ও ii ঘ. ii ও iii
উত্তর: ক. i
৪. উদ্দীপকে প্রতিফলিত বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে কোনটির?
ক. একটিমাত্র পিরান কাচিয়া শুকায় নি তাহা বলে
রৌদ্রে ধরিয়া বসিয়া আছে গো খলিফা আঙিনা তলে ।
খ. তুমি নির্ভীক এক খোদা ছাড়া করোনিকো কারে ভয়
সত্যব্ৰত তোমায় তাইতে সবে উদ্ধত কয়।
গ. উষ্ট্রের রশি ধরিয়া অগ্রে, তুমি উঠে বস উটে
তপ্ত বালুতে চলি যে চরণে রক্ত উঠেছে ফুটে।
ঘ. বায়তুল মাল হইতে লইয়া ঘৃত-আটা নিজ হাতে
বলিলে, এসব চাপাইয়া দাও আমার পিঠের ‘পরে।
উত্তর: ক. একটিমাত্র পিরান কাচিয়া শুকায় নি তাহা বলে
রৌদ্রে ধরিয়া বসিয়া আছে গো খলিফা আঙিনা তলে ।
৫.মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কোন পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন?
ক. দৈনিক মোহাম্মদী খ. দৈনিক আজাদ
গ. দৈনিক ইনকিলাব ঘ. দৈনিক ইত্তেফাক
উত্তর: ক. দৈনিক মোহাম্মদী
৬. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর গদ্যশৈলীর বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. গুরুগম্ভীর খ. তথ্যনির্ভর
গ. সাবলীল ঘ. যুক্তিনির্ভর
উত্তর: গ. সাবলীল
৭. ‘মরু ভাস্কর‘ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
ক. মুহম্মদ এনামুল হক
খ. কাজী নজরুল ইসলাম
গ. মীর মশাররফ হোসেন
ঘ. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী
উত্তর: ঘ. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী
৮. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কবে মৃত্যুবরণ করেন? (জ্ঞান)
ক. ১৯৫২ সালের ৮ই নভেম্বর
খ. ১৯৫৩ সালের ৮ই নভেম্বর
গ. ১৯৫৪ সালের ৮ই নভেম্বর
ঘ. ১৯৫৭ সালের ৮ই নভেম্বর
উত্তর: গ. ১৯৫৪ সালের ৮ই নভেম্বর
৯. সত্যের ক্ষেত্রে হযরত মুহম্মদ (স.) এর অবস্থান ছিল—
i. সহিষ্ণু
ii. সুদৃঢ়
iii. নিরাপোস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
১০. হুদায়বিয়ার সন্ধিতে অপমানের শর্ত মেনে নেয়ার মাধ্যমে হযরতের চরিত্রের যেদিক ফুটে উঠেছে—
i. দূরদর্শিতা
ii. মহানুভবতা
iii. আপসকামিতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
ভূগোল ও পরিবেশ তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
১১. বিশ্বের সকল মানুষের জন্য অনুকরণীয় ছিল মহানবি (স.) এর–
i. সাধুতা
ii. ত্যাগ
iii. কল্যাণচিন্তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
উদ্দীপকটির আলোকে ১২ ও ১৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফ একটি নাগরিক সনদের জন্য ইউনিয়ন কার্যালয়ে হাজির । সে অপেক্ষা করছিল। এমন সময় সেখানে পরিষদের সভা চলছিল। সাইফকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চেয়ারম্যান সাহেব এগিয়ে এসে তার হাত ধরে নিজের পাশে বসালেন ।
১২. উদ্দীপকের ঘটনাটি মানুষ মুহম্মদ (স.) প্রবন্ধের কোন ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক. তায়েফবাসীদের অভসম্পাতে বিরত থাকা
খ. আগন্তুককে আশ্বস্ত করা
গ. মক্কাবাসীদের ক্ষমা করা
ঘ. আবু মা’বদের আতিথ্য গ্রহণ করা
উত্তর: খ. আগন্তুককে আশ্বস্ত করা
১৩. নিচের যে চরণে এ ঘটনার মূল প্রতিপাদ্য বাঙময় হয়ে উঠেছে—
i. নেই ভেদাভেদ হেথা কুলি আর কামারে
ii. ইসলাম বলে সকলে সমান কে বড়, ক্ষুদ্র কে বা
iii. আমরা সবাই রাজা আমাদের এ রাজার রাজত্বে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৪ ও ১৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
ওসমান সাহেবকে সবাই অত্যন্ত সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে জানেন । তাঁর এই আদর্শের কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও নাজেহাল করলে তিনি নীরবে তা সহ্য করেন।
১৪. সহকর্মীদের ব্যঙ্গ–বিদ্রূপ ও নাজেহাল সহ্য করার মধ্য দিয়ে ওসমান সাহেবের চরিত্রে মহানবির কোন গুণটি ফুটে উঠেছে?
ক. ধর্মপ্রাণতা খ. বদান্যতা
গ. মানবিকতা ঘ. সহনশীলতা
উত্তর: ঘ. সহনশীলতা
১৫. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা গুণটি মহানবি (স.)-এর কোন বাণীতে প্রকাশ পেয়েছে?
ক. না না, তাহা কখনই সম্ভব নয়
খ. এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো
গ. আমি তোমাদেরই মতো একজন মানুষ মাত্র
ঘ. মদিনায় যেন আঁধার ঘনাইয়া আসিল
উত্তর: খ. এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৬ ও ১৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
কবিরের মা-বাবা জীবিত নেই। সৎভাইয়েরা সম্পত্তির লোভে তার জীবন নাশের পাঁয়তারা করে। টের পেয়ে কবির আত্মরক্ষার্থে মামা বাড়ি চলে যায়। অনেক বছর পর সে বিদ্যা-বুদ্ধিতে অনেক বড় হয়ে ফিরে আসে। ভাইয়েরা ভয় পেয়ে যায়। কবির বলে, ভয় নেই, আমি প্রতিশোধ নিতে আসিনি ।
১৬. উদ্দীপকটি মহানবি (স.)-এর জীবনে কোন ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ?
ক. হেরা পর্বতে গমন গ. সিরিয়ায় গমন
খ. তায়েফ ভ্রমণ ঘ. মক্কা বিজয়
উত্তর: ঘ. মক্কা বিজয়
১৭. কবিরের আচরণে মহানবি (স.)-এর চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়েছে–
i. মহানুভবতা
ii. ক্ষমাশীলতা
iii. উদারতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৮ ও ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
গরিবের ছেলে মাহমুদ প্রতিবছর পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে। ধনীর দুলাল সাকিবের তা সহ্য হয় না। সে প্রতিহিংসায় মাহমুদকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করে। প্রধান শিক্ষক জানতে পেরে ক্লাসে এসে মাহমুদের মতামত জানতে চান । মাহমুদ বলে, “ও ভুল বুঝে আমার ওপর চড়াও হয়েছে। ওর ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই।”
১৮. মাহমুদের ওপর আক্রমণ মহানবির (স.)-এর জীবনের কোন ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক. ওহুদের যুদ্ধ খ. মক্কাবাসীদের অত্যাচার
গ. তায়েফের অত্যাচার ঘ. মদিনাবাসীর নির্যাতন
উত্তর: খ. মক্কাবাসীদের অত্যাচার
১৯. মাহমুদের উক্তিতে মহানবি (স.)-এর যে গুণের প্রকাশ ঘটেছে—
i. ক্ষমাশীলতা
ii. অপূর্ব সংযম
iii. মহানুভবতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
২০. ‘রুধিরাক্ত‘ অর্থ কী?
ক. রঞ্জিত খ. ঘর্মাক্ত
গ. রক্তাক্ত ঘ. অত্যাচারিত
উত্তর: গ. রক্তাক্ত
২১. মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় সম্মানিত নগরী কোনটি?
ক. মক্কা খ. মদিনা
গ. জেরুজালেম ঘ. তায়েফ
উত্তর: খ. মদিনা
২২. ‘মরুভাস্কর‘ কী ধরনের রচনা?
ক. প্রবন্ধ খ. উপন্যাস
গ. গল্প ঘ. নাটক
উত্তর: ক. প্রবন্ধ
২৩. মানুষ মুহম্মদ (স.) প্রবন্ধের রচয়িতা কে?
ক. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী
খ. মোহাম্মদ ওয়াজেদ মিয়া
গ. মোহাম্মদ ওয়াজেদ
ঘ. মোহাম্মদ আলী ওয়াজেদ
উত্তর: ক. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী
২৪. মানুষ মুহম্মদ (স.) রচনাটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
ক. ছোটদের হযরত মুহম্মদ খ. সৈয়দ আহমদ
গ. মহামানুষ মুহসীন ঘ. মরুভাস্কর
উত্তর: ঘ. মরুভাস্কর
২৫. মানুষ মুহম্মদ (স.) প্রবন্ধে লক্ষণীয়?
ক. তৎসম শব্দবহুল ভাষার ব্যবহার
খ. তদ্ভব শব্দবহুল ভাষার ব্যবহার
গ. বিদেশি শব্দের ব্যবহার
ঘ. দেশি শব্দের ব্যবহার
উত্তর: ক. তৎসম শব্দবহুল ভাষার ব্যবহার
২৬. মানুষ মুহম্মদ (স.) প্রবন্ধের নামকরণ কীসের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে?
ক. ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে
খ. বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে
গ. জীবন কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে
ঘ. কল্পকাহিনীর ওপর ভিত্তি করে
উত্তর: খ. বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে
২৭. “মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মূল আলোচ্য বিষয় কী?
ক. মহানবির নবিত্ব লাভ
খ. মহানবির দেশপ্ৰেম
গ. মহানবির মানবিক গুণাবলি
ঘ. মহানবির মক্কা বিজয়
উত্তর: গ. মহানবির মানবিক গুণাবলি
২৮. ‘না না, তাহা কখনই সম্ভব নয়।‘- কোনটি সম্ভব ছিল না?
ক. শত্রুদের অভিসম্পাত করা
খ. শত্রুদের প্রতিরোধ করা
গ. শত্রুদের সাথে সন্ধি করা
ঘ্. শত্রুদের সাথে বঞ্চনা করা
উত্তর: ক. শত্রুদের অভিসম্পাত করা
২৯. একটি মাত্র পিরান কাচিয়া শুকায়নি তাহা বলে, রোদ্রে ধরিয়া বসিয়া আছে গো খলিফা আঙিনা তলে । উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে মহানবি এর চরিত্রের প্রতিফলিত দিকটি হচ্ছে–
ক. দরিদ্রতা খ. আড়ম্বরহীনতা
গ. মানবিকতা ঘ. নৈতিকতা
উত্তর: খ. আড়ম্বরহীনতা
৩০. হযরতের চরিত্র মধুময় হয়ে উঠেছিল—
ক. গুরুগম্ভীর নীরবতায় খ. মধুবর্ষী মুখের ভাষণে
গ. বিনীত নম্র প্রকৃতিতে ঘ. সত্যের নিবিড় সাধনায়
উত্তর: ঘ. সত্যের নিবিড় সাধনায়
৩১. ‘তোমার পতাকা যদি দিয়াছ প্রভু, হীন আমি, তুচ্ছ আমি, নির্বল আমি, তাহা বহন করিবার শক্তি আমায় দাও।‘- এই উক্তিতে প্ৰকাশ পেয়েছে হযরত মুহম্মদ (স.) এর কোন মনোভাব?
ক. ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা
খ. শত্রুদের বিনাশ করা
গ. আল্লাহর বাণী প্রচার করা
ঘ. মানুষকে ক্ষমা করা
উত্তর: গ. আল্লাহর বাণী প্রচার করা
৩২. কোন যুদ্ধক্ষেত্রের নাম খন্দক?
ক. খয়বর খ. ওহুদ
গ. বদর ঘ. আহযাব
উত্তর: ঘ. আহযাব
৩৩. ‘হিজরত‘ শব্দের শাব্দিক অর্থ কী?
ক. পলায়ন খ. পরিত্যাগ
গ. পরিবর্তন ঘ. শুভ সূচনা
উত্তর: খ. পরিত্যাগ
ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩৪. হযরত (স.)-এর ললাট কুঞ্চিত হলো কেন?
ক. বক্তৃতায় বাধা পেয়ে
খ. শত্রুর প্রস্তরাঘাতে
গ. কাফিররা গালিগালাজ করায়
ঘ. শারীরিক অসুস্থতায়
উত্তর: ক. বক্তৃতায় বাধা পেয়ে
৩৫. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী জন্মগ্রহণ করেন–
ক. ১৮৮৬ সালে খ. ১৮৯৪ সালে
গ. ১৮৯৬ সালে ঘ. ১৯৯৯ সালে
উত্তর: গ. ১৮৯৬ সালে
৩৬. ‘হুদায়বিয়া’ হলো একটি–
ক. নগরী খ. উর্বর প্রদেশ
গ. যুদ্ধক্ষেত্র ঘ. সন্ধিপত্র
উত্তর: গ. যুদ্ধক্ষেত্র
৩৭. কার স্মৃতি রক্ষার্থে হজব্রতীরা সাফা–মারওয়া দৌড়ে থাকেন?
ক. হযরত ইসমাইল (আ.) খ. হযরত ইবরাহিম (আ.)
গ. বিবি হাজেরা (রা.) ঘ. হযরত আয়েশা (রা.)
উত্তর: গ. বিবি হাজেরা (রা.)
৩৮. কোথায় সত্য প্রচার করতে গেলে হযরত মুহম্মদ (স.) প্রস্তরাঘাতে আহত হন?
ক. মক্কায় খ. তায়েফে
গ. জেদ্দায় ঘ. দাম্মামে
উত্তর: খ. তায়েফে
৩৯. ‘উলঙ্গ তরবারি‘ বলতে লেখক বুঝিয়েছেন—
ক. খোলা তরবারি খ. খাপযুক্ত তরবারি
গ. বিরাট তরবারি ঘ. মণিখচিত তরবারি
উত্তর: ক. খোলা তরবারি
৪০. কোন যুদ্ধে হযরতের পরাজয়ের মিথ্যা সংবাদ শুনে হযরতের মৃত্যু সম্ভাবনায় শত্রুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ল?
ক. বদর খ. ওহোদ
গ. খন্দক ঘ. খয়বর
উত্তর: ঘ. খয়বর
৪১. ‘ওসমান সাহেবকে সবাই অত্যন্ত ভালো ও সৎ মানুষ হিসেবে জানে। তাঁর এই আদর্শের কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ব্যঙ্গ–বিদ্রূপ করলেও তিনি নীরবে তা সহ্য করেন। সহকর্মীদের ব্যঙ্গ–বিদ্রূপ সহ্য করার মধ্য দিয়ে ওসমান সাহেবের আচরণে মহানবির কোন গুণটি প্ৰকাশ পেয়েছে?
ক. সহনশীলতা খ. মহানুভবতা
গ. ক্ষমাশীলতা ঘ. উদারতা
উত্তর: ক. সহনশীলতা
৪২. হযরত মুহম্মদ (স.) প্রস্তর নিক্ষেপকারী মক্কার পৌত্তলিকদের জন্য আল্লাহর কাছে কী প্রার্থনা করেছেন?
ক. ক্ষমা খ. কল্যাণ
গ. সাহায্য ঘ. করুণা
উত্তর: ক. ক্ষমা
৪৩. ‘সাফা‘ ও ‘মারওয়া‘ কী?
ক. দুটি যুদ্ধক্ষেত্র খ. দুটি ছোট পাহাড়
গ. দুটি সন্ধিক্ষেত্র ঘ. দুটি সীমান্ত এলাকা
উত্তর: খ. দুটি ছোট পাহাড়
৪৪. ‘স্থিতধী‘ অর্থ কী?
ক. স্থিরবুদ্ধি সম্পন্ন খ. গভীরজ্ঞান সম্পন্ন
গ. কূটবুদ্ধি সম্পন্ন ঘ. অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন
উত্তর: ক. স্থিরবুদ্ধি সম্পন্ন
৪৫. যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ
আমি দিই তারে বুকভরা গান,
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর;
উক্তিটি মহানবি (স.)-এর জীবনের যে ঘটনাগুলো স্মরণ করিয়ে দেয় তা হলো—
i. তায়েফবাসীকে ক্ষমা
ii. মহানবির (স.)-এর সুমহান প্রতিশোধ
iii. মহানবির (স.)-এর চরিত্রের সহজ স্বচ্ছ প্রকাশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৪৬. হযরত মুহম্মদ (স.) বড় আদর করতেন –
i. দুর্বলদেরকে
ii. দুঃখীদেরকে
iii. অন্ধদেরকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৪৭ ও ৪৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
রফিক মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে পাগল হয়ে ওঠে। সে প্রলাপ করে বলে তার মা মরতেই পারে না। তার চাচা বলেন অস্থির হয়ো না মৃত্যু মানুষের ভাগ্য এবং শেষ পরিণতি।
৪৭. উদ্দীপকে রফিকের চাচার সাথে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের কার মিল পাওয়া যায়?
ক. হযরত মুহম্মদ (স.) খ. হযরত আবুবকর (রা.)
গ. হযরত ওমর (রা.) ঘ. হযরত আয়েশা (রা.)
উত্তর: খ. হযরত আবুবকর (রা.)
৪৮. উদ্দীপকের চাচার সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের বক্তার মানসিকতার মিল রয়েছে–
i. যুক্তিবাদী মানসিকতার
ii. আবেগপ্রবণতার
iii. দৃঢ় মনোবলের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
উদ্দীপকটি পড়ে ৪৯ ও ৫০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
“শত প্রলোভন বিলাস বাসনা ঐশ্বর্যের মদ
করেছে সালাম দূর হতে সব ছুঁইতে পারেনি পদ ।
৪৯. উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের হযরত মুহম্মদ (স.) চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে?
ক. অনাড়ম্বরতা খ. বিচক্ষণতা
গ. মানবিকতা ঘ. নির্লোভ মানসিকতা
উত্তর: ক. অনাড়ম্বরতা
৫০. উক্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে হযরত মুহম্মদ (স.) –
i. স্বেচ্ছায় দারিদ্র্যের কণ্টক মুকুট মাথায় পরলেন
ii. পাপী মানুষকে অভিশাপ দেবার চিন্তাও করেননি
iii. নিঃস্ব কাঙালের বেশে মৃত্যুর দেশে চলে গেলেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : হযরত নূহ (আ) ধর্ম ও ন্যায়ের পথে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এতে মাত্র চল্লিশ জন মানুষ সাড়া দেন। বাকিরা সবাই তার বিরোধিতা শুরু করে নানা অত্যাচারে তাকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এ অত্যাচারের মাত্রা সহনাতীত হলে তিনি এক পর্যায়ে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান। আল্লাহর হুকুমে তখন এমন বন্যা হয় যে, ঐ চল্লিশ জন বাদে সকল অত্যাচারী ধ্বংস হয়ে যায়।
ক. হযরত মুহম্মদ (স.) কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. সুমহান প্রতিশোধ বলতে কী বোঝায়?
গ. হযরত নূহ (আ) যেদিক দিয়ে হযরত মুহম্মদ (স.) থেকে ভিন্ন তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. হযরত নূহ (আ.)-এর চরিত্রে কী ধরনের পরিবর্তন আনলে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর একটি বিশেষ গুণ তার মধ্যে ফুটে উঠত? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কার শ্রেষ্ঠ কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনায় পরাজিত মক্কাবাসীকে ক্ষমা করে হযরত মুহম্মদ (স.) যে দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন তাকেই সুমহান প্রতিশোধ বলা হয়েছে। হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অনেকগুলো মানবীয় গুণাবলির মধ্যে একটি হলো ক্ষমাশীলতা। মক্কাবাসী কর্তৃক তিনি অনেক অত্যাচার ভোগ করেন। কিন্তু মক্কা বিজয়ের পর পর তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন। বলেন, তোমাদের প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নেই। যে মক্কাবাসীরা তাকে ক্ষমা করেনি, তিনি তাদের ক্ষমা করে যে প্রতিশোধ নিয়েছেন তাকে বলা হয় সুমহান প্রতিশোধ।
গ. সহনশীলতা ও ক্ষমাশীলতার দিক থেকে হযরত নূহ (আ) হযরত মুহম্মদ (স.) থেকে ভিন্ন।
হযরত নূহ (আ.) অনেক অত্যাচার সহ্য করেন। কিন্তু অত্যাচার সহনাতীত হলে তিনি সহনশীলতা ত্যাগ করে এবং অত্যাচারীকে ক্ষমা না করে- আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করেন। অথচ হযরত মুহম্মদ (স.) কোনো অবস্থাতেই সহনশীলতা এ মক্কাবাসীরা হযরত মুহম্মদ (স.)-কে অকথ্য অত্যাচার করলেও তিনি কখনো তাদের অভিশাপ দেননি। বরং মক্কা বিজয়ের পর তাদের ক্ষমা করেন এবং তাদের স্বাধীন বলে ঘোষণা দেন। অথচ হযরত নূহ (আ.) শেষ মুহূর্তে এই দুটি বিষয়কে ধরে রাখতে পারেননি।
ফলে ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতার প্রশ্নে তিনি হযরত মুহম্মদ (স.) থেকে স্বতন্ত্র।
ঘ. হযরত নূহ (আ.) অধিকতর ক্ষমাশীল ও সহনশীল হলে তার মাঝে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চারিত্রিক গুণাবলি ফুটে উঠত।
হযরত নূহ (আ.) এবং হযরত মুহম্মদ (স.) উভয়েই নবি। উভয়েই সত্য প্রচার করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু নূহ (আ.) শেষ পর্যন্ত তাঁর সহনশীলতা ও ক্ষমাশীলতাকে ধরে রাখতে পারেননি, যা হযরত মুহম্মদ (স.) কখনোই ত্যাগ করেননি। হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কাবাসীদের পরাজিত করেও তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। অন্যদিকে, নৃহু (আ.) অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন। অর্থাৎ তিনি তাঁর সহনশক্তি ও ক্ষমা করার শক্তিকে শেষ পর্যন্ত ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতা যা ছিল হযরত মুহম্মদ (স.) -এর চরিত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য, তা হযরত নূহ (আ.)-এর চরিত্রে কিছু কম ছিল। তাই হযরত নুহ (আ.)-এর চরিত্রে আরও ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতা যুক্ত হলে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অসীম ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতার বিশেষ গুণ তার মধ্যেও ফুটে উঠত।
প্রশ্ন–২ : বৃদ্ধ রজব আলির বাড়ির চাকর শহিদুল। একদিন মনিবের টাকা চুরি করে সে ছেলেকে বিদেশে পাঠায়। রজব আলির মৃত্যুশয্যায় শহিদুল অনুতপ্ত হয়ে তার নিকট সব কথা খুলে বললে রজব আলি শহিদুলকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছ, এতেই আমি খুশি।
ক. মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
খ. মানুষের একজন হইয়াও তিনি দুর্লভ’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের রজব আলি চরিত্রে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে উল্লিখিত মহানবি (স.)-এর কোন গুণটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা গুণটির বাইরে মহানবি (স.)-এর আরও গুণের সমাবেশ পঠিত প্রবন্ধে রয়েছে— বক্তব্যটি মূল্যায়ন করো।
২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনাটি মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর ‘মরু ভাস্কর’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
খ. হযরত মুহম্মদ (স.) তাঁর অনুকরণীয় আদর্শ এবং অনন্য সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। হযরত মুহম্মদ (স.) মানব জাতির কল্যাণে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেছেন। সমগ্র মুসলিম সাম্রাজ্যের অধিনায়ক হয়েও তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। ক্ষমা, মহত্ত্ব, প্রেম, দয়া প্রভৃতি উচ্চ মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তাঁর চরিত্র অনন্য মাত্রা লাভ করেছিল। তাঁর সাধনা, ত্যাগ ও কল্যাণ চিন্তা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একজন মানুষের মধ্যে একইসঙ্গে এসব গুণের সমাহার সত্যিই দুর্লভ। প্রশ্নোত উক্তিটিতে তার সে দুর্লভ মানবিক সত্তার পরিচয়ই ফুটে উঠেছে।
ভূগোল ও পরিবেশ দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন
গ. উদ্দীপকের রজব আলির চরিত্রে মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে উল্লিখিত মহানবি (স.)-এর ক্ষমাশীলতার গুণটি ফুটে উঠেছে।
মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রের মানবিক গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মানুষের পক্ষে যা আচরণীয়, তিনি | তারই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তার চরিত্রে একাধারে ক্ষমাশীলতা, সহনশীলতা, সততা, নিষ্ঠা, ত্যাগ প্রভৃতি মহৎ গুণের সমাবেশ ঘটেছিল।
আলোচ্য উদ্দীপকের ঘটনায় তার চরিত্রের বিশেষ একটি দিক লক্ষিত হয়। উদ্দীপকে বৃদ্ধ রজব আলির বাড়ির চাকর শহিদুল। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সে তার মনিবের টাকা চুরি করে। অবশেষে রজব আলি মৃত্যু শয্যায় পতিত হলে শহিদুল চুরির বিষয়টি মনে করে অনুতপ্ত হয় এবং তাকে সব কথা খুলে বলে। উদারচিত্তের রজব আলি সব শুনে শহিদুলকে ক্ষমা করে দেন।
আলোচ্য মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনায়ও হযরত মুহম্মদ (স.)-এর ক্ষমাশীলতার অনন্য উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। ইসলামের বাণী প্রচার করতে গিয়ে তিনি শত্রুর প্রস্তরাঘাতে আহত হয়েছেন, তাঁর শরীরের রক্ত পাদুকায় গিয়ে জমাট বেঁধেছে। প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি তা না করে তাদের ক্ষমা করেছেন, তাদের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন। সে বিবেচনায় উদ্দীপকের রজব আলির চরিত্রে মহানবির ক্ষমাশীলতার গুণটিই ফুটে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা ক্ষমাশীলতার গুণটি ছাড়াও হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রে নানা মানবীয় গুণাবলির সমাবেশ ঘটেছে, যা আলোচ্য প্রবন্ধেরও উপজীব্য। মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে হযরত মুহম্মদের চারিত্রিক গুণাবলি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। ক্ষমা, মহত্ত্ব, প্রেম, দয়া প্রভৃতি উচ্চ মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তাঁর চরিত্র মধুর হয়ে উঠেছিল। অসাধারণ হয়েও তিনি ছিলেন অতি সাধারণ। তার এই নিরহংকারবোধ, নিষ্কলুষ জীবনযাত্রার দিকটি উদ্দীপকের রজব আলির চরিত্রে দেখা যায় না।
উদ্দীপকে রজব আলির কাজের লোক শহিদুল ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য মনিবের অর্থ আত্মসাৎ করে। বৃদ্ধ রজব আলি শহিদুলকে বিশ্বাস করে এ বিষয়ে খোঁজ রাখে না। কিন্তু পরবর্তীতে রজব আলিকে মৃত্যুশয্যায় দেখে পূর্বের কথা মনে করে শহিদুল অনুতপ্ত হয়। এ অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে রজব আলিকে সেকথা খুলে বলে। রজব আলি উদার মানসিকতার পরিচয় দিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন। তার ক্ষমাশীলতার এ দিকটি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রেও লক্ষিত হয়।
হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কার শ্রেষ্ঠ কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেও অহংকারবোধ করেননি। নানা প্রলোভন সত্ত্বেও তিনি সত্যের পথ থেকে এতটুকু টলেননি। ক্ষমতার মোহ এবং প্রতিপত্তিতে বিভ্রান্ত না হয়ে নিতান্ত সাধারণের মতোই জীবনযাপন করেছেন তিনি। শত্রুর নানা ষড়যন্ত্র ও আঘাতে জর্জরিত হলেও তিনি তাদের ক্ষমা করেছেন, প্রার্থনা করেছেন তাদের জন্য। বস্তৃত মানুষের কল্যাণ চিন্তা দ্বারা তিনি সকলের মন জয় করেছিলেন।
অর্থাৎ উদ্দীপকের রজব আলির মধ্যে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রের ক্ষমাশীলতার দিকটি প্রকাশিত হলেও আলোচ্য প্রবন্ধে তার চরিত্রের অন্যান্য মহৎ মানবীয় গুণাবলি উল্লিখিত হয়েছে। সে বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ ।
প্রশ্ন–৩ : সমাজে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের ভয়াবহ ব্যবহার দেখে কলেজ পড়ুয়া তিন যুবক আরমান, শফিক ও জব্বার যুবসমাজকে এর হাত থেকে বাঁচাতে সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। কিছু ক্ষেত্রে তারা সফলতা পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদেরকে প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি শারীরিক নির্যাতনসহ অপমানিতও হতে হয়। তবুও তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যত বাধাই আসুক এ আন্দোলন তারা চালিয়ে যাবেই।
ক. তায়েফের অবস্থান কোথায়?
খ. খাদিজা (রা.)-এর হযরত মুহম্মদ (স.)-কে পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের কোন ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত যুবকদের কর্মকাণ্ডে মুহম্মদ (স.) চরিত্রের মানবীয় গুণাবলির সকল দিক চিত্রিত হয়েছে কি? যৌক্তিক মতামত দাও।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. তায়েফের অবস্থান সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলে।
খ. মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর বিশ্বস্ততা, সততা, নিষ্ঠা ও চারিত্রিক মাধুর্য দেখে বিবি খাদিজা (রা.) তাকে পছন্দ করেছিলেন। হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন মহামানব। মানবতার শ্রেষ্ঠ গুণাবলির অধিকারী। তিনি ছিলেন অসাধারণ বিশ্বস্ত, আমানতদার, সদালাপন ও সত্যভাষী। তার দৈহিক সৌন্দর্যও ছিল মানবিক সৌন্দর্যের মতো আকর্ষণীয়। হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, মহানুভবতা হযরত খাদিজা (রা.)-কে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। তাই তিনি তাকে সার্বিকভাবে পছন্দ করেন।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের তায়েফের ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে।
অসত্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সততা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে গেলে অসৎপন্থিরা বাধার পাহাড় গড়ে তোলে। তারপরও ন্যায়পন্থিরা মানবতার কল্যাণে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে।
উদ্দীপক ও আলোচ্য প্রবন্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের চিত্র ভেসে ওঠে। উদ্দীপকে তিনজন শিক্ষিত সত্যাশ্রয়ী যুবক যুবসমাজকে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত রাখার জন্য সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে প্রবল বাধার সম্মুখীন হয়। এমনকি তারা শারীরিক নির্যাতনসহ নানা অপমানের শিকার হয়। তবুও তারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।
‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধেও হযরত মুহম্মদ (স.) পথহারা, বিভ্রান্ত তায়েফবাসীকে সত্য ও মুক্তির আহ্বান জানাতে গেলে তারা নির্মমভাবে তার ওপর নির্যাতন চালায়। পাথরের আঘাতে আঘাতে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তারপরও তিনি তায়েফবাসীকে অভিশাপ না দিয়ে আল্লাহর কাছে তাদের সার্বিক কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করেন। তিনি সত্যের দাওয়াত দ্বিগুণভাবে দেওয়ার শপথ নেন।
এভাবে সত্যের জন্য আত্মত্যাগ ও সত্যপ্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করার দিক থেকে উদ্দীপকের ঘটনা ও প্রবন্ধ বর্ণিত তায়েফের ঘটনার সুন্দর সাদৃশ্য ফুটে ওঠে।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত যুবকদের কর্মকাণ্ডে সত্যাশ্রয়ী ও ধৈর্য অবলম্বনকারী গুণাবলি ছাড়া মুহম্মদ (স.) চরিত্রের মানবীয় গুণাবলির সকল দিক চিত্রিত হয়নি।
হযরত মুহম্মদ (স.) আল্লাহর প্রিয় রাসূল। তার মধ্যে মানব চরিত্রের সামগ্রিক গুণের সমাবেশ ঘটেছিল। মানবতার কল্যাণে তিনি সীমাহীন নির্যাতন সহ্য করেছেন। তারপরও মক্কা বিজয়ের পর প্রাণের শত্রুদের হাতের কাছে পেয়েও নিঃশর্তে ক্ষমা করে দিয়েছেন। হযরতের অনুসারীদের মধ্যে তার অসাধারণ চারিত্রিক গুণাবলির কিছু কিছু পরিলক্ষিত হয়। যা উদ্দীপকে উল্লিখিত হয়েছে।
উদ্দীপকে তিনজন শিক্ষিত যুবক মানবতার কল্যাণে উদ্বুদ্ধ হয়ে সামাজিক অনাচার থেকে যুবকদের রক্ষা করার জন্য সামাজিক আন্দোলন চালাতে গিয়ে প্রবল বাধার সম্মুখীন হয়। এমনকি শারীরিক নির্যাতনসহ অপমানিত হয়। তবুও তারা ন্যায়প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়। তাদের চরিত্রে মানবতার কল্যাণ কামনায় আত্মত্যাগের মানসিকতা ফুটে ওঠে।
‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে হয়রত মহম্মদ (স) অসংখ্য মানবীয় গুণের ইঙ্গিত রয়েছে। তিনি দরিদ্রের মতো জীবনযাপন করতেন। তিনি ছিলেন একাধারে বিশ্বস্ত আমানতদার, মহানুভব, উদার, ক্ষমাশীল, অসম সাহসী, অনুপম চরিত্র-মাধুর্যের অধিকারী, সত্যবাদী, আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক, দক্ষ সেনাপতি, ধৈর্যশীল, মানবতার মহাকল্যাণকামী, অসাধারণ দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারীসহ সীমাহীন গুণের আধার।
তাই উদ্দীপকের যুবকদের মধ্যে হযরতের দু’একটি গুণ পরিচালিত হলেও সামগ্রিক গুণাবলির সমাবেশ নেই।
প্রশ্ন–৪ : উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
(i) তাহার প্রতি আমার রাগ–হিংসা–দ্বেষ কিছুই নাই। ঈশ্বরের নামে শপথ করিয়া বলিতেছি, আমার বিষদাতার মুক্তির জন্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিব।
(ii) প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় খুনোখুনি, মারামারি আর হিংসা–বিদ্বেষের খবর দেখে মাসুম খুব দুঃখিত হয়। সে ভাবে মানুষের মধ্যে সামান্য ধৈর্যও মনে হয় নেই। অথচ মহানবি শত্রুর নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েও তাদের মুক্তি কামনা করে স্রষ্টার কাছে মোনাজাত করে বলেছেন, “এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো।” মাসুম ভাবে, অথচ আমরা তাঁর অনুসারী হয়েও অন্যের অনিষ্ট করতে ব্যস্ত থাকি।
ক. ‘পৌত্তলিক’ শব্দের অর্থ কী?
খ. মহানবি (স.) মানুষের একজন হয়েও দুর্লভ কেন?
গ. উদ্দীপক (ii)-এর মাসুমের ভাবনা ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মানুষের পক্ষে যা আচরণীয় তার আদর্শ প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত বহন করে— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপক দুইটির বিষয়বস্তু ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘পৌত্তলিক’ শব্দের অর্থ মূর্তিপূজক।
খ. মহানবি (স.) মানবীয় সকল গুণকে আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন বলেই মানুষের একজন হয়েও তিনি দুর্লভ। ইতিহাসের এক অনন্য চরিত্র হযরত মুহম্মদ (স.)। মানুষের সঙ্গে মানুষের ব্যবহারে তিনি অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ত্যাগ, প্রেম, সাধুতা, সৌজন্য, ক্ষমা, তিতিক্ষা, সাহস, শৌর্য, অনুগ্রহ, আত্মবিশ্বাস, তীক্ষ্ম দৃষ্টি ও সমদর্শন— চরিত্র সৌন্দর্যের এতগুলো দিকের সমাহার ধুলোমাটির পৃথিবীতে বড় সুলভ নয়। তাই মানুষ হয়েও মুহম্মদ (স.) দুর্লভ।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকের মাসুমের ভাবনা ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর ভাবনাকেই নির্দেশ করে এমন বক্তব্যকে যৌক্তিক বলা যায়।
মহানবি মানুষের পক্ষে যা আচরণীয় তারই চর্চা করে গেছেন। তাই মানুষ হয়েও তিনি মানুষের আদর্শ হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। সত্য, ন্যায়, নিষ্ঠাসহ নানা মানবীয় গুণাবলিকে তিনি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। শত্রুকে তিনি সংহার করতে উদ্যত হননি; বরং পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে তাদের শুভবুদ্ধির জন্যে প্রার্থনা করেছেন। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতায় তিনি ছিলেন আদর্শিক এক মহাত্মা।
উদ্দীপকে মাসুম পত্রিকার পাতা দেখে খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়ে। কারণ মানুষের ভেতরে সে সামান্যতম ধৈর্যও দেখতে পায় না। কিন্তু মহানবি (স.) প্রদত্ত বাণীতে মানুষকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি নিজেও সে চর্চা করে গেছেন।
তাই মাসুমের চিন্তা হলো, মহানবি (স.) প্রদত্ত পথকে অনুসরণ করাই মানুষের পরম কর্তব্য। এ কারণে তার সহিষ্ণুতা বিষয়ক ভাবনা ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর ভাবনাকেই নির্দেশ করে।
ঘ. উদ্দীপক দুটির বিষয়বস্তুতে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে বর্ণিত হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মানবীয় গুণাবলিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী বিরচিত ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মানবীয় গুণাবলির কথা তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ হিসেবে তিনি মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় অনুকরণীয় আদর্শ। তার ক্ষমা, দয়া ও ঔদার্যের মতো মানবীয় গুণাবলিগুলো মানুষকে আকৃষ্ট করে সবসময়। তাই মানুষের মধ্যে থেকেই তিনি মানবচিত্তকে অসামান্য করে গেছেন।
উদ্দীপকের মাসুম ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে বর্ণিত মহানবি (স.)-এর আদর্শের অনুসারী। তাই মানুষের সঙ্গে মানুষের সংঘাত ও হিংসা তার ভালো লাগে না।
অপরদিকে ১ উদ্দীপকে ক্ষমা করার এক অসামান্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিধাতার কাছে তার মুক্তির জন্য প্রার্থনাও করা হয়েছে, যা হযরত মুহম্মদ (স.)-এর আদর্শকেই অনুসরণ করে। উভয় বিষয় পরিদৃষ্টে আমরা বলতে পারি, হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন অনন্য এক মানুষ। তাই মানুষ হিসেবে মানুষের জন্য তিনি সবচেয়ে বড় অনুকরণীয় আদর্শ।
উদ্দীপকের মাসুম এ সত্যকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। আর প্রথম উদ্দীপকে তার ক্ষমা ও ঔদার্যের মানবীয় গুণকেই প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রশ্ন–৫ : বিপত্নীক আজিম সাহেব রাজধানীর গুলশানে বিশাল বাড়িতে একাই থাকেন। তাকে দেখাশোনা করার জন্য রয়েছে বিশ বছরের পুরোনো বিশ্বস্ত চাকর নিয়ামত। ছেলেমেয়েরা সবাই প্রবাস জীবনযাপন করছে। একদিন এই বিশ্বস্ত চাকর প্রভুর সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ চাকরটিকে মালামাল সমেত ধরে নিয়ে আসে। আজিম সাহেব তাকে ক্ষমা করে দেন।
ক. হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মাজার কোথায়?
খ. ‘আমি রাজা নই, সম্রাট নই, মানুষের প্রভু নই’- কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন মাত্র”— বিশ্লেষণ করো।
৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মাজার সৌদি আরবের মদিনায়।
খ. হযরত মুহম্মদ (স.) নিজের সাধারণত্ব প্রমাণ করতেই আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কা বিজয়ের পর একদিন সাফা পর্বতের পাশে বসে সত্যান্বেষী মানুষকে দীক্ষা দান করছিলেন। এমন সময় একটা লোক তার কাছে এসে ভয়ে কাঁপতে লাগল। তখন হযরত মুহম্মদ (স.) তার কাঁপার কারণ জানতে চেয়ে এবং তাকে অভয় দিয়ে আলোচ্য উক্তিটি করেন।
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের মহানবি (স.)-এর ক্ষমাশীলতার মহান দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনায় মহানবি (স.)-এর ব্যক্তিত্বের নানা দিক ফুটে উঠেছে। প্রেম, ক্ষমা ও দয়া ছিল তার অজস্র চারিত্রিক গুণাবলির মধ্যে অন্যতম । ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে বার বার শত্রুদের দ্বারা নির্যাতিত হতে হয় তাকে। তবুও তিনি তাদের অভিশাপ না দিয়ে বরং তাদের ক্ষমা করেছেন নিঃশর্তভাবে। মহানবি (স.)-এর ক্ষমাশীলতার এই গুণ উদ্দীপকেও প্রতিফলিত হয়েছে।
উদ্দীপকে বর্ণিত হাফিজ সাহেব একজন নামকরা চেয়ারম্যান হলেও বারবার প্রতিপক্ষের দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। এমনকি তার নামে মিথ্যা দুর্নীতির মামলাও দায়ের করা হয়। এত কিছুর পরেও হাফিজ সাহেব বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে বরং তাদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিয়ে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ রচনার ক্ষমাশীলতার দিকটিই উদ্দীপকের আলোচনায় ফুটে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের ক্ষমাশীলতার দিকের প্রতিফলন ঘটলেও অন্যান্য বিষয়ের প্রতিফলন ঘটেনি।
‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে মহানবি হযরত মুহম্মদ (স.)-এর অজস্র গুণাবলি বিশ্লেষিত হয়েছে। হযরত ছিলেন মানুষের নবি, তাই মানুষের পক্ষে যা আচরণীয় তিনি তারই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। বিপুল ঐশ্বর্য ও ক্ষমতার অধিকারী হয়েও সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেছেন। ক্ষমতা ও মহত্ত্ব, প্রেম ও দয়া তার অজস্র চারিত্রিক গুণের মধ্যে প্রধান। তাঁর সাধনা, ত্যাগ কল্যাণচিন্তা ছিল সমগ্র মানুষের জন্য অনুকরণীয়।
উদ্দীপকের আলোচ্য বিষয়ে হাফিজ সাহেব একজন নামকরা চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বারবার। তারপরও তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন এবং শত্রুদের বিনা শর্তে ক্ষমা করে দিয়েছেন। উদ্দীপকের ক্ষমাশীলতার এই দিকটি মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধেও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপক এবং মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে ক্ষমাশীলতার গুণটি ফুটে উঠেছে। তবে উদ্দীপকে প্রবন্ধের শুধু ক্ষমাশীলতার দিকটি ফুটে উঠলেও অন্যান্য গুণের ইঙ্গিত লক্ষ করা যায় না। কিন্তু ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে ক্ষমাশীলতা ছাড়া ফুটে উঠেছে হযরত মুহম্মদ (স.)-এর একাধিক মানবীয় গুণ। ক্ষমা, মহত্ত্ব, উদারতাসহ ফুটে উঠেছে মানুষের শ্রেষ্ঠতম আদর্শিক গুণ যা উদ্দীপকের বিষয়বস্তুতে অনুপস্থিত।
তাই আমরা বলতে পারি, “উদ্দীপকটিতে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে মাত্র”- মন্তব্যটি যথার্থ।