এসএসসি বিজ্ঞান সাজেশন
অধ্যায়– একাদশ
জীবপ্রযুক্তি
BIOTECHNOLOGY
প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা, এসএসসি বিজ্ঞান একাদশ অধ্যায় জীবপ্রযুক্তি থেকে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক, সুপারটিপস ও তথ্যকণিকাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তরগুলি দেওয়া হলো। যা পরীক্ষায় সহায়ক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা রাখবে। অধিক অনুশীলনের জন্য বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তরসহ দেওয়া হয়েছে।
►ভূমিকা: আধুনিক বংশগতিবিদ্যার ভিত্তি গড়ে উঠেছে আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর পূর্বে গ্রেগর জোহান মেন্ডেল নামক একজন অস্ট্রীয় ধর্মযাজকের গবেষণার মাধ্যমে। মেন্ডেলের আবিষ্কারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে— জীবের প্রতিটি বৈশিষ্ট্য এক জোড়া ফ্যাক্টর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বেটসন ১৯০৮ সালে মেন্ডেলের ফ্যাক্টরের নাম দিলেন জিন। বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই বংশগতিবিদ্যা নানাভাবে বিকাশ লাভ করতে থাকে। নানা তথ্যে সমৃদ্ধ হতে থাকে এর ভাণ্ডার।
এসএসসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর pdf পেতে এখানে ক্লিক করুন
জীববিজ্ঞানীরা জীবকোষের নানা প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, জেনেছেন কোষ বিভাজনের পদ্ধতি, ক্রোমোজোম ও জিনের রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি সম্পর্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হার্বাট বয়ার এবং স্ট্যানলি কোহেন ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম নিষেক ছাড়াই কৃত্রিমভাবে জিন সংযোজনে সাফল্য লাভ করেন। জীববিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি ছিল এক অচিন্তনীয় ঘটনা। স্থাপিত হলো জীবপ্রযুক্তি বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা বায়োটেকনোলজি নামে জীববিজ্ঞানের নতুন এক শাখা ।
►অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তুর পর্যালোচনা :
• ক্রোমোজোম : নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিওপ্রোটিন দ্বারা গঠিত সাইটোপ্লাজম দ্বারা বেষ্টিত, যেসব তন্তুর মাধ্যমে জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়, তাকে ক্রোমোজোম বলে । ক্রোমোজোমের দেহ সুতার মতো অংশ নিয়ে গঠিত ।
• জৈব প্রযুক্তি : কল্যাণের উদ্দেশ্যে জীবজ প্রতিনিধিদের যেমন অণুজীব বা কোষীয় নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারকে জৈব-প্রযুক্তি বলে ।
• ক্রোমোজোমের আকৃতি : ক্রোমোজোমের আকার সাধারণত লম্বা তবে কোষ বিভাজনের সময় পানি বিয়োজনের ফলে এদের দেখতে সুতার মতো লাগে ।
• ক্রোমোনেমা ও ক্রোমোনেমাটা : ক্রোমোজোমের দেহ সাধারণত দুই গুচ্ছ সুতার মতো অংশ নিয়ে গঠিত। প্রতি গুচ্ছ সুতার মতো অংশকে ক্রোমোনেমা ও এর বহুবচনকে ক্রোমোনেমাটা বলে ।
• ক্রোমাটিড : কোষ বিভাজনের সময় প্রতিটি ক্রোমোজোম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এদের প্রত্যেক ভাগকে ক্রোমাটিড বলে ।
• সেন্ট্রোমিয়ার : মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রত্যেকটি ক্রোমোজোমে যে গোলাকৃতি ও সংকুচিত স্থান দেখা যায় সেটিই হলো সেন্ট্রোমিয়ার
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
• ক্রোমোজোমের একক : ক্রোমোজোমের গঠনমূলক একক হলো জিন । জিন হলো যেকোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য দায়ী। ক্রোমোজোমের প্রকারভেদ : ক্রোমোজোম দুই প্রকার। যথা—
i. অটোজোম;
ii. সেক্স-ক্রোমোজোম
• অটোজোম : যেসব ক্রোমোজোম জীবের দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে তাকে অটোজোম বলে।
• DNA এর পূর্ণরূপ : ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (Dioxyribonucleic Acid)।
• RNA এর পূর্ণরূপ : রাইবোনিউক্লিক এসিড (Ribonucleic Acid)
• জিন : DNA-এর একটি খণ্ডাংশ, যা জীবের বংশগতির মৌলিক ও কার্যকরি একক এবং বংশ থেকে বংশপরম্পরায় জীবের বৈশিষ্ট্য বহন করে, তাকে জিন বা ফ্যাক্টর বলে।
• সেক্স ক্রোমোজোম : যে ক্রোমোজোম জীবের যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে সেক্স ক্রোমোজোম বলে।
• ডিএনএ টেস্ট : ডিএনএ টেস্ট হলো কোনো ব্যক্তি শনাক্তকরণ পরীক্ষা। কাউকে চিহ্নিত করতে কিংবা পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব নির্ণয়ে এটি বেশি ব্যবহার হয়। মুখের ঝিল্লির (মিউকাস) পর্দা হতে ডিএনএ প্রোফাইলিং করে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির সাথে মিলিয়ে শনাক্তকরণ করা হয় ৷
• মিউটেশন : মিউটেশন শব্দের অর্থ পরিবর্তন বা পরিবর্তনশীল । মানুষের যে জিনোমিক সিকোয়েন্সিং তার যদি কোনো বেসপেয়ার পরিবর্তন ঘটে তখনই মিউটেশন ঘটবে। ফলে বিভিন্ন জেনেটিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে ।
• জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং: নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির জন্য কোনো জীবের DNA তে পরিবর্তন ঘটানোকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জিন প্রকৌশল বলা হয় ।
বাংলা দ্বিতীয় উপসর্গ-বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
• রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তি : জিন প্রকৌশলগত যে প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো জীবের DNA তে কাঙ্ক্ষিত গাঠনিক পরিবর্তন আনা যায় (অর্থাৎ, রিকম্বিনেন্ট DNA তৈরি করা হয়) তাকে রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তি বলে ।
• ক্লোনিং : কোনো কোষকে বিশেষভাবে আবাদ মাধ্যমে রেখে বিভাজন ঘটিয়ে এতে উৎপন্ন করা হয়। একগুচ্ছ একই ধরনের কোষ, আবার কোনো অণুজীব উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর অনুরূপ অনেক জীব উৎপাদন করাকে ক্লোনিং বলে।
• ফরেনসিক টেস্ট : রক্ত, বীর্যরস, মূত্র, অশ্রু, লালা ইত্যাদির ডিএনএ অথবা অ্যান্টিবডি থেকে অপরাধী শনাক্তকরণ করা হয় এ টেস্ট দ্বারা ।
• সেরোলজি টেস্ট : সেরোলজি টেস্ট ও অপরাধী শনাক্তকরণ কাজে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে বীর্য, রক্ত ও লালার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ টেস্ট করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিওপ্রোটিন দ্বারা গঠিত যেসব তত্ত্বর মাধ্যমে জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়, তাকে ক্রোমোজোম বলে।
প্রশ্ন–২. সেন্ট্রোমিয়ার কাকে বলে?
উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রত্যেকটি ক্রোমোজোমে যে গোলাকৃতি ও সংকুচিত স্থান দেখা যায় তাই সেন্ট্রোমিয়ার।
প্রশ্ন–৩. অটোজোম কী?
উত্তর: উচ্চ শ্রেণীর প্রাণি বা উদ্ভিদে সেক্স ক্রোমোজোম বাদে থাকা বাকী ক্রোমোজোমগুলোই অটোজোম ।
প্রশ্ন–৪. হোমোজাইগাস কী?
উত্তর: যখন দুটি প্রচ্ছন্ন জিন অথবা দুটি প্রকট জিন এক সাথে
থাকে তখন তাকে হোমোজাইগাস বলে ।
পদার্থ বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৫. হেটারোজাইগাস কী?
উত্তর: যখন দুটি জিনের একটি প্রচ্ছন্ন অপরটি প্রকট হয় তখন সেই অবস্থাকে হেটারোজাইগাস বলে ।
প্রশ্ন-৬. DNA কী?
উত্তর: জীনের রাসায়নিক গঠন উপাদান হচ্ছে DNA।
DNA এর পূর্ণ অর্থ ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (Deoxyribo Nucleic Acid DNA)। এটি ক্রোমোসোমের একমাত্র রাসায়নিক পদার্থ এবং বংশগতির বাহক।
প্রশ্ন–৭. বর্ণান্ধতা কী?
উত্তর: বর্ণান্ধতা হলো সেক্স লিংকড জিনের কারণে সৃষ্ট এক ধরনের সমস্যা যার ফলে মানুষ বিভিন্ন বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে না ।
প্রশ্ন–৮. জিন প্রকৌশল কী?
উত্তর: একটি জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী ডিএনএ খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলই হলো জিন প্রকৌশল।
প্রশ্ন-৯. জিন কী?
উত্তর: বংশগতির ধারক ও বংশগত বৈশিষ্ট্যের নির্ধারকের এককই হলো জিন
প্রশ্ন–১০. জীব প্রযুক্তি কী?
উত্তর: মানব কল্যাণের লক্ষ্যে অন্য জীব প্রতিনিধিদের যেমন— অণুজীব বা কোষের কোষীয় উপাদানের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারই হলো জীব প্রযুক্তি ।
প্রশ্ন–১১. রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ কী?
উত্তর: রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ কৌশল অবলম্বন করে একটি ডিএনএ অণুর কাঙ্খিত অংশ কেটে আলাদা করে অন্য একটি ডিএনএ অণুতে প্রতিস্থাপনের ফলে যে নতুন ডিএনএ অণুর সৃষ্টি হয় তাকে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ বলে ।
প্রশ্ন-১২. ক্লোনিং কী?
উত্তর: ক্লোনিং হলো অযৌন অঙ্গজ জননের দ্বারা মাতৃজীবের অনুরূপ একটি বা একদল জীবের উদ্ভব ঘটানোর প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন–১৩. সেল ক্লোনিং কাকে বলে?
উত্তর: একই কোষের অসংখ্য হুবহু একই রকমের কোষ সৃষ্টি করাকে সেল ক্লোনিং বলে।
প্রশ্ন–১৪. ট্রান্সজেনেসিস কাকে বলে?
উত্তর: ট্রান্সজেনিক জীব উৎপাদনের পদ্ধতিকে ট্রান্সজেনেসিস বলে।
ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–১৫. সুপার রাইস কী?
উত্তর: সুপার রাইস হলো জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত ভিটামিন- A. সমৃদ্ধ ধান।
গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. অটোজোম ও সেক্স ক্রোমোজোমের দুইটি পার্থক্য লিখ।
উত্তর: অটোলোম ও সেক্স ক্রোমোজমের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ:
অটোজোম ক্রোমোজোম | সেক্স ক্রোমোজোম |
i.যাবতীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রিত হয় অটোজোম দ্বারা। | i. লিঙ্গ নির্ধারিত হয় সেক্স ক্রোমোজোম দ্বারা। |
ii. একটি জীবের সকলের ক্ষেত্রেই অটোজোম একই ধরনের। | ii. একটি জীবের নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে সেক্স ক্রোমোজমের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। |
প্রশ্ন–২. ক্রোমোজোমের নন–ডিসজাংশনের কারণে সৃষ্ট তিনটি রোগের নাম লিখ।
উত্তর: ক্রোমোজোমের নন-ডিসজাংশনের কারণে সৃষ্ট তিনটি রোগের নাম হলো-
i. ডাউন’স সিনড্রোম
ii. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
iii. টার্নার’স সিনড্রোম।
প্রশ্ন–৩. সিকিল সেল রোগ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: সিকিল সেল রোগটি মানুষের রক্তকণিকার একটি রোগ যা পয়েন্ট মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক লোহিত কণিকার আকৃতি চ্যাপ্টা। কিন্তু সিকিল সেল-এর ক্ষেত্রে লোহিত কণিকাগুলোর আকৃতি অনেকটা কাস্তের মতো হয়। এর ফলে সিকিল সেলগুলো সূক্ষ্ম রক্ত নালিকাগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং দেহের সে স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এছাড়া সিকিল সেলের কারণে দেহে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় কারণ ঐ রক্তকণিকাগুলো যত দ্রুত ভেঙ্গে যায় তত দ্রুত লোহিত কণিকা উৎপন্ন হয় না ।
জীববিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন-৪. পুত্র বা কন্যা সন্তানের জন্য পিতা একমাত্র দায়ী কীভাবে?
উত্তর: মেয়েদের ডিম্বাণুর সেক্স ক্রোমোজোম হয় X এবং ছেলেদের শুক্রাণুর সেক্স ক্রোমোজোম হয় X ও Y । যদি ছেলেদের X ক্রোমোজোমবাহী শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর মিলন হয় তবে সন্তানটি মেয়ে হবে। কিন্তু যদি Y ক্রোমোজোমবাহী শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর মিলন ঘটে তাহলে সন্তানটি ছেলে হবে। তাই পুত্র সন্তানের জন্য পিতা দায়ী।
প্রশ্ন–৫. ডাউন‘স সিনড্রোম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ডাউনস সিনড্রোম হলো মানুষের জেনেটিক বিশৃঙ্খলা দ্বারা সৃষ্ট এক ধরনের বংশগত রোগ। মানুষের ২১তম ক্রোমোজোমের নন-ডিসজাংশনের ফলে ডাউনস সিনড্রোম রোগ হয়। এ রোগ হলে চোখের পাতা ফুলে, নাক চ্যাপ্টা হয়, জিহ্বা লম্বা হয় এবং হাতগুলো ছোট হয়।
প্রশ্ন–৬. জীব প্রযুক্তি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মানব কল্যাণের জন্য জীব প্রতিনিধিদের যেমন— অণুজীব বা জীবকোষের কোষীয় উপাদানের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারই হলো জীব প্রযুক্তি। জীব প্রযুক্তি একটি সমন্বিত বিজ্ঞান। অণুজীব বিজ্ঞান, টিস্যু কালচার ও জিন প্রকৌশল এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা জীববিজ্ঞানের অত্যাধুনিক এই শাখাটি মানবসভ্যতার নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে।
প্রশ্ন–৭. উদ্ভিদে টিস্যু কালচার কেন করা হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ক্ষুদ্র অংশ যেমন- মূল, কাণ্ড, পাতা অঙ্কুরিত চারার বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি নির্ধারিত আবাদ মাধ্যমে এবং জীবাণুমক্ত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আবাদ করা হয়। এই কালচারে ফলে এসব বর্ধনশীল অঙ্গসমূহ থেকে অসংখ্য অনুচারা উৎপন্ন হয়। এসব অনুচারার প্রত্যেকটি পরে উপযুক্ত পরিবেশে পৃথক পৃথক পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়। এভাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে অল্প জায়গায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অধিক সংখ্যক কাঙ্খিত চারা উৎপন্ন করা সম্ভব।
প্রশ্ন–৮. মানব ক্লোনিং ধর্মীয় অনুশাসনের উপর হস্তক্ষেপ কেন?
উত্তর: অনেকের মতে মানব ক্লোনিং হবে প্রকৃতির ওপর বড় ধরনের হস্তক্ষেপ। কারণ এটি এক বাধাহীন প্রযুক্তি যাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এবং প্রকৃতির সাথে তা সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামার অনুরূপ। সাধারণ মানুষের একাংশের মতে ধর্ম আর বিজ্ঞান এক নয় এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা উচিত। মানব ক্লোনিং প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলে তা ধর্মীয় অনুশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ।
প্রশ্ন-৯. কৃষি উন্নয়নে জৈব প্রযুক্তির দুটি ব্যবহার ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কৃষি উন্নয়নে জৈব প্রযুক্তির একটি ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো-
কোনো বন্য উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট জিন ফসলি উদ্ভিদে প্রতিস্থাপন করে বা জিনের গঠনে বা বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে উন্নত জাতের উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে। এভাবে ধান, গম, তেলবীজ সহ অনেক শস্যের অধিক ফলনশীল উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।
প্রশ্ন–১০. ফারেনসিক টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: রক্ত, বীর্যরস, মূত্র, অশ্রু, লালা ইত্যাদির DNA অথবা অ্যান্টিবডি থেকে অপরাধীকে শনাক্ত করা হয় ফরেনসিক টেস্ট দ্বারা। অপরাধী সঠিকভাবে সনাক্ত করণের জন্য এবং সঠিক অপরাধীকে শাস্তি প্রদান ও নিরপরাধ ব্যক্তির সুষ্ঠু জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য ফরেনসিক টেস্ট করা জরুরি। এই টেস্ট এর মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীকে সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব।
ICT চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–১১. ট্রান্সজেনেসিস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে জিনের স্থানান্তর ঘটিয়ে উন্নত জীব উদ্ভাবন করা হয়। ট্রান্সেজেনিক জীব উৎপাদনের এ পদ্ধতিকে ট্রান্সজেনেসিস বলা হয়। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ ও মাইক্রোইনজেকশন কৌশল প্রয়োগ করে ট্রানজেনিক জীব উদ্ভাবন করা হয়। কৃষিক্ষেত্রে এবং গৃহপালিত পশুদের উন্নতি সাধনে ট্রান্সজেনেসিস সহজভাবে আমাদের কাছে সাফল্য বয়ে এনেছে।
* তথ্য কণিকা *
১. সেক্স ক্রোমোজোম হচ্ছে — ২টি।
২. ক্রোমোজোমে প্রোটিন থাকে — দুই ধরনের।
৩. বংশগতির ধারক — ক্রোমোজোম
রসায়ন চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪. এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন ক্ষারক সমৃদ্ধ ডিএনএ অণুর গঠন আবিষ্কার হয় — ১৯৫৩ সালে।
৫. আঠার মতো কাজ করে — লাইগেজ এনজাইমটি।
৬. মাতৃগর্ভে ১টি কোষ থেকে শুরু — মানুষের জীবন।
৭. DNA এর শর্করা — ডি-অক্সিরাইবোজ ।
৮. DNA এর গঠন কাঠামোকে বলে — ডাবল হেলিক্স।
৯. DNA ও RNA এর বাহক — ক্রোমোজোম ।
১০. জিনের বাহক হিসেবে কাজ করে — DNA
১১. সন্তানের পরিচয় শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় — DNA টেস্ট।
১২. মানুষের ২১তম ক্রোমোজোমের নন ডিসজাংশনের ফলে হয়ে থাকে — ডাউন’স সিনড্রোম রোগ।
১৩. সিকিল সেল রোগের লক্ষণ — রক্তশূন্যতা।
১৪. বংশগত ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম রোগের কারণে পুরুষের দেহে দেখা যায় — নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য
১৫. সেক্স লিংকড জিনের কারণে ক্ষতস্থান থেকে অবিরাম রক্তক্ষরণের ফলে হয় — হিমোফিলিয়া রোগ।
১৬. পয়েন্ট মিউটেশনের কারণে হয় — হানটিংটন’স রোগ।
১৭. মাসকুলার ডিসট্রফি রোগে শিশুর চলনশক্তি লোপ পায় — দশ বছর বয়সেই।
১৮. যে জিনের বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটে না তাকে বলে — প্রচ্ছন্ন জিন।
১৯. X-লিংকড জিনটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই — প্রচ্ছন্ন প্রকৃতির।
২০. ক্লিনিফেলটার’স জিনড্রোম রোগে আক্রান্ত পুরুষ হয়ে থাকে — XXY ক্রোমোজোম বিশিষ্ট।
২১. হেপাটাইটিস এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় — ইন্টারফেরন।
২২. পুংলিঙ্গ ও পুংগ্যামেট নির্ধারণে ভূমিকা রাখে — Y ক্রোমোজোম।
২৩. দুইটি প্রকট ও প্রচ্ছন্ন জিনকে বলে — হোমোজাইগাস ।
২৪. শর্করা ও থাইমিন থাকে — RNA তে ।
এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৫. সেক্স লিংকড জিনের কারণে সৃষ্ট রোগগুলো হলো — হোয়াইট ফোরলক, মায়োপিয়া ও রাতকানা ।
২৬. ফরেনসিক টেস্টে ডিএনএ থেকে অপরাধী শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় — রক্ত, মূত্র ও লালা।
২৭. ফসফেট, শর্করা ও নাইট্রোজেন বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, থাইমিন, সাইটোসিন) থাকে — নিউক্লিওটাইডে।
২৮. মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ করে থাকে এবং নারী ও পুরুষে ভিন্ন হয় — সেক্স ক্রোমোজোম।
২৯. প্রকৃতিতে অঙ্গজ প্রজননের ফলে উৎপন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বলে — জীব ক্লোনিং।
৩০. কোষ বিভাজনের ক্রোমোজোমগুলো স্পষ্ট হয় — প্রোফেজ দশায়।
৩১. একই কোষের অসংখ্য একই রকম কোষ সৃষ্টি করাকে বলে — সেল ক্লোনিং।
৩২. জিন-ক্লোনিং এর জন্য ব্যবহৃত হয় — ব্যাকটেরিয়া।
৩৩. পৃথিবীর প্রথম স্তন্যপায়ী কোন প্রাণী উৎপাদন করা হয়েছে — ভেড়া থেকে ।
৩৪. ক্লোনিং কয় — ৩ প্রকার।
৩৫. জিনের পরিবর্তনের জন্য ও ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধির জন্য — জেনেটিক বিঘ্নতা ঘটে।
৩৬. জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত গোল্ডেন রাইস — ভিটামিন A সমৃদ্ধ।
৩৭. বটগাছ থেকে উৎপাদিত ফাইসিন এনজাইম ব্যবহৃত হয় — কৃমিরোগের চিকিৎসায়।
৩৮. সুপার রাইসে রয়েছে — ভিটামিন A ।
৩৯. ইনসুলিন — এক ধরনের হরমোন।
৪০. ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহৃত এনজাইম — ট্রিপসিন।
৪১. বটগাছ থেকে পাওয়া যায় — ফাইসিন এনজাইম।
৪২. পনির তৈরিতে ব্যবহৃত হয় — ছত্রাক।
* গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর *
১. সেক্স ক্রোমোজোমের সংখ্যা কতটি?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ২২টি ঘ. ৪৪টি
উত্তর: খ. ২টি
২. ক্রোমোজোমে কয় ধরনের প্রোটিন থাকে?
ক. দুই খ. তিন
গ. চার ঘ. ছয়
উত্তর: ক. দুই
বিজ্ঞান দশম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩. মানব ক্লোনিং এর প্রধান অন্তরায় কী?
ক. ধর্ম খ. জনবল
গ. যন্ত্রপাতি ঘ. অর্থ
উত্তর: ক. ধর্ম
8. বংশগতির ধারক –
ক. লাইসোজোম খ. রাইবোজোম
গ. মাইট্রোকন্ডিয়া ঘ. ক্রোমোজোম
উত্তর: ঘ. ক্রোমোজোম
৫.
চিত্রের ‘ক‘ চিহ্নিত অংশের নাম কী?
ক. নিউক্লিয়াস খ. ক্রোমাটিন
গ. নিউক্লিওলাস ঘ. নিউক্লিওপ্লাজম
উত্তর: গ. নিউক্লিওলাস
৬. কত সালে ডিএনএ অণুর গঠন আবিষ্কার হয়?
ক. ১৯০৮ খ. ১৯৬২
গ. ১৯৫৩ ঘ. ১৯৭৩
উত্তর: গ. ১৯৫৩
নিচের উদ্দীপক ব্যবহার করে ৭ ও ৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৭. উদ্দীপকের গঠনটি আবিষ্কৃত হয় কত সালে?
ক. ১৯৫১ খ. ১৯৫২
গ. ১৯৫৩ ঘ. ১৯৫৪
উত্তর: গ. ১৯৫৩
বাংলা প্রথম পত্র-শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব-সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৮. চিত্রটিতে কোনটি অনুপস্থিত?
ক. গুয়ানিন খ. সাইটোসিন
গ. থাইমিন ঘ. ইউরাসিল
উত্তর: ঘ. ইউরাসিল
৯. কোন এনজাইমটি আঠার মতো কাজ করে?
ক. লাইগেজ খ. প্রোটিয়েজ
গ. লাইপেজ ঘ. অ্যামাইলেজ
উত্তর: ক. লাইগেজ
১০. মানুষের জীবন মাতৃগর্ভে কয়টি কোষ থেকে শুরু?
ক. ১ খ. ২
গ. ৩ ঘ. ৪
উত্তর: ক. ১
১১. DNA এর শর্করা কোনটি?
ক. হেক্সোজ খ. রাইবোজ
গ. ডেক্সোট্রোজ ঘ. ডি-অক্সিরাইবোজ
উত্তর: ঘ. ডি-অক্সিরাইবোজ
১২. নিচের কোনটির গঠন কাঠামোকে ডাবল হেলিক্স বলা হয়?
ক. DNA খ. RNA
গ. ক্রোমোজোম ঘ. প্রোটিন
উত্তর: ক. DNA
১৩. DNA ও RNA এর বাহক কোনটি?
ক. জিন খ. প্রোটিন
গ. ক্রোমোজোম ঘ. কোষ
উত্তর: গ. ক্রোমোজোম
১৪. জিনের বাহক হিসেবে কোনটি কাজ করে?
ক. ডি এন এ খ. আর এর এ
গ. প্লাজমিড ঘ. এনজাইম
উত্তর: ক. ডি এন এ
১৫. সন্তানের পরিচয় সনাক্তকরণে কোনটি ব্যবহৃত হয়?
ক. ব্লাড টেস্ট খ. ফরেনসিক টেস্ট
গ. ডি.এন.এ টেস্ট ঘ. কর্ণিয়া টেস্ট
উত্তর: গ. ডি.এন.এ টেস্ট
১৬. মানুষের ২১তম ক্রোমোজোমের নন ডিসজাংশনের ফলে কোন রোগটি হয়?
ক. সিকিল সেল
খ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
গ. ডাউন’স সিনড্রোম
ঘ. টার্নার’স সিনড্রোম
উত্তর: গ. ডাউন’স সিনড্রোম
বাংলা প্রথম পত্র আম-আঁটির ভেঁপু- সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৭. সিকিল সেল রোগের লক্ষণ কোনটি?
ক. রক্ত শূন্যতা খ. কণ্ঠস্বর কর্কশ
গ. নাক চ্যাপটা ঘ. জিহ্বা লম্বা
উত্তর: ক. রক্ত শূন্যতা
১৮. বংশগত কোন রোগের কারণে পুরুষের দেহে নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়?
ক. সিকিল সেল
খ. টার্নার’স সিনড্রোম
গ. হানটিংটন’স রোগ
ঘ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
উত্তর: ঘ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
১৯. সেক্স লিংকড জিনের কারণে ক্ষতস্থান থেকে অবিরাম রক্তক্ষরণের ফলে সৃষ্ট রোগটি কী?
ক. মায়োপিয়া
খ. মাসকুলার ডিসট্রফি
গ. হিমোফিলিয়া
ঘ. এক্টোডার্মাল ডিসপ্লেসিয়া
উত্তর: গ. হিমোফিলিয়া
২০. হেমোফিলিয়ার লক্ষণ কোনটি?
ক. দাঁতের অনুপস্থিতি
খ. রক্ত জমাট বাঁধতে বিলম্ব হওয়া
গ. দৃষ্টিক্ষীণতা
ঘ. পেশি জটিলতা
উত্তর: খ. রক্ত জমাট বাঁধতে বিলম্ব হওয়া
২১. পয়েন্ট মিউটেশনের কারণে হয় কোন রোগটি?
ক. টার্নার’স সিনড্রোম
খ. হিমোফিলিয়া
গ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
ঘ. হানটিংটন’স
উত্তর: ঘ. হানটিংটন’স
২২. কোন রোগে দশ বছর বয়সেই শিশুর চলনশক্তি লোপ পায়?
ক. বর্ণান্ধতা খ. মায়োপিয়া
গ. হিমোফিলিয়া ঘ. মাসকুলার ডিসট্রফি
উত্তর: ঘ. মাসকুলার ডিসট্রফি
ভূগোল ও পরিবেশ পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৩. ‘যে জিনের বৈশিষ্ট্যর প্রকাশ ঘটে না‘ তাকে বলে–
ক. প্রচ্ছন্ন জিন খ. প্রকট জিন
গ. হোমোজাইগাস ঘ. হেটারোজাইগাস
উত্তর: ক. প্রচ্ছন্ন জিন
২৪. কোন জিনটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রচ্ছন্ন প্রকৃতির?
ক. X-লিংকড খ. Y-লিংকড
গ. Z-লিংকড ঘ. O-লিংকড
উত্তর: ক. X-লিংকড
২৫. কোন রোগে আক্রান্ত পুরুষ XXY ক্রোমোজোম বিশিষ্ট হয়?
ক. সিকিল সেল রোগ
খ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
গ. টার্নার’স সিনড্রোম
ঘ. ডাউন’স সিনড্রোম
উত্তর: খ. ক্লিনিফেলটার’স সিনড্রোম
২৬. হেপাটাইটিস এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় কোনটি?
ক. ফাইসিন খ. থ্রম্বিন
গ. লাইপেজ ঘ. ইন্টারফেরন
উত্তর: ঘ. ইন্টারফেরন
২৭. Y ক্রোমোজোম ভূমিকা রাখে–
i. পুংলিঙ্গ নির্ধারণে
ii. স্ত্রী লিঙ্গ নির্ধারণে
iii. পুং গ্যামেট নির্ধারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
২৮. হোমোজাইগাস বলতে বোঝায়–
i. দুটি প্রকট জীন
ii. একটি প্রকট ও একটি প্রচ্ছন্ন জীন
iii. দুইটি প্রচ্ছন্ন জীন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৯. RNA তে থাকে—
i. শর্করা
ii. থাইমিন
iii. ইউরাসিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৩০. সেক্স লিংকড জিনের কারণে সৃষ্ট রোগ–
i. হোয়াইট ফোরলক
ii. মায়োপিয়া
iii. রাতকানা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩১. ফরেনসিক টেস্টে ডিএনএ থেকে অপরাধী শনাক্তকরণে ব্যবহার করা হয়?
i. রক্ত
ii. মুত্র
iii. লালা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের চিত্রের আলোকে ৩২ ও ৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৩২. A চিহ্নিত অংশটি কী?
ক. ক্যালসিয়াম খ. ফসফেট
গ. রাইবোজ ঘ. ম্যাগনেসিয়াম
উত্তর: খ. ফসফেট
৩৩. উদ্দীপকে B চিহ্নিত অংশটি হলো—
i. অ্যাডেনিন
ii. গুয়ানিন
iii. থাইমিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের চিত্রটি দেখ এবং ৩৪ এবং ৩৫ প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩৪. ওপরের চিত্রটি-
ক. DNA খ. RNA
গ. অটোজোম ঘ. সেক্স ক্রোমোজোম
উত্তর: ঘ. সেক্স ক্রোমোজোম
৩৫. চিত্রের উপাদান –
i. মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ করে
ii. টিস্যু কালচারের ব্যবহৃত হয়
iii. নারী ও পুরুষে ভিন্ন হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৩৬. প্রকৃতিতে অংগজ প্রজননের ফলে উৎপন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে কী বলে?
ক. জিন ক্লোনিং খ. সেল ক্লোনিং
গ. জীব ক্লোনিং ঘ. রিপ্রোডাকটিভ ক্লোনিং
উত্তর: গ. জীব ক্লোনিং
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩৭. কোষ বিভাজনের কোন দশায় ক্রোমোজোমগুলো স্পষ্ট হয়?
ক. প্রোফেজ খ. এনাফেজ
গ. টেলোফেজ ঘ. প্রোমেটাফেজ
উত্তর: ক. প্রোফেজ
৩৮. একই কোষের অসংখ্য একই রকম কোষ সৃষ্টি করাকে কি বলে?
ক. সেল ক্লোনিং খ. জীব ক্লোনিং
গ. জিন ক্লোনিং ঘ. রিপ্রোডাকটিভ ক্লোনিং
উত্তর: ক. সেল ক্লোনিং
৩৯. জিন ক্লোনিং এর জন্য কোনটি ব্যবহৃত হয়?
ক. নিউক্লিওপ্রোটিন খ. প্রোটোভাইরাস
গ. ভাইরাস ঘ. ব্যাকটেরিয়া
উত্তর: ঘ. ব্যাকটেরিয়া
৪০. পৃথিবীর প্রথম স্তন্যপায়ী কোন প্রাণী কোনটি থেকে উৎপাদন করা হয়েছে?
ক. ভেড়া খ. বানর
গ. শূকর ঘ. খরগোস
উত্তর: ক. ভেড়া
৪১. ক্লোনিং কত প্রকার?
ক. ২ খ. ৩
গ. ৪ ঘ. ৫
উত্তর: খ. ৩
৪২. জেনেটিক বিঘ্নতা ঘটে—
i. জিনের পরিবর্তনের জন্য
ii. তেজস্ক্রিয় রশ্মির জন্য
iii. ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধির জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৪৩. জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত গোল্ডেন রাইস কোন ভিটামিন সমৃদ্ধ?
ক. ভিটামিন A খ. ভিটামিন B
গ. ভিটামিন C ঘ. ভিটামিন D
উত্তর: ক. ভিটামিন A
৪৪. বটগাছ থেকে উৎপাদিত কোন এনজাইম কৃমিরোগের চিকিৎসার ব্যবহৃত হয়?
ক. প্যাপেইন খ.ফাইসিন
গ. ট্রিপসিন ঘ. থ্রম্বিন
উত্তর: খ.ফাইসিন
রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪৫. সুপার রাইসে কোন ভিটামিন রয়েছে?
ক. A খ. B
গ. C ঘ. D
উত্তর: ক. A
৪৬. ইনসুলিন এক ধরনের–
ক. এনজাইম খ. ভ্যাকসিন
গ. এন্টিবায়োটিক ঘ. হরমোন
উত্তর: ঘ. হরমোন
৪৭. ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহৃত এনজাইম কোনটি?
ক. অ্যামাইলেজ খ. ট্রিপসিন
গ. ফাইসিস ঘ. থ্রম্বিন
উত্তর: খ. ট্রিপসিন
৪৮. পনির তৈরিতে নিচের কোনটি ব্যবহৃত হয়?
ক. ছত্রাক খ. শৈবাল
গ. ভাইরাস ঘ. পেঁপে
উত্তর: ক. ছত্রাক
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. RNA এর পুরো নাম লিখ ।
খ. DNA টেস্ট কী? বুঝিয়ে লিখ ।
গ. আদি কোষের ক্ষেত্রে উপরের চিত্ররূপটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. A এবং C এর মধ্যে কোনটি লিঙ্গ নির্ধারণে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ কর ।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. RNA এর পুরো নাম হলো- রাইবো নিউক্লিক এসিড।
খ. গবেষণাগারে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাণীর DNA প্রোফাইল তৈরি করাকে DNA টেস্ট বলে । গবেষণাগারে এ টেস্ট করার জন্য পিতামাতা ও সন্তানের মুখের ঝিল্লির পর্দা সংগ্রহ করা হয় এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এ থেকে পিতামাতা ও সন্তানের DNA এর একটি প্রোফাইল প্রস্তুত করা হয়। এরপর সন্তানের DNA প্রোফাইলের সাথে পিতার DNA প্রোফাইল মেলানো হয়। যদি ৯৯.৯% মিল পাওয়া যায় তাহলে সে ব্যক্তিকে সন্তানের প্রকৃত পিতা হিসেবে গণ্য করা হয় ।
ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকের চিত্রটি একটি নিউক্লিয়াসের। এতে নিউক্লিয়ার রন্ধ্র (A), নিউক্লিওলাস (B), নিউক্লিওপ্লাজম ক্রোমাটিম তন্তু (C) বিদ্যমান । সাধারণত প্রকৃত কোষে এ ধরনের নিউক্লিয়াস থাকে। এছাড়া একটি আদর্শ নিউক্লিয়াসের সব কয়টি উপাদান বিদ্যমান থাকায় এটি একটি পরিপূর্ণ নিউক্লিয়াস ।
অপরদিকে আদিকোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয়। কারণ এতে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাস থাকে না। তাই তাকে অসম্পূর্ণ নিউক্লিয়াস বলে ।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রে A হলো নিউক্লিয়ার রন্ধ্র এবং C হলো ক্রোমোজোম। নিউক্লিয়ার রন্ধ্র কোষের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন পদার্থের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করে।
অপরদিকে ক্রোমোজোম বংশগতির ধারক ও বাহক। মানবদেহে প্রতি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে এর মধ্যে ২২ জোড়া একই রকম । একে অটোজোম বলে। আর ১ জোড়া ক্রোমোজোমকে সেক্স বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম বলে।
ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
সেক্স ক্রোমোজোমগুলোকে সাধারণত X ও Y নামে নামকরণ করা হয়। যার দেহে ২৩তম ক্রোমোজোম জোড়া XX সে ব্যক্তি নারী। অপরদিকে যার দেহে ২৩তম ক্রোমোজোম জোড়ার একটি X ও অন্যটি Y ক্রোমোজোম অর্থাৎ XY সে ব্যক্তি পুরুষ ।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, A ও C এর মধ্যে লিঙ্গ নির্ধারণে C এর গুরুত্ব অধিক কেননা সেক্স ক্রোমোজোম ছাড়া লিঙ্গ নির্ধারণ অকল্পনীয়। তাই C এর গুরুত্বই সর্বাধিক ।
প্রশ্ন–২: ফারিহা তার আব্বুর সাথে কৃষি খামারে বেড়াতে যায়। সেখানে সে টমেটো, তামাক, ভুট্টা, পেঁপেসহ অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ দেখতে পায় যা বেশ সতেজ ও রোগজীবাণুমুক্ত। কিন্তু বাড়িতে লাগানো উদ্ভিদগুলো রোগাক্রান্ত। সে তার আব্বুর নিকট এর কারণ জানতে চাইল— আব্বু বললেন, “খামারের উদ্ভিদে জিন বিনিময় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।”
ক. নিউক্লিয়াস কাকে বলে?
খ. সিকিল সেল রোগ বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রযুক্তি কৃষির উন্নতি সাধনে কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে? বিশ্লেষণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোষের প্রোটোপ্লাজমে যে অধিকতর ঘন ও অপেক্ষাকৃত সুস্পষ্ট অংশ দেখা যায় তাকে নিউক্লিয়াস বলে ।
খ. সিকিল সেল রোগটি মানুষের রক্তকণিকার একটি রোগ যা পয়েন্ট মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক লোহিত কণিকার আকৃতি চ্যাপ্টা। কিন্তু সিকিল সেল-এর ক্ষেত্রে লোহিত কণিকাগুলোর আকৃতি অনেকটা কাস্তের মতো হয়। এর ফলে সিকিল সেলগুলো সূক্ষ্ম রক্ত নালিকাগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং দেহের সে স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় । এছাড়া সিকিল সেলের কারণে দেহে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় কারণ ঐ রক্তকণিকাগুলো যত দ্রুত ভেঙ্গে যায় তত দ্রুত লোহিত কণিকা উৎপন্ন হয় না ।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রযুক্তিটি হলো জিন প্রযুক্তি।
জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে জিনের স্থানান্তর ঘটিয়ে কৃষি খামারগুলিতে যে উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হয় সেগুলোকে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ বলে। এ প্রযুক্তিতে রিকম্বিনেন্ট DNA কৌশল প্রয়োগ করে একটি কাঙ্খিত জিন উদ্ভিদ কোষের DNA-তে প্রবেশ করানো হয় । এ কোষ থেকে পরবর্তীতে টিস্যুকালচারের মাধ্যমে উন্নত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ তৈরি করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলকে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদে পরিণত করে রোগ প্রতিরোধী বিশেষ করে পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী জাতে পরিণত করা হয়। ট্রান্সজেনিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করে উদ্ভিদের শৈত্য, লবণাক্ত, খরা, নাইট্রোজেন ও ফাইটোহরমোনের স্বল্পতা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। সে কারণেই ফারিহার দেখা খামারের উদ্ভিদগুলো সতেজ ও রোগমুক্ত এবং তার বাড়ির লাগানো গাছগুলো রোগাক্রান্ত ।
উদ্দীপকে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি অর্থাৎ জিন বিনিময় প্রযুক্তি কৃষি উন্নয়নে যেভাবে ব্যবহৃত হয় তা হলো-
অনুচারা তৈরি: টিস্যুকালচার পদ্ধতিতে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ক্ষুদ্র অংশ যেমন— মূল, কাণ্ড, পাতা অঙ্কুরিত চারার বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি অঙ্গসমূহ থেকে অসংখ্য রোগমুক্ত অনুচারা উৎপন্ন করা হয়। যা পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয় ।
জীববিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
অধিক ফলনশীল জাত সৃষ্টি: কোনো বন্য উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট জিন ফসলি উদ্ভিদে প্রতিস্থাপন করে উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা যাচ্ছে। ফলে একই জমিতে আগের চেয়ে অধিক খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে।
গুণগত মান উন্নয়ন: জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্ভিদের গুণগতমান যেমন— বর্ণ, পুষ্টি গুণ, স্বাদ ইত্যাদির উন্নয়ন করা হয়েছে।
সুপার রাইস সৃষ্টি: জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সুপার রাইস বা গোল্ডেন রাইস নামক এক ধরনের ধান উদ্ভাবন করেছেন । যা ভিটামিন A সমৃদ্ধ ।
ভিটামিন সমৃদ্ধ ভুট্টার জাত সৃষ্টি: সম্প্রতি স্পেনের একদল গবেষক এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুট্টার উন্নত বীজ উদ্ভাবন করেছেন যা ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ ।
স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক: এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৃষ্ট শাকসবজি, ফলমূলের কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা হয় ।
ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ: এ প্রযুক্তি প্রয়োগে সৃষ্ট ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ যে কোনো পরিবেশকে মোকাবিলা করতে সক্ষম ।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে কৃষির উন্নয়নে উদ্দীপকের প্রযুক্তির অবদান বর্তমান বিশ্বে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা।
প্রশ্ন–৩: চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
ক. জিন ক্লোনিং কাকে বলে?
খ. নন্-ডিসজাংশন বলতে কী বুঝায়?
গ. ‘A’ চিত্রটির আকৃতি ও গঠন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রের কোন টেস্টের মাধ্যমে এবং কীভাবে প্রকৃত পিতামাতা চিহ্নিত করা হয়? মতামত দাও ৷
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জৈব প্রযুক্তির মাধ্যম একই জিনের অসংখ্য নকল তৈরি করাকে জিন ক্লোনিং বলে ।
খ. মায়োসিস কোষ বিভাজনের সময় অ্যানাফেজ ধাপে হোমোলগাস ক্রোমোজোমগুলির যেকোন একটি জোড়ার ক্রোমোজোম দুটির একটি অপরটি থেকে পৃথক না হয়ে দুটিই যে কোন মেরুতে চলে যায়। এ অবস্থাকে নন-ডিসজাংশন বলে ।
গ. চিত্রের A- অংশটি হলো ক্রোমোজোম যা বংশগতির বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক। নিচে ক্রোমোজোমের আকৃতি ও গঠনের ব্যাখ্যা করা হলো—
ক্রোমোজোমের আকার সাধারণত লম্বা। প্রতিটি ক্রোমোজোমের দেহ দুই গুচ্ছ সুতার মতো অংশ নিয়ে গঠিত। প্রতিগুচ্ছ সুতার মতো অংশকে ক্রোমোনেমা বলে। কোষ বিভাজনের সময় প্রতিটি ক্রোমোজোম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এদের প্রতিটিকে ক্রোমাটিড বলে। প্রতিটি ক্রোমাটিড একটি ক্রোমানেমা নিয়ে গঠিত।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রত্যেকটি ক্রোমোজোমে গোলাকৃতি ও সংকুচিত স্থান দেখা যায়। যা সেন্ট্রোমিয়ার নামে পরিচিত। এই সেন্ট্রোমিয়ারের উভয় পার্শ্বের অংশকে বাহু বলে। ক্রোমোজোম প্রকৃতপক্ষে কিছু প্রোটিন ও অজৈব পদার্থের সমাবেশ। যা ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা যায় না ।
জীববিজ্ঞান ত্রয়োদশ অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ঘ. চিত্রে প্রদর্শিত ক্রোমোজোমে অবস্থিত DNA টেস্টের মাধ্যমে পিতা-মাতা চিহ্নিত করা সম্ভব।
এ টেস্টে পিতা-মাতার দেহ থেকে সংগৃহীত DNA এর সাথে অন্যান্য মানুষের DNA নমুনা মিলিয়ে প্রকৃত পিতা-মাতা নির্ধারণ করা হয়।
ডিএনএ টেস্ট করার সময় পিতা, মাতা ও সন্তানের মুখগহ্বর থেকে কটন ‘বাড’ এর মতো বিশেষ এক ধরনের ব্যবস্থার দ্বারা মুখের ঝিল্লির (মিউকাস) পর্দা নেওয়া হয়। গবেষণাগারে এ ঝিল্লি থেকে পিতা, মাতা ও সন্তানের ডিএনএ-এর একটি চিত্র (বা প্রোফাইল) প্রস্তুত করা হয়। নানা ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা, এরপর সন্তানের ডিএনএ-এর চিত্রের সাথে পিতার ডিএনএ চিত্র মিলানো হয় এবং যদি ৫০% মিল পাওয়া যায়, তাহলে সে ব্যক্তিকে সেই সন্তানের জৈব পিতা অর্থাৎ প্রকৃত পিতা হিসেবে গণ্য করা হয় ৷
এভাবে সন্তানের প্রকৃত পিতা নির্ধারণে চিত্রের উপাদান তথা DNA টেস্ট ভূমিকা রাখে ।
প্ৰশ্ন-8: নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. হানটিংটন’স রোগের কারণ কী?
খ. মানব ক্লোনিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে কেন?
গ. চিত্রে ‘P’ অঙ্গাণুর রাসায়নিক গঠন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বংশগতিতে ‘P’ অঙ্গাণুটির ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. হানটিংটন’স রোগের কারণ পয়েন্ট মিউটেশন।
খ. মানব ক্লোনিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ ক্লোনিং জাত শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম বরং উল্টো প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আবার ক্লোনিং হয়ে জন্ম হওয়া শিশুটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, ব্যক্তিত্ব কেমন হবে তা বলা যায় না। ফলে তার উপর সামাজিক চাপ প্রবল হবে। এসব কারণেই মানব ক্লোনিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গ. চিত্রে P অঙ্গাণুটি হলো ক্রোমোজোম।
ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠনে দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান। নিউক্লিক এসিড দু’ধরনের হয়। যথা- ডিএনএ এবং আরএনএ। ডিএনএ এর পূর্ণ নাম ডি অক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড একটি ডিএনএ অণু দ্বিসূত্রবিশিষ্ট লম্বা শৃঙ্খলের পলিনিউক্লিওটাইড । অনেকগুলো নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত, তাই একে পলি নিউক্লিওটাইড বলে। প্রতিটা একককে নিউক্লিওটাইড বলে।
ডিএনএ অণুর আকৃতি অনেকটা প্যাচানো সিঁড়ির মতো। প্যাচানো সিঁড়ির দুপার্শ্বের মূল কাঠামো গঠিত হয় পাঁচ কার্বন যুক্ত শর্করা ও ফসফেট দ্বারা। দুপার্শ্বের শর্করার সাথে দুটি করে নাইটোজেন ক্ষারক বা বেস জোড় বেঁধে তৈরি করে সিঁড়ির ধাপগুলো। ডিএনএ অণুর চার ধরনের ক্ষারক হলো এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন ।
আরএনএ হলো রাইবো নিউক্লিক এসিড। এটি একটিমাত্র পলিনিউক্লিওটাইড শেকলে ভাঁজ হয়ে থাকে। আরএনএ পাঁচ কার্বন যুক্ত রাইবোজ শর্করা ও ফসফেট নির্মিত একটিমাত্র পার্শ্ব কাঠামো দ্বারা গঠিত, যার চার ধরনের নাইট্রোজেন ক্ষারক ডিএনএর মতোই। শুধু পার্থক্য হচ্ছে ডিএনএতে পাইরমিডিন ক্ষারক থাইমিন আছে; কিন্তু আরএনএ-তে থাইমিনের পরিবর্তে থাকে ইউরাসিল (U)।
ক্রোমোজোমে হিস্টোন ও নন-হিস্টোন দু’ধরনের প্রোটিন থাকে। উপরে বর্ণিত রাসায়নিক পদার্থগুলো ছাড়া ক্রোমোজোমে লিপিড, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম আয়ন ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। ।
ঘ. উদ্দীপকে P অঙ্গাণুটি হলো ক্রোমোজোম ।
ক্রোমোজোমের গায়েই সন্নিবেশিত থাকে অসংখ্য জিন বা বংশগতির একক। জীবজগতের বৈচিত্র্যের নিয়ন্ত্রক হচ্ছে জিন। এককোষী ব্যাকটেরিয়া, আমাশয়ে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু অ্যামিবা থেকে শুরু করে বিশাল আকৃতির বটবৃক্ষ, বিশাল আকৃতির হাতি, তিমি ইত্যাদি বুদ্ধিমান জীব, মানুষ পর্যন্ত সবারই আকৃতি প্রকৃতি নির্ধারিত হয় তার জিনের সংকেত দ্বারা।
এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
তাছাড়া বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনে প্রতিটা জীব তার অনুরূপ জীবের জন্ম দেয় ৷ এ সবই জিনের দ্বারা হয়। আরএনএ জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করতে ডিএনএ কে সাহায্য করে। ক্রোমোজোম ডিএনএ ও আরএনকে ধারণ করে বাহক হিসাবে। ক্রোমোজোম ডিএনএ ও আরএনএকে সরাসরি বহন করে পিতা-মাতা থেকে তাদের পরবর্তী বংশধরে নিয়ে যায়।
কোষ বিভাজনের মায়োটিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বংশগতির এ ধারা অব্যাহত থাকে। এ কারণে ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলে আখ্যায়িত করা হয় ৷
প্রশ্ন–৫ : অমল বাবুর দুগ্ধজাত খাবার তৈরির একটি কারখানা আছে। একদিন একদল ছাত্র সেটা দেখতে এলে অমল বাবু দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদনে জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। খামারে থাকা ১৫ বছরের ছেলেটিকে দেখে জনৈক ভদ্র মহিলা তার ছেলে বলে দাবি করেন। তারপর তিনি আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত একটি টেস্টের মাধ্যমে ছেলেকে তার কাছে হস্তান্তর করেন।
ক. সেন্ট্রোমিয়ার কাকে বলে?
খ. উদ্ভিদে টিস্যু কালচার কেন করা হয়? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের টেস্টের মাধ্যমে ভদ্র মহিলা কিভাবে তাঁর সন্তানকে ফিরে পেলেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রযুক্তির ব্যবহার অমল বাবুর কারখানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রত্যেকটি ক্রোমোজোমে যে গোলাকৃতি ও সংকুচিত স্থান দেখা যায় তাই সেন্ট্রোমিয়ার ।
খ. টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ক্ষুদ্র অংশ যেমন- মূল, কাণ্ড, পাতা অঙ্কুরিত চারার বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি নির্ধারিত আবাদ মাধ্যমে এবং জীবাণুমুক্ত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আবাদ করা হয়। এই কালচারের ফলে এসব বর্ধনশীল অঙ্গসমূহ থেকে অসংখ্য অণুচারা উৎপন্ন হয়। এসব অণুচারার প্রত্যেকটি পরে উপযুক্ত পরিবেশে পৃথক পৃথক পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়। এভাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে অল্প জায়গায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অধিক সংখ্যক কাঙ্খিত চারা উৎপন্ন করা সম্ভব।
গ. উদ্দীপকের ভদ্র মহিলা ডিএনএ টেস্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে তার সন্তানকে ফিরে পেলেন ।
কেউ যদি কোনো সন্তানকে তার সন্তান হিসেবে দাবি করে তখন এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। ডিএনএ টেস্ট করার সময় ভদ্র মহিলা ও খামারে থাকা ১৫ বছরের ছেলেটির মুখগহ্বর থেকে কটন বাড এর মতো বিশেষ এক ধরনের ব্যবস্থার দ্বারা মুখের ঝিল্লির মিউকাস বা পর্দা নেওয়া হয় ৷
গবেষণাগারে ঝিল্লি থেকে ঐ ভদ্র মহিলার ও ছেলেটির ডিএনএ-র একটি চিত্র বা প্রোফাইল নানা ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। অতঃপর ছেলেটির ডিএনএ এর চিত্রের সাথে ঐ ভদ্র মহিলার ডিএনএ এর চিত্র ৫০% মিল পাওয়া গেলে, ঐ ভদ্র মহিলাকেই খামারে থাকা ছেলেটির জৈব মাতা অর্থাৎ প্রকৃত মাতা হিসাবে গণ্য করা হয়। এভাবে ভদ্র মহিলা তার সন্তানকে ফিরে পেলেন।
ঘ. অমল বাবুর কারখানায় প্রযুক্তিটি দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদনে জীব প্রযুক্তি ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। দুধ থেকে বিভিন্ন প্রযুক্তিতে দুগ্ধজাত দব্য। যেমন— মাখন, পনির, দই ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী তৈরি হয় ।
বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
মাখনে বিশেষ সুগন্ধ ও স্বাদ সৃষ্টি করা হয় বিশেষ ব্যাকটেরিয়া থেকে উৎপন্ন এনজাইমের দ্বারা। পনির তৈরিতে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক ব্যবহৃত হয়। এতে পনিরের স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধের তারতম্য ঘটে। এই প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারে উৎকৃষ্ট মানের পনির উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। দুধে ল্যাকটোজ নামক শর্করা থাকায় তা থেকে দই বা দই জাতীয় খাদ্যদ্রব্য বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করে উৎপাদন করা হয়। এক্ষেত্রে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করে তৈরি করা যায়। ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া দুধে জমাট ঘন অবস্থা সৃষ্টি করে দই-এ রূপান্তরিত করে। এক্ষেত্রে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার বীজ ব্যবহার করা হয়, মূলত এর গুণাগুণের উপরই দই এর গুণাগুণ নির্ভর করে ।
সুতরাং, অমল বাবুর দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদনে জীবপ্রযুক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন–৬: বংশগতি বস্তুগুলোর মধ্যে একটি দেখতে অনেকটা প্যাঁচানো সিড়ির মতো। আরেকটি একটি মাত্র পলিনিউক্লিওটাইড শেকলের ভাঁজ। বংশগতির আরেকটি বস্তু বিজ্ঞানী মেন্ডেল আবিষ্কার করে নাম দেন ফ্যাক্টর।
ক. ক্রোমোজোম কাকে বলে?
খ. নারীরা কখন বন্ধ্যা হয়? ব্যাখ্যা করো ।
গ. উদ্দীপকের প্রথম বংশগতি বস্তুটির গঠন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বংশগতি বস্তু দুটির মধ্যে কোনটি জীবের আকৃতি-প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে? বিশ্লেষণ করো।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিওপ্রোটিন দ্বারা গঠিত যেসব তন্তুর মাধ্যমে জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়, তাকে ক্রোমোজোম বলে।
খ. নারীর সঠিক সময়ে ঋতুস্রাব না হলে কিংবা কোনো ক্ষতি হলে, কোনো কারণে গর্ভাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে অথবা ডিম্বাণু ক্ষতিগ্রস্ত হলে ডিম নিষিক্ত হতে পারে না। তখন একজন নারী বন্ধ্যা হতে পারে।
এছাড়া টার্নার’স সিনড্রোমের ফলে নারীদের জননাঙ্গের বিকাশ না ঘটার কারণেও নারী বন্ধ্যা হয়ে থাকে।
গ. উদ্দীপকে প্রথম বংশগতি বস্তুটি হলো DNA। নিচে DNA অণুর গঠন বর্ণনা করা হলো-
DNA অণু মূলত দ্বিসূত্রবিশিষ্ট লম্বা শৃঙ্খলের পলিনিউক্লিওটাইড। এই অণু দেখতে অনেকটা প্যাচানো সিঁড়ির মতো। প্যাচানো সিঁড়ির দুপার্শ্বের মূল কাঠামো গঠিত হয় পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা ও ফসফেট দ্বারা। দুপার্শ্বের শর্করার সাথে দুটি করে নাইট্রোজেন ক্ষারক বা বেস জোড় বেঁধে তৈরি করে সিঁড়ির ধাপগুলো। নিচে এর চিত্ররূপ দেখানো হলো-
চিত্র: DNA অণুর গঠন
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয় বংশগতি বস্তুটি হলো RNA এবং তৃতীয় বংশগতি বস্তুটি হলো জিন। এ দুটি বংশগতি বস্তুর মধ্যে মূলত তৃতীয়টি জীবের আকৃতি-প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে যুক্তিসহ তা বিশ্লেষণ করা হলো-
বংশগতিবদ্যার জনক মেন্ডেলের তত্ত্ব অনুযায়ী বংশগতির ধারক ও বংশগত বৈশিষ্ট্য যেমন— আকার আকৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদি নির্ধারণ হয় ফ্যাক্টরের মাধ্যমে। এই ফ্যাক্টর জিন নামেও পরিচিত। ক্রোমোজোমের পায়েই সন্নিবেশিত থাকে অসংখ্য জিন বা বংশগতির একক। জীবদেহের বৈচিত্র্যের নিয়ন্ত্রক হচ্ছে জিন। বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনে জীব তার অনুরূপ জীবের জন্ম হয়। এসবই হয় জিনের দ্বারা। DNA অণুতে রক্ষিত জিন জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের সাংকেতিক নীল নকশা পরিবর্তন ছাড়াই সংরক্ষিত হয় এবং পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়।
অপরদিকে, RNA জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করতে DNA কে সাহায্য করে। উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, RNA নয় বরং জিনই জীবের আকৃতি প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন–৭: মনির সাহেব পুত্র সন্তান কামনা করে করে চার মেয়ের জনক হয়েছেন। কিন্তু তার বড় মেয়ে ফাহিমা বিজ্ঞান বইয়ে পড়েছে প্রতিটি জীবকোষের নিউক্লিয়াসে নির্দিষ্ট সংখ্যক অঙ্গাণু থাকে যা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বংশ পরম্পরায় স্থানান্তর করে।
ক. টেস্টটিউব বেবি কাকে বলে?
খ. ভাইরাস কিভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো ।
গ. ফাহিমার পঠিত অঙ্গাণুটির গঠন বর্ণনা করো ।
ঘ. পুত্র সন্তান জন্মদানে মনির সাহেব ও তার স্ত্রীর অবদান সমান- যুক্তি দেখাও ৷
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কৃত্রিম উপায়ে দেহের বাইরে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে প্রাথমিক ভ্রূণ উৎপন্ন করে সেটিকে স্ত্রী লোকের জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে যে শিশুর জন্ম দেয়া হয় তাকে টেস্ট টিউব বেবি বলে ।
ICT চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. পৃথিবীর উৎপত্তি ও জীবনের উৎপত্তির ঘটনাপ্রবাহের এক পর্যায়ে প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড সহযোগে সৃষ্টি হয় নিউক্লিওপ্রোটিন। এই নিউক্লিওপ্রোটিন থেকেই সৃষ্টি হয় প্রোটোভাইরাস। প্রোটোভাইরাস থেকে ভাইরাস সৃষ্টি হয়।
নিউক্লিওপ্রোটিন → প্রোটোভাইরাস → ভাইরাস
গ. ফাহিমার পঠিত অঙ্গাণুটি হলো ক্রোমোজোম যা বংশপতির বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক। নিচে ক্রোমোজোমের গঠন বর্ণনা করা হলো—
ক্রোমোজোমের আকার সাধারণত লম্বা। প্রতিটি ক্রোমোজোমের দেহ দুই গুচ্ছ সুতার মতো অংশ নিয়ে গঠিত। প্রতিগুচ্ছ সুতার মতো অংশকে ক্রোমোনেমা বলে। কোষ বিভাজনের সময় প্রতিটি ক্রোমোজোম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এদের প্রতিটিকে ক্রোমাটিড বলে। প্রতিটি ক্রোমাটিড একটি ক্রোমানেমা নিয়ে গঠিত।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রত্যেকটি ক্রোমোজোমে গোলাকৃতি ও সংকুচিত স্থান দেখা যায়। যা সেন্ট্রোমিয়ার নামে পরিচিত। এই সেন্ট্রোমিয়ারের উভয় পার্শ্বের অংশকে বাহু বলে। ক্রোমোজোম প্রকৃতপক্ষে কিছু প্রোটিন ও অজৈব পদার্থের সমাবেশ। যা ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা যায় না।
রাসায়নিকভাবে ক্রোমোজোম নিউক্লিক অ্যাসিড, প্রোটিন ও অন্যান্য অজৈব উপাদান দ্বারা গঠিত। DNA ও RNA হলো দুই ধরনের নিউক্লিক অ্যাসিড।
ঘ. মানবদেহের প্রতি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে একই রকম ২২ জোড়া থাকে। একে অটোজোম বলে। ২৩ তম ক্রোমোজোম জোড়কে সেক্স ক্রোমোজোম বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম বলে ।
এই ২৩ তম জোড়া অর্থাৎ সেক্স ক্রোমোজোম স্ত্রীর সর্বদা X ও X এবং পুরুষের একটি X ও অন্যটি Y। গর্ভধারণকালে ডিম্বাণুর মিলন যদি x ক্রোমোজোমবিশিষ্ট শুক্রাণুর সাথে হয়, তাহলে কন্যাসন্তান হবে, কারণ তখন XX একসাথে হবে। আর গর্ভধারণকালে ডিম্বাণুর মিলন যদি Y ক্রোমোজোমবিশিষ্ট শুক্রাণুর সাথে হয়, তাহলে যে সন্তান হবে সেটি ছেলে সন্তান হবে, কারণ তখন ‘XY’ একসাথে হবে।
তাই বলা যায় লিঙ্গ নির্ধারণে নারীর কোনো ভূমিকা নেই। বিষয়টি সম্পূর্ণ X এবং Y বহনকারী পুরুষের শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর মিলনের সম্ভাবনার উপর নির্ভরশীল। স্ত্রীর ডিম্বাণু এককভাবে কখনও পুত্র সন্তানের জন্ম দিতে পারে না। পুত্র সন্তান তখনই হবে যখন পুরুষের Y ক্রোমোজোম ধারণকারী শুক্রাণুর স্ত্রীর ডিম্বাণুর সাথে মিলন ঘটে।
সুতরাং সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ উভয়েরই অবদান রয়েছে। সুতরাং মনির সাহেব ও তার স্ত্রীর পুত্র সন্তান জন্মদানে অবদান সমান ।
প্রশ্ন–৮: নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. ক্লোন কাকে বলে?
খ. মানব ক্লোনিং ধর্মীয় অনুশাসনের উপর হস্তক্ষেপ কেন?
গ. উদ্দীপকের চিত্রটির রাসায়নিক গঠন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে চিত্রটির গুরুত্ব মূল্যায়ন করো।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি কোষ বা একগুচ্ছ কোষ যখন একটি মাত্র কোষ থেকে উৎপত্তি হয় এবং সেগুলোর প্রকৃতি মাতৃকোষের মতো হয় তখন তাকে ক্লোন বলে।
ভূগোল ও পরিবেশ দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন
খ. অনেকের মতে মানব ক্লোনিং হবে প্রকৃতির ওপর বড় ধরনের হস্তক্ষেপ। কারণ এটি এক বাধাহীন প্রযুক্তি যাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এবং প্রকৃতির সাথে তা সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামার অনুরূপ। সাধারণ মানুষের একাংশের মতে ধর্ম আর বিজ্ঞান এক নয় এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা উচিত। মানব ক্লোনিং প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলে তা ধর্মীয় অনুশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ।
গ. উদ্দীপকের চিত্রে ক্রোমোজোম দেখানো হয়েছে।
ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠনে দেখা যায় এর মধ্যে নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান রয়েছে। নিউক্লিক এসিড ডিএনএ ও আরএনএ এই দুই ধরনের হয়। একটি ডিএনএ অণু অনেকগুলো নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত। ডিএনএ অণুর আকৃতি অনেকটা প্যাচানো সিঁড়ির মতো। প্যাচানো সিঁড়ির দুপার্শ্বের মূল কাঠামো পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা ও ফসফেট দ্বারা গঠিত। দুপার্শ্বের শর্করার সাথে দুটি করে নাইট্রোজেন ক্ষারক বা বেস জোড়া বেঁধে সিঁড়ির ধাপগুলো তৈরি করে। ডিএনএ অণুর চার ধরনের ক্ষারক হলো এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন ।
আরএনএ একটি মাত্র পলিনিউক্লিওটাইড শিকলে ভাঁজ হয়ে থাকে। এটি পাঁচ কার্বনযুক্ত রাইবোজ শর্করা ও ফসফেট নির্মিত একটি মাত্র পার্শ্ব কাঠামো দ্বারা গঠিত, যার চার ধরনের নাইট্রোজেন ক্ষারক ডিএনএর মতোই। শুধু পার্থক্য হচ্ছে ডিএনএ-তে পাইরিমিডিন ক্ষারক থাইমিন আছে, কিন্তু আরএনএ-তে থাইমিনের পরিবর্তে ইউরাসিল থাকে।
ক্রোমোজোমে হিস্টোন ও নন-হিস্টোন দু’ধরনের প্রোটিন থাকে। উপরে বর্ণিত রাসায়নিক পদার্থগুলো ছাড়া ক্রোমোজোমে লিপিড, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম আয়ন ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রটি হলো ক্রোমোজোম। সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে ক্রোমোজোম প্রধান ভূমিকা পালন করে।
ক্রোমোজোম বংশগতির ধারক ও বাহক। মানবদেহে প্রতি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে এর মধ্যে ২২ জোড়া একই রকম। একে অটোজোম বলে। আর ১ জোড়া ক্রোমোজোমকে সেক্স বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম বলে। সেক্স ক্রোমোজোমগুলোকে সাধারণত X ও Y নামে নামকরণ করা হয়। যার দেহে ২৩তম ক্রোমোজোম জোড়া XX সে ব্যক্তি নারী। অপরদিকে যার দেহে ২৩তম ক্রোমোজোম জোড়ার একটি X ও অন্যটি Y ক্রোমোজোম অর্থাৎ XY সে ব্যক্তি পুরুষ।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে ক্রোমোজোমের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রশ্ন–৯: গ্রীষ্মের ছুটিতে অর্ণব ঢাকার সাভারে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের খামারে গিয়ে দেখল যে, শসা, গাজর, টমেটো, বেগুনের গাছগুলো বেশ মোটা ও সতেজ। খুব বড় সাইজের শসা, বেগুন ও টমেটো দেখে অবাক হয়ে গেল। একটা পাকা টমেটো নিয়ে দেখল তার ফলত্বক বেশ মোটা । তখন সে কেন্দ্রের ভিতরে গিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে জানতে পারল, এগুলো ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ।
ক. বর্ণান্ধতা কী?
খ. ডিএনএ টেস্ট বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের উদ্ভিদগুলোতে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আমাদের দেশে কৃষি উন্নয়নে উক্ত প্রযুক্তিটি কতটুকু সাফল্য বয়ে এনেছে? আলোচনা করো।
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বর্ণান্ধতা হলো সেক্স লিংকড জিনের কারণে সৃষ্ট এক ধরনের সমস্যা যার ফলে মানুষ বিভিন্ন বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে না।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. গবেষণাগারে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাণীর DNA প্রোফাইল তৈরি করে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্যে অন্যকোনো নমুনার সাথে মিল অমিল বিশ্লেষণ করাকে DNA টেস্ট বলে। এ টেস্ট করার জন্য পিতামাতা ও সন্তানের মুখের ঝিল্লির পর্দা সংগ্রহ করা হয় এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এ থেকে পিতামাতা ও সন্তানের DNA এর একটি প্রোফাইল প্রস্তুত করা হয়। এরপর সন্তানের DNA প্রোফাইলের সাথে পিতার DNA প্রোফাইল মেলানো হয়। যদি ৫০% মিল পাওয়া যায় তাহলে সে ব্যক্তিকে সন্তানের প্রকৃত পিতা হিসেবে গণ্য করা হয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদগুলোতে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ বা জিন প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে জিনের স্থানান্তর ঘটিয়ে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হয়। এক্ষেত্রে রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ কৌশল প্রয়োগ করে একটি কাঙ্ক্ষিত জিন উদ্ভিদদেহের কোষের প্রোটোপ্লাজমে প্রবেশ করানো হয়।
পরবর্তীতে এ কোষে থেকে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উন্নত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ তৈরি করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন উদ্ভিদ পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী। এছাড়াও এসব উদ্ভিদ শৈত্য, লবণাক্ততা, খরা, নাইট্রোজেন ও ফাইটোহরমোন সল্পতা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এ কারণে এসকল উদ্ভিদ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন উদ্ভিদ থেকে আকারে বড়, মোটা ও সতেজ হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকের উদ্ভিদগুলো জিন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে উন্নত উদ্ভিদ উৎপাদনে বিজ্ঞানীদের সফলতার প্রতিচ্ছবি।
ঘ. উদ্দীপকে জিন প্রযুক্তি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
আমাদের দেশে জিন প্রযুক্তি অল্প জায়গায় লাখ লাখ কাঙ্ক্ষিত চারা উৎপাদন, অধিক ফলনশীল উদ্ভিদের জাত, সুপার রাইস, ভিটামিন সমৃদ্ধ জাত সৃষ্টি এবং ক্ষতিকর পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য বয়ে এনেছে। যেমন-
অনুচারা তৈরি: টিস্যুকালচার পদ্ধতিতে উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গের ক্ষুদ্র অংশ যেমন— মূল, কাণ্ড, পাতা অঙ্কুরিত চারার বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি অঙ্গসমূহ থেকে অসংখ্য রোগমুক্ত অনুচারা উৎপন্ন করা হয়। যা পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়।
অধিক ফলনশীল জাত সৃষ্টি: কোনো বন্য উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট জিন ফসলি উদ্ভিদে প্রতিস্থাপন করে উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা যাচ্ছে। ফলে একই জমিতে আগের চেয়ে অধিক খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে ।
গুণগত মান উন্নয়ন: জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্ভিদের গুণগতমান যেমন— বর্ণ, পুষ্টি গুণ, স্বাদ ইত্যাদির উন্নয়ন করা হয়েছে। সুপার রাইস সৃষ্টি: জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সুপার রাইস বা গোল্ডেন রাইস নামক এক ধরনের ধান উদ্ভাবন করেছেন। যা ভিটামিন A সমৃদ্ধ।
ভিটামিন সমৃদ্ধ ভুট্টার জাত সৃষ্টি: সম্প্রতি স্পেনের একদল গবেষক এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুট্টার উন্নত বীজ উদ্ভাবন করেছেন যা ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ।
স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক: এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৃষ্ট শাকসবজি, ফলমূলের কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ: এ প্রযুক্তি প্রয়োগে সৃষ্ট ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ যে কোনো পরিবেশকে মোকাবিলা করতে সক্ষম ।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে কৃষির উন্নয়নে উদ্দীপকের প্রযুক্তির অবদান বর্তমান বিশ্বে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা।
প্রশ্ন–১০: জীব প্রযুক্তির বিশেষ রূপ হিসেবে কোষ কেন্দ্রের জিন কণার পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীবের আবির্ভাব ঘটানো হচ্ছে যা বর্তমান পৃথিবীতে যুগান্তকারী ঘটনা ।
ক. টিস্যু কালচার কী?
খ. সিকিল সেল রোগ বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রক্রিয়ার ধাপগুলো বর্ণনা করো।
ঘ. শস্য উন্নয়নে ও ঔষধশিল্পে উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটির ভূমিকা আলোচনা করো ।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি টিস্যুকে জীবাণুমুক্ত পুষ্টিবর্ধক কোনো কালচার মিডিয়ামে বর্ধিতকরণ প্রক্রিয়াই হলো টিস্যু কালচার ।
ভূগোল ও পরিবেশ চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. সিকিল সেল রোগটি মানুষের রক্তকণিকার একটি রোগ যা পয়েন্ট মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক লোহিত কণিকার আকৃতি চ্যাপ্টা। কিন্তু সিকিল সেল-এর ক্ষেত্রে লোহিত কণিকাগুলোর আকৃতি অনেকটা কাস্তের মতো হয়। এর ফলে সিকিল সেলগুলো সূক্ষ্ম রক্ত নালিকাগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং দেহের সে স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় । এছাড়া সিকিল সেলের কারণে দেহে রক্তশূন্যতা দেখা দেয় কারণ ঐ রক্তকণিকাগুলো যত দ্রুত ভেঙ্গে যায় তত দ্রুত লোহিত কণিকা উৎপন্ন হয় না ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি হলো রিকম্বিনেন্ট প্রযুক্তি বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রক্রিয়াটির ধাপগুলো বর্ণনা করা হলো-
১. প্রথমে দাতা জীব থেকে কাঙ্ক্ষিত জিনসহ ডিএনএ অণু পৃথক করা হয়। এরপর এই জিনের বাহক বা ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিড ডিএনএ পৃথক করা হয়।
২. এ ধাপে প্লাজমিড ডিএনএ এবং দাতা ডিএনএ এক বিশেষ ধরনের উৎসেচক দ্বারা খণ্ডিত করা হয়। দাতা ডিএনএ-র এসব খণ্ডের কোনো একটিতে কাঙ্ক্ষিত জিনটি থাকে।
৩. এ ধাপে লাইগেজ নামক এক ধরনের এনজাইম দ্বারা দাতা ডিএনএ- কে প্লাজমিড ডিএনএ-এর কর্তিত প্রান্তে স্থাপন করা হয়। লাইগেজ এখানে আঠার মতো কাজ করে। ফলে নির্দিষ্ট জিনসহ রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্লাজমিড সৃষ্টি হয়। এই রিকম্বিনেন্ট প্লাজমিডগুলো এখন দাতা ডিএনএ-এর বিভিন্ন খণ্ডিত অংশ বহন করে ।
৪. এখন এই রিকম্বিনেন্ট প্লাজমিডকে ট্রান্সফরমেশন পদ্ধতিতে ব্যাকটেরিয়ায় প্রবেশ করানো হয়।
৫. এরপর রিকম্বিনেন্ট প্লাজমিডবাহিত ব্যাকটেরিয়াকে পৃথক করা এবং নির্দিষ্ট জিন বহনকারী ব্যাকটেরিয়াকে শনাক্ত করা হয়। নির্দিষ্ট জিন বহনকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর ব্যাপক বংশবৃদ্ধি ঘটানো হয়, এটি হচ্ছে জিন ক্লোনিং, যার ফলে জিনের বহু কপি তৈরি হয় ।
ঘ. উদ্দীপকে জীব প্রযুক্তির কথা বলা হয়েছে। মানবকল্যাণের উদ্দেশ্যে জীবকে ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন উপাদান তৈরির প্রযুক্তিকেই সাধারণত জীব প্রযুক্তি বলা হয়। শস্য উন্নয়নে ও ঔষধশিল্পে জীবপ্রযুক্তির ভূমিকা আলোচনা করা হলো-
শস্য উন্নয়নে : জীব প্রযুক্তিতে রিকম্বিনেন্ট DNA কৌশল প্রয়োগ করে টিস্যুকালচারের মাধ্যমে উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ তৈরি করা হয় গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলকে ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদে পরিণত করে রোপ প্রতিরোধে, বিশেষ করে পতঙ্গ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী জাতে পরিণত করা হয়।
ট্রান্সজেনিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করে উদ্ভিদের শৈত্য লবণাক্ত, খরা নাইট্রোজেন ও ফাইটোহরমোনের স্বল্পতা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। অধিক ফলনশীল উদ্ভিদের জাত সৃষ্টি এবং প্রাণী ও উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদির গুণগত মান উন্নয়নে জীব প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ঔষধ শিল্পে : জীব প্রযুক্তি দ্বারা মারাত্মক রোগ-ব্যাধি শনাক্তকরণের পাশাপাশি ঔষধ উৎপাদনের প্রক্রিয়াতে উন্নতি সাধিত হয়েছে। পোলিও, যক্ষ্মা, হাম, বসন্তসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিরোধক হিসেবে জীব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভ্যাকসিন বা টিকা উৎপাদন করা হয়েছে। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইন্টারফেরন উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে, যা দেহের রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অত্যন্ত সহায়ক। এটি হেপাটাইটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং ক্যানসার রোগীদেরকে প্রয়োগ করে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন, মানুষের দেহ বৃদ্ধির হরমোন ইত্যাদি জনসাধারণের হাতের নাগালের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা চলে এসেছে। পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন নামক অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ অল্প সময়ে অধিক সংখ্যক উৎপাদনে এ প্রযুক্তির প্রয়োগ দেখা যায়। মানুষ ও গবাদিপশুর রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন এনজাইম তৈরিতে জৈব প্রযুক্তি কাজে লাগে।
এছাড়া এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রান্সজেনিক প্রাণী উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রাণীগুলোর দুধ, রক্ত ও মূত্র থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ আহরণ করা হয়।
অথবা,
ঔষধ শিল্পে :
উদ্দীপকে আলোচিত প্রযুক্তিটি হলো জীব প্রযুক্তি। নিচে ঔষধ শিল্পে জীব প্রযুক্তির ব্যবহার আলোচনা করা হলো-
১. ভ্যাকসিন উৎপাদন: বর্তমানে জিন প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে সংক্রামক রোগের (যেমন- পোলিও, যক্ষ্মা, হাম, বসন্ত ইত্যাদি) প্রতিষেধক টিকা উৎপাদন করা হয়েছে।
২. ইন্টারফেরন উৎপাদন: জীন প্রকৌশল প্রয়োগ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিক ইন্টারফেরন উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। এটি হেপাটাইটিস চিকিৎসায় এবং ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ৩. হরমোন উৎপাদন: বিভিন্ন হরমোন যথা- ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন মানুষের দৈহিক বৃদ্ধি হরমোন ইত্যাদি উৎপাদন জীব প্রযুক্তির একটি উল্লেখযোগ্য দিক।
৪. অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন: কম সময়ের মধ্যে দ্বিগুণ পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করা হচ্ছে জীব প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন অ্যান্টিবায়োটিক।
৫. এনজাইম উৎপাদন: পরিপাক সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের উপাদান হিসেবে কিছু এনজাইম, যেমন- অ্যামাইলেজ, প্রোটিয়েজ ও লাইপেজ, পেঁপে থেকে প্যাপেইন, বট গাছ থেকে ফাইসিন যা কৃমি রোগে ব্যবহৃত হয়; গবাদিপশুর প্লাজমা থেকে থ্রম্বিন রক্তপাত বন্ধে ব্যবহৃত হয় এবং ক্ষত নিরাময়ে ট্রিপসিন ব্যবহৃত হয়। জৈব প্রযুক্তির কল্যাণে এসব এনজাইম উৎপাদিত ও বাজারজাত হচ্ছে।
৬. ট্রান্সজেনিক প্রাণী থেকে ঔষধ আহরণ: ট্রান্সজেনিক প্রাণী উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রাণীগুলোর দুধ, রক্ত ও মূত্র থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ আহরণ করা হয় যা মলিকুলার ফার্মিং নামে পরিচিত।