এসএসসি-ভূগোল ও পরিবেশ-পঞ্চম অধ্যায়-বায়ুমণ্ডল নোট

এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন

অধ্যায়- ০৫ : বায়ুমণ্ডল

Atmosphere

প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা নবম-দশম শ্রেণি ও এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ থেকে পঞ্চম অধ্যায় বায়ূমণ্ডল এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা, বিষয়বস্তু, জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক, সৃজনশীল ও বহুর্নিবাচনি প্রশ্ন ও উত্তরসহ বোর্ডের প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সহায়কবই হিসাবে আমার এই নোটটি অনুশীলন করলে পরীক্ষায় সফলতা আসবেই। এসএসিসি পরীক্ষায় কমন উপযোগী সৃজনশীল বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তরগুলি সাজেশন আকারে তুলে ধরা হয়েছে যা পরীক্ষার ভীতি দূরকরে সাফল্য আনবে।

পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি

ভূমিকা : জীবনধারণের জন্য যেসব উপকরণ অপরিহার্য, বায়ুমণ্ডল তাদের মধ্যে অন্যতম। যে গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে, তাকে বলে বায়ুমণ্ডল। বায়ুমণ্ডল ভূপৃষ্ঠের চারদিকে পরিবেষ্টিত রয়েছে। বায়ুমণ্ডল যে উপাদানগুলো নিয়ে গঠিত তার কোনটি মানুষ ও অন্যান্য জীবের জন্য কতটুকু দরকার, তা নিয়ে এ অধ্যায়ে আলোচনা হবে ।

ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

আবহাওয়া বেলুন : আবহাওয়াবিজ্ঞানীগণ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের নানা তথ্য সংগ্রহের জন্য ল্যাটেক্স নির্মিত এক ধরনের বেলুন উচ্চ আকাশে প্রেরণ করে থাকেন। এ ধরনের বেলুন আবহাওয়া বেলুন নামে পরিচিত। এ বেলুনগুলোর ব্যাস প্রায় ৬ ফুট এবং এগুলো হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম গ্যাসে পূর্ণ থাকে ।

এটি বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা, চাপ, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে এবং পৃথিবীতে প্রেরণ করে। এটি বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গতিতে চলমান অবস্থায় রাডার, ভূমি স্টেশন বা স্যাটেলাইটের সাথে বেতার যোগাযোগ বজায় রেখে চলে। বায়ুমণ্ডল নিয়ে জানতে বা দুর্যোগ পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে আবহাওয়া বেলুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।

গ্রিনহাউস গ্রিনহাউস প্রভাব : সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যের তাপশক্তি সহজেই কাচের দেয়াল ভেদ করে যেতে পারে, কিন্তু কাচের ঘরের ভেতরের উত্তপ্ত বস্তু থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তাপশক্তি কাচের দেয়াল ভেদ করে বাইরে বের হতে পারে না। ফলে কাচের ঘরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা বাইরের পরিবেশের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকে। কাচের এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে শীতপ্রধান দেশে শীত থেকে বাঁচাতে কাচের তৈরি বাড়িতে প্রয়োজনীয় গাছপালা সৃজন করা হয়।

বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাই- অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর বায়ুস্তর কাচের বাড়ির কাচের মতো আচরণ করে অর্থাৎ সৌর বিকিরণ পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে কিন্তু পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপ মহাকাশে ছড়িয়ে পরতে পারে না, ফলে ক্রমান্বয়ে পৃথিবীর উত্তাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ কারণে উল্লিখিত গ্যাসসমূহকে গ্রিনহাউস গ্যাস ও সমগ্র প্রক্রিয়াটিকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলে ।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

সমমণ্ডল : ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০ কি.মি. ঊর্ধ্ব পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক গঠন বা সংযুক্তি বিশেষত বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত প্রায় একই ধরনের থাকে। বায়ুমণ্ডলের এ অংশই হলো সমমণ্ডল।

বায়ুর তাপমাত্রা ও উপাদানের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে সমমণ্ডলকে কয়েকটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে; যেমন- ট্রপোস্ফিয়ার, স্ট্রাটোস্ফিয়ার, ওজোনস্ফিয়ার, মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার ও এক্সোস্ফিয়ার।

ওজোনস্তর : বায়ুমণ্ডল গঠনকারী গ্যাসীয় পদার্থগুলোর মধ্যে ওজোনস্তর একটি। এটি তীব্র গন্ধযুক্ত বিষাক্ত হালকা নীলবর্ণের গ্যাস। এ স্তরটি না থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির দহনে প্রাণিদেহ পুড়ে যেত এবং প্রাণিকুল অন্ধ হয়ে যেত। অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করায় এ স্তরের তাপমাত্রা অনেক বেশি।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

মেঘাচ্ছন্নতা : কোনো অঞ্চলের উত্তাপ নিয়ন্ত্রণে মেঘাচ্ছন্নতা বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। মেঘের আবরণ যখন কোনো অঞ্চলকে ঢেকে রাখে তখন সেখানে দিনেরবেলায় সূর্যরশ্মি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে না। তেমনি রাত্রিকালে ভূপৃষ্ঠের তাপ বৃহৎ তরঙ্গরূপে বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে বিলীন হতে পারে না। তাই মেঘাচ্ছন্নতার ফলে দিনেরবেলায় উত্তাপ কম হয়, কিন্তু রাত্রিকালে উত্তাপ বৃদ্ধি পায় । এ কারণে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি মেঘমুক্ত রাত্রির অপেক্ষা বেশি উষ্ণ হয়ে থাকে ।

পানিচক্র : সমুদ্র, বায়ুমণ্ডল ও ভূপৃষ্ঠের পানি সবসময় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর ভৌত অবস্থা ও ভৌগোলিক অবস্থানের পরিবর্তন ঘটিয়ে আবার সাগরে ফিরে আসার প্রক্রিয়াই হলো পানিচক্র।

পানিচক্র প্রকৃতির এক জটিল প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পৃথিবীর মোট পানি সম্পদের ভারসাম্য রক্ষা করছে। পানিচক্র সম্পূর্ণ আবর্তিত হতে সাধারণত ২.৫ বছর সময় লাগে ।

পরিপৃক্ত বায়ু : বায়ু নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। কিন্তু বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তার জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ু যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে সে পরিমাণ জলীয়বাষ্প বায়ুতে থাকতে পারে, এর অধিক জলীয়বাষ্প গ্রহণ করতে পারে না তখন তাকে সম্পৃক্ত বা পরিপৃক্ত বায়ু বলে।

বাংলা প্রথম পত্র-কপোতাক্ষ নদ-সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

মওসুম : ‘মওসুম’ একটি আরবি শব্দ। এ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘ঋতু’।

মকরক্রান্তি : ২১শে জুন থেকে ২২শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যের দক্ষিণায়ন চলে। ২২শে ডিসেম্বর সূর্যকে আকাশের সবচেয়ে দক্ষিণে দেখা যায়। এদিন সূর্য ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশের ঠিক উপরে থাকে, অর্থাৎ ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষরেখা দিয়ে সূর্যের দক্ষিণে দক্ষিণায়নের সীমা সূচিত হয়। এদিন সূর্যের অবস্থান রাশিচক্রের মকর রাশিতে থাকে বলে ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশে যে ক্রান্তিরেখা তা-ই মকরক্রান্তি ।

বিশ্ব উষ্ণায়ন বা Global Warming: বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। পৃথিবীতে পরিবেশগত সমস্যাগুলোর মধ্যে বিশ্ব উষ্ণায়ন অন্যতম । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক মানুষের কাজকর্মের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বলে।

আবহাওয়া স্তরে কার্বন ডাইঅক্সাইড বৃদ্ধির জন্য কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস দায়ী। এছাড়া মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড এবং ক্লোরোফ্লোরো কার্বন উপাদান পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন বা Global Warming বর্তমান পৃথিবীতে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের জলবায়ুতে গ্রিনহাউসের প্রতিক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকায় দুর্ভোগ বয়ে আনবে এবং মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নিচে বিশ্বের জলবায়ুতে গ্রিনহাউসের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত সাম্প্রতিক তথ্যসমূহ উপস্থাপন করা হলো-

১। প্রাকৃতিক : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এবং মধ্য আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাংশের দেশগুলোতে সাম্প্রতিককালে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, সুনামি প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

২। মানবিক : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং অনেক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি দারিদ্র্যসীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের জলবায়ুর ধরন সাম্প্রতিক সময়ে সম্পূর্ণভাবে বদলে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মকাল দীর্ঘতর হয়ে উঠেছে এবং শীতকাল পূর্বের তুলনায় বর্ষাসিক্ত হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞান ষষ্ঠ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

জলীয়বাষ্প : জলীয়বাষ্প পানির একটি বায়বীয় অবস্থা। বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্প অতি সামান্য হলেও আবহাওয়া ও জলবায়ু নির্ধারণে এর ভূমিকা অপরিসীম।

বৃষ্টিপাত : প্রচণ্ড সূর্যকিরণে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ফলে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন পানি জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়। ভূপৃষ্ঠের উপরস্থ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উষ্ণ এবং হালকা হয়ে উপরের দিকে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বিন্দু বিন্দু আকারে ঝরে পড়াকে বৃষ্টিপাত বলে। বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টিপাত নিম্নে আলোচনা করা হলো:

বাংলাদেশে পরিচলন, শৈলোৎক্ষেপ ও বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টিপাত হয়। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এ ধরনের বৃষ্টিপাত কেন হয় তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-

পরিচলন বৃষ্টিপাত : প্রচণ্ড সূর্যকিরণে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ভূপৃষ্ঠের উপরস্থ বায়ু উষ্ণ এবং হালকা হয়ে উপরের দিকে উঠে পরিচলনের সৃষ্টি করে। ঊর্ধ্বমুখী বায়ু দ্রুত তাপ হ্রাস করে শীতল হতে থাকে এবং বায়ুতে যথেষ্ট পরিমাণ জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে ঘনীভূত হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে। এ ধরনের মেঘ থেকে ঝড়সহ মুষলধারে বৃষ্টি এবং কখনো কখনো শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়ে থাকে।

শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত : বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে আসার সময় প্রচুর জলীয়বাষ্পসমৃদ্ধ থাকে। এ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু দেশের উচ্চভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলে বাধা পেয়ে শৈলোৎক্ষেপ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টি বা সংঘর্ষ বৃষ্টি : যখন শীতল ও উষ্ণ বায়ু মুখোমুখি উপস্থিত হয়ে একে অপরের বিপরীত দিকে পাশাপাশি চলতে থাকে, তখন শীতল বায়ুর আঘাতে উষ্ণ বায়ু উপরে উঠতে থাকে। ঊর্ধ্বে উঠার ফলে উষ্ণ বায়ু প্রসারিত ও শীতল হয়ে উভয় বায়ুর সীমান্ত বরাবর বৃষ্টিপাত ঘটায়। এ জাতীয় বৃষ্টিপাতই বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টি। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বজ্রবিদ্যুৎসহ এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়।

ঘূর্ণি বৃষ্টিপাত: প্রচণ্ড সূর্যকিরণে সাগরের পানি উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং জলীয়বাষ্পে পরিণত হয় ।জলীয়বাষ্পপূর্ণ  বায়ু উষ্ণ এবং হালকা হয়ে ঘূর্ণন আকারে উপরের দিকে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে ঐস্থানেই বৃষ্টিপাত ঘটায়।

বাংলাদেশের জলবায়ুর নিয়ামকসমূহের প্রভাব নিচে ব্যাখ্যা করা হলো

উচ্চতা: সমুদ্রসমতল থেকে যতই উপরে ওঠা যায়, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা ততই হ্রাস পায়। যেমন- দিনাজপুর ও শিলং একই অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শুধু উচ্চতার তারতম্যের জন্য এদের জলবায়ু ভিন্ন রকম।

সমুদ্র থেকে দূরত্ব : জলভাগের অবস্থান কোনো এলাকার জলবায়ুকে মৃদুভাবাপন্ন করে। যেমন- কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এখানকার জলবায়ু রাজশাহীর তুলনায় বেশ মৃদুভাবাপন্ন ।

বাংলা দ্বিতীয় সমাস বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

বায়ুপ্রবাহ : বায়ুপ্রবাহ কোনো জায়গার জলবায়ুর উপরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু কোনো এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে সে এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। যেমন- বাংলাদেশে বর্ষাকালে জলীয়বাষ্পপূর্ণ মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আবার শীতকালে বাংলাদেশের উপর দিয়ে শুষ্ক মহাদেশীয় বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে।

পর্বতের অবস্থান: উচ্চ পার্বত্য এলাকা বায়ুপ্রবাহের পথে বাধা হলে এর প্রভাব জলবায়ুর উপর পরিলক্ষিত হয়। যেমন- হিমালয় পর্বতে বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া জলবায়ুর নিয়ামকসমূহের আরও প্রভাব রয়েছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কী কী দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে :

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নিম্নোক্ত দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে—

১। বৃষ্টির সময়ে অনাবৃষ্টি;

২। খরার সময়ে বৃষ্টি হচ্ছে;

পদার্থ বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩। গরমের সময়ে উত্তরে হাওয়া হচ্ছে;

৪। শীতের সময়ে হচ্ছে তপ্ত হাওয়া;

৫। সময়ে অসময়ে জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন১. বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে উঁচু স্তরের নাম কী?

উত্তর : এক্সোমণ্ডল।

প্রশ্ন২. ঋতু আশ্রয়ী বায়ু কী?

উত্তর : ঋতুর সঙ্গে সঙ্গে দিক পরিবর্তন করে যে বায়ু তাকে ঋতু আশ্রয়ী বায়ু বলে।

প্রশ্ন৩. জীবনধারণের জন্য পৃথিবীর জীবকুলের কাছে কোন জিনিস অপরিহার্য?

উত্তর : জীবকুলের কাছে বায়ুমণ্ডল অপরিহার্য।

প্রশ্ন৪. ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে কত কি.মি. পর্যন্ত বায়ুমণ্ডল বিস্তৃত?

উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে ১০,০০০ কি.মি. পর্যন্ত ।

প্রশ্ন৫. কোন স্তর সূর্যের আলো বেশির ভাগ অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেয়?

উত্তর : ওজোন স্তর ।

প্রশ্ন৬. এক্সোমণ্ডলে কোন কোন গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়?

উত্তর : হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন গ্যাসের ।

প্রশ্ন৭. সমগ্র বিশ্বের পানি সরবরাহের সর্ববৃহৎ স্থায়ী আধার কী?

উত্তর : সর্ববৃহৎ ও স্থায়ী আধার হচ্ছে সমুদ্র।

প্রশ্ন৮. জলীয়বাষ্পের প্রধান উৎস কী?

উত্তর : জলীয়বাষ্পের প্রধান উৎস সমুদ্র।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন৯. শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?

উত্তর : বায়ু যে উষ্ণতায় জলীয়বাষ্পরূপে ঘনীভূত হয় তাকে শিশিরাঙ্ক বলে।

প্রশ্ন১০. বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কত?

উত্তর : শতকরা ১ ভাগেরও কম।

প্রশ্ন১১. আর্দ্র বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ থাকে কত ভাগ?

উত্তর : শতকরা ২ থেকে ৫ ভাগ প্রায় ।

প্রশ্ন১২. বৃষ্টিপাত কাকে বলে?

উত্তর : স্বাভাবিকভাবে ভাসমান মেঘ ঘনীভূত হয়ে পানির ফোঁটা আকারে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে।

প্রশ্ন১৩. বাংলাদেশে কোন ঋতুতে পরিচলন বৃষ্টি হয়ে থাকে?

উত্তর : বাংলাদেশে বর্ষাকালে পরিচলন বৃষ্টি হয়ে থাকে।

প্রশ্ন১৪. তুন্দ্রা অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর: হিমশীতল জলবায়ু।

জীববিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন১৫. কোন অঞ্চল সারা বছর বরফাচ্ছন্ন থাকে?

উত্তর : তুন্দ্রা অঞ্চল।

প্রশ্ন১৬. কোন অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়?

উত্তর : তুন্দ্রা অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়।

প্রশ্ন১৭. বর্তমান পৃথিবীতে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের মধ্যে অন্যতম কী?

উত্তর : বিশ্ব উষ্ণায়ন ।

প্রশ্ন১৮. বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্যাস কোনগুলো?

উত্তর : কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন ও ক্লোরোফ্লোরো- কার্বন ।

প্রশ্ন১৯. কোন সালে বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ দিক চিহ্নিত করেছে?

উত্তর : ২০০৯ সালে।

প্রশ্ন২০. বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে কোন দেশ?

উত্তর : বাংলাদেশ ।

প্রশ্ন২১. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়ায় প্রায় কত কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

উত্তর : এশিয়ায় প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।

প্রশ্ন২২. বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য কয়টি ঝুকিপূর্ণ দিক চিহ্নিত করেছে?

উত্তর : ৫টি।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন২৩. তন্দ্রা অঞ্চলে প্রতি বর্গমাইলে কতজন লোকের বাস?

উত্তর : তুন্দ্রা অঞ্চলে প্রতি বর্গমাইলে ১ জন লোকের বাস।

প্রশ্ন২৪. মৌসুমি বায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর : আর্দ্র গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল।

প্রশ্ন২৫. শুষ্ক বায়ু কাকে বলে?

উত্তর : বায়ুতে জলীয়বাষ্প যখন একদম থাকে না, তাকে শুষ্ক বায়ু বলে।

প্রশ্ন২৬. কোথায় সূর্যালোক মাটিতে পৌঁছাতে পারে না?

উত্তর : বনভূমিতে।

প্রশ্ন২৭. প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় কত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়?

উত্তর : ৬° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায় ।

ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন২৮. মরুভূমির আবহাওয়া কেমন?

উত্তর : মরুভূমিতে দিনে প্রচণ্ড গরম ও রাতে তীব্র শীত।

প্রশ্ন২৯. কোনটি সূর্যতাপ সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখে?

উত্তর : মৃত্তিকার গঠন বা বুনট ।

প্রশ্ন৩০. বারিপাত কিসের উপর নির্ভরশীল?

উত্তর : বারিপাত জলীয়বাষ্পের উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন৩১. পরম আর্দ্রতা কাকে বলে?

উত্তর কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে জলীয়বাষ্পের প্রকৃত পরিমাপকে পরম আর্দ্রতা বলে।

প্রশ্ন৩২. এক্সোমণ্ডল কাকে বলে?

উত্তর : তাপমণ্ডলের উপরে প্রায় ৯৬০ কি. মি. পর্যন্ত যে বায়ুস্তর আছে তাকে এক্সোমণ্ডল বলে।

প্রশ্ন৩৩. কোন স্তরের উপরে তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া থেমে যায়?

উত্তর : মেসোমণ্ডলের উপরে।

প্রশ্ন৩৪. কোন স্তরে জেট বিমানগুলো চলাচল করে?

উত্তর : স্ট্রাটোমণ্ডলে ।

প্রশ্ন৩৫. সুমেরু কুমেরু বৃত্তের মধ্যবর্তী স্থানে কোন অঞ্চল অবস্থিত?

উত্তর : সুমেরু ও কুমেরু বৃত্তের মধ্যবর্তী স্থানে তুন্দ্রা অঞ্চল অবস্থিত।

প্রশ্ন৩৬. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর প্রায় কত শতাংশ এলাকার দরিদ্র অধিবাসীর দুর্ভোগ বাড়বে?

উত্তর : প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকার দরিদ্র অধিবাসীর দুর্ভোগ বাড়বে।

প্রশ্ন৩৭. কোন দেশে গ্রীষ্মকাল দীর্ঘতর হয়ে উঠেছে?

উত্তর : অস্ট্রেলিয়ায়।

প্রশ্ন৩৮. গ্রিনহাউস প্রভাব পৃথিবীর কোন কোন দেশে সুফল বয়ে আনবে?

উত্তর : গ্রিনহাউস প্রভাব কানাডা, রাশিয়া, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, দক্ষিণ আমেরিকা প্রভৃতি দেশে সুফল বয়ে আনবে।

প্রশ্ন৩৯. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে শতকের শেষ নাগাদ বিশ্বে কত শতাংশ চাষাবাদ হ্রাস পাবে?

উত্তর : ২০ থেকে ৪০ শতাংশ চাষাবাদ হ্রাস পাবে।

প্রশ্ন৪০. ২০০৯ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে কতটি দেশ অংশগ্রহণ করে?

উত্তর : ১৯৩টি দেশ অংশগ্রহণ করে।

প্রশ্ন৪১. জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর : ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয়।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন৪২. তুন্দ্রা অঞ্চলে কোন প্রকার গাড়ি যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হয়?

উত্তর : তুন্দ্রা অঞ্চলে শ্লেজ নামক এক প্রকার চাকাবিহীন গাড়ি ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন৪৩. হিমযুগে পৃথিবীর তাপমাত্রা পরবর্তী হিমযুগের অন্তর্বর্তী সময়ের তাপমাত্রার তুলনায় কত ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল?

উত্তর : ৪°-৫° সেলসিয়াস কম ছিল।

প্রশ্ন৪৪. ২১ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা আরও কত ডিগ্রি যুক্ত হতে যাচ্ছে?

উত্তর : অতিরিক্ত প্রায় ২.৫° সে. ৫.৫° সে. যুক্ত হতে যাচ্ছে।

প্রশ্ন৪৫. তুন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসীরা কোন অসূত্র দ্বারা সমুদ্র থেকে তিমি সিল শিকার করে?

উত্তর : হারপুন নামক অস্ত্র দ্বারা।

প্রশ্ন-৪৬. কোন অঞ্চলে জনবসতি ঘন?

উত্তর : মৃদু শীতল নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে জনবসতি ঘন।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: অশ্ব অক্ষাংশ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : নিরক্ষীয় শান্ত বলয়ের ন্যায় ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়েও দুটি শান্ত বলয়ের সৃষ্টি হয়। ৩০° থেকে ৩৫° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি অবস্থিত। বায়ু নিম্নগামী বলে এ অঞ্চলে অনুভূমিক বায়ুপ্রবাহ অনুভব করা যায় না। প্রাচীনকালে যখন আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে জাহাজযোগে ইউরোপ থেকে আমেরিকায় অশ্ব ও অন্যান্য পশু রপ্তানি করা হতো তখন এ অঞ্চলে পৌঁছলে বায়ুপ্রবাহের অভাবে পালচালিত জাহাজের গতি মন্থর বা প্ৰায় নিশ্চল হয়ে পড়ত। এ অবস্থায় নাবিকগণ খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে অনেক সময় তাদের অশ্বগুলো সমুদ্রে ফেলে দিত। এজন্য আটলান্টিক মহাসাগরের ক্রান্তীয় শান্ত বলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ বলে ।

প্রশ্ন: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর বিকেলে সন্ধ্যায় বৃষ্টিপাত হয় কেন?

উত্তর : নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্থলভাগের চেয়ে জলভাগের বিস্তৃতি বেশি এবং এখানে সূর্যকিরণ সারা বছর লম্বভাবে পড়ে। এ দুটি কারণে এ অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে সারা বছর জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। জলীয়বাষ্প হালকা বলে সহজেই তা উপরে উঠে গিয়ে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে পরিচলন বৃষ্টিরূপে ঝরে পড়ে। তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর প্রতিদিনই বিকেল অথবা সন্ধ্যার সময় এরূপ বৃষ্টিপাত হয় ।

প্রশ্ন: ৪০° থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশ বলা হয় কেন ?

উত্তর : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে অয়ন বায়ু ব্যতীত আরও দুটি বায়ুপ্রবাহ মেবৃত্ত নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে এটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর- পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ুপ্রবাহকে পশ্চিমা বায়ু বলে। ৮০-৮৯° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সর্বাপেক্ষা বেশি। এজন্য এ অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশ বলা হয়।

প্রশ্ন: বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে কোন কারণগুলোকে চিহ্নিত করা যায়?

উত্তর : বিশ্ব উষ্ণায়ন বর্তমান পৃথিবীতে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের মধ্যে অন্যতম। সাম্প্রতিক বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় বায়ুমণ্ডলে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাসসমূহের উপস্থিতির মাত্রার উত্তরোত্তর বৃদ্ধিকে, যাকে গ্রিনহাউস প্রভাব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বায়ুমণ্ডলীয় এ গ্যাসসমূহ ক্ষুদ্র তরঙ্গের সৌররশ্মির পৃথিবীতে পৌঁছতে বাধার সৃষ্টি করে না। অথচ দীর্ঘ তরঙ্গের অবলোহিত বিকিরণ পৃথিবী থেকে মহাশূন্যে যেতে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ উষ্ণ হয়ে ওঠে।

ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এশিয়ার দেশগুলোতে কী প্রভাব পড়বে?

উত্তর : বিশ্ব উষ্ণায়ন বর্তমান পৃথিবীতে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের মধ্যে অন্যতম। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (ADB) একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, উষ্ণায়নের বর্তমান ধারা ২০৫০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ এশিয়ায় শস্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। জলবায়ুর অন্য আনুষঙ্গিক পরিবর্তনের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার ১৫০ কোটির বেশি মানুষ সরাসরি পানি ও খাদ্যঝুঁকিতে পড়বে। ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এ শতকের শেষ নাগাদ বিশ্বে চাষাবাদ ২০ থেকে ৪০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে ।

প্রশ্ন : প্রকৃতিতে পানিচক্র কীভাবে চলতে থাকে?

উত্তর : বাষ্পীভবনের মাধ্যমে সমুদ্রের পানি উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে বাষ্পাকারে উপরে উঠে এবং সুবিশাল বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। এছাড়া ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ হতে প্রস্বেদনের মাধ্যমে জলীয় অংশ বায়ুমণ্ডলে সম্পৃক্ত হয়। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু আবহাওয়াজনিত কারণে ঘনীভূত হয়ে মেঘ, বৃষ্টি, শিশির, তুষার, বরফ প্রভৃতিতে পরিণত হয় এবং সেগুলো বৃষ্টিপাতসহ বিভিন্নরূপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। বিভিন্ন উপায়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত পানির কিয়দংশ বাষ্পীভবনের মাধ্যমে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে মিশে যায় এবং কিয়দংশ নদী দ্বারা বাহিত হয়ে সমুদ্রে নীত হয়, কিয়দংশ উদ্ভিদ অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করে এবং অবশিষ্টাংশ ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরের মধ্যে চুইয়ে প্রবেশ করে। এভাবেই প্রকৃতিতে পানিচক্র চলতে থাকে ।

প্রশ্ন: বায়ুপ্রবাহ কেন কোনো জায়গার জলবায়ুর উপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে?

উত্তর : বায়ুপ্রবাহ কোনো জায়গার জলবায়ুর উপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু যখন কোনো এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন সে এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়; যেমন— বাংলাদেশে বর্ষাকালে প্রচুর জলীয়বাষ্পপূর্ণ মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আবার শীতকালে বাংলাদেশের উপর দিয়ে মহাদেশীয় বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে এবং বায়ুর তাপমাত্রা খুব কমে যায় ।

প্রশ্ন: দুই জায়গা একই অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও কেন একটি অপরটির চেয়ে ভিন্ন জলবায়ুসম্পন্ন হয়?

উত্তর : সমুদ্রসমতল থেকে যতই উপরে ওঠা যায়, উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা ততই হ্রাস পাচ্ছে। সাধারণত প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। উচ্চতার পার্থক্যের কারণে দুই জায়গা একই অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও একটি অপরটির চেয়ে ভিন্ন জলবায়ুসম্পন্ন হয়; যেমন- দিনাজপুর ও শিলং একই অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শুধু উচ্চতার তারতম্যের জন্য এদের জলবায়ু ভিন্ন রকম। শিলংয়ে দিনাজপুরের চেয়ে তাপমাত্রা কম হয়।

প্রশ্ন: কোন ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় বা চরমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে?

উত্তর : সমুদ্র উপকূল থেকে দূরের এলাকায় শীত-গ্রীষ্ম উভয়ই চরম হয়। কারণ স্থলভাগ জলভাগ অপেক্ষা যেমন দ্রুত উষ্ণ হয়, আবার দ্রুত ঠাণ্ডাও হয়। এজন্য গ্রীষ্মকালে মহাদেশের অভ্যন্তর ভাগের এলাকা অত্যন্ত উত্তপ্ত থাকে, আবার শীতকালে তীব্র শীত অনুভূত হয়। এ ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় বা চরমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে।

প্রশ্ন১০: তুন্দ্রা অঞ্চলের জলবায়ু কী ধরনের হয়?

উত্তর :  ‍তুন্দ্রা অঞ্চলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হিমশীতল জলবায়ু। কারণ এ অঞ্চল সারা বছর বরফাচ্ছন্ন থাকে। গ্রীষ্মকাল ক্ষণস্থায়ী ও শীতকাল দীর্ঘস্থায়ী। গ্রীষ্মকালে সূর্য অস্ত যায় না এবং শীতকালে সূর্য খুব কমই উদিত হয়। শীতকালে দীর্ঘদিন উত্তাপ কম থাকায় বিরাট তুষার স্তূপ সঞ্চিত হয়।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন১১: বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার প্রভাব কী ধরনের হবে?

উত্তর : গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাপী সমানভাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থবিরতায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। উন্নত বিশ্ব তাদের উৎপাদিত শস্যের বাড়তি অংশ পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করবে, আর উন্নয়নশীল গরিব দেশগুলোর মানুষ না খেয়ে কঙ্কালসার জীবনযাপনের মাধ্যমে নিজ দেশের সীমানা পেরিয়ে পরিবেশ শরণার্থী হয়ে উঠবে। ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং অনেক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি দারিদ্র্যসীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের জলবায়ুর প্যাটার্ন সাম্প্রতিক সময়ে সম্পূর্ণভাবে বদলে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় গ্রীষ্মকাল দীর্ঘতর হয়ে উঠেছে, শীতকালও পূর্বের তুলনায় বর্ষাসিক্ত হয়ে উঠেছে।

গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১. আরগন গ্যাসটি বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে থাকে?

ক. স্ট্রাটোমণ্ডল                                  খ. ট্রপোমণ্ডল

গ. এক্সোমণ্ডল                                    ঘ. তাপমণ্ডল

উত্তর: গ. এক্সোমণ্ডল

বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

২. স্ট্রাটোমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য হলো, এটি

i. আর্দ্র বায়ুযুক্ত

ii. বিমান চলাচলের উপযোগী

iii. অতিবেগুনি রশ্মি শোষণে সক্ষম

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

অনুচ্ছেদটি পড় এবং নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

অনন্য তার বাবার সঙ্গে সিলেট বেড়াতে যায়। সেখান থেকে তারা জয়ন্তিয়া পাহাড় দেখতে গেল। দূর থেকে দেখল পাহাড়ের একটি ঢালে বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু বিপরীত ঢালে বৃষ্টি হচ্ছে না ।

৩। অনন্য কোন ধরনের বৃষ্টিপাত দেখেছিল?

ক. পরিচলন                                        খ. শৈলোৎক্ষেপ

গ. ঘূর্ণি                                                 ঘ. বায়ু প্রাচীরজনিত

উত্তর: খ. শৈলোৎক্ষেপ

রসায়ন চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

8. পাহাড়ের অপর ঢালে বৃষ্টি না হওয়ার কারণ

i. বায়ুতে জলীয়বাষ্পের অভাব

ii. বায়ু উষ্ণ ও শুষ্ক হওয়া

iii. বায়ুতে জলীয়বাষ্প বৃদ্ধি হওয়ায়

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

৫। বায়ু সর্বদা একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয় কেন?

ক. বায়ুর গতিপথে পর্বতের অবস্থানের জন্য

খ. তাপ ও চাপের পার্থক্যের জন্য

গ. চাপ বলয়ের অবস্থান পরিবর্তনের জন্য

ঘ. নিরক্ষীয় নিম্ন ও উচ্চচাপ বলয়ের জন্য

উত্তর: খ. তাপ ও চাপের পার্থক্যের জন্য

৬। বাংলাদেশে সমুদ্রবায়ু স্থলবায়ু নিয়মিত প্রবাহিত হয় কেন?

ক. স্থলভাগের পরিমাণ বেশি হওয়ায়

খ. উত্তরে হিমালয় পর্বত থাকায়

গ. দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থান করায়

ঘ. নদীমাতৃক দেশ হওয়ায়

উত্তর: গ. দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থান করায়

৭। মৌসুমি বায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো

i. এটি একটি আঞ্চলিক বায়ু

ii. আশ্রয়ী বায়ু

iii. শীত ও গ্রীষ্ম ঋতুভেদে এ বায়ুর দিক পরিবর্তন হয়

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

৮৷ নিচের কোন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ঝুঁকির অন্তর্ভুক্ত?

ক. কৃষিক্ষেত্রে নিশ্চয়তা                     খ. ভূমিকম্প

গ. তাপমাত্রা বৃদ্ধি                               ঘ. মরুকরণ

উত্তর: গ. তাপমাত্রা বৃদ্ধি

৯। পৃথিবীকে বেষ্টন করে রাখা গ্যাসীয় আবরণটি কী?

ক. অশ্মমণ্ডল                                     খ. গুরুমণ্ডল

গ. জীবমণ্ডল                                      ঘ. বায়ুমণ্ডল

উত্তর: ঘ. বায়ুমণ্ডল

বিজ্ঞান ষষ্ঠ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১০। ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে বায়ুমণ্ডলের ব্যাপ্তি কত?

ক. প্রায় ১০,০০০ কি. মি. পর্যন্ত

খ. প্রায় ১০,০০০ মাইল পর্যন্ত

গ. প্রায় ১৫,০০০ কি. মি. পর্যন্ত

ঘ. প্রায় ১৫,০০০ মাইল পর্যন্ত

উত্তর: ক. প্রায় ১০,০০০ কি. মি. পর্যন্ত

১১। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ কোনটি?

ক. পাকিস্তান                                       খ. ভারত

গ. শ্রীলঙ্কা                                           ঘ. বাংলাদেশ

উত্তর: ঘ. বাংলাদেশ

১২। নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে সারা বছর জলীয় বাষ্প বেশি থাকার কারণ

i. স্থলভাগের চেয়ে জলভাগের বিস্তৃতি বেশি

ii. নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর অনুভূমিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়

iii. সূর্য সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয়

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: খ. i ও iii

১৩। নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে গ্রীষ্মকালের শুরুতে কোন বৃষ্টি হয়ে থাকে?

ক. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি                          খ. পরিচলন বৃষ্টি

গ. বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টি                     ঘ. ঘূর্ণিবৃষ্টি

উত্তর: খ. পরিচলন বৃষ্টি

১৪। বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান কোনটি?

ক. নাইট্রোজেন                                  খ. আরগন

গ. ধূলিকণা                                          ঘ. জলীয় বাষ্প

উত্তর: ক. নাইট্রোজেন

১৫। পরিচলন বৃষ্টিপাত্ত সংঘটনের জন্য দায়ী কোনটি?

ক. আয়ন বায়ু                                     খ. পর্বতের অবস্থান

গ. সূর্যের অবস্থান                                ঘ. অদৃশ্য বায়ুপ্রাচীর

উত্তর: গ. সূর্যের অবস্থান

নিচের উদ্দীপকটি পর্যবেক্ষণ করে ১৬ ১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

১৬। উদ্দীপকের ‘A’ চিহ্নিত অঞ্চলে কোন বায়ু প্রবাহিত হয়?

ক. অয়ন বায়ু                                      খ. পশ্চিমা বায়ু

গ. মৌসুমি বায়ু                                    ঘ. মেরু বায়ু

উত্তর: ক. অয়ন বায়ু

১৭। উদ্দীপকের p q বায়ুপ্রবাহদ্বয়ের মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য আছে?

ক. p দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়

খ. p উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়

গ. p উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়

ঘ. p দক্ষিণ-পশ্চিম ও q উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়

উত্তর: গ. p উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৮নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

পাঠদানরত শিক্ষক বললেন, জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় উঁচু পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে উপরে ওঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে এক ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটায়। কিন্তু অন্য ঢালে বৃষ্টি হয় না ।

১৮। শিক্ষক কোন বৃষ্টিপাতের কথা বলেছেন?

ক. ঘূর্ণিবৃষ্টি                                           খ. বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টি

গ. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি                           ঘ. পরিচলন বৃষ্টি

উত্তর: গ. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি

বাংলা প্রথম পত্র-কপোতাক্ষ নদ-সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১৯। কোন বায়ুস্তরের বায়ু আয়নযুক্ত থাকে?

ক. ট্রপোমণ্ডল                                    খ. স্ট্রাটোমণ্ডল

গ. তাপমণ্ডল                                      ঘ. এক্সোমণ্ডল

উত্তর: গ. তাপমণ্ডল

২০। পরিচলন বৃষ্টি সংঘটিত অঞ্চলে

i. সূর্যের আলো খাড়াভাবে পড়ে

ii. জলভাগের আধিক্য দেখা যায়

iii. প্রতিদিন সকালে বৃষ্টিপাত হয়

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

২১। বায়ুর কোন গ্যাস বৃদ্ধির ফলে গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে?

ক. অক্সিজেন                                     খ. ক্লোরোফ্লোরো কার্বন

গ. নাইট্রোজেন                                   ঘ. আর্গন

উত্তর: খ. ক্লোরোফ্লোরো কার্বন

২০৬। বায়ুমণ্ডলের কোন স্তর দিয়ে জেট বিমান চলাচল করে ?

ক. ট্রপোমণ্ডল                                    খ. স্ট্রাটোমণ্ডল

গ. মেসোমণ্ডল                                   ঘ. তাপমণ্ডল

উত্তর: খ. স্ট্রাটোমণ্ডল

২২। লামিয়া নিরক্ষীয় অঞ্চলে মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখে যে প্রতিদিন বিকেলে সন্ধ্যায় বৃষ্টি হচ্ছে। লামিয়ার দেখা বৃষ্টি কোন ধরনের বৃষ্টিপাত ?

ক. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত

খ. পরিচলন বৃষ্টিপাত

ঘ. বায়ুপ্রাচীরজনিত বৃষ্টিপাত

ঘ. ঘূর্ণি বৃষ্টিপাত

উত্তর: খ. পরিচলন বৃষ্টিপাত

২৩। রিফাত চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী এপ্রিল মাসে বেড়াতে এসে গরম অনুভব করল। এই ধরনের আবহাওয়ার জন্য দায়ী

i. কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস

ii. ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গ্যাস

iii. নাইট্রোজেন গ্যাস

নিচের কোনটি সঠিক

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                              ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ক. i ও ii

২৪ বায়ুমণ্ডলের শতকরা কত ভাগ আয়তন অক্সিজেন নাইট্রোজেনের দখলে আছে?

ক. ৭৮.২৯                                          খ. ২০.১৭

গ. ৯৮.৭৩                                           ঘ. ১.২৭

উত্তর: গ. ৯৮.৭৩

বাংলা দ্বিতীয় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

২৫। সার তৈরিতে বায়ুমণ্ডল থেকে কোন উপাদানটি সংগ্রহ করা হয়।

ক. নাইট্রোজেন                                   খ. জলীয়বাষ্প

গ. বোরন                                             ঘ. আয়রন

উত্তর: ক. নাইট্রোজেন

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন১ : দিন দিন বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্বের প্রকৃতি। এই কারণেই বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রে তলিয়ে যাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাংশের বিশাল অংশ। অন্যদিকে এরই প্রভাবে কানাডা, রাশিয়া, ফিনল্যান্ডসহ শীতপ্রধান দেশে লক্ষ একর জমি বরফমুক্ত হয়ে চাষাবাদ বসবাসযোগ্য হয়ে উঠবে

ক. বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?

খ. বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোত উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বায়ুমণ্ডলের যে প্রতিক্রিয়াটিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. উক্ত প্রক্রিয়াটি মানুষের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের উপর কীরূপ প্রভাব ফেলে? বিশ্লেষণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

. যে গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলে।

. পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আবর্তনশীল এবং নিরক্ষরেখা থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে আবর্তনের কারণে গতিবেগ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়। এ উভয় কারণে ঘূর্ণায়মান পৃথিবীপৃষ্ঠে গতিশীল বায়ুপ্রবাহ ও জলস্রোত সরাসরি উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় ।

. উদ্দীপকে উল্লিখিত বায়ুমণ্ডলের যে প্রতিক্রিয়াটির ইঙ্গিত করা হয়েছে তা হলো গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-

বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করছে। এক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডল হলো গ্রিনহাউসের বা কাঁচঘরের কাঁচের দেয়াল বা ছাদের মতো। পৃথিবীতে আসা সূর্যালোক ভূপৃষ্ঠ শোষণ করে ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত করে।

মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ, যেমন- কাঠ ও কয়লা পোড়ানো, গাছকাটা, কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদির কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ইত্যাদির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ গ্যাসগুলোকে বলা হয় গ্রিনহাউস গ্যাস।

বায়ুমণ্ডলে সৃষ্টি হচ্ছে পুরু একটি গ্যাসের স্তর। এর ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ছেড়ে দেওয়া তাপ পুনরায় ফেরত যায় না। তাপ শোষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ক্রমশ উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে উষ্ণতা বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়াই হলো গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া ।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

. উক্ত প্রক্রিয়াটি বলতে গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়াকে বোঝানো হয়েছে। এ গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া মানুষের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের উপর যেরূপ প্রভাব ফেলে তা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-

  • গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার দরুন বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে দুই মেরুতে বিদ্যমান বরফের পাহাড় গলে যাবে। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বেড়ে যাবে ।
  • ঋতু পরিবর্তনসহ ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাবে ।
  • পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকার দরিদ্র অধিবাসীদের দুর্ভোগ বাড়বে ।
  • বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উপকূলীয় এলাকার এক বিরাট অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
  • একবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের মোট জনসমষ্টির প্রায় ২০ শতাংশ অধিবাসীর সরাসরি ভাগ্য বিপর্যয় দেখা দিতে পারে ।
  • তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে মানুষ নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করবে।
  •  গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাপী সমানভাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থবিরতায় এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং অনেক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি দারিদ্র্যসীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার প্রভাব খুবই ভয়াবহ। এর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব বাড়বে।

প্রশ্ন২ :

ক. গর্জনশীল চল্লিশ কী?

খ. কক্সবাজারের আবহাওয়ার প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর ।

গ. উদ্দীপকের ‘ক’ স্থানে সংঘটিত বৃষ্টিপাত ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. উদ্দীপকের ‘খ’ ও ‘গ’ স্থানের বায়ুপ্রবাহের তুলনামূলক আলোচনা কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

. ৪০°-৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সর্বাপেক্ষা বেশি। এ বায়ু বেশ জোরে গর্জন করতে করতে প্রবাহিত হয় বলে এ অঞ্চলই গর্জনশীল চল্লিশ ।

. কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত। সমুদ্রনিকটবর্তী হওয়ায় এখানকার তাপমাত্রায় শীত-গ্রীষ্মে তেমন পার্থক্য হয় না । তাই এখানকার আবহাওয়া সমভাবাপন্ন। জলভাগের অবস্থানের কারণে এখানে কখনো তীব্র গরম বা শীত অনুভূত হয় না ।

. উদ্দীপকের ‘ক’ স্থান হলো নিম্নচাপ অঞ্চল যা ০° অক্ষাংশে অবস্থিত। এ স্থানে সংঘটিত বৃষ্টিপাত হলো পরিচলন বৃষ্টি। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-

দিনেরবেলায় সূর্যের কিরণে পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে সোজা উপরে উঠে যায় এবং শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঐ জলীয়বাষ্প প্রথমে মেঘ ও পরে বৃষ্টিতে পরিণত হয়ে সোজা নিচে নেমে আসে। এরূপ বৃষ্টিপাতকে পরিচলন বৃষ্টি বলে।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্থলভাগের চেয়ে জলভাগের বিস্তৃতি বেশি এবং এখানে সূর্যকিরণ সারা বছর লম্বভাবে পড়ে। এ দুটি কারণে এখানকার বায়ুমণ্ডলে সারা বছর জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। জলীয়বাষ্প হালকা বলে সহজেই তা উপরে উঠে গিয়ে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে পরিচলন বৃষ্টিরূপে ঝরে পড়ে । তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারা বছর প্রতিদিনই বিকাল অথবা সন্ধ্যায় এরূপ বৃষ্টিপাত হয়।

নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে গ্রীষ্মকালের শুরুতে পরিচলন বৃষ্টি হয়ে থাকে। এ সময় এ অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ যথেষ্ট উত্তপ্ত হলেও উপরের বায়ুমণ্ডল বেশ শীতল থাকে। ফলে ভূপৃষ্ঠের জলাশয়গুলো থেকে পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে সোজা উপরে উঠে যায় এবং শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে পরিচলন বৃষ্টিরূপে পতিত হয় ।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

. উদ্দীপকের ‘খ’ হলো উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু আর ‘গ’ হলো দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু। নিচে এ দুই বায়ুপ্রবাহের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-

কর্কটীয় বায়ুচাপ বলয় থেকে যে বায়ু নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু বলে। এ বায়ু ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়। শীতের শুরুতে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু স্থলভাগ ও সমুদ্রের ব্যাপক অংশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রায় ২৫° উত্তর অক্ষাংশে এ বায়ুর সৃষ্টি হয় এবং নিরক্ষরেখা অতিক্রম করার পর ভারত মহাসাগরও পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগর ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে এটি গতিপথ পরিবর্তন করে।

অপরদিকে মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে দক্ষিণ-পূর্ব অয়নবায়ু বলে। এ বায়ু ঘণ্টায় ২২-৫৪ কি. মি. বেগে প্রবাহিত হয়। অয়ন বায়ু উচ্চ অক্ষাংশ থেকে নিম্ন অক্ষাংশের দিকে প্রবাহিত হয় বলে এ বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলসমূহে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে ।

পরিশেষে বলা যায়, উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু ও দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নিয়ত বায়ুপ্রবাহেরই অংশ যা ০°-৩০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে প্রবাহিত হয় ।

প্রশ্ন৩:

ক. বায়ুমণ্ডল কী?

খ. বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন গ্যাস বেশি পরিমাণে থাকার সুবিধা কী বর্ণনা কর ।

গ. ‘Q’ স্তরটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘R’ এবং ‘S’ স্তরের মধ্যে কোনটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও ৷

৩নং প্রশ্নের উত্তর

. যে গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তা-ই বায়ুমণ্ডল।

. বায়ুমণ্ডল নানা প্রকার গ্যাস ও বাষ্পের সমন্বয়ে গঠিত হলেও এর প্রধান উপাদান নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন। বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেনের শতকরা হার ৭৮.০২%। জীবজগৎ পরস্পর অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের গ্রহণ ও ত্যাগের মাধ্যমে বেঁচে আছে। জীবজগতের বেঁচে থাকার জন্য নাইট্রোজেনের গুরুত্ব অধিক। বায়ুমণ্ডলে এ গ্যাসের পরিমাণ বেশি থাকায় জীবজগৎ সহজে প্রাণ ধারণ করতে পারছে।

. চিত্রে ‘Q’ স্তরটি হলো স্ট্রাটোমণ্ডল। নিচে এ স্তরটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-

ট্রপোবিরতির উপরের দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত স্ট্রাটোমণ্ডল নামে পরিচিত। স্ট্রাটোমণ্ডল ও মেসোমণ্ডলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রার স্থিতাবস্থাকে স্ট্রাটোবিরতি বলে । এ স্তরের বায়ুতে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা ছাড়া কোনো রকম জলীয়বাষ্প থাকে না। ফলে আবহাওয়া থাকে শান্ত ও শুষ্ক। ঝড়-বৃষ্টি থাকে না বলেই এ স্তরের মধ্য দিয়ে সাধারণ জেট বিমানগুলো চলাচল করে।

এ স্তরেই ওজোন (O3) গ্যাসের স্তর বেশি পরিমাণে আছে। এ ওজোনস্তর সূর্যের আলোর বেশির ভাগ অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেয়। প্রায় ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা পুনরায় হ্রাস পেতে শুরু করে। এটি স্ট্রাটোমণ্ডলের শেষ প্রান্ত নির্ধারণ করে।

বায়ুমণ্ডলের এ স্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ স্তরের মধ্য দিয়েই বিমান চলাচল করতে পারে। অন্যদিকে এ স্তরে ওজোন গ্যাসের স্তর বিদ্যমান থাকায় জীবজগতের বসবাসের সুবিধা হয়।

ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. চিত্রে ‘R’ হলো মেসোমণ্ডল এবং ‘S’ হলো তাপমণ্ডল। এ স্তর দুটির মধ্যে তাপমণ্ডল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিচে আমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হলো-

মেসোমণ্ডলের গভীরতা প্রায় ৮০ কিলোমিটার। এ স্তরের উপরে তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া থেমে যায়। মেসোমণ্ডলের স্তরে ট্রপোমণ্ডলের উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমতে থাকে। মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে, সেগুলোর অধিকাংশই এ স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে যায় ।

অপরপক্ষে মেসোবিরতির উপরে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে তাপমণ্ডল বলে। এ মণ্ডলে বায়ুস্তর অত্যন্ত হালকা ও চাপ ক্ষীণ। তাপমণ্ডলের নিম্ন অংশকে আয়নমণ্ডল বলে। এ অংশে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা অত্যন্ত দ্রুত হারে বাড়তে থাকে।

তাপমণ্ডলের উপরের স্তরে তাপমাত্রার পরিমাণ প্রায় স্থির থাকে। তীব্র সৌরবিকিরণে রঞ্জনরশ্মি ও অতিবেগুনি রশ্মির সংঘাতে এ অংশের বায়ু আয়নযুক্ত হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঠানো বিভিন্ন বেতার তরঙ্গ আয়নমণ্ডলের বিভিন্ন আয়নে বাধা পেয়ে পুনরায় ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে।

মেসোমণ্ডল ও তাপমণ্ডলের মধ্যে তাপমণ্ডলের গুরুত্ব অধিক। কারণ এ মণ্ডলের মধ্য দিয়ে বেতার তরঙ্গ আয়ন স্তরে বাধা পেয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এ স্তর না থাকলে বেতার পরিচালনা অসম্ভব হতো। বেতার আমাদের জীবনে অনেক উপকার করে।

কাজেই পরিশেষে বলা যায়, দুটি মণ্ডল থেকে তাপমণ্ডলের গুরুত্ব অধিক । অর্থাৎ তাপমণ্ডলে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয় বলে তাপমণ্ডলের গুরুত্ব অধিক

প্রশ্ন-৪ :

ক. খামসিন কী?

খ. ফেরেলের সূত্রটি লেখ ।

গ. মানচিত্রে ‘EFGH’ স্থানে বিরাজমান বায়ুপ্রবাহ ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. ‘IJKL’ এবং ‘PQRS’ স্থানের বায়ুর বেগ কি একই রকম? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

. খামসিন মিশরের একটি স্থানীয় বায়ু ।

খ. পৃথিবীর গোলাকার আকৃতির জন্য মধ্যভাগ থেকে দুই মেরুর দিকে আয়তন এবং পরিধি উভয়ই ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে। তাই পৃথিবীর মধ্যভাগ হতে দুই মেরুর সন্নিকটে আবর্তনের গতিবেগ ও কম। ফলে বায়ু সরাসরি উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে সামান্য বেঁকে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। বৈজ্ঞানিক ফেরেল আবিষ্কার করেন যে আবর্তন ঘটিত শক্তির প্রভাবেই বায়ুপ্রবাহের এরূপ দিক পরিবর্তন হয়। ফেরেলের নাম অনুসারে বায়ুপ্রবাহের এ নিয়মকে ফেরেলের সূত্র বলা হয় ।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. মানচিত্রে ২৩.৫ অক্ষরেখা এর চারপাশে ‘EFGH’ স্থানটি অবস্থিত, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু বিরাজমান, যা বায়ুপ্রবাহের অয়ন বায়ুর অন্তর্গত ।

নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে গেলে কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে শীতল ও ভারী বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে অয়ন বায়ু বলে। প্রাচীনকালে পালচালিত বাণিজ্য জাহাজগুলো এ বায়ুর অনুকূলে যাতায়াত করত বলে অয়ন বায়ুকে বাণিজ্য বায়ুও বলে।

ফেরেলের সূত্রানুসারে এ বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। দক্ষিণ গোলার্ধে এটি দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নামে পরিচিত। দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু প্রায় ২২-৫৪ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হলে অত্যধিক তাপে উষ্ণ ও হালকা হয়ে ঊর্ধ্বে উঠে যায়। তখন নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর অনুভূমিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় ।

পরিশেষে বলা যায়, মানচিত্রে EFGH স্থানে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু বিরাজমান।

. চিত্রে ‘IJKL’ এবং ‘PQRS’ উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের ৬০ অক্ষরেখার চারপাশে অবস্থিত, যা পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহের অন্তর্গত। উভয় গোলার্ধের একই অক্ষরেখায় অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও ‘PQRS’-এর বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ সবচেয়ে বেশি । কারণ—

কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে অয়ন বায়ু ব্যতীত আরও দুটি বায়ুপ্রবাহ মেরুবৃত্ত নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে এটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ুকে পশ্চিমা বায়ু বলে। উত্তর গোলার্ধে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এ বায়ুর গতিবেগ একরকম নয়।

কারণ উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগের পরিমাণ অধিক। উত্তর গোলার্ধে এ স্থলভাগের পরিমাণ অধিক বলে স্থানীয় কারণে পশ্চিমা রায়ুর সাময়িক বিরতি ঘটে। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগের পরিমাণ বেশি বলে পশ্চিমা বায়ু প্রবল বেগে এ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। এজন্য এ বায়ুপ্রবাহকে প্রবল পশ্চিমা বায়ু বলে।

৪০° থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সর্বাপেক্ষা বেশি। তাই এ অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশ বলে। উত্তর গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ তেমন প্রবল নয়, অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে এ বায়ুর গতিবেগ বেশ প্রবল ।

উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, একই অক্ষাংশ হওয়া সত্ত্বেও উত্তর গোলার্ধে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বায়ুর গতিবেগ একই রকম নয় ৷

প্রশ্ন৫ : আশিক, তুষার রিপন তিন বন্ধু। আশিক বিভিন্ন ধরনের শস্য শাকসবজির চাষাবাদ করে। এই জন্যে তাকে বায়ুমণ্ডলের একটি স্তরের উপর নির্ভর করতে হয়। তুষারের বৈমানিক মামা জেট বিমান চালনার জন্য বায়ুমণ্ডলের একটি নির্দিষ্ট স্তর অনুসরণ করেন। রিপন এক রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল যে, একটি জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। অল্প সময়ের মধ্যে সেটি শূন্যে অদৃশ্য হয়ে গেল

ক. বারিপাত কাকে বলে?

খ. পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার জলবায়ু ভিন্ন কেন? ব্যাখ্যা কর ।

গ. আশিক বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরের উপর নির্ভর করে? ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. তুষার ও রিপনের ঘটনায় বায়ুমণ্ডলের যে স্তরদ্বয়কে ইঙ্গিত করে সেগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

. জলীয়বাষ্প উপরে উঠে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলাকণা ও তুষারকণায় পরিণত হয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। এটিকে বারিপাত বলে ।

খ. পৃথিবীর সব অঞ্চলের জলবায়ু একই রকম নয়। এর কোনো অংশ উষ্ণ এবং কোনো অংশ শীতল। আবার কোনো স্থান বৃষ্টিবহুল এবং কোনো স্থান বৃষ্টিহীন। অক্ষাংশ, উচ্চতা, সমুদ্র থেকে দূরত্ব, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত, পর্বতের অবস্থান, ভূমির ঢাল, মৃত্তিকার গঠন ও বনভূমির অবস্থান ইত্যাদির পার্থক্যের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার জলবায়ু ভিন্ন ।

বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

. উদ্দীপকে উল্লিখিত আশিক বায়ুমণ্ডলের ট্রপোমণ্ডলের উপর নির্ভর করে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-

ট্রপোমণ্ডল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নিচের স্তর। ভূপৃষ্ঠের সাথে এটি লেগে আছে। মেঘ, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়, তুষারপাত, শিশির, কুয়াশা সবকিছুই এ স্তরেই সৃষ্টি হয়। এ মণ্ডলের শেষ প্রান্তের নাম ট্রপোবিরতি।

এ স্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় ১৬-১৯ কিলোমিটার এবং মেরু অঞ্চলে প্রায় ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর ঘনত্ব ও উষ্ণতা কমতে থাকে। উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায়। নিচের দিকের বাতাসের জলীয়বাষ্প বেশি থাকে। ধূলিকণার অবস্থানের ফলে সমগ্র বায়ুমণ্ডলের ওজনের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ এ স্তর বহন করে ।

প্রাণিকূল, মানবকূল প্রভৃতির জীবনধারণের জন্য ট্রপোস্ফিয়ার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্তর। তাই চাষবাদের জন্য আশিককে এ মণ্ডলের উপরই নির্ভর করতে হয় ।

. উদ্দীপকের তুষার ও রিপনের ঘটনা বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার স্তরদ্বয়কে ইঙ্গিত করে। নিচে এ স্তরদ্বয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো-

ট্রপোবিরতির উপরের দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত স্ট্রাটোস্ফিয়ার নামে পরিচিত। স্ট্রাটোমণ্ডল ও মেসোমণ্ডলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রার স্থিতাবস্থাকে স্ট্রাটোবিরতি বলে । এ স্তরেই ওজোন গ্যাসের স্তর বেশি পরিমাণে আছে। এ ওজোন গ্যাস সূর্যের আলোর বেশিরভাগ অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেয়। এটি ধীরে ধীরে তাপমাত্রা ৪° সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় ।

এ স্তরের বায়ুতে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা ছাড়া কোনো রকম জলীয় বাষ্প থাকে না। ফলে আবহাওয়া শান্ত ও শুষ্ক থাকে। ঝড়বৃষ্টি থাকে না বলেই এ স্তরের মধ্য দিয়ে সাধারণত জেট বিমানগুলো চলাচল করে। এ মণ্ডলে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা পুনরায় হ্রাস পেতে থাকে। স্ট্রাটোমণ্ডলের শেষ প্রান্ত নির্ধারণ করে।

অপরদিকে ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশের দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত এ মণ্ডলটি বিস্তৃত। এ স্তরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ওজোন (O3) গ্যাস আছে বলে এ স্তরকে ওজোনোস্ফিয়ারও বলা হয়। এ স্তরে ওজোন গ্যাস পুরু গড়ে ২.০৫-৩.০ মিলিমিটার। ওজোন গ্যাস বর্ণহীন গ্যাস হলেও অতিবেগুনি রশ্মির ফলে নীল বর্ণ ধারণ করে বলে আকাশ নীল দেখায়।

বিজ্ঞানীগণের অভিমত ওজোন স্তরের অবস্থান না থাকলে অতি বেগুনি রশ্মির তাপে মানুষ এবং প্রাণীর দেহ পুড়ে যেত এবং চোখ অন্ধ হয়ে যেত। এজন্য এ মণ্ডলকে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বলা হয়। এ মণ্ডলের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে কখনো ৮০° সে. আবার কখনো ১২০° সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে। মহাকাশ থেকে যেসব উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তা এ মণ্ডলে এসে জ্বলে উঠে। এ মণ্ডলের সর্বোচ্চ সীমাকে মেসোপজ বলে ।

পরিশেষে বলা যায়, অবস্থান ও বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার বায়ুমণ্ডলের দুটি ভিন্ন স্তর।

প্রশ্ন :

ক. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে?

খ. ঘূর্ণিবৃষ্টি কীভাবে সৃষ্টি হয়? বুঝিয়ে লেখ।

ভূগোল ও পরিবেশ দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন

গ. চিত্র-এর অনুরূপ চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করে এর বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা কর।

ঘ. চিত্রে প্রদর্শিত বায়ুপ্রবাহগুলো পৃথিবীর জলবায়ুতে বৈচিত্র্য এনেছে- বিশ্লেষণ কর ।

৬নং প্রশ্নের উত্তর

. তাপমণ্ডলে ।

. কোনো অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে জলভাগের উপর থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ এবং স্থলভাগের উপর থেকে শুষ্ক শীতল বায়ু ঐ একই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে অনুভূমিকভাবে ছুটে আসে। শীতল বায়ু ভারী বলে উষ্ণ বায়ু শীতল বায়ুর উপর ধীরে ধীরে উঠতে থাকে। জলভাগের উপর থেকে আসা উষ্ণ বায়ুতে প্রচুর জলীয়বাষ্প থাকে। ঐ বায়ু শীতল বায়ুর উপরে উঠলে তার ভেতরে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিবৃষ্টি সৃষ্টি করে ।

. চিত্রে পৃথিবীর নিয়ত বায়ুগুলোকে দেখানো হয়েছে। নিচে অনুরূপ চিত্র অঙ্কন করে এর বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করা হলো-

অয়ন বায়ুপ্রবাহ নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী হলে অত্যধিক তাপে উষ্ণ ও হালকা হয়ে উপরে ওঠে। তখন নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুর কোনো প্রকার অনুভূমিক প্রবাহ থাকে না। নিরক্ষরেখায় ৫° উত্তর থেকে দক্ষিণ অক্ষাংশব্যাপী একটি শান্ত বলয় সৃষ্টি হয়। একে নিরক্ষীয় শান্ত বলয় বলে।

৪০° দক্ষিণ থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সর্বাধিক। এ অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশ বলে। ৩০°- ৩৫° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে বায়ুর অনুভূমিক বায়ুপ্রবাহ অনুভূত হয় না। এ অঞ্চলটিকে অশ্ব অক্ষাংশ বলে । অপরদিকে মেরু বায়ুপ্রবাহ শুষ্ক ও ঠাণ্ডা হয়। এ বায়ুপ্রবাহ উপমেরু নিম্নচাপকে নিরক্ষরেখার দিকে সরিয়ে দেয়। বায়ুপ্রবাহের সময় দক্ষিণ গোলার্ধে ঝড় অনুভূত হয় ।

. চিত্রে প্রদর্শিত বায়ুপ্রবাহগুলো হলো পশ্চিমা বায়ু, অয়ন বায়ু এবং মেরু বায়ু। এই বায়ু প্রবাহগুলোর কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়। নিচে বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হলো-

অয়ন বায়ু উচ্চ অক্ষাংশ থেকে নিম্ন অক্ষাংশে প্রবাহিত হয় বলে এদের জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে এ বায়ু যে অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় সেখানে বৃষ্টিপাত হয় না। এজন্য এসব অঞ্চলে উষ্ণ জলবায়ু বিদ্যমান। তাই অয়ন বায়ুপ্রবাহের গতিপথে মহাদেশগুলোর পশ্চিমে পৃথিবীর অধিকাংশ মরুভূমিগুলো অবস্থিত।

আবার পশ্চিমা বায়ু পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে ৩৫° অক্ষাংশ থেকে ৬০° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ।

এ বায়ু সমুদ্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে প্রচুর জলীয়বাষ্প বহন করে আনে এবং মহাদেশগুলোর পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টিপাত ঘটায় (যেহেতু পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়)। তবে গ্রীষ্মকাল অপেক্ষা শীতকালে অধিক বৃষ্টিপাত হয়। আকাশ সর্বদা নিম্নস্তরের মেঘ দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে। বায়ুর গতিপথে মেঘসমূহ ধাবমান হয় এবং বৃষ্টি ও তুষারপাত প্রতিনিয়ত সংঘটিত হয়।

এছাড়া নিয়ত বায়ুর একটি অংশ মেরু বায়ু। এ বায়ু পৃথিবীর ৭০° থেকে ৮০° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থান করে। এ বায়ু মেরু প্রদেশ থেকে আসে বলে প্রবাহিত অঞ্চলের উপর শৈত্য আনয়ন করে।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, নিয়ত বায়ু পৃথিবীর জলবায়ুতে বৈচিত্র্য এনেছে।

প্রশ্ন-৭:

ক. কোনটিকে সৌরজগতের বাসযোগ্য আদর্শ গ্রহ বলা হয়?

খ. সমুদ্র উপকূল আরামদায়ক হয় কেন?

গ. উদ্দীপকের চক্রটি কিসের? চক্রটির পূর্ণাঙ্গ চিত্র অঙ্কন কর ।

ঘ. উক্ত চক্রটির ফলাফল বিশ্লেষণ কর।

৭নং প্রশ্নের উত্তর

. পৃথিবীকে সৌরজগতের বাসযোগ্য আদর্শ গ্রহ বলা হয় ।

. জলভাগের অবস্থান কোনো এলাকার জলবায়ুকে মৃদুভাবাপন্ন করে। যেমন- কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এখানকার জলবায়ু রাজশাহীর তুলনায় বেশ মৃদুভাবাপন্ন। সমুদ্র নিকটবর্তী এলাকার তাপমাত্রায় শীত- গ্রীষ্ম তেমন পার্থক্য হয় না। তাছাড়া শীতল বা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে উপকূলসংলগ্ন এলাকার বায়ু ঠাণ্ডা বা উষ্ণ থাকে । এজন্য সমুদ্র উপকূল আরামদায়ক হয় ।

গ. উদ্দীপকের চক্রটি পানিচক্রের। প্রতিনিয়ত সমুদ্র থেকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে যে পানি খরচ হয় তা আবার বৃষ্টিপাত ও নদীপ্রবাহের মাধ্যমে সাগরে চলে আসে। এ প্রক্রিয়াই হলো পানিচক্র।

ভূগোল ও পরিবেশ তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

পানিচক্রের সাথে জড়িত উপাদানসমূহ হলো বাষ্পীভবন, প্রস্বেদন, পরিচলন, ঘনীভবন, বারিপাত, রোধন, পানিপ্রবাহ অনুপ্রবেশ ও ভূগর্ভস্থ পানি।

চক্রটির পূর্ণাঙ্গ চিত্র নিচে অঙ্কন করা হলো-

. উদ্দীপকের চক্রটি পানিচক্র। পানিচক্রের ফলাফল নিচে বিশ্লেষণ করা হলো—

জীবজগতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যে তিনটি উপাদান অত্যাবশ্যক (মাটি, পানি ও বায়ু), তন্মধ্যে পানি অন্যতম ও প্রধান । যেহেতু পানি ছাড়া জীবজগতের অস্তিত্ব সম্ভব নয়, তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং জীবজগতে পানিচক্রের ভূমিকা অপরিসীম। এজন্য পানির অপর নাম জীবন। আমাদের দেহের ২/৩ অংশই পানি । নিচে পানিচক্রের ফলাফল উল্লেখ করা হলো-

⇒ স্থলভাগ ও মহাসাগরের মধ্যে পানির বিনিময় সাধন করে পানিচক্র। এতে মহাদেশসমূহে জলীয় পদার্থের ঘাটতি পূরণ হয়।

⇒ পৃথিবীর বিভিন্ন অক্ষাংশের মধ্যে জলীয় পদার্থের বিনিময় ঘটাতে পানিচক্র সাহায্য করে ।

⇒ পানিচক্রের মাধ্যমে জীবজগৎ ও মানবকুল সুপেয় পানি পেয়ে থাকে। এ পানির মাধ্যমেই জীবদেহের সব বিপাকীয় কার্যাবলি সংঘটিত হয় ।

⇒ এ চক্রের মাধ্যমে পানি স্থলভাগে আসার সুযোগ পায়। ফলে কৃষিকাজের সুবিধা হয়।

⇒ আর্দ্র ভূমি গাছপালার জন্ম ও বিস্তারে সহায়ক বিধায় পানিচক্র বনভূমি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

⇒ স্থলভাগের বিভিন্ন জলাশয়ে মৎস্য চাষের প্রসারে পানিচক্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

⇒ পানিচক্রের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে জীবের বসবাসের অনুকূল তাপমাত্রা বজায় থাকে

সর্বোপরি প্রাণিজগৎ ও উদ্ভিদের জীবন রক্ষায় পানিচক্রের ভূমিকা অপরিসীম ।

উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষায় পানিচক্রের ভূমিকা অপরিসীম।

প্রশ্ন৮ :

ক. বায়ুর আর্দ্রতা কাকে বলে?

খ. পরিপৃক্ত বায়ু কী?

গ. চিত্র-১ এর বায়ুপ্রবাহটির বর্ণনা দাও।

ঘ. চিত্র-২ এর তাপমাত্রার ফলাফল বিশ্লেষণ কর ।

৮নং প্রশ্নের উত্তর

. বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করাকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।

. বায়ু নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। কিন্তু বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তার জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ু যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে, সেই পরিমাণ জলীয়বাষ্প বায়ুতে থাকলে বায়ু আর অধিক জলীয়বাষ্প গ্রহণ করতে পারে না তখন তাকে সম্পৃক্ত বা পরিপৃক্ত বায়ু বলে।

. উদ্দীপকে চিত্র-১ এর বায়ুপ্রবাহটি শীতকালীন বায়ুপ্রবাহ। নিচে বায়ুপ্রবাহটির বর্ণনা করা হলো-

শীতকালে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তির কাছ অবস্থান করায় সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এ সময় উত্তর গোলার্ধের স্থলভাগ অত্যন্ত শীতল হওয়ায় সেখানে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে স্থলভাগের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু দক্ষিণের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয়। এ বায়ু উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসে বলে একে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বলে। স্থলভাগের উপর দিয়ে দীর্ঘপথ অতিক্রম করে আসে বলে এটি শুষ্ক।

ভূগোল ও পরিবেশ চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

মৌসুমি বায়ু নিরক্ষরেখা অতিক্রম করলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায় এবং উত্তর-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুরূপে উত্তর অস্ট্রেলিয়ার দিকে অগ্রসর হয় এবং বৃষ্টিপাত ঘটায় ।

. উদ্দীপকের চিত্র-২ এ গ্রীষ্মকালীন বায়ুপ্রবাহ দেখানো হয়েছে। এসময়কার তাপমাত্রার ফলাফল নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-

উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে সূর্য কর্কটক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এর ফলে কর্কটক্রান্তি অঞ্চলের অন্তর্গত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর-পশ্চিম ভারত, মধ্য এশিয়া প্রভৃতি স্থানের স্থলভাগ অতিশয় উত্তপ্ত হয়। ফলে এ সব অঞ্চলে বায়ুর চাপ কমে যায় এবং একটি সুবৃহৎ নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ গোলার্ধের ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আগত দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ু নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে এশিয়া মহাদেশের নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবলবেগে ছুটে যায়। এ বায়ুকে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মের মৌসুমি বায়ু বলে ।

এসময় তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় জলাশয়ের পানি অধিক বাষ্পীভূত হয় এবং ঘনীভবনের মাধ্যমে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। এ সময়ের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩০° সে. এবং ২১° সে.। এরূপ অধিক তাপমাত্রার ফলে কালবৈশাখী ঝড় এবং বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রচণ্ড ঝড় হয়। তবে এই তাপমাত্রার ফলে যে বৃষ্টিপাত হয় তার উপর নির্ভর করেই দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট এবং আউশ ধানের চাষ হয় ।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, চিত্র-২ এর তাপমাত্রার ইতিবাচক, নেতিবাচক উভয় প্রভাবই রয়েছে।

প্রশ্ন৯ :

ক. নিয়ত বায়ু কত প্রকার?

খ. জীবজন্তুর উপর বায়ুমণ্ডলের প্রভাব বেশি, কেন?

গ. চিত্রে প্রদর্শিত ‘B’-এর বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত কর।

ঘ. “কৃষিক্ষেত্রে ‘A’-এর গুরুত্ব অপরিসীম।” উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর ।

৯নং প্রশ্নের উত্তর

. নিয়ত বায়ু তিন প্রকার ।

. পৃথিবীর জীবকুলের কাছে যেসব জিনিস অপরিহার্য, বায়ুমণ্ডল তাদের মধ্যে অন্যতম । জীবজগৎ পরস্পর অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণের মাধ্যমে বেঁচে আছে। বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে সার তৈরি করা হয়, যা উদ্ভিদকুলের জন্য খুবই প্রয়োজন । অন্যদিকে ওজোন গ্যাসের স্তর সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে জীবজগৎকে রক্ষা করছে। তাই জীবজন্তুর উপর বায়ুমণ্ডলের প্রভাব বেশি ।

. চিত্রে প্রদর্শিত ‘B’ বলতে স্ট্রাটোমণ্ডলকে বোঝানো হয়েছে। ট্রপোবিরতির উপরের দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত স্ট্রাটোমণ্ডল। স্ট্রাটোমণ্ডলের উপরের অংশে তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ৪°-তে এসে পৌঁছায়। নিচে এর বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করা হলো-

এ স্তরের বায়ুতে অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা ছাড়া কোনোরকম জলীয়বাষ্প থাকে না। ফলে আবহাওয়া থাকে শান্ত ও শুষ্ক। ঝড়-বৃষ্টি থাকে না বলেই এ স্তরের মধ্য দিয়ে সাধারণত জেট বিমানগুলো চলাচল করে। অন্যদিকে এ স্তরেই ওজোন (O3) গ্যাসের স্তর বেশি পরিমাণে আছে। এ ওজোনস্তর সূর্যের আলোর বেশির ভাগ অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেয়। আর এ অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত না হলে কোনো জীবজন্তু পৃথিবীতে বসবাস করতে পারত না। এ স্তরের প্রায় ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা পুনরায় হ্রাস পেতে শুরু করে। এটি স্ট্রাটোমণ্ডলের শেষ প্রান্ত নির্ধারণ করে।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. চিত্রে প্রদর্শিত ‘A’ স্তর বলতে ট্রপোমণ্ডলকে বোঝানো হয়েছে। এ স্তরটি বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নিচের স্তর। মেঘ, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়, তুষারপাত, শিশির, কুয়াশা সবকিছুই এ স্তরে সৃষ্টি হয়। কৃষিক্ষেত্রে এ স্তরের গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে তা আলোচনা করা হলো—

এ স্তরের নিচের দিকের বাতাসে জলীয়বাষ্প থাকে। এ জলীয়বাষ্প উদ্ভিদ তথা কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। অনেক সময় বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, যা কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুর ঘনত্ব ও উষ্ণতা কমতে থাকে । প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬° সে. তাপমাত্রা হ্রাস পায় । কৃষিক্ষেত্রে তাপমাত্রার ভূমিকাও কম নয়। তাপমাত্রা সহনশীল হলে শস্যের তেমন ক্ষতি হয় না, অন্যদিকে তাপমাত্রা অধিক হলে মাটির মধ্যস্থিত আর্দ্রতা হ্রাস পায়। ফলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়, অনেক সময় অত্যধিক তাপের জন্য ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।

পরিশেষে বলা যায়, কৃষিক্ষেত্রে ট্রপোমণ্ডলের গুরুত্ব অপরিসীম ।

প্রশ্ন১০ : শিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে টিভিতে একটি প্রামাণ্যচিত্রে ২০০৭ সালের সিডরের ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপ দেখছিল। আবহাওয়া জলবায়ু সম্পর্কে তার বাবা জামান সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আবহাওয়া জলবায়ুর বর্ণনা দিয়ে জলবায়ুর নিয়ামক নিয়ে কথা বলেন।

ক. আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান কয়টি?

খ. ওজোন স্তর কীভাবে আমাদের রক্ষা করে?

গ. শিলা যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিল তার তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. জামান সাহেব যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন তার নিয়ামকসমূহ বিশ্লেষণ কর ।

১০নং প্রশ্নের উত্তর

. আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান ছয়টি।

. ওজোন স্তর বায়ুমণ্ডলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। ওজোন গ্যাসের স্তর সবচেয়ে বেশি আছে স্ট্রাটোমণ্ডলে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি আমাদের দেহে পতিত হলে ত্বকের ক্যান্সারসহ অন্যান্য জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। আর ওজোন স্তর সূর্যের আলোয় বেশির ভাগ অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে। ফলে আমাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। এভাবে ওজোন স্তর আমাদের রক্ষা করে।

. শিলা আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। আবহাওয়া হলো কোনো স্থানের দৈনন্দিন তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদির সামগ্রিক অবস্থা, আর জলবায়ু হলো কোনো একটি অঞ্চলের ৩০-৪০ বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থা। নিচে আবহাওয়া ও জলবায়ুর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-

আমরা পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, ইন্টারনেট থেকে প্রতিদিন আবহাওয়ার সংবাদ সংগ্রহ করে থাকি। এটি মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে প্রভাব বিস্তার করে। বিশ্বের প্রতিটি দেশের আবহাওয়া অফিস এ সংক্রান্ত উপাত্ত ও তথ্য প্রচারমাধ্যমে প্রতিদিন সরবরাহ করছে। আবহাওয়া অফিসগুলোতে দিনের পর দিন আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান পর্যবেক্ষণ করে জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা করা হয়। কোনো স্থানের আবহাওয়ার উপাদানগুলো নিত্যপরিবর্তনশীল।

জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বহু বছর পর পরিবর্তন হয়। কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘ, বৃষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহের দৈনন্দিন সামগ্রিক অবস্থাই হলো আবহাওয়া। আর কোনো একটি অঞ্চলের সাধারণত ৩০-৪০ বছরের আবহাওয়ার সারা বছরের গড় অবস্থা।

কাজেই বলা যায়, জলবায়ু হলো কোনো একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সারা বছরের বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের সামগ্রিক অবস্থা।

. জামান সাহেব যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন তা হলো জলবায়ু। পৃথিবীর সব অঞ্চলের জলবায়ু একরকম নয়। এর কোনো অঞ্চল উষ্ণ এবং কোনো অঞ্চল শীতল।

পৃথিবীর কোনো অঞ্চল বৃষ্টিবহুল এবং কোনো স্থান বৃষ্টিহীন। কিন্তু ভৌগোলিক বিষয়ের পার্থক্যের কারণে স্থানভেদে জলবায়ুর এ রকম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে জলবায়ুর নিয়ামকসমূহ বিশ্লেষণ করা হলো-

অক্ষাংশ : নিরক্ষরেখার উপর সূর্য সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ উভয় মেরুর দিকে উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকে ।

উচ্চতা : সমুদ্র সমতল থেকে যতই উপরে উঠা যায়, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা ততই হ্রাস পায় ।

সমুদ্র থেকে দূরত্ব : সমুদ্র নিকটবর্তী এলাকায় শীত-গ্রীষ্ম এবং দিন-রাত্রির তেমন পার্থক্য হয় না। কিন্তু সমুদ্র থেকে দূরের এলাকায় শীত-গ্রীষ্ম উভয়ই চরম হয় ।

বায়ুপ্রবাহ : জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু কোনো এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হলে বৃষ্টিপাত হয়। আবার শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হলে কোনো বৃষ্টিপাত হয় না ।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সমুদ্রস্রোত : শীতল বা উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে উপকূলসংলগ্ন এলাকার বায়ু ঠাণ্ডা বা উষ্ণ হয় ।

পর্বতের অবস্থান : উচ্চ পার্বত্যময় এলাকা বায়ুপ্রবাহের পথে বাধা হলে এর প্রভাবে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাত হয় এবং আবহাওয়া আর্দ্র থাকে ।

ভূমির ঢাল : সূর্যকিরণ উঁচু ভূমির ঢাল বরাবর লম্বভাবে পতিত হলে সেখানকার বায়ু এবং ভূমি বেশি উত্তপ্ত হয়। কিন্তু এর বিপরীত দিকে বায়ু শীতল হয় ।

মৃত্তিকার গঠন : বালুকাময় এলাকায় দিনের বেলায় বালু উত্তপ্ত হওয়ায় দিনে গরম এবং রাতে শীত পড়ে।

বৃষ্টিপাত : কোনো স্থানে অধিক বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কম আর বৃষ্টিপাত কম হলে তাপমাত্রা বেশি থাকে।

বনভূমির অবস্থান : বনভূমি এলাকায় সূর্যালোক সরাসরি মাটিতে পৌঁছতে পারে না বলে সেখানকার বায়ু শীতল হয় ।

আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply