এসএসসি জীববিজ্ঞান সাজেশন
দ্বাদশ অধ্যায়
জীবের বংশগতি ও বিবর্তন
Heredity in a Oraganisms and Evolution
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
জীবের বংশগতি : পৃথিবীর সব জীব তার নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তী প্রজন্মে প্রায় অবিকল স্থানান্তর ও পরিস্ফুটিত হয়। পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো “বংশগতি” (Heredity)। বংশগতি সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা ও গবেষণা করা হয় বংশগতিবিদ্যা (Genetics) নামের জীববিজ্ঞানের বিশেষ শাখায়।
ক্রোমোসোম : ক্রোমোসোম বংশগতির প্রধান উপাদান। এটি নিউক্লিয়াসের নিউক্লিওপ্লাজমে বিস্তৃত এবং সূত্রাকার ক্রোমাটিন দ্বারা গঠিত। বিজ্ঞানী স্টার্চবার্গার ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম ক্রোমোসোম আবিষ্কার করেন। ক্রোমোসোমের কাজ হলো মাতাপিতা থেকে জিন সন্তানসন্তুতিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। ক্রোমোসোমে দুই রকম নিউক্লীয় এসিড থাকে। যথা : DNA (Deoxyribo Nucleic Acid) ও RNA (Ribonucleic Acid)। মানুষের চোখের রং, চুলের প্রকৃতি, চামড়ার গঠন ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য ক্রোমোসোম কর্তৃক বাহিত হয়ে বংশ গতিধারা অক্ষুন্ন রাখে ।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
DNA : ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান ডিএনএ হলো ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (Deoxyribo Nucleic Acid)। এটি সাধারণত দ্বিসূত্রবিশিষ্ট পলিনিউক্লিওটাইডের সর্পিলাকার গঠন। একটি সূত্র অন্যটির পরিপূরক। এতে পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা, নাইট্রোজেনঘটিত বেস বা ক্ষার (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইসিন) ও অজৈব ফসফেট থাকে। DNA ক্রোমোসোমের স্থায়ী পদার্থ। মার্কিন বিজ্ঞানী Watson ও ইংরেজ বিজ্ঞানী Crick ১৯৫৩ সালে সর্বপ্রথম DNA অণুর Double helix বা দ্বিসূত্রী কাঠামোর বর্ণনা দেন। নাইট্রোজেন বেসগুলো দুধরনের। যথা- পিউরিন ও পাইরিমিডিন। এডিনিন (A) ও গুয়ানিন – বেস হলো পিউরিন এবং সাইটোসিন (C) ও থাইমিন (T)- বেস হলো পাইরিমিডিন। একটি সূত্রে এডিনিন (A) অন্য সূত্রের থাইমিন (T) এর সাথে দুইটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা (A = T) যুক্ত থাকে এবং একটি সূত্রের গুয়ানিন (G) অন্য সূত্রের সাইটোসিনের (C) এর সাথে তিনটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত (G ≡ C) থাকে ।
RNA : RNA হলো রাইবোনিউক্লিক এসিড। এতে পলি নিউক্লিউওটাইডের সূত্র থাকে। একটি পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট রাইবোজ শর্করা, অজৈব ফসফেট এবং নাইট্রোজেন বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল) থাকে। RNA একসূত্রক নিউক্লিক এসিড। অধিকাংশ উদ্ভিদ ভাইরাসে RNA জেনেটিক পদার্থরূপে কাজ করে।
জিন : জীবের সব দৃশ্য ও অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন। এটি মূলত DNA দিয়ে গঠিত। এর অবস্থান জীবের ক্রোমোসোমে । ক্রোমোসোমের যে সানে জিন অবস্থান করে তাকে ‘লোকাস’ বলে। এক জোড়া প্রতিরূপ ক্রোমোসোমে জিন জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে।
বংশগতিবিদ্যার জনক : গ্রেগর জোহান মেন্ডেলকে (১৮২২- ১৮৮৪) বংশগতিবিদ্যার জনক বলা হয়। তিনি ১৮৬৬ সালে মটরশুঁটি নিয়ে গবেষণাকালে বংশগতির ধারক ও বাহকরূপে যে ফ্যাক্টরের (Factor) কথা উল্লেখ করেছিলেন সেটি আজ ‘জিন’ নামে পরিচিতি। মেন্ডেল প্রদত্ত তত্ত্ব বর্তমান জিন তত্ত্বের ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।
প্রকট বৈশষ্ট্য : মাতা- পিতা থেকে প্রথম বংশধরে জীবের যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য বলে।
প্রকট জিন : যে জিন প্রকট বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায় তাকে প্রকট জিন বলে।
প্রচ্ছন্ন জিন : যে জিনের বৈশিষ্ট্যটি প্রথম বংশধরে প্রকাশ পায় না কিন্তুদ্বিতীয় বংশধরে এক- চতুর্থাংশ প্রকাশ পায় তাকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে।
DNA অনুলিপন : যে প্রক্রিয়ায় DNA অণু থেকে আরেকটি DNA অণুর সৃষ্টি হয়, তাকে DNA অনুলিপন বলে। DNA অর্ধরক্ষণশীল পদ্ধতিতে অনুলিপিত হয়। এ পদ্ধতিতে DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙে গিয়ে আলাদা হয় এবং প্রতিটি সূত্র তার পরিপূরক নতুন সূত্র সৃষ্টি করে। পরে একটি পুরাতন সূত্র ও একটি নতুন সূত্র সংযুক্ত হয়ে নতুন DNA অণুর সৃষ্টি হয়।
DNA টেস্ট : জীব প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ব্যক্তির হাড়, দাঁত, চুল, রক্ত, লালা, বীর্য ইত্যাদির DNA অথবা অ্যান্টিবডি থেকে ফরেনসিক টেস্ট দ্বারা শনাক্ত করার কৌশলকে বলা হয় DNA টেস্ট ।
অটোসোম : যে সকল ক্রোমোসোমে মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে কোনো ভূমিকা নাই তাদের অটোসোম বলে।
লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোসোম : যে সকল ক্রোমোসোমে মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে ভূমিকা রাখে তাদের লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোসোম বা সেক্সক্রোমোসোম বলা হয়।
কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধতা : জেনেটিক ডিসঅর্ডারজনিত একটি রোগ হলো কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধতা। এটি এমন এক অবস্থ যখন কেউ কোনো রঙ সঠিকভাবে চিনতে পারে না। কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তি লাল ও সবুজ এবং নীল ও হলুদ রং পার্থক্য করতে পারে না।
থ্যালাসেমিয়া : থ্যালাসেমিয়া জেনেটিক ডিসঅর্ডারজনিত একটি রোগ। এ রোগে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো নষ্ট হয়। ফলে রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে। এ রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে।
এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
জৈব বিবর্তন : সময়ের সাথে দীর্ঘকাল ধরে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পূর্বপুরুষ থেকে যখন কোনো জীবের নতুন কোনো প্রজাতির সৃষ্টি হয়, তখন তাকে জৈব বিবর্তন বলে।
ডারউইনের মতবাদ : ডারউইনের মতে, অত্যধিক হারে বংশবৃদ্ধি করাই জীবের সহজাত বৈশিষ্ট্য। এর ফলে জ্যামিতিক ও গাণিতিক হারে জীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
সীমিত খাদ্য ও বাসস্থান : ভূপৃষ্ঠের আয়তন সীমাবদ্ধ হওয়ায় জীবের বাসস্থান এবং খাদ্যও সীমিত।
জীবন সংগ্রাম : জীবকে বেঁচে থাকার জন্য কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয়। ডারউইন লক্ষ করেন যে, জীবকে তিনটি পর্যায়ে এ সংগ্রাম করতে হয়। যেমন : আন্তঃপ্রজাতিক, অন্তঃপ্রজাতিক ও পরিবেশের সাথে সংগ্রাম। একই পরিবেশে বসবাসকারী অন্যান্য প্রজাতির জীবদের সাথে সংগ্রামকে আন্তঃপ্রজাতিক সংগ্রাম বলে। একই প্রজাতির বিভিন্ন জীবের মধ্যে যে জীবন সংগ্রাম তাকে বলা হয় অন্তঃপ্রজাতিক সংগ্রাম। আর পরিবেশের প্রতিকূল অবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে বলা হয় পরিবেশের সাথে সংগ্রাম।
যোগ্যতমের জয় : যেসব প্রকরণ জীবের জীবন সংগ্রামের পক্ষে সহায়ক এবং পরিবেশের সাথে অভিযোজনমূলক তারাই কেবল বেঁচে থাকবে।
প্রকরণ বা জীবদেহে পরিবর্তন : পৃথিবীতে দুটি জীব অবিকল একই ধরনের হয় না। এদের কিছু না কিছু পার্থক্য থাকে । জীব দুটির মধ্যে যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় তাকে প্রকরণ বলে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ RNA কী?
উত্তর : RNA হলো রাইবোনিউক্লিক এসিড (Ribonucleic Acid)।
প্ৰশ্ন ॥ ২ ॥ জিন কী?
উত্তর : জিন বংশগতির ধারক ও বাহক ।
ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ক্রোমোসোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন?
উত্তর : ক্রোমোসোমের কাজ হলো বংশপরম্পরায় মাতাপিতা হতে জিন সন্তান সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। এজন্য ক্রোমোসোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ অটোসোম কী?
উত্তর : যে ক্রোমোসোম লিঙ্গ নির্ধারণে ভূমিকা রাখে না তাদের অটোসোম বলে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ থ্যালাসেমিয়া বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর : থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তের যোগ। এই রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে। লোহিত রক্তকোষের – a গ্লোবিউলিন ও B- গ্লোবিউলিন নামক দুটি প্রোটিনের জিন নষ্টের কারণে ত্রুটিপূর্ণ লোহিত রক্তকোষ উৎপাদিত হয় । ফলে রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে।
রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ DNA অনুলিপন কীভাবে হয় চিত্রের সাহায্যে বর্ণনা কর ।
উত্তর : একটি DNA অণু থেকে আর একটি নতুন DNA অণু তৈরি হওয়াকে DNA অনুলিপন বলে। এটি অর্ধ- রক্ষণশীল পদ্ধতিতে অনুলিপিত হয় । পদ্ধতিটির শুরুতে পুরনো DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙে আলাদা হয়ে প্রতিটি সূত্র ও একটি নতুন সূত্র একত্রিত হয়ে নতুন DNA অণু সৃষ্টি করে। একটি পুরাতন মাতৃসূত্রক ও একটি নতুন সৃষ্ট সূত্রে গঠিত হয় বলে একে রক্ষণশীল পদ্ধতিও বলে। এভাবে DNA অনুলিপন তৈরি হয়।
জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন
নিচে DNA অনুলিপন প্রক্রিয়া চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো :
D = শর্করা, P = ফসফেট, A = এডিনিন, T = থায়ামিন, G = গুয়ানিন, C = সাইটোসিন, ( =, ≡ হাইড্রোজেন বন্ড)
বোঝার সুবিধার জন্য DNA অণুকে এখানে প্যাচানো সিঁড়ির মতো দেখানো হয়নি ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ DNA এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : DNA এর পূর্ণরূপ Deoxyribo Nucleic Acid ।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ RNA এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : RNA এর পূর্ণরূপ Ribo Nucleic Acid ।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ TMV এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : TMV এর পূর্ণরূপ- Tobaco Mosaic Virus ।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ নাইট্রোজেন বেস গুলি কী কী?
উত্তর : নাইট্রোজেন বেসগুলি— এডিনিন (A), গুয়ানিন (G), সাইটোসিন (C) এবং থাইমিন (T) এবং ইউরাসিল (U)।
জীববিজ্ঞান নবম অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ Biotechnology শব্দটি প্রবর্তন করেন কে?
উত্তর : ১৯১৯ সালে হাঙ্গেরিয় প্রকৌশলী কার্ল এরেকি (Karl Ereky) সর্বপ্রথম Biotechnology শব্দটি প্রবর্তন করেন ।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর : ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান হলো DNA ।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার রোগের নাম লেখ।
উত্তর : বর্ণান্ধতা একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার রোগ।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ কারা আবিষ্কার করেন DNA অণু দ্বিসূত্রক?
উত্তর : মার্কিন বিজ্ঞানী ওয়াটসন ও ইংরেজ বিজ্ঞানী ক্রিক আবিষ্কর করেন DNA অণু দ্বিসূত্রক।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ ইভোলিউশন শাখায় কী জানা যায় ?
উত্তর : জীববিজ্ঞানের ইভোলিউশন শাখায় জীবের উৎপত্তি ও জীবের ক্রমবিকাশ সম্বন্ধে জানা যায় ।
প্ৰশ্ন ॥ ১০ ॥ বংশগতি কাকে বলে?
উত্তর : মাতা-পিতার বৈশিষ্ট্য যে প্রক্রিয়ায় সন্তান-সন্ততিতে সঞ্চারিত হয়, তাকে বংশগতি বলে।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ মেন্ডেলের সম্পূর্ণ নাম কী?
উত্তর : মেন্ডেলের সম্পূর্ণ নাম গ্রেগর জোহান মেন্ডেল।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ DNA ও RNA’এর মধ্যে কোষের নিউক্লিয়াসে কোনটি অধিক পরিমাণ থাকে?
উত্তর : কোষের নিউক্লিয়াসে DNA অধিক পরিমাণে থাকে ।
প্ৰশ্ন ॥ ১৩ ॥ জিনোটাইপ কাকে বলে?
উত্তর : জীবের জিনঘটিত বৈশিষ্ট্যকে জিনোটাইপ বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ ফিনোটাইপ কাকে বলে?
উত্তর : জীবের বাহ্যিক দৃশ্যমান গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্যকে ফিনোটাইপ বলে।
প্ৰশ্ন ॥ ১৫ ॥ কাকে জিনতত্ত্বের জনক বলা হয়?
উত্তর : গ্রেগর জোহান মেন্ডেলকে জিনতত্ত্বের জনক বলা হয়। তাই মেন্ডেল বিখ্যাত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগিতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ভিন্ন দুটি প্রজাতির মধ্যে বেঁচে থাকার তাগিদে যে প্রতিযোগিতা হয় তাকে আন্তঃপ্রতিযোগিতা বলা হয়। যেমন : প্রজাপতি – মৌমাছি, সাপ – বেজী ইত্যাদি পারস্পরিক সংগ্রামে লিপ্ত ।
প্ৰশ্ন ॥ ২ ॥ একজন বাত রোগী কীভাবে কালার ব্লাইন্ড হতে পারে?
উত্তর : কালার ব্লাইন্ড সাধারণত বংশগতির কারণে হয়ে থাকে। বংশগতি ছাড়াও কোনো কোনো ঔষধ যেমন : বাত রোগের জন্য হাইড্রক্সি- ক্লোরো- কুইনিন সেবনে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে চোখের রঙিন পিগমেন্ট নষ্ট হয়ে একজন রোগী কালার ব্লাইন্ড হতে পারে।
জীববিজ্ঞান একাদশ অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ছেলে সন্তান কীভাবে পিতার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে?
উত্তর : পিতার সেক্স ক্রোমোসোম হালো XY এবং মাতার সেক্স ক্রোমোসোম হলো XX । যৌন মিলনের সময় পিতার X ক্রোমোসোম এর সাথে যদি মাতার X ক্রোমোসোম এর মিলন হয় তবে সন্তান হবে XX অর্থাৎ মেয়ে। আর পিতা Y এর সাথে যদি মাতার X ক্রোমোসোম এর মিলন হয় তবে সন্তান হবে XY অর্থাৎ ছেলে। এভাবে ছেলে সন্তান পিতার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।
প্রশ্ন ॥৪॥ RNA কী দিয়ে গঠিত?
উত্তর : RNA পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট রাইবোজ শর্করা। অজৈব ফসফেট এবং নাইট্রোজেন বেস যথা : এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ জেনেটিক্স বলতে কী বোঝ?
উত্তর : জেনেটিক্স জীববিজ্ঞানের একটি শাখা। এ শাখায় জীবের বৈশিষ্ট্য কীভাবে তার সন্তানে সঞ্চালিত হয় এবং কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন করা যায় তা আলোচনা ও গবেষণা করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ক্রোমোসোম ও ক্রোমাটিড এর পার্থক্য কী?
উত্তর : কোষবিভাজনের সময় নিউক্লিয়ার জালিকা ভেঙে যে সুতার মতো বস্তুসৃষ্টি হয় তাকে ক্রোমোসোম বলে। অন্যদিকে কোষ বিভাজনের প্রোফেজ ধাপে প্রতিটি ক্রোমোসোম লম্বালম্বি বিভক্ত হয়ে ক্রোমাটিড হয়। ক্রোমোসোম নিউক্লিয়ার জালিকার অংশ আর ক্রোমাটিড ক্রোমোসোমের অংশ।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ ক্রোমোসোমকে বংশগতির বাহক বলা হয় কেন ?
উত্তর : ক্রোমোসোমের মাধ্যমে বংশগতির এ ধারা অব্যাহত থাকে বলে একে বংশগতির বাহক এবং ভৌত ভিত্তি বলা হয়। ক্রোমোসোমের গায়ে সন্নিবেশিত থাকে অসংখ্য জিন বা বংশগতির একক। ক্রোমোসোম DNA অর্থাৎ জিনকে ধারণ করে বাহক হিসেবে। ক্রোমোসোম জিনকে সরাসরি বহন করে পিতা- মাতা থেকে তাদের পরবর্তী বংশধরে নিয়ে যায়। এ কারণেই ক্রোমোসোমকে বংশগতির বাহক বলা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ প্রকৃত কোষের ক্রোমোসোমের রাসায়নিক উপাদান কী?
উত্তর : প্রকৃত কোষের ক্রোমোসোমের রাসায়নিক গঠনে দেখা যায় এটি নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন ও অন্যান্য উপাদান নিয়ে গঠিত। নিউক্লিক এসিড দুই ধরনের হয়। যথা : ডিঅক্সিরাইবোজ নিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) এবং রাইবোনিউক্লিক এসিড (আরএনএ)।
প্রোটিন দুই ধরনের থাকে। যথা : হিস্টোন ও ননহিস্টোন। এগুলো ছাড়াও লিপিড, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়ন ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ অল্প পরিমাণ থাকে ।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ ক্রোমোসোমের গুরুত্ব উলেখ কর।
উত্তর : বংশগত বৈশিষ্ট্য পরিবহনে ক্রোমোসোমের গুরুত্ব অপরিসীম। ক্রোমোসোমের গুরুত্বগুলো হলো :
১. ক্রোমোসোম বংশগতির ধারক জিনকে ধারণ ও বহন করে ।
২. ক্রোমোসোম প্রজাতির বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলোকে পুরুষানুক্রমে বহন করে।
৩. কোষবিভাজনের সময় ক্রোমোসোমের পরিবর্তনের ফলে জিনের বিন্যাসের কারণে প্রকরণ ঘটে এবং অভিব্যক্তির ধারাকে বজায় রাখে।
৪. জৈব রাসায়নিক ও শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রশ্ন ॥ ১০ ৷ নিউক্লিওটাইড বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : DNA অণুর পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা, নাইট্রোজেনঘটিত বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থায়ামিন) ও অজৈব ফসফেট এ তিনটি উপাদান একত্রে সংযুক্ত হয়ে একেকটি একক গঠন করে। একে নিউক্লিওটাইড বলে।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ইউরাসিল কোথায় পাওয়া যায়?
ক. DNA খ. RNA
গ. জিন ঘ. লোকাস
উত্তর: খ. RNA
জীববিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
২. RNA তে থাকে–
i. রাইবোজ শর্করা
ii. অজৈব ফসফেট
iii. নাইট্রোজেনঘটিত বেস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের চিত্রের আলোকে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
৩. উদ্দীপকে X অবস্থায় ক্রোমোসোমের সংখ্যা কয়টি থাকে?
ক. ২২টি খ. ২৩টি
গ. ৪৪টি ঘ. ৪৬টি
উত্তর: খ. ২৩টি
৪. উদ্দীপকের A এবং B তে কোন ধরনের লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোসোম আছে?
ক. X, XY খ. X, XX
গ. Y, XY ঘ. Y, XX
উত্তর: ঘ. Y, XX
৫. থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ কোনটি?
ক. ত্রুটিপূর্ণ লোহিত রক্তকোষ উৎপাদন
খ. শ্বেত কণিকার এন্টিবডি তৈরি না হওয়া
গ. অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যাওয়া
ঘ. শ্বেত কণিকার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
উত্তর: ক. ত্রুটিপূর্ণ লোহিত রক্তকোষ উৎপাদন
৬. লোহিত রক্তকণিকায় কয় ধরনের প্রোটিন থাকে?
ক. ২ খ. ৩
গ. 8 ঘ. ৫
উত্তর: ক. ২
৭. DNA-এর পূর্ণরূপ কী?
ক. Double Nucleic Acid
খ. Dexo Nucleic Acid
গ. Deoxyribo Nucleic Acid
ঘ. Deoxyribo Nitric Acid
উত্তর: গ. Deoxyribo Nucleic Acid
৮. কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য মূলত দায়ী কে?
ক. পিতা খ. মাতা
গ. দাদা ঘ. দাদী
উত্তর: ক. পিতা
৯. Watson ও Crick কর্তৃক ডিএনএ ডাবল হেলিক্স মডেল আবিষ্কৃত হয় কোন সালে?
ক. ১৯৯৩ খ. ১৯৭৩
গ.১৯৬৫ ঘ. ১৯৫৩
উত্তর: ঘ. ১৯৫৩
১০. জীবের সকল বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণের একক কোনটি?
ক. জিন খ. কোষ
গ. মাইটোকন্ড্রিয়া ঘ. ক্রোমোসোম
উত্তর: ক. জিন
১১. হেনা বেগম একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন? নিচের কোন ক্রোমোসোম জোড়া এজন্য দায়ী?
ক. XX খ. XY
গ. YY ঘ. YZ
উত্তর: খ. XY
১২. কোনটিতে নাইট্রোজেন বেস পাওয়া যায়?
ক. ডিএনএ, লোকাস
খ. আরএনএ, লোকাস
গ. আরএনএ, জিন
ঘ. ডিএনএ, আরএনএ
উত্তর: ঘ. ডিএনএ, আরএনএ
১৩. কোনটি পিউরিন?
ক. এডিনিন খ. সাইটোসিন
গ. থায়ামিন ঘ. ইউরাসিল
উত্তর: ক. এডিনিন
১৪. মানব দেহকোষে ক্রোমোসোম কতটি?
ক. ২৩টি খ. ৪৬টি
গ. ৪৮টি ঘ. ৫০টি
উত্তর: খ. ৪৬টি
জীববিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৫. ফারিহার চুল তার মা এর মতো। চুলের সদৃশ্যতার জন্য দায়ী—
ক. ক্রোমোসোম খ. জিন
গ. DNA ঘ. RNA
উত্তর: খ. জিন
নিচের চিত্রের আলোকে ১৬ ও ১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৬. P ও Q উভয়েরই—
i. পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা বিদ্যমান
ii. পলিনিউক্লিওটাইডের গঠন বিদ্যমান
iii. নাইট্রোজেন বেস থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
১৭. P তে বিদ্যমান-
ক. Double helix
খ. ইউরাসিল
গ. তিন কার্বনবিশিষ্ট শর্করা
ঘ. ট্রাই নিউক্লিওটাইড
উত্তর: ক. Double helix
১৮. পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান– সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে কী বলে?
ক. বংশগতি খ. অভিযোজন
গ. বিবর্তনবিদ্যা ঘ. বংশগতিবিদ্যা
উত্তর: ক. বংশগতি
১৯. জীববিজ্ঞানের কোন শাখায় জিন ও বংশগতিধারা আলোচিত হয়?
ক. বংশগতি খ. বংশগতিবিদ্যা
গ. জিনপ্রযুক্তি ঘ. জীবপ্রযুক্তি
উত্তর: খ. বংশগতিবিদ্যা
২০. ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান কোনটি?
ক. প্রোটিন খ. RNA
গ. DNA ঘ. খনিজ আয়ন
উত্তর: গ. DNA
২১. বংশগতির বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক কোনটি?
ক. নিউক্লিয়াস খ. সাইটোপ্লাজম
গ. নিউক্লিওপ্লাজম ঘ. ক্রোমোসোম
উত্তর: ঘ. ক্রোমোসোম
২২. DNA, RNA ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত কোনটি?
ক. ক্রোমোসোম খ. নিউক্লিয়াস
গ. জিন ঘ. রাইবোসোম
উত্তর: ক. ক্রোমোসোম
ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৩. জীবকোষের কোন অঙ্গাণুর মধ্যে বংশগতির বাহক থাকে?
ক. মাইটোকন্ড্রিয়ামে খ. নিউক্লিয়াসে
গ. প্লাস্টিডে ঘ. গলজি বডিতে
উত্তর: খ. নিউক্লিয়াসে
২৪. DNA কিসের রাসায়নিক গঠন?
ক. ক্রোমোসোমের খ. জিনের
গ. নিউক্লিয়াসের ঘ. প্রোটোপ্লাজমের
উত্তর: খ. জিনের
২৫. ক্রোমোসোম সর্বপ্রথম কে আবিষ্কার করেন?
ক. Robert Delvin ঘ. Sturling
গ. Strasburger ঘ. Baylim
উত্তর: গ. Strasburger
২৬. একটি ক্রোমোসোমের দৈর্ঘ্য কত?
ক. ৩.৫- ৩০.০০ মাইক্রন
খ. ৪.৫- ৪০.০০ মাইক্রন
গ. ৫.৫-৫.০০ মাইক্রন
ঘ. ৬.৫ – ৬০.০০ মাইক্রন
উত্তর: ক. ৩.৫- ৩০.০০ মাইক্রন
২৭. একটি ক্রোমোসোমের প্রস্থকত?
ক. ০.২- ০.৩ মাইক্রন
খ. ০.২- ২.০ মাইক্রন
গ. ০.৩- ৩.০ মাইক্রন
ঘ. ০.৩- ৩.৫ মাইক্রন
উত্তর: খ. ০.২- ২.০ মাইক্রন
২৮. ডিএনএ কয়সূত্র বিশিষ্ট পলিনিউক্লিওটাইড?
ক. একসূত্র খ. দ্বিসূত্র
গ. ত্রি সূত্র ঘ. চৌসূত্র
উত্তর: খ. দ্বিসূত্র
২৯. ডিএনএ এর আকৃতি কিরূপ?
ক. তারকাকার খ. সর্পিলাকার
গ. জালিকাকার ঘ. পেয়ালাকার
উত্তর: খ. সর্পিলাকার
৩০. ক্রোমোসোমের স্থায়ী রাসায়নিক পদার্থ কোনটি?
ক. DNA খ. RNA
গ. জিন ঘ. গুয়ানিন
উত্তর: ক. DNA
৩১. প্রচ্ছন্ন জিন দ্বিতীয় বংশধরে কতভাগ জীবে প্ৰকাশ পায়।
ক. এক-চতুর্থাংশ খ. এক-তৃতীয়াংশ
গ. অর্ধাংশ ঘ. সম্পূর্ণ
উত্তর: ক. এক-চতুর্থাংশ
এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩২. বাংলাদেশের শতকরা কত ভাগ লোক বর্ণান্ধ?
ক. ১% খ. ৫%
গ. ১০% ঘ. ১৫%
উত্তর: গ. ১০%
৩৩. DNA ও RNA এর নাইট্রোজেন বেসের ভিন্নতা হয় কোনটির কারণে?
ক. থায়ামিন খ. গুয়ানিন
গ. সাইটোসিন ঘ. অ্যাডিনিন
উত্তর: ক. থায়ামিন
৩8. জননকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা কতটি?
ক. ২২ খ. ৪৪
গ. ২৩ ঘ. ৪৬
উত্তর: ঘ. ৪৬
৩৫. পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো সন্তানসন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে কি বলে?
ক. অনুলিপন খ. জীবপ্রযুক্তি
গ. বংশগতি ঘ. নিষেক
উত্তর: গ. বংশগতি
৩৬. DNA তে কোন নাইট্রোজেন বেস অনুপস্থিত?
ক. এডিনিন খ. ইউরাসিল
গ. থাইমিন ঘ. গুয়ানিন
উত্তর: খ. ইউরাসিল
৩৭. ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ কাদের তত্ত্ব দ্বারা অনুপ্রাণিত?
ক. লিনিয়াস ও ম্যালথাস
খ. মেন্ডেল ও লিনিয়াস
গ. ম্যালথাস ও ওয়ালেস
ঘ. ওয়ালেস ও মেন্ডেল
উত্তর: গ. ম্যালথাস ও ওয়ালেস
৩৮. ‘DNA’ ডবল হেলিক্সের ব্যাস সর্বত্র কত?
ক. ৩.৪A° খ. ৯.৮A°
গ. ২০A° ঘ. ৩৪ A°
উত্তর: গ. ২০A°
৩৯. DNA অনুপস্থিত থাকে কোনটিতে?
ক. সিউডোমোনাস খ. এন্টামিবা
গ. টোবাকো মোজাইক ঘ. লেট ব্লাইট
উত্তর: গ. টোবাকো মোজাইক
৪০. ক্রোমোসোমের কোন উপাদানকে জিন বলা হয়?
ক. RNA খ. হিস্টোন-প্রোটিন
গ. সেন্ট্রোমিয়ার ঘ. DNA
উত্তর: ঘ. DNA
৪১. কোনটি পিউরিন?
ক. A ও T খ. C ও G
গ. C ও T ঘ. A ও G
উত্তর: ঘ. A ও G
৪২. DNA ডবল হেলিক্সের ৫০টি পূর্ণ ঘূর্ণনের দৈর্ঘ্য কত Å (অ্যাংস্ট্রম)?
ক. ১৭০০ খ. ১৬০০
গ. ১৫০০ ঘ. ১৪০০
উত্তর: ক. ১৭০০
৪৩. নিচের কোনগুলো DNA ও RNA উভয়ে পাওয়া যায়?
ক. এডিনিন ও থায়ামিন
খ. সাইটোসিন ও থায়ামিন
গ. গুয়ানিন ও ইউরাসিল
ঘ. সাইটোসিন ও গুয়ানিন
উত্তর: ঘ. সাইটোসিন ও গুয়ানিন
৪৪. কোন রঙের বর্ণান্ধতাকে সার্বজনীন বর্ণান্ধতা বলে?
ক. লাল-সবুজ খ. লাল-নীল
গ. লাল-আসমানী ঘ. লাল-বেগুনী
উত্তর: ক. লাল-সবুজ
৪৫. The origin of species by means of natural selection বইটি কত সালে প্রকাশিত হয়?
ক. ১৮২০ খ. ১৮৪০
গ. ১৮৫৯ ঘ. ১৮৭০
উত্তর: গ. ১৮৫৯
ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪৬. প্রচ্ছন্ন জিন এর বৈশিষ্ট্য কোন বংশধরের এক–চতুর্থাংশ জীবে প্ৰকাশ পায় ?
ক. ১ম খ. ২য়
গ. ৩য় ঘ. ৪র্থ
উত্তর: খ. ২য়
৪৭. ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন কে?
ক. ওয়াটসন ও ক্লীক খ. স্টার্সবার্জার
গ. মেন্ডেল ঘ. রবার্ট ব্রাউন
উত্তর: খ. স্টার্সবার্জার
৪৮. প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের প্রবর্তক কে?
ক. ডারউন খ. লিনিয়াস
গ. স্টার্সবার্জার ঘ. মেন্ডেল
উত্তর: ক. ডারউন
৪৯. সাধারণত শতকরা কতজন পুরুষ কালার ব্লাইন্ড?
ক. ১ খ. ৫
গ. ১০ ঘ. ১৫
উত্তর: গ. ১০
৫০. জীবের বংশগতির বৈশিষ্ট্য সঞ্চারিত হয় কোনটির মাধ্যমে?
ক. খাদ্য খ. রক্ত
গ. জিন ঘ. শ্বাস-প্রশ্বাস
উত্তর: গ. জিন
৫১. রক্তের DNA পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় –
i. সন্তানের পিতৃত্ব
ii. সন্তানের মাতৃত্ব
iii. অপরাধী সনাক্তকরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫২. নাইট্রোজেনঘটিত বেস হল —
i. এডিনিন
ii. গুয়ানিন
iii. সাইটোসিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৩. ক্রোমোজোমের ক্ষেত্রে–
i. এটি প্রধান বংশগতীয় বস্তু
ii. বংশগতির ভৌত ভিত্তি
iii. এর প্রস্থ ০.২- ২.০
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৪. এইচ. এম. এস বিগল জাহাজের একজন প্রকৃতিবিদ হিসেবে ডারউইন কোথায় ভ্রমণে গিয়েছিলেন?
i. অহিত
ii. নিউজিল্যান্ড
iii. ফিজি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫৫. RNA এর base সমূহ –
i. A = U
ii. A = T
iii. C ≡ G
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫৬. পিতামাতা হতে সন্তানসন্ততিতে স্থানান্তরিত হয়–
i. ডিএনএ
ii. লাইসোজোম
iii. আরএনএ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৭. বংশগতি বস্তুর ক্ষেত্রে—
i. DNA অণুর প্রধান অক্ষের ভিতরের দিকে N2 বেস অবস্থান করে
ii. RNA অণুতে বন্ধনহীন বেস দেখা যায়
iii. প্রতিরূপ ক্রোমোজোমে জিন জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৮. X ও Y ক্রোমোজোম আকৃতিতে—
i. গোলাকার
ii. লম্বা
iii. রডের মতো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৯. DNA ও N2 ঘটিত ক্ষার হলো–
i. এডিনিন ও গুয়ানিন,
ii. থাইমিন ও সাইটোসিন
iii. রাইবোজ ও অক্সিরাইবোজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের উদ্দীপকটির আলোকে ৬০ ও ৬১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
মাহি একজন বর্ণান্ধ । সে স্বাভাবিক দৃষ্টিসম্পন্ন মিরাকে বিয়ে করে । কিছু দিন পর তাদের সন্তান হয়।
৬০. বর্ণান্ধতার জীনটির অবস্থান কোথায়?
ক. অটোজোমে খ. সেক্স ক্রোমোজোমে
গ. নিউক্লিয়াসে ঘ. মাইটোকন্ড্রিয়ায়
উত্তর: খ. সেক্স ক্রোমোজোমে
৬১. মাহি ও মিরার বংশধরদের মধ্যে –
i. ১ম বংশধরে সবাই দৃষ্টিসম্পন্ন হয়
ii. ১ম বংশধরে পুত্র বর্ণান্ধ হবে
iii. ২য় বংশধরে একজন পুত্র বর্ণান্ধ হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
নিচের উদ্দীপকের আলোকে ৬২ ও ৬৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
সিগারেটের মূল উপাদান তামাক । এই তামাককে TMV ভাইরাস আক্রমণ করে ।
৬২. উল্লিখিত ভাইরাসের বংশগতি বস্তুতে থাকে–
ক. RNA খ. লোকাস
গ. DNA ঘ. জিন
উত্তর: ক. RNA
রসায়ন তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন
৬৩. উক্ত ভাইরাসের বংশগতি বস্তুতে–
i. A= T বন্ধন বিদ্যমান
ii. G = C বন্ধন বিদ্যমান
iii. A= U বন্ধন বিদ্যমান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৬৪ ও ৬৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
রুমানা লোহিত রক্তকণিকার অস্বাভাবিকতাজনিত রোগে ভুগছিল। ডাক্তার বললেন তার রক্ত দরকার এবং তাকে ঔষুধ খেতে হবে এবং সে লৌহ সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারবে না।
৬৪. উদ্দীপকে কোন ধরনের রোগে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে?
ক. লিউকেমিয়া খ. জন্ডিস
গ. জ্বর ঘ. থ্যালাসেমিয়া
উত্তর: ঘ. থ্যালাসেমিয়া
৬৫. কোনটি নষ্টের ফলে উদ্দীপকের রোগটি হয়?
ক. শ্বেত রক্তকণিকা
খ. লোহিত রক্তকণিকা
গ. অণুচক্রিকা
ঘ. শ্বেত ও লোহিত রক্তকণিকা
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সিফাত একজন কৃষক। তার দুইটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বড় কন্যাটি দেখতে হুবহু বাবার মতো এবং ছোট কন্যাটির চুল, গায়ের রং বাবার মতো হলেও দেখতে মায়ের মতো। সম্প্রতি তার আরও একটি কন্যাসন্তান হওয়াতে সে তার স্ত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ। একদিন গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে সে জানতে পারে কন্যাসন্তান জন্মের জন্য সিফাতই দায়ী।
ক. বংশগতিবিদ্যা কী?
খ. অনুলিপন বলতে কী বুঝায়?
গ. সিফাতের সন্তানদের ক্ষেত্রে এরূপ শারীরিক গঠনগত ভিন্নতার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সিফাতের ক্ষুব্ধ হওয়াটা অযৌক্তিক কেন? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের বংশগতি সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা ও গবেষণা করা হয়, তাকে বলা হয় বংশগতিবিদ্যা।
খ. অনুলিপন বলতে একটি DNA অণু থেকে আর একটি DNA অণু তৈরি বা সংশ্লেষণের প্রক্রিয়াকে বোঝায় ।
এই পদ্ধতিতে DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙে গিয়ে আলাদা হয় এবং প্রতিটি সূত্র তার পরিপূরক নতুন সূত্র সৃষ্টি করে ।
পদার্থ বিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. সিফাতের সন্তানদের ক্ষেত্রে এরূপ শারীরিক গঠনগত ভিন্নতার কারণ প্রকট ও প্রচ্ছন্ন জিনের সক্রিয়তা।
সন্তানের বৈশিষ্ট্য আসে পিতামাতা উভয়ের থেকে। জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন। পিতামাতা থেকে প্রথম বংশধরে জীবের যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য বলে। এই বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য যে জিন দায়ী তাকে প্রকট জিন বলে। যে বৈশিষ্ট্য দ্বিতীয় বংশধরে এক-চতুর্থাংশ প্রকাশ পায় তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে। এই বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য যে জিন দায়ী তাকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে। যে জিন অধিক সক্রিয় সেই জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়।
উদ্দীপকে সিফাতের বড় মেয়েটি দেখতে হুবহু সিফাতের মতো হয়েছে। এক্ষেত্রে সিফাতের অধিকাংশ বৈশিষ্ট্য প্রকট আকারে বড় মেয়ের দেহে প্রকাশ পেয়েছে। এখানে মায়ের বৈশিষ্ট্য প্ৰচ্ছন্ন আকারে আছে। ছোট মেয়ের চুল ও গায়ের রং বাবার মতো হয়েছে কিন্তু দেখতে মায়ের মতো হয়েছে। এক্ষেত্রে কিছু বৈশিষ্ট্য সিফাতের এবং কিছু বৈশিষ্ট্য তার স্ত্রীর থেকে এসেছে ।
সুতরাং প্রকট ও প্রচ্ছন্ন জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশের ভিন্নতার কারণে সিফাতের মেয়েদের বৈশিষ্ট্য ভিন্নতর হয়েছে।
ঘ. সিফাতের ক্ষুব্ধ হওয়াটা অযৌক্তিক। মেয়ে সন্তান জন্ম হওয়ার ব্যাপারে মায়ের কোনো ভূমিকা নেই । পিতাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী।
কারণ সবসময় মাতা কেবলমাত্র X বহনকারী ডিম্বাণু তৈরি করে। অপরদিকে পিতা X ও Y উভয় ধরনের শুক্রাণু উৎপাদন করে। গর্ভধারণকালে মাতার X বহনকারী ডিম্বাণুর সাথে পিতার X বহনকারী শুক্রাণু মিলিত হলে জাইগোট হবে XX অর্থাৎ সন্তান হবে মেয়ে। আর যদি Y বহনকারী শুক্রাণু নিষেকে অংশগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে জাইগোট হবে XY অর্থাৎ সন্তান হবে ছেলে।
সুতরাং সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে সন্তানটি ছেলে না মেয়ে হবে এ ব্যাপারে মাতা কোনোক্রমেই দায়ী নয়। তাই বলা যায়, মেয়ে সন্তান জন্মের জন্য সিফাতের এই ক্ষুব্ধ হওয়াটা একেবারেই অযৌক্তিক।
প্রশ্ন–২: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সোহেল টেলিভিশনের একটি চ্যানেলে দেখতে পেল যে, ব্রাজিলের একটি শহরে পোষা বিড়ালের মেলা হচ্ছে। সে দেখল, একই প্রজাতি হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন বিড়ালের আকার, বর্ণ চেহারা ভিন্ন। পরবর্তীতে একদিন সে দেখে, বন্য পরিবেশে বিড়ালের বেড়ে উঠার চিত্র। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তার বাবা তাকে বিবর্তন ও অভিযোজন সম্পর্কে ধারণা দেন।
ক. লোকাস কী?
খ. অভিযোজন বলতে কী বোঝায়?
গ. সোহেলের দেখা প্রাণীগুলোর ভিন্নতার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের প্রথম পরিবেশের প্রাণীকে যদি দ্বিতীয় পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয় তবে কী ঘটবে বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ক্রোমোসোমের যে স্থানে জিন অবস্থান করে তাই লোকাস ।
খ. পরিবেশ, জীবন প্রবাহ ও জনমিতির মানদণ্ডে বিবর্তন অনুযায়ী কোনো প্রজাতির একটি পরিবেশে খাপ খাইয়ে টিকে থাকাকে অভিযোজন বলে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. অভিযোজনের ফলে তৈরি প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলো বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে থাকে, অর্থাৎ বংশগতি লাভ করে ।
সোহেলের দেখা প্রাণীগুলোর ভিন্নতার কারণ জীবজগতের ভিন্নতা বা Variation | পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া এবং নিজেকে রক্ষার জন্য জীবদের মধ্যে নানারকম শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞানী ডারউইন লক্ষ করেছিলেন যে, পৃথিবীতে দুটি প্রাণী বা প্রাণীগোষ্ঠী সম্পূর্ণভাবে একরকম নয়।
একই প্রজাতির এমনকি একই পিতামাতার সন্তানদের মধ্যেও পার্থক্য দেখা যায়। ডারউইনের মতে অবিরাম সংগ্রামের ফলে নিজেকে রক্ষার জন্য নানারকম শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলেই জীবে জীবে পার্থক্য সৃষ্টি হয়। এর ফলেই জীবজগতে ভিন্নতা বা Variation দেখা যায় ।
সোহেলের দেখা প্রাণীগুলোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ব্রাজিলের একটি শহরে পোষা বিড়ালের মেলায় একই প্রজাতির বিড়ালের মধ্যেও আকার, রং, বর্ণে ভিন্নতা ছিল। মূলত পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে, টিকে থাকতে, জীবজগতে ভিন্নতার কারণেই বিড়ালগুলোর মধ্যেও বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা রয়েছে।
ঘ. পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর জন্য খাদ্য ও বাসস্থান সীমিত। তাই প্রতিটি প্রাণী জীবন সংগ্রামে লিপ্ত।
একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যদের পরস্পরের মধ্যে অন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগিতা যেমন বিড়ালে- বিড়ালে সংগ্রাম অথবা ভিন্ন দুটি প্রজাতির মধ্যে আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগিতা যেমন সাপ- বেজি ইত্যাদি পরস্পর সংগ্রামে লিপ্ত ।
ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতে জীবন সংগ্রামে সেইসব প্রাণী সাফল্য লাভ করে যাদের শারীরিক গঠন প্রকৃতিতে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে পরিবর্তিত হয়। তারা পরিবর্তনশীলতায় দক্ষতার পরিচয় দিয়ে অভিযোজিত গুণগুলো বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে বেঁচে থাকার প্রতিযোগীতায় জয়ী হয়। অন্যদিকে যারা এ ধরনের পরিবর্তনশীলতায় অংশগ্রহণ করতে পারে না তারা প্রকৃতি কর্তৃক মনোনীত হয় না ফলে তাদের বিলুপ্তি ঘটে।
উদ্দীপকে প্রথম পরিবেশের বিড়ালটি পোষা। তাকে খাদ্য বা বাসস্থানের জন্য সংগ্রাম করতে হয় না। কিন্তুএখন তাকে বন্য পরিবেশে ছেড়ে দিলে তাকে আন্তঃ ও অন্তঃপ্রজাতির সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে। এ সংগ্রামে ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন মতে নির্বাচিত হলে সে বন্য পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারবে নতুবা মারা যাবে।
প্রশ্ন–৩: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সজলের বাবা ও মা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া মাইনরে আক্রান্ত। তাই সজল তীব্র থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ডাক্তার নির্দিষ্ট ঔষধ ও নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্ত পরিবর্তনের চিকিৎসা দিয়েছেন। উক্ত রোগে উন্নত চিকিৎসা সম্বন্ধে জানতে চাইলে তিনি বললেন, এক্ষেত্রে জিন প্রকৌশল অধিক কার্যকর।
ক. জৈব বিবর্তন কী?
খ. বংশগতি বলতে কী বুঝায়?
গ. রোগটি সজলের দেহে সঞ্চালিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উন্নত চিকিৎসা সম্বন্ধে ডাক্তারের বক্তব্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীব প্রজাতির পৃথিবীতে আবির্ভাব ও টিকে থাকার জন্য যে পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রক্রিয়া হলো জৈব বিবর্তন ।
খ. পিতা মাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান- সন্ততির দেহে সঞ্চালিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বংশগতি বলে। জীবের সব বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন। জিন ক্রোমোসোমে অবস্থান করে। ক্রোমোসোমের কাজ হলো মাতা- পিতা হতে জিন সন্তান- সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া এবং বংশগতির ধারা অক্ষুণ্ণ রাখা ।
বাংলা দ্বিতীয় সমাস বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকে সজলের রোগটি থ্যালাসেমিয়া। এ রোগটি বংশগত।
থ্যালাসেমিয়া হয় দুটি প্রোটিনের জিন নষ্টের কারণে। থ্যালাসেমিয়া রোগটিকে জিনের প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে দু’ভাবে চিহ্নিত করা হয় । একটি থ্যালাসেমিয়া মেজর অপরটি থ্যালাসেমিয়া মাইনর। থ্যালাসেমিয়া মেজরের ক্ষেত্রে সন্তান তার বাবা ও মা উভয়ের কাছ থেকে থ্যালাসেমিয়া জিন পেয়ে থাকে।
থ্যালাসেমিয়া মাইনরের ক্ষেত্রে সন্তান থ্যালাসেমিয়া জিন তার বাবা অথবা তার মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে । এ ধরনের সন্তানদের মধ্যে কোন উপসর্গ দেখা যায় না তবে তারা থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক হিসাবে কাজ করে।
উদ্দীপকে সজলের বাবা ও মা উভয়ে থ্যালাসেমিয়া মাইনর অর্থাৎ তারা থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক। তাদের সন্তান সজল তাদের উভয়ের কাছ থেকে থ্যালাসেমিয়া জিন পাওয়ার কারণে জিন দুটি একসাথে হওয়ায় জিনটি প্রকট আকার ধারণ করায় সে থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
আমরা জানি লোহিত রক্তকোষ দু’ধরনের প্রোটিন a –গ্লোবিউলিন এবং β- গ্লোবিউলিন এ দুটি প্রোটিনের জিন নষ্টের কারণে। আলফা (a) থ্যালাসেমিয়া রোগ তখনই হয় যখন গ্লোবিউলিন তৈরির জিন অনুপস্থিা থাকে কিংবা পরিবর্তিত হয়। অনুরূপভাবে β – থ্যালাসেমিয়া তখনই হয় যখন B – গ্লোবিউলিন প্রোটিন উৎপাদন ব্যাহত হয় ।
উদ্দীপকে ডাক্তার সজলের থ্যালাসেমিয়া রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য বলেছেন জিন প্রকৌশল অধিকতর কার্যকর। জিন প্রকৌশলকে রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তিও বলা হয়। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে কাঙি্খত জিন (DNA) কে নির্বাচন করে ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিডের মাধ্যমে স্থানান্তর করা সম্ভব। তাই ডাক্তার ইঙ্গিত দিয়েছেন β – গ্লোবিউলিন এবং β – গ্লোবিউলিন তৈরির জিনকে (DNA) রিকম্বিনেন্ট প্রযুক্তি দ্বারা সজলের দেহে স্থানান্তর করে থ্যালাসেমিয়া রোগের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব।
প্রশ্ন–৪: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ডারউইনের মতে পৃথিবীতে দুইটি প্রাণী বা প্রাণীগোষ্ঠী সম্পূর্ণভাবে এক রকম নয়। বংশগতির তথ্য স্থানান্তরে DNA এর ভূমিকা থাকলেও একই প্রজাতির মধ্যে এমনকি পিতা– মাতার সন্তানদের মধ্যেও পার্থক্য দেখা যায়। অবিরাম সংগ্রামের ফলে নিজেকে রক্ষার জন্য নানারকম শারীরিক পরিবর্তন ঘটে ।
ক. বংশগতি কী?
খ. অভিযোজন বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত DNA এর ডবল হেলিক্স ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি মূল্যায়ন কর ।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পিতামাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান- সন্ততির দেহে সঞ্চালিত হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো বংশগতি।
বাংলা দ্বিতীয় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. অভিযোজন বলতে প্রকৃতিতে বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
সময়ের সাথে যে প্রজাতিটির টিকে থাকার ক্ষমতা যত বেশি সে বিবর্তনের আবর্তে তত বেশিদিন টিকে থাকতে পারে। অর্থাৎ পরিবেশ, জীবন প্রবাহ ও জনমিতির মানদণ্ডে বিবর্তনে যে যত বেশি খাপ খাওয়াতে পারবে সেই প্রজাতিটি তত টিকে থাকবে। এটিকে অনেক ক্ষেত্রে অভিযোজন বলা হয় ।
গ. ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট ডি- অক্সি রাইবোজ শর্করা, নাইট্রোজেনঘটিত বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন) ও অজৈব ফসফেট নিয়ে গঠিত। এই তিনটি উপাদানকে একত্রে ‘নিউক্লিওটাইড’ বলে।
অনেকগুলো নিউক্লিওটাইড নিয়ে DNA গঠিত। এজন্য DNA কে পলিনিউক্লিওটাইড বলা হয়। নাইট্রোজেন বেসগুলো দুই ধরনের। যথা : পিউরিন ও পাইরিমিডিন। এডিনিন (A) ও গুয়ানিন (G) – বেস হলো পিউরিন এবং সাইটোসিস (C) ও থায়ামিন (T) বেস হলো পাইরিমিডিন। সুতরাং দুটি সূত্রের একটি সূত্রের এডিনিন (A) অন্য সূত্রের থায়ামিন (T) এর সাথে দুইটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত(A=T) থাকে এবং একটি সূত্রের গুয়ানিন (G) অন্য সূত্রের সাইটোসিনের (C) এর সাথে তিনটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত (G ≡ C) থাকে। অর্থাৎ এই বন্ধন সর্বদা একটি পিউরিন ও পাইরিমিডিনের মধ্যে হয়ে থাকে। সুতরাং দুটি সূত্রের একটি অন্যটির পরিপূরক কিন্তুএক রকম নয়।
ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি হলো অবিরাম সংগ্রামের ফলে নিজেকে রক্ষার জন্য জীবদের মধ্যে নানারকম শারীরিক পরিবর্তন ঘটে ।
বিজ্ঞানী ডারউইনের মতবাদ দ্বারা একথাটি আলোচনা করা যায়। ডারউইনের মতে জীবন সংগ্রামে সেই সব প্রাণী সাফল্য লাভ করে যাদের শারীরিক গঠন প্রকৃতিতে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে পরিবর্তিত হয়। তারা পরিবর্তনশীলতায় দক্ষতার পরিচয় দিয়ে অভিযোজিত গুণগুলো বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে বেঁচে থাকার বা বিবর্তনের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় এবং প্রকৃতি কর্তৃক নির্বাচিত হয়।
অন্যদিকে যারা এ ধরনের পরিবর্তনশীলতায় অংশগ্রহণ করতে পারে না তারা প্রকৃতি কর্তৃক মনোনীত হয় না। ফলে তাদের বিলুপ্তি ঘটে। প্রতিযোগিতায় যে বৈশিষ্ট্য, স্বভাব ও প্রবৃত্তি জীব বা তার বংশধরকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সক্ষম তারাই কেবল বেঁচে থাকে । এই গুণাবলি বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত। জীবজগতে এ ধরনের অভিযোজনকে প্রকৃতিতে বাঁচার সংগ্রামে টিকে থাকার প্রধান অবলম্বন বলে মনে করেছেন।
প্রকৃতিতে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী এমন কিছু অভিযোজনের অধিকারী হয়, যা তাদের বেঁচে থাকার জন্য বিশেষ সহায়ক। মরুভূমিতে অনেক গাছের পানি সংরক্ষণ করার কৌশল, প্রাণীর আত্মরক্ষায় ছদ্মবেশ কিংবা অনুকৃতির আশ্রয় নেয়। এই অভিযোজনগুলো অভিব্যক্তির উল্লেখযোগ্য উপাদান ।
অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা ব্যাখ্যা করে দেখা যায় যে, উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি অত্যন্ত যথার্থ।
প্রশ্ন–৫: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. PCR এর পূর্ণরূপ কী?
খ. জৈব বিবর্তন বলতে কী বোঝায়?
গ. A এর প্রধান উপাদানের ফিঙ্গার প্রিন্ট তৈরির কৌশল বর্ণনা কর ।
ঘ. মানব সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে A এর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. PCR এর পূর্ণরূপ হলো Polymerase Chain Reaction ।
খ. কয়েক হাজার বছর সময় ব্যাপকতায় জীব প্রজাতির পৃথিবীতে আবির্ভাব ও টিকে থাকার জন্য যে পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রক্রিয়া। তাকে জৈব বিবর্তন বলে। পৃথিবীতে বর্তমানে যত জীব আছে তারা বিভিন্ন সময়ে এই ভূমণ্ডলে আবির্ভূত হয়েছে। যাদের কিছু সংখ্যক বিলুপ্ত হয়েছে আবার কোনো জীব ধীর পরিবর্তন ঘটিয়ে এখনও টিকে আছে । এ প্রক্রিয়াটিই হলো জৈব বিবর্তন ।
গ. A হলো ক্রোমোসোম, যার প্রধান উপাদান ডিএনএ। ডিএনএ টেস্টের বিজ্ঞানভিত্তিক এক ব্যবহারিক পদ্ধতি হলো ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং।
বিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
অপরাধস্থল কিংবা অপরাধীর কাছ থেকে প্রাপ্ত জৈবিক নমুনা তথা হাড়, দাঁত, চুল ইত্যাদির ডিএনএ নকশাকে তুলনা করা হয়। সন্দেহভাজনের কাছ থেকে নেয়া জৈবিক নমুনার ডিএনএ নকশার সাথে। এ পদ্ধতিতে প্রথমে নমুনা থেকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ডিএনএ আলাদা করে নিতে হয়। পরে একাধিক সীমাবদ্ধ এনজাইম দিয়ে কেটে ছোট ছোট টুকরা করা হয়। এক বিশেষ পদ্ধতি ইলেকট্রোফোরেসিস এগারোজ বা পলিএক্রিলামাইড জেল এ ডিএনএ টুকরোগুলো তাদের দৈর্ঘ্য অনুসারে বিভিন্ন ব্যান্ড আকারে আলাদা করা হয়। এক বিশেষ ধরনের নাইট্রোসেলুলোজ কাগজে রেডিওঅ্যাকটিভ আইসোটোপ ডিএনএ প্রোবের সাথে হাইব্রিডাইজ করে এক্সরে ফিল্মের উপর রেখে অটোরেডিওগ্রাফ পদ্ধতিতে দৃশ্যমান ব্যান্ডের সারিগুলো নির্ণয় করা হয় এবং অপরাধস্থল থেকে প্রাপ্ত নমুনার সাথে সন্দেহভাজন নমুনার মিল ও অমিল চিহ্নিত করে তুলনা করা হয় ।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় A অর্থাৎ, ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান ডিএনএ এর ফিঙ্গার প্রিন্ট করা হয়।
ঘ. A হলো ক্রোমোসোম । এটি মানব সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে ভূমিকা পালন করে ।
মানবদেহে দু’ধরনের ক্রোমোসোম থাকে যথা : অটোসোম এবং সেক্স ক্রোমোসোম। এদের মধ্যে সেক্স ক্রোমোসোম লিঙ্গ নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সেক্স ক্রোমোসোমের সংখ্যা দুটি, যার মধ্যে একটি এক্স (X) এবং অপরটি ওয়াই (Y) নামে পরিচিত। স্ত্রীলোকের ডিপ্লয়েড কোষে দুটি সেক্স ক্রোমোসোমই X ক্রোমোসোম অর্থাৎ XX । কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে দুটির মধ্যে একটি X এবং অপরটি Y অর্থাৎ XY।
স্ত্রীলোকের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু সৃষ্টির সময় যখন মিয়োসিস বিভাজন ঘটে তখন প্রতিটি ডিম্বাণু সৃষ্টির সময় যখন মিয়োসিস বিভাজন ঘটে তখন প্রতিটি ডিম্বাণু অন্যান্য ক্রোমোসোমের সাথে একটি করে X ক্রোমোসোম লাভ করে। অপরপক্ষে, পুরুষে শুক্রাণু সৃষ্টির সময় অর্ধেক সংখ্যক শুক্রাণু একটি করে X ক্রোমোসোম এবং অবশিষ্ট অর্ধেক শুক্রাণু একটি করে Y ক্রোমোসোম লাভ করে। ডিম্বাণু পুরুষের X বা Y বহনকারী যেকোনো একটি শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হতে পারে। ফলে জাইগোট দুটি X অথবা একটি Y ক্রোমোসোমবিশিষ্ট হতে পারে দুটি X নিয়ে অর্থাৎ XX নিয়ে যে শিশু জন্মাবে সে হবে একটি মেয়ে আর যে শিশু একটি X এবং একটি Y অর্থাৎ XY ক্রোমোসোম নিয়ে পৃথিবীতে আসবে সে হবে একটি ছেলে।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, মানব সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে A অর্থাৎ ক্রোমোসোমের ভূমিকা অপরিসীম।
প্রশ্ন–৬: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রামিসা তার প্রতিবেশীদের এক বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দেখল সে বাড়ির ছেলে ও মেয়ের চেহারা প্রায় তাদের বাপ ও মায়ের মতো। রামিসা তাদের এক মেয়েকে দেখল তার চেহারা ফ্যাকাসে এবং রক্তশূন্যতায় ভুগছে। মেয়েটির মা রামিসাকে বললেন তার মেয়েটির এ রোগটি বংশগত ।
ক. ডারউইন এর লেখা বিখ্যাত বইটির নাম কী?
খ. সেক্স ক্রোমোসোম ও অটোসোমের মধ্যে পার্থক্যগুলো লেখ।
গ. উদ্দীপকে ছেলে ও মেয়ের চেহারা বাপ ও মায়ের মতো কেন? ব্যাখ্যাসহ লেখ।
ঘ. মেয়েটির মা বলল তার মেয়ের এ রোগটি বংশগত- বিশ্লেষণ কর ।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ডারউইন এর লেখা বিখ্যাত বইটির নাম- The Origin of Species by Means of Natural Selection.
খ. সেক্স ক্রোমোসোম ও অটোসোমের পার্থক্য নিম্নরূপ :
সেক্স ক্রোমোসোম | অটোসোম |
১. পুরুষ ও স্ত্রী দেহকোষে এগুলো ভিন্ন যেমন : পুরুষে XY এবং স্ত্রী দেহে XX থাকে । | ১. পুরুষ ও স্ত্রী দেহকোষে এগুলো একই রকমের থাকে । |
২. প্রধানত লিঙ্গ নির্ধারণে অংশগ্রহণ করে। | ২. প্রধানত দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে । |
গ. উদ্দীপকে ছেলে ও মেয়ের চেহারা বাপ ও মায়ের মতো হয় বংশগতির কারণে।
পিতা- মাতার বৈশিষ্টগুলো বংশানুক্রমে সন্তান- সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াই হলো বংশগতি। বংশগতির প্রধান উপাদান হচ্ছে ক্রোমোসোম। ক্রোমোসোমের প্রধান উপাদান ডিএনএ। DNA ই জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ধারক যা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সরাসরি বহন করে মাতা-পিতা থেকে সন্তানদের মধ্যে নিয়ে যায়।
জীবের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রককে জিন বলা হয়। জিন এর রাসায়নিকরূপ হলো ডিএনএ । মাতা- পিতার বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রকাশ পায় যে জিনগুলোর কারণে তাদের প্রকট জিন বলে।
উদ্দীপকেও পরিবারটিতে ছেলে ও মেয়েদের চেহারা তাদের বাপ ও মায়ের মতো কারণ চেহারা নিয়ন্ত্রণকারী জিনগুলো প্রকট বৈশিষ্ট্য হওয়ায় সেগুলো তাদের সন্তানদের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে মেয়েটির চেহারা ফ্যাকাসে এবং রক্তশূন্যতার ছাপ আছে। মেয়েটির মা বললেন মেয়েটির রোগ বংশগত। রোগটির লক্ষণ ও মেয়েটির মায়ের কথা থেকে বুঝা যায় রোগটি থ্যালাসেমিয়া।
থ্যালাসেমিয়া রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রোগের নাম। এই রোগে লোহিত রক্ত কণিকাগুলো নষ্ট হয়। ফলে রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে। এই রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে । লোহিত রক্তকোষ দু ধরনের প্রোটিন দ্বারা তৈরি a- গ্লোবিউলিন এবং β- গ্লোবিউলিন ।
বাংলা প্রথম পত্র আম-আঁটির ভেঁপু- সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
লোহিত রক্তকোষে এ দুটি প্রোটিন জিন নষ্টের কারণে থ্যালাসেমিয়া দু’ভাবে দেখা হয় । থ্যালাসেমিয়া মেজরের ক্ষেত্রে শিশু তার বাবা ও মা উভয় থেকে জিন পেয়ে থাকে। থ্যালাসেমিয়া মাইনরের ক্ষেত্রে শিশু থ্যালাসেমিয়া জিন তার বাবা অথবা মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। এ ধরনের শিশুদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়ার কোনো উপসর্গ দেখা যায় না ।
উদ্দীপকে মেয়েটি তার মা ও বাবা উভয়ের কাছ থেকে থ্যালাসেমিয়া জিন পেয়ে প্রতিরূপ (হোমোলগাস) হওয়ায় রোগটি প্রকাশ পেয়েছে এবং এটি থ্যালাসেমিয়া মেজর ।
প্রশ্ন– ৭: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বংশগতিবিদ্যার জনক গ্রেগর জোহান মেন্ডেল। তিনি বংশগতিবিদ্যার অনেক অবদান রেখে গেছেন। আবার চার্লস ডারউইনও বংশগতিবিদ্যায় কম অবদান রাখেননি। ডারউইন তার বিবর্তনবাদে বলেছেন– “যোগ্যতমরাই পৃথিবীতে টিকে থাকবে।” তখন পর্যন্ত DNA এর ধারণা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়নি ।
ক. DNA কী?
খ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে মূল বিষয়গুলো কী?
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বিজ্ঞানীর মতবাদ ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. ক্রোমোসোমের উল্লিখিত উপাদানটির অণুর গঠন বিশ্লেষণ কর ।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. DNA হলো জিনের রাসায়নিক গঠন ৷
খ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে মূল বিষয়গুলো হলো :
i. খাদ্য; ii. বাসস্থান ও iii. প্রজননক্ষেত্র ।
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বিজ্ঞানী হলেন, চার্লস ডারউইন। তিনি জীবের বিবর্তনের উপর মতবাদ দেন। তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন যে, যেহেতু প্রতিটি প্রাণী অনেক বেশি সন্তান জন্ম দেয়, সেহেতু বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীর মধ্যে অন্তঃপ্রজাতিক ও আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযোগিতা ঘটে ।
ডারউইনের মতে জীবন সংগ্রামে সেইসব প্রাণী সাফল্য লাভ করে যাদের শারীরিক গঠন প্রকৃতিতে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে পরিবর্তন হয়। এই গুণাবলী বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়ে থাকে। অপরদিকে প্রতিকূল বৈচিত্র্যসম্পন্ন জীব, জীবন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে কালক্রমে ধ্বংস হয় । ডারউইন জীবজগতে এ ধরনের অভিযোজনকে প্রকৃতিতে বাঁচার সংগ্রামে টিকে থাকার প্রধান অবলম্বন বলে মনে করেছেন।
ডারউইনের “যোগ্যতমের টিকে থাকা” মতবাদে তিনি উপরে আলোচিত বিষয়টি বুঝাতে চেয়েছেন ।
ঘ. ক্রোমোসোমের উল্লিখিত উপাদান হলো DNA:
ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) দ্বিসূত্রবিশিষ্ট সর্পিলাকার গঠনের দুটি সূত্রের পলিনিউক্লিওটাইড। একটি সূত্র অন্যটির পরিপূরক। এতে পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা, নাইট্রোজেনঘটিত বেস (এডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন) ও অজৈব ফসফেট থাকে। এই তিনটি উপাদানকে একত্রে ‘নিউক্লিওটাইড’ বলে।
নাইট্রোজেন বেসগুলো দু’ধরনের। যথা পিউরিন ও পাইরিমিডিন। এডিনিন (A) ও গুয়ানিন (G)- বেস হলো পিউরিন এবং সাইটোসিন (C) ও থায়ামিন (T) বেস হলো পাইরিমিডিন । একটি সূত্রের এডিনিন (A) অন্য সূত্রের থায়ামিন (T) এর সাথে দুইটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত (A = T) থাকে এবং একটি সূত্রের গুয়ানিন অন্য সূত্রের সাইটোসিনের (C) এর সাথে তিনটি হাইড্রোজেন বন্ড দ্বারা যুক্ত (G ≡ C) থাকে।
অর্থাৎ এই বন্ধন সর্বদা একটি পিউরিন ও পাইরিমিডিনের মধ্যে হয়ে থাকে । সুতরাং দুটি সূত্রের একটি অন্যটির পরিপূরক কিন্তু এক রকম নয়। DNA এর দুটি পলিনিউক্লিওাইড সূত্র বিপরীতভাবে অবস্থান করে। অনেকটা প্যাঁচানো সিঁড়ির ধাপের মতো, ক্ষারগুলো শায়িতভাবে প্রধান অক্ষের সাথে লম্বভাবে অবস্থান করে।
অর্থাৎ DNA অণুর বাইরের দিকের দণ্ড দুটি (প্রধান অক্ষ) পর পর সুগার ও ফসফেট দ্বারা গঠিত এবং এদের ভেতরের দিকে N2 বেস অবস্থান করে। DNA ডবল হেলিক্সের ব্যাস সর্বত্র 20Å ।
প্রশ্ন–৮: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সাগর দশম শ্রেণির ছাত্র। একদিন তার শিক্ষক ক্লাসে DNA নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সাগর DNA এর অনুলিপন বিষয়ে প্রশ্ন করায় শিক্ষক তাদের সব বুঝিয়ে দিলেন।
ক. আত্মীকরণ শক্তি কী?
খ. DNA ও RNA এর মধ্যে ২টি পার্থক্য লেখ।
গ. সাগরের প্রশ্নের উত্তরে স্যার কী আলোচনা করলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ন্যায়বিচারে উদ্দীপকের বংশগতি বস্তু টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ- বিশ্লেষণ কর ।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ATP এবং NADPH + H+ কে আত্মীকরণ শক্তি বলা হয় ।
খ. DNA হলো ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড এবং RNA হলো রাইবোনিউক্লিক এসিড। এদের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ :
DNA | RNA |
১. এটি দুটি পলিনিউক্লিওটাইড শৃঙ্খলবিশিষ্ট । | ১. এটি একটি পলিনিউক্লিওটাইড শৃঙ্খলবিশিষ্ট । |
২. এতে পাইরিমিডিন বেস সাইটোসিন ও থাইমিন থাকে । | ২. এতে পাইরিমিডিন বেস সাইটোসিন ও ইউরাসিল থাকে । |
গ. সাগর DNA এর অনুলিপন বিষয়ে প্রশ্ন করেছিল। তার উত্তরে স্যার অনুলিপন আলোচনা করেছিলেন ।
অনুলিপনের প্রাথমিক পর্যায়ে পিউরিন ও পাইরিমিডিন বেসের সংযোগসাধনকারী হাইড্রোজেন বন্ড ভেঙে যায় । ফলে DNA অণুর একাংশ পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে পড়ে এবং প্রতিটি হেলিক্স ছাঁচ হিসেবে কার্যকরী হয়। নতুন হেলিক্স তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান অর্থাৎ শর্করা, বেস ও ফসফেট যথাসময়ে যথাসনে উপস্থিত হয় এবং সম্পূরক সূত্র সৃষ্টি হয়।
বাংলা প্রথম পত্র-কপোতাক্ষ নদ-সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
এটি সৃষ্টির জন্য DNA পলিমারেজ এনজাইম এবং ম্যাগনেসিয়াম আয়নের উপস্থিতি প্রয়োজন। ছাঁচের বেসের অনুক্রম অনুসারে সম্পূরক বেসের বিন্যাস ও হাইড্রোজেন বন্ডের সৃষ্টির নতুন সৃষ্ট সূত্রদুটিতে ছাঁচের বেসের অনুক্রম অনুসারে সম্পূরক বেসগুলো বিন্যস্ত হতে থাকে । অতঃপর ছাঁচের ও নতুন সৃষ্ট সম্পূরক বেসের মধ্যে পুনরায় হাইড্রোজেন বন্ডের আবির্ভাব হলে একটি DNA অণু থেকে দুটি DNA অণুর সৃষ্টি হয় ।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় DNA এর অনুলিপন সম্পন্ন হয় যা সাগরের প্রশ্নের উত্তর শিক্ষক আলোচনা করেছিলেন ।
ঘ. উদ্দীপকের বংশগতি বস্তুঅর্থাৎ DNA টেস্ট ন্যায়বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
প্রচলিত সাক্ষ্যপ্রমাণ ও প্রত্যক্ষদর্শী নির্ভর বিচার ব্যবহার পাশাপাশি সুবিচার পাবার এক নতুন উপায় ডিএনএ টেস্ট। ডিএনএ টেস্টের বিজ্ঞানভিত্তিক এক ব্যবহারিক পদ্ধতি হলো ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং। ডিএনএ টেস্ট সুসম্পন্ন করার জন্য জৈবিক নমুনা যেমন : ব্যক্তির হাড়, দাঁত, চুল, রক্ত, লালা, বীর্য, টিস্যু ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরাধস্থল বা অপরাধের শিকার এমন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত জৈবিক নমুনার ডিএনএ নকশাকে তুলনা করা হয়, সন্দেহভাজনের কাছ থেকে নেয়া রক্ত বা জৈবিক নমুনার ডিএনএ নকশার সাথে।
অপরাধস্থল থেকে প্রাপ্ত নমুনার সাথে সন্দেহভাজন নমুনার মিল ও অমিল চিহ্নিত করে তুলনা করা হয় । এভাবে DNA টেস্টের মাধ্যমে ন্যায়বিচার সম্ভব হচ্ছে। কারণ, এভাবে প্রাপ্ত ফলাফল প্রায় শতভাগ নিশ্চিত ও নির্ভুল। অন্য কোনো পদ্ধতিতে অপরাধী শনাক্তকরণে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও DNA টেস্টে তা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হওয়া যায়।
অতএব উপরিউক্ত আলোচনা বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ন্যায়বিচারে বংশগতির বস্তু্র DNA টেস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।