এসএসসি-পদার্থ বিজ্ঞান-তৃতীয় অধ্যায়-বল-নোট

এসএসসি পদার্থ বিজ্ঞান সাজেশন

তৃতীয় অধ্যায়

বল

Force

পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি

প্রশ্নঃ জড়তা কাকে বলে? কত প্রকার কিকি?

উত্তর: জড়তা(Inertia): বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে জড়তা বলে।

পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

কোনাে বস্তুর জড়তা এর ভরের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ ভর হচ্ছে জড়তার পরিমাপ যেমন : টেবিলের উপর একখানা বই রাখলে বইটি সারাজীবন টেবিলের উপর পড়ে থাকবে যদি কেউ বইটি না সরায় বা সরাতে চেষ্টা না করে।

জড়তা দুই প্রকার-

১. স্থিতি জড়তা

২. গতি জড়তা।

প্রশ্নঃ স্থিতি জড়তা গতি জড়তা কাকে বলে? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: স্থিতি জড়তা: স্থিতিশীল বস্তুর চিরকাল স্থির থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা স্থিতি বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে স্থিতি জড়তা বলে।

বাংলা দ্বিতীয় বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

উদাহরণ- থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন স্থিতি জড়তার কারণে। বাস যখন থেমে থাকে তখন যাত্রীর শরীরও স্থির থাকে। কিন্তু হঠাৎ বাস চলতে শুরু করলে যাত্রীদের শরীরের বাস সংলগ্ন অংশ গতিশীল হয় কিন্তু শরীরের উপরের অংশ স্থিতি জড়তার জন্য স্থির অবস্থায় থাকতে চায় তাই শরীরের নিচের অংশ থেকে উপরের অংশ থেকে পিছিয়ে পড়ে। ফলে যাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন।

গতি জড়তা: গতিশীল বস্তুর চিকাল সমবেগে গতিশীল থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা একই গতি অক্ষুন্ন রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে গতি জড়তা বলে।

উদাহরণ- চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। চলন্ত অবস্থায় বাসের সাথে যাত্রীও একই গতিপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু বাস হঠাৎ থেমে গেলে বাসের সাথে সাথে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ স্থির হয় কিন্তু শরীরের উপরের অংশ গতি জড়তার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ঠিক একই কারণে চলন্ত বাস থেকে হঠাৎ নামার সময় যাত্রী সামনের দিকে পড়ে যেতে চান।

প্রশ্নঃ নিউটনের গতি বিষয়ক সূত্রগুলি বিবৃত কর।

উত্তর: ১৬৮৭ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটন তার অমর গ্রন্থ “ফিলােসােফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেকিটা” তে বস্তুর ভর, গতি ও বলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে তিনটি সূত্র প্রকাশ করেন। এ তিনটি সূত্র নিউটনের গতি বিষয়ক সূত্র নামে পরিচিত।

প্রথম সূত্র: ‘বাহ্যিক কোনাে বল প্রয়ােগ না করলে স্থির বস্তু স্থিরই থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সুষম দ্রুতিতে সরলপথে চলতে থাকবে।’

দ্বিতীয় সূত্র: ‘বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার এর ওপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকে ঘটে।’

তৃতীয় সূত্র: ‘প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।’

প্রশ্নঃ বল কাকে বলে? বলের একক মাত্রা লিখ।

উত্তর: বল (Force) : যা স্থির বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করতে চায় বা যা গতিশীল বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায় তাকে বল বলে। বলকে F দ্বারা সূচিত করা হয়।

বল একটি ভেক্টর বা দিক রাশি। কারণ এর মান ও দিক উভয়ই আছে।

বল = ভর x ত্বরন

.:. F = ma

বলের একক : kgms-2। একে নিউটন (N) বলা হয়।

বলের মাত্রা : [F] = [MLT-2]

বলের মাত্রা হল- ভর X ত্বরণ – এর মাত্রা

নিউটন: যে পরিমাণ বল 1kg ভরের কোন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে 1ms-2 ত্বরন সৃষ্টি করতে পারে তাকে নিউটন (1N) বল বলে।

প্রশ্নঃ মৌলিক বল কাকে বলে? মহাবিশ্বে কী কী মৌলিক বল পরিলক্ষিত হয়?

উত্তর: মৌলিক বল: যেসব বল মূল বা স্বাধীন অর্থাৎ যেসব বল অন্য কোনাে বল থেকে উৎপন্ন হয় না বা অন্য কোনাে বলের কোনাে রূপ নয়। বরং অন্যান্য বল এসব কোনাে না কোনাে রূপের প্রকাশ তাদেরকে মৌলিক বল বলে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রকৃতিতে বিদ্যমান চারটি মৌলিক বল নিম্নরূপ:

১. মহাকর্ষ বল: মহাবিশ্বের যে কোনাে দুটি বস্তুর মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ বলে। বস্তুর ভরের কারণেই এই আকর্ষণঘটে। চারটি মৌলিক বলের মধ্যে মহাকর্ষ হচ্ছে তুলনামূলকভাবে দুর্বলতম বল।

. তড়িতচুম্বকীয় বল: দুটি আহিত কণা বা বস্তু তাদের আধানের কারণে একে অপরের উপর যে বল প্রয়ােগ করে তাকে তাড়িতচৌম্বক বল বলে। এটি মহাকর্ষ বল অপেক্ষা অনেক শক্তিশালী।

. দুর্বল নিউক্লীয় বল: যে স্বল্প পাল্লার এবং স্বল্প মানের বল নিউক্লীয়াসের অভ্যন্তরস্থ মৌলিক কণাগুলাের মধ্যে ক্রিয়া করে তাকেদুর্বলনিউক্লীয় বল বলে।

এই বলের কারণেই নিউক্লীয়াসে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয় এবং নিউক্লীয়াস হতে বিটাক্ষয় (β) হয় ।

এটি তড়িতচুম্বকীয় বল অপেক্ষা দুর্বল, মহাকর্ষ বল হতে শক্তিশালী। এ বলের পাল্লা 10-16m -এর কম।

. সবল নিউক্লীয় বল: পরমাণুর নিউক্লীয়াসের ভিতরে দুটি নিউক্লীয়নের (প্রােটন ও নিউট্রনের) মধ্যে যে শক্তিশালী বল কাজ করে তাকে সবল নিউক্লীয় বল বলে। এ বল নিউকীয়নগুলােকে একত্রে আবদ্ধ রাখে। এর পাল্লা 10-15m যা নিউক্লীয়াসের ব্যাসার্ধের সমান। মৌলিক বলগুলাের মধ্যে এ বলই সবচেয়ে শক্তিশালী।

প্রশ্নঃ বলের প্রকৃতি বর্ণনা কর।

উত্তর : স্পর্শ বল : যে বল সৃষ্টির জন্য দুইটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়ােজন তাকে স্পর্শ বল বলে। স্পর্শ বলের উদাহরণ হলাে ঘর্ষণ বল, টান বল এবং সংঘর্ষের সময় সৃষ্ট বল।

যেমন : মেঝের উপর দিয়ে একটি বাক্স টেনে নেওয়ার সময় আমরা টান বল প্রয়ােগ করি। বাক্সের গতির বিপরীত দিকে তখন ঘর্ষণ বলের সৃষ্টি হয়।

অস্পর্শ বল : দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ স্পর্শ ছাড়াই যে বল ক্রিয়া করে তাকে অস্পর্শ বল বলে।

যেমন : দুটি বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণমূলক মহাকর্ষ বল, দুটি আহ্নিক বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বা বিকর্ষণকারী তড়িৎ বল, দুটি চুম্বকের মেরুর মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণমূলক বল অথবা চুম্বক ও একটি চৌম্বক পদার্থের মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বলগুলাে অস্পর্শ বল তথা দূরবর্তী বলের উদাহরণ।

সাম্য বল (Balanced force) : কোনাে বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য হয় তবে সেই বলগুলােকে সাম্য বল বলে।

অসাম্য বল (Unbalanced force): যে বল বা বলসমূহের প্রয়ােগের ফলে বস্তু সাম্যাবস্থায় না থেকে এর উপর একটি লব্ধিবল ক্রিয়া করে তবে ঐ বল বা বলসমূহকে অসাম্য বল বলে।

প্রশ্নঃ ঘর্ষণ কাকে বলে? বিভিন্ন প্রকার ঘর্ষণের বর্ণনা দাও।

উত্তর: ঘর্ষণ: দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থেকে যদি একের উপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে অথবা চলতে থাকে তাহলে বস্তদ্বয়ের স্পর্শতলে এ গতির বিরুদ্ধে যে বাধার উৎপত্তি হয়তাকে ঘর্ষণবলে। আর এ বাধার ফলে যে বল উৎপন্ন হয় তাকে ঘর্ষণ বল বলে।

অর্থাৎ পরস্পরে সংস্পর্শে থাকা দুটি বস্তুর মধ্যে গতির বিপরীতে যে বল কাজ করে তাকে ঘর্ষণ বল বলে। ঘর্ষণ সাধারণত চার প্রকারের হয়-

. স্থিতি ঘর্ষণ: দুটি তলের একটি অপরটির সাপেক্ষে গতিশীল না হলে এদের মধ্যে যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয় তা হলাে স্থিতি ঘর্ষণ। যেমন-হাঁটার সময় পা ও মাটির মাঝের ঘর্ষণ।

. পিছলানাে ঘর্ষণ: যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর তথা তলের উপর দিয়ে পিছলিয়ে বা ঘষে চলতে চেষ্টা করে বা চলে তখন যে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয় তাকে পিছলানাে ঘর্ষণ বা বিসর্প ঘর্ষণ বলে। যেমন-পিছলিয় পড়ার সময় ঘর্ষণ।

. আবর্ত ঘর্ষণ: যখন একটি বস্তু অপর একটি তলের উপর দিয়ে গড়িয়ে চলে তখন গতির বিরুদ্ধে যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে আবর্ত ঘর্ষণ বলে। যেমন- গাড়ির চাকা ও মাটির মধ্যকার ঘর্ষণ।

. প্রবাহী ঘর্ষণ: যখন কোনাে বস্তু যে কোনাে প্রবাহী পদার্থ যেমন-তরল বা বায়বীয় পদার্থের মধ্যে গতিশীল থাকে তখন যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে প্রবাহী ঘর্ষণ বলে। যেমন- বাতাসের মধ্য দিয়ে পড়ন্ত বস্তুর ঘর্ষণ।

প্রশ্নঃ ঘর্ষণ বল কেন উৎপন্ন হয়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর উপর দিয়ে গতিশীল হয় তখন উভয় বস্তুর স্পর্শতলে বিদ্যমান ছােট ছােট খাঁজ একটির ভিতর আরেকটি ঢুকে যায়। যার ফলে একটি তলের উপর দিয়ে অপর তলের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এভাবে বস্তুদ্বয়ের মধ্যে ঘর্ষণ বলের উৎপত্তি হয়।

প্রশ্নঃ দৈনন্দিন জীবনে ঘর্ষণের প্রভাব বর্ণনা কর।

উত্তর: দৈনন্দিনজীবনে ঘর্ষনের প্রভাব নিচে দেওয়া হলাে:

ঘর্ষনের সুবিধা:

i. ঘর্ষণ থাকার ফলে আমরা হাঁটা-চলা করতে পারি, পিছলে যাই না।

ii. ঘর্ষণের কারণে গাড়ির চাকা ঘুরে এবং সামনে বা পিছনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

iii. ঘর্ষণ থাকার ফলে গাড়ি থামানাে যায়।

iv. ঘর্ষণের ফলে দেওয়ালে মই লাগানাে যায় ।

v. ঘর্ষণ থাকার ফলে আমরা হাত দিয়ে কোনাে কিছু ধরে রাখতে পারি।

vi. ঘর্ষণের ফলে কাঠ বা দেওয়ালে পেরেক বা ফ্লু আটকানাে যায়।

vii. ঘর্ষণের কারণে দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানাে যায়।

পদার্থ বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

viii. ঘর্ষণের কারণে কোনাে কিছু বাধা যায়।

ix. ঘর্ষণের কারণে কাঁচি বা ছুরিতে ধার দিতে পারি।

ঘর্ষণের অসুবিধা: ঘর্ষণের ফলে অনেক অসুবিধা হয়। যেসব অসুবিধা হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলাে:

i. যন্ত্রগুলাে চলার সময় গতিশীল অংশগুলাের মধ্যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করার ফলে ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

ii. ঘর্ষণের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় বলে যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

iii. ঘর্ষণের ফলে যান্ত্রিক দক্ষতা হ্রাস পায়।

iv. গাড়ি চালাতে বেশি জ্বালানি খরচ হয়।

v. শক্তির অপচয় হয়।

vi. গতি হ্রাস পায়।

vii. সময়ের অপচয় হয়।

viii. বিভিন্ন বস্তু ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বলে অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ত হই।

প্রশ্নঃ ঘর্ষণ কমানাের উপায়গুলি লিখ।

উত্তরঃ ঘর্ষণ হ্রাস করার উপায়-

i. তলকে যথাসম্ভব মসৃণ করে।

ii. পিচ্ছিলকারক পদার্থ ব্যবহার করে।

iii. বল-বেয়ারিং বা রােলার বিয়ারিং ব্যবহার করে।

iv. স্পর্শতলে মােম লাগিয়ে ঘর্ষণ কমানাে যায়।

v. সংকর ধাতু ব্যবহার করে ঘর্ষণ কমানাে যায়।

প্রশ্নঃ গতির উপর বলের প্রভাবগুলি লিখ।

উত্তর: গতির ওপর বলের প্রভাবগুলি হলাে:

i. প্রযুক্ত বল গতিশীল বস্তুর বেগ বৃদ্ধি করতে পারে ।

ii. বল প্রয়ােগের ফলে গতিশীল বস্তুর বেগ হাস পেতে পারে ।

iii. প্রযুক্ত বল কোনাে গতিশীল বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন করতে পারে ।

প্রশ্নঃ নিউটনের প্রথম সূত্রটি পদার্থের জড়তা ধর্মকে প্রকাশ করে এবং বলের সংজ্ঞা প্রদান করেব্যাখ্যা কর।

উত্তর: নিউটনের প্রথম সূত্রটি পদার্থের জড়তা ধর্মকে প্রকাশ করে এবং বলের সংজ্ঞা প্রদান করে। এজন্য নিউটনের প্রথম সূত্রকে কখনাে কখনাে জড়তার সূত্রও বলা হয়।

রসায়ন চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে দেখতে পাই যে, কোনাে বস্তু নিজে থেকে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। বস্ত স্থির থাকলে চিরকাল স্থির থাকতে চায়, আর গতিশীল থাকলে চিরকাল সুষম দ্রুতিতে সরলপথে চলতে চায়।

অর্থাৎ নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে জড়তার ধারণা পাওয়া যায়। আবার, নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে জানা যায় যে, বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হলে বাইরে থেকে একটা কিছু প্রয়ােগ করতে হবে। অর্থাৎ যা বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন করতে বাধ্য করে বা করতে চায় তাই হচ্ছে বল।

তাই নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে বলের গুণগত সংজ্ঞা পাওয়া যায়। নিউটনের প্রথম সূত্রানুসারে যা স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করার চেষ্টা করে বা যা গতিশীল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে তাকে বল বলে।

প্রশ্নঃ নিউটনের দ্বিতীয়সূত্র হতে প্রথমসূত্রের প্রতিপাদন কর।

উত্তর: নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা প্রথম সূত্র প্রতিপাদন করতে পারি। দ্বিতীয় সূত্র থেকে আমরা জানি যে,

বা, m (v- u) = Ft এখন যদি বাইরে থেকে বল প্রযুক্ত না হয়, অর্থাৎ F = 0 হয়, তাহলে উপরিউক্ত সমীকরণ থেকে m (v – u) = 0

যেহেতু বস্তুর ভর m শূন্য হতে পারে না,

তাহলে, v – u = 0 

.:. v = u  

 সুতরাং বাইরে থেকে বস্তুর ওপর কোনাে বল প্রযুক্ত না হলে, বস্তুর বেগের কোনাে পরিবর্তন হয় না।

যদি u = 0 হয় তাহলে v = 0 হবে অর্থাৎ, বস্তু স্থিরই থাকবে।

আর যদি u = 0 না হয়, তাহলে u এর মান t সময় জুড়ে যা থাকবে v এরও সেই একই মান থাকবে অর্থাৎ, বস্তুটি সুষম বেগে চলতে থাকবে।

সুতরাং বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে আর গতিশীল বস্তু সুষম বেগে চলতে থাকবে।

এটিই নিউটনের গতি সম্পর্কিত প্রথম সূত্র।

ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ ভরবেগ কাকে বলে? এর একক মাত্রালিখ।

উত্তর: ভরবেগ (Momentum): বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলকে ভরবেগ বলা হয়।

ভরবেগ ভেক্টররাশি, এর দিক বেগের দিকে। ইহাকে p দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

কোনাে বস্তুর ভর m এবং বেগ v হলে, ভরবেগ p = mv.

ভরবেগের একক : kg ms-1

ভরবেগের মাত্রা : [p] = [MLT-1]

মাত্রা: ভরবেগের মাত্রা হল- ভর X বেগ এর মাত্রা অর্থাৎ, ভরবেগ = ভর X বেগ = MLT-1

.:. [p] = [MLT-1]

একক : ভরবেগের একক হবে ভরের একক x বেগের একক = kgms-1

অর্থাৎ, 1kg ভরের কোনাে বস্তু 1ms-1 বেগে চললে এর ভরবেগ হবে 1kgms-1

প্রশ্নঃ কোনাে বস্তুর ভরবেগ 500 kgms-1 বলতে কী বুঝ?

উত্তর: কোন বস্তুর ভরবেগ 500 kgms-1 বলতে বুঝায়:

i. 1kg ভরের বস্তুর বেগ 500ms-1 বা

ii. 500 kg ভরের বস্তুর বেগ 1ms-1.

প্রশ্ন: সাম্য অসাম্য বলে কাকে বলে? এদের মধ্যে তিনটি পার্থক্য লিখ।

উত্তর: সাম্য বল: যখন দুই বা ততােধিক বল কোনাে বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে এবং তাদের লব্ধি বলের মান শূন্য হয় তখন সেই বলগুলােকে সাম্য বল বলা হয়। অর্থাৎ একাধিক বল কাজ করলেও কোন বস্তুর বেগের পরিবর্তন না হলে সেই বলগুলাে সাম্য বল। যেমন-টেবিলের উপর রাখা বই এর উপর মহাকর্ষ বল এবং টেবিলের প্রতিক্রিয়া বল।

ভূগোল ও পরিবেশ দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন

অসাম্য বল: যদি কোনাে বস্তুর ওপর ক্রিয়াশীল লব্ধি বলের মান শূন্য না হয় তখন ক্রিয়ারত বলগুলােকে অসাম্য বল বলে। অর্থাৎ একাধিক বল কাজ রার কারণে বস্তুর বেগের পরিবর্তন হলে তারা অসাম্য বল। যেমন-পানির উপর বই রাখার চেষ্টা করার সময় বইয়ের ওজন ও পানির প্রতিক্রিয়া বল। সাম্য ও অসাম্য বলের মধ্যে তিনটি পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলাে:

সাম্য বলঅসাম্য বল
১. যে বলগুলাে কোনাে বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে সাম্যবস্থার সৃষ্টি করে তাকে সাম্য বল বলে।১. যে বলগুলাে কোনাে বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে সাম্যবস্থার সৃষ্টি করে না তকে অসাম্য বল বলে।
২. এক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল বলগুলাের লব্ধি শূন্য।২. এক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল বলগুলাের লব্ধি শূন্য হয় না।
৩. সাম্য বলের জন্য বস্তুর কোনাে ত্বরণ হয় না।৩. অসাম্য বলের জন্য বস্তুর ত্বরণ সৃষ্টি হয়।

প্রশ্নঃ দেখাও যে বল = ভর X ত্বরণ বা F = ma.

উত্তর: ধরা যাক, একটি বস্তুর আদিবেগ ছিলাে u এবং t সময় পর সেই বেগ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে v,

কাজেই ভরবেগের পরিবর্তন হচ্ছে mv – mu

কাজেই ভরবেগের পরিবর্তনের হার: (mv – mu)/t বা, m(v – u)/t

আবার, ত্বরণ, a = (v – u)/t

.:. ভরবেগের পরিবর্তনের হার = ma

সুতরাং প্রয়ােগ করা বল যদি F হয় তাহলে,

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুসারে, ma∞F

.:. F = Kma [এখানে, K = সমানুপাতিক ধ্রুবক]।

এখন বলের একক নির্ধারনের জন্য K = 1 ধরা হয়।

অতএব, আমরা পাই, F = ma

অর্থাৎ বল = ভর X ত্বরণ।

অথবা, ধরা যাক, m ভর বিশিষ্ট কোনাে বস্তু u আদিবেগ নিয়ে চলছে। এখন F সমবল বস্তুর ওপর t সময় ধরে বেগের অভিমুখে ক্রিয়া করলে, যতক্ষণ বল ক্রিয়াশীল থাকবে ততক্ষণ বস্তুর বেগ একই হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

ধরা যাক t সময় পর বস্তুর বেগ হলাে v।

.:. বস্তুটির আদি ভরবেগ = mu এবং বস্তুটির শেষ ভর বেগ = mv

.:.t সময়ে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন = mv – mu

সুতরাং ভরবেগের পরিবর্তনের হার = m(v – u)t = ma  [.:. ত্বরণ, a = (v – u)/t ]

আবার, নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্রানুসারে, বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক অর্থাৎ, ma∞F

বা, ma=KF……… (1) এখানে Kএকটি সমানুপাতিক ধ্রুবক।

এর মান বলের এককের ওপর নির্ভর করে। এ সমীকরণ থেকে বলের এককের সংজ্ঞা দেওয়া হয়। বলের এ একককে বলা হয় নিউটন (N)। এ এককের সংজ্ঞা এমনভাবে দেওয়া হয় যাতে K = 1 হয়।

যখন m=1kg, a=1ms-2

তখন F=1N ধরা হয়, ফলে (1) নং সমীকরণে

1×1= Kx1 বা, K=1 হয়।

সুতরাং যে পরিমাণ বল 1kg ভরের কোনাে বস্তুর ওপর প্রযুক্ত হয়ে 1ms-2 ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে 1 নিউটন (N) বলে।

ভর m কে kg, ত্বরণ a কে ms-2 এবং বল F কে N-এ প্রকাশ করলে সমীকরণ (1) দাঁড়ায়

F = ma

.:. বল = ভর x ত্বরণ।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ ঘর্ষণ একটি প্রয়ােজনীয় উপদ্রবএর স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর: ঘর্ষণের অনেক খারাপ দিক থাকা সত্ত্বেও ঘর্ষণকে একটি প্রয়ােজনীয় উপদ্রব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কেননা ঘর্ষণ ছাড়া আমরা কোনাে কিছুই করতে পারি না। যদি ঘর্ষণ না থাকতাে তবে বস্তুর কোনাে গতিই আর শেষ হতাে না, বিরামহীনভাবে চলতে থাকতাে। ঘর্ষণ আছে বলেই দেয়ালে একটি পেরেক স্থিরভাবে আটকে থাকে। ঘর্ষণের কারণেই পাকা দালান ও বাড়ীঘর নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। ঘর্ষণের ফলে কাগজে পেনসিল বা কলম দিয়ে লিখা যায়। আমাদের জুতা এবং মাটির মধ্যে সৃষ্ট ঘর্ষণের কারণে আমরা হাঁটা-চলা করতে পারি। ঘর্ষণের জন্য আমরা প্রয়ােজন অনুযায়ী গাড়ির দিক পরিবর্তন করতে পারি। এতসব উপকারী দিক থাকা সত্ত্বেও ঘর্ষণের ফলে প্রচুর শক্তি খরচ হয়ে যায়।

দেখা যাচ্ছে, ঘর্ষণ প্রয়ােজনীয় কিন্তু শক্তি ক্ষয়ের কারণে এটাকে উপদ্রব বলি।

প্রশ্নঃ ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রটি লিখ এবং প্রতিপাদন কর। বা, প্রত্যেক ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়া ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র মেনে চলেউক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তর: ‘একাধিক বস্তুর মধ্যে শুধু ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া ছাড়া অন্য কোনাে বল কাজ না করলে কোনাে নির্দিষ্ট দিকে তাদের মােট ভরবেগের কোনাে পরিবর্তন হয় না।’

ধরি, m1 ও m2 ভরের দুটি বস্তুর সংঘর্ষের পূর্বে বেগ যথাক্রমে u1 ও u2 এবং সংঘর্ষের পরে বগে যথাক্রমে v1 ও v2

ভরবেগের সংরক্ষণনীতি অনুসারে, m1u1+ m2u2 = m1v1+ m2v2

প্রশ্নঃ দেখাও যে, বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ ভরবেগের সংরক্ষণশীল সূত্রকে সমর্থন করে।

উত্তর: বন্দুকের পশ্চাৎবেগ ভরবেগের সংরক্ষণশীল সূত্রকে সমর্থন করে তা ব্যাখ্যা করা হলাে:

বন্দুকের পশ্চাৎ গতি : গুলি ছোড়ার পর বন্দুকের পেছনের দিকে সরে আসতে দেখা যায়। ভরবেগরে সংরক্ষণ সূত্র থেকে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। গুলি ছোড়ার পূর্বে বন্দুক ও গুলি উভয়ের বেগ শূন্য থাকে কাজেই তখন তাদের ভরবেগের সমষ্টি শূন্য। গুলি ছােরার পর সামনের দিকে গুলির কিছু ভরবেগ উৎপন্ন হয়। ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রানুযায়ী গুলি ছোড়ার আগের ভরবেগের সমষ্টি পরের ভরবেগের সমষ্টির সমান হতে হবে। সুতরাং গুলি ছোড়ার পরের ভরবেগের সমষ্টি সমান হতে হলে অর্থাৎ, শূন্য হতে হলে বন্দুকের গুলির সমান ও বিপরীতমুখী একটা ভরবেগের সৃষ্টি হতে হবে বন্দুককেও পেছনের দিকে আসতে দেখা যায়।

ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

ধরা যাক, M ভরের বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার পর m ভরের গুলিটি v বেগে বেরিয়ে যাচ্ছে। ধরা যাক, বন্দুকটির বেগ V। গুলি ছোড়ার আগে বন্দুক ও গুলির ভরবেগের সমষ্টি শূন্য। গুলি ছোড়ার পরে বন্দুক ও গুলির মােট ভরবেগ হবে MV + mv।

ভরবেগের নিত্যতার সূত্রানুসারে MV + mv = 0

সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, বন্দুক ও গুলির বেগ পরস্পর বিপরীতমুখী। অর্থাৎ, গুলি ছোঁড়া হলে বন্দুকের পশ্চাৎ বেগের মান হবে ।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন. জড়তা কাকে বলে?

উত্তর : বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে জড়তা বলে।

প্রশ্ন. তাড়িত চৌম্বক বল কী?

উত্তর: পরস্পরের সাপেক্ষে স্থির বা গতিশীল দুটি তড়িৎ চার্জ, অথবা চুম্বকের দুই মেরু অথবা একটি চুম্বক এবং একটি গতিশীল তড়িৎ চার্জের মধ্যে ক্রিয়াশীল অস্পর্শ বলই তড়িত চৌম্বক বল।

প্রশ্ন. বলের সংজ্ঞা দাও।

উত্তর: যার প্রয়ােগের কারণে স্থির বস্তু চলতে শুরু করে আর সমবেগে চলতে থাকা বস্তুর বেগের পরিবর্তন হয় সেটাই হচ্ছে বল।

প্রশ্ন. সাম্য বল কাকে বলে?

উত্তর: যে সব বলের কারণে সাম্যাবস্থা সৃষ্টি হয় তাদেরকে সাম্যবল বলে।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন. ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র কী?

উত্তর: ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র : “যখন কোনাে ব্যবস্থার উপর প্রযুক্ত নিট বাহ্যিকবল শূন্য হয়, তখন ব্যবস্থাটির মােট ভরবেগ সংরক্ষিত থাকে।”

প্রশ্ন-৬. নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্রটি বিবৃত করাে ।

উত্তর: “কোনাে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকে ঘটে ।

প্রশ্ন. মহাকর্ষ বল কি?

উত্তর: মহাবিশ্বের যে কোনাে দুটি বস্তুর মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ বল বলে।

প্রশ্ন. ওজনহীনতা কী?

উত্তর: কোনাে বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণ বল না থাকা অথবা থাকলেও প্রয়ােজনীয় প্রতিক্রিয়ার অভাবে তা অনুভূত না হওয়াকে ওজনহীনতা বলে।

প্রশ্ন. ঘর্ষণ কাকে বলে?

উত্তর: একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের উপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে একটি বাধার উৎপত্তি হয়, এ বাধাকে ঘর্ষণ বলে।

জীববিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন১০. স্পর্শ বল কাকে বলে?

উত্তর: যে বল সৃষ্টির জন্য দুইটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়ােজন হয় তাকে স্পর্শ বল বলে।

প্রশ্ন১১. স্থিতি ঘর্ষণ কী?

উত্তর: দুটো বস্তু একে অন্যের সাপেক্ষে স্থির থাকা অবস্থায় যে ঘর্ষণ বল থাকে, সেটা হচ্ছে স্থিতি ঘর্ষণ বল।

প্রশ্ন১২. প্রবাহী ঘর্ষণ কী?

উত্তর: যখন কোনাে বস্তু তরল বা বায়বীয় পদার্থ এর ভেতর দিয়ে যায় তখন এর গতির বিপরীতে যে ঘর্ষণ বল অনুভূত হয়, তাকে প্রবাহী ঘর্ষণ বলে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসযাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন কেন?

উত্তর : থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসযাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন স্থিতি জড়তার জন্য। বাস যখন থেমে থাকে তখন যাত্রীর শরীরও স্থির থাকে। কিন্তু বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীর শরীরের বাস সংলগ্ন অংশ গতিশীল হয়। কিন্তু শরীরের উপরের অংশ স্থিতি জড়তার জন্য স্থির থাকতে চায়। তাই শরীরের নিচের অংশ থেকে উপরের অংশ পিছিয়ে পড়ে। ফলে যাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়ে।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন ২॥ চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন কেন?

উত্তর : চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন গতি জড়তার জন্য। চলন্ত অবস্থায় বাসের সাথে যাত্রীরাও একই গতি প্রাপ্ত হয়। কিন্তু বাস হঠাৎ থেমে গেলে বাসের সাথে সাথে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ স্থির হয়। কিন্তু শরীরের উপরের অংশ গতি জড়তার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ফলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

প্রশ্ন ৩॥ জড়তা সম্পর্কে তােমার ধারণা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : পদার্থ যে অবস্থায় আছে চিরকাল সেই অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সেই অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে জড়তা বলে। প্রত্যেক বস্তু যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় থাকতে চায় অর্থাৎ বস্তু স্থির থাকলে স্থির আর গতিশীল থাকলে গতিশীল থাকতে চায়। বস্তুর এ স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হলে বল প্রয়ােগ করতে হয়।

প্রশ্ন জড়তা বস্তুর ভরের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বাহ্যিক বল প্রয়ােগ না করলে স্থির বস্তুর অবস্থায় এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিকে একই দিকে চলতে চাওয়ার ধর্মকে জড়তা বলে। জড়তা দু’প্রকার স্থিতি জড়তা ও গতি জড়তা। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা হতে দেখতে পাই, ভারী বস্তুকে স্থির অবস্থা হতে গতিশীল করতে এবং গতিশীল অবস্থা হতে থামাতে হালকা বস্তুর চেয়ে বেশি মানের বল প্রয়ােগ করতে হয়, অর্থাৎ বেশি কষ্টসাধ্য। তাই জড়তা বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে এবং প্রকৃতপক্ষে ভর হলাে বস্তুর জড়তার পরিমাপ। উভয় প্রকার জড়তার ক্ষেত্রেই যে বস্তুর ভর যত বেশি তার জড়তা তত বেশি।

প্রশ্ন ৫॥ স্পর্শ অস্পর্শ বলের মধ্যকার পার্থক্য বর্ণনা কর।

উত্তর : যে বল সৃষ্টির জন্য দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়ােজন হয় তাকে স্পর্শ বল বলে। অপরদিকে দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ছাড়াই যে বল ক্রিয়া করে তাকে অস্পর্শর্ক বল বলে। সংজ্ঞানুসারে, অস্পর্শ বল দূর হতেই ক্রিয়া করতে পারে যেখানে স্পর্শ বলসমূহ বস্তুর উপর ক্রিয়া করার জন্য সংস্পর্শের প্রয়ােজন হয়। চার প্রকার মৌলিক বলের প্রত্যেকটি বলের প্রত্যেকটিই অস্পর্শ বল, অপরদিকে যৌগিক বা কৃত্রিম বলসমূহের বেশির ভাগই স্পর্শ বল।।

প্রশ্ন বলের মাত্রা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আমরা জানি বল, F = ভর x ত্বরণ

= ভর X বেগ/সময়

= ভর X দূরত্ব/ সময়

= M x L/ T2

= MLT-2

বলের মাত্রা সমীকরণ, [F] = [MLT-2]

প্রশ্ন যখন কোনাে খেলােয়াড় স্থির ফুটবলকে কি করেন তখন কী ঘটে?

উত্তর : যখন কোনাে খেলােয়াড় স্থির ফুটবলকে কি করেন তখন গতিশীল হয়। আমরা দেখতে পাই, বলটি স্থির অবস্থা থেকে যেদিকে বলটিকে কি করা হয়েছে সেদিকে গতিশীল হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বলটি স্থির অবস্থা থেকে তুরণ লাভ করে। এক্ষেত্রে সৃষ্ট ত্বরণের মান ধনাত্মক এবং ত্বরণের দিক হলাে কিকের মাধ্যমে যেদিকে বল প্রয়ােগ করা হয় সেদিকে। সুতরাং প্রযুক্ত বল কোনাে স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে পারে।

রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন প্রযুক্ত বল কোনাে গতিশীল বস্তুর বেগের তথা গতির দিক পরিবর্তন করতে পারেব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ক্রিকেট খেলায় একজন খেলােয়াড় বিপরীত দিক থেকে আগত ক্রিকেট বলকে ব্যাট দ্বারা আঘাত করেন। ব্যাট দ্বারা আঘাতের ফলে বলটির বেগের মান ও দিক উভয়েই পরিবর্তিত হয়। যেদিক থেকে বলটি আসছিল ব্যাট দ্বারা আঘাতের ফলে এটি অন্য কোনাে দিকে গতিশীল হয়। এক্ষেত্রেও ত্বরণ রয়েছে।

প্রশ্ন বল কীভাবে বস্তুর আকারের ওপর প্রভাব ফেলে বর্ণনা কর।

উত্তর : বলের ক্রিয়ায় অনেক সময় বস্তুতে গতির সৃষ্টি না হয়ে এর আকারের পরিবর্তন হয়। একটি খালি প্লাস্টিকের পানির বােতল চেপে ধরলে বােতলের আকারের পরিবর্তন হয়। আবার যখন কোনাে রাবার ব্যান্ডকে টেনে প্রসারিত করা হয় তখন এটি সরু হয়ে যায় অর্থাৎ এর আকারের পরিবর্তন হয়। কখনাে কখনাে বলের ক্রিয়ায় বস্তুর এই আকার পরিবর্তন ক্ষণস্থায়ী হয়। আবার কখনাে বল প্রয়ােগের ফলে স্থায়ীভাবে বস্তুর আকারের পরিবর্তন সংঘটিত হয়। উদাহরণ হিসেবে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধাতব ক্যান অথবা দুর্ঘটনার পরে কোনাে গাড়ির ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিবর্তন ঘটে।

প্রশ্ন ১০ ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া সমান হওয়া সত্ত্বেও স্থির বস্তুতে কেন গতির সৃষ্টি হয়ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : নিউটনের তৃতীয় সূত্রানুসারে ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া বল সমান ও বিপরীতমুখী। এদের লব্ধি শূন্য হতাে যদি এরা একই বস্তুর উপর ক্রিয়া করত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল দুটি ভিন্ন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে, অর্থাৎ একটি বস্তুর উপর একটিমাত্র বল ক্রিয়া করে। এক্ষেত্রে ওই বস্তুতে তৃতীয় কোনাে বল প্রযুক্ত না হলে তাতে গতির পরিবর্তন তথা ত্বরণ সৃষ্টি হতে বাধ্য।

প্রশ্ন ১১ গাতির উপর ঘর্ষণের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কোনাে বস্তুর গতির উপর ঘর্ষণের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ঘর্ষণ হলাে এক ধরনের বাধাদানকারী বল, যা বস্তুর গতিকে মন্থর করে। ঘর্ষণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করলেও চলাচল ও যানবাহন চালনার জন্য ঘর্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাস্তা ও টায়ারের পৃষ্ঠ প্রয়ােজনমতাে অমসৃণ করা হয় যাতে গাড়ি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। গতি নিয়ন্ত্রণে যে ব্রেক ব্যবহার করা হয় তা ঘর্ষণের নীতির উপর কাজ করে।

প্রশ্ন ১২ কোন ক্ষেত্রে স্থিতি ঘর্ষণ উৎপন্ন হয়ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : দুটি তলের একটি অপরটির সাপেক্ষে গতিশীল না বলে এদের মধ্যে স্থিতি ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ যখন কোনাে একটি বস্তুর উপর বল প্রয়ােগ করা হয়, তখন যদি এ বল বস্তুর গতি সৃষ্টি করতে না পারে তাহলে স্থিতি ঘর্ষণ কাজ করে। যেমন : মেঝের উপর অবস্থিত একটি ভারী বস্তুকে টানার পরও গতিশীল না হলে যে ঘর্ষণ বল উৎপন্ন হয় এবং গতি সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এ বল কাজ করে।

প্রশ্ন ১৩ প্রবাহী ঘর্ষণ বলতে কী বােঝ?

উত্তর : যখন কোনাে তরল পদার্থ বা বায়বীয় পদার্থের গতিপথে কোনাে স্থিরবস্তু রাখা হয় বা কোনাে বস্তুকে তরল বা বায়বীয় পদার্থের মাঝ দিয়ে গতিশীল হতে হয় তখন উভয়ের মধ্যে ঘর্ষণ উৎপন্ন হয়। এ ধরনের ঘর্ষণকে প্রবাহী ঘর্ষণ বলে। সাধারণ জাহাজ পানিতে চলার সময়ে বা বৃষ্টির ফোঁটা বাতাসের মাঝ দিয়ে পড়ার সময়ে এই ধরনের ঘর্ষণের উৎপত্তি হয়।

প্রশ্ন ১৪ প্যারাসুটে কোন ধরনের ঘর্ষণ কীভাবে ব্যবহার করা হয়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : প্যারাসুট বায়ুর বাধাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। এখানে বায়ুর বাধা হলাে এক ধরনের প্রবাহী ঘর্ষণ বল যা পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিপরীতে ক্রিয়া করে। খােলা অবস্থায় প্যারাসুটের বাইরের তলের ক্ষেত্রফল অনেক বেশি হওয়ায় বায়ুর বাধার পরিমাণও বেশি হয়, ফলে আরােহীর পতনের গতি অনেক হ্রাস পায়। ফলে আরােহী ধীরে ধীরে মাটিতে নিরাপদে নেমে আসে।

বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন ১৫ চাকার ব্যবহারে কীভাবে ঘর্ষণ কমেব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আমরা জানি, বিসর্প ঘর্ষণের তুলনায় আবর্ত ঘর্ষণের মান কম। এই উদ্দেশ্যে চাকা আবিষ্কৃত হয়। বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে চাকা লাগানাে থাকে। চাকা হলাে একটি সুকৌশল আবিষ্কার। চাকার বৃত্তাকার আকৃতি ঘর্ষণকে ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনে। সুটকেসে চাকা লাগানাের ফলে ঘর্ষণের মান কমে যায় এবং এটি টানা লাগানােরফলে ঘর্ষণের মান কমে যায় এবং এটি টানা সহজতর হয়। অর্থাৎ চাকা লাগানাের ফলে আবর্ত ঘর্ষণের মান পিছলানাে ঘর্ষণের তুলনায় অনেক কমে যায়।

প্রশ্ন ১৬ বলবেয়ারিং একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার’- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বল-বেয়ারিং ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন তলের মধ্যবর্তী ঘর্ষণকে আরও কমানাে সম্ভবপর হয়েছে। বল-বেয়ারিং হলাে- ক্ষুদ্র, মসৃণ ধাতব বল। এগুলাে সাধারণত ইস্পাতের তৈরি। বল-বেয়ারিং কোনাে যন্ত্রের গতিশীল অংশগুলাে মধ্যবর্তী স্থানে বসানাে থাকে। বল-বেয়ারিংগুলাের ঘর্ষণের ফলে যন্ত্রের গতিশীল অংশগুলাের পরস্পরের সঙ্গে সরাসরি ঘর্ষণ সৃষ্টি করতে পারে না। অর্থাৎ তলগুলাে একটি অপরটির উপর দিয়ে পিছলানাের পরিবর্তে গড়িয়ে যায় এবং ঘর্ষণ কমে যায়।

প্রশ্ন ১৭ গতি নিয়ন্ত্রণে ব্রেকিং বলের কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যানবাহন চলাচলের সময় প্রয়ােজন অনুযায়ী যানবাহনের গতিকে বৃদ্ধি বা হ্রাস করতে হয়। অর্থাৎ যানবাহনের গতিকে নিয়ন্ত্রণের প্রয়ােজন পড়ে। ব্রেক হচ্ছে এমন এক ব্যবস্থা যা ঘর্ষণের পরিমাণ করে গাড়ির গতি তথা চাকার ঘূর্ণনকে প্রয়ােজন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করে। এর মাধ্যমে যানবাহনকে নির্দিষ্ট স্থানে থামানাে সম্ভবপর হয়। যখন গাড়ির চালক ব্রেক প্রয়ােগ করেন, তখন এসবেস্টসের তৈরি সু বা প্যাড চাকায় অবস্থিত ধাতব চাকতিকে ধাক্কা দেয়। প্যাড ও চাকতির মধ্যবর্তী ঘর্ষণ চাকার গতিকে কমিয়ে দেয়। ফলে গাড়ির বেগ হ্রাস পায়।

প্রশ্ন ১৮ ঘর্ষণের অপকারিতাসমূহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : অতিরিক্ত ঘর্ষণের কারণে যানবাহন সহজে চলতে পারে না। যন্ত্রপাতির গতিশীল অংশগুলাের মধ্যে ঘর্ষণের ফলে এরা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং ছিড়ে যায়। যেকোনাে ধরনের যানবাহনকে অতিরিক্ত ঘর্ষণ অতিক্রম করতে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ করতে হয়। যার দরুন ঘর্ষণের ফলে জ্বালানির শক্তির অপচয় হয় যা প্রধানত তাপশক্তিরূপে আবির্ভূত হয়। ঘর্ষণের ফলে শুধু যে শক্তি তাপে পরিণত হয় তাই নয়। এর ফলে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ অত্যধিক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যার দরুন ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ ঘর্ষণ হ্রাস করতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ঘর্ষণের মূল কারণ হলাে অমসৃণ তল। যেখানে একটির উঁচু উঁচু খাঁজ অপরটিতে আটকে গিয়ে ঘর্ষণের উৎপত্তি ঘটায়। এ জন্য ঘর্ষণ হ্রাসের উদ্দেশে তল যথাসম্ভব মসৃণ করা হয়। এ কাজে তেল, মবিল এবং গ্রিজসহ অন্যান্য পিচ্ছিলকারী পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অমসৃণ তলসমূহ যাতে দীর্ঘক্ষণ পরস্পরের সংস্পর্শে না থাকে সে উদ্দেশে চাকা এবং বল বেয়ারিং ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন ২০ একটি মাইক্রোবাস একটি ট্রাকের মধ্যে কোনটির জড়তা বেশি এবং কেন?

উত্তর: একটি মাইক্রোবাস ও একটি ট্রাকের মধ্যে ট্রাকের জড়তা বেশি। কারণ প্রত্যেক জড় পদার্থই তার নিজের স্থির বা গতিশীল অবস্থা অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করে এবং এটি বস্তুর ভরের সাথে পরিবর্তিত হয়। ভর বেশি হলে জড়তা বেশি হয়। যেহেতু একটি ট্রাকের ভর মাইক্রোবাসের চেয়ে বেশি সুতরাং ট্রাকের জড়তা বেশি হবে।

প্রশ্ন ২১ বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে থেমে যায় না কেনব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে পাখাটি বন্ধ হয় না। কারণ গতির জড়তা ধর্মের কারণে গতিশীল বস্তুটি এর গতি বজায় রাখার প্রবণতা দেখায় ফলে পাখাটি আরাে কিছু সময় পর্যন্ত ঘােরে, এবং বায়ুর বাধা ও ফ্যানের স্যাফটের ঘর্ষণের কারণে ধীরে ধীরে থেমে যায়।

প্রশ্ন ২২ রাস্তার মসৃণতায় ঘর্ষণের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: রাস্তায় যানবাহন চলাচলের জন্য টায়ার এবং রাস্তার মধ্যবর্তী ঘর্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার যানবাহনের টায়ার এবং রাস্তার মধ্যবর্তী ঘর্ষণ বলের মান টায়ারের খাজ ও রাস্তার মসৃণতার উপর নির্ভর করে। রাস্তা বেশি মসৃণ হলে যানবাহন চলাচল সহজতর এবং আরামদায়ক হয় কিন্তু ঘর্ষণ বলের পরিমাণ কমে যায়। রাস্তা বেশি মসৃণ হলে নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন- রাস্তার মসৃণতা বেশি থাকলে ব্রেক দ্বারা গাড়িকে সুনির্দিষ্ট স্থানে থামানাে সম্ভব হয় না, এর কারণ প্রয়ােজনীয় প্রতিক্রিয়া বল যােগান দিতে না পারা। আবার রাস্তা বেশি মসৃণ হলে রাস্তা প্রয়ােজনীয় ঘর্ষণ বল যােগান দিতে পারে বলে থামা অবস্থা হতে গাড়ি সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। অতএব রাস্তার মসৃণতা এমন হতে হবে যাতে রাস্তা প্রয়ােজনীয় ঘর্ষণ বলের যােগান দিতে পারে।

প্রশ্ন ২৩ দেয়ালে পেরেক ঢুকালে আটকে থাকে কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : দেয়ালে পেরেক ঢুকালে তা আটকে থাকে ঘর্ষণ বলের। কারণে। যখন পেরেককে দেওয়ালের মধ্যে ঢুকানাে হয় তখন এর বাইরের পৃষ্ঠ এবং দেয়ালের ভিতরের পৃষ্ঠের কণাগুলাের মধ্যে একটি ঘর্ষণ বলের উদ্ভব হয়। এই কারণে পেরেক দেয়ালে আটকে থাকে।

প্রশ্ন ২৪ প্যাচযুক্ত পানির কল যা ঘুরিয়ে খুলতে হয়, সাবানযুক্ত ভেজা হাতে তা ভােলা কষ্টকর কেন?

উত্তর: সাবান এক ধরনের পিচ্ছিলকারী পদার্থ। তাই সাবানযুক্ত ভেজা হাতে প্যাচযুক্ত পানির কল খুলতে গেলে পানির কল ও হাতের মধ্যকার ঘর্ষণ বল অনেকাংশে কমে যায়। এ কারণে প্যাচযুক্ত পানির কল যা ঘুরিয়ে খুলতে হয়, সাবানযুক্ত ভেজা হাতে তা খােলা কষ্টকর।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন ২৫ কাচের জানালায় বুলেট লাগলে আশেপাশের কাঁচ ফেটে যায় না কেন?

উত্তর: কাচের তৈরি জানালায় বুলেট আঘাত করলে ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায় কিন্তু আশেপাশের কাঁচ ফাটে না। ঘাত বল প্রযুক্ত হওয়ায় এমনটি ঘটে। যে বল খুব ক্ষুদ্র সময় ধরে কোন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে ভরবেগের পরিবর্তন ঘটায় কিন্তু গতিশক্তির তেমন কোন পরিবর্তন ঘটায় না তাই ঘাতবল। কোন ইটের টুকরাে দিয়ে কাচের জানালায় আঘাত করলে টুকরােটির সাথে কাঁচে ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সংগঠনের সময় যথেষ্ট হয় এবং ঐ সময়ের মধ্যে ইটের টুকরাটির গতিশক্তি কাচের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। এই শক্তির জন্যই জানালার কাঁচে চাপের অসামঞ্জস্যতার সৃষ্টি হয় এবং কাঁচ ফেটে চৌচির হয়ে যায় কিন্তু বুলেট অত্যন্ত দ্রুত গতির এবং সূক্ষাগ্র হওয়ায় কাঁচের সাথে ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সংগঠনের সময় ক্ষুদ্র হয় এবং কাচ ছিদ্র করে প্রায় অপরিবর্তিত গতিশক্তি নিয়ে বের হয়ে যায়।

প্রশ্ন ২৬ দুটি বস্তুকে একই বল প্রয়ােগ করলে বেগ সমান হয় না।ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: দুটি বস্তুকে একই বল প্রয়ােগ করলে এদের বেগ সমান হয় না। প্রযুক্ত বল ধুৰ থাকলে কোন বস্তুর বেগ ঐ বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করবে। বল প্রয়ােগের ফলে যে বস্তুর ভর যত বেশি হবে এর বেগ তত কম হবে। তাই, ভিন্ন ভরের বস্তুর উপর একই বল প্রয়ােগ করলে বেগ সমান হয় না।

প্রশ্ন ২৭ কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটা কষ্টকর কেন? ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: রাস্তায় হাঁটার সময় রাস্তা ও পায়ের তলার মধ্যে যে ঘর্ষণ বল তৈরি হয় তার জন্য আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারি। কিন্তু কর্দমাক্ত রাস্তায় রাস্তা ও পায়ের তলার মধ্যকার ঘর্ষণ বল হ্রাস পায়। এর ফলে ঐ রাস্তায় আমরা পিছলে যাই। তাই কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটতে কষ্ট হয়।

প্রশ্ন ২৮ আমরা কীভাবে হাঁটি, নিউটনের তৃতীয় সূত্রের আলােকে ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: আমরা কীভাবে হাটি-সেটা নিউটনের তৃতীয় সূত্রের সাহায্যে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায়। নিউটনের তৃতীয় সূত্র হচ্ছে- “প্রত্যেকটি ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।” আমরা যখন হাটি, তখন আমরা মাটিতে পা দিয়ে ধাক্কা দিই, অর্থাৎ বল প্রয়ােগ করি। তখন নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে মাটি আমাদের শরীরের সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়ােগ করে। এই সমান ও বিপরীতমুখী বলের। আনুভূমিক উপাংশ আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে দেয় ফলে আমরা হাটি।

  • গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় সূত্রাবলি

গাণিতিক সমস্যা ও সমাধান

সমস্যা-১ : 50 kg ভরের একটি বস্তুর উপর কত বল প্রয়োগ করা হলে এর ত্বরণ 4 ms-2 হবে?

সমাধান :

এখানে,

বস্তুর ভর, m = 50 kg

ত্বরণ, a = 4 ms-2

বল, F = ?

জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন

আমরা জানি,

F = ma

= 50 kg x 4 ms-2

= 200 kg ms-2

= 200 N.

নির্ণেয় বল 200 N

সমস্যা-২ : একটি বালক 50 Nবল দ্বারা 20 kg ভরের একটি বক্সকে ধাক্কা দেয়। বক্সটির ত্বরণ কত হবে?

সমাধান :

এখানে,

বক্সের ভর, m = 20 kg

প্রযুক্ত বল, F = 50 N

বক্সের ত্বরণ, a = ?

আমরা জানি,

F = ma

বা, a = 50 N/20 kg

= 2.5 ms-2

অতএব, বক্সটির ত্বরণ 2.5 ms-2

সমস্যা-৩ : 20 kg ভরের একটি বস্তুর উপর 2000 N বল 0.1 s সময়ব্যাপী কাজ করে। বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন কত হবে?

সমাধান : এখানে, প্রযুক্ত বল, F = 2000 N

বলের ক্রিয়া কাল, t = 0.1 s

ভরবেগের পরিবর্তন, mv – mu = ?

আমরা জানি,

ভরবেগের পরিবর্তন = বল x সময়

mv – mu = Ft

= 2000 N x 0.1 s

= 200 kg ms-2s

= 200 kg ms-1

অতএব, ভরবেগের পরিবর্তন 200 kg ms-1

এসএসসি সকল বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

সমস্যা : একটি বন্দুক থেকে 500 ms-1 বেগে 10 g ভরের একটি গুলি ছােড়া হলাে। বন্দুকের ভর 2 kg হলে বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ নির্ণয় কর।

সমাধান : এখানে,

গুলির ভর, m1 = 10 g

= 10 x 10-3 kg

= 102 kg

বন্দুকের ভর, m2 = 2 kg

গুলির আদিবেগ, u1 = 0 ms-1

বন্দুকের আদিবেগ, u1 = 0 ms-1

গুলির শেষবেগ, v1 = 500 ms-1

বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ, v2 = ?

ধরা যাক, গুলির বেগের দিক অর্থাৎ সম্মুখ দিক ধনাত্মক।

ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র থেকে আমরা জানি,

m1u1 + m2u2 = m1 v1 + m2 v2

বা, m1x 0 ms-1 + m2 kg x 0 ms-1 = 10-2 kg x 500 ms-1 + 2 kg X v2

বা, v2 = – 5kg ms-1/2 kg

.:. v2 = – 2.5 ms-1

এখানে বন্দুকের বেগ ঋণাত্মক, অর্থাৎ বন্দুকটি পেছন দিকে গতিশীল হবে।

অতএব, বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ 2.5 ms-1

সমস্যা৫ : 15 kgভরের কোনাে বস্তুর উপর 105 N বল প্রযুক্ত হলে তার ত্বরণ কত হবে?

সমস্যা : 50 kgভরের একটি স্থির বস্তুর 100 N একটি বল 2 সেকেন্ড ধরে ক্রিয়া করে। এই সময় শেষে বস্তুটির বেগ কত হবে?

ICT দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

সমস্যা-৭ : 10 g ভরের একটি বুলেট 300 ms-1 বেগে এক টুকরা কাঠের মধ্যে 4.5 cm প্রবেশ করে থেমে গেল। বাধাদানকারী বলের মান নির্ণয় কর এবং দূরত্ব যেতে বুলেটটির কত সময় লেগেছে?

সমস্যা : 600 kg ভরের একখানি গাড়ি 20 ms-1 বেগে সরল পথে চলতে চলতে 1400kg ভরের একখানি স্থির ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে আটকে গেল। মিলিত গাড়ি দুটির বেগ কত হবে?

সমস্যা-৯ : 3 kg ভরের একটি বস্তু 2 ms-1বেগে পূর্বদিকে চলছে। 1kg ভরের অপর একটি বস্তু 2 ms-1 বেগে পশ্চিম দিকে চলছে। কোনাে একটি সময় বস্তু দুটির মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এরা মিলে এক হয়ে গেল। মিলিত বস্তুটি কোন দিকে কত বেগে চলবে?

সমস্যা- ১০ : একটি 10 g ভরের গুলি 6kg ভরের একটি বন্দুকের নল থেকে 300 ms-1 বেগে বেরিয়ে গেল। বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ বের কর।

নির্ণেয় বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ 0.5 ms-1

তথ্য কণিকা

১. নিউটনের ১ম সূত্র পদার্থের যে ধর্মকে প্রকাশ করে তা হলাে — জড়তা।

২. বস্তুর জড়তার পরিমাপ — ভর।

৩. নিউটনের ১ম সূত্র হতে পাওয়া যায় — বলের সংজ্ঞা।

৪. বল, ওজনের মাত্রা— MLT-2

৫. চারটি মৌলিক বলের মধ্যে তুলনামূলক কম শক্তিশালী হলাে — মহাকর্ষ বল।

৬. সবল নিউক্লিয় বলের পাল্লা — 10-15 m।

৭. সাম্য বলের লন্ধি — শূন্য।

৮. টান বল, অভিকর্ষ বল, তড়িৎ চৌম্বক বল হলাে — অসাম্য বল।

৯. দুটি সম আধানের মধ্যবর্তী বল — সাম্যবল।

রসায়ন তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন

১০. ভরবেগের মাত্রা— MLT-1

১১. বন্দুক ও গুলির সংঘর্ষে বন্দুকের মােট ভরবেগ ও গুলির মােট ভরবেগ — সমমানের।

১২. গুলির শেষবেগ ও ভর v, m এবং বন্দুকের ভর ও পশ্চাৎবেগ, M  ও V হলে—   MV = – mv।

১৩. দুটি বস্তুর সংঘর্ষের আগে ও পরের সম্মিলিত ভরবেগ — সমান।

১৪. বন্দুকের পশ্চাৎ গতি, রকেটের গতি ভরবেগের সংরক্ষণের — উদাহরণ।

১৫. নিরাপদ ভ্রমণের ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা পালন করে — গতি।

১৬. কোনাে বস্তু সুষম ঢালু রাস্তা দিয়ে গড়িয়ে পড়লে ভরবেগের পরিবর্তনের হার — সমান।

১৭. বল ও ত্বরনের সম্পর্ক—  F = ma ।

১৮. ভরবেগের পরিবর্তন হলাে বল ও বলের ক্রিয়াকালের — গুণফল।

১৯. অভিকর্ষজ ত্বরণের রাশিমালা— g =GM/R2

২০. ক্রিয়াবল ও প্রতিক্রিয়া বল — পরস্পর সমান এবং বিপরীত মুখী।

২১. মানুষের হাটা, রাস্তায় গাড়ি চলা — নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্রের প্রয়ােগ।

২২. সর্বদা গতির বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে — ঘর্ষণ বল।

২৩. আমরা হাটার সময় পিছলিয়ে পড়ে যাইনা — স্থিতি ঘর্ষণের জন্য।

২৪. বস্তুর গতি সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে — স্থিতি ঘর্ষণ বল।

২৫. যানবাহনের চাকার গতির কারণে যে ঘর্ষণ তা হলাে — আবর্ত ঘষর্ণ।

জীববিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

২৬. উড়ন্ত পাখি, প্যারাসুটে কাজ করে — প্রবাহী ঘর্ষণ।

২৭. মাছের পানিতে চলাচল, পুকুরে সাতার কাটা — প্রবাহী ঘর্ষণের ব্যবহার।

২৮. গাড়ির টায়ারে খাজ কাটা থাকে — ঘর্ষণ তৈরির জন্য।

২৯. তলকে মসৃণ করলে, লুব্রিক্যান্ট লাগালে — ঘর্ষণ হ্রাস পায়।

গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

. বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা ধর্ম তাকে কী বলে?

ক. বল                                                 খ. ত্বরণ

গ. জড়তা                                            ঘ. বেগ

উত্তর: গ. জড়তা

২. বলের মাত্রা কোনটি?

ক. MLT-2                                            খ. MLT-1

গ. ML-1T-2                                                         ঘ. M-1LT-2

উত্তর: ক. MLT-2

৩. ভরবেগের একক কোনটি?

ক. kg m                                             খ. kg ms-1

গ. kg m-1s-1                                       ঘ. kg ms-2

উত্তর: খ. kg ms-1

জীববিজ্ঞন সপ্তম অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

. 5kg ভরের একটি বস্তুর ওপর 50 Nবল প্রয়ােগ করা হলে, এর ত্বরণ হবে?

ক. 12 ms-2                                         খ. 8 ms-2

গ. 13 ms-2                                          ঘ.10 ms-2

উত্তর: ঘ.10 ms-2

৫. 10 kg ভরের কোনাে বস্তু 10 ms-1 বেগে গতিশীল হলে এর ভরবেগ হবে?

ক.10 kg ms-1                                                 খ.120 kg ms-1

গ. 100 kg ms-1                                  ঘ.1 kg ms-1

উত্তর: গ. 100 kg ms-1

৬. প্রবাহী ঘর্ষণ কোনটি?

ক. পুকুরের সাঁতার কাটার সময় ঘর্ষণ

খ. সাইকেলের চাকার গতির ঘর্ষণ

গ. গাড়ির হার্ড ব্রেক কষার ঘর্ষণ

ঘ. একটি ভারী বস্তুকে টানার ঘর্ষণ

উত্তর: ক. পুকুরের সাঁতার কাটার সময় ঘর্ষণ

. কোনাে বস্তুতে প্রযুক্ত সাম্য বলসমূহের লব্ধি শূন্য হলে-

i. বস্তুতে গতির অবস্থা পরিবর্তন হয়

ii. বস্তুতে কোনাে ত্বরণ থাকে না

iii. বলগুলাে সাম্যাবস্থা সৃষ্টি করে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

. প্যারাসুটের মাধ্যমে আরােহীকে নিরাপদে অবতরণে সাহায্য করে কোন বল?

ক. স্থিতি ঘর্ষণ                                      খ. বিসর্প ঘর্ষণ

গ. আবর্ত ঘর্ষণ                                    ঘ. প্রবাহী ঘর্ষণ

উত্তর: ঘ. প্রবাহী ঘর্ষণ

. ভরবেগের মাত্রা কোনটি?

ক. MLT-1                                            খ. ML2T-1

গ. MLT-2                                                           ঘ. ML-1T2

উত্তর: ক. MLT-1

১০. পদার্থের জড়তার পরিমাপ কোনটি?

ক. গতি                                                খ. স্থিতি

গ. ভর                                                 ঘ. বল

উত্তর: গ. ভর

১১. বন্দুক থেকে গুলি ছুড়লে-

i. গুলি ও বন্দুকের ভরবেগ সমমুখী হয়।

ii. গুলি ও বন্দুকের ভরবেগ সমমানের হয়।

iii. বন্দুকের পশ্চাৎ বেগ গুলির তুলনায় কম হয়।

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

জীববিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১২. কোন বলটি কম শক্তিশালী?

ক. মহাকর্ষ বল                                   খ. তাড়িত চৌম্বকীয় বল

গ. দুর্বল নিউক্লীয় বল                          ঘ. সবল নিউক্লীয় বল

উত্তর: ক. মহাকর্ষ বল

১৩. 80 kg ভরের একটি বস্তুর উপর কত বল প্রয়ােগ করলে এর ত্বরণ 4ms-2 হবে?

ক. 20N                                               খ. 78.4N

গ. 320N                                             ঘ. 784N

উত্তর: গ. 320N

১৪. 1kg ভরের একটি বন্দুক থেকে 5 gm ভরের একটি গুলি ছােড়া হলে বন্দুকটি 2 ms-1 পশ্চাৎবেগ প্রাপ্ত হলাে, গুলির শেষবেগ কত?

ক. 0.4ms-1                                         খ. 4 ms-1

গ. 40 ms-1                                                        ঘ. 400 ms-1

উত্তর: ঘ. 400 ms-1

১৫. কোন ঘর্ষণ কাজে লাগিয়ে মাছ পানিতে চলাচল করে?

ক. আবর্ত                                            খ. পিছলানাে

গ. স্থিতি                                               ঘ. প্রবাহী

উত্তর: ঘ. প্রবাহী

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৬ ১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

একই রাস্তায় পরস্পর বিপরীত দিক থেকে আগত 15 kg ও 10 kg ভরের দুটি বস্তু যথাক্রমে 3ms-1এবং 5ms-1 বেগে আসে এবং মুখােমুখি সংঘর্ষ হয়ে একসাথে আটকে যায়।

১৬. মিলিত অবস্থায় বেগ কত?

ক. 3.8 ms-1                                        খ. 4.2 ms-1

গ. 8 ms-1                                            ঘ. 8.3 ms-1

উত্তর: ক. 3.8 ms-1

ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১৭. বস্তুদ্বয়ের ক্ষেত্রে-

i. মিলিত অবস্থায় ১ম বস্তু যেদিকে যাচ্ছিল সেদিকে যাবে

ii. ভরবেগের সংরক্ষণশীলতার সূত্র অন্ন থাকবে

iii. সংঘর্ষের পূর্বে ২য় বস্তুর গতিশক্তি 125J

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: গ. ii ও iii

১৮. কীভাবে ঘর্ষণকে বৃদ্ধি করা যায়?

ক তলকে মসৃণ করার মাধ্যমে

খ. তলকে অমসৃণ করার মাধ্যমে

গ. তলের মাঝে লুব্রিকেন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে

ঘ. তলকে প্রথমে মসৃণ ও পরে অমসৃণ করার মাধ্যমে

উত্তর: খ. তলকে অমসৃণ করার মাধ্যমে

১৯. একটি চলন্ত গাড়িকে ব্রেক করে থামানাে হলাে, গাড়িটি কোন ঘর্ষণ বলের সম্মুখীন হবে?

ক. পিছলানাে ঘর্ষণ                           খ. আবর্ত ঘর্ষণ

গ. প্রবাহী ঘর্ষণ                                    ঘ. স্থিতি ঘর্ষণ।

উত্তর: ক. পিছলানাে ঘর্ষণ

২০. নিউটনের প্রথম সূত্র পদার্থের কোন ধর্মকে প্রকাশ করে?

ক. বল                                                 খ. জড়তা 

গ. ত্বরণ                                              ঘ. বেগ

উত্তর: খ. জড়তা

২১. বস্তুর জড়তা কিসের উপর নির্ভর করে?

ক. ভর                                                খ. সরণ

গ. বেগ                                                ঘ. ত্বরণ

উত্তর: ক. ভর

২২. কোনটির জড়তা বেশি?

ক. 5 kg লোহা                                    খ. 7 kg পারদ

গ. 8 kg রূপা                                       ঘ. 10 kg পানি

উত্তর: ঘ.10 kg পানি

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

২৩. পদার্থের জড়তার পরিমাপ কী?

ক. স্পর্শ বল                                        খ. অস্পর্শ বল

গ. ভর                                                 ঘ. ওজন

উত্তর: গ. ভর

২৪. বলের সংজ্ঞা পাওয়া যায় নিউটনের কোন সূত্র থেকে?

ক. প্রথম গতিসূত্র                               খ. দ্বিতীয় গতিসূত্র 

গ. তৃতীয় গতিসূত্র                               ঘ. মহাকর্ষ সূত্র

উত্তর: ক. প্রথম গতিসূত্র

২৫. ওজনের মাত্রা কোনটি?

ক. MLT-2                                            খ. MLT-1

গ. ML-2T-2                                                         ঘ. M-1LT-2

উত্তর: ক. MLT-2

২৬. প্রকৃতিতে বিদ্যমান মৌলিক বল কয়টি?

ক.দুইটি                                               খ. তিনটি

গ. চারটি                                              ঘ. পাঁচটি

উত্তর: গ. চারটি

২৭. সবল নিউক্লিয় বলের পাল্লা কত?

ক. 10-15m                                           খ. 10-6m

গ. 10-14m                                           ঘ. 10-18m  

উত্তর:ক. 10-15m

ICT বিষয়ে সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

২৮. কোন বলের লব্ধি শূন্য হয়?

ক. সাম্য বল                                        খ. অসাম্য বল

গ. স্পর্শ বল                                         ঘ. অস্পর্শ বল

উত্তর: ক. সাম্য বল

নিচের চিত্রের আলোকে ২৯ ৩০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

২৯. বস্তুদ্বয়ের মিলিত বেগের মান কত?

ক. 2.4 ms-1                                         খ. 7.2 ms-1

গ. 24 ms-1                                          ঘ. 72 ms-1  

উত্তর: ক. 2.4 ms-1

৩০. মিলিত হওয়ার পর বস্তুদ্বয় কোনদিকে যাবে?

ক. A বস্তুর দিকে                                 খ. B বস্তুর দিকে

গ. স্থির থাকবে                                    ঘ. পরস্পরের বিপরীত দিকে

উত্তর: ক. A বস্তুর দিকে

৩১. ভরবেগের সংরক্ষণের উদাহরণ হল

i. বন্দুকের পশ্চাৎ গতি

ii. চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক কষে থামানো

iii. রকেট চালানো

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: খ. i ও iii

৩২. নিরাপদ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনটি মূখ্য ভূমিকা পালন করে?

ক. ভর                                                খ. ওজন

গ. গতি                                                ঘ. ঘর্ষণ

উত্তর: গ. গতি

৩৩. বল-

i. ত্বরণ সৃষ্টি করে

ii. ভর ও ত্বরণের গুণফল

iii. ভরবেগের পরিবর্তনের হার

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii                                               খ. i ও iii

গ. ii ও iii                                             ঘ. i, ii ও iii

উত্তর: ঘ. i, ii ও iii

ICT তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩৪. একটি ড্রাম সুষম ঢালু রাস্তা দিয়ে গড়িয়ে চললে নিম্নের কোনটি ঘটবে?

ক. ভরবেগের পরিবর্তনের হার একই থাকবে

খ. কোন প্রকার ঘর্ষণ বল থাকবে না

গ. ত্বরণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে

ঘ. বল ক্রমাগত হ্রাস পাবে

উত্তর: ক. ভরবেগের পরিবর্তনের হার একই থাকবে

৩৫. 500 gm ভরের একটি বস্তুর উপর 5 N বল প্রয়োগ করা হলে ত্বরণ কত হবে?

ক. 0.1 ms-2                                         খ. 2.5 ms-2  

গ. 10 ms-2                                          ঘ. 100 ms-2 

উত্তর: গ. 10 ms-2 

আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন১ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর দাও :

ফারুক 4kg ভরের একটি বক্স একটি মেঝের উপর দিয়ে সমবলে টেনে নিল। বক্স মেঝের মধ্যকার ঘর্ষণ বলের মান হলাে 1.5 N বক্সটিকে টেনে নেওয়ায় এর ত্বরণ হলাে 0.8 ms-2 এরপর বক্সটিকে ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে একই বল প্রয়ােগ করে টানা হলাে।

ক. সাম্য বল কাকে বলে?

খ. ঘর্ষণ বল কেন উৎপন্ন হয়?

রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

গ. প্রথমক্ষেত্রে বক্সটির উপর প্রযুক্ত বলের মান নির্ণয় কর।

ঘ. ঘর্ষণযুক্ত ও ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে ত্বরণের কিরূপ পরিবর্তন হবে? গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

. কোনাে বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য হয়। অর্থাৎ বস্তুর কোনাে ত্বরণ না হয় তখন সেই বলগুলােকে সাম্য বল বলা হয়।

. একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের ওপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে একটি বাধার উৎপত্তি হয়। অর্থাৎ দুটি তলের অনিয়মিত প্রকৃতির কারণে ঘর্ষণ বল উৎপন্ন হয়।

. দেওয়া আছে,

বক্সটির ভর, m = 4 kg

বক্সটির ত্বরণ, a = 0.8 ms-2

ধরি, বক্সটির ওপর প্রযুক্ত বল = P

কার্যকর বল, F = ma

= 4 kg x 0.8 ms-2

= 3.2 N

বক্স ও মেঝের ঘর্ষণ বলের মান, Fk = 1.5 N

আমরা জানি,

প্রযুক্ত বল P = কার্যকর বল (F) + ঘর্ষণ বল (Fk)

বা, P = 3.2 N + 1.5 N

বা, P = (3.2 + 1.5) N

.:. P = 4.7 N

সুতরাং প্রথম ক্ষেত্রে বক্সটির উপর প্রযুক্ত বলের মান 4.7 N।

. একই বল প্রয়ােগে ঘর্ষণযুক্ত মেঝে অপেক্ষা ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে ত্বরণের পরিমাণ বেশি হবে। কারণ ঘর্ষণ বল গতির বিরুদ্ধে কাজ করায় বস্তুর ত্বরণের পরিমাণ কম হয়।

নিচে গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা করা হলাে :

উদ্দীপকে, বস্তুর ভর, m = 4 kg

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

‘গ’ হতে প্রযুক্ত বলের মান, F = 4.7 N

ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে বক্সের ত্বরণ, a = ?

আমরা জানি, F = ma

বা, a = F/m

বা, a =4.7N/4kg

.:. a = 1.175 ms-2

অতএব, ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে বক্সটির ত্বরণ (1.175 – 0.8) ms-2 বা, 0.375 ms-2 বৃদ্ধি পাবে।

অর্থাৎ, ঘর্ষণবিহীন মেঝেতে বক্সটির ত্বরণ ঘর্ষণযুক্ত মেঝের ত্বরণ অপেক্ষা 0.375 ms-2 বেশি।

প্রশ্ন২ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর দাও :

সরলরৈখিক পথে গতিশীল 5 kg ভরের একটি বস্তু 5ms-1 বেগে অপর আরেকটি বস্তুকে আঘাত করে দ্বিতীয় বস্তুটির ভরবেগ 4 kgms-1 পরিমাণ পরিবর্তন করে। এই সংঘর্ষের পর উভয় বস্তুর ভর অপরিবর্তিত থাকে।

ক. পদার্থের কোন ধর্ম জড়তার পরিমাপক?

খ. প্রযুক্ত বল ভরবেগের পরিবর্তনের সমানুপাতিক বলতে কী বােঝ?

গ. প্রথম বস্তুর শেষ বেগ কত হবে?

ঘ. যখন ভরবেগের কোনাে পরিবর্তন হয় না তখন গাণিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে দ্বিতীয় বস্তুটি সম্পর্কে মন্তব্য করাে।

২নং প্রশ্নের উত্তর

. জড়তার পরিমাপক হলাে ভর।

. নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্রানুযায়ী, ‘বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এর ভরবেগের পরিবর্তনের হারের সমানুপাতিক।’

 সুতরাং প্রযুক্ত বল ভরবেগের পরিবর্তনের সমানুপাতিক বলতে বােঝায় বেশি মানের একটি বল একটি ভারের উপর নির্দিষ্ট সময় ধরে ক্রিয়া করলে ভরবেগের পরিবর্তন বেশি হবে এবং কম মানের একটি বল ঐ ভরের উপর ঐ সময় ধরেই ক্রিয়া করলে ভরবেগের পরিবর্তন কম হবে।

গ. দেওয়া আছে, ১ম বস্তুর ভর, m1 = 5kg

১ম বস্তুর আদিবেগ, u1= 5ms-1

২য় বস্তুর ভর বেগের পরিবর্তন, m2(v2 – u2) = 4kgms-1

জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

ধরি, ১ম বস্তুর শেষ বেগ= v1ms-1

ধরা যাক, সংঘর্ষের সময় দ্বিতীয় বস্তুর উপর ১ম বস্তুর ক্রিয়াবল F1 এবং দ্বিতীয় বস্তুর প্রতিক্রিয়া বল F2 ও সংঘর্ষকাল t.

তাহলে নিউটনের তৃতীয় সূত্রানুসারে-

. বস্তুদ্বয়ের ভর যথাক্রমে, m1 ও m2

ও সংঘর্ষের আগে আদিবেগ u1 ও u2

এবং সংঘর্ষের পর শেষবেগ, v1 ও v2

এক্ষেত্রে, ভরবেগের পরিবর্তন হয় না।

অর্থাৎ ২য় বস্তুর ক্ষেত্রে m2(v2 – u2) = 0

সুতরাং সংঘর্ষে ২য় বস্তুর প্রতিক্রিয়া বল F2 হলে, F2 = 0.

বাংলা দ্বিতীয় পত্র বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

যেহেতু কোনাে প্রতিক্রিয়া বল নেই, তাই নিউটনের তৃতীয় সূত্রানুসারে ১ম বস্তুর ক্রিয়াবলও শূন্য। দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষ হলে বস্তুদ্বয়ের মধ্যে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াই কাজ করবে এবং ভরবেগের পরিবর্তন হবে। কিন্তু এখানে ভরবেগের পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ এক্ষেত্রে বস্তুদ্বয়ের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটবে না।

এখন বস্তুদ্বয় যেহেতু সরলরৈখিক পথে গতিশীল তাই বলা যায় ২য় বস্তুটির বেগ বেশি অথবা উভয় বস্তুর বেগ সমান।

প্রশ্ন : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর দাও :

নিয়ন টেবিলে রাখা একটি কলমকে টোকা দিলে সেটি টেবিলের উপর খানিকটা দূরে সরে গিয়ে টেবিলের প্রান্ত দিয়ে নিচে পড়ে গেল। এরপর সে টেবিলে রাখা একটি বইকে টোকা দিয়ে সরাতে চাইলে এটিমােটেও নড়ল না। এটিকে সরাতে শেষ পর্যন্ত তাকে জোরে ধাক্কা দিতে হলাে।

ক. কোনাে বস্তুর জড়তা কিসের ওপর নির্ভর করে?

খ. নিয়ন টোকা দিয়ে কলমটি সরাতে পারলেও বইটি সরাতে পারল না কেন?

গ. যে বলের প্রভাবে কলমটি নিচে পড়ে গেল তার প্রকৃতি আলােচনা কর।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনা থেকে কোন কোন রাশির গুণগত ধারণা পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ কর।

নং প্রশ্নের উত্তর

. কোনাে বস্তুর জড়তা ভরের ওপর নির্ভর করে।

. কলমের চেয়ে বইয়ের ভর বেশি হওয়ায় নিয়ন টোকা দিয়ে কলমটি সরাতে পারলেও বইটি সরাতে পারল না।

ভর হচ্ছে বস্তুর জড়তার পরিমাপ। যে বস্তুর ভর বেশি তার জড়তা বেশি। অন্যভাবে বলা যায়, যে বস্তুর জড়তা বেশি তাকে গতিশীল করা, বেগ হ্রাস বা বৃদ্ধি করা কিংবা বেগের দিক পরিবর্তন করা তত কঠিন।

উদ্দীপকে বর্ণিত কলমের চেয়ে বইয়ের ভর বেশি হওয়ায় তার জড়তা বেশি। তাই বইকে সরাতে বেশি বলের প্রয়ােজন হবে।

বাংলা দ্বিতীয় বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

. কলমটি মহাকর্ষ বলের প্রভাবে টেবিলের প্রান্ত বেয়ে নিচে পড়ে গেল। এটি একটি অস্পর্শ বল। অর্থাৎ দুটি বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষ বলের ক্রিয়ার ক্ষেত্রে বস্তু দুটি স্পর্শ করার প্রয়ােজন নেই, দূর হতেই মহাকর্ষ বল প্রযুক্ত হতে পারে। পৃথিবী কলমটিকে যে বলে আকর্ষণ করে তা হলাে কলমটির অভিকর্ষ বল বা ওজন, যা এক প্রকার মহাকর্ষ বল।

উপযুক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায়, বস্তুর ভরের কারণেই মহাকর্ষ বলের উদ্ভব ঘটে। আর মৌলিক বলের মধ্যে মহাকর্ষ বল হলাে দুর্বলতম।

তাই বলা যায়, টেবিল থেকে কলমটি পড়ে যাবে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে। অন্য কোনাে বলের প্রভাবে নয়।

. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনাগুলাে থেকে জড়তা এবং বলের গুণগত ধারণা পাওয়া যায়।

আমরা জানি, বস্তু তার গতির অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা ধর্ম প্রদর্শন করে তাই হলাে জড়তা। আবার, যা স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করার চেষ্টা করে বা গতিশীল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে তাকে বল বলে।

কলম এবং বইটিকে কোনােরূপ বল প্রয়ােগ না করা হলে এরা স্থিরাবস্থায় থাকতে চায়, এমনকি বল প্রয়ােগ করা সত্ত্বেও বলের মান অপর্যাপ্ত হওয়ার কারণে বইটি টেবিলের উপর স্থির অবস্থানে থাকে। স্থির কলম বা বইয়ের এরূপ স্থির থাকতে চাওয়ার ধর্ম হলাে এক প্রকার জড়তা- যা স্থিতি জড়তা নামে পরিচিত। কলমটিকে টোকা দিয়ে গতিশীল করলে এটি সুষম বেগে চলতে চায়। টেবিলের ঘর্ষণ বল খুব বেশি না হওয়ায় এটি উক্ত গতিতে চলে টেবিলের কিনারায় পৌছে যায়।  সুতরাং এক্ষেত্রে কলমটি গতি জড়তা প্রদর্শন করে।

উপযুক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায়, বাহ্যিক সত্তা কলম বা বইয়ের গতির অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় বা ঘটাতে চায়, তা-ই হলাে বল। টোকা দেওয়ার ফলে প্রযুক্ত বল স্থির কলমটিকেগতিশীল করতে যথেষ্ট মানের হলেও বইয়ের ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট ছিল না। স্থির বইটিকে গতিশীল করতে ধাক্কার ন্যায় বৃহৎ মানের বল প্রয়ােগের প্রয়ােজন হয়েছিল। গড়িয়ে যাবার সময় বই এবং কলমটি টেবিলের সংস্পর্শে থাকায় গতিকালীন যে বল অনুভব করে তা হলাে ঘর্ষণ বল। কলমের ক্ষেত্রে এ বল ক্ষুদ্রমানের হওয়ায় কলমটিকে থামাতে সমর্থ হয়নি। কিন্তু বইটি ভারী হওয়ায় টেবিলের সংস্পর্শে প্রচন্ড ঘর্ষণ মােকাবিলা করে বলে অল্প দূরত্বের মধ্যে থেমে যায়।

অতএব, উদ্দীপকের বর্ণিত ঘটনা হতে জড়তা ও বলের গুণগত ধারণা পাওয়া যায়।

আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন

এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply