জীববিজ্ঞান (Biology)-প্রথম অধ্যায়–জীবন পাঠ

এসএসসি জীববিজ্ঞান সাজেশন

প্রথম অধ্যায়–জীবন পাঠ (Lesson on life)

  • বিজ্ঞান : বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান। ইংরেজী প্রতিশব্দ “Science” কথাটি ল্যাটিন শব্দ “Scientia” থেকে এসেছে, যার অর্থ হল ”to know” অর্থাৎ “কিছু জানা”। বিজ্ঞানের কাজই হল অজানাকে জানা।

পরীক্ষা, নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ, গবেষণা, যুক্তি, প্রমাণ এবং সুসংবদ্ধ চিন্তাধারার সাহায্যে বিশেষ জ্ঞান ও জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াকেই বিজ্ঞান বলে। অর্থাৎ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পদ্ধতিগতভাবে লব্ধ সুশৃংখল ও সুসংবদ্ধ জ্ঞান এবং জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিকে বিজ্ঞান বলে। বিজ্ঞানকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা হয়, একটি হল ভৌত বিজ্ঞান বা জড়বিজ্ঞান এবং অপরটি জীববিজ্ঞান।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

  • জড়বিজ্ঞান বা ভৌতবিজ্ঞান : বিজ্ঞানের যে শাখায় জড় বস্তু বা জীবনহীন পদার্থ নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয় তাকে জড়বিজ্ঞান বা ভৌতবিজ্ঞান বলে। যেমন- রসায়নবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, আবহবিদ্যা, ভূ-বিদ্যা ইত্যাদি।
  • জীববিজ্ঞান : প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের গঠন, জৈবনিক ক্রিয়া এবং জীবনধারণ সম্পর্কে সম্যক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান পাওয়া যায় তাকেই জীববিজ্ঞান বলা হয়। ত্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলকে (খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৪-৩২২) জীববিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
  • জীববিজ্ঞান শব্দের উৎপত্তি : জীববিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা Biology । Biology শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘bios’ অর্থ জীবন এবং ‘logos’ অর্থ জ্ঞান এর সমন্বয়ে গঠিত।
  • জীবন : বৃদ্ধি, প্রজনন, পরিবৃত্তি অনুভূতি ও অভিব্যাক্তি গুণসম্পন্ন প্রোটোপ্লাজম নামক এক প্রকার সুসংগঠিত জটিল জৈব বস্তুর বিকশিত শক্তিকে জীবন বলে।
  • জীববিজ্ঞানের শাখাসমূহ : জীবের ধরন অনুসারে জীববিজ্ঞানকে প্রধান দুটি শাখায় ভাগ করা হয়, যথা- উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও প্রাণী বিজ্ঞান।

পদার্থ বিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

  • প্রাণী বিজ্ঞান : জীব বিজ্ঞানের যে শাখায় প্রাণীর আকার, আকৃতি, গঠন প্রকৃতি, আবাস্থল, স্বভাব, পূর্ণ জীবনবৃত্তান্ত শ্রেণিবিন্যাস ও মানব কল্যানে তাদের প্রয়োগ ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা করা হয় তাকে প্রাণী বিজ্ঞান (Zoology) বলে।
  • উদ্ভিদ বিজ্ঞানজীব বিজ্ঞানের যে শাখায় উদ্ভিদের আকার, আকৃতি, গঠন প্রকৃতি, আবাস্থল, স্বভাব, পূর্ণ জীবনবৃত্তান্ত শ্রেণিবিন্যাস ও মানব কল্যানে তাদের প্রয়োগ ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা করা হয় তাকে উদ্ভিদ বিজ্ঞান (Botany) বলে।

জীবের কোন দিক নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার ভৌত জীববিজ্ঞান ও ফলিত জীববিজ্ঞান এ দুটি শাখায় ভাগ করা হয়।

  • ভৌত জীববিজ্ঞান : জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে। এতে সাধারণত যেসব বিষয়গুলো আলোচিত হয় তা হলো :

১. অঙ্গসংস্থান (Morphology) : জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা এ শাখার আলোচ্য বিষয়। দেহের বাহ্যিক বর্ণনার বিষয়কে বহিঃঅঙ্গসংস্থান(External Morphology) এবং দেহের অভ্যন্তরীণ গঠন বর্ণনার বিষয়কে অন্তঃ অঙ্গসংস্থান (Internal Morphology) বলা হয়।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

২. শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা (Taxnomy) : জীবের শ্রেণিবিন্যাস এবং তার রীতিনীতিগুলো এ শাখায় আলোচনা করা হয়।

৩. শারীরবিদ্যা (Physiology) : জীবদেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জৈবরাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ এ শাখায় আলোচনা করা হয়।

৪. হিস্টোলজি (Histology) : জীবদেহের টিস্যুসমূহের গঠন, বিন্যাস এবং কার্যাবলি এ শাখায় আলোচিত হয়।

৫. ভ্রূণবিদ্যা (Embryology) : জনন কোষের উৎপত্তি, নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূণের সৃষ্টি, গঠন, পরিস্ফুটন, বিকাশ প্রভৃতি বিষয় এ শাখায় আলোচনা করা হয়।

৬. কোষবিদ্যা (Cytology) : জীবদেহের কোষের গঠন, কার্যাবলি ও বিভাজনসম্পর্কে যাবতীয় আলোচনা করা হয়।

৭. বংশগতিবিদ্যা (Genetics) : জিন ও জীবের বংশগতি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।

রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৮. বিবর্তনবিদ্যা (Evolution) : পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ, জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।

৯. বাস্তুবিদ্যা (Ecology) : প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।

১০. এন্ডোক্রাইনোলজি (Endocrinology) : এ শাখার প্রধান আলোচ্য বিষয় জীবদেহে হরমোনের কার্যকারিতা বিষয়সমূহ।

১১. জীবভূগোল (Biogeography) : এ শাখায় পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখায় জীবের বিস্তৃতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

  • ফলিত জীববিজ্ঞান : বিজ্ঞানীগণ জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো মানব কল্যানে প্রয়োগের ফলে জীববিজ্ঞানের যে শাখার সৃষ্টি হয় তাকে ফলিত শাখা বলে। অর্থাৎ ফলিত জীববিজ্ঞান শাখায় জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়সমূহ আলোচিত হয়। এতে সাধারণত যে বিষয়গুলো আলোচিত হয় তা হলো :

১. প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা (Paleontology) : প্রাগৈতিহাসিক জীবের বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

২. জীবপরিসংখ্যান বিদ্যা (Biostatistics) : জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান।

৩. পরজীবীবিদ্যা (Parasitology) : পরজীবিতা, পরজীবী জীবের জীবনপ্রণালি এবং রোগ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

৪. মৎসবিজ্ঞান (Fisheries) : মাছ, মাছ উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

৫. কীটতত্ত্ব (Entomology) : কীটপতঙ্গের জীবন, উপকারিতা, অপকারিতা, ক্ষয়ক্ষতি, দমন ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

৬. অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology) : ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি অণুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

৭. কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture) : কৃষিবিষয়ক বিজ্ঞান।

জীববিজ্ঞান নবম অধ্যায় সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

৮. চিকিৎসাবিজ্ঞান (Medical Science) : মানবদেহ, রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

৯. জিন প্রযুক্তি (Genetic Engineering) : জিনপ্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১০. প্রাণরসায়ন (Biochemistry) : জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যাবলী, রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১১. মৃত্তিকা বিজ্ঞান (Soil Science) : মাটির গুণাবলী, গঠন ও কার্যাবলি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১২. পরিবেশ বিজ্ঞান (Environmental Science) : পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১৩. সমুদ্রিক বিজ্ঞান (Oceanography) : সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

জীববিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

১৪. বন বিজ্ঞান (Forestry) : বন, বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১৫. জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology) : মানব এবং পরিবেশের কল্যাণে জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১৬. ফার্মেসি (Pharmacy) : ঔষধশিল্প ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

১৭. বন্যপ্রাণিবিদ্যা (Wildlife) : বন্য প্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।

১৮. বায়োইনফরমেটিকস (Bioinformatics) : কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর জীববিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, যেমন ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান।

  • জীববিজ্ঞান পাঠের গুরুত্বজীববিজ্ঞানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে কৃষিক্ষেত্রে নানান উচ্চ ফলনশীল ধান, গম, ভূট্টা উদ্ভব সম্ভব হয়েছে। প্রাণী প্রজননকে কাজে লাগিয়ে অধিক দুগ্ধ প্রদানকারী গরু ও মহিষ উদ্ভব সম্ভব হয়েছে। অধিক পরিমাণ মাংস ও ডিম প্রদানকারী হাঁস ও মুরগি উৎপন্ন করা সম্ভব হয়েছে। মাছ চাষেও ব্যাপক সাফল্য এসেছে। জীববিজ্ঞানের অবদানের ফলে একদিকে যেমন বিভিন্ন রোগের জীবাণু আবিষ্কৃত হয়েছে, তেমনি নানান দুরারোগ্য রোগ দমন করার জন্য বিভিন্ন রকমের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে।
  • শ্রেণিবিন্যাসজীবের আকৃতিগত ও প্রকৃতিগত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে তাদের বিভিন্ন জগৎ, পর্ব, শ্রেণি, বর্গ, গোত্র, গণ প্রজাতি ধাপে ধাপে বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে শ্রেণিবিন্যাস বলে।
  • শ্রেণিবিন্যাস বিদ্যা : জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের নামকরণ, শনাক্তকরণ ও শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি আলোচনা করা হয় তাকে শ্রেণিবিন্যাস বিদ্যা (Taxonomy) বলে।
  • প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসপারস্পরিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে প্রাণীদের গোষ্ঠীভুক্ত করার পদ্ধতিকে প্রাণী শ্রেণিবিন্যাস বলে।
  • শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ বা এককজীবের শ্রেণিগত অবস্থান নির্ণয়ের জন্য যেসব ধাপ ব্যবহার করা হয় তাদের শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ বা একক বলা হয়। জীবের শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতিতে সাতটি ধাপ বা একক অবলম্বন করা হয়। প্রজাতি (Species) সর্বনিম্ন ধাপ। শ্রেণিবিন্যাসের ধাপগুলো হলো :  জগৎ (Kingdom), পর্ব (Phylum), শ্রেণি (Class), বর্গ (Order), গোত্র (Family), গণ (Genus) ও প্রজাতি (Species)।

একটি জীবের প্রজাতি পর্যন্ত শ্রেণিবিন্যাসের ধাপগুলো বিন্যস্ত বা সাজানো থাকে এভাবে

জগৎ (Kingdom)

পর্ব (Phylum)

শ্রেণি (Class)

বর্গ (Order)

গোত্র (Family)

গণ (Genus)

প্রজাতি (Species)

  • শ্রেণিবিন্যাসের জনকসুইডিস প্রকৃতি বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস হলেন শ্রেণিবিন্যাসের জনক।
  • ক্যারোলাস লিনিয়াস (1707-1778) : সুইডিস প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াস 1735 সালে আপসালা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমির অধ্যাপক নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনিই প্রথম জীবের পূর্ণ শ্রেণিবিন্যাসের এবং নামকরণের ভিত্তি প্রবর্তন করেন। তিনি জীবজগৎকে দুটি ভাগে যথা উদ্ভিদজগৎ এবং প্রাণিজগৎ হিসেবে বিন্যস্ত করেন। 1753 সালে Species plantarum বইটি রচনা করেন। তিনি দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন এবং গণ ও প্রজাতির সংজ্ঞা দেন।
  • দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতিপ্রত্যেক জীবের বিজ্ঞানসম্মত নামের সাধারণত দুটি পদ থাকে প্রথমটি গণের (Genus) নাম এবং দ্বিতীয়টি প্রজাতির (Species) নাম। এরূপ দুটি পদ নিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম এবং নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি (binomial nomenclature) বলে। দ্বিপদ নামকরণ প্রবর্তন করেন ক্যারোলাস লিনিয়াস।

জীবের বৈজ্ঞানিক নাম আন্তর্জাতিক সংবিধান মেনে করা হয়। অর্থাৎ উদ্ভিদের নাম ICBN (International Code of Botanical Nomenclature) এবং প্রাণীর নাম ICZN (International Code of Zoological Nomenclature) নিয়ম অনুসারে করা হয়ে থাকে। যেমন-মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম : Homo sapiens.

কোনো জীবের বৈজ্ঞানিক নাম সারা বিশ্বে একই নামে পরিচিত হয়।

পদার্থ বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

  • জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাস১৯৬৯ সালে আর এইচ হুইটেকার একটি পাঁচজগৎ শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। এগুলো হচ্ছে মনেরা, প্রোটিস্টা, ফানজাই, প্লানটি ও অ্যানিমেলিয়া। পরবর্তীকালে মারগুলিস ১৯৭৪ সালে এটি সংশোধন করেন। তিনি সমস্ত জীবজগৎকে দুটি সুপার কিংডমে ভাগ করেন এবং পাঁচটি জগৎকে এ দুটি সুপার কিংডমের আওতাভূক্ত করেন।
  • শ্রেণিবিন্যাসের লক্ষ্য মূলত একটাই। তা হচ্ছে এই বিশাল এবং বৈচিত্রময় জীবজগৎকে সহজভাবে অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প সময়ে সঠিকভাবে জানা।
  • শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য বা প্রয়োজনীয়তা :
    • শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি জীবের দল ও উপদল সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করা।
    • জীবজগতের ভিন্নতার দিকে আলোকপাত করে আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।
    • পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তবাবে উপস্থাপন করা।
    • প্রতিটি জীবকে শনাক্ত করে তার নামকরণের ব্যবস্থা করা।
    • মানুষের প্রয়োজনেই জীবসম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন অত্যাবশ্যক। শ্রেণিবিন্যাসের দ্বারা সহজে সব ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পর্কে জানা যায়।
    • শ্রেণিবিন্যাসের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কোনো অঞ্চলের পরিবেশের উপযোগী উদ্ভিদ ও প্রাণীসমূহকে নির্বচন করা যায়।
    • সর্বোপরি জীবজগৎ এবং মানবকল্যাণে প্রয়োজনীয় জীবগুলোকে শনাক্ত করে তাদের সংরক্ষণে সচেতন হওয়া।
  • দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলী :
    • নাম হবে দ্বিপদী।
    • নামকরণ ল্যাটিন ভায়ায় করতে হবে।
    • বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম যেমন: Labeo rohita রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম।
    • গণ-এর নামের প্রথম অক্ষর বড় হরফে এবং প্রজাতির নাম ছোট হরফে লিখতে হবে। যেমন: সিংহ Panthera leo.
    • জীবের বৈজ্ঞানিক নাম মূদ্রনের সময় ইটালিক অক্ষরে অর্থাৎ ডানদিকে বাঁকা হবে। যেমন: পিঁয়াজ Allium cepa.
    • রোমান হরফে বা হাতে লিখলে গণ ও প্রজাতির নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে।
    • যিনি প্রথম জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দেন উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে তাঁর নাম সংক্ষেপে দিতে হবে। যেমন:  Panthera tigris L. (L অর্থাৎ Linnaeus)।

গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

জীববিজ্ঞানের জনক কে?

ক. ডারউইন                              খ. হুইটটেকার

গ. ক্যারোলাস লিনিয়াস               ঘ. অ্যারিস্টটল

 উত্তর:  অ্যারিস্টটল।

জননকোষের উৎপত্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়কোন শাখায়?

ক. শরীরবিদ্যা                             খ. ভ্রূণ বিদ্যা   

গ. বংশগতি বিদ্যা                        ঘ. অঙ্গসংস্থান বিদ্যা

উত্তর : ভ্রূণ বিদ্যা।

জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

হ্যাপ্লয়েড স্পোরের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি ঘটে কোনটিতে?

ক. ভলভক্স                                খ. ডায়াটম   

গ. মাশরুম                                 ঘ. নস্টক

উত্তর : মাশরুম।

শরীরবিদ্যার আলোচ্য বিষয় কোনটি?

ক. জীবের বিবর্তন                       খ. সালোক সংশ্লেষণ 

গ. ভ্রূণের বিকাশ                         ঘ. টিস্যুর বিন্যাস

উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ।

 Corchorus capsularis কোনটির বৈজ্ঞানিক নাম?

ক. পাট                                      খ. ধান  

গ. কাঁঠাল                                  ঘ. শাপলা

উত্তর : পাট।

বাংলা প্রথম পত্র সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

ডায়াবেটিস চিকিৎসার উপাদান তৈরিতে কোন রাজ্যের জীব ব্যবহার করা হয়?

ক. মনেরা                                  খ. প্রোটিস্টা  

গ. ফানজাই                               ঘ. প্লান্টি

উত্তর : মনেরা।  

কোনটির দেহ মাইসেলিয়াম দ্বারা গঠিত?

ক. পেনিসিলিয়াম                        খ. প্যারামেসিয়াম  

গ. ডায়াটম                                 ঘ. ব্যাকটেরিয়া

উত্তর : পেনিসেলিয়াম।

জীববিজ্ঞানের কোন শাখায়যোগ্যতমের টিকে থাকানিয়ে আলোচনা করা হয়?

ক. Embryology                         খ. Evolution     

গ. Histology                              ঘ. Parasitology

উত্তর : Evolution

রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

পেঁয়াজের বৈজ্ঞানিক নামের গণ অংশ কোনটি?

ক. Apis                                     খ. Solanum     

গ. Allium                                  ঘ. oryza

উত্তর : Allium 

১০ হরমোন নিয়ে আলোচনা করা হয় কোনটিতে?

ক. Endocrinology                     খ. Microbiology  

গ. Entomology                         ঘ. Biotechnology

উত্তর : Endocrinology ।

১১ মৌমাছির বৈজ্ঞানিক নাম কোনটি?

ক. Apis indica                           খ. Nymphaea nouchali 

গ. Periplaneta americana          ঘ. Copsychus saularis

উত্তর : Apis indica 

১২ কে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্যে ভাগ করার প্রস্তাব করেন?

ক. মারগুলিস                             খ. আর. এইচ হুইটেকার 

গ. টমাস কেভিলিয়ার স্মিথ           ঘ. ক্যারোলাস লিনিয়াস

উত্তর : আর. এইচ হুইটেকার।

১৩ কোন অঙ্গাণুটি ব্যাকটেরিয়াতে উপস্থিত তাকে?

ক. মাইটোকন্ড্রিয়া                       খ. প্লাস্টিড  

গ. এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম      ঘ. রাইবোজোম

উত্তর : রাইবোজোম।

১৪ জীবজগৎ সম্পর্কে সহজে সুশৃঙ্খলভাবে জানতে সাহায্য করে কোনটি?

ক. Taxonomy                           খ. Physiology   

গ. Entomology                          ঘ. Genetics

উত্তর : Taxonomy

১৫ নিম্নে কোন গ্রন্থে লিনিয়াস দ্বিপদ নামকরণ নীতি প্রবর্তন করেন?

ক. De Planties                          খ. Species Plantarum  

গ. Systema Nature                    ঘ. Phylogenic Taxonomy

উত্তর : Species Plantarum ।

বাংলা দ্বিতীয় সমাস বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

১৬ জীববিজ্ঞানের প্রায়োগিক শাখা কোনটি?

ক. ফরেস্ট্রি                                খ. জেনেটিক্স   

গ. ইকোলজি                              ঘ. ট্যাক্সোনমি

উত্তর : ফরেস্ট্রি।

১৭ শ্বসন প্রক্রিয়া আলোচিত হয় কোন শাখায়?

ক. Biochemistry                        খ. Physiology 

গ. Cytology                              ঘ. Histology

উত্তর : Physiology

১৮ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি কোনটি?

ক. ICZN                                    খ. IMVN

গ. IMCB                                    ঘ. ICBN

উত্তর : ICBN

১৯ আদি প্রকৃতির কোষে কোনটি থাকে?

ক. মাইটোকন্ড্রিয়া                       খ. রাইবোজোম  

গ. লাইসোজোম                          ঘ. প্লাস্টিড

উত্তর : রাইবোজোম।

২০ কোটি প্রোটিস্টার উদাহরণ?

ক. ব্যাকটেরিয়া                           খ. প্যারামেসিয়াম   

গ. মাশরুম                                 ঘ. পেনিসিলিয়াম

উত্তর : প্যারামেসিয়াম।

২১ কোনটি শ্রেণিবন্যাসের সর্বোনিম্ন ধাপ?

ক. প্রজাতি                                 খ. শ্রেণি   

গ. গোত্র                                    ঘ. গণ

উত্তর : প্রজাতি

২২ নীলাভ সবুজ শৈবাল কোন রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত?

ক. Protista                                খ. Plantae

গ. monera                                ঘ. Fungi

উত্তর :  Monera

২৩ নিচের কোনটি আর্কিগোনিয়েট?

ক. Mangifera                            খ. Agaricus 

গ. Penicillium                           ঘ. Nostoc

উত্তর : Mangifera 

জীববিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

২৪ অ্যামিবাতে

i.বহুকোষ আছে         

ii. সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিদ্যমান          

iii. ভ্রূণ গঠিত হয় না

নিচের কোনটি সঠিক ?

ক. i ও ii                                     খ. i ও iii  

গ. ii ও  iii                                  ঘ. i,ii ও iii

উত্তর : i,ii ও iii ।

২৫ ফানজাই সম্পর্কে সঠিক তথ্য হলো

i.খাদ্য গ্রহণ শোষণ পদ্ধতিতে ঘটে         

ii. ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত          

iii. হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশ বৃদ্ধি ঘটে

নিচের কোনটি সঠিক ?

ক. i ও ii                                     খ. i ও iii  

গ. ii ও  iii                                  ঘ. i,ii ও iii

উত্তর : i,ii ও iii ।

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১ নিচের চিত্রদ্বয় দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. শ্রেণিবিন্যাসের একক কী?

খ. বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয় কেন?

গ. চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে কীভাবে তুমি | ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে ব্যাখ্যা কর।

ঘ. চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মধ্যে কোন জীবটি অধিক উন্নত, কারণসহ বিশ্লেষণ কর।

নং প্রশ্নের উত্তর

. জীবের শ্রেণিবিন্যাসে শ্রেণিগত অবস্থান নিরূপণের জন্য যে কতকগুলো ধাপ ব্যবহৃত হয় তাদের প্রত্যেকটি ধাপকে শ্রেণিবিন্যাসের একক বলা হয়।

খ. বংশগতিবিদ্যায় জীববিজ্ঞানের অলৌকিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে একে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়। জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। বংশগতিবিদ্যায় জীবের জিন ও বংশগতিধারার তত্ত্বীয় বিষয়গুলো যেমন- জিন এর রাসায়নিক গঠন, এর মাধ্যমে জীবের বংশগতির ধারা কীভাবে বজায় থাকে ইত্যাদি আলোচনা করা হয়। এ সবই তত্ত্বীয় আলোচনা। এ কারণেই বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়।

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

. চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে নিম্নরূপে ধারাবাহিকতা বজায় রাখব :

১. উদ্ভিদটির নামকরণে অবশ্যই ল্যাটিন ভাষা ব্যবহার করব।

২. বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে। প্রথমটি গণ এবং দ্বিতীয়টি প্রজাতি।

৩. উদ্ভিদটির নামকরণে বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর হবে বাকি অক্ষরগুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখব।

৪. উদ্ভিদটির নাম মুদ্রণের সময় অবশ্যই ইটালিক ফরমে অর্থাৎ ডান দিকে বাঁকা করে অথবা মোটা অক্ষরে লিখব।

৫. উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতি নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিব।

৬. যিনি উদ্ভিদটির নাম সর্বপ্রথম দিয়েছিলেন তাঁর নামের সংক্ষিপ্তরূপ বৈজ্ঞানিক নামের শেষে যোগ করব। যেমন— লিনিয়াসের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো—L.

অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা অনুযায়ী চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে আমি ICBN কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিপদ নামকরণের ধাপগুলো অনুযায়ী ধারাবাহিকতা বজায় রাখব।

. উদ্দীপকের চিত্র-১ হলো মাশরুম এবং চিত্র-২ হলো দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। জীব দুটির মধ্যে চিত্র-২ এর জীবটি অধিক উন্নত। নিচে এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করা হলো:

১. মাশরুম অপুষ্পক উদ্ভিদ, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সপুষ্পক। সপুষ্পক উদ্ভিদ সর্বদাই অপুষ্পক উদ্ভিদ অপেক্ষা উন্নত।

২. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।

৩. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি স্পোরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় এবং উদ্ভিদ দেহ হ্যাপ্লয়েড। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় যা উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য এবং উদ্ভিদ দেহ ডিপ্লয়েড।

৪. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়।

৫. পরিবহন কলাগুচ্ছ উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। এই পরিবহন কলাগুচ্ছ চিত্র-১ এর উদ্ভিদে অনুপস্থিত, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদে উপস্থিত।

৬. চিত্র-১ এর উদ্ভিদ দেহ নৱম, কিন্তু চিত্র-২ উদ্ভিদ দেহ বেশ শক্ত। শক্ত উদ্ভিদদেহ উন্নত উদ্ভিদেরই বৈশিষ্ট্য বহন করে। উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করে এটি নিশ্চিতরূপে বলা যায় যে, চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মধ্যে, চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি অধিক উন্নত।

প্রশ্ন-২ : নিচের চিত্রদ্বয় দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. ধানের বৈজ্ঞানিক নাম কী?

খ. দ্বিপদ নামকরণ বলতে কী বুঝায়?

গ. চিত্র-১ : জীববিজ্ঞানের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত, কারণসহ ব্যাখ্যা কর।

ঘ. চিত্র-২ কেন অ্যানিমেলিয়া রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।

নং প্রশ্নের সমাধান

. ধানের বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativa.

. একটি জীবের নামকরণের দুটি অংশ থাকে। প্রথম অংশটির নাম গণ ও দ্বিতীয় অংশটির নাম প্রজাতির। এরূপ দুটি পদ নিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম বলে এবং নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ বলে।

. উদ্দীপকের চিত্র-১ Penicillium এর চিত্র। এটি এক ধরনের ছত্রাক ফানজাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। এই ছত্রাক থেকে জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক- পেনিসিলিন প্রস্তুত করা হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিক Penicillum এর বিভিন্ন প্রজাতি ব্যবহার করে বিভিন্ন জৈব এসিড এবং পনির উৎপাদন করা হয়। এ কারণে Penicillium কে ফলিত জীব বিজ্ঞানের অণু জীববিজ্ঞান শাখার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

. উদ্দীপকের চিত্র-২ হচ্ছে ডায়াটম যা একটি এককোষী শৈবাল। এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য প্রোটিস্টা রাজ্যের অন্তর্গত উদ্ভিদের মতো। প্রোটিস্টা এর বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ :

i. এরা একক বা এককোষী কলোনিয়াল।

ii. এদের কোষ জড়কোষ প্রাচীর আবৃত এবং কোষে প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর থাকে।

iii. এরা প্রকৃত কোষ বিশিষ্ট।

iv. ক্রোমাটিন বডিতে DNA, RNA এবং প্রোটিন আছে।

v. খাদ্য গ্রহণ-শোষণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে।

vi. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে।

vii. কোনো ভ্রূণ গঠিত হয় না।

জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

অন্যদিকে, অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

  1. এরা সুকেন্দ্রিক ও বহুকোষী প্রাণী।
  2. এদের কোষে কোনো জড় কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর নাই।
  3. প্লাস্টিড না থাকায় এরা হেটারােট্রফিক অর্থাৎ পরভোজী এবং খাদ্য গলাধঃকরণ করে ও হজম করে, দেহে জটিল টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান।
  4. প্রধানত যৌন প্রজননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
  5. ভ্রূণ বিকাশকালীন সময়ে ভ্রূণীয় স্তর সৃষ্টি হয়। উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় চিত্র-২ অর্থাৎ ডায়াটম বৈশিষ্ট্যগত কারণে প্রোটিস্টা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

প্রশ্ন –৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

জীববিজ্ঞান শিক্ষক মিঃ হক তার ছাত্রদের নিয়ে বিদ্যালয়ের চারিপাশে গাছগুলো পর্যবেক্ষণ করলেন। পরবর্তীতে তিনি নানা রকম গাছ দেখিয়ে একটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করলেন যার জনক বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস। অবশেষে তিনি উক্ত বিজ্ঞানীর প্রবর্তিত নামকরণ পদ্ধতির নিয়মাবলি আলোচনা করলেন।

ক. ICZN কী?

খ. ব্যাকটেরিয়াকে মনে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কেন?

গ. শিক্ষকের আলােচিত মূল বিষয়বস্তুর উদ্দেশ্য বর্ণনা কর।

ঘ. মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানীর উদ্ভাবনকৃত পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটেছে কি ? বিশ্লেষণ কর।

নং প্রশ্নের উত্তর

ICZN হলো International Code of Zoological Nomenclature.

খ. ব্যাকটেরিয়া এককোষী, কলোনিয়াল বা মাইসেলিয়াস। এরা প্রোক্যারিওটা, অর্থাৎ কোষে ক্রোমাটিন বস্তু থাকে কিন্তু নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই। রাইবোজোম ছাড়া অন্য কোষ অঙ্গাণু নেই। কোষ বিভাজন দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। এসব বৈশিষ্ট্য মনেরা রাজ্যের জীবদের বৈশিষ্ট্য। এজন্য ব্যাকটেরিয়াকে মনে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জীববিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

. শিক্ষকের আলোচিত মূল বিষয়বস্তু হলো শ্রেণিবিন্যাস। আর শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি জীবের দল ও উপদল সমন্ধে জ্ঞান আহরণ করা। শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্যে পৃথিবীর সকল উদ্ভিদ এবং প্রাণী সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মতভাবে অল্প পরিশ্রমে ও অল্প সময়ে জানা যায়। আবার, কোনো জীবের শ্রেণিবিন্যাস জানা থাকলে এবং উক্ত শ্রেণিবিন্যাসের ধাপগুলোর শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যাবলি জানা থাকলে সহজেই সেই বিশেষ জীবটির বৈশিষ্ট্যসমূহের ধারণা পাওয়া যায়। জীবদের বৈশিষ্ট্যের মিল ও অমিলের তুলনামূলক পর্যালােচনার মাধ্যমে অপরিচিত জীবকে সহজে চিহ্নিত ও শনাক্ত করা যায়। ক্ষতিকর ও উপকারী জীবকে শনাক্ত করা যায়। উপযুক্ত আলোচনা থেকে লক্ষ করা যায়, পৃথিবীতে যে অসংখ্য ছোট বড় ও বৈচিত্র্যময় জীব রয়েছে, এদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে পৃথকভাবে জানা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। একমাত্র শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমেই এদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট জগৎ, পর্ব, শ্রেণি, বর্ণ, গোত্র, গণ এবং প্রজাতি ইত্যাদি ধাপসমূহ স্থাপন করে জ্ঞান আহরণ করা যায়। এজন্যই শিক্ষকের আলোচিত মূল বিষয়বস্তু ছিল শ্রেণিবিন্যাস।

. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানীর উদ্ভাবনকৃত পদ্ধতি হলো দ্বিপদ নামকরণ। যার প্রতিফলন মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Homo sapiens । দ্বিপদ নামকরণের নীতিগুলো নিম্নরূপ

১. প্রাণীর নামকরণ International code of Zoological Nomenclature (ICZN) কর্তৃক স্বীকৃত নিয়মানুসারে হতে হবে।

২. প্রত্যেক প্রাণীর একটি বৈজ্ঞানিক নাম থাকবে যার দুটি অংশ থাকবে।

পদার্থ বিজ্ঞান সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩. দ্বিপদ নামের প্রথম অংশটি ওই প্রাণীর গণ নাম ও দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতির নাম নির্দেশ করবে। মানুষের নামের Homo অংশটি হলো গণ ও sapiens অংশটি হলো প্রজাতি।

৪. প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম অবশ্যই ল্যাটিন শব্দের হতে হবে। মানুষের নামের Homo ও sapiens দুটো শব্দই ল্যাটিন।

৫. দ্বিপদ নামকরণ সর্বদা ইটালিক হরফে হবে।

যেমন : মানুষের নাম : Homo sapiens.

৬. গণের নামের প্রথম অক্ষরটি অবশ্যই বড় হরফের এবং প্রজাতির নাম ছোট হরফে লিখতে হবে। যেমন : Homo sapiens অতএব, উপরিউক্ত নীতিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়। যে, মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস কর্তৃক উদ্ভাবিত পদ্ধতিটির যথাযথ প্রতিফলন ঘটেছে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল এর প্লেলিস্ট

এসএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্র সাজেশন ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply