পরীক্ষা, নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ, গবেষণা, যুক্তি, প্রমাণ এবং সুসংবদ্ধ চিন্তাধারার সাহায্যে বিশেষ জ্ঞান ও জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াকেই বিজ্ঞান বলে। অর্থাৎ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পদ্ধতিগতভাবে লব্ধ সুশৃংখল ও সুসংবদ্ধ জ্ঞান এবং জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিকে বিজ্ঞান বলে। বিজ্ঞানকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা হয়, একটি হল ভৌত বিজ্ঞান বা জড়বিজ্ঞান এবং অপরটি জীববিজ্ঞান।
জীবের কোন দিক নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার ভৌত জীববিজ্ঞান ও ফলিত জীববিজ্ঞান এ দুটি শাখায় ভাগ করা হয়।
১. অঙ্গসংস্থান (Morphology) : জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা এ শাখার আলোচ্য বিষয়। দেহের বাহ্যিক বর্ণনার বিষয়কে বহিঃঅঙ্গসংস্থান(External Morphology) এবং দেহের অভ্যন্তরীণ গঠন বর্ণনার বিষয়কে অন্তঃ অঙ্গসংস্থান (Internal Morphology) বলা হয়।
২. শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা (Taxnomy) : জীবের শ্রেণিবিন্যাস এবং তার রীতিনীতিগুলো এ শাখায় আলোচনা করা হয়।
৩. শারীরবিদ্যা (Physiology) : জীবদেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জৈবরাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ এ শাখায় আলোচনা করা হয়।
৪. হিস্টোলজি (Histology) : জীবদেহের টিস্যুসমূহের গঠন, বিন্যাস এবং কার্যাবলি এ শাখায় আলোচিত হয়।
৫. ভ্রূণবিদ্যা (Embryology) : জনন কোষের উৎপত্তি, নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূণের সৃষ্টি, গঠন, পরিস্ফুটন, বিকাশ প্রভৃতি বিষয় এ শাখায় আলোচনা করা হয়।
৬. কোষবিদ্যা (Cytology) : জীবদেহের কোষের গঠন, কার্যাবলি ও বিভাজনসম্পর্কে যাবতীয় আলোচনা করা হয়।
৭. বংশগতিবিদ্যা (Genetics) : জিন ও জীবের বংশগতি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।
৮. বিবর্তনবিদ্যা (Evolution) : পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ, জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।
৯. বাস্তুবিদ্যা (Ecology) : প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় এ শাখায়।
১০. এন্ডোক্রাইনোলজি (Endocrinology) : এ শাখার প্রধান আলোচ্য বিষয় জীবদেহে হরমোনের কার্যকারিতা বিষয়সমূহ।
১১. জীবভূগোল (Biogeography) : এ শাখায় পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখায় জীবের বিস্তৃতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
১. প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা (Paleontology) : প্রাগৈতিহাসিক জীবের বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
২. জীবপরিসংখ্যান বিদ্যা (Biostatistics) : জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান।
৩. পরজীবীবিদ্যা (Parasitology) : পরজীবিতা, পরজীবী জীবের জীবনপ্রণালি এবং রোগ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৪. মৎসবিজ্ঞান (Fisheries) : মাছ, মাছ উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৫. কীটতত্ত্ব (Entomology) : কীটপতঙ্গের জীবন, উপকারিতা, অপকারিতা, ক্ষয়ক্ষতি, দমন ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৬. অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology) : ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি অণুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৭. কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture) : কৃষিবিষয়ক বিজ্ঞান।
৮. চিকিৎসাবিজ্ঞান (Medical Science) : মানবদেহ, রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
৯. জিন প্রযুক্তি (Genetic Engineering) : জিনপ্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১০. প্রাণরসায়ন (Biochemistry) : জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যাবলী, রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১১. মৃত্তিকা বিজ্ঞান (Soil Science) : মাটির গুণাবলী, গঠন ও কার্যাবলি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১২. পরিবেশ বিজ্ঞান (Environmental Science) : পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৩. সমুদ্রিক বিজ্ঞান (Oceanography) : সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৪. বন বিজ্ঞান (Forestry) : বন, বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৫. জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology) : মানব এবং পরিবেশের কল্যাণে জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৬. ফার্মেসি (Pharmacy) : ঔষধশিল্প ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
১৭. বন্যপ্রাণিবিদ্যা (Wildlife) : বন্য প্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।
১৮. বায়োইনফরমেটিকস (Bioinformatics) : কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর জীববিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, যেমন ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান।
একটি জীবের প্রজাতি পর্যন্ত শ্রেণিবিন্যাসের ধাপগুলো বিন্যস্ত বা সাজানো থাকে এভাবে–
জগৎ (Kingdom)
পর্ব (Phylum)
শ্রেণি (Class)
বর্গ (Order)
গোত্র (Family)
গণ (Genus)
প্রজাতি (Species)
জীবের বৈজ্ঞানিক নাম আন্তর্জাতিক সংবিধান মেনে করা হয়। অর্থাৎ উদ্ভিদের নাম ICBN (International Code of Botanical Nomenclature) এবং প্রাণীর নাম ICZN (International Code of Zoological Nomenclature) নিয়ম অনুসারে করা হয়ে থাকে। যেমন-মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম : Homo sapiens.
কোনো জীবের বৈজ্ঞানিক নাম সারা বিশ্বে একই নামে পরিচিত হয়।
১। জীববিজ্ঞানের জনক কে?
ক. ডারউইন খ. হুইটটেকার
গ. ক্যারোলাস লিনিয়াস ঘ. অ্যারিস্টটল
উত্তর: অ্যারিস্টটল।
২। জননকোষের উৎপত্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় কোন শাখায়?
ক. শরীরবিদ্যা খ. ভ্রূণ বিদ্যা
গ. বংশগতি বিদ্যা ঘ. অঙ্গসংস্থান বিদ্যা
উত্তর : ভ্রূণ বিদ্যা।
৩। হ্যাপ্লয়েড স্পোরের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি ঘটে কোনটিতে?
ক. ভলভক্স খ. ডায়াটম
গ. মাশরুম ঘ. নস্টক
উত্তর : মাশরুম।
৪। শরীরবিদ্যার আলোচ্য বিষয় কোনটি?
ক. জীবের বিবর্তন খ. সালোক সংশ্লেষণ
গ. ভ্রূণের বিকাশ ঘ. টিস্যুর বিন্যাস
উত্তর : সালোকসংশ্লেষণ।
৫। Corchorus capsularis কোনটির বৈজ্ঞানিক নাম?
ক. পাট খ. ধান
গ. কাঁঠাল ঘ. শাপলা
উত্তর : পাট।
৬। ডায়াবেটিস চিকিৎসার উপাদান তৈরিতে কোন রাজ্যের জীব ব্যবহার করা হয়?
ক. মনেরা খ. প্রোটিস্টা
গ. ফানজাই ঘ. প্লান্টি
উত্তর : মনেরা।
৭। কোনটির দেহ মাইসেলিয়াম দ্বারা গঠিত?
ক. পেনিসিলিয়াম খ. প্যারামেসিয়াম
গ. ডায়াটম ঘ. ব্যাকটেরিয়া
উত্তর : পেনিসেলিয়াম।
৮। জীববিজ্ঞানের কোন শাখায় ‘যোগ্যতমের টিকে থাকা’ নিয়ে আলোচনা করা হয়?
ক. Embryology খ. Evolution
গ. Histology ঘ. Parasitology
উত্তর : Evolution
৯। পেঁয়াজের বৈজ্ঞানিক নামের গণ অংশ কোনটি?
ক. Apis খ. Solanum
গ. Allium ঘ. oryza
উত্তর : Allium
১০। হরমোন নিয়ে আলোচনা করা হয় কোনটিতে?
ক. Endocrinology খ. Microbiology
গ. Entomology ঘ. Biotechnology
উত্তর : Endocrinology ।
১১। মৌমাছির বৈজ্ঞানিক নাম কোনটি?
ক. Apis indica খ. Nymphaea nouchali
গ. Periplaneta americana ঘ. Copsychus saularis
উত্তর : Apis indica
১২। কে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্যে ভাগ করার প্রস্তাব করেন?
ক. মারগুলিস খ. আর. এইচ হুইটেকার
গ. টমাস কেভিলিয়ার স্মিথ ঘ. ক্যারোলাস লিনিয়াস
উত্তর : আর. এইচ হুইটেকার।
১৩। কোন অঙ্গাণুটি ব্যাকটেরিয়াতে উপস্থিত তাকে?
ক. মাইটোকন্ড্রিয়া খ. প্লাস্টিড
গ. এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ঘ. রাইবোজোম
উত্তর : রাইবোজোম।
১৪। জীবজগৎ সম্পর্কে সহজে ও সু–শৃঙ্খলভাবে জানতে সাহায্য করে কোনটি?
ক. Taxonomy খ. Physiology
গ. Entomology ঘ. Genetics
উত্তর : Taxonomy
১৫। নিম্নে কোন গ্রন্থে লিনিয়াস দ্বিপদ নামকরণ নীতি প্রবর্তন করেন?
ক. De Planties খ. Species Plantarum
গ. Systema Nature ঘ. Phylogenic Taxonomy
উত্তর : Species Plantarum ।
১৬। জীববিজ্ঞানের প্রায়োগিক শাখা কোনটি?
ক. ফরেস্ট্রি খ. জেনেটিক্স
গ. ইকোলজি ঘ. ট্যাক্সোনমি
উত্তর : ফরেস্ট্রি।
১৭। শ্বসন প্রক্রিয়া আলোচিত হয় কোন শাখায়?
ক. Biochemistry খ. Physiology
গ. Cytology ঘ. Histology
উত্তর : Physiology
১৮। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি কোনটি?
ক. ICZN খ. IMVN
গ. IMCB ঘ. ICBN
উত্তর : ICBN
১৯। আদি প্রকৃতির কোষে কোনটি থাকে?
ক. মাইটোকন্ড্রিয়া খ. রাইবোজোম
গ. লাইসোজোম ঘ. প্লাস্টিড
উত্তর : রাইবোজোম।
২০। কোটি প্রোটিস্টার উদাহরণ?
ক. ব্যাকটেরিয়া খ. প্যারামেসিয়াম
গ. মাশরুম ঘ. পেনিসিলিয়াম
উত্তর : প্যারামেসিয়াম।
২১। কোনটি শ্রেণিবন্যাসের সর্বোনিম্ন ধাপ?
ক. প্রজাতি খ. শ্রেণি
গ. গোত্র ঘ. গণ
উত্তর : প্রজাতি
২২। নীলাভ সবুজ শৈবাল কোন রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত?
ক. Protista খ. Plantae
গ. monera ঘ. Fungi
উত্তর : Monera
২৩। নিচের কোনটি আর্কিগোনিয়েট?
ক. Mangifera খ. Agaricus
গ. Penicillium ঘ. Nostoc
উত্তর : Mangifera
২৪। অ্যামিবাতে–
i.বহুকোষ আছে
ii. সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিদ্যমান
iii. ভ্রূণ গঠিত হয় না
নিচের কোনটি সঠিক ?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i,ii ও iii
উত্তর : i,ii ও iii ।
২৫। ফানজাই সম্পর্কে সঠিক তথ্য হলো–
i.খাদ্য গ্রহণ শোষণ পদ্ধতিতে ঘটে
ii. ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত
iii. হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশ বৃদ্ধি ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক ?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i,ii ও iii
উত্তর : i,ii ও iii ।
প্রশ্ন-১ নিচের চিত্রদ্বয় দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. শ্রেণিবিন্যাসের একক কী?
খ. বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয় কেন?
গ. চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে কীভাবে তুমি | ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মধ্যে কোন জীবটি অধিক উন্নত, কারণসহ বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীবের শ্রেণিবিন্যাসে শ্রেণিগত অবস্থান নিরূপণের জন্য যে কতকগুলো ধাপ ব্যবহৃত হয় তাদের প্রত্যেকটি ধাপকে শ্রেণিবিন্যাসের একক বলা হয়।
খ. বংশগতিবিদ্যায় জীববিজ্ঞানের অলৌকিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে একে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়। জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। বংশগতিবিদ্যায় জীবের জিন ও বংশগতিধারার তত্ত্বীয় বিষয়গুলো যেমন- জিন এর রাসায়নিক গঠন, এর মাধ্যমে জীবের বংশগতির ধারা কীভাবে বজায় থাকে ইত্যাদি আলোচনা করা হয়। এ সবই তত্ত্বীয় আলোচনা। এ কারণেই বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়।
গ. চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে নিম্নরূপে ধারাবাহিকতা বজায় রাখব :
১. উদ্ভিদটির নামকরণে অবশ্যই ল্যাটিন ভাষা ব্যবহার করব।
২. বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে। প্রথমটি গণ এবং দ্বিতীয়টি প্রজাতি।
৩. উদ্ভিদটির নামকরণে বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর হবে বাকি অক্ষরগুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখব।
৪. উদ্ভিদটির নাম মুদ্রণের সময় অবশ্যই ইটালিক ফরমে অর্থাৎ ডান দিকে বাঁকা করে অথবা মোটা অক্ষরে লিখব।
৫. উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতি নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিব।
৬. যিনি উদ্ভিদটির নাম সর্বপ্রথম দিয়েছিলেন তাঁর নামের সংক্ষিপ্তরূপ বৈজ্ঞানিক নামের শেষে যোগ করব। যেমন— লিনিয়াসের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো—L.
অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা অনুযায়ী চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে আমি ICBN কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিপদ নামকরণের ধাপগুলো অনুযায়ী ধারাবাহিকতা বজায় রাখব।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র-১ হলো মাশরুম এবং চিত্র-২ হলো দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। জীব দুটির মধ্যে চিত্র-২ এর জীবটি অধিক উন্নত। নিচে এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করা হলো:
১. মাশরুম অপুষ্পক উদ্ভিদ, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সপুষ্পক। সপুষ্পক উদ্ভিদ সর্বদাই অপুষ্পক উদ্ভিদ অপেক্ষা উন্নত।
২. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
৩. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি স্পোরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় এবং উদ্ভিদ দেহ হ্যাপ্লয়েড। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় যা উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য এবং উদ্ভিদ দেহ ডিপ্লয়েড।
৪. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়।
৫. পরিবহন কলাগুচ্ছ উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। এই পরিবহন কলাগুচ্ছ চিত্র-১ এর উদ্ভিদে অনুপস্থিত, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদে উপস্থিত।
৬. চিত্র-১ এর উদ্ভিদ দেহ নৱম, কিন্তু চিত্র-২ উদ্ভিদ দেহ বেশ শক্ত। শক্ত উদ্ভিদদেহ উন্নত উদ্ভিদেরই বৈশিষ্ট্য বহন করে। উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করে এটি নিশ্চিতরূপে বলা যায় যে, চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মধ্যে, চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি অধিক উন্নত।
প্রশ্ন-২ : নিচের চিত্রদ্বয় দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. ধানের বৈজ্ঞানিক নাম কী?
খ. দ্বিপদ নামকরণ বলতে কী বুঝায়?
গ. চিত্র-১ : জীববিজ্ঞানের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত, কারণসহ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র-২ কেন অ্যানিমেলিয়া রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের সমাধান
ক. ধানের বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativa.
খ. একটি জীবের নামকরণের দুটি অংশ থাকে। প্রথম অংশটির নাম গণ ও দ্বিতীয় অংশটির নাম প্রজাতির। এরূপ দুটি পদ নিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম বলে এবং নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ বলে।
গ. উদ্দীপকের চিত্র-১ Penicillium এর চিত্র। এটি এক ধরনের ছত্রাক ফানজাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। এই ছত্রাক থেকে জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক- পেনিসিলিন প্রস্তুত করা হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিক Penicillum এর বিভিন্ন প্রজাতি ব্যবহার করে বিভিন্ন জৈব এসিড এবং পনির উৎপাদন করা হয়। এ কারণে Penicillium কে ফলিত জীব বিজ্ঞানের অণু জীববিজ্ঞান শাখার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র-২ হচ্ছে ডায়াটম যা একটি এককোষী শৈবাল। এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য প্রোটিস্টা রাজ্যের অন্তর্গত উদ্ভিদের মতো। প্রোটিস্টা এর বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ :
i. এরা একক বা এককোষী কলোনিয়াল।
ii. এদের কোষ জড়কোষ প্রাচীর আবৃত এবং কোষে প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর থাকে।
iii. এরা প্রকৃত কোষ বিশিষ্ট।
iv. ক্রোমাটিন বডিতে DNA, RNA এবং প্রোটিন আছে।
v. খাদ্য গ্রহণ-শোষণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে।
vi. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে।
vii. কোনো ভ্রূণ গঠিত হয় না।
অন্যদিকে, অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :
প্রশ্ন –৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জীববিজ্ঞান শিক্ষক মিঃ হক তার ছাত্রদের নিয়ে বিদ্যালয়ের চারিপাশে গাছগুলো পর্যবেক্ষণ করলেন। পরবর্তীতে তিনি নানা রকম গাছ দেখিয়ে একটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করলেন যার জনক বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস। অবশেষে তিনি উক্ত বিজ্ঞানীর প্রবর্তিত নামকরণ পদ্ধতির নিয়মাবলি আলোচনা করলেন।
ক. ICZN কী?
খ. ব্যাকটেরিয়াকে মনে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কেন?
গ. শিক্ষকের আলােচিত মূল বিষয়বস্তুর উদ্দেশ্য বর্ণনা কর।
ঘ. মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানীর উদ্ভাবনকৃত পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটেছে কি ? বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ICZN হলো International Code of Zoological Nomenclature.
খ. ব্যাকটেরিয়া এককোষী, কলোনিয়াল বা মাইসেলিয়াস। এরা প্রোক্যারিওটা, অর্থাৎ কোষে ক্রোমাটিন বস্তু থাকে কিন্তু নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই। রাইবোজোম ছাড়া অন্য কোষ অঙ্গাণু নেই। কোষ বিভাজন দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। এসব বৈশিষ্ট্য মনেরা রাজ্যের জীবদের বৈশিষ্ট্য। এজন্য ব্যাকটেরিয়াকে মনে রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গ. শিক্ষকের আলোচিত মূল বিষয়বস্তু হলো শ্রেণিবিন্যাস। আর শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি জীবের দল ও উপদল সমন্ধে জ্ঞান আহরণ করা। শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্যে পৃথিবীর সকল উদ্ভিদ এবং প্রাণী সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মতভাবে অল্প পরিশ্রমে ও অল্প সময়ে জানা যায়। আবার, কোনো জীবের শ্রেণিবিন্যাস জানা থাকলে এবং উক্ত শ্রেণিবিন্যাসের ধাপগুলোর শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যাবলি জানা থাকলে সহজেই সেই বিশেষ জীবটির বৈশিষ্ট্যসমূহের ধারণা পাওয়া যায়। জীবদের বৈশিষ্ট্যের মিল ও অমিলের তুলনামূলক পর্যালােচনার মাধ্যমে অপরিচিত জীবকে সহজে চিহ্নিত ও শনাক্ত করা যায়। ক্ষতিকর ও উপকারী জীবকে শনাক্ত করা যায়। উপযুক্ত আলোচনা থেকে লক্ষ করা যায়, পৃথিবীতে যে অসংখ্য ছোট বড় ও বৈচিত্র্যময় জীব রয়েছে, এদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে পৃথকভাবে জানা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। একমাত্র শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমেই এদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট জগৎ, পর্ব, শ্রেণি, বর্ণ, গোত্র, গণ এবং প্রজাতি ইত্যাদি ধাপসমূহ স্থাপন করে জ্ঞান আহরণ করা যায়। এজন্যই শিক্ষকের আলোচিত মূল বিষয়বস্তু ছিল শ্রেণিবিন্যাস।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানীর উদ্ভাবনকৃত পদ্ধতি হলো দ্বিপদ নামকরণ। যার প্রতিফলন মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Homo sapiens । দ্বিপদ নামকরণের নীতিগুলো নিম্নরূপ
১. প্রাণীর নামকরণ International code of Zoological Nomenclature (ICZN) কর্তৃক স্বীকৃত নিয়মানুসারে হতে হবে।
২. প্রত্যেক প্রাণীর একটি বৈজ্ঞানিক নাম থাকবে যার দুটি অংশ থাকবে।
৩. দ্বিপদ নামের প্রথম অংশটি ওই প্রাণীর গণ নাম ও দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতির নাম নির্দেশ করবে। মানুষের নামের Homo অংশটি হলো গণ ও sapiens অংশটি হলো প্রজাতি।
৪. প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম অবশ্যই ল্যাটিন শব্দের হতে হবে। মানুষের নামের Homo ও sapiens দুটো শব্দই ল্যাটিন।
৫. দ্বিপদ নামকরণ সর্বদা ইটালিক হরফে হবে।
যেমন : মানুষের নাম : Homo sapiens.
৬. গণের নামের প্রথম অক্ষরটি অবশ্যই বড় হরফের এবং প্রজাতির নাম ছোট হরফে লিখতে হবে। যেমন : Homo sapiens অতএব, উপরিউক্ত নীতিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়। যে, মানুষের নামকরণের ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস কর্তৃক উদ্ভাবিত পদ্ধতিটির যথাযথ প্রতিফলন ঘটেছে।
এসএসসি-ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন অধ্যায়-০৬ : বারিমণ্ডল Hydrosphere পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি এইচএমএস চ্যালেঞ্জার :…
এসএসসি আইসিটি (ICT)-বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর পঞ্চম অধ্যায় মাল্টিমিডিয়া ও গ্রাফিক্স আশা করি পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আমাদের এই…
এসএসসি বিজ্ঞান নোট দ্বাদশ-অধ্যায় প্রাত্যহিক জীবনে তড়িৎ পাঠ সম্পর্কিত গুরত্বপূর্ণ বিষয়াদি ব্যাটারি : ব্যাটারি হলো…
নবম দশম শ্রেণি-বাংলা ১ম পত্র সাজেশন উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) পাঠ সম্পর্কিত…
এসএসসি বিজ্ঞান সাজেশন অধ্যায়– একাদশ জীবপ্রযুক্তি BIOTECHNOLOGY প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা, এসএসসি বিজ্ঞান একাদশ অধ্যায় জীবপ্রযুক্তি থেকে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক,…
বাংলা দ্বিতীয় পত্র-সাজেশন অধ্যায়-৪ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর কাল, পুরুষ এবং কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ *তথ্যকণিকা* ১. ক্রিয়া…