এসএসসি বিজ্ঞান নোট
পঞ্চম অধ্যায় : দেখতে হলে আলো চাই
দর্পণ : যে মসৃণ তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে দর্পণ বলে।
স্নেলের সূত্র : আলোর প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্রটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী স্নেল। তাই তার নাম অনুসারে এই সূত্রকে স্নেলের সূত্র বলা হয়।
সূত্রটি হলো: এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপাতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধুব থাকে।
স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব : চোখের সাপেক্ষে সবচেয়ে নিকটের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে চোখ বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পায় তাকে স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু বলে এবং চোখ হতে ঐ বিন্দুর দূরত্বকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলে।
লেন্স : দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।
বক্রতার কেন্দ্র : সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বক্রতার কেন্দ্র বলে।
লেন্সের প্রধান অক্ষ : বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারী সরলরেখাকে লেন্সের প্রধান অক্ষ বলে।
প্রধান ফোকাস : লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল এবং নিকটবর্তী রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের যে বিন্দুতে মিলিত হয় বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়। সেই বিন্দুকে লেন্সের প্রধান ফোকাস বলে।
ফোকাস দূরত্ব : লেন্সের আলোকবিন্দু থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে ফোকাস দূরত্ব বলে।
লেন্সের ক্ষমতা : এক গুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী (উত্তল লেন্স) গুচ্ছে বা অপসারী (অবতল লেন্সে) গুচ্ছে পরিণত করার প্রবণতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা।
লেন্সের ক্ষমতার একক : লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একক হলো:
ডায়প্টার (diopter) এবং এসআই একক হলো রেডিয়ান/ মিটার ।
স্পষ্ট দর্শনের দূরতম দূরত্ব : স্পষ্ট দর্শনের দূরতম দূরত্ব হলো অসীম।
হ্রষদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টি : যখন চোখ কাছের বন্ধু স্পষ্ট দেখতে পায় কিন্তু দুরের বস্তু ভালোভাবে দেখতে পায় না, তখন চোখের এই ত্রুটিকে হ্রস্বদৃষ্টি বলে ।
দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি : যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু কাছের বস্তু দেখতে পায় না তখন এই ত্রুটিকে দীর্ঘদৃষ্টি বলে।
আলোর প্রতিসরাঙ্ক : এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপাতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুব থাকে। এই ধ্রুব সংখ্যাটিই হলো প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের আলোর প্রতিসরাঙ্ক।
চোখের দৃষ্টির ত্রুটি : আমরা জানি, সুস্থ এবং স্বাভাবিক চোখের নিকট বিন্দু চোখ হতে প্রায় 25 সে.মি. দূরে এবং দূর বিন্দু চোখ হতে অসীম দূরে অবস্থান করে। এই সুদীর্ঘ দূরত্বের মধ্যে বস্তু যে স্থানেই থাকুক না কেন চোখ তাকে নির্বিঘ্নে দেখবে। এটাই চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি। কোনো কারণে এই স্বাভাবিক
দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত হলেই তাকে চোখের দৃষ্টির ত্রুটি বলা হয়।
দর্পণের ব্যবহার : দর্পণের দুটি বিশেষ ব্যবহার হলো—
i. নিরাপদ ড্রাইভিং এর ক্ষেত্রে গাড়ির সমানে দরজার দুপাশে দুটি এবং ভিতরে সামনের দিকে মাঝখানে একটি দর্পণ লাগানো থাকে। এগুলোর সাহায্যে ড্রাইভার সিটে বসেই চারপাশ দেখে নিতে পারে। গাড়ি পিছানো, লেন পরিবর্তনের আগে প্রথমেই দর্পণ তিনটিতে নজর বুলানো অতি প্রয়োজনীয় কাজ।
ii. সাধারণত পাহাড়ি রাস্তাগুলো আঁকাবাঁকা হয়। মাঝে মাঝে এদের বাঁকার পরিমাণ 90° হয়। এ অবস্থায় গাড়ি চালানো বিপদজ্জনক। এজন্যে বাঁকে বাঁকে বড় সাইজের গোলীয় দর্পণ স্ট্যান্ডে দাঁড় করে রাখা হয়।
আলোর প্রতিসরণ : আলোক এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য কোনো স্বচ্ছ যাওয়ার সময় দিক পরিবর্তন করে। এ ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে। সাধারণত ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে যাওয়ার সময় আলো অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায় এবং হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে যাওয়ার সময় এর বিপরীত ঘটনা ঘটে।
আলোর প্রতিসরণের দুটি সূত্র রয়েছে :
i. আপতিত রশ্মি, আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের ওপর অংকিত
অভিলম্ব এবং প্রতিসরিত রশ্মি একই সমতলে থাকে।
ii. এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণোর সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুব থাকে।
চোখের ক্রিয়া: চোখের উপাদানগুলোর মধ্যে রেটিনা, চোখের লেন্স, অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার মিলে একত্রে একটি অভিসারী লেন্সের মতো কাজ করে। যখনই আমাদের সামনে কোনো বস্তু থাকে, তখন ঐ বস্তু হতে আলোক রশ্মি ঐ লেন্স দ্বারা প্রতিসারিত হয় এবং রেটিনার ওপর একটি উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। রেটিনার ওপর আলো পড়লে স্নায়ুর সাথে সংযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রড ও কোণ কোষসমূহ সেই আলো গ্রহণ করে তাকে তড়িৎ প্রেরণায় পরিণত হয়। ঐ তড়িৎ প্রেরণাকে তাৎক্ষণিকভাবে অক্ষি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্ক প্রেরণ করে। এখানে উল্লেখ, কোণগুলো তীব্র আলোতে সাড়া দেয় এবং রঙের অনুভূতি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়। অন্যদিকে রডগুলো ক্ষীণ আলোতেও সংবেদনশীল হয় এবং বস্তুর নড়াচড়া ও আলোর তীব্রতার সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধি বুঝিয়ে দেয়। মস্তিষ্ক রেটিনায় সৃষ্ট উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়।
ফলে আমরা বস্তুটি যে রকম থাকে সে রকমই দেখি।
স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব : স্বাভাবিক চোখ সবচেয়ে নিকটের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পায় তাকে স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু এবং চোখ থেকে ঐ বিন্দুর দূরত্বকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলে। এর মান ২৫ সে. মি.।
লেন্স : দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে। অধিকাংশ লেন্স কাচের তৈরি।
লেন্স দুই প্রকার :
i. উত্তল বা অভিসারী বা স্থূলমধ্য লেন্স: এর মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত সরু। এটি একগুচ্ছ আলোর রশ্মিকে অভিসারী গুচ্ছে পরিণত করে।
ii. অবতল বা ক্ষীণমধ্য বা অপসারী লেন্স : এর মধ্যভাগ সরু ও প্রান্তের দিক মোটা। এটি একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে অপসারীগুচ্ছে পরিণত করে।
বক্রতার কেন্দ্র : সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বক্রতার কেন্দ্র বলে এবং লেন্সের দুই পৃষ্ঠের জন্য বক্রতার কেন্দ্র দুটি।
প্রধান অক্ষ : বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারী সরলরেখাই হলো লেন্সের প্রধান অক্ষ।
প্রধান ফোকাস : প্রধান অক্ষের সমান্তরাল এবং নিকটবর্তী রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের যে বিন্দুতে মিলিত হয় (উত্তল লেন্স) বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় (অবতল লেন্স) সেই বিন্দুকে লেন্সের প্রধান ফোকাস বলে।
ফোকাস দুরত্ব : প্রধান অক্ষ থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বই হলো লেন্সের ফোকাস দূরত্ব।
লেন্সের ক্ষমতা : একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী গুচ্ছে বা অপসারী গুচ্ছে পরিণত করার প্রবণতাকে বলা হয় লেন্সের ক্ষমতা। উত্তল লেন্সের ক্ষমতা ধণাত্মক এবং অবতল লেন্সের ঋণাত্মক। লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একক ডাইঅপটার (D) এবং এস আই একক রেডিয়ান/মিটার।
চোখের ত্রুটি : সুস্থ ও স্বাভাবিক চোখ হতে 25 সে. মি. এবং অসীমের মধ্যবর্তী সবকিছু নির্বিঘ্নে দেখে। এই দেখা ব্যাহত হলেই চোখকে ত্রুটিযুক্ত ধরা হয়।
চোখের এই ত্রুটি চার প্রকার – তন্মধ্যে প্রধান দুটি হচ্ছে :
হ্রস্বদৃষ্টি বা ক্ষীণ দৃষ্টি : এই ত্রুটি যুক্ত চোখ কাছের জিনিস দেখতে পায় কিন্তু দূরের জিনিস দেখতে পায় না। চক্ষুলেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বেড়ে গেলে এবং অক্ষি গোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে এই ত্রুটি দেখা যায়। একারণে এই ত্রুটি দূর করতে হলে অবতল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহারে করতে হয়।
দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি : এই ত্রুটিযুক্ত চোখ দূরের জিনিস দেখতে পায় কিন্তু কাছের জিনিস দেখতে পায় না। চক্ষু লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে ও অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পেলে এই ত্রুটি সৃষ্টি হয়। এই ত্রুটি দূর করতে উত্তললেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করতে হয়।
চোখ ভালো রাখার উপায় :
i. সঠিক পুষ্টি গ্রহণ : ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার, ফ্যাটি এসিডযুক্ত খাবার, জিংকসমৃদ্ধ খাবার, গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন ফল চোখকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। মিষ্টি আলু, গাজর, চর্বিযুক্ত মাছ, গম, মিষ্টি কুমড়া, ফল ইত্যাদি বেশি বেশি খাওয়া দরকার।
ii. সঠিক জীবনধারা অনুসরণ : পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো, ধূমপান না করা, প্রখর রোদে সানগ্লাস পরা, রান্না ও ঝালাইয়ের সময় ‘সাবধান‘ থাকা ইত্যাদি সঠিক জীবনধারন এর মধ্যে অন্তর্গত।
ii. পর্যাপ্ত আলো ব্যবহার : অপর্যাপ্ত আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। একারণে পর্যাপ্ত আলোতে পড়াশুনা করতে হবে।
iv. সঠিক নিয়মে বই পড়া : আমাদের চোখের স্পষ্ট দর্শনের ন্যূনতম দূরত্ব থেকে কম বা বেশি দূরত্বে রেখে বই বা কিছু পড়লে চোখে চাপ পড়ে। তাই সঠিক দূরত্বে রেখে পড়তে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের ক্ষতি হয়। তাই এই ক্ষতি থেকে চোখকে রক্ষা করতে নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে ও বিরতি দিয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করা উচিত।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। আলোর প্রতিসরণের ২য় সূত্রটি বিবৃত কর।
উত্তর : আলোর প্রতিসরণের ২য় সূত্রটি হলো ‘এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুব থাকে।’
২। চালশে কী?
উত্তর : চোখের যে ত্রুটিতে কাছের ও দূরের জিনিস ঠিকমতো দেখা যায় না, সেই ত্রুটিকে চালশে বলে। সাধারণত চল্লিশ বছর বয়সের পর চালশে পরিলক্ষিত হয়।
৩। মাধ্যাকর্ষণ বল কাকে বলে?
উত্তর : এ মহাবিশ্বের সকল বস্তু এদের ভরের দরুন পরস্পরের ওপর যে বল প্রয়োগ করে একে অপরকে নিজের দিকে টানে তাকে মাধ্যাকর্ষণ বল বলে।
৪। পরম প্রতিসরণাক কী?
উত্তর : শূন্য মাধ্যমের সাপেক্ষে কোনো মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ককে ঐ মাধ্যমের পরম প্রতিসরণাঙ্ক বলে।
৫। লেন্স কী?
উত্তর : লেন্স হলো দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ, সমসত্ত্ব প্রতিসারক মাধ্যম।
৬। লেন্সের ক্ষমতার এসআই একক কী?
উত্তর : লেন্সের ক্ষমতার এসআই একক হলো রেডিয়ান/মিটার।
৭। আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
উত্তর : দুটি ভিন্ন ঘনত্বের এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে আরেক স্বচ্ছ মাধ্যমে যাওয়ার সময় আলোর বেঁকে যাওয়ার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
৮। আলো কী?
উত্তর : আলো হচ্ছে সেই শক্তি যার সাহায্যে আমরা দেখতে পাই। অর্থাৎ আলো এক প্রকার শক্তি যা আমাদের দর্শনের অনুভূতি জাগায়।
৯। দৰ্পণ কাকে বলে?
উত্তর : যে মসৃণ তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে দর্পণ বলে।
১০। স্নেলের সূত্র কী?
উত্তর : আলোর প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্রটি আবিষ্কার করেন জার্মান বিজ্ঞানী স্নেল। তাই তার নাম অনুসারে এই সূত্রকে স্নেলের সূত্র বলা হয়।
১১। পানিতে নৌকার বৈঠা বাঁকা দেখা যাওয়ার কারণ কী?
উত্তর : পানিতে নৌকার বৈঠা বাঁকা দেখা যাওয়ার কারণ হলো আলোর প্রতিসরণ।
১২। প্রতিসরণাঙ্কের মান কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : প্রতিসরণাঙ্কের মান দুটি নিয়ামকের ওপর নির্ভরশীল।
i. মাধ্যমদ্বয়ের প্রকৃতি ও
ii. আলোর রঙ।
১৩। চোখের কোন উপাদানগুলো মিলে অভিসারী লেন্সের মতো কাজ করে?
উত্তর : চোখের উপাদানগুলোর মধ্যে রেটিনা, চোখের লেন্স, অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার মিলে একত্রে একটি অভিসারী লেন্সের মতো কাজ করে।
১৪। রেটিনাতে আলোক সংবেদী কত ধরনের কোষ থাকে?
উত্তর : রেটিনাতে আলোক সংবেদী দুই ধরনের কোষ থাকে। [ রড ও কোণ ]
১৫। স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কাকে বলে?
উত্তর : চক্ষুর সাপেক্ষে সবচেয়ে নিকটের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে চোখ বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পায় তাকে স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু বলে এবং চোখ হতে ঐ বিন্দুর দূরত্বকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলে।
১৬। স্বাভাবিক চোখে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
উত্তর : স্বাভাবিক চোখে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব হলো ২৫ সে.মি. বা ১০ ইঞ্চি।
১৭। লেন্স কী?
উত্তর : দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।
১৮। লেন্স কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : লেন্স প্রধানত দুপ্রকার। যথা-
i. উত্তল বা অভিসারী লেন্স (convex lens)
ii. অবতল বা অপসারী লেন্স (Concave lens)
১৯। বক্রতার কেন্দ্র কী?
উত্তর : সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বক্রতার কেন্দ্র বলে।
২০। লেন্সের প্রধান অক্ষ কাকে বলে?
উত্তর : বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারী সরলরেখাকে লেন্সের প্রধান অক্ষ বলে।
২১। ফোকাস দূরত্ব কাকে বলে?
উত্তর : লেন্সের আলোকবিন্দু থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে ফোকাস দূরত্ব বলে।
২২। লেন্সের ক্ষমতা কী?
উত্তর : লেন্সের আলোকরশ্মিকে অভিসারী বা অপসারী করার ক্ষমতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা।
২৩। লেন্সের ক্ষমতার একক কী?
উত্তর : লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একক হলো ডায়প্টার (dioptre) এবং এসআই একক হলো রেডিয়ান/মিটার।
২৪। স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম দূরত্ব কত?
উত্তর : স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম দূরত্ব হলো ২৫ সেন্টিমিটার।
২৫। স্পষ্ট দর্শনের দূরতম দূরত্ব কত?
উত্তর : স্পষ্ট দর্শনের দূরতম দূরত্ব হলো অসীম।
২৬। চোখের দৃষ্টির ত্রুটি কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : চোখের দৃষ্টির ত্রুটি প্রধানত দুই প্রকার। যথা
i.হ্রস্বদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টি;
ii. দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি;
২৭। হ্রস্বদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টি কী?
উত্তর : যখন চোখ কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায় কিন্তু দূরের বস্তু ভালোভাবে দেখতে পায় না, তখন চোখের এই ত্রুটিকে হ্রস্বদৃষ্টি বলে ।
২৮। দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি কী?
উত্তর : যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু কাছের বস্তু দেখতে পায় না তখন এই ত্রুটিকে দীর্ঘদৃষ্টি বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। আমরা কীভাবে দেখতে পাই?
উত্তর : যখনই আমাদের সামনে কোনো বস্তু থাকে, তখন ঐ বস্তু হতে আলোকরশ্মি অভিসারী লেন্স দ্বারা প্রতিসরিত হয় এবং রেটিনার ওপর একটি উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। রেটিনার ওপর আলো পড়লে স্নায়ুর সাথে সংযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রড ও কোন কোষসমূহ সেই আলো গ্রহণ করে তাকে তড়িৎ প্রেরণায় পরিণত করে। ঐ স্নায়ু তড়িৎ প্রেরণাকে তাৎক্ষণিকভাবে অক্ষি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে। মস্তিষ্ক রেটিনায় সৃষ্ট উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়। ফলে আমরা বস্তুটি দেখতে পাই।
২। রড কোষ ও কোন কোষের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : রড কোষ ও কোন কোষের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো—
রড কোষ | কোন কোষ |
i. ক্ষীণ আলোতে সংবেদনশীল। | i. তীব্র আলোতে সংবেদনশীল। |
ii. বস্তুর নড়াচড়া ও আলোর তীব্রতার সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধি বুঝিয়ে দেয়। | ii. রঙের অনুভূতি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়। |
৩। অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার কী ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কর্নিয়া ও চক্ষু লেন্সের মধ্যবর্তী স্থান যে স্বচ্ছ লবণাক্ত জলীয় পদার্থে পূর্ণ থাকে তাকে অ্যাকুয়াস হিউমার বলে। রেটিনা ও চক্ষু লেন্সের মধ্যবর্তী স্থান যে জেলিজাতীয় পদার্থে পূর্ণ থাকে তাকে ভিট্রিয়াস হিউমার বলে।
৪। চালশে কী?
উত্তর : চালশে হলো বার্ধক্য দৃষ্টি। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের চোখের উপযোজন ক্ষমতা কমে যায় এবং এর ফলে মানুষ কাছের বা দূরের কোনো বস্তুই স্পষ্ট দেখতে পায় না। সাধারণত চল্লিশ বছর বয়সের পর চোখের এ ত্রুটি দেখা দেয় বলে একে বার্ধক্য দৃষ্টি বা চালশে বলে।
৫। পানিতে কোনো লাঠি ডুবালে বাঁকা দেখা যায় কেন?
উত্তর : আলোকরশ্মি ঘনতর মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করলে প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্ব হতে দূরে সরে যায়। তাই পানিতে কোনো লাঠি ডুবালে দণ্ডের উপরের অংশকে যথাস্থানে দেখা গেলেও নিমজ্জিত অংশটি খানিকটা উপরে দেখা যায় বলে লাঠির দণ্ডকে বাঁকা দেখায়।
৬। চোখের উপযোজন ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : চোখের লেন্সের একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে এর আকৃতি প্রয়োজনমতো বদলে যায়, ফলে ফোকাস দূরত্বের পরিবর্তন ঘটে। ফোকাস দূরত্বের পরিবর্তনের ফলে লক্ষ্যবস্তুর যেকোনো অবস্থানের জন্য লেন্স থেকে একই দূরত্বে অর্থাৎ রেটিনার ওপর স্পষ্ট বিম্ব গঠিত হয়। যেকোনো দূরত্বের বস্তু দেখার জন্য চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে বিম্বস্থাপন বা সংযোজন ক্ষমতা বা উপযোজন ক্ষমতা বলে এবং এই প্রক্রিয়াকে বিম্ব স্থাপন বা চোখের সংযোজন বা উপযোজন বলে।
৭। চশমার ক্ষমতা —2D বলতে কী বোঝ?
উত্তর : চশমার ক্ষমতা -2D বলতে বোঝায়, লেন্সটি অবতল এবং এটি প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে এমনভাবে অপসারিত করে যে দেখে মনে হয় এগুলো কোনো লেন্স থেকে 50 সে.মি. দূরের কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে।
৮। অন্ধকার ও তীব্র আলোর অনুভূতি চোখ কীভাবে বুঝতে পারে?
উত্তর : চোখের রেটিনায় রড ও কোন নামে দুই ধরনের তন্তু থাকে, যা চোখের ওপর আপতিত আলো গ্রহণ করে একটি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে। রডগুলো ক্ষীণ আলোতে সংবেদনশীল এবং কোনগুলো তীব্র আলোতে সাড়া দিয়ে চোখকে রঙের অনুভূতি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়। এভাবেই চোখ অন্ধকার ও তীব্র আলোর অনুভূতি বুঝতে পারে।
৯। লেন্সের ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : এক গুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী (উত্তল লেন্সে) গুচ্ছে বা অপসারী (অবতল লেন্স) গুচ্ছে পরিণত করার প্রবণতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা। লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একক হলো ডায়প্টার। লেন্সের ক্ষমতা ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে।
১০। পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালানো বিপজ্জনক কেন?
উত্তর : সাধারণত পাহাড়ি রাস্তা আঁকাবাঁকা হয়। কিছু কিছু জায়গায় এমনও অদৃশ্য বাঁক থাকে যে পরবর্তী রাস্তাটি প্রায় ৯০° কোণে থাকে। এরূপ বাঁকের কারণে পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালানো বিপজ্জনক।
১১। আলোর প্রতিসরণের সূত্র কয়টি ও কী কী?
উত্তর : আলোর প্রতিসরণ দুটি সূত্র মেনে চলে। যথা-
i. আপতিত রশ্মি, আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব এবং প্রতিসরিত রশ্মি একই সমতলে থাকে।
ii. এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুব থাকে।
১২। মাধ্যমের জন্য আলোকরশ্মির দিকের কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর : আলোকরশ্মি যদি হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে প্রবেশ করে তাহলে প্রতিসরিত রশ্মি অভিলম্বের দিকে সরে আসে। আবার যদি আলোকরশি ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করে তাহলে প্রতিসরিত রশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়।
১৩। আলোর প্রতিসরাঙ্ক বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : এক জোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুব থাকে। এই ধ্রুব সংখ্যাটিই হলো প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের আলোর প্রতিসরণাঙ্ক।
১৪। বায়ুর সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক ১.৫ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আলোকরশ্মি যদি বায়ুমাধ্যম থেকে কাচে প্রবেশ করে তখন যেকোনো রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত হবে ১.৫। এখানে কাচ বায়ু অপেক্ষা ঘন, তাই এই অনুপাত মান ১-এর চেয়ে বেশি।
১৫। কোনো লেন্সের ক্ষমতা +1D বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো লেন্সের ক্ষমতা +1D বলতে বোঝায়, লেন্সটি উত্তল এবং এটি প্রধান অক্ষের ১ মিটার দূরে আলোকরশ্মিগুচ্ছকে মিলিত করবে।
১৬। কোনো লেন্সের ক্ষমতা –2D বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো লেন্সের ক্ষমতা –2D বলতে বোঝায় লেন্সটি অবতল এবং এটি প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে এমনভাবে অপসারিত করে, যা দেখে মনে হয় এগুলো কোনো লেন্স থেকে 50 সেন্টিমিটার দূরের কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে।
১৭। চোখের দৃষ্টির ত্রুটি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আমরা জানি, সুস্থ এবং স্বাভাবিক চোখের নিকট বিন্দু চোখ হতে প্রায় 25 সে.মি. দূরে এবং দূরবিন্দু চোখ হতে অসীম দূরে অবস্থান করে। এই সুদীর্ঘ দূরত্বের বস্তু যে স্থানেই থাকুক কোনো চোখ তাকে সহজে দেখবে। এটাই চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি। কোনো কারণে এই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত হলেই তাকে চোখের দৃষ্টির ত্রুটি বলা হয়।
১৮। চোখের দূরদৃষ্টি বা দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটির কারণ উল্লেখ কর।
উত্তর : দুটি কারণে চোখের দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি হয়। যথা-
i. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে অথবা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পেলে।
ii. কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পেলে।
১৯। লেন্সের ক্ষমতা এবং ফোকাস দূরত্রে মধ্যে সম্পর্ক কীরূপ?
উত্তর : লেন্সের ক্ষমতা তার ফোকাস দূরত্বের ব্যস্তানুপাতিক।
অর্থাৎ P = 1/f
এখানে, P = লেন্সের ক্ষমতা
f = ফোকাস দূরত্ব
সুতরাং যে লেন্সের ফোকাস দূরত্ব যত কম, তার ক্ষমতা তত বেশি।
২০। চোখ ভালো রাখার উপায় উল্লেখ কর।
উত্তর : চোখ আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। বিভিন্ন উপায়ে আমাদের চোখকে ভালো রাখা যায়। এগুলোর মধ্যে। অন্যতম হলো-
i. সঠিক পুষ্টি গ্রহণ।
ii. সঠিক জীবনধারা অনুসরণ
iii. দৈনন্দিন কার্যক্রমে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবহার।
iv. সঠিক নিয়মে বই পড়া বা কম্পিউটার দেখা ইত্যাদি।
২১। পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে কেন গোলীয় দর্পণ স্ট্যান্ড ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : পাহাড়ি রাস্তা সাধারণত আঁকাবাঁকা হয়। অনেক সময় এমনও অদৃশ্য বাঁক থাকে যে পরবর্তী রাস্তাটি প্রায় ৯০° কোণে থাকে। এই কারণে পাহাড়ি রাস্তায় ড্রাইভিং করা বিপজ্জনক। এর দরুন পাহাড়ি রাস্তায় বিভিন্ন বাঁকে বড় সাইজের গোলীয় দর্পণ স্ট্যান্ডে দাঁড় করে রাখা হয়। ফলে এর কাছাকাছি এসে দর্পণে তাকালে বাঁকের অন্য পাশ থেকে কোনো গাড়ি আসে কি তা দেখা যায় এবং ড্রাইভার সাবধান হয়ে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারে।
২২। উত্তল লেন্স ও অবতল লেন্সের মধ্যে দুটি পার্থক্য লিখ।
উত্তর: উত্তল লেন্স ও অবতল লেন্সের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ:
উত্তল লেন্স | অবতল লেন্স |
i. এটি স্থলমধ্য লেন্স। অর্থাৎ এর মধ্যভাগ অপেক্ষাকৃত মোটা। | i. এটি ক্ষীণমধ্য লেন্স। অর্থাৎ এর মধ্যভাগ অপেক্ষাকৃত সরু। |
ii. এর ফোকাস দূরত্ব ধনাত্মক | ii. এর ফোকাস দূরত্ব ঋণাত্মক |
২৩। স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: চোখের সাপেক্ষে সবচেয়ে নিকটের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে বিনা শ্রান্তিতে চোখে স্পষ্ট দেখা যায় তাই স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু এবং চোখ হতে ঐ বিন্দুর দূরত্ব হলো স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব। এই দূরত্ব মানুষের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। একজন স্বাভাবিক বয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার হয়।
২৪। চোখ কীভাবে কোনো বস্তুকে দেখতে পায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যখনই আমাদের সামনে কোনো বস্তু থাকে, তখন ঐ বস্তু হতে আলোক রশি চোখের লেন্স দ্বারা প্রতিসরিত হয় এবং রেটিনার ওপর একটি উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। মস্তিষ্ক রেটিনায় সৃষ্ট উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়। ফলে আমরা বস্তুটিকে দেখি। এভাবে চোখ কাজ করে।
২৫। আলোর প্রতিসরণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: আলো যখন একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে লম্বভাবে আপতিত না হয়ে তির্যকভাবে আপতিত হয়, তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতলে এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। আলোক রশির এভাবে দিক পরিবর্তন করার ঘটনাই হলো আলোর প্রতিসরণ।
২৬। কোনো লেন্সের ক্ষমতা +3D বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো লেন্সের ক্ষমতা +3D বলতে বোঝায় লেন্সটি উত্তল এবং এটি প্রধান অক্ষের প্রায় ৩৩ সেমি, দূরে আলোক রশ্মিগুচ্ছকে মিলিত করতে পারবে।
২৭। কোনো লেন্সের ক্ষমতা-2.5p বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো লেন্সের ক্ষমতা -2.5D বলতে বোঝায় লেন্সটি অবতল এবং এটি প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একগুচ্ছ আলোক রশ্মিকে এমনভাবে অপসারিত করে যেন এগুলো লেন্স থেকে 40cm দরের কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় ।
তথ্যকণিকা
১. নিরাপদে ড্রাইভিং করা জরুরি —আশেপাশে খেয়াল রেখে।
২. পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে থাকে— ৯০° কোণ।
৩. সেন পরিবর্তনের সময় এবং গাড়ি পেছানোর সময় ড্রাইভারকে চোখ রাখতে হয়। গাড়ির তিনটি দর্পণে।
৪. আলোর প্রতিসরণের সূত্র—২টি।
৫. সংকোট কোণের ক্ষেত্রে প্রতিসরণ কোণ— ৯০°।
৬. আপতিত রশ্মি যে বিন্দুতে বিভেদতলে পড়ে তাকে বলে—আপতন বিন্দু।
৭. দুটি মাধ্যমের ঘনত্ব ভিন্ন হলে এবং আলোকরশ্মি তীর্যকভাবে আপতিত হলে ভিন্ন হয়— আলোর গতিপথ।।
৮. হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে আলোক রশ্মি আপতিত হলে প্রতিসরিত রশি বেঁকে যায়— অভিলম্বের দিকে ।
৯. আলোর বেগ বেশি থাকে—হালকা মাধ্যমে।
১০. ১-কে লেন্সের ফোকাস দূরত্ব দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায়—লেন্সের ক্ষমতা।
১১. লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল রশ্মি প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের যে বিন্দুতে মিলিত হয় বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, সেই বিন্দুকে বলে— লেন্সের প্রধান ফোকাস।
১২. লেন্সের বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারীর সরলরেখাকে বলে—প্রধান অক্ষ।
১৩. আলোর বিচ্ছুরণের জন্য দিগন্তের কাছে বড় দেখায়— চাঁদ।
১৪. অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে ব্যবহার করা হয়—অবতল লেন্স।
১৫. লেন্সের ক্ষমতা ধনাত্মক হলে লেন্সটি—উত্তল।
১৬. লেন্সের ক্ষমতা ঋণাত্মক হলে লেন্সটি—অবতল।
১৭. লেন্সের ফোকাস দূরত্ব ও ক্ষমতার সম্পর্ক—ব্যাস্তানুপাতিক।
১৮. লেন্সে গোলীয় পৃষ্ঠ, বক্রতার কেন্দ্র ও বক্রতার ব্যাসার্ধ থাকে—দুটি।
১৯. দূরের বস্তু পরিষ্কার করে দেখতে ব্যবহৃত হয়—অবতল লেন্সের চশমা।।
২০. চোখের লেন্সের অভিসারী শক্তি ও অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে ব্যবহৃত হয়—অবতল লেন্স।
২১. ক্ষীণ দৃষ্টি ত্রুটি দূর করতে ব্যবহৃত হয়— অবতল লেন্সের চশমা।
২২. দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি হচ্ছে—বার্ধক্যজনিত ত্রুটি।
২৩. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা ও অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বেড়ে গেলে দেখা দেয়—ক্ষীণ বা হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি।
২৪. মায়োপিয়াতে বস্তু থেকে আসা আলোকরশি রেটিনায় প্রতিবিম্ব না তৈরি করে প্রতিবিম্ব তৈরি করে—একটু সামনে।
২৫. প্রাপ্ত বয়স্কদের স্বাভাবিক চোখের স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব—২৫ সে.মি.।
২৬. চোখের রেটিনায় প্রতিবিম্ব গঠিত হয়—উল্টো।
২৭. যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু দেখে কিন্তু কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায় না তাকে বলে— দীর্ঘ দৃষ্টি ত্রুটি।
২৮. মায়োপিয়ার লক্ষণ—দৃষ্টিক্ষীণতা।
২৯. লেন্সের কাজ করে না—মানব চোখের কর্ণিয়া।
৩০. স্পষ্ট দর্শনের নূন্যতম দূরত্ব—২৫ সে.মি.।
৩১. দর্পণে ঘটে—আলোর প্রতিফলন।
৩২. পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে ব্যবহার করা হয়—গোলীয় দর্পণ।
৩৩. ড্রাইভিং করা বিপজ্জনক—পাহাড়ী রাস্তায়।
৩৪. পাহাড়ি রাস্তায় ড্রাইভিং করা বিপদজনক কারণ—রাস্তায় বাঁক থাকে।
৩৫. গাড়ীর দুপাশে ও পিছনের দিকে দেখার জন্য গাড়িতে ব্যবহার করা হয়—দর্পণ।
৩৬. সাধারণত গাড়ির সামনের দরজার সম্মুখে দুপাশে ব্যবহার করা হয়—দুটি দর্পণ
৩৭. গাড়ির ভিতরে সামনের দিকে মাঝখানে থাকে—একটি দর্পণ।
৩৮. গাড়ী চালনা শুরুর পূর্বে যথাযথভাবে স্থাপন করে নিতে হয়—দর্পণগুলোকে।
৩৯. সাধারণত আঁকাবাঁকা হয়—পাহাড়ী রাস্তা।
৪০. পার্বত্য অঞ্চলে রাস্তার বাঁক হতে পারে—৯০° পর্যন্ত।
৪১. আলোক রশ্মি সর্বদা সরলরেখায় চলার জন্য প্রয়োজন—স্বচ্ছ সমসত্ব মাধ্যম।
৪২. আপতিত রশি আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব এবং প্রতিসরিত রশি থাকে— একই সমতলে।
৪৩. একজোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যমে ও নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদা—ধ্রুব।
৪৪. আলোর প্রতিসরণের সূত্র— দুইটি।
৪৫. রেটিনায় সৃষ্ট প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টে দেয়— মস্তিষ্ক।
৪৬. একজোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নিদিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত কে বলে—প্রতিসরাঙ্ক।
৪৭. মাধমের বিভেদতলে আলোক রশির দিক পরিবর্তনের ঘটনাকে বলে—প্রতিসরণ।
৪৮. আলোর প্রতিসরনের জন্য আলোক রশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশ করে তির্যক ভাবে।
৪৯. প্রতিসরাঙ্ককে প্রকাশ করা হয়— n দ্বারা।
৫০. কোনো একক নেই— প্রতিসরাঙ্কের।
৫১. অভিসারী লেন্সের মতো কাজ করে—চোখ ।
৫২. বস্তুর নড়াচড়া ও আলোর তীব্রতার সামন্য হ্রাস বৃদ্ধি বুঝিয়ে দেয়—রড কোষ।
৫৩. রঙের অনুভূতি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়—কোণ কোষ।
৫৪. তড়িৎ প্রেরনা মস্তিষ্কে প্রেরিত হয়—অক্ষি স্নায়ুর মাধ্যমে।
৫৫. স্বাভাবিক চোখে স্পষ্ট দৃষ্টি ন্যূনতম দূরত্ব—২৫ cm.
৫৬. একটি শিশুর ক্ষেত্রে স্পষ্ট দৃষ্টির নূন্যতম দূরত্ব—৫ cm.
৫৭. যে নিকটতম দূরত্ব পর্যন্ত চোখ বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পারে তাকে বলে— স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব।
৫৮. রেটিনায় সৃষ্টি উল্টো প্রতিবিম্ব পুনরায় উল্টে দেয়—মস্তিষ্ক।
৫৯. চোখের প্রতিবিম্ব গঠিত হয়—রেটিনায় ।
৬০. রেটিনার উপর আলো পড়লে রড ও কোণ কোষসমূহ সেই আলো গ্রহণ করে পরিণত করে—তড়িৎ প্রেরণার ।
৬১. দুটি গোলীয় পৃষ্ট দ্বারা সীমাবদ্ধ স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে বলে—লেন্স।
৬২. মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত ভাগ সরু—উত্তল লেন্সের ।
৬৩. মধ্যভাগ সরু ও প্রান্ত ভাগ মোটা হয়—অবতল লেন্সের ।
৬৪. সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠ সমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বলে —বক্রতার কেন্দ্র।
৬৫. বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্যে দিয়ে গমনকারী সরলরেখাই হলে—লেন্সের প্রধান অক্ষ।
৬৬. প্রধান অক্ষ থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে বলে—লেন্সের ফোকাস দূরত্ব।
৬৭. আলোক রশিকে একটি বিন্দুতে মিলিত করে—উত্তল লেন্স।
৬৮. লেন্সের বক্রতার পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশবিশেষ তার ব্যাসার্ধকে বলে—বক্রতার ব্যাসার্ধ ।
৬৯. লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একককে বলে— ডায়প্টার।
৭০. উত্তল লেন্সের ক্ষমতা—ধনাত্বক।
৭১. যখন চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু দূরের জিনিস দেখতে পায় না তাকে বলে—ক্ষীণ দৃষ্টি বা হ্রস্বদৃষ্টি।
৭২. চোখের ত্রুটি হয়—চার ধরনের ।
৭৩. চোখের লেন্সে অভিসারী শক্তি বৃদ্ধি পেলে দেখা দেয়—হ্রস্বদৃষ্টি।
৭৪. অবতল লেন্সকে চশমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়—হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটিতে।
৭৫. যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখে কিন্তু কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায় না তাকে ঝলে—দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি।
৭৬. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা কমে গেলে সৃষ্টি হয়— দীর্ঘদৃষ্টি।
৭৭. চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পেলে দেখা দেয়—দীর্ঘদৃষ্টি ।
৭৮. দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটিতে চশমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়—উত্তল লেন্স।
৭৯. চোখের উত্তল লেন্সের অভিসারী ক্রিয়ার বিপরীতে ক্রিয়া করে—অবতল লেন্স।
৮০. অসীম দূরত্বের বস্তু থেকে নির্গত আলোকরশ্মি সমান্তরালে অপসারিত হয়—অবতল লেন্সের মধ্যে দিয়ে।
৮১. চোখ ভাল রাখার জন্য প্রয়োজন—ভিটামিন-এ।
৮২. চোখের জন্য ক্ষতিকর—অতিবেগুনি রশ্মি।
৮৩. চোখকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে—মিষ্টি কুমড়া।
৮৪. প্রখর রোদে ব্যবহার করা উচিৎ—সান গ্লাস।
৮৫. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার হলো—লেবু।
৮৬. চোখের জন্য ক্ষতিকর— অপর্যাপ্ত আলো।
৮৭. চোখ ক্লান্ত মনে হলে—বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
৮৮. চোখকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে—চর্বিযুক্ত মাছ ।
৮৯. টেলিভিশন ও কম্পিউটার একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে ও বিরতি দিয়ে দেখা উচিত—চোখকে রক্ষা করার জন্য।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. স্বাভাবিক বয়স্ক লোকের চোখে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
গ. ২৫ সেমি ঘ. ৫০ সেমি
উত্তর: গ. ২৫ সেমি
২. উত্তল লেন্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলো –
i. এটির ক্ষমতা ধনাত্মক
ii. লেন্সের মধ্যভাগ সরু ও প্রান্ত মোটা
iii. সমান্তরাল রশ্মিগুলোকে একটি বিন্দুতে মিলিত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
চিত্রটি লক্ষ কর এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৩. উদ্দীপকে উল্লিখিত চোখের ত্রুটিকে কী বলা হয়?
ক. হ্রস্বদৃষ্টি খ. দীর্ঘদৃষ্টি
গ. বার্ধক্য দৃষ্টি ঘ. বিষম দৃষ্টি
উত্তর: ক. হ্রস্বদৃষ্টি
৪. উল্লিখিত ত্রুটি দূর করতে হলে কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করতে হবে?
ক. উত্তল লেন্স খ. অবতল লেন্স
গ. উত্তলাবতল লেন্স ঘ. সমতলাবতল লেন্স
উত্তর: খ. অবতল লেন্স
৫. পাহাড়ী রাস্তার বাঁকে কোণ কত থাকে?
ক. 0° খ. 45°
গ. 60° ঘ. 90°
উত্তর: ঘ. 90°
৬. ড্রাইভারকে গাড়ির তিনটি দর্পনে চোখ রাখতে হয় কখন-
i. গাড়ি থামিয়ে রাখা হয়
ii. গাড়ি পেছানোর দরকার হয়
iii. লেন পরিবর্তনের সময়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭. আলোর প্রতিসরণের সূত্র কয়টি?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: ক. ২টি
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
৯. উদ্দীপকের চিত্রে-
i. a মাধ্যমের চেয়ে b মাধ্যম ঘন
ii. OB প্রতিসরিত রশ্মি
iii. a মাধ্যমে আলোর বেগ বেশি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
১০. একটি অবতল লেন্সের ফোকাস দূরত্ব ১ মিটার হলে সেটির ক্ষমতা কত?
ক. -2D খ. +2D
গ. -1D ঘ. +1D
উত্তর: গ. -1D
১১. উত্তল লেন্সের ফোকাস দূরত্ব ৫০ সেমি. হলে তার ক্ষমতা কত হবে?
ক. ০.২D খ. ২D
গ. -০.২D ঘ. -২D
উত্তর: খ. ২D
১২. সংকোট কোণের ক্ষেত্রে প্রতিসরন কোণ কত?
গ. 60° ঘ. 180°
উত্তর: খ. 90°
১৩. লেন্সের বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্যে দিয়ে গমনকারী সরলরেখাকে বলে?
ক. ফোকাস দূরত্ব খ. আলোক বিন্দু
গ. প্রধান ফোকাস ঘ. প্রধান অক্ষ
উত্তর: ঘ. প্রধান অক্ষ
১৪. চাঁদ দিগন্তের কাছে বড় দেখায় কেন?
ক. আলোর বিচ্ছুরণের জন্য খ. বায়ুমণ্ডলীয় প্রতিসরণ এর জন্য
গ. অপবর্তন এর জন্য ঘ. দৃষ্টি বিভ্রম এর জন্য
উত্তর: ক. আলোর বিচ্ছুরণের জন্য
১৫. কোনটি নিরাপদ ড্রাইভিং এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়?
ক. শুধু সামনে তাকানো খ. আশেপাশে খেয়াল রাখা
গ. নড়াচড়া না করা ঘ. পেছনে তাকিয়ে দেখা
উত্তর: খ. আশেপাশে খেয়াল রাখা
১৬. কোনো লেন্সের ক্ষমতা +1D বলতে বোঝায়?
ক. লেন্সটি অবতল খ. লেন্সটি সমতল
গ. লেন্সটি উত্তলাবতল ঘ. লেন্সটি উত্তল
উত্তর: ঘ. লেন্সটি উত্তল
১৭. লেন্সের ফোকাস দূরত্ব ও ক্ষমতার সম্পর্ক কেমন?
ক. সমান খ. কখনও কম, কখনও বেশি
গ. সমানুপাতিক ঘ. ব্যাস্তানুপাতিক
উত্তর: ঘ. ব্যাস্তানুপাতিক
১৮. কোন লেন্সের ক্ষমতা -2D হলে লেন্সটি কোন প্রকৃতির?
ক. উত্তল খ. অবতল
গ. উভলোত্তল ঘ. সবগুলোই
উত্তর: খ. অবতল
১৯. লেন্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য–
i. দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা লেন্স গঠিত
ii. লেন্সের বক্রতার কেন্দ্র ও বক্রতার ব্যাসার্ধ দুটি
iii. তিনটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা লেন্স গঠিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
২০. একটি লেন্সের ক্ষমতা +2D এর ফোকাস দূরত্ব–
i. ২ মিটার
ii. ১/২ মিটার
iii. ৫০ সেন্টিমিটার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
নিচের অংশটি পড় এবং ২১ ও ২২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
এক ব্যক্তি চশমার জন্য +1d ক্ষমতাসম্পন্ন একটি লেন্স ব্যবহার করেন।
২১. লেন্সটি কিরূপ?
ক. উত্তল খ. অবতল
গ. উত্তলাবতল ঘ. সমতল
উত্তর: ক. উত্তল
২২. লেন্সটির ফোকাস দূরত্ব কত?
ক. ২ মি. খ. ১.৭৫ মি.
গ. ১ মি. ঘ. ০.৫ মি.
উত্তর: গ. ১ মি.
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২৩ ও ২৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
রহমান সাহেব কাছের বস্তু ভালই দেখতে পান কিন্তু দূরের বস্তু পরিস্কার দেখতে পান না।
২৩. রহমান সাহেবকে দৃষ্টির এই ত্রুটি দূর করতে হলে ব্যবহার করতে হবে?
ক. উত্তল লেন্সের চশমা খ. দ্বি উত্তল লেন্সের চশমা
গ. অবতল লেন্সের চশমা ঘ. দ্বি অবতল লেন্সের চশমা
উত্তর: গ. অবতল লেন্সের চশমা
২৪. তাঁর চোখের এই ত্রুটি–
i. চোখের লেন্সের অভিসারী শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে
ii. চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে
ii. অক্ষি গোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেয়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
২৫. অবতল লেন্সের চশমা ব্যবহার করে কোন ধরনের ত্রুটি দূর করা যায়?
ক. দীর্ঘ দৃষ্টি খ. ক্ষীণ দৃষ্টি
গ. বার্ধক্য দৃষ্টি ঘ. বিষম দৃষ্টি
উত্তর: খ. ক্ষীণ দৃষ্টি
২৬. কোনটি বার্ধক্যজনিত ত্রুটি?
ক. হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি খ. দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি
গ. চালশে ঘ. নকুলান্ধতা
উত্তর: খ. দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি
২৭. ক্ষীণ দৃষ্টির কারণ কোনটি?
ক. অক্ষিগোলকে ব্যাসার্ধ কমে যাওয়া
খ. চক্ষুলেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া
গ. চক্ষুলেন্সের ফোকাস দূরত্ব বেড়ে যাওয়া
ঘ. চক্ষুলেন্সের অপসারী ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া
উত্তর: খ. চক্ষুলেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া
২৮. চোখের অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে কোন ত্রুটি হয়?
ক. দীর্ঘ দৃষ্টি খ. হ্রস্ব দৃষ্টি
গ. বার্ধক্য দৃষ্টি ঘ. বিষম দৃষ্টি
উত্তর: খ. হ্রস্ব দৃষ্টি
২৯. একজন শিশুর স্বাভাবিক চোখের স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
ক. ৩০ সে.মি. খ. ২৫ সে.মি.
গ. ১০ সে.মি. ঘ. ৫ সে.মি.
উত্তর: ঘ. ৫ সে.মি.
৩০. পূর্ণ বয়স্ক মানুষের স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম দূরত্ব কত?
ক. ৫ cm খ. ১০ cm
গ. ২৫ cm ঘ. ৫০ cm
উত্তর: গ. ২৫ cm
৩১. স্বাভাবিক চোখে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
ক. ৫ সে.মি. খ. ১০ সে.মি.
গ. ১৫ সে.মি. ঘ. ২৫ সে.মি.
উত্তর: ঘ. ২৫ সে.মি.
৩২. চোখের কোথায় প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
ক. চোখের লেন্সে খ. রেটিনায়
গ. রড কোষে ঘ. কোণ কোষে
উত্তর: খ. রেটিনায়
৩৩. গাড়ির দুই পাশে ও পেছনের জন্য কয়টি দর্পণ ব্যবহার করা হয়?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ.৫টি
উত্তর: খ. ৩টি
৩৪. চোখের কোন অংশে উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
ক. লেন্স খ. রেটিনা
গ. অ্যাকুয়াস হিউমার ঘ. ভিট্রিয়াস হিউমার
উত্তর: খ. রেটিনা
৩৫. আবছা আলোয় সংবেদনশীল হয় কোনটি?
ক. কোন খ. রড
গ. রেটিনা ঘ. চোখের লেন্স
উত্তর: খ. রড
৩৬. চোখের কোন অংশ রঙের অনুভূতি ও রঙের পার্থক্য নির্ধারণে সাহায্য করে?
ক. রেটিনা খ. রড
গ. কোন ঘ. আইরিস
উত্তর: গ. কোন
৩৭. কোনটি চোখের জন্য ক্ষতিকর?
ক. চা পান খ. কফি পান
গ. ফাস্টফুড ঘ. ধূমপান
উত্তর: ঘ. ধূমপান
৩৮. যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখে কিন্তু কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায় না, তখন তাকে কী বলে?
ক. হ্রস্বদৃষ্টি খ. বার্ধক্য দৃষ্টি
গ. দীর্ঘদৃষ্টি ঘ. বিষম দৃষ্টি
উত্তর: গ. দীর্ঘদৃষ্টি
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩৯ ও ৪০নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
দশম শ্রেণির ছাত্রী লিপি বইয়ের লেখাগুলো বেশ দেখতে পায় কিন্তু বোর্ডের স্যারের লেখাগুলো স্পষ্ট দেখতে পায় না।
৩৯. লিপির চোখে কী সমস্যা হয়েছে?
ক. হ্রস্বদৃষ্টি খ. দীর্ঘদৃষ্টি
গ. বার্ধক্য দৃষ্টি ঘ. বিষম দৃষ্টি
উত্তর: ক. হ্রস্বদৃষ্টি
৪০. পিপির চোখের এই সমস্যাটি হওয়ার কারণ–
i. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে
ii. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে
iii. অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : সেঁজুতি দূর থেকে ব্ল্যাকবোর্ডে শিক্ষকের লেখা স্পষ্ট দেখতে পায় না। অন্যদিকে সেঁজুতির বাবার কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। পরবর্তীতে সেঁজুতি ও তার বাবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার সেঁজুতির জন্য এক ধরনের লেন্স এবং তার বাবার জন্য ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন।
ক. আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
খ. স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলতে কী বুঝায়?
গ. সেঁজুতি চোখের কোন ধরনের ত্রুটিতে আক্রান্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সেঁজুতির বাবার জন্য ডাক্তারের ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আলো যখন একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তির্যকভাবে আপতিত হয়, তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতলে এর দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
খ. চোখের সাপেক্ষে সবচেয়ে নিকটের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে বিনা শ্রান্তিতে চোখে স্পষ্ট দেখা যায়, তাকে স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু বলে। এবং চোখ হতে ঐ বিন্দুর দূরত্বকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলে। যেমন- একজন স্বাভাবিক প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব ২৫ সে.মি. হয়ে থাকে। লক্ষ্যবস্তু যদি দূরত্ব অপেক্ষা কম দূরত্বে অবস্থান করে তাহলে তা আর চোখে স্পষ্ট দেখা যায় না।
গ. সেঁজুতি হ্রস্বদৃষ্টি জুটিতে আক্রান্ত। আমরা জানি, যখন চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু দূরের বস্তু দেখতে পায় না, তখন চোখের এই ত্রুটিকে হ্রস্বদৃষ্টি বলে।
যেহেতু সেঁজুতি কাছ হতে বই পড়তে পারে, কিন্তু দূর থেকে ব্ল্যাকবোর্ডে শিক্ষকের লেখা স্পষ্ট দেখতে পায় না, তাই তার চোখ হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটিগ্রস্ত। এরূপ চোখের দূর বিন্দুটি অসীম দূরত্ব হতে খানিকটা নিকটে থাকে, এবং বস্তুকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব হতে আরও কাছে আনলে অধিকতর স্পষ্ট দেখায়। নিম্নলিখিত দুটি কারণে হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি হয়ে থাকে-
i. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে ও
ii. কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে।
হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটির ক্ষেত্রে দূরের বস্তু হতে নির্গত আলোকরশ্মি চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের পর রেটিনার সামনে I বিন্দুতে প্রতিবিম্ব গঠন করে (চিত্র-ক)। রেটিনায় প্রতিবিম্ব গঠিত না হওয়ায় লক্ষ্যবস্তুকে অস্পষ্ট দেখায়। কিন্তু চোখের নিকটে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তু হতে আলো আসলে তা ত্রুটিপূর্ণ চক্ষু লেন্সে প্রতিসরণের পর রেটিনায় প্রতিবিম্ব গঠন করে (চিত্র-খ)। তাই নিকটের বস্তুসমূহ স্পষ্ট দেখা যায়।
ঘ. সেঁজুতির বাবা দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটিতে আক্রান্ত। তার বাবা দূরের বস্তুসমূহ স্পষ্ট দেখতে পেলেও নিকটের বস্তুসমূহ স্পষ্ট দেখতে পায় না। এরূপ ত্রুটিকে দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি বলে। অপরদিকে সেঁজুতি হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটিতে আক্রান্ত। তাই ডাক্তার সেঁজুতির চক্ষু সমস্যার প্রতিকারের জন্য যে লেন্স ব্যবহার করতে বলে তার বাবার চোখের ত্রুটি প্রতিকারে তার চেয়ে ভিন্ন ধরনের লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে বলে।
সেঁজুতির বাবার চোখে স্বাভাবিক নিকট বিন্দু (N) হতে নির্গত আলোক রশ্মি চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের পর রেটিনার পেছনে। বিন্দুতে মিলিত হয় [চিত্র-ক ]। ফলে চোখ কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়।
এই সমস্যা দূর করার জন্য চোখের সামনে একটি উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহার করলে স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম বিন্দু (N) হতে নির্গত আলোক রশ্মি এই সাহায্যকারী লেন্সে এবং চোখের লেন্সে পর পর দুইবার প্রতিসরিত হবার পর প্রয়োজনমতো অভিসারী হয়ে রেটিনা (R) এর উপরে পড়বে। এই প্রতিসরিত রশ্মিগুলোকে পিছনের দিকে বর্ধিত করলে এরা O বিন্দুতে মিলিত হবে (চিত্র-খ)।
অতএব সেঁজুতির বাবার চোখ I বস্তুটিকে O বিন্দুতে দেখবে এবং এই O বিন্দুই দীর্ঘদৃষ্টির নিকটতম দূরত্ব।
সুতরাং সেঁজুতির বাবার জন্য ডাক্তারের ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শের যৌক্তিকতা রয়েছে।
প্রশ্ন–২ : নিচের চিত্র দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. লেন্স কাকে বলে?
খ. লেন্সের ক্ষমতা বলতে কী বুঝায়?
গ. চিত্র-১ এ x দর্পণটি ব্যবহারের কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র-২ এর গাড়িটিতে P, Q, R দর্পণের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।
খ. একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী গুচ্ছ বা অপসারী গুচ্ছে পরিণত করার ক্ষমতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা। লেন্সের ক্ষমতা ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। সাধারণত লেন্সের ক্ষমতা ধনাত্মক হলে লেন্সটি উত্তল লেন্স এবং ঋণাত্মক হলে লেন্সটি অবতল লেন্স।
গ. চিত্র-১-এর X দর্পণটি একটি গোলীয় দর্পণ। এটি বস্তুর চেয়ে খর্বিত আকারের বিম্ব তৈরি করে, ফলে অনেকগুলো লক্ষ্যবস্তুর প্রতিবিম্ব একসাথে দেখা সম্ভব।
উদ্দীপকে প্রদত্ত রাস্তার বাকটি প্রায় ৯০° কোণের। এরূপ তীক্ষ্ণ বাঁকের কারণে উক্ত রাস্তায় ড্রাইভিং করা বিপজ্জনক। এ কারণে উক্ত রাস্তায় বাঁকে বড় সাইজের গোলীয় দর্পণ স্ট্যান্ডে (বাঁকের নিকটে) দাঁড় করে রাখা হয়েছে। যাতে এর কাছাকাছি এসে দর্পণে তাকালে বাঁকের অন্য পাশ থেকে কোনো গাড়ি আসে কিনা বা গাড়ির সংখ্যা কতটি তা দেখা যায়। ফলে ড্রাইভার সাবধান হয়ে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারে।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলতে পারি, চিত্র-১ এর রাস্তার বাঁকে গোলীয় দর্পণটি ব্যবহার করার কারণ হলো বাঁকের বিপরীত পাশ থেকে আসা গাড়ি ড্রাইভার দেখে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারে। অর্থাৎ কোনোরূপ দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে।
ঘ. চিত্র-২ এর গাড়িটিতে P, Q, R দর্পণগুলো ব্যবহারের ভূমিকা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো গাড়ি নিরাপদে চালানোর অন্যতম শর্ত হলো নিজ গাড়ির আশেপাশে সর্বদা কী ঘটছে তা খেয়াল রাখা। সাধারণত গাড়ির সম্মুখ দিকে দু’পাশে দুটি দর্পণ ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া গাড়ির ভিতরে সামনের দিকে মাঝখানে আরেকটি দর্পণ থাকে। এগুলো গাড়ির দুপাশে এবং পিছনের দিকে দেখার কাজে সহায়তা করে ।
উদ্দীপক হতে দেখা যায় P দর্পণটি গাড়ির ডানপাশে অবস্থিত। তাই এটি গাড়ির ডানপাশে পিছনের দিকে কোনো যানবাহন আসছে কিনা তা দেখতে চালককে সাহায্য করে। আবার R দর্পণটি গাড়ির বামপাশে অবস্থিত। এটি ফুটপাত লক্ষ করার জন্য এবং বামপাশ হতে কোনো গাড়ি ওভারটেক করার চেষ্টা করছে কিনা তা লক্ষ রাখতে চালককে সাহায্য করে। অপরদিকে Q দর্পণটি চালকের মাথার উপরের দিকে অবস্থিত। এটি দ্বারা গাড়ির সরাসরি পিছনে যানবাহনগুলো কত দূরত্বে আছে এবং কত দ্রুত চলছে তা দেখা সম্ভব।
এর ফলে কোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য ড্রাইভারকে তার হাতকে সর্বদা হুইলে রেখে সামনে বা পিছনের দিকে নজর রাখা সহজ হয়। ফলে ড্রাইভারকে পাশে বা পেছনে দেখার জন্য তার শরীরকে কোনোরকম মোচড় দেওয়া লাগে না। ফলে সে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারে।
এছাড়া গাড়ি কোনো কারণে পিছানোর বা গাড়ি লেন পরিবর্তন করার দরকার হলে তিনটি দর্পনেই চোখ বুলিয়ে চালক সিটে বসে নিরাপদে কাজটি সম্পন্ন করতে পারে।
প্রশ্ন-৩ : মিরাকে একটু দূরে বই রেখে পড়তে হয়। আশা অধিক সময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করে। ইদানিং তার চোখে সমস্যা হয়েছে । উভয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার মিরার সমস্যাটি চিহ্নিত করেন এবং আশাকে ডাক্তার চোখ ভালো রাখার জন্য পরামর্শ দেন।
ক. আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
খ. চোখ কীভাবে কোনো বস্তুকে দেখতে পায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. মিরার সমস্যাটি কী? তার কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আশাকে ডাক্তারের দেয়া পরামর্শগুলো ব্যাখ্যা করো ।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আলো যখন একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তির্যকভাবে আপতিত হয়, তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতলে এর দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
খ. যখনই আমাদের সামনে কোনো বস্তু থাকে, তখন ঐ বস্তু হতে আলোক রশ্মি চোখের লেন্স দ্বারা প্রতিসরিত হয় এবং রেটিনার ওপর | একটি উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। মস্তিষ্ক রেটিনায় সৃষ্ট উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়। ফলে আমরা বস্তুটিকে দেখি । এভাবে চোখ কাজ করে।
গ. মিরা কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পায় না। সাধারণত চোখ যখন দূরের বস্তু দেখে কিন্তু কাছের বস্তু দেখতে পায় না তখন এই ত্রুটিকে বলা হয় দীর্ঘদৃষ্টি।
তাই বলা যায় মিরার চোখ দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটিতে আক্রান্ত। তার এই ত্রুটি নিচের দুটি কারণে হয়ে থাকে-
১. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে অথবা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পেলে।
২. কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পায় তাহলে এ ধরনের ত্রুটি দেখা দেয়।
কারণ তখন স্বাভাবিক নিকট বিন্দু (N) হতে নির্গত আলোক রশি চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের পর রেটিনার পিছনে (F) বিন্দুতে মিলিত হয়। ফলে চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় না।
ঘ. ডাক্তার আশাকে চোখ ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে উপদেশ দেবার পাশাপাশি ঔষধ দিলেন। আশার চোখ ভালো রাখতে ডাক্তার সাহেবের পরামর্শগুলো হলো- সঠিক জীবনধারা অনুসরণ, দৈনন্দিন কার্যক্রমে পর্যাপ্ত আলো ব্যবহার, সঠিক পদ্ধতিতে বইপড়া বা কম্পিউটার ব্যবহার করা ইত্যাদি। চোখ ভালো রাখার জন্য সঠিক পুষ্টি গ্রহণ খুবই দরকার। এজন্য প্রথমে সঠিক খাবার নির্বাচন করতে হবে। ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার;
ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার, জিংক সমৃদ্ধ খাবার, গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন ফল চোখের জন্য খুবই ভালো। এ ধরনের খাবার চোখকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। চোখের সঠিক যত্নের জন্য সঠিক জীবনধারণ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। সারাদিন পরিশ্রমের পর শরীরের মতো চোখও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। চোখকে পুণরায় সতেজ করতে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন। তাই এই নির্ধারিত সময় ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপানও চোখের ক্ষতি করে। তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রখর রোদে বাইরে বেরুলে সাবধানতা হিসেবে ‘সানগ্লাস’ ব্যবহার করা জরুরি। এক্ষেত্রে অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিহত করতে সক্ষম এমন সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। আবছা বা অপর্যাপ্ত আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। কক্ষের আলো পর্যাপ্ত রাখতে হবে যেন পড়তে অসুবিধা না হয়। চোখকে যদি ক্লান্ত মনে হয়। তবে না পড়ে বরং বিশ্রাম নেওয়াই ভালো। চোখের স্পষ্ট দর্শনের ন্যূনতম দূরত্ব থেকে কম বা বেশি দূরত্বে রেখে বই বা কিছু পড়লে চোখে চাপ পড়ে। তাই সঠিক দূরত্বে রেখে পড়তে হয়। অনেকক্ষণ ধরে কম্পিউটার ব্যবহার করলে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি থেকে চোখকে রক্ষা করতে নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে ও বিরতি দিয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করা উচিত।
উপরিউক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন থাকলে আশার চোখের সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে।
প্রশ্ন–৪ : চশমা ছাড়া হিরার মা পত্রিকার ছোট অক্ষরগুলো ঝাপসা দেখেন। কিন্তু দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখেন। অপরদিকে হিরা ২৫ সে.মি. দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পারে না। ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার তাকে তার মায়ের বিপরীত ব্যবস্থাপত্র দেন।
ক. আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
খ. দ্রুত ঘুরন্ত বৈদ্যুতিক পাখা দেখা যায় না কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. হিরার চশমায় ব্যবহৃত লেন্সের ক্ষমতা নির্ণয় করো।
ঘ. হিরা ও তার মায়ের ব্যবস্থাপত্র ভিন্ন হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আলো যখন একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তির্যকভাবে আপতিত হয়, তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতলে এর দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
খ. দ্রুত ঘুরন্ত বৈদ্যুতিক পাখার চলনের ক্ষেত্রে পাখাগুলো খুব দ্রুত ঘুরতে থাকে ফলে তা মানবচক্ষুর দর্শনাভূতির স্থায়িত্ব কালেরও কম সময়ে চালিত হয়। ফলে মস্তিষ্ক পাখাগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়। তাই খুব দ্রুত ঘুরন্ত বৈদ্যুতিক পাখা দেখা যায় না।
গ. উদ্দীপকের তথ্যানুযায়ী, হিরা ২৫ সে.মি. দূরের বস্তুর স্পষ্ট দেখতে পারে না। অর্থাৎ সে ক্ষীণদৃষ্টি জুটিতে আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে তার চশমায় ব্যবহৃত লেন্সটি হবে অবতল।
যার ফোকাস দূরত্ব = ২৫ সে.মি. যা ০.২৫ মিটার
.:. লেন্সের ক্ষমতা, P = ?
আমরা জানি, P =1/f =1/0.25 = 8D
যেহেতু লেন্সটি অবতল তাই এর ক্ষমতা হবে ঋণাত্মক অর্থাৎ –8D।
ঘ. উদ্দীপকে হিরার মায়ের দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি এবং হিরার হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি হয়েছে।
তাই, ডাক্তার হিরার মায়ের দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি দূর করতে উত্তল লেন্স এবং হিরা হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি দূর করার জন্য অবতল লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। নিচে হিরা ও তার মায়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করা হলো-
হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি দূর করতে এমন একটি অবতল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে, যার ফোকাস দূরত্ব হ্রস্বদৃষ্টির দীর্ঘতম দূরত্বের সমান। এই চশমা লেন্সের অপসারী ক্রিয়া চোখের উত্তল লেন্সের অভিসারী ক্রিয়ার বিপরীতে ক্রিয়া করে। ফলে অসীম দূরত্বের বস্তু হতে নির্গত সমান্তরাল আলোকরশ্মি এই সাহায্যকারী অবতল লেন্স এর মধ্য দিয়ে চোখে পড়ার সময় প্রয়োজনমত অপসারিত হয় এবং অপসারিত রশ্মিগুলো চোখের লেন্সে প্রতিসরিত হয়ে রেটিনা বা অক্ষিপট এর ওপর পড়ে। ফলে হ্রস্ব দৃষ্টিসম্পন্ন চোখ ঐ বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়।
আবার, দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি দূর করার জন্য চোখের সামনে একটি উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে। ফলে চোখের নিকটতম বিন্দু হতে নির্গত আলোকরশ্মি এই সাহায্যকারী লেন্সে এবং চোখের লেন্সে পর পর দুইবার প্রতিসরিত হবার পর প্রয়োজনমত অভিসারী হয়ে রেটিনার উপরে পড়বে।
ফলে দীর্ঘদৃষ্টিসম্পন্ন চোখ ঐ বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়। এ সকল কারণে, ডাক্তার হিরা ও তার মায়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন যা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্ন–৫ : নীলা ম্যাডাম ইদানিং ছোট লেখা স্পষ্ট দেখতে পান না। আবার দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পান। অপরদিকে তার ভাই সজীব ৫০ সে.মি. দূরের বস্তু ঝাপসা দেখে। চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গেলে তাদের ভিন্ন ভিন্ন লেন্সের চশমা দেন।
ক. লেন্স কাকে বলে?
খ. উত্তল লেন্স ও অবতল লেন্সের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
গ. মি. সজীবের চশমায় ব্যবহৃত লেন্সের ক্ষমতা নির্ণয় করো।
ঘ. নীলা ম্যাডাম ও মি. সজীবের পৃথক লেন্স ব্যবহারের কারণ বিশ্লেষণ করো।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।
খ. উত্তল লেন্স ও অবতল লেন্সের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ :
উত্তল লেন্স | অবতল লেন্স |
i. এটি স্থুলমধ্য লেন্স অর্থাৎ এর মধ্যভাগ অপেক্ষাকৃত মোটা। | i. এটি ক্ষীণমধ্য লেন্স অর্থাৎ এর মধ্যভাগ অপেক্ষাকৃত সরু। |
ii. এর ফোকাস দূরত্ব ধনাত্মক। | ii. এর ফোকাস দূরত্ব ঋণাত্মক। |
গ. মি. সজীব ৫০ সে.মি দূরের বস্তু ঝাপসা দেখেন। অর্থাৎ মি, সজীব ক্ষীণদৃষ্টি রোগে আক্রান্ত এবং তার চোখের দূর বিন্দু ৫০ সে. মি দূরত্বে অবস্থিত। মি. সজীবকে একটি অবতল লেন্স বিশিষ্ট চশমা ব্যবহার করতে হবে যার ফোকাস দূরত্ব হবে ৫০ সে.মি.।
আমরা জানি, অবতল লেন্সের ক্ষেত্রে ক্ষমতা, P=-১/f
এখানে, ফোকাস দূরত্ব f= ৫০ সে.মি
= ০.৫ মি.
লেন্সের ক্ষমতা, P=?
.:. P =-১/০.৫D
= -২D
[.:. অবতল লেন্স হওয়ায় ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে]
সুতরাং মি. সজীবের চশমায় ব্যবহৃত লেন্সের ক্ষমতা – ২D।
ঘ. উদ্দীপক হতে দেখা যায় মি. সজীবের দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। সুতরাং মি. সজীব ক্ষীণদৃষ্টিতে আক্রান্ত। অপরদিকে নীলা ম্যাডাম দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটিতে আক্রান্ত।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ নীলা ম্যাডামের দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি দূর করতে উত্তল লেন্স এবং সজীব হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি দূর করার জন্য অবতল লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। নিচে নীলা ম্যাডাম ও সজীবের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করা হলো-
হ্রস্বদৃষ্টি ত্রুটি দূর করতে এমন একটি অবতল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে, যার ফোকাস দূরত্ব হ্রস্বদৃষ্টির দীর্ঘতম দূরত্বের সমান। এই চশমা লেন্সের অপসারী ক্রিয়া চোখের উত্তল লেন্সের অভিসারী ক্রিয়ার বিপরীতে ক্রিয়া করে। ফলে অসীম দূরত্বের বস্তু হতে নির্গত সমান্তরাল আলোকরশ্মি এই সাহায্যকারী অবতল লেন্স এর মধ্য দিয়ে চোখে পড়ার সময় প্রয়োজনমত অপসারিত হয় এবং অপসারিত রশ্মিগুলো চোখের লেন্সে প্রতিসরিত হয়ে রেটিনা বা অক্ষিপট এর ওপর পড়ে। ফলে হ্রস্ব দৃষ্টিসম্পন্ন চোখ ঐ বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়।
আবার, দীর্ঘদৃষ্টি ত্রুটি দূর করার জন্য চোখের সামনে একটি উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে। ফলে চোখের নিকটতম বিন্দু হতে নির্গত আলোকরশ্মি এই সাহায্যকারী লেন্সে এবং চোখের লেন্সে পর পর দুইবার প্রতিসরিত হবার পর প্রয়োজনমত অভিসারী হয়ে রেটিনার উপরে পড়বে।
ফলে দীর্ঘদৃষ্টিসম্পন্ন চোখ ঐ বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়। এ সকল কারণে, ডাক্তার নীলা ম্যাডাম ও মি. সজীবের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন যা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত।