'যে জাতির জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য, সে জাতির ধনের ভাঁড়েও ভবানী।'- উক্তিটি দ্বারা কী বোঝনো হয়েছে?

 উক্তিটির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, **জ্ঞানহীন জাতির সম্পদ যতই থাকুক না কেন, তা অর্থহীন ও অকার্যকর**। এখানে দুটি মূল বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে:



1. জ্ঞানের অভাবের পরিণতি: জাতির "জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য" বলতে বোঝায় শিক্ষা, গবেষণা, প্রজ্ঞা ও সৃজনশীলতার অভাব। জ্ঞান ছাড়া কোনো জাতি তার সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ, প্রাকৃতিক সম্পদ থাকলেও প্রযুক্তিগত জ্ঞান না থাকলে তা কাজে লাগানো যায় না, কিংবা অর্থ থাকলেও সুপরিকল্পিত নীতির অভাবে তা অপচয় হয়।

2. সম্পদের অসারতা:   "ধনের ভাঁড়েও ভবানী" অংশটি একটি রূপক। "ভাঁড়" হলো মাটির তৈরি মোটা পাত্র, যা দেখতে বড় হলেও প্রকৃত মূল্য কম। এখানে এটি দিয়ে সম্পদের আড়ম্বরপূর্ণ কিন্তু অস্থায়ী বা ভিত্তিহীন সমৃদ্ধিকে বোঝানো হয়েছে। "ভবানী" শব্দটি সম্ভবত ইঙ্গিত করে যে, এমন সম্পদ অধিষ্ঠাত্রী দেবীর মতো—অর্থাৎ, তা থাকলেও জাতির প্রকৃত উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখে না। জ্ঞানবিহীন জাতির সম্পদ অলঙ্কারের মতো শোভা পায়, কিন্তু জাতির মৌলিক সমস্যা (দারিদ্র্য, অসমতা, নৈতিক অবক্ষয়) দূর করতে ব্যর্থ হয়।

সারমর্ম:  জ্ঞান হলো জাতির টেকসই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। সম্পদ অর্জন করা যায়, কিন্তু জ্ঞান ছাড়া তা রক্ষা করা, বৃদ্ধি করা বা সঠিকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। জ্ঞানই সম্পদকে অর্থবহ করে তোলে এবং জাতিকে প্রগতির পথে এগিয়ে নেয়। এজন্য জ্ঞানার্জনকে সম্পদের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

নবীনতর পূর্বতন