এসএসসি বাংলা প্রথম
বই পড়া
প্রমথ চৌধুরী [১৮৬৮–১৯৪৬l
উৎসঃ ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি প্রমথ চৌধুরীর ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’ থেকে নির্বাচন করা হয়েছে। একটি লাইব্রেরির বার্ষিক
সভা উপলক্ষ্যে লেখক এ প্রবন্ধটি রচনা করেছিলেন। প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ৭ই আগস্ট যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পাবনা জেলার হরিপুর গ্রামে। বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষারীতির প্রবর্তক এবং ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক এবং সাহিত্যিক ছদ্মনাম-বীরল। তিনি ১৯৪৬ সালে ২রা সেপ্টেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
প্রমথ চৌধুরীর জীবনে সন–তারিখ :
জন্ম: ১৮৬৮ সালের ৭ই আগস্ট।
মৃত্যু: ১৯৪৬ সালের ২রা সেপ্টেম্বর।
প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক পরিচয় :
বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষারীতির প্রবর্তক। ‘সবুজপত্র‘ পত্রিকার সম্পাদক।
সাহিত্যিক ছদ্মনাম– বীরবল।
সাহিত্যে নানা শাখায় সমৃদ্ধি : কাব্য, ছোটগল্প, প্রবন্ধ।
উল্লেখযোগ্য রচনা: বীরবলের হালখাতা, রায়তের কথা, চার-ইয়ারি কথা, আহূতি, প্রবন্ধ সংগ্রহ, নীললোহিত, সনেট পঞ্চাশৎ, পদাচরণ।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধের পরিচিতি রচয়িতা- প্রমথ চৌধুরী।
উৎসগ্রন্থ– প্রবন্ধ সংগ্রহ। একটি লাইব্রেরির বার্ষিক সভায় প্রবন্ধটি পঠিত হয়েছিল।
নামকরণ : বই পড়ার গুরুত্ব অর্থাৎ বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে।
বিষয়বস্তু : সাহিত্য চর্চা, শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি ও লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা।
সাহিত্যের রূপ বা আঙ্গিক : প্রবন্ধ।
প্রবন্ধের বিষয়বস্তুর খুঁটিনাটি : শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো- সাহিত্যচর্চা। মানুষের সম্পূর্ণ মনের সাক্ষাত পাওয়া যায়- সাহিত্যে। সাহিত্যচর্চার জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা।
গুরু উত্তরসাধক মাত্র-যিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তোলেন। গুরু উত্তরসাধক মাত্র। যিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং সাহিত্যচর্চার থেকে বঞ্চিত হওয়া মানে জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস করা। যথার্থ শিক্ষিত হওয়ার জন্য মনের প্রসারতা দরকার যা সাহিত্যচর্চার। মাধ্যমে সম্ভব। আমরা ডেমোক্রেসির গুণগুলো আয়ত্ত্ব না করে দোষগুলো আত্মসাৎ করেছি।
কেননা ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না, বোঝে অর্থের সার্থকতা। |
প্রবন্ধ সম্পর্কিত তথ্য।
উৎস: ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধ সংগ্রহ থেকে নির্বাচন করা হয়েছে।
মূলবক্তব্য: আর্থিকভাবে লাভজনক নয় এমন সবকিছুকেই এদেশে অনর্থক বিবেচনা করা হয়। কিন্তু যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে প্রয়োজন মনের প্রসার । এজন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত জ্ঞানের পাশাপাশি সাহিত্য পাঠের অভ্যাস ও আগ্রহ বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ নয় বলেই আমাদের অনেক বই পড়া দরকার। জনসাধারণের মাঝে এ অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। লেখক গ্রামে গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। লাইব্রেরির গুরুত্ব হাসপাতালের চেয়ে কম নয়।
রূপশ্রেণি: ‘বই পড়া’ রচনাটি একটি মননশীল প্রবন্ধ।
নামকরণ: প্রবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে এর বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে। প্রবন্ধটিতে সাহিত্যচর্চা, বই পড়া, শিক্ষাব্যস্থার ত্রুটি, লাইব্রেরির গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হলেও সবকিছুর মূলে রয়েছে বই পড়ার গুরুত্ব। তাই বলা যায়, এ প্রবন্ধটির শিরোনাম যথার্থ ।
গদ্যরীতি: প্রবন্ধটি চলিত গদ্যরীতিতে রচিত । এর ভাষা সাবলীল, ঋজু্। [দ্রষ্টব্য: ‘ঋজু’ শব্দের অর্থ- অবক্ৰ বা সোজা ] ও অনন্য শৈলীসম্পন্ন।
তথ্যকণিকা
১. প্রমথ চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন — ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগস্ট।
২. প্রমথ চৌধুরীর জন্মস্থান— যশোর।
৩. প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস— পাবনা জেলার হরিপুর গ্রামে।
৪. ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’ গ্রন্থের রচয়িতা— প্রমথ চৌধুরী।
৫. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম—বীরবল।
৬. প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকার নাম— সবুজ পত্র।
৭. ‘আহুতি’ গ্রন্থটির লেখক— প্রমথ চৌধুরী।
৮. বাংলা সাহিত্যে নতুন গদ্যধারা সূচিত হয়— প্রমথ চৌধুরীর নেতৃত্বে।
৯. ‘বীরবলের হালখাতা’ গ্রন্থের রচয়িতা—প্রমথ চৌধুরী।
১০. প্রমথ চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন—১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর।
১১. মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখের নাম— বই পড়া।
১২. মনোরাজ্যের দান — গ্রহণসাপেক্ষ।
১৩. যে জাতি মনে বড় নয়, সে জাতি— জ্ঞানেও বড় নয়।
১৪. মানুষের পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় শুধু সাহিত্যে।
১৫. সাহিত্যচর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি ।
১৬. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই — স্বশিক্ষিত ।
১৭. যথার্থ গুরু শিষ্যের আত্মাকে — উদ্বোধিত করেন।
১৮. মুসলমান ধর্মে মানবজাতি— দুই ভাগে বিভক্ত।
১৯. মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের — আত্মা বাচে না।
২০. মনের আক্ষেপ প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই — কড়ি লাগাতে হয়।
২১. উদ্বাহু শব্দের অর্থ — উহু!
২২. ডেমোক্রসি শব্দের অর্থ— গণতন্ত্র।
২৩. সুসার শব্দের অর্থ— প্রাচুর্য, সচ্ছলতা বা সুবিধা ।
২৪. ভাঁড়েও ভবানী বাগধারাটির অর্থ— রিক্ত বা শূন্য।
২৫. সর্বাত ডুবিয়ে গোসল করাকে বলা হয়— অবগাহন।
২৬. যিনি নিজে নিজে শিক্ষিত তাকে বলা হয়— স্বশিক্ষিত।
২৭. প্রচ্ছন্ন শব্দের অর্থ— গোপন।
২৮. জীর্ণ শব্দের অর্থ— হজম (করা)।
২৯. গতাসু শব্দের অর্থ— মৃত।
৩০. কারদানি শব্দের অর্থ বাহাদুরি ।
৩১. ‘বই পড়া’ একটি — প্রবন্ধ।
৩২. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি রচনা করেছেন— প্রমথ চৌধুরী।
৩৩. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি পঠিত হয়েছিল — একটি লাইব্রেরির বার্ষিক সভায়।
৩৪. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি সংকলিত হয়েছে— ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’ থেকে।
৩৫. ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’ প্রমথ চৌধুরীর — প্রবন্ধের সংকলন।
৩৬. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটির মূল বিষয়— বই পড়ার গুরুত্ব।
৩৭. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে— বক্তব্য বিষয়ের ওপর।
৩৮. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের অন্যতম আলোচনার বিষয়— সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব।
৩৯. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের অন্যতম আলোচনার বিষয়— শিক্ষাব্যবস্থার জুটি।
৪০. লাইব্রেরির সার্থকতা কম নয় — হাসপাতালের চেয়ে।
৪১. সাহিত্যচর্চার জন্য চাই— লাইব্রেরি ।
৪২. কেউ কাউকে দিতে পারে না— শিক্ষা।
৪৩. মনোরাজ্যের দান — গ্রহণসাপেক্ষ।
৪৪. ধনের সৃষ্টি জ্ঞান সাপেক্ষ আর জ্ঞানের সৃষ্টি— মন সাপেক্ষ।
৪৫. প্রগতিশীল জগতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে— সাহিত্যচর্চা আবশ্যক।
৪৬. কেতাব অনুসরণ করে চলে যে— কেতাবি।
৪৭. দানের জন্য প্রবাদতুল্য মানুষ— দাতাকর্ণ ।
৪৮. বই পড়ার প্রতি লোকের অনীহা দেখায়— অর্থকারী নয় বলে ।
৪৯. অভিজাত সভ্যতার উত্তরাধিকার— সমগ্র ভারতবাসী।
৫০. দর্শন ও বিজ্ঞানকে বলা হয়েছে— মনগঙ্গার তোলা জল ।
৫১. হাতে হাতে ফল পাওয়া যায় না— শিক্ষার ।
৫২. শিক্ষার্থীকে মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন— শিক্ষক।
৫৩. ‘দাতা কর্ণ’ বলতে বোঝানো হয়েছে— বিদ্যাদাতাদের।
৫৪. মানুষের পুরো মানের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়— সাহিত্যে।
৫৫. বাংলা সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরী— চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক।
৫৬. চলিত ভাষারীতির প্রবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে— ‘সবুজ পত্র’ পত্রিকা।
৫৭. প্রমথ চৌধুরী ব্যারিস্টারি পাস করেন— বিলেত (ইংল্যাণ্ড) থেকে।
৫৮. প্রমথ চৌধুরী কোন বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন— ইংরেজি সাহিত্যের।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির প্রবর্তক কে?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির প্রবর্তক প্রমথ চৌধুরী ।
প্রশ্ন–২. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম বীরবল।
প্রশ্ন–৩. মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ সখ কোনটি?
উত্তর: মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ বই পড়া।
প্রশ্ন–৪. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী?
উত্তর: শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ সাহিত্যচর্চা।
প্রশ্ন–৫. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই কী?
উত্তর: সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত।
প্রশ্ন–৬. প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস কোথায় ছিল?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস ছিল পাবনা জেলার হরিপুর গ্রামে।
প্রশ্ন–৭. ‘আহুতি‘ গ্রন্থটির লেখক কে?
উত্তর: ‘আহুতি’ গ্রন্থটির লেখক প্রমথ চৌধুরী।
প্রশ্ন–৮. ‘চার–ইয়ারি কথা’ কার লেখা?
উত্তর: ‘চার-ইয়ারি কথা প্রমথ চৌধুরীর লেখা।
প্রশ্ন–৯. প্রমথ চৌধুরী কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরী কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন–১০. শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি কীসের ওপর?
উত্তর: শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি অর্থের ওপর।
প্রশ্ন–১১. বিজ্ঞানের চর্চা কোথায় সম্ভব বলে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
উত্তর: বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে সম্ভব বলে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন–১২. প্রাবন্ধিক স্কুল–কলেজের ওপরে কিসের স্থান দিয়েছেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক স্কুল-কলেজের ওপরে লাইব্রেরির স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন–১৩. কারা বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না?
উত্তর: শিক্ষিত সম্প্রদায় বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না।
প্রশ্ন–১৪. কাব্যামৃতে আমাদের যে অরুচি ধরেছে সেটা কার দোষ?
উত্তর: কাব্যামৃতে আমাদের যে অরুচি ধরেছে সেটা আমাদের শিক্ষার দোষ।
প্রশ্ন–১৫. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের লেখকের মতে, কোথায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা কর্তব্য?
উত্তর: ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মতে, গ্রামে গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা কর্তব্য।
প্রশ্ন–১৬. প্রমথ চৌধুরীর মতে, মুসলমান ধর্মে মানুষ কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর মতে, মুসলমান ধর্মে মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত।
প্রশ্ন–১৭. কীসের নগদ বাজার দর নেই?
উত্তর: সাহিত্যের নগদ বাজার দর নেই।
প্রশ্ন–১৮. ‘অবগাহন‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘অবগাহন’ শব্দের অর্থ সর্বাঙ্গ ডুবিয়ে গোসল করা।
প্রশ্ন–১৯. প্রমথ চৌধুরীর মতে, আজকের বাজারে কীসের অভাব নেই?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর মতে, আজকের বাজারে বিদ্যাদাতার অভাব নেই ।
প্রশ্ন–২০. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে লেখকের মতে, কোথায় দর্শনের চর্চা সম্ভব?
উত্তর: ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখকের মতে, গুহায় দর্শনের চর্চা সম্ভব।
প্রশ্ন–২১. কী ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই?
উত্তর: বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই ।
প্রশ্ন–২২. প্রমথ চৌধুরীর মতে, কীসের মাধ্যমে আমাদের জাত মানুষ হবে?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর মতে, সাহিত্যের চর্চার মাধ্যমে আমাদের জাত মানুষ হবে।
প্রশ্ন–২৩. লেখকের মতে, কারা একখানা কাব্যগ্রন্থও কিনতে প্রস্তুত নন?
উত্তর: লেখকের মতে, যারা হাজার খানা ল-রিপোর্ট কেনেন তারা একখানা কাব্যগ্রন্থও কিনতে প্রস্তুত নন।
প্রশ্ন–২৪. ‘গতাসু‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘গতাসু’ শব্দের অর্থ— মৃত।
প্রশ্ন–২৫. ‘ডেমোক্রেটিক‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘ডেমোক্রেটিক’ শব্দের অর্থ গণতান্ত্রিক।
প্রশ্ন–২৬. ‘কারদানি‘ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘কারদানি’ কথাটির অর্থ বাহাদুরি ।
প্রশ্ন–২৭. ‘দাতাকর্ণ’ কে?
উত্তর: ‘দাতাকর্ণ’ হলেন মহাভারতের বিশিষ্ট চরিত্র কুন্তীর পুত্র যিনি দানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
প্রশ্ন–২৮. লাইব্রেরির সার্থকতা কীসের চাইতে কিছু কম নয়?
উত্তর: লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়।
প্রশ্ন–২৯. শিক্ষকের সার্থকতা কোথায়?
উত্তর: শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষার্থীকে শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম করানোয় ।
প্রশ্ন–৩০. ‘ভাড়ে ও ভবানী‘ অর্থ কী?
উত্তর: ‘ভড়েও ভবানী’ অর্থ হলো- রিক্ত বা শূন্য।
প্রশ্ন–৩১. যুগের বাস্তবতায় জাতির ধনের ভাণ্ডার কীসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর: যুগের বাস্তবতায় জাতির ধনের ভাণ্ডার জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন–৩২. কীসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাস্তু?
উত্তর: শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাস্তু।
প্রশ্ন–৩৩. বিদ্যার সাধনা কাকে অর্জন করতে হয়?
উত্তর: বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে অর্জন করতে হয়।
প্রশ্ন–৩৪. কেতাবি কারা?
উত্তর: যারা কেতাব অনুসরণ করে চলে তারাই কেতাবি।
প্রশ্ন–৩৫.পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় কোথায়?
উত্তর: পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় শুধু সাহিত্যে।
প্রশ্ন–৩৬. প্রমথ চৌধুরী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন–৩৭. প্রমথ চৌধুরী কোন বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরী ইংরেজি সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
প্রশ্ন–৩৮. প্রমথ চৌধুরী কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরী যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন–৩৯. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি কোথায় পড়া হয়েছিল?
উত্তর: ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি একটি লাইব্রেরির বার্ষিক সভায় পড়া হয়েছিল।
প্রশ্ন–৪০. ‘সুসার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘সুসার’ বলতে প্রাচুর্য বোঝায়।
প্রশ্ন–৪১. যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে কীসের প্রসার দরকার?
উত্তর: যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার দরকার।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. ‘ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়’-কেন?
উত্তর: সভ্যতার গুণ বর্জন করে দোষ আয়ত্তকরণের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে— ‘ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়’। নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি পালন ব্যতীত স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকলেই স্বাস্থ্যবান হওয়া যায় না। তেমনই সচেতন প্রয়াস ছাড়া শুধু উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শে এলেই তার ইতিবাচক দিকগুলো আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। রোগজীবাণু ব্যাধিগ্রস্ত মানুষের চারপাশে রোগ বিস্তার করে বলে রোগীর সংস্পর্শে সুস্থ ব্যক্তিও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনুরূপভাবে সাধনা শূন্য হলে বিনা প্রয়াসেই যেকোনো সমুন্নত সভ্যতার গুণগুলোর পরিবর্তে দোষগুলো কোনো সভ্য জাতির জীবনেও সংক্রমিত হতে পারে।
প্রশ্ন–২. স্কুল কলেজের শিক্ষাকে বিদ্যা গেলানোর সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন?
উত্তর: আমাদের দেশে স্কুল কলেজে মুখস্থ বিদ্যার প্রতি জোর দেওয়া হয় বলে সে শিক্ষাকে বিদ্যা গেলানোর সাথে তুলনা করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা ও সামর্থ্যের দিকটি বিবেচনা না করেই তাদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করা হয়। তারাও বাধ্য হয়েই পাশ করার তাগিদে না বুঝে মুখস্থ করতে বাধ্য হয়। ফলে এ শিক্ষায় তাদের যথার্থ মানসিক বিকাশ হয় না, বরং তারা শিক্ষার প্রতি আগ্রহই হারিয়ে ফেলে। এজন্য স্কুল কলেজের শিক্ষাকে বিদ্যা গেলানোর সাথে তুলনা করা হয়েছে।
প্রশ্ন–৩. ‘সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’ বলতে লেখক বুঝিয়েছেন, কেবল স্বেচ্ছায় জ্ঞান আহরণকারীরাই প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত । সুশিক্ষিত হতে হলে শিক্ষার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য উপলদ্ধি করে মনের প্রসার ঘটানো দরকার। এক্ষেত্রে প্রচলিত পদ্ধতির সার্টিফিকেট-নির্ভর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যথেষ্ট নয়। প্রাবন্ধিক মনে করেন, মনের প্রকৃত বিকাশ সাধনের জন্য স্বশিক্ষার বিকল্প নেই। একজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় লাইব্রেরিতে নিজের পছন্দমতো বই পড়েই শিক্ষার এ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন। এভাবে স্বশিক্ষিত হওয়া ছাড়া সুশিক্ষার ফললাভ সম্ভব নয়।
প্রশ্ন–৪. ‘সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাত মানুষ হবে‘ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে আমাদের জাত মানুষ হবে’ বলতে লেখক বুঝিয়েছেন- সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির মানসিক বিকাশের কথা। প্রাবন্ধিক আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে তাতে পাস করা মানুষের সংখ্যা বাড়লেও প্রকৃত শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে না। কারণ সাহিত্যচর্চা ভিন্ন কোনো ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ হতে পারে না। এ কারণে প্রাবন্ধিক শিক্ষার জন্য সাহিত্যচর্চাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলে মনে করেছেন। প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য সাহিত্যচর্চা ভিন্ন অন্য কোনো পথ আছে বলে মনে করেন না প্রাবন্ধিক।
প্রশ্ন–৫. মনের হাসপাতাল বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মনের হাসপাতাল বলতে লাইব্রেরিকে বোঝানো হয়েছে। শারীরিক সমস্যা নিরসনের জন্য যেমন হাসপাতালে যেতে হয় তেমনি মনের বিকাশের জন্য দরকার বই। বই মনের প্রসারতা বাড়ায়। মনীষীদের অর্জিত জ্ঞান লেখনীর মধ্য দিয়ে বইয়ে প্রকাশ পায় যার সংগ্রহশালা হলো লাইব্রেরি। মানসিক উৎকর্ষ সাধনের জন্য লাইব্রেরির এ অপরিহার্যতার বিবেচনায় লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলা হয়েছে।
প্রশ্ন–৬. ‘পাস করা ও শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয়‘- বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: পাস করা বলতে শিক্ষার ধাপ অতিক্রম করাকে বোঝায়। অনেকগুলো পাস করেও প্রকৃত শিক্ষার অভাবে একজন ব্যক্তির পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ নাও ঘটতে পারে বলে লেখক পাস করা বিদ্যা আর শিক্ষিত হওয়া এক কথা নয় বলেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লব্ধ জ্ঞান পূর্ণাঙ্গ নয়, অথচ সুশিক্ষাই মানুষের মনের চেতনা খুলে দিতে পারে। তবু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শিক্ষায় যারা কেবল পাস করার জন্য পড়ে তাদের মানসিক বিকাশ সেভাবে হয় না। শুধু পাস করা বিদ্যায় আত্মার অপমৃত্যু ঘটে এবং মানুষ তার মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে ফেলে । কেবল স্বশিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিই সুশিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে। তাই পাস করা ও শিক্ষিত হওয়া এক বিষয় নয়।
প্রশ্ন–৭. ‘মানুষের পুরো মনটির সাক্ষাৎ পাওয়া যায় শুধু সাহিত্যে’– লেখকের এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে মনের স্ফিতি ঘটে বলে লেখক এরূপ মন্তব্য করেছেন। স্বতন্ত্রভাবে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বস্তুত মানুষের মনের ভগ্নাংশ, তার মনের পূর্ণরূপটি কেবল সাহিত্যের মাঝেই পাওয়া যায়। অর্থাৎ সাহিত্য যেন মহাসাগর। আর বিভিন্ন বিষয় হচ্ছে এক একটি নদী। আর হাজারো নদীর আত্মসমর্পণে তৈরি হয় সাগর তথা সাহিত্য। এ কারণেই লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
প্রশ্ন–৮. ‘আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই’— বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: মৌলিক চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত বাঙালিরা তাদের শখের বিষয়ে মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে বাঙালিরা স্বাভাবিকভাবে জীবন-ধারণ করতেই হিমশিম খায়। ফলে তারা হয়ে উঠেছে উদরসর্বস্ব ও নিরস প্রকৃতির। শখ বা শৌখিনতা নিয়ে ভাবার সুযোগ বা ইচ্ছা আর হয়ে ওঠে না তাদের। তাই বই পড়ার মতো একটি সুন্দর শখও তাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় কাজ বলে মনে হয় ।
প্রশ্ন-৯. ইংরেজি সভ্যতার সংস্পর্শে এসেও ডেমোক্রসিকে আমরা কীভাবে আয়ত্ত করেছি? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ইংরেজি সভ্যতার সংস্পর্শে এসে আমরা ডেমোক্রেসির গুণগুলো আয়ত্তে না আনতে পারলেও তার দোষগুলো আত্মসাৎ করেছি। ডেমোক্রেসির প্রবর্তকরা সবাইকে সমান করার লক্ষ্য থেকেই ডেমোক্রেসির উদ্ভাবন করেন। কিন্তু ডেমোক্রেসির অনুসারীরা যার যার মতো বড় হতে চায়। শিক্ষিত মানুষের লোলুপ দৃষ্টি অর্থের ওপরই পড়ে রয়েছে। ফলে তারা সাহিত্যের সার্থকতার চেয়ে অর্থের সার্থকতাই বেশি বোঝে। আর অর্থ যেহেতু সকল অনর্থের মূল সেহেতু ডেমোক্রেসিও পরিণত হয়েছে অনর্থকতায়।
প্রশ্ন–১০. আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না কেন?
উত্তর: অর্থকরী নয়, এমন সবকিছুই এদেশে নিরর্থক বলে বিবেচিত হওয়ায় আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করে না।
আমাদের দেশের আর্থসামাজিক পরিবেশে জীবনধারণ করাই সবকিছু। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে চাকরি লাভের প্রত্যাশায় ও চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্যই বই পড়ে। কেননা বাঙালি জাতি শৌখিন নয়। তাই বাধ্য না হলে তারা বই স্পর্শ করে না।
প্রশ্ন–১১. আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষার নেতিবাচক পরিণাম ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: আমাদের স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত করার চেয়ে নোট নির্ভর বা পরনির্ভর করে তোলে, যা কখনোই জীবনের প্রয়োজনে কাজে লাগে না। বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার যে রীতি তাতে ছাত্ররা নোট মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করে। ফলে শিক্ষার প্রায়োগিক দিকটি তার অজানাই থাকে। এমনকি পঠিত বিষয়ের সমর্থিত দিকটিকেও সে অনুধাবন করতে পারে না। তাই স্কুল-কলেজের শিক্ষা শুধু ব্যর্থই নয়, তা অনেকাংশে স্বশিক্ষিত হবার শক্তি পর্যন্ত নষ্ট করে দেয় ।
প্রশ্ন–১২. একজন যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা কীসে তা বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: শিক্ষার্থীর মনে জ্ঞান তৃষ্ণা জাগিয়ে তোলা এবং তা অর্জনে তাকে সক্ষম করে তোলার মধ্যেই একজন যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা নিহিত। নিজের জ্ঞানের ভাণ্ডার ছাত্রের সামনে উন্মুক্ত করে দিলেই যথার্থ শিক্ষক
হওয়ায় যায় না। একজন শিক্ষক তখনই সার্থক হন যখন তিনি ছাত্রকে স্বেচ্ছায় জ্ঞানার্জনে আগ্রহী করে তুলতে পারেন। একজন যথার্থ শিক্ষক তার ছাত্রের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন ও তার অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করে তোলেন। এর মধ্যেই যথার্থ শিক্ষকের সার্থকতা।
প্রশ্ন-১৩.‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে বর্ণিত গরুর দুধ গেলানোর সাথে বিদ্যা গেলানোর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জোর করে চাপানো কোনো কিছুই শেষ পর্যন্ত সুফল বয়ে আনে না।
যে শিশু নিজ ইচ্ছায় দুধ খেতে চায় না, তাকে পুষ্টিকর এই জিনিসটি জোর করে খাওয়ালেও তা মূলত ইতিবাচক ক্রিয়া করে না। কেননা শরীর সেই পুষ্টি গ্রহণে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে না-শিক্ষার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার লক্ষণীয়। মুখস্থ করিয়ে শিশুকে যে বিদ্যা শেখানো হয় তার মর্ম সে বোঝেনা। ফলে তার পক্ষে প্রকৃত জ্ঞানার্জন করা সম্ভব হয় না।
প্রশ্ন–১৪. লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রীরা লাইব্রেরিতে গিয়ে ফুর্তি লাভ করতে পারে বলে লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলা হয়েছে। পাঠ্যবই ও নোটভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে একরকম বাধ্য হয়েই। এতে করে তাদের মনের প্রসার তো ঘটেই না উপরন্তু প্রাণশক্তিও নষ্ট হয় । লাইব্রেরিতে গেলে তারা বাধ্য হয়ে নয় বরং স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে বই পড়ে নিজেদের আত্মিক উন্নয়ন করতে পারে। একই সাথে গতানুগতিক পাঠ্য বইয়ের বাইরের বই পড়ে মানসিক প্রশান্তি লাভ করতে পারে।
প্রশ্ন–১৫. ‘আত্মার অপমৃত্যু’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মনের আনন্দময় বিকাশের অভাবে আত্মার যে মৃত্যু ঘটে আত্মার অপমৃত্যু বলতে তাকেই বোঝায় । মুখস্থনির্ভর আরোপিত শিক্ষার ফলে। মানুষের মন নির্জীব হয়ে পড়ে। তার মনের আনন্দানুভূতি বিনষ্ট হয়। মনের আনন্দময় বিকাশ সাধিত হয় স্বতঃস্ফুর্ত কৌতুহল এবং স্বাধীন পাঠ্যচর্চার মাধ্যমে—এর অভাবে আত্মার অপমৃত্যু ঘটে।
প্রশ্ন–১৬. ‘যে জাতি যত নিরানন্দ সে জাতি তত নির্জীব।‘- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : জাতিকে সজীব ও স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে হলে মনের আনন্দময় বিকাশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য, তাই মনের আনন্দ হ্রাস পেলে জাতির জীবনীশক্তিও স্থবির হয়ে পড়ে। জাতির প্রাণের বিকাশ নাগরিকদের আনন্দময় মানসিক বিকাশের ওপর নির্ভর করে। ভারহীন চিত্ত ও সবল মন বড়ো বড়ো স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত। আনন্দ ছাড়া মনের সে স্বাধীনতা ও সজীবতা মরে যায়। ফলে স্বপ্ন দেখার বদলে নৈরাশ্য ও হতাশা দানা বাঁধে। ক্রমান্বয়ে তা জাতিকেও স্থবিরতায় পর্যবসিত করে। নিরানন্দ জাতি তাই নির্জীব, নিষ্প্রাণ।
প্রশ্ন–১৭. সাহিত্যচর্চা ও লাইব্রেরি কীভাবে সম্পর্কযুক্ত?
উত্তর: সাহিত্যচর্চা এবং লাইব্রেরি একে অপরের পরিপূরক। লাইব্রেরি ছাড়া সাহিত্যচর্চা সম্ভব নয়। কারণ সাহিত্যচর্চার জন্য যে উন্মুক্ত সৃজনশীল পরিবেশের প্রয়োজন তা শুধু লাইব্রেরিতেই সম্ভব। সাহিত্য মানুষের মনকে মুক্তি দিয়ে আত্মার উন্নতি করে। বিদ্যার বা সীমাবদ্ধ যেকোনো গণ্ডিতে সাহিত্যচর্চা করা সম্ভব নয় । লাইব্রেরির উন্মুক্ত পরিবেশেই কেবল তা সম্ভব। তাই সাহিত্যচর্চা ও লাইব্রেরি ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কযুক্ত।
প্রশ্ন–১৮. আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দূর করতে শুধু শিক্ষাই যথেষ্ট নয় কেন?
উত্তর: আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুটোই দূর করতে হলে শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাও একান্ত প্রয়োজন। জীবনকে সার্থক, সুন্দর ও মহৎ করার প্রথম ও প্রধান শর্ত শিক্ষা। আর শিক্ষার ফল সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে সাহিত্যচর্চা অবশ্যই করণীয়। কারণ সাহিত্যচর্চা শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ। তাই আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দূর করতে শুধু শিক্ষাই যথেষ্ট নয়।
প্রশ্ন–১৯. ‘দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার হয় না‘- কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: উদ্ধৃত উক্তিটিতে লেখক আমাদের সমাজের শিক্ষা পদ্ধতি এবং চলমান প্রথায় দগ্ধ হয়ে যে লক্ষ আত্মার মৃত্যু হচ্ছে তার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষা ছাত্রদের ওপর বাধ্যগত হওয়ায় তারা শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। জোরপূর্বক পড়তে বাধ্য করায় অনেক ছাত্রের সুস্থ সবল মনের মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু সে আত্মার মৃত্যুর কোনো রেজিস্টার করা বা হিসাব রাখা হয় না বলে তার কোনো খবর কেউ রাখে না। লেখক সেকথার প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন।
প্রশ্ন–২০. ‘আমাদের এখন ঠিক শখ করবার সময় নয়‘- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে শখ করে কোনো কিছু করা মানে নিজের দুঃখকেই বাড়িয়ে তোলা। বাঙালি জাতিকে সব সময় দুঃখ-দারিদ্র্য আর নানা বিপদের মোকাবিলা করে চলতে হয়। যেখানে মানুষের মানবিক চাহিদাগুলোই পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না সেখানে শখ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তাই বই পড়া সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হলেও বাঙালির আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে শখ করে বই পড়ার কোনো উপায় নেই।
প্রশ্ন–২১. প্রাবন্ধিক গুরুকে উত্তরসাধক বলেছেন কেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক গুরুকে উত্তরসাধক বলেছেন কারণ গুরু শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে জাগিয়ে দেন। বস্তুতপক্ষে বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। যথার্থ গুরুশিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অভ্যন্তরের সকল সুপ্ত শক্তিকে শিষ্যের কাছে তুলে ধরেন। সে শক্তির বলে শিষ্যকে নিজেকেই নিজের মন গড়তে হয়, বিদ্যা অর্জন করতে হয়। তাই শিক্ষক শুধু বিদ্যার সন্ধান দিতে পারেন। কিন্তু তা অর্জন করার দায়িত্ব ছাত্রের নিজের । এ কথাটি বোঝাতেই লেখক গুরুকে উত্তরসাধক বলেছেন।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে লেখক লাইব্রেরিকে কীসের ওপর স্থান দিয়েছেন?
ক. হাসপাতালের খ. স্কুল-কলেজের
গ. অর্থ-বিত্তের ঘ. জ্ঞানী মানুষের
উত্তর: খ. স্কুল-কলেজের
২. স্বশিক্ষিত বলতে বোঝায় –
ক. সৃজনশীলতা অর্জন খ. বুদ্ধির জাগরণ
গ. সার্টিফিকেট অর্জন ঘ. উচ্চশিক্ষা অর্জন
উত্তর: ক. সৃজনশীলতা অর্জন
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও:
‘পড়িলে বই আলোকিত হই।
না পড়িলে বই অন্ধকারে রই।
৩. উদ্দীপকটির ভাবার্থ ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের কোন বাক্যে বিদ্যমান?
ক. জ্ঞানের ভাণ্ডার ধনের ভাণ্ডার নয়
খ. শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না
গ. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত
ঘ. আমাদের বাজারে বিদ্যাদাতার অভাব নেই
উত্তর: গ. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত
৪. উদ্দীপকটির ভাবার্থ ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের যে ভাবকে নির্দেশ করে তা হলো—
i. জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মৌলিকত্ব অর্জন
ii. শিক্ষাযন্ত্রের মাধ্যমে বিকশিত হওয়া
iii. শিক্ষকের মাধ্যমে বিকশিত হওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i
৫. প্রমথ চৌধুরী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১৮৬৬ খ. ১৮৬৭
গ. ১৮৬৮ ঘ. ১৮৬৯
উত্তর: গ. ১৮৬৮
৬. প্রমথ চৌধুরী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক. যশোর খ. খুলনা
গ. বরিশাল ঘ. ঝালকাঠি
উত্তর: ক. যশোর
৭. প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস কোন জেলায় ছিল?
ক. রংপুর খ. কুষ্টিয়া
গ. পাবনা ঘ. খুলনা
উত্তর: গ. পাবনা
৮. প্রমথ চৌধুরী কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন?
ক. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খ. আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়
গ. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ঘ. সোরবন বিশ্ববিদ্যালয়
উত্তর: গ. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
৯. ‘বীরবলের হালখাতা‘ গ্রন্থটি কার লেখা?
ক. প্রমথ চৌধুরীর খ. মীর মশাররফ হোসেনের
গ. ইসমাইল হোসেন সিরাজীর ঘ. অন্নদাশঙ্কর রায়ের
উত্তর: ক. প্রমথ চৌধুরীর
১০. ‘রায়তের কথা’ কে রচনা করেন?
ক. দীনবন্ধু মিত্র খ. প্রমথ চৌধুরী
গ. শওকত ওসমান ঘ. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
উত্তর: খ. প্রমথ চৌধুরী
১১. বাংলা সাহিত্যে চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক কে?
ক. প্রমথ চৌধুরী খ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ. নজরুল ইসলাম ঘ. বনফুল
উত্তর: ক. প্রমথ চৌধুরী
১২. ‘বীরবলের হালখাতা‘ কোন ধরনের রচনা?
ক. গল্পগ্রন্থ খ. সমালোচনা গ্রন্থ
গ. প্রবন্ধ গ্রন্থ ঘ. উপন্যাস
উত্তর: গ. প্রবন্ধ গ্রন্থ
১৩. ‘সবুজ পত্র‘ কোন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে?
ক. চলিত ভাষারীতি প্রবর্তনে খ. সাধু ভাষা প্রবর্তনে
খ. আধুনিক বানানরীতি প্রবর্তনে ঘ.অনুবাদ সাহিত্যে
উত্তর: ক. চলিত ভাষারীতি প্রবর্তনে
১৪. প্রমথ চৌধুরী কত সালে পরলোকগমন করেন?
ক. ১৯৬৪ সালে খ. ১৯৩৪ সালে
গ. ১৯৫৪ সালে ঘ. ১৯৪৬ সালে
উত্তর: ঘ. ১৯৪৬ সালে
১৫. ‘বইপড়া‘ প্রবন্ধে ‘অন্তনিহিত শক্তি’ বলতে কোনটিকে বোঝানো হয়েছে?
ক. আত্মার অমৃত সাধনাকে খ. মহৎ জ্ঞান অর্জনকে
গ. মানসিক বিকাশ সাধনকে ঘ. সম্ভাবনাময় সুপ্ত প্রতিভাকে
উত্তর: ঘ. সম্ভাবনাময় সুপ্ত প্রতিভাকে
১৬. ‘যে জাতির জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য সে জাতির ধনের ভাঁড়েও ভবানী‘ –এ কথার অর্থ কী?
ক. ধনার্জন জ্ঞানসাপেক্ষ খ. জ্ঞানার্জন ধনসাপেক্ষ
গ. বিষয় দুটো পরিপূরক ঘ. গরিবের ঘোড়া রোগ
উত্তর: ক. ধনার্জন জ্ঞানসাপেক্ষ
১৭. অভিজাত সভ্যতার উত্তরাধিকারী বলতে ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের লেখক কাদের বুঝিয়েছেন?
ক. ভারতীয়দের খ. ইংরেজদের
গ. জাপানিদের ঘ. ফরাসিদের
উত্তর: ক. ভারতীয়দের
১৮. প্রমথ চৌধুরীর মতে, কোনটি সঠিক?
ক. ধন জ্ঞানসাপেক্ষ খ. জ্ঞান ধনসাপেক্ষ
গ. ধন ও জ্ঞান পরিপূরক ঘ. ধন ও জ্ঞান বিচ্ছিন্ন
উত্তর: ক. ধন জ্ঞানসাপেক্ষ
১৯. মনগঙ্গার তোলা জল কোনটি?
ক. ধর্মীয় শাস্ত্র খ. সাহিত্যগ্রন্থ
গ. দর্শন ও বিজ্ঞান ঘ. গবেষণা গ্রন্থ
উত্তর: গ. দর্শন ও বিজ্ঞান
২০. কীসের সুফল সম্পর্কে অনেকেই সন্দিহান?
ক. সাহিত্যচর্চা খ. বিজ্ঞানচর্চা
গ. দর্শনচর্চা ঘ. ডেমোক্রেসির চর্চা
উত্তর: ক. সাহিত্যচর্চা
২১. কোনটির সাথে সাথে ফল পাওয়া যায় না?
ক. কর্মের খ. ধর্মের
গ. পরীক্ষার ঘ. শিক্ষার
উত্তর: ঘ. শিক্ষার
২২. কী ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই?
ক. বই কেনা খ. লাইব্রেরি করা
গ. জ্ঞান বিতরণ ঘ. বই পড়া
উত্তর: ঘ. বই পড়া
২৩. মনের দাবি রক্ষা না করলে কী বাঁচে না?
ক. জীবন খ. আত্মা
গ. মনুষ্যত্ব ঘ. বিবেক
উত্তর: খ. আত্মা
২৪. ‘সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত‘—উক্তিটি কার?
ক. প্রমথ চৌধুরীর খ. মোতাহের হোসেন চৌধুরীর
গ. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ঘ. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
উত্তর: ক. প্রমথ চৌধুরীর
২৫. ‘আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব দেশের তত বেশি উপকার হবে‘- এ অংশটি কোন প্রবন্ধের?
ক. বই পড়া খ. পল্লিসাহিত্য
গ. শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব ঘ. সাহিত্যের রূপ ও রীতি
উত্তর: ক. বই পড়া
২৬. প্রমথ চৌধুরীর মতে, মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারে কে?
ক. শিক্ষক খ. সাহিত্য
গ. নীতির চর্চা ঘ. সুশিক্ষিত লোক
উত্তর: ক. শিক্ষক
২৭. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে দাতাকর্ণ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?
ক. স্বশিক্ষিতদের খ. বিদ্যার্থীদের
গ. বিদ্যাদাতাদের ঘ. অভিভাবকদের
উত্তর: গ. বিদ্যাদাতাদের
২৮. প্রমথ চৌধুরীর মতে, আমাদের সমাজ কেমন?
ক. উচ্ছৃঙ্খল খ. বিভ্রান্ত
গ. নির্জীব ঘ. নিরানন্দ
উত্তর: গ. নির্জীব
২৯. মানুষের পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় কোথায়?
ক. সাহিত্যে খ. আচরণে
গ. দর্শনে ঘ. ধর্মনীতিতে
উত্তর: ক. সাহিত্যে
৩০. মানুষের আত্মাকে বাঁচাতে গেলে কী করতে হবে?
ক. উচ্চশিক্ষিত হতে হবে খ. শরীরের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে
গ. বিনোদনপ্রিয় হতে হবে ঘ. মনের দাবি পূরণ করতে হবে
উত্তর: ঘ. মনের দাবি পূরণ করতে হবে
৩১. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে ভোক্তা কারা?
ক. শিক্ষকেরা খ. বাজিকরেরা
গ. শিক্ষার্থীরা ঘ. অভিভাবকেরা
উত্তর: গ. শিক্ষার্থীরা
৩২. শিক্ষাক্ষেত্রে কোন জিনিসের গুরুত্ব আমাদের দেশে সর্বাধিক?
ক. অধিকসংখ্যক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা
খ. সুশিক্ষিত শিক্ষকমণ্ডলী
গ. উন্নতমানের পাঠ্যপুস্তক
ঘ. শিক্ষার শান্ত পরিবেশ
উত্তর: ক. অধিকসংখ্যক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা
৩৩. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে মানুষের জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ শখ কোনটি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করা হয়েছে?
ক. বিদ্যার সাধনা খ. জ্ঞান অর্জন
গ. বই পড়া ঘ. উদরপূর্তি
উত্তর: গ. বই পড়া
৩৪. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে নিচের কোন ব্যবসার কথা বলা হয়েছে?
ক. আইন ব্যবসা খ. শিল্প ব্যবসা
গ. কাগজের ব্যবসা ঘ. কৃষি ব্যবসা
উত্তর: ক. আইন ব্যবসা
৩৫. মনের আক্ষেপ প্রকাশ করতে মাঝে মাঝেই কী লাগাতে হয়?
ক. কড়ি খ. অর্থ
গ. বই ঘ. বুদ্ধি
উত্তর: ক. কড়ি
৩৬. পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য কোনটি অধিক প্রয়োজনীয়?
ক. দর্শনচর্চা খ. বিজ্ঞানচর্চা
গ. ধর্মচর্চা ঘ. সাহিত্যচর্চা
উত্তর: ঘ. সাহিত্যচর্চা
৩৭. আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপদৃষ্টি অর্থের ওপরে কেন?
ক. সাহিত্যচর্চা না থাকায়
খ. প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার জন্য
গ. আর্থ-সামাজিক অবস্থার কারণে
ঘ. অর্থনৈতিক মন্দার কারণে
উত্তর: গ. আর্থ-সামাজিক অবস্থার কারণে
৩৮. আমরা জাত হিসেবে কীরূপ?
ক. কুলীন নই খ. শিক্ষিত নই
গ. শৌখিন নই ঘ. অভিজাত নই
উত্তর: গ. শৌখিন নই
৩৯. লেখক সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার কীরূপ অঙ্গ বলেছেন?
ক. সর্বপ্রধান খ. সর্বশ্রেষ্ঠ
গ. সর্বাধিক ঘ. সর্বময়
উত্তর: ক. সর্বপ্রধান
৪০. আমাদের স্কুল–কলেজে ছেলেরা বই পড়ে কীভাবে?
ক. দায়ে পড়ে খ. বাধ্য হয়ে
গ. স্বেচ্ছায় ঘ. শিক্ষার জন্য
উত্তর: খ. বাধ্য হয়ে
৪১. কোন সত্য স্বীকার করতে আমরা কুষ্ঠিত হই?
ক. সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত
খ. শিক্ষিত হওয়া ও পাস করা এক নয়
গ. বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়
ঘ. শিক্ষা সোনা ফলায়
উত্তর: খ. শিক্ষিত হওয়া ও পাস করা এক নয়
৪২. কোন শক্তির বলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তোলে?
ক. গুরুর খ. আত্মার
গ. সাহিত্যের ঘ. ডেমোক্রেসির
উত্তর: খ. আত্মার
৪৩. ‘France was saved by her idlers’—কথাটি বলেছেন কে?
ক. দর্শনশাস্ত্রের জগদ্বিখ্যাত শাস্ত্রী
খ. একজন বিখ্যাত ফরাসি ধর্মযাজক ও সন্ত
গ. একজন জগদ্বিখ্যাত ফরাসি পণ্ডিত
ঘ. শিক্ষা-শাস্ত্রের জগদ্বিখ্যাত ফরাসি শাস্ত্রী
উত্তর: ঘ. শিক্ষা-শাস্ত্রের জগদ্বিখ্যাত ফরাসি শাস্ত্রী
৪৪. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের নামকরুণ কোন যুক্তিতে সাহিত্যচর্চা‘ রাখা যায়?
ক. প্রবন্ধের আঙ্গিকতায় খ. বিষয়বস্তুর সামগ্রিকতায়
গ. মূল বক্তব্যের আলোকে ঘ. জ্ঞান বিকাশের আয়োজনে
উত্তর: গ. মূল বক্তব্যের আলোকে
৪৫. ‘ভড়েও ভবানী” কথাটির অর্থ কী?
ক. রিক্ত খ. প্রাচুর্য
গ. অলসতা ঘ. পরিশ্রমী
উত্তর: ক. রিক্ত
৪৬. ‘গতাসু‘ শব্দের আভিধানিক অর্থ কী?
ক. অর্ধমৃত খ. মৃত
গ. গতানুগতিক ঘ. গতকাল
উত্তর: খ. মৃত
৪৭. ‘ডেমোক্রেসি‘ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ কী?
ক. রাজতন্ত্র খ. একনায়কতন্ত্র
গ. গণতন্ত্র ঘ. সমাজতন্ত্র
উত্তর: গ. গণতন্ত্র
৪৮. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
ক. গল্প-সংগ্রহ খ. প্রবন্ধ-সংগ্রহ
গ. প্রবন্ধ-সংকলন ঘ. নির্বাচিত প্রবন্ধ
উত্তর: খ. প্রবন্ধ-সংগ্রহ
৪৯. প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন। কারণ তিনি –
i. নতুন গদ্যধারার প্রবর্তক
ii. বিরাম চিহ্নের সুষম ব্যবহারকারী
iii. সাহিত্যে চলিতরীতির প্রবর্তক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫০. শিক্ষার্থীর প্রতি শিক্ষকের যথাযথ কাজ হচ্ছে –
i. শিক্ষার্থীর শিক্ষাভীতি দূর করা
ii. শিক্ষণীয় বিষয়ে আনন্দ সঞ্চার করা
iii. শিক্ষার্থীর মধ্যে কৌতুহল জাগ্রত করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
ভূগোল ও পরিবেশ সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫১. ‘France was saved by her idlers’- ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধে এ উদ্ধৃতিটির উল্লেখ করে লেখক তৎকালীন ফ্রান্সের যে সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন –
i. স্কুল পালানো ছেলেরা দলে ভারী ছিল
ii. পাস না করা ছেলেদের দল ভারী ছিল
iii. ফরাসি শিক্ষাপদ্ধতি আনন্দপ্রদ ছিল না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫২. সাহিত্য শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বিষয়টি সন্দেহাতীত হলেও বিমুখতার কারণ–
i. প্রত্যক্ষ প্রাপ্তিযোগ না থাকা
ii. সময় ও আর্থিকভাবে ব্যয়বহুল
iii. জৈবিক অস্তিত্বে অগ্রাধিকার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৩. যেকোনো বস্তুর উপকারিতা ভোক্তার জীর্ণ করার সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। এখানে ‘জীর্ণ‘ শব্দের অর্থ হলো–
i. হৃদয়াঙ্গম করা
ii. আত্মস্থ করা
iii. অনুধাবন করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৪. দাতাকর্ণ হলেন—
i. মহাভারতের বিশিষ্ট চরিত্র
ii. কুন্তির পুত্র
iii. দানের জন্য প্রবাদতুল্য মানুষ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৫৫ ও ৫৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
বই মানুষকে আলোকের সন্ধান দেয়। তাই মনের অন্ধকার দূর করতে বই পড়া প্রয়োজন।
৫৫. উদ্দীপকের ভাবার্থ নিচের কোন চরণে বিদ্যমান?
ক. জ্ঞানের ভাণ্ডার ধনের ভাণ্ডার নয়
খ. শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না
গ. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত
ঘ. আমাদের বাজারে বিদ্যাদাতাদের অভাব নেই
উত্তর: গ. সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত
৫৬. উদ্দীপকটির ভাবার্থ ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের কোন ভাবকে নির্দেশ করে?
ক. জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মৌলিকত্ব অর্জন
খ. শিক্ষাযন্ত্রের মাধ্যমে বিকশিত হওয়া
গ. শিক্ষকের মাধ্যমে বিকশিত হওয়া
ঘ. শিক্ষিত হয়ে চাকরি অর্জন
উত্তর: ক. জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে মৌলিকত্ব অর্জন
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৫৭ ও ৫৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
মানিক এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার ফলাফল দেখে সবাই হতবাক! অন্যদিকে, সোহেল ক্লাসের প্রথম দিকের ছাত্র হলেও সে জিপিএ ৫ পায়নি। কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায় মানিক নিয়মিত লাইব্রেরি ওয়ার্ক করত।
৫৭. মানিকের ফলাফল ভালো হবার পেছনে তোমার পাঠ্য কোন প্রবন্ধটি বিশেষভাবে তাকে অনুপ্রাণিত করেছে?
ক. শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব খ. বই পড়া
গ. রচনার শিল্পগুণ ঘ. উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন
উত্তর: খ. বই পড়া
৫৮. উক্ত প্রবন্ধের আলোকে সোহেলের জিপিএ ৫ না পাবার যথার্থ কারণ কোনটি?
ক. মুখস্থ বিদ্যার অভাব খ. প্রকৃত শিক্ষার অভাব
গ. সাহিত্যচর্চার অভাব ঘ. গুরুর নির্দেশনার অভাব
উত্তর: খ. প্রকৃত শিক্ষার অভাব
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৫৯ ও ৬০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
সাগরের বিশালত্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। কূপই আমাদের পৃথিবী। জ্ঞানের রাজ্যে আমরা কূপমণ্ডুক।
৫৯. উদ্দীপকের ‘কৃপ‘ শব্দটিকে কীসের সাথে তুলনা করা যায়?
ক. আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা খ. আমাদের পাঠ্যপুস্তক
গ. আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘ. আমাদের জ্ঞান সম্পর্কে
উত্তর: খ. আমাদের পাঠ্যপুস্তক
৬০. আলোচ্য তুলনাটি কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার্য?
ক. সীমাবদ্ধতা খ. বিষয়ের স্বল্পতা
গ. মনের সংকীর্ণতা ঘ. পরিকল্পনায় স্থবিরতা
উত্তর: ক. সীমাবদ্ধতা
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৬১ ও ৬২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
নিয়ন বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অনেকগুলো বই পুরস্কার পেয়েছে। বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়দের কাছ থেকেও পেয়েছে অনেক বই । একুশের মেলা থেকেও সে প্রতি বছর বেশ কিছু বই কিনে । সবমিলিয়ে বাড়িতে সে ছোটো একটি লাইব্রেরি গড়ে তুলেছে। তার দেখাদেখি সহপাঠীরাও একই কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছে।
৬১. নিয়নের কাজটিকে লেখকের কোন উক্তির সফল বাস্তবায়ন বলা যায়?
ক. বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই
খ. সাহিত্যচর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি
গ. সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাতি মানুষ হবে
ঘ. গ্রামে গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা কর্তব্য
উত্তর: ঘ. গ্রামে গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা কর্তব্য
৬২. নিয়নের আদর্শ অনুসরণ করলে আমরা পায়–
i. স্বশিক্ষায় সুশিক্ষিত জাতি
ii. সাহিত্যচর্চার অনুকূল পরিবেশ
iii. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৬৩ ও ৬৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
একটি গোলাপের পাপড়ি একটি বাগানের তুলনায় খুবই নগণ্য। বুদ্ধিমানেরা পাপড়ি নয়, বাগানটিই পেতে চাইবে। তবে বাস্তবে দেখা যায়, আমরা পাপড়ি নিয়েই তুষ্ট।
৬৩. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের আলোকে উদ্দীপকে উল্লিখিত পাপড়িকে তুলনা করা যায়–
i. বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তকের সাথে
ii. শ্রেণিভিত্তিক পাঠ্যতালিকার সাথে
iii. আমাদের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার সাথে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৬৪.‘বই পড়া‘ প্রবন্ধের আলোকে উদ্দীপকের বাগানকে লাইব্রেরির প্রতীক বিবেচনা করা যায় কোন বিচারে? ক. বৈচিত্র্য ও বিপুলতা
খ. অসীমের মুক্ত আয়োজন
গ. সাহিত্যচর্চার অবারিত সুযোগ
ঘ. স্বাধীনতার অনিয়ন্ত্রিত আস্বাদন
উত্তর: ক. বৈচিত্র্য ও বিপুলতা
৬৫. ‘বই পড়া‘ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?
ক. বীরবলের হালখাতা খ. রায়তের কথা
গ. প্রবন্ধ সংগ্রহ ঘ. নীললোহিত
উত্তর: গ. প্রবন্ধ সংগ্রহ
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১ : জাতীয় জীবনধারা গঙ্গা-যমুনার মতোই দুই ধারায় প্রবাহিত। এক ধারার নাম আত্মরক্ষা বা স্বার্থপ্রসার, আরেক ধারার নাম আত্মপ্রকাশ বা পরমার্থ বৃদ্ধি। একদিকে যুদ্ধবিগ্রহ, মামলা-ফ্যাসাদ প্রভৃতি কদর্য দিক; অপরদিকে সাহিত্য, শিল্প, ধর্ম প্রভৃতি কল্যাণপ্রদ দিক। একদিকে শুধু কাজের জন্য কাজ; অপরদিকে আনন্দের জন্য কাজ। একদিকে সংগ্রহ, আরেক দিকে সৃষ্টি। যে জাতি দ্বিতীয় দিকটির প্রতি উদাসীন থেকে শুধু প্রথম দিকটির সাধনা করে, সে জাতি কখনো উঁচু জীবনের অধিকারী হতে পারে না।
ক. ‘ভাড়েও ভবানী’ অর্থ কী?
খ. অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যে দিকটিকে ইঙ্গিত করে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মতকে সমর্থন করে – মন্তব্যটির বিচার করো।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘ভড়েও ভবানী’ অর্থ হলো- রিক্ত বা শূন্য।
খ. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে মানুষের আত্মিক শক্তিকে বোঝানো হয়েছে। মানুষের দুই রকমের শক্তি আছে। যথা– দৈহিক শক্তি ও আত্মিক শক্তি। আত্মিক শক্তির মাধ্যমে মানুষ তার আত্মাকে উদ্বোধিত করে নিজের মন নিজে গড়ে তোলে, নিজের বিদ্যা নিজে অর্জন করে। অর্থাৎ এই আত্মিক শক্তি যেহেতু মানুষের অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে, সেহেতু তাকে অন্তর্নিহিত শক্তি বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত মানুষের অর্থনৈতিক চিন্তার দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধের প্রাবন্ধিক মনে করেন। আমাদের দেশের মানুষ সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে জীবনের সুকুমারবৃত্তির তুলনায় অর্থনৈতিক চিন্তাকেই প্রাধান্য দেয়। তার মতে, এই অর্থনৈতিক চিন্তার ফলে আমাদের দেশের শিক্ষা হয়ে উঠেছে মানুষের আত্মার পরিপন্থি। সাহিত্যচর্চার মতো আনন্দের বিষয়ের পরিবর্তে মানুষের মন মেতে আছে অর্থ উপার্জনের দিকে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অর্থকরী নয়, এমন সবকিছুকে এদেশে অনর্থক বলে বিবেচনা করা হয়। মনতুষ্টির চেয়ে অর্থনৈতিক চাহিদাই বড়ো বলে বিবেচ্য হয়।
উদ্দীপকে যে দুটি দিকের কথা বলা হয়েছে তার প্রথম দিকটি হলো আত্মরক্ষা বা স্বার্থপ্রসার কিংবা সম্পদ সংগ্রহ। এদিকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, মামলাফ্যাসাদ প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য উপস্থিত। সংগত কারণে এ দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে এদেশের মানুষের অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চিন্তাকে নির্দেশ করে। প্রাবন্ধিকের মতো এ দিকটিই আমাদের মানসিক বিকাশে প্রধান অন্তরায়।
ঘ. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে মানুষের আত্মার বিকাশকে প্রাধান্য দিয়েছেন, যা উদ্দীপকে বর্ণিত পরমার্থ বৃদ্ধির দিকটিকে সমর্থন করে।
প্রমথ চৌধুরী জাতির সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক দিককে অস্বীকার করেননি; কিন্তু প্রাধান্য দিয়েছেন জাতির মানসিক বিকাশকে। উদ্দীপকেও অর্থের পরিবর্তে পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যা প্রাবন্ধিকের মতকে সমর্থন করে।
আলোচ্য উদ্দীপকে জাতির সার্বিক সমৃদ্ধির জন্য পরমার্থ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এদিক হিসেবে উঠে এসেছে সাহিত্য, শিল্প, ধর্ম প্রভৃতি কল্যাণপ্রদ দিক। এদিকটির লক্ষ্য কাজের জন্য কাজ নয়; রং আনন্দের জন্য কাজ। সৃষ্টিশীলতাই এদিকটিকে সমৃদ্ধ করে তোলে। উঁচু জীবনের অধিকারী হতে এদিকের গুরুত্বের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্দীপকের এমন বক্তব্য অবশ্যই প্রাবন্ধিকের মতের সমর্থনযোগ্য। তাঁর মতে, জাতি হিসেবে আমরা এখনো উঁচুমানের হতে পারিনি। কেননা আমরা এখনো জ্ঞানের চেয়ে অর্থকে প্রাধান্য দেই। এ কারণে সাহিত্যচর্চার প্রতি আমাদের আগ্রহ নেই। কিন্তু জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে মহৎ জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন।
উদ্দীপক ও আলোচ্য প্রবন্ধ উভয়ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় জীবনে জ্ঞানচর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি যে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে তা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মতকে সমর্থন করে।
প্রশ্ন– ২ : নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলের উত্তর দাও:
ক. ‘গতাসু’ শব্দের অর্থ কী?
খ. সাহিত্যচর্চার সুফল সম্বন্ধে অনেকে সন্দিহান কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের একমাত্র দিক নয়।”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো ।
২নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘গতাসু’ শব্দের অর্থ— মৃত।
খ. সাহিত্যচর্চার সুফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না বলে এর সুফল সম্বন্ধে অনেকেই সন্দিহান। সাহিত্যচর্চা মানুষের জ্ঞানকে পরিপূর্ণ করে তোলে। এই জ্ঞান অর্জন করতে সাধনার পাশাপাশি অনেক সময়ের প্রয়োজন। তাই সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না যে জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপেক্ষ আর ধনের সৃষ্টি জ্ঞানসাপেক্ষ। আর এ কারণেই সাহিত্যচর্চার সুফল সম্বন্ধে অনেকে সন্দিহান।
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকটিই ফুটে উঠেছে ।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক শিক্ষা লাভের দুটি দিকের কথা বলেছেন- একটি প্রাতিষ্ঠানিক এবং অন্যটি অপ্রাতিষ্ঠানিক। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়া হয় স্কুল-কলেজে। আর এই শিক্ষা দান করেন শিক্ষক। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যক্তি লাভ করতে পারে লাইব্রেরিতে বই পড়ে। এই কাজটি ব্যক্তির নিজেকেই করতে হয়।
উদ্দীপকে শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকটি দেখানো হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা একজন শিক্ষার্থী গ্রহণ করে স্কুল-কলেজ থেকে। এক্ষেত্রে শিক্ষক তাকে সহযোগিতা করেন। এই শিক্ষা শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে গ্রহণ করে বলে তা প্রকৃত শিক্ষা লাভের অন্তরায় বলে প্রাবন্ধিক মত দিয়েছেন।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকটি ফুটে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাপদ্ধতির দিকটি ছাড়াও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকটিও তুলে ধরেছেন। এ দুটির মধ্যে তিনি অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ এই শিক্ষা ব্যক্তি লাইব্রেরিতে আনন্দের সাথে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে। কেউ তাকে এই শিক্ষা দেয় না বা দিতে পারে না। শিক্ষার্থী নিজেই এই শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। আর সুশিক্ষা ও মনুষ্যত্ববোধ অর্জনে এই শিক্ষার গুরুত্বই সর্বাধিক। আর এজন্য প্রাবন্ধিক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
উদ্দীপকের চিত্রে কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের চেষ্টা করেছেন। আর শিক্ষার্থীরা সেই শিক্ষা গ্রহণ করছে। শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা লাভের প্রচেষ্টা কেবল পরীক্ষায় পাস করার জন্য। শিক্ষক কেবল শিক্ষার্থীদের জ্ঞান পিপাসাকে জাগ্রত করবেন। তাদের আত্মাকে উদ্বোধিত করবেন। কিন্তু শিক্ষার্থীকে তা নিজে অর্জন করতে হবে।
উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, উদ্দীপকের চিত্রে প্রদর্শিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কেবল একটিমাত্র দিক। প্রবন্ধটিতে এই দিকটি ছাড়াও শিক্ষা লাভের অন্যান্য দিকের প্রকাশও লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে প্রাবন্ধিক উদ্দীপকের শিক্ষাদান পদ্ধতিকে প্রকৃত শিক্ষার অন্তরায় হিসেবে গণ্য করেছেন এবং শিক্ষা লাভের অপ্রাতিষ্ঠানিক দিককে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ এই শিক্ষা শিক্ষার্থীরা নিজের মনের আনন্দে গ্রহণ করে থাকে। আর লাইব্রেরি হলো এই শিক্ষা লাভের কাঙ্ক্ষিত স্থান।
তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন- ৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলো উত্তর দাও:
ক. লাইব্রেরির সার্থকতা কীসের চাইতে কিছু কম নয়?
খ. শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আংশিক রূপায়ণ”- মন্তব্যটি যথার্থতা যাচাই করো।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়।
খ. মানুষ স্বেচ্ছায় নিজ প্রচেষ্টায় যা শিখতে পারে, তা অন্যের কাছে শিখতে পারে না বলে শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। লেখকের মতে, শিক্ষা অর্জন করতে হয় নিজের উদ্যোগে। কিন্তু আজকের বাজারে বিদ্যাদাতার অভাব নেই। তারা শিক্ষার্থীর সক্ষমতার দিকে না তাকিয়েই বই মুখস্থ করানোর চেষ্টা করেন। অনিচ্ছায় সে কাজটি করার কারণে গ্রহীতারা তা আত্মস্থ করতে পারে না। কারণ তারা স্বেচ্ছায় এই বিদ্যা গ্রহণ করেনি। শিক্ষা অর্জন করতে হলে চাই আগ্রহ, কৌতুহল ও ভালোবাসা। তাই বলা যায়, শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। শিক্ষা গ্রহীতাকে নিজ অর্জন করে নিতে হয়।
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত সুশিক্ষায় লাইব্রেরির ভূমিকার দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক মনে করেন, শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে গিয়ে যথার্থ জ্ঞান লাভ করতে পারে। এ কারণে লাইব্রেরিকে তিনি মনের হাসপাতাল বলেছেন। কারণ পাঠ্যবই ও নোটভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় একরকম বাধ্য হয়েই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। এতে তাদের মনের প্রসার ঘটে তার বিপরীতটা হয়। কিন্তু লাইব্রেরিতে গেলে তারা বাধ্য হয়ে নয় বরং আপন খুশি ও রুচি অনুসারে বই পড়ে নিজেদের আত্মিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে। এতে তাদের মনের প্রসার ঘটে, যা সুশিক্ষা অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্দীপকেও স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠার পেছনে লাইব্রেরির ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। লাইব্রেরি আমাদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এতে পাঠকের মনের প্রসার ঘটে। যা স্বশিক্ষিত হয়ে উঠতে অপরিহার্য। আলোচ্য প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার উপায় ও প্রতিবন্ধকতার দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ছকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত সুশিক্ষায় লাইব্রেরির ভূমিকার দিকটি ফুটে উঠেছে।
ঘ. উদ্দীপকে কেবল সুশিক্ষায় লাইব্রেরির ভূমিকার দিকটি ফুটে উঠেছে, যা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের বিষয়বস্তুর পূর্ণরূপ প্রকাশ করে না।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের পাঠচর্চায় অনভ্যাস যে সেই ত্রুটির জন্যই ঘটছে সেই দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানোর দিকেই বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়, শিক্ষার্থীদের পক্ষে তা কতটুকু উপযোগী, সেদিকে খেয়াল রাখা হয় না।
লেখকের মতে, শিক্ষার্থীদের এ অবস্থার উন্নয়ন ঘটাত পারে কেবল লাইব্রেরি। কারণ লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীরা মনের আনন্দে পড়াশোনা করে থাকে। যার ফলে প্রকৃত শিক্ষা লাভ করা সম্ভব হয়।
উদ্দীপকে কেবল সুশিক্ষায় লাইব্রেরির গুরুত্বের কথা বল হয়েছে। লাইব্রেরিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা কীভাবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে তার ধাপগুলো দেখানো হয়েছে। কোনো ব্যক্তি যখন লাইব্রেরিতে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে তখন তার মনের প্রসারতা বৃদ্ধি পায়। তখন তার আচরণগত পরিবর্তনও ঘটে। এভাবে একজন ব্যক্তি স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, উদ্দীপকে কেবল সুশিক্ষায় লাইব্রেরির কথা বলা হলেও প্রবন্ধটিতে এই বিষয়টি ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ও গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে। যেমন— প্রবন্ধটিতে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে, যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। আলোচ্য প্রবন্ধে আলোচিত জ্ঞান অর্জনে শিক্ষকের ভূমিকার কথাও উদ্দীপকে নেই।
তাই বলা যায়, “উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আংশিক রূপায়ণ”- মন্তব্যটি যথার্থ ।
প্রশ্ন-৪ : মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাধিয়া রাখিতে পারিত সে, সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোকে কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী হইয়া ওঠে, নিস্তব্ধতা ভাঙিয়া ফেলে, অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করিয়া একবারে বাহির হইয়া আসে। হিমালয়ের মাথার ওপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন শত শত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে মানবহৃদয়ের বন্যাকে বাঁধিয়ে রাখিয়াছে।
ক. শিক্ষকের সার্থকতা কোথায়?
খ. মানুষের মনের সাক্ষাৎ শুধু সাহিত্যে পাওয়া যায় কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রকাশ করছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সম্পূর্ণরূপ নয়, আংশিক রূপায়ণ মাত্র।” – মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষার্থীকে শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম করানোয় ।
খ. সাহিত্য মানবজীবনের দর্পণ বলে সাহিত্যে মানুষের মনের সামগ্রিক অবস্থা জানা যায়। স্বতন্ত্রভাবে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বস্তুত মানুষের মনের ভগ্নাংশ। কিন্তু তার পূর্ণরুপটি কেবল সাহিত্যের মাঝেই পাওয়া যায় । সাহিত্যকে যদি মহাসাগরের সাথে তুলনা করা হয় তবে জ্ঞানের অন্যান্য শাখা হচ্ছে এক একটি নদীর মতো। আর হাজারো নদীর আত্মসমর্পণে তৈরি হয় সাগর তথা সাহিত্য। আর এ কারণে সাহিত্যেকে মানবজীবনের দর্পণ হিসেবে কল্পনা করা হয়। তাই বলা যায়, মানুষের মনের সাক্ষাৎ শুধু সাহিত্যেই পাওয়া সম্ভব।
গ. উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লাইব্রেরির গুরুত্বের দিকটি প্রকাশ করছে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠার ওপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কারণ লাইব্রেরিতে সবধরনের বইয়ের বিরাট সংগ্রহ থাকে। আর মানুষ মনের আনন্দে স্বেচ্ছায় এখানে বই পড়ার সুযোগ লাভ করে। এর মাধ্যমে পাঠকের মানসিক অবস্থার উন্নয়ন সাধিত হয়। লাইব্রেরির গুরুত্ব তুলে ধরে একে স্কুল-কলেজের ওপর এবং হাসপাতালের চাইতে কোনো অংশে কম নয় বলে বলা হয়েছে।
উদ্দীপকেও মানবজীবনে লাইব্রেরির গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। এখানে লাইব্রেরির মহাসমুদ্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ লাইব্রেরিতে অসংখ্য বইয়ে জ্ঞান আবদ্ধ থাকে। এতে মানুষ খুর সহজেই তা আত্মস্থ করার সুযোগ পায় । আলোচ্য প্রবন্ধেও আমরা লাইব্রেরির গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারি।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লাইব্রেরির গুরুত্বের দিকটি প্রকাশ করছে।
ঘ. কেবল লাইব্রেরির গুরুত্ব উঠে আসায় ‘উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সামগ্রিকতাকে স্পর্শ করতে পারেনি।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বই পড়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি মনে করেন, বই পড়ার অনভ্যাসই শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির জন্য দায়ী। কারণ আর্থিক অনটনের কারণে অর্থকরী নয়, এমন সবকিছুই এদেশে অনর্থক বলে বিবেচনা করা হয়। সেজন্য বই পড়ার প্রতি লোকের অনীহা দেখা যায়। আর এ কারণে মানুষের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। তাই লেখক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। কেননা এতে মানুষ স্বেচ্ছায় স্বানন্দ্যচিত্রে সাহিত্যচর্চার সুযোগ পাবে।
উদ্দীপকে লাইব্রেরির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। লাইব্রেরিকে একটি বিশাল মহাসমুদ্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ লাইব্রেরিতে থাকা হাজারো বই পাঠ করে মানুষে মনের আনন্দে জ্ঞান আহরণ করতে পারে। এতে তাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার ঘটে। অর্থাৎ, লাইব্রেরি যে জ্ঞানের আধার তা বোঝাতেই নানা উদাহরণের অবতারণা করা হয়েছে।
উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায়, ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির জন্য বই পড়ার প্রতি অনীহাকে দায়ী করার পাশাপাশি লাইব্রেরি স্থাপনের প্রতিও গুরুত্বরোপ করেছেন। এছাড়া সাহিত্যচর্চা কীভাবে একটি জাতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে তাও তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকে কেবল লাইব্রেরির গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন-৫: মেধাবী ছাত্রী লাবণ্য এইচএসসি পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নিল সাহিত্য সাধনাকেই সে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ভর্তি হলো বাংলা বিভাগে। কিন্তু তার এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারল না তার পরিবার। কারণ তাদের স্বপ্ন ছিল, মেয়ে বড়ো হয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু তাদের স্বপ্ন হলো ভুলুষ্ঠিত। তাই রাগে-অভিমানে তারা তাদের একমাত্র মেয়ের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিল।
ক. প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম কী?
খ. ‘ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ, তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপেক্ষ।’- বক্তব্যটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকটি তোমার পঠিত প্রবন্ধের কোন দিকটিকে নির্দেশ করছে?
ঘ. ‘দর্শন, বিজ্ঞান হচ্ছে মনগঙ্গার তোলা জল, তার পূর্ণ স্রোত সাহিত্যের ভেতরই সোল্লাসে সবেগে বয়ে চলেছে।’- মন্তব্যটির আলোকে লাবণ্যের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা আলোচনা করো।
৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম বীরবল।
খ. ‘ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ, তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপেক্ষ।’- বক্তব্যটির তাৎপর্য হলো জ্ঞানের উন্নতির উপর ধন ও মনের উন্নতি নির্ভরশীল। আমাদের বর্তমান সমাজের ধারণা হলো জ্ঞান অর্জন করে ভালো চাকরির মাধ্যমে ধনী হওয়া। সাহিত্যচর্চাকে অনর্থক ও অপচয় ভেবে এবং এতে নগদ অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা কম বিধায় এর প্রতি কেউ আগ্রহী হয় না। অথচ বর্তমান যুগে জ্ঞানের উন্নতির সাথে ধনের ও মনের গভীর সম্পর্ক। জ্ঞান আছে বলেই ধনের সৃষ্টি এবং মন আছে বলে জ্ঞানের গুরুত্ব বিদ্যমান আছে।
গ. উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সাহিত্যচর্চার উপযোগিতা ও শিক্ষা সম্পর্কে অভিভাবকদের মানসিকতার দিকটিকে নির্দেশ করে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে সাহিত্যচর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সাহিত্যকে মনের আনন্দ লাভের মাধ্যম হিসেবে এবং সুশিক্ষার উপায় হিসেবে আলোচ্য প্রবন্ধে উপস্থাপন করা হয়েছে। পক্ষান্তরে আমাদের সমাজের অভিভাবকরা সাহিত্যচর্চাকে যে নেতিবাচক ও অর্থলাভের অন্তরায় হিসেবে দেখে সে বিষয়টিও আলোচ্য প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে।
উদ্দীপকের লাবণ্যের মাঝে সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক লক্ষ করা যায়। এইচএসসি পাসের পর তাই সে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী লাবণ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে ভর্তি হয়। তার এই সিদ্ধান্ত পরিবারের লোকেরা মেনে নিতে পারে না। কারণ তাদের স্বপ্ন ছিল মেয়ে বড়ো হয়ে ডাক্তার হবে। তখন তার যেমন নাম-যশ হবে, তেমনি অনেক টাকাও সে উপার্জন করবে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় তারা লাবণ্যের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
উদ্দীপকের লাবণ্যের সাহিত্যের প্রতি ঝোক ও তার পরিবারের স্বপ্ন ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকেই যেন সমর্থন করে। আলোচ্য প্রবন্ধেও লেখক সাহিত্যচর্চার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ঘ. প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি উদ্দীপকের লাবণ্যের সাহিত্য বিষয় অধ্যয়নের সিদ্ধান্তে যৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হয়।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে দর্শন, বিজ্ঞানকে সাহিত্যের উৎসারিত শাখা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। লেখক সাহিত্যকে সকল পঠিত বিষয়ের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে দর্শন, বিজ্ঞানসহ অন্যান্য সকল বিষয়কে সাহিত্যের অংশ বলে মত দিয়েছেন। তার মতে, সাহিত্যের মধ্যেই অন্যান্য সকল বিষয়ের পূর্ণ স্রোত বহমান।
উদ্দীপকের লাবণ্য তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলা সাহিত্য অধ্যয়ন করে। সে সাহিত্যকে ভালোবেসে সিদ্ধান্ত নেয় বাংলা পড়ার। এজন্য এইচএসসি পরীক্ষার পর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়। কিন্তু তার এ সিদ্ধান্ত পরিবার মেনে নেয়নি। পরিবারের স্বপ্ন ছিল লাবণ্য বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করে বড়ো ডাক্তার হবে। লাবণ্যের এমন সিদ্ধান্ত ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সাহিত্য ধারণার যৌক্তিক রূপায়ণ বলেই মনে হয়।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে সাহিত্য একটি ব্যাপক অর্থবোধক বিষয় হিসেবে বিবেচিত যার মাঝে সকল বিষয়ের সমাবেশ লক্ষ করা যায়। বিজ্ঞান, দর্শন বলতে প্রচলিত শিক্ষায় যে পঠিত বিষয় রয়েছে সেগুলো মূলত সাহিত্য থেকেই উৎসারিত। কারণ, সাহিত্য শুধু নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। বরং শিল্প, সংস্কৃতি, দর্শন, বিজ্ঞান, ভাষা সবকিছুই সাহিত্যের পরিধির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
তাই শুধু বিজ্ঞান বা দর্শন অধ্যয়ন করে সাহিত্যের আসল মর্ম-উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। এজন্য যে মূল কেন্দ্র থেকে এসব সাহিত্যের উৎপত্তি সে কেন্দ্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলেই সাহিত্যের মূল রস আস্বাদন সম্ভব হয়। প্রবন্ধের এই মনোভাব ও বক্তব্যের আলোকে উদ্দীপকের লাবণ্যের সিদ্ধান্ত যথার্থ মনে হয়।
প্রশ্ন-৬ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোতা কাহিনী’ গল্পে রাজা শখ করে একটি তোতা পাখি কিনে সেটির শিক্ষার ব্যবস্থা করলেন। শিক্ষার জন্য বিখ্যাত সব পণ্ডিত নিয়োগ দেওয়া হলো। মহা সমারোহে তোতার শিক্ষাদান চলতে থাকল। পণ্ডিতেরা সেটিকে জোর করে পুস্তকের পাতা মুখের মধ্যে পুরে দিতে থাকল। অবশেষে একদিন সেটি মারা গেল।
ক. মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ কোনটি?
খ. লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের ওপরে স্থান দিয়েছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যে বিশেষ দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি মানুষের স্বশিক্ষিত হবার পথ রুদ্ধ করে দেয়।” ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ বই পড়া।
খ. মানসিক প্রফুল্লতা ও সুস্থতা দানের জন্য লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের মতোই গুরুত্ব দিয়েছেন। হাসপাতালে রুগ্ণ দেহের চিকিৎসা হয়। কিন্তু লাইব্রেরিতে চিকিৎসা হয় রুগ্ণ মনের। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি লাইব্রেরিতে গিয়ে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে তার ভালোলাগা অনুযায়ী বই পড়তে পারে। পাঠক এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ স্বাধীন। স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে পাঠক যখন বই পড়ার সুয়োগ পায় তখন তার মানসিক সুস্থতা তৈরি হয় এবং জ্ঞানার্জন হয় নিবিড় ও গভীর। তাই লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের মতোই গুরুত্ব দিয়েছেন।
গ. উদ্দীপকে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখকের মতে আমাদের স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয়। মাস্টার মহাশয়েরা নোট দেন আর সেই নোট মুখস্থ করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় পাস করে। সার্টিফিকেট সর্বস্ব এ শিক্ষায় মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো করলেও প্রকৃত অর্থে জ্ঞানার্জন হয় শূন্য। কেননা শিক্ষার্থীর ভালো লাগা, মন্দ লাগা, পছন্দ-অপছন্দ, আগ্রহ-সামর্থ্য এখানে কোনো প্রকার গুরুত্ব পায় না। বরং চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে শিক্ষার্জনে বাধ্য করা হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পায় না। বরং তাদের জীবনীশক্তি হ্রাস পায়। লেখক তাই এ শিক্ষাব্যবস্থাকে বাজিকরের বন্দুক-কামানের গুলি খেয়ে আবার তা উদ্গিরণ করার প্রাণান্তকর বাজির সাথে তুলনা করেছেন।
উদ্দীপকের ‘তোতা কাহিনী’ গল্পেও দেখা যায় জোর করে বিদ্যা গেলানোর ঘটনা। যেখানে তোতা পাখিকে শিক্ষার জন্য আয়োজনের কোনো ঘাটতি ছিল না। বিখ্যাত পণ্ডিত নিয়োগ, মহাসমারোহের সাথে শিক্ষাদান এবং এক সময় জোর করে শেখানোর চেষ্টা করা হয়। সবশেষে মৃত্যু ঘটে পাখিটির। এমনিভাবে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরাও উদ্দীপকের তোতা পাখির মতোই করুণ পরিণতির দিকে ধাবিত হয়।
ঘ. বিদ্যার্জনে স্বাধীনতা না থাকলে শিক্ষার্থীরা ছন্দ হারিয়ে ফেলে, আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়, যা স্বশিক্ষিত হবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে দেখা যায়, আমাদের দেশে বিদ্যাদাতার যেমন অভাব নেই, তেমনি দাতাকর্ণেরও অভাব নেই। ছেলেমেয়েরা স্কুলে বিদ্যার্জন করে। শিক্ষকের ইচ্ছায় । শিক্ষার্থীর ভালোলাগার কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। অর্থাৎ তাদেরকে বিদ্যা গেলানো হয়। তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক সেটি আদৌ বিচার্য বিষয় নয়। গুরুদত্ত নানা প্রকার নোট মুখস্থ করে তারা পরীক্ষায় পাস করে। তাছাড়াও পরীক্ষায় পাস ও ভালো নম্বর পাওয়াই তাদের মুখ্য বিষয় হওয়ায় নির্ধারিত বিষয়ের বাইরে যাওয়ার সুযোগ তাদের নেই। এমনকি পারিবারিক পরিবেশ এবং বিদ্যালয় উভয়ক্ষেত্রেই তাদেরকে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে স্বেচ্ছায়, সাগ্রহে, সানন্দে পাঠগ্রহণের সুযোগ তাদের হয়ে ওঠে না।
উদ্দীপকে দেখা যায়, রাজা তোতা পাখিকে শিক্ষাদানের জন্য বিখ্যাত পণ্ডিত নিয়োগ করেন। পণ্ডিতেরা সেটিকে জোর করে পুস্তকের পাতা মুখে পুরে দেন। অর্থাৎ তোতার ইচ্ছা, আগ্রহ কিংবা সামর্থ্যের ওপর কোনো গুরুত্বারোপ করা হয়নি ফলে পাখিটি সে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুবরণ করে।
লেখকের মতে, ‘সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। অর্থাৎ সুশিক্ষিত হতে হলে আগে অবশ্যই তাকে স্বশিক্ষিত হতে হবে। আর স্বশিক্ষিত হবার জন্য চাই সাহিত্যচর্চা। সকল জ্ঞানের আধার সাহিত্য। তাই লাইব্রেরিতে স্বেচ্ছায়, সাগ্রহে, সানন্দে সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই কেবল স্বশিক্ষিত হওয়া যায় ।
কিন্তু উদ্দীপকের তোতার মতোই আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পুঁথিগত বিদ্যার্জনের মাধ্যমে শুধু পরীক্ষায় পাসের জন্য বই মুখস্থ করতে বাধ্য করানো হয়, যা স্বশিক্ষিত হওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়।