নবম দশম শ্রেণি-পদার্থ বিজ্ঞান-পঞ্চম অধ্যায়-পদার্থের অবস্থা ও চাপ

Sharing is caring!

নবম দশম শ্রেণি পদার্থ বিজ্ঞান

পঞ্চম অধ্যায়

পদার্থের অবস্থা ও চাপ

Pressure And States Of Matter

অধ্যায় ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন : চাপ বলতে কী বুঝ?

উত্তর: চাপ (Pressure) : কোনো পৃষ্ঠের একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে।

চাপকে P অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। A ক্ষেত্রফলের কোনো পৃষ্ঠের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত মোট বলের মান F হলে ওই পৃষ্ঠে চাপের পরিমাণ,

চাপ = বল / ক্ষেত্রফল

গাণিতিকভাবে, P = F / Α

চাপ একটি স্কেলার রাশি বা অদিক রাশি। চাপের একক প্যাসকেল (Pa) বা N/m2

প্যাসকেল (Pa) : 1m2 ক্ষেত্রফলের ওপর IN বল লম্বভাবে প্রযুক্ত হলে যে চাপের সৃষ্টি হয় তাকেএক প্যাসকেল বা 1Pa বলে।

মাত্রা একক : চাপের একক প্যাসকেল (Pa) বা N/m2। বলের মাত্রাকে ক্ষেত্রফলের মাত্রা দিয়ে ভাগ করলে চাপের মাত্রা পাওয়া যাবে।

.:. [P] = [ML-1T-2]

প্রশ্নঃ ঘনত্ব ধাক্কা বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ ঘনত্ব (Density) : বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে। ঘনত্বকে p (রো) বা d বা D দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

অর্থাৎ, ঘনত্ব = ভর / আয়তন।

গাণিতিকভাবে, V আয়তনের কোনো বস্তুর ভর m হলে,

ঘনত্ব, p = m / V ।

কোনো বস্তুর ঘনত্ব এর উপাদান ও তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে ঘনত্বের কেবল মান আছে, দিক নেই। তাই ঘনত্ব একটি স্কেলার রাশি বা অদিক রাশিরাশি । এসআই বা আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে ঘনত্বের একক kg/m3

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

ঘনত্বের একক ও মাত্রা : ঘনত্বের একক kgm-3 অথবা gm/cc এবং ঘনত্বের মাত্রা, [p] = ML-3 .

ধাক্কা: চাপের জন্য কোনো ক্ষেত্রে মোট যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ধাক্কা বলে।

আমরা জানি, চাপ = বল/ ক্ষেত্রফল

মোট বল = চাপ × ক্ষেত্রফল

.:. মোট বল বা ধাক্কা, F = P × A .

প্রশ্নঃ দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহারগুলি লিখ।

উত্তরঃ দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহার নিচে আলোচনা করা হলো:

১. সাঁতার কাটার সময় আমাদের শরীরকে ভাসিয়ে রাখতে হয়। পানির চেয়ে কম ঘনত্বের তরলে ভেসে থাকা কঠিন এবং সাঁতার কাটাও কঠিন। আর বেশি ঘনত্বের তরলে ভেসে থাকা সহজ এবং সাঁতার কাটাও সহজ।

২. বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে বেলুন উড়ানো হয়। এই বেলুনের মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস থাকে। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে বেশ কম। তাই এই গ্যাসভর্তি বেলুন সহজে উপরের দিকে উঠে যায়।

৩. প্রকৌশলীরা যখন কোনো ব্রীজ বা ফ্লাইওভার এর ডিজাইন করেন তখন নির্মাণ সামগ্রীর ঘনত্বের কথা উল্লেখ থাকে। প্লান অনুযায়ী আয়তন বের করে ওই ঘনত্ব দিয়ে গুণ করে মোট ওজন বের করা হয়। এই ওজন অনুযায়ী কত মজবুত পিলার নির্মাণ করতে হবে তা বের করা হয় ।

8. আমরা আই.পি.এস ব্যবহার করি, এর ব্যাটারির সালফিউরিক এসিডের ঘনত্ব জানা দরকার। তাই মাঝে মাঝে হাইড্রোমিটার দ্বারা তা জেনে নিতে হয়। এর ঘনত্ব 1.5×10 kg m-3 থেকে 1.3x10kgm-3। ঘনত্ব বেড়ে গেলে নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য মাঝে মধ্যে প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে ঘনত্ব ঠিক রাখতে হয় ।

৫. ভাল ডিম পানিতে ডুবে যায় কিন্তু পচা ডিম পানিতে ভাসে। পচা ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে কম বলে তা ভাসে।

৬. খাঁটি দুধের ঘনত্ব জেনে ল্যাকটোমিটারের সাহায্যে দুধে ভেজাল আছে কিনা জানা যায়।

৭. রান্নার সময় পাত্র তাপ গ্রহণ করার পর পানির ঘনত্ব কমে ওপরে ওঠে আসে ফলে পাত্রের সমস্ত পানিই গরম হয়। তা না হলে শুধু পাত্রের তলার পানিই গরম হতো এবং আমরা কোন কিছুই রান্না করতে পারতাম না।

৮. পানির ঘনত্ব অপেক্ষা বরফের ঘনত্ব কম হওয়ায় শীত প্রধান দেশে জলাশয়ের ওপরের পানিই শুধু বরফে পরিনত হয়ে পানিতে ভাসতে থাকে। ফলে পানিতে ভাসমান বরফের নিচে জলজপ্রানী বসবাস করে।

৯. গ্রীষ্মকালীন সময়ে আমরা পুকুরে গোসল করার সময় শুধু ওপরের অংশের পানি গরম অনুভব করি এবং নীচের অংশে শীতল অনুভব করি। এ রকম হওয়ার কারণ পানি উত্তপ্ত হওয়ার পর ঘনত্ব কমে যায় ফলে গরম পানি ওপরের অংশে অবস্থান করে ।

১০. বায়ুর ঘনত্বের উপর নির্ভর করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের গুরুরত্ব অপরিসীম।

প্রশ্নঃ স্বর্ণের ঘনত্ব 19300kgm-3 বলতে কী বুঝ ?

উত্তরঃ কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার ঘনত্ব বলে। স্বর্ণের ঘনত্ব 19300kgm-3 বলতে বোঝায় যে, 1m3 আয়তনের স্বর্ণের ভর 19300kg আবার, একক আয়তনের স্বর্ণের ভর একক আয়তনের পানির ভরের 19.3 গুণ এবং এক টুকরো স্বর্ণকে পানিতে ছেড়ে দিলে তা ডুবে যাবে।

প্রশ্নঃ ভর আয়তন কাকে বলে?

উত্তরঃ ভর : বস্তুর মধ্যে পদার্থের মোট পরিমাণকে ভর বলে। ভরকে m দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

ভর = আয়তন × ঘনত্ব

.:. m = Vp.

আয়তন: কোনো বস্তু যে জায়গা জুড়ে থাকে তাকে এর আয়তন বলে। আয়তনকে v দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

আয়তন = ভর / ঘনত্ব

.:. V = m/p.

প্রশ্নঃ প্লবতা কাকে বলে? প্লবতার মান কিভাবে নির্ণয় করা যায়?

উত্তরঃ প্লবতা: কোনো বস্তু সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো স্থির তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থে নিমজ্জিত করলে ঐ বস্তুর ওপর তরল বা বায়বীয় পদার্থ লম্বভাবে যে ঊর্ধ্বমুখী লব্ধি বল প্রয়োগ করে তাকে প্লবতা বলে। অর্থাৎ, প্লবতা = লব্ধি বল

প্লবতার মান নির্ণয়: তরলের মধ্যে কোনো কঠিন বস্তুকে নিমজ্জিত করলে বস্তুও প্রতি বিন্দুতে সর্বমুখী চাপ অনুভূত হবে।

ধরা যাক A প্রস্থচ্ছেদের এবং h উচ্চতার একটি সিলিন্ডার PQRS । এটা p ঘনত্বের প্রবাহীতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত আছে। তরলের মুক্ত তল থেকে সিলিন্ডারের উপরের এবং নিচের পৃষ্ঠের গভীরতা যথাক্রমে h1 ও h2

সুতরং h = h2 – h1

সিলিন্ডারের উপরি পৃষ্ঠ PQ- এ তরল কর্তৃক ঊর্ধ্বমুখী বল, F1 = Ah1pg

সিলিন্ডারটির নিম্ন পৃষ্ঠ SR – এ তরল কর্তৃক উর্ধ্বমুখী বল, F2 = Ah2pg

সিলিন্ডারের বক্রপৃষ্ঠে তরল কর্তৃক প্রযুক্ত পার্শ্বচাপ জনিত বল পরস্পর সমান ও বিপরীতমুখী বিধায় নাকচ হয়ে যায়।

সুতরং ঊর্ধ্বমুখী লব্ধি বল বা প্লবতা  F = F2 – F1

                                                            =  Ah2pg – Ah1pg

                                                            =  A(h2 – h1)pg

                                                            =  Ahpg

                                                            =  (hA)pg

                                                            =  Vpg [V= há=সিলিন্ডারের আয়তন]

                                                            = বস্তু কর্তৃক অপসারীত প্রবাহীর ওজন।

সুতরাং নিমজ্জিত বস্তুর উপর ক্রিয়ারত ঊর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা বস্তু কর্তৃক অপসারিত প্রবাহীর ওজনের সমান। এই ঊর্ধ্বমুখী বলের জন্যই তরলে নিমজ্জিত বস্তু ওজন হারায় বলে মনে হয়।

প্রশ্নঃ স্থির তরলের কোনো বিন্দুতে চাপ উচ্চতার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় কর।

উত্তরঃ তরল পদার্থের ভিতরে কোনো বিন্দুতে চাপ বলতে ঠিক ঐ বিন্দুর চারদিকে প্রতি একক ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে অনুভূত বলকে বোঝায়। ধরা যাক, পাত্রের ভূমির ক্ষেত্রফল = A, তরলের ঘনত্ব = p, তরলের গভীরতা = h এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ = g.

এখন A ক্ষেত্রফলে প্রযুক্ত বল = তরলের ওজন

                                                = তরলের ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ

                                                = তররের আয়তন × ঘনত্ব × g

                                                = ভূমির ক্ষেত্রফল × গভীরতা × p × g

                                                = Ahpg

আমরা জানি,  চাপ  = বল / ক্ষেত্রফল

                        .:. চাপ, P = Ahpg/A

                        .:. P  = hpg .

আবার, যেহেতু g ধ্রুবক তাই, P ∝ hp

অর্থাৎ স্থির তরলের অভ্যন্তরে কোনো বিন্দুতে চাপ ঐ বিন্দুর গভীরতা ও ঘনত্বের সমানুপাতিক। সুতরাং তরলের গভীরতা বাড়লে চাপ বারে এবং ঘনত্ব বাড়লেও চাপ বাড়ে । নির্দিষ্ট তরলে যে কোনবিন্দুতে চাপ ক্ষেত্রফলের উপর নির্ভর করে না।

আবার, নির্দিষ্ট ঘনত্বের তরলের জন্য p ও g ধ্রুব।

                        .:.  P ∝ h

অর্থাৎ, নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট ঘনত্বের তরলের চাপ এর ঘনত্বের সমানুপাতিক।

*পানির বেলায় আনুমানিক প্রতি দশ মিটার গভীরতায় বাতাসের চাপের সমপরিমাণ চাপ বেড়ে যায়। (10m/atm)*   

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ আর্কিমিডিসের সূত্রটি বিবৃত ব্যাখ্যা কর। একটি পরীক্ষার সাহায্যে সূত্রটি প্রমাণ কর

উত্তর : আর্কিমিডিসের নীতি (Archimede’s Principle): “বস্তুকে কোনো স্থির তরল অথবা বায়বীয় পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডুবালে বস্তুটি কিছু ওজন হারায়। এ হারানো ওজন বস্তুটির দ্বারা অপসারিত তরল বা বায়বীয় পদার্থের ওজনের সমান।”

ব্যাখ্যাঃ কোনো কঠিন পদার্থকে তরল বা বায়বীয় পদার্থে ডুবালে ওজন কম মনে হয়। আর্কিমিডিসের নীতি থেকে আমরা এ ওজন হ্রাসের পরিমাণ জানতে পারি। পদার্থের অভেদ্যতা ধর্ম অনুযায়ী বস্তুটি তরল পদার্থের মধ্যে যতটুকু জায়গা অধিকার করে আছে ঠিক ততটুকু জায়গা থেকে তরল পদার্থ অপসারিত হয়েছে। পরীক্ষা করলে দেখা যাবে বস্তুটির হারানো ওজন বস্তুটির দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান।

আর্কিমিডিসের নীতির পরীক্ষামূলক প্রমাণঃ তরল বা বায়বীয় পদার্থে নিমজ্জিত বস্তুর ওজন হ্রাস যে বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল বা বায়বীয় পদার্থের ওজনের সমান তা নিচের পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করা যায়।

ধরা যাক A ও B দুটি সিলিন্ডার। A সিলিন্ডারটির উপরের মুখ খোলা ও ফাঁকা এবং B সিলিন্ডারটি নিরেট। A সিলিন্ডারটির মাপ এমন যেন B সিলিন্ডারটি এর মাঝে বসে যায়। অর্থাৎ, A এর ভিতরের আয়তন B এর বাইরের আয়তনের সমান।

একটি তরল স্থৈতিক নিক্তির বামপাশে এদের ঝুলিয়ে অপর পাশ আনুভূমিক করা হল। এরপর B সিলিন্ডারটি সম্পপূর্ণ পানিতে ডুবানো হল। এর ফলে নিক্তির বাম দিক উপরে ওঠে যাবে এবং ডান দিক নিচে নেমে যাবে অর্থাৎ, বাম দিক হালকা হয়ে গেল। এ অবস্থায় যদি A সিলিন্ডারটিকে ধীরে ধীরে পানি পূর্ণ করা হয় তাহলে নিক্তির বাম দিক আবার নিচে নামতে থাকবে এবং A সিলিন্ডারটি সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে গেলে নিক্তি আবার অনুভূমিক হয়ে যাবে।

এতে প্রমাণিত হয় যে, B সিলিন্ডারটি পানিতে ডুবানোর ফলে যে ওজন হারিয়েছিল তা A সিলিন্ডারের ভিতরের আয়তনের সমান। সুতরাং পানিতে ডুবালে বস্তুর ওজন যে পরিমাণ কমে তা পানিতে ডুবানো বস্তুর সমআয়তন পানির ওজনের সমান অর্থাৎ, আর্কিমিডিসের নীতি প্রমাণিত হলো।

প্রশ্নঃ প্যাসকেলের সূত্রটি বিবৃত ব্যাখ্যা কর?

উত্তর : প্যাসকেলের সূত্র (Pascal’s Law): আবদ্ধ পাত্রে তরল বা বায়বীয় দার্থের কোনো অংশের ওপর বাইরে থেকে চাপ প্রয়োগ করলে সেই চাপ কিছুমাত্র না কমে তরল বা বায়বীয় পদার্থের সবদিকে সমানভাবে সঞ্চালিত হয় এবং তরল বা বায়বীয় পদার্থর সংলগ্ন পাত্রের গায়ে লম্বভাবে ক্রিয়া করে।

প্যাসকেলের সূত্রের গাণিতিক ব্যাখ্যা :

বল বৃদ্ধিকরণ নীতি : তরল পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশের উপর পিস্টন দ্বারা কোনো বল প্রয়োগ করলে এর বৃহত্তর পিস্টনগুলোতে সেই বলের বহুগুণ বল প্রযুক্ত হতে পারে। একে বল বৃদ্ধিকরণ নীতি বলা হয়।

ধরা যাক, C1 ও C2 দুটি সিলিন্ডার । এদের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল যথাক্রমে A1 ও A2 । C সিলিন্ডার দুটি একটি নল দ্বারা সংযুক্ত এবং প্রত্যেক সিলিন্ডারে একটি করে পিস্টন নিচ্ছিদ্রভাবে লাগানো আছে। এখন সিলিন্ডার দুটি যে কোনো তরল পদার্থে পূর্ণ করে যদি ছোট পিস্টনে F1 বল প্রয়োগ করা হয় তাহলে ছোট পিস্টনে অনুভূত চাপ হবে F1/A1 । প্যাসকেলের সূত্রানুসারে এ চাপ তরল পদার্থ দ্বারা সবদিকে সঞ্চালিত হবে।

সুতরাং বড় পিস্টনে প্রযুক্ত উর্ধ্ব চাপ F2/A2 হবে।

কাজেই বড় পিস্টনের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল যত বেশি হবে বলও তত বেশি অনুভূত হবে। ছোট পিস্টনের চেয়ে বড় পিস্টন যদি ১০০ গুণ বড় হয় তাহলে ছোট পিস্টনে ১ নিউটন বল প্রয়োগ করলে বড় পিস্টনে ১০০ নিউটন ঊর্ধ্বমুখী বল অনুভূত হবে।

প্রশ্নঃ তরলে নিমজ্জিত বস্তুর ওজন হারায় কেন? ব্যাখ্যা কর

উত্তর : কোনো বস্তুকে তরলে নিমজ্জিত করলে এর উপর উর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা কাজ করে। এ কারণে বস্তুটি ওজন হারায় বলে মনে হয়। নিমজ্জিত বস্তুর উপর ক্রিয়ারত এই ঊর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজনের সমান। বস্তুর ওজন হতে এই প্লবতা বিয়োগ করলে যে নিট বল পাওয়া যায় তা বস্তুর ওজন থেকে কম। তাই তরলে নিমজ্জিত বস্তু ওজন হারায় বলে মনে হয়।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ কোনো বস্তুর পানিতে ভাসা নিমজ্জনের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বস্তুর ভাসা ও নিমজ্জনের কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো:

একটি বস্তু পানিতে ডোবানো হলে প্লবতার কারণে সেটা যতটুকু পানি সরিয়েছে উপরের দিকে সেই পানির ওজনের সমপরিমাণ বল অনুভব করে। সেই বলটি বস্তুটির ওজনের বেশি হলে বস্তুটি ভেসে থাকবে। কোনো বস্তুকে যখন কোনো তরল পদার্থে ডুবানো হয় তখন ঐ বস্তুটির ওপর দুটি বল ক্রিয়াশীল হয়। বস্তুটির ওজন W সরাসরি নিচের দিকে ক্রিয়া করে এবং তরল পদার্থের চাপজনিত লব্ধি বল W1 উপরের দিকে ক্রিয়া করে।

দুটি বল একই সরলরেখা বরাবর বিপরীত দিকে ক্রিয়া করায় বস্তুটি তরল পদার্থে ডুববে না ভাসবে তা এই বল দুটির ওপর নির্ভর করবে।

এখানে তিন ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে :

১. W > W1 হলে অর্থাৎ, বস্তুর ওজন বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজনের চেয়ে বেশি হলে বস্তুটি তরলে ডুবে যাবে। এক্ষেত্রে বস্তুর ঘনত্ব তরলের ঘনত্বের চেয়ে বেশি।

২. W< W1 হলে অর্থাৎ, বস্তুর ওজনের চেয়ে বস্তুটি দ্বারা অপসারিত তরলের ওজন বেশি হলে বস্তুটি ঐ তরলে ভেসে থাকবে। এক্ষেত্রে তরলের ঘনত্ব বস্তুর ঘনত্বের চেয়ে বেশি।

৩. W = W1 হলে অর্থাৎ, বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজন বস্তুর ওজনের সমান হলে বস্তুটি ঐ তরলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে। এক্ষেত্রে বস্তুর ঘনত্ব তরলের ঘনত্বের সমান।

প্রশ্নঃ নদীর পানি অপেক্ষা সাগরের পানিতে সাঁতার কাটা সহজতর কেন?

উত্তরঃ সাগরের পানির ঘনত্ব অন্যান্য পানির তুলনায় বেশি হওয়ায় সাগরের পানিতে সাঁতার কাটা সহজতর। সাগরের পানিতে লবণ ও অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে। বিশুদ্ধ পানির ঘনত্বের চেয়ে সাগরের পানির ঘনত্ব বেশি হয়। যে পানির ঘনত্ব বেশি সে পানির প্লবতাও বেশি। নদীর পানি অপেক্ষা সাগরের পানির ঘনত্ব বেশি। ফলে নদীর পানি থেকে সাগরের পানিতে প্লবতা বেশি হয়। এই প্লবতা বলের কারণেই নদী র পানি অপেক্ষা সাগরের পানিতে সাঁতার কাটা সহজতর।

প্রশ্নঃ নির্দিষ্ট গভীরতায় চাপ তরলের প্রকৃতির উপর নির্ভরশীলব্যাখ্যা কর

উত্তরঃ আমরা জানি, চাপ, P = hpg ।

এখানে h = তরলের গভীরতা, p = তরলের ঘনত্ব, g = অভিকর্ষজত্বরণ।

কোনো নির্দিষ্ট স্থানে g ধ্রুবক ও নির্দিষ্ট গভীরতায় h ধ্রুবক।

.:. P ∝ p .

যেহেতু বিভিন্ন তরলের ঘনত্ব বিভিন্ন, সেহেতু নির্দিষ্ট গভীরতায় তরলের চাপও বিভিন্ন তাই বলা যায় নির্দিষ্ট গভীরতায় চাপ তরলের প্রকৃতি তথ্য ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্নঃ বায়ুমন্ডলীয় চাপ বলতে কী বুঝ? উচ্চতার সঙ্গে বায়ুমন্ডলীয় চাপের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বায়ুমন্ডল তার ওজনের জন্য ভূপৃষ্ঠে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করে তাকে ঐ স্থানের বায়ুমন্ডলীয় চাপ বলে। পৃথিবী পৃষ্ঠে এই চাপ প্রতি বর্গমিটারে প্রায় 105 N। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহের ক্ষেত্রফল 1.5 m2 ধরলে বায়ুমন্ডল তার দেহের উপর 1.5×105 N বল প্রয়োগ করে।

তবে মানুষের শরীরের ভিতরে রক্তের চাপ বাইরের এই চাপ অপেক্ষা সামান্য বেশি বলে মানুষ সাধারণত বায়ুর এই চাপ অনুভব করে না। বাতাসের চাপ মাপার যন্ত্রের নাম ব্যারোমিটার। বিজ্ঞানী টরিসেলি 1643 সালে এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন। সমুদ্র সমতলে সাধারণত চাপ 76cm পারদস্তম্ভের চাপের সমান। বাতাসের চাপ বাড়লে পরদের উচ্চতা 76 cm থেকে বেশি হয়, চাপ কমলে উচ্চতা 76 cm থেকে কমে যায়।

বায়ুমন্ডলীয় চাপ নির্ভর করে বায়ুমন্ডরের উচ্চতা ও বায়ুর ঘনত্বের ওপর। সমুদ্র সমতল থেকে যত ওপরে ওঠা যায় তত বায়ুর উপরিতল হতে বায়ু স্তম্ভের গভীরতা ও ঘনত্ব হ্রাস পায়। এজন্য উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুন্ডলীয় চাপ কমে অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বায়ুর চাপ তত কমতে থাকে।

এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের উপরে বায়ুমন্ডলীয় চাপ সমুদ্র সমতলের চাপের প্রায় 30% ।

প্রশ্নঃ লোহার টুকরা পানিতে ডুবে যায় কিন্তু লোহার তৈরি জাহাজ পানিতে ভাসে কেন?

উত্তর : লোহার একটি ছোট টুকরা পানিতে ভাসে না কারণ লোহার খন্ড দ্বারা অপসারিত পানির ওজন লোহা খন্ডের ওজনের চেয়ে অনেক কম। কিন্তু লোহার তৈরি হলেও জাহাজ পানিতে ভাসে কারণ জাহাজের ভিতরটা ফাঁপা এবং আয়তন অনেক বড় হওয়ায় জাহাজ যে আয়তনের পানি অপসারণ করে তার ওজন জাহাজের ওজনের চেয়ে বেশি হয়। এতে জাহাজ পানিতে নামালে প্রথমে ডুবতে শুরু করে। খানিকটা ডুবার পর যখন অপসারিত পানির ওজন জাহাজের ওজনের সমান হয় তখন জাহাজটি ভাসতে থাকে।

প্রশ্নঃ পচা ডিম পানিতে ভাসে কেন?

উত্তরঃ কোনো বস্তু পানিতে ভাসবে না ডুববে তা নির্ভর করে বস্তুটির ঘনত্বের উপর। যদি বস্তুর ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে বেশি হয় তাহলে বস্তুটি পানিতে ডুবে যাবে আর কম হলে পানিতে ভাসবে। ভাল ডিমের ঘনত্ব পানির ঘনত্ব অপেক্ষা বেশি তাই পানিতে ডুবে যায়। আর পচা ডিমের ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে কম। এ কারণে পচা ডিম পানিতে ভাসে।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ প্রবাহীর চাপ কাকে বলে?

উত্তর : তরল এবং বায়বীয় পদার্থ “প্রবাহিত” হতে পারে তাই এই দুটোকে প্রবাহী বলা হয়। স্থির প্রবাহীর (তরল বা গ্যাস) নির্দিষ্ট গভীরতার কোন বিন্দুর যেকোনো তলের প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রবাহী কর্তৃক লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকেই প্রবাহীর চাপ বলে ।

প্রশ্নঃ পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্যসমূহ ব্যখ্যা কর?

উত্তর : পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্য (Molecular kinetic theory of matter) : পদার্থের

অণুগুলো গতিশীল অবস্থায় আছে, এই ধারণা ধরে নেওয়াই পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের মূল বিষয়। নিম্নবর্ণিত স্বীকার্যগুলোর ওপর পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত :

১. যেকোনো পদার্থ অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমন্বয়ে গঠিত। এই কণাগুলোকে পদার্থের অণু বলে ।

২. অণুগুলো এতো ক্ষুদ্র যে তাদেরকে বিন্দুবৎ বিবেচনা করা হয়।

৩. পদার্থের কণাগুলো সর্বদা গতিশীল ।

৪. গ্যাসের ক্ষেত্রে অণুগুলো বেশ দূরে দূরে থাকে, এজন্য তাদের মধ্যে কোনো আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল কাজ করে না বললেই চলে। তরলের ক্ষেত্রে অণুগুলো কিছুটা দূরে দূরে থাকলেও তাদের মধ্যে আকর্ষণ বল কাজ করে এবং তরলকে পাত্রের আকারে ধারণ করতে বাধ্য করে। কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে কণাগুলো খুব কাছাকাছি থাকে এবং তাদের মাঝে তীব্র আকর্ষণ বল কাজ করে বিধায় কঠিন পদার্থের নিজস্ব আকার ও আয়তন থাকে।

৫. গ্যাস ও তরলের ক্ষেত্রে কণাগুলো এলোমেলো ছোটাছুটি করে এজন্য এরা পরস্পরের সাথে এবং পাত্রের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

প্রশ্নঃ পদার্থের প্লাজমা অবস্থা বলতে কী বুঝ?

উত্তর : পদার্থের প্লাজমা অবস্থা (Plasma state of matter) : পদার্থের চতুর্থ অবস্থার নাম প্লাজমা। এই প্লাজমা হলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস। প্লাজমার বড় উৎস হচ্ছে সূর্য। তাছাড়া অন্য নক্ষত্রগুলোও প্লাজমার উৎস। প্রায় কয়েক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্লাজমা অবস্থার উৎপত্তি হয়। গ্যাসের ন্যায় প্লাজমার কোনো নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই। প্লাজমা কণাগুলো তড়িৎ আধান বহন করে তাই প্লাজমা তড়িৎ পরিবাহী হিসেবে কাজ করে। শিল্প কারখানার প্লাজমা টর্চ দিয়ে ধাতব পদার্থ কাটা হয়।

প্রশ্নঃ টরিসেলির শূন্যস্থান বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ টরিসেলির পরীক্ষায় ব্যবহৃত কাচনলে যে পারদস্তম্ভ দাঁড়িয়ে থাকে তার উপর নলের বন্ধ প্রান্ত পর্যন্ত স্থান শূন্য। এই শূন্যস্থানকে টরিসেলির শূন্যস্থান বলে। এখানে সামান্য পারদ বাষ্প থাকে ।

প্রশ্নঃ পদার্থের আনবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্যগুলো লিখ

উত্তরঃ পদার্থের আনবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্যগুলো হলো-

১. পদার্থের অণুগুলো সর্বদা গতিশীল ।

২. কঠিন পদার্থের অণুগুলো একস্থানে থেকে এদিক ওদিক স্পন্দিত হয়। তরল ও গ্যাসীয় দার্থের অণুগুলো এলোমেলোভাবে ছুটাছুটি করে। ফলে অণুগুলোর মধ্যে গতিশক্তির সঞ্চার হয়।

৩. কঠিন পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ বল আছে বলে বিভবশক্তি আছে। গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ বল নেই বলে বিভবশক্তি নেই।

৪. পদার্থের অণুগুলোর গতিশক্তি ও বিভবশক্তির সমষ্টিকে অভ্যন্তরীণ শক্তি বলে। কোনো বস্তুতে তাপীয় শক্তি প্রদান করলে তার অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়ে।

৫. গ্যাস ও তরলের ক্ষেত্রে অণুগুলো এলোমেলো ছুটাছুটি করে এজন্য এরা পরস্পরের সাথে এবং পাত্রের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

৬. অণুগুলো এত ক্ষুদ্র যে, তাদেরকে বিন্দুবৎ বিবেচনা করা হয়।

প্রশ্নঃ স্থিতিস্থাপকতা বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ স্থিতিস্থাপকতা (Elasticity) : বাহ্যিক বল ও যাগ করে কোনো বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়ের পরিবর্তনের চেষ্টা করলে, যে ধর্মের জন্য বস্তুটি এই প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় এবং বল অপসারিত হলে বস্তু তার পূর্বের আকার বা আয়তন ফিরে পায় সেই ধর্মকে স্থিতিস্থাপকতা বলে। অর্থাৎ বাহ্যিক বলের প্রভাবে বস্তুতে সৃষ্ট বিকৃতি, প্রতিরোধী ধর্মই হলো স্থিতিস্থাপকতা।

যে সব পদার্থের এই ধর্ম আছে তাদেরকে স্থিতিস্থাপক পদার্থ বলে। তবে বলের একটি সীমা আছে, যার বেশি বল প্রয়োগ করলে বস্তু আর পূর্বের আকার ফিরে পায় না। এই সীমাকে স্থিতিস্থাপক সীমা বলে। যে বস্তুর বাধা দেওয়ার ক্ষমতা বেশি তার স্থিতিস্থাপকতাও বেশি হবে। লোহা ও রাবারের মধ্যে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা লোহার বেশি, তাই লোহা রাবারের চেয়ে বেশি স্থিতিস্থাপক।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ পীড়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ পীড়ন (Stress) : বাহ্যিক বলের প্রভাবে কোনো বস্তুর মধ্যে বিকৃতির সৃষ্টি হলে স্থিতিস্থাপকতার জন্য বস্তুর ভিতরে একটি প্রতিরোধকারী বলের উদ্ভব হয়। বস্তুর ভিতর একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে উদ্ভুত এ প্রতিরোধকারী বলকে পীড়ন বলে।

অর্থাৎ A প্রস্থচ্ছেদের একটা বস্তুতে বল প্রয়োগ করা হলে যদি তার বিকৃতি ঘটে সেই বিকৃতি যদি F প্রতিরোধ বল তৈরি করে তাহলে পীড়ন= F/A .

দেখাযাচ্ছে এটা চাপের মতো এর একক Nm-2 বা Pa বা প্যাসকেল।

পীড়নের মাত্রা: ML-1T-2. পীড়ন একটি স্কেলার রাশি।

প্রশ্নঃ বিকৃতি কী?

উত্তরঃ বিকৃতি (Strain) : বাইরে থেকে বল প্রয়োগের ফলে কোনো বস্তুর আকার বা দৈর্ঘ্যের যে আপেক্ষিক পরিবর্তন হয় তাকে বিকৃতি বলে।

অর্থাৎ Lo দৈর্ঘ্যের একটি বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করা হলে তার দৈর্ঘ্য যদি L হয় তাহলে-

বিকৃতি = (L- Lo)/Lo

বিকৃতির কোনো একক নেই এটি একটি সংখ্যা মাত্র। বিকৃতি একটি স্কেলার রাশি।

প্রশ্নঃ হুকের সূত্রটি লিখ গাণিতিক ব্যাখ্যা দাও

উত্তরঃ হুকের সূত্র (Hooke’s Law) : বিজ্ঞানী রবার্ট হুক স্থিতিস্থাপকতার মূলসূত্রটি আবিষ্কার করেন। এই সূত্রানুসারে- স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পীড়ন বিকৃতির সমানুপাতিক ।

প্রশ্নঃ স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক: হুকের সূত্রানুসারে, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর পীড়ন ও বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুবক। এ ধ্রুবককে বস্তুর উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বা স্থিতিস্থাপক মানাঙ্ক বা স্থিতিস্থাপক ধ্রুবক বলে ।

প্রশ্নঃ বায়ুমন্ডলীয় চাপের পরিবর্তন হতে কীভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া যায় তা বর্ণনা কর

উত্তরঃ বায়ুমন্ডলীয় চাপমাপক যন্ত্রের নাম ব্যারোমিটার। যন্ত্রটি দ্বারা আবহাওয়ার পূর্বাভাস যেভাবে দেওয়া যায় তা নিচে বর্ণনা করা হলো:

কোনো স্থানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বায়ূমন্ডলীয় চাপের পরিবর্তন ঘটে। এর কারণে বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের পরিমাণের হ্রাসবৃদ্ধি তথা বায়ুর ঘনত্বের পরিবর্তন হয়। আমরা বায়ুমন্ডলীয় চাপের পরিবর্তন বুঝতে পারি ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতার পরিবর্তন দেখে।

১. ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে কমতে থাকলে বোঝা যাবে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। কারণ জলীয় বাষ্প বায়ুর চেয়ে হালকা। এক্ষেত্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।

২. হঠাৎ যদি পারদস্তম্ভের উচ্চতা খুব কমে যায় তবে বুঝতে হবে চারদিকে বায়ুমন্ডলের চাপ সহসা কমে গেছে এবং ঐ স্থানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপের স্থান থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঐ নিম্নচাপের অঞ্চলে ছুটে আসবে। সুতরাং ঝড়ের সম্ভাবনা আছে।

৩. ব্যারোমিটারে পাদস্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়লে বুঝতে হবে বায়ুমন্ডল থেকে জলীয় বাষ্প অপসারিত হচ্ছে এবং শুষ্ক বাতাস সেই স্থান অধিকার করছে। সুতরাং আবহাওয়া শুষ্ক ও পরিষ্কার থাকবে ।

এভাবে বায়ুর চাপের পরিবর্তন ব্যারোমিটার দ্বারা নির্ণয় করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া যায়।

প্রশ্নঃ আপেক্ষিক গুরুত্ব ঘনত্বের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ আপেক্ষিক গুরুত্ব ও ঘনত্বের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলো:

ঘনত্বআপেক্ষিক গুরুত্ব
১. বস্তুর একক আয়তনের ভকে ঘনত্ব বলে।১. কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভর ও 4°C তাপমাত্রার সমআয়তন পানির ভরের অনুপাতকে আপেক্ষিক গুরুত্ব বলে।
২. ঘনত্বের একক আছে। এর একক kgm-3২. আপেক্ষিক গুরুত্বের কোনো একক নাই ।
৩. বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্বকে পানির ঘনত্ব দিয়ে গুণ করলে বস্তুর ঘনত্ব পাওয়া যায়।৩. বস্তুর ঘনত্বকে পানির ঘনত্ব দিয়ে ভাগ দিলে এর আপেক্ষিক গুরুত্বের মান পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের সূত্রটি প্রতিপাদন কর

উত্তরঃ পানিতে কোন বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের সূত্রটি প্রতিপাদন করা হলো:

ধরা যাক, বস্তুটির বাতাসে ওজন = W

বস্তুটির পানিতে ওজন =W1

.:. আর্কিমিডিসের সূত্রানুসারে,

বস্তুর সমআয়তন পানির ওজন = বস্তুর পানিতে আপাত হারানো ওজন

                                                = বস্তুর বাতাসে ওজন – বস্তুর পানিতে ওজন

                                                = W – W1

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে নৌপথে দূর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা কর

উত্তরঃ বাংলাদেশে নৌপথে দূর্ঘটনার কারণ নিম্নে ব্যাখ্যা করা হলো:

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং অসংখ্য খাল-বিল, নদ-নদী পুরো দেশটিকে যুক্ত করে রেখেছে। সে কারণে নৌপথ দেশের অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম। অন্য যেকোনো যানবাহনের মতোই নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ বা জাহাজ দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

  • নৌপথে দুর্ঘটনার অনেক কারণ থাকতে পারে, তার মাঝে প্রধান কারণ হচ্ছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, অন্যকিছুর সাথে সংঘর্ষ, চালকের ত্রুটি, যন্ত্রপাতির ত্রুটি, নকশার ত্রুটি, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন, মালপত্রের অনিয়মিত সংরক্ষণ ইত্যাদি।
  • আবহাওয়ার সংকেত যথাযথভাবে অনুসরণ করে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার বিপদ থেকে অনেকটুকুই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড়ের মাঝে পড়ে নৌযান বিপদগ্রস্থ হতে পারে। সেরকম অবস্থায় নৌযানের চালকদের অভিজ্ঞতা এবং দায়িত্ববোধ একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
  • বাংলাদেশে নৌপথের দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে সংঘর্ষ: একটি নৌযানের সাথে অন্য নৌযানের সংঘর্ষ, জেটির সাথে সংঘর্ষ, নদীর তলদেশ বা ডুবোচরে সংঘর্ষ— সবগুলোই নানা ধরনের দুর্ঘটনার সূত্রপাত করে থাকে।
  • নৌযানের যন্ত্রপাতি যথাযথ সংরক্ষণ করা না হলে সেগুলো দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। বেশি যাত্রী বহন করার জন্য নৌযানের নকশার অননুমোদিত পরিবর্তন করে একটি নৌযানকে দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দেওয়া হতে পারে।
  • অধিক মুনাফার লোভে একটি নৌযানে প্রয়োজন থেকে বেশি যাত্রী বহন করে নৌযানের ভরকেন্দ্র পরিবর্তিত হয়েও অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
  • দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বড় বড় ঢেউয়ে নৌযানের দুলুনীতে মালপত্র সরে গিয়েও নৌযানের ভরকেন্দ্র পরিবর্তিত হয়ে নৌযান দুর্ঘটনায় পড়তে পারে।

কখনো অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠা ঠিক নয়। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী উঠলে সেটা ডুবে যাবে। যেহেতু নদীতে স্রোত থাকে, ঢেউ থাকে তাই ধারণক্ষমতার চেয়ে বরং কিছু কম যাত্রী নিয়ে বা আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত অনুসরণ করে সকর্ততার সাথে নৌযান চালানো উচিত।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ হাইড্রোলিক প্রেস কী? এর কার্যপ্রণালী বর্ণনা কর

উত্তর : তরল পদার্থের চাপ সঞ্চালনের ফলে বল বৃদ্ধিকরণ নীতির ওপর ভিত্তি করে হাইড্রোলিক প্রেস তৈরি করা হয়। ব্রামা নামে জনৈক প্রকৌশলী এ যন্ত্রের উন্নতি সাধন করেন। ফলে একে ব্রামার প্রেসও বলা হয়।

কার্যপ্রণালি : লিভারের সাহায্যে ছোট পিস্টনকে উপরে তুললে ট্যাংক থেকে তরল পদার্থ ভালভকে ঠেলে নল দিয়ে ছোট সিলিন্ডারে প্রবেশ করে। এখন ছোট পিস্টনকে নিচে নামালে ছোট সিলিন্ডারের নিচের ভালভটি বন্ধ হয়ে যায় এবং সংযোগ নলের মধ্য দিয়ে তরল পদার্থ বড় সিলিন্ডারের ভালভের উপর চাপ দেয়। ফলে তাও খুলে যায় এবং তরল পদার্থ সিলিন্ডারের মধ্যে প্রবেশ করে।

এভাবে বারবার ছোট পিস্টনটিকে ওঠানামা করালে বড় সিলিন্ডারটি তরলে ভরে যায় এবং ছোট পিস্টনের প্রদত্ত চাপ তরলে সঞ্চালিত হয়ে বড় পিস্টনের উপর চাপ প্রয়োগ করে। ফলে বড় পিস্টন উপরে ওঠে আসে এবং পাটাতনের উপর রাখা নরম বস্তু চাপে ছোট হয়ে যায়।

চাপ প্রয়োগের কাজ শেষ হলে বড় সিলিন্ডারের তরল পদার্থ পাইপের সাহায্যে আবার ট্যাঙ্কে ফিরিয়ে আনা হয়। সিলিন্ডার থেকে তরল পদার্থ ট্যাঙ্কে চলে গেলে বড় পিস্টন নিচে নেমে আসে এবং যন্ত্র আবার ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়।

প্রশ্নঃ বেড়িবাঁধ তৈরি করার সময় বাঁধের উপরের অংশ অপেক্ষা নিচের অংশ চওড়া রাখা হয় কেন ?

উত্তরঃ যেকোনো বাঁধ তৈরি করার সময় একটি ঢাল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তা নাহলে বাঁধ তার নিজস্ব ওজনের কারণেই ভেঙে যেতে পারে। এ কারণে উপরের চেয়ে নিচের অংশ চওড়া হয়।

তাছাড়া বেড়ি বাঁধ সাধারণত পানি ঠেকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। পানি কর্তৃক প্রদত্ত চাপ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। এ কারণে বেড়ি বাঁধের নিচের অংশে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। এ বেশি চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের অংশ চওড়া করা হয়, যাতে পানি কর্তৃক প্রদত্ত বল কমে যায় ।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্নঃ বরফ পানিতে ভাসে কেন?

উত্তরঃ বরফের ঘনত্ব পানির তুলনায় কম হওয়ায় বরফ পানিতে ভাসে। পানি বরফে পরিণত হলে এর আয়তন বেড়ে যায়। পরীক্ষা করে দেখাগেছে 1 লিটার পানি বরফে পরিণত হলে এর আয়তন 12/11 লিটার হয়।

সুতরাং বরফের ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে কম। ফলে বরফ যে আয়তনের পানি অপসারণ করে তার ওজন বরফের ওজনের চেয়ে বেশি। ফলে বরফের উপর ক্রিয়ারত ঊর্ধ্বমুখী প্লবতা বল বরফের ওজনের চেয়ে বেশি হয় বলে বরফ পানিতে ভাসে। পানিতে ভাসার সময় বরফের 11/12 অংশ পানির নিচে থাকে এবং 1/12 অংশ পানির উপরে থাকে। [100cc পানিকে বরফে পরিণত করলে তার আয়তন 109cc হয়]

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন. চাপের একক কী?

উত্তর: চাপের একক Nm-2

প্রশ্ন. বল, চাপ ক্ষেত্রফলের সম্পর্ক কী ?

উত্তর: বল, চাপ ও ক্ষেত্রফলের সম্পর্কটি নিম্নরূপ-

চাপ = বল/ক্ষেত্রফল

প্রশ্ন. চাপ কাকে বলে?

উত্তর: কোনো বস্তুর প্রতি একক ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলের মানকে চাপ বলে ।

প্রশ্ন. চাপ কোন ধরনের রাশি?

উত্তর: চাপ স্কেলার রাশি ।

প্রশ্ন. চাপের মাত্ৰা লিখো

উত্তর: ML-1T-2

প্রশ্ন. প্রবাহীর চাপ কাকে বলে?

উত্তর: স্থির প্রবাহীর (তরল বা গ্যাস) নির্দিষ্ট গভীরতার কোন বিন্দুর যেকোন তলের প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রবাহী কর্তৃক লম্বভাবে প্রযুক্ত বলকেই প্রবাহীর চাপ বলে ।

প্রশ্ন. ঘনত্ব কী?

উত্তর: কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে ।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন. ঘনত্বকে কী দ্বারা প্রকাশ করা হয়?

উত্তর: ঘনত্বকে p(রো) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

প্রশ্ন. বায়ুর ঘনত্ব 1.29 kgm-3 বলতে কী বুঝায় ?

উত্তর: বায়ুর ঘনত্ব 1.29 kgm-3 বলতে বুঝায় 1m3  আয়তনের বায়ুর ভর 1.29 kg ।

প্রশ্ন১০. ঘনত্বের মাত্রা কী?

উত্তর: ঘনত্বের মাত্রা ML-3

প্রশ্ন১১. সোনার ঘনত্ব কত?

উত্তর: সোনার ঘনত্ব 19300 kgm-3

প্রশ্ন১২. আর্কিমিডিসের সূত্রটি বিবৃত করো।

উত্তর: “কোনো বস্তুকে স্থির তরল বা বায়বীয় পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডুবালে বস্তুটি কিছু ওজন হারায় বলে মনে হয়। এই হারানো ওজন বস্তুটির দ্বারা অপসারিত তরল বা বায়বীয় পদার্থের ওজনের সমান ।”

১৩. Buoyancy বা প্লবতা কাকে বলে ?

উত্তর: স্থির তরল বা বায়বীয় পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত কোনো বস্তুর উপর তরল বা বায়বীয় পদার্থ লম্বভাবে যে উর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে তাকে Buoyancy বা প্লবতা বলে ।

১৪. প্যাসকেলের সূত্রটি লিখো।

উত্তর: একটি আবদ্ধ পাত্রে তরল বা বায়বীয় পদার্থে বাইরে থেকে চাপ হলে সেই চাপ সমানভাবে সঞ্চালিত হয়ে পাত্রের সংলগ্ন গায়ে লম্বভাবে কাজ করবে।

১৫. বল বৃদ্ধিকরণ নীতি কী?

উত্তর: আবদ্ধ তরল পদার্থের ক্ষুদ্রতর অংশের উপর পিস্টন দ্বারা কোনো বল প্রয়োগ করে এর বৃহত্তর পিস্টনে সেই বলের বহুগুণ বেশি বল পাওয়ার নীতিই বল বৃদ্ধিকরণ নীতি ।

১৬. বস্তুর ঘনত্ব পানির ঘনত্বের সমান হলে কী হবে?

উত্তর: বস্তুর ঘনত্ব পানির ঘনত্বের সমান হলে বস্তুটি পানিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে ।

১৭. পৃথিবী পৃষ্ঠে বাতাসের চাপ কত?

উত্তর: পৃথিবী পৃষ্ঠের বাতাসের চাপ 1.01 × 105 Pa বা 1 atm.

১৮. বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কাকে বলে?

উত্তর: বায়ুমণ্ডল তার ওজনের জন্য ভূপৃষ্ঠে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করে তাকে ঐ স্থানের বায়ুমন্ডলীয় চাপ বলে।

১৯. একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহের উপর বায়ুমণ্ডল কত বল প্রলাপ করে?

উত্তর: একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দেহের উপর বায়ুমণ্ডল গড়ে 1.5 × 105 N বল প্রয়োগ করে ।

২০. স্থিতিস্থাপকতা কী?

উত্তর: বাহ্যিক বলের প্রভাবে বস্তুতে সৃষ্ট বিকৃতি প্রতিরোধী ধর্মই হলো স্থিতিস্থাপকতা ।

২১. স্থিতিস্থাপক সীমা কাকে বলে?

উত্তর: বাইরে থেকে প্রযুক্ত বলের একটি সর্বোচ্চ মান পর্যন্ত একটি বস্তু স্থিতিস্থাপক বস্তুর ন্যায় আচরণ করে। বলের এই সর্বোচ্চ মানকে স্থিতিস্থাপক সীমা বলে ।

২২. বিকৃতি কাকে বলে?

উত্তর: কোনো স্থিতিস্থাপক বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করার ফলে বস্তুর দৈর্ঘ্য, আয়তন বা আকৃতির পরিবর্তন ঘটে। একক দৈর্ঘ্যের বা একক আয়তনের এই পরিবর্তনকে বিকৃতি বলে ৷

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন২৩. পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু কাকে বলে?

উত্তর: কোন বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করে এর আকার বা আকৃতির পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রযুক্ত বল অপসারণ করে নিলে বস্তুটি যদি সম্পূর্ণ ভাবে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু বলে ।

২৪. হুকের সূত্রটি লিখো

উত্তর: স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পীড়ন বিকৃতির সমানুপাতিক।

২৫. পীড়ন বলতে কী বুঝো?

উত্তর: বাহ্যিক বলের প্রভাবে কোনো বস্তুর মধ্যে বিকৃতির সৃষ্টি হলে স্থিতিস্থাপকতার জন্য বস্তুর ভিতরে একটি প্রতিরোধ বলের উদ্ভব হয় । বস্তুর ভিতর একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে উদ্ভূত এ প্রতিরোধকারী বলকে পীড়ন বলে ।

প্রশ্ন২৬. স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক কাকে বলে?

উত্তর : হুকের সূত্রানুসারে স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পীড়ন ও বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব সংখ্যা। এই ধ্রুবকটিকে বস্তুর উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বলে ।

প্রশ্ন২৭. অণু কাকে বলে?

উত্তর: যে কোনো পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সমন্বয়ে গঠিত। এই কণাগুলোকে পদার্থের অণু বলে ।

প্রশ্ন২৮. প্লাজমা কী?

উত্তর: প্লাজমা হলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস ।

প্রশ্ন২৯. পদার্থের আণবিক তত্ত্বের মূল বিষয় কী?

উত্তর : পদার্থের অণুগুলো গতিশীল অবস্থায় আছে, এই ধারণা ধরে নেওয়াই পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের মূল বিষয়।

প্রশ্ন৩০. প্লাজমার ব্যবহার কী?

উত্তর: তড়িৎ পরিবহনে ও শিল্প কারখানায় ধাতব পদার্থ কাটার কাজে প্লাজমা ব্যবহৃত হয় ৷

প্রশ্ন৩১. কয় শ্রেণির পদার্থ প্রবাহীর অন্তর্ভুক্ত?

উত্তর: দুই শ্রেণির পদার্থ প্রবাহীর অন্তর্ভুক্ত, যথা- তরল ও গ্যাস।

প্রশ্ন৩২. প্রবাহী কাকে বলে?

উত্তর: যে পদার্থ প্রবাহিত হয় বা হতে পারে তাকে প্রবাহী বলে।

প্রশ্ন৩৩. প্লাজমার প্রধান উৎস কী?

উত্তর: প্লাজমার প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্য ।

প্রশ্ন৩৪. পুনঃশিলীভবন কী?

উত্তর: চাপ প্রয়োগ করে কোনো কঠিন পদার্থকে তরলে পরিণত করা এবং চাপ হ্রাস করে একে আবার কঠিন অবস্থায় পরিণত করার প্রক্রিয়াকে পুনঃশিলীভবন বলে ।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন. বেড়িবাঁধ তৈরি করার সময় বাঁধের উপরের অংশ অপেক্ষা নিচের অংশ চওড়া রাখা হয় কেন?

উত্তর: যেকোনো বাঁধ তৈরি করার সময় একটি ঢাল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তা নাহলে বাঁধ তার নিজস্ব ওজনের কারণেই ভেঙে যেতে পারে। এ কারণে বাঁধ উপরের চেয়ে নিচের অংশ চওড়া রাখা হয়।

তাছাড়া বেড়িবাঁধ সাধারণত পানি ঠেকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। পানি কর্তৃক প্রদত্ত চাপ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। এ কারণে বেড়িবাঁধের নিচের অংশে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। এই বেশি চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের অংশ চওড়া করা হয় যাতে পানি কর্তৃক প্রদত্ত চাপ কম অনুভূত হয়।

কারণ, P = F/A সূত্রানুসারে নির্দিষ্ট F এর জন্য A বেশি হলে P কম হবে।

প্রশ্ন. ধারালো আলপিন দিয়ে কাগজ ছিদ্র করা সহজ কেনো?

উত্তর: আলপিনের মাথায় প্রযুক্ত চাপের পরিমাণের পার্থ্যকের কারণে ভোঁতা আলপিনের পরিবর্তে তীক্ষ্ণ ধারালো আলপিন দিয়ে কাগজ ছিদ্র করা সহজ।

আমরা জানি, চাপ = প্রযুক্ত বল/ক্ষেত্রফল। যদি প্রযুক্ত বল ধ্রুবক থাকে তাহলে যে তলের ক্ষেত্রফল কম, সেটির উপর বেশি চাপ প্রযুক্ত হবে। ভোঁতা আলপিন অপেক্ষা তীক্ষ্ণ ধারালো আলপিনের মাথার ক্ষেত্রফল অনেক কম বলে, তীক্ষ্ণ ধারালো আলপিনে প্রযুক্ত চাপ বেশি হয়। এ কারণে ভোঁতা আলপিন এর পরিবর্তে তীক্ষ্ণ ধারালো আলপিন দিয়ে কাগজ ছিদ্র করা সহজ।

প্রশ্ন. সমান ইটের রাস্তায় খালি পায়ে হাঁটা এবং ইটের খোয়ার উপর দিয়ে হাঁটা কোনটি কষ্টসাধ্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ইটের খোয়ার রাস্তায় ইটের খোয়ার কোণাগুলো অনেক সূঁচালো বা সরু হয়। যার ফলে খালি পায়ে এর ওপর হাঁটলে অল্প ক্ষেত্রফলের উপর যথেষ্ট বল প্রযুক্ত হয়। এক্ষেত্রে চাপের মান অত্যধিক বেশি হয়। অন্যদিকে সমান ইটের রাস্তায় একই বল বেশি ক্ষেত্রফলের ওপর প্রযুক্ত হয়। এক্ষেত্রে চাপ কম অনুভূত হয়। তাই ইটের খোয়ার ওপর দিয়ে হাঁটার সময় চাপ বেশি অনুভূত হওয়ায় ব্যাথা অনুভূত হয়, তাই সেখানে হাঁটা কষ্টসাধ্য।

প্রশ্ন. সমুদ্রে ভেসে থাকা কোনো বস্তু নদীতে ডুবে যেতে পারে কেনো? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:  আমরাজানি যে, প্রবাহী পদার্থের মধ‌্যে কোনো বস্তু ডুবালে তার উপর একটি ঊর্ধ্বমূখী বল বা প্লবতা কাজ করে। সমআয়তন বস্তুর উপর্ প্লবতা বল প্রবাহীর ঘনত্বের উপর নির্ভর করে। ঘনত্ব বেশি হলে প্লবতা বল বেশি হবে। সমুদ্রের পানিতে লবণ মিশ্রিত থাকায় সমুদ্রের পানির ঘনত্ব নদীর পানির ঘনত্ব অপেক্ষা বেশি। এ কারণে সমুদ্রের পানির প্লবতা বলের তারতম‌্যের কারণে সমুদ্রে ভেসে থাকা কোনো বস্তু নদীতে ডুবে যেতে পারে। 

প্রশ্ন. কোনো পৃষ্ঠে চাপ 50 Pa বলতে কী বোঝায় ?

উত্তর: আমরা জানি, একক ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলের মানকে চাপ বলে । সুতরাং কোনো পৃষ্ঠে চাপ 50 Pa বলতে বোঝায়, 1 বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের ওপর লম্বভাবে 50 N বল প্রযুক্ত হচ্ছে ।

প্রশ্ন. 1 প্যাসকেল বলতে কী বোঝো?

উত্তর: চাপের একক প্যাসকেল। একক ক্ষেত্রফলের ওপর 1N বল প্রযুক্ত হলে যে চাপের সৃষ্টি হয় তাকে এক প্যাসকেল বলে।

প্রশ্ন. তাপমাত্রা বাড়লে পদার্থের ঘনত্ব কমে যায় কেনো?

উত্তর: বস্তুতে তাপ প্রয়োগ করলে এর অণু-পরমাণুসমূহ পরস্পর হতে দূরে সরে যায় বলে এর আয়তন বৃদ্ধি পায়। আমরা জানি, কোনো বস্তুর ভর m এবং আয়তন V হলে, ঘনত্ব p = m/V । যেহেতু তাপমাত্রা বাড়ালে বস্তুর আয়তন বৃদ্ধি পেলেও ভর একই থাকে, তাই বস্তুর ঘনত্ব হ্রাস পায়।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন. বস্তুর ভর স্থির থাকলে আয়তনের সাথে ঘনত্বের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে। V আয়তনের কোনো বস্তুর ভর m এবং ঘনত্ব p হলে, p = m/V ।

যেহেতু m স্থির .:. p ∝ 1/V  

অর্থাৎ ভর স্থির রেখে আয়তন বাড়লে ঘনত্ব হ্রাস পায়।

প্রশ্ন. ঘনত্ব বস্তুর তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করেব্যাখ্যা করো

উত্তর: বস্তুতে তাপ প্রয়োগ করলে এর অণু-পরমাণুসমূহ পরস্পর হতে দূরে সরে যায় বলে এর আয়তন বৃদ্ধি পায়। যেহেতু ভর নির্দিষ্ট থাকে এবং ঘনত্ব হলো ভর ও আয়তনের অনুপাত, তাই তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বস্তুর ঘনত্ব হ্রাস পায়। বিপরীতক্রমে, তাপমাত্রা হ্রাসে বস্তুর আয়তন হ্রাসপায় এবং ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে (যেমন পানি) এর ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়। পানির ক্ষেত্রে, 00C থেকে 40C পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং এরপর ঘনত্ব হ্রাস পেতে থাকে। এজন্য ঘনত্ব বস্তুর তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে।

প্রশ্ন১০. প্রচণ্ড রোদে পুকুরের উপরের নিচের পানির ঘনত্বের তারতম্য হয় কেন?

উত্তর: প্রচণ্ড রোদে পুকুরের উপরের ও নিচের পানির ঘনত্বের তারতম্য হয়। কারণ প্রচণ্ড রোদে পুকুরের উপরের পানির তাপমাত্রা, নিচের পানির তাপমাত্রা অপেক্ষা বেশি হয় এবং পানির উপরিতল থেকে বাষ্পায়ন হয়। আমরা জানি, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে আয়তন বৃদ্ধি পায় কিন্তু ভর অপরিবর্তিত থাকে।

আবার, ঘনত্ব = ভর/আয়তন সূত্র থেকে, আয়তন বাড়লে ঘনত্ব কমে যায়। এজন্য পানির উপরিতলের তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় উপরিতলে পানির ঘনত্ব কম থাকে এবং তল দেশে তাপমাত্রা কম হওয়ায় পানির ঘনত্ব বেশি হয়। উল্লেখ্য যে, তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে পানির ঘনত্বের এরূপ তারতম্য প্রযোজ্য  হয় কেবল 40C তাপমাত্রার উপরে। 00C থেকে 40C ব্যবধি পর্যন্ত তাপমাত্রা এর বিপরীতরূপ ঘটনা ঘটে।

প্রশ্ন১১. গ্যাস ভর্তি বেলুন সহজে উপরের দিকে উঠে যায় কেন?

উত্তর: গ্যাসভর্তি বেলুন বলতে মূলত হাইড্রোজেন গ্যাস বা বিভিন্ন হালকা গ্যাস ভর্তি বেলুন বুঝায়। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে বেশি কম । তাই এই গ্যাস ভর্তি হালকা বেলুন সহজে উপরে উঠে যায় ৷

প্রশ্ন১২. সমআয়তনের দুটি বোতল মধু পানি দ্বারা পূর্ণ করা হলে কোন বোতলটি বেশি ভারী হবে?

উত্তর: সম-আয়তনের দুইটি বোতল মধু ও পানি দ্বারা পূর্ণ করা হলে, সেই বোতলটি বেশি ভারী হবে যার— মধ্যকার তরলের ঘনত্ব বেশি হবে।

আমরা জানি, ঘনত্ব = ভর/আয়তন

দুইটি বোতল সম আয়তনের হওয়ায় বোতলের ভারী হওয়া নির্ভর করবে তরলদ্বয়ের ঘনত্বের উপরে। মধুর ঘনত্ব পানির ঘনত্বের তুলনায় বেশি হওয়ায় মধু দ্বারা পূর্ণ বোতলটি বেশি ভারী হবে ।

প্রশ্ন১৩. বরফ পানিতে ভাসে কেন? ব্যাখ্যা করো

উত্তর: কোনো বস্তুর ঘনত্ব পানির ঘনত্ব অপেক্ষা কম হলে বস্তুটি পানিতে ভাসবে, বেশি হলে ডুবে যাবে। বরফ পানির একটি ভৌত অবস্থা । পানি যখন বরফে পরিণত হয় তখন এর আয়তন বৃদ্ধি পায় কিন্তু ভর একই থাকে। যার কারণে ঘনত্ব হ্রাস পায়। তাই বরফ পানিতে ভাসে ।

প্রশ্ন১৪. লোহা পানিতে ডুবলেও পারদে ভাসে কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: লোহার ঘনত্ব পানির তুলনায় বেশি কিন্তু পারদের তুলনায় কম। তাই এক টুকরো লোহার ওজন সমআয়তন পানির ওজনের চেয়ে বেশি কিন্তু সমআয়তন পারদের ওজনের চেয়ে কম। ফলে লোহার টুকরাটিকে পানিতে ডুবানো হলে এর ওপর লব্ধি বলের দিক নিচের দিকে, তাই এটি পানিতে ডুবে যায়। আবার, লোহার টুকরাটিকে পারদে ডুবানো হলে এর ওপর লব্ধি বলের দিক উপরের দিকে, তাই এটি আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায় পারদে ভাসে ।

প্রশ্ন১৫. এক গ্লাস পানিতে এক টুকরো বরফ ভাসছে বরফটি গলে যাওয়ার পর কি পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে নাকি সমান থাকবে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বরফটি গলে যাওয়ার পর পানির উচ্চতা সমান থাকবে। কারণ বরফের টুকরাটি গ্লাসের পানিতে যতটুকু আয়তন দখল করে থাকে (অর্থাৎ যে আয়তনের পানি অপসারণ করে), সেটি গলে যাওয়ার পর সেই একই পরিমাণ আয়তন বরফ গলা পানি দখল করবে। এর ফলে চূড়ান্তভাবে পানির উচ্চতা একই থাকবে। উল্লেখ্য, বরফ পানিতে ভাসার সময় বরফের 11/12 অংশ পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং বরফ পানিতে পরিণত হলে বরফ গলা পানির আয়তন হয় বরফের আয়তনের 11/12 অংশ। অতএব, বরফ গলে যাওয়ার পর পানির উচ্চতা সমান থাকবে ।

প্রশ্ন১৬. বিকৃতির একক নেই কেন?

উত্তর: বাহ্যিক বল প্রয়োগে পদার্থের আকার বা দৈর্ঘ্যের যে আপেক্ষিক পরিবর্তন হয় সেটা হল বিকৃতি । অর্থাৎ Lo দৈর্ঘ্যের একটি বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করা হলে তার দৈর্ঘ্য যদি L হয় তাহলে

বিকৃতি = (L – Lo)/Lo ।

দেখা যাচ্ছে, বিকৃতি একই জাতীয় দুটি রাশির অনুপাত (দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ও আদি দৈর্ঘ্য)। তাই বিকৃতির একক নেই।

প্রশ্ন১৭. নির্দিষ্ট গভীরতায় চাপ তরলের প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলব্যাখ্যা করো।

উত্তর: আমরা জানি, চাপ, P = hpg।

এখানে, h = তরলের গভীরতা, p = তরলের ঘনত্ব; g = অভিকর্ষজ ত্বরণ। কোনো নির্দিষ্ট স্থানে g ধ্রুবক এবং নির্দিষ্ট গভীরতায় h ধ্রুবক ।

.:. P ∝ p.

যেহেতু বিভিন্ন তরলের ঘনত্ব বিভিন্ন, সেহেতু নির্দিষ্ট গভীরতায় তরলের চাপ কত হবে সেটা ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে। তাই বলা যায়, নির্দিষ্ট গভীরতায় চাপ তরলের প্রকৃতি তথা ঘনত্বের ওপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন১৮. পঁচা ডিম পানিতে ভাসে কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: পঁচা ডিম পানিতে ভাসে কারণ- পঁচা ডিমের গড় ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে কম। কিন্তু ভাল ডিম পানিতে ডুবে, কারণ ভাল ডিমের ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে বেশি। ডিম যখন পঁচে যায় তখন ডিমের সচ্ছিদ্র খোসার মধ্য দিয়ে গ্যাস বের হয়ে যায় এবং এ কারণে একই আয়তনের ডিমের ঘনত্ব কমে যায়। আর ঘনত্ব কমে যাওয়ার কারণেই পঁচা ডিম পানিতে ভাসে ৷

প্রশ্ন১৯. ফানুস ওড়ানোর কাজে বাতাসের ঘনত্বের পরিবর্তন ঘটেব্যাখ্যা করো।

উত্তর: স্বাভবিক তাপমাত্রায় বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে উত্তপ্ত বা গরম বায়ুর ঘনত্ব কম হয়। আর কম ঘনত্বের বায়ু ঊর্ধ্বমুখী। ফানুসের নিচে যখন আগুন দেয়া হয় তখন ফানুসের ভেতরের বাতাসের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং এর ঘনত্ব কমে যায়। ফলে ফানুসটি উপরে উঠতে থাকে। তাই বলা যায়, বাতাসের ঘনত্বের পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে ফানুস ওড়ানো হয় ৷

প্রশ্ন২০. জলাশয়ের গভীর থেকে উপরে উঠে আসা বায়ু বুদবুদের আকার বড় হয় কেন?

উত্তর: তরলের ভিতরে কোনো বিন্দুতে চাপ নির্ভর করে তার গভীরতার উপর। তাই জলাশয়ের গভীরে পানির চাপ বেশি থাকে, এছাড়াও এতে বায়ু চাপও প্রযুক্ত হয়। ফলে জলাশয়ের গভীরে বায়ু বুদবুদের আকার ছোট হয়। প্লবতার কারণে বায়ু বুদবুদ যখন উপরে উঠতে থাকে, তখন গভীরতা এবং একই সাথে তার উপর প্রযুক্ত চাপও কমতে থাকে, তাই বুদবুদের আয়তন বাড়তে থাকে। ফলে জলাশয়ে গভীর থেকে উপরে উঠে আসা বায়ু বুদবুদের আকার অনেক বড় হয়ে যায় ।

গাণিতিক ব্যাখ্যা:

চাপের পার্থক্যের জন্য পানির গভীরে সৃষ্ট বুদবুদ উপরে উঠে আসার সময় বড় দেখায় ।

আমরা জানি, h গভীরতায় চাপ, P = hpg। যেখানে, p হলো তরলের ঘনত্ব। নির্দিষ্ট তরলের ক্ষেত্রে, P h । অর্থাৎ পানির যত গভীরে যাওয় যায়, চাপ ততই বাড়ে। এখন, পানির গভীরে সৃষ্ট বুদবুদের ওপর চাপ বেশি থাকায় এর আয়তন কম থাকে বা আকারে ছোট দেখায়। কিন্তু পানির গভীর থেকে যতই উপরের দিকে উঠে চাপ তত কমতে থাকে. ফলে বুদবুদের আয়তন বাড়ে এবং উপরে উঠে আসার সময় বড় দেখায়

প্রশ্ন২১. কোনো বস্তুকে তরলে নিমজ্জিত করলে ওজন হারায় বলে মনে হয় কেনব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কোনো বস্তুকে তরলে নিমজ্জিত করলে এর উপর ঊর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা কাজ করে। এ কারণে বস্তুটি ওজন হারায় বলে মনে হয় । নিমজ্জিত বস্তুর উপর ক্রিয়ারত এই ঊর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজনের সমান। বস্তুর ওজন হতে এই প্লবতা বিয়োগ করলে নিট বল পাওয়া যায় যা বস্তুর ওজন থেকে কম। তাই তরলে নিমজ্জিত বস্তু ওজন হারায় বলে মনে হয় ।

প্রশ্ন২২. কোনো বস্তুর ভাসন এবং নিমজ্জনের শর্তগুলো উল্লেখ করো।

উত্তর: যদি W1 বস্তুর ওজন ও W2 বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজন হয় তাহলে-

বস্তুর ভাসন ও নিমজ্জনের ক্ষেত্রে তিনটি অবস্থান সৃষ্টি হতে পারে—

(ক) যদি W1 > W2 হয়, অর্থাৎ বস্তুর ওজন যদি বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজন অপেক্ষা বেশি হয় তাহলে বস্তু তরলে ডুবে যাবে।

(খ) যদি W1 = W2 হয়, অর্থাৎ বস্তুর ওজন যদি বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজনের সমান হয় তাহলে বস্তুটি তরলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে ।

(গ) যদি W1 < W2 হয়, অর্থাৎ বস্তুর ওজন যদি বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজনের চেয়ে কম হয় তাহলে বস্তুটি তরলে আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসে ৷

প্রশ্ন২৩. নৌকা থেকে যাত্রীরা নেমে গেলে নৌকাটি আরো কিছুটা ভেসে উঠে কেন? ব্যাখ্যা করো

উত্তর: তরল বা বায়বীয় পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত কোনো বস্তুর উপর তরল বা বায়বীয় পদার্থ ঊর্ধ্বমুখী বল প্রয়োগ করে। এটি হল প্লবতা । একটি বস্তুকে পানিতে ডোবানো হলে প্লবতার কারণে সেটা যতটুকু পানি সরাবে, উপরের দিকে সেই পানির ওজনের সমপরিমাণ বল অনুভব করবে। বস্তুটি ঠিক যেই পরিমাণ ডুবে থাকলে বস্তুর সমান ওজনের পানি অপসারণ করবে ততটুকুই ডুববে এবং বাকি অংশটুকু পানিতে ভেসে থাকবে। নৌকা থেকে যাত্রীরা নেমে গেলে নৌকার ওজন কমে যায়, ফলে নৌকাটি কম পরিমাণ পানি অপসারণ করে। তাই নৌকাটি আরো কিছুটা ভেসে উঠে ৷

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন২৪. হাঁড়িপাতিল পানিতে ভাসে কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: হাঁড়ি-পাতিল সাধারণত অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়। অ্যালুমিনিয়ামের ঘনত্ব পানি অপেক্ষা বেশি হওয়া সত্ত্বেও অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল পানিতে ভাসে। কারণ হাঁড়ি-পাতিলের অ্যালুমিনিয়াম থাকে খুব পাতলা এবং তলদেশের আয়তন থাকে বেশি। তাছাড়া হাঁড়ি- পাতিলের ভিতরটা থাকে ফাঁপা। এজন্য অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হাঁড়ি- পাতিল দ্বারা অপসারিত পানির ওজন হাঁড়ি-পাতিলের ওজনের থেকে বেশি হয়। আমরা জানি, কোনো বস্তুর ওজন ঐ বস্তু দ্বারা অপসারিত পানির ওজনের চেয়ে কম হলে বস্তু পানিতে ভাসে। তাই অ্যালুমিনিয়ামের -পাতিল পানিতে ভাসে ।

প্রশ্ন২৫. তলের ক্ষেত্রফল যত বেড়ে যায় চাপের পরিমাণ তত কমে যায়ব্যাখ্যা করো

উত্তর: কোনো তলের প্রতি একক ক্ষেত্রফলে যে পরিমাণ বল লম্বভাবে ক্রিয়াশীল হয় তাকে চাপ বলে। এখন A ক্ষেত্রফলের তলে F বল লম্বভাবে ক্রিয়াশীল হলে,

চাপ, P = F/A হবে।

যদি বল F ধ্রুবক হয়, তাহলে P ∝1/A

অর্থাৎ প্রযুক্ত বল ধ্রুব হলে চাপ ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক। ফলে ক্ষেত্রফল যত বেড়ে যায় চাপের পরিমাণ তত কমে যায়।

প্রশ্ন২৬. প্যাসকেলের সূত্রটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: প্যাসকেলের সূত্রটি হলো— আবদ্ধ পাত্রে তরল বা বায়বীয় পদার্থের কোনো অংশের ওপর বাইরে থেকে চাপ প্রয়োগ করলে সেই চাপ কিছুমাত্র না কমে তরল বা বায়বীয় পদার্থের সবদিকে সমানভাবে সঞ্চালিত হয় এবং তরল বা বায়বীয় পদার্থ সংলগ্ন পাত্রের গায়ে লম্বভাবে ক্রিয়া করে ।

ধরা যাক, C1 ও C2 দুটি সিলিন্ডার। সিলিন্ডারদ্বয় একটি নলের সাহায্যে পরস্পরের সাথে যুক্ত। এদের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল যথাক্রমে A1 ও A2। এখন, সিলিন্ডার দুটি যেকোনো একটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থে পূর্ণ করে যদি ছোট পিস্টনে F1 বল প্রয়োগ করা হয় তাহলে ঐ পিস্টনে অনুভূত চাপের মান F1/A1 । প্যাসকেলের সূত্রানুসারে, এ চাপ তরল পদার্থ দ্বারা সবদিকে সঞ্চালিত হবে ।

সুতরাং, বড় পিস্টনে প্রযুক্ত ঊর্ধ্বচাপ F2/A2 হবে।

.:. F2/A2 = F1/A1

বা, F2/ F1 = A2/A1

কাজেই বড় পিস্টনের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল যত বেশি হবে এ পিস্টনে বলও তত বেশি অনুভূত হবে ।

প্রশ্ন২৭. আবদ্ধ তরলে চাপ প্রয়োগ করলে কী ঘটে?

উত্তর: কোনো আবদ্ধ তরলে চাপ প্রয়োগ করলে সেই চাপ সবদিকে সমানভাবে সঞ্চালিত হয়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী প্যাসকেল একটি সূত্র প্রদান করেন। সূত্রটি হলো- আবদ্ধ পাত্রে তরল পদার্থের কোনো অংশের উপর বাইরে থেকে চাপ প্রয়োগ করলে সেই চাপ কিছুমাত্র না কমে তরল পদার্থের সবদিকে সমানভাবে সঞ্চালিত হয় এবং তরল পদার্থের সংলগ্ন পাত্রের গায়ে লম্বভাবে ক্রিয়া করে।

প্রশ্ন২৮. বায়ুমণ্ডলীয় চাপে মানবদেহের আকৃতির পরিবর্তন ঘটে না কেন?

উত্তর: পৃথিবীপৃষ্ঠে বায়ুমণ্ডলের চাপ প্রতি বর্গমিটারে প্রায় 105N। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দেহের ক্ষেত্রফল 1.5m2 ধরলে বায়ুমণ্ডল তার দেহের ওপর 1.5 × 105 N বল প্রয়োগ করে। তবে মানুষের শরীরের ভিতরে রক্তের চাপ বাইরের এই চাপ অপেক্ষা সামান্য বেশি বলে মানুষ সাধারণত বায়ুর এই চাপ অনুভব করে না। ফলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপে মানবদেহের আকৃতির পরিবর্তন ঘটে না ।

প্রশ্ন২৯. পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে কেন?

উত্তর: বেশি উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে মানুষের রক্তচাপ বেশি থাকে বলে পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায়, বাতাসের ঘনত্ব এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ততই কমে। উঁচু পর্বতের ওপর এই চাপ এতই কমে যায় যে মানবদেহের অভ্যন্তরীণ রক্তচাপের তুলনায় তা অনেক কম হয়। তাই পর্বতারোহী বেশি উচ্চতায় উঠলে নাক দিয়ে রক্ত আসে।

প্রশ্ন৩০. কোনো স্থানে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন লেখের মাধ্যমে দেখাও।

উত্তর:  ভূ-পৃষ্ঠের সমুদ্র সমতল থেকে যত উপরে উঠা যায়, বায়ুস্তম্ভের ওজন ও ঘনত্ব উভয়ই হ্রাস পায়। ফলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডল চাপ কমতে থাকে । এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গের উপর বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সমুদ্র সমতলের চাপের প্রায় 35%। উচ্চতার সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন নিম্নে লেখের মাধ্যমে দেখানো হলো-

প্রশ্ন৩১. টরিসেলির শূন্যস্থান কি প্রকৃতপক্ষে শূন্য? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: টরিসেলির পরীক্ষায় পারদ ব্যারোমিটারে কাচনলে যে পারদস্তম্ভ দাঁড়িয়ে থাকে তার উপর নলের বদ্ধ প্রান্ত পর্যন্ত কার্যত শূন্য। এই শূন্য স্থানকে টরিসেলির শূন্যস্থান বলে ।

তবে উক্ত স্থান প্রকৃতপক্ষে শূন্য নয়, এতে সামান্য পারদ বাষ্প থাকে। কারণ তরলের বাষ্পায়নের হার তথা পরিমাণ এর উপরের চাপ তথা পদার্থের ওপর নির্ভর করে। টরিসেলির শূন্যস্থানে প্রাথমিক অবস্থায় কোনো কিছু না থাকায় তরল পারদের উপরিতলের কিছু সংখ্যক পরমাণু সেখানে বাষ্পীভূত হবার সুযোগ পায় ।

প্রশ্ন৩২. স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক কী?

উত্তর: স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পীড়ন বিকৃতির সমানুপাতিক ।

গাণিতিকভাবে, পীড়ন ∝ বিকৃতি

.:. পীড়ন = ধ্রুবক x বিকৃতি

বা, পীড়ন/বিকৃতি = ধ্রুবক

এই ধ্রুবকটিকে বস্তুর উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বলে।

প্রশ্ন৩৩. একটা আস্ত বিশাল জাহাজকে মাত্র কয়েক বালতি পানির মাঝে ভাসিয়ে রাখা সম্ভব কীভাবে?

উত্তর: জাহাজের জলসংলগ্ন নিম্নতলের ক্ষেত্রফল যদি এমনভাবে বাড়ানো যায় যেন ফাঁপা অংশের পরিমাণ হ্রাস না পায় এবং নিম্নতলের বক্রতা হ্রাস পায়। তবে জাহাজটিকে মাত্র কয়েক বালতি পানিতে ডুবিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু তলার ক্ষেত্রফল বাড়ালে জাহাজের অনুভূমিক অংশও অনেক বৃদ্ধি পায়। মাত্র কয়েক বালতি পানি ঐ পরিমাণ ক্ষেত্রফলে ছড়িয়ে পড়লে পানির গভীরতা খুব কম হবে। তাই জাহাজ ভাসানো সম্ভব না-ও হতে পারে।

প্রশ্ন৩৪. একটা সুইমিংপুলে একটা ছোট নৌকার মাঝে তুমি একটা বড় পাথর নিয়ে বসে আছ। পাথরটা নৌকার ভেতর থেকে নিয়ে সুইমিংপুলের পানিতে ফেলে দিলে। সুইমিংপুলে পানির উচ্চতা কি বেড়ে যাবে, সমান থাকবে নাকি কমে যাবে?

উত্তর: পাথরটির নৌকায় থাকা অবস্থায় আয়তন পাথরটি ফেলে দেয়ার পর মোট আয়তন (নৌকার আয়তন + পাথরের আয়তন) অপেক্ষা কম থাকে, কিন্তু ভর অপরিবর্তিত থাকে।

যেহেতু, p = m/V

তাই প্রথম ক্ষেত্রে গড় ঘনত্ব দ্বিতীয় ক্ষেত্রের গড় ঘনত্ব অপেক্ষা বেশি থাকে। যেহেতু কম ঘনত্বের জিনিস ডুবালে পানির উত্থান কম হয়। তাই প্রথম ক্ষেত্র অপেক্ষা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পানির উত্থান কম হবে। অর্থাৎ, পানির উচ্চতা নিচে নেমে গেছে বলে মনে হবে।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন৩৫. সাধুরা পেরেকের বিছানায় শুয়ে থাকে চাইলে তুমিও পারবে। কেন?

উত্তর: আমরা যখন শুয়ে থাকি তখন আমাদের শরীরের ওপর ক্রিয়ারত প্রতিক্রিয়া বল আমাদের শরীরের পুরো পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফলের উপর দ্বারা ক্রিয়ারত থাকে। যখন বিছানায় একটি মাত্র পেরেক থাকে তখন পুরো শরীরের ওজন পেরেকের মাথার ক্ষেত্রফলের ওপর ক্রিয়ারত থাকে। ফলে খুব কম ক্ষেত্রফলের ওপর বেশি পরিমাণ বল প্রযুক্ত হওয়ায় আমাদের শরীরে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়। কিন্তু যখন পুরো বিছানাই পেরেক পোঁতা থাকে তখন আমাদের শরীরের ওপর প্রযুক্ত চাপের পরিমাণ হ্রাস পায়। কারণ তখন অসংখ্য পেরেকের কারণে ক্ষেত্রফলের বৃদ্ধি ঘটে। তাই আমাদের শরীরে চাপের পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে পেরেকের বিছানায় শোয়া যায় ।

প্রশ্ন৩৬. টরিসেলির পারদের তৈরি ব্যারোমিটারের কাচের নলটি যদি সোজা না হয়ে আঁকাবাঁকা হয় তাহলে কি কাজ করবে?

উত্তর: টরেসেলির পারদের তৈরি ব্যারোমিটার যদি সোজা না হয়ে আঁকাবাঁকা হয় তবুও বাতাসের চাপ নির্ণয় করা সম্ভব হত কারণ ভূপৃষ্ঠে স্বাভাবিক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে টরেসেলির পারদের তৈরি কাচ নলে পারদের উচ্চতা হবে 76 cm কিন্তু যখন কাচ নলটি আঁকা বাঁকা হবে তখন কাচনলের ভেতরে যে পরিমাণ পারদ জমা হবে তার উলম্ব সরণও হবে 76 cm.

প্রশ্ন৩৭. বল, চাপ ক্ষেত্রফলের সম্পর্ক কী ?

উত্তর: কোনো বস্তুর প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্ৰযুক্ত বলকে চাপ বলে। যদি A ক্ষেত্রের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বল F হয়,

তাহলে চাপ, P = F/A

অর্থাৎ চাপ = বল/ক্ষেত্রফল

বা, বল = চাপ × ক্ষেত্রফল

এটিই বল, চাপ ও ক্ষেত্রফলের সম্পর্ক।

প্রশ্ন৩৮. ঘনত্ব কাকে বলে? এর একক কী?

উত্তর: ঘনত্বঃ কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে ।

ঘনত্বের একক kgm3

প্রশ্ন৩৯. বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কাকে বলে?

উত্তর: বায়ুমন্ডল তার ওজনের জন্য ভূপৃষ্ঠে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে যে বল প্রয়োগ করে তাকে বায়ুমণ্ডলীয় ঐ স্থানের চাপ বলে । পৃথিবীপৃষ্ঠে বায়ুমণ্ডলীর চাপ প্রতি একক ক্ষেত্রফলে বা প্রতি বর্গমিটারে প্রায় 105N।

প্রশ্ন৪০. টরিসেলির শূন্যস্থান কি প্রকৃতপক্ষে শূন্য? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: টরিসেলির শূন্যস্থান প্রকৃতপক্ষে শূন্য নয়। কারণ এতে সামান্য পরিমাণ পারদ বাষ্প থাকে। যদিও বায়ুর চাপ ব্যারোমিটারের কাচ নলে যে পারদস্তম্ভ দাঁড়িয়ে থাকে তার উপর নলের বস্তু প্রান্ত পর্যন্ত শূন্য ধরা হয়, যা আপত দৃষ্টিতে শূন্য বলে মনে হয়।

প্রশ্ন৪১. তরলের চাপ উচ্চতার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো

উত্তর: আমরা জানি, তরলের চাপ, P = উচ্চতা × ঘনত্ব × অভিকর্ষজ ত্বরণ

যেহেতু ঘনত্ব এবং অভিকর্ষজ ত্বরণ ধ্রুবক,

তাই তরলের চাপ ∝ উচ্চতা

অর্থাৎ তরলের চাপ উচ্চতার সমানুপাতিক।

প্রশ্ন৪২. পদার্থের প্লাজমা অবস্থার ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: প্লাজমা হলো পদার্থের চতুর্থ অবস্থা। কঠিন, তরল এবং গ্যাস এই তিনটি ভিন্ন অবস্থার বাইরেও পদার্থের চতুর্থ আরেকটি অবস্থা আছে। পরমাণুর বাইরের স্তর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় (যেমন, তাপ বা চাপ প্রয়োগে) এক বা একাধিক ইলেকট্রনকে মুক্ত করে ফেললে চার্জশূন্য পরমাণুগুলো চার্জযুক্ত আয়নে রূপান্তরিত হয়ে যায় । তখন সম্পূর্ণ সিস্টেমটিতে আয়ন ও ইলেকট্রনসমূহ গ্যাসীয় অবস্থায় পাশাপাশি থাকে। এটিই পদার্থের প্লাজমা অবস্থা ।

অত্যধিক তাপমাত্রায় পদার্থের পরমাণুর নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনসমূহ পরস্পর হতে আলাদা হয়ে যায় । তখন যে চার্জিত অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে প্লাজমা বলে। সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রের মাঝে পদার্থসমূহ প্লাজমা অবস্থায় বিদ্যমান। এমনকি ভূ-অভ্যন্তরেও অনেক পদার্থ গলিত তথা প্লাজমা অবস্থায় বিদ্যমান বলে ধারণা করা হয়।

প্রশ্ন৪৩. হুকের সূত্র ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: হুকের সূত্রটি হলো— স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর পীড়ন ঐ বস্তুর বিকৃতির সমানুপাতিক । অর্থাৎ,

পীড়ন ∝ বিকৃতি

বা, পীড়ন = ধ্রুবক x বিকৃতি

পীড়ন / বিকৃতি = ধ্রুবক

এই . ধ্রুবককে স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বা ইয়ং এর গুণাঙ্ক বলে। স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বা ইয়ং এর গুণাঙ্ক বিভিন্ন পদার্থের জন্য বিভিন্ন হলেও একটি নির্দিষ্ট পদার্থের জন্য সর্বদাই ধ্রুব।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

প্রশ্ন৪৪. ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের পরিবর্তন কীভাবে আবহাওয়ার বল পূর্বাভাস দেয়?

উত্তর: ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের উচ্চতা থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায় – নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো :

(i) পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে কমতে থাকলে বোঝা যাবে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

(ii) পারদ স্তম্ভের উচ্চতা হঠাৎ কমে গেলে বুঝতে হবে বায়ুমণ্ডলের চাপ সহসা কমে গেছে এবং ঐ স্থানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। পার্শ্ববর্তী উচ্চস্থান থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঐ নিম্নচাপ অঞ্চলে ছুটে আসবে । সুতরাং ঝড়ের সম্ভাবনা আছে।

(iii) পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়লে বুঝতে হবে বায়ুমণ্ডল থেকে জলীয়বাষ্প অপসারিত হচ্ছে । অর্থাৎ আবহাওয়া শুষ্ক ও পরিষ্কার থাকবে ।

প্রশ্ন৪৫. উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস পায় কেন? ব্যাখ্যা করো

উত্তর: বায়ু একটি প্রবাহী পদার্থ। সুতরাং বায়ুমণ্ডলীয় চাপ নির্ভর করে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা ও বায়ুর ঘনত্বের ওপর। সমুদ্র সমতল থেকে যত ওপরে ওঠা যায়, বায়ু স্তম্ভের ওজন ও ঘনত্ব তত হ্রাস পায়। এজন্য উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ কমে অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বায়ুরচাপ তত কমতে থাকে।

প্রশ্ন৪৬. কোনো বস্তুর উপাদান এর ইয়ং গুণাঙ্ক 2 × 1011 Nm -2 বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: কোনো বস্তুর উপাদানের ইয়ং গুণাঙ্ক 2 × 1011 Nm-2 বলতে বোঝায়, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে দৈর্ঘ্য বরাবর যেকোনো মানের বল প্রয়োগে বস্তুটির দৈর্ঘ্য পীড়ন ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত সর্বদা 2 × 1011 N/m2 হয়।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা

১. কোনো বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত বলের মানকে বলে — চাপ ।

২. বলের একককে ক্ষেত্রফলের একক দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় — চাপের একক ।

৩. চাপের মাত্রা — ML-1T-2

৪. চাপের সঠিক প্রকাশ — F = PA

৫. বল এবং ক্ষেত্রফল এ দুটি ভেক্টর রাশির অনুপাত হচ্ছে — স্কেলার রাশি চাপ ।

৬. চোরাবালিতে পড়লে শুয়ে পড়ার কারণ — চাপ কম রাখা।

৭. বেশি চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ধারালো বা সূচালো বস্তুর বল প্রয়োগকারী অংশের ক্ষেত্রফল — অত্যন্ত কম রাখা হয়।

৮. চাপ একটি — স্কেলার রাশি ।

৯. নির্দিষ্ট পরিমাণ বলের ক্ষেত্রে ক্ষেত্রফল যত কম হয় চাপ তত — বেশি হয় ।

১০.1 m2 ক্ষেত্রফলের উপর 1 N বল লম্বভাবে প্রয়োগ করলে যে চাপ দেয় তাকে বলে — এক প্যাসকেল ।

১১. একক আয়তনের ভরের পরিমাণই হচ্ছে — ঘনত্ব।

১২. ঘনত্বের একক — kgm-3  বা gm/cc ।

১৩. gm/cc একককে 1000 দ্বারা গুণে পাওয়া যায় — kg/m3

১৪. ঘনত্বের মাত্রা — ML-3 |

১৫. বস্তুর তাপমাত্রা বাড়লে তার ঘনত্ব — কমবে ।

১৬. লোহার ঘনত্ব — 7.80 gm/cc.

১৭. বায়ুর ঘনত্ব — 1.27 kgm-3

১৮. ব্যতিক্রমী প্রসারণ ধর্ম রয়েছে — পানির

১৯. 4°C তাপমাত্রায় পানির ঘনত্ব — 1000 kgm-3 |

২০. বস্তুর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল — ঘনত্ব ।

২১. তরলের ঘনত্ব p হলে h গভীরতায় চাপ — P = hpg.

২২. তরলের অভ্যন্তরে কোনো বিন্দুতে চাপের মান, গভীরতার — সমানুপাতিক ।

২৩. বায়ুর চাপের সমপরিমাণ চাপ পাওয়া যায় পানির — 10m গভীরতায়।

২৪. পারদের চাপ 1 atm হবে — 76 cm গভীরতায় ।

২৫. তরল বা গ্যাসে নিমজ্জিত বস্তুর প্লবতা সম্পর্কে সর্বপ্রথম ধারণা দেন — আর্কিমিডিস I

২৬. বস্তু কর্তৃক হারানো ওজন বস্তুটি দ্বারা অপসারিত তরল বা বায়বীয় পদার্থের ওজনের সমান এটি —আর্কিমিডিসের নীতি ।

২৭. তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে নিমজ্জিত বস্তুর ওজন কমার কারণ — প্লবতা ।

২৮. কোনো বস্তুকে স্থির তরলে নিমজ্জিত করলে এটি উপরের দিকে যে লব্ধিবল অনুভব করে, তাকে বলে — প্লবতা ।

২৯. প্লবতার মান বস্তুর নিমজ্জিত অংশ কর্তৃক অপসারিত প্রবাহীর — ওজনের সমান ।

৩০. কোনো বস্তুর জানা ওজন থেকে বস্তুটির নিমজ্জিত অবস্থার ওজন বাদ দিলে পাওয়া যায় বস্তুর — আপাত ওজন হ্রাস ।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩১. বস্তুর ভাসন ও নিমজ্জনের ক্ষেত্রে উদ্ভূত পরিস্থিতি — ৩টি ।

৩২. স্থির তরলে কোনো বস্তুকে ছেড়ে দিলে বস্তুটির ওপর একই সঙ্গে প্রযুক্ত বল — ২টি।

৩৩. বস্তুর ঘনত্ব তরলের ঘনত্ব অপেক্ষা কম হলে বস্তুটি তরলে — আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে ।

৩৪. বস্তুর ঘনত্ব তরলের ঘনত্ব অপেক্ষা বেশি হলে বস্তুটি তরলে — সম্পূর্ণ ডুবে গিয়ে তলদেশে চলে যাবে ।

৩৫. বস্তুর ঘনত্ব তরলের ঘনত্বের সমান হলে বস্তুটি তরলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত বা ডুবন্ত অবস্থায় ভাসবে।

৩৬. ত্রুটিপূর্ণ নকশার জন্য পরিবর্তন হয় জলযানের — ভরকেন্দ্রের অবস্থান।

৩৭. প্যাসকেলের সূত্র প্রযোজ্য — প্রবাহীতে ।

৩৮. তরল পদার্থে চাপ প্রয়োগ করলে তা সবদিকে সমভাবে — সঞ্চালিত হয় ।

৩৯. বল বৃদ্ধিকরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সূত্র — F1/ F2 = A1/A2

৪০. বল বৃদ্ধিকরণ নীতি প্রতিপাদিত হয়েছে — প্যাসকেলের সূত্র হতে ।

৪১. পৃথিবী পৃষ্ঠে বাতাসের বিশাল চাপ আমরা অনুভব করি না কারণ — আমাদের শরীরও বাইরের দিকে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে সামান্য বেশি চাপ প্রয়োগ করে ৷

৪২. মহাকাশচারীরা মহাকাশ ভ্রমণের সময় পরিধান করেন — স্পেস স্যুট ।

৪৩. পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রতি বর্গমিটারে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের দরুন প্রযুক্ত বল — 10 N

৪৪. বায়ুর চাপ কাজ করে — সবদিক থেকে ।

৪৫. নিশ্ছিদ্র টিন বা কৌটা যদি কোনোভাবে বায়ুশূন্য করা যায় তবে সেটা — দুমড়ে মুচড়ে যাবে ।

৪৬. ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ — তত কমে ।

৪৭. চাপ ও ঘনত্ব পরস্পর — সমানুপাতিক।

৪৮. প্লেনে অক্সিজেন দরকার — জ্বালানী পোড়ানোর জন্য ।

৪৯. পর্বতারোহীগণ অত্যধিক উচ্চতায় কষ্ট পান — অক্সিজেনের অভাবে।

৫০. এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের উপরে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সমুদ্র সমতলের চাপের — প্রায় 35%।

৫১. পানির তুলনায় 13.6 গুণ ভারী — পারদ।

৫২. পারদের সাহায্যে বায়ুর চাপ নির্ণয় করেন — বিজ্ঞানী টরিসেলি ।

৫৩. বায়ুর চাপ নির্ণয়ের যন্ত্রের নাম — ব্যারোমিটার।

৫৪. জলীয় বাষ্প বায়ুর চেয়ে — হালকা।

৫৫. বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে গেলে চাপ — বাড়ে।

৫৬. ব্যারোমিটার দ্বারা বায়ু চাপের পরিবর্তন নির্ণয় করে দেওয়া যায় — আবহাওয়া পূর্বাভাস ।

৫৭. বায়ুর উচ্চচাপ বলতে বুঝায় — বায়ু শুকনো এবং আবহাওয়া ভালো ।

৫৮. তরলের স্তম্ভের উচ্চতা ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয় — বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ।

৫৯. ব্যারোমিটারের পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ধীরে ধীরে কমলে সম্ভাবনা আছে — বৃষ্টিপাতের।

৬০. হঠাৎ পারদ স্তম্ভের উচ্চতা হঠাৎ বেশ কমে গেলে হলে সৃষ্টি হয় — নিম্নচাপের

৬১. নির্দিষ্ট স্থির তরলে নির্দিষ্ট গভীরতায় ‘চাপ’ প্রকাশক সমীকরণ হলো — P = hpg।

৬২. বস্তুর আকার বা আকৃতি পরিবর্তনের নির্দিষ্ট সীমা হলো —  স্থিতিস্থাপক সীমা ।

৬৩. বস্তুর আকার বা আকৃতির আপেক্ষিক পরিবর্তনকে বলে — বিকৃতি।

৬৪. বিকৃতির একক — নেই ।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

৬৫. বস্তুর ভেতরে একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে উদ্ভূত প্রতিরোধ বলকে বলে — পীড়ন ।

৬৬. স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে পীড়ন বিকৃতির — সমানুপাতিক।

৬৭. পীড়নের একক — Nm-2 বা Pa ।

৬৮. পীড়ন এবং বিকৃতির সাথে সম্পর্কযুক্ত ধ্রুবকের নাম — স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক ।

৬৯. স্থিতিস্থাপক যেকোনো গুণাঙ্কের একক — Nm-2

৭০. পীড়ন চাপের সমতুল্য অর্থাৎ পীড়ন — স্কেলার রাশি

৭১. প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে তৈরি হয়েছে — নিউক্লিয়াস ।

৭২. প্রোটন এবং নিউট্রন তৈরি হয়েছে — কোয়ার্ক দিয়ে

৭৩. ইলেকট্রন বা কোয়ার্ক তৈরি হয়েছে — স্ট্রিং দিয়ে।

৭৪. পদার্থের সবচেয়ে ছোট একক হচ্ছে — অণু ।

৭৫. গ্যাসীয় পদার্থের আকার ও আয়তন — অনির্দিষ্ট

৭৬. তরলের নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও আকার — অনির্দিষ্ট

৭৭. কঠিন পদার্থের আকার ও আয়তন — নির্দিষ্ট

৭৮. কঠিন পদার্থে চাপ দিলে- সংকুচিত হয় না ।

৭৯. প্রবাহী পদার্থ হচ্ছে — তরল ও গ্যাস ।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

৮০. পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে যে ফাঁকা স্থান রয়েছে তাকে বলে — আন্তঃআণবিক দূরত্ব।

৮১. পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্বের মূল বিষয় — অণুগুলো গতিশীল ।

৮২. গ্যাসের অণুগুলো পাত্রের দেয়ালে আঘাত করে — প্রতিফলিত হয় ।

৮৩. গ্যাসের তাপমাত্রা বাড়লে এর চাপ — বৃদ্ধি পায় ।

৮৪. পদার্থের চতুর্থ অবস্থার নাম — প্লাজমা ।

৮৫. অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস হলো — প্লাজমা

৮৬. প্লাজমার বড় উৎস হচ্ছে — সূর্য।

৮৭. প্লাজমার নির্দিষ্ট আকার তৈরি করা হয়- চৌম্বক ক্ষেত্ৰ দিয়ে ।

৮৮. প্লাজমা টর্চ দিয়ে কাটা হয় — ধাতব পদার্থ ।

৮৯. টিউবলাইয়ের ভেতর তৈরি হয় — প্লাজমা ।

৯০. প্লাজমা কণাগুলো — তড়িৎ পরিবাহী।

৯১. বায়ুচাপ হলো মূলত একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে প্রযুক্ত — বায়ুর ওজন ।

৯২. বায়ুর চাপ মাপার যন্ত্র ব্যারোমিটার, তৈরি হয় — টরিসেলির পদ্ধতি প্রয়োগে ।

৯৩. স্বাভাবিক বায়ুচাপে টরিসেলির পদ্ধতিতে ব্যবহৃত পারদপূর্ণ নলের উচ্চতা হলো — 76 cm |

৯৪. বায়ুর চাপ বাড়ালে পারদের উচ্চতা 76 cm থেকে — বেশি হয়।

৯৫. বায়ুর চাপ কমালে পারদের উচ্চতা 76 cm থেকে — কম হয়।

৯৬. তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র হলো — থার্মোমিটার ।

৯৭. বল বৃদ্ধিকরণ নীতি আবিষ্কার করেন — বিজ্ঞানী প্যাসকেল।

৯৮. বায়ুচাপ ব্যতীত অন্য যেকোনো চাপ পরিমাপযোগ্য যন্ত্র হলো — ম্যানোমিটার।

৯৯. ভূ-কম্পন পরিমাপের যন্ত্রের নাম হলো — সিসমোমিটার।

১০০. বিজ্ঞানী ব্লেইজ প্যাসকেল ছিলেন — ফরাসী নাগরিক।

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

অবশিষ্টি অংশ খুবশীঘ্রই আপলোড করা হবে

পদার্থ বিজ্ঞান সকল অধ্যায় সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *