এস এস সি জীববিজ্ঞান
নবম অধ্যায়
দৃঢ়তা প্রদান ও চলন
Firmness and Locomotion
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
- কঙ্কালতন্ত্র : বিশেষ ধরনের যোজক কলার দ্বারা নির্মিত অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে গঠিত যে তন্ত্র দেহের কাঠামো গঠন করে, দেহের ভার বহন করে, বিভিন্ন নরম অঙ্গ রক্ষা করে এবং পেশি সংযোজনের জন্য স্থান সৃষ্টি করে তাকে কঙ্কালতন্ত্র বলে।
- কঙ্কালতন্ত্রের গঠন : অস্থি, তরুণাস্থি, পেশি, পেশিবন্ধনী ও অস্থিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত।
- কঙ্কালতন্ত্রের কাজ : দেহ কাঠামো গঠন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ভারবহন, নড়াচড়া ও চলাচল, লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন, খনিজ লবণ সঞ্চয় ইত্যাদি কঙ্কালতন্ত্রের কাজ।
- অস্থি : অস্থি হচ্ছে দেহের সর্বাপেক্ষা সুদৃঢ় কলা এবং যোজক কলার রূপান্তর। অস্থির মাতৃকা, শক্ত ও ভঙ্গুর অস্থিকোষকে অস্টিব্রাস্ট বলা হয়। অস্থিকোষ ৪০% জৈব এবং ৬০% অজৈব যৌগ দিয়ে তৈরি। অজৈব অংশটি প্রধানত ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের বিভিন্ন যৌগ দিয়ে তৈরি। অস্থি বৃদ্ধির জন্য প্রচুর ভিটামিন ‘ডি’ ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
- তরুণাস্থি : তরুণাস্থি অস্থির মতো শক্ত নয়। এগুলো অপেক্ষাকৃত নরম ও স্থিতিস্থাপক। এর কোষগুলো একক বা জোড়ায় জোড়ায় খুব ঘনভাবে | স্থিতিস্থাপক মাতৃকাতে বিস্তৃত থাকে। মাতৃকা কড্রিন দ্বারা গঠিত। সব তরুণাস্থি একটি তন্ত্রময় যোজক কলা নির্মিত আবরণী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে, একে পেরিকন্ড্রিয়াম বলে। আমাদের দেহে কয়েক রকম তরুণাস্থি থাকে। যেমন : কানের পিনার তরুণাস্থি।
- অস্থিসন্ধি : দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে। প্রতিটি অস্থিসন্ধির অস্থিসমূহ এক রকম স্থিতিস্থাপক রজ্জ্বর মতো বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে; ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল থেকে বিচ্যুত হতে পারে না। অস্থিসন্ধি কয়েক ধরনের হয়।
- সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি : একটি অস্থিসন্ধিতে দুটি মাত্র অস্থির বহির্ভাগ এসে মিলিত হয়ে একটি সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি গঠন করে। দেহে প্রায় ৭০টিরও বেশি স্বচ্ছন্দ্যে সঞ্চালনক্ষম সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি আছে। সাইনোভিয়াল সন্ধিতে অস্থি দুটি তত্তময় ঝিল্লি বা লিগামেন্ট দ্বারা সংযুক্ত থাকে। যার কারণে অস্থিগুলো নড়াচড়া করতে পারে কিন্তু বিচ্যুত হয় না।
- পেশিতন্ত্র : মানবদেহের মোট ওজনের ৪০-৫০ ভাগ অংশই পেশি কলা। ঐচ্ছিক পেশি, অনৈচ্ছিক পেশি ও হৃদপেশির সমন্বয়ে দেহের পেশিতন্ত্র গঠিত। ঐচ্ছিক পেশি ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়, অনৈচ্ছিক পেশি ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল নয়। আর হৃদ্যন্ত্রের প্রাচীরের পেশিকে হৃদপেশি বলে।
- টেনডন ও অস্থিসন্ধি : টেনডন নামক যোজক কলা দ্বারা পেশি অস্থির সাথে যুক্ত থাকে। টেনডনের মতো আরও এক ধরনের যোজক কলা থাকে যাকে অস্থিসন্ধি বা লিগামেন্ট বলে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
- অস্টিওপোরেসিস : ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগকে অস্টিওপোরেসিস বলে। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের সাধারণত এ রোগটি হয়। যেসব বয়স্ক পুরুষ বহুদিন যাবৎ স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ সেবন করেন তাদের ও মহিলাদের মেনোপস হওয়ার পর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যারা অলস জীবনযাপন করেন, কায়িক পরিশ্রম কম করেন, অনেকদিন ধরে আথ্রাইটিস এ ভুগলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
- আথ্রাইটিস বা গেঁটেবাত : আর্থাইটিস এক ধরনের বাত রোগ। অনেকদিন যাবৎ জ্বরে ভুগলে এবং এর যথাযথ চিকিৎসা না করা হলে এ রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয়। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেলায় গিটে ব্যথা বা যন্ত্রণা হওয়া এ রোগের লক্ষণ হতে পারে। যেমন : বাতজ্বর বা যক্ষ্মা।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন
প্রশ্ন-১ : অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
উত্তর : দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।
প্রশ্ন-২ : কঙ্কালের পাঁচটি কাজ উল্লেখ কর।
উত্তর : কঙ্কালের পাঁচটি কাজ হলো :
১. দেহ কাঠামো গঠন করা।
২. দেহের কোমল অংশসমূহকে আবরণ দিয়ে সুরক্ষিত করা এবং দেহের ভারবহন করা
৩. নড়াচড়া ও চলাচলে সাহায্য করা
৪. রক্তের লোহিত কণিকা উৎপাদন করা এবং
৫. খনিজ লবণ সঞ্চয় করা।
প্রশ্ন-৩ : টেনডন ও লিগামেন্টের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।
উত্তর : টেনডন ও লিগামেন্টের পার্থক্য হলো :
টেনডন | লিগামেন্ট |
১. টেনডন দিয়ে পেশি অস্থির সঙ্গে যুক্ত থাকে। | ১. লিগামেন্ট দ্বারা অস্থিসমূহ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে। |
২. এদের স্থিতিস্থাপকতা নেই। | ২. এদের স্থিতিস্থাপকতা আছে। |
৩. ঘন, শ্বেততন্তুময় যোজক টিস্যু দ্বারা গঠিত। | ৩. শ্বেততন্তু ও পীততন্তু যোজক টিস্যু দ্বারা গঠিত। |
৪. তম্ভগুলো শাখা-প্রশাখাবিহীন তরঙ্গিত অবস্থায় বিন্যস্ত। | ৪. তন্তুগুলো শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট জালকাকারে বিন্যস্ত। |
প্রশ্ন-৪ : সাইনোভিয়াল সন্ধির বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : সাইনোভিয়াল সন্ধির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে :
১. অস্থিপ্রান্ত তরুণাস্থি দ্বারা আবৃত থাকে।
২. সাইনোভিয়াল রস থাকে।
৩. অস্থিসন্ধিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী বা ক্যাপসুল থাকে।
প্রশ্ন-৫ : অস্থি ও তরুণাস্থির মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর : অস্থি ও তরুণাস্থির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
অস্থি | তরুণাস্থি (কোমলাস্থি) |
কঠিন, নমনীয়, অস্থিতিস্থাপক এবং অস্থিকোষ নিয়ে গঠিত। | অকঠিন, নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক এবং বিভিন্ন তন্তু ও কোষ নিয়ে গঠিত। |
কোষগুলো মাকড়সার জালের মতো মাতৃকায় ছড়ানো। | কোষগুলো একক বা জোড়ায় জোড়ায় ঘনভাবে মাতৃকায় থাকে। |
মাতৃকায় জৈব পদার্থ এবং অজৈব পদার্থের মধ্যে ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ইত্যাদি থাকে। | মাতৃকায় কন্ড্রিন নামক জৈব পদার্থ থাকে। |
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-৬ : অস্টিওপোরেসিসের কারণ ও লক্ষণগুলো লেখ।
উত্তর : অস্টিওপোরেসিসের কারণ নিম্নরূপ :
১. যেসব বয়স্ক পুরুষ বহুদিন যাবত স্টেরয়ডযুক্ত ওষুধ সেবন করেন তাদের এবং মহিলাদের মেনোপস হওয়ার পর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. আথ্রাইটিসে ভুগলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৩. দেহে খনিজ লবণ বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে এ রোগ হতে পারে।
লক্ষণ :
১. অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায়, পুরুত্ব কমতে থাকে।
২. পেশির শক্তি কমতে থাকে।
৩. পিঠের পেছন দিকে ব্যথা অনুভব হয়।
৪. অস্থিতে ব্যথা অনুভব হয়।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১ : মানবদেহের কাঠামোকী?
উত্তর : মানবদেহের কাঠামো কঙ্কাল।
প্রশ্ন-২ : পেশি কঙ্কালতন্ত্র প্রধানত কয়টি অংশ নিয়ে গঠিত?
উত্তর : পেশি কঙ্কালতন্ত্র প্রধানত চারটি অংশ নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন-৩ : কঙ্কাল কোন ধরনের কলা?
উত্তর : কঙ্কাল যোজক কলা।
প্রশ্ন-৪ : লোহিত রক্তকণিকা কোথায় উৎপন্ন হয়?
উত্তর : লোহিত রক্ত কণিকা অস্থি মজ্জায় উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন-৫ : স্বাভাবিক অবস্থায় অস্থিতে কত ভাগ পানি?
উত্তর : স্বাভাবিক অবস্থায় অস্থিতে ৪০-৪৫ ভাগ পানি।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-৬ : কঙ্কালতন্ত্র কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর : অস্থি ও তরুনাস্থির সমন্বয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত হয়।
প্রশ্ন-৭ : মানব কঙ্কালকে কয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : মানবদেহের কঙ্কালকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন-৮ : অস্থি কী?
উত্তর : অস্থি যোজক কলার রূপান্তরিত রূপ।
প্রশ্ন-৯ : তরুণাস্থি কী?
উত্তর : তরুণাস্থি হলো অপেক্ষাকৃত নরম ও স্থিতিস্থাপক রূপান্তরিত যোজক কলা।
প্রশ্ন-১০ : মানুষের চলনে দেহের কোন অংশগুলো ভূমিকা রাখে?
উত্তর : ঐচ্ছিক পেশিসমূহ এবং বিভিন্ন অস্থি ও অস্থিসন্ধি দেহের চলনে ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন-১১ : কঙ্কালতন্ত্র কী নিয়ে গঠিত হয়?
উত্তর : অস্থি, তরুণাস্থি, পেশি, পেশিবন্ধনী ও অস্থিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত হয়।
প্রশ্ন-১২ : অন্তঃকঙ্কাল কাকে বলে?
উত্তর : কঙ্কালের যে অংশগুলো দেহের ভেতরে অবস্থিত তাকে অন্তঃকঙ্কাল বলে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-১৩ : অস্টিওব্লাস্ট কী?
উত্তর : অস্থিকোষকে অস্টিওব্লাস্ট বলে।
প্রশ্ন-১৪ : অস্থি কী দ্বারা গঠিত?
উত্তর : অস্থি মূলত ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের বিভিন্ন যৌগ দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন-১৫ : সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
উত্তর : একটি অস্থিসন্ধিতে দুটি মাত্র অস্থির বহির্ভাগ এসে মিলিত হলে তাকে সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে।
প্রশ্ন-১৬ : জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
উত্তর : একটি অস্থিসন্ধিতে দুইয়ের অধিক অস্থির বহির্ভাগ এসে মিলিত হলে তাকে জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে।
প্রশ্ন-১৭ : নিশ্চল অস্থিসন্ধি কী?
উত্তর : যে অস্থিসন্ধি অনড় অর্থাৎ নাড়ানো যায় না তাকে নিশ্চল অস্থিসন্ধি বলে।
প্রশ্ন -১৮ : কবজি অস্থিসন্ধি কী?
উত্তর : কবজা যেমন দরজার পাল্লাকে কাঠামোর সাথে আটকে রাখে, সেরূপ কবজার মতো অস্থিসন্ধিকে কবজি অস্থি সন্ধি বলে।
প্রশ্ন-১৯ : অস্টিওপোরেসিস কী?
উত্তর : অস্টিওপোরেসিস হলো বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত একটি রোগ।
প্রশ্ন – ২০ : বহিঃকঙ্কাল কাকে বলে?
উত্তর : কঙ্কালের যে অংশগুলো বাইরে অবস্থিত তাকে বহিঃকঙ্কাল বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১ : বল ও কোটর সন্ধি এবং কব্জি সন্ধির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : বল ও কোটর সন্ধি এবং কব্জি সন্ধির মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো :
বল ও কোটর সন্ধি | কজি সন্ধি |
১. বল ও কোটর সন্ধিতে সন্ধিস্থলে একটি অস্থির মাথার গোল অংশ অন্য অস্থির কোটরে স্থাপিত থাকে। | ১. কব্জা যেমন দরজার পাল্লার পাল্লাকে কাঠামোর সাথে আটকে রাখে, সেরূপ কব্জার মতো সন্ধিকে কব্জি সন্ধি বলে। যেমন : হাতের কনুই, জানু ইত্যাদি। |
২. এসব সন্ধি সকল দিকে নাড়ানো যায়। | ২. এসব সন্ধি কেবল একদিকে নাড়ানো যায়। |
প্রশ্ন-২ : গেঁটে বাত হলে শরীরে কী সমস্যা হয়?
উত্তর : গেঁটে বাত হলে শরীরের ব্যথা হয়, অস্থি সন্ধিগুলো শক্ত হওয়ায় নাড়াতে কষ্ট হয় ও গিট ফুলে যায়।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-৩ : অস্থির উপাদানগুলো লেখ।
উত্তর : অস্থি মূলত পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এর বিভিন্ন যৌগ দিয়ে গঠিত। এছাড়া অস্থিতে প্রায় ৪০-৫০ ভাগ পানি থাকে। জীবিত অস্থিকোষ ৪০% জৈব এবং ৬০% অজৈব যৌগ পদার্থ। নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন-৪ : কোন ধরনের লক্ষণ দেখলে তা গেঁটেবাত হিসেবে চিহ্নিত করা যায়?
উত্তর : গিটে প্রদাহ, অস্থিসন্ধিগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া, অস্থিসন্ধি নাড়াতে কষ্ট হওয়া, গিঁট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখলে তা গেঁটে বাত হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
প্রশ্ন-৫ : কীভাবে গেঁটেবাত প্রতিরোধ করা যায়?
উত্তর : পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আছে এমন বাসস্থানে বাসের মাধ্যমে, নিয়মিত ব্যায়াম করে এবং সুষম ও আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে গেঁটে বাত প্রতিরোধ করা যায়।
প্রশ্ন -৬ : অস্টিওপোরেসিস কেন হয়?
উত্তর : দেহে খনিজ লবণ বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে এ রোগটি হয়। মহিলাদের মেনোপস হওয়ার পর অস্থির ঘনত্ব, পুরুত্ব কমতে থাকে। এসবের ফলে অস্টিওপোরেসিস হয়। এছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ সেবন করে তাদের এ রোগ হয়।
প্রশ্ন-৭ : অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করাতে কম শক্তি ব্যয় হয়, কেন?
উত্তর : অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস ও তরুণাস্থি থাকাতে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ ও তার জন্য ক্ষয় হ্রাস পায় এবং এর ফলে অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করাতে কম শক্তি ব্যয় হয়।
প্রশ্ন-৮ : টেনডন ও অস্থিবন্ধনী বলতে কী বোঝ?
উত্তর : টেনডন ঘন, শ্বেততন্তুময় যোজক কলা দ্বারা গঠিত। এটি বেশ শক্ত, পেশি বা অস্থির তুলনায় ভেঙে বা ছিড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
অস্থিবন্ধনী কোমল অথচ দৃঢ়, স্থিতিস্থাপক যে বন্ধনী দ্বারা অস্থিসমূহ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে তাকে অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বলে। এটি শ্বেততন্তু ও পীততন্তুর সমন্বয়ে গঠিত।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-৯ : পেশির কাজ কী?
উত্তর : পেশির কাজ হলো :
১. অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালন ও চলাফেরায় সহায়তা করা।
২. দেহের নির্দিষ্ট আকার গঠন করা।
৩. শক্তির সংরক্ষণ করা।
৪. হৃদপেশি হৃদপিন্ডের স্পন্দন ও রক্ত সঞ্চালিত করা।
প্রশ্ন-১০ : মানব কঙ্কালের কাজগুলো কী কী?
উত্তর : মানব কঙ্কালের কাজগুলো হলো :
১. দেহ কাঠামো গঠন
২. দেহ রক্ষণাবেক্ষণ ও ভারবহন
৩. নড়াচড়া ও চলাচল
৪. লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন এবং
৫. খনিজ লবণ সঞ্চয়।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কোনটি অস্থির বৈশিষ্ট্য?
ক. স্থিতিস্থাপক খ. নরম
গ. দৃঢ় ঘ. তন্তুময়
উত্তর: গ. দৃঢ়
২. টেনডনের টিস্যু হচ্ছে—
i. সাদা বর্ণের ও উজ্জ্বল
ii. অশাখ ও তরঙ্গিত
iii. তন্তুময় ও গুচ্ছাকার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৬০ বছরের রহিমা বেগম হাত পায়ের ব্যথার জন্য তেমন কাজ করতে পারেন না। চিকিৎসক বলেছেন তার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাবে অস্টিওপোরেসিস রোগ হয়েছে।
৩. রহিমা বেগমের উক্ত রোগের লক্ষণ কোনটি?
ক. অস্থির পুরুত্ব বেড়ে যাওয়া
খ. অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া
গ. কোমরে ব্যথা অনুভব করা
ঘ. পেশি শক্তি বাড়তে থাকা
উত্তর: খ. অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া
৪. রহিমা বেগমের উক্ত রোগটি প্রতিরোধের উপায় হচ্ছে—
i. রাফেজযুক্ত খাবার খাওয়া
ii. অলসময় জীবন পরিহার করা
iii. ভিটামিন ডি যুক্ত খাদ্য কম খাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫. অস্থির ভেতর শতকরা কতভাগ জৈব যৌগ থাকে?
ক. ৩০ খ. ৪০
গ. ৫০ ঘ. ৬০
উত্তর: খ. ৪০
৬. তরুণাস্থি কোন তন্তুময় যোজক কলা দ্বারা পরিবেষ্টিত?
ক. পেরিটোনিয়াম খ. পেরিসিলিয়াম
গ. পেরিকার্ডিয়াম ঘ. পেরিকন্ড্রিয়াম
উত্তর: ঘ. পেরিকন্ড্রিয়াম
৭. কোনটি গঠনে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে?
ক. অস্থি খ. পেশি
গ. লিগামেন্ট ঘ. (Xanax) টেনডন
উত্তর: ক. অস্থি
৮. অস্টিওপোরেসিস কিসের অভাবজনিত রোগ?
ক. নাইট্রোজেন খ. ক্যালসিয়াম
গ. জিংক ঘ. সালফার
উত্তর: খ. ক্যালসিয়াম
৯. অস্থির ভেতর শতকরা কত ভাগ অজৈব যৌগ থাকে?
ক. ৭০ খ. ৬০
গ. ৫০ ঘ. ৪০
উত্তর: খ. ৬০
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
১০. তরুণাস্থি অস্থির ন্যায় শক্ত নয় কেন?
ক. নরম ও স্থিতিস্থাপক বলে
খ. নরম বলে
গ. নরম ও স্থিতিস্থাপক নয় বলে
ঘ. যোজক কলা বলে
উত্তর: ক. নরম ও স্থিতিস্থাপক বলে
১১. কোনটি ঈষৎ সচল অস্থি সন্ধি?
ক. মেরুদন্ডের অস্থি সন্ধি খ. করোটিকা
গ. কজা সন্ধি ঘ. বল ও কোটর সন্ধি
উত্তর: ক. মেরুদন্ডের অস্থি সন্ধি
১২. লিগামেন্ট টিস্যু হচ্ছে–
i. হাড়ের সাথে পেশি যুক্ত থাকে
ii. হাড়ের সাথে হাড় সংযুক্ত করে
iii. পীত বর্ণের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. ii ও iii
১৩. মানব কঙ্কাল গঠিত কয়টি অস্থি নিয়ে?
ক. ২০১টি খ. ২০৬টি
গ. ২০৮টি ঘ. ২১০টি
উত্তর: খ. ২০৬টি
১৪. অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ প্রতিকারের উপায় কোনটি?
ক. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ
খ. সবুজ শাকসবজি গ্রহণ
গ. বীজ জাতীয় খাদ্য পরিহার
ঘ. দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ
উত্তর: খ. সবুজ শাকসবজি গ্রহণ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৫ ও ১৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৭০ বছর বয়সী রহমান সাহেবের অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে গেছে এবং তিনি এগুলো নাড়াতে ব্যথা পান।
১৫. রহমান সাহেব নিচের কোন রোগটিতে ভুগছেন?
ক. থ্যালাসেমিয়া খ. আর্থ্রাইটিস
গ. এপিলেপসি। ঘ. অস্টিওপোরেসিস
উত্তর: খ. আর্থ্রাইটিস
১৬. এ রোগ থেকে উপশম পেতে রহমান সাহেবকে নিচের কোন কাজটি করা উচিত?
i. যন্ত্রণাদায়ক গিঁটের ওপর গরম স্যাক দেওয়া
ii. সুষম ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
iii. নড়াচড়া না করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৭ ও ১৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সামাদ সাহেব দীর্ঘদিন যাবৎ গেঁটে বাতে ভুগছেন। খেটে খাওয়া স্বল্প আয়ের মানুষ বিধায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। অবশেষে দেখা গেল তিনি আর চলাফেরা করতে পারছেন না।
১৭. উদ্দীপকে উল্লিখিত রোগটির বৈশিষ্ট্য / উপসর্গ –
i. অস্থিসন্ধি ও গিঁটে প্রদাহ
ii. অস্থিসন্ধি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা
iii. গিঁট ফুলে যাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. i ও iii
১৮. উদ্দীপকে বর্ণিত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী?
i. অত্যধিক পরিশ্রম আর ভারী কাজ থেকে বিরত থাকা
ii. হালকা ব্যায়াম করা
iii. ডাল জাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণে খাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৯ ও ২০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

১৯. চিত্রে দেখানো সন্ধিটির নাম কী?
ক. বল ও কোটর সন্ধি খ. কবজা ও অস্থিসন্ধি
গ. অস্থি ও টেনড়ন ঘ. বল ও কবজি
উত্তর: ক. বল ও কোটর সন্ধি
২০. চিত্রটির বৈশিষ্ট্য হলো-
i. সহজে নড়াচড়া করানো যায়
ii. সকল দিকে নাড়ানো সম্ভপর হয়
iii. নরম ও স্থিতিস্থাপক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
২১. মানব কঙ্কালতন্ত্রকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. দুই খ. তিন
গ. চার ঘ. পাঁচ
উত্তর: ক. দুই
২২. নখ, চুল ও লোম কোনটির অন্তর্ভুক্ত?
ক. কঙ্কালের খ. অস্থির
গ. অন্তঃকঙ্কালের ঘ. বহিঃকঙ্কালের
উত্তর: ঘ. বহিঃকঙ্কালের
২৩. নিচের কোনটি মানবদেহ কাঠামো গঠন করে?
ক. কঙ্কাল খ. বহিঃকঙ্কাল
গ. অন্তঃকঙ্কাল ঘ. অস্থি
উত্তর: গ. অন্তঃকঙ্কাল
২৪. নিচের কোন উক্তিটি সঠিক?
ক. অস্থি ও তরুণাস্থি নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত
খ. অস্থি, পেশি ও অস্থিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত
গ. অস্থি, তরুণাস্থি, পেশিবন্ধনী ও অস্থিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত
ঘ. অস্থি, তরুণাস্থি ও পেশিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত
উত্তর: গ. অস্থি, তরুণাস্থি, পেশিবন্ধনী ও অস্থিবন্ধনী নিয়ে কঙ্কালতন্ত্র গঠিত
২৫. কোন জোড়াটি ভুল?
ক. অস্থি – বহিঃকঙ্কাল
খ. তরুণাস্থি – যোজক টিস্যু
গ. অস্থি – যোজক টিস্যু
ঘ. বহিঃকঙ্কাল – চুল
উত্তর: ক. অস্থি – বহিঃকঙ্কাল
২৬. অঙ্গ সঞ্চালন ও চলাফেরা সম্ভব হয় কোনটির দ্বারা?
ক. অনৈচ্ছিক পেশি খ. পেশিবন্ধনী
গ. ঐচ্ছিক পেশি ঘ. হৃদপেশি
উত্তর: গ. ঐচ্ছিক পেশি
২৭. মানব কঙ্কালের বাহুর অস্থি কোনটি?
গ. রেডিয়াস ঘ. ফিবুলা
উত্তর: গ. রেডিয়াস
২৮. মানব কঙ্কালের পা এর অস্থি কোনটি?
ক. ফিমার খ. রেডিয়াস
গ. আলনা ঘ. হিউমেরাস
উত্তর: ক. ফিমার
২৯. বক্ষপিঞ্জরের অস্থি কোনগুলো?
ক. ম্যাক্সিলা ও স্টার্নাম খ. রেডিয়াস ও আলনা
গ. স্টার্নাম ও পর্শুকা ঘ. টিবিয়া ও ফিবুলা
উত্তর: গ. স্টার্নাম ও পর্শুকা
৩০. মানব কঙ্কালের বাহুর অস্থি কোনটি?
ক. টিবিয়া খ. হিউমেরাস
গ. ফিমার ঘ. ফিবুলা
উত্তর: খ. হিউমেরাস
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩১. মানবদেহের ভারবহন ও কাঠামোদানকারী তন্ত্রটি–
i. চলতে সাহায্য করে
ii. রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে
iii. হৃৎপিন্ড ও ফুসফুসকে সুরক্ষিত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩২. কঙ্কালতন্ত্রের উপাদান হলো—
i. অস্থি
ii. তরুণাস্থি
iii. পেশিবন্ধনী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩৩. বহিঃকঙ্কালের অংশ হলো—
i. নখ
ii. চুল
iii. কানের পিনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩৪. তরুণাস্থির তন্তুময় যোজক কলার আবরণকে কী বলে?
ক. ল্যাকিউনি খ. কন্ড্রিন
গ. পেরিকন্ড্রিয়াম ঘ. ক্যাপসুল
উত্তর: গ. পেরিকন্ড্রিয়াম
৩৫. কন্ড্রিনের মধ্যবর্তী গহ্বরকে কী বলে?
ক. ল্যাকিউনি খ. কন্ড্রিওসাইট
গ. অস্টিওব্লাস্ট ঘ. পেরিকন্ড্রিয়াম
উত্তর: ক. ল্যাকিউনি
৩৬. একটি অস্থির সাথে অন্য অস্থি সংযুক্ত থাকে কী দ্বারা?
ক. টিস্যু খ. লিগামেন্ট
গ. টেনডন ঘ. অ্যারিওলার টিস্যু
উত্তর: খ. লিগামেন্ট
৩৭. অস্থিসন্ধি কত প্রকার?
ক. ২ খ. ৩
গ. ৪ ঘ. ৫
উত্তর: খ. ৩
৩৮. লোহিত কণিকার উৎস কোনটি?
ক. অস্থি খ. অস্থিমজ্জা
গ. তরুণাস্থি ঘ. অস্টিওব্লাস্ট
উত্তর: খ. অস্থিমজ্জা
৩৯. কোনটির মাতৃকা কড্রিন দ্বারা গঠিত?
ক. অস্থি খ. লিগামেন্ট তন্তু
গ. তরুণাস্থি ঘ. টেনডন
উত্তর: গ. তরুণাস্থি
৪০. মাতৃকা কন্ড্রিন দ্বারা গঠিত যোজক কলা কোথায় থাকে?
ক. ফিমার অস্থিতে খ. অস্থিতে
গ. কানের পিনায় ঘ. জাইলেম পেশিতে
৪১. অস্থির ক্ষেত্রে নিচের কোনটি সঠিক?
ক. মাতৃকা কন্ড্রিন দ্বারা গঠিত
খ. সর্বাপেক্ষা দৃঢ় কলা
গ. স্থিতিস্থাপক
ঘ. পেরিকন্ড্রিয়াম দ্বারা আবৃত
উত্তর: খ. সর্বাপেক্ষা দৃঢ় কলা
৪২. কোনটি ভুল তথ্য?
ক. তরুণাস্থির মাতৃকা কন্ড্রিন দ্বারা গঠিত
খ. অস্থিতে অস্টিওব্লাস্ট কোষ থাকে
গ. টেনডন অনৈচ্ছিক পেশি দ্বারা যুক্ত
ঘ. অস্টিওপোরেসিস-এ অস্থি ভঙ্গুর হয়
উত্তর: গ. টেনডন অনৈচ্ছিক পেশি দ্বারা যুক্ত
৪৩. অস্টিওব্লাস্ট কোষ কোথায় আছে?
ক. হৃদপিন্ডে খ. অস্থিতে
গ. মস্তিষ্কে ঘ. ফুসফুসে
৪৪. অস্থিতে কত ভাগ পানি থাকে?
ক. ২০-৩০ ভাগ খ. ৩০-৪০ ভাগ
গ. ৪০-৫০ ভাগ ঘ. ৫০-৬০ ভাগ
উত্তর: গ. ৪০-৫০ ভাগ
৪৫. টেনডন এর বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. শ্বেত ও পীতন্তু বিদ্যমান
খ. এদের স্থিতিস্থাপকতা বেশি
গ. ইলাস্টিন নামক আমিষ বিদ্যমান
ঘ. এদের স্থিতিস্থাপকতা নেই
উত্তর: ঘ. এদের স্থিতিস্থাপকতা নেই
৪৬. কোনটির অভাবে অস্টিওপোরেসিস হয়?
ক. ক্যালসিয়াম খ. আয়োডিন
গ. লৌহ ঘ. ভিটামিন ‘ই’
উত্তর : ক. ক্যালসিয়াম
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪৭. কানের পিনার মাতৃকায় রয়েছে কোনটি?
ক. অস্টিওব্লাস্ট খ. কন্ড্রিন
গ. পেরিটেডিয়াম ঘ. টেনডন
উত্তর: খ. কন্ড্রিন
৪৮. কোনটি জানুর অস্থি?
ক. প্যাটেলা খ. পিউবিস
গ. স্যাক্রাম ঘ. স্ক্যাপুলা
উত্তর: ক. প্যাটেলা
৪৯. কোনটি পেক্টোরাল গার্ডল এর অস্থি?
ক. স্ক্যাপুলা খ. পিউবিস
গ. স্যাক্রাম ঘ. স্টার্নাম
উত্তর: ক. স্ক্যাপুলা
৫০. অস্থিকোষকে কী বলা হয়?
ক. কন্ড্রিওব্লাস্ট ঘ.. ফাইব্রোব্লাস্ট
গ. অস্টিওব্লাস্ট ঘ. কোলাজেনাম
উত্তর: গ. অস্টিওব্লাস্ট
৫১. নিচের কোন অংশটি বেশ শক্ত ?
ক. লিগামেন্ট খ. টেনডন
গ. ফাইব্রোব্লাস্ট ঘ. তরুণাস্থি
উত্তর: খ. টেনডন
৫২. নিচের কোনটি পেশি বন্ধনী?
ক. টেন্ডন খ. লিগামেন্ট
গ. স্কেলেটন ঘ. তরুণাস্থি
উত্তর: ক. টেন্ডন
৫৩. অস্থিসন্ধির তন্তুগুলো কী দিয়ে গঠিত?
ক. লিপিড খ. কার্বোহাইড্রেট
গ. ভিটামিন ঘ. প্রোটিন
উত্তর: ঘ. প্রোটিন
৫৪. ৫০ বছরের বেশি বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের দৈনিক কত মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা প্রয়োজন?
ক. ১০০ mg খ. ১২০০ mg
গ. ২১০০ mg ঘ. ২২০০ mg
উত্তর: খ. ১২০০ mg
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫৫. নিচের কোনটি নিশ্চল অস্থিসন্ধি?
ক. করোটিকা খ. মেরুদণ্ড
গ. বল ও কোটর ঘ. কাঁধ ও উরু
উত্তর: ক. করোটিকা
৫৬. লিগামেন্ট কী দিয়ে গঠিত?
ক. শ্বেততন্তু ও টেনডন খ. পীতন্তু ও শ্বেততন্তু
গ. টেনডন ও পীততন্তু ঘ. ফাইব্রোব্লাস্ট ও টেনডন
উত্তর: খ. পীতন্তু ও শ্বেততন্তু
৫৭. আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করে কোনটি?
ক. সবজি খ. ডাল
গ. লেবুর রস ঘ. ডিম
উত্তর: ক. সবজি
৫৮. আমরা দেহকে সামনে পেছনে বাঁকাতে পারি কোন অস্থিসন্ধির কারণে?
ক. করোটিকা অস্থিসন্ধি
খ. ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি
গ. বল ও কোটরসন্ধি
ঘ. কব্জা সন্ধি
উত্তর: খ. ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি
৫৯. বাঁকানো, পার্শ্বচালনা ও সকল দিকে নাড়ানো সম্ভবপর হয় কোন অস্থিসন্ধি দ্বারা?
ক. স্কন্ধ সন্ধি খ. সচল অস্থিসন্ধি
গ. বল ও কোটরসন্ধি ঘ. নিশ্চল অস্থিসন্ধি
উত্তর: গ. বল ও কোটরসন্ধি
৬০. যোজক কলার রূপান্তরিত রূপ কোনটি?
ক. পেশি কলা খ. অস্থি
গ. তরুণাস্থি ঘ. আবরণী কলা
উত্তর: খ. অস্থি
নিচের চিত্র দেখে ৬১ ও ৬২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৬১. A অংশটি –
i. লোহিত কণিকা উৎপাদন করে
ii. খনিজ লবণ সঞ্চয় করে
iii. খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬২. অস্থি খনিজ লবণ সঞ্চয় করে কারণ—
i. এটি স্থিতিস্থাপক
ii. এটি শক্ত হয়
iii. এটি রক্তকণিকা উৎপন্ন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের চিত্রের আলোকে ৬৩–৬৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৬৩. চিত্রে কোন ধরনের সন্ধি দেখানো হয়েছে?
ক. বল সন্ধি খ. কবজা সন্ধি
গ. কোটর সন্ধি ঘ. করোটিকা সন্ধি
উত্তর: খ. কবজা সন্ধি
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬৪. চিত্রের সন্ধি দেখা যায়—
i. কনুইতে,
ii. জানুতে
iii. করোটিকায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৬৫. চিত্রটিকে তুমি কী বলবে?
ক. সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি
খ. নিশ্চল অস্থিসন্ধি
গ. সচল অস্থিসন্ধি
ঘ. জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি
উত্তর: ক. সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১২ বছরের বিনিতা বেশ স্বাস্থ্যবান এবং চঞ্চল প্রকৃতির। সে তার সারা দিনের কার্যক্রমের অনেকটা সময় দৌড়ঝাপ, খেলাধুলা করে কাটায়। একদিন সে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে গেলে লিগামেন্টে আঘাত পায়।
ক. অস্থি কী?
খ. গেঁটেবাত বলতে কী বুঝায়?
গ. বিনিতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশটি দরজার কবজার সাথে তুলনা করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বিনিতার কার্যক্রমটি সম্পন্ন করতে কিসের সমন্বয় অপরিহার্য বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অস্থি যোজক কলার রূপান্তরিত রূপ।
খ. গেঁটেবাত বলতে এক ধরনের বাত রোগকে বোঝায়।
অনেকদিন যাবৎ বাতজ্বরে ভুগলে এবং সঠিক চিকিৎসা না হলে এ রোগটি হতে পারে। এ রোগে-
১. অস্থিসন্ধি বা গিঁটে ব্যথা হয়;
২. অস্থিসন্ধিগুলো শক্ত হয়ে যায় এবং নাড়াতে কষ্ট হয়;
৩. গিঁট ফুলে যায়।
সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয় বেশি।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনিতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশটি হলো-লিগামেন্ট।
আমরা জানি দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থি সন্ধি বলে। অস্থি সন্ধিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থির বন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী বা ক্যাপসুল থাকে। লিগামেন্ট দুটি হাড়কে আটকে রাখে ঠিক যেমন দরজার কবজা পাল্লাকে দরজার কাঠামোর সাথে আটকে রাখে।
তাই অঙ্গের দুটি হাড়ের মধ্যে লিগামেন্ট বন্ধনী থাকার কারণে অঙ্গটি কব্জার মতো সবদিকে সোজা বা বাঁকা হয়ে নড়াচড়া করতে পারে এবং হাড়গুলো স্থানচ্যুত ও বিচ্যুত হয় না।
অতএব উপরিউক্ত কারণে বিনিতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশটিকে কবজার সাথে তুলনা করা হয়।
ঘ. বিনিতার কার্যক্রম হলো ছোটাছুটি ও দৌড়ঝাপ করা অর্থাৎ চলন যার জন্য অস্থি ও পেশির সমন্বয় অপরিহার্য।
মানুষের চলনে অস্থি ও পেশির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঐচ্ছিক পেশি টেনডন নামক দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক অংশ দ্বারা অস্থিকে আটকে রাখে। স্নায়ুবিক উত্তেজনা পেশির মধ্যে উদ্দীপনা জোগানোর ফলে পেশি সংকুচিত হয়।
উদ্দীপনা অপসারণে পেশি পুনরায় শ্লথ বা প্রসারিত হয়। এই সংকোচন ও প্রসারণের সহায়তায় সংলগ্ন অস্থির নড়াচড়া সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, হাতের কনুই বাঁকা করতে হলে ইচ্ছাধীন স্নায়ুর তাড়নার বাইসেল পেশি সংকুচিত হয় এবং ট্রাইসেল পেশি শিথিল হয়ে প্রসারিত হয়। কনুইকে সোজা করার সময় বাইসেল পেশি শিথিল হয়ে প্রসারিত হয় এবং ট্রাইসেল পেশি সংকুচিত হয়। এভাবে বাইসেল ও ট্রাইসেল পেশির সমন্বিত সংকোচন ও প্রসারণের ফলে আমরা কনুই বাঁকা ও সোজা করতে পারি।
উদ্দীপকে বিনিতার দৌড়ঝাপ ও খেলাধুলা তার পায়ের, হাতের ও দেহের বিভিন্ন পেশি; অস্থিসন্ধি ও অস্থিগুলো সমন্বিত কার্যক্রমের ফলে সম্ভব হয়।
প্রশ্ন–২: নিচের চিত্র লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. টেনডন কী?
খ. অস্টিওপোরেসিস বলতে কী বুঝায়?
গ. দেহের X অংশটির কোষের গঠন ভিন্ন কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. X ও Y উভয়ের সমন্বিত কার্যক্রম কীভাবে অঙ্গ সঞ্চালনে ভূমিকা রাখে? বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মাংসপেশির যে প্রান্তভাগ রজ্জুর মতো শক্ত হয়ে অস্থিগাত্রের সাথে সংযুক্ত থাকে, তাকে টেনডন বলে।
খ. অস্টিওপোরেসিস বলতে ক্যালসিয়াম অভাবজনিত অস্থির একটি রোগ বোঝায়। এ রোগে অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং অস্থির পুরুত্ব কমে যায় এবং অস্থিতে ব্যথা অনুভব হয়।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকে X চিহ্নিত অংশটি অস্থি। এটি যোজক কলার একটি রূপান্তরিত রূপ বলে এর গঠন ভিন্ন।
অস্থির আন্তঃকোষীয় পদার্থ বা মাতৃকা এক প্রকার জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত যা শক্ত ও ভঙ্গুর। এর মাতৃকার মধ্যে অস্থিকোষগুলো ছড়ানো থাকে। এই অস্থিকোষকে অস্টিওব্লাস্ট বলা হয়।
এসব কোষ দেহের অন্যান্য কোষের মতো মসৃণ নয় বরং শাখা-প্রশাখা যুক্ত, দেখতে অনেকটা মাকড়সার মতো। জীবিত অস্থিকোষ ৪০% জৈব এবং ৬০% অজৈব যৌগ পদার্থ নিয়ে গঠিত। অতএব, দৃঢ়তা প্রদান করার জন্য অস্থিকোষের গঠন দেহের অন্য যেকোনো কোষ থেকে ভিন্নতর।
ঘ. চিত্রে X দ্বারা অস্থি ও Y দ্বারা অস্থিসন্ধিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদের সমন্বিত কার্যক্রম অঙ্গ সঞ্চালনে ভূমিকা রাখে। অস্থিসন্ধিটি দুটি অস্থির সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এবং এক রকম স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মতো বন্ধনী দ্বারা দৃঢ়ভাবে আটকানো আছে, ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল হতে বিচ্যুত হতে পারে না। এরূপ অস্থিবন্ধনীই হলো লিগামেন্ট।
অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস ও তরুণাস্থি থাকাতে X এর মতো অস্থিগুলোতে পরস্পরের মধ্যে ঘর্ষণ ও তার জন্য ক্ষয় হ্রাস পায় ও অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করাতে কম শক্তি ব্যয় হয়।
অন্যদিকে অস্থিসন্ধির অস্থিসমূহ টেনডন নামক দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক গঠন দ্বারা ঐচ্ছিক পেশির সাথে আটকে থাকে। স্নায়ুবিক উত্তেজনা পেশির মধ্যে প্রবাহিত হলে পেশির সংকোচন-প্রসারণ ঘটে, ফলে সংশ্লিষ্ট অস্থিগুলোও উদ্দীপনা অনুযায়ী বিভিন্ন দিকে ওঠানামা করে সঞ্চালিত হয়।
কাজেই অস্থি ও অস্থিসন্ধির সমন্বিত কার্যক্রম দেহের অঙ্গ সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন –৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মানুষের দেহাভ্যন্তরীণ কাঠামো গঠনকারী তন্ত্র পর্যবেক্ষণের সময় শিক্ষক হাতের কনুইয়ের অস্থিসন্ধি দেখিয়ে বললেন এটি বিশেষ ধরনের অস্থিসন্ধি।
ক. চলন কাকে বলে?
খ. বহিঃকঙ্কাল বলতে কী বোঝায়?
গ. শিক্ষকের নির্দেশিত অস্থিসন্ধিটির গঠন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত তন্ত্রের কার্যক্রম তোমার দেহকে সচল রাখে – যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে পদ্ধতিতে প্রাণী নিজ প্রচেষ্টায় সাময়িকভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায় তাকে ঐ প্রাণীর চলন বলে।
খ. বহিঃকঙ্কাল কঙ্কালতন্ত্রের একটি অংশ। মানবদেহের কঙ্কালতন্ত্রের যে অংশগুলো বাইরে অবস্থান করে তাকে বহিঃকঙ্কাল বলে। যেমন : নখ, চুল, লোম ইত্যাদি। দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।
গ. শিক্ষকের নির্দেশিত অস্থিসন্ধিটি হলো কবজিসন্ধি। কবজিসন্ধি এক ধরনের সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি।
এ ধরনের অস্থিসন্ধিতে দুটি মাত্র অস্থির বহিরভাগ এসে মিলিত হয়ে অস্থিসন্ধি গঠন করে। এ অস্থিসন্ধির অংশগুলো হলো- তরুণাস্থিতে আবৃত অস্থিপ্রান্ত, সাইনোভিয়াল রস এবং অস্থিসন্ধিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী বা ক্যাপসুল। অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস ও তরুণাস্থি থাকাতে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ ও তজ্জনিত ক্ষয় হ্রাস পায় এবং অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করাতে কম শক্তি ব্যয় হয়।
শিক্ষকের দেখানো কবজিসন্ধি হলো পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি। এ সকল অস্থিসন্ধি সহজে নড়াচড়া করা যায়। কবজা যেমন দরজার পাল্লাকে কাঠামোর সাথে আটকে রাখে, সেরূপ কবজার মতো অস্থিসন্ধিকে কবজিসন্ধি বলে। যেমন- হাতের কনুই, জানু এবং আঙ্গুলগুলিতে এ ধরনের অস্থিসন্ধি দেখা যায়।
এসব সন্ধি কেবলমাত্র একদিকে নাড়ানো যায়।
ঘ. উল্লিখিত তন্ত্রটি হলো কঙ্কালতন্ত্র।
কঙ্কালতন্ত্র একদিকে যান্ত্রিক এবং অপরদিকে শারীরবৃত্তীয় কাজও করে। যান্ত্রিক কাজের ক্ষেত্রে এটি মানবদেহের কাঠামো গঠন করে এবং দেহকে একটি নির্দিষ্ট আকার ও কাঠামো প্রদান করে। এটি দেহের নিচের অঙ্গগুলোর সাথে উপরের অঙ্গগুলোর সংযুক্তি সাধন করে। এটি দেহ গহ্বরে মস্তিষ্ক, হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, যকৃত এসব অঙ্গসমূহকে রক্ষনাবেক্ষণ করে। এটি পেশি লিগামেন্ট, টেনডন প্রভৃতিতে সংযোগ এবং অস্থিসন্ধি গঠন এবং দেহকে নড়াচড়ার মাধ্যমে চলাচল করতে সক্ষম করে।
অন্যদিকে এটি শারীরবৃত্তীয় কাজ যেমন- বক্ষপিঞ্জর শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তা করে। উপযুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, দেহকে নির্দিষ্ট আকার ও কাঠামো প্রদান, বিভিন্ন অঙ্গসমূহকে রক্ষনাবেক্ষণ, দেহকে চলাচলে সহায়তা করে কঙ্কালতন্ত্র।
এ কঙ্কালতন্ত্র না থাকলে আমাদের পক্ষে কোনোকিছুই করা সম্ভব হতো না। তাই বলা যায়, কঙ্কালতন্ত্রের কার্যক্রমই আমার দেহকে সচল রাখে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৪ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
৬৫ বছরের সালেহা বেগম হাত পায়ের ব্যথার জন্য তেমন কাজ করতে পারেন না। হাঁটতে চলতেও কষ্ট বোধ করেন। তিনি ডাক্তারের কাছে গেলেন। পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার অস্টিওপোরেসিস রোগের জন্য তাকে ওষুধ দিলেন এবং কিছু নিয়মনীতি মেনে চলার জন্য পরামর্শ দিলেন।
ক. ল্যাকিউনি কাকে বলে?
খ. অস্থিসন্ধি কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. সালেহা খাতুনের উক্ত রোগটি কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়? বর্ণনা কর।
ঘ. তোমার এলাকায় উক্ত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য তুমি কী ব্যবস্থা নিবে আলোচনা কর।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীবিত অবস্থায় তরুণাস্থি কোষের কন্ড্রিনের মাঝে যে গহ্বর দেখা যায় তাকে ল্যাকিউনি বা ক্যাপসুল বলে।
খ. দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে। প্রতিটি অস্থিসন্ধির অস্থিসমূহ এক রকম স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মতো বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে; ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল থেকে বিচ্যুত হতে পারে না।
গ. সালেহা বেগমের রোগটির নাম অস্টিওপোরেসিস।
এ রোগটি মূলত ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত কারণে হয়ে থাকে। কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করলেই রোগটি এড়ানো যায়। অস্টিওপোরেসিস রোগের প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। তবে হঠাৎ করেই সামান্য আঘাতে কোমর বা দেহের অন্যান্য কোনো অঙ্গের হাড় ভেঙে যায়।
নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ। সাথে নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম আঁশ যুক্ত খাবার বেশি বেশি খাওয়ার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
ঘ. উল্লিখিত রোগটি অর্থাৎ অস্টিওপোরেসিস সাধারণত বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের হয়ে থাকে। দেহে খনিজ লবণ বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে এ রোগ হয়।
তাই আমার এলাকায় ব্যাপক হারে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে রোগটি সম্পর্কে বয়স্ক জনগণসহ সকল স্তরের মানুষকে জানাব। আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে পাড়ায় যেসব বাড়িতে বয়স্ক লোক আছে তাদের কাছে গিয়ে রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারি।
রোগটির লক্ষণসমূহ জানিয়ে ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে তাদের সাহায্য করতে পারি। যেমন- তাদেরকে দৈনিক ১২০০ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা, ননী তোলা দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য গ্রহণ করা। কমলার রস, সবুজ শাকসবজি, সয়াদ্রব্য ইত্যাদি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার কথা বলতে পারি।
এছাড়াও নিজেদের উদ্যোগে এলাকায় পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৫ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জীববিজ্ঞান শিক্ষক অমিতাভ রায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে একটি ছবি প্রদর্শন করলেন এবং এটি একটি মানব কঙ্কালতন্ত্র যা দেহের মূল কাঠামো গঠন করে।
ক. নিশ্চল অস্থিসন্ধি কী?
খ. টেনডন ও লিগামেন্টের মধ্যকার পার্থক্য লেখ।
গ. মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রদর্শিত তন্ত্রটির কাজ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রদর্শিত তন্ত্রটির গঠন ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে অস্থিসন্ধিগুলো অনড় অর্থাৎ নাড়ানো যায় না তাদের নিশ্চল অস্থিসন্ধি বলে।
খ. টেনডন ও লিগামেন্টের পার্থক্য নিম্নরূপ :
টেনডন | লিগামেন্ট |
১. টেনডন দিয়ে পেশি অস্থির সঙ্গে যুক্ত থাকে। | ১. লিগামেন্ট দ্বারা অস্থিসমূহ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে। |
২. এদের স্থিতিস্থাপকতা নেই। | ২. এদের স্থিতিস্থাপকতা আছে। |
৩. ঘন, শ্বেততন্তুময় যোজক টিস্যু দ্বারা গঠিত। | ৩. শ্বেততন্তু ও পীততন্তু যোজক টিস্যু দ্বারা গঠিত। |
৪. তম্ভগুলো শাখা-প্রশাখাবিহীন তরঙ্গিত অবস্থায় বিন্যস্ত। | ৪. তন্তুগুলো শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট জালকাকারে বিন্যস্ত। |
গ. মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রদর্শিত তন্ত্রটি হচ্ছে কঙ্কালতন্ত্র ।
নিচে কঙ্কালতন্ত্রের কাজ উল্লেখ করা হলো :
১. দেহ কাঠামো : কঙ্কাল মানবদেহকে একটি নির্দিষ্ট আকার ও কাঠামো দান করে। এটি নিচের অঙ্গগুলোর সাথে উপরের অঙ্গগুলোর সংযুক্তি সাধন করে।
২. রক্ষণাবেক্ষণ ও ভারবহন : মস্তিষ্ক করোটির মধ্যে, মেরুরজ্জু মেরুদন্ডে এবং হৃৎপিন্ড ও ফুসফুস বক্ষগহ্বরে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে। পেশিসমূহ কঙ্কালের সাথে আটকে থাকে এবং দেহের ভারবহনে সম্পৃক্ত।
৩. নড়াচড়া ও চলাচল : হাত, পা, স্কন্ধচক্র ও শ্রোণিচক্র নড়াচড়ায় সাহায্য করে। এ কাজে পেশিতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অস্থির সাথে পেশি আটকানোর ফলে অস্থি নাড়ানো সম্ভব হয় এবং আমরা চলাচল করতে পারি।
৪. লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন : অস্থিমজ্জা থেকে লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন হয়।
৫. খনিজ লবণ সঞ্চয় : অস্থি খনিজ লবণ (ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি) সঞ্চয় করে রাখে। এতে অস্থি শক্ত ও মজবুত থাকে।
ঘ. প্রদত্ত তন্ত্রটি হচ্ছে কঙ্কালতন্ত্র ।
অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে গঠিত যে তন্ত্র দেহের কাঠামো গঠনের মাধ্যমে দেহকে নির্দিষ্ট আকৃতি প্রদান করে এবং বিভিন্ন অঙ্গকে রক্ষা করে তাকে কঙ্কালতন্ত্র বলে। কঙ্কালতন্ত্র মোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত।
মানব কঙ্কাল অক্ষীয় কঙ্কাল ও উপাঙ্গীয় কঙ্কাল নিয়ে গঠিত। অক্ষীয় কঙ্কাল মোট ৮০টি ও উপাঙ্গীয় কঙ্কাল মোট ১২৬টি।
অক্ষীয় কঙ্কাল করোটিকার অস্থি ৮টি, মুখমন্ডলীয় অস্থি ১৪টি, মেরুদন্ডের অস্থি ৩৩টি এবং বক্ষপিঞ্জরের অস্থি ২৫টি নিয়ে গঠিত।
অপরদিকে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল বক্ষ অস্থিচক্র ৪টি, বাহুর অস্থি ৬০টি, শ্রোণিঅস্থিচক্র ২টি ও পা এর অস্থি ৬০টি নিয়ে গঠিত।
অর্থাৎ সর্বমোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে মানব কঙ্কালতন্ত্র গঠিত।
প্রশ্ন–৬: নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মানুষের দেহে অস্থি কয়টি?
খ. অস্থি ও তরুণাস্থির মধ্যে পার্থক্য লিখ।
গ. চিত্রটি সম্পূর্ণ কর এবং বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর ।
ঘ. চিত্রের অঙ্গটির গঠন বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের দেহ ২০৬টি অস্থির সমন্বয়ে গঠিত।
খ. অস্থি ও তরুণাস্থির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :
অস্থি | তরুণাস্থি (কোমলাস্থি) |
কঠিন, নমনীয়, অস্থিতিস্থাপক এবং অস্থিকোষ নিয়ে গঠিত। | অকঠিন, নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক এবং বিভিন্ন তন্তু ও কোষ নিয়ে গঠিত। |
কোষগুলো মাকড়সার জালের মতো মাতৃকায় ছড়ানো। | কোষগুলো একক বা জোড়ায় জোড়ায় ঘনভাবে মাতৃকায় থাকে। |
মাতৃকায় জৈব পদার্থ এবং অজৈব পদার্থের মধ্যে ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ইত্যাদি থাকে। | মাতৃকায় কন্ড্রিন নামক জৈব পদার্থ থাকে। |
গ. চিত্রটি সম্পূর্ণ করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করা হলো :

ঘ. চিত্রের অঙ্গটি একটি অস্থিসন্ধি।
কোমল অথচ দৃঢ়, স্থিতিস্থাপক বন্ধনী দ্বারা অস্থিসমূহ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে, একে লিগামেন্ট বলে।
লিগামেন্ট শ্বেততন্তু ও পীতন্তুর সমন্বয়ে গঠিত। এতে পীত বর্ণের স্থিতিস্থাপক তন্তুর সংখ্যা বেশি থাকে। এর মধ্যে সরু, শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট জালকাকারে বিন্যস্ত কতগুলো তন্তুও ছড়ানো থাকে। এ তন্তুগুলো গুচ্ছাকারে না থেকে আলাদাভাবে অবস্থান করে। এদের স্থিতিস্থাপকতা আছে। তন্তুগুলো ইলাস্টিন নামক আমিষ দ্বারা তৈরি। তন্তুগুলোর মাঝে ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ থাকে।
কবজা যেমন পাল্লাকে দরজার কাঠামোর সাথে আটকে রাখে অনুরূপভাবে অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট হাড়কে আটকে রাখে। এতে অঙ্গটি সবদিকে সোজা বা বাঁকা হয়ে নড়াচড়া করতে পারে এবং হাড়গুলো স্থানচ্যুত ও বিচ্যুত হয় না।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৭ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
হিমেল খুব চটপটে আর চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে। সে তার সারাদিনের কার্যক্রমের অনেকটা সময় দৌড়ঝাপ, খেলাধুলা করে কাটায়।
ক. সারকোলেমা কী?
খ. অস্টিওপোরেসিস রোগটি হওয়ার কারণগুলো ব্যাখ্যা কর।
গ. দৌড়ঝাপ ও খেলাধুলার সময় হিমেলের পেশিগুলো অস্থি থেকে বিচ্যুত হয় না কেন? ব্যাখ্যাসহ লেখ।
ঘ. হিমেলের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে কিসের সমন্বয় অপরিহার্য? বিশ্লেষণ কর।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পেশী আবরণকে সারকোলেমা বলে।
খ. অস্টিওপোরেসিস রোগটি হওয়ার মূল কারণ হলো ক্যালসিয়ামের অভাব। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের মেনোপস হওয়ার পর এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি। যারা অলস জীবনযাপন করেন, কায়িক পরিশ্রম কম করেন তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া অনেকদিন ধরে আর্থ্রাইটিসে ভুগলে এ রোগ হওয়ার
সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
গ. দৌড়ঝাপ ও খেলাধুলার সময় হিমেলের পেশিগুলো অস্থি থেকে বিচ্যুত হয় না কারণ পেশিগুলো হাড়ের সাথে টেনডন দ্বারা আটকানো থাকে।
মাংসপেশির প্রান্তভাগ রজ্জুর মতো শক্ত হয়ে দেহের অস্থিগাত্রের সাথে সংযুক্ত হয়। এই শক্ত প্রান্তকে টেনডন বলে। ঘন, শ্বেত ও তন্তুময় যোজক টিস্যু দ্বারা টেনডন তন্তুগুলি পেশিতন্তুর সারকোলেমায় সংযোজিত হয়।
পেশি ও টেনডনের সংযোগকে আরও শক্তিশালী করার জন্য টেনডনের আটিগুচ্ছ বেস্টনকারী অ্যারিওলা টিস্যু, পেশি বান্ডলের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ তৈরি করে। টেনডন বেশ শক্ত এবং ভেঙ্গে বা ছিড়ে যাবার সম্ভাবনা অনেক কম, টেনডন পেশি অস্থির সাথে আবদ্ধ হয়ে দেহ কাঠামো গঠন ও দৃঢ়তা দানে সাহায্য করে এবং যান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
উপরোক্ত টেনডনের কারণে দেহের পেশিগুলো চলাফেরা, দৌড়ঝাপ ও খেলাধুলার সময় অস্থি থেকে বিচ্যুত হয় না।
ঘ. হিমেলের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অস্থি ও পেশির সমন্বয় অপরিহার্য।
অস্থি দেহের কাঠামো কঙ্কাল গঠন করে। আর পেশিতন্ত্র এই কাঠামোর ওপর আচ্ছাদন তৈরি করে। ঐচ্ছিক পেশি টেনডন দ্বারা অস্থিকে আটকে রাখে। স্নায়বিক উত্তেজনা পেশির মধ্যে উদ্দীপনা জোগানোর ফলে পেশি সংকুচিত হয়।
উদ্দীপনা অপসারণে পেশি পুনরায় প্রসারিত হয়। এই সংকোচন ও প্রসারণের সহায়তায় সংলগ্ন অস্থির নড়াচড়া সম্ভব হয়। এভাবে পেশি কোনো অঙ্গকে প্রসারিত করে দেহের কোনো অঙ্গকে ভাঁজ করে, প্রয়োজনে দেহের অক্ষ থেকে দেহের কোনো অঙ্গকে সরিয়ে দেয়, কোনো অঙ্গকে দেহের অক্ষের দিকে টেনে আনে, কোনো অঙ্গকে নিচে নামায় বা কোনো অঙ্গকে অক্ষের চারপাশে ডানে-বামে ঘোরায়। এভাবে অস্থি ও পেশির সমন্বয়ে হিমেল তার সারাদিনের কার্যক্রমের পাশাপাশি দৌড়ঝাপ, খেলাধুলা করতে পারে।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, হিমেলের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অস্থি ও পেশির সমন্বয় অপরিহার্য।
প্রশ্ন–৮ : নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ কোথায় থাকে?
খ. কী কী রোগে অস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের A ও B ক্ষতিগ্রস্ত হলে অঙ্গ চালনায় সমস্যা হবে কি? উত্তরের পক্ষে ব্যাখ্যাসহ লেখ।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রটি অঙ্কন করে A, B, C, D ও E অংশগুলো চিহ্নিত কর।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. টেনডনের আঁটিগুলোর মধ্যে ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ থাকে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
খ. অস্টিওপোরেসিস ও আর্থ্রাইটিস রোগে অস্থি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেকদিন যাবত বাতজ্বরে ভুগলে এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত রোগ সৃষ্টি হয়। এ রোগে অস্থিসন্ধিগুলো শক্ত হয়ে যায়। অস্টিওপোরেসিস হলে অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায়। যেসব বয়স্ক পুরুষ ও মহিলা দীর্ঘদিন যাবত স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ সেবন করে তাদের এবং মহিলাদের মেনোপস হওয়ার পর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া দেহে ক্যালসিয়াম এর অভাব হলে এরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
গ. উদ্দীপকের চিত্রটি হচ্ছে অস্থিসন্ধির। এর A হচ্ছে লিগামেন্ট এবং B হচ্ছে তরুণাস্থি।
লিগামেন্টকে অস্থিবন্ধনী বলে। কবজা যেমন পাল্লাকে দরজার কাঠামোর সাথে আটকে রাখে অনুরূপভাবে লিগামেন্ট হাড়কে আটকে রাখে। এতে অঙ্গটি সবদিকে সোজা বা বাঁকা হয়ে নড়াচড়া করতে পারে এবং হাড়গুলো স্থানচ্যুত ও বিচ্যুত হয় না।
চিত্রের B অংশটি তরুণাস্থি। এগুলো অস্থির মতো শক্ত নয়। বরং নরম ও স্থিতিস্থাপক। দুটি অস্থির অস্থিসন্ধির অংশগুলো হলো তরুণাস্থিতে আবৃত অস্থিপ্রান্ত এবং সাইনোভিয়াল রস সমৃদ্ধ সাইনোভিয়াল রস। তরুণাস্থি থাকাতে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ ও এর ফলে ক্ষয় প্রতিরোধ হয় এবং অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করতে কম শক্তি ব্যয় হয়।
উপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যদি উদ্দীপকের A অর্থাৎ লিগামেন্ট ও B অর্থাৎ অস্থি সন্ধির তরুণাস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে দেহের অঙ্গ চালনায় সমস্যা সৃষ্টি হবে।
ঘ. চিত্রটি অঙ্কন করে A, B, C, D ও E অংশ চিহ্নিত করা হলো :

প্রশ্ন–৯ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ঝর্না বেগম শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের একটি বিশেষ অস্থিসন্ধি নিয়ে পড়াচ্ছিলেন। তিনি বলেন, অস্থিসন্ধি আবরণী এবং সাইনোভিয়াল রস ও অস্থিসন্ধি গহ্বর নিয়ে গঠিত। এ অস্থিসন্ধিটির কারণেই আমাদের দেহের অস্থিসমূহ জুতার তলার মতো ক্ষয় হয়ে যায় না।
ক. করোটিকা কোন ধরনের অস্থিসন্ধি?
খ. পেশিতন্ত্রের ২টি কাজ লেখ।
গ. ঝর্না নিগারের আলোচিত অস্থিসন্ধিটির চিহ্নিত চিত্র। অঙ্কন কর।
ঘ. ঝর্না বেগমের শেষের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. করোটিকা এক ধরনের নিশ্চল অস্থিসন্ধি।
খ. পেশিতন্ত্রের ২টি কাজ হলো :
১. কঙ্কালতন্ত্রের সাথে যৌথভাবে দেহের নির্দিষ্ট আকার গঠন করা।
২. পেশিতে গ্লাইকোজেন সঞ্চয় করে শক্তির উৎস ও ভবিষ্যতের জন্য শক্তি সংরক্ষণ করা।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. ঝর্না বেগম যে অস্থিসন্ধি সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন তা হলো-সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি।
এ অস্থিসন্ধিটির চিহ্নিত চিত্র নিচে অঙ্কন করা হলো :

ঘ. ঝর্না বেগমের শেষ উক্তিটি হলো- অস্থিসন্ধির কারণেই মানুষের অস্থিসমূহ ঘষা লাগলেও জুতার তলার মতো ক্ষয় হয়ে যায় না।
একটি অস্থিসন্ধিতে দুটি মাত্র অস্থির বহির্ভাগ এসে মিলিত হয়ে একটি সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি গঠন করে। আর যখন দুয়ের অধিক অস্থি মিলিত হয় তখন জটিল অস্থিসন্ধি তৈরি হয়। সাইনোভিয়াল রস পরিপূর্ণ অস্থিসন্ধিগুলোতে পাওয়া যায়।
তরুণাস্থিতে আবৃত অস্থি প্রান্ত এবং অস্থিসন্ধিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী বা ক্যাপসুল। অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস ও তরুণাস্থি থাকাতে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ ও তজ্জনিত ক্ষয় হ্রাস পায় ফলে আমাদের অস্থিসমূহ ক্ষয় হয় না। অপরদিকে জুতার তলা ক্রমাগত রাস্তায় ঘষা লাগে বলে দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, যা অস্থিসন্ধির ক্ষেত্রে হয় না।
উপরিউক্ত আলোচনা বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ঝর্না বেগমের উক্তিটি সম্পূর্ণ যথার্থ ও যুক্তিযুক্ত যে, অস্থিসন্ধির কারণেই জুতার তলা ক্ষয় হলেও আমাদের অস্থিসমূহ ক্ষয় হয় না।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–১০ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জীববিজ্ঞান শিক্ষকের নেতৃত্বে ১০ম শ্রেণির ছাত্ররা বায়োলজি ল্যাবে প্রবেশ করল। সেখানে তারা মানবদেহের একটা কঙ্কাল দেখতে পেল। শিক্ষক ছাত্রদেরকে মানবদেহের হাত, পাসহ সমস্ত অঙ্গের কোথায় কয়টি হাড় থাকে, তাদের নাম কী ইত্যাদি হাতে কলমে বুঝিয়ে দিলেন। আরও বললেন আর্থ্রাইটিস নামক রোগের কারণে এই সমস্ত অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয়।
ক. লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী কী?
খ. পেরিটেন্ডিয়াম বলতে কী বোঝ?
গ. কঙ্কাল হতে উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গ দুটির হাড়সমূহের নাম পর্যায়ক্রমে লেখ।
ঘ. শিক্ষক কর্তৃক উদ্দীপকে উল্লিখিত রোগ হতে কীভাবে প্রতিকার লাভ করা যায় তোমার মতামত দাও।
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নেফ্রনে অ্যাফারেন্ট আর্টারিওল বিভক্ত হয়ে যে একগুচ্ছ নালিকার সৃষ্টি করে তার নাম লিগামেন্ট বা অস্থি বন্ধনী।
খ. টেনডনের তন্তুগুলো গুচ্ছাকারে ও পরস্পর সমান্তরাল বিন্যাসে থাকে। অনেকগুলো তন্তু একত্রে আঁটি বা বান্ডল তৈরি করে। এ আঁটিগুলো একত্রে দলবদ্ধ হয়ে তৈরি করে আঁটিগুচ্ছ যা তন্তুময় টিস্যুগুচ্ছ বা অ্যারিওলার টিস্যু দ্বারা বেষ্টিত হয়ে বড় আঁটিতে পরিণত হয়। একে পেরিটেন্ডিয়াম বলে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গ দুটি হলো হাত ও পা।
মানবদেহের হাত ও পা বেশ কতকগুলো হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত। মানব কঙ্কালতন্ত্রের হাত যে সকল হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত তা পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো : হিউমেরাস, আলনা, রেডিয়াস, কার্পাল, মেটাকার্পাল ও ফ্যালান্জেস। এ হাড়গুলো পর্যায়ক্রমে যুক্ত হয়ে হাতের কঙ্কাল তৈরি করে।
পা যে সকল হাড় দিয়ে গঠিত তা পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো : ফিমার, প্যাটেলা, টিবিয়া, ফিবুলা, টার্সাল, মেটাটার্সাল ও ফ্যালান্জেস। উর্ধ্ব পা এর অস্থিকে ফিমার বলে। এ হাড়গুলো পর্যায়ক্রমে যুক্ত হয়ে পায়ের কঙ্কাল গঠন করে।
ঘ. শিক্ষক কর্তৃক উদ্দীপকে উল্লিখিত রোগটি হলো আর্থ্রাইটিস বা গেঁটে বাত।
আমরা কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ও নিয়ম মেনে চললে এ রোগ উপশম করতে পারি। বয়স্কদের এ রোগ পুরোপুরি আরোগ্য হয় না। তাই উপশমের জন্য কিছু নিয়ম মানতে হবে। অত্যধিক পরিশ্রম আর ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সম্ভব হলে দিনের বেলায় একটু করে ঘুমিয়ে নিলে উপকার পাওয়া যাবে। যন্ত্রণাদায়ক গিটের উপর গরম স্যাঁক দিতে হবে। এতে ব্যথা কিছুটা কম অনুভূত হবে।
আমাদের অস্থিসন্ধির নড়াচড়া ঠিক রাখতে হালকা ব্যায়াম করতে হবে। খাবারের মধ্যে ডাল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বেদনা উপশমকারী ওষুধ সেবন ও সঠিক চিকিৎসা দ্বারা এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। সকলের উচিত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে বসবাস করা। পর্যাপ্ত আলোবাতাস আছে এমন স্থানে বসবাস করতে হবে। নিয়মিত এবং পরিমিত উপায়ে আমাদের সকলকে সুষম ও আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, সঠিক উপায়ে জীবনযাপন ও ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা আর্থ্রাইটিস রোগ থেকে প্রতিকার লাভ করা যায়।