বিজ্ঞান
সপ্তম অধ্যায়
অম্ল, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
এসিড : যে সব যৌগ জলীয় দ্রবণে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দান করে সেসব যৌগকে এসিড বলে। উদাহরণ : H2SO4, HNO3, HCl প্রভৃতি।
এসিডের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- প্রায় সকল লঘু এসিড টকস্বাদ যুক্ত।
- লঘু এসিড সক্রিয় ধাতুর সাথে বিক্রিয়ায় লবণ ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
- ধাতব কার্বনেটের সাথে লঘু এসিড বিক্রিয়া করে CO2 গ্যাসের বুদ বুদ উৎপন্ন করে।
Na2CO3 (s = aq) + H2SO4(aq) → Na2SO4(aq) + H2O(l) + CO2(g)
তেমনি
- লঘু এসিড ধাতব হাইড্রোজেন কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়ায় CO2 গ্যাসের বুদবুদ উৎপন্ন করে।
- এটি ধাতুর হাইড্রক্সাইড ও ধাতুর অক্সাইডের সাথে পৃথক বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি তৈরি করে।
ক্ষারক: যে সকল পদার্থ দ্রবণে প্রোটন H+ গ্রহণ করে তাদেরকে ক্ষারক বলে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
ক্ষার : যে সকল ক্ষারক পানিতে সম্পূর্ণভাবে দ্রবণীয় তাকে ক্ষার বলে। সকল ক্ষার দ্রবণ কটু স্বাদ ও গন্ধমুক্ত। ধাতব আয়নের সাথে লঘু ক্ষারের বিক্রিয়ায় ধাতব হাইড্রেক্সাইড তৈরি হয়। যেমন :
Al3+ (aq) + 3OH– (aq) → Al(OH)3 (s)
( সাদা বর্ণের অধঃক্ষেপ)
এসিডের সাথে ক্ষারের বিক্রিয়ায় : ক্ষার দ্রবণ এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
দুর্বল ক্ষার : যে সকল ক্ষার জলীয় দ্রবণে আংশিক আয়নিত হয় তাকে দুর্বল ক্ষার বলে।
সবল ক্ষার: জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণ আয়নিত হয়।
pH : কোন দ্রবণের হাইড্রোজেন আয়নের (H-) মোলার ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদমকে ঐ দ্রবণের pH বলে।
দ্রবণে pH মান (0 -14) এর মধ্যে হয়। pH মানে 7 এর কম হলে অম্লীয় এবং 7 এর বেশি হলে ক্ষারীয় হবে। তবে দ্রবণের pH মান 7 হলে তা প্রশম হবে।
pH এর গুরুত্ব : কৃষিক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফসলের জন্য নির্দিষ্ট pH মান গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য রক্ষায় pH মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের pH মনে 7.35 -7.45 এবং প্রস্রাবের জন্য 6 থাকা প্রয়োজন। তেমনি ত্বকের জন্য আদর্শ pH মনে 5.5 pH মনে 5.5 -6.5 হলে ত্বক বিভিন্ন এলার্জেল, ব্যাকটেরিয়া এবং পরিবেশ দূষকের আক্রমণ রক্ষা করতে পারে।
প্রশমন এবং এর প্রয়োজনীয়তা: এসিডিটির জন্য দায়ী হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড বা অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইডের প্রশমন বিক্রিয়া ঘটে যার ফলে অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং ব্যথা আর থাকে না। বিক্রিয়াটি নিচে দেখানো হলো:
2HCl + Mg(OH)2 → MgCl2 + 2H2O
2 HCl + Al(OH)3 → AICl3 + 3 H2O
আবার চুন (CaO) ও স্ন্যাক লাইম [Ca(OH)2] দিয়ে মাটির যে এসিডিটির দূর করে উর্বরতা বৃদ্ধি করা হয় সেটিও হয় প্রশমন বিক্রিয়ার মাধ্যমে যা নিচে দেখানো হলো:
CaO + H2SO4 → CaSO4 + H2O
Ca(OH)2 + H2SO4 → CaSO4 + 2H2O
খাওয়ার পরে আমাদের মুখে এসিড তৈরি হয় আর টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে এসিড জনিত কারণে দাঁতের ক্ষয়রোধ হয়। এখানে এক ধরনের প্রশমন বিক্রিয়াই ঘটে।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
লবণের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য: লবণ হলো এসিড ও ক্ষারকের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন পদার্থ। যেমন—বেকিং সোডা (NaHCO3) বা খাবার সোডা। এটিও একটি লবণ, কিন্তু এর জলীয় দ্রবণ এসিডিক এবং এটি নীল লিটমাসকে লাল করে। এর কারণ হলো যদিও এটি একটি লবণ কিন্তু পানিতে এটি হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে।
NaHCO3 → Na+ + H+ + CO32-
সোডিয়াম কার্বোনেটের (Na2CO3) এ জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় এবং তা লাল লিটমাসকে লাল করে। এর কারণ হলো পানিতে সোডিয়াম কার্বোনেট, সোডিয়াম হাইডক্সাইড ও কার্বোনিক এসিড তৈরি করে। সব লবণই কঠিন এবং উচ্চ গলনাংক ও স্ফুটনাংক বিশিষ্ট হয়। বেশির ভাগ লবণই পানিতে দ্রবণীয়, তবে কিছু কিছু লবণ আছে যারা পানিতে দ্রবীভূত হয় না। যেমন, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট (CaCO3) সিলভার সালফেট (Ag2SO4), সিলভার ক্লোরাইড (AgCl) ইত্যাদি পানিতে অদ্রবণীয়।
লবণের ব্যবহার: সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) যা সাধারণ লবণ বা টেবিল লবণ নামেও পরিচিত। তরিতরকারি ছাড়াও আরও অনেক খাবার যেমন—
পাউরুটি, আচার, চানাচুর ইত্যাদিতে খাবার লবণ ব্যবহার করা হয়। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য আরেকটি লবণ সোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহার করা হয় যা টেস্টিং সন্ট নামে পরিচিত।
আমরা কাপড় কাচার জন্যে যে সাবান ব্যবহার করি তা হলো সোডিয়াম স্টিয়ারেট (C17H35COONa)। কাপড় কাচার সোডা হিসেবে আমরা যে সোডিয়াম কার্বোনেট (Na2CO3.1OH2O) ব্যবহার করি তাও একটি লবণ।
জীবাণুনাশক হিসেবে যে তুঁতে বা ফিটকিরি ব্যবহার করি সেগুলোও লবণ। মাটির এসিডিটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য আমরা যে চুনাপাথর ব্যবহার করি তাও একটি লবণ। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্যে যে সার ব্যবহার করে থাকি তাদের বেশির ভাগই হলো লবণ। যেমন— অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (NH4NO3), অ্যামোনিয়াম ফসফেট [(NH4)3PO4], পটাশিয়াম নাইট্রেট (KNO3) ইত্যাদি।
তুঁতে বা কপার সালফেট (CuSO4.5H2O) কৃষি জমিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে, শৈবালের উৎপাদন বন্ধে খুব কার্যকরী লবণ। শিল্প কারখানায় বিভিন্ন কাজে খাবার লবণ অপরিহার্য। যেমন— চামড়া শিল্পে চামড়ার ট্যানিং করতে, মাখন ও পনিরের শিল্পোৎপাদন, কাপড় কাচার সোডা ও খাবার সোডা তৈরি করতে, সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডের তড়িৎ বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে খাবার লবণ ব্যবহৃত হয়।
কিছু লবণ যেমন—তুঁতে, মারকিউরিক সালফেট (HgSO4), সিলভার সালফেট (AgSO4) শিল্প কারখানায় প্রভাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. হিস্টামিন কী?
উত্তর: হিস্টামিন হলো এক ধরনের ক্ষারকীয় পদার্থ যা বোলতা ও বিচ্ছুর হুলে থাকে।
প্রশ্ন–২. এসিডিটি কাকে বলে?
উত্তর: পাকস্থলিতে খাদ্য হজম করার জন্য আমাদের হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। যদি পাকস্থলিতে এ এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তখন ঐ অবস্থাকে এসিডিটি বলে।
প্রশ্ন–৩. ভিনেগার কী?
উত্তর: অ্যাসিটিক এসিডের 4% জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলে।
প্রশ্ন–৪, ভিনেগার এর সংকেত কী?
উত্তর: ভিনেগারের সংকেত হলো: CH3COOH .
প্রশ্ন–৫. এসিড কাকে বলে?
উত্তর: যে সব পদার্থ পানিতে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H–) তৈরি করে তাদেরকে এসিড বলে।
প্রশ্ন–৬. কেক, বিস্কুট ও পাউরুটির ময়দার সাথে বেকিং সোডা মেশানো হয় কেন?
উত্তর: কেক, বিস্কুট ও পাউরুটির ময়দার সাথে বেকিং সোডা বা পাউডার মেশানো হয় এগুলোকে ফোলাতে। তাপ দিলে বেকিং সোডা বা NaHCO3 ভেঙে CO3 উৎপন্ন করে। যা কেক, বিস্কুট ও পাউরুটিকে ফোলায়।
প্রশ্ন–৭. pH কী?
উত্তর: pH হলো কোনো জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রার নেগেটিভ লগারিদম।
প্রশ্ন–৮. মানবদেহের ধমনির রক্তের pH এর মান কত?
উত্তর: মানবদেহের ধমনির রক্তর pH হলো প্রায় ৭.৪।
প্রশ্ন–৯. বিশুদ্ধ পানির pH কত?
উত্তর: বিশুদ্ধ পানির pH মান ৭।
প্রশ্ন–১০. ক্ষারক কী?
উত্তর: যে সকল যৌগের অণুতে অক্সাইড (O2) বা হাইড্রোক্সাইড (OH–) আয়ন থাকে এবং যা এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাদেরকে বলা হয় ক্ষারক।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–১১. ক্যালামিন কী?
উত্তর: ক্যালামিন হলো জিংক কার্বনেট দ্বারা তৈরি লোশন।
প্রশ্ন–১২. চুনাপাথরের সংকেত লিখ।
উত্তর: চুনাপাথরের সংকেত হলো- CaCO3।
প্রশ্ন–১৩. কাপড় কাচা সোডার সংকেত লিখ।
উত্তর: কাপড় কাঁচার সোডার সংকেত হলো- Na2CO3.10H2O।
প্রশ্ন–১৪. তুঁতের সংকেত লিখ ।
উত্তর: তুঁতের সংকেত হলো- CuSO4.5H2O।
প্রশ্ন–১৫. খাবার সোডার রাসায়নিক সংকেত লিখ।
উত্তর: খাবার সোডার রাসায়নিক সংকেত হলো– NaHCO3।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. লেবুতে বিদ্যমান এসিড আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয় কেন?
উত্তর: লেবুতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান। সাইট্রিক এসিড এক ধরনের দুর্বল জৈব এসিড। যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং লেবুতে প্রাপ্ত এই এসিড আমাদের খুবই প্রয়োজনীয়। এই এসিড পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। অতএব, লেবুতে বিদ্যমান এসিড আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়।
প্রশ্ন–২. বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলির জন্য ক্ষতিকর কেন?
উত্তর: পাকস্থলীতে খাদ্য হজমের জন্য আমাদের হাইড্রোক্লোরিক এসিড প্রয়োজন যা পাকস্থরীতেই সৃষ্টি হয়। কোনো কারণে এই এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে পাকস্থলীতে এসিডিটি সৃষ্টি হয়। বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীতে এসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। পাকস্থলীর এসিডিটি অত্যধিক বেড়ে গেলে বিভিন্ন মারাত্মক সমস্যাসহ পাকস্থলীতে ক্ষতও সৃষ্টি হতে পারে। তাই বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর।
প্রশ্ন–৩. বোলতা কামড়ালে জ্বালা করে কেন?
উত্তর: বোলতার হুল থেকে হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। এটি ক্ষারকীয় পদার্থ। তাই বোলতা কামড়ালে ক্ষারকীয় এ পদার্থের ক্রিয়ায় ত্বকে জ্বালা করে।
প্রশ্ন–৪. গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথায় আমরা এন্টাসিড খাই কেন?
উত্তর: পাকস্থলীতে অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি হলে। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা অনুভূত হয়। এমতাবস্থায় আমরা এন্টাসিড খাই। এন্টাসিড হলো ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড নামক ক্ষারের মিশ্রণ। এরা পাকস্থলীর অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে একে নিষ্ক্রিয় করে এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা উপশম করে।
প্রশ্ন–৫. HNO3 কে শক্তিশালী এসিড বলা হয় কেন?
উত্তর: যে সকল এসিডসমূহ পানিতে পুরোপুরি বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) উৎপন্ন করে, তারাই শক্তিশালী এসিড। HNO3 এসিডটি পানিতে সম্পূর্ণ বিয়োজিত হয়ে H+ আয়ন উৎপন্ন করে, তাই এটি শক্তিশালী এসিড। বিক্রিয়া:

প্রশ্ন–৬. এসিড ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে কেন?
উত্তর: এসিড মানবদেহের কোনো অঙ্গে লাগলে সেই স্থান। পুড়ে যায় ও ক্ষত সৃষ্টি করে। আবার কাপড়ে লাগলে কাপড়ও পুড়ে যায় ও ছিদ্র হয়ে যায়। একইভাবে ধাতব পদার্থসমূহ এসিডের সংস্পর্শে এলে তা ক্ষয় হয়ে যায়। তাই এসিড ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–৭. ভিনেগারকে দুর্বল এসিড বলা হয় কেন?
উত্তর: সাধারণত জৈব এসিডসমূহ দুর্বল এসিড। যেমন-এসিটিক এসিড (CH3COOH), সাইট্রিক এসিড, অক্সালিক এসিড (HOOC-COOH) প্রভৃতি দুর্বল এসিড। এসিটিক এসিডকে ভিনেগার বলা হয়। এরা জলীয় দ্রবণে পুরোপুরি আয়নিত হয় না। ভিনেগারও পানিতে আংশিক বিয়োজিত হয় বলে একে দুর্বল এসিড বলা হয়।
প্রশ্ন–৮. নির্দেশক বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: নির্দেশক হলো এমন পদার্থ যা বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্রবণে এসিড বা ক্ষারের উপস্থিতি নির্দেশ করে। যেমন- লিটমাস কাগজ, মিথাইল অরেঞ্জ, ফেনফথ্যালিন ইত্যাদি। পরীক্ষাগারে সাধারণত এসিড, ক্ষারক ও নিরপেক্ষ দ্রবণ শনাক্তকরণে বিভিন্ন নির্দেশক ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন–৯. মাটির এসিডিটি কীভাবে দূর করা যায়?
উত্তর: মাটির pH সাধারণত ৪-৮ হয়ে থাকে। মাটির pH ৩-এর কম অর্থাৎ এসিডিক হলে মাটির অনেক দরকারি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg) মাটি থেকে চলে যায়। ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায়। এসিডিক মাটির জন্য ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত সার ব্যবহার করে pH-এর মান নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত যৌগগুলো হলো চুন (CaO), মিল্ক অব লাইম [Ca(OH)2], চুনাপাথর (CaCO3)।
প্রশ্ন-১০. প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
উত্তর: প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH এর মান প্রভাব ফেলে। আমাদের ত্বক সাধারণত এসিডিক হয়। আমাদের ত্বকের pH ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে থাকে। তাই বাজারে প্রসাধন সামগ্রীর pH আমাদের ত্বকের উপযোগী pH মানের হয়। যেমন-এ ধরনের মুখ ধোয়ার প্রসাধন সামগ্রীর pH মান হলো ৫.৫। কিন্তু এ প্রসাধনী নবজন্ম নেওয়া শিশুর জন্য প্রযোজ্য নয় কারণ নবজন্ম নেওয়া শিশুর ত্বকের pH মান ৭ এর কাছাকাছি থাকে। এটি ব্যবহার করলে শিশুর ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই ত্বক এমনকি স্বাস্থ্যহানি রোধে প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন–১১: টুথপেস্ট কিভাবে দাঁতের ক্ষয়রোধ করে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: টুথপেস্ট বা টুথ পাউডার মূলত ক্ষারীয় পদার্থ। আমরা খাবার গ্রহণের পর আমাদের মুখে এক ধরনের এসিড তৈরি হয়। এ অবস্থা অনেক সময় ধরে ক্রিয়া করলে দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টুথপেস্ট বা টুথ পাউডার দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁত পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি এসিডের ক্রিয়াও প্রশমিত করে। এতে দাঁত ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
প্রশ্ন–১২. প্রশমন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: এসিড এবং ক্ষার বা ক্ষারকের বিক্রিয়ায় লবণ উৎপন্ন হওয়াকে প্রশমন বলে। এ সময় কিছু পানিও উৎপন্ন হয়। প্রশমন বিক্রিয়া নিম্নরূপ:
NaOH + HCI → NaCl + H2O
প্রশমন বিক্রিয়ায় মূলত হাইড্রোজেন আয়ন (H+) এবং হাইড্রক্সিল আয়নের (OH–) মধ্যে বিক্রিয়া ঘটে।
প্রশ্ন–১৩. “সকল ক্ষারই ক্ষারক, কিন্তু সকল ক্ষারক ক্ষার নয়”কেন?
উত্তর: ক্ষারকের ও ক্ষারের সংজ্ঞা থেকে আমরা জানি, ধাতুর অক্সাইড ও হাইড্রোক্সাইডে ক্ষারক বলে। আবার যে সকল ক্ষারক পানিতে অতিমাত্রায় দ্রবীভূত হয় তাকে ক্ষার বলে। তাই ক্ষার হতে হলে অবশ্যই যৌগটিকে ক্ষারক হতে হবে। তাই সকল ক্ষারই ক্ষারক। অপরদিকে ক্ষার হতে হলে ক্ষারক যৌগটিকে পানিতে অধিক মাত্রায় দ্রবীভূত হতে হবে। যেহেতু সকল ক্ষারক পানিতে বেশি মাত্রায় দ্রবীভূত হয় না তাই সকল ক্ষারক ক্ষারের বৈশিষ্ট্য প্রদানে অক্ষম। তাই সকল ক্ষারক ক্ষার নয়।
প্রশ্ন–১৪. প্রশমন বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো লিখ।
উত্তর: প্রশমন বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-
i. এসিড ও ক্ষারের মধ্যে হয়।
ii. নিরপেক্ষ পদার্থ পানি ও লবণ উৎপন্ন করে।
iii. প্রশমন বিন্দু নির্ণয়ে নির্দেশক ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন–১৫. এসিড ও ক্ষারের মধ্যে দু‘টি পার্থক্য দেখাও।
উত্তর: এসিড ও ক্ষারের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো—
এসিড | ক্ষার |
i. এসিড জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দেয়। | i. ক্ষার জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH–) দেয়। |
ii. এটি নীল লিটমাস পেপারকে লাল করে। | ii. এটি লাল লিটমাস পেপারকে নীল করে। |
প্রশ্ন–১৬. NaCl কে লবণ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: লবণ এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। বেশির ভাগ লবণ লিটমাস পেপারের বর্ণ পরিবর্তন করে না। লবণের ক্ষেত্রে H+ বা OH– আয়ন পাওয়া যায় না। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো NaCl এর মধ্যে বিদ্যমান থাকায় একে লবণ বলা হয়।
প্রশ্ন–১৭. H2CO3 কে দুর্বল এসিড বলা হয় কেন?
উত্তর: H2CO3 কে দুর্বল এসিড বলা হয়। কারণ H2CO3 যখন জলীয় দ্রবণে যায় তখন তা সম্পূর্ণ বিয়োজিত হয় না অর্থাৎ দ্রবণে যতগুলো এসিডের অণু উপস্থিত থাকে তার সমান সংখ্যক হাইড্রোজেন আয়ন (H+) পাওয়া যায় না। অর্থাৎ এটি দ্রবণে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয়। তাই এটি দুর্বল এসিড ।
তথ্য কণিকা
১. এসিটিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, অক্সালিক এসিড হলো— দুর্বল এসিড।
২. মাংস, পোলা ও বিরিয়ানি খাবার পর হজমে সহায়তা করে — ল্যাকটিক এসিড।
৩. পানিতে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় — এসিটিক এসিড।
৪. ফসফরিক এসিড — H3PO4।
৫. পিঁপড়ার কামড়ের মাধ্যমে নিঃসৃত হয় — ফরমিক এসিড।
৬. H2SO4 — এসিড।
৭. এসিডিটি তৈরি করে থাকে — পেঁয়াজ, রসুন।
৮. H2SO4, HNO3, HCI হলো — শক্তিশালী এসিড।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৯. CH3COOH হচ্ছে — ভিনেগার।
১০. নীল লিটমাসকে লাল করে — এসিড।
১১. ল্যাকটিক এসিড থাকে — বোরহানি বা দইয়ের মধ্যে।
১২. লাল লিটমাসকে নীল করে — NaOH ক্ষার।
১৩. এন্টাসিড ঔষধে থাকে — Mg(OH)2 ।
১৪. সোডিয়াম বাইকার্বনেট হচ্ছে — খাবার সোডা।
১৫. HOOC-COOH হচ্ছে — অক্সালিক এসিড।
১৬. নির্দেশক — ২ ধরনের।
১৭. তেঁতুল — এসিডধর্মী ফল।
১৮. (NH4)3PO4 হচ্ছে — অ্যামোনিয়াম ফসফেট ।
১৯. ক্ষারক জাতীয় পদার্থ — হিস্টামিন।
২০. আইপিএস এ ব্যবহৃত হয় — H2SO4।
২১. এসিডিটি তৈরি করে থাকে — পালংশাক।
২২. এসিড ছোড়ার সর্বোচ্চ শাস্তি — মৃত্যুদন্ড।
২৩. সবুজ চা, আদা চা, বীট, গাজর, মাশরুম, কিসমিস, খেজুর, পর্যাপ্ত ঘুম পাকস্থলীর — এসিডিটি কমায়।
২৪. CaCO3 হচ্ছে — ক্যালসাইট।
২৫. অতিরিক্ত এসিড থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং পাকস্থলীর এসিডিটি কমাতে সেবন করা যায়— Mg(OH)2 ক্ষার।
২৬. দুশ্চিন্তায় ও ঘুম না হলে বেড়ে থাকে — এসিডিটি।
২৭. কেক, বিস্কুট ফোলানোর কাজে ব্যবহৃত হয় — সোডিয়াম হাইড্রোজেন কার্বনেট।
২৮. pH এর মান 7 এর কম হলে দ্রবণটি হয় — অম্লীয় ।
২৯. pH সাধারণত ৯-১১ এর মধ্যে থাকে — টুথপেস্টের।
৩০. ফেনফথেলিন — একটি নির্দেশক।
৩১. টুথপেস্ট ক্ষারীয় তা প্রমাণ করতে ব্যবহৃত হয় — লাল লিটমাস।
৩২. pH এর মান 7 এর বেশি হলে দ্রবণটি হয়ে থাকে — ক্ষারীয়।
৩৩. রাসায়নিক সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় — H2SO4।
৩৪. এসিড ও ক্ষার বিক্রিয়া করে উৎপন্ন করে — লবণ ও পানি ।
৩৫. শৈবালের উৎপাদন বন্ধ করে থাকে — কপার সালফেট।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩৬. NaOH, KOH, NH4OH হলো — ক্ষারক।
৩৭. ফেনফথ্যালিন মিশ্রিত দ্রবণে NaOH মিশালে দ্রবণের রং — গোলাপি হয়।
৩৮. মিথাইল রেড ক্ষারকে ধারণ করে — হলুদ বর্ণ।
৩৯. এসিডকে প্রশমিত করে — ক্ষারক।
৪০. কৃষি জমিতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় — তুঁতে।
৪১. মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে — NH4NO3, (NH4)3PO4, KNO3।
৪২. চামড়া ট্যানিং করতে ব্যবহৃত হয় — খাবার লবণ।
৪৩. NaCl হলো — খাবার লবণ।
৪৪. সোডিয়াম গ্লুটামেট হলো — টেস্টিং সল্ট।
৪৫. টেক্সটাইল ও রঙ তৈরির কারখানায় রঙ ফিক্স করতে ব্যবহৃত হয় — লবণ।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. কোনটি দুর্বল এসিড?
ক. নাইট্রিক এসিড খ. এসিটিক এসিড
গ. সালফিউরিক এসিড ঘ. হাইড্রোক্লোরিক এসিড
উত্তর: খ. এসিটিক এসিড
২. কোনটি দুর্বল এসিড?
ক. হাইড্রোক্লোরিক খ. কার্বোনিক
গ. নাইট্রিক ঘ. সালফিউরিক
উত্তর: খ. কার্বোনিক
৩. কোনটি দুর্বল এসিড?
ক. HCl খ. HNO3
গ. H2SO4 ঘ. H2CO3
উত্তর: ঘ. H2CO3
৪. মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি খাবার পর হজমে সহায়তা করে কোনটি?
ক. কার্বোনিক এসিড খ. ল্যাকটিক এসিড
গ. এসিটিক এসিড ঘ. অক্সালিক এসিড
উত্তর: খ. ল্যাকটিক এসিড
৫. কোনটি পানিতে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয়?
ক. হাইড্রোক্লোরিক এসিড খ. সালফিউরিক এসিড
গ. নাইট্রিক এসিড ঘ. এসিটিক এসিড
উত্তর: ঘ. এসিটিক এসিড
৬. কোনটি ফসফরিক এসিডের সংকেত?
ক. H3PO4 খ. H2SO4
গ. NH4NO3 ঘ. (NH4)3 PO4
উত্তর: ক. H3PO4
৭. পিঁপড়ার কামড়ের মাধ্যমে কোন এসিড নিঃসৃত হয়?
ক. সাইট্রিক এসিড খ. অক্সালিক এসিড
গ. এসিটিক এসিড ঘ. ফরমিক এসিড
উত্তর: ঘ. ফরমিক এসিড
৮. কোনটি এসিড?
ক. H2SO4 খ. AgSO4
গ. NaOH ঘ. NH4NO3
উত্তর: ক. H2SO4
৯. নিচের কোন খাদ্যগুলো এসিডিটি তৈরির কারণ–
ক. ব্রকলি, অ্যাসপারাগাস খ. সয়া দুধ, কিশমিশ
গ. পেঁয়াজ, রসুন ঘ. সবুজ চা, বাদাম
উত্তর: গ. পেঁয়াজ, রসুন
১০. কোনটি শক্তিশালী এসিড?
ক. নাইট্রিক খ. অ্যাসিটিক
গ. সাইট্রিক ঘ. অক্সালিক
উত্তর: ক. নাইট্রিক
১১. ভিনেগারের রাসায়নিক সংকেত কোনটি?
ক. HOOC-COOH খ. NaHCO3
গ. CH3COOH ঘ. C6H12O6
উত্তর: গ. CH3COOH
১২. এসিড নীল লিটমাসকে কোন রংয়ে পরিবর্তন করে?
ক. হলুদ খ. কমলা
গ. সবুজ ঘ. লাল
উত্তর: ঘ. লাল
১৩. বোরহানি বা দইয়ের মধ্যে কোন ধরনের এসিড থাকে?
ক. এসিটিক এসিড খ. ল্যাকটিক এসিড
গ. সাইট্রিক এসিড ঘ. অক্সালিক এসিড
উত্তর: খ. ল্যাকটিক এসিড
১৪. কোন পদার্থটি লাল লিটমাসকে নীল করে?
গ. NaCl ঘ. CaCO3
উত্তর: খ. NaOH
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৫. এন্টাসিড ঔষধে নিচের কোন উপাদানটি থাকে?
ক Mg(OH)2 খ. NaHCO3
গ. MgCl2 ঘ. CaSO4
উত্তর: ক Mg(OH)2
১৬. বেকিং সোডার সংকেত কোনটি?
ক. NaCl খ. NH4CI
গ. NaHCO3 ঘ. CaCO3
উত্তর: গ. NaHCO3
১৭. কোন এসিড পিঁপড়ার কামড়ে নিঃসৃত হয়?
ক. ফরমিক খ. এসিটিক
গ. অক্সালিক ঘ. নাইট্রিক
উত্তর: ক. ফরমিক
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
১৮. লাল লিটমাস কাগজ ক্ষারের মধ্যে ডুবালে কোন রং ধারণ করবে?
ক. নীল খ. হলুদ
গ. গোলাপী ঘ. বেগুনী
উত্তর: ক. নীল
১৯. কোনটি জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
ক. Na2SO4 খ. ZnSO4
গ. CuSO4 ঘ. FeSO4
উত্তর: গ. CuSO4
২০. নিচের কোনটি এসিটিক এসিড?
ক. HOOC-COOH খ. H2OSO4
গ. CH3COOH ঘ. H2CO3
উত্তর: গ. CH3COOH
২১. হিস্টামিনকে অকার্যকর করে কোনটি?
ক. ভিনেগার খ. ভিনাইল এসিটেট
গ. এড্রিনালিন ঘ. সুপার বেইজ
উত্তর: ক. ভিনেগার
২২. খাবার লবণের সংকেত কী?
ক. NaCl খ. H2CO3
গ. Na2CO3 ঘ. HCI
উত্তর: ক. NaCl
২৩. নিচের কোনটি এসিড?
ক. NaOH খ. HNO3
গ. NH4NO3 ঘ. (NH4)3 PO4
উত্তর: খ. HNO3
২৪. এন্টাসিড ঔষধে নিচের কোন উপাদানটি থাকে?
ক. Mg(OH)2 খ. NaHCO3
গ. MgCl2 ঘ. CaSO4
উত্তর: ক. Mg(OH)2
২৫. ফেনলথ্যালিন একটি –
ক. অম্ল খ. ক্ষার
গ. লবণ ঘ. নির্দেশক
উত্তর: ঘ. নির্দেশক
২৬. দেহে এলার্জি প্রতিরোধ করে কোনটি?
ক. হিস্টাসিন খ. হিস্টামিন
গ. হেপারিন ঘ. নিউট্রোফিল
উত্তর: খ. হিস্টামিন
২৭. ভিনেগার এর অপর নাম কী?
ক. এসিটিক এসিড খ. ল্যাকটিক এসিড
গ. এসকরবিক এসিড ঘ. সাইট্রিক এসিট
উত্তর: ক. এসিটিক এসিড
২৮. সোডিয়াম স্টিয়ারেট এর সংকেত কোনটি?
ক. CuSO4.5H2O খ. C17H35COOK
গ. C17H35COONa ঘ. Na2CO3.10H2O
উত্তর: গ. C17H35COONa
২৯. তুঁতের সংকেত কোনটি?
ক. Cu(OH)2 খ. CuSO4
গ. CuSO4.10H2O ঘ. CuSO4.5H2O
উত্তর: ঘ. CuSO4.5H2O
৩০. খাবার সোডা কোনটি?
ক. সোডিয়াম বাইকার্বনেট খ. সোডিয়াম কার্বনেট
গ. সোডিয়াম সালফেট ঘ. আর্দ্র সোডিয়াম কার্বনেট
উত্তর: ক. সোডিয়াম বাইকার্বনেট
৩১. বোলতা বা বিজুর হূলে নিচের কোনটি থাকে?
ক. অম্ল খ. ক্ষারক
গ. লবণ ঘ. ফসফরিক এসিড
উত্তর: খ. ক্ষারক
৩২. ‘টেস্টিং সল্ট‘ নামে পরিচিত কোন যৌগটি?
ক. সোডিয়াম কার্বনেট খ. সোডিয়াম ক্লোরাইড
গ. সোডিয়াম গ্লুটামেট ঘ. সোডিয়াম স্টিয়ারেট
উত্তর: গ. সোডিয়াম গ্লুটামেট
৩৩. ভূ–পৃষ্ঠের মোট পানির শতকরা কতভাগ মিঠাপানি?
ক. ১% খ. ২%
গ. ৩% ঘ. ৪%
উত্তর: খ. ২%
৩৪. মৌমাছি হুল ফুটালে ব্যবহার করা হয় নিচের কোনটি?
ক. CaCO3 খ. Na2CO3
গ. ZnCO3 ঘ. K2CO3
উত্তর: গ. ZnCO3
৩৫. নিচের কোন এসিডটি শক্তিশালী?
ক. CH3COOH খ. H2SO4
গ. H2CO3 ঘ. HOOC-COOH
উত্তর: খ. H2SO4
৩৬. NaHCO3 + HCl ® ‘A’ + H2O + CO2 উদ্দীপকের A চিহ্নিত স্থানে কি হওয়া উচিত?
ক. HNO3 খ. NaOH
গ. NaCl ঘ. Na2CO3
উত্তর: গ. NaCl
৩৭. NaOH ও HCI এর বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়?
ক. ক্ষার খ. এসিড
গ. ক্ষারক ঘ. লবণ
উত্তর: ঘ. লবণ
৩৮. নিচের কোনটি টেবিল লবণ?
ক. NH4NO3 খ. NaCl
গ. CaCl2 ঘ. (NH4)2SO4
উত্তর: খ. NaCl
৩৯. অরুনের বয়স ৪ বছর। আর সাবানের pH কত হতে হবে?
ক. 4.5 খ. 5.5
গ. 6.5 ঘ. 8.5
উত্তর: গ. 6.5
৪০. সোডিয়াম গ্লুটামেট কী নামে পরিচিত?
ক. টেস্টিং সল্ট খ. ব্ল্যাক লাইম
গ. বেকিং সোডা ঘ. ক্যালমিন
উত্তর: ক. টেস্টিং সল্ট
৪১. ধমনির রক্তের pH কত?
ক. প্রায় ৬.৬ খ. প্রায় ৭
গ. প্রায় ৭.২ ঘ. প্রায় ৭.৪
উত্তর: ঘ. প্রায় ৭.৪
৪২. কাপড় কাচা সোডার সাথে কত অণু পানি থাকে?
ক. ৫ খ. ১০
গ. ১৫ ঘ. ২০
উত্তর: খ. ১০
৪৩. হিস্টামিন কী ধরনের পদার্থ?
ক. ক্ষারক খ. এসিড
গ. লবণ ঘ. প্রোটিন
উত্তর: ক. ক্ষারক
৪৪. অ্যাসিটিক এসিডের ৫% দ্রবণকে কী বলে?
ক. ব্রাইন খ. ভিনেগার
গ. লাইম ওয়াটার ঘ. নিয়াসিন
উত্তর: খ. ভিনেগার
৪৫. টুথপেস্ট কী ধরনের পদার্থ?
ক. এসিডধর্মী পদার্থ খ. ক্ষারধর্মী পদার্থ
গ. লবণধর্মী পদার্থ ঘ. উভধর্মী পদার্থ
উত্তর: খ. ক্ষারধর্মী পদার্থ
৪৬. কোনটি প্রশমন বিক্রিয়া?
ক. Zn + H2SO4 → ZnSO4 + H2
খ. 2H2 + O2 → 2H2O
গ. 2HCl + Mg(OH)2 → MgCl2 + 2H2O
ঘ. CaCO3 → CaO + CO2
উত্তর: গ. 2HCl + Mg(OH)2 → MgCl2 + 2H2O
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪৭. এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে কোনটি?
ক. পেঁয়াজ খ. রসুন
গ. পেঁপে ঘ. মরিচ
উত্তর: গ. পেঁপে
৪৮. ভিনেগারের রাসায়নিক নাম কী?
ক. সাইট্রিক এসিড খ. টারটারিক এসিড
গ. অ্যাসিটিক এসিড ঘ. সালফিউরিক এসিড
উত্তর: গ. অ্যাসিটিক এসিড
৪৯. খনিজ এসিড হলেও দুর্বল এসিড কোনটি?
ক. H2SO4 খ. HNO3
গ. HCl ঘ. H2CO3
উত্তর: ঘ. H2CO3
৫০. মিথাইল রেড নির্দেশকটি ক্ষারকের মধ্যে কোন রং ধারণ করে?
ক. লাল খ. নীল
উত্তর: ঘ. হলুদ
৫১. দই–এ কোন এসিড বিদ্যমান?
ক. অক্সালিক এসিড খ. অ্যাপামিন
গ. ল্যাকটিক এসিড ঘ. সাইট্রিক এসিড
উত্তর: গ. ল্যাকটিক এসিড
৫২. জিহ্বার লালার pH কত?
ক. 6.6 খ. 7.4
গ. 7 ঘ. 2
উত্তর: ক. 6.6
৫৩. নিচের কোনটি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ?
ক. লবণ খ. বিশুদ্ধ পানি
গ. ক্ষার ঘ. সবগুলো
উত্তর: গ. ক্ষার
৫৪. ক্ষারক লাল লিটমাসকে কী করে?
গ. হলুদ ঘ. বেগুনি
উত্তর: খ. নীল
৫৫. কোন পদার্থ লাল লিটমাসকে নীল করে?
ক. H2SO4 খ. NaOH
গ. NaCl ঘ. CaCO3
উত্তর: খ. NaOH
৫৬. পাকস্থলিতে এসিডিটি বাড়ায় কোনটি?
ক. চা খ. কফি
গ. মদ ঘ. সবগুলো
উত্তর: ঘ. সবগুলো
৫৭. পাউরুটিকে ফুলিয়ে তুলতে দায়ী কে?
ক. CO2 খ. H2O
গ. H2S ঘ. NH3
উত্তর: ক. CO2
৫৮. শক্তিশালী এসিড কোনটি?
ক. H2SO4 খ. CH3COOH
গ. H2CO3 ঘ. HCOOH-COOH
উত্তর: ক. H2SO4
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৫৯. সৌরবিদ্যুৎ তৈরিতে ব্যবহৃত ব্যাটারির অত্যাবশ্যকীয় রাসায়নিক উপাদান কী?
ক. HNO3 খ. (NH4)2 SO4
গ. H2SO4 ঘ. HCI
উত্তর: গ. H2SO4
৬০. ফসফরিক এসিড —
i. একটি দুর্বল এসিড
ii. অ্যামোনিয়াম সালফেট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়
iii. অ্যামোনিয়াম ফসফেট প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৬১. Mg(OH)2 ক্ষার সেবন করা যায় –
i. অতিরিক্ত এসিড হতে পরিত্রাণের জন্য
ii. পাকস্থলির এসিডকে প্রশমিত করার জন্য
iii. লবণের সাথে ক্রিয়ায় এসিড উৎপন্ন করার জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৬২. এসিডিটি বেড়ে যায় –
i. দুশ্চিন্তায়
ii. নিয়মিত খাওয়ায়
iii. ঘুম না হওয়ায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৬৩. NaCI ব্যবহার হয় –
i. পাউরুটিতে
ii. চানাচুরে
iii. আচারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৪. ‘ব্রাইন’ হলো–
i. লবণের দ্রবণ
ii. চিনির দ্রবণ
iii. ফরমালিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. i ও ii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i
৬৫. পাকস্থলীর এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে –
i. কিসমিস, খেজুর
ii. পরিমিত ঘুম, আদা চা
iii. কফি, ভাজা পোড়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. i ও ii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও ii
৬৬. শক্তিশালী এসিড হচ্ছে—
i. H2SO4
ii. HNO3
iii. CH3COOH
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৭. এসিড বৃষ্টি সৃষ্টির জন্য দায়ী—
i. কার্বন ডাই-অক্সাইড
ii. নাইট্রোজেন অক্সাইড
iii. সালফার ডাই-অক্সাইড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৬৮. কাপড় কাচা সাবান তৈরির মূল উপাদান—
i. চর্বি
ii. তেল
iii. সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৯. সার হিসেবে ব্যবহৃত হয় –
i. ফসফরিক এসিড
ii. তুঁতে
iii. অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৭০. এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে–
i. পেঁপে
ii. তরমুজ
iii. পিঁয়াজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৭১. লবণের বৈশিষ্ট্য হলো—
i. এটি নিরপেক্ষ পদার্থ
ii. নীল লিটমাসকে লাল করে
iii. উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৭২. খাবার লবণ ব্যবহৃত হয়—
i. চামড়া ট্যানিং করতে
ii. শিল্প উৎপাদনে প্রভাবক হিসেবে
iii. সোডিয়াম হাইড্রোঅক্সাইডের তড়িৎ বিশ্লেষণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৩. টয়লেট ক্লিনার হারপিক এর উপাদান–
i. NaHCO3
ii. HNO3
iii. H2SO4
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭৪. লবণ জাতীয় পদার্থ হচ্ছে–
i. কপূর।
ii. তুঁতে
iii. সোডা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৭৫ ও ৭৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
বর্তমানে মানুষ মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছে। চাষী রবিনের ১ম পুকুরটির মাছের বৃদ্ধি সন্তোষজনক। আর ২য় পুকুরের মাছগুলো দুর্বল।
৭৫. ১ম পুকুরের পানি–
ক. এসিডিক খ. ক্ষারীয়
গ. নিরপেক্ষ ঘ. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ
উত্তর: গ. নিরপেক্ষ
৭৬. ২য় পুকুরের পানির কোনটি হ্রাস করা উচিৎ?
ক. এসিড খ. ক্যালসিয়াম
গ. ফসফরাস ঘ. ক্ষার
উত্তর: ক. এসিড
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৭ ও ৭৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
P, Q, R তিনটি দ্রবণে লিটমাস পেপার ডুবিয়ে দেখা গেল P দ্রবণে লাল লিটমাস নীল হলো, Q দ্রবণে নীল লিটমাস লাল হলো, R দ্রবণে কোনো পরিবর্তন হলো না।
৭৭.উদ্দীপকের কোন দ্রবণটি পান যোগ্য?
ক. P দ্রবণ খ. R দ্রবণ
গ. Q দ্রবণ ঘ. P, Q ও R দ্রবণ
উত্তর: খ. R দ্রবণ
৭৮. উদ্দীপকের দ্রবণ তিনটি ক্ষেত্রে –
i. P দ্রবণটি হলো ক্ষারীয়
ii. Q দ্রবণটি হলো অম্লীয়
iii. R দ্রবণটির pH>1
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং৭৯ ও ৮০ নং প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
মিসেস জামালী বিয়ে বাড়িতে পোলাউ, কোরমা খাওয়ার পর অসুস্থবোধ করায় তার স্বামী তাকে কিসমিস, পেঁপে, তরমুজ পিচ দিয়ে বানানো ফুট সালাদ খেতে বলেন।
৭৯. মিসেস জামালীকে সালাদ খেতে বলার কারণ, সালাদগুলো–
i. ক্ষারধর্মী
ii. এসিডিটি কমাবে
iii. এসিডকে নিষ্ক্রিয় করবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮০. মিসেস জামালী সমস্যা সমাধানে আরও খেতে পারেন –
i. কফি
ii. আদা চা
iii. সবুজ চা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৮১ ও ৮২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
খাবার লবণ ছাড়াও আমরা দৈনন্দিন জীবনে আরও অনেক ধরনের লবণ ব্যবহার করি। জাতীয় অর্থনীতিতে এগুলির যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৮১. প্রথম লবণটির রাসায়নিক সংকেত কোনটি?
ক. NaCI খ. NaOH
গ. CaCl2 ঘ. CaCO3
উত্তর: ক. NaCI
৮২.পরবর্তী লবণগুলো গুরুত্বপূর্ণ কেন?
ক. জীবাণু বৃদ্ধি করে খ. মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে
গ. সহজে পাওয়া যায় ঘ. এসিড ও অধাতুর বিক্রিয়ায় তৈরি হয়
উত্তর: খ. মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : অন্তু সবসময় মাংস, তৈলাক্ত খাবার ও চকলেট খায়। একদিন অন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর তার বদহজম হয়। তার মা তাকে কোমল পানীয় খাওয়ালে সুস্থ্য হয়ে ওঠে। অন্যদিকে তার বোন শৈলী সয়াদুধ, সয়ামাখন এবং ফলমূল বেশি পছন্দ করে।
ক. আচার সংরক্ষণে কোন এসিড ব্যবহার করা হয়?
খ. দুর্বল এসিড বলতে কী বুঝায়?
গ. অন্তু কীভাবে সুস্থ হলো? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অন্তু ও শৈলীর খাবারের মধ্যে কোনটি এসিডিটির কারণ— বিশ্লেষণ কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আচার সংরক্ষণে ব্যবহার করা হয় এসিটিক এসিড।
খ. যেসব এসিড পানিতে পুরোপুরিভাবে বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে নিয়োজিত হয় অর্থাৎ যতগুলো এসিডের পরমাণু থাকে তার সবগুলো হাইড্রোজেন আয়ন (H+) তৈরি করে না, তাদেরকে দুর্বল এসিড বলা হয়। সকল জৈব এসিড দুর্বল এসিড। যেমন- এসিটিক এসিড, অক্সালিক এসিড ইত্যাদি।
গ. অন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর তার বদহজম হয়। খাবার হজম করার জন্য আমাদের পাকস্থলীতে নির্দিষ্ট মাত্রার হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। এই মাত্রার হেরফের হলে খাবার হজমে অসুবিধা হয়।
কিন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর তার পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় তার মা তাকে কোমল পানীয় পান করালে এতে থাকা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট অতিরিক্ত এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে।
NaHCO3 + HCl = NaCl + H2O + CO2
ফলে অন্তুর পাকস্থলীতে এ্যাসিডিটির পরিমাণ হ্রাস পায়। এভাবে অন্তু সুস্থ হয়ে ওঠে।
ঘ. পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য প্রয়োজন হাইড্রোক্লোরিক এসিড। কোনো কারণে যদি এই এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন ঐ অবস্থাকে পাকস্থলীর এসিডিটি বলা হয়। পাকস্থলীতে নানাবিধ কারণে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যদ্রব্য।
অন্তু ও শৈলীর খাদ্য গ্রহণের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। শৈলী সয়াদুধ, সয়ামাখন ও ফলমূল পছন্দ করে। এগুলো ক্ষারধর্মী এবং পাকস্থলীর এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। অপরদিকে, অন্তু মাংস, তৈলাক্ত খাবার ও চকোলেট খায়। এসব খাবার অতিরিক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা খেলে পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।
তাই বলা যায় অন্তুর গ্রহণকৃত সবগুলো খাবারই পাকস্থলীতে এসিডিটির কারণ।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–২ : তুহিন সাহেবের পেটে প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যা হয়। ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি কিছু পরীক্ষা করাতে বলেন। পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গেল, পাকস্থলিতে pH ১.৬ এবং ধমনীর রক্তে ৭.৫। রিপোর্ট নিয়ে বাসায় ফেরার সময় সে তার দুই মাসের বাচ্চার জন্য একটি লোশন কিনতে চাইলো যার pH ৫.৫। কিন্তু দোকানী তাকে বাচ্চার জন্য অন্যটি নিতে বললেন।
ক. অ্যামোনিয়াম সালফেটের সংকেত লেখ।
খ. ভিনেগারকে কেন দুর্বল এসিড বলা হয়?
গ. দোকানী তাকে লোশনটি নিতে নিষেধ করলেন কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুহিন সাহেবের পাকস্থলিতে এবং রক্তে এসিড ও ক্ষারের পরিমাণ যথাযথ আছে কি? মতামত দাও।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যামোনিয়াম সালফেটের সংকেত হলো – (NH3)2SO4।
খ. সাধারণত জৈব এসিডসমূহ দুর্বল এসিড। যেমন- এসিটিক এসিড (CH3COOH), সাইট্রিক এসিড, অক্সালিক এসিড (HOOC-COOH) প্রভৃতি দুর্বল এসিড। এসিটিক এসিডকে ভিনেগার বলা হয়। এরা জলীয় দ্রবণে পুরোপুরি আয়নিত হয় না। ভিনেগারও পানিতে আংশিক বিয়োজিত হয় বলে একে দুর্বল এসিড বলা হয়।
গ. তুহিন সাহেব তার দুই মাসের বাচ্চার জন্য যে লোশনটি কিনতে চেয়েছিল তার গায়ে pH মান লেখা ছিল ৫.৫। তাই দোকানী বাচ্চার জন্য এ লোশনটির পরিবর্তে অন্য লোশন নিতে বললেন।
কেননা বয়স্কদের ত্বক সাধারণত এসিডিক হয় এবং এর pH ৪-৬ এর মধ্যে থাকে। তবে নবজন্ম নেওয়া শিশুদের ত্বকের pH ৭-এর কাছাকাছি থাকে। তাই বড়দের জন্য যেসব প্রসাধনী ব্যবহৃত হয়, তা শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এতে শিশুদের ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
তাই দোকানী তুহিন সাহেবকে ৫.৫ pH মাত্রার লোশনটি তার বাচ্চার জন্য নিতে নিষেধ করলেন।
ঘ. এসিড ও ক্ষারের মাত্রা সম্পর্কে pH মান থেকে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। কোনো দ্রবণের pH = ৭ হলে, তা নিরপেক্ষ জলীয় দ্রবণ হবে।
কোনো দ্রবণের pH < ৭ হলে, তা অম্লীয় দ্রবণ হবে। কোনো দ্রবণের pH >৭ হলে, তা ক্ষারীয় দ্রবণ হবে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে, তুহিন সাহেবের পাকস্থলীতে pH এর মান ১.৬।
আমরা জানি, পাকস্থলীতে খাদ্য হজমের জন্য দরকারী pH হলো ২। এই মান ০.৫ এর মতো হেরফের হলে তা বদহজম সৃষ্টি করে। তাই বলা যায়, তুহিন সাহেবের পাকস্থলীতে এসিড ও ক্ষারের মাত্রা যথাযথ নেই।
অপরদিকে, তুহিন সাহেবের ধমনীর রক্তে pH মান পাওয়া গেলো ৭.৫, যা আদর্শ মান (৭.৪)-এর কাছাকাছি। তাই বলা যায়, তুহিন সাহেবের ধমনীর রক্তে এসিড ও ক্ষারের মাত্রা যথাযথ আছে।
প্রশ্ন-৩ : (i) HCl + [A] → NaCl + H2O
(i) CaCO3 + [B] → [C] + H2O+ CO2
ক. এসিডিটি কাকে বলে?
খ. খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করা প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. A কোন ধরনের যৌগ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৈনন্দিন জীবনে B ও C যৌগ দুটির মধ্যে কোনটি ব্যবহারের সময় অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় এবং কেন? বিশ্লেষণ করো।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পাকস্থলিতে খাদ্য হজম করার জন্য আমাদের হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। যদি পাকস্থলিতে এ এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তখন ঐ অবস্থাকে এসিডিটি বলে।
খ. খাওয়ার পর ব্রাশ করা দাঁতের যত্নের একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। কেননা খাওয়ার পর দাঁতের বিভিন্ন অংশে খাদ্যকণা আটকে থাকে। উক্ত খাদ্যকণা দাঁতের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাই ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধে ও দাঁতের যত্নে খাওয়ার পর ব্রাশ করা প্রয়োজন।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকের (i) নং সমীকরণটি সম্পূর্ণ করে পাই,
HCI + NaOH → NaCl + H2O
এখানে A যৌগটি NaOH যা একটি ক্ষার। ক্ষারের বৈশিষ্টগুলো হলো—
i. লাল লিটমাসকে নীল করে।
ii. এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে। যেমন,
HCI + NaOH → NaCl + H2O
(এসিড) (ক্ষার) (লবণ) (পানি)
iii. এরা পানিতে দ্রবণীয়।
iv. সাধারণত পানিতে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোক্সিল আয়ন (OH–) উৎপন্ন করে।
যেমন, NaOH → Na+ + OH–
v. স্পর্শে সকল ক্ষার পিচ্ছিল অনুভূত হয়।
ঘ. উদ্দীপকের (ii) নং সমীকরণটি সম্পূর্ণ করে পাই,
CaCO3 + H2SO4 → CaSO4 + H2O + CO2
.:. B যৌগ হলো H2SO4 যা একটি এসিড এবং C যৌগ হলো CaSO4 যা একটি লবণ।
লবণ ব্যবহারে খুব বেশি সতর্কতা প্রয়োজন হয় না, কারণ লবণ একটি নিরপেক্ষ পদার্থ। কিন্তু এসিড ব্যবহারে আমাদের যথেষ্ট সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। নিম্নে এর কারণ বিশ্লেষণ করা হলো:
কিছু কিছু এসিড, বিশেষ করে শক্তিশালী এসিডসমূহ (যেমন— H2SO4, HNO3 , HCl) মানবত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া এসিড আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় ও নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্রেরও ক্ষয়সাধন করে। আমাদের শরীরে কোথাও এসিড লাগলে সেই স্থান পুড়ে যায় ও ছিদ্র হয়ে যায়। একইভাবে ধাতব পদার্থসমূহ এসিডের সংস্পর্শে আসলে তাও ক্ষয় হয়ে যায়।
বিভিন্ন গবেষণার কাজ বা অনেক জরুরী দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদনে আমরা এসিড ব্যবহার করে থাকি। একটু অসতর্কতাতেই এসিড যে কারও বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এমনকি মানুষ মারাও যেতে পারে।
এজন্যই H2SO4 এবং CaSO4 এর মধ্যে H2SO4 ব্যবহারের সময় অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–৪ : দৃশ্যকল্প–১: পলাশ সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে না। কেননা তার বদহজম সৃষ্টি হয়। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে তার পাকস্থলীর pH মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে কম।
দৃশ্যকল্প–২: জমির আলী তার দুই খণ্ড জমিতে কাঙ্ক্ষিত ফসল ফলাতে ব্যর্থ হয়ে কৃষিবিদের শরণাপন্ন হন। কৃষিবিদ উভয় জমির মাটি পরীক্ষা করে বলেন ১ম ও ২য় জমির pH যথাক্রমে ২ এবং ১০।
ক. বোরহানিতে কোন ধরনের এসিড থাকে?
খ. প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে পলাশের শারীরিক সুস্থতায় করণীয় ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কী করলে জমির আলীর উভয় জমিতে কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদনে সহায়ক হবে? তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বোরহানিতে ল্যাকটিক এসিড থাকে ।
খ. প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH এর মান প্রভাব ফেলে। আমাদের ত্বক সাধারণত এসিডিক হয়। আমাদের ত্বকের pH ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে থাকে। তাই বাজারে প্রসাধন সামগ্রীর pH আমাদের ত্বকের উপযোগী pH মানের হয়। যেমন এ ধরনের মুখ ধোয়ার প্রসাধন সামগ্রীর pH মান হলো ৫.৫। কিন্তু এ প্রসাধনী নবজন্ম নেওয়া শিশুর জন্য প্রযোজ্য নয় কারণ নবজন্ম নেওয়া শিশুর ত্বকের pH মান ৭ এর কাছাকাছি থাকে। এটি ব্যবহার করলে শিশুর ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই ত্বক এমনকি স্বাস্থ্যহানি রোধে প্রসাধনী দ্রব্য প্রস্তুতে pH নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ।
গ. পলাশের পাকস্থলীর pH এর মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম। তাই আমরা বলতে পারি পলাশ পাকস্থলীর এসিডিটির সমস্যায় ভুগছে।
পলাশ উপযুক্ত খাদ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এসিডিটির হাত থেকে রেহাই পেতে পারে।
প্রথমত: যেসব খাদ্যদ্রব্য বা পানীয়ের কারণে এসিডিটি হয়, সেগুলো অতিরিক্ত গ্রহণ না করে পলাশকে পরিমিতি পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে সাময়িকভাবে তাকে ঐ খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত: বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্য আছে যেগুলো কিছুটা ক্ষারধর্মী এবং ফলে এসিডিটি নিষ্ক্রিয় করতে পারে। ঐ সব খাদ্য গ্রহণ করে পলাশ এসিডিটির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। এসব খাদ্যের মধ্যে রয়েছে বেশির ভাগ শাকসবজি। যেমন: ব্রকলি, পুঁইশাক, পালংশাক, গাজর, শিম, বিট, লেটুসপাতা, মাশরুম, ভুট্টা, আলু, ফুলকপি ইত্যাদি।
আবার কিছু কিছু খাদ্যশস্য আছে (যেমন: ডাল, মিষ্টি ভুট্টা), যেগুলো এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। দুধজাতীয় খাবারের মধ্যে সয়া মাখন, ছাগলের দুধ থেকে তৈরি করা মাখন, সয়া দুধ, বাদাম দুধ এগুলোও ক্ষারধর্মী, যা এসিডিটি কমাতে পারে। নানা রকমের বাদাম, হারবাল চা, সবুজ চা, আদা চা খেয়েও অতিরিক্ত এসিড কমানো যায়।
পলাশ উপরে উল্লিখিত উপায়ে খাদ্য নির্বাচন করে শারীরিক সুস্থতা লাভ করতে পারে।
ঘ. জমির আলীর ১ম জমির pH মান ২ অর্থাৎ এই জমির মাটি অত্যন্ত অম্লীয়। তার ২য় জমির pH মান ১০ অর্থাৎ এই জমির মাটি অত্যন্ত ক্ষারীয়।
মাটির pH সাধারণত ৪ থেকে ৮ এ ভেতর থাকে। কাঙ্খিত ফসল উৎপাদনে জমির মাটির pH মান একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকা দরকার। জমির মাটির pH মান 7 এর অনেক কম বা অনেক বেশি হলে তা ফসল উৎপাদনের অন্তরায়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাটির pH মানকে ৭ এর কাছাকাছি মানে নিয়ে আসতে হবে।
জমির আলীর ১ম জমির pH মান ২ অর্থাৎ তা বেশি অম্লীয়। এ জমির মাটি থেকে মাটির অনেক দরকারি উপাদান যেমন: ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম | (Mg) ইত্যাদি চলে যায়। ফলে এ মাটির উর্বরতা কমে যায়। জমির আলীকে তার ১ম জমির মাটিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত সার ব্যবহার করে pH মান ৭ এর কাছাকাছি এনে উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
জমির আলীর ২য় জমির মাটির pH মান ১০ অর্থাৎ বেশি ক্ষারীয়। এ জমির মাটি থেকে সহজেই Al3+ (অ্যালুমিনিয়াম আয়ন) গাছের মূলে চলে যায় এবং এতে গাছের মারাত্মক ক্ষতি হয়। জমির আলীকে এ জমির মাটিতে নাইট্রেট ও ফসফেট জাতীয় সার ব্যবহার করে pH মান ৭ এর কাছাকাছি এনে জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
উল্লিখিত উপায়ে pH নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মাটির উর্বরতা ফিরিয়ে এনে জমির আলী কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন করতে পারে।
প্রশ্ন-৫: (i) “X” + H2SO4 → CaSO4 + H2O
ক. pH কাকে বলে?
খ. লেবুতে বিদ্যমান এসিড আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয় কেন?
গ. (i) নং বিক্রিয়াটি কী ধরনের বিক্রিয়া? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “X” ও “Y” এর ধর্ম একই ধরনের কী? বিশ্লেষণ করো।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদমকে pH বলে।
খ. লেবুতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান। সাইট্রিক এসিড এক ধরনের দুর্বল জৈব এসিড। যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং লেবুতে প্রাপ্ত এই এসিড আমাদের খুবই প্রয়োজনীয়। এই এসিড পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। তাই লেবুতে বিদ্যমান এসিড আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়।
গ. উদ্দীপকের (i) নং বিক্রিয়াটি পূর্ণ করে পাই,
CaO+ H2SO4 → CaSO4 + H2O
এটি একটি প্রশমন বিক্রিয়া।
কারণ আমরা জানি যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এসিড ও ক্ষার বা ক্ষারক বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে।
উপরোক্ত বিক্রিয়া থেকে দেখা যায় যে, বহুল ব্যবহৃত ক্ষারক চুন (CaO) এবং সালফিউরিক এসিড (H2SO4) বিক্রিয়া করে যথাক্রমে ক্যালসিয়াম সালফেট (CaSO4) এবং পানি (H2O) উৎপন্ন করে।
অতএব, এটি একটি প্রশমন বিক্রিয়া।
ঘ. উদ্দীপকের (i) নং বিক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করে পাই,
CaO + H2SO4 → CaSO4 + H2O
উদ্দীপকের ‘X’ চিহ্নিত যৌগটি হলো CaO বা চুন। CaO-এর ধর্ম হলো-
- এটি পানিতে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH–) উৎপন্ন করে।
- এটি এসিডের (H2SO4) সাথে বিক্রিয়া করে লবণ (CaSO4) ও পানি (H2O) উৎপন্ন করে।
- এটি লাল লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন করে নীল করে।
(ii) নং বিক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করে পাই,
HCl + NaOH → NaCl + H2O
.:. Y চিহ্নিত যৌগটি হলো NaCl বা টেবিল লবণ। NaCl এর ধর্ম হলো—
- এটি এসিড (HCl) ও ক্ষারকের (NaOH) এর বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।
- এটি লিটমাস কাগজের রং পরিবর্তন করে না।
- প্রায় সব লবণই কঠিন এবং উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক সম্পন্ন।
উপরের আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হয় X ও Y এর ধর্ম একই ধরনের নয়।
প্রশ্ন-৬ :

ক. দুর্বল এসিড কাকে বলে?
খ. বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর কেন?
গ. ‘B’ বিকারে রক্ষিত যৌগের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘A’ বিকারের যৌগের সাথে NaOH এর বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ধাতব যৌগের ব্যবহার মানবজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে— বিশ্লেষণ করো।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দুর্বল এসিড হলো সেসব এসিড যারা পানিতে সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় অর্থাৎ যতগুলো এসিডের অণু থাকে তার সবগুলো হাইড্রোজেন আয়ন (H+) তৈরি করে না।
অথবা, যেসব এসিড পানিতে সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় তাদেরকে দুর্বল এসিড বলে।
খ. পাকস্থলীতে খাদ্য হজমের জন্য আমাদের হাইড্রোক্লোরিক এসিড প্রয়োজন যা পাকস্থলীতেই সৃষ্টি হয়। কোনো কারণে এই এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে পাকস্থলীতে এসিডিটি সৃষ্টি হয়। বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীতে এসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। পাকস্থলীর এসিডিটি অত্যধিক বেড়ে গেলে বিভিন্ন মারাত্মক সমস্যাসহ পাকস্থলীতে ক্ষতও সৃষ্টি হতে পারে। তাই বেশি ভাজা ও তেলযুক্ত খাবার পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর।
গ. ‘B’ বিকারে রক্ষিত যৌগের জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে। অর্থাৎ B বিকারের যৌগটি ক্ষার। ক্ষারের বৈশিষ্টগুলো নিচে দেওয়া হলো—
i. লাল লিটমাসকে নীল করে।
ii. এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
iii. এরা পানিতে দ্রবণীয়।
iv. সাধারণত পানিতে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোক্সিল আয়ন (OH–) উৎপন্ন করে।
v. তেল বা চর্বির সাথে বিক্রিয়া করে সাবান উৎপন্ন হয়।
vi. স্পর্শে সকল ক্ষার পিচ্ছিল অনুভূত হয়।
ঘ. বিকার ‘A’ তে দেখা যাচ্ছে দ্রবণে নীল লিটমাস কাগজ লাল বর্ণ ধারণ করেছে।
অর্থাৎ দ্রবণটি এসিডিক এবং ‘A’ বিকারে রক্ষিত যৌগ হলো এসিড । NaOH একটি ক্ষার। এসিডের সাথে NaOH অর্থাৎ ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ধাতব যৌগ হলো লবণ।
রান্না ঘর থেকে শুরু করে শিল্প কারখানা পর্যন্ত আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে লবণ ব্যবহার করি। আমাদের স্বাদ বাড়িয়ে খাওয়ার উপযোগী করে তোলার জন্য আমরা সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ (NaCl) ব্যবহার করি। তরি-তরকারি ছাড়াও আরো অনেক খাবার যেমন- পাউরুটি, আচার, চানাচুর ইত্যাদিতে খাবার লবণ ব্যবহার করা হয়।
খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য আরেকটি লবণ সোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহার করা হয় যা টেস্টিং সল্ট নামে পরিচিত। কাপড় কাচার সোডা হিসেবে আমরা যে সোডিয়াম কার্বোনেট ব্যবহার করি তাও একটি লবণ। আবার, জীবাণুনাশক হিসেবে আমরা তুঁতে বা ফিটকিরি ব্যবহার করি তা হলো কপারের লবণ। কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত চুনাপাথর, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, অ্যামোনিয়াম ফসফেট, পটাসিয়াম নাইট্রেট সবই লবণ।
শিল্প কারখানায়, চামড়া শিল্পে, মাখন ও পনির তৈরিতে, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের তড়িৎ বিশ্লেষণে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবণ ব্যবহার করা হয়। তুঁতে, মারকিউরিক সালফেট, সিলভার সালফেট প্রভৃতি লবণ প্রভাবকরূপে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া টেক্সটাইল ও রং তৈরির কারখানায়, রাবার প্রস্তুতিতে, ওষুধ কারখানায় লবণের ব্যবহার রয়েছে। ডিটারজেন্ট তৈরিতেও ফিলার হিসেবে লবণ ব্যবহার করা হয়।
তাই উপরের আলোচনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, লবণের ব্যবহার মানবজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-৭ :

ক. টেস্টিং সল্ট কাকে বলে?
খ. পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মাত্রা হেরফের হলে আমাদের খাদ্য হজমে অসুবিধা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের কোন উপাদানটি অপব্যবহার শক্তিযোগ্য অপরাধ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ‘B’ এবং ‘C’ উপাদানের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ‘A’ উপাদান উৎপন্ন হয় সমীকরণসহ বিশ্লেষণ করো।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. টেস্টিং সল্ট হলো সোডিয়াম গ্লুটামেট এর লবণ।
খ. পাকস্থলিতে খাদ্য হজম করার জন্য রয়েছে হাইড্রোক্লোরিক এসিড, যাতে একটি সুনির্দিষ্ট মানের pH বিদ্যমান। খাদ্য হজমের জন্যে দরকারি pH হলো ২। এর পরিমাণ ০.৫ এর মতো হেরফের হলেই পাকস্থলিতে বিদ্যমান হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্য পরিপাক করতে সমস্যা সৃষ্টি করে, ফলে বদহজম দেখা দেয়।
গ. উদ্দীপকের B উপাদানটি অর্থাৎ যার pH এর মান ৭ এর চেয়ে কম তা হলো এসিড।
এসিডের অপব্যবহার মারাত্মক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নিচে এর কারণ ব্যাখ্যা করা হলো :
এসিড ছুড়ে মারার ফলে মানুষের শরীর সম্পূর্ণ ঝলসে যায়। মুখমন্ডলে এসিড ছুড়লে তা বিকৃত আকার ধারণ করে। এ কারণে এসিড সন্ত্রাসের যারা শিকার হন (যারা সাধারণত নারী), তারা বিকৃত চেহারা নিয়ে জনসম্মুখে আসতে চায় না, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন, তাদের বেশির ভাগই স্কুল কলেজের ছাত্রী বা গৃহবধু।
ফলে দেখা যাচ্ছে, যে এসিড-সন্ত্রাসের কারণে অনেক সম্ভাবনাময় ও মেধাবী ছাত্রীদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ করে গৃহবধুরা এর শিকার হলে একটি পরিবারে নেমে আসছে দুর্বিসহ জীবন।
তাই এসিড ছোড়া একটি মারাত্মক অপরাধ। বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এসিড ছোড়ার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
ঘ. উদ্দীপকের B উপাদানের pH মান 7 এর চেয়ে কম অর্থাৎ এটি এসিড এবং C এর pH মান 7 এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ এটি ক্ষার।
B ও C উপাদানের বিক্রিয়ায় pH = 7 মানের বা নিরপেক্ষ মানের উপাদান অর্থাৎ লবণ উৎপন্ন হয়।
B যৌগের একটি উদাহরণ হলো HCl এসিড, এবং C যৌগের একটি উদাহরণ হলো Mg(OH)2 ক্ষার । এদের মধ্যে সংঘটিত বিক্রিয়াটি হলো—
Mg(OH)2 + 2HCl → MgCl2 + 2H2O
বিক্রিয়ায় সৃষ্ট উৎপাদ MgCl2 হলো একটি লবণ যা একটি নিরপেক্ষ উপাদান। এর pH = 7, যা A যৌগের উদাহরণ মাত্র।
অর্থাৎ B ও C উপাদানের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় A উপাদান উৎপন্ন হয়।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন – ৮ : নাবিল ও টুম্পার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা নিম্নরূপ:

ক. বেকিং সোডার সংকেত কী?
খ. টুথপেস্ট কিভাবে দাঁতের ক্ষয়রোধ করে? ব্যাখ্যা করো।
গ. নাবিলের পানীয়টি কিভাবে তাকে সহায়তা করে? ব্যাখ্যা করো ।
ঘ. কার খাদ্য তালিকাটি স্বাস্থ্যসম্মত? বিশ্লেষণ করো।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বেকিং সোডার সংকেত হলো— NaHCO3 ।
খ. টুথপেস্ট মূলত ক্ষারীয় পদার্থ। আমরা খাবার গ্রহণের পর আমাদের মুখে এক ধরনের এসিড তৈরি হয়। এ অবস্থা অনেক সময় ধরে ক্রিয়া করলে দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁত পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি এসিডের ক্রিয়াও প্রশমিত হয়। এতে দাঁত ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
গ. নাবিল প্রতিদিন কোর্মা, পোলাও, বিরিয়ানি, কোকাকোলা ইত্যাদি খায়। এসব খাবার খুব সহজেই হজম হয় না। মাঝে মাঝে এসব খাবার খাওয়ার ফলে বদহজমও হতে পারে।
খাবার হজম করার জন্য আমাদের পাকস্থলীতে নির্দিষ্ট মাত্রার হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। এই মাত্রার হেরফের হলে খাবার হজমে অসুবিধা হয়। কোৰ্মা, পোলাও বিরিয়ানি খাওয়ার পর নাবিলের পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে তার গ্রহণ করা কোকাকোলা তাকে এসিডিটি প্রশমন করার মাধ্যমে হজমে সহায়তা করে। কোমল পানীয় পান করলে এতে থাকা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট অতিরিক্ত এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে।
NaHCO3 + HCI → NaCl + H2O + CO2
ফলে নাবিলের পাকস্থলীতে এসিডিটির পরিমাণ হ্রাস পায়। এভাবে নাবিলের পানীয়টি নাবিলকে সহায়তা করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নাবিলের খাদ্য তালিকা হতে টুম্পার খাদ্য তালিকা অধিক পরিমাণে স্বাস্থ্যসম্মত। নিচে এর কারণসহ বিশ্লেষণ করা হলো-
নাবিলের খাদ্য তালিকায় রয়েছে কোর্মা, পোলাও, বিরিয়ানি, কোকাকোলা ইত্যাদি। এসকল খাদ্য উপাদান উচ্চমাত্রায় শর্করা ও চর্বিযুক্ত এবং এতে ভিটামিন খনিজ এর পরিমাণ অতি নগণ্য। এসকল উচ্চমাত্রার শর্করা ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে নাবিলের শরীরে মেদ জমা হতে পারে ফলে দেহ স্থূলকায় হয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজে অনুপস্থিতির কারণে নাবিলের ভিটামিন ও খনিজের অভাবজনিত রোগ দেখা যেতে পারে।
অপরদিকে, টুম্পার খাদ্য তালিকায় উপস্থিত শাক-সবজি, তাজা ফলমূল, ছোট মাছ ও লেবু চা-এ প্রয়োজনীয় পুষ্টি দ্রব্য, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বিদ্যমান, একে সুষম খাদ্যের সাথে তুলনা করা যায়। যা দেহে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
তাই নাবিলের চেয়ে টুম্পার খাদ্য তালিকা অধিক স্বাস্থ্যসম্মত।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন – ৯ : দীপ্তির হাতে একদিন বিচ্ছু কামড় দিল। যন্ত্রণায় সে চিৎকার করতে লাগলো। এ অবস্থা দেখে তার ছোট ভাই এসে তাড়াতাড়ি টুথপেস্ট লাগিয়ে দিল। অন্যদিকে তার বাবা পেটের ব্যথায় অস্থির। তিনি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস কমলার রস পান করেন।
ক. হিস্টামিন কী?
খ. লবণকে কেন নিরপেক্ষ পদার্থ বলা হয়?
গ. দীপ্তির বাবার পেটের ব্যথার কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. টুথপেস্ট দেওয়ার পর দীপ্তির শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে? বিশ্লেষণ করো।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. হিস্টামিন হলো এক ধরনের ক্ষারকীয় পদার্থ যা বোলতা ও বিচ্ছুর হুলে থাকে।
খ. লবণকে নিরপেক্ষ পদার্থ বলা হয় কারণ লবণ এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। কেননা এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় নিরপেক্ষ পদার্থ ও পানি উৎপন্ন হয়।
যেমন- HCl + NaOH → NaCl + H2O
এখানে এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন নিরপেক্ষ পদার্থ NaCl একটি লবণ। আবার, নিরপেক্ষ পদার্থের pH 7। লবণের pH নির্ণয় করলে দেখা যায় এর pH এর মান 7। এ হিসেবেও লবণকে নিরপেক্ষ পদার্থ বলা হয়।
গ. পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য প্রয়োজন হাইড্রোক্লোরিক এসিড। কোনো কারণে যদি এই এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন ঐ অবস্থাকে বলা হয় পাকস্থলীর এসিডিটি। পাকস্থলীতে নানাবিধ কারণে এসিডের পরিমাণে বেড়ে যেতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যদ্রব্য।
দীপ্তির বাবা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস কমলার রস পান করেন। এই কমলার রস এসিড জাতীয় পানীয়। খালি পেটে কমলার রস পান করার কারণে দীপ্তির বাবার পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এসিডিটি বেড়ে গেলে পেটে ব্যথা অনুভূত হয়।
তাই বলা যায়, দীপ্তির বাবার পাকস্থলীতে এসিডিটির পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে পেটে ব্যথা অনুভূত হয়েছিল।
ঘ. দীপ্তির হাতে বিচ্ছু কামড় দিয়েছে। বিচ্ছুর হুলে থাকে হিস্টামিন নামক ক্ষারক পদার্থ। বিচ্ছু কামড়ালে বা হুল ফুটালে প্রচন্ড জ্বালা করে।
সেক্ষেত্রে জ্বালা নিবারণের জন্য যে মলম ব্যবহার করা হয়, তাতে থাকে ভিনেগার বা বেকিং সোডা, যেগুলো এসিড। এরা ঐ ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে ক্ষারককে নিষ্ক্রিয় করে; ফলে জ্বালা আর থাকে না। কিন্তু টুথপেস্ট হচ্ছে ক্ষারীয় পদার্থ। সাধারণত এর pH ৯ থেকে ১১ এর মধ্যে থাকে। সুতরাং, দীপ্তির ছোট ভাই টুথপেস্ট লাগানোর পর দীপ্তির যন্ত্রণার অবসান হবে না। বরং আরো বেড়ে যেতে পারে।
দীপ্তির ছোট ভাইয়ের উদ্দেশ্য ছিল প্রশমন বিক্রিয়া ঘটানোর মাধ্যমে দীপ্তির যন্ত্রণা কমানোর। এক্ষেত্রে বাসায় সচরাচর পাওয়া যায় এমন কোন অম্লীয় উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন- ভিনেগার, যা কিনা এসিটিক এসিডের ৫% দ্রবণ। সুতরাং, তা হিস্টামিনকে প্রশমিত করে দীপ্তির যন্ত্রণা কমাতে পারবে।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–১০ : নবম শ্রেণিতে পড়ুুয়া সখিনা বিবি বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়ার পথে প্রায় সময়ই সিরাজ মিয়ার বখাটে ছেলেটি তাকে উত্যক্ত করে। সখিনা এর প্রতিবাদ করায় ছেলেটির দ্বারা নিজ বাড়িতে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
ক. ক্যালামিন কী?
খ. এসিড বৃষ্টি কীভাবে তৈরি হয়?
গ. সখিনা বিবি এখন কোন সমস্যার সম্মুখীন হবে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাটির জন্য বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সিরাজ মিয়ার ছেলেটি কোন ধরনের শাস্তি পাওয়ার যোগ্য? যুক্তিসহ তোমার মতামত দাও।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ক্যালামিন হলো জিংক কার্বনেট দ্বারা তৈরি লোশন।
খ. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, বজ্রপাত, গাছপালার পচন ইত্যাদি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা পরে বাতাসের অক্সিজেন ও বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড তৈরি করে। একইভাবে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, বিশেষ করে কয়লা বা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা অন্যান্য শিল্প-কারখানা, যানবাহন, গৃহস্থালির চুলা ইত্যাদি উৎস থেকেও সালফার ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়, যা এসিডে পরিণত হয় এবং বৃষ্টির পানির সাথে মিশে এসিড বৃষ্টি তৈরি করে।
গ. এসিড সন্ত্রাসের শিকার সখিনা বিবি এখন সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার সম্মুখীন হবে। মানুষের শরীরে এসিড ছোড়া হলে শরীরের যেসব স্থান এসিডের সংস্পর্শে আসে সে সকল স্থান সম্পূর্ণ ঝলসে যায়।
সখিনার মুখমন্ডলে এসিড ছুড়বার ফলে তা বিকৃত আকার ধারণ করবে। এ বিকৃত চেহারা নিয়ে সে জনসম্মুখে আসতে চাইবে না। স্কুলে যেতে চাইবে না, ফলে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া এসিড সন্ত্রাসের শিকার হওয়ায় তাকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। এতে পরিবারের অনেক টাকা খরচ হবে।
আবার, চেহারা বিকৃত হওয়ায় আমাদের সমাজে তাদের বিয়ে দেওয়াও অনেক কঠিন হড়ে পড়বে। সে একাকিত্বে ভুগতে থাকবে। এমনকি চারপাশের মানুষের অবহেলার কারণে সে আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে পারে। এককথায় সখিনার জীবন দুর্বিসহ যন্ত্রণায় ভরে যাবে।
ঘ. বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এসিড ছোড়ার কারণে সিরাজ মিয়ার ছেলেটি সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য বলে আমি মনে করি।
এসিড ছোড়া একটি মারাত্মক অপরাধ। বাংলাদেশের অনেক এলাকা আছে, যেখানে কয়েক গ্রাম জুড়ে হয়তো একটি ভাল ছাত্রীর সন্ধান পাওয়া যাবে। যদি ঐ ছাত্রীটি কখনও এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বা বার্ন ইউনিটে বিকৃত চেহারা নিয়ে ছটফট করে, তবে সেটি মূলত ঐ পরিবার, ঐ অঞ্চল বা দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
এসিড সন্ত্রাসের কারণে একদিকে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে পরিবারে নেমে আসে এক দুর্বিসহ জীবন। তাই আমি মনে করি, উক্ত আইন অনুযায়ী এই ঘৃনীত অপরাধের জন্য সিরাজ মিয়ার বখাটে ছেলের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।