জীববিজ্ঞান (Biology)
অষ্টম অধ্যায় – মানব রেচন
Process of Excretion
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
রেচন : যে জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহে বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয়, তাকে রেচন বলে। এ প্রক্রিয়ায় শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জৈব পদার্থগুলো সাধারণত দেহ থেকে বের হয়।
রেচন পদার্থ : জীবের দেহকোষে উৎপন্ন বিপাকজাত দূষিত পদার্থগুলোকে রেচন পদার্থ বলে । মানবদেহের রেচন পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে আসে। মূত্রের প্রায় ৯০ ভাগ উপাদান হচ্ছে পানি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে আছে- ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ ।
মানবদেহের রেচনতন্ত্র : মানবদেহের রেচনতন্ত্র একজোড়া বৃক্ক, একজোড়া ইউরেটার, একটি মূত্রথলি এবং একটি মূত্রনালি নিয়ে গঠিত। মানুষের বৃক্ক দুটি দেখতে শিমের বিচির মতো ।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
বৃক্কের গঠন : বৃক্ক দুটি মানবদেহের উদর গহ্বরের পেছনের অংশে মেরুদন্ডের উভয় পাশে অবস্থিত। বৃক্কের বাইরের দিক উত্তল ও ভেতরের দিক অবতল হয়। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাস বলে। হাইলাসে অবস্থিত গহ্বরকে পেলভিস বলে। এ ভাঁজে বৃক্কীয় শিরা, বৃক্কীয় ধমনি এবং ইউরেটার যুক্ত থাকে।
লম্বচ্ছেদে বৃক্কের দুটি সুস্পষ্ট অংশ দেখা যায়। বাইরের গাঢ় লাল অংশকে কর্টেক্স এবং ভেতরের হালকা লাল অংশকে মেডুলা বলে। বৃক্ক ক্যাপসুল নামক এক আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে । প্রতিটি বৃক্ক অসংখ্য সূক্ষ্ম চুলের মতো কুন্ডলীকৃত নালিকা নিয়ে গঠিত। এদের নেফ্রন বলে ।
নেফ্রন : বৃক্কের ইউরিনিফেরাস নালিকার ক্ষরণকারী অংশ ও কার্যিক একককে নেফ্রন বলে। মানবদেহের প্রতিটি বৃক্কে প্রায় ১০ – ১২ লক্ষ নেফ্রন থাকে। প্রতিটি নেফ্রন একটি রেনাল করপাসল বা মালপিজিয়ান অঙ্গ এবং রেনাল টিউব্যুল নিয়ে গঠিত। প্রতিটি রেনাল করপাসল আবার গ্লোমেরুলাস এবং বোম্যান্স ক্যাপসুল এ দুটি অংশে বিভক্ত। বোম্যান্স ক্যাপসুল গ্লোমেরুলাসকে বেষ্টন করে থাকে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
বৃক্কে পাথর : মানব বৃক্কে উদ্ভূত ছোট আকারের পাথরজাতীয় পদার্থের সৃষ্টিই বৃক্কের পাথর হিসেবে পরিচিত। বৃক্কে পাথর সবারই হতে পারে। তবে দেখা গেছে মেয়েদের থেকে পুরুষের পাথর হবার সম্ভাবনা বেশি। অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, বৃক্কে সংক্রমণ রোগ, কম পানি পান, অতিরিক্ত প্রাণিজ আমিষ যেমন : মাংস ও ডিম খেলে বৃক্কের পাথর হবার কারণ হতে পারে। আধুনিক পদ্ধতিতে ইউটেরোস্কোপিক, আল্ট্রাসনিক লিথট্রিপসি অথবা বৃক্কে অস্ত্রোপচার করে পাথর অপসারণ করা যায়।
বৃক্ক বিকল : নেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর ইত্যাদি কারণে কিডনি ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়। আকস্মিক কিডনি অকেজো বা বিকল হওয়ার কারণগুলো হলো জটিল নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ইত্যাদি।
ডায়ালাইসিস : বৃক্ক সম্পূর্ণ অকেজো বা বিকল হবার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস। সাধারণত ‘ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে রক্ত পরিশোধিত করা হয়।
মূত্রনালি সুস্থ রাখার উপায় : অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, দৈনিক ৮ গ্লাস বা ২ লিটারের কম পানি পান করলে এবং নানা কারণে মূত্রনালির রোগ দেখা দেয়। মূত্রনালি সুস্থ রাখার উপায় হলো-
(i) শিশুদের টনসিল ও খোস-পাঁচড়া থেকে সাবধান হওয়া। শিশুদের টনসিল হলে পরবর্তীতে সেখান থেকে বৃক্কে সংক্রমণ হতে পারে এবং এ থেকে মূত্রনালিতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
(ii) ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
(iii) ডায়রিয়া ও রক্তক্ষরণ ইত্যাদির দ্রুত চিকিৎসা করা।
(iv) ধূমপান ও ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ পরিহার করা।
(v) পরিমিত পানি পান করা।
অসমোরেগুলেশন : রেচন প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হয়ে দেহে পানির সমতা রক্ষা হয়। দেহাভ্যন্তরে রক্ত থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করার মাধ্যমে দেহের পানির সমতা রক্ষা করার বিশেষ পদ্ধতিকে অসমোরেগুলেশন বা পানির সমতা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে । বৃক্ক নেফ্রনের মাধ্যমে পুনঃশোষণ প্রক্রিয়ায় দেহে পানির সমতা বজায় রাখে।
রেচনতন্ত্রের কাজ বা গুরুত্ব : দেহে সংঘটিত বিপাক প্রক্রিয়ায় যেসব নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা দেহ থেকে নিষ্কাশন হওয়া অতি জরুরি। দেহের এসব বর্জ্য শরীরে কোনো কারণে জমতে থাকলে নানা রকম অসুখ দেখা দেয়, পরবর্তীতে যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। নিম্নে রেচনতন্ত্রের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো:
- রেচনতন্ত্র মানবদেহের নাইট্রোজেনঘটিত বিপাকীয় বর্জ্য বের করে দিয়ে দেহকে বিষমুক্ত করে।
- রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ ও বিভিন্ন জৈব পদার্থ দেহ হতে বের হয়ে দেহের শারীরবৃত্তীয় ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
- রেচনতন্ত্রের অন্যতম অঙ্গ হলো বৃক্ক। বৃক্ক মানবদেহে সোডিয়াম, মানবদেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- বৃক্ক পটাসিয়াম, ক্লোরাইড ইত্যাদির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
- বৃক্ক পানি, অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে।
- মানবদেহে যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পাদনের জন্য দেহে পরিমিত পরিমাণে পানি থাকা অপরিহার্য।
- মূলত রেচনতন্ত্রের দ্বারা তৈরিকৃত মূত্রের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি পানি দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
- দেহের পানিসাম্য নিয়ন্ত্রণে অর্থাৎ অসমোরেগুলেশনে বৃক্ক প্রধান ভূমিকা পালন করে।
অনুশীলনীর সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ ডায়ালাইসিস কী?
উত্তর : বৃক্ক সম্পূর্ণ অকেজো বা বিকল হবার পর বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ মালপিজিয়ান অঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর : নেফ্রনের গ্লেমারুলাস ও বোম্যান্স ক্যাপসুল নিয়ে গঠিত অন্য অংশটিকে মালপিজিয়াল অঙ্গ বলে ।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্ৰশ্ন ॥ ৩ ॥ পেলভিস কাকে বলে?
উত্তর : বৃক্কের হাইলাসে অবস্থিত গহ্বরকে পেলভিস বলে ।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ রেচন পদার্থ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : কোষের বিপাক ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকারক নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থগুলোকে রেচন পদার্থ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ বৃক্কে পাথর বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : মানববৃক্কে উদ্ভূত ছোট আকারের পাথর জাতীয় পদার্থ সৃষ্টিই বৃক্কের পাথর হিসেবে পরিচিত।
রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ মূত্রনালি সুস্থ রাখার উপায়গুলো ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, দৈনিক ৮ গ্লাস বা ২ লিটারের কম পানি পান করলে এবং নানা কারণে মূত্রনালির রোগ দেখা দেয়। মূত্রনালি সুস্থ রাখার উপায় হলো-
(i) শিশুদের টনসিল ও খোস-পাঁচড়া থেকে সাবধান হওয়া। শিশুদের টনসিল হলে পরবর্তীতে সেখান থেকে বৃক্কে সংক্রমণ হতে পারে এবং এ থেকে মূত্রনালিতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
(ii) ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
(iii) ডায়রিয়া ও রক্তক্ষরণ ইত্যাদির দ্রুত চিকিৎসা করা।
(iv) ধূমপান ও ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ পরিহার করা।
(v) পরিমিত পানি পান করা।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ মূত্রের পানির পরিমাণ কত?
উত্তর : মূত্র এর প্রায় ৯০ ভাগ উপাদান হলো পানি।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ কিসের উপস্থিতিতে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়?
উত্তর : ইউরোক্রোমের উপস্থিতিতে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ডাই ইউরেটিকস কাকে বলে?
উত্তর : যেসব দ্রব্য মূত্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে বাড়িয়ে দেয় তাদের ডাই- ইউরেটিকস বলে ।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ মানবদেহে কয়টি নেফ্রন থাকে ?
উত্তর : মানবদেহের প্রায় ২০ লক্ষ নেফ্রন থাকে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ অজৈব লবণ রেচনে কোন হরমোন ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : অজৈব লবণ রেচনে প্যারাথাইরয়েড হরমোন ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ মানবদেহে বৃক্কের অবস্থান উল্লেখ কর ।
উত্তর : মানুষের দুটি বৃক্ক দেহের উদর গহ্বরের পেছনের অংশে, মেরুদন্ডের দুইদিকে, বক্ষপিঞ্জরের নিচে, পৃষ্ঠপ্রাচীর সংলগ্ন অবস্থায় অবস্থান করে।
প্রশ্ন ॥ ৭॥ প্রত্যহ কী পরিমাণ তরল মূত্ররূপে একজন স্বাভাবিক মানুষের দেহ থেকে রেচিত হয়?
উত্তর : প্রতিদিন ১.৫ লিটার তরল মূত্ররূপে রেচিত হয় ।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ স্বাভাবিক মূত্রের জৈব উপাদানগুলো কী কী?
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
উত্তর : স্বাভাবিক মূত্রের জৈব উপাদানগুলো হলো- ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ মূত্র বৃদ্ধিকারক কাদের বলে?
উত্তর : যেসব পদার্থ মূত্রের পানি ও তড়িৎ উপাদান বৃদ্ধি করে তাদের মূত্র বৃদ্ধিকারক বলে ।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ লম্বচ্ছেদে বৃক্কের কয়টি স্তর দেখা যায়?
উত্তর : লম্বচ্ছেদে বৃক্কের দুটি স্তর দেখা।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ নেফ্রনের প্রধান অংশগুলো কী কী?
উত্তর : নেফ্রনের প্রধান অংশগুলো হলো- মালপিজিয়ান অঙ্গ বা রেনাল করপাসল, রেনাল টিউব্যুল এবং সংগ্রাহী নালিকা ।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ মালপিজিয়ান অঙ্গ কী কী অংশ নিয়ে গঠিত?
উত্তর : মালপিজিয়ান অঙ্গ বোম্যান্স ক্যাপসুল ও গ্লোমেরুলাস নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ সংগ্রাহী নালিকা কী?
উত্তর : প্রতিটি রেনাল টিউব্যুলের শেষ প্রান্ত অপেক্ষাকৃত যে মোটা নালিকার সাথে যুক্ত থাকে তাকে সংগ্রাহী নালিকা বলে ।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ হেনলি–র লুপ কী?
উত্তর : রেনাল টিউব্যুলের মধ্যাংশ সরু ও ‘U’ আকৃতি বিশিষ্ট। এ অংশটিকে হেনলির লুপ বলা হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ বৃক্ক ছাড়া মানুষের আর কী কী রেচন অঙ্গ আছে?
উত্তর : বৃক্ক ছাড়া মানুষের অন্যান্য রেচন অঙ্গ হলো- ফুসফুস, ত্বক, যকৃৎ, লালাগ্রন্থি ও অস্ত্র ।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ বিলিরুবিন রেচন পদার্থ কোথা থেকে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : যকৃৎ বিলিরুবিন রেচন পদার্থ সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ প্রোটিন বিপাকের ফলে দেহে কোন পদার্থের সৃষ্টি হয়?
উত্তর : প্রোটিন বিপাকের ফলে দেহে নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থ সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ গ্লোমেরুলাস এর কাজ কী?
উত্তর : গ্লোমেরুলাস আল্ট্রা ফিল্টাররূপে কাজ করে এবং রক্তের তরল অংশ অর্থাৎ প্লাজমা থেকে প্রোটিন ও ফ্যাট ব্যতীত অন্যান্য সব উপাদানকে ছেঁকে পৃথক করে।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ মূত্রে কী থাকার কারণে তা অম্লধর্মী হয়?
উত্তর : মূত্রে ইউরিক এসিড, সোডিয়াম ডাইহাইড্রোজেন ফসফেট মিশে থাকায় মূত্র অম্লধর্মী হয় ।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ বৃক্ক বিকল হয় কেন?
উত্তর : নেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর ইত্যাদি কারণে বৃক্ক বা কিডনি ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়। আকস্মিক কিডনি অকেজো বা বিকল হওয়ার কারণগুলো হলো জটিল নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ মূত্রের উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর : মূত্রের প্রধান উপাদান হলো পানি। মূত্রের শতকরা ৯০ ভাগ হলো পানি। এছাড়াও প্রতিদিনের মূত্রে ইউরিয়া প্রায় ৩০ গ্রাম, ইউরিক এসিড ০.৫ গ্রাম, ক্রিয়েটিনিন ১ গ্রাম এবং বিভিন্ন লবণ ২৭ গ্রাম থাকে ।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ অপসারণ ছাড়াও বৃক্ক আমাদের শরীরে আর কী কাজ করে?
উত্তর : ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ অপসারণ ছাড়াও বৃক্ক মানবদেহে-
- সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্লোরাইড ইত্যাদির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পানি, অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে ।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ গ্লোমেরুলার ফিলট্রেট বলতে কী বোঝ?
উত্তর : গ্লোমেরুলাস রক্তের হাইড্রোস্ট্যাটিক চাপে রক্তের প্রোটিন ও রক্তকণিকা ছাড়া অন্য যেসব উপাদান পরিস্রাবণ প্রক্রিয়ায় কৈশিক জালিকার এন্ডোথেলিয়াম ও ভিক্তিঝিল্লি এবং রেনাল ক্যাপস্যুলের এপিথেলিয়াম ভেদ করে ক্যাপস্যুলার স্পেসে জমা হয় তাদেরকে গ্লোমেরুলার ফিলট্রেট বলে ।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ বাম দিকের বৃক্কের তুলনায় ডান দিকের বৃক্ক নিচে অবস্থিত কেন?
উত্তর : সম্ভবত যকৃতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকায় ডান দিকের বৃক্ক বামদিকের বৃক্কের তুলনায় সামান্য নিচে অবস্থান করে।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ কী করণে ক্রিয়েটিনিন বৃদ্ধি পায়?
উত্তর : কিডনি বিকল হলে মূত্র ত্যাগের সমস্যা দেখা যাবে এবং রক্তের ক্রিয়েটিনিন বৃদ্ধি পাবে ।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ কাদের কিডনির সাথে রোগীর কিডনির টিস্যু ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি?
উত্তর : পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও নিকট আত্মীয়ের সাথে রোগীর কিডনির টিস্যু ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ নেফ্রনের বিভিন্ন অংশের কাজ একটি সারণিতে দেখাও ।
উত্তর : নেফ্রনের অভিন্ন অংশের কাজ একটি সারণিতে দেখানো হলো-
নেফ্রনের অংশ | কাজ |
১. গ্লোমেরুলাস | আল্ট্রা ফিল্টারের কাজ করে। |
২. বোম্যান্স ক্যাপসুল | পরিসুত তরল সংগ্রহ করে এবং রেনাল টিউব্যুলে প্রেরণ করে । |
৩. রেনাল টিউব্যুল | |
(i) প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকা | শোষণ |
(ii) হেনলি-র লুপ | শোষণ |
(iii) ডিস্টাল প্যাঁচানো নালিকা | ক্ষরণ |
৪. সংগ্রাহী নালী | পরিসুত ও পুনঃশোষিত তরল সংগ্রহ করে ইউরেটারে প্রেরণ । |
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ নেফ্রনের প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকা ও ডিস্টাল প্যাঁচানো নালিকার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর : নেফ্রনের প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকা ও ডিস্টাল প্যাঁচানো নালিকার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :
পার্থক্যসূচক বৈশিষ্ট্য | প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকা | ডিস্টাল প্যাঁচানো নালিকা |
(i) অবস্থান : | এটি বোম্যান্স ক্যাপসুলের পরবর্তী অংশে অবস্থিত। | হেনলির লুপের পরবর্তী অংশে অবস্থিত । |
(ii) উন্মুক্ত : | এটি হেনলি-র লুপে উন্মুক্ত হয়। | এটি সংগ্রাহী নালিতে উন্মুক্ত হয় । |
(iii) কাৰ্য : | গ্লুকোজ, অ্যামাইনো এসিড ও কিছু খনিজ লবণের পুনঃশোষণ ঘটে। | পুনঃশোষণে সাহায্য করে। |
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ মানুষের কয়েকটি নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থের নাম লেখ।
উত্তর : মানবদেহে কয়েকটি নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থ হলো- ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ বোম্যান্স ক্যাপসুল বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : নেফ্রনের প্রান্তীয় স্ফীত অংশকে বোম্যান্স ক্যাপসুল বলে। বোম্যান্স ক্যাপসুল নেফ্রনের গ্লোমেরুলাসকে বেষ্টন করে থাকে। বোম্যান্স ক্যাপসুল গ্লোমেরুলাসকে ধারণ করে এবং এর কাজ গ্লোমেরুলাস দ্বারা পরিস্রুত তরলকে রেনাল টিউব্যুলে প্রেরণ করা।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ বৃক্কের গ্লোমেরুলাসের পরিস্রুত তরলে গ্লুকোজ থাকে কিন্তু স্বাভাবিক মূত্রে থাকে না কেন?
উত্তর : গ্লুকোজ গ্লোমেরুলাসে পরিস্রুত হয়। কিন্তু তার সবটুকুই রেনাল টিউব্যুলের প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকার দ্বারা পুনঃশোষিত হয়ে রক্তে ফিরে আসে। তাই স্বাভাবিক মূত্রে গ্লুকোজ থাকে না।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ কিডনি রোগের লক্ষণগুলো কী কী?
উত্তর : কিডনি রোগের লক্ষণগুলো হলো- শরীর ফুলে যাওয়া, প্রস্রাবে অ্যালবুমিন (প্রোটিন) যাওয়া, রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবে জ্বালা- যন্ত্রণা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বা প্রস্রাব বন্ধ হওয়া।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ বৃক্কের কাজগুলো কী?
উত্তর : বৃক্কের দুটি কাজ হলো-
(i) মূত্র উৎপাদন ও নিঃসরণ এবং
(ii ) রক্তে পানি ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করা।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ বৃক্কের সাথে নেফ্রনের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বৃক্কের সাথে নেফ্রনের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ I প্রতিটি বৃক্ক অসংখ্য নেফ্রন দ্বারা গঠিত। নেফ্রনে মূত্র উৎপন্ন হয় এবং তা বাইরে বেরিয়ে আসে। এটি বৃক্কের প্রধান কাজ।
সুতরাং বৃক্কের সাথে নেফ্রনের সম্পর্ক হচ্ছে- নেফ্রন বৃক্কের গঠনগত ও কার্যগত একক।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ মলকে রেচন পদার্থ হিসেবে গণ্য করা হয় না কেন?
উত্তর : মল বিপাক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয় না বলে একে রেচন পদার্থ হিসেবে গণ্য করা হয় না । বিপাক-ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষতিকর পদার্থকে রেচন পদার্থ বলে। খাদ্যের যে অংশ অপাচিত থেকে যায়, তা মলে পরিবর্তিত হয়ে দেহ থেকে বর্জিত হয় । সুতরাং মল বর্জ্য পদার্থ, রেচন পদার্থ নয় ।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ প্রাণীদের কয়েকটি নাইট্রোজেনবিহীন রেচন পদার্থের নাম লেখ ।
উত্তর : প্রাণীদের কয়েকটি নাইট্রোজেনবিহীন রেচন পদার্থ হলো— কার্বন ডাইঅক্সাইড, বিলিরুবিন, বিলিভার্ডিন ইত্যাদি।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ইউরিয়া কোথায় তৈরি হয়?
ক. বৃক্কে খ. যকৃতে
গ. দেহ কোষে ঘ. রেনাল ধমনিতে
উত্তর: খ. যকৃতে
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
২. বৃক্কে পাথর হবার সম্ভাবনা কমে–
i. শারীরিক ওজন হ্রাস পেলে
ii. কম পানি পান করলে
iii. স্বল্প পরিমাণ আমিষ খেলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
তান্নি পানি ও অন্যান্য খাদ্য গ্রহণে নিয়মনীতি মেনে চলে না। ইদানিং তার মূত্রের পরিমাণ কম হওয়াসহ কোমরের পিছনে ব্যথা হচ্ছে।
৩. তান্নির দেহে উক্ত উপাদানটি কম হওয়ার কারণ—
i. ঘাম বেশি হওয়া
ii. ফল কম খাওয়া
iii. লবণাক্ত খাদ্য গ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৪. তান্নির শরীরে উক্ত সমস্যার কারণ–
i. শরীরে পানি আসা
ii. মূত্রনালির প্রদাহ
iii. প্রস্রাবে শর্করা যাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫. বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজকে কী বলে?
ক. পেলভিস খ. ইউরেটর
গ. পিরামিড ঘ. হাইলাস
উত্তর: ঘ. হাইলাস
৬. একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন প্রায় কত লিটার মূত্র ত্যাগ করে?
ক. ১.৩ খ. ১.৪
গ. ১.৫ ঘ. ১.৬
উত্তর: গ. ১.৫
৭. একটি রেনাল করপাসল–এ কয়টি অংশ থাকে?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: ক. ২টি
৮. আকস্মিক বৃক্ক বিকল হওয়ার কারণ কী?
ক. নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া
খ. ডায়াবেটিস, আমাশয়
গ. উচ্চ রক্তচাপ, নিউমোনিয়া
ঘ. অ্যাপেন্ডিসাইটিস, নেফ্রাইটিস
উত্তর: ক. নেফ্রাইটিস, ডায়রিয়া
৯. মূত্রের রং হালকা হলুদ হয় কোনটির কারণে?
ক. ইউরিয়া খ. ইউরোক্রোম
গ. ইউরিক এসিড ঘ. ক্রিয়েটেনিন
উত্তর: খ. ইউরোক্রোম
১০. বৃক্কের একক কী?
ক. পেলভিস খ. পিড়কা
গ. নেফ্রন ঘ. হাইলাস
উত্তর: গ. নেফ্রন
১১. কিডনি বিকল হলে রক্তে কোনটির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়?
ক. অ্যামাইনো এসিড খ. ইউরিক এসিড
গ. বিভিন্ন ধরনের লবণ ঘ. ক্রিয়েটিনন
উত্তর: ঘ. ক্রিয়েটিনন
১২. মাছ, মাংস, শিমের বিচি জাতীয় খাদ্যগ্রহণ মূত্রের কোন ধরনের পরিবর্তন হবে?
ক. ক্ষারকতা বৃদ্ধি পাবে
খ. ক্ষারীয় ও অম্লভাব সমান থাকে
গ. অম্লতা বৃদ্ধি পাবে
ঘ. পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে
উত্তর: গ. অম্লতা বৃদ্ধি পাবে
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৩. প্রতিটি বৃক্কে কতটি নেফ্রন থাকে?
ক. ৮ লক্ষ খ. ১০ লক্ষ
গ. ১৫ লক্ষ ঘ. ২০ লক্ষ
উত্তর: খ. ১০ লক্ষ
১৪. কিডনী ডায়ালাইসিস–
i. বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধন
ii. স্বল্পব্যয়ে সম্পন্ন করা যায়
iii. সময় সাপেক্ষ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. i ও ii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. i ও iii
১৫. বৃক্কের রোগের লক্ষণগুলো—
i. শরীর ফুলে যাওয়া
ii. রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব হওয়া
iii. শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
১৬. মানুষের রেচন অঙ্গ কোনটি?
ক. যকৃৎ খ. বৃক্ক
গ. নেফ্রন ঘ. ইউরেটার
উত্তর: খ. বৃক্ক
১৭. বিপাকের ফলে দেহে কী সৃষ্টি হয়?
ক. বর্জ্য পদার্থ খ. গ্লুকোজ
গ. মূত্ৰ ঘ. প্রোটিন
উত্তর: ক. বর্জ্য পদার্থ
১৮. মানবদেহে বৃক্কের সংখ্যা কয়টি?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৩টি ঘ. ৪টি
উত্তর: খ. ২টি
১৯. বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থগুলো নিষ্কাশিত হয় কোন প্রক্রিয়ায়?
ক. শ্বসন খ. রেচন
গ. সংবহন ঘ. নিঃসরণ
উত্তর: খ. রেচন
২০. মানবদেহের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয় কোন তন্ত্রের মাধ্যমে?
ক. পরিপাকতন্ত্র খ. শ্বসনতন্ত্র
গ. রেচনতন্ত্র ঘ. পৌষ্টিকতন্ত্র
উত্তর: গ. রেচনতন্ত্র
২১. রেচন পদার্থ বলতে কোনটিকে বোঝায়?
ক. আমিষ খ. ইউরিক এসিড
গ. গ্লিসারল ঘ. হিসটোন
উত্তর: খ. ইউরিক এসিড
২২. মূত্রে পানির পরিমাণ কত ভাগ?
ক. প্রায় ৭২ ভাগ খ. প্রায় ৮৬ ভাগ
গ. প্রায় ৯০ ভাগ ঘ. প্রায় ৯২ ভাগ
উত্তর: গ. প্রায় ৯০ ভাগ
২৩. কোনটির কারণে মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়?
ক. ইউরিয়া খ. হিমোগ্লোবিন
গ. ক্রিয়েটিনিন ঘ. ইউরোক্রোম
উত্তর: ঘ. ইউরোক্রোম
২৪. কোন জাতীয় খাদ্যের কারণে মূত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায়?
ক. প্রোটিন খ. লিপিড
গ. ভিটামিন ঘ. কার্বোহাইড্রেট
উত্তর: ক. প্রোটিন
২৫. কোন জাতীয় খাদ্য গ্রহণে সাধারণত ক্ষারীয় মূত্র তৈরি হয়?
ক. ফলমূল খ. মাছ-মাংস
গ. ডিম-দুধ ঘ. ঘি-পনির
উত্তর: ক. ফলমূল
২৬. রেচনের মাধ্যমে দেহ থেকে বের হয়ে যায়—
i. অতিরিক্ত পানি
ii. অতিরিক্ত লবণ
iii. ইউরিয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
২৭. স্বাভাবিক অবস্থায় মূত্রে পানি ছাড়াও থাকে-
i. আমিষ
ii. ইউরিক এসিড
iii. ক্রিয়েটিনিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
চিত্রের আলোকে নিচের ২৮ ও ২৯নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

২৮. a চিহ্নিত অঙ্গাণুটির নাম কী?
ক. বৃক্ক খ. ডর্সাল অ্যাওর্টা
গ. রেনাল শিরা ঘ. ইউরেটার
উত্তর: ঘ. ইউরেটার
২৯. b চিহ্নিত অংশ দুটিতে মোট নেফ্রনের সংখ্যা-
ক. ১০ লক্ষ খ. ২০ লক্ষ
গ. ৩০ লক্ষ ঘ. ৪০ লক্ষ
উত্তর: খ. ২০ লক্ষ
৩০. গ্লোমেরুলাস কোন অঙ্গে থাকে?
ক. বৃক্ক খ. যকৃৎ
গ. অগ্ন্যাশয় ঘ. লালাগ্রন্থি
উত্তর: ক. বৃক্ক
৩১. মানবদেহের বৃক্ক দেখতে কেমন?
ক. গোলাকার খ. ডিম্বাকার
গ. মটর বীজের মতো ঘ. শিমের বিচির মতো
উত্তর: ঘ. শিমের বিচির মতো
৩২. বৃক্কে অবস্থিত গহ্বরকে কী বলে?
ক. পিড়কা খ. সাইনাস
গ. পেলভিস ঘ. হাইলাস
উত্তর: গ. পেলভিস
৩৩. রেচনতন্ত্রের প্রধান কাজ কী?
ক. বর্জ্য পদার্থগুলো নিষ্কাশিত করা
খ. রক্ত সরবরাহ করা
গ. শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করা
ঘ. বিভিন্ন এসিড দেহে প্রবেশ করানো
উত্তর: ক. বর্জ্য পদার্থগুলো নিষ্কাশিত করা
৩৪. মূত্র কোন ধরনের পদার্থ?
ক. জৈবিক পদার্থ খ. তরল পদার্থ
গ. রেচন পদার্থ ঘ. স্বচ্ছ পদার্থ
উত্তর: গ. রেচন পদার্থ
৩৫. মানবদেহে অ্যামাইনো এসিড প্রয়োজন কেন?
ক. মূত্র তৈরি করতে
খ. আমিষ তৈরির জন্য
গ. ইউরিক এসিড তৈরির জন্য
ঘ. রেচন প্রক্রিয়ার জন্য
উত্তর: খ. আমিষ তৈরির জন্য
৩৬. দেহের প্রয়োজনের অতিরিক্ত কী সংরক্ষণ করা হয় না?
ক. আমিষ খ. মূত্র
উত্তর: ঘ. অ্যামাইনো এসিড
৩৭. বৃক্ক থেকে কোন নালির মাধ্যমে মূত্র মূত্রাশয়ে বাহিত হয়?
ক. ইউরেটার খ. ইউটেরাস
গ. মূত্রনালি ঘ. রেচন নালি
উত্তর: ক. ইউরেটার
৩৮. বৃক্কের কোন অংশে ইউরেটার বের হয়?
ক. পিড়কা খ. মেডুলা
গ. হাইলাস ঘ. পেলভিস
উত্তর: গ. হাইলাস
৩৯. মানবদেহে ইউরেটারের সংখ্যা কয়টি?
ক. একটি খ. দুটি
গ. তিনটি ঘ. চারটি
উত্তর: খ. দুটি
৪০. বৃক্ক থেকে উৎপন্ন ইউরেটারের স্ফীত ঊর্ধ্ব অংশের নাম কী?
ক. হাইলাস খ. সাইনাস
গ. পেলভিস ঘ. কর্টেক্স
উত্তর: গ. পেলভিস
৪১. বৃক্কের গঠনগত ও কার্যগত এককের নাম কী ?
ক. নেফ্রিডিয়া খ. নেফ্রন
গ. রেচন করপাসল ঘ. নেফ্রোস্টোম
উত্তর: খ. নেফ্রন
৪২. বৃক্কের ভেতরের অংশকে কী বলে?
ক. কর্টেক্স খ. মেডুলা
গ. ইউরেটার ঘ. বৃক্কীয় নালিকা
উত্তর: খ. মেডুলা
৪৩. নেফ্রনের যে অংশ ছাঁকনির মতো কাজ করে, সেটির নাম কী?
ক. বোম্যান্স ক্যাপসুল খ. গ্লোমেরুলাস
গ. রক্ত জালক ঘ. হেনলির লুপ
উত্তর: খ. গ্লোমেরুলাস
৪৪. প্রতিটি রেনাল টিউব্যুল কয়টি অংশে বিভক্ত?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: খ. ৩টি
৪৫. হেনলির লুপ কোথায় থাকে?
ক. ফুসফুসে খ. যকৃতে
গ. নেফ্রনে ঘ. মস্তিষ্কে
উত্তর: গ. নেফ্রনে
৪৬. নিচের কোন উপাদানটি গ্লোমেরুলাসে পরিস্রুত হয় না?
ক. গ্লূকোজ খ. পানি
গ. খনিজ লবণ ঘ. প্রোটিন
উত্তর: ঘ. প্রোটিন
৪৭. কোন রোগে মূত্রে বিলিরুবিন পাওয়া যায়?
ক. জন্ডিস খ. ডায়াবেটিস
গ. নেফ্রাইটিস ঘ. উচ্চ রক্তচাপ
উত্তর: ক. জন্ডিস
৪৮. হেনলির লুপের প্রধান কাজ কী?
ক. সোডিয়াম শোষণ খ. পানিশোষণ
গ. শর্করা শোষণ ঘ. আয়ন ক্ষরণ
উত্তর: খ. পানিশোষণ
৪৯. বৃক্ক থেকে যে নালির মাধ্যমে মূত্র মূত্রাশয়ে বাহিত হয়–
i. মূত্রনালি
ii. ইউরেটার
iii. সংগ্রাহী নালি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. ii ও iii
৫০. রেচন প্রক্রিয়ায় অপসারিত হয়–
i. ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থসমূহ
ii. অপ্রয়োজনীয় বস্তুসমূহ
iii. বিপাকীয় বর্জ্য পদার্থসমূহ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. i ও iii
৫১. মালপিজিয়ান অঙ্গ যা নিয়ে গঠিত, তা হলো–
i. গ্লোমেরুলাস
ii. অ্যাফারেন্ট আর্টারিওল
iii. বোম্যান্স ক্যাপসুল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫২. একজন সুস্থ মানুষের মূত্রে থাকে–
i. ইউরিক এসিড
ii. ক্রিয়েটিনিন
iii. পাথর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫৩. প্রতিটি বৃক্কের সূক্ষ্ম নালিকাগুলো—
i. ইউরিনিফেরাস নালিকা
ii. নেফ্রন
iii. সংগ্রাহী নালিকা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৪. রক্তের তারল্য বেড়ে গেলে ঘটে—
i. রক্তে O2 এর আধিক্য
ii. কোষের ক্ষতি
iii. রক্তসংবহনে ব্যর্থতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৫৫.

৫৬. অংশের মত কাজ করে নিচের কোনটি?
ক. ইফারেন্ট ধমনী খ. বোম্যান্স ক্যাপসুল
গ. গ্লোমেরুলাস ঘ. অ্যাফারেন্ট ধমনী
উত্তর: গ. গ্লোমেরুলাস
৫৭. কোনটি অম্লীয় মূত্র তৈরি করে?
ক. কুমড়া খ. শিমের বীচি
গ. বেগুন ঘ. পুঁই শাক
উত্তর: খ. শিমের বীচি
৫৮. বৃক্কের পাথর অপসারণ পদ্ধতি হচ্ছে–
ক. আল্ট্রাসনোগ্রাফ খ. অ্যানজিওপ্লাস্টি
গ. ইউটেরোস্কোপিক ঘ. বাইপাস সার্জারী
উত্তর: গ. ইউটেরোস্কোপিক
উত্তর: গ. পাট
৫৯. অম্লীয় মূত্র সৃষ্টি হয় কোনটি খেলে?
ক. আলু খ. গুড়
গ. তিল ঘ. ডাল
উত্তর: ঘ. ডাল
৬০. বৃক্কের তন্তুময় আবরণবেষ্টিত অংশকে বলে–
ক. কর্টেক্স খ. মেডুলা
উত্তর: ঘ. ক্যাপসুল
৬১. বৃক্কে ছাঁকনির কাজ করে কোনটি?
ক. বোম্যান্স ক্যাপসুল খ. গ্লোমেরুলাস
গ. রেনাল করপাসল ঘ. রেনাল টিউব্যুল
উত্তর: খ. গ্লোমেরুলাস
৬২. রক্ত পরিশোধিত করার জন্য ডায়ালাইসিস মেশিনে কোন অংশ থেকে রক্ত প্রবাহিত হয়?
ক. হাতের ধমনি খ. বৃক্কের ধমনি
গ. হাতের শিরা ঘ. বৃক্কের শিরা
উত্তর: ক. হাতের ধমনি
৬৩. কোন জাতীয় খাদ্য গ্রহণে মূত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায়?
ক. গোলআলু খ. কলমি শাক
গ. বাঁধা কপি ঘ. মসুর ডাল
উত্তর: ঘ. মসুর ডাল
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬৪. দেহের পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্তের ক্ষেত্রে কী ঘটে?
ক. বেশি তরল হয়ে যায়
খ. নাইট্রোজেনের ঘাটতি হবে
গ. কণিকা নষ্ট হয়ে যায়
ঘ. অক্সিজেনের আধিক্য ঘটবে
উত্তর: ক. বেশি তরল হয়ে যায়
৬৫. নিচের কোনটি সরাসরি পেলভিসে উন্মুক্ত হয়?
ক. হাইলাস খ. পিড়কা
গ. ইউরেটার ঘ. ক্যাপসুল
উত্তর: খ. পিড়কা
৬৬. কোনটি গ্রহণের ফলে মূত্রের অম্লতা বৃদ্ধি পায়?
ক. জাম খ. সবজি
গ. চিনি ঘ. মাছ
উত্তর: ঘ. মাছ
৬৭. কোনটি প্রসারিত হয়ে পিড়কা গঠন করে?
ক. ক্যাপসুল খ. পেলভিস
গ. রেনাল পিরামিড ঘ. কর্টেক্স
উত্তর: গ. রেনাল পিরামিড
৬৮. কোনটি খেলে ক্ষারীয় মূত্র তৈরি হয়?
ক. জাম খ. ডাল
গ. চিনাবাদাম ঘ. শিমের বিচি
উত্তর: ক. জাম
৬৯. নিচের কোনটির জন্য মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়?
গ. অ্যামোনিয়া ঘ. ইউরোক্রোম
উত্তর: ঘ. ইউরোক্রোম
৭০. মেডুলায় সাধারণত কয়টি রেনাল পিরামিড থাকে?
ক. ৮-১২ খ. ১০-১৪
গ. ১৬-২০ ঘ. ২২-২৬
উত্তর: ক. ৮-১২
৭১. বৃক্ক হঠাৎ বিকল হয়ে যায়—
i. জটিল নেফ্রাইটিসের কারণে
ii. উচ্চ রক্তচাপের কারণে
iii. ডায়রিয়ার কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৭২. রেনাল টিউবলের অংশগুলো হলো—
i. গোড়াদেশীয় প্যাচানো নালিকা
ii. হেনলির লুপ
iii. প্রান্তীয় প্যাচানো নালিকা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৩. বৃক্কের পাথর অপসারণের আধুনিক পদ্ধতি–
i. ইউরেটেরোস্কোপিক পদ্ধতি
ii. আল্ট্রাসনিক লিখট্রিপসি পদ্ধতি
iii. অস্ত্রোপচার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৪. বৃক্কে পাথর হতে পারে –
i. দেহের ওজন বাড়লে
ii. পানি কম পান করলে
iii. প্রাণিজ আমিষ বেশি গ্রহণ করলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৫. মানব বৃক্কের বৈশিষ্ট্য হলো–
i. বাম বৃক্কটি ডান বৃক্কের তুলনায় একটু উপরে অবস্থিত
ii. প্লূরায় আবৃত থাকে
iii. বাদামী রঙের ও শিম বীজ আকৃতির
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. i ও iii
নিচের চিত্রটি লক্ষ করো এবং ৭৬ ও ৭৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭৬. চিত্রের কোন অংশটি ক্যাপসুলের ভেতর ঢুকে কৈশিক নালিকা সৃষ্টি করে?
ক. W খ. X
গ. Y ঘ. Z
উত্তর: গ. Y
৭৭. W ও Z উভয়েই–
i. রেনাল করপাসল তৈরি করে
ii. একগুচ্ছ কৈশিক জালিকা দিয়ে তৈরি
iii. রক্তকে পরিস্রত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
উদ্দীপকের আলোকে ৭৮ ও ৭৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
তুলি তার জীববিজ্ঞান বই পড়ে জানতে পারল মানবদেহে শিমের বিচি আকৃতির এবং লালচে রং এর এক বিশেষ ধরনের অঙ্গ রয়েছে ।
৭৮. উক্ত অঙ্গ কোন কাজটি করে?
ক. হরমোন নিঃসরণ খ. মূত্র উৎপাদন
গ. CO2 নিষ্কাশন ঘ. গ্লুকোজ সঞ্চয়
উত্তর: খ. মূত্র উৎপাদন
৭৯. উক্ত অঙ্গটি হঠাৎ বিকল হওয়ার কারণ—
i. ডায়রিয়া
ii. ডায়াবেটিস
iii. অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
নিচের চিত্রটি দেখো এবং ৮০-৮২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮০. চিত্রের P চিহ্নিত অংশের নাম কী?
ক. প্রক্সিমাল প্যাঁচানো নালিকা
খ. ডিস্টাল প্যাচানো নালিকা
গ. বোম্যান্স ক্যাপসুল
ঘ. গ্লোমেরুলাস
উত্তর: ঘ. গ্লোমেরুলাস
৮১. চিত্রের P ও W চিহ্নিত অংশকে একত্রে কী বলে?
ক. বোম্যান্স ক্যাপসুল
খ. রেনাল করপাসল
গ. সংগ্রাহক নালিকা
ঘ. অ্যাফারেন্ট অ্যার্টারিওল
উত্তর: খ. রেনাল করপাসল
৮২. X, Y ও Z চিহ্নিত অংশকে একত্রে কী বলে?
ক. রেনাল টিউব্যুল খ. রেনাল করপাসল
গ. রেনাল সিস্টেম ঘ. রেনাল ক্যাপসুল
উত্তর: ক. রেনাল টিউব্যুল
চিত্রের আলোকে নিচের ৮৩ ও ৮৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮৩. A চিহ্নিত অঙ্গে একক কোনটি?
ক. নিউরন খ. নেফ্রন
গ. সংগ্রাহী নালিকা ঘ. বৃক্ক
উত্তর: খ. নেফ্রন
৮৪. B-তে যে পদার্থটি জমা থাকে তার উপাদান–
i. পানি
ii. হিমোগ্লোবিন
iii. ইউরোক্রোম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৮৫. কিডনি সংযোজন বা প্রতিস্থাপনের জন্য আবশ্যকীয় শর্ত কোনটি?
ক. নিকট আত্মীয় খ. টিস্যু ম্যাচ
গ. রক্তের আত্মীয় ঘ. রক্তগ্রুপ ম্যাচ
উত্তর: খ. টিস্যু ম্যাচ
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: নিচের চিত্র লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মেডুলা কী?
খ. গ্লোমেরুলাস বলতে কী বুঝায়?
গ. চিত্র-A কে ছাঁকনির সাথে তুলনা করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর
ঘ. চিত্র-A বিকল হলে কীভাবে এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মতামত দাও ৷
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মানববৃক্কের ক্যাপসুলের ভেতরের অংশকে মেডুলা বলে ।
খ. বৃক্কের নেফ্রনের মালপিজিয়ান অঙ্গের বোম্যান্স ক্যাপসুল দ্বারা পরিবেষ্টিত রক্তজালককে গ্লোমেরুলাস বলে। রেনাল ধমনি থেকে সৃষ্ট অ্যাফারেন্ট আর্টারিওল ক্যাপসুলের ভেতর ঢুকে প্রায় ৫০টি কৈশিকনালিকা তৈরি করে। এগুলো আবার বিভক্ত হয়ে সূক্ষ্ম রক্তজালিকার সৃষ্টি করে গ্লোমেরুলাস গঠন করে।
গ. উদ্দীপকের চিত্র A হলো মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ বৃক্ক । এটি মানবদেহের রক্তকে ছেঁকে নাইট্রোজেন জাতীয় বর্জ্যপদার্থ অপসারণ করে বলে একে ছাঁকনির সাথে তুলনা করা হয়।
মানুষের শরীরে বিভিন্ন বিপাক ক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্য পদার্থ রক্তে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। এ পদার্থগুলো যেমন : ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন প্রভৃতি শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই দেহ থেকে দ্রুত নিষ্কাশিত করতে হয়।
বৃক্কস্থিত নেফ্রন একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে মূত্রের মাধ্যমে এই দূষিত পদার্থগুলোকে দেহ থেকে নিষ্কাশন করে। নেফ্রনের একটি প্রধান অংশ গ্লোমেরুলাস। এসব পদার্থ রক্তের সাথে বৃক্কের গ্লোমেরুলাসে আসে। এটি ছাঁকনির মতো কাজ করে রক্ত থেকে পরিস্রুত তরল উৎপন্ন করে। গ্লোমেরুলাস থেকে রক্তের বর্জ্য পদার্থগুলো বৃক্কের রেনাল টিউব্যুলের মাধ্যমে বৃক্কের পেলভিসে চলে আসে। এখানে মূত্র হিসাবে সাময়িকভাবে জমা থাকে। কিন্তু রক্তের প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন : রক্তকণিকা, প্লাজমা প্রোটিন রক্তনালীতে থেকে যায়।
এভাবে বৃক্ক ছাঁকনির মতো কাজ করে মানবদেহ থেকে ক্ষতিকর নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থগুলোকে অপসারণ করে। এজন্যই বৃক্ককে ছাঁকনির সাথে তুলনা করা হয়।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র-A একটি বৃক্কের লম্বচ্ছেদ। বৃক্ক বিকল হলে একে প্রতিরোধ করা যায়- ডায়ালাইসিস ও বৃক্ক প্রতিস্থাপন করে ।
ডায়ালাইসিস : বৈজ্ঞানিক উপায়ে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস। সাধারণত ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে ধমনি থেকে টিউবের মধ্য দিয়ে রক্ত ডায়ালাইসিস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করে রক্ত পরিশোধিত করা হয়। এর প্রাচীর আংশিক বৈষম্যভেদ্য হওয়ায় ইউরিয়া, ইউরিক এসিড ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে। পরিশোধিত রক্ত রোগীর দেহের শিরার মধ্য দিয়ে দেহের ভেতর পুনরায় প্রবেশ করে। বিকল বৃক্কের বিকল্প হিসেবে এভাবে ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ বাইরে নিষ্কাশিত করা হয়। তবে এটি একটি ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।
প্রতিস্থাপন : যখন কোনো ব্যক্তির কিডনি বিকল বা অকেজো হয়ে পড়ে তখন কোনো সুস্থ ব্যক্তির কিডনি তার দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়। তখন তাকে কিডনি সংযোজন বলে। কিডনি সংযোজন দু’ভাবে করা যায়- কোনো নিকট আত্মীয়ের কিডনি একজন কিডনি রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করে এটি করা যায়। তবে নিকট আত্মীয় বলতে বাবা, মা, ভাইবোন, মামা, খালা বোঝায়। আবার মৃতব্যক্তির কিডনি নিয়ে রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়। মৃতব্যক্তি বলতে ‘ব্রেন ডেথ’ বোঝায়।
এছাড়া মরণোত্তর বৃক্ক দানের দ্বারাও বিকল বৃক্কের রোগীকে বাঁচানো যায়।
প্রশ্ন–২: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. রেচন পদার্থ কী?
খ. অসমোরেগুলেশন বলতে কী বুঝায়?
গ. রক্ত পরিশোধনে “Y” এর কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “X” ও “Y” এর কার্যক্রম সাদৃশ্যপূর্ণ যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর ।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীবের দেহকোষে উৎপন্ন বিপাকজাত দূষিত পদার্থগুলোকে রেচন পদার্থ বলে ।
খ. রেচন প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হয়ে দেহে পানির সমতা রক্ষা হয়। দেহাভ্যন্তরে রক্ত থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করার মাধ্যমে দেহের পানির সমতা রক্ষা করার বিশেষ পদ্ধতিকে অসমোরেগুলেশন বা পানির সমতা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে । বৃক্ক নেফ্রনের মাধ্যমে পুনঃশোষণ প্রক্রিয়ায় দেহে পানির সমতা বজায় রাখে।
গ. উদ্দীপকের Y হচ্ছে বৃক্কের নেফ্রনের অংশ যার নাম বোম্যান্স ক্যাপসুল। প্রতিটি নেফ্রন একটি রেনাল করপাসল এবং রেনাল টিউব্যুল নিয়ে গঠিত। প্রতিটি রেনাল করপাসল গ্লোমেরুলাস এবং বোম্যান্স ক্যাপসুল এ দুটি অংশে বিভক্ত।
চিত্রের Y হচ্ছে বোম্যান্স ক্যাপসুল। এটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট পেয়ালার মতো প্রসারিত একটি অংশ। এর ভেতরের অংশটি একগুচ্ছ কৈশিক জালিকা দিয়ে তৈরি যার নাম— গ্লোমেরুলাস। রেনাল ধমনির একটি শাখা ক্যাপসুলের মধ্যে প্রবেশ করে সূক্ষ্ম রক্ত জালিকার সৃষ্টি করে অ্যাকারেন্ট আর্টারিওল সৃষ্টি করে। এগুলো আবার বিভক্ত হয়ে সূক্ষ্ম রক্ত জালিকার সৃষ্টি করে। এসব জালিকার কৈশিক নালিকাগুলো মিলিত হয়ে ইফারেন্ট অ্যার্টারিও উৎপন্ন করে এবং ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে আসে।
বোম্যান্স ক্যাপসুলের গ্লোমেরুলাস অংশ ছাঁকনির মতো কাজ করে রক্ত থেকে পরিসুত তরল উৎপন্ন করে। এ তরল পরবর্তীতে ক্যাপসুলের অঙ্গীয় দেশ থেকে উৎপন্ন সংগ্রাহী নালি থেকে রেনাল টিউব্যুলে চলে যায়। এখানে পরিস্রুত তরলের পুনঃ শোষণ ঘটে। এভাবে রক্তের পরিশোধন ঘটে।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র দুটির মধ্যে Y হলো নেফ্রনের অংশ বোম্যান্স ক্যাপসুল এবং X হলো ডায়ালাইসিস মেশিনের ডায়ালাইসিস টিউব নিয়ে গঠিত ডায়ালাইজার অংশ।
মানবদেহের রেচন পদার্থগুলো বৃক্ক দেহ থেকে অপসারণ করে। বৃক্কের নেফ্রনের গ্লোমেরুলাস ও বোম্যান্স ক্যাপসুল এ কাজটি করে। গ্লোমেরুলাস একগুচ্ছ কৈশিক রক্ত জালিকা দিয়ে গঠিত এবং একে ধারণ করে দ্বিস্তরবিশিষ্ট পেয়ালার মতো প্রসারিত অংশ বোম্যান্স ক্যাপসুল। গ্লোমেরুলাস ছাঁকনির মতো কাজ করে রক্ত থেকে পরিস্রুত তরল উৎপন্ন করে রক্তকে পরিশোধন করে।
কোনো কারণে বৃক্ক বিকল বা অকেজো হয়ে গেলে রক্ত পরিশোধিত করা হয় ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে। এটি একটি কৃত্রিম বৃক্ক এবং বৃক্কের মতো একই নীতি অনুসরণ করে। এখানে ডায়ালাইজারটি বৃক্কের বোম্যান্স ক্যাপসুলের মতো কাজ করে। ধমনি থেকে টিউবের মধ্য দিয়ে রক্ত ডায়ালাইজারের ডায়ালাইসিস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করানো হয়। এর প্রাচীর আংশিক বৈষম্যভেদ্য হওয়ায় রক্তের যাবতীয় রেচন পদার্থ বাইরে ডায়ালাইসিস ফ্লুয়েডের মধ্যে বেরিয়ে আসে। পরিশোধিত রক্ত রোগীর দেহের শিরার মধ্য দিয়ে পুনরায় দেহের মধ্যে প্রবেশ করে। এখানে ডায়ালাইজারের টিউবটি বোম্যান্স ক্যাপসুলের গ্লোমেরুলাসের অ্যাফারেন্ট এবং ইফারেন্ট আর্টারিওল এর মতো কাজ করে রক্তকে পরিশোধিত করে।
সুতরাং উপরের বিশ্লেষণমূলক আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে উদ্দীপকের X ও Y এর কার্যক্রম সাদৃশ্যপূর্ণ।
প্রশ্ন–৩: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের কারণে হান্নান সাহেবের কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। তাকে সুস্থ রাখতে মেশিনের সাহায্যে তার রক্ত পরিশোধন করতে হয়।
ক. নেফ্রন কী?
খ. হেনলির লুপ বলতে কী বোঝায়?
গ. হান্নান সাহেবকে সুস্থ রাখার গৃহীত পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. উক্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে সুস্থ জীবনযাপন অসম্ভব— যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বৃক্কের ইউরিনিফেরাস নালিকার ক্ষরণকারী অংশ ও কার্যিক একক হলো নেফ্রন ।
খ. নেফ্রনের বোম্যান্স ক্যাপসুলের অঙ্কীয় দেশ থেকে সংগ্রাহী নালি পর্যন্ত বিস্তৃত চওড়া নালিকাটিকে রেনাল টিউব্যুল বলে। প্রতিটি রেনাল টিউব্যুল ৩টি অংশে বিভক্ত। তিনটি অংশের মধ্যে সম্মুখ ও পশ্চাৎ প্যাচানো নালিকার মাঝে U আকৃতিবিশিষ্ট অংশই হেনলির লুপ। মূলত শোষণ করাই এর প্রধান কাজ।
গ. হান্নান সাহেবকে সুস্থ রাখার গৃহীত পদ্ধতিটি হলো ডায়ালাইসিস।
বৃক্ক সম্পূর্ণ অকেজো বা বিকল হবার পর সাধারণত ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে রক্ত পরিশোধিত করা হয়। এ মেশিনটির ডায়ালাইসিস টিউবটির এক প্রান্ত রোগীর হাতের কব্জির ধমনির সাথে ও অন্য প্রাপ্ত ঐ হাতের কব্জির শিরার সাথে সংযোজন করা হয়। ধমনি থেকে টিউবের মধ্য দিয়ে রক্ত ডায়ালাইসিস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করানো হয়। এর প্রাচীর আংশিক বৈষম্যভেদ্য হওয়ায় ইউরিয়া, ইউরিক এসিড ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে।
পরিশোধিত রক্ত রোগীর দেহের শিরার মধ্য দিয়ে দেহের ভেতর পুনরায় প্রবেশ করে। উল্লেখ্য ডায়ালাইসিস টিউবটি এমন একটি আলোর মধ্যে ডুবানো থাকে যার গঠন রক্তের প্লাজমার অনরূপ হয় ।
উপরিউক্ত পদ্ধতিতে ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে হান্নান সাহেবকে সুস্থ রাখা হয় ।
ঘ. উক্ত প্রক্রিয়া হলো রেচন যা বিঘ্নিত হলে নানা রকম শারীরিক জটিলতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে ।
রেচন মানব দেহের একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দেহে বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থগুলো মূত্রে নিষ্কাশিত হয়। মূত্রে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি নাইট্রোজেনঘটিত পদার্থ থাকে । এগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। রেচনের মাধ্যমে দেহের এসব বিষাক্ত ও ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয়ে দেহের শারীরবৃত্তীয় ভারসাম্য রক্ষিত হয়। দেহের এ সকল বর্জ্য পদার্থগুলো শরীরে কোনো কারণে জমতে থাকলে নানারকম অসুখ দেখা দেয়, পরবর্তীতে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
তাছাড়া মানবদেহের যাবতীয় শারীরবৃত্তিক কাজ সম্পাদনের জন্য দেহে পরিমিত পানি থাকা অপরিহার্য। দেহের পানিসাম্য নিয়ন্ত্রণে রেচন প্রক্রিয়া প্রধান ভূমিকা পালন করে। এতে পুনঃশোষণ প্রক্রিয়ায় দেহে পানির সমতা বজায় থাকে। দেহে পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্ত বেশি তরল হয়ে যায়। এতে দেহে নানারকম জটিলতা সৃষ্টি হয়। যেমন : রক্তে নাইট্রোজেন আধিক্য, কোষের ক্ষতি, রক্ত সংবহনে ব্যর্থতা ইতাদি।
কাজেই রেচন প্রক্রিয়া থেমে গেলে মূত্র ত্যাগের সমস্যা দেখা যাবে ও রক্তে কিয়োটিনিন বৃদ্ধি পাবে যা ব্যক্তির শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় উক্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে সুস্থ জীবনযাপন অসম্ভব।
প্রশ্ন –৪ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. উদ্দীপকের B-চিত্রটি কিসের?
খ. রেচন পদার্থ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের চিত্র-A এর কাজ বর্ণনা কর।
ঘ. চিত্র-A বিকল হলে কীভাবে এর প্রতিকার করা যায়? বর্ণনা কর ।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. উদ্দীপকের B চিত্রটি মানব রেচনতন্ত্রের।
খ. রেচন পদার্থ বলতে মূলত নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থকে বোঝায়। মানবদেহের রেচন পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে আসে। মূত্রের প্রায় ৯০% হলো পানি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ। এগুলো সবই রেচন পদার্থ।
গ. উদ্দীপকের চিত্রে A অংশটি হলো বৃক্ক মূত্রে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি নাইট্রোজেনঘটিত পদার্থ থাকে। এগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব প্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে অপসারণে বৃক্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বৃক্কস্থিত নেফ্রন একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে মূত্র উৎপন্ন করে। উৎপন্ন মূত্র সংগ্রাহী নালিকার মাধ্যমে বৃক্কের পেলভিসে পৌঁছায় এবং পেলভিস থেকে ইউরেটারের ফানেল আকৃতির প্রশস্ত অংশ বেয়ে ইউরেটারে প্রবেশ করে। ইউরেটার থেকে মূত্র মূত্রথলিতে আসে এবং সাময়িকভাবে জমা থাকে। মূত্রথলি মূত্র দ্বারা পরিপূর্ণ হলে মূত্র ত্যাগের ইচ্ছা জাগে এবং মূত্রথলির নিচের দিকে অবস্থিত ছিদ্রপথে দেহের বাইরে বেরিয়ে আসে।
এভাবে বৃক্ক মানবদেহ থেকে ক্ষতিকর নাইট্রোজেন জাতীয় বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে।
ঘ. চিত্র-A হলো বৃক্ক। এটি মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ। এ অঙ্গটি বিকল হলে ডায়ালাইসিস ও বৃক্ক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিকার করা যায়।
বৃক্ক বিকল হলে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস। সাধারণত ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে রক্ত পরিশোধিত করা হয়। এ মেশিনটির ডায়াললাইসিস টিউবটির এক প্রান্ত রোগীর হাতে কবজির ধমনির সাথে ও অন্য প্রান্ত ঐ হাতের কবজির শিরার সাথে সংযোজন করা হয়। ধমনি থেকে টিউবের মধ্য দিয়ে রক্ত ডায়ালাইসিস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করানো হয়। এর প্রাচীর আংশিক বৈষম্যভেদ্য হওয়ায় ইউরিয়া, ইউরিক এসিড ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে । পরিশোধিত রক্ত রোগীর দেহের শিরার মধ্য দিয়ে দেহের ভেতর পুনরায় প্রবেশ করে।
অপরদিকে কোনো ব্যক্তির বৃক্ক বিকল হয়ে পড়লে তখন কোনো সুস্থ ব্যক্তির বৃক্ক তার দেহে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়াটি দুভাবে করা যায়। নিকট আত্মীয়ের অথবা মৃত ব্যক্তির কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপন করে এটি করা যেতে পারে। নিকট আত্মীয় বলতে বাবা, মা, ভাই বোন, মামা, খালা এদের বোঝায়। মরণোত্তর চক্ষুদানের মতো বৃক্ক দানের মাধ্যমে বৃক্ক বিকল রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।
অতএব, উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় চিত্রে A বা বৃক্ক বিকল হলে তার প্রতিকার করা যায়।
প্রশ্ন–৫ : নিচের চিত্রটি লক্ষ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মানব বৃক্কের আকৃতি কেমন?
খ. রেচন পদার্থ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের অঙ্গটির এককের চিহ্নিত চিত্র আঁক।
ঘ. উদ্দীপকের অঙ্গটি বিকল হলে তুমি কী ধরনের প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আলোচনা কর ।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মানব বৃক্কের আকৃতি শিম বিচির মতো।
খ. রেচন পদার্থ বলতে মূলত নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থকে বোঝায়। মানবদেহের রেচন পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে আসে। মূত্রের প্রায় ৯০% হলো পানি। অন্যান্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ ।
গ. উদ্দীপকের অঙ্গটি হলো মানবদেহের রেচন অঙ্গ বৃক্ক যার একক হলো নেফ্রন । নেফ্রনের চিহ্নিত চিত্র নিম্নরূপ :

ঘ. উদ্দীপকের অঙ্গটি হলো বৃক্ক। এটি মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ। এ অঙ্গটি বিকল হলে ডায়ালাইসিস ও বৃক্ক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিকার করা যায়।
বৃক্ক বিকল হলে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রক্ত পরিশোধিত করার নাম ডায়ালাইসিস। সাধারণত ডায়ালাইসিস মেশিনের সাহায্যে রক্ত পরিশোধিত করা হয়। এ মেশিনটির ডায়াললাইসিস টিউবটির এক প্রান্ত রোগীর হাতে কবজির ধমনির সাথে ও অন্য প্রান্ত ঐ হাতের কবজির শিরার সাথে সংযোজন করা হয়। ধমনি থেকে টিউবের মধ্য দিয়ে রক্ত ডায়ালাইসিস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করানো হয়। এর প্রাচীর আংশিক বৈষম্যভেদ্য হওয়ায় ইউরিয়া, ইউরিক এসিড ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে । পরিশোধিত রক্ত রোগীর দেহের শিরার মধ্য দিয়ে দেহের ভেতর পুনরায় প্রবেশ করে।
অপরদিকে কোনো ব্যক্তির বৃক্ক বিকল হয়ে পড়লে তখন কোনো সুস্থ ব্যক্তির বৃক্ক তার দেহে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়াটি দুভাবে করা যায়। নিকট আত্মীয়ের অথবা মৃত ব্যক্তির কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপন করে এটি করা যেতে পারে। নিকট আত্মীয় বলতে বাবা, মা, ভাই বোন, মামা, খালা এদের বোঝায়। মরণোত্তর চক্ষুদানের মতো বৃক্ক দানের মাধ্যমে বৃক্ক বিকল রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।
অতএব, উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় উদ্দীপকের অঙ্গটি বা বৃক্ক বিকল হলে তার প্রতিকার করা যায়।
প্রশ্ন–৬ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রেচন মানবদেহের অন্যতম জৈবিক প্রক্রিয়া। বিশেষ অঙ্গের মাধ্যমে দেহে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়ার নামই রেচন। এই বিশেষ অঙ্গের ক্ষুদ্রতম এককের মাধ্যমে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পৃথক হয়ে যায়।
ক. মূত্রের কতভাগ পানি?
খ. ধীরে ধীরে কিডনি বিকল হবার কারণগুলো কী কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিশেষ অঙ্গটির গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. উক্ত অঙ্গটি সম্পূর্ণরূপে বিকল হলে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ত বলে তুমি মনে কর।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মূত্রের প্রায় ৯০ ভাগ পানি ।
খ. ধীরে ধীরে কিডনি বিকল হবার কারণ-
i. নেফ্রাইটিস
ii. ডায়াবেটিস
iii. উচ্চ রক্তচাপ
iv. কিডনিতে পাথর
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিশেষ অঙ্গটি হলো মানবদেহের রেচন অঙ্গ প্রতিটি বৃক্কের আকৃতি শিমবিচির মতো এবং এর রং লালচে হয়। বৃক্কের বাইরের দিক উত্তল ও ভেতরের দিক অবতল। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাস বলে। পেলভিস থেকে দুটি ইউরেটার বের হয়ে মূত্রাশয়ে প্রবেশ করে। হাইলাসের ভেতর থেকে ইউরেটার ও রেনাল শিরা বের হয় এবং রেনাল ধমনি বৃক্কে প্রবেশ করে। ইউরেটারের ফানেল আকৃতির প্রশস্ত অংশকে পেলভিস বলে। বৃক্ক সম্পূর্ণরূপে এক ধরনের তন্তুময় আবরণ দিয়ে বেষ্টিত থাকে। একে ক্যাপসুল বলে। ক্যাপসুল সংলগ্ন অংশকে কর্টেক্স এবং ভেতরের অংশকে মেডুলা বলে। উভয় অঞ্চলই যোজক কলা এবং রক্তবাহী নালি দিয়ে গঠিত। মেডুলায় সাধারণত ৮-১২টি রেনাল পিরামিড থাকে। এদের অগ্রভাগ প্রসারিত হয়ে পিড়কা গঠন করে। এসব পিড়কা সরাসরি পেলভিসে উন্মুক্ত হয়। প্রতিটি বৃক্কে বিশেষ এক ধরনের নালিকা থাকে যাকে ইউরিনিফেরাস নালিকা বলে। প্রতিটি ইউরিনিফেরাস নালিকা দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত, যথা : নেফ্রন ও সংগ্রাহী নালিকা। নেফ্রন মূত্র তৈরি করে আর সংগ্রাহী লকা রেনাল পেলভিসে মূত্র বহন করে ।
ঘ. সৃজনশীল ৫(ঘ) নং প্রশ্নের উত্তর দেখ।
প্রশ্ন– ৭: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রহমতের প্রস্রাব কম হয়। মাঝে মাঝে জ্বর হয়। হঠাৎ তার কোমরে ব্যথা এবং প্রস্রাব বন্ধ হয় গেল। ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার কয়েকটি পরীক্ষা করার পর বলল তার বৃক্কে পাথর হয়েছে ।
ক. বৃক্ক কী?
খ. মানবদেহে বৃক্কের অবস্থান উল্লেখ কর।
গ. রহমতের বৃক্কে পাথর হওয়ার কারণগুলো কী কী হতে পারে? আলোচনা কর।
ঘ. রহমত সাহেব একটু সতর্ক হলেই সমস্যাটি এড়াতে পারতেন— বিশ্লেষণ কর।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বৃক্ক হলো মেরুদন্ডী প্রাণীর রেচন অঙ্গ ।
খ. মানবদেহের উদর গহ্বরের পেছনের অংশ এবং মেরুদন্ডের দুই দিকে বক্ষপিঞ্জরের নিচে পৃষ্ঠ প্রাচীর সংলগ্ন অবস্থায় দুটি বৃক্ক অবস্থান করে।
গ. রহমতের বৃক্কে নানা কারণে স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটার কারণে পাথর সৃষ্টি হতে পারে।
সাধারণত মেয়েদের থেকে পুরুষের বৃক্কে পাথর হবার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, বৃক্কের সংক্রমণ রোগ, কম পানি পান করলে, অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন যেমন : মাংস ও ডিম খেলে বৃক্কে পাথর হবার সম্ভাবনা থাকে।
রহমত সম্ভবত পানি কম খেত কিন্তু প্রাণিজ প্রোটিন বেশি খেত এটি তার বৃক্কে পাথর সৃষ্টি হওয়ার একটি কারণ হতে পারে। এছাড়া সে যদি রেচনতন্ত্রের কোনো ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুগে থাকে তাহলেও তার বৃক্কে পাথর হতে পারে।
ঘ. বৃক্কের পাথর যদি ইউরেটারে চলে আসে তাহলে প্রচুর পানি ও ওষুধ সেবনে পাথর অপসারণ করা যায়। এছাড়া বৃক্ক থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে ইউটেরোস্কোপিক আল্ট্রাসনিক লিথট্রিপসি দ্বারা অস্ত্রো পাচার করে পাথর অপসারণ করা যায়।
রহমত সাহেবের বৃক্কে পাথর হয়েছে। তিনি কিছু বিষয়ে একটু সতর্ক হলেই সমস্যাটি এড়াতে পারতেন । যেমন-
১. বৃক্ককে সজীব ও সতেজ রাখার জন্য পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে যে রেচন পদার্থ মূত্র হিসেবে বের হয় তার ৯০ ভাগই পানি। তিনি যদি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতেন তাহলে এ সমস্যাটি এড়াতে পারতেন।
২. অতিরিক্ত শারীরিক ওজন বৃক্কের পাথর রোগের জন্য দায়ী। তিনি যদি শারীরিক সচেতন রাখতেন এবং শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেন তাহলে এ সমস্যাটি এড়াতে পারতেন।
৩. অতিরিক্ত প্রাণিজ আমিষ যেমন : মাংস, ডিম প্রভৃতি বৃক্কের পাথর রোগের জন্য দায়ী। তিনি এসব খাবার খুব অল্প পরিমাণে গ্রহণ করলে এ সমস্যা এড়াতে পারতেন।
8. পান, সুপারি, জর্দা তথা তামাক জাতীয় পদার্থ বৃক্কের জন্য ক্ষতিকর। এসব পদার্থ গ্রহণ না করলে তিনি এ সমস্যা এড়াতে পারতেন ।
৫. আলোবাতাসযুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত স্থানে বসবাস করে তিনি এ সমস্যা এড়াতে পারতেন।
উপরিউক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, একটু সতর্কতা অবলম্বন করে দৈনন্দিন কার্যক্রম করলেই রহমত সাহেব এ সমস্যাটি অর্থাৎ বৃক্কের পাথর রোগটি এড়াতে পারতেন।