জীববিজ্ঞান (Biology)
সপ্তম অধ্যায়-গ্যাসীয় বিনিময়
Exchange of Gases
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
উদ্ভিদে গ্যাস বিনিময় : উদ্ভিদে সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন এ দুটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাস বিনিময় ঘটে। উদ্ভিদে প্রাণীর মতো শ্বাস নেওয়ার জন্য কোনো বিশেষ অঙ্গ নেই। তবে পাতার স্টোমাটা ও পরিণত কান্ডের বাকলে লেন্টিসেলের মাধ্যমে অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাসের বিনিময় ঘটে। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পরিবেশ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। রাত্রি বেলা এ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। আর দিন-রাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের উৎপাদন চলে। এ কার্বন ডাইঅক্সাইড পাতার স্টোমাটার মাধ্যমে পরিবেশে বের হয়ে যায়।
লেন্টিসেল : উদ্ভিদের পরিণত কান্ডের টিস্যুর অনেক স্থানে ফেটে যাওয়াকে লেন্টিসেল বলে। এ স্থান দিয়ে অনেকসময় গ্যাস বিনিময় হয়।
মানব শ্বসনতন্ত্র : দেহের যে সকল অঙ্গ শ্বসন কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে তাদের সমন্বয়ে যে তন্ত্র গঠিত হয় তাকে মানব শ্বসনতন্ত্র বলে।
শ্বাসকার্য : প্রাণিদেহে যে প্রক্রিয়ার দ্বারা অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাইঅক্সাইড নিষ্কাশিত হয় তাকে শ্বাসকার্য বলে। অক্সিজেন গ্রহণকে বলা হয় শ্বাসগ্রহণ বা প্রশ্বাস আর কার্বন ডাইঅক্সাইড নিষ্কাশনকে বলা হয় শ্বাসত্যাগ বা নিঃশ্বাস।
শ্বসন : যে জৈবিক প্রক্রিয়ায় প্রাণিদেহের খাদ্যবস্তুকে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে জারিত করে মজুদ শক্তিকে ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তর এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড নিষ্কাশন করে তাকে শ্বসন বলে। দেহের ভিতর এরূপ গ্যাসীয় আদান-প্রদান একবার ফুসফুসে এবং পরে দেহের প্রতিটি কোষে পর্যায়ক্রমে সম্পাদিত হয়।
যেমন : C6H12O6 + 6O2 ® 6CO2 + 6H2O + শক্তি (এটিপি)
ফুসফুস : বক্ষগহ্বরে মধ্যচ্ছদার ঠিক উপরে হৃদপিন্ডের দুই দিকে অবস্থিত মোচাকৃতি ও স্পঞ্জ সদৃশ অঙ্গ দুটিকে ফুসফুস বলে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
নাসারন্ধ্র ও নাসাপথ : মুখবিবরের ঠিক উপরে ফাঁপা যে অঙ্গটি তার নাম নাক। নাকের অন্তঃস্থ রন্ধ্রের নাম নাসারন্ধ্র। নাসারন্ধ্রের প্রতি অর্ধাংশে নাসাপথ থাকে।
গলবিল : মুখগহ্বরের পশ্চাতে যে অংশটি দেখা যায় তাকে গলবিল বলে। এর পশ্চাৎভাগের উপরিতলে একটি ছোট জিহ্বার মতো অংশ থাকে, একে আলজিহ্বা বলে।
স্বরযন্ত্র বা ল্যারিংক্স : গলবিল ও শ্বাসনালির মধ্যবর্তী অংশকে স্বরযন্ত্র বা ল্যারিংক্স বলে। স্বরযন্ত্রের দুই ধারে দুটি পেশি থাকে। এগুলোকে স্বররজ্জু বা ভোকালকর্ড বলে। স্বরযন্ত্রের উপরে একটি জিহ্বা আকৃতির ঢাকনা রয়েছে। একে উপজিহ্বা বা E Riglothis বলে।
শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া : স্বরযন্ত্রের পরবর্তী ফাঁপা নালিটিকে শ্বাসনালি বলা হয়। এর প্রাচীর কতগুলো অসম্পূর্ণ বলয়াকার তরুণাস্থি ও পেশি দ্বারা গঠিত। এর অন্তর্গাত্র ঝিল্লি দ্বারা আবৃত।
ব্রঙ্কাস : শ্বাসনালি স্বরযন্ত্রের নিম্নাংশ থেকে ফুসফুসের নিকটবর্তী হয়ে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে বাম ও ডান ফুসফুসে প্রবেশ করা নালির প্রতিটিকে ব্রঙ্কাস বলে।
ব্রঙ্কিওল : ব্রঙ্কাসের শাখা-প্রশাখাকে ব্রঙ্কিওল বলে।
অ্যালভিওলাই : ফুসফুসে ব্রঙ্কিওলের শেষপ্রান্তে রক্তজালকে ঘেরা বুদবুদ আকৃতির বায়ুথলির মতো যে অংশ থাকে তাকে অ্যালভিওলাই বলে।
মধ্যচ্ছদা : বক্ষগহ্বর ও উদরগহ্বর পৃথককারী পেশিবহুল পর্দাকে মধ্যচ্ছদা বলে। এটি দেখতে অনেকটা প্রসারিত ছাতার মতো।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
শ্বাসনালি সংক্রান্ত রোগ : ফুসফুস শ্বসনতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ অঙ্গটি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফুসফুসের সাধারণ রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-
i) অ্যাজমা
ii) নিউমোনিয়া
iii) যক্ষ্মা
iv) ফুসফুসের ক্যান্সার।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥১॥ কোষীয় শ্বসন কাকে বলে?
উত্তর : শ্বসনে দেহকোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায় খাদ্য ও অক্সিজেনের মধ্যে যে জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে শক্তি নির্গত হয় তাকে কোষীয় শ্বসন বলে।
প্রশ্ন ॥ ২॥ প্লূরার কাজ কী?
উত্তর : প্লূরার কাজ হচ্ছে শ্বাসকার্যের সময় ফুসফুসের সাথে বক্ষগাত্রের ঘর্ষণকে প্রতিহত করা।
প্রশ্ন ॥ ৩॥ ব্রঙ্কাইটিস কী?
উত্তর : শ্বাসনালির ভিতরে আবৃত ঝিল্লিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণকে ব্রঙ্কাইটিস বলে। ব্রঙ্কাইটিসের কারণে শ্বসনালির ঝিল্লিগাত্রে প্রদাহ হয়।
প্রশ্ন ॥৪॥ মধ্যচ্ছদার কাজ কী?
উত্তর : মধ্যচ্ছদা প্রশ্বাস গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রশ্বাসের সময় মধ্যচ্ছদা সংকুচিত হয়ে নিচের দিকে নেমে আসে ফলে বক্ষগহ্বরের আয়তন বৃদ্ধি পায়। বক্ষগহ্বরের আয়তন বৃদ্ধির জন্য এ সময় ফুসফুসটিও আয়তনে বাড়ে এবং বাতাস নাসাপথে ফুসফুসে প্রবেশ করে। কারণেই ক্যান্সার হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ নিউমোনিয়া রোগের কারণ ও লক্ষণ কী?
উত্তর : নিউমোনিয়া একটি ফুসফুসের রোগ। এর কারণ ও লক্ষণগুলো হলো-
কারণ : নিউমোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়।
লক্ষণ : কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়। শ্বাস নেওয়ার সময় নাকের ছিদ্র বড় হয়। বেশি জ্বর হয়। কাশির সময় রোগী বুকে ব্যথা অনুভব করে।
প্রশ্ন ॥ ৬॥ শ্বসনের প্রয়োজনীয়তা উলেখ কর।
উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহে শক্তি উৎপাদনের জন্য শ্বসন প্রয়োজন। জীবদেহে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের জৈবনিক প্রক্রিয়ার জন্য শক্তি প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে অক্সিজেন দ্বারা খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি যা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৌরশক্তি থেকে সঞ্চিত হয়, তাকে গতিশক্তি ও তাপ শক্তিকে রূপান্তরিত করাই শ্বসনের মুখ্য উদ্দেশ্য। এই গতিশক্তি ও তাপশক্তির দ্বারা জীব খাদ্য গ্রহণ, চলন, রেচন, বৃদ্ধি, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন করে থাকে। তাই উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য শ্বসনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ উদ্ভিদদেহে শ্বসন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : উদ্ভিদ দেহে শ্বসনকালে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের বিনিময় অপেক্ষাকৃত সরল। উদ্ভিদের কোনো নির্দিষ্ট শ্বসন অঙ্গ নেই। পাতায় পত্ররন্ধ্র, কাণ্ডে লেন্টিসেল এবং অন্তঃকোষ স্থানের মাধ্যমে বায়ু দেহ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ প্রাণিদেহে শ্বসন প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
উত্তর : প্রাণিদেহের শ্বসন বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে নানাভাবে সম্পন্ন হয়। নিম্নশ্রেণির প্রাণিতে প্রধানত ত্বক ও ট্রাকিয়ার মাধ্যমে শ্বসন হয়। উন্নত প্রাণিদের শ্বসনে গ্যাসীয় বিনিময়ের জন্য বিশেষ ধরনের শ্বসন অঙ্গ আছে। যেমন : মাছ ও ব্যাঙাচি ফুলকার সাহায্যে এবং স্থলজ মেরুণ্ডীরা ফুসফুসের সাহায্যে শ্বসনকার্য সম্পন্ন করে।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ নিউমোনিয়ার প্রতিকার ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নিউমোনিয়া হলে অতিদ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর ওষুধ ও পথ্য খাওয়া দরকার। বেশি করে পানি ও তরল পদার্থ (স্যুপ, ফলের রস) পান করতে হবে। রোগীকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো দরকার।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাসের সময় আমাদের বুকের আয়তন বাড়ে এবং কমে কেন?
উত্তর : শ্বাস গ্রহণের সময় মধ্যচ্ছদা ও পিঞ্জরের মাঝের পেশি সংকুচিত হয়। ফলে মধ্যচ্ছদা নিচের দিকে প্রসারিত হয়। এতে বক্ষগহ্বর ও ফুসফুস উভয়ই আয়তনে বেড়ে যায়। ফলে বক্ষের আয়তন বেড়ে যায়। নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় মধ্যচ্ছদা শিথিল হয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। ফলে বক্ষগহ্বর ও ফুসফুস উভয়ই আয়তনে ছোট হয়ে যায়। এর ফলে বক্ষের আয়তন কমে যায়।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড কী কী যৌগ গঠিত হয়ে রক্তে বাহিত হয়?
উত্তর : অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড যে যে যৌগ গঠিত হয়ে রক্তে বাহিত হয় সেগুলো অক্সিজেন – অক্সিহিমোগ্লোবিন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, সোডিয়াম বাইকার্বনেট , KHCO3 রূপে।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ আহার্য দ্রব্যাদি শ্বাসনালিতে ঢোকে না কেন?
উত্তর : সাধারণত স্বরযন্ত্র গলবিলের নিচে ও শ্বাসনালির উপরে অবস্থিত। স্বরযন্ত্রের উপরে একটি জিহ্বা আকৃতির ঢাকনা রয়েছে যা উপজিহ্বা নামে পরিচিত। শ্বাস-প্রশ্বাসের নেওয়ার সময় এটা খোলা থাকে এবং এ পথে বায়ু ফুসফুসে যাতায়াত করে। আহারের সময় এ ঢাকনাটা স্বরযন্ত্রের মুখ ঢেকে দেয়। ফলে আহার্য দ্রব্যাদি শ্বাসনালিতে না ঢুকে সরাসরি খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে। সুতরাং উপজিহ্বার ভূমিকার কারণেই আহার্য দ্রব্যাদি শ্বাসনালিতে ঢুকে না।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ উদ্ভিদের গ্যাসীয় বিনিময়ের অঙ্গ সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : গ্যাসীয় বিনিময়ের জন্য প্রাণীর মতো উদ্ভিদের বিশেষ কোনো অঙ্গ নেই। তবে পত্রের স্টোমাটা ও পরিণত কান্ডের বাকলের লেন্টিসেলের মাধ্যমে অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাসের বিনিময় ঘটে । এছাড়া উদ্ভিদ মূলের মাধ্যমেও কিছু প্রয়োজনীয় গ্যাস মাটি থেকে সংগ্রহ করে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ শ্বসন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে জৈবিক প্রক্রিয়া দেহের খাদ্যবস্তুকে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে জারিত করে মজুদ শক্তিকে ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তর এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড নিষ্কাশন করে তাকে শ্বসন বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ কীভাবে কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রাণী দেহ থেকে বাইরে নির্গত হয়?
উত্তর : জারণ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রথমে কোষ আবরণ ভেদ করে লসিকায় প্রবেশ করে এবং লসিকা থেকে কৈশিকনালিকার প্রাচীর ভেদ করে রক্তরসে প্রবেশ করে। এই কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রধানত বাইকার্বনেটরূপে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে ফুসফুসে আসে, সেখানে কৈশিকনালি ও বায়ুথলি ভেদ করে দেহের বাইরে নির্গত হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয় কী?
উত্তর : হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয়সমূহ নিম্নরূপ :
১. স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা।
২. বায়ুদূষণ, বাসস্থান বা কর্মক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে এমন বস্তুর সংস্পর্শ পরিহার করা।
৩. হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবের জন্য সবসময় সাথে ঔষধ রাখা এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করা।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ ব্রঙ্কাইটিস প্রতিরোধ করতে হলে কী কী করতে হবে?
উত্তর : ব্রঙ্ককাইটিস প্রতিরোধ করতে হলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার :
১. ধূমপান, মদ্যপান ও তামাক সেবনের মতো বদ অভ্যাস ত্যাগ করা।
২. ধূলাবালি ও ধোঁয়াপূর্ণ পরিবেশে কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
৩. শিশু বা বয়স্কদের যেন মাথায় ঠান্ডা না লাগে সেদিকে নজর রাখা।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ বায়ুথলির কাজ উল্লেখ কর।
উত্তর : বায়ুথলির কাজ হলো O2 ও CO2 যুক্ত বায়ুর আদান প্রদান করা। প্রত্যেকটি বায়ুথলি পাতলা এপিথেলিয়াল কোষ দ্বারা গঠিত। এ কোষগুলো কৈশিক জালিকা দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই কোষগুলো বাইরে থেকে অক্সিজেনপূর্ণ বায়ু ও দেহের ভেতর থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইডপূর্ণ বায়ু দেহের ভেতর ও বাইরে প্রবেশ করায়। বায়ুথলি ও কৈশিক জালিকা উভয়ের প্রাচীর এত পাতলা যে, সহজেই এগুলো বায়ু আদান-প্রদান করতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. Epiglottis কোথায় অবস্থিত?
ক. Bronchus খ. Pharynx
গ. Trachea ঘ. Larynx
উত্তর: ঘ. Larynx
২ কোন রোগটি ঋতু পরিবর্তনের সময় বেড়ে যায়?
ক. যক্ষ্মা খ. নিউমোনিয়া
গ. ব্রংকাইটিস ঘ. এ্যাজমা
উত্তর: ঘ. এ্যাজমা
৩. ‘জানু‘-তে কোন অস্থিসন্ধি বিদ্যমান?
ক. কজি সন্ধি খ. বল ও কোটর সন্ধি
গ. নিশ্চল অস্থি সন্ধি ঘ. ঈষৎ সচল অস্থি সন্ধি
উত্তর: ক. কজি সন্ধি
৪. যক্ষ্মার জীবাণুর বৈজ্ঞানির নাম কী?
ক. Mycobacterium tuberculosis
খ. Entamoeba histolytica
গ. Vibrio Cholerae
ঘ. Plasmodium vivax
উত্তর: ক.Mycobacterium tuberculosis
৫. ফুলের রেণুর কারণে কোন রোগটি হতে পারে?
ক. নিউমোনিয়া খ. অ্যাজমা
গ. ব্রংকাইটিস ঘ. যক্ষ্মা
উত্তর: খ. অ্যাজমা
৬. ফুসফুস থেকে অক্সিজেন রক্তে প্রবেশ করে কোন প্রক্রিয়ায়?
ক. ব্যাপন খ. অভিস্রবণ
গ. শোষণ ঘ. ইমবাইবিশন
উত্তর: ক. ব্যাপন
৭. কোনটি শ্বাসনালির রোগ?
ক. ব্রংকাইটিস খ. নিউমোনিয়া।
গ. অ্যাজমা ঘ. যক্ষ্মা
উত্তর: ক. ব্রংকাইটিস
৮. উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ই–
ক. সর্বক্ষণ অক্সিজেন গ্রহণ করে
খ. কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে
গ. শ্বসনতন্ত্রের মাধ্যমে গ্যাসীয় বিনিময় ঘটায়
ঘ. হেটারোট্রপিক
উত্তর: গ. শ্বসনতন্ত্রের মাধ্যমে গ্যাসীয় বিনিময় ঘটায়
৯. মাংসের দোকানে বিক্রেতারা স্পঞ্জের মতো নরম, হালকা লালচে রঙের একটি অঙ্গ ঝুলিয়ে রাখে। এই অঙ্গটির সাথে কোনটি জড়িত?
ক. রেচন প্রক্রিয়া খ. পরিপাক
গ. শ্বাসক্রিয়া ঘ. প্রতিবর্তী ক্রিয়া
উত্তর: গ. শ্বাসক্রিয়া
১০. গলবিলের অংশ কোনটি?
ক. ভোকাল কর্ড খ. উপজিহ্বা
উত্তর: ঘ. আলজিহ্বা
১১. ফুসফুস যে পর্দা দ্বারা আবৃত তার নাম কী?
ক. পেরিকার্ডিয়াম খ. পুরা
গ. পেরিটোনিয়াম ঘ. অ্যালভিওলাস
উত্তর: খ. পুরা
১২. ফুসফুসের বায়ুথলিগুলোকে কী বলে?
ক. ব্রঙ্কাস খ. ব্রঙ্কিওল
গ. অ্যালভিওলাস ঘ. ট্রাকিয়া
উত্তর: গ. অ্যালভিওলাস
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৩. রক্তে CO2 প্রধানত কীরূপে সঞ্চালিত হয়?
ক. বাই কার্বনেট রূপে খ. কার্বমিনো যৌগ রূপে
গ. কার্বনিক এসিড রূপে ঘ. কার্বন ও অক্সিজেন রূপে
উত্তর: ক. বাই কার্বনেট রূপে
১৪. ডান ও বাম ফুসফুস বিভক্ত যথাক্রমে–
ক. দুই ও তিন খণ্ডে খ. তিন ও দুই খণ্ডে
গ. তিন ও চার খণ্ডে ঘ. চার ও তিন খণ্ডে
উত্তর: খ. তিন ও দুই খণ্ডে
১৫. স্বরযন্ত্রের উপর জিহ্বা আকৃতির ঢাকনাটির নাম কী?
ক. Pharynx খ. Larynx
গ. Epiglottis ঘ. Trachea
উত্তর: গ. Epiglottis
১৬. বায়ু গমনের ক্ষেত্রে কোন পর্যায়ক্রমটি সঠিক ?
ক. ব্রংকাস → নাসাগহ্বর → ট্রাকিয়া → স্বরযন্ত্র → গলবিল→অ্যালভিওলাস
খ. অ্যালভিওলাস → ব্রংকাস → ট্রাকিয়া→ স্বরযন্ত্র → গলবিল → নাসাগহ্বর
গ. নাসাগহ্বর → গলবিল → স্বরযন্ত্র → ট্রাকিয়া → ব্রংকাস → অ্যালভিওলাস
ঘ. নাসাগহ্বর → স্বরযন্ত্র → গলবিল → ট্রাকিয়া → ব্রংকাস → অ্যালভিওলাস
উত্তর: গ. নাসাগহ্বর → গলবিল → স্বরযন্ত্র → ট্রাকিয়া → ব্রংকাস → অ্যালভিওলাস
১৭. Micobacterium tuberculosis রোগের জীবাণু?
ক. ব্রংকাইটিস খ. নিউমোনিয়া
গ. অ্যাজমা ঘ. যক্ষ্মা
উত্তর: ঘ. যক্ষ্মা
১৮. ফুসফুসের প্রতিটি বায়ু থলি কী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে?
ক. অসংখ্য শিরা খ. কৈশিক নালিকা
গ. ঐচ্ছিক পেশি ঘ. অসংখ্য ধমনী
উত্তর: খ. কৈশিক নালিকা
১৯. বড় গাছের নিচে রাত্রিবেলা ঘুমালে কোনটি ঘটে?
ক. ব্রংকাইটিস খ. নিউমোনিয়া
গ. শ্বাসকষ্ট ঘ. যক্ষ্মা
উত্তর: গ. শ্বাসকষ্ট
২০. নিকোটিন গ্রহণে কোনটির কার্যকারিতা নষ্ট হয়?
ক. স্নায়ু খ. ফুসফুস
গ. কিডনী ঘ. গলবিল
উত্তর: ক. স্নায়ু
২১. Larynx- এর অবস্থান কোথায়?
ক. নাসাপথে খ. গলবিলের নিচে
গ. গলবিলের উপরে ঘ. খাদ্যনালীর সামনে
উত্তর: খ. গলবিলের নিচে
২২. মানবদেহে কত সময় পর্যন্ত O2 সরবরাহ বন্ধ থাকলে মৃত্যু অনিবার্য?
ক. ৩-৪ মিনিটের বেশি খ. ৪-৫ মিনিটের বেশি
গ. ৫-৬ মিনিটের বেশি ঘ. ৬-৭ মিনিটের বেশি
উত্তর: ক. ৩-৪ মিনিটের বেশি
২৩. ‘টনসিল’ কোনটির অংশ?
ক. শ্বসনতন্ত্র খ. সংবহনতন্ত্র
গ. লসিকাতন্ত্র ঘ. গ্রন্থিতন্ত্র
উত্তর: গ. লসিকাতন্ত্র
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৪. কোন রূপে অধিকাংশ কার্বন ডাই–অক্সাইড পরিবাহিত হয়?
ক. কার্বনিক এসিড খ. কার্বোমিনো
গ. বাইকার্বনেট ঘ. CO2 গ্যাস আকারে
উত্তর: গ. বাইকার্বনেট
২৫. [ O2 ] → [ ফুসফুস ] → [ অ্যালভিওলাস ] → [ ? ] → [ রক্ত ] → [ হৃৎপিণ্ড ]
উদ্দীপকের “?” চিহ্নিত অংশে কোনটি বসবে?
গ. সংযোজন ঘ. বিয়োজন
উত্তর: খ. শিরা
২৬. ফুসফুসীয় শিরা নিচের কোনটিতে রক্ত সরবরাহ করে?
ক. ডান অলিন্দ খ. বাম অলিন্দ
গ. ডান নিলয় ঘ. বাম নিলয়
উত্তর: খ. বাম অলিন্দ
২৭. ফুসফুসের বাইরের আবরণের নাম কী?
ক. সারকোলেমা খ. পেরিকার্ডিয়াম।
গ. প্লূরা ঘ. পেরিটোনিয়াম
উত্তর: গ. প্লূরা
২৮. ভোকাল কর্ড কোথায় থাকে?
ক. গলবিলে খ. ব্রঙ্কাসে
গ. শ্বাসনালিতে ঘ. ফুসফুসে
উত্তর: গ. শ্বাসনালিতে
২৯. নিউমোকক্কাস নিচের কোনটির অর্ন্তভূক্ত?
ক. ব্যাকটেরিয়া খ. প্রোটোজোয়া
গ. ভাইরাস ঘ. ছত্রাক
উত্তর: ক. ব্যাকটেরিয়া
৩০. বায়ুথলি কী দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে?
ক. শিরা খ. অসংখ্য ধমনি
গ. কৈশিক নালিকা ঘ. নমনীয় ঐচ্ছিক পেশি
উত্তর: গ. কৈশিক নালিকা
৩১. ফুসফুসের আবরণকে কী বলে?
ক. এপিকার্ডিয়াম খ. ক্যাপসুল
গ. প্লূরা ঘ. গ্লোমেরুলাস
উত্তর: গ. প্লূরা
৩২. কোন গাছের নিচে রাত্রিবেলা ঘুমালে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে?
ক. জবা খ. ধুতুরা
উত্তর: ঘ. কদম
৩৩. Alveolus কোন তন্ত্রের অংশ–
ক. রক্ত সংবহন খ. ত্বকতন্ত্র
গ. শ্বসনতন্ত্র ঘ. রেচনতন্ত্র
উত্তর: গ. শ্বসনতন্ত্র
৩৪. শ্বসন তন্ত্রের প্রথম ধাপ কোনটি?
ক. নাসিকা খ. শ্বাসনালী
গ. স্বরযন্ত্র ঘ. গলবিল
উত্তর: ক. নাসিকা
৩৫. শ্বসনতন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত অঙ্গের সংখ্যা কতটি?
ক. ৫ খ. ৬
গ. ৭ ঘ. ৮
উত্তর: গ. ৭
৩৬. মুখ গহবরের পশ্চাতে কোন অংশ দৃষ্টিগোচর হয়?
ক. নাসাপথ খ. গলবিল
গ. ফুসফুস ঘ. মধ্যচ্ছদা
উত্তর: খ. গলবিল
৩৭. মধ্যচ্ছদার আকৃতি কিরূপ?
ক. মোচার মতো খ. থলির মতো
গ. ছাতার মতো ঘ. থালার মতো
উত্তর: গ. ছাতার মতো
৩৮. কোন উত্তেজনার দ্বারা শ্বাসকার্য পরিচালিত হয়?
ক. স্নায়ুবিক খ. মধ্যচ্ছদা
গ. গলবিল ঘ. ব্রংকাই
উত্তর: ক. স্নায়ুবিক
৩৯. স্বৱযন্ত্রের উপরে জিহ্বা আকৃতির ঢাকনাটির নাম কী?
ক. আলজিহ্বা খ. উপজিহ্বা
গ. ভোকাল কর্ড ঘ. ব্রংকাস
উত্তর: খ. উপজিহ্বা
৪০. CO2 সমৃদ্ধ রক্ত কোথায় পরিশোধিত হয়?
ক. হৃৎপিন্ডে খ. যকৃতে
গ. ফুসফুসে ঘ. বৃকে
উত্তর: গ. ফুসফুসে
৪১. শ্বসনের সময় অক্সিজেন কোন প্রক্রিয়ায় ফুসফুস থেকে রক্তে প্রবেশ করে?
গ. অভিস্রবণ ঘ. অন্তঃশ্বসন
উত্তর: খ. ব্যাপন
৪২. কোষে খাদ্যের কোন বিক্রিয়ার ফলে CO2 তৈরি হয়?
ক. জারণ খ. বিজারণ
গ. সংযোজন ঘ. প্রতিস্থাপন
উত্তর: ক. জারণ
৪৩. “ফুসফুস ক্যান্সার”-এর লক্ষণ এবং উপসর্গ কোনগুলো?
ক. অ্যাজমা, ঘনঘন জ্বর, ওজন হারানো, ক্ষুধামন্দা, হাড়ের ব্যথা, জন্ডিস
খ. বুকে ব্যথা, ঘাম এবং জ্বর, ওজন কমা, কাশির সাথে রক্ত পড়া
গ. কাশি, উচ্চ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, বুকের ভেতর সাই সাই আওয়াজ হওয়া
ঘ. কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে অসহ্য ব্যথা, শক্ত খাবার না খেতে পারা, থুথু ফেলা
উত্তর: ক. অ্যাজমা, ঘনঘন জ্বর, ওজন হারানো, ক্ষুধামন্দা, হাড়ের ব্যথা, জন্ডিস
৪৪. Mycobacterium-এর মাধ্যমে কোন রোগটি হয়?
ক. ডায়রিয়া খ. যক্ষ্মা
গ. ব্রংকাইটিস ঘ. নিউমোনিয়া
উত্তর: খ. যক্ষ্মা
৪৫. যক্ষ্মার জন্য দায়ী জীবাণুর নাম কী?
ক. E.coli খ. Streptococcus
গ. Mycobacterium ঘ. Pneumococcus
উত্তর: গ. Mycobacterium
৪৬. কোনটি নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী?
ক. ভাইরাস খ. ছত্রাক
গ. ব্যাকটেরিয়া ঘ. ব্রংকাইটিস
উত্তর: গ. ব্যাকটেরিয়া
৪৭. আমাদের দেশে পুরুষদের ক্যান্সারে মৃত্যুর প্রধান কারণ কোনটি?
ক. লিভার ক্যান্সার খ. মস্তিষ্কের ক্যান্সার
গ. ফুসফুসের ক্যান্সার ঘ. রক্তের ক্যান্সার
উত্তর: গ. ফুসফুসের ক্যান্সার
৪৮. কত বয়সে যক্ষ্মার টিকা দিতে হয়?
ক. ৬ মাস খ. ৮ মাস
গ. ১২ মাস ঘ. ১৮ মাস
উত্তর: গ. ১২ মাস
৪৯. Penicilium এর খাদ্য গ্রহণ ঘটে—
ক. শোষণ পদ্ধতিতে খ. ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে
গ. স্বভোজী জীবে ঘ. গলধঃকরণ পদ্ধতিতে
উত্তর: ক. শোষণ পদ্ধতিতে
৫০. অ্যাজমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য–
i. বুকের ভেতর আওয়াজ হয়
ii. গলার শিরা ফুলে যায়
iii. জ্বর থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii

৫১. ‘X’ সংকুচিত হলে –
i. বক্ষ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে
ii. এটি নিচের দিকে নামে
iii. বক্ষগহ্বরের আয়তন বৃদ্ধি পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫২.

চিত্র A-এর—
i. অন্তর্গাত্র ঝিল্লী দ্বারা আবৃত
ii. অবস্থান স্বরযন্ত্রের উপরে
iii. প্রাচীর তরুণাস্থি দ্বারা গঠিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৩. নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য–
i. রোগীকে সহনীয় উষ্ণতায় ও শুষ্ক পরিবেশে রাখা
ii. বুকে, পিঠে ব্যথা হয়
iii. তরল ও গরম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৪. মধ্যছদা সকুচিত হলে–
i. এটি উপরের দিকে ওঠে
ii. এটি নিচের দিকে নামে
iii. বক্ষগহ্বরের আয়তন বৃদ্ধি পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৫. ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়–
i. ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার
ii. তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়া
iii. নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৬. ব্রঙ্কাইটিসের কারণে রোগীর–
i. ঠোট নীল হয়ে যায়
ii, বুকে ব্যথা অনুভব হয়
iii. তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৭. ফুসফুস থেকে দেহের কোষ পর্যন্ত O2 পরিবাহিত হয়—
i. অক্সিহিমোগ্লোবিনরূপে
ii. বাইকার্বনেটরূপে
iii. রক্তরসে দ্রবীভূত হয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৮. মধ্যচ্ছদা—
i. বক্ষগহ্বর ও উদর গহ্বরকে পৃথক করে
ii. বক্ষগহ্বরের চতুর্দিকে আবরণ তৈরি করে
iii. শ্বসনে সাহায্য করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৯. প্লূরা–
i. ফুসফুসের আবরণ
ii. হৃৎপিণ্ডের আবরণ
iii. বৃক্কের আবরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i
৬০. আমাদের দেহকোষ রক্ত থেকে সংগ্রহ করে–
i. O2
ii. CO2
iii. CH2O
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬১. ‘Asthma’ রোগের কারণ হতে পারে–
i. ধূলাবালি ও ফুলের রেণু
ii. চিংড়ি ও ইলিশ মাছ
iii. শিশুদের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬২. যক্ষ্মা হয়–
i, ফুসফুসে
iii. হাড়ে
ii. অন্ত্রে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৩. ব্রংকাইটিস রোগের কারণ–
i. বুকে ব্যথা অনুভব হয়
ii. শক্ত খাবার গিলতে পারে না
iii. কাশির সাথে কফ বের হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৪. অ্যালভিওলাস হল–
i. ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ুথলি
ii. ফুসফুসে বিদ্যমান থাকে
iii. পাতলা আরবণী ও কৈশিক নালিকা পরিবেষ্ঠিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৫. যক্ষ্মা–
i. শুধুমাত্র ফুসফুসের রোগ
ii. দেহের রোগ প্রতিরোধক শ্বেত রক্তকণিকাকে পরাস্ত করে
iii. বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৬৬. ব্রংকাইটিসের ক্ষেত্রে–
i. বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট
ii. শক্ত খাবার খেতে পারে না
iii. সাধারণ জ্বর থাকে না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৬৭. যক্ষ্মার লক্ষণগুলো হলো—
i. তিন সপ্তাহের বেশি কাশি
ii. বুকে পিঠে ব্যথা হয়
iii. বিকেলের দিকে জ্বর আসে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৮. অ্যাজমা রোগের লক্ষণ হচ্ছে—
i. বুকের ভিতর সাঁই সাঁই আওয়াজ
ii. গলার শিরা ফুলে যাওয়া
iii. ৩ সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের চিত্রটি লক্ষ করো এবং ৬৯ ও ৭০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৬৯. চিত্রের A চিহ্নিত অংশটির অন্তঃপ্রাচীর নিচের কোনটি দ্বারা গঠিত?
ক. ফ্লাজেলা খ. সিলিয়া
গ. ক্ষণপদ ঘ. কিউবয়ডলি
উত্তর: খ. সিলিয়া
৭০. B এর জন্য প্রযোজ্য–
i. অসংখ্য শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়
ii. বহিরাবরণ প্লূরা পর্দা দ্বারা আবৃত
iii. গঠন শ্বাসনালীর অনুরূপ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ করো এবং ৭১ ও ৭২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৭১. কোন রোগটি উদ্দীপকে প্রদত্ত অঙ্গটি ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে হতে পারে?
ক. অ্যাজমা খ. ব্রংকাইটিস
গ. নিউমোনিয়া ঘ. যক্ষ্মা
উত্তর: ঘ. যক্ষ্মা
৭২. উদীপকের অঙ্গের যে রোগটি ছোঁয়াচে বা জীবাণুবাহিত নয় সেটির প্রতিকারের করণীয়–
i. আলো-বাতাস পূর্ণ গৃহে বসবাস করা
ii. ধূমপান বর্জন করা
iii. তরল পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং ৭৩ ও ৭৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
করিম একজন খনি শ্রমিক। সে দীর্ঘদিন ধরে ধূমপান করে। বর্তমানে তার দেহে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা দিয়েছে।
৭৩. করিমের রোগটির নাম কী?
ক. ব্লাড ক্যান্সার খ. ফুসফুস ক্যান্সার
গ. অ্যানিমিয়া ঘ. অ্যাজমা
উত্তর: খ. ফুসফুস ক্যান্সার
৭৪. করিমের রোগটির ক্ষেত্রে সত্য–
i. কাশি ও বুকে ব্যথা
ii. ওজন হ্রাস
iii. ঘন ঘন জ্বর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং ৭৫ ও ৭৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
আলো একটি কারখানার শ্রমিক। ঋতু পরিবর্তনের সময় তার একটি রোগ বেড়ে যায়। স্বাভাবিক কাজ করতে কষ্ট হয়।
৭৫. আলোর রোগটি কোন অঙ্গের?
ক. স্বরযন্ত্র খ. রক্তসংবহনতন্ত্র
গ. রেচনতন্ত্র ঘ. সমন্বয়তন্ত্র
উত্তর: ক. স্বরযন্ত্র
৭৬. আলোর রোগের লক্ষণ–
i. ফুসফুসে বায়ুথলিতে ঠিকমতো O2 সরবরাহ হবে না
ii. পাঁজর ভিতরে ঢুকে যাবে শ্বাস নেবার সময়
iii. গিট ফুলে যাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৭৭ ও ৭৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
অপু দীর্ঘদিন ধরে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। একদিন হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। সে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার তাকে জোরে জোরে শ্বাস নিতে বলেন। জোরে শ্বাস নেওয়ার সময় অপুর ভিতর সঁই সাঁই আওয়াজ হয়।
৭৭. অপু কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে?
ক. নিউমোনিয়া খ. যক্ষ্মা
গ. ক্যান্সার ঘ. হাঁপানী
উত্তর: ঘ. হাঁপানী
৭৮. আক্রান্ত রোগটি–
i. জীবাণুবাহিত রোগ
ii. চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না
iii. বছরের বিশেষ ঋতুতে বৃদ্ধি পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৭৯ ও ৮০ নং প্রশ্নের উতর দাও:
নিয়াজের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এ সময় সে খুব জোরে জোরে শ্বাস নেয়। শ্বাসকষ্টের সময় দম বন্ধ হয়ে আসে। ডাক্তার দেখে রোগটি সনাক্ত করলেন। তিনি বলেলেন রোগটি ছোঁয়াচে নয়।
৭৯. নিয়াজের রোগটির নাম কী?
ক. নিউমোনিয়া খ. হাঁপানি
গ. যক্ষ্মা ঘ. ব্রঙ্কাইটিস
উত্তর: খ. হাঁপানি
৮০. উক্ত রোগটির প্রতিকার হলো–
i. ব্যায়াম করা
ii. আলো বাতাসপূর্ণ গৃহে বাস করা
iii. শ্বাসকষ্টের সময় তরল খাদ্য খাওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : নিচের চিত্রদ্বয় লক্ষ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. রক্তের কোন কণিকা অক্সিজেন বহন করে?
খ. ট্রাকিয়া বলতে কী বুঝায়?
গ. P এর সংঘটিত প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গ্যাস বিনিময়ের ক্ষেত্রে P ও Q একে অপরের ওপর নির্ভরশীলতার বিষয়টি তোমার যুক্তির আলোকে বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রক্তের লোহিত কণিকা অক্সিজেন বহন করে।
খ. ট্রাকিয়া বলতে মানব শ্বসনতন্ত্রের একটি অংশকে বোঝায়। ট্রাকিয়া খাদ্যনালির সম্মুখে অবস্থিত বলায়াকার তরুণাস্থি ও পেশি দ্বারা গঠিত একটি ফাঁপা নল। এটি কিছুদূর নিচে গিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি বায়ুনলের সৃষ্টি করে এবং বাম ও ডান ফুসফুসে প্রবেশ করে। ট্রাকিয়া দিয়ে বায়ু আসা-যাওয়া করে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকে চিত্র P-এর সংঘটিত প্রক্রিয়াটি শ্বসন।
মানুষের শ্বাসকার্যটি দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয় যথা: প্রশ্বাস বা শ্বাস গ্রহণ এবং নিঃশ্বাস বা শ্বাস ত্যাগ। নাসাযন্ত্রের মাধ্যমে পরিবেশ হতে ফুসফুসে প্রশ্বাসের ফলে O2 গৃহীত হয় ও নিঃশ্বাসের ফলে CO2 ফুসফুস হতে পরিবেশে নির্গত হয়। পরিবেশের বায়ু নাসাপথের ভেতর দিয়ে ফুসফুসের বায়ুথলি পর্যন্ত নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
স্নায়ুবিক উত্তেজনার কারণে প্রশ্বাসের সময় পিঞ্জরাস্থির মাংসপেশি ও মধ্যচ্ছদা সংকুচিত হয়। ফলে মধ্যচ্ছদা নিচের দিকে নেমে যায় এবং বক্ষগহ্বর প্রসারিত হয়। বক্ষগহ্বরের আয়তন বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়, ফলে ফুসফুসের ভেতরের বায়ুর চাপ বাইরের চায়ুর চাপের চেয়ে কমে যায়। বক্ষগহ্বরের ভেতর ও বাইরের চাপের সমতা রক্ষার জন্য প্রশ্বাস বায়ু ফুসফুসের ভেতর সহজে প্রবেশ করতে পারে।
এরপর পেশির বিপরীত ক্রিয়ার ফলে মধ্যচ্ছদা পুনরায় প্রসারিত হয়ে উপরের দিকে উঠে যায় এবং বক্ষগহ্বরের আয়তন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এতে ফুসফুসের ভেতরের বায়ুর চাপ বেড়ে যায়, ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প সমৃদ্ধ বাতাস নিঃশ্বাস রূপে পরিবেশে নির্গত হয়।
উপরিউক্ত পদ্ধতিতে P এর প্রক্রিয়াটি সংঘটিত হয়।
ঘ. উদ্দীপকের P ও Q চিত্র দুটির মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে মানুষের শ্বসন এবং উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া।
উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া নির্গত O2 মানুষ গ্রহণ করছে। আর মানুষের শ্বসন প্রক্রিয়ায় নির্গত CO2 উদ্ভিদ গ্রহণ করছে। সালোকসংশ্লেষণের জন্য। আমরা জানি, সব জীবেই সবসময় শ্বসন প্রক্রিয়া চলে। শ্বসন প্রক্রিয়ায় জীব O2 গ্রহণ করে এবং CO2 ত্যাগ করে। কেবলমাত্র শ্বসন প্রক্রিয়া চলতে থাকলে বায়ুমন্ডলে O2 গ্যাসের স্বল্পতা এবং CO2 গ্যাসের আধিক্য দেখা দিত। কিন্তু সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় CO2 গ্রহণ করে এবং O2 বায়ুমন্ডলে ত্যাগ করে ফলে বায়ুমন্ডলে O2 ও CO2 গ্যাসের সঠিক অনুপাত রক্ষিত হচ্ছে।
অপরদিকে শ্বসনে নির্গত CO2 জীবের প্রধান খাদ্য শর্করা উৎপন্নের জন্য সালোকসংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। উপযুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, খাদ্যের এবং শ্বাস বায়ু O2 এর জন্য সমগ্র প্রাণীকূল সবুজ উদ্ভিদের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল, আর সবুজ উদ্ভিদ এই খাদ্য প্রস্তুতের জন্য সালোকসংশ্লেষণের প্রধান উপাদান CO2 এর জন্য প্রাণিকুলের উপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন–২ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রাশেদ ও জামিল জাহাজ ভাঙা শিল্পে কাজ করে। কাশি ও বুকে ব্যথাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভোগায় উভয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হন যে রাশেদের শ্বসন অঙ্গের কোষ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে জামিলের রোগটি শ্বসন অঙ্গ ছাড়াও অন্ত্র ও হাড়ে বিস্তার লাভ করেছে।
ক. মধ্যচ্ছদা কী?
খ. বহিঃশ্বসন বলতে কী বুঝায়?
গ. রাশেদের দেহে রোগটি কীভাবে ছড়ায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাশেদ ও জামিলের রোগ দুটির মধ্যে কোনটির নিরাময় তুলনামূলকভাবে সহজতর- কারণ বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মধ্যচ্ছদা হলো মানবদেহের বক্ষগহ্বর ও উদরগহ্বরকে পৃথককারী কিছুটা উত্তল পেশিবহুল মাংসল পর্দা।
বা, বক্ষগহ্বর ও উদরগহ্বর পৃথককারী পেশিবহুল পর্দাকে মধ্যচ্ছদা বলে।
খ. বহিঃশ্বসন বলতে প্রাণীদেহে প্রতিনিয়ত চলতে থাকা শ্বাসকার্যকে বোঝায়। মানবদেহের শ্বসনের জন্য প্রযোজনীয় অক্সিজেন সমৃদ্ধ বায়ু নাসারন্ধ্র দিয়ে প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং নিঃশ্বাসের মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইড ফুসফুস হতে নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে পরিবেশে নির্গত হয়। এভাবে মানবদেহে প্রতিনিয়ত শ্বাসকার্য চলতে থাকে যা বহিঃশ্বসন নামে পরিচিত।
গ. রাশেদের রোগের লক্ষণ অনুসারে এবং পরবর্তীতে ডাক্তারের পরীক্ষা নিরীক্ষায় বোঝা গেছে রোগটি ফুসফুসের ক্যান্সার।
কারণ কোষ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়লে যে রোগ হয় তা হলো ক্যান্সার। ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। বাংলাদেশের পুরুষদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো ফুসফুসের ক্যান্সার যা ধূমপানের জন্য হয়। এছাড়াও নিম্নলিখিত কারণেও ফুসফুসের ক্যান্সার ছড়াতে পারে :
১. বায়ু ও পরিবেশ দূষণ এবং বাসস্থান অথবা কর্মক্ষেত্রের দূষণ যেমন: অ্যাসবেস্টাস, আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, নিকেল, কঠিন ধাতুর গুঁড়া ইত্যাদির সংস্পর্শে আসার কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়।
২. যক্ষ্মা বা কোনো ধরনের নিউমোনিয়া ফুসফুসে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করে যা পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়।
৩. ধারণা করা হয় খাদ্য তালিকায় আঁশজাতীয় খাদ্যের ঘাটতি এই রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
ঘ. উদ্দীপকের থেকে বোঝা যায় যে, রাশেদের রোগটি হলো ফুসফুসের ক্যান্সার।
কিন্তু একই উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও জামিলের রোগটি আলাদা। যা ফুসফুস ছাড়াও অন্ত্র ও হাড়ে বিস্তার লাভ করেছে। অতএব, জামিলের রোগটি হলো যক্ষ্মা। নিচে ফুসফুসের ক্যান্সার ও যক্ষ্মা রোগ দুটির নিরাময় বা প্রতিকার প্রক্রিয়া আলোচনা করা হলো :
ক্যান্সার নিরাময় :
১. রোগের লক্ষণগুলো দেখা গেলে অনতিবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
২. রোগ নির্ণয়ের পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
৩. প্রয়োজনে রেডিয়েশন থেরাপি প্রয়োগ করা।
যক্ষ্মা নিরাময় :
১. এ রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগ নিবারণের নিয়মগুলো কঠিনভাবে মেনে রোগীকে হাসপাতালে বা স্যানাটোরিয়ামে পাঠানো অধিক নিরাপদ।
২. রোগীর ব্যবহারের সবকিছু পৃথক রাখা উচিত।
৩. রোগীর কফ বা থুতু মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়।
৪. রোগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা।
৫. ডাক্তারের নির্দেশ ব্যতিত কোরো অবস্থায় ঔষধ সেবন বন্ধ করা উচিত নয়।
উপরিউক্ত তুলনামূলক আলোচনা থেকে দেখা যায়, যক্ষ্মা রোগটি সময়সাপেক্ষ হলেও তা নিরাময়যোগ্য এবং অল্প আয়াসে ও অল্প খরচেই রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায়। কিন্তু ক্যান্সার রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই বলে এটি নিশ্চিতরূপে নিরাময়যোগ্য নয়। এ রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল, সময়সাপেক্ষ ও অনিশ্চিত। অতএব, সবদিক বিশ্লেষণ করে বলা যায় যক্ষ্মা অর্থাৎ জামিলের রোগটির নিরাময় তুলনামূলক সহজতর।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নাদির সাহেব বৃদ্ধ মানুষ। প্রতি বছর শীতকালে ও ঋতু পরিবর্তনের সময় তিনি হঠাৎ প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ও দম বন্ধ হয়ে আসার মতো অবস্থায় পড়েন, সাথে প্রচন্ড কাশিও থাকে। চিকিৎসায় তেমন কাজ হয় না। তবে তাকে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়। তার ছোট নাতি হালিমও মাঝে মাঝে কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভোগে।
ক. যক্ষ্মা রোগের জীবাণুর নাম কী?
খ. হাঁপানি রোগীর সংস্পর্শে আসলে এ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম কেন?
গ. নাদির সাহেবের ও নাতি হালিমের রোগদ্বয়ের মিল ও অমিলগুলো উল্লেখ কর।
ঘ. নাদির সাহেবের রোগটি প্রতিরোধে কী ধরনের পরিবেশ রাখা উচিত বলে মনে কর? ব্যাখ্যা কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যক্ষ্মা রোগের জীবাণুর নাম Mycobacterium tuberculosis.
খ. হাঁপানি ছোঁয়াচে রোগ নয় বলে হাঁপানি রোগীর সংস্পর্শে আসলে এ রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। কোনো ছোঁয়াচে জীবাণুবাহিত রোগ আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে ঐ রেগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু হাঁপানি ছোঁয়াচে বা জীবাণুবাহিত রোগ নয়। দীর্ঘদিনের সর্দি, কাশি ও হাঁচি থেকে এক সময় স্থায়ীভাবে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি হয়।
গ. নাদির সাহেবের রোগের লক্ষণ অনুসারে বলা যায়, তার রোগটি হাঁপানি। তার নাতি হালিমের রোগের লক্ষণ অনুসারে বলা যায়, তার রোগ ব্রংকাইটিস। এই রোগদ্বয়ের লক্ষণের মধ্যে কিছু মিল ও অমিল রয়েছে।
মিল :
১. শ্বাসকষ্ট হয়।
২. কাশির সাথে কফ বের হয়।
৩. রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে।
অমিল :
১. হাঁপানি রোগীর জ্বর থাকে না; ব্রংকাইটিস রোগীর জ্বর হয়।
২. বায়ুদূষণ, ধুমপান ও এলার্জিজনিত রোগ ব্রংকাইটিস শ্বাসনালির ঝিল্লিতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণজনিত রোগ।
৩. হাঁপানি রোগ বছরের বিশেষ ঋতুতে বেড়ে যায়; ব্রংকাইটিস ঋতুভেদে প্রভাবিত হয় না।
ঘ. নাদির সাহেবের রোগটি হলো হাঁপানি। এ রোগটি চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। তাই এই রোগটি প্রতিরোধে ভালো পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি।
হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে আলো-বাতাসপূর্ণ গৃহ প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বায়ুদূষণ, বাসস্থান বা কর্মক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে এমন সব বস্তুর সংস্পর্শ পরিহার করা দরকার। ধুলাবালি ও ধোঁয়াপূর্ণ পরিবেশ পরিহার করা। যেসব খাদ্য খেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় সেগুলো না খাওয়া। যেসব জিনিসের সংস্পর্শ হাঁপানি বাড়ায় তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা। যেমন : পশুর লোম, কৃত্রিম আঁশ ইত্যাদি।
এছাড়া ফুলের রেণু ও ধুলাবালি থেকে মুক্ত বায়ু গ্রহণের জন্য নাকে মাস্ক ব্যবহার করেও এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে নাদির সাহেবের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখা উচিত।
প্রশ্ন–৪ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. নিউমোনিয়া কোন অণুজীবঘটিত রোগ?
খ. হিমোগ্লোবিন কীভাবে O2 পরিবহনে অংশ নেয়?
গ. B অংশটির মাধ্যমে বহিঃশ্বসন প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
ঘ. E অংশ শ্বসনে ভূমিকা রাখে তা মূল্যায়ন কর।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নিউমোনিয়া রোগ Pneumococcus নামক ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ।
খ. O2 ফুসফুস থেকে রক্তে প্রবেশ করার পর O2 হিমোগ্লোবিনের লৌহ অংশের সাথে হালকা বন্ধনের মাধ্যমে অস্থায়ী যৌগঅক্সিহিমোগ্লোবিন গঠন করে। অক্সিহিমোগ্লোবিন বিচ্ছিন্ন হয়ে শ্বসনের বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
হিমোগ্লোবিন + O2 → অক্সিহিমোগ্লোবিন
অক্সিহিমোগ্লোবিন → মুক্ত O2 + হিমোগ্লোবিন
হিমোগ্লোবিন এভাবে O2 পরিবহনে অংশ নেয়।
গ. B অংশটি হলো ফুসফুস যা শ্বসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ এর মাধ্যমে বহিঃশ্বসন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়।
স্নায়ুবিক উত্তেজনা দ্বারা শ্বাসকার্য পরিচালিত হয়। এর কারণে পিঞ্জরাস্থির মাংসপেশি ও মধ্যচ্ছদা সংকুচিত হয়। ফলে মধ্যচ্ছদা নিচের দিকে নেমে যায় ও বক্ষগহ্বর প্রসারিত হয়। বক্ষগহ্বরের আয়তন বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়। ফলে ফুসফুসের ভেতরের বায়ুর চাপ কমে যায়। বক্ষগহ্বরের ভেতর ও বাইরের চাপের সমতা রক্ষার জন্য প্রশ্বাস বায়ু ফুসফুসের ভেতর সহজে প্রবেশ করতে পারে। মধ্যচ্ছদা পুনরায় প্রসারিত হয়ে উপরের দিকে উঠে গেলে বক্ষ গহ্বরের আয়তন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এতে ফুসফুসের ভেতরের বায়ুর চাপ বেড়ে যায় ফলে O2 ও জলীয় বায়ুসমৃদ্ধ বাতাস নিঃশ্বাসরূপে বাইরে নির্গত হয়।
এভাবেই ফুসফুসের মাধ্যমে বহিঃশ্বসন প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
ঘ. E অংশটি হলো মধ্যচ্ছদা বা ডায়াফ্রাম এটি শ্বসনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডায়াফ্রাম হলো বক্ষগহ্বর পৃথককারী পেশিবহুল পর্দা। এটি দেখতে অনেকটা প্রসারিত ছাতার মতো। ডায়াফ্রাম সংকুচিত হলে নিচের দিকে নামে, তখন বক্ষ গহ্বরের আয়তন বৃদ্ধি পায়। এটি প্রসারিত হলে উপরের দিকে ওঠে ও বক্ষ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ডায়াফ্রামের পেশি এবং প্রতিজোড়া পকার মাঝখানে অবস্থিত তির্যক ইন্টারকোস্টাল পেশির সংকোচন ও প্রসারণের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ পর্যায়টি সম্পন্ন হয়। বহিঃস্থ ইন্টারকোস্টাল পেশি সংকুচিত হয় এবং অন্তঃস্থ ইন্টারকোস্টাল শিথিল হয়। ফলে পাঁজর উপরের দিকে ওঠে। তখন ডায়াফ্রাম পেশিও সংকুচিত হয়। ফলে ডায়াফ্রাম সমতল হয়ে যায়।
উপরিউক্ত দুই কর্মকান্ডের ফলে বক্ষগহ্বরের আয়তন বেড়ে যায়। এতে বক্ষগহ্বর ও ফুসফুসের অভ্যন্তরীণ চাপ বায়ুমন্ডলের চাপের চেয়ে কমে যায়। এ কারণে বাতাস নাসাপথের ভেতর দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং অ্যালভিওলাই ফুলে ওঠে। ফুসফুস ও বায়ুমন্ডলের বাতাসের চাপ সমান না হওয়া পর্যন্ত বাতাসের প্রবেশ অব্যাহত থাকে। অতএব দেখা যাচ্ছে যে, E তথা মধ্যচ্ছদা বা ডায়াফ্রাম শ্বসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন–৫ : নিচের চিত্র লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. অ্যানজিনা কী?
খ. প্রশ্বাস কলতে কী বোঝ?
গ. উদ্ভিদ দিন-রাত গ্যাসীয় বিনিময়ে ছকের কোন অঙ্গগুলো কীভাবে ব্যবহার করে বর্ণনা কর।
ঘ. ছকের অঙ্গগুলোর আলোকে উদ্ভিদ, পরিবেশ ও মানুষের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. হৃৎপিন্ডের করোনারী ধমনীতে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ায় বুকে অনুভূত ব্যথা হলো অ্যানজিনা।
খ. মধ্যচ্ছদা ও বক্ষপিঞ্জরাস্থি পেশিগুলো একই সাথে সংকুচিত হয়ে বক্ষগহ্বরে সবদিকে বেড়ে যায় এর ফলে ফুসফুস প্রসারিত হয় এবং অন্তঃফুসফুসীয় চাপ বায়ুমন্ডলীয় চাপ অপেক্ষা হ্রাস পায়। চাপের এই বৈষম্যের জন্য O2 যুক্ত বায়ু ফুসফুসে প্রবেশ করে। এ প্রক্রিয়াকে প্রশ্বাস বলে।
গ. উদ্ভিদ দিন-রাত্রি গ্যাসীয় বিনিময়ে ছকের স্টোমাটা ও লেন্টিসেল অঙ্গগুলো ব্যবহার করে।
উদ্ভিদ শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য পরিবেশ থেকে বিভিন্ন গ্যাস সংগ্রহ করে। বিক্রিয়া শেষে অন্য একটি গ্যাস বাইরের পরিবেশে বের করে দেয়। দিনের বেলায় বা পর্যাপ্ত আলোতে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের হার অধিক হয়। সালোকসংশ্লেষণে উৎপাদিত অক্সিজেন গ্যাসের কিছু অংশ শ্বসন প্রক্রিয়ায় ব্যয় হয়।
রাতের বেলা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। এজন্য অক্সিজেন উৎপন্ন হয় না। কিন্তু শ্বসন প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের উৎপাদন চলতে থাকে। এই কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস পাতার স্টোমাটার মাধ্যমে পরিবেশে নির্গত হয়। আবার পরিণত কারে বাকলে যে লেন্টিসেল তৈরি হয় তার মাধ্যমেও এসব গ্যাসের বিনিময় হয়।
এভাবেই উদ্ভিদ দিন-রাত গ্যাসীয় বিনিময়ের ক্ষেত্রে ছকের স্টোমাটা ও লেন্টিসেল ব্যবহার করে।
ঘ. ছকের অঙ্গগুলোর মধ্যে লেন্টিসেল ও স্টোমাটা উদ্ভিদের গ্যাসীয় বিনিময়ের এবং শ্বাসনালি, নাসারন্ধ্র ও ফুসফুস মানুষের শ্বসন অঙ্গ, স্টোমাটা ও লেন্টিসেল দিয়ে উদ্ভিদের প্রস্বেদন ও শ্বসন ঘটে।
প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের জন্য পাতায় পানির সরবরাহ পায়। মানুষ খাদ্য হিসাবে যা গ্রহণ করে তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সালোকসংশ্লেষণের উপর নির্ভরশীল । সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান CO2 স্টোমাটা দিয়ে পাতায় প্রবেশ করে এবং সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঘটে। সালোকসংশ্লেষণে উৎপন্ন O2 স্টোমাটা দিয়ে বায়ুমন্ডলে বের হয়। শ্বাসনালি, নাসারন্ধ্র ও ফুসফুস দিয়ে মানুষের বহিঃশ্বসন ঘটে। শ্বসনের জন্য বায়ুমন্ডলের O2 নাসারন্ধ্র ও শ্বাসনালি হয়ে ফুসফুসে যায়। নিঃশ্বাসরূপে CO2 ফুসফুস থেকে শ্বাসনালি হয়ে নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে নির্গত হয়।
পৃথিবীতে উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি জীবনযাপনের জন্য বায়ুতে O2 ও CO2 এর পরিমাণ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকতে হয়। কেবলমাত্র শ্বসন প্রক্রিয়া চলতে থাকলে বায়ুমন্ডলে O2 গ্যাসের স্বল্পতা এবং CO2 গ্যাসের আধিক্য দেখা দিত। কিন্তু উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় CO2 গ্রহণ করে এবং O2 বায়ুমন্ডলে ত্যাগের ফলে এখনও পরিবেশে O2 ও CO2 গ্যাসের সঠিক অনুপাত রক্ষিত হচ্ছে। প্রস্বেদনের ফলে বায়ুমন্ডলে জলীয় বাষ্পও যুক্ত হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, উদ্দীপকের ছকে উল্লিখিত অঙ্গগুলো উদ্ভিদ, মানুষ (জীব) ও পরিবেশের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করেছে।
প্রশ্ন–৬ : রহিমের ছোট ভাই জন্মের পর থেকেই কাঁশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়। তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান তার নিউমোনিয়া হয়েছে। চিকিৎসক তাকে ঔষধ দেন এবং তরল ও গরম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। কিছুদিন পর সে সুস্থ হয়।
ক. শ্বসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ কোনটি?
খ. কী কী কারণে ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে?
গ. রহিমের ভাইয়ের আক্রান্ত রোগের লক্ষণগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম- আলোচনা কর।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্বসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ হলো ফুসফুস।
খ. ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ব্রঙ্কাইটিস হয় যা শ্বাসনালির ভেতরে আবৃত ঝিল্লিকে আক্রমণ করে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, স্যাঁতসেঁতে ধুলিকণা মিশ্রিত আবহাওয়া, ঠান্ডা লাগা ও ধূমপান থেকে এ রোগ হতে পারে।
গ. রহিমের ভাই নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত। এটি ফুসফুসের একটি রোগ। অত্যধিক ঠান্ডা লাগলে এ রোগ হতে পারে। এই রোগের লক্ষণগুলো হলো :
১. ফুসফুসে শ্লেষ্মা জাতীয় তরল পদার্থ জমে কফ সৃষ্টি হয়।
২. কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।
৩. দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ বেশি জ্বর হয়।
৪. চূড়ান্ত পর্যায়ে বুকের মাঝে ঘড়ঘড় আওয়াজ হয় এবং মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হয়।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নিউমোনিয়া রোগের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম কারণ একটু সচেতন থাকলেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
নিউমোনিয়া একটি ফুসফুসের রোগ। নিমোকক্কাস (Pneumo coccus) নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়। যেহেতু নিউমোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া বাতাসের মাধ্যমে আমাদের শ্বসনক্রিয়ার সময় ফুসফুসে প্রবেশ করে আক্রমণ ঘটায়। তাই বাতাসকে দূষণমুক্ত রাখলে এ রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে না। অতিরিক্ত ঠান্ডা হতেও এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে। হাম ও ব্রংকাইটিস রোগের পর ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া রোগ দেখা দেয়। তাই শিশু ও বয়স্কদের যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখলে এবং ধূমপান পরিহার করলে এ রোগ থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব।
সুতরাং আলোচ্য বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি, নিউমোনিয়া প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
প্রশ্ন–৭ : নিচের ছকটি পর্যবেক্ষণ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. ভোকালকর্ড কী?
খ. ফ্যারিংক্স বলতে কী বোঝায়?
গ. ছকের C জনিত কারণে যে সমস্ত রোগ হয় তাদের জন্য দায়ী জীবাণুর নাম এবং রোগের লক্ষণ বর্ণনা কর। ঘ. A, B ও C এর মধ্যে কোনটির কারণে অধিকতর মারাত্মক রোগ হয়? মতামত দাও।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. স্বরযন্ত্রের দুই পাশে বিদ্যমান পেশি দুটোই হলো ভোকালকর্ড।
খ. ফ্যারিংক্স মানব শ্বসন তন্ত্রের একটি অংশ। মুখ হাঁ করলে মুখগহ্বরের পশ্চাতে যে অংশটি দেখা যায়, সেটিই ফ্যারিংক্স বা গলবিল। নাসাপাথের পশ্চাৎভাগ থেকে স্বরযন্ত্রের উপরিভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত অংশটি ফ্যারিংক্স।
গ. ছকের C হলো ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা যা সাধারণত ফুসফুসে আক্রমণ করে থাকে।
ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে নিউমোনিয়া ও যক্ষ্মা রোগ হয়ে থাকে। নিম্নে নিউমোনিয়া ও যক্ষ্মা রোগের জীবাণুর নাম ও রোগের লক্ষণ বর্ণনা করা হলো :
নিউমোনিয়া :
জীবাণুর নাম : Pneumococcus
লক্ষণ : ১. ফুসফুসে শ্লেষা জাতীয় তরল পদার্থ জমে কফ সৃষ্টি হয়।
২. কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।
৩. বেশি জ্বর হয়।
৪. চূড়ান্ত পর্যায় বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় আওয়াজ হয়, মারাত্মকশ্বাসকষ্ট হয়।
যক্ষ্মা :
জীবাণুর নাম : Mycobacterium tuberculosis
লক্ষণ : ১. রোগীর ওজন কমতে থাকে, আস্তে আস্তে শরীর দুর্বল হতে থাকে।
২. সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে।
৩. খুসখুসে কাশি হয় এবং কখরো কখরো কাশির সাথে রক্ত যায়।
৪. রাতে ঘাম হয়, বিকেলের দিকে জ্বর আসে।
৫. বুকে পিঠে ব্যথা হয়।
ঘ. A, B ও C এর মধ্যে B অর্থাৎ ভাইরাসজনিত ফুসফুসের সমস্যা হলো অধিকতর মারাত্মক।
গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন প্রকার প্যাপিলোমা ভাইরাস ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। সব ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। আমাদের দেশে পুরুষদের ক্যান্সারে মৃত্যুর প্রধান কারণ ফুসফুস ক্যান্সার। প্যাপিলোমা ভাইরাসের ই৬ ও ই৭ নামের দুটো জিন এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে, যা কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় অবুদ। অনেক সময় এ দুটো জিন পোষক কোষের জিনের সাথে একীভূত হয়ে যায় এবং কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন অণুসমূহের কাজ বন্ধ করে দেয়। সৃষ্টি হয় ক্যান্সার কোষ তথা ক্যান্সার।
ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ যা ফুসফুস থেকে এক সময় সকল অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং বলা যায়, A, B ও C এর মধ্যে B অর্থাৎ ভাইরাসজনিত কারণে ফুসফুসে অধিকতর মারাত্মক রোগ হয়।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৮ : নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শায়লা কিছুদিন আগে ব্রঙ্কাইটিস রোগে ভুগেছেন। কিছুদিন হলো তার ঠান্ডা লেগেছে। গত দুইদিন যাবৎ তা প্রচন্ড জ্বর আসছে। শায়লা ইতিমধ্যে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
ক. টিউমার কী?
খ. হাঁপানি রোগের কারণগুলো লেখ।
গ. শায়লা যে রোগে ভুগছে তার লক্ষণগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “শায়লার রোগটি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম” উক্তিটির যৌক্তিকতা যাচাই কর।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফলে সৃষ্ট অবুদই হলো টিউমার।
খ. ভাইরাসজনিত কারণে অথবা বায়ুদূষণ বা ধূমপানের কারণে দীর্ঘদিন কাশি ও হাঁচি থেকে এক সময় স্থায়ীভাবে হাঁপানির সৃষ্টি হয়। যেসব খাবার খেলে এলার্জি হয় (চিংড়ি, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ ইত্যাদি), বায়ুর সাথে ধোঁয়া, ধুলাবালি, ফুলের রেণু ইত্যাদি শ্বাসগ্রহণের সময় ফুসফুসে প্রবেশ করলে হাঁপানি হতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত সর্দি কাশি থেকে হাঁপানি হতে পারে।।
গ. শায়লা বর্তমানে যে রোগে ভুগছে তা হলো নিউমোনিয়া।
নিউমোনিয়া ফুসফুসের একটি রোগ। অত্যধিক ঠান্ডা লাগলে এ রোগ হতে পারে। হাম ও ব্রঙ্কাইটিস রোগের পর ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া হতে দেখা যায়। নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণগুলো হলো :
১. ফুসফুসে শ্লেষা জাতীয় তরল পদার্থ জমে কফ সৃষ্টি হয়।
২. কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।
৩. দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ বেশি জ্বর হয়।
৪. চূড়ান্ত পর্যায়ে বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় আওয়াজ হয়।
৫. মারাত্মক শ্বাসকষ্টও হতে পারে।
শায়লার নিউমোনিয়া রোগ হয়েছে। কিছুদিন আগে ব্রঙ্কাইটিস আক্রান্ত হওয়া তার এ নিউমোনিয়ার কারণ। এ রোগটি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। কারণ একটু সচেতন থাকলে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায়।
ঘ. নিউমোনিয়া Pneumococcus নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়ে থাকে। অত্যধিক ঠান্ডা লাগলে নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। নিউমােনিয়া হয়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে তরল ও গরম পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি রোগীকে বেশি করে পানি পান করানো উচিৎ। তবে আক্রান্ত হবার আগেই যদি প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তাহলে ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে শিশু ও বয়স্কদের যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধূমপান সম্পূর্ণরূপে পরিহার এবং যথাসম্ভব আলো বাতাসপূর্ণ গৃহে বসবাস করতে হবে। হাম ও ব্রংকাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হবার পর তাকে সহনীয় উষ্ণতায় ও শুষ্ক পরিবেশে রাখতে হবে। অর্থাৎ রোগ হবার আগেই সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রতিকারের কোনো প্রয়োজন পড়ে না।
সুতরাং, উপযুক্ত আলোচনা থেকে এটি নিশ্চিতরূপে বলা যায় যে, শায়লার রোগটি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাই উত্তম কথাটি যৌক্তিক।