ভূগোল ও পরিবেশ
অধ্যায়-০৪
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন : সৃষ্টির সময় পৃথিবীর ছিল একটি উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড। উত্তপ্ত অবস্থা থেকে এটি শীতল ও ঘনীভূত হয়। এই সময় পৃথিবীর বাইরের ভারী উপাদানগুলো এর কেন্দ্রের দিকে জমা হয়। আর হালকা উপাদানগুলো ভরের তারতম্য অনুসারে নিচ থেকে উপরে স্তরে স্তরে জমা হয়। পৃথিবীর এই বিভিন্ন স্তরকে মণ্ডল বলে। উপরের স্তরটিকে অশ্মমণ্ডল বলে। অশ্মমণ্ডলের উপরের অংশ ভূত্বক নামে পরিচিত। অশুমণ্ডলের নিচে প্রায় ২, ৮৮৫ কি.মি. গুরুমণ্ডল এবং এর ঠিক নিচেই রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল।
গাঙ্গেয় ব–দ্বীপ : নদী যখন মোহনার কাছাকাছি আসে, তখন তার স্রোতের বেগ একেবারেই কমে যায়। এতে বালু ও কাদা তলানিরূপে সঞ্জিত হয়। নদীর স্রোতটান যদি কোনো সাগরে এসে পতিত হয় তাহলে ঐসব বালু, কাদা নদীর মুখে জমে নদীমুখ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে এর স্তর সাগরের পানির উচ্চতার উপরে উঠে যায়। তখন নদী বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে এই চরাভূমিকে বেষ্টন করে সাগরে পতিত হয়।
ত্রিকোণাকার এই নতুন সমতলভূমিকে ব-দ্বীপ বলে। এটি দেখতে মাত্রাহীন বাংলা ব-এর মতো এবং গ্রিক অক্ষর ‘ডেল্টার’ মতো তাই এর বাংলা নাম ব-দ্বীপ এবং ইংরেজি নাম ‘Delta’ হয়েছে। হুগলি নদী থেকে পূর্ব দিকে মেঘনার সীমানা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সমস্ত দক্ষিণাংশ গঙ্গা ও পদ্মা নদীর বিখ্যাত ব-দ্বীপ অঞ্চল।
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
ভূমিকা : আমাদের আবাসভূমি পৃথিবী বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, জন্মের সময় তা এমন ছিল না, ছিল এক উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড। এই গ্যাসপিণ্ড ক্রমান্বয়ে শীতল হয়ে ঘনীভূত হয়। ঘনীভূত হওয়ার সময় এর উপরিভাগে যে আস্তরণ পড়ে তা হলো ভূত্বক। ভূত্বক যেসব উপাদান দিয়ে গঠিত তার সাধারণ নাম শিলা। ভূত্বকের নিচে ভূগর্ভের রয়েছে তিনটি স্তর অশ্মমণ্ডল, গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল।
পৃথিবীতে কার্যরত বিভিন্ন ভূমিরূপ প্রক্রিয়া শিলা ও খনিজের ধরন দ্বারা প্রভাবিত হয়। ভূপৃষ্ঠ সর্বদা পরিবর্তনশীল। এই অধ্যায়ে পৃথিবীর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন, বিভিন্ন রকম শিলা, ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন রূপ এবং এর পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হবে।
১. ভূগর্ভের স্তর: ভূগর্ভের স্তর তিনটি; যথা- অশ্মমণ্ডল, গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল।
২. উর্ধ্ব গুরুমণ্ডলের গঠন: উর্ধ্ব গুরুমণ্ডল লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
৩. কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদান: কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদান লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা।
৪. শিলা ও খনিজ: শিলা গঠিত হয় বিভিন্ন খনিজের সংমিশ্রণে, আর খনিজ দুই বা ততোধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত।
৫. শিলার শ্রেণিবিভাগ : শিলা ৩ প্রকার; যথা- পাললিক শিলা, আগ্নেয় শিলা ও রূপান্তরিত শিলা।
৬. পলল থেকে গঠিত: পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তাকে পাললিক শিলা বলে। পলল বা তলানি থেকে গঠিত হয় বলে এর নাম পাললিক শিলা।
৭. ভূমিকম্পের কারণ: অগ্ন্যুৎপাতের সময় জ্বালামুখ দিয়ে প্রবল বেগে বাষ্প, লাভা বের হতে থাকে, ফলে ভূমিকম্প হয়।
৮. লাভা: আগ্নেয়গিরির মুখকে জ্বালামুখ এবং জ্বালামুখ দিয়ে বের হওয়া গলিত পদার্থকে লাভা বলা হয়।
৯. ভূমিরূপের পরিবর্তন: ভূমিরূপের পরিবর্তন ৪টি- বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন, অপসারণ, নগ্নীভবন ও অবক্ষেপণ।
১০. মালভূমির প্রকারভেদ : অবস্থানের ভিত্তিতে মালভূমি ৩ প্রকার- পর্বতমধ্যবর্তী মালভূমি, পাদদেশীয় ও মহাদেশীয় মালভূমি।
• ভূত্বক : ভূপৃষ্ঠের শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তা-ই ভূত্বক। এটি গুরুমণ্ডলের উপরে অবস্থিত। ভূ-অভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম, গড়ে ২০ কিলোমিটার । ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্রতলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। ভূত্বক গঠনকারী উপাদানগুলো হলো সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম।
• ব্যাসন্ট : যে উদগারী আগ্নেয়শিলা কৃষ্ণবর্ণের এবং মিহিদানার, তাতে যদি অর্ধেকের বেশি ফেলস্পার এবং বাকিটা লৌহ ও ম্যাগনেসিয়ামের সিলিকেট খনিজ পাইরক্সিন হয় সে শিলাকে ব্যাসল্ট বলে। তবে ব্যাসল্ট লাভার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ম্যাগমা থেকে উৎপন্ন অনিবন্ধী শৈলবস্তু বা কাচ। এ খনিজ সংযুক্তির কাচবিহীন শিলার নাম ডলোরাইট।
• গ্রানাইট : এটি অন্তঃস্থ আগ্নেয়শিলা। কোয়ার্টজ ও অর্থোক্লেজ, ফেলস্পারের সমন্বয়ে এটি গঠিত। এটি অম্লধর্মী শিলার অন্তর্গত। কোয়ার্টজ ও ক্ষারকীয় ফেলস্পার এবং স্বল্প অভ্র ও হর্নব্লেন্ড বা অন্য গৌণ খনিজে তৈরি মোটা দানার পাতালিক শিলাই হলো গ্রানাইট। গ্রানাইট অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাথালিথরূপে পাওয়া যায়।
• অ্যান্ডিসাইট : অ্যান্ডিসাইট বহিঃস্থ শিলার অন্তর্গত। আন্দিজ পার্বত্য এলাকায় এ শিলার প্রাচুর্য বেশি বলে একে অ্যান্ডিসাইট বলে। এটি লাভার মধ্যে পাওয়া যায়। এদের দানাগুলো খুব সূক্ষ্ম বলে খালি চোখে দেখা যায় না। ফেলস্পার এর প্রধান উপাদান। সূক্ষ্ম দানা ও উজ্জ্বল চ্যুতিবিশিষ্ট বলে এটি দেখতে কাঁচের মতো। এটি গাঢ় ছাই ও হালকা সবুজ বর্ণের হয়।
• এ্যাব্রো : এটি পাতালিক অন্তঃজ শিলার অন্তর্গত। এটি ফেলস্পার ও পাইরোজেন দ্বারা গঠিত। গাঢ় ধূসর বর্ণের পাতালিক শিলায় যদি সিলিকা কম থাকে এবং এর প্রধান উপাদানস্বরূপ ক্যালসীয় প্লাজিওক্লেজ, পাইরক্সিন ও অনেক সময় অলিভিন বর্তমান থাকে, তবে সে শিলাই হলো এ্যাব্রো। এছাড়া হর্নব্লেন্ড, অলিভিন ও অন্যান্য খনিজ এর সাথে সামান্য পরিমাণে থাকতে পারে। এ দানাগুলো মাঝারি ধরনের হয়।
• পোতাশ্রয়ের ঢেউ : এ শব্দটি জাপানি শব্দ সুনামি থেকে এসেছে। সুনামির পানির ঢেউ সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো নয়। এটি সাধারণ ঢেউয়ের চেয়ে বিশালাকৃতির অতি দ্রুত ফুসে ওঠা জোয়ারের মতো, যা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলােচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করে।
• অবক্ষেপন : নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি দ্বারা পরিবাহিত বস্তুকণা এবং পানিতে দ্রবীভূত রাসায়নিক যৌগের অধঃক্ষেপনের ফলে উৎপন্ন বস্তুর থিতিয়ে পড়ার প্রক্রিয়াই হলো অবক্ষেপন।
• গিরিসংকট : ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় নদীর স্রোত খাড়া পর্বতগাত্র বেয়ে নিচের দেকে প্রবাহিত হয়। এতে ভূখণ্ড ক্ষয় হয় এবং ভূত্বক থেকে শিলাখণ্ড ভেঙে পড়ে। শিলাগুলো পরস্পরের সাথে এবং নদীখাতের সাথে সংঘর্ষে মসৃণ হয়ে অনেক দূরে চলে যায়। এসব পাথরের সংঘর্ষে নদীর খাত গভীর ও সংকীর্ণ হতে থাকে। নদীর দুই পাশের ভূমিক্ষয় কম হলে বা না হলে এসব খাত খুব গভীর ও সংকীর্ণ হতে থাকে। এক পর্যায়ে এসব খাত খুব গভীর হয়। এরূপ গভীর খাতই হলো গিরিসংকট।
• ক্যানিয়ন : নদী যখন শুষ্ক অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং সেখানে যদি কোমল শিলার স্তর থাকে তাহলে গিরিখাতগুলো অত্যন্ত সংকীর্ণ ও গভীর হয়। এরূপ গিরিখাতই হলো ক্যানিয়ন।
• গ্রাবরেখা : হিমবাহ দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বাহিত বিভিন্ন ধরনের পদার্থ হিমবাহ উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে সঞ্চিত হয়ে যে ভূপ্রকৃতির সৃষ্টি করে তা হলো গ্রাবরেখা। হিমবাহ কর্তৃক সঞ্চালিত বালু, কাকর, কর্দম ও প্রস্তরখণ্ড দ্বারা গ্রাবরেখা গঠিত হয়। কাজেই গ্রাবরেখার মধ্যে সূক্ষ্ম বালুকণা থেকে শুরু করে ৪০-৫০ ফুট ব্যাসবিশিষ্ট কয়েক টন ভরের বৃহদাকৃতির প্রস্তরখণ্ড থাকতে পারে।
• শিলাচ্যুতি : কখনো কখনো ভূঅভ্যন্তরীণ তাপ বা ভূপৃষ্ঠের অত্যধিক চাপের ফলে ভূঅভ্যন্তরের শিলা ভেঙে যায়। একে শিলাচ্যুতি বলে। শিলাচুত্যির ফলে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। নদীগর্ভ কাকে বলে?
উত্তর : নদী উপত্যকার তলদেশকে নদীগর্ভ বলে ।
২। পৰ্বত কী?
উত্তর : সমুদ্রতল থেকে অন্তত ১,০০০ মিটারের বেশি উঁচু সুবিস্তৃত ও খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তুপই পর্বত।
৩। সর্বদা পরিবর্তনশীল ভূপৃষ্ঠে কয় রকমের পরিবর্তন দেখা যায়?
উত্তর : সর্বদা পরিবর্তনশীল ভূপৃষ্ঠে দুই রকমের পরিবর্তন দেখা যায়।
৪। পৃথিবীর গঠন কাঠামোর ক্ষেত্রে মণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : উত্তপ্ত পৃথিবী শীতল হওয়ার সময় এর হালকা উপাদানগুলো নিচ থেকে উপরে জমাট বেঁধে যেসব স্তর গঠন করেছে এদের মণ্ডল বলে।
৫। ভূত্বকে কোন উপাদান অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়?
উত্তর : সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়ামরূপী উপাদান।
৬। ভূতুকের শিলাস্তরগুলোকে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়?
উত্তর : ভূত্বকের শিলাস্তরগুলোকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
৭। সমুদ্রের তলদেশ কোন শিলাস্তর দিয়ে তৈরি হয়েছে?
উত্তর : সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম গঠিত সিমা নামক ভারী শিলাস্তর দিয়ে।
৮। গুরুমণ্ডল কী?
উত্তর : ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরু মণ্ডলটিই গুরুমণ্ডল নামে পরিচিত।
৯। গুরুমণ্ডল মূলত কোন শিলা দ্বারা গঠিত?
উত্তর : গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত।
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
১০। বহিঃগুরুমণ্ডলের বিস্তৃতি কত?
উত্তর : বহিঃগুরুমণ্ডলের বিস্তৃতি ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ।
১১। বহিঃগুরুমণ্ডল প্রধানত কোন খনিজ দ্বারা গঠিত?
উত্তর : বহিঃগুরুমণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
১২। আন্তঃগুরুমণ্ডলে কোন খনিজের প্রাধান্য থাকে?
উত্তর : আন্তঃগুরুমণ্ডলে আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এবং সিলিকন ডাই-অক্সাইডসমৃদ্ধ খনিজের প্রাধান্য থাকে।
১৩। কেন্দ্রমণ্ডলের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর : কেন্দ্রমণ্ডলের প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।
১৪। শিলা কী দিয়ে গঠিত হয়?
উত্তর : দুই বা ততোধিক খনিজের সংমিশ্রণে শিলা গঠিত হয়।
১৫। গঠন প্রণালি অনুসারে শিলাকে কয় শ্রেণিতে ভাগ করা হয়?
উত্তর : প্রধানত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।
১৬। কোন শিলার কোনো স্তর নেই?
উত্তর : আগ্নেয় শিলার কোনো স্তর নেই।
১৭। পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে কোন শিলার সৃষ্টি করে?
উত্তর : আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে।
১৮। আগ্নেয় শিলাকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : আগ্নেয় শিলাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১৯ । কোন শিলার দানাগুলো খুব সূক্ষ্ম এবং রং গাঢ়?
উত্তর : বহিঃজ আগ্নেয় শিলার দানাগুলো খুব সূক্ষ্ম এবং রং গাঢ় ।
২০ । কোন শিলার দানাগুলো স্থূল ও হালকা রঙের হয়?
উত্তর : অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার দানাগুলো স্থুল ও হালকা রঙের হয় ৷
২১ । পলি সঞ্চিত হয়ে কোন শিলা গঠিত হয়?
উত্তর : পলি সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলা গঠিত হয় ৷
২২। মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের কত শতাংশ পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত?
উত্তর : ৭৫ শতাংশ পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত ।
২৩ । যৌগিক, জৈবনিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয় কোন শিলা ?
উত্তর : পাললিক শিলা ।
২৪ । বেলেপাথর, কয়লা, শেল প্রভৃতি কোন শিলার উদাহরণ?
উত্তর : বেলেপাথর, কয়লা, শেল প্রভৃতি পাললিক শিলার উদাহরণ।
২৫ । কোন শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়?
উত্তর : পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায় ।
২৬। চুনাপাথর পরিবর্তিত হয়ে কোন শিলায় রূপান্তরিত হয়?
উত্তর : চুনাপাথর পরিবর্তিত হয়ে মার্বেলে রূপান্তরিত হয় ।
প্রশ্ন–২৭ । কোয়ার্টজাইট কোন শিলার পরিবর্তিত রূপ?
উত্তর : কোয়ার্টজাইট বেলেপাথরের পরিবর্তিত রূপ ।
২৮ । কাদা ও শেলের পরিবর্তিত রূপ কোনটি?
উত্তর : কাদা ও শেলের পরিবর্তিত রূপ হলো স্লেট ।
২৯ । নিস কোন শিলার পরিবর্তিত রূপ?
উত্তর : নিস গ্রানাইটের পরিবর্তিত রূপ ।
প্রশ্ন–৩০ । ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় ।
৩১ । পৃথিবীর কোন অংশ এখনো উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ ।
৩২। ভূপৃষ্ঠে হঠাৎ যে পরিবর্তন সাধিত হয় সেটি কোন ধরনের পরিবর্তন?
উত্তর : সেটি হলো আকস্মিক পরিবর্তন।
৩৩। ভূপৃষ্ঠের কোন পরিবর্তন বিশাল এলাকা জুড়ে হয়ে থাকে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তন বিশাল এলাকাজুড়ে হয়ে থাকে ।
৩৪। সূর্যতাপ, নদী, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তিগুলো ভূপৃষ্ঠে কোন পরিবর্তনে অবদান রাখে?
উত্তর : ধীর পরিবর্তনে অবদান রাখে ।
৩৫ । আকস্মিক পরিবর্তনের অন্যতম কারণ কী?
উত্তর : ভূমিকম্প, সুনামি ও অগ্ন্যুৎপাত।
৩৬। ভূকম্পন সাধারণত কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
উত্তর : ভূকম্পন সাধারণত কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় ।
৩৭ । ১৯৩৫ সালে বিহারের আলোচিত ভূমিকম্পের কারণ কী ছিল?
উত্তর : উক্ত ভূমিকম্পের কারণ ছিল শিলাচ্যুতি।
৩৮ । ১৯৫০ সালে শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টি হওয়ায় কোথায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়?
উত্তর : আসামে ভূমিকম্প হয় ।
৩৯ । কোন বিষয়টি ভূঅভ্যন্তরে বাষ্প সৃষ্টির জন্য দায়ী?
উত্তর : অত্যধিক তাপই ভূঅভ্যন্তরে বাষ্প সৃষ্টির জন্য দায়ী 1
৪০। ‘সুনামি‘ কোন ভাষার শব্দ?
উত্তর : ‘সুনামি’ একটি জাপানি শব্দ
৪১। জাপানি ভাষায় ‘সুনামি‘-এর অর্থ কী?
উত্তর : জাপানি ভাষায় ‘সুনামি’-এর অর্থ হলো ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’ ।
৪২। ওয়েভ ট্রেন বলতে কোনটিকে নির্দেশ করে?
উত্তর : ওয়েভ ট্রেন বলতে সুনামিকে নির্দেশ করে ৷
৪৩। জ্বালামুখ দিয়ে নির্গত গলিত পদার্থ কী নামে পরিচিত?
উত্তর : জ্বালামুখ দিয়ে নির্গত গলিত পদার্থ লাভা নামে পরিচিত।
৪৪ । ভারতের দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকাময় মালভূমি কী দিয়ে গঠিত?
উত্তর : লাভা দিয়ে গঠিত ।
৪৫। ১৮৮৩ সালে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কোথায় এক বিরাট গহ্বর দেখা যায়?
উত্তর : সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে।
৪৬। কোথায় পানি জমে আগ্নেয় হ্রদের সৃষ্টি হয়?
উত্তর : মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে পানি জমে।
৪৭। আলাস্কার মাউন্ট আকামা কোন ধরনের হ্রদ?
উত্তর : আলাস্কার মাউন্ট আকামা একটি আগ্নেয় হ্রদ।
৪৮। ইতালির ভিসুভিয়াস কী?
উত্তর : ইতালির ভিসুভিয়াস হলো একটি আগ্নেয় পর্বত।
৪৯। হারকিউলেনিয়াম ও পম্পেই নগর দুটি কত সালে ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতে ডুবে যায়?
উত্তর : ১৮৭৯ সালে ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতে ডুবে যায়।
৫০। দাক্ষিণাত্যের লাভা গঠিত মৃত্তিকা কী চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী?
উত্তর : কার্পাস চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।
৫১। পৃথিবীর আকস্মিক পরিবর্তন কয়টি প্রধান ভূমিরূপের সৃষ্টি করে?
উত্তর : তিনটি ভূমিরূপের সৃষ্টি করে।
৫২। যেসব প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় তাদেরকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়?
উত্তর : চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়।
৫৩। বিচূর্ণীভবন ভূত্বকের কোন পরিবর্তনের অন্যতম পর্যায়?
উত্তর : বিচূর্ণীভবন ভূত্বকের ধীর পরিবর্তনের একটি অন্যতম পর্যায়।
৫৪। নগ্নীভবন ভূতুকের কোন পরিবর্তনের একটি অন্যতম পর্যায়?
উত্তর : নগ্নীভবন ভূত্বকের ধীর পরিবর্তনের একটি অন্যতম পর্যায়।
৫৫। কোন কারণে শিলার বিচূর্ণীভবন ঘটে?
উত্তর : সাধারণত প্রাকৃতিক কারণে শিলার বিচূর্ণীভবন ঘটে।
৫৬। নদীস্রোত, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি দ্বারা বিচূর্ণ শিলার স্থানান্তরকে কী বলে?
উত্তর : অপসারণ বলে।
৫৭। ক্ষয়প্রাপ্ত শিলা কোন প্রক্রিয়ায় নতুন ভূমিরূপ সৃষ্টি করে?
উত্তর : ক্ষয়প্রাপ্ত শিলা অবক্ষেপণ প্রক্রিয়ায় নতুন ভূমিরূপ সৃষ্টি করে।
৫৮। কোথায় বায়ুর ক্ষয়কাজ বেশি দেখা যায়?
উত্তর : মরুভূমিতে বায়ুর ক্ষয়কাজ বেশি দেখা যায়।
৫৯। শুষ্ক, প্রায় বৃষ্টিহীন এবং গাছপালাশূন্য এলাকা কোনটি?
উত্তর : এরূপ এলাকা হলো মরু এলাকা।
৬০। বাংলাদেশের করতোয়া কোন নদীর উপনদী?
উত্তর : বাংলাদেশের করতোয়া যমুনা নদীর উপনদী।
৬১। নদীর গতিপথকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : নদীর গতিপথকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
৬২। উধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী?
উত্তর : ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ হলো ক্ষয়সাধন।
৬৩। মধ্যগতিতে নদীর বিস্তার ঊর্ধ্বগতি অবস্থার তুলনায় কেমন?
উত্তর : ঊর্ধ্বগতি অবস্থার তুলনায় বেশি হয়।
৬৪। নদীর গতির কোন পর্যায়ে স্রোত একেবারে কম?
উত্তর : নদীর নিম্নগতি পর্যায়ে স্রোত একেবারে কম থাকে।
৬৫। অশ্বখুরাকৃতির হ্রদ কোন ধরনের ভূমিরূপ?
উত্তর : অশ্বখুরাকৃতির হ্রদ নদী গঠিত সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ ।
৬৬। বালুচর নদীর কোন ধরনের ভূমিরূপ?
উত্তর : বালুচর নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ।
৬৭। কোমল পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয় তা কোন ধরনের পর্বত?
উত্তর : ভঙ্গিল পর্বত।
৬৮। হিমালয়, আল্পস, আন্দিজ প্রভৃতি কোন ধরনের পর্বত?
উত্তর : হিমালয়, আল্পস, আন্দিজ প্রভৃতি ভঙ্গিল পর্বত।
৬৯। ভারতের বিন্ধ্যা ও পাকিস্তানের লবণ পর্বত কোন ধরনের পর্বতের উদাহরণ?
উত্তর : ভারতের বিন্ধ্যা ও পাকিস্তানের লবণ পর্বত স্তূপ পর্বতের উদাহরণ।
৭০। হেনরি পর্বত কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : হেনরি পর্বত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১। মধ্যগতিতে নদী উপত্যকা ‘ইউ’ আকৃতির হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নদীর স্রোতের বেগ প্রবল হলে নদী বড় বড় শিলাখণ্ডকে বহন করে নিচের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় নদীখাতে নিম্নক্ষয় অপেক্ষা পার্শ্বক্ষয় বেশি হলে নদী উপত্যকা ‘ইউ’ আকৃতির হয়। সাধারণত নদীর মধ্যগতিতে এই ধরনের ভূমিরূপ গঠিত হয়।
প্রশ্ন–২। সমুদ্রে মগ্নচড়া কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে মগ্নচড়ার সৃষ্টি হয়। উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোতের সঙ্গে বাহিত বড় বড় হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে গলে যায়। ফলে হিমশৈলের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সমুদ্রতলে সঞ্চিত হয় এবং একসময় মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে। নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে গ্রান্ড ব্যাঙ্ক, সেবল ব্যাঙ্ক, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে ডগার্স ব্যাঙ্ক মগ্নচড়ার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৩। ভূত্বক কীভাবে গঠিত হয়েছে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কি.মি. এবং সমুদ্রের তলদেশে গড়ে মাত্র ৫ কি.মি. পুরু। ভূত্বকের উপরের স্তর সিলিকা ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত বলে সেটি সিয়াল স্তর নামে পরিচিত। আর নিচের স্তরটি সিলিকা ও ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত যেটিকে সিমা নামে অভিহিত করা হয়।
প্রশ্ন–৪। শিলা ও খনিজের মধ্যে কীভাবে পার্থক্য নিরপণ করা যায়?
উত্তর : খনিজ এক বা একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত আর শিলা এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। খনিজ সমসত্ত্ব অজৈব পদার্থ, শিলা অসমসত্ত্ব পদার্থ। খনিজ কঠিন ও স্ফটিকাকার হয়, কিছু কিছু শিলা কঠিন হলেও স্ফটিকাকার হয় না। খনিজের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত আছে, শিলার কোনাে রাসায়নিক সংকেত নেই। খনিজের ধর্ম এর গঠনকারী মৌল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, অন্যদিকে শিলার ধর্ম এর গঠনকারী খনিজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
প্রশ্ন–৫। আগ্নেয় শিলা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূতুকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়। এ লাভা কঠিন হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এভাবে গ্রানাইট ও ব্যাসল্ট শিলার সৃষ্টি হয়। এ শিলা সৃষ্টির সময় কোনো জীবাশ্ম থাকে না।
প্রশ্ন–৬। অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার গঠন প্রক্রিয়া বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তরের ম্যাগমা বা গলিত শিলার উপাদানসমূহের সাথে বিবিধ গ্যাস মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। এ গ্যাস অনেক সময় উর্ধ্ব প্রবাহী হয়ে ভূপৃষ্ঠের দিকে আসতে চেষ্টা করে। এ গ্যাসের সাথে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগমাও থাকে। কিন্তু প্রায়ই তা উপরে আসার পথে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ভূত্বকের নিচেই সঞ্চিত হতে থাকে। এভাবে সঞ্চিত পদার্থগুলোই। অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা গঠন করে।
প্রশ্ন–৭। পাললিক শিলাকে স্তরীভূত শিলা বলা হয় কেন?
উত্তর : নানা প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা বিচূর্ণীভূত ও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কাঁকর, কাদা, বালি ও ধূলায় রূপান্তরিত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা, জলস্রোত, বায়ু কিংবা হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরুপে কোনো নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীকালে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে পাললিক শিলায় পরিণত হয়। এ পলল বা তলানি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে এ শিলা গঠন করে বলে এ শিলাকে স্তরীভূত শিলা বলা হয়।
প্রশ্ন–৮। কয়লা ও খনিজ তেলকে জৈব শিলা বলা হয় কেন?
উত্তর : কয়লা ও খনিজ তেল ইত্যাদি মূলত পাললিক শিলা। পলল বা তলানি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলা গঠন করে। পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবনিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে। অনেক পাললিক শিলার মধ্যে নানা প্রকার উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর দেহাবশেষ বা জীবাশ্ম দেখা যায়। জীবদেহ থেকে উৎপন্ন হয় বলে কয়লা ও খনিজ তেলকে জৈব শিলাও বলা হয়।
প্রশ্ন–৯। রূপান্তরিত শিলা কী? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : আগ্নেয় ও পাললিক শিলা প্রচণ্ড চাপ, উত্তাপ এবং রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে । ভূ-আন্দোলন, অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প, রাসায়নিক ক্রিয়া কিংবা ভূগর্ভস্থ তাপের কারণে শিলাসমূহ রূপ পরিবর্তন করে। আগ্নেয় ও পাললিক শিলার পরিবর্তিত রূপই হলো রূপান্তরিত শিলা। রূপান্তরিত শিলা ফটিকযুক্ত, খুব কঠিন হয়।
প্রশ্ন–১০। ভূ–আলোড়ন বলতে কী বোঝ?
উত্তর : জন্মের সময় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড। এ গ্যাসপিণ্ড ক্রমে ক্রমে শীতল হলেও এর অভ্যন্তরভাগ এখনো উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় রয়েছে। এসব উত্তপ্ত বস্তুর মধ্যে তাপ ও চাপের পার্থক্য হলে ভূত্বকে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। আর এ আলোড়নই ভূ-আলোড়ন নামে পরিচিত। ভূপৃষ্ঠের বেশির ভাগ পরিবর্তন ভূ-আলোড়নের মাধ্যমেই হয়ে থাকে।
প্রশ্ন–১১। ভূপৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তির প্রভাবে ভূগর্ভে সর্বদা নানারূপ পরিবর্তন হচ্ছে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূকম্পন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের সংকোচন, ভূগর্ভের তাপ ও অন্যান্য প্রচণ্ড শক্তির ফলে ভূপৃষ্ঠে হঠাৎ পরিবর্তন সাধিত হয়। এ ধরনের পরিবর্তনই মূলত আকস্মিক পরিবর্তন। এরপ পরিবর্তন খুব বেশি স্থানজুড়ে হয় না। আকস্মিক পরিবর্তন সাধিত হয় প্রধানত ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি দ্বারা।
প্রশ্ন–১২। ১৯৫০ সালে আসামে বহুল আলোচিত ভূমিকম্পটি কেন হয়েছিল?
উত্তর : প্রবল ভূআলোড়নের ফলে শিলাস্তরে সংকোচন ও প্রসারণ চাপের সৃষ্টি হয়। এতে কখনো কখনো ভূত্বক খাড়াভাবে ফেটে যায়। যে রেখা বরাবর ফাটল হয় তাকে চ্যুতিরেখা বলা হয়। কোনো কারণে ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে বড় ধরনের শিলাচ্যুতি ঘটলে বা শিলাতে ভঁজের সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়। ১৯৫০ সালে আসামে এ কারণেই ভূমিকম্প হয়েছিল।
প্রশ্ন–১৩। ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বায়ুর ভূমিকা লেখ।
উত্তর : বায়ুতে থাকা অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও জলীয়বাষ্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলার বিচ্ছেদ ও ক্ষয়সাধন করে। শুষ্ক, প্রায় বৃষ্টিহীন এবং গাছপালাশূন্য মরুভূমিতেই বায়ুর ক্ষয়কাজ অধিক দেখা যায়। দিনের বেলায় সূর্যের তাপে এবং রাতের শীতলতায় শিলার সংকোচন ও প্রসারণের ফলে মরু এলাকার মৃত্তিকার সংঘবদ্ধতা শিথিল হয়ে যায়। গাছপালা কম থাকার কারণেও মৃত্তিকা দৃঢ় সংঘবদ্ধ নয়। বায়ুপ্রবাহের আঘাতে এ অঞ্চলের শিলা সহজেই বাহিত হয়ে ধীর পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষয় সাধন করে।
প্রশ্ন–১৪। বৃষ্টি কীভাবে ধীর পরিবর্তনে অবদান রাখে?
উত্তর : বৃষ্টির পানি ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ভূপৃষ্ঠকে ব্যাপকভাবে ক্ষয় করে। প্রবাহিত হওয়ার সময় পানি শিলাকে আংশিকভাবে ক্ষয় ও আলগা করে এবং ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাকে অপসারিত করে। আবার পর্বতের মধ্যে কর্দম স্তরের উপর অনেক ভারী শিলা হেলানো অবস্থায় থাকে। পর্বতের ফাটল দিয়ে পানি প্রবেশ করে কাদার স্তরকে গলিয়ে দেয়, এতে বড় শিলাস্তর কাদার উপর থাকতে না পেরে নিচে ধসে পড়ে। এভাবে অনেক দিন ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ধীর পরিবর্তন ঘটে।
প্রশ্ন–১৫। নদী কীভাবে ভূমিরূপ গঠন করে?
উত্তর : নদী যখন পর্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন স্রোতের আঘাতে বাহিত নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতির ঘর্ষণে নদীগর্ভ ও পার্শ্বক্ষয় হয়। পার্বত্য অবস্থায় স্রোতের বেগ বেশি থাকায় নদী নিচের দিকে অগ্রসর হয় এবং কোনো সঞ্চয় হতে পারে না। সমভূমিতে এসে নদী ক্ষয় এবং সয় দুটিই করে। চলার পথে যেদিকে নরম শিলা পায়, নদী ঠিক সেদিক দিয়ে ক্ষয় করে, অগ্রসর হয়। ক্ষয়কৃত নরম শিলা অবক্ষেপণ করে নদী বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠন করে।
প্রশ্ন–১৬। নদীর উর্ধগতি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ঊর্ধ্বগতি হলো নদীর প্রাথমিক অবস্থা। পর্বতের যে স্থান থেকে নদীর উৎপত্তি হয়েছে, সেখান থেকে সমভূমিতে পৌছানো পর্যন্ত অংশই নদীর ঊর্ধ্বগতি। ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ হলো ক্ষয়সাধন। ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় নদী স্থলভাগকে ক্ষয় করে এবং তা পরিবহন করে। এ অবস্থায় নদীর প্রধান কাজ ক্ষয় করা হলেও অনেক সময় নদীর ঢাল কমে গেলে হঠাৎ অধিক পরিমাণে পাথরের টুকরা এলে নদী তখন তা বহন করতে না পেরে হালকা সঞ্চয় করে।
প্রশ্ন–১৭। নদীর মধ্যগতি অবস্থা বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : পার্বত্য অঞ্চল পার হয়ে নদী যখন সমভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এর প্রবাহকে মধ্যগতি বলে। মধ্যগতিতে নদীর বিস্তার ঊর্ধ্বগতি অবস্থার তুলনায় অনেক বেশি হয় কিন্তু গভীরতা ঊর্ধ্বগতির তুলনায় অনেক কমে যায়। মধ্যগতি অবস্থায় নদীর সঞ্চয়কাজ শুরু হয়। এ অবস্থায় নদীর দু’দিকের নিম্নভূমি পলি দ্বারা ভরাট হয়ে প্রায় সমভূমিতে পরিণত হয়, যাকে প্লাবন সমভূমি বলে। বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানই এক বিস্তীর্ণ প্লাবন সমভূমি।
প্রশ্ন–১৮। নদী খাতকে কখন গিরিখাত বলা হয়?
উত্তর : উর্ধগতি অবস্থায় নদীর প্রবল স্রোত খাড়া পর্বতগাত্র বেয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হলে ভূপৃষ্ঠ ক্ষয় হয় এবং ভূত্বক থেকে শিলাখণ্ড ভেঙে পড়ে। শিলাগুলো পরস্পরের সাথে এবং নদী খাতের সাথে সংঘর্ষে মসৃণ হয়ে অনেক দূরে চলে যায়। এসব পাথরের সংঘর্ষে নদীর খাত গভীর ও সংকীর্ণ হতে থাকে, যা একপর্যায়ে খুব গভীর খাতে পরিণত হয়। তখন এরূপ খাতকে গিরিসংকট বা গিরিখাত বলা হয়।
প্রশ্ন–১৯। পলল কোণ কী? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : পার্বত্য অঞ্চল থেকে নদী হঠাৎ করে সমভূমিতে পতিত হলে শিলাচূর্ণ, পলিমাটি প্রভৃতি পাহাড়ের পাদদেশে সমভূমিতে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণ ও হাতপাখার ন্যায় ভূখণ্ডের সৃষ্টি হয়। যেসব অঞ্চলে মাটি অধিক পানি শোষণ করতে পারে, সেসব অঞ্চলে পানি শোষণের ফলে শিলাচূর্ণ অধিক দূরত্বে যেতে পারে না। এসব অঞ্চলের সঞ্চয় তখন প্রশস্ত না হয়ে কোণাকৃতি হয়। এ কোণাকৃতির ভূমিরূপই পলল কোণ।
প্রশ্ন-২০। নিচে ছকের মধ্যে শিলা ও খনিজের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।
উত্তর : নিচে ছকের মধ্যে শিলা ও খনিজের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখা হলো:
শিলা | খনিজ |
১. শিলা এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। | ১. খনিজ এক বা একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত হয়। |
২. শিলা অসমসত্ত্ব পদার্থ। | ২. খনিজ সমসত্ত্ব অজৈব পদার্থ। |
৩. শিলা কঠিন হলেও স্ফটিকাকার হয় না। | ৩. খনিজ কঠিন ও স্ফটিকাকার হয়। |
৪. শিলার রাসায়নিক সংকেত নেই। | ৪. খনিজের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত আছে। |
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১। কোনটি থেকে গ্রাফাইট উৎপন্ন হয়?
ক. চুনাপাথর খ. কয়লা
গ. বেলেপাথর ঘ. গ্রানাইট
উত্তর: খ. কয়লা
২। নিম্নগতিতে নদীর-
i. স্রোতের গতি বেড়ে যায়
ii. গভীরতা কমে যায়
iii. পার্শ্বক্ষয় হ্রাস পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
চিত্র দুটি পর্যবেক্ষণ করে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩। চিত্র–১ এর ভূমিরূপ বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে দেখা যায়।
ক. দক্ষিণ-পূর্ব খ. দক্ষিণ-পশ্চিম
গ. উত্তর-পশ্চিম ঘ. উত্তর-পূর্ব
উত্তর: গ. উত্তর-পশ্চিম
৪। চিত্র–১ ও চিত্র–২ উভয়ের ভূমি গঠিত হয়-
i. পলি সঞ্চয়ের মাধ্যমে
ii. নদীর মোহনায়
iii. ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫। গ্রানাইট কোন ধরনের শিলা?
ক. রূপান্তরিত খ. আগ্নেয়
গ. স্তরীভূত ঘ. পাললিক
উত্তর: ঘ.পাললিক
৬। কোয়ার্টজাইট কোনটি থেকে উৎপন্ন হয়?
ক. কাদা খ. শেল
গ. বেলে পাথর ঘ. গ্রাফাইট
উত্তর: গ. বেলে পাথর
৭। কয়লা রূপান্তরিত হয়ে কোন শিলায় পরিণত হয়?
ক. মার্বেল খ. গ্রাফাইট
গ. স্লেট ঘ. গ্রানাইট
উত্তর: খ. গ্রাফাইট
৮। কৃষ্ণ মৃত্তিকাময় মালভূমি কোথায় অবস্থিত?
ক. ভারতের উত্তরাঞ্চলে খ. ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে
গ. পশ্চিমাঞ্চলে ঘ. পূর্বে
উত্তর: খ. ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে
৯। ভূগর্ভে কয়টি স্তর রয়েছে?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: খ. ৩টি
১০। ভূপৃষ্ঠে শিলার কঠিন বহিরাবরণকে কী বলে?
ক. ভূত্বক খ. মণ্ডল
গ. গুরুমণ্ডল ঘ. কেন্দ্রমণ্ডল
উত্তর: ক. ভূত্বক
১১। অশমণ্ডলের উপরের অংশ কী নামে পরিচিত?
ক. ভূত্বক খ. অন্তঃত্বক
গ. গুরুমণ্ডল ঘ. বহিঃমণ্ডল
উত্তর: ক. ভূত্বক
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
১২। ভূত্বকের শিলাস্তরগুলোকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
ক. দুই ভাগে খ. তিন ভাগে
গ. চার ভাগে ঘ. পাঁচ ভাগে
উত্তর: খ. তিন ভাগে
১৩। ভূত্বকের নিচে আরও কয়টি প্রধান স্তর রয়েছে।
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৩টি ঘ. ৪টি
উত্তর: খ. ২টি
১৪। ভূত্বকের নিচে কত কি.মি. পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে?
ক. ১২৭৯ কি.মি. খ. ১৬১২ কি.মি.
গ. ২১৬৫ কি.মি. ঘ. ২৮৮৫ কি.মি.
উত্তর: ঘ. ২৮৮৫ কি.মি.
১৫। গুরুমণ্ডল কোন শিলা দ্বারা গঠিত?
ক. ব্যাসল্ট খ. রায়োলাইট
গ. গ্রানাইট ঘ. অ্যান্ডিসাইট
উত্তর: ক. ব্যাসল্ট
১৬। গুরুমণ্ডলকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ২ ভাগে খ. ৩ ভাগে
গ. ৪ ভাগে ঘ. ৫ ভাগে
উত্তর: ক. ২ ভাগে
১৭। উর্ধ্ব গুরুমণ্ডল কত কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত?
ক. ৩০০ কি.মি. খ. ৪০০ কি.মি.
গ. ৫০০ কি.মি. ঘ. ৭০০ কি.মি.
উত্তর: ঘ. ৭০০ কি.মি.
১৮। কেন্দ্রমণ্ডল কত কি.মি. পুরু?
ক. ১,৫৯০ খ. ৩,৪৮৬
গ. ৪,৭৮০ ঘ. ৫,২৮০
উত্তর: খ. ৩,৪৮৬
১৯। ভূত্বক যেসব উপাদান দিয়ে তৈরি তাকে কী বলে?
ক. শিলা খ. লাভা
গ. ম্যাগমা ঘ. কর্দম
উত্তর: ক. শিলা
২০। কোন খনিজটি একটিমাত্র মৌল দ্বারা গঠিত?
ক. পাললিক শিলা খ. গন্ধক
গ. চুনাপাথর ঘ. বেলেপাথর
উত্তর: খ. গন্ধক
২১। কোন শিলাকে প্রাথমিক শিলা বলে?
ক. আগ্নেয় শিলা খ. পাললিক শিলা
গ. রূপান্তরিত শিলা ঘ. কঠিন শিলা
উত্তর: ক. আগ্নেয় শিলা
২২। কোন শিলা পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্টি হয়?
ক. পাললিক শিলা খ. আগ্নেয় শিলা
গ. রূপান্তরিত শিলা ঘ. কঠিন শিলা
উত্তর: খ. আগ্নেয় শিলা
২৩। আগ্নেয় শিলাকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়?
ক. ২ ভাগে খ. ৩ ভাগে
গ. ৪ ভাগে ঘ. ৫ ভাগে
উত্তর: ক. ২ ভাগে
২৪। কোনটি বহিঃজ আগ্নেয় শিলা?
ক. ব্যাসন্ট খ. গ্রানাইট
গ. গ্যাব্রো ঘ. ল্যাকোলিথ
উত্তর: ক. ব্যাসন্ট
২৫। পাললিক শিলা ভূপৃষ্ঠের মোট আয়তনের শতকরা কত ভাগ দখল করে আছে?
ক. ৫ ভাগ খ. ৭ ভাগ
গ. ১১ ভাগ ঘ. ১৭ ভাগ
উত্তর: ক. ৫ ভাগ
২৬। মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের কত ভাগ পাললিক শিলা?
ক. ৬৫ ভাগ খ. ৭০ ভাগ
গ. ৭৫ ভাগ ঘ. ৮০ ভাগ
উত্তর: গ. ৭৫ ভাগ
২৭। কোনটি পাললিক শিলা?
ক. ব্যাসল্ট খ. রায়োলাইট
গ. ডাইক ঘ. শেল
উত্তর: ঘ. শেল
২৮। কোনটি জীবদেহ থেকে উৎপন্ন হয়?
ক. কয়লা খ. বেলেপাথর
গ. ল্যাকোলিথ ঘ. সিল
উত্তর: ক. কয়লা
২৯। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলকে কী বলে?
ক. উপকেন্দ্র খ. ভূমিকম্প
গ. কেন্দ্র ঘ. আগ্নেয়গিরি
উত্তর: গ. কেন্দ্র
৩০। ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ২ ভাগে খ. ৩ ভাগে
গ. ৪ ভাগে ঘ. ৫ ভাগে
উত্তর: ক. ২ ভাগে
৩১। ভূকম্পন সাধারণত কত সময় স্থায়ী হয়?
ক. কয়েক সেকেন্ড খ. কয়েক মিনিট
গ. আধা ঘণ্টা ঘ. ৪০ মিনিট
উত্তর: ক. কয়েক সেকেন্ড
৩২। শিলাচ্যুতির কারণে বিহারে কত সালে ভূমিকম্প হয়?
ক. ১৯২৬ খ. ১৯৩১
গ. ১৯৩৫ ঘ. ১৯৪১
উত্তর: গ. ১৯৩৫
৩৩। শিলাতে ভঁজের সৃষ্টি হওয়ায় আসামে কত সালে ভূমিকম্প হয়?
ক. ১৯৪০ খ. ১৯৫০
গ. ১৯৬০ ঘ. ১৯৭০
উত্তর: খ. ১৯৫০
৩৪। ১৮৯৯ সালে ভারতের কচ্ছ উপসাগরের উপকূলে কত বর্গ কি.মি. স্থান সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়?
ক. ২০০০ বর্গ কি.মি. খ. ৩০০০ বর্গ কি.মি.
গ. ৪০০০ বর্গ কি.মি. ঘ. ৫০০০ বর্গ কি.মি.
উত্তর: ঘ. ৫০০০ বর্গ কি.মি.
৩৫। কোন সালের ভূমিকম্পে দিবং নদীর গতি পরিবর্তিত হয়?
ক. ১৯০০ খ. ১৯২৫
গ. ১৯৫০ ঘ. ১৯৭৫
উত্তর: গ. ১৯৫০
৩৬। জাপানি ভাষায় ‘সুনামি’ অর্থ কী?
ক. নদীর ঢেউ খ. পুকুরের পানির ঢেউ
গ. হ্রদের ঢেউ ঘ. পোতাশ্রয়ের ঢেউ
উত্তর: ঘ. পোতাশ্রয়ের ঢেউ
৩৭। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সুনামি কতটি দেশে আঘাত হানে?
ক. ১২টি খ. ১৪টি
গ. ১৬টি ঘ. ১৮টি
উত্তর: খ. ১৪টি
৩৮। কোন সালে সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এক বিরাট গহ্বর দেখা যায়?
ক. ১৮৫৮ খ. ১৮৭৫
গ. ১৮৮৩ ঘ. ১৮৮৯
উত্তর: গ. ১৮৮৩
৩৯। পৃথিবীর আকস্মিক পরিবর্তনের জন্য কয়টি প্রধান ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: খ. ৩টি
৪০। যেসব প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের ধীর পরিবর্তন হচ্ছে তাদেরকে প্রধানত কয়টি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়?
ক. দুইটি খ. তিনটি
গ. চারটি ঘ. পাঁচটি
উত্তর: গ. চারটি
৪১। বায়ুর ক্ষয়কাজ কোথায় অধিক দেখা যায়?
ক. মরুভূমিতে খ. সমভূমিতে
গ. বনভূমিতে ঘ. মালভূমিতে
উত্তর: ক. মরুভূমিতে
৪২। কোন অবস্থায় নদীর স্রোতের গতিবেগ বেশি থাকে।
ক. সমভূমি খ. মালভূমি
গ. পার্বত্য ঘ. বিস্তীর্ণ
উত্তর: গ. পার্বত্য
৪৩। অতীতের মানুষ কোন পথে সবচেয়ে বেশি চলাচল করত?
ক. সড়কপথে খ. নদীপথে
গ. আকাশপথে ঘ. পাহাড়ি পথে
উত্তর: খ. নদীপথে
৪৪। প্রবাহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে কী বলে?
ক. ব-দ্বীপ খ. খড়ি
গ. দোয়াব ঘ. পলল পাখা
উত্তর: গ. দোয়াব
৪৫। নদীর অধিক বিস্তৃত মোহনাকে কী বলে?
ক. খাঁড়ি খ. সঞ্জয়
গ. প্রস্রবন ঘ. জলাশয়
উত্তর: ক. খাঁড়ি
৪৬। নদীর গতিপথকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
উত্তর: খ. ৩টি
৪৭। করতোয়া কোন নদীর উপনদী?
ক. পদ্মা খ. মেঘনা
গ. যমুনা ঘ. ব্রহ্মপুত্র
উত্তর: গ. যমুনা
৪৮। মধুমতী কোন নদীর শাখানদী?
ক. পদ্মা খ. মেঘনা
গ. যমুনা ঘ. ব্রহ্মপুত্র
উত্তর: ক. পদ্মা
৪৯। কোনটি নদীর প্রাথমিক অবস্থা?
ক. উর্ধ্বগতি খ. মধ্যগতি
গ. নিম্নগতি ঘ. সমগতি
উত্তর: ক. উর্ধ্বগতি
৫০। উর্ধগতিতে নদীর প্রধান কাজ কোনটি?
ক. ক্ষয়সাধন খ. পলি সঞ্চয়
গ. নদীভাঙন ঘ. পলি পরিবহন
উত্তর: ক. ক্ষয়সাধন
৫১। মধ্যগতি অবস্থায় নদীর কাজ কোনটি?
ক. ক্ষয়সাধন খ. নদীভাঙন
গ. সঞ্চয়কাজ ঘ. ভূমিক্ষয়
উত্তর: গ. সঞ্চয়কাজ
৫২। সেন্ট লরেন্স নদীটি কোন মহাদেশে অবস্থিত?
ক. উত্তর আমেরিকা খ. দক্ষিণ আমেরিকা
গ. আফ্রিকা ঘ. এশিয়া
উত্তর: ক. উত্তর আমেরিকা
৫৩। ৫১৮ মিটার গভীর কোন গিরিখাত?
ক. ক্যানিয়ন খ. খাইবার
গ. সিন্ধু ঘ. বামগ্রাদ
উত্তর: গ. সিন্ধু
৫৪। নদী কয়ভাবে ভূমিরূপের সৃষ্টি করে?
ক. দুইভাবে খ. তিনভাবে
গ. চারভাবে ঘ. পঁচভাবে
উত্তর: ক. দুইভাবে
৫৫। নদীর উর্ধ্ব গতি অবস্থায় ক্রমশ ক্ষয়ের ফলে নদী উপত্যকা ইংরেজি কোন অক্ষরের মতো হয়?
ক. ‘C’ এর মতো খ. ‘D’ এর মতো
গ. ‘O’ এর মতো ঘ. ‘V’ এর মতো
উত্তর: ঘ. ‘V’ এর মতো
৫৬। পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ গিরিখাত কোনটি?
ক. ব্রহ্মপুত্র নদের গিরিখাত খ. সিন্ধুনদের গিরিখাত
গ. যমুনা নদীর গিরিখাত ঘ. পদ্মা নদীর গিরিখাত
উত্তর: খ. সিন্ধুনদের গিরিখাত
৫৭। সিন্ধু নদের গিরিখাতটি কত মিটার গভীর?
ক. ২১৯ খ. ৩১২
গ. ৪৩৬ ঘ. ৫১৮
উত্তর: ঘ. ৫১৮
৫৮। কলোরাডো নদী কোথায় অবস্থিত?
ক. উত্তর আমেরিকাতে খ. দক্ষিণ আমেরিকাতে
গ. কানাডাতে ঘ. মেক্সিকোতে
উত্তর: ক. উত্তর আমেরিকাতে
৫৯। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাতের বিস্তৃতি কত মিটার?
ক. ১৩০-১৮৬ খ. ১৩০-১৯০
গ. ১৩৭-১৫৭ ঘ. ১৩৭-১৯৭
উত্তর: গ. ১৩৭-১৫৭
৬০। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাতের গভীরতা কত?
ক. ১.৫ কি.মি. খ. ২.১ কি.মি.
গ. ২.৪ কি.মি. ঘ. ২.৬ কি.মি.
উত্তর: গ. ২.৪ কি.মি.
৬১। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাতের দৈর্ঘ্য কত?
ক. ১১২ কি.মি. খ. ২৩৬ কি.মি.
গ. ৩৭৮ কি.মি. ঘ. ৪৮২ কি.মি.
উত্তর: ঘ. ৪৮২ কি.মি.
৬২। নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি কোথায় অবস্থিত?
ক. উত্তর আমেরিকায় খ. কানাডায়
গ. জাপানে ঘ. বলিভিয়ায়
উত্তর: ক. উত্তর আমেরিকায়
৬৩। নায়াগ্রা জলপ্রপাত কোন নদীর বিখ্যাত জলপ্রপাত?
ক. আমাজান খ. সেন্ট লরেন্স
গ. ভলগা ঘ. নীলনদ
উত্তর: খ. সেন্ট লরেন্স
৬৪। দিনাজপুর জেলার অধিকাংশ স্থানই কোন সমভূমির অন্তর্গত?
ক. প্লাবন সমভূমি খ. ব-দ্বীপ সমভূমি
গ. পলল পাখা ঘ. পাদদেশীয় পলল সমভূমি
উত্তর: ঘ. পাদদেশীয় পলল সমভূমি
৬৫। ডেলটা কী অক্ষর?
ক. গ্রিক খ. বাংলা
গ. হিন্দু ঘ. স্প্যানিশ
উত্তর: ক. গ্রিক
৬৬। রূপান্তরিত শিলার বৈশিষ্ট্য হলো-
i. স্ফটিকযুক্ত শিলা
ii. কঠিন শিলা
iii. জীবাশ্ম দেখা যায় না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৭। সিয়াল যে উপাদানে গঠিত
i. সিলিকন
ii. অ্যালুমিনিয়াম
iii. মলিবডেনাম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৬৮। ভূপৃষ্ঠের বাহ্যিক অবয়ব যেগুলো–
i. পর্বত
ii. মালভূমি
iii. সমভূমি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৯। গুরুমণ্ডলের শ্রেণিবিভাগ যে দুটি–
i. উর্ধ্ব গুরুমণ্ডল
ii. অন্তঃগুরুমণ্ডল
iii. নিম্ন গুরুমণ্ডল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৭০। গুরুমণ্ডলে যেটি রয়েছে-
i. সিলিকা
ii. লোহা
iii. কার্বন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭১। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে–
i. লোহা
ii. নিকেল
iii. পারদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৭২। খনিজ যে ধরনের হয়–
i. কঠিন
ii. জৈব পদার্থ
iii. স্ফটিকাকার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৭৩। গঠন অনুসারে শিলার শ্রেণিবিভাগ যেটি–
i. আগ্নেয় শিলা
ii. পাললিক শিলা
iii. রূপান্তরিত শিলা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৪। পাললিক শিলা যে ধরনের প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে–
i. যৌগিক
ii. রাসায়নিক
iii. জৈবিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৫। যেটির মাধ্যমে আগ্নেয় ও পাললিক শিলা রূপান্তরিত হয়–
i. ভূআন্দোলন
ii. অগ্ন্যুৎপাত
iii. ভূমিকম্প
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৬। শ্লেট যেটির রূপান্তরিত কথা–
i. গ্রানাইট
ii. শেল
iii. কাদা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭৭। ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তন সংঘটিত হয় যেটির দ্বারা–
i. আগ্নেয়গিরি
ii. হিমবাহ
iii. বৃষ্টিপাত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭৮। ভূমিকম্প যে কারণে সংঘটিত হয় –
i. ভূগর্ভস্থ বাষ্প
ii. তাপ বিকিরণ
iii. শিলাচ্যুতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৯। ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকের মধ্যে যেটির সৃষ্টি হয়–
i. অসংখ্য ভাঁজ
ii. ফাটল
iii. ধসের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮০। ভূমিকম্পের ফলে সমুদ্রের তলদেশে যেটির সৃষ্টি হয়–
i. পাহাড়
ii. পর্বত
iii. দ্বীপ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮১। ভূত্বকে দুর্বল অংশের ফাটল দিয়ে যে ধরনের পদার্থ উর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়–
i. গলিত শিলা
ii. ধাতু
iii. কাদা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮২। অগ্ন্যুৎপাতের ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরির শ্রেণি বিভাগ যেটি–
i. সক্রিয়
ii. সুপ্ত
iii. মৃত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮৩। ১৯৫০ সালে ভূমিকম্পে আসামের কোন নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়?
ক. যমুনা নদী খ. মেঘনা নদী
গ. দিবং নদী ঘ. পদ্মা নদী
উত্তর: গ. দিবং নদী

৮৪। ‘P’ চিহ্নিত মণ্ডলটি নিচের কোনটিকে নির্দেশ করে?
ক. কেন্দ্রমণ্ডল খ. গুরুমণ্ডল
গ. অশ্মমণ্ডল ঘ. ভূত্বক
উত্তর: খ. গুরুমণ্ডল
৮৫। আগ্নেয় পর্বতের উদাহরণ কোনটি?
ক. ব্ল্যাক ফরেস্ট খ. হেনরি
গ. বলিভিয়া ঘ. ভিসুভিয়াস
উত্তর: ঘ. ভিসুভিয়াস
নিচের উদ্দীপকের আলোকে ৮৬ ও ৮৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাংলাদেশের সালেহা জানুয়ারি মাসে এমন এক জায়গায় বেড়াতে গেলেন, সেখানকার সুউচ্চ ভূমিরূপ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গঠিত হয়েছে। আবার তিনি জুন মাসে পর্বতঘেরা আরেকটি অঞ্চলে বেড়াতে গেলেন, সেখানকার বিস্তীর্ণ উচ্চভূমি তাকে অবাক করেছে।
৮৬। সালেহা জানুয়ারি মাসে কোন অঞ্চলে ভ্রমণে গিয়েছিলেন?
ক. মঙ্গোলিয়া খ. তারিম
গ. কলোরাডো ঘ. গ্রিনল্যান্ড
উত্তর: গ. কলোরাডো
৮৭। নিজ দেশের সাথে জুন মাসে ভ্রমণকৃত অঞ্চলের যে ক্ষেত্রে অমিল বিদ্যমান তা হলো-
i. জলবায়ু
ii. বনাঞ্চলের পরিমাণ
iii. জনসংখ্যা ঘনত্ব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৮৮। ভঙ্গিল পর্বতের প্রধান বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. চ্যুতি খ. ভাঁজ
গ. স্তূপ ঘ. গম্বুজ
উত্তর: খ. ভাঁজ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৮৯ ও ৯০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৮৯। ‘R’ চিহ্নিত ভূমিরূপটির নাম কী?
ক. দোয়াব খ. মোহনা
গ. খড়ি ঘ. ব-দ্বীপ
উত্তর: ক. দোয়াব
৯০। ‘S’ চিহ্নিত ভূমিরূপটি-
i. নদীর পার্শ্বক্ষয়ে সৃষ্ট
ii. চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত
iii. প্লাবন সমভূমির অন্তর্ভুক্ত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
চিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ৯১নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৯১। ‘ক’ অঞ্চল কোন শিলা দ্বারা গঠিত?
ক. বহিঃ আগ্নেয় খ. অন্তঃজ আগ্নেয়
গ. রূপান্তরিত ঘ. পাললিক
উত্তর: ক. বহিঃ আগ্নেয়
৯২। কোনটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি?
ক. ফুজিয়ামা খ. মাওনালেয়া
গ. মাওনাকেয়া ঘ. কোহিসুলতান
উত্তর: ক. ফুজিয়ামা
৯৩। উর্ধ্বগতিতে নদী-
i. খাড়া পর্বতগাত্র বেয়ে নিচের দিকে নেমে আসে
ii. দু’পাশের ভূমি কম ক্ষয় করে
iii. পরিণত অবস্থায় থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৯৪। কোন শিলার মধ্যে নানা প্রকার উদ্ভিদ ও জীব–জন্তুর দেহাবশেষ বা জীবাশ্ম দেখা যায়?
ক. আগ্নেয় খ. রূপান্তরিত
গ. বহিঃজ আগ্নেয় ঘ. পাললিক
উত্তর: ঘ. পাললিক
৯৫। কোন উপাদানটি সিয়াল স্তরে থাকে?
ক. নিকেল খ. সিলিকন
গ. পারদ ঘ. ম্যাগনেসিয়াম
উত্তর: খ. সিলিকন
৯৬। সমভূমি সৃষ্টি হয় সাধারণত–
i. বায়ুর ক্ষয় সঞ্চয় ক্রিয়ার ফলে
ii. মানুষের কাজের ফলে
iii. হিমবাহের ক্ষয় ও সঞ্চয় ক্রিয়ার ফলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৯৭। নোভা দক্ষিণ আমেরিকায় বেড়াতে গিয়ে একটি পর্বত দেখে বিস্মিত হলো– যা দেখতে তার হাতের ব্যবহার করা টিস্যুর মতো। নোভার দেখা পর্বতের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. মোচাকৃতির খ. ফাটল
গ. বেলুন ঘ. ভাঁজ
উত্তর: ঘ. ভাঁজ
৯৮। মাওনাকেয়া আগ্নেয়গিরির বৈশিষ্ট্য হলো–
i. এর অগ্ন্যুৎপাত এখনও বন্ধ হয়নি
ii. এটি দীর্ঘকাল ধরে নিষ্ক্রিয় আছে
iii. এর চারদিকে মহাসাগরের অথৈ পানি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
চিত্রটি লক্ষ করে ৯৯ ও ১০০নং প্রশ্নের উত্তর দাও।

৯৯। উদ্দীপকের N চিহ্নিত স্থানটি কী নির্দেশ করে?
ক. চর খ. খাড়ি
গ. দোয়াব ঘ. নদী সংগম
উত্তর: গ. দোয়াব
১০০। উদ্দীপক অনুসারে কোন বিবৃতিটি সঠিক?
ক. Q ও R একই ধরনের নদী
খ. Q ও R দু’টি উপনদী
গ. Q ও R খরস্রোতা নদী
ঘ. Q ও R ভিন্ন ধরনের নদী
উত্তর: ক. Q ও R একই ধরনের নদী
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
১০১। বেশি বৃষ্টিপাত অঞ্চলে চাষকৃত জমির মাটি পানি দ্বারা-
ক. অপসারিত হয় খ. সংকুচিত হয়
গ. জমাট বাঁধে ঘ. পুরু হয়
উত্তর: ক. অপসারিত হয়
১০২। অগ্ন্যুৎপাতের ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরিকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়?
ক. ২ খ. ৩
গ. ৪ ঘ. ৫
উত্তর: খ. ৩
১০৩। কোনটি অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা নয়?
ক. ব্যাসন্ট খ. ব্যাথোলিথ
গ. ল্যাকোলিথ ঘ. ডাইক
উত্তর: ক. ব্যাসন্ট
১০৪। কোনটি মহাদেশীয় মালভূমি নয়?
ক. গ্রিনল্যান্ড খ. স্পেন
গ. তারিম ঘ. অস্ট্রেলিয়া
উত্তর: গ. তারিম
১০৫। পিনাটুবো কী?
ক. হ্রদ খ. নদী
গ. শহর ঘ. পর্বত
উত্তর: ঘ. পর্বত
১০৬। তাসিন মেক্সিকোর পারকোটিন আগ্নেয়গিরি দেখতে গেল। এটি কোন ধরনের আগ্নেয়গিরি?
গ. সুপ্ত ঘ. সক্রিয়
উত্তর: খ. সিনডারকোন
১০৭। কোনটি রূপান্তরিত শিলা?
ক. মার্বেল খ. কয়লা
গ. ব্যাসল্ট ঘ. চুনাপাথর
উত্তর: ক. মার্বেল
১০৮। ‘আল্পস‘ কোন প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে?
ক. লাভা জমাট বেঁধে
খ. নদী মোহনায় অবক্ষেপণের মাধ্যমে
গ. পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে
ঘ. ভূত্বকের নিচে ম্যাগমা সঞ্চিত হয়ে
উত্তর: গ. পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে
১০৯। রকি পর্বত কোথায় অবস্থিত?
ক. এশিয়ায় খ. উত্তর আমেরিকায়
গ. দক্ষিণ আমেরিকায় ঘ. ইউরোপে
উত্তর: খ. উত্তর আমেরিকায়
১১০। দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে কী বলে?
ক. নদীগর্ভ খ. নদী সংগম
গ. নদী উপত্যকা ঘ. নদী অববাহিকা
উত্তর: খ. নদী সংগম
আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: বিধান ও হিমেল কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ইতালি গেলেন। একদিন বিকেলে তারা ঘুরতে গিয়ে দেখতে পান, একটি স্থানের ভূমি খাড়া ঢালবিশিষ্ট এবং দেখতে অনেকটা মোচাকৃতির। কথা প্রসঙ্গে তারা জানতে পারেন, বিধানের বাড়ি বাংলাদেশের বান্দরবানে এবং হিমেলের বাড়ি খুলনায়।
ক. নদী উপত্যকা কাকে বলে?
খ. উর্ধ্বগতিতে নদী উপত্যকা ‘V’ আকৃতির হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. বিধান ও হিমেলের দেখা ভূমিরূপটির প্রাকৃতিক গঠন বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তাদের উভয়ের বাড়ি যে অঞ্চলে অবস্থিত সেই অঞ্চল দুটির ভূমির গঠন বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে খাতের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় সে খাতকে উক্ত নদীর উপত্যকা বলা হয়।
খ. উর্ধ্বগতি অবস্থায় নদীর স্রোতের বেগ প্রবল হওয়ার কারণে নদী বড় বড় শিলাখণ্ড বহন করে নিচের দিকে অগ্রসর হয়। নদীখাতে পার্শ্ব অপেক্ষা নিম্নদিকের শিলা বেশি কোমল বলে পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এভাবে ক্রমশ ক্ষয়ের ফলে নদী উপত্যকা ইংরেজি ‘v’ আকৃতির মতো হয়।
গ. উদ্দীপকের বিধান ও হিমেলের দেখা ভূমিরূপটি হলো আগ্নেয় পর্বত। সাধারণত আগ্নেয়গিরির উদগীরিত লাভা সঞ্চয়ের মাধ্যমে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়ে থাকে। নিচে এর ভূপ্রাকৃতিক গঠন বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-
আগ্নেয়গিরি থেকে উদগীরিত পদার্থ সঞ্চিত ও জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়। সঞ্চয় ক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় বলে একে সঞ্চিত পর্বতও বলা হয়। এ পর্বত সাধারণত মোচাকৃতির হয়ে থাকে। আগ্নেয়গিরির উদগীরিত লাভা ধীরে ধীরে শীতল হয়ে এ ধরনের পর্বত সৃষ্টি হয় বলে এর আকৃতি অনেকটা মোচাকৃতির। ইতালির ভিসুভিয়াস, কেনিয়ার কিলিমানজারো, জাপানের ফুজিয়ামা এবং ফিলিপাইনের পিনাটুবো এ জাতীয় পর্বত।
এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
- এ ধরনের পর্বত সাধারণত মোচাকৃতির হয়।
- এ পর্বতের উচ্চতা ও ঢাল খুব বেশি হয় না।
- এ পর্বতগুলোর লাভাস্তরের মাঝে প্রস্তর খণ্ড ও ছাই দেখা যায়।
- এটি আগ্নেয়শিলা দ্বারা গঠিত হয়।
- আগ্নেয় পর্বতের বিস্তৃতি ও উচ্চতা কমবেশি হয়ে থাকে।
উপযুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, বিধান ও হিমেলের দেখা ভূমিরূপটি অর্থাৎ আগ্নেয় পর্বতের ভূপ্রাকৃতিক গঠন বৈশিষ্ট্য বৈচিত্রময়।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিধান ও হিমেলের বাড়ি যথাক্রমে বান্দরবান ও খুলনায় অবস্থিত। এ অঞ্চল দুটির ভূমির গঠন বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ নিচে করা হলো-
বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় যে ভূমি দেখতে পাওয়া যায় তা টারশিয়ারি যুগের পাহাড় নামে পরিচিত। এ অঞ্চলের ভূমি সাধারণত বন্ধুর প্রকৃতির এবং ঢালবিশিষ্ট। বাংলাদেশের বেশির ভাগ পাহাড় এ অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্র তলদেশের বিস্তারিত অবনমিত স্থানে দীর্ঘকাল ধরে বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হয়। এর চাপে অবনমিত স্থান আরও নিচে নেমে যায়। পরবর্তী পর্যায়ে ভূ-আলোড়ন বা ভূমিকম্পের ফলে এবং পার্শ্ববর্তী সুদৃঢ় ভূমিখন্ডের প্রবল পার্শ্বচাপের কারণে উর্ধ্বভাঁজ ও নিম্নভাঁজের সৃষ্টি হয়। কোমল পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে এ ধরনের পর্বত গঠিত হয়।
অন্যদিকে, খুলনা অঞ্চলে দেশের বৃহত্তম বন সুন্দরবন দেখতে পাওয়া যায়। এ অঞ্চলের ভূমি প্রতিনিয়ত সমুদ্রের পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে প্রত্যহ পলি পড়ে ভূমি বেশ উর্বর প্রকৃতির হয়েছে। প্রতিনিয়ত পানিতে প্লাবনের কারণে এখানকার মাটি লবণাক্ত। এ লবণাক্ত মৃত্তিকায় স্রোতজ বনভূমি তথা সুন্দরবন গড়ে উঠেছে।
উপযুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, বিধান ও হিমেলের বাড়ি যে অঞ্চলে অবস্থিত সেই অল দুটির ভূমির গঠন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
প্রশ্ন–২:

ক. খনিজ কী?
খ. পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উপরের চিত্রে ‘A’ চিহ্নিত স্তরের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উপরের চিত্রে ‘B’ ও ‘C’ স্তরের গঠন বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা আছে কি? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কতগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তা-ই খনিজ।
খ. সাধারণত পলি সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলা গঠিত হয়। পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবনিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে। জীবদেহ থেকে উৎপন্ন হয় বলে কয়লা ও খনিজ তেলকে জৈব শিলাও বলা হয়। পাললিক শিলা নানা প্রকার উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর দেহাবশেষের সমন্বয়ে গঠিত হয় বলে অনেক পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়।
গ. উপরের চিত্রে ‘A’ চিহ্নিত অংশটি হলো ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল। এ মণ্ডলটি গুরুমন্ডলের সবচেয়ে উপরে এবং ভূত্বকের নিচে অবস্থিত। নিচে উর্ধ্ব গুরুমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-
- ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
- এই মণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
- এই মণ্ডলে ক্রোমিয়াম, লোহা, সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকায় একে ক্রোফেসিমা বলা হয়।
- এ মণ্ডলের শিলার তাপ গলনাঙ্কের কাছাকাছি হওয়ায় তা নরম অবস্থায় আছে, যা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার গভীর । তাই এ স্তরকে নমনীয় মণ্ডল বলা হয়।
- এ অঞ্চল থেকেই প্রধানত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হয়।
- প্রচণ্ড চাপের জন্য এখানে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়। ফলে এর উপর ভাসমান মহাদেশগুলো চলমান অবস্থায় থাকে। এতে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।
ঘ. হ্যাঁ যা, উপরের চিত্রে ‘B’ ও ‘C’ স্তরের গঠন বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা আছে। চিত্রে ‘B’ হলো অন্তঃগুরুমণ্ডল আর ‘C’ হলো বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল। গঠন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ‘B’ ও ‘C’ স্তরের মধ্যে যথেষ্ট ভিন্নতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি নিচে উপস্থাপন করা হলো-
গুরুমণ্ডলের নিচের দিকে ৭০০ কিলোমিটার থেকে ২,৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যাপ্ত অঞ্চলকে অন্তঃগুরুমণ্ডল বলে। এ মণ্ডলের ঘনত্ব ৫.৫ থেকে ১০। তবে ঘনত্বের পরিমাণ নিচের দিকে ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এ মণ্ডলে প্রধানত নিকেল (Ni) লোহা (Fe) সিলিকন (Si) ম্যাগনেসিয়াম (Mg) বেশি থাকে। তাই এ মণ্ডলকে নিফেসিমা (Ni-Fe-Si-Ma) বলা হয়।
মনে করা হয়, এ মণ্ডলটি এখনও বেশ উত্তপ্ত অবস্থায় আছে। প্রচণ্ড তাপ ও চাপের জন্য এ স্তরটি সম্ভবত কঠিন ও তরলের মাঝামাঝি কর্দমাক্ত অবস্থায় আছে। এর নিম্নংশের তাপমাত্রা প্রায় ৩,০০০° সেলসিয়াস এর অধিক। গুরুমণ্ডলের ঠিক নিচেই বহিঃকেন্দ্রমণ্ডলের অবস্থান।
ধারণা করা হয়, এটি তরল অবস্থায় আছে। এর বিস্তৃতি প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার। বহিঃকেন্দ্রের মধ্য দিয়ে ভূমিকম্পের P তরঙ্গ ধীরগতিতে প্রবাহিত হয় কিন্তু S তরঙ্গ প্রবেশ করতে পারে না। এ মণ্ডলের গঠনকারী উপাদানগুলো হলো লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা। নিকেল ও লোহা এ মণ্ডলের প্রধান উপাদান।
সুতরাং বলা যায়, ‘B’ ও ‘C’ স্তরের গঠন বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা রয়েছে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন– ৩:

ক. দোয়াব কাকে বলে?
খ. কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের দৃশ্য ‘তরঙ্গযান’ এর মতো? ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘Y’ কোন মণ্ডলের অন্তর্গত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘x’ ও ‘Z. এর উপাদানগুলো বিবেচনায় রেখে কোন স্তরটি প্রাণিকুলের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রবাহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে দোয়াব বলে।
খ. প্রাকৃতিক দুর্যোগ সুনামির দৃশ্য ‘তরঙ্গযান’ এর মতো। সুনামির পানির ঢেউ সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো নয়। এটা সাধারণ ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বিশালাকৃতির। অতি দ্রুত ফুঁসে ফুলে ওঠা জোয়ারের মতো যা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করে। সুনামি হলো পানির এক মারাত্মক ঢেউ যা সমুদ্রের মধ্যে বা বিশাল হ্রদে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে।
গ. ‘Y’ গুরুমণ্ডলের অন্তর্গত। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। এ মণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। এ মণ্ডল দুভাগে বিভক্ত; যথা-
• উর্ধ্ব গুরুমণ্ডল যা ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
• নিম্ন গুরুমণ্ডল প্রধানত আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এবং সিলিকন ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত।
ঘ. বৃত্তের ‘X’ দ্বারা কেন্দ্রমণ্ডল আর ‘Z’ দ্বারা অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বককে বোঝানো হয়েছে। এ মণ্ডল দুটির মধ্যে অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক। স্তরটি প্রাণিকূলের জন্য অধিক উপযোগী। নিচে তা যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করা হলো-
ভূত্বকের উপরিভাগেই পৃথিবীর বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন- সমভূমি, মালভূমি, পাহাড়, পর্বত, নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর ইত্যাদি। সমভূমি ছাড়া পৃথিবীতে কোনো কৃষিজ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হতো না। আর পশুপালনের ক্ষেত্রেও সমভূমি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সাধারণত মানুষের আবাসস্থল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সমভূমির কোনো বিকল্প নেই।
ভূত্বকের মালভূমি, পাহাড়, পর্বত পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পার্বত্য এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাসসহ বহু মূল্যবান খনিজ সম্পদ রয়েছে যা আমাদের নানাভাবে উপকার করছে। নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগরের উপকারিতা অপরিসীম। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ জলমাধ্যমগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়া এগুলো বিভিন্ন মাছ সরবরাহের মাধ্যমে আমাদের আমিষের চাহিদা মেটানো ছাড়াও মূল্যবান খনিজ উপহার দেয়। নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও বিশেষ অবদান রাখে।
পরিশেষে বলা যায়, অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক স্তরটি প্রাণিকূলের জন্য অধিক উপযোগী।
প্রশ্ন–৪ :

ক. রূপান্তরিত শিলা কাকে বলে?
খ. পোতাশ্রয়ের ঢেউ কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের চিত্র ‘A’ এর বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র দুটির মধ্যে কোনটি মানবজীবনে অধিক ভয়াবহতা বয়ে নিয়ে আসে তা বিশ্লেষণ কর।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আগ্নেয় ও পাললিক শিলা যখন প্রচণ্ড চাপ, উত্তাপ এবং রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে নতুনরূপ ধারণ করে তখন তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে।
খ. ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’ জাপানি সুনামি শব্দ থেকে এসেছে। সুনামির পানির ঢেউ সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো নয়। এটা সাধারণ ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বিশালাকৃতির। অতি দ্রুত ফুসে ফুলে ওঠা জোয়ারের মতো যা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলোচ্ছাসের সৃষ্টি করে। সুনামি হলো পানির এক মারাত্মক ঢেউ যা সমুদ্রের মধ্যে বা বিশাল হ্রদে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে।
গ. উদ্দীপকের চিত্র ‘A’ দ্বারা আগ্নেয়গিরি বোঝানো হয়েছে। সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে আগ্নেয়গিরি অন্যতম। নিচে এর বর্ণনা দেওয়া হলো-
ভূপৃষ্ঠের দুর্বল অংশের ফাটল দিয়ে ভূগর্ভের উষ্ণ বায়ু, গলিত শিলা, ধাতু, ভস্ম, জলীয়বাষ্প, উত্তপ্ত পাথর খণ্ড, কাদা, ছাই প্রভৃতি প্রবল বেগে উর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়। ভূপৃষ্ঠে ঐ ছিদ্র বা ফাটলের চারপাশে ক্রমশ জমাট বেঁধে যে উঁচু মোচাকৃতি পর্বত সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয়গিরি বলে। আগ্নেয়গিরির মুখকে জ্বালামুখ এবং জ্বালামুখ দিয়ে নির্গত গলিত পদার্থকে লাভা বলে। জ্বালামুখ ভূঅভ্যন্তরের গলিত শিলা ভাণ্ডারের সাথে ফাটল দ্বারা সরাসরি যুক্ত। গলিত শিলা কখনো ভূপৃষ্ঠের উদগিরণের পরিবর্তে তলদেশেই জমাট বেঁধে যায়।
আগ্নেয়গিরির উদগিরণ শেষে জ্বালামুখ ধ্বসে পড়ে যে গর্তের সৃষ্টি করে তাকে ক্যালডেরা বলে। সাধারণত ভূত্বকের দুর্বল স্থান বা ফাটল দিয়ে ভূঅভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা, ভস্ম, ধাতু প্রবল বেগে বের হয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়। যে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এখনো বন্ধ হয়নি, তাকে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলে। অগ্ন্যুৎপাত সাময়িককালের জন্য বন্ধ থাকলে তা সুপ্ত আগ্নেয়গিরি এবং অগ্ন্যুৎপাত স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেলে তাকে মৃত আগ্নেয়গিরি বলে।
অপরদিকে গম্বুজ আকৃতির শিল্ড আগ্নেয়গিরিগুলোর তলদেশ চওড়া এবং ঢাল সামান্য, সাধারণত আকারে বৃহৎ।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র ‘A’ হলো আগ্নেয়গিরি আর চিত্র ‘B’ হলো ভূমিকম্প। এ দুটি চিত্রের মধ্যে চিত্র ‘B’ মানবজীবনে অধিক ভয়াবহতা বয়ে নিয়ে আসে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-
ভূমিকম্প মানুষের কাছে বিভীষিকার মতো। ভূমিকম্পে এর উপকেন্দ্রের সন্নিহিত অঞ্চলের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে অগণিত গৃহপালিত পশু ও মানুষ মৃত্যুপথে পতিত হয়। তড়িৎবর্তক্ষেপ পাইপ ভেঙে দাহ্য গ্যাস নির্গমনের ফলে শহর ও জনপদে আগুন ধরে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া থেকে আগুনে পুড়ে বেশি লোক মারা যায়।
সমুদ্র উপকূলবর্তী জলোচ্ছাসের ফলেও বহুস্থানে অগণিত লোক হতাহত হয়। ধ্বস নামার দরুন এবং ভূমিতে ফাটল সৃষ্টি হয়ে রাস্তাঘাট অকেজো হয়ে পড়ে। সংকোচনের ফলে রেলপথ বেঁকে যায়, সেতুর ক্ষতিসাধন হয়, ভূগর্ভস্থ পানির পাইপ, বৈদ্যুতিক ও টেলিগ্রাফ কেবল ভেঙে যায়। এছাড়া এলাকাটি পাহাড়ি হলে তা পাদদেশের লোকালয়ে কাদার ধ্বস, ভূমিধস বা শিলাধসের সৃষ্টি করে, যা ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
পরিশেষে বলা যায়, ভূমিকম্প মানবজীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন- ৫ :

ক. ভূমিকম্প কাকে বলে?
খ. কোন শিলাকে প্রাথমিক শিলা বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘B’ চিহ্নিত ভূমিরূপটির ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে ‘A’, ‘B’ ও ‘C’ চিহ্নিত ভূমিরূপটির কোনটি বসবাসের জন্য উপযোগী? বিশ্লেষণ কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর কঠিন ভূত্বকের কোনো কোনো অংশ প্রাকৃতিক কোনো কারণে কখনো কখনো অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ কেঁপে ওঠে। ভূত্বকের এরূপ আকস্মিক কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।
খ. আগ্নেয়শিলাকে প্রাথমিক শিলা বলা হয়। জন্মের প্রথমে পৃথিবী একটি উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড ছিল। এ গ্যাসপিণ্ড ক্রমান্বয়ে তাপ বিকিরণ করে তরল হয়। পরে আরও তাপ বিকিরণ করে এর উপরিভাগ শীতল ও কঠিন আকার ধারণ করে। এভাবে গলিত অবস্থা থেকে ঘনীভূত হয়ে আগ্নেয়শিলা গঠিত হয়। এ শিলায় কোনো জীবাশ্ম নেই। এ শিলা পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্টি হয়।
গ. উদ্দীপকে ‘B’ চিহ্নিত ভূমিরূপটি হলো- মালভূমি। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো:
পর্বত থেকে নিচু কিন্তু সমভূমি থেকে উঁচু খাড়া ঢালযুক্ত ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ সমতলভূমিকে মালভূমি বলে। মালভূমির উচ্চতা শত মিটার থেকে কয়েক হাজার মিটার পর্যন্ত হতে পারে। পৃথিবীর বৃহত্তম মালভূমির উচ্চতা ৪,২৭০ থেকে ৫,১৯০ মিটার। অবস্থানের ভিত্তিতে মালভূমি তিন ধরনের; যথা-
• পর্বতমধ্যবর্তী মালভূমি : এ মালভূমি পর্বতবেষ্টিত থাকে। তিব্বত মালভূমি একটি পর্বতমধ্যবর্তী মালভূমি যার উত্তরে কুনলুন ও দক্ষিণে হিমালয় পর্বত এবং পূর্ব-পশ্চিমেও পর্বত ঘিরে আছে। দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়া, মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো এবং এশিয়ার মঙ্গোলিয়া ও তারিম এ ধরনের মালভূমি।
• পাদদেশীয় মালভূমি : উচ্চপর্বত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এর পাদদেশে তলানি জমে যে মালভূমির সৃষ্টি হয় তাকে পাদদেশীয় মালভূমি বলে। উত্তর আমেরিকার কলোরাডো এবং দক্ষিণ আমেরিকার পাতাগোনিয়া পাদদেশীয় মালভূমি।
• মহাদেশীয় মালভূমি : সাগর বা নিম্নভূমি পরিবেষ্টিত বিস্তীর্ণ উচ্চভূমিকে মহাদেশীয় মালভূমি বলে। এ ধরনের মালভূমির সঙ্গে পর্বতের কোনো সংযোগ থাকে না। স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, গ্রিনল্যান্ড, এন্টার্কটিকা এবং ভারতীয় উপদ্বীপ এর অন্যতম উদাহরণ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রে ‘A’ হলো পাহাড়, ‘B’ হলো মালভূমি আর ‘C’ হলো সমভূমি। পাহাড় ও মালভূমি থেকে সমভূমিতে বসবাস করা অধিক উপযোগী। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-
পর্বতের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর, ঢাল খুব খাড়া এবং সাধারণত চূড়া বিশিষ্ট হয়। কোনো কোনো পর্বত বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে। আবার কিছু পর্বত আছে যেগুলো পৃথক শৃঙ্গসহ ব্যাপক এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে। তাই এখানে মানুষের বসবাস অনুপযোগী। মালভূমি পর্বত থেকে নিচু হয় কিন্তু সমভূমি থেকে উঁচু হয়। মালভূমি অনেক সময় ঢালযুক্ত ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ সমভূমি এলাকাজুড়ে থাকে। অনেক সময় মালভূমির উচ্চতা শত মিটার থেকে কয়েক হাজার মিটার পর্যন্ত হয়। তাই মালভূমিতে মানুষের বসবাস অনুপযোগী।
অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অল্প উঁচু মৃদু ঢালবিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভূমিকে সমভূমি বলে। মানবজাতির অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ সাধনে সমভূমির অবদান অত্যন্ত বেশি। বর্তমানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯০ ভাগই সমভূমি অঞ্চলে বাস করে। সমভূমিগুলোর উর্বর মৃত্তিকা কৃষিকার্যে সুবিধা দান করে। তাই প্রাচীনকাল থেকে নদী গঠিত সমভূমি মানুষকে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে উৎসাহিত করেছে। সমভূমিতে উন্নত পরিবহনব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
সমতল ভূপ্রকৃতির জন্য রাস্তাঘাট ও রেলপথ নির্মাণ সহজসাধ্য। নদীগঠিত সমভূমিতে কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়। এসব খনিজ দ্রব্য মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কৃষিজ ফসল, শিল্পদ্রব্য, খনিজদ্রব্য প্রভৃতির উৎপাদন ও সুষ্ঠু পরিবহনব্যবস্থা আছে বলে সমভূমি অঞ্চলে অনেক ব্যবসায়-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, মানুষের জীবনযাত্রা নির্বাহের সব সুযোগ-সুবিধা যেভাবে সমভূমি থেকে পাওয়া যায়, পার্বত্যভূমি বা মালভূমি থেকে তা কখনো পাওয়া যায় না। তাই সমভূমি মানুষের বসবাসের জন্য উপযুক্ত।
প্রশ্ন–৬ :

ক. ভূআলোড়ন কাকে বলে?
খ. কোন শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ‘R’ স্তরটি ভূঅভ্যন্তরের কোন স্তর? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ‘P’ এবং ‘O’ রয়ের মধ্যে কোনটি অধিক বিস্তৃত তার তুলনামূলক আলোচনা কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ এখনও উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় রয়েছে। এসব উত্তপ্ত বস্তুর মধ্যে তাপ ও চাপের পার্থক্য হলে ভূত্বকে যে আলোড়ন ঘটে তাকে ভূআলোড়ন বলে।
খ. পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়। পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয়েছে তাকে পাললিক শিলা বলে। বৃষ্টি, বায়ু, তুষার, তাপ, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিচূর্ণীভূত হয়ে রূপান্তরিত হয় এবং জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে তলানিরূপে কোনো নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে এছাড়া জীবদেহ থেকে উৎপন্ন হয় বলে পাললিক শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়।
গ. উদ্দীপকের ‘R’ স্তরটি হলো অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত হালকা উপাদানে গঠিত হয়েছে অশ্মমণ্ডল। এ মণ্ডলের বাইরের আবরণই হলো ভূত্বক। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তা-ই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব অনেক কম, গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্রতলদেশ তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। ভূত্বকে সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়ামরূপী উপাদান অধিক। ভূত্বকের শিলাস্তরগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে; যথা- সিয়াল বা হালকা শিলাস্তর ও সিমা বা ভারী শিলাস্তর।
সাধারণত মহাদেশীয় ভূত্বকের স্তরকে সিয়াল বলে, সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত। এ শিলাস্তর সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী। সমুদ্রতলদেশ এ শিলাস্তর দিয়ে তৈরি।
ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়ব দেখা যায়। যেমন- পর্বত মালভূমি ও সমভূমি ইত্যাদি। ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে।
ঘ. উদ্দীপকের ‘P’ হলো কেন্দ্রমণ্ডল আর ‘Q’ হলো গুরুমণ্ডল। এ মণ্ডল দুটির মধ্যে কেন্দ্রমণ্ডল অধিক বিস্তৃত। নিচে মণ্ডল দুটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এ মণ্ডল। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। ভূকম্পন তরঙ্গের সাহায্যে জানা গেছে যে, কেন্দ্রমণ্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ আছে, যা প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং একটি কঠিন অন্তঃভাগ আছে, যা ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিমা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান নিকেল ও লোহা।
অপরদিকে ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলই হলো গুরুমণ্ডল। এ মণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। গুরুমণ্ডল মূলত দু-ভাগে বিভক্ত।
• ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল যা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ মণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
• নিম্ন গুরুমণ্ডল প্রধানত আয়রণ অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়ামঅক্সাইড এবং সিলিকন অক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত।
পরিশেষে বলা যায়, কেন্দ্রমণ্ডল ও গুরুমণ্ডল হলো ভূঅভ্যন্তরের দুটি স্তর যা বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত এবং বিস্তৃতি ভিন্ন।
প্রশ্ন–৭:

ক. খনিজ কাকে বলে?
খ. ব-দ্বীপ নদীর মোহনায় সৃষ্টি হয় কেন?
গ. ‘A’ পর্বতের গঠপ্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
ঘ. ‘B’ ও ‘C’ পর্বতের তুলনামূলক আলোচনা কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কতগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তাকে খনিজ বলে।
খ. বদ্বীপ এক প্রকার সঞ্চয়জাত সমভূমি। নদী প্রবাহের সময় পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি বহন করে নিয়ে আসে। এসব তলানি নদীর মোহনায় সঞ্চিত হয়ে বদ্বীপ সৃষ্টি করে। তাই বলা যায়, নদী মোহনার দিকে প্রবাহিত হওয়ায় নদী দ্বারা বাহিত তলানি জমে নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়।
গ. ছকের ‘A’ চিহ্নিত পর্বতটি এশিয়ার হিমালয় পর্বত যা ভঙ্গিল পর্বতের অন্তর্ভুক্ত। নিচে ভঙ্গিল পর্বতের গঠন প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলো-
ভঙ্গ বা ভাঁজ থেকে ‘ভঙ্গিল’ শব্দটির উৎপত্তি। কোমল পাললিক শিলায় ভাঁজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয়েছে, তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। এশিয়ার হিমালয়, ইউরোপের আল্পস, উত্তর আমেরিকার রকি, দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বত ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ। ভঙ্গিল পর্বতের প্রধান বৈশিষ্ট্য ভাঁজ। সমুদ্রতলদেশের বিস্তারিত অবনমিত স্থানে দীর্ঘকাল ধরে বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হয়। এর চাপে অবনমিত স্থান আরও নিচে নেমে যায়।
পরবর্তী পর্যায়ে ভূআলোড়ন বা ভূমিকম্পের ফলে এবং পার্শ্ববর্তী সুদৃঢ় ভূমিখণ্ডের প্রবল পার্শ্বচাপের কারণে ঊর্ধ্বভাঁজ ও নিম্নভাঁজের সৃষ্টি হয়। বিস্তৃত এলাকাজুড়ে এসব উর্ধ্ব ও অধঃভাঁজ সংবলিত ভূমিরূপ মিলেই ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয়।
উপযুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, ভঙ্গিল পর্বত ভূআলোড়ন, ভূমিকম্প ও ভূমিখণ্ডের প্রবল পার্শ্বচাপ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার ফলে গঠিত হয়ে থাকে।
ঘ. ছকের ‘B’ চিহ্নিত পর্বতটি ভারতের বিন্ধ্যা পর্বত যা চ্যুতি-স্তূপ পর্বতের অন্তর্ভুক্ত আর ছকের ‘C’ চিহ্নিত পর্বতটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি পর্বত যা ল্যাকোলিথ পর্বতের অন্তর্গত। নিচে এ দুটি পর্বতের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো-
ভূআলোড়নের সময় ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে প্রসারণ এবং সংকোচনের সৃষ্টি হয়। এ প্রসারণ এবং সংকোচনের জন্য ভূত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। কালক্রমে এ ফাটল বরাবর ভূত্বক ক্রমে স্থানচ্যুত হয়। ভূগোলের ভাষায় একে চ্যতি বলে। ভূত্বকের এ স্থানচ্যুতি কোথাও উপরের দিকে আবার কোথাও নিচের দিকে হয়। চ্যুতির ফলে উঁচু হওয়া অংশকে স্তূপ পর্বত বলে। ভারতের বিন্ধ্যা ও সাতপুরা পর্বত, জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট, পাকিস্তানের লবণ পর্বত চ্যুতি-স্তূপ পর্বতের উদাহরণ।
অপরদিকে পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাসের দ্বারা স্থানান্তরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো কোনো সময় বাধা পেয়ে এগুলো ভূপৃষ্ঠের উপরে না এসে ভূত্বকের নিচে একস্থানে জমাট বাঁধে। ঊর্ধ্বমুখী চাপের কারণে স্ফীত হয়ে ভূত্বকের অংশবিশেষ গম্বুজ আকার ধারণ করে।
এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ পর্বত বলে। ঢাল সামান্য খাড়া স্বল্প অঞ্চলব্যাপী বিস্তৃত। এ পর্বতের কোনো শৃঙ্গ থাকে না। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি পর্বত এর উদাহরণ।
এসএসসি সকল বিষয় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৮ :

ক. ভূতৃক কাকে বলে?
খ. অস্তরীভূত শিলা কীভাবে গঠিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘A’ অংশটি পৃথিবীর কোন স্তরকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘B’ ও ‘C’ স্তরে কোনটিতে পারদের আধিক্য রয়েছে? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাকে ভূত্বক বলে।
খ. জন্মের প্রথমে পৃথিবী একটি উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড ছিল। এ গ্যাসপিণ্ড ক্রমান্বয়ে তাপবিকিরণ করে তরল হয়। পরে আরও তাপ বিকিরণ করে এর উপরিভাগ শীতল ও কঠিনাকার ধারণ করে। এভাবে গলিত অবস্থা থেকে ঘনীভূত বা কঠিন হয়ে অস্তরীভূত শিলা গঠিত হয়েছে। এ শিলায় কোনো জীবাশ্ম নেই।
গ. চিত্রের ‘A’ অংশটি পৃথিবীর ভূত্বক স্তরকে নির্দেশ করে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তা-ই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম, গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্রতলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু।
সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল (Sial) স্তর বলে, যা সিলিকন (Si) ও অ্যালুমিনিয়াম (AI) দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন (Si) ও ম্যাগনেসিয়াম (Mg) যা সাধারণভাবে সিমা (Sima) নামে পরিচিত। অনুমান করা হয় যে, এ ব্যাসল্ট স্তরই পৃথিবীজুড়ে বহিরাবরণ ও গভীর সমুদ্রতলদেশে বিদ্যমান। ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন- পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি। ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে।
ঘ. চিত্রের ‘B’ স্তরটি হলো গুরুমণ্ডল আর ‘C’ স্তরটি হলো কেন্দ্রমণ্ডল। এ স্তর দুটির মধ্যে কেন্দ্রমণ্ডলে পারদের আধিক্য রয়েছে। নিচে উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেওয়া হলো-
ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলই হলো গুরুমণ্ডল। এ মণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এজন্যই এ স্তরকে ব্যাসল্ট অঞ্চল বলা হয়। এ মণ্ডলের আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৯-৮.০। এ মণ্ডল প্রধানত সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন, আয়রণ অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড ও সিলিকন অক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত। এর মধ্যে সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এ স্তরটি সিমা নামে পরিচিত।
অপরদিকে গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এ মণ্ডল বিস্তৃত। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। এ মণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা। অন্যান্য মণ্ডলের তুলনায় স্থানভেদে এ মণ্ডলের তাপমাত্রা ৩০০০°-৫০০০° সেলসিয়াস বা এরও বেশি।
এ থেকে প্রমাণিত হয় কেন্দ্র মণ্ডলে পারদের আধিক্য রয়েছে।
প্রশ্ন– ৯ : ইন্দোনেশিয়ার পালু শহর ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০১৮তে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কাদামাটি ও বিভিন্ন আবর্জনায় আচ্ছাদিত হয়। প্রায় ১৪০০ লোক মৃত্যুবরণ করে।
ক. ভূ-পৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তন কাকে বলে?
খ. ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের প্রাকৃতিক দুর্যোগটি সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের এরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলাফল বিশ্লেষণ কর।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি, যেমন— সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত নদী, হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা যে পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত হয় তাকে ধীর পরিবর্তন বলে ।
খ. পোতাশ্রয়ের ঢেউ জাপানি সুনামি শব্দ থেকে এসেছে। সুনামির পানির ঢেউ সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো নয়। এটা স্বাভাবিক ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বিশালাকৃতির। অতি দ্রুত ফুঁসে ওঠা জোয়ারের মতো যা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করে। সুনামি হলো পানির এক মারাত্মক ঢেউ যা সমুদ্রের মধ্যে বা বিশাল হ্রদে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে ।
গ. উদ্দীপকের প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হলো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। নিচে এ দুর্যোগটি সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হলো—
• যখন ভূপৃষ্ঠের চাপ কমে যায় তখন ভূগর্ভের শিলাসমূহ স্থিতিস্থাপক অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় পরিণত হয় । এতে শিলার আয়তন বৃদ্ধি পায়। ফলে তরল পদার্থ দুর্বল স্থান ভেদ করে প্রবলবেগে উৎক্ষিপ্ত হয়ে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি করে ।
• কখনো কখনো ভূত্বকের ফাটল দিয়ে নদী-নালা, খাল-বিল এবং সমুদ্রের পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করলে প্রচণ্ড উত্তাপে বাষ্পীভূত হয়। ফলে আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে ভূত্বক ফাটিয়ে দেয়। তখন ঐ ফাটলের ভিতর দিয়ে পানি, বাষ্প, তপ্ত শিলা প্রভৃতি নির্গত হয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায় ।
• ভূগর্ভে নানা রাসায়নিক ক্রিয়া ও বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে প্রচুর তাপ বৃদ্ধি পেয়ে গ্যাসের সৃষ্টি হয়, তাতে ভূঅভ্যন্তরের চাপ বৃদ্ধি পায় এবং অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়
• ভূআন্দোলনের সময় পার্শ্বচাপে ভূত্বকের দুর্বল অংশ ভেদ করে এ উত্তপ্ত তরল লাভা উপরে উত্থিত হয়। এভাবে ভূআন্দোলনের ফলেও অগ্ন্যুৎপাত হয় ।
পরিশেষে বলা যায়, প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণের জন্য আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত সংঘটিত হয়ে থাকে ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হলো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত । এর ফলাফল নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
• অনেক সময় আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থ চারদিকে সঞ্জিত হয়ে মালভূমির সৃষ্টি করে। ভারতের দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকাময় মালভূমি এরূপ নির্গত লাভা দিয়ে গঠিত।
• সমুদ্রতলদেশেও অনেক আগ্নেয়গিরি আছে। এ থেকে নির্গত লাভা সঞ্চিত হয়ে দ্বীপের সৃষ্টি হয়।
• আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কোনো অংশ ধসে গভীর গহ্বরের সৃষ্টি হয়। ১৮৮৩ সালে সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এক বিরাট গহ্বর দেখা যায় ।
• অনেক সময় আগ্নেয়গিরির লাভা সঞ্চিত হতে হতে বিস্তৃত এলাকা নিম্নসমভূমিতে পরিণত হয়; যেমন- উত্তর আমেরিকার স্নেক নদীর লাভা সমভূমি ।
• মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে পানি জমে আগ্নেয় হ্রদের সৃষ্টি করে। আলাস্কার মাউন্ট আডাকামা, নিকারাগুয়ার কোসেগায়না এ ধরনের হ্রদ।
• আগ্নেয়গিরির নির্গত লাভা, শিলাদ্রব্য প্রভৃতি দীর্ঘকাল ধরে একটি স্থানে সঞ্জিত হয়ে পর্বতের সৃষ্টি করে ।
• আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাভা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম, নগর, কৃষিক্ষেত সব ধ্বংস করে ।
আগ্নেয়গিরির কারণে কেবল মানুষের অপকার নয় উপকারও হয়ে থাকে। এতে ভূমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়। যেমন- দাক্ষিণাত্যের লাভা গঠিত কৃষ্ণমৃত্তিকা কার্পাস চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। অনেক সময় লাভার সঙ্গে অনেক খনিজ পদার্থ নির্গত হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাংশে অগ্ন্যুৎপাতের জন্য অধিক পরিমাণে খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়। অগভীর সমুদ্রে বা হ্রদে লাভা ও ভস্ম সঞ্চিত হয়ে এরূপ ভূভাগ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন–১০:

ক. শিলা কাকে বলে?
খ. পর্বতের বরফগলা পানি প্রবাহিত হয়ে কী সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. চিত্রে B স্তরের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রে A ও C স্তর শনাক্ত করে এদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে যে পদার্থ গঠিত হয় তাকে শিলা বলে।
খ. পর্বতের বরফগলা পানি প্রবাহিত হয়ে নদী সৃষ্টি হয়। উঁচু পর্বত, মালভূমি বা উঁচু কোনো স্থান থেকে বৃষ্টি, প্রস্রবণ, হিমবাহ বা বরফগলা পানির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্রোতধারার মিলিত প্রবাহ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত হয়ে সমভূমি বা নিম্নভূমির উপর দিয়ে কোনো বিশাল জলাশয় বা হ্রদ অথবা সমুদ্রের সাথে মিলিত হয় তখন তাকে নদী বলা হয়। যেখান থেকে নদীর উৎপত্তি হয় তাকে নদীর উৎস বলে। নদী যখন কোনো হ্রদ বা সাগরে এসে পতিত হয় তখন সেই পতিত স্থানকে মোহনা বলে। নদীর অধিক বিস্তৃত মোহনাকে খাঁড়ি বলে।
গ. চিত্রের B স্তরটি হলো গুরুমণ্ডল। অশুমণ্ডলের নিচেই এর অবস্থান। নিচে গুরুমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-
• ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ পর্যন্ত গুরুমণ্ডল বিস্তৃত।
• এ মণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত।
• এ মণ্ডলে সিলিকা, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ বিদ্যমান।
• এ মণ্ডল ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল ও নিম্ন গুরুমণ্ডল নামে দুটি ভাগে বিভক্ত।
• গুরুমণ্ডলে উর্ধ্বাংশের শিলা কঠিন ও ভঙ্গুর যা প্রায় ১০০ কিলোমিটার গভীর।
• এ মণ্ডলের কঠিন ঊর্ধ্বাংশের নিচের শিলা গলনাংকের কাছাকাছি হওয়ায় আংশিক নরম অবস্থায় আছে, যা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত।
• প্রচণ্ড চাপের জন্য গুরুমণ্ডলে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়। ফলে এর উপর ভাসমান মহাদেশগুলো চলমান অবস্থায় থাকে। এতে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।
• গুরুমণ্ডলের ১০০ কিলোমিটার গভীরতায় আনুমানিক তাপমাত্রা ১১০০°-১২০০° সেলসিয়াস ও ৭০০ কিলোমিটার গভীরতায় তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৯০০° সেলসিয়াস এবং বহিঃকেন্দ্রমণ্ডলের সীমানায় প্রায় ৩০০০° সেলসিয়াসের কাছাকাছি।
ঘ. চিত্রে A দ্বারা অশ্মমণ্ডল বা ভূপৃষ্ঠ ও C দ্বারা কেন্দ্রমণ্ডলকে শনাক্ত করা হয়েছে। নিচে এ মণ্ডল দুটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো-
ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগ থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত হালকা উপাদানে গঠিত হয়েছে অশ্মমণ্ডল। এ মণ্ডলের বাইরের আবরণই হলো ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম, গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্রতলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু । সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল (Sial) স্তর বলে, যা সিলিকন (Si) ও অ্যালুমিনিয়াম (AI) দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন (Si) ও ম্যাগনেসিয়াম (Mg) যা সাধারণভাবে সিমা (Sima) নামে পরিচিত।
অনুমান করা হয় যে, এ ব্যাসল্ট স্তরই পৃথিবীজুড়ে বহিরাবরণ ও গভীর সমুদ্রতলদেশে বিদ্যমান। ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন- পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি। ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে।
অপরদিকে গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এ মণ্ডল বিস্তৃত। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু । ভূকম্পন তরঙ্গের সাহায্যে জানা গেছে যে, কেন্দ্রমণ্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ আছে, যা প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং একটি কঠিন অন্তঃভাগ আছে যা ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। বিজ্ঞানীগণ বিশ্বাস করেন যে, কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।
পরিশেষে বলা যায়, অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক হলো পৃথিবীর গঠন কাঠামোর প্রথম স্তর আর কেন্দ্রমণ্ডল হলো শেষ স্তর। এ স্তর দুটিতে বিভিন্ন উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।