এসএসসি-জীববিজ্ঞান
ষষ্ঠ অধ্যায়-জীবে পরিবহন
Transport in Organisms
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
ইমবাইবিশন : কলয়েডধর্মীয় বিভিন্ন পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে কোষপ্রাচীর) যে প্রক্রিয়ায় তরল পদার্থ শোষণ করে তাকে ইমবাইবিশন বলে।
ব্যাপন : পদার্থের অণু বা আয়ন তার নিজের গতিশক্তির কারণে বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানে ছড়িয়ে পড়াকে ব্যাপন বলে। ইংরেজিতে ব্যাপনকে ডিফিউশন (Diffusion) বলে।
ব্যাপনের শর্তাবলি- তাপমাত্রা, পদার্থের অণুর ঘনত্ব, মুক্তশক্তি।
ব্যাপনের গুরুত্ব : উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা প্রদান, পানিতে দ্রবীভূত পদার্থের (খাদ্য) পরিবহন, প্রাণিদেহে রেচন পদার্থ পরিবহন।
দ্রবণ : দ্রাব ও দ্রাবকের মিশ্রণের ফলে যা উৎপন্ন হয়। যেমন: চিনি (দ্রাব) ও পানি (দ্রাবক) মিশিয়ে শরবত (দ্রবণ) তৈরি হয়।
দ্রাব : দ্রাবকে যা দ্রবীভূত হয়। যেমন: চিনি, লবণ ইত্যাদি।
দ্রাবক : দ্রাব যাতে দ্রবীভূত হয়। যেমন: পানি।
অভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও দ্রাব উভয় প্রকার পদার্থের অণুগুলো চলাচল করতে পারে না তাকে অভেদ্য পর্দা বলে। যেমন: পলিথিন, কিউটিনযুক্ত কোষপ্রাচীর।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
অর্ধভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রবণের দ্রাবক অণু (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রব অণু চলাচল করতে পারে না, তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যেমন: কোষ পর্দা, ডিমের খোসার ভিতরের পর্দা, মাছের পটকার পর্দা ইত্যাদি।
অভিস্রবণ : যে ভৌত প্রক্রিয়ায় দুটি আলাদা ঘনত্বের দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দার দ্বারা আলাদা করা থাকলে, কম ঘনত্বের দ্রবণের দ্রাবক বেশি ঘনত্বের দ্রবণে প্রবেশ করে, তাকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস বলে।
পানি শোষণ : অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোষে এবং বিভিন্ন কোষ অঙ্গাণুর মধ্যে পানির প্রবেশকে পানি শোষণ বলে।
খনিজ লবণ শোষণ : উদ্ভিদ খনিজ লবণগুলো সাধারণত আয়নরূপে শোষণ করে। মূলরোমের কোষরসে বিদ্যমান আয়নের ঘনত্ব মাটির রসে বিদ্যমান আয়নের ঘনত্ব কম হওয়ার কারণে ব্যাপনের মাধ্যমে মাটির রস থেকে আয়ন মূলরোমের কোষরসে প্রবেশ করে, একে খনিজ লবণ শোষণ বলে।
পরিবহন : যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদের মূলরোম দ্বারা শোষিত পানি ও খনিজ লবণের দ্রবণ (রস) জাইলেমের মাধ্যমে ঊর্ধ্বমুখে বাহিত হয়ে পাতায় আসে এবং পাতায় তৈরি তরল খাদ্যবস্তু ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদের সারাদেহে ছড়িয়ে পড়ে তাকে পরিবহন অথবা সংবহন বলে। পরিবহনের ইংরেজি শব্দ Conduction.
উদ্ভিদের পরিবহন টিস্যু- জাইলেম ও ফ্লোয়েম। উদ্ভিদদেহে রসের উর্ধ্বমুখী পরিবহন ঘটে জাইলেমের মাধ্যমে। উদ্ভিদদেহে পাতায় তৈরি খাদ্যরসের নিম্নমুখী পরিবহন ঘটে ফ্লোয়েমের মাধ্যমে।
প্রস্বেদন : প্রস্বেদন বা বাষ্পমোচন একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদদেহের পানি বাষ্পাকারে পাতার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে বেরিয়ে যায়। প্রস্বেদন প্রধানত পত্ররন্ধ্র, পাতার কিউটিকল ও কাণ্ডের ত্বকে অবস্থিত লেন্টিসেল- এর মাধ্যমে ঘটে। পাতা, কচিকাণ্ড, ফুলের বৃতি ও পাপড়ির বহিঃত্বকে পত্ররন্ধ্র থাকে। প্রতিটি পত্ররন্ধ্র দুটি রক্ষী কোষ নিয়ে গঠিত। রক্ষী কোষ দুটির মাঝে অবস্থিত সূক্ষ্ম ছিদ্রকে পত্ররন্ধ্র বলে। রক্ষী কোষ দু’টি পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে ফলে পত্ররন্ধ্র খুলে যায়। আবার রক্ষী কোষ দুটিতে পানি কমে যাওয়ার ফলে শিথিল হয় এবং পত্ররন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
রক্ত (Blood) : রক্ত এক ধরনের লাল বর্ণের অস্বচ্ছ আন্তঃকোষীয় লবণাক্ত ও ক্ষারধর্মী তরল যোজক টিস্যু। রক্ত প্রধানত রক্তরস বা প্লাজমা এবং রক্তকণিকা নিয়ে গঠিত। রক্তে রক্তরস থাকে ৫৫% এবং রক্তকণিকা থাকে ৪৫%।
রক্তরস : রক্তের ঈষৎ হলুদাভ, ক্ষারধর্মী ও তঞ্চনে সক্ষম তরল অংশকে রক্তরস বা প্লাজমা বলে। রক্তরস ৯১-৯২% পানি এবং কঠিন পদার্থ নিয়ে গঠিত।
রক্তকণিকা : রক্তে তিন রকমের রক্তকণিকা থাকে। যথা:
১. এরিথ্রোসাইট বা লােহিত রক্তকণিকা বা RBC,
২. লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকা বা WBC ও
৩. থ্রম্বোসাইট বা প্লেটলেটস বা অণুচক্রিকা।
লোহিত রক্তকণিকা : হিমোগ্লোবিন নামক – রঞ্জক যুক্ত, অক্সিজেন পরিবহনে সক্ষম রক্তকণিকাকে লোহিত রক্তকণিকা বলে।
শ্বেত রক্তকণিকা : রক্তে অবস্থিত নিউক্লিয়াসযুক্ত বর্ণহীন ও অনিয়তাকার রক্তকণিকাদের শ্বেত রক্তকণিকা বলে।
অণুচক্রিকা : রক্ত তঞ্চনে সহায়ক নিউক্লিয়াসবিহীন ক্ষুদ্র রক্তকণিকাকে অণুচক্রিকা বলে।
ব্লাডগ্রুপ বা রক্তের গ্রুপ : অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির ওপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা যায়। একে ব্লাড গ্রুপ বলে। বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ সালে মানুষের রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করে তা A, B, O ও AB এ চারটি গ্রুপে নামকরণ করেন। আজীবন একজন মানুষের রক্তের গ্রুপ একই থাকে, পরিবর্তন হয় না।
রক্তনালি : যেসব নালির মাধ্যমে রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করা হয় এবং দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাকে রক্তনালি বলে। রক্তনালি তিন ধরনের। যথা-
১. ধমনি, ২. শিরা ও ৩. রক্ত জালক বা কৈশিক নালি।
ধমনি : যে রক্তনালির মাধ্যমে রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করা হয় তাকে ধমনি বলে।
শিরা : যে রক্তনালির মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে সাধারণত কঠিন কার্বন ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাকে শিরা বলে।
রক্ত জালক বা কৈশিক নালি: ধমনি ক্রমান্বয়ে শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত অতি সূক্ষ্ম নালি তৈরি করে। এ সূক্ষ্ম নালিকে রক্তজালক বা কৈশিক নালি বলে। অর্থাৎ ধমনি ও শিরার মিলনস্থলই কৈশিক নালি।
হৃৎপিণ্ড : রক্ত সংবহনতন্ত্রের একটি অংশ হৃৎপিণ্ড। এটি অবিরাম পাম্পযন্ত্রের মতো ছান্দিক গতিতে স্পন্দিত হয়ে সারাদেহে রক্ত সঞ্চালন করে।
রক্তচাপ: হৃৎপিণ্ড থেকে রক্তনালির মাধ্যমে রক্ত প্রবাহকালে ধমনিতে যে চাপের সৃষ্টি হয় তাকে রক্তচাপ বলে।
সিস্টোল, ডায়াস্টোল ও হৃদস্পন্দন : হৃৎপিণ্ডের সংকোচনকে সিস্টোল ও প্রসারণকে ডায়াস্টোল বলে। হৃৎপিণ্ডের একটি সিস্টোল ও ডায়াস্টোলকে একসাথে হৃদসপন্দন বলে।
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক : হার্ট অ্যাটাক হলো হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর মস্তিষ্কের কোনো ধমনিতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে স্ট্রোক হয়।
অ্যানজিনা : হৃৎপিণ্ড ধমনিতে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে বিঘ্ন ঘটার ফলে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পাওয়ায় বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। এ অবস্থাকে অ্যানজিনা (Angina) বলা হয়।
Rh ফ্যাক্টর : Rh ফ্যাক্টর রেসাস নামক বানরের লোহিত কণিকায় অবস্থিত এক ধরনের অ্যান্টিজেন। রেসাস বানরের নাম অনুসারে এই অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর সংক্ষেপে Rh ফ্যাক্টর বলে।।
উচ্চ রক্তচাপ: শরীর ও মনের স্বাভাবিক অবক্ষয় রক্তচাপ যদি বয়সের জন্য নির্ধারিত মাত্রার উপরে অর্থাৎ সিস্টোলিক চাপ ১৫০ mm Hg এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৯০ mm Hg হয়, তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে।
লিউকেমিয়া : শ্বেত কণিকার সংখ্যা অত্যধিকহারে বেড়ে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বাতজ্বর : স্ট্রেপটোকক্কাস অণুজীবের সংক্রমণে সৃষ্ট শ্বাসনালির প্রদাহ, ফুসকুঁড়িযুক্ত সংক্রামক জ্বর, টনসিলের প্রদাহ অথবা মধ্যকর্ণের সংক্রামকরো বাতজ্বরের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। এটি শিশুকাল থেকে শুরু হয়, দেহের অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়, বিশেষ করে হৃৎপিণ্ড।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ প্রস্বেদন কী?
উত্তর : স্থলজ উদ্ভিদ যে শারীরতত্ত্বীয় প্রক্রিয়ায় তার বায়বীয় অঙ্গের মাধ্যমে বাষ্পাকারে পানি বের করে দেয় তাকে প্রস্বেদন বা বাম্পমোচন বলে।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ ব্যাপন কাকে বলে?
উত্তর : যে ভৌত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের অণুগুলো বেশি ঘনত্বের এলাকা থেকে কম ঘনত্বের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তাকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ রক্তকণিকা কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : রক্তকণিকাগুলো প্রধানত তিন প্রকার যথা : (i) লোহিত কণিকা বা এরিথ্রোসাইট, (ii) শ্বেত কণিকা বা লিউকোসাইট এবং (iii) অণুচক্রিকা বা থ্রম্বোসাইট।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ ধমনির কাজ কী?
উত্তর : ধমনির কাজ হচ্ছে হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত পরিবাহিত করা। তবে পালমোনারি ধমনি কার্বন ডাইঅক্সাইডযুক্ত রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে ফুসফুসে নিয়ে যায়। এছাড়া ধমনিগুলো ক্রমশ শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কৈশিক জালিকা তৈরি করে।
প্রশ্ন ॥ ৫॥ রক্তচাপ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : হৃৎপিণ্ডের সংকোচন ও প্রসারণের ফলে হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহকালে ধমনির প্রাচীরে যে পার্শ্বচাপ সৃষ্টি হয়, তাকে রক্তচাপ বলে। তাই রক্তচাপ বলতে সাধারণভাবে ধমনির রক্তচাপকেই বোঝায়। রক্তচাপ হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা, ধমনির প্রাচীরের স্থিতিস্থাপকতা এবং রক্তের ঘনত্ব ও পরিমাণের সাথে সম্পর্কিত। হৃৎপিণ্ডের সিস্টোল অবস্থায় ধমনিতে যে চাপ থাকে তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ এবং ডায়াস্টোল অবস্থায় যে চাপ থাকে তাকে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বলে।
রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ হৃৎপিণ্ড সুস্থরাখার উপায় বর্ণনা কর।
উত্তর : মানুষ পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হবার আগে থেকেই তার হৃদযন্ত্র কাজ করা শুরু করে এবং মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকে। মানুষের বাঁচা মরায় হৃদযন্ত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য সঠিক জীবনধারা ও খাদ্য নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। নানা ধরনের তেল বা চর্বি জাতীয় খাদ্য হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। রক্তের কোলেস্টরল হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। মাদক ও নেশা সেবনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বা হৃদস্পন্দন সাধারণ মানের থেকে বৃদ্ধি পায়। ফলে মাদকসেবী কিছুটা মানসিক আনন্দ ও প্রশান্তি পেলেও তার হৃদযন্ত্রের প্রভূত ক্ষতি হয়। ধূমপান অথবা জর্দার নিকোটিনের বিষক্রিয়া শরীরের অন্য অংশের মতো হৃদপেশির ক্ষতি করে। মেদ সৃষ্টিকারী খাদ্য যেমন : তেল, চর্বি, অতিরিক্ত শর্করা পরিহার করে, সুষম খাদ্য গ্রহণ করে, প্রতিদিন পরিমিত ব্যায়াম এবং হাঁটা-চলার মাধ্যমে সুস্থজীবন লাভ করা যায়।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ২॥ চিত্রসহ পানি শোষণ প্রক্রিয়ার বর্ণনা দাও।
উত্তর : সাধারণভাবে উদ্ভিদ তার মূলরোমের মাধ্যমে মাটির কৈশিক পানি শোষণ করে। প্রস্বেদনের ফলে পাতার কোষে ব্যাপন চাপ ঘাটতির সৃষ্টি হয়। এর ফলে পাশের কোষ থেকে পানি এই কোষের দিকে ধাবিত হয়। একইভাবে ঐ দ্বিতীয় কোষটিতে আবার ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয় এবং তার পাশের বা নিচের কোষ থেকে পানি টেনে নেয়। এভাবে ব্যাপন চাপ ঘাটতি ক্রমশ মূলরোম পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং একটি চোষক শক্তির সৃষ্টি হয়। এ চোষক শক্তির টানে মাটির কৈশিক পানি মূলরোমে ঢুকে পড়ে। মাটি থেকে মূলরোমে অভিস্রবণ ও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় এ পানি প্রবেশ করে। এভাবে মূলরোম থেকে পানি মূলের কর্টেক্সে প্রবেশ করে। এ কাজটিকে কোষ থেকে কোষান্তর অভিস্রবণ পদ্ধতি বলে। একইভাবে পানি অন্তঃত্বক ও পরিচক্র হয়ে পরিবহন নালিকাগুচ্ছে পৌঁছে যায়। পানি একবার পরিবহন কলায় পৌঁছে গেলে তা জাইলেম কলার মাধ্যমে উপরের দিকে ও পাশের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। এভাবে পানি বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা হয়ে উদ্ভিদের পাতায় পৌঁছে যায়। এ কাজে যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া কাজ করে সেগুলো হলো, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন। নিচে প্রক্রিয়াটি চিত্রের সাহায্যে দেখানো হলো:

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ ব্লাড গ্রুপ কী?
উত্তর : এন্টিবডি ও অ্যান্টিজেনের উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা যায়। একে ব্লাড গ্রুপ বলে।
প্রশ্ন ॥ ২॥ অনুচক্রিকা কাকে বলে?
উত্তর : রক্তের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতি কণিকা, যা দেখতে বর্তুলাকার ও বর্ণহীন তাকে অণুচক্রিকা বলে।
প্রশ্ন ॥ ৩॥ মানুষের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠ কয়টি?
উত্তর : মানুষের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠ চারটি।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ লেন্টিকুলার প্রস্বেদন কাকে বলে?
উত্তর : উদ্ভিদের কোষ অভ্যন্তরস্থ পানি যখন বাষ্পাকারে লেন্টিসেল পথে বেরিয়ে যায়, তখন তাকে লেন্টিকুলার প্রস্বেদন বলে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ৫॥ একটি গ্লাসে পানি নিয়ে এক ফোঁটা কালি যোগ করলে কালি সমগ্র পানিতে ছড়িয়ে পড়ে কোন প্রক্রিয়ায়?
উত্তর : একটি গ্লাসে পানি নিয়ে এক ফোঁটা কালি যোগ করলে কালির কণাগুলো তরল মাধ্যমে গ্লাসের সমগ্র পানিতে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপন প্রক্রিয়ায়।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ কোষরস কাকে বলে?
উত্তর : কোষস্থ পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণকে একত্রে কোষরস বলে।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ কোষান্তর অভিস্রবণ কাকে বলে?
উত্তর : বহুকোষী জীবদেহের অভ্যন্তরে এক কোষ থেকে অপর কোষে দ্রাবকের অভিস্রবণকে কোষান্তর অভিস্রবণ বলে।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ কোনো পদার্থের অণুর ব্যাপন কতক্ষণ ধরে চলে?
উত্তর : কোনো পদার্থের অণুর ব্যাপন ততক্ষণ চলতে থাকে যতক্ষণ না উক্ত পদার্থের অণুগুলোর ঘনত্ব সর্বত্র সমান হয়।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ ব্যাপন চাপ ঘাটতি কাকে বলে?
উত্তর : একই বায়ু চাপে কোনো একটি দ্রবণ ও দ্রাবকের ব্যাপিত হওয়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতাকে ব্যাপন চাপ ঘাটতি বা ডিফিউশন ডেফিসিট প্রেসার বলে।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ রক্ত কী?
উত্তর : রক্ত একপ্রকার অস্বচ্ছ, লবণাক্ত, ভিন্নধর্মী তরল যোজক কলা।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ পাজমা ছাড়া স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্তের অপর যেকোনো দুটি উপাদানের নাম লেখ।
উত্তর : লোহিত রক্তকণিকা ও শ্বেত রক্তকণিকা।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ রক্তের গ্রুপগুলো কী কী?
উত্তর : রক্তের গ্রুপগুলো হলো – A, B, AB এবং O।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ হিমোগ্লোবিন কী?
উত্তর : হিমোগ্লোবিন একপ্রকার লৌহঘটিত রঞ্জক পদার্থ যার উপস্থিতিতে রক্তের বর্ণ লাল হয়।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ অ্যান্টিজেন কাকে বলে?
উত্তর : শরীরের রক্তে বাইরে থেকে যে ছোট প্রোটিনকণা প্রবেশের ফলে রক্তে প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা অ্যান্টিবডির সৃষ্টি হয়, সেই ছোট প্রোটিনকণাকে অ্যান্টিজেন বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ অ্যান্টিবডি কাকে বলে?
উত্তর : বাইরে থেকে প্রবিষ্ট অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শরীরের রক্তে যে প্রোটিনকণার সৃষ্টি হয়, তাকে অ্যান্টিবডি বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাকে বলে?
উত্তর : অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করে দেহে সংক্রমিত রোগজীবাণুকে প্রতিহত করার মতাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ রক্ততঞ্চনের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : আঘাত প্রাপ্ত স্থান থেকে রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করাই হলো রক্ততঞ্চনের উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ রক্ত রক্তনালির মধ্যে কী থাকার কারণে রক্ত জমাট বাধে না?
উত্তর : রক্তে তঞ্চনরোধক পদার্থ হিসেবে হেপারিন থাকায় রক্ত রক্তনালিতে জমাট বাঁধে না।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ লিউকেমিয়া কাকে বলে?
উত্তর : রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যাওয়াকে লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার বলে।
প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ একজন মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ কত?
উত্তর : একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থলোকের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১৪০/৯০ mm Hg অর্থাৎ সিস্টোলিক চাপ ১৪০ mm Hg এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৯o mm Hg ।
প্রশ্ন ॥ ২১ ॥ সংবহনতন্ত্র কী?
উত্তর : সংবহনে অংশগ্রহণকারী অঙ্গগুলো মিলিত হয়ে যে তন্ত্র গঠন করে, তাকে সংবহনতন্ত্র বলে।
প্রশ্ন ॥ ২২ ॥ রক্ত সংবহনতন্ত্রের উপাদানগুলো কী কী?
উত্তর : রক্ত সংবহনতন্ত্রের উপাদানগুলো হলো : রক্ত, হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালি (শিরা, ধমনি ও জালক)।
প্রশ্ন ॥ ২৩ ॥ মানুষের হৃৎপিন্ড কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : বক্ষ গহ্বরে ফুসফুসের মাঝখানে কিছুটা বামদিকে মানুষের হৃৎপিণ্ড অবস্থিত।
প্রশ্ন ॥ ২৪ ॥ সিস্টোল ও ডায়াস্টোল কাকে বলে?
উত্তর : হৃৎপিণ্ডের সংকোচনকে সিস্টোল এবং প্রসারণকে ডায়াস্টোল বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ শীতকালে কাঠের দরজা ফাঁকা হয়ে যায় কেন?
উত্তর : দরজা তৈরির আগে ব্যবহৃত কাঠগুলো যদি ভালোভাবে সিজনিং করা না থাকে তবে কাঠের কোষের মধ্যে কিছুটা আর্দ্রতা থেকে যায়। পরবর্তীতে শীতের সময় বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে কোষ মধ্যস্থপানি বেরিয়ে যাওয়ায় কাঠ কিছুটা সংকুচিত হয়, ফলে কাঠের জোড়া লাগানো স্থানগুলো একটুখানি ফাঁকা হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন ॥ ২॥ রক্ত জমাট বাঁধে কেন?
উত্তর : রক্তে অণুচক্রিকা নামক রক্তকণিকার উপস্থিতির কারণে রক্ত জমাট বাঁধে। রক্তকণিকার অণুচক্রিকা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। অণুচক্রিকায় থ্রোম্বোপ্লাস্টিন নামক একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ থাকে। শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অণুচক্রিকা থেকে থ্রোম্বোপ্লাস্টিন নিঃসৃত হয়। এবং তা রক্তকে জমাট বাঁধায়।।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ বদ্ধ রক্ত সংবহনতন্ত্রের ২টি সুবিধা লেখ।
উত্তর : নিচের বদ্ধ রক্ত সংবহনতন্ত্রের ২টি সুবিধা উল্লেখ করা হলো :
i. রক্ত সরাসরি দেহের বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছে।
ii. রক্তবাহী নালির ব্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো বিশেষ অঙ্গে রক্ত প্রবাহের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ অভিস্রবণ ও ব্যাপনের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর : ব্যাপন ও অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :
অভিস্রবণ | ব্যাপন |
i. যে প্রক্রিয়ায় একটি বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লির মধ্য দিয়ে হালকা ঘনত্বের দ্রবণ হতে পানি (দ্রাবক) অধিক ঘন দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে অভিস্রবণ বলে। | i. একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অধিকতর ঘন স্থান হতে কম ঘন স্থানে বিস্তার লাভ করার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। |
ii. সজীব মাধ্যমে ঘটে। | ii. সজীব ও জড় উভয় মাধ্যমে ঘটে। |
iii. এটি শুধুমাত্র তরল পদার্থের মধ্যে ঘটতে পারে। | iii. কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে ব্যাপন ঘটতে পারে। |
iv. কেবলমাত্র সম প্রকৃতির দ্রবণের মধ্যেই অভিস্রবণ ঘটতে পারে। | iv. অসম প্রকৃতির দ্রবণের মিশ্রণেও ব্যাপন ঘটতে পারে। |
v. অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় বৈষম্যভেদ্য পর্দার প্রয়োজন হয়। | v. ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কোনো পর্দারই প্রয়োজন হয় না। |
প্রশ্ন ॥ ৫॥ উদ্ভিদের পুষ্টিতে পানির ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : উদ্ভিদের পুষ্টিতে পানির ভূমিকা নিচে বর্ণিত হলো :
১. পানি কোষের প্রোটোপ্লাজমকে তরল ও কর্মক্ষম রাখে।
২. কোষের যাবতীয় বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. উদ্ভিদদেহে যাবতীয় পরিবহন পানির মাধ্যমে হয় এবং দেহকে শীতল রাখে।
৪. কোষান্তর ব্যাপন ও অভিস্রবণে সাহায্যে করে।
৫. বিভিন্ন খনিজ লবণ মূল দ্বারা শোষিত হতে সাহায্য করে এবং পানির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।
৬. বীজের অঙ্কুরোদগমে সহায়তা করে।
৭. উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পানির ভূমিকা অপরিসীম।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ রক্ত গ্রুপে সর্বজনীন দাতা ও সর্বজনীন গ্রহীতা কাদের বলে?
উত্তর : ‘O’ গ্রুপের রক্ত অন্যান্য সকল গ্রুপের মানুষকে দেওয়া যায়, তাই এই গ্রুপকে সর্বজনীন দাতা বলা হয়। আবার ‘AB’ গ্রুপের রক্ত বহনকারী ব্যক্তি কেবল ‘AB’ গ্রুপের মানুষকেই রক্ত দান করতে পারে, কিন্তু অন্যান্য সকল গ্রুপের রক্ত গ্রহণে সমর্থ, তাই ‘AB’ গ্রুপকে সর্বজনীন গ্রহীতা বলা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ জাইলেম বাহিকা দিয়ে পাতায় রস উত্তোলনের ধাপগুলো কী কী?
উত্তর : উদ্ভিদদেহে জাইলেম দিয়ে রস উত্তোলন তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়। ধাপগুলো :
১. মাটিস্থদ্রবণের কেন্দ্রাতিগ পরিবহন মূলের কর্টেক্স টিস্যুর মধ্য দিয়ে মূলের জাইলেমে যায়।
২. জাইলেমের মাধ্যমে খাড়াভাবে পাতায় পানি পরিবাহিত হয়।
৩. পাতার অন্তঃকোষীয় ফাঁকে বাষ্পীয় অবস্থায় পানি মুক্তি পায়।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ বাষ্পীভবন ও প্রস্বেদনের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : বাষ্পীভবন এবং প্রস্বেদন উভয় প্রক্রিয়ায় পানি বাষ্পে পরিণত হয়। কিন্তু বাষ্পীভবন কতকগুলো ভৌত প্রভাবক যেমন : উষ্ণতা, বায়ুচাপ, উচ্চতা ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল। অপরপক্ষে প্রস্বেদন প্রধানত প্রোটোপ্লাজম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কারণ এটি একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ সাধারণত শুষ্কমৌসুমে দুপুরের দিকে গুল্ম ও বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদের পাতা কেন নেতিয়ে পড়ে?
উত্তর : শুষ্কমৌসুমে বীরুৎ ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের পাতাগুলো নেতিয়ে পড়ে কারণ তখন উদ্ভিদগুলোতে প্রস্বেদনের হার পানি শোষণের হারের থেকে বেশি হয়।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ রক্তে অণুচক্রিকার সংখ্যা হ্রাস পেলে কী ঘটবে?
উত্তর : অনুচক্রিকার সংখ্যার হ্রাস পেলে রক্ত ক্ষরণ ঘটতে পারে। রক্ত তঞ্চনে অণুচক্রিকা বা থ্রম্বোসাইট এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া রক্ত জালিকার প্রাচীরে ছিদ্র সৃষ্টি হলে অণুচক্রিকা মেরামতি ঘটায়। এ কারণে অনুচক্রিকার সংখ্যা হ্রাস পেলে কোনো রক্তবাহিকা বা টিস্যু কেটে গেলে রক্ত তঞ্চন ঘটতে বিলম্ব হবে অর্থাৎ তঞ্চনকাল বৃদ্ধি পাবে। এতে রক্ত ক্ষরণ ঘটবে।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ মানুষের লোহিত রক্তকণিকা ও শ্বেত কণিকার পার্থক্য উলেখ কর।
উত্তর : মানুষের লোহিত কণিকা ও শ্বেতকণিকার পার্থক্য :
লোহিত কণিকা | শ্বেতকণিকা |
ক. লোহিত কণিকা দ্বিঅবতল ও চাকতি আকৃতির। | ক. শ্বেত কণিকার নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই। |
খ. এরা নিউক্লিয়াসবিহীন রক্ত কণিকা। | খ. এরা নিউক্লিয়াসযুক্ত রক্ত কণিকা। |
গ. এই রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিন থাকে। | গ. এই রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন থাকে না। |
ঘ. এদের প্রধান কাজ শ্বাস বায়ু-O2 ও CO2 পরিবহন করা। | ঘ. এদের প্রধান কাজ দেহের জীবাণু ধ্বংস করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। |
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ মানবদেহের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠগুলোর নাম লেখ।
উত্তর : হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠগুলো- (i) ডান অলিন্দ; (ii) বাম অলিন্দ; (iii) ডান নিলয়; (iv) বাম নিলয়।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ পালমোনারি শিরা ও পালমোনারি ধমনির মধ্যে কী কী পার্থক্য দেখা যায়?
উত্তর : পালমোনারি শিরা ও পালমোনারি ধমনির মধ্যে নিম্নোক্ত পার্থক্যগুলো দেখা যায়:
পালমোনারি শিরা | পালমোনারি ধমনি |
ক. পালমোনারি শিরা ফুসফুস থেকে নির্গত হয়ে হৃৎপিণ্ডের বাম অলিন্দে প্রবেশ করে। | ক. পালমোনারি ধমনি ডান নিলয় থেকে নির্গত হয়ে ফুসফুসে যায়। |
খ. এই শিরার মাধ্যমে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত পরিবাহিত হয়। | খ. এই ধমনির মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইডযুক্ত রক্ত পরিবাহিত হয়। |
গ. হৃৎপিণ্ডের সাথে এর সংযোগস্থলে কপাটিকা থাকে না। | গ. হৃৎপিণ্ডের সাথে এর সংযোগস্থলে কপাটিকা থাকে। |
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ ‘O’ রক্তগ্রুপের ব্যক্তির দেহে ‘A’ রক্তগ্রুপের ব্যক্তির রক্ত দেওয়া হলে কী প্রতিক্রিয়া ঘটবে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘O’ রক্তগ্রুপের ব্যক্তির দেহে ‘A’ রক্তগ্রুপের ব্যক্তির রক্ত দেওয়া হলে রক্তের লোহিত কণিকাকে গুচ্ছবদ্ধ করে জমাট বাঁধিয়ে দিবে। কারণ ‘O’ রক্তগ্রুপের রক্তে কোনো অ্যান্টিজেন থাকে না কিন্তু এর রক্তরসে anti-a ও anti-b উভয় অ্যান্টিবডি থাকে। এই দুই ধরনের অ্যান্টিবডি থাকার কারণে ‘A’ গ্রুপের রক্তকে জমাট বাঁধিয়ে দেয়।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্তের দুটি প্রধান কাজ লেখ।
উত্তর : স্তন্যপায়ী প্রাণীর রক্তের দুটি প্রধান কাজ নিম্নরূপ :
- পুষ্টিদ্রব্যের পরিবহন : পরিপাকের শোষিত সরল খাদ্য উপাদান; ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন টিস্যু ও কোষে পৌঁছায়।
- গ্যাস পরিবহন : রক্ত ফুসফুস থেকে অক্সিজেন টিস্যু ও কোষে এবং টিস্যু ও কোষ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড ফুসফুসে বহন করে।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তনালির মধ্যে রক্ত জমাট বাধে না। কেন?
উত্তর : স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তনালির মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধে না কারণ-
- রক্তে বেসোফিল শ্বেতকণিকা দ্বারা প্রেরিত হেপারিন নামক এক প্রকার তঞ্চন রোধক পদার্থ থাকে যা রক্তনালির মধ্যে রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না।
- রক্তনালির গাত্র খুবই মসৃণ, এর ফলে রক্তের অণুচক্রিকা অবিকৃত থাকে এবং অণুচক্রিকা থেকে থ্রম্বোপ্লাস্টিন নির্গত হয় না।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ রক্তের গ্রুপ কীভাবে নির্ণয় করা যাবে?
উত্তর : রক্তের গ্রুপ নিম্নরূপে নির্ণয় করা যাবে।
যদি লোহিত কণিকা শুধু অ্যান্টি- A এর সংস্পর্শে জমাট বাঁধে তবে তা হবে ‘A’ গ্রুপের রক্ত। যদি শুধু অ্যান্টি- B এর সংস্পর্শে জমাট বাঁধে তা হবে ‘B’ গ্রুপের রক্ত। অ্যান্টি- A এবং অ্যান্টি- B উভয় সিরামের দ্বারা রক্তকণিকা জমাট বাঁধলে রক্তের গ্রুপ হবে ‘AB’। উভয় অ্যান্টি- A এবং অ্যান্টি- B সিরাম দ্বারা রক্তকণিকা জমাট না বাঁধলে রক্তের গ্রুপ হবে ‘O’।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ তঞ্চন ও থ্রম্বোসিস এর মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : দেহ থেকে নির্গত রক্ত যে প্রক্রিয়ায় অর্ধকঠিন জেলির আকারে রূপান্তরিত হয় তাকে তঞ্চন বলে। অপরদিকে রক্তনালির মধ্যে রক্তের তঞ্চনকে থ্রম্বোসিস বলে।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে কী কী কারণে?
উত্তর : রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে যেসব কারণে সেগুলো হলো-
- রক্তনালির গাত্রে ফাটল অথবা অন্তঃআবরণীতে ক্ষত সৃষ্টি হলে।
- অ্যাথারোস্লেকরাসিস হলে অণুচক্রিকা সেখানে জড়ো হয়ে বিনষ্ট হয়। এতে ফাইব্রিন সৃষ্টি হয়ে রক্তকে জমাট বাঁধায়।
প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ থ্রম্বোসিস বলতে কী বোঝ?
উত্তর : রক্তনালির অভ্যন্তরে রক্ত জমাট বাঁধাকে থ্রম্বোসিস বলে। হৃৎপিণ্ডের করোনারি রক্ত নালিকায় রক্ত জমাট বাঁধাকে করোনারি থ্রম্বোসিস এবং গুরু মস্তিষ্কে রক্তনালিকায় রক্ত জমাট বাঁধাকে সেরিব্রাল থ্রম্বোসিস বলে।
প্রশ্ন ॥ ২১ ॥ থ্রম্বোসাইট এর কাজগুলো কী?
উত্তর : থ্রম্বোসাইট- এর কাজগুলো নিম্নরূপ :
- রক্ততঞ্চনে সাহায্য করা এদের প্রধান কাজ। রক্তক্ষরণের সময় অণুচক্রিকা ভেঙে গিয়ে থ্রম্বোপ্লাসটিন মুক্ত করে। এই পদার্থ প্রোথ্রম্বিনকে থ্রম্বিনে রূপান্তর করে যা পরবর্তীতে ফাইব্রিন জালক সৃষ্টি করে রক্তের তঞ্চন ঘটায়।
- অণুচক্রিকা রক্ত জালিকার ক্ষতিগ্রস্ত অন্তঃআবরণীর গায়ে এঁটে গিয়ে মেরামতির কাজ করে।
প্রশ্ন ॥ ২২ ॥ হিমোগ্লোবিনের প্রধান কাজ কী?
উত্তর : রক্তের হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্বোমিনো হিমোগ্লোবিন গঠন করে যথাক্রমে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড পরিবহন করে।
প্রশ্ন ॥ ২৩ ॥ উদ্ভিদ দেহে পানি শোষণের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর : উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ শোষণ করে জাইলেমে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে পাতায় যায়। সুতরাং পাতায় পানি সরবরাহের জন্য উদ্ভিদের পানিশোষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ২৪ ॥ একটি গাছের মূলরোমগুলো যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে গাছটির কী হবে? ব্যাখ্যাসহ লেখ।
উত্তর : উদ্ভিদের মূলের মূলরোমগুলো মাটির পানি ও খনিজ লবণের দ্রবণ মাটি থেকে শোষণ করে। এই পানি ও দ্রবণ উদ্ভিদের কাণ্ড এবং শাখাপ্রশাখায় কোষান্তর অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় জাইলেমের মাধ্যমে পাতায় পৌছায়। মূলরোমগুলো নষ্ট হয়ে গেলে উদ্ভিদটি পানি ও খনিজ লবণের দ্রবণ শোষণ করতে পারবে না, ফলে উদ্ভিদটি মারা যাবে।
প্রশ্ন ॥ ২৫ ॥ মিঠা পানির একটি মাছকে সমুদ্রের পানিতে রাখলে মাছটি বেঁচে থাকবে কি? উত্তরের সপক্ষে ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর : মিঠা পানির একটি মাছকে সমুদ্রের পানিতে রাখলে মাছটি বেঁচে থাকবে না। মিঠা পানির মাছকে সমুদ্রের পানিতে রাখলে তার দেহ থেকে বহিঃঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানি বের হয়ে যাবে। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন মাছ ফুলকার সাহায্যে গ্রহণ করে। বহিঃঅভিস্রবণ হওয়ার কারণে শ্বাসকার্য ব্যাহত হবে এবং মাছটি মারা যাবে।
প্রশ্ন ॥ ২৬ ॥ অন্তঃঅভিস্রবণ ও বহিঃঅভিস্রবণের পার্থক্য কী?
উত্তর : অন্তঃঅভিস্রবণ ও বহিঃঅভিস্রবণের পার্থক্য নিম্নরূপ :
অন্তঃঅভিস্রবণ | বহিঃঅভিস্রবণ |
i. এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি শোষণ করে। | i. এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ দেহকোষ থেকে পানি বাইরে বের হয়ে যায়। |
। ii. এই প্রক্রিয়ায় মাটিস্থ কম ঘনত্বের দ্রবণের দ্রাবক কোষের বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে যায়। | ii. এই প্রক্রিয়ায় কোষের কম ঘনত্বের দ্রবণের দ্রাবক কোষের বাইরে বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে যায়। |
প্রশ্ন ॥ ২৭ ॥ কোষের বাইরে কার্বন ডাইঅক্সাইডের ঘনত্ব যদি কোষের অভ্যন্তরের চেয়ে বেশি হয়ে যায় তবে কী ঘটবে?
উত্তর : আমরা জানি, পদার্থের অণুগুলোর ধর্ম হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি ঘনত্বের অবস্থান থেকে কম ঘনত্বের দিকে বিস্তার লাভ করা। এ প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। কোষের ভেতরের চেয়ে বাইরে কার্বন ডাইক্সাইডের ঘনত্ব বেশি হলে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কোষ অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. হৃৎপিণ্ডকে আবৃতকারী পর্দার নাম কী?
ক. এপিকার্ডিয়াম খ. মায়োকার্ডিয়াম
গ. পেরিকার্ডিয়াম ঘ. এন্ডোকার্ডিয়াম
উত্তর: গ. পেরিকার্ডিয়াম
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
২. আরাফাত পায়েস খাওয়ার সময় টসটসে কিসমিস দেখতে পেল। এক্ষেত্রে কিসমিস টসটসে হওয়ার কারণ কী?
ক. ব্যাপন খ. শোষণ
গ. অভিস্রবণ ঘ. ইমবাইবিশন
উত্তর: গ. অভিস্রবণ
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩. রাফিনের রক্তের প্রয়োজন হলে কার নিকট থেকে রক্ত নিতে পারবে?
ক. তামিম খ. তাসমিয়া
গ. রাতুল ঘ. তামিম ও রাতুল
উত্তর: গ. রাতুল
৪. তাসমিয়া-
i. রক্তে A, B অ্যান্টিজেন বহন করে
ii. রাফিনকে রক্ত দান করতে পারবে
iii. তামিমের রক্ত গ্রহণ করতে পারবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫. কোন বিজ্ঞানী প্রস্বেদনকে ‘প্রয়োজনীয় ক্ষতি’ নাম দেন?
ক. কার্টিস খ. ম্যাসম
গ.গলিনিয়াস ঘ. লুডোগার্ড
উত্তর: ক. কার্টিস
৬. রক্তের গ্রুপ জানা না থাকলে সাধারণত কোন গ্রুপ নিরাপদ?
ক. A এবং Rh+ খ. B এবং Rh–
গ. O এবং Rh– ঘ. O এবং Rh+
উত্তর: গ. O এবং Rh–
৭. প্রোটোপ্লাজমের শতকরা কত ভাগ পানি?
ক. ৬০% খ. ৭০%
গ. ৮০% ঘ. ৯০%
উত্তর: ঘ. ৯০%
৮. প্রস্বেদনের বাহ্যিক প্রভাবক কোনগুলো?
ক. আলো, পত্ররন্ধ্র খ. পত্ররন্ধ্র, পাতার সংখ্যা
গ. তাপমাত্রা, আলো ঘ. তাপমাত্রা, পাতার সংখ্যা
উত্তর: গ. তাপমাত্রা, আলো
৯. রানা “O” গ্রুপ রক্তধারী একটি ছেলে। তাকে কোন গ্রুপের রক্তধারী ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবে?
ক. A খ. B
গ. AB ঘ. O
উত্তর: ঘ. O
১০. ধমনীর প্রাচীর কয় স্তরবিশিষ্ট?
ক. এক খ. দুই
গ. তিন ঘ. চার
উত্তর: গ. তিন
১১. সুস্থঅবস্থায় হাতের কবজিতে পালস্ এর মান প্রতি মিনিটে কত?
ক. ৬০ খ. ৭০
গ. ৮০ ঘ. ৯০
উত্তর: খ. ৭০
১২. উদ্ভিদের পানি শোষণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোনটি?
ক. অভিস্রবণ ও শ্বসন খ. শ্বসন ও প্রস্বেদন
গ. অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন ঘ. ব্যাপন ও শ্বসন
উত্তর: গ. অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন
১৩. একজন সুস্থব্যক্তি কত মাস অন্তর রক্ত দান করতে পারে?
ক. এক খ. দুই
গ. তিন ঘ. চার
উত্তর: ঘ. চার
১৪. পত্ররন্ধ্র কোন অবস্থাতে বন্ধ হয়ে যায়?
ক. বাতাসে CO2 এর পরিমাণ খুব বেশি বৃদ্ধি পেলে
খ. পাতায় H2O এর পরিমাণ বৃদ্ধি হলে
গ. বাতাসে O2 এর ঘনত্ব বেড়ে গেলে
ঘ বাতাসে SO2 এর পরিমাণ ১% এর কম হলে
উত্তর: ক. বাতাসে CO2 এর পরিমাণ খুব বেশি বৃদ্ধি পেলে
১৫. রক্ত কোষের ক্যান্সারকে কী বলে?
ক. অ্যানজিনা খ. নিউমোনিয়া
গ. অস্টিওপোরেসিস ঘ. লিউকোমিয়া
উত্তর: ঘ. লিউকোমিয়া
১৬. পত্ররন্ত্রে কোন ধরনের কোষ থাকে?
ক. দেহকোষ খ. প্যারেনকাইমা
গ. রক্ষীকোষ ঘ. সঙ্গীকোষ
উত্তর: গ. রক্ষীকোষ
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৭. বর্ষাকালে ঘরের দরজা আটকানো কষ্টকর হয় কোনটির জন্য?
ক. অভিস্রবণ খ. ব্যাপন
গ. ইমবাইবিশন ঘ. প্রস্বেদন
উত্তর: গ. ইমবাইবিশন
১৮. নিচের বিবৃতিগুলো পড় :
i. থ্রম্বোপ্লাস্টিন রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে
ii. “O” গ্রুপের রক্তে কোনো এন্টিজেন থাকে না
iii. হৃৎপিণ্ডের প্রসারণকে বলা হয় সিস্টোল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
১৯. রক্তের কাজ হলো–
i. বর্জ্য পদার্থ নিন
ii. তাপের সমতা রক্ষা
iii. খাদ্য সার পরিবহন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকের আলোকে ২০ ও ২১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
দুর্ঘটনায় আহত একজন পথচারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নিলে ডাক্তার সাহেব তাকে তাৎক্ষণিক রক্ত দেওয়া প্রয়োজন বোধ করলেন। কিন্তু রক্তের গ্রুপ জানা না থাকাতে তাকে বিশেষ একটা গ্রুপের রক্ত দিলেন।
২০. ডাক্তার সাহেব পথচারীকে কোন গ্রুপের রক্ত দিলেন?
ক. A খ. B
গ. AB ঘ. O
উত্তর: ঘ. O
২১. পথচারীকে দেওয়া রক্তে –
i. কোনো এন্টিজেন থাকে না
ii. b এন্টিবডি থাকে
iii. a ও b এন্টিবডি থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
নিচের চিত্রের আলোকে ২২ ও ২৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

২২. চিত্রে A চিহ্নিত প্রক্রিয়াটি
i. তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত হয়
ii. সালোকসংশ্লেষণে সহায়তা করে
iii. CO2 নির্গমন হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
২৩. x চিহ্নিত অংশকে বলা হয়?
ক. পত্ররন্ধ্র খ. কিউটিকল
গ. লেন্টিসেল ঘ. সঙ্গীকোষ
উত্তর: ক. পত্ররন্ধ্র
নিচের চিত্রের আলোকে ২৪ ও ২৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

২৪. চিত্রটির নাম কী?
গ. কৈশিক জালিকা ঘ. নিউক্লিয়াস
উত্তর: খ. ধমনি
২৫. চিত্রটির বৈশিষ্ট্য হলো-
i. প্রাচীর তিন স্তরবিশিষ্ট
ii. কপাটিকা থাকে না
iii. নালি পথ সরু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের তথ্য থেকে ২৬ ও ২৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
তুমি এমন একজন রক্ত গ্রুপধারী ব্যক্তি যে, যেকোনো গ্রুপ থেকে রক্ত গ্রহণ করতে পারবে।
২৬. উদ্দীপক অনুযায়ী তোমার রক্তে–
i. A ও B উভয় এন্টিজেন আছে
ii. A এন্টিজেন ও b এন্টিবডি আছে
iii. কোনো এন্টিবডি নাই
নিচের কোনটি সঠিক?
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
২৭. উদ্দীপক অনুযায়ী তুমি নিচের কোন গ্রুপকে রক্ত দিতে পারবে?
ক. B খ. A
গ. AB ঘ. O
উত্তর: গ. AB
২৮. একটা কিসমিসকে পানিতে ডুবিয়ে রাখলে কিসমিসটি ফুলে ওঠে এর কারণ নিচের কোনটি?
ক. ইমবাইবিশন খ. ব্যাপন
গ. অভিস্রবণ ঘ. প্রস্বেদন
উত্তর: গ. অভিস্রবণ
২৯. উদ্ভিদ দেহের কোষপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজম কোন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে?
ক. অভিস্রবণ খ. ইমবাইবিশন
গ. ব্যাপন ঘ. শোষণ
উত্তর: খ. ইমবাইবিশন
৩০. উদ্ভিদের মধ্য দিয়ে পানি চলাচলের কারণ কোনটি?
ক. শোষণ চাপ খ. ব্যাপন চাপ
গ. প্রস্বেদনের স্রোত ঘ. মূলজ চাপ
উত্তর: ঘ. মূলজ চাপ
৩১. কোন কোষের কার্যকারিতার জন্য কোলেস্টেরল প্রয়োজন?
ক. রক্তকোষ খ. ত্বকীয় কোষ
গ. পেশীকোষ ঘ. স্নায়ুকোষ
উত্তর: ঘ. স্নায়ুকোষ
৩২. কোলেস্টেল কোন যৌগ সৃষ্টির মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়?
ক. থায়ামিন খ. লিপ্রোপ্রোটিন
গ. লিপিড ঘ. এড়িনিন
উত্তর: খ. লিপ্রোপ্রোটিন
৩৩. পত্ররন্ধ্রের সাথে যুক্ত কোষ কোনটি?
ক. লেন্টিসেল খ. গার্ডসেল
গ. স্পঞ্জি প্যারেনকাইমা ঘ. প্যালিসেড প্যারেনকাইমা
উত্তর: খ. গার্ডসেল
৩৪. উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে কোনটি?
ক. Amino Acid
খ. Phospholipid
গ. High Density Liporotein
ঘ. Low Density Liporotein
উত্তর: ঘ. Low Density Liporotein
৩৫. শুকনো কাঠ পানি শোষণ করে স্ফীত হওয়ার সাথে সম্পর্কিত কোনটি?
ক. প্রস্বেদন খ. ব্যাপন
গ. অস্রিবণ ঘ. ইমবাইবিশন
উত্তর: ঘ. ইমবাইবিশন
৩৬. ডান নিলয় থেকে ফুসফুসে রক্ত প্রবেশ করে কোনটির মাধ্যমে ?
ক. করোনারি ধমনি খ. পালমোনারি শিরা
গ. পালমোনারি ধমনি ঘ. নিম্ন মহাশিরা
উত্তর: গ. পালমোনারি ধমনি
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩৭. প্রস্বেদনের হার বৃদ্ধির সাথে কোনটি সম্পর্কিত?
ক. বায়ুচাপ বৃদ্ধি খ. নিম্ন তাপমাত্রা
গ. পাতার সংখ্যা বেশি ঘ. পত্রফলকের আয়তন ছোট
উত্তর: গ. পাতার সংখ্যা বেশি
৩৮. রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে কোন রোগটি হয়?
ক. স্ট্রোক খ. এইডস
গ. এনিমিয়া ঘ. লিউকেমিয়া
উত্তর: ঘ. লিউকেমিয়া

৩৯. ‘A’ চিহ্নিত অংশের কাজ কি?
ক. দেহে প্রহরীর মতো কাজ করে
খ. শিরা ও ধমনীর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে
গ. রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে
ঘ. কোলেস্টেরলের পরিমাণ সঠিক রাখে
উত্তর: ক. দেহে প্রহরীর মতো কাজ করে
৪০. মহিলাদের ‘HDL’ কোলেস্টেরোলের মান কত মিলিমোল/লিটার?
ক. ০.৯০-১.৪৫ খ. ০.৪০-১.৫৩
গ. ০.৯০-১.৬৮ ঘ. ০.৪৫-১.৮১
উত্তর: গ. ০.৯০-১.৬৮
৪১.

চিত্রটির কাজের সাথে রক্তের কোন কাজটির সাদৃশ্য আছে?
ক. তাপের সমতা রক্ষা
খ. রোগ প্রতিরোধ করা
গ. বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন
ঘ. কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণ
উত্তর: খ. রোগ প্রতিরোধ করা
৪২. টিউনিকা মিডিয়া কী দ্বারা তৈরি?
ক. তন্তুময় যোজক কলা খ. অনৈচ্ছিক পেশি
গ. সরল আবরণী কলা ঘ. ঐচ্ছিক পেশি
উত্তর: খ. অনৈচ্ছিক পেশি
৪৩. ‘ফ্লুইড অব লাইফ‘ বলা হয় নিচের কোনটিকে?
ক. পানি খ. রক্তরস
গ. রক্তকণিকা ঘ. লসিকা
উত্তর: ক. পানি
৪৪. অস্থিমজ্জা থেকে কোনটি তৈরি হয়?
ক. শ্বেত রক্তকণিকা ও লসিকা
খ. অণুচক্রিকা ও রক্তরস
গ. লোহিত রক্তকণিকা ও শ্বেত রক্তকণিকা
ঘ. রক্তরস ও লসিকা
উত্তর: গ. লোহিত রক্তকণিকা ও শ্বেত রক্তকণিকা
৪৫. সোহানের রক্তের গ্রুপ O। সে নিচের কোন গ্রুপের রক্ত নিতে পারবে?
ক. A খ. B
গ. AB ঘ. O
উত্তর: ঘ. O
৪৬. ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মাঝের কপাটিকার নাম কী?
ক. অর্ধচন্দ্রাকার খ. বাইকাসপিড
গ. ট্রাইকাসপিড ঘ. অলিন্দ নিলয়
উত্তর: গ. ট্রাইকাসপিড
৪৭. কোষস্থ পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণকে একত্রে কি বলে?
ক. ক্যালোজ খ. এনজাইম
গ. ন্যাকটার ঘ. কোষরস
উত্তর: ঘ. কোষরস
৪৮. Fatty liver এর ক্ষেত্রে লিপিডের পরিমাণ বেড়ে যায় কত শতাংশ?
ক. ১০-২০ খ. ২০-৩০
গ. ৩০-৪০ ঘ. ৪০-৫০
উত্তর: খ. ২০-৩০
৪৯. রক্তের ‘A’ গ্রুপ শুধুমাত্র নিচের কোন গ্রুপের রক্ত গ্রহণ করতে পারবে?
ক. B এবং O খ. শুধু A
গ. A এবং O ঘ. A এবং B
উত্তর: গ. A এবং O
৫০. হৃৎপিণ্ডের প্রাচীর কয়টি স্তর নিয়ে গঠিত?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৩টি ঘ. ৪টি
উত্তর: গ. ৩টি
৫১. উদ্ভিদ দেহের কোন অংশ দিয়ে পানি শোষণ করে?
ক. কাণ্ড খ. মূল
গ. পাতা ঘ. ফুল
উত্তর:খ. মূল
৫২. প্রস্বেদনকে ‘প্রয়োজনীয় ক্ষতি’ নামে অভিহিত করেছেন কোন বিজ্ঞানী?
গ. লোয়ী ঘ. গ্রেগর জোহান মেন্ডেল
উত্তর: খ. কাটিস
৫৩. কোনটির সংক্রমণে বাতজ্বর হয়?
ক. স্ট্রেপটোকক্কাস খ. ফানজাই
গ. ভাইরাস ঘ. প্রোটোজোয়া
উত্তর: ক. স্ট্রেপটোকক্কাস
৫৪. অধিক মাত্রার কোলেস্টেরলের উৎস কোনটি?
ক. চিংড়ি, যকৃত খ. ঝিনুক, দুধ
গ. ডিম, মাছ ঘ. কচ্ছপ, পনির
উত্তর: ক. চিংড়ি, যকৃত
৫৫. কোন বিজ্ঞানী মানুষের রক্তের শ্রেণিবিভাগ করেন?
ক. বেনজ খ. কার্ল এরেকি
গ. স্টাস বার্জা ঘ. কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার
উত্তর: ঘ. কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার
৫৬. কোন অণুজীবের সংক্রমণে বাতজ্বর হয়?
ক. Bacillus খ. Pseudomonas
গ. Streptococcus ঘ. Staphylococcus
উত্তর: গ. Streptococcus
৫৭. উদ্ভিদের গৌণ বৃদ্ধি হলে কাণ্ডের বাকল ফেটে কী সৃষ্টি হয়?
ক. কিউটিকল খ. বর্ষবলয়
গ. লেন্টিসেল ঘ. কাইটিন
উত্তর: গ. লেন্টিসেল
৫৮. কাঠ দীর্ঘদিন পানির সংস্পর্শে থাকলে ফুলে ওঠে কারণ—
ক. ইমবাইবিশন খ. ব্যাপন
গ. অভিস্রবণ ঘ. শোষণ
উত্তর: ক. ইমবাইবিশন
৫৯. কোলেস্টেরল কোন হাইড্রোকার্বন থেকে উৎপন্ন হয়?
ক. ইথানল খ. কোলেস্টেইন
গ. ফ্যাটি এসিড ঘ. ফরমালডিহাইড
উত্তর: খ. কোলেস্টেইন
৬০. আম গাছের মূল থেকে কান্ডে ক্যালসিয়াম পরিবহন করে কোন টিস্য?
ক. কর্ক টিস্যু খ. জাইলেম টিস্যু
গ. ফ্লোয়েম টিস্যু ঘ. মেরিস্টেমেটিক টিস্যু
উত্তর: খ. জাইলেম টিস্যু
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬১ ও ৬২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
আনোয়ারা কিছু রজনীগন্ধা ফুল ফুলদানিতে রাখল। সন্ধ্যাবেলা সে লক্ষ্য করল, ফুলের সুবাসে সম্পূর্ণ ঘর ভরে গেছে। এই ঘটনার সাথে তার বিজ্ঞান বইয়ে পঠিত একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মিল লক্ষ করল।
৬১. উদ্দীপকের বিশেষ প্রক্রিয়াটি কী?
ক. ব্যাপন খ. অভিস্রবণ
গ. প্রস্বেদন ঘ. শ্বসন
উত্তর: ক. ব্যাপন
৬২. উলিখিত প্রক্রিয়ায়-
i. জীবকোষে অক্সিজেন প্রবেশ করে
ii. উদ্ভিদ দেহ থেকে পানি বের করে দেয়
iii. উদ্ভিদ সালোকসংশেষণের জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৬৩. প্রস্বেদনের বাহ্যিক প্রভাবক–
i. আপেক্ষিক আর্দ্রতা
ii. পত্রের সংখ্যা
iii. তাপমাত্রা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৬৪. প্রস্বেদনের পরীক্ষার উপকরণ হলো–
i. ফানেল
ii. সেলোফেন ব্যাগ
iii. ক্লিপ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬৫. মূলরোমের প্রাচীর কী দিয়ে গঠিত?
ক. কাইটিন খ. সেলুলোজ
গ. প্রোটিন ঘ. মজ্জা
উত্তর: খ. সেলুলোজ
৬৬. পানির অণু ভেসেল নলের প্রাচীরের সাথে লেগে থাকাকে কী বলে?
ক. আসক্তি খ. সংলগ্নতা
গ. সংসক্তি ঘ. সংযুক্তি
উত্তর: খ. সংলগ্নতা
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: নিচের চিত্রটি লক্ষ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. সংলগ্নতা কী?
খ. ইমবাইবিশন বলতে কী বুঝ?
গ. S উপাদানটির অনুপস্থিত প্রক্রিয়াটিতে কীরূপ প্রভাব -ফেলবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. X উপাদানটি যদি Y অঞ্চলে না পৌঁছায় তাহলে উদ্ভিদের ক্ষেত্রে কী সমস্যা দেখা দিবে বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো বন্ধু সঙ্গে পানির অণুর লেগে থাকার বৈশিষ্ট্যই সংলগ্নতা।
খ. কলয়েডধর্মী বিভিন্ন পদার্থ যে প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের তরল পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) শোষণ করে তাকে ইমবাইবিশন বলে। শুষ্ক বা আংশিক শুষ্ক কতকগুলো পদার্থ নানা ধরনের তরল পদার্থ শোষণ করতে সক্ষম। এদের কলয়েডধর্মী পদার্থ বলে। কলয়েডধর্মী পদার্থ হাইড্রোফিলিক বা পানিগ্রাহী। কোষপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজম কলয়েডধর্মী হওয়ায় ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে স্ফীত হয়। এটি পানি শোষণের একটি অন্যতম প্রক্রিয়া।
গ. উদ্দীপকের চিত্রটির দ্বারা উদ্ভিদের পানি শোষণ ও পরিবহনকে বুঝানো হয়েছে। S উপাদানটি হলো সূর্যের আলো যার অনুপস্থিতিতে প্রক্রিয়াটি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে।
সবুজ উদ্ভিদের ক্লোরোফিল সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে পানি ও CO2 এর সাথে বিক্রিয়া ঘটিয়ে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পাতায় গ্লুকোজ সংশ্লেষ করে, পাতার কোষে গ্লুকোজ উৎপন্নের কারণে পাতার কোষগুলোর কোষরসে অভিস্রবণ চাপ সৃষ্টি হয়, ফলে কোষগুলো অভিস্রবণ ও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে। এই পানি পুনরায় আলো ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ উৎপন্ন করে।
সুতরাং বলা যায় যে, সূর্যের আলোর অনুপতিতে পাতায় সালোকসংশ্লেষণ ঘটবে না। ফলে অভিস্রবণ চাপ সৃষ্টি হবে না। এতে পানি শোষণ ও উৎপাদিত খাদ্যের পরিবহন ব্যাহত হবে।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্রে উদ্ভিদে পানি পরিবহন এবং সালোকসংশ্লেষণকে বুঝানো হয়েছে। কারণ পানির ঊর্ধ্বগতি এবং পাতা থেকে CO2 নির্গমন দেখানো হয়েছে।
আমরা জানি সালোকসংশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে পানি (X) একটি উপকরণ। সালোকসংশ্লেষণের আলোক নির্ভর পর্যায়ে সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় পানি বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন হাইড্রোজেন ও ইলেকট্রন উৎপন্ন করে। এ থেকে ATP এবং NADPH + H+ উৎপন্ন করে। এই ATP ও NADPH + H+ অন্ধকার পর্যায়ে CO2 কে বিজারিত করে গ্লুকোজ উৎপন্ন করে। উদ্ভিদ দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ও শারীরবৃত্তীয় কাজগুলোর অধিকাংশই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পানির ওপর নির্ভরশীল।
সুতরাং পানি (X) যদি পাতা (Y) তে না পৌছায় তাহলে উদ্ভিদটির সালোকসংশ্লেষণ ব্যাহত হবে এবং শর্করা উৎপাদন হবে না। ফলে শ্বসন ব্যাহত হবে। এছাড়া পানি পাতায় পরিবাহিত না হলে প্রস্বেদন ঘটতে থাকবে এবং এক সময় প্রস্বেদনের ফলে স্থায়ীভাবে পাতা নুইয়ে পড়ার ফলে উদ্ভিদটির মৃত্যুও ঘটতে পারে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–২: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
হাসান সাহেবের বয়স ৫০। তিনি একটি আর্থিক ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কিছুদিন যাবত তিনি মাথা ব্যথা, বুক ধড়ফড় এবং অস্থিরতা ভাব অনুভব করছেন। অন্যদিকে তার ৭ বছর বয়সী মেয়ে মুনের গিটে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, ত্বকে লালচে ভাব দেখা যাচ্ছে। তারা দুজন ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি কিছু পরীক্ষা– নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।
ক. রক্ত কী?
খ. শ্বেতকণিকা কীভাবে দেহকে রক্ষা করে? বুঝিয়ে লেখ।
গ. হাসান সাহেবের সমস্যাগুলোর কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যা দুটির মধ্যে কোনটি অনিরাময়যোগ্য যুক্তিসহ ব্যাখ্যা কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রক্ত লাল বর্ণের এক ধরনের তরল যোজক টিস্যু।
খ. শ্বেত কণিকাগুলো রক্তরসের মধ্য দিয়ে নিজেরাই চলতে পারে এবং দেহ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে ক্ষণপদ সৃষ্টির মাধ্যমে ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস করে। এছাড়া শ্বেত কণিকা দেহে অ্যান্টিবডি গঠন করে এবং এই অ্যান্টিবডির দ্বারা দেহে প্রবেশ করা রোগজীবাণুকে ধ্বংস করে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এভাবে শ্বেতকণিকা দেহকে রক্ষা করে।
গ. হাসান সাহেবের সমস্যাগুলোর কারণ উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপকে ডাক্তারি ভাষায় হাইপারটেনশন বলে।
অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, মেদবহুল শরীর, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, অস্থির চিত্ত ও মানসিক চাপগ্রস্ত, রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্য, ধূমপানের অভ্যাস ও বাবা বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থেকেও এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে। হাসান সাহেবের সমস্যা যেমন : মাথা ব্যথা, বুক ধড়ফড় ও অস্থিরভাব- এগুলো উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ।
অতএব, উপরে উল্লিখিত সমস্যাগুলো তার উচ্চ রক্তচাপের কারণে হতে পারে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত হাসান সাহেবের সমস্যা হলো উচ্চ রক্তচাপ এবং তার মেয়ে মুনের রোগটি হলো বাতজ্বর।
বাতজ্বর স্ট্রেপটোকক্কাস অণুজীবের সংক্রমণে সৃষ্টি হয়। এ রোগে বিশেষ করে হৃদপেশি এবং হৃৎপিণ্ডের কপাটিকা বা ভালভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ শনাক্ত করা গেলে পেনিসিলিন জাতীয় ওষুধ যথাযথভাবে প্রয়োগে এ রোগের সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
হাসান সাহেবের উচ্চ রক্তচাপ রোগটি বংশগতভাবে হতে পারে। এছাড়া পরিবারের সদস্যের ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরলের পূর্ব ইতিহাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপ হলে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে ওষুধ সেবন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত রাখা যায়। কিনত্মদি হৃৎপিণ্ডের কপাটিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে কপাটিকা মেরামত করে হৃদপিণ্ডকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়।।
উদ্দীপকে মুনের রোগটি অর্থাৎ বাতজ্বর রোগ যথাযথ ঔষধ প্রয়োগে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কিনহাসান সাহেবের রোগটি যথাযথ ঔষধ প্রয়োগে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, পুরোপুরি রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বলা যায়, সমস্যা দুটির মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় হয় না, কিন্তু জ্বর নিরাময়যোগ্য।
প্রশ্ন –৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মাহফুজের রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বেড়ে গেছে। হঠাৎ হাতে আঘাত পাওয়াতে সে লক্ষ, করল, তার কাটা স্থনের রক্ত খুব সহজে জমাট বাঁধছে না।
ক. রক্তরস কী?
খ. Rh ফ্যাক্টর বলতে কী বোঝায়?
গ. মাহফুজের রক্তে উক্ত কণিকার বৃদ্ধি কিরূপ রোগের সৃষ্টি করবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তার কাটা স্মনের ঐ অবসুর সাথে একটি রক্তকোষ জড়িত যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রক্তের বর্ণহীন তরল অংশই রক্তরস।
খ. Rh ফ্যাক্টর রেসাস (Rhesus) নামক বানরের লোহিত রক্ত কণিকায় অবস্থিত এক ধরনের অ্যাগ্লুটিনোজেন। রেসাস বানরের নাম অনুসারে এই অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর সংক্ষেপে Rh ফ্যাক্টর বলে। যেসব রক্তে Rh ফ্যাক্টর উপস্থি তাদের Rh+ (Rh পজিটিভ) এবং যাদের রক্তে Rh ফ্যাক্টর অনুপস্থি তাদের Rh– (Rh নেগেটিভ) বলে।
গ. রক্তে শ্বেতকণিকার স্বাভাবিক পরিমাণ হচ্ছে প্রতি কিউবিক মিলিমিটারে ৫ – ১০ হাজার।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে। মাহফুজের রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যাওয়াকে লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার বলে। যদি কোনো কারণে দেহে লোহিত অস্তিমজ্জা, লোহিত কণিকা উৎপাদনে ব্যর্থ হয় এবং অস্বাভাবিক শ্বেতকণিকার বৃদ্ধি ঘটে ফলে এ রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা, শ্বাস গ্রহণে কষ্ট, বুকে ব্যথা, নাক থেকে রক্ত পড়া, হাত-পায়ের জোড়ায় ব্যথা ও ফুলে ওঠা, হাত বা পা কাঁপতে থাকা লসিকা গ্রন্থিফুলে যাওয়া, দুর্বল বোধ করা, দেহত্বকে ছোট ছোট লালবর্ণের দাগ হওয়া এ রোগের লক্ষণ। মাহফুজের কাটা স্থানের ঐ অবসুর সাথে যে রক্তকোষ জড়িত সেটি হলো অণুচক্রিকা। অণুচক্রিকার প্রধান কাজ হলো কাটা সনের রক্ত জমাট বাঁধতে বা রক্ত তঞ্চন করতে সাহায্য করা।
কোনো রক্তবাহী নালির ক্ষতি হলে এরা অনতিবিলম্বে থ্রোম্বোপ্লাস্টিন নামক এক প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য নিঃসরণ করে যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। পরিণত মানবদেহে প্রতি ঘনমিলিমিটার রক্তে অণুচক্রিকার সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। রক্তে উপযুক্ত পরিমাণ অণুচক্রিকা না থাকলে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না। মাহফুজের হাতে আঘাত পাওয়াতে সে দেখল ক্ষতস্থানের রক্ত সহজে জমাট বাঁধছে না।
অর্থাৎ তার দেহে অণুচক্রিকার সংখ্যা কমে গেছে।
প্রশ্ন– ৪ : রফিকদের স্কুলের মাঠে রক্তদান কর্মসূচি চলছে। রফিকের ইচ্ছা সে রক্তদান করবে ও তার রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করবে। সে তার বন্ধু সফিককে বলল চল দুজন মিলে ঐ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। রফিক রক্তদান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে জানতে পারল তার রক্তের কোনো এন্টিবডি নেই। রফিক রক্তদান করলেও সফিক অংশগ্রহণ করে নাই। সে তার রক্তের গ্রুপও জানে না।
ক. টিউনিকা মিডিয়া কী?
খ. দেহে রক্ত চলাচল কমে গেলে কী সমস্যা হতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
গ. রফিকের রক্তের গ্রুপ উল্লেখপূর্বক তাদের খেলার মাঠের কর্মসূচির কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে রফিক ও সফিকের সামাজিক দায়বদ্ধতা বিশ্লেষণ করো।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বৃত্তাকার অনৈচ্ছিক পেশি দিয়ে গঠিত শিরা ও ধমনির মাঝের স্তরই হলো টিউনিকা মিডিয়া।
খ. দেহে রক্ত চলাচল কমে গেলে কোষে পরিমাণ মতো অক্সিজেন এবং শোষিত খাদ্যবস্তু পৌছাবে না। ফলে পুষ্টির অভাবে কোষ মারা যাবে। আবার কোষে বিপাকের ফলে উৎপন্ন বর্জ্য সঠিকভাবে অপসারিত হবে না। এছাড়াও হৃৎপিণ্ডে প্রয়োজন মতো রক্ত প্রবাহিত না হলে সমস্যা দেখা দিবে। তদুপরি দেহে রক্ত চলাচলে কমে গেলে প্রাণীর মৃত্যুও ঘটতে পারে।
গ. উদ্দীপকে দেওয়া আছে, রফিকের রক্তে কোনো এন্টিবডি নেই, অর্থাৎ রফিকের রক্তের গ্রুপ AB।
কারণ AB গ্রুপের রক্তে এন্টিজেন a ও এন্টিজেন b থাকলেও কোনো এন্টিবডি নেই। রফিকের খেলার মাঠের কর্মসূচিটি হচ্ছে রক্তদান কর্মসূচি। বর্তমানে রক্তদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এরকম নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। যেমন- কোনো বিশেষ দিবসে বা বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন। এতে জনসাধারণের মাঝে রক্তদান সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও ভীতি অনেকাংশে হ্রাস পায়।
এ সকল কর্মসূচি প্রায়শই গ্রহণের ফলে অতীতের তুলনায় মানুষ রক্তদান ও গ্রহণ সম্পর্কে অধিক আগ্রহী ও সচেতন। এই কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবকেরা রক্ত সংগ্রহ করে ব্লাড ব্যাংকে জমা রাখেন। অনেক সময় মুমূর্ষ রোগীর বা দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির রক্তের প্রয়োজন হয়। জরুরি ভিত্তিতে অনেক সময় এ ব্লাড ব্যাংকের রক্ত রোগীর দেহে সঞ্চালন করা হয়। রক্ত সঞ্চালনের পূর্বে রোগীর রক্তের গ্রুপ জানা থাকা আবশ্যক। কারণ সব গ্রুপই সব গ্রুপের ব্যক্তিকে রক্ত দিতে পারে না।
রক্তের এন্টিবডি ও তার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এন্টিজেন অন্য কোনো গ্রুপের রক্তকে জমিয়ে দেয়। মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত দানের ক্ষেত্রে এ সকল জটিলতার হাত থেকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যেই স্বেচ্ছাসেবকেরা রক্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করেই তা সংগ্রহ করে ছিলেন।
ঘ. উদ্দীপকে রফিককে রক্তদান কর্মসূচিতে রক্তদানে উৎসাহিত হতে দেখা গেছে। রক্তদান একটি মহৎ কাজ।
আকস্মিক দুর্ঘটনায় শল্য চিকিৎসা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন কারণে অত্যাধিক রক্তক্ষরণ হলে দেহে রক্তের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য ঐ ব্যক্তির দেহে রক্ত সংযোজন করতে হয়।
জরুরি ভিত্তিতে এই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য রোগীর দেহে অন্য মানুষের রক্ত দিতে হয়। তবে কোন অবস্থাতেই রোগীর রক্তের গ্রুপ ও প্রকৃতি পরীক্ষা না করে রোগীর দেহে অন্য কোন ব্যক্তির রক্ত প্রবেশ করানো উচিত নয়। ব্যতিক্রম হলে নানা জটিলতা হয়ে রোগী মারা যেতে পারে। এ সকল কারণে জরুরি ও মুমষু রোগীকে রক্তদান করে তার জীবন বাঁচানো সত্যিই মহৎ কাজ।
আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে রক্তদানে রক্ত দাতার কোন ক্ষতি হয় না। একজন সুস্থ মানুষের দেহে প্রতি সেকেন্ডে ২০ লক্ষ লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয়। এছাড়া দেখা গেছে একজন সুস্থ ব্যক্তি চার মাস অন্তর রক্তদান করলে দাতার দেহে সামান্যতম কোনো অসুবিধা সৃষ্টি হয় না।
আবার যেহেতু রক্তের কোন বিকল্প নেই এবং জরুরি অবস্থায় অনেক মুমূর্ষ রোগীর প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয় তাই এমন অবস্থায় রক্তদান করে তাদের জীবন বাঁচানো যেমন মহৎ কাজ, তেমনি এটি আমাদের সকলের জন্য একটি সামাজিক দায়বদ্ধতাও বটে।
যদিও রফিকের বন্ধু সফিক রক্তদানে অংশগ্রহণ করেনি, শরীর সুস্থ স্বাভাবিক থাকলে সফিকেরও রক্তদানে উৎসাহী হওয়া উচিত ছিলো। এতে সে কোনো না কোনো মুমূর্ষ রোগীর উপকারে আসতে পারত এমনকি তার রক্তের গ্রুপও জানতে পারত।
তাই বলা যায়, রফিকের এমন রক্তদান কর্মসূচি অর্থাৎ তার এই সামাজিক দায়বদ্ধতাপূর্ণ কর্মসূচি সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
প্রশ্ন–৫ :

ক. সর্বজনীন রক্তদাতা কাকে বলে?
খ. সেলুলোজকে পানি-প্রিয় পদার্থ বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের A চিত্রের প্রক্রিয়াটি উদ্ভিদের একটি অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গল ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মানব জীবনে B ও C এর ভিন্নতা যুক্তিসহকারে বিশ্লেষণ করো।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. O গ্রুপের রক্তবিশিষ্ট ব্যক্তি সব গ্রুপের রক্তের ব্যক্তিকে রক্ত দিতে পারে বলে একে সর্বজনীন রক্তদাতা বলা হয়।
খ. সেলুলোজ হলো- হাইড্রোফিলিক বা পানি-প্রিয় পদার্থ কেননা এরা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে তা শুষে নেয়। কোষপ্রাচীর ও প্রোটোপ্লাজম কলয়েডধর্মী হওয়ায় ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে স্ফীত হয়ে ওঠে। তাই সেলুলোজকে পানি-প্রিয় পদার্থ বলা হয়।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গ. উদ্দীপকের A চিত্রের প্রক্রিয়াটি হলো প্রস্বেদন। প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার উপরে সজীব উদ্ভিদ কোষের বিপাকীয় কার্যক্রম অনেকাংশে নির্ভরশীল।
প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় টান পড়ে। এই টানের ফলে উদ্ভিদের মূলরোম কর্তৃক শোষিত পানি ও খনিজ লবণ পাতায় পরিবাহিত হয়। এ টানের ঘাটতি হলে পানি শোষণ কমে যাবে এবং খাদ্য প্রস্তুতসহ অনেক বিপাকীয় কার্যক্রম ধীর হয়ে যাবে। প্রস্বেদনের ফলে পাতার মেসোফিলে ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা পানি শোষণে সাহায্য করে।
উদ্ভিদ প্রস্বেদনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পত্রফলক কর্তৃক শোষিত তাপশক্তি হ্রাস করে পাতার কোষগুলোর তাপমাত্রা সহনশীল পর্যায়ে রাখে। তবে যদি পানি শোষণের চেয়ে প্রস্বেদনে পানি হারানোর হার অধিক হয় তবে উদ্ভিদের জন্য পানি খনিজের ঘাটতি দেখা দেবে। এর ফলে উদ্ভিদটির মৃত্যুও হতে পারে। মাটিতে পানির ঘাটতি থাকলে শোষণ কম হবে কিন্তু প্রস্বেদন পূর্বের মতো চলতে থাকবে।
এ অবস্থাকে ঠেকাতে প্রকৃতি শীত মৌসুমে বহু উদ্ভিদের পাতা ঝরিয়ে দেয়। যা উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর। প্রস্বেদনের এরূপ বৈশিষ্ট্যের জন্যই একে অতি ‘প্রয়োজনীয় অমঙ্গল’ বলা হয়।
ঘ. চিত্রের B হলো ধমনি এবং C হলো শিরা। নিচে এদের ভিন্নতা যুক্তিসহকারে তুলে ধরা হলো-
- ধমনি হৃৎপিণ্ড থেকে উৎপন্ন হয়ে দেহের কৈশিকনালিতে রক্ত সরবরাহ করে। অপরদিকে, শিরা কৈশিকনালি থেকে উৎপন্ন হয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ করে।
- ধমনির রক্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ থাকে বলে রক্ত গাঢ় লাল বর্ণের হয়। অপরপক্ষে, শিরার রক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ হওয়ায় রং কালচে লাল বর্ণের।
- ধমনির প্রাচীর পুরু ও বেশি স্থিতিস্থাপক কিন্তু শিরার প্রচীর কম পুরু ও কম স্থিতিস্থাপক।
- ধমনিতে কোনো কপাটিকা থাকে না, কিন্তু শিরায় তা থাকে।
- ধমনি দেহের কেন্দ্রের দিকে এবং শিরা দেহের পরিধির দিকে অবস্থান করে।
- হৃদ কম্পনের সাথে সাথে ধমনিতে রক্ত ঝাকি দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা বাহির থেকে অনুভূত হয় এবং যাকে আমরা নাড়ী-দেখা বলে থাকি; কিন্তু শিরায় রক্ত ঝাকি দিয়ে চলে না।
প্রশ্ন-৬ :

ক. লিউকেমিয়া কী?
খ. কিউটিকুলার প্রস্বেদন বলতে কী বোঝায়?
গ, উল্লিখিত চিত্রX উপাদানগুলির গুরুত্ব উল্লেখ করো ।
ঘ. মানবদেহে চিত্র: Y এর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. লিউকেমিয়া হলো রক্তকোষের ক্যান্সার।
খ. উদ্ভিদের ত্বকীয় কিউটিকল পাতলা হলে তা ভেদ করে কিছু পানি বাম্পাকারে বের হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াকে কিউটিকুলার প্রস্বেদন বলা হয়। অত্যাধিক শুষ্কাবস্থায় যখন পত্ররন্দ্র বন্ধ হয়ে যায় তখন এ প্রক্রিয়াটি চলতে পারে।
গ. উদ্দীপকের চিত্র X এর উপাদানগুলো যথাক্রমে লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা । কোষসমূহ আমাদের দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলোর ভূমিকা নিচে বর্ণনা করা হলো— লোহিত
রক্তকণিকা: লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন ফুসফুস হতে অধিকাংশ অক্সিজেন দেহকোষে এবং সামান্য কার্বন ডাই-অক্সাইড কোষ হতে ফুসফুসে নিয়ে যায়। এছাড়া হিমোগ্লোবিন ও অন্যান্য অন্তঃকোষীয় বস্তু বাফাররূপে রক্তে অম্ল-ক্ষারের সমতা রক্ষা করে। লোহিত কণিকা রক্তের সান্দ্রতা রক্ষা করে এবং এর প্লাজমামেমব্রেনে যেসব অ্যান্টিজেন প্রোটিন সংযুক্ত থাকে তা মানুষের ব্লাডগ্রুপিং-এর জন্য দায়ী। শ্বেত
রক্তকণিকা: মনোসাইট ও নিউট্রোফিল ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবাণু ভক্ষণ করে ধ্বংস করে। লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করে রোগ প্রতিরোধ করে বলে এদের আণুবীক্ষণিক সৈনিক বলা হয়। বেসসাফিল ধরনের শ্বেত কণিকা হেপারিন তৈরি করে যা রক্তনালির ভেতরে রক্ততঞ্চন রোধ করে। এছাড়া দানাদার শ্বেত কণিকাগুলো হিস্টামিন সৃষ্টি করে যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিউট্রোফিলের দানা বিষাক্ত ও তা জীবাণু ধ্বংস করে। আবার ইওসিনোফিল রক্তে প্রবেশকৃত কৃমির লার্ভা এবং অ্যালার্জিক অ্যান্টিবডি ধ্বংস করে।
অণুচক্রিকা: অণুচক্রিকা দেহের কাটা স্থানে রক্ত তঞ্চন ঘটায়। এছাড়া অণুচক্রিকা সেরাটোনিন নামক রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন করে যা রক্তনালির সংকোচন ঘটিয়ে রক্তপাত কমিয়ে দেয়।
উপরিউক্ত আলোচনা হতে বোঝা যায় যে, উদ্দীপকের কোষসমূহ আমাদের দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র: Y হলো মানুষের রক্ত সংবহনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গা হৃৎপিণ্ড। নিম্নে মানবদেহে এর গুরুত্ব দেয়া হলো:
মানুষের হৃৎপিণ্ড চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট। এর সাথে ফুসফুসের সংযোগ থাকে। সমগ্রদেহ থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ড আসে। এই সময় রক্ত কোষীয় বিপাকের ফলে উৎপন্ন CO2 শোষিত খাদ্যপুষ্টি, বিভিন্ন হরমোন, রেচনে উৎপন্ন বর্জ্যে পদার্থ বহন করে হৃৎপিণ্ডে আনে।
হৃৎপিণ্ড এই রক্ত পাম্প করে সমগ্রদেহে ছড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি CO2 যুক্ত রক্তকে ফুসফুসে প্রেরণ করে CO2 কে দেহ থেকে বের করে দেয় এবং O2 যুক্ত বায়ুকে দেহে প্রবেশ করিয়ে নিয়ে আসে। এই O2 যুক্ত রক্ত হৃৎপিণ্ডের সংকোচনে সমগ্রদেহে প্রতিটি কোষে পৌঁছে যায় এবং শর্করা বিপাকে সহায়তা করে শক্তি উৎপন্ন করে। যদি হৃৎপিণ্ড না থাকত, তবে সমগ্রদেহে রক্ত চলাচল করত না। কোনো কিছু পরিবাহিত হত না।
আবার O2 এর অভাবে কোষীয় বিপাক সম্পন্ন হতো না। ফলে মানবদেহ মৃত্যুর সম্মুখীন হতো। তাই হৃৎপিণ্ড মানবদেহের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
প্রশ্ন–৭ :

ক. ব্যাপন কাকে বলে?
খ. আদর্শ রক্তচাপ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. উল্লিখিত চিত্রটির গঠন বর্ণনা করো।
ঘ. উল্লিখিত অঙ্গটি সুস্থ রাখতে করণীয় বিষয় আলোচনা করো।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অধিকতর ঘন স্থান হতে কম ঘন স্থানে বিস্তার লাভ করার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।
খ. চিকিৎসকের মতে, পরিণত বয়সে একজন মানুষের রক্তচাপ যখন ১২০/৮০ মিলিমিটার মানের কাছাকাছি হয় তখন তাকে বলা হয় আদর্শ রক্তচাপ। আদর্শ রক্তচাপে সিস্টোলিক চাপের মান ১২০ বা এর সামান্য
নিচে এবং ডায়াস্টোলিক চাপের মান ৮০ বা এর কিছুটা নিচে হয়ে থাকে। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পরিণত বয়সে একজন মানুষের রক্তচাপ আদর্শ মানের বা এর কাছাকাছি থাকা উচিত।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গটি হলো হৃৎপিণ্ড। নিচে এ অঙ্গটি তথা হৃৎপিণ্ডের গঠন ব্যাখ্যা করা হলো—
হৃৎপিণ্ড দুই ফুসফুসের মাঝে অবস্থিত একটি ত্রিকোনাকার ফাঁপা অঙ্গ। এটি হৃদপেশি নামক অনৈচ্ছিক পেশি দ্বারা গঠিত। হৃৎপিণ্ডের ভেতরটা ফাঁপা এবং চারটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত। উপরের প্রকোষ্ঠ দুটি নিচের প্রকোষ্ঠ দুটির চেয়ে আকারে ছোট। উপরের প্রকোষ্ঠ দুটিকে ডান ও বাম অলিন্দ বলে এবং নিচের প্রকোষ্ঠে দুটিকে ডান ও বাম নিলয় বলে। অলিন্দদ্বয়ের প্রাচীর তুলনামূলকভাবে পাতলা, আর নিলয়ের প্রাচীর পুরু।
অলিন্দ ও নিলয় যথাক্রমে আন্তঃঅলিন্দ পর্দা ও আন্তঃনিলয় পর্দা দ্বারা পরস্পর পৃথক থাকে। হৃৎপিণ্ডের উভয় অলিন্দ ও নিলয়ের মাঝে যে ছিদ্র পথ আছে তা খোলা বা বন্ধ করার জন্য সেখানে কপাটিকা থাকে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গটি হলো হৃৎপিণ্ড। হৃৎপিন্ডকে সুস্থ রাখতে যা করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো-
মানুষ পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হবার আগে থেকেই তার হৃদযন্ত্র কাজ করা শুরু করে এবং মৃত্যুর পূর্ব মূহূর্ত পর্যন্ত নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকে। মানুষের বাঁচা-মরায় হৃদযন্ত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য সঠিক জীবনধারা ও খাদ্য নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। নানা ধরনের তেল বা চর্বি জাতীয় খাদ্য হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমকে ব্যাহত করে।
রক্তের কোলেস্টেরল হৃৎপিন্ডের রক্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। মাদক ও নেশা সেবনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বা হৃদস্পন্দন সাধারণ মানের থেকে বৃদ্ধি পায়। ফলে মাদকসেবী কিছুটা মানসিক আনন্দ ও প্রশান্তি পেলেও তার হৃদযন্ত্রের প্রভূত ক্ষতি হয়। ধূমপান অথবা জর্দার নিকোটিনের বিষক্রিয়া শরীরের অন্য অংশের মতো হৃদপেশির ক্ষতি করে।
সঠিক খাদ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়। মেদ সৃষ্টিকারী খাদ্য যেমন- তেল, চর্বি, অতিরিক্ত শর্করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ ও পরিহার করে, প্রতিদিন পরিমিত ব্যায়াম এবং হাঁটা-চলার মাধ্যমে সুস্থ জীবন লাভ করা যায়।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৮ : চল্লিশোর্ধ্ব আরিফ সাহেবের রক্তের কোলেস্টেরল পরীক্ষার ফলাফল নিম্নরূপ :

ক. ফ্যাগোসাইটোসিস কী?
খ. রক্তচাপ বলতে কী বুঝায়?
গ. ১ নং ফলাফলের কারণে তার কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হবে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আরিফ সাহেবের দেহে ২নং ফলাফলটির কার্যকারিতা বিশ্লেষণ কর।
৮নং প্রশ্নের সমাধান
ক. শ্বেত রক্তকণিকা ক্ষণপদ সৃষ্টির মাধ্যমে রোগ জীবাণু ভক্ষণ করার প্রক্রিয়াকে ফ্যাগোসাইটোসিস বলে।
খ. হৃৎপিণ্ডের সংকোচন বা সিস্টোল অবস্থায় ধমনিগাত্রে রক্তচাপের মাত্রা সর্বাধিক থাকে। একে সিস্টোলিক চাপ বলে। হৃৎপিণ্ডের (প্রকৃতপক্ষে নিলয়ের) প্রসারণ বা ডায়াস্টোল অবস্থায় রক্তচাপ সবচেয়ে কম থাকে। একে ডায়াস্টোলিক চাপ বলে। এভাবে হৃৎপিণ্ড থেকে রক্তনালির মাধ্যমে রক্ত প্রবাহকালে ধমনিতে যে চাপের সৃষ্টি হয় তাকে রক্তচাপ বলে।
গ. উদ্দীপকের আরিফ সাহেবের রক্তের কোলেস্টেরল এর ফলাফলে দেখা যায় তার LDL এর মান ৭.৫৩।
কিন্তু আদর্শ মান ১.৬৮ – ৪.৫৩ গ্রাম/ডেসি লিটার। সুতরাং এ মান বেশি। যেহেতু আরিফ সাহেবের LDL এর মান বেশি। LDL কে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়। রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরোল হৃৎপিণ্ড এবং রক্ত সংবহনের বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত। কোলেস্টেরোল বৃদ্ধি পেলে হৃৎপিণ্ডের করোনারি ধমনির গাত্রে চর্বি জমা হওয়ায় ধমনিতে পর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে ফলে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও খাদ্যসার না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারণে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। এই অবস্থাকে অ্যানজিনা (Angina) বলা হয়। এছাড়া ধমনিগাত্রে অধিক চর্বি জমা হওয়ায় রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় করোনারি হৃদরোগের সম্ভাবনা বহুলাংশে বেড়ে যায়। এছাড়া পিত্তরসে কোলেস্টেরোলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা তলানির মতো পিত্তথলিতে জমা হয়। কোলেস্টেরোলের এ তলানিই শক্ত হয়ে পিত্তথলিতে পাথর সৃষ্টি করে।
অতএব, ১নং ফলাফলের কারণে আরিফ সাহেবের উপরে উল্লিখিত রোগগুলোর মতো মারাত্মক কিছু শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হবে।
ঘ. আরিফ সাহেবের দেহে ২নং ফলাফলটি দেখলে বোঝা যায় তার শরীরে HDL এর মান আদর্শ মানের সমান।
HDL এর আদর্শ মান ০.৯-১.৪৫। HDL কে ভালো কোলেস্টেরল বলা হয়। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।। কোলেস্টেরোল কোষপ্রাচীর তৈরি ও রক্ষার কাজ করে এবং প্রতিটি কোষের ভেদ্যতা নির্ণয় করে। বিভিন্ন দ্রব্যাদি কোষে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। মানবদেহের জনন হরমোন এনড্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন তৈরিতে সাহায্য করে। অ্যাডরেনাল গ্রন্ত্রি হরমোন ও পিত্তরস তৈরিতে কোলেস্টেরোলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কোলেস্টেরোল পিত্ত তৈরি করে।
সূর্যালোকের উপস্থিতিতে চামড়ায় কোলেস্টোরোল থেকে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয়। কোলেস্টেরোল মাত্রা দেহের চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনকে (এ,ডি,ই, ও কে) বিপাকে সহায়তা করে। স্নায়ুকোষের কার্যকারিতার জন্য কোলেস্টেরোল প্রয়োজন।
সুতরাং বলা যায় আরিফ সাহেবের রক্তে HDL এর পরিমাণ বেশি হলে তার স্বাস্থের জন্য কোনো ঝুঁকি হবে না।
প্রশ্ন –৯: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রিপা তার বাগান থেকে কিছু পালংশাক তুলে পলিথিন ব্যাগে ভরে রেখে দিল। পরে দুপুরের সময় বের করে দেখে পলিথিনের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে।
ক. ইমবাইবিশন কাকে বলে?
খ. ব্যাপন চাপ বলতে কী বুঝায়?
গ. যে কারণে পলিথিনের গায়ে ঐরুপ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সেটি উদ্ভিদের কোন অঙ্গের মাধ্যমে হয়ে থাকে?
ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত প্রক্রিয়াটি উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়-বিশ্লেষণ কর।
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কলয়েড জাতীয় শুকনা বা আধা শুকনা পদার্থের তরল শুষে নেওয়ার পদ্ধতিকে ইমবাইবিশন বলে।
খ. একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের বেশি ঘনত্ববিশিষ্ট দ্রবণ হতে কম ঘনত্বের দ্রবণের দিকে দ্রাবকের ব্যাপিত হওয়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতাকে ব্যাপন চাপ বলে। অর্থাৎ যে চাপের প্রভাবে ব্যাপন প্রক্রিয়া ঘটে তাকে ব্যাপন চাপ বলে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পলিথিনের গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে উদ্ভিদের প্রস্বেদনের কারণে।
এই প্রক্রিয়াটি প্রধানত উদ্ভিদের পাতার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সাধারণত উদ্ভিদ মূল দিয়ে পানি সমগ্র দেহে পরিবহন করে এবং শোষিত অতিরিক্ত পানি পাতায় অবস্থিত পত্ররন্ধের মধ্য দিয়ে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বের করে দেয়।
উদ্দীপকের আলোকে উক্ত প্রক্রিয়াটি বলতে প্রস্বেদনকে বোঝানো হয়েছে। যেকোনো সজীব উদ্ভিদ কোষের বিপাকীয় কার্যক্রম প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় টান সৃষ্টি হয় এই টানের ফলে উদ্ভিদ মূলরোম দ্বারা পানি ও খনিজ লবণ শোষণ করে এবং পাতায় পরিবহন করে।
এ টানের ঘাটতি হলে পানি শোষণ কমে যাবে এবং খাদ্য প্রস্তুতসহ অনেক বিপাকীয় কার্যক্রম শ্লথ হয়ে যাবে। প্রস্বেদনের ফলে পাতার মেসোফিলে পানির ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা পানি শোষণে সাহায্য করে। উদ্ভিদ প্রস্বেদনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পত্রফলক কর্তৃক শোষিত তাপশক্তি হ্রাস করে পাতার কোষগুলোর তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখে।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, প্রস্বেদন প্রক্রিয়াটি উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়।
প্রশ্ন– ১০ : নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. প্রোটোপ্লাজমে কত ভাগ পানি থাকে?
খ. পরিবহন টিস্যু বলতে কী বোঝ?
গ. পানি কীভাবে B থেকে A অংশে পরিবাহিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্ভিদে উক্ত প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রোটোপ্লাজমে শতকরা ৯০ ভাগ পানি থাকে।
খ. উদ্ভিদে যে টিস্যু খাদ্য উপাদান ও তৈরিকৃত খাদ্য পরিবহন করে সেটি পরিবহন টিস্যু। উদ্ভিদে জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যু পরিবহনের কাজ করে। তাই জাইলেম ও ফ্লোয়েমকে একত্রে পরিবহন টিস্যুগুচ্ছ বলে।
গ. B হলো গাছের মূল এবং A অংশ হলো গাছের পাতা।
উদ্দীপকের চিত্রটিতে দেখানো হয়েছে মূল দ্বারা পানি শোষিত হয়ে পাতায় পৌছায়। উদ্ভিদদেহে রস আরোহণ বিষয়ে সাধারণ ধারণা হচ্ছে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রথমে মূলরোম মাটি থেকে পানি শোষণ করে। পরে এক কোষ থেকে অন্য কোষে পর্যায়ক্রমে অভিস্রবণের দ্বারা পানি মূলরোম থেকে অন্তঃত্বকের কোষগুলোতে পৌছায়।
অন্তঃত্বকের সজীব কোষগুলো পানিকে জাইলেম বাহিকায় নিয়ে যায়। জাইলেম বাহিকায় মূলজ চাপ সৃষ্টি হয় ফলে পানি উপরে ওঠে। ধারণা করা হয় জাইলেম বাহিকার মধ্যে পানির কণা কৈশিক বল এবং সংশক্তিজনিত বলের বশবর্তী হয়। ফলে মূল থেকে পাতা পর্যন্ত জাইলেম বাহিকার মধ্যে একটি অবিচ্ছিন্ন পানির ধারা গঠিত হয়।
প্রস্বেদনের ফলে এর ওপর এক প্রকার দৈৰ্ঘটান বা প্রস্বেদন টান ক্রিয়া করে, ফলে পানি উপরে ওঠে।
ঘ. উদ্দীপকে চিত্রের প্রক্রিয়াটি হলো উদ্ভিদে রস উত্তোলন। কোষস্থ পানি ও পানিতে দ্রবীভত লবণকে একত্রে কোষরস বলে।
উদ্দীপকে কোষরস মূল থেকে উদ্ভিদের সর্বোচ্চ শাখায় ও পাতায় কীভাবে পৌছায় তা বুঝানো হয়েছে। শোষিত পানি ও খনিজ লবণের উদ্ভিদ দেহে চলাচলকে উদ্ভিদে পরিবহন বলা হয়। পানি ও খনিজ পদার্থ অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় কর্টেক্সের মধ্য দিয়ে জাইলেম ভেসেলে পৌঁছায় এবং প্রস্বেদন স্রোতের সাথে ধীরে ধীরে পাতায় গিয়ে পৌঁছে। সেখানে খাদ্য তৈরি হয়। পাতা থেকে তৈরি খাদ্য ফ্লোয়েমের সিভনল দিয়ে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে পৌছে যায়। কখনও জাইলেম ভেসেল বা ফ্লোয়েমের সিভনল কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলে উদ্ভিদের মৃত্যু অবধারিত।
তাই উপরিউক্ত বিশ্লেষণ থেকে বলা যায়, উদ্ভিদের পরিবহন উদ্ভিদ জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম।
প্রশ্ন– ১১ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রহিম ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানিতে কিছু রজনীগন্ধা রাখল। পরদিন সকালে সে অনুভব করল পুরো ঘর ফুলের গন্ধে ভরে গেছে। সে এই ব্যাপারটার সাথে বিজ্ঞান বইয়ে পড়া একটি বিশেষ ঘটনার সাদৃশ্য খুঁজে পেল।
ক. অভিস্রবণ কী?
খ. প্রস্বেদনের দুটি গুরুত্ব লেখ।
গ. উদ্দীপকে সংঘটিত ঘটনাটির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উপরে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি জীবের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ”- ব্যাখ্যা কর।
১১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথককৃত দুটি দ্রবণের একটির দ্রাবক নিম্ন ঘনত্ব থেকে উচ্চ ঘনত্বের দিকে প্রবাহিত হওয়া হলো অভিস্রবণ।
খ. প্রস্বেদনের দুটি গুরুত্ব নিম্নরূপ:
১. প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় টান পড়ে। এই টানের ফলে উদ্ভিদের মূলরোম পানি ও খনিজ লবণ শোষণ করে এবং শোষিত পানি ও খনিজ লবণ পাতায় পরিবাহিত হয়।
২. প্রস্বেদনের ফলে পাতার মেসোফিলে ব্যাপন চাপ ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা পানি শোষণে সাহায্য করে।
গ. ফুলের সুবাস এক ধরনের তৈল জাতীয় পদার্থ। রজনীগন্ধা ফুলে এই সুবাস যুক্ত পদার্থের অণুগুলো বেশী ঘনত্ব থেকে ব্যাপন ক্রিয়ার মাধ্যমে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই উদ্দীপকে সংঘটিত ঘটনাটি হলো ব্যাপন। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো দ্রব্যের অণু বেশি ঘনত্বের এলাকা থেকে কম ঘনত্বের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তাকে ব্যাপন প্রক্রিয়া বলে। একই তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপে কোনো পদার্থের অণু বেশি ঘনত্ব হতে কম ঘনত্বের দিকে ব্যাপিত হওয়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতাকে ব্যাপন চাপ বলে।
একই বায়ু চাপে ব্যাপন চাপের কারণে ব্যাপন প্রক্রিয়া ঘটে থাকে। ব্যাপন চলতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্যাপন চাপের সমতা সৃষ্টি হয়।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি ব্যাপন প্রক্রিয়া। জীবের জন্য ব্যাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবের অনেক শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। জীবের শ্বসন প্রক্রিয়ায় গৃহীত O2 এবং বিপাক ক্রিয়ায় তৈরি CO2 ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফুসফুসের মধ্যে বিনিময় ঘটে। জীবের পরিপাককৃত খাদ্যরস ব্যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে বিভিন্ন কোষ কর্তৃক শোষিত হয়। বায়ুমণ্ডল হতে CO2 ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদের পাতার কোষে প্রবেশ করে। এই CO2 ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ার জন্য অত্যাবশ্যক।
উদ্ভিদদেহের অভ্যন্তরে পানি ও খনিজ লবণের বিভিন্ন অংশে যাতায়াত ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। ব্যাপন চাপের ফলে পাশের কোষ থেকে পানি তার পরবর্তী কোষে প্রবেশ করে। এভাবে পানি ব্যাপন দ্বারা ক্রমান্বয়ে উদ্ভিদের পাতায় পৌছায়। পাতা এই পানি দ্বারা খাদ্য তৈরি করে। এছাড়া প্রস্বেদন প্রক্রিয়াতেও ব্যাপন ক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপরিউক্ত আলোচনা বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে, ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন হয়। তাই ব্যাপন প্রক্রিয়া জীবজগতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন–১২ নিচের চিত্র তিনটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. রক্ত কাকে বলে?
খ. কৈশিক জালিকা বলতে কী বোঝায়?
গ. মানবদেহে চিত্রের B চিহ্নিত কোষের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রের A ও C একই যোজক কলায় অবস্থিত হলেও এদের কাজ ভিন্ন- বিশ্লেষণ কর।
১২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রক্ত এক ধরনের লাল বর্ণের অস্বচ্ছ আন্তঃকোষীয় লবণাক্ত ও ক্ষারধর্মী তরল যোজক টিস্যু।
খ. কৈশিক জালিকা বলতে বোঝায় শিরা ও ধমনির সংযোগস্থল। ধমনি ও শিরার সংযোগস্থল অবস্থিত কেবল একস্তর বিশিষ্ট এন্ডোথেলিয়াম দিয়ে গঠিত যেসব সূক্ষ্ম রক্তনালি জালকের আকারে বিন্যস্ত থাকে, সেগুলোকে কৈশিক জালিকা বলে। ব্যাপন ক্রিয়ার দ্বারা পুষ্টিদ্রব্য, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, রেচন পদার্থ ইত্যাদি কৈশিক জালিকার রক্ত ও কলারসের মধ্যে আদান-প্রদান। ঘটে।
গ. চিত্রের B চিহ্নিত কোষটি রক্তের শ্বেতকণিকার যা মানবদেহকে সুস্থরাখতে ও রোগ প্রতিরোধ করতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।
শ্বেতকণিকা অ্যামিবার মতো দেহের আকারের পরিবর্তন করে এবং ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় রোগজীবাণু ধ্বংস করে। এরা অ্যান্টিবডি গঠন করে এবং এই অ্যান্টিবডির দ্বারা দেহে প্রবেশ করা রোগজীবাণুকে ধ্বংস করে এবং দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শ্বেত কণিকাগুলো রক্তরসের মধ্য দিয়ে নিজেরাই চলতে পারে। রক্ত জালিকার প্রাচীর ভেদ করে টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। দেহ বাইরের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে, দ্রুত শ্বেত কণিকার সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে।
ঘ. চিত্রের A রক্তের লোহিত কণিকা এবং C রক্তের অণুচক্রিকা। উভয়ই রক্তকণিকা এবং একই ধরনের যোজক কলায় অবস্থিত।
লোহিত কণিকাগুলো আকৃতিতে চ্যাপ্টা ও ভাসমান ব্যাগের মতো। এদের মধ্যে হিমোগ্লোবিন নামক রঞ্জক পদার্থ থাকার কারণে এরা লাল বর্ণের। লোহিত কণিকার হিমোগ্লোবিন শ্বাস অঙ্গ ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বিভিন্ন টিস্যু এবং বিভিন্ন টিস্যুতে সৃষ্ট কার্বন ডাইঅক্সাইডকে শ্বাস অঙ্গে ফিরিয়ে আনে। হিমোগ্লোবিন রক্তের অম্ল-ক্ষারের সমতা বজায় রাখার জন্য বাফার হিসেবে কাজ করে।
অন্যদিকে অণুচক্রিকাগুলো গোলাকার বা ডিম্বাকার হতে পারে। অনেকের মতে অনুচক্রিকাগুলো সম্পূর্ণ কোষ নয়; এগুলো অস্থিমজ্জার বৃহদাকার কোষের ছিন্ন অংশ। অণুচক্রিকার প্রধান কাজ হলো রক্ত তঞ্চন করতে সাহায্য করা। যখন কোনো রক্তবাহিকা বা কোনো টিস্যু আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেটে যায়, তখন সে স্থানের অণুচক্রিকাগুলো ভেঙে যায় এবং থ্রম্বোপ্লাসটিন নামক পদার্থ সৃষ্টি করে যা ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।
উপরিক্ত আলোচনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চিত্রের A ও C অর্থাৎ লোহিত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা একই যোজক কলা রক্তে অবস্থিত হলেও এদের কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন।
প্রশ্ন– ১৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রুশো এইচএসসি বিজ্ঞানের ছাত্র। তার বাবা সুঠাম দেহের অধিকারী। রুশো লক্ষ করছে তার বাবা মাঝে মাঝে বুকে ব্যথা অনুভব করেন এবং কথা ভুলে যান। এসব কারণে সে তার বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার সাহেব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সুস্থথাকার জন্য তাঁকে খাওয়া মেনে চলতে এবং প্রতিদিন হাঁটতে বললেন।
ক. রক্তচাপ কাকে বলে?
খ. সিস্টোলিক রক্তচাপ বলতে কী বোঝায়?
গ. রুশোর বাবার কী কারণে এমন হয়েছে- ব্যাখ্যাসহ লেখ।
ঘ. ডাক্তার সাহেব রুশোর বাবার রোগটি নিরাময়ের উদ্দেশ্যে কী কী নির্দেশনা দিতে পারেন- মতামত দাও।
১৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. হৃৎপিণ্ডের সংকোচন ও প্রসারণের ফলে হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহকালে ধমনি প্রাচীরে যে পার্শ্বচাপ সৃষ্টি করে তাকে রক্তচাপ বলে।
খ. হৃৎপিণ্ডের স্বতঃস্ফূর্ত সংকোচনকে সিস্টোল বলে। রক্তচাপ বলতে ধমনির রক্তচাপকে বোঝায়। সিস্টোল অবস্থায় ধমনিতে যে চাপ থাকে তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ বলে। স্বাভাবিক ও সুস্থ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সিস্টোলিক রক্তচাপ মাপার যন্ত্রের পারদস্তম্ভ ১১০-১৪০ মিলিমিটার হয়।
গ. রুশোর বাবার অ্যানজিনা হয়েছে যার কারণ রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল জমাট বেঁধে ধমনির রক্তপ্রবাহে বাধা দেয়, ফলে হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়াকলাপের ব্যাঘাত ঘটে।
হৃৎপিণ্ডের রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার ফলে বুকে ব্যথা অনুভব হয়। এ অবস্থাকে অ্যানজিনা বলে। এছাড়া মস্তিষ্কে কোনো শিরা বা ধমনি ছিড়ে যাওয়ার কারণে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মস্তিষ্কে স্নায়ু মরে যায় এবং মস্তিষ্কে স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ডাক্তার রুশোর বাবার পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বলেছেন তার উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং এর সাথে তার রক্তে কোলেস্টেরল স্বাভাবিকের থেকে বেশি আছে।
কোলেস্টেরল বেশি থাকার কারণে সম্ভবত ধমনিগাত্রে অধিক চর্বি জমা হওয়ায় রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে রুশোর বাবার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ. রুশোর বাবার রোগটি হলো অ্যানজিনা যা রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলজনিত রোগ। এটি একটি মারাত্মক হৃদরোগ।
এ রোগটি নিরাময়ের জন্য ডাক্তার সাহেব রুশোর বাবাকে হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখার, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখার উদ্দেশ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হৃদরোগ এবং রক্ত সরবরাহের বিশৃঙ্খলার জন্য জড়িত। অনেক সময় চর্বি জমে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, অ্যানজিনা, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হয়।
এসব রোগের কারণ হলো অত্যধিক ওজন, রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত, অস্বাস্থকর খাদ্যাভ্যাস। যেমন- তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড এবং অলস জীবনযাপন ও শারীরিক পরিশ্রম না করা। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে নিচে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার, যাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
যেমন : ধূমপান না করা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা বা হাঁটা, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা, কাঁচা ফল ও শাকসবজি বেশি বেশি খাওয়া। চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া, ভাজা খাবার, মশলাযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড খাওয়া বাদ দেওয়া।
সুতরাং বলা যায়, রুশোর বাবার সুস্থতার জন্য ডাক্তার সাহেব উপরে বর্ণিত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার জন্য বলেছেন।
প্রশ্ন- ১৪ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অবনি একদিন কিছু কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখল। কিছুক্ষণ পরে সে লক্ষ করল, কিসমিসগুলো ফুলে গেছে। অন্যদিকে তার বোন রং তুলি দিয়ে ছবি আঁকছিল। এ সময় হঠাৎ করে রংতুলিতে থাকা কিছুটা রং গ্লাসের পানির মধ্যে পড়ে পানিতে ছড়িয়ে গেল।
ক. কোলেস্টেরল কী?
খ. কোষ ঝিল্লি একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা- ব্যাখ্যা কর।
গ. অবনির বোনের তুলির রং পানিতে ছড়িয়ে গেল কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অবনির কিসমিসগুলো ফুলে উঠার কারণটি উদ্ভিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিশেষণ কর।।
১৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোলেস্টেরল এক ধরনের লিপোপ্রোটিন।
খ. যে ঝিল্লি বা পর্দার মধ্য দিয়ে শুধু দ্রাবক পদার্থ আসা- যাওয়া করতে পারে কিন্তু আসা- যাওয়া বা চলাচল করতে পারে না। তাকে বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লি বা পর্দা বলে। যেহেতু কোষ ঝিল্লির মধ্য দিয়ে দ্রাবক হিসেবে শুধু পানি চলাচল করে কিন্তু দ্রব চলাচল করতে পারে না, তাই কোষ ঝিল্লি একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা।
গ. অবনির বোনের তুলির রং পানিতে ছড়িয়ে গেল ব্যাপনের কারণে।
সব পদার্থই অণু দিয়ে তৈরি। এই অণুগুলো সবসময় গতিশীল অবস্থায় থাকে এবং বেশি ঘনত্বের দিক থেকে কম ঘনত্বের দিকে। অণুগুলো ছড়িয়ে পড়ে। এই চলন চলতে থাকে যতণ না অণুগুলোর ঘনত্ব দুই নে সমান হয়। অণুগলের এরূপ চলন প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।
উদ্দীপকে অবনির বোনের তুলিতে রং এর ঘনত্ব বেশি। তাই যখন তার তুলি থেকে রং পানিতে পড়েছিল কম ঘনত্বের দিকে ব্যাপন ক্রিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে পানিকে রঙিন করেছিল।
ঘ. অবনির শুকনা কিসমিসগুলোকে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখায় সেগুলো ফুলে ওঠে ছিল। এটি কিসমিস দ্বারা পানি শোষণের কারণে ঘটে ছিল এবং পানি শোষণ অভিস্রবণ দ্বারা ঘটেছিল।
অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ শোষণ করে। এতে উদ্ভিদ দেহের কোষের রসস্ফীতি ঘটে। কাণ্ড ও পাতা সতেজ থাকে, ফুলের পাপড়ি বন্ধ বা খুলতে পারে অভিস্রবণের কারণে।
এছাড়া কোষের বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলোর জন্য পানির যোগান দেয়। এজন্য অভিস্রবণ উদ্ভিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া।