বিজ্ঞান
অধ্যায়-০৬ : পলিমার – POLYMER
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
পলিমার: একই বা ভিন্ন ধরনের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি বৃহদাকার অণু গঠন করলে তাকে পলিমার বলে। পলি অর্থ অনেক এবং মেরাস অর্থ অংশ। অর্থাৎ অনেকগুলো একই রকম ছোট ছোট অংশ একের পর এক জোড়া লাগালে যে একটি বড় জিনিস পাওয়া যায়, তাই পলিমার।
মনোমার + মনোমার = পলিমার
পলিমার শব্দের অর্থ : পলিমার শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ পলি (Poly) ও মেরোস (Meros) থেকে, যার অর্থ হলো যথাক্রমে অনেক (Many) ও অংশ (Part)।
প্রাকৃতিক পলিমার : যে সকল পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে। যেমন : পাট, সিল্ক, রাবার ইত্যাদি।
কৃত্রিম পলিমার : যে সকল পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না, শিল্পকারখানায় কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় তাদেরকে কৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন : মেলামাইন, পলিথিন ইত্যাদি।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
মনোমর : যে ছোট অণু থেকে পলিমার তৈরি হয় তাদেরকে মনোমার বলে।
পলিমারকরণ : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোমার সংযুক্ত করে পলিমার তৈরি করা হয় তাকে পলিমারকরণ বলে।
বস্ত্রশিল্পে তন্তু : বস্ত্রশিল্পে তন্তু বলতে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহুত আঁশসমূহকে বোঝায়।
প্রাকৃতিক তন্তু : সুতি কাপড় তৈরির জন্য তুলা, পাট, লিনেন, রেশম, পশম, উল, সিল্ক, অ্যাসবেস্টস, ধাতব তন্তু ইত্যাদি যেগুলো প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে।
কৃত্রিম তন্তু : পলিস্টার, রেয়ন, ডেক্সন, নাইলন ইত্যাদি তন্তু বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় তাদেরকে কৃত্রিম তন্তু বলে।
উদ্ভিদ তন্তু : প্রাকৃতিক তন্তুগুলোর মধ্যে যেগুলো উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে উদ্ভিদ তন্তু বলে। যেমন – তুলা, পাট, লিনেন ইত্যাদি।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রাণিজ তন্তু : প্রাকৃতিক তন্তুগুলোর মধ্যে যেগুলো প্রাণী থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাণিজ তন্তু বলে। যেমন – রেশম, পশম ইত্যাদি।
তন্তুর রানি : রেশম তন্তুকে তন্তুর রানি বলা হয়।
সেলুলোজ : সেলুলোজ হলো এক ধরনের সূক্ষ্ম আঁশযুক্ত পদার্থ, যা দিয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষ তৈরি হয়।
খনিজ তন্তু : প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে যেগুলো খনিতে পাওয়া যায় তাদেরকে খনিজ তন্তু বলে। যেমন : অ্যাসবেস্টস, ধাতব তন্তু ইত্যাদি।
ফ্লিস উল : জীবন্ত মেষ থেকে লোম সরিয়ে যে পশম তৈরি করা হয় তাকে ‘ফ্লিস উল’ বলে।
পুন্ড উল : মৃত বা জবাই করা মেষ থেকে যে পশম তৈরি করা হয় তাকে পুণ্ড উল বলে।
জিনিং : তন্তু সংগ্রহের জন্য গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে বীজ থেকে তুলা আলাদা করার প্রক্রিয়াকে জিনিং বলে।
কটন লিন্ট : জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে কটন লিন্ট বলে।
ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং : একই মানের তুলা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম তুলা সংগ্রহ করে মিশ্রণ তৈরি করা হয়। বেল বা গাঁইট থেকে তুলার এই মিশ্রণ তৈরি করাকে ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং বলে।
হেলকিং : লিনেন তন্তু থেকে সুতা তৈরিতে যে বিশেষ ধরনের কম্বিং করা হয় তাকে হেকিং বলা হয়।
স্লাইভার : তন্তু থেকে সুতা তৈরিতে কার্ডিং ও কম্বিং করে প্রাপ্ত তন্তু পাতলা আস্তরের মতো হয় যাকে স্লাইভার বলে।
থার্মোপ্লাস্টিকস : যে সকল পদার্থ তাপ দিলে নরম হয় কিন্তু ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয় তাদেরকে থার্মোপ্লাস্টিকস বলে। যেমন : পলিথিন।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
লুমেন : অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে সুতির তন্তু দেখতে নলের মতো দেখায়। নলের ভেতরে ফাঁপা অংশটি হলো লুমেন’।
নাইলন : নাইলন হলো কৃত্রিম নন-সেলুলোজিক তন্তু, সাধারণত এডিপিক এসিড ও হেক্সামিথিলিন ডাই অ্যামিন নামক রাসায়নিক পদার্থের পলিমারকরণ প্রক্রিয়ায় নাইলন তৈরি হয়।
থার্মোসেটিং প্লাস্টিক : মেলামাইন, ব্যাকলাইট এগুলো তাপ দিলে নরম হয় না বরং পুড়ে শক্ত হয়ে যায়। এদেরকে বেশি ছাঁচে ফেলে নির্দিষ্ট আকার দেওয়া যায় না। এ সকল প্লাস্টিককে থার্মোসেটিং প্লাস্টিক বলে।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। পুন্ড উলকী?
উত্তর : মৃত বা জবাই করা মেষ থেকে যে পশম তৈরি করা হয় তাকে পুণ্ড উল বলে।
২। পলিমার কী?
উত্তর : পলি অর্থ অনেক এবং মেরাস অর্থ অংশ। অনেকগুলো একই রকম ছোট ছোট অংশ একের পর এক জোড়া লাগালে যে একটি বড় জিনিস পাওয়া যায়, তাই পলিমার।
৩। প্লাস্টিক শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : প্লাস্টিক শব্দের অর্থ সহজে ছাচযোগ্য।
৪। ভিনেগারের রাসায়নিক সংকেত লেখ।
উত্তর : ভিনেগারের রাসায়নিক সংকেত হলো CH3COOH ।
৫। মনোমার কাকে বলে?
উত্তর : যে ছোট ছোট অণু থেকে পলিমার তৈরি হয়, তাকে মনোমার বলে।
৬। কাকে তন্তুর রানি বলে?
উত্তর : রেশমকে তন্তুর রানি বলা হয়।
৭। তন্তু কী?
উত্তর : তন্তু বলতে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহৃত আঁশসমূহকে বোঝায়।
৮। কোকুন কাকে বলে?
উত্তর : রেশম পোকা থেকে উৎপন্ন গুটিকে কোকুন বলে।
৯। নন–সেলুলোজিক তন্তু কাকে বলে?
উত্তর : যেসব কৃত্রিম তন্ত সেলুলোজ থেকে তৈরি না করে অন্য পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হয়, সেসব তন্তুকে নন-সেলুলোজিক তন্তু বলে।
১০। স্পিনিং দ্রবণ কী?
উত্তর : অধিক ক্ষুদ্র তন্তু ও উপযুক্ত দ্রাবকের সাহায্যে যে ঘন ও আঠালো দ্রবণ তৈরি করা হয়, তাকে স্পিনিং দ্রবণ বলে।
১১। নাইলন কী?
উত্তর : নাইলন এক ধরনের ঘনীভবন পলিমার, যা এডিপিক এসিড ও হেক্সামিথিলিন ডাই অ্যামিন নামক রাসায়নিক পদার্থের পলিমারকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়।
১২। প্রাকৃতিক আঁশের মধ্যে সবচেয়ে শক্ত আঁশ কোনটি?
উত্তর : প্রাকৃতিক আঁশের মধ্যে সবচেয়ে শক্ত আঁশ হলো রেশম আঁশ।
১৩। একটি সেলুলোজিক ও একটি নন–সেলুলোজিক সুতার নাম লেখ।
উত্তর : একটি সেলুলোজিক সুতা হলো সুতি কাপড়ের সুতা এবং একটি নন-সেলুলোজিক সুতা হলো নাইলন।
১৪। পলিমার শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : পলিমার শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ পলি (Poly) ও মেরোস (Meros) থেকে, যার অর্থ হলো যথাক্রমে অনেক (Many) ও অংশ (Part)।
১৫। বাকেলাইট পলিমার কী থেকে তৈরি করা হয়?
উত্তর : ফেনল ও ফরমালডিহাইড নামে দুটি মনোমার থেকে বাকেলাইট পলিমার তৈরি করা হয়।
১৬। কোন শর্তাধীনে ইথিলিন থেকে পলিথিন উৎপন্ন হয়?
উত্তর : ইথিলিন গ্যাসকে ১০০০-১২০০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ২০০০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিথিন পাওয়া যায়।
১৭। মেলামাইন রেজিন কী থেকে তৈরি করা হয়?
উত্তর : মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড মনোমার থেকে মেলামাইন রেজিন তৈরি করা হয়।
১৮। প্রাকৃতিক পলিমার কী?
উত্তর : যে সকল পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে। যেমন : পাট, সিল্ক, রাবার ইত্যাদি।
১৯। কৃত্রিম পলিমার কী?
উত্তর : যেসব পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না, শিল্প-কারখানায় কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় তাদেরকে কৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন-মেলামাইন, পলিথিন ইত্যাদি।
২০। পলিমারকরণ কী?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোমার সংযুক্ত করে পলিমার তৈরি করা হয় তাকে পলিমারকরণ বলে।
২১। কোন প্রভাবক ব্যবহার করে বর্তমানে পলিথিন তৈরি করা হয়?
উত্তর : টাইটেনিয়াম ট্রাইক্লোরাইড (TiCl3) ব্যবহার করে। বর্তমানে পলিথিন তৈরি করা হয় ।
২২। তন্তু বলতে সাধারণত কী বোঝানো হয়?
উত্তর : তন্তু বলতে সাধারণত আঁশজাতীয় পদার্থকে বোঝানো হয়।
২৩। বস্ত্রশিল্পে তন্তু কী?
উত্তর : বস্ত্রশিল্পে তন্তু বলতে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহৃত আঁশসমূহকে বোঝায়।
২৪। উৎস অনুযায়ী তন্তু কয় ধরনের?
উত্তর : উৎস অনুযায়ী তন্তু দুই ধরনের। যথা প্রাকৃতিক তন্তু ও কৃত্রিম তন্তু।
২৫। প্রাকৃতিক তন্তু কাকে বলে?
উত্তর : সুতি কাপড় তৈরির জন্য তুলা, পাট, লিনেন, রেশম, পশম, উল, সিল্ক, অ্যাসবেস্টস ও ধাতব তন্তু ইত্যাদি যেগুলো প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে।
২৬। কৃত্রিম তন্তু কী?
উত্তর : পলিস্টার, রেয়ন, ডেক্রন, নাইলন ইত্যাদি তন্তু বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় তাদেরকে কৃত্রিম তন্তু বলে।
২৭। উদ্ভিদ তন্তু কাকে বলে?
উত্তর : প্রাকৃতিক তন্তুগুলোর মধ্যে তুলা, পাট, লিনেন ইত্যাদি উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। তাই এদেরকে উদ্ভিদ তন্তু বলে।
২৮।প্রাণিজ তন্তু কী?
উত্তর : প্রাকৃতিক তন্তুগুলোর মধ্যে রেশম, পশম এগুলো প্রাণী থেকে পাওয়া যায়। এদেরকে প্রাণিজ তন্তু বলে। ২৯। খনিজ তন্তু কী?
উত্তর : প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে যেগুলো খনিতে পাওয়া যায় তাদেরকে খনিজ তন্তু বলে। যেমন : আসবেস্টস, ধাতব তন্তু।
৩০। রেয়ন কী ধরনের কৃত্রিম তন্তু?
উত্তর : রেয়ন হলো সেলুলোজিক কৃত্রিম তন্তু।
৩১। সেলুলোজ কী?
উত্তর : সেলুলোজ হলো এক ধরনের সূক্ষ্ম আঁশযুক্ত পদার্থ, যা দিয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষ তৈরি হয়।
৩২। নাইলন কী ধরনের কৃত্রিম তন্তু?
উত্তর : নাইলন হলো নন-সেলুলোজিক কৃত্রিম তন্তু।
৩৩। সুতি তন্তুকে রং করলে রং কী অবস্থায় থাকে?
উত্তর : রং পাকা থাকে এবং তাপ ও ধোয়ার ফলে রঙের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না।
৩৪। রেশম তন্তু কী থেকে আহরণ করা হয়?
উত্তর : রেশম তন্তু রেশম বা পলু পোকার গুটি থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় আহরণ করা হয়।
৩৫। রেশম কী পদার্থ দিয়ে তৈরি?
উত্তর : রেশম মূলত ফাইব্রেয়ন নামক একপ্রকার প্রোটিনজাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি।
৩৬। কোন তন্তুকে ‘তন্তুর রানি’ বলা হয়?
উত্তর : রেশম তন্তুকে তন্তুর রানি বলা হয়।
৩৭। “ফিস উল‘ কী?
উত্তর : জীবন্ত মেষ থেকে লোম সরিয়ে যে পশম তৈরি করা হয় তাকে ‘ফ্লিস উল’ বলে।
৩৮। পশম ততু কী প্রোটিন দিয়ে গঠিত?
উত্তর : পশম তন্তু কেরাটিন প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
৩৯। নাইলন কী থেকে তৈরি করা হয়?
উত্তর : সাধারণত এডিপিক এসিড ও হেক্সামিথিলিন ডাই অ্যামিন নামক রাসায়নিক পদার্থের পলিমারকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাইলন তৈরি কর হয়।
৪০। নাইলন কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর : নাইলন প্রধানত দুই প্রকার। যথা- নাইলন ৬:৬ ও নাইলন ৬।
৪১। রেয়ন কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর : রেয়ন তিন প্রকার। যথা- (১) ভিসকোস, (২) কিউপ্রা অ্যামোনিয়াম ও (৩) অ্যাসিটেট।
৪২। জিনিং কী?
উত্তর : তন্তু সংগ্রহের জন্য গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে বীজ থেকে তুলা আলাদা করার প্রক্রিয়াকে জিনিং বলে।
৪৩। কটন লিন্ট কী?
উত্তর : জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে কটন লিন্ট বলে।
৪৪। ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং কী?
উত্তর : তুলা থেকে সুতা তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের তুলার গাইট থেকে তুলার মিশ্রণ তৈরি করাকে ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং বলে।
৪৫। হেলকিংকী?
উত্তর : লিনেন তন্তু থেকে সুতা তৈরিতে যে বিশেষ ধরনের কম্বিং করা হয় তাকে হেলকিং বলা হয়।
৪৬। স্লাইভার কী?
উত্তর : তন্তু থেকে সুতা তৈরিতে ব্লেন্ডিং ও কম্বিং করে প্রাপ্ত তন্তু পাতলা আস্তরের মতো হয়। যেটিকে স্লাইভার বলে।
৪৭। রাবার সাধারণত কী রং এর হয়?
উত্তর : সাদা বা হালকা বাদামি রং-এর হয়।
৪৮। তাপ দিলে রাবারের আয়তনে কী পরিবর্তন ঘটে।
উত্তর : আয়তন কমে যায়।
৪৯। থার্মোপ্লাস্টিকস কী?
উত্তর : যেসব পদার্থ তাপ দিলে নরম হয় কিন্তু ঠান্ডা করলে শক্ত হয় তাদেরকে থার্মোপ্লাস্টিকস বলে। যেমন- পলিথিন।
৫০। থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস কী?
উত্তর : যেসব পদার্থ তাপ দিলে গলে না বরং পুড়ে শক্ত হয়ে যায় তাদেরকে থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস বলে। যেমন- মেলামাইন।
৫১। Moisturization কী?
উত্তর: সুতি বস্ত্র উজ্জ্বল ও চকচকে করার পদ্ধতিকে বলা হয়- Moisturization ।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। সুতা তৈরিতে কার্ডিং এবং কম্বিং কেন করা হয়?
উত্তর : সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ হলো কার্ডিং এবং কম্বিং। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী অতি ছোট তন্তু বাদ দেওয়া হয় এবং ধুলাবালি বা ময়লার কণা থাকলে তাও দূরীভূত হয়। তুলা, লিনেন, পশম এসব তন্তুর বেলায় এই ধাপটি প্রয়োগ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু কার্ডিং করলেই চলে। তবে মিহি মসৃণ ও সরু সুতা তৈরি করতে কম্বিং দরকার হয়।
২। পলিথিন কীভাবে তৈরি হয়?
উত্তর : উচ্চচাপ (1000 ~ 1200 atm) ও 200°C তাপমাত্রায় সামান্য অক্সিজেন প্রভাবকের উপস্থিতিতে তরলীভূত ইথিলিনের অসংখ্য অণু (প্রায় 400 ~ 2000) পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে পলিথিন বা পলিইথিলিন নামক সাদা অস্বচ্ছ কঠিন প্লাস্টিক পদার্থ উৎপন্ন করে।

তবে উচ্চচাপ পদ্ধতি সহজসাধ্য না হওয়ায় ইদানীং টাইটেনিয়াম ট্রাইক্লোরাইড (TiCl3) নামক প্রভাবক ব্যবহার করে বায়ুমণ্ডলীয় চাপেই পলিথিন তৈরি করা হয়।
৩। রেশমকে অন্তর রাণী বলা হয় কেন?
উত্তর : প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে অন্যতম হলো রেশম তন্তু। বিলাসবহুল বস্ত্র তৈরিতে এটি ব্যবহূত হয়। প্রাণিজ তন্তুর মধ্যে রেশম সবচেয়ে শক্ত ও দীর্ঘ। এছাড়াও প্রায় তিন শতাধিক রং-এর রেশম পাওয়া যায়। এমনকি এর সৌন্দর্যগুণও জগৎ বিখ্যাত। রেশমের এসব গুণাগুণের জন্যই রেশমকে তন্তুর রানি বলা হয়।
৪। সুতি বস্ত্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : সুতি তন্তু দ্বারা তৈরি বস্ত্রকে সুতি বস্ত্র বলে। সুতি বস্ত্র অনেক টেকসই হয়। তবে এটি ততটা উজ্জ্বল হয় না। গরমকালে সুতি বস্ত্র পরিধানে আরাম অনুভূত হয়।
৫। শীত নিবারণে পশমি কাপড় ব্যবহার হয় কেন?
উত্তর : পশমি পোশাক পশম তন্তু দিয়ে গঠিত। পশম তন্তু তাপ কুপরিবাহী এবং এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। ফলে পশমি পোশাক পরিধান করলে দেহের নিঃসৃত তাপ বাইরে যেতে পারে না। তাই শীতকালে এ কাপড় পরিধানে গরম অনুভূত হয়।
৬। টেস্টিং সল্ট বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে সকল লবণের ব্যবহারে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায় সে সকল লবণকে টেস্টিং সল্ট বলে। সাধারণত খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহূত হয় সোডিয়াম গ্লুটামেট লবণ, যা টেস্টিং সল্ট হিসেবে পরিচিত।
৭। থার্মোপ্লাস্টিকস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যেসব প্লাস্টিক তাপ দিলে নরম হয়ে গলে যায় এবং গলিত প্লাস্টিক ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়ে যায় সেসব প্লাস্টিককে থার্মোপ্লাস্টিকস বলে। যেমন পলিথিন, পিভিসি পাইপ, পলিস্টার কাপড়, বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদি।
৮। কার্ডিং এন্ড কম্বিং বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ হলো কার্ডিং এবং কম্বিং। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী অতি ছোট তন্তু বাদ দেওয়া হয় এবং ধুলাবালি বা ময়লার কণা থাকলে তাও দূরীভূত হয়। তুলা, লিনেন, পশম এসব তর বেলায় এই ধাপটি প্রয়োগ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু কার্ডিং করলেই চলে। তবে মিহি মসৃণ ও সরু সুতা তৈরি করতে কম্বিং দরকার হয়।
৯। বাকেলাইটকে পলিমার বলা হয় কেন?
উত্তর : বাকেলাইট, ফেনল ও ফরমালডিহাইড নামের দুটি মনোমারের সমন্বয়ে গঠিত। আমরা জানি, একই জাতীয় অথবা ভিন্ন জাতীয় একাধিক মনোমারের সমন্বয়ে গঠিত হয় পলিমার। যেহেতু বাকেলাইট ভিন্ন ধর্মের দুটি মনোমারের সমন্বয়ে গঠিত, সেহেতু বাকেলাইটকে পলিমার বলা হয়।
১০। শীতকালে পশমের তৈরি বস্ত্র ব্যবহার করা আরামদায়ক কেন?
উত্তর : পশমি পোশাক পশম তন্তু দিয়ে গঠিত। পশম তন্তু তাপ কুপরিবাহী এবং এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। আমরা যখন পশমি কাপড় পরিধান করি তখন আমাদের দেহ নিঃসৃত তাপ বাইরে যেতে পারে না। ফলে শীতকালে এ কাপড় পরিধানে গরম অনুভূত হয়। এ কারণে
শীতকালে পশমের তৈরি বস্ত্র ব্যবহার করা আরামদায়ক।
১১। ফ্রাইং প্যানের হাতল কৃত্রিম পলিমার ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কৃত্রিম পলিমার সরাসরি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয় বরং গবেষণাগারে বিভিন্ন পদার্থ বা রাসায়নিক দ্রব্যাদির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়। এ হিসেবে ফ্রাইং প্যানের হাতল একটি কৃত্রিম পলিমার। কারণ ফ্রাইং প্যানের হাতল সরাসরি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে এটি তৈরি করা হয়।
১২। পলিমার বলতে কী বোঝ?
উত্তর : পলিমার শব্দটি ২টি গ্রিক শব্দ পলি ও মেরোস থেকে এসেছে যার অর্থ যথাক্রমে অনেক ও অংশ। অর্থাৎ একই পদার্থের অসংখ্য অণু বা একাধিক পদার্থের অসংখ্য অণু পরস্পর যুক্ত হয়ে যে বৃহৎ অণু গঠন করে তাকে পলিমার বলে।
১৩। লিনেনকে কেন প্রাকৃতিক তন্তু বলা হয়?
উত্তর : যেসব তন্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে। মসিনা জাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে লিনেন তন্তু সংগ্রহ করা হয়। প্রাকৃতিক বস্তু থেকে পাওয়া যায় বলে লিনেন তন্তুকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে।
১৪। মেলামাইনকে কেন পলিমার বলা হয়?
উত্তর : মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড নামের দুটি মনোমার পুনঃপুন যুক্ত হয়ে মেলামাইন রেজিন তৈরি করে। এ মেলামাইন রেজিন থেকে মেলামাইনের থালাবাসন তৈরি করা হয়। অপরদিকে একই বা ভিন্ন ধরনের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি বৃহদাকার অণু গঠন করলে তাকে পলিমার বলে। কাজেই মেলামাইনও একটি পলিমার।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
১৫। হিউমাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থসমূহ হিউমাস নামে পরিচিত। হিউমাস মূলত অ্যামিনো এসিড, প্রোটিন, চিনি অ্যালকোহল, চর্বি, তেল, লিগনিন, ট্যানিন ও অন্যান্য অ্যারোম্যাটিক যৌগের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ জটিল পদার্থ। এটি দেখতে অনেকটা কালচে রঙের হয়। হিউমাস তৈরি হয় মৃত গাছপালা ও প্রাণীর দেহাবশেষ
থেকে। হিউমাস মাটির পানি ধারণক্ষমতা ও উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
১৬। প্লাস্টিক পোড়ানোর ক্ষতিকর দিক ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্লাস্টিক পোড়ালে অনেক ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হয়। যেমন পিভিসি পোড়ালে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) নিঃসৃত হয়। আবার পলিইউরেথেন প্লাস্টিক পোড়ালে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ও হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি হয়। এই গ্যাস দুটির পরিমাণ যদি পরিবেশে অধিক হয় তাহলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে।
১৭। প্রাকৃতিক তন্তু ও কৃত্রিম তন্তুর মধ্যে ২টি পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাকৃতিক পলিমার ও কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ:
প্রাকৃতিক তন্তু | কৃত্রিম তন্তু |
i. প্রাকৃতিক তন্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। | i. কৃত্রিম তন্তু শিল্পকারখানায় কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। |
ii. প্রাকৃতিক তন্তুসমূহ বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। | ii. কৃত্রিম তন্তুসমূহ বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে না। |
১৮। স্পিনারেট কাকে বলে?
উত্তর : স্পিনারেট হলো কৃত্রিম তন্তু হতে সুতা তৈরিতে ব্যবহৃত বিশেষ যন্ত্র। স্পিনিং দ্রবণকে স্পিনারেট নামক বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে অতিক্ষুদ্র ছিদ্র পথে উচ্চচাপে প্রবাহিত করা হয়। এতে স্পিনারেট থেকে সুতার দীর্ঘ নাল বের হয়ে আসে যা সরাসরি ব্যবহারযোগ্য।
১৯। কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক পলিমারের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর : কৃত্রিম পলিমার ও প্রাকৃতিক পলিমারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
কৃত্রিম পলিমার | প্রাকৃতিক পলিমার |
i. শিল্পকারখানায় তৈরি পলিমার কৃত্রিম পলিমার। | i. প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত মনোমার থেকে তৈরি পলিমার হলো প্রাকৃতিক পলিমার। |
ii. পলিথিন, পিভিসি, রেজিন, ব্যাকেলাইট, মেলামাইন ইত্যাদি কৃত্রিম পলিমার । | ii. পাট, সিল্ক, সুতি, রাবার ইত্যাদি প্রাকৃতিক পলিমার। |
২০। নাইলন ও রেয়নের ৩টি পার্থক্য লেখ?
উত্তর : নাইলন ও রেয়ন উভয়ই কৃত্রিম তন্তু। নাইলন ও রেয়নের মধ্যে তিনটি পার্থক্য হলো :
i. নাইলন নন-সেলুলোজিক কিন্তু রেয়ন হলো সেলুলোজিক তন্তু।
ii. নাইলন তৈরি করা হয় এডিপিক এসিড ও হেক্সামিথিলিন ডাই অ্যামিন থেকে, কিন্তু রেয়ন তৈরি হয় উদ্ভিজ্জ সেলুলোজ ও প্রাণিজ পদার্থ থেকে।
iii. নাইলন উত্তাপে গলে গিয়ে বোরাক্সে গুটির মতো স্বচ্ছ গুটি তৈরি করে, কিন্তু উত্তাপে রেয়ন এ ধরনের গুটি তৈরি করে না।
২১। পলিমারকরণ প্রক্রিয়া কীভাবে সংঘটিত হয়?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোমার সংযুক্ত হয়ে পলিমার তৈরি হয়, তাকে পলিমারকরণ প্রক্রিয়া বলা হয়। সাধারণত পলিমারকরণে উচ্চচাপ ও তাপে অসংখ্য মনোমারের একটির এক প্রান্ত অপরটির এক প্রান্তের সাথে যুক্ত হয়ে যে বিশাল শিকল গড়ে তোলে তা পলিমার নামে পরিচিত।
n মনোমার ® মনোমার—মনোমার—মনোমার … (মনোমার)n
২২। গরমের দিনে আমরা সুতির পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি কেন?
উত্তর : সুতির পোশাকের সুতার তাপ পরিবহন ও পরিচলনক্ষমতা অন্যান্য সুতার পোশাকের তুলনায় বেশি, ফলে গরমের দিনে পোশাকের ভেতর হতে দেহনিঃসৃত তাপ বেরিয়ে যেতে পারে এবং আমরা স্বচ্ছন্দবোধ করি ।
২৩। সুতি বস্ত্র টেকসই হয় কেন?
উত্তর : সুতি বস্ত্রের সুতার তন্তু অনেকটা নলের মতো। নলের মধ্যে যে সরু পদার্থটি থাকে তা প্রথম অবস্থায় ‘লুমেন’ নামক পদার্থে পূর্ণ থাকে। পরে আঁশগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার পর রোদের প্রভাবে শুকিয়ে যায় এবং নলাকৃতি তন্তুটি ধীরে ধীরে চ্যাপ্টা হয়ে ক্রমে একটি মোচড়ানো ফিতার মতো রূপ ধারণ করে। এই ফিতার মধ্যে সুতির আঁশে ১০০-২৫০টি পর্যন্ত মোচড় থাকে। বস্ত্র তৈরির সময় এ মোড়ানো অংশ একে অপরের সাথে সুন্দরভাবে মিশে যায়। ফলে সুতি বস্ত্র টেকসই হয়।
২৪। সুতির বস্ত্র বহুল ব্যবহারের কয়েকটি কারণ উল্লেখ কর।
উত্তর : সুতির বস্ত্র বহুল ব্যবহারের কারণগুলো হলো-
i. গায়ে পরার ক্ষেত্রে বিশেষ করে গরমের দিনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যময়।
ii. টেকসই।
iii. রং করলে তা পাকা থাকে এবং তাপ ও ধোঁয়ায় তা নষ্ট হয় না।
iv. অজৈব এসিড ব্যতীত অন্যান্য এসিডের সংস্পর্শে কোনো ক্ষতি হয় না।
v. সুতির বস্ত্র ব্যবহারে তেমন কোনো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই ইত্যাদি।
২৫। পশমি পোশাক পরিধানে গরম বোধ হয় কেন?
উত্তর : পশমি পোশাক পশম তন্তু দিয়ে গঠিত। পশম তন্তু তাপের কুপরিবাহী এবং এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। এই পোশাক পরিধান করলে আমাদের দেহনিঃসৃত তাপ বাইরে যেতে পারে না। ফলে, গরম বোধ হয়।
২৬। সুতি ও পশমি তন্তুর মধ্যে কয়েকটি পার্থক্য লেখ?
উত্তর : সুতি ও পশমি তন্তুর কয়েকটি পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো:
পার্থক্যের বিষয় | সুতি তন্তু | পশমি তন্তু |
i. উৎস/প্রকৃতি | এটি একটি উদ্ভিজ্জ তন্তু। | এটি একটি প্রাণিজ তন্তু। |
ii. তাপ পরিবাহিতা | তাপ সুপরিবাহী। | তাপ কুপরিবাহী। |
iii. কাপড়ের টেকসই | সুতি বস্ত্র তুলনামূলকভাবে বেশি টেকসই। | পশমি বস্ত্র তুলনামূলকভাবে কম টেকসইত। |
iv. এসিড সহনশীলতা | অজৈব এসিডের সংস্পর্শে নষ্ট হয়ে যায়। তবে জৈব এসিডে সহনশীল। | লঘু এসিড সহনশীল। |
২৭। রেয়ন বস্ত্রে গরম ইস্ত্রি ব্যবহার করা যায় না কেন?
উত্তর : রেয়ন একটি কৃত্রিম তন্তু। এর তাপ সহনশীলতা খুবই কম। অধিক উত্তাপে এটি গলে যায়। তাই রেয়ন বস্ত্রে গরম ইস্ত্রি ব্যবহার করা যায় না।
২৮। পাট থেকে তন্তু সংগ্রহে একে পচাতে হয় তবে তা পাতা ছাড়ানোর পর– কেন?
উত্তর : পাটকে পানিতে পচানো হয় কারণ পানিতে পচানো হলে গাছ থেকে আঁশ বা তন্তু সহজেই আলাদা করা যায়। কিন্তু এটা করানোর পূর্বেই মাঠে ফেলে রেখে আংশিক পচিয়ে পাতা ছাড়ানো হয়। কারণ, একত্রে পচানো হলে পাতা পচে গাছের গায়ের সাথে আটকে যায়, যা সরানো কষ্টসাধ্য হয়।
২১। প্রাণীর দেহ থেকে প্রাণীর লোম, পশম বা চুল কাটলে তাদের ক্ষতি হয় কি না ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাণীর দেহ থেকে প্রাণীর লোম কাটলেও তাদের ক্ষতি হয় না। কারণ, এগুলো কেটে নেওয়ার কিছু দিন পরই ঐ সকল তন্তু তাদের দেহে পুনরায় তৈরি হয়। ফলে বারবার প্রয়োজনীয় তন্তুগুলো সংগ্রহ করা যায়।
৩০। তুলা থেকে সুতা তৈরিতে ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং করা হয় কেন?
উত্তর : ব্লেন্ডিং ও মিক্সিং হলো বিভিন্ন ধরনের তুলার গাঁইট থেকে তুলার মিশ্রণ তৈরি করা। এর কারণ হলো, গুণে ও মানে সব সময় একই রকম তুলা পাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে মিশ্রণ না করলে একেক সময় একেক সুতা তৈরি হবে। অর্থাৎ সুতার মান একই হবে না। এছাড়া, এতে সুতার উৎপাদন খরচও কম হয়।
৩১। স্পিনিং প্রক্রিয়ায় কীভাবে সুতা নরম বা শক্ত করা হয়?
উত্তর : স্পিনিং প্রক্রিয়ার স্লাইভারকে টেনে ক্রমশ অধিকতর সরু করা হয়। তারপর একে মোচড়ানো হয়। মোচড় কম হলে সূতা নরম হয়। মোচড় বেশি হলে সুতা শক্ত হয়। তবে, মোচড় অতিরিক্ত হলে সুতা ছিঁড়ে যেতে পারে।
৩২। রাবার দীর্ঘদিন রেখে দিলে কী ঘটে কারণসহ উল্লেখ কর।
উত্তর : রাবার দীর্ঘদিন রেখে দিলে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণ হলো রাবার বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। অক্সিজেন ছাড়াও আরও কিছু রাসায়নিক পদার্থ, বিশেষ করে ওজোন (O3) প্রাকৃতিক রাবারের সাথে বিক্রিয়া করে। ফলে রাবার ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যায় তথা নষ্ট হয়ে যায়।
৩৩। কাগজ ও সুতা পোড়ালে একই গন্ধ বের হয় অথচ নাইলন পোড়ালে ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যায়। কেন?
উত্তর : কাগজ ও সুতি কাপড় একই ধরনের সেলুলোজ দিয়ে তৈরি থাকে। ফলে এদের পোড়ালে একই জাতীয় গন্ধ পাওয়া যায়। কিন্তু নাইলন একটি নন-সেলুলোজিক তন্তু। তাই নাইলন পোড়ালে ভিন্ন গন্ধ বের হয়।
৩৪। মেলামাইনকে থার্মোসেটিং পলিমার বলা হয় কেন?
উত্তর : বেশির ভাগ প্লাস্টিকই পানিতে দ্রবণীয়, প্লাস্টিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম হলো এরা বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহন করে না। তাই বিদ্যুৎ ও তাপ নিরোধক হিসেবে এদের বহুল ব্যবহার রয়েছে। প্লাস্টিকের সবচেয়ে বড় ধর্ম হলো গলিত অবস্থায় এদেরকে যে কোনো আকার দেওয়া যায়। কিন্তু মেলামাইন, বাকেলাইট যা ফ্রাইং প্যানের হাতলে এবং বৈদ্যুতিক সকেটে ব্যবহার করা হয়। এগুলো তাপ দিলে নরম হয় না বরং পুড়ে শক্ত হয়ে যায়। এদেরকে একবারের বেশি ছাঁচে ফেলে নির্দিষ্ট আকার দেওয়া যায় না। এই সকল প্লাস্টিককে থার্মোসেটিং প্লস্টিকস বলে। মেলামাইন এই থার্মোসেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত বলে মেলামাইনকে থার্মোসেটিং পলিমার বলা হয়।
৩৫। ৩টি মনোমারের নাম লেখ।
উত্তর : ৩টি মনোমার হলো: i. ইথিলিন ii. ভিনাইল ক্লোরাইড iii. ফরমালডিহাইড।
৩৬। প্লাস্টিকের জগ থার্মোপ্লাস্টিকস্ কেন?
উত্তর: প্লাস্টিকের জগকে তাপ দিলে নরম হয়ে যায়, এবং এর গলিত প্লাস্টিক ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়ে যায়। এভাবে যতবারই প্লাস্টিকের জগকে তাপ দেওয়া হবে, এটি নরম হবে এবং ঠাণ্ডা করলে শক্ত হবে। তাই প্লাস্টিকের জগ থার্মোপ্লাস্টিকস।
* তথ্য কণিকা *
১. পিভিসি পাইপের মনোমার- ভিনাইল ক্লোরাইড।
২. পাট, সিল্ক, সুতি কাপড়, রাবার– প্রাকৃতিক পলিমার।
৩. ২০০°C তাপমাত্রা এবং TiCl3 প্রভাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয় – পলিথিন তৈরিতে।
৪. রেজিন, বাকেলাইট, মেলামাইন, পিভিসি,পলিথিন – কৃত্রিম পলিমার।
৫. ফেনল হচ্ছে-মনোমার।
৬. একই ধরনের অনেকগুলো ছোট অণু যুক্ত হয়ে তৈরি করে-পলিমার।
৭. পলিমার অর্থ— অনেক অংশ ।
৮. একের অধিক মনোমার থেকে তৈরি পলিমার হচ্ছে-বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড।
৯. পলিথিন তৈরিতে ১০০০-১২০০ বায়ু চাপে রাখা হয়-ইথিলিনগ্যাসকে।
১০. তন্তুর রানি বলা হয়- রেশমকে।
১১. মেষ থেকে পাওয়া যায়- ফ্লিসউল।
১২. জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে বলে- কটনলিন্ট।
১৩. পিভিসি পোড়ালে নিঃসৃত হয়- HCl ।
১৪. বাকেলাইটের মনোমার- ফেনল ও ফরমালডিহাইড ।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
১৫. নন-সেলুলোজিক কৃত্রিম তন্তু হচ্ছে- নাইলন।
১৬. সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ- কার্ডিং।
১৭. মোহেরা হলো— পশম।
১৮. প্রাকৃতিক তন্তু- রেশম।
১৯. খুব হালকা ও শক্ত হয়ে থাকে- নাইলন।
২০. মৃত বা জবাই করা মেষ থেকে তৈরি হয়- পুন্ড উল।
২১. রেয়ন, নাইলন, ডেক্রন- কৃত্রিম তন্তু।
২২. রেয়ন- সেলুলোজিক তন্তু।
২৩. প্রাণিজ তন্তু হলো- উল।
২৪. প্যারাসুটের কাপড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়-নাইলন।
২৫. লিনেন তন্তুর জন্য করা প্রয়োজন– হেলকিং।
২৬. প্রায় ৪০ জাতের মেষ থেকে পশম তৈরি হয়– ২০০ প্রকার ।
২৭. রেশম পোকার গুটিকে বলে- কোকুন।
২৮. তন্তু উৎস অনুযায়ী– ২ প্রকার ।
২৯. অ্যাসবেস্টস- উদ্ভিজ্জ তন্তু।
৩০. বেল বা গাইড থেকে পাট তন্তুর মিশ্রণ তৈরির প্রক্রিয়াকে বলে- ব্যাচিং।
৩১. কার্ডিং এবং কম্বিং করে প্রাপ্ত তন্তুকে পাতলা আস্তর মতো করাকে বলে- স্লাইভার।
৩২. পশমের বৈশিষ্ট্য হলো – নমনীয়তা, স্থিতিস্থাপকতা ও রং ধারণ করা।
৩৩. সুন্দর, উজ্জ্বল ও টেকসই হচ্ছে – রেয়ন ।
৩৪. বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করলে ব্যবহার করতে হয়—প্লাস্টিকের জুতা।
৩৫. পানিতে দ্রবণীয়- প্রাকৃতিক রাবারের।
৩৬. বেনজিন, পেট্রোল, ইথারে দ্রবণীয় এবং প্রলেপ দেওয়ার কাছে ব্যবহৃত হয় – রাবার।
৩৭. উত্তপ্ত করলে আয়তন কমে— রাবারের।
৩৮. প্লাস্টিক ও রাবার সামগ্রী এক জায়গায় জড়ো করে এবং পুনরায় ব্যবহার করতে হবে- পরিবেশ সংরক্ষণে।
৩৯. গলিত অবস্থায় যে কোনো আকার দেওয়া যায় এবং পানিতে অদ্রবণীয়- প্লাস্টিক।
৪০. মিহি মসৃণ ও সরু সুতা তৈরি করতে দরকার হয় – কম্বিং।
৪১. লিনেন তন্তুর জন্য করা হয় এক বিশেষ ধরনের কম্বিং যার নাম- হেলকিং।
৪২. সুতা অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও মিহি হয়- হেলকিং করলে।
৪৩. বিলাসবহুল বস্তু তৈরিতে ব্যবহৃত হয়- রেশম তন্তু।
৪৪. রেশমের প্রধান গুণ এর সৌন্দর্য হালকা কিন্তু অধিকতর উষ্ণ হলো- রেশম।
৪৫. রেশম বা পলু পোকা থেকে তৈরি হয় এক ধরনের গুটি যার নাম- কোকুন।
৪৬. কোকুন থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় আহরণ করা হয়- রেশম তন্তু।
৪৭. ৫-৭টি কোকুনের নাল একত্রে করে টানা হয়- চিকন বা মিহি সুতার জন্য।
৪৮. যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোমার সংযুক্ত হয়ে পলিমার উৎপন্ন হয় তার নাম – পলিমারকরণ প্রক্রিয়া।
৪৯. সাধারণত পলিমারকরণে প্রয়োজন হয়-উচ্চচাপ ও তাপের।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৫০. উচ্চচাপ পদ্ধতি সহজসাধ্য না হওয়ায় O3, এর পরিবর্তে প্রভাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়-TiCl3 ।
৫১. TiCl3 প্রভাবক ব্যবহার করে পলিথিন তৈরি করা যায়– এক বায়ুমণ্ডলীয় চাপেই।
৫২. প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না, কৃত্রিমভাবে শিল্প কারখানায় তৈরি করা হয় -কৃত্রিম পলিমার
৫৩. কৃত্রিম পলিমারের উদাহরণ হলো- পলিথিন, পিভিসি, পলিস্টার প্রভৃতি।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. পিভিসি পাইপের মনোমার কোনটি?
ক. ফরমালডিহাইড খ. ভিনাইল ক্লোরাইড
গ. মেলামাইন ঘ. ফেনল
উত্তর: খ. ভিনাইল ক্লোরাইড
২। কোনটি প্রাকৃতিক পলিমার?
ক. মেলামাইন খ. বাকেলাইট
গ. রাবার ঘ. রেজিন
উত্তর: গ. রাবার
৩. পলিথিন তৈরিতে কত তাপমাত্রা দরকার?
ক. ২০০°C খ. ১০০০°C
গ. ১১০০°C ঘ. ১২০০°C
উত্তর: ক. ২০০°C
৪. কোনটি নন–সেলুলোজিক কৃত্রিম তন্তু?
ক. রেয়ন খ. পশম
গ. নাইলন ঘ. অ্যাসবেস্টস
উত্তর: গ. নাইলন
৫. কোনটি সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ?
গ. মিক্সিং ঘ. ব্যাচিং
উত্তর: খ. কার্ডিং
৬. ‘মোহেরা’ কী?
ক. রেশম খ. রেয়ন
গ. পশম ঘ. নাইলন
উত্তর: গ. পশম
৭. প্রাকৃতিক তন্তু কোনটি?
ক. পলিস্টার খ. ডেক্রন
গ. রেয়ন ঘ. রেশম
উত্তর: ঘ. রেশম
৮. কোনটি নাইলনের বৈশিষ্ট্য?
ক. তাপ কুপরিবাহী খ. খুব হালকা ও শক্ত
গ. তুলা থেকে তৈরি ঘ. কম পরিসরে রাখা যায়
উত্তর: খ. খুব হালকা ও শক্ত
৯. মৃত বা জবাই করা মেষ থেকে তৈরি পশমকে বলা হয়–
ক. ভিকুনা খ. মোহেরা
গ. পুন্ড উল ঘ. ফ্লিস উল
উত্তর: গ. পুন্ড উল
১০. পুন্ড উল তৈরি হয় –
ক. জীবন্ত মেষের লোম থেকে
খ. জবাই করা মেষের লোম থেকে
গ. মানুষের চুল ও নখ থেকে
ঘ. পলু পোকার গুটি থেকে
উত্তর: খ. জবাই করা মেষের লোম থেকে
১১. কোনটি কৃত্রিম তন্তু নয়?
ক. নাইলন খ. লিনেন
গ. রেয়ন ঘ. ডেক্রন
উত্তর: খ. লিনেন
১২. নাইলন 6.6 হলো—
i. ননসেলুলোজিক তন্তু
ii. কৃত্রিম তন্তু
iii. প্রাকৃতিক তন্তু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
১৩. রাজা–রানীর পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হত কোন তন্তু?
ক. রেয়ন খ. রেশম
গ. উল ঘ. নাইলন
উত্তর: খ. রেশম
১৪. “ফ্লিসউল” কোনটি থেকে পাওয়া যায়?
ক. মেষ খ. রেশম
গ. ঘোড়া ঘ. মহিষ
উত্তর: ক. মেষ
১৫. ‘তন্তুর রানি‘ বলা হয় কোনটিকে?
ক নাইলন খ. পশম
গ. রেশম ঘ. রাবার
উত্তর: গ. রেশম
১৬. কোন ধরনের তন্তুর জন্য হেলকিং করা প্রয়োজন?
ক. পাট খ. পশম
উত্তর: ঘ. লিনেন

১৭. উপরের চিত্রে উৎপাদিত তন্তুটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি-
i. বেশ মিহি
ii. খুব সস্তা
iii. দুত গরম হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
নিয়ে রেখাচিত্রটি থেকে ১৮ ও ১৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

১৮. চিত্রে B উৎপাদিত দ্রব্যটি কী?
ক. রেজিন খ.পলিথিন
গ. মেলামাইন ঘ. অ্যাসবেস্টস
উত্তর: খ.পলিথিন
১৯. চিত্রে উৎপাদিত B দ্রব্যটির সাথে কোনটির সাদৃশ্য রয়েছে?
ক. সিল্কের খ. পশমের
উত্তর: ঘ. পলিস্টারের
২০. জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে বলে?
ক. স্পিনিং খ. টুইস্টিং
গ. কটনলিন্ট ঘ. হেলকিং
উত্তর: গ. কটনলিন্ট
২১. পিভিসি পোড়ালে কোনটি নিঃসৃত হয়?
ক. CH4 খ. CO2
গ. CO ঘ. HCl
উত্তর: ঘ. HCl
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
২২. বাকেলাইটের মনোমারগুলো হলো–
i. ইথিলিন
ii. ফেনল
iii. ফরমালডিহাইড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
২৩. কোনটি মনোমার?
ক. ফেনল খ. পলিথিন
গ. পিভিসি ঘ. মেলামাইন রেজিন
উত্তর: ক. ফেনল
২৪. ভিনাইল ক্লোরাইড নামক মনোমার থেকে তৈরি–
ক. পলিথিন খ. পি.ভি.সি. পাইপ
গ. বৈদ্যুতিক সুইচ ঘ. মেলামাইন
উত্তর: খ. পি.ভি.সি. পাইপ
২৫. রেশম কোন ধরনের তন্তু।
ক. উদ্ভিজ খ. প্রাণিজ
গ. সেলুলোজিক ঘ. নন-সেলুলোজিক
উত্তর: খ. প্রাণিজ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২৬ ও ২৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রানি, বিলাসী পোশাক হিসেবে রেশমি পোশাক পছন্দ করে। একদিন সে জেনে অবাক হয় যে, এই পোশাকের তন্তু এক প্রজাতির পোকার গুটি থেকে আহরণ করা হয়।
২৬. কোন পোকার গুটি থেকে রানীর পোশাকের তন্তু আহরণ করা হয়?
ক. শুয়ো খ. পলু
গ. চেলে ঘ. বিছা
উত্তর: খ. পলু
২৭. উক্ত পোশাকের তন্তুকে তন্তুর রানি বলা হয়, কারণ–
i. গুণাগুণ বিবেচনায় সেরা
ii. সূর্যালোকে এর রং নষ্ট হয় না
iii. রানিরা ব্যবহার করতেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i
২৮. সেলুলোজিক তন্তু হলো–
i. ভিসকোস
ii. ক্রেন
ii. রেয়ন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
২৯. প্রাকৃতিক প্রাণিজ তন্তুর মধ্যে সবচেয়ে শক্ত ও দীর্ঘ কোনটি?
ক. নাইলন খ. রেয়ন
গ. পশম ঘ. রেশম
উত্তর: ঘ. রেশম
৩০. কোনটি নন–সেলুলোজ কৃত্রিম তন্তু?
ক. নাইলন খ. রেয়ন
গ. এসিটেট রেয়ন ঘ. ভিসকোস রেয়ন
উত্তর: ক. নাইলন
৩১. কোন তন্তুটি সহজে পচে না?
ক. তুলা খ. পশম
উত্তর: ঘ. নাইলন
৩২. পুণ্ড উল তৈরি হয়–
ক. জীবন্ত মেষের লোম থেকে
খ. জবাই করা মেষের লোম থেকে
গ. মানুষের চুল ও নখ থেকে
ঘ. পলু পোকার গুটি থেকে
উত্তর: খ. জবাই করা মেষের লোম থেকে
৩৩. এক টুকরা কাপড় পুড়িয়ে দেখা গেল এটি আস্তে আস্তে পুড়ে গুটির আকার ধারণ করেছে। এটি কী?
ক. সুতি কাপড় খ. নাইলন
গ. রেশমি ঘ. পশমি
উত্তর: খ. নাইলন
৩৪. সেলুলোজিক তন্তু কোনটি?
ক. রেয়ন খ. নাইলন
গ. পলিস্টার ঘ. ডেক্রন
উত্তর: ক. রেয়ন
৩৫. কোন সুতা পোড়ালে দ্রুত পুড়ে যায় ও পোড়া শেষে গুটির মতো তৈরি হয় না?
ক. নাইলনের খ. সিল্কের
গ. পলিস্টার ঘ. তুলার
উত্তর: ঘ. তুলার
৩৬. রেয়নের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. উদ্ভিজ সেলুলোজ থেকে তৈরি
খ. নন-সেলুলোজ থেকে তৈরি
গ. কোকুন থেকে তৈরি
ঘ. ফাইবারগুলোর মধ্যে অসংখ্য ফাকা স্থান থাকে।
উত্তর: উদ্ভিজ সেলুলোজ থেকে তৈরি
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩৭–৩৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
আবুল সাহেব বাজার থেকে মেলামাইনের প্লেট কিনে আনলেন ।
৩৭. আবুল সাহেবের কেনা মেলামাইনের পলিমার কোনটা?
ক. মেলামাইন রেয়ন খ. মেলামাইন রেজিন
গ. মেলামাইন বাকেলাইট ঘ. মেলামাইন লুমেন
উত্তর: খ. মেলামাইন রেজিন
৩৮. উক্ত প্লেটের মনোমার হলো–
i. মেলামাইন
ii. বাকেলাইট
iii. ফরমালডিহাইড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৩৯. আলপাকা কী?
ক. রেয়ন খ. নাইলন
গ. রেশম ঘ. পশম
উত্তর: ঘ. পশম
৪০. কোন পদ্ধতিতে তুলা সংগ্রহ করা হয়?
ক. স্পিনিং খ. ব্যাচিং
গ. জিনিং ঘ. ট্রেডিং
উত্তর: গ. জিনিং
৪১. পলু পোকার গুটি থেকে আহরিত হয়–
ক. রেশম খ. পশম
গ. নাইলন ঘ. সুতি কাপড়
উত্তর: ক. রেশম
৪২. কোনটি প্রাকৃতিক তন্তু?
ক. রেয়ন খ. পলিস্টার
উত্তর: ঘ. রেশম
৪৩. সুতি বস্ত্রের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. রং পাকা ও টেকসই হয়
খ. খুব হালকা ও শক্ত হয়
গ. ধাতব লবণে সহজে বিক্রিয়া করে
ঘ. হালকা ও অধিকতর উষ্ণ
উত্তর: ক. রং পাকা ও টেকসই হয়
৪৪. সুতা অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও মিহি করা হয় কোন পদ্ধতিতে?
ক. কার্ডিং খ. স্পিনিং
গ. টুইস্টিং ঘ. হেলকিং
উত্তর: ঘ. হেলকিং
৪৫. নিচের কোনটি প্রথম উৎপাদিত কৃত্রিম তন্তু?
ক. নাইলন খ. রেয়ন
গ. রেমেট ঘ. লিনেন
উত্তর: খ. রেয়ন
৪৬. সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপ কোনটি?
ক. ব্লেন্ডিং ও কম্বিং খ. ব্লিডিং ও মিক্সিং
গ. স্পিনিং ও হেলকিং ঘ. ব্লেডিং ও জিনিং
উত্তর: ক. ব্লেন্ডিং ও কম্বিং
৪৭. নিচের কোনটি কৃত্রিম তন্তু ?
ক. উল খ. সিল্ক
গ. রেয়ন ঘ. অ্যাসবেস্টস
উত্তর: গ. রেয়ন
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৪৮. তন্তু থেকে সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপকে কী বলে?
ক. কার্ডিং খ. ব্লেন্ডিং
গ. টুইস্টিং ঘ. মিক্সিং
উত্তর: ক. কার্ডিং
৪৯. বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ যারা করেন তারা যে জুতা ব্যবহার করে থাকেন তা–
ক. চামড়ার তৈরি খ. লোহার তৈরি
গ. ফোমের তৈরি ঘ. প্লাস্টিকের তৈরি
৫০. প্রাকৃতিক রাবার–
ক. পানিতে দ্রবণীয় খ. পানিতে অদ্রবণীয়
গ. দানাদার কঠিন পদার্থ ঘ. অস্থিতিস্থাপক পদার্থ
উত্তর: খ. পানিতে অদ্রবণীয়
৫১. প্লাস্টিক শব্দের অর্থ কী?
ক. তাপ সংবেদী খ. সহজে ছাঁচযোগ্য
গ. অনেক ঘ. স্থিতিস্থাপক
উত্তর: খ. সহজে ছাঁচযোগ্য
৫২. তাপ দিলে রাবারের আয়তন–
ক. বেড়ে যায় খ. খুব বেড়ে যায়
গ. ঠিক থাকে ঘ. কমে যায়
উত্তর: ঘ. কমে যায়
৫৩. নিচের কোনটি তৈরিতে বাকেলাইট ব্যবহৃত হয়?
ক. পিভিসি পাইপ খ. বাচ্চাদের খেলনা
গ. বৈদ্যুতিক সকেট ঘ. অপারেশনে ব্যবহূত সুতা
উত্তর: গ. বৈদ্যুতিক সকেট
৫৪. থার্মোপ্লাস্টিককে–
i. তাপ দিলে নরম ও ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়
ii. একবারের বেশি নির্দিষ্ট আকার দেওয়া যায় না
iii. পলিথিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৫. গাড়ির টায়ার, বেলুন এসব তৈরির প্রাকৃতিক উপাদানটি–
i. পানিতে দ্রবণীয় ও দানাদার
ii. তাপ সংবেদনশীল
iii. স্থিতিস্থাপক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৬. কোনটি থার্মোসেটিং প্লাস্টিক?
ক. পলিথিন খ. পিভিসি
গ. মেলামাইন ঘ. পলিস্টার
উত্তর: গ. মেলামাইন
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৫৭ ও ৫৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাজার থেকে তাসফিয়ার বাবা তাকে কিছু রাবার ব্যান্ড ও বেলুন কিনে দেন ।
৫৭. সামগ্রীগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য–
i. স্থিতিস্থাপক
ii. বিদ্যুৎ পরিবাহী
iii. তাপে সংকুচিত হয় নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৮. সামগ্রীগুলোর সাথে বিক্রিয়া করে–
i. পানি
ii. ওজোন
iii. অক্সিজেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫৯. থার্মোসেটি প্লাস্টিক–
i. তাপ দিলে গলে যায়, ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়
ii. তাপ দিলে নরম হয়, ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়
iii. তাপ দিলে নরম হয় না বরং পুড়ে শক্ত হয়
নিচের কোনটি সঠিক
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. iii
৬০. প্রাকৃতিক বাবার কোনটির সাথে বিক্রিয়া করে?
ক. O3 খ. CO
গ. CO2 ঘ. H2O
উত্তর: ক. O3
৬১. নিচের কোনটি পরিবেশবান্ধব?
ক. পলিথিন ব্যাগ খ. পাটের বস্তা
গ. প্লাস্টিক পাইপ ঘ. নাইলনের দড়ি
উত্তর: খ. পাটের বস্তা
৬২. ভিনাইল ক্লোরাইড নামক মনোমার থেকে তৈরি–
গ. বৈদ্যুতিক সুইচ ঘ. মেলামাইন
উত্তর: খ. পি.ভি.সি পাইপ
৬৩. আধুনিক পদ্ধতিতে পলিমার তৈরিতে কোন প্রভাবক ব্যবহৃত হয়?
ক. AlCl3 খ. O2
গ. TiCl3 ঘ. V2O5
উত্তর: গ. TiCl3
৬৪. গ্রিক শব্দ ‘মেরোস‘ এর অর্থ কী?
ক. অঙ্ক খ. অংশ
গ. উপাদান ঘ. অল্প
উত্তর: খ. অংশ
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: আরজু জানুয়ারি মাসের এক সকালে স্কুলে যাচ্ছিল। শীত নিবারণের জন্য সে একটি সুতি শার্টের ওপর আর একটি সুতি শার্ট পরল। সে লক্ষ করল তাতেও তার বেশ ঠাণ্ডা লাগছে। কিন্তু তার মনে হলো তিন মাস আগে সে যখন শুধু একটি শার্ট পরেই স্কুলে যেত তখন এ ধরনের কোনো সমস্যা হতো না।
ক. নন-সেলুলোজিক তন্তু কাকে বলে?
খ. লিনেনকে কেন প্রাকৃতিক তন্তু বলা হয়?
গ. আরজুর কোন ধরনের কাপড় পরা দরকার ছিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. একই কাপড়ে দুই সময় দুই ধরনের অনুভূতি লাগার কারণ বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব কৃত্রিম তন্তু সেলুলোজ থেকে তৈরি না করে অন্য পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হয়, সেসব তন্তুকে নন-সেলুলোজিক তন্তু বলে।
খ. যেসব তন্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে। মসিনা জাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে লিনেন তন্তু সংগ্রহ করা হয়। প্রাকৃতিক বস্তু থেকে পাওয়া যায় বলে লিনেন তন্তুকে প্রাকৃতিক তন্তু বলে।
গ. আরজুর পশমি কাপড় পরা দরকার ছিল। কারণ জানুয়ারি মাসে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশ কম থাকায় শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। তাই ঐ সময় শীত অনুভূত হয়। আরজু সুতি শার্টের ওপর আর একটি সুতি শার্ট পরেছিল। যেহেতু সুতি কাপড়ের তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা বেশি। সেহেতু তাতেও তার ঠাণ্ডা লাগছিল। কারণ আরজুর শরীরের তাপ সহজেই বেরিয়ে যাচ্ছিল এবং আরজুর শীত অনুভূত হচ্ছিল।
এক্ষেত্রে আরজুর পশম বা উলের পোশাক পরা উচিত ছিল। কেননা, পশম বা উলের পোশাক তাপ কুপরিবাহী। কারণ এই পশম তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে, যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে, ফলে শরীরের তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে যেতে পারে না। এর দরুন শরীর গরম থাকে।
ঘ. মানুষ উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রাণী। স্বাভাবিকভাবে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে থাকে। যখন পরিবেশের তাপমাত্রা মানুষের শরীরের তাপমাত্রার তুলনায় যথেষ্ট কম হয় তখন মানুষের শরীর হতে তাপ পরিবেশে চলে যায়। তাই এ সময় শরীরের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত রাখার জন্য শরীরের কোষগুলোতে তাপ উৎপন্ন হয়। যেহেতু সুতি কাপড়ের তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা রয়েছে তাই শরীর তাপ হারালে শীত অনুভূত হয়।
অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে পরিবেশের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। ফলে শরীরের উৎপন্ন তাপ পরিবেশে যেতে চায় না। সেক্ষেত্রে শরীর স্বভাবতই ধীরে ধীরে তাপ হারায়। তাই তাপ পরিবহন ও পরিচলনের ক্ষমতা ভালো হওয়ায় সুতি কাপড় এ সময়ে ভালো লাগে।
যেহেতু জানুয়ারি মাস হলো শীতকাল এবং জানুয়ারির তিন মাস আগে হলো অক্টোবর মাস, যা গ্রীষ্মকাল। সেহেতু একই কাপড়ে এই দুই সময়ে দুই ধরনের অনুভূতি লাগে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–২ : মিলন সাহেবের একটি পিভিসি পাইপ তৈরির কারখানা আছে। তিনি ইমন ও মামুনকে কাঁচামাল সরবরাহ করতে বললেন। ইমন যে কাঁচামাল সরবরাহ করল সেটি স্থিতিস্থাপক এবং অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে। আবার মামুনের সরবরাহকৃত কাঁচামালের ভৌত গুণ হচ্ছে গলিত অবস্থায় এটিকে যেকোনো আকার দেওয়া যায়। রাসায়নিকভাবে এটি নিষ্ক্রিয়। তবে দুটি কাচামালই মাটিতে অপচনশীল।
ক. মনোমার কী?
খ. মেলামাইনকে কেন পলিমার বলা হয়?
গ. ইমন ও মামুনের সরবরাহকৃত কাঁচামালগুলো কীভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. পিভিসি পাইপ তৈরিতে মিলন সাহেবের কোন কাঁচামালটি ব্যবহার করা উচিত বলে তুমি মনে কর?
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে ছোট ছোট অণু থেকে পলিমার সৃষ্টি হয়, তাদেরকে মনোমার বলে।
খ. মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড নামের দুটি মনোমার পুনঃপুন যুক্ত হয়ে মেলামাইন রেজিন তৈরি করে। এ মেলামাইন রেজিন থেকে মেলামাইনের থালাবাসন তৈরি করা হয়। অপরদিকে একই বা ভিন্ন ধরনের অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি বৃহদাকার অণু গঠন করলে তাকে পলিমার বলে। কাজেই মেলামাইনও একটি পলিমার।
গ. ইমন ও মামুনের সরবরাহকৃত কাঁচামাল থেকে যথাক্রমে রাবার ও প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়।
প্লাস্টিক ও রাবার পচনশীল নয়। এগুলো পরিবেশে বর্জ্য হিসেবে জমা হতে থাকে এবং নানা রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। নালা-নর্দমায় প্লাস্টিক ও রাবারজাতীয় জিনিস জমা হয়ে একপর্যায়ে নালা বন্ধ হয়ে যায়। পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে সামান্য বৃষ্টিপাতেই রাস্তায় পানি জমে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। প্লাস্টিক বা বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদ-নদী, জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। এভাবে জমার দরুন নদীর গভীরতা কমে যায়। আবার ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বর্জ্য মাটির উর্বরতা হ্রাস করে। এগুলো পশু বা জলাশয়ে মাছের খাদ্যের সাথে মাছের পাকস্থলীতে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে এসব মাছ, মাংস খাওয়ার দরুন এর ক্ষতিকর প্রভাব মানবদেহে প্রবেশ করে এবং ক্যান্সারের মতো রোগ সৃষ্টি করে।
এভাবেই ইমন ও মামুনের সরবরাহকৃত কাঁচামালগুলো পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
ঘ. পিভিসি পাইপ তৈরিতে মিলন সাহেবের উচিত মামুন সাহেবের সরবরাহকৃত কাচামাল ব্যবহার করা।
পিভিসি পাইপ সাধারণত পানি সরবরাহের লাইনে ব্যবহার করা হয়। এটি যদি বায়ুর অক্সিজেন কিংবা জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে তবে তা টেকসই হবে না। এতে এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পানি দূষিত হবে। ফলে এ পানি পান করলে যে কেউ অসুস্থ হয়ে যাবে। এ কারণে ইমন সাহেবের সরবরাহকৃত কাঁচামাল থেকে পিভিসি পাইপ তৈরি করা যুক্তিসংগত নয়।
অন্যদিকে মামুন সাহেবের সরবরাহকৃত কাঁচামাল রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়ায় অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে না। তাই এর ব্যবহারে প্রাপ্ত পিভিসি পাইপের সাথে অক্সিজেন বা জলীয় বাষ্প বিক্রিয়া করবে। ফলে এর মধ্য দিয়ে সরবরাহকৃত পানি পানের যোগ্য হবে এবং কোনো প্রকারের রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হবে না।
সুতরাং মিলন সাহেবের কারখানায় পিভিসি পাইপ তৈরিতে মামুন সাহেবের সরবরাহকৃত কাঁচামাল প্লাস্টিক ব্যবহার করা উচিত।
প্রশ্ন–৩ : অন্বেষার জামাটি যে তন্তু দিয়ে তৈরি তাকে তন্তুর রানি বলা হয়। অন্য দিকে তার বোন আরিবার দুটো জামার একটি বীজ তন্তু থেকে অন্যটি পশুর লোম থেকে তৈরি।
ক. পলিমার কাকে বলে?
খ. রাবার দীর্ঘদিন রেখে দিলে নষ্ট হয়ে যায় কেন?
গ. অন্বেষার জামার তন্তু থেকে সুতা তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, আরিবার দুটো জামা শীতকালে ব্যবহারের জন্য উপযোগী? উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একই ধরনের অনেকগুলো ছোট অণু পরপর যুক্ত হয়ে যে বৃহৎ অণু সৃষ্টি হয় তাকে পলিমার বলে।
খ. রাবার দীর্ঘদিন রেখে দিলে তা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। কেননা এক্ষেত্রে রাবার বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। অক্সিজেন ছাড়াও আরও কিছু রাসায়নিক পদার্থ, বিশেষ করে ওজোন (O3)-এর সাথে বিক্রিয়ার কারণে রাবার ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
গ. অন্বেষার জামাটি রেশম তন্তু দিয়ে তৈরি, রেশমকেই তন্তুর রানি বলা হয়।
রেশম বা পলু নামক পোকার একটি প্রজাতির গুটি থেকে রেশম তন্তু সংগ্রহ করা হয়। তুঁত গাছে থাকা রেশম পোকা হতে সংগৃহীত তন্তু প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে সুতা সংগ্রহ করা হয় । রেশম পোকা থেকে এক ধরনের গুটি তৈরি হয়। একে কোকুন বলে। পরিণত কোকুন সংগ্রহ করে সাবান পানিতে লোহার কড়াইয়ে সিদ্ধ করা হয়। এতে কোকুন নরম হয়ে যায় এবং ওপর হতে খোসা খুব সহজেই আলাদা হয়ে যায়। খোসা উঠে গেলে তন্তুর প্রান্ত বা নাল পাওয়া যায়। এই নাল ধরে আস্তে আস্তে টানলে লম্বা সুতা বের হয়ে আসে। চিকন সুতার জন্য ৫-৭টি কোকুনের নাল এবং মোটা সুতার জন্য ১৫-২০টি কোকুনের নাল একত্রে করে টানা হয়।
এ কাজে চরকা ব্যবহার করা হয়। নালগুলো একত্র করলে এদের গায়ে লেগে থাকা আঠার কারণে একটি আরেকটির সাথে লেগে যায় ও সুতার গোছা তৈরি করা হয়। এভাবেই, রেশম তন্তু থেকে সুতা সংগ্রহ করা হয়।
ঘ. আরিবার দুটি জামার একটি বীজ তন্তু থেকে অন্যটি পশুর লোম থেকে তৈরি। বীজ তন্তু থেকে তৈরি হয় সুতি কাপড় এবং পশুর লোম থেকে তৈরি হয় পশম বা উলের কাপড়। সুতি পোশাক গরমের দিনে পরা স্বাচ্ছন্দদায়ক। কারণ সুতির তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা বেশি, ফলে শরীর থেকে সহজেই তাপ বাইরে বের হয়ে যেতে পারে। শীতের সময় বাতাস বেশি ঠাণ্ডা থাকায় তা সুতি কাপড়ের মধ্য দিয়ে সহজেই শরীরে লাগে। এ কারণে আরিবার বীজ তন্তু দ্বারা তৈরি সুতি কাপড়ের জামা শীতে পরার উপযোগী নয়।
পশম বা উলের পোশাক তাপ কুপরিবাহী। তাই পশমি পোশাক শীতবস্ত্র হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়। নমনীয়তা, স্থিতিস্থাপকতা, কুঞ্চন প্রতিরোধের ক্ষমতা, রং ধারণক্ষমতা এগুলো উল বা পশমের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকা থাকতে পারে। বাতাস তাপ অপরিবাহী তাই পশম বা উলের কাপড় তাপ কুপরিবাহী। পশমি কাপড় পরে থাকলে শীতের দিনে শরীর থেকে তাপ বেরিয়ে যেতে পারে না, তাই এটি গায়ে দিলে আমরা গরম অনুভব করি। তাই আরিবার পশুর লোম দ্বারা তৈরি পশমে বা উলের কাপড়ের জামা শীতে পরার জন্য উপযোগী।
অতএব, আরিবার দুটো জামাই শীতকালে ব্যবহারের উপযোগী নয়, শুধুমাত্র পশুর লোম দিয়ে তৈরি পশমের জামা শীতকালে ব্যবহারের উপযোগী।
প্রশ্ন–৪ : পাপন, ফাহিম ও সুমন তিন বন্ধু। পাপন একটি ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করে যা ছোট ছোট অণুযুক্ত হয়ে তৈরি হয়। ফাহিম পলু পোকা নামক এক প্রজাপতির গুটি থেকে তৈরি সুতার কারখানায় কাজ করে। অন্যদিকে সুমন কেরাটিন দিয়ে তৈরি তন্তুর কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
ক. কার্ডিং এবং কম্বিং কাকে বলে?
খ. মেলামাইনকে থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. পাপনের কারখানায় উৎপাদিত দ্রব্যটির প্রস্তুতপ্রণালী ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সুমন ও ফাহিমের প্রস্তুতকৃত তন্তুর মধ্যে কোনটি শীতের দিনের জন্য বেশি আরামদায়ক? বিশ্লেষণ করো।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. তুলা, লিনেন, পশম তন্তু থেকে সুতা কাটার দ্বিতীয় ধাপকে কার্ডিং এবং কম্বিং বলে।
খ. থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস হলো বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক যাদের তাপ দিলে নরম না হয়ে পুড়ে শক্ত হয়ে যায় এবং এদের কোন নির্দিষ্ট আকার দেয়া যায় না। মেলামাইনকে তাপ দিলে এটি নরম না হয়ে বরং পুড়ে শক্ত হয়ে যায়। তাই এদের থার্মেসেটিং প্লাস্টিকস বলে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
গ. পাপন পলিথিনের ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করে। উচ্চ চাপ ও তাপের সাহায্যে পলিমারকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পলিথিন উৎপন্ন করা হয়। এ প্রক্রিয়ার সাহায্যে পলিথিন তৈরির কৌশল দেখানো হলো-
ইথিলিন গ্যাসকে ১০০০-১২০০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে, ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিথিন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পলিমারকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য প্রভাবক হিসেবে অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। পলিথিন তৈরির বিক্রিয়াটি হলো:

উচ্চচাপ পদ্ধতি সহজসাধ্য না হওয়ায় ইদানীং এটি তেমন জনপ্রিয় নয়। বর্তমানে টাইটেনিয়াম ট্রাইক্লোরাইড (TiCl3) নামক প্রভাবক ব্যবহার করে সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে পলিথিন উৎপাদন করা হয়।
ঘ. সুমনের প্রস্তুতকৃত তন্তু হলো পশম এবং ফাহিমের প্রস্তুতকৃত তন্তু হলো রেশম। শীতকালে শীতের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য পশম বা উলের পোশাকের বিকল্প নেই ।
তাপ কুপরিবাহী হওয়ায় এ ধরনের পোশাক শীতবস্ত্র হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। নমনীয়তা, স্থিতিস্থাপকতা, কুঞ্চন প্রতিরোধের ক্ষমতা, রং ধারণক্ষমতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে এ তন্তুর তৈরি পোশাক বেশ জনপ্রিয়। এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। শীতের দিনের এ ধরনের তন্তুর কাপড়ে শরীর থেকে তাপ বেরিয়ে যেতে পারে না। তাই পরিধান করলে গরম বোধ হয়।
সুতরাং শীতকালে ঠাণ্ডা থেকে আত্মরক্ষার জন্য পশম বা উলের পোশাক পরা আরামদায়ক।
প্রশ্ন–৫ : আরাফ ও ইব্রাহীম দুই বন্ধু। আরাফ তার কারখানায় এক ধরনের সুতা তৈরি করে যা ফাইব্রেয়ন নামক প্রোটিন দিয়ে তৈরি। এটি উষ্ণ এবং কম পরিসরে রাখা যায়। অপরদিকে ইব্রাহীমের কারখানায় এমন বস্তু তৈরি করে যা পচনশীল নয়, বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহন করে না এবং পানিতে অদ্রবণীয়।
ক. স্লাইভার কাকে বলে?
খ. পশুর লোমের তৈরি পোশাক শীতকালে ব্যবহার করা হয় কেন?
গ. আরাফ ব্যবসার কাঁচামাল কীভাবে উৎপাদন করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ইব্রাহীমের উৎপাদিত বস্তুটি পরিবেশের জন্য প্রতিবন্ধক -বিশ্লেষণ করো।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কার্ডিং এবং কম্বিং দ্বারা প্রাপ্ত পাতলা আস্তরের আকৃতি ধারণ করা তন্তুকে স্লাইভার বলে।
খ. উল বা পশমের মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। বায়ু তাপ কুপরিবাহী বলে শীতের দিনে শরীর থেকে তাপ পশমের পোশাক ভেদ করে যেতে পারে না। তাই শীতবস্ত্র হিসেবে পশমি পোশাক বহুল ব্যবহৃত হয়।
গ. আরাফের ব্যবসার কাঁচামাল হচ্ছে রেশমি সুতা যা রেশম পোকার গুটি বা কোকুন থেকে তৈরি হয়।
পরিণত কোকুন সাবান পানিতে লোহার কড়াইয়ে সিদ্ধ করা হয়। এতে কোকুন নরম হয়ে যায় এবং উপর থেকে খোসা খুব সহজেই আলাদা হয়ে যায়। খোসা উঠে গেলে তন্তুর প্রান্ত বা নাল পাওয়া যায়। এই নাল ধরে আস্তে আস্তে টানলে লম্বা আঁশ বা সুতা বেরিয়ে আসে। চিকন বা মিহি সুতার জন্য ৫-৭টি কোকুন নাল এবং মোটা সুতার জন্য ১৫-২০টি কোকুনের নাল একত্র করে চরকার সাহায্যে টানা হয়।
নালগুলো একত্রিত করলে এদের গায়ে লেগে থাকা আঠার কারণে একটি আরেকটির সাথে লেগে যায় এবং সুতার গোছা তৈরি হয়। এভাবে আরাফ তার কারখানায় রেশম তন্তু থেকে রেশমি সুতা উৎপাদন করে।
ঘ. ইব্রাহীমের কারখানায় উৎপাদিত বস্তুটি হলো প্লাস্টিক। এটি পরিবেশের জন্য প্রতিবন্ধক কিনা তা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
প্লস্টিক পুনঃব্যবহার না করে বর্জ্য হিসেবে অপসারণ করলে এগুলো পরিবেশে জমা হতে থাকে এবং নানারকম প্রবিন্ধকতা সৃষ্টি করে। এগুলো শহর এলাকায় নর্দমায় জমতে জমতে এক পর্যায়ে নালা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
এ সকল পদার্থের বর্জ্য মাটিতে থাকলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু খাবারের সাথে মিশে পাকস্থলিতে যায় এবং চর্বি ও মাংসে জমতে থাকে। পানিতে ফেললে মাছের ভেতরেও প্লাস্টিক বর্জ্য পদার্থ প্রবেশ করে ও জমতে থাকে। এগুলো খেলে মানুষের রোগ সৃষ্টি করে।
অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, ইব্রাহীমের কারখানায় উৎপাদিত বস্তু অর্থাৎ প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য প্রতিবন্ধক।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৬ : মতিন সাহেব ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে পলিথিন ব্যাগে করে কিছু বেলুন ও খেলনা গাড়ি কিনে আনলেন।
ক. মনোমার কাকে বলে?
খ. মেলামাইনকে কৃত্রিম পলিমার বলা হয় কেন?
গ. মতিন সাহেবের ব্যবহৃত ব্যাগের উৎপাদন প্রক্রিয়া বর্ণনা করো।
ঘ. মতিন সাহেবের কেনা বস্তু দুইটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে কি? বিশ্লেষণ করো।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব ছোট অণু থেকে পলিমার তৈরি হয় তাকে মনোমার বলে।
খ. মেলামাইনের থালাবাসন মেলামাইন রেজিন নামক পলিমার দ্বারা তৈরি। মেলামাইন রেজিন তৈরি হয় মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড নামক দুটি মনোমার থেকে। মেলামাইন ও ফরমালডিহাইড এর অনেকগুলো অণু পর পর যুক্ত হয়ে মেলামাইন রেজিন উৎপন্ন করে। এভাবে মনোমারের সমন্বয়ে মেলামাইন গঠিত হয় বলে একে কৃত্রিম পলিমার বলা হয়।
গ. মতিন সাহেবের ব্যবহৃত ব্যাগটি পলিথিন। উচ্চ চাপ ও তাপের সাহায্যে পলিমারকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পলিথিন উৎপন্ন করা হয়। এ প্রক্রিয়ার সাহায্যে পলিথিন তৈরির কৌশল দেখানো হলো-
ইথিলিন গ্যাসকে ১০০০-১২০০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে, ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিথিন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পলিমারকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য প্রভাবক হিসেবে অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। পলিথিন তৈরির বিক্রিয়াটি হলো:

উচ্চচাপ পদ্ধতি সহজসাধ্য না হওয়ায় ইদানীং এটি তেমন জনপ্রিয় নয়। বর্তমানে টাইটেনিয়াম ট্রাইক্লোরাইড (TiCl3) নামক প্রভাবক ব্যবহার করে সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে পলিথিন উৎপাদন করা হয়।
ঘ. মতিন সাহেবের কেনা বস্তু দুইটি হলো- বেলুন ও খেলনা গাড়ি যা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ।
এগুলো পচনশীল নয়। এর ফলে পুনঃব্যবহার না করে বর্জ্য হিসেবে অপসারণ করলে এগুলো পরিবেশে জমা হতে থাকে এবং নানারকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা ঘটায়।
একইভাবে প্লাস্টিক ও বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদনদী, হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। এভাবে জমতে থাকলে একসময় নদীর গভীরতা কমে যায়, যা নাব্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আবার ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বর্জ্য অনেক সময় মাটিতে থাকলে তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করতে পারে।
প্লাস্টিক ও পলিথিন যত্রতত্র রাস্তাঘাটে ফেলে রাখলে সামান্য বৃষ্টিপাতেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। প্লাস্টিক সাধারণত দাহ্য হয়। আগুনে পোড়ালে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় এবং অনেক ক্ষতিকর পদার্থ উৎপন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ পিভিসি পোড়ালে HCI গ্যাস, পলিইউরেথান। পোড়ালে CO ও হাইড্রোজেন সায়ানাইড গ্যাস পরিবেশে নির্গত হয় । উৎপন্ন হাইড্রোজেন সায়ানাইড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস স্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
উপরের আলোচনা হতে বলা যায়, উল্লিখিত প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যসামগ্রী বেশি ও অপরিকল্পিত ব্যবহার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
প্রশ্ন-৭ :

ক. পলিথিন কাকে বলে?
খ. প্লাস্টিকের জগ থার্মোপ্লাস্টিকস কেন?
গ. উদ্দীপকের A তন্তুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের B ও C উভয়ই কী পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. “ইথিলিন” নামক মনোমার দ্বারা তৈরি পলিমারকে পলিথিন বলে।
খ. প্লাস্টিকের জগকে তাপ দিলে নরম হয়ে যায়, এবং এর গলিত প্লাস্টিক ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়ে যায়। এভাবে যতবারই প্লাস্টিকের জগকে তাপ দেওয়া হবে, এটি নরম হবে এবং ঠাণ্ডা করলে শক্ত হবে। তাই প্লাস্টিকের জগ থার্মোপ্লাস্টিকস।
গ. উদ্দীপকের A হলো অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা দৃশ্যমান সুতি তন্তু। সুতি তন্তুর তাপ পরিবহন এবং পরিচলন ক্ষমতা বেশি।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে সুতি তন্তুকে অনেকটা নলের মতো দেখায়। নলের মধ্যে যে সরু পদার্থটি থাকে তা প্রাথমিক অবস্থায় ‘লুমেন’ নামক পদার্থের পূর্ণ থাকে। আপাতদৃষ্টিতে সুতি তেমন উজ্জ্বল নয়। তবে ময়েশ্চারাইজেশনের মাধ্যমে একে উজ্জ্বল ও চকচকে করে তোলা যায়। সুতি তন্তুকে রং করা হলে সেটি পাকা রং হয় এবং তাপ ও ধোয়ার ফলে রংয়ের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। অজৈব এসিডের সংস্পর্শে সুতি তন্তু নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু অন্যান্য এসিডের সংস্পর্শে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। সুতির বস্ত্র ব্যবহারের তেমন বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হয় না বলে এর অনেক ধরনের ব্যবহার রয়েছে। সুতি বস্ত্রের একটি প্রধান সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এটি সংকুচিত হয়ে যায়।
ঘ. উদ্দীপকে B হলো কৃত্রিম রাবার এবং C হলো প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ ।
বেশির ভাগ প্লাস্টিক এবং কৃত্রিম রাবার পচনশীল নয়। এর ফলে পুনর্ব্যবহার না করে বর্জ্য হিসেবে ফেলে দিলে এগুলো পরিবেশে জমা হতে থাকে এবং নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শহরের বেশির ভাগ নর্দমার নালায় প্রচুর প্লাস্টিক বা রাবার জাতীয় জিনিস পড়ে থাকে। এগুলো জমতে জমতে এক পর্যায়ে নালা নর্দমা বন্ধ হয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। একইভাবে প্লাস্টিক এবং বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদ-নদী, হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। এভাবে জমতে থাকলে একসময় নদীর গভীরতা কমে যায়, যা নাব্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আবার ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বর্জ্য অনেক সময় মাটিতে থাকলে তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করতে পারে।
উপরের আলোচনার মাধ্যমে এটি স্পষ্ট যে, B ও C অর্থাৎ রাবার ও প্লাস্টিক উভয় সামগ্রীই সঠিক ব্যবস্থাপনা না করলে তা মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
প্রশ্ন–৮ : গফুর খুলনায় বেড়াতে এসে মার্কেটে যাওয়ার সময় দেখল রাস্তার পাশে ডাস্টবিনের ময়লা–আবর্জনা থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পলিথিন, পানির বোতল, বাচ্চাদের খেলনার ভাঙ্গা টুকরা ইত্যাদি আলাদা করে ব্যাগে রাখছে। পরে সে মার্কেট থেকে গরমের জন্য আরামদায়ক একটি জামা কিনে বাড়িতে আসলো।
ক. পলিমার কাকে বলে?
খ. রেশমকে তন্তর রানি বলা হয় কেন?
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
গ. গফুরের ক্রয়কৃত জামাটির তন্তুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কর্মকাণ্ড অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ও পরিবেশ বান্ধব কী না? উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একই ধরনের অনেকগুলো ছোট অণু পরপর যুক্ত হয়ে যে বৃহৎ অণু সৃষ্টি করে তাকে পলিমার বলে।
খ. রেশম মূলত ফাইব্রেয়ন নামক এক প্রকার প্রোটিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি। প্রাকৃতিক প্রাণিজ তন্তুর মধ্যে রেশম সব থেকে শক্ত ও দীর্ঘ। রেশম হালকা ও অধিকতর উষ্ণ এবং খুবই কম পরিসরে রাখা যায়। রেশমের প্রধান গুণ এর সৌন্দর্য। এধরনের বিভিন্ন গুণাগুণের জন্য রেশমকে তন্তুর রানি বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে গফুরের ক্রয়কৃত জামাটি সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি। নিচে সুতি তন্তুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-
সুতি কাপড়ের বুননে সূক্ষ্ম ফাঁকাস্থান থাকে। এই ফাঁকা স্থানের মধ্য দিয়ে সহজেই তাপ বের হয়ে যেতে পারে। এতে বাইরের তাপ কাপড়ে আটকে থাকতে পারে না। আবার, ঐ ছিদ্রপথে বাইরের বাতাস শরীরে সহজেই লাগতে পারে। এতে দেহে গরমের তীব্রতা কম অনুভূত হয় এবং আরামবোধ হয়।
এই সুতা অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে অনেকটা নলের মতে দেখায়। এই নলের মধ্যে যে সরু পদার্থটি থাকে তা প্রথম অবস্থায় লুমেন নামক পদার্থ পূর্ণ থাকে। আঁশগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার পর রোদের প্রভাবে শুকিয়ে যায় এবং নলাকৃতির তন্তুটি ধীরে চ্যাপ্টা হয়ে মোচড়ানো ফিতার আকার ধারণ করে। এই ফিতার মতো সুতির আঁশে ১০০ থেকে ২৫০টি পর্যন্ত পাক বা মোচড় থাকে।
অজৈব এসিডের সংস্পর্শে সুতি তন্তু নষ্ট হলেও অন্যান্য এসিডের সংস্পর্শে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ও পরিবেশ বান্ধব। নিচে যুক্তিসহ এর ব্যাখ্যা দেয়া হলো-
উপাদানগুলো পচনশীল নয়। এর ফলে পুনরায় ব্যবহার না করে বর্জ্য হিসেবে অপসারণ করলে এগুলো পরিবেশে জমা হতে থাকে এবং নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক ও খেলনা যত্রতত্র রাস্তাঘাটে ফেলে রাখলে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা ঘটায়।
একইভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদ-নদী, হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। এভাবে জমতে থাকলে একসময় নদীর গভীরতা কমে যায়, যা নাব্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
আবার ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বর্জ্য অনেক সময় মাটিতে থাকলে তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করতে পারে। প্লাস্টিক সাধারণত দাহ্য হয়। আগুনে পোড়ালে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় এবং অনেক ক্ষতিকর পদার্থ উৎপন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ পি.ভি.সি পোড়ালে HCl গ্যাস, পলিইউরেথান পোড়ালে CO ও HCN গ্যাস পরিবেশে নির্গত হয়। উৎপন্ন হাইড্রোজেন সায়ানাইড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস স্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
উপরের আলোচনা হতে বলা যায়, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্জ্যগুলো নির্ধারিত জায়গায় জমা হয় যার ফলে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি ও পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
বিজ্ঞান সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৯ : এবার ঈদে জামাল সাহেব দুটি পাঞ্জাবী কিনেন। একটি পাঞ্জাবী ফ্রাইব্রেয়নের তৈরি। অন্যটি যে তন্তু দিয়ে তৈরি তা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে নলের মতো দেখায় যা এক ধরনের পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে।
ক. কটন লিন্ট কাকে বলে?
খ. ফ্রাইং প্যানের হাতল কৃত্রিম পলিমার ব্যাখ্যা করো।
গ. জামাল সাহেবের ক্রয়কৃত প্রথম পাঞ্জাবীটির তৈরিকৃত উপাদানটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পাঞ্জাবী দুইটির মধ্যে কোনটি আরামদায়ক হবে? তোমার মতামত দাও।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে কটন লিন্ট বলে।
খ. কৃত্রিম পলিমার সরাসরি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয় বরং গবেষণাগারে বিভিন্ন পদার্থ বা রাসায়নিক দ্রব্যাদির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়। এ হিসেবে ফ্রাইং প্যানের হাতল একটি কৃত্রিম পলিমার। কারণ ফ্রাইং প্যানের হাতল সরাসরি প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে এটি তৈরি করা হয়।
গ. জামাল সাহেবের ক্রয়কৃত প্রথম পাঞ্জাবীটি যেহেতু ফাইব্রেয়নের তৈরি সেহেতু এর প্রধান উপাদান হলো রেশম তন্তু। নিচে এর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা হলো-
i. রেশম তন্তু মূলত ফাইব্রেয়ন নামক এক প্রকার প্রোটিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি।
ii. রেশম হালকা কিন্তু অধিকতর উষ্ণ।
iii. রেশম তন্তু সূর্যালোতে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
iv. প্রাকৃতিক প্রাণিজ তন্তুর মধ্যে রেশম তন্তু বেশ শক্ত ও দীর্ঘ।
ঘ. উদ্দীপক অনুযায়ী বলা যায়, জামাল সাহেবের ক্রয়কৃত প্রথম পাঞ্জাবীটি ছিল রেশমি কাপড়ের এবং দ্বিতীয় পাঞ্জাবীটি ছিল সুতি কাপড়ের। রেশমি কাপড়ের প্রধান গুণ এর সৌন্দর্য। সূর্যালোকে রেশমের তৈরি কাপড় দীর্ঘক্ষণ রাখলে এটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়। এছাড়া এটি অধিকতর উষ্ণ। তাই গরমের সময় রেশমের তৈরি কাপড় আরামদায়ক কম।
অপরদিকে সুতি বস্ত্রে তন্তুর অংশ একে অপরের সাথে সুন্দরভাবে মিশে যায় বলে সুতিবস্ত্র টেকসই হয়। তাছাড়া সুতি কাপড়ের তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা বেশি বলে দেহের তাপ বাইরে পরিবহন করে এবং ঘাম শোষণের মাধ্যমে শরীরের স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সহায়তা করে।
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে এটি স্পষ্ট যে, জামাল সাহেবের ক্রয়কৃত প্রথম পাঞ্জাবী অপেক্ষা দ্বিতীয় পাঞ্জাবীটি বেশি আরামদায়ক হবে।
প্রশ্ন–১০ : শ্যামল এসএসসি পাস করে ঢাকার অদূরে টঙ্গী শিল্প নগরীতে এক প্লাস্টিক কারখানায় চাকরি নিল। কারখানায় তৈরি মগ, বালতি, মেলামাইনের থালা–বাসন, পিভিসি পাইপসহ অনেক জিনিসের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি হলেও বর্তমানে দেশীয় প্রযুক্তির কাঁচামালও ব্যবহার করা হচ্ছে।
ক. পলিমারকরণ প্রক্রিয়া কী?
খ. সুতা তৈরিতে কার্ডিং এবং কম্বিং কেন করা হয়?
গ. শ্যামলের কারখানার কাঁচামালের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের তৈরি জিনিসপত্রগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় হলেও পরিবেশ বান্ধব নয়-উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে প্রক্রিয়াতে অনেকগুলো মনোমার সংযুক্ত করে পলিমার তৈরি করা হয় তাই পলিমারকরণ প্রক্রিয়া।
খ. কার্ডিং এবং কম্বিং হলো সুতা তৈরির দ্বিতীয় ধাপ। তন্তু হতে সুতা তৈরিতে ব্যবহার অনুপযোগী অতি ছোট তন্তু এবং ধূলাবালি বা ময়লার কণা থাকে। কার্ডিং এবং কম্বিং প্রক্রিয়ায় এগুলো দূর করা হয়। এছাড়া সুতাকে ব্যবহার উপযোগী, মসৃণ ও সরু করতে কম্বিং করার দরকার হয়।
গ. শ্যামলের কারখানায় তৈরি মগ, বালতি, মেলামাইনের থালা-বাসন, পিভিসি পাইপ সবকিছুর কাঁচামাল হলো প্লাস্টিক। নিচে প্লাস্টিকের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম ব্যাখ্যা করা হলো-
ভৌত ধর্ম : প্লাস্টিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম হলো এরা বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবহন করে না। প্লাস্টিকের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধর্ম হলো গলিত অবস্থায় এদেরকে যেকোনো আকার দেওয়া যায়। বেশিরভাগ প্লাস্টিকই পানিতে অদ্রবণীয়।
রাসায়নিক ধর্ম: বেশিরভাগ প্লাস্টিক রাসায়নিকভাবে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। তাই বাতাসের জলীয় বাষ্প ও অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে না এবং ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। এসিড বা ক্ষারের সাথেও বিক্রিয়া করে না। তবে শক্তিশালী ঘনমাত্রার এসিডে কিছু কিছু প্লাস্টিক দ্রবীভূত হয়। প্লাস্টিক সাধারণত দাহ্য হয় অর্থাৎ এদেরকে আগুন ধরালে পুড়তে থাকে ও প্রচুর তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।
এছাড়া প্লাস্টিক পচনশীল নয়। দীর্ঘদিন মাটি বা পানিতে পড়ে থাকলেও এগুলো পচে না।
ঘ. উদ্দীপকে শ্যামলের কারখানায় তৈরি জিনিসগুলোর সবই প্লাস্টিক। এসব প্লাস্টিক সামগ্রীর বেশিরভাগই অপচনশীল।
এগুলো পুনঃব্যবহার না করে বর্জ্য হিসেবে অপসারণ করলে পরিবেশে জমা হতে থাকে এবং নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।
একইভাবে এসব প্লাস্টিক সামগ্রী পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদ-নদী, হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। এভাবে জমতে থাকলে একসময় এগুলোর গভীরতা কমে যায়, যা নাব্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ফলে অল্প বৃষ্টিপাতে বন্যা দেখা দেয়।
আবার, ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য অপচনশীল হওয়ায় অনেক সময় মাটিতে থাকলে তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। ফলে ফসলের উৎপাদন কমে যায়। এছাড়াও নদ-নদী, জলাশয়ে জমা প্লাস্টিক খাবার গ্রহণের সময় মাছের দেহে প্রবেশ করতে পারে ও জমা হতে থাকে। আর আমরা এ সকল মাছ, মাংস খেলে শেষ পর্যন্ত আমাদের দেহে প্রবেশ করে, যা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
সুতরাং এটা স্পষ্ট যে, প্লাস্টিক সামগ্রী আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় হলেও সঠিক ব্যবস্থাপনা না করলে তা আমাদের জন্য পরিবেশ বান্ধব নয়।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–১১ : সুজানা ও সুমনা দুই বোন। এক অনুষ্ঠানে খাওয়ার সময় সুজানা সুতি কাপড়ের এবং সুমনা রেশমি কাপড়ের জামা পরেছিল। কিছুক্ষণ পর সুমনা লক্ষ করল, সে ঘামছে অথচ সুজানা স্বাভাবিক। অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি এসে সুমনা তার শিক্ষিকা মায়ের কাছে এর কারণ জানতে চাইল।
ক. ভিনেগারের রাসায়নিক সংকেত লিখ ।
খ. ‘টেস্টিং সল্ট’ বলতে কী বোঝায়?
গ. সুমনার পরিহিত জামার সুতা কীভাবে সংগ্রহ করা হয়?
ঘ. উদ্দীপকের সুজানা ও সুমনার ভিন্ন অনুভূতি লাগার কারণ সম্পর্কে মা কী বলেছেন? তোমার মতামত দাও।
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ভিনেগারের রাসায়নিক সংকেত হলো: CH3COOH ।
খ. টেস্টিং সল্ট হলো- সোডিয়ামের লবণ, যা সোডিয়াম গ্লুটামেট নামে পরিচিত। সাধারণত বিভিন্ন খাবার রান্নার সময় সোডিয়াম গ্লুটামেট লবণ দেওয়া হয়। এতে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
গ. সুমনার পরিহিত জামা রেশমি সুতার তৈরি, যা রেশম পোকার গুটি বা কোকুন থেকে তৈরি হয়।
পরিণত কোকুন সাবান পানিতে লোহার কড়াইয়ে সেদ্ধ করা হয়। এতে কোকুন নরম হয়ে যায় এবং উপর থেকে খোসা খুব সহজেই আলাদা হয়ে যায়। খোসা উঠে গেলে তন্তুর প্রান্ত বা নাল পাওয়া যায়। এই নাল ধরে আস্তে আস্তে টানলে লম্বা আঁশ বা সুতা বেরিয়ে আসে। চিকন বা মিহি সুতার জন্য ৫-৭টি কোকুন নাল এবং মোটা সুতার জন্য ১৫-২০টি কোকুনের নাল একত্র করে চরকার সাহায্যে টানা হয়।
নালগুলো একত্রিত করলে এদের গায়ে লেগে থাকা আঠার কারণে একটি আরেকটির সাথে লেগে যায় এবং সুতার গোছা তৈরি হয়। এভাবে রেশম তন্তু থেকে রেশম সুতা সংগ্রহ করা হয়।
ঘ. উদ্দীপকে সুজানা সুতি কাপড়ের এবং সুমনা রেশমি কাপড়ের জামা পরিধান করেছিল।
কাপড় দুটি পরিধানে ভিন্ন অনুভূতি লাগার কারণ সম্পর্কে তাদের মা তন্তু দুটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করেন। রেশম তন্তুর প্রধান গুণ এর সৌন্দর্য। এটি অধিকতর উষ্ণ এবং তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা কম বলে গরমের দিনে দ্রুত ঘামের সৃষ্টি করে। ফলে শরীরে অস্বস্তি লাগে।
অপরদিকে, সুতি তন্তুর তৈরি কাপড়ের তাপ পরিবহন ও পরিচলন ক্ষমতা বেশি। এ কাপড় পরিধানে দেহের তাপ বাইরে পরিবহন করে এবং ঘাম শোষণের মাধ্যমে শরীরে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সহায়তা করে। ফলে গরমের দিনে এটি পরিধান করা বেশ আরামদায়ক।
সুতরাং রেশম ও সুতি তন্তুর কাপড়ের বৈশিষ্ট্যের কারণে সুজানা ও সুমনার ভিন্ন অনুভূতি লাগে।
প্রশ্ন–১২ : ডিসেম্বরের এক সকালে প্রজ্ঞা ঘরের বাইরে বের হলো। তার পরনে ছিল পলু পোকা নামক এক প্রজাতির গুঁটি থেকে তৈরি পোশাক। তাই তার বেশ ঠাণ্ডা লাগছিল।
ক. তন্তু কী?
খ. সুতি বস্ত্র বলতে কী বোঝায়?
গ. প্রজ্ঞার পরিধেয় বস্ত্রে ব্যবহৃত তন্তুর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. প্রজ্ঞার কোন ধরনের তন্তুর পোশাক পরার দরকার ছিল? যুক্তিসহ মতামত দাও।
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. তন্তু হলো আঁশ জাতীয় পদার্থ যা বস্ত্রশিল্পে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহৃত হয়।
খ. সুতি তন্তুর অভ্যন্তরে বিদ্যমান সরু পদার্থটি প্রাথমিক অবস্থায় ‘লুমেন’ নামক পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে। আঁশগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার পর রোদের প্রভাবে শুকিয়ে যায় এবং নলাকৃতি তন্তুটি ধীরে ধীরে চ্যাপ্টা হয়ে ক্রমে একটি মোচড়ানো ফিতার মতো আকার ধারণ করে। এই ফিতার মতো সুতির আঁশ থেকে তৈরি বস্তুই হলো সুতি বস্ত্র।
গ. প্রজ্ঞার পরিধেয় বস্ত্রে ব্যবহৃত তন্তু হলো রেশম। রেশম তন্তুর বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:
- রেশমের প্রধান গুণ হলো এর সৌন্দর্য।
- এটি মূলত ফাইব্রেয়ন নামক এক প্রকার প্রোটিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি।
- প্রাকৃতিক প্রাণিজ তন্তুর মধ্যে রেশম সবচেয়ে শক্ত ও দীর্ঘ।
- সূর্যালোকে রেশম দীর্ঘক্ষণ রাখলে এটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
- এটি হালকা কিন্তু অধিকতর উষ্ণ এবং খুবই কম পরিসরে রাখা যায়।
- রেশম তন্তুর তৈরি রেশমি কাপড় গ্রীষ্মকালে কিংবা গ্রীষ্ম ও শীতকালের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবহার উপযোগী।
ঘ. ডিসেম্বর মাস শীতকাল হওয়ায় প্রজ্ঞার এসময় পশম বা উলের পোশাক পরার দরকার ছিল।
শীতকালে শীতের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য পশম বা উলের পোশাকের বিকল্প নেই। তাপ কুপরিবাহী হওয়ায় এ ধরনের পোশাক শীতবস্ত্র হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। নমনীয়তা, স্থিতিস্থাপকতা, কুঞ্চন প্রতিরোধের ক্ষমতা, রং ধারণক্ষমতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে এ তন্তুর তৈরি পোশাক বেশ জনপ্রিয়।
এই তন্তুর মাঝে ফাঁকা জায়গা থাকে যেখানে বাতাস আটকে থাকতে পারে। শীতের দিনের এ ধরনের তন্তুর কাপড়ে শরীর থেকে তাপ বেরিয়ে যেতে পারে না। তাই পরিধান করলে গরম বোধ হয়।
সুতরাং শীতকালে প্রজ্ঞার ঠাণ্ডা থেকে আত্মরক্ষার জন্য পশম বা উলের পোশাক পরা যুক্তিসংগত।