নবম দশম-বিজ্ঞান নোট
অধ্যায় ৯: দুর্যোগের সাথে বসবাস
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
ভূমিকা: মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর প্রতিকূল প্রভাব রয়েছে এমন যে কোনো প্রাকৃতিক ঘটনাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ । বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনা হয়।
জলবায়ু কী?
জলবায়ু হলো কোনো নির্দিষ্ট স্থানের ২০-৩০ বছরের আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থার গড় হিসাব।
দুর্যোগ কী?
দুর্যোগ হচ্ছে এরূপ একটি ঘটনা, যা সমাজের স্বাভাবিক কাজকর্মে প্রচণ্ডভাবে বিঘ্ন ঘটায় এবং জীবন সম্পদ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
নদী প্রশিক্ষণ কী?
নদী প্রশিক্ষণ হলো নদীর পাড়ে পাথর, সিমেন্টের ব্লক, বালির বস্তা, কাঠ ও বাঁশের টিবি ইত্যাদির মাধ্যমে বন্যা প্রতিরোধ করা।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
জনসংখ্যার ঘনত্ব কী?
একটি দেশের প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যত জন লোক বাস করে তাকে ঐ দেশের জনসংখ্যা ঘনত্ব বলে।
কার্বন দূষণ কী?
বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াই হলো কার্বন দূষণ।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বলতে কী বোঝায়?
বৈশ্বিক উষ্ণতা হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হলো পৃথিবীতে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যানবাহন, শিল্প-কারখানা, বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। আবার বনভূমি ধ্বংসের কারণে প্রাকৃতিক উপায়ে গাছপালা দ্বারা কার্বন ডাইঅক্সাইডের শোষণ কমে যাচ্ছে যার ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সৃষ্টি হচ্ছে।
সুনামি বলতে কী বোঝায়?
জাপানি ‘সু’ শব্দের অর্থ বন্দর ও নামি’ অর্থ ঢেউ অর্থাৎ সুনামি শব্দের অর্থ বন্দরের ঢেউ।
Tsunami বা সুনামি জাপানি শব্দ। ‘সু’ অর্থ বন্দর এবং নামি’ অর্থ ঢেউ। সুতরাং সুনামি অর্থ হলো বন্দরের ঢেউ। সমুদ্রের তলদেশের প্রচণ্ড ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট লক্ষ লক্ষ টন পানির বিশাল ঢেউ যখন তীরের কাছে এসে আরও দীর্ঘ ও শক্তিশালী হয়ে ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয় তখন তাকে সুনামি বলা হয়। এটি পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত।
খরা বলতে কী বোঝায়?
যখন মাটিতে পানির পরিমাণ কমতে কমতে মাটি পানিশূন্য হয়ে যায় এবং এর ফলে এতে গাছপালা ও শস্য জন্মাতে পারে না তখন সেই অবস্থাই হলো খরা।
খরা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দীর্ঘকালীন শুষ্ক আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়া। বাষ্পীভবন ও প্রস্বেদনের পরিমাণ বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি হলে এমনটি ঘটে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বৃক্ষনিধন এবং গ্রিন হাউজ গ্যাসের প্রভাবে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়, সৃষ্টি হয় খরা। গভীর নলকূপের সাহায্যে ভূ-গর্ভস্থ পানির যথেচ্ছা উত্তোলনের ফলে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ার ফলেও খরা সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণিঝড় কীভাবে সৃষ্টি হয়?
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মূল কারণ হলো- নিম্নচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রা। সাধারণত ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে সাগরের তাপমাত্রা ২৭°C এর বেশি হতে হয়। সাগরে বৃষ্টিপাতের ফলে সুপ্ততাপ ছেড়ে দিয়ে বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এই সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং নিম্নচাপ সৃষ্টি করে। নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে আশেপাশের বাতাস সেখানে ধাবিত হয়, যা বাড়তি তাপমাত্রার কারণে ঘুরতে ঘুরতে উপরে উঠতে থাকে ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করে।
সাইক্লোন কী?
নিম্নচাপজনিত কারণে যখন প্রচণ্ড গতিবেগে ঘূর্ণনের আকারে বাতাস প্রবাহিত হয় তখন তাকে Cyclone বা ঘূর্ণিঝড় বলে।
সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘Kyklos’ থেকে যার অর্থ সাপের কুন্ডলী বা Coil of snakes নিম্নচাপজনিত কারণে যখন প্রচণ্ড গতিবেগে ঘূর্ণনের আকারে বাতাস বয় তাকেই সাইক্লোন বলে। আমেরিকাতে হারিকেন, দুরপ্রাচ্যের দেশগুলোতে টাইফুন, দক্ষিণ এশিয়াতে সাইক্লোন ও বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় নামে পরিচিত।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
টেকটনিক প্লেট কী?
আমাদের ভূ-গর্ভ কতকগুলো ভাগে বিভক্ত যাদেরকে টেকটনিক প্লেট বলে।
এসিড বৃষ্টি কী?
বৃষ্টিতে অনেক বেশি পরিমাণ এসিড, বিদ্যমান থাকলে তাকে বলা হয় এসিড বৃষ্টি। এসিড বৃষ্টি হলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় পানি সম্পদ ও জলজ প্রাণীসমূহ। এসিড বৃষ্টি হলে মাটির pH কমে যায়।
ভূমিকম্প কী?
ভূ-অভ্যন্তরে হঠাৎ সৃষ্ট কোনো কম্পন যখন ভূ-ত্বককে আকস্মিক আন্দোলিত করে সাধারণত তাকেই ভূমিকম্প বলে।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
আবহাওয়া | জলবায়ু |
i. কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের প্রতিদিনের বৃষ্টিপাতের গড় অবস্থা। | i. কোনো একটি অঞ্চলের বায়ুর ৩০-৪০ বছরের গড় তাপ, চাপ, আদ্রতা ও আবহাওয়ার অবস্থা। |
ii. আবহাওয়ার উপাদানগুলো নিত্য পরিবর্তনশীল। | ii. সব স্থানের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য এক রকম নয়। |
গ্রিন হাউস গ্যাস বলতে কী বোঝায়?
যেসব গ্যাস সূর্যের তাপ পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয় না কিন্তু উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে তাপকে চলে যেতে বাধা দেয় তাদেরকে গ্রিন হাউস গ্যাস বলে। যেমন- কার্বন ডাইক্সাইড, মিথেন, সিএফসি, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি। বায়ুমণ্ডলে এ সকল গ্যাস পরিমাণে বেশি থাকলে ভূ-পৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডল তাপ হারিয়ে শীতল হতে পারে না। ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়।
টর্নেডো বলতে কী বোঝায়?
টর্নেডো হলো সাইক্লোনের মতো প্রচণ্ড বেগে বাতাস ঘূর্ণির আকারে প্রবাহিত হওয়ার ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ। টর্নেডো শব্দটির অর্থ হলো Thunder storm বা বজ্রঝড় । বাংলাদেশে সাধারণত বৈশাখ মাসে টর্নেডো বা কালবৈশাখী হয়ে থাকে। এ দুর্যোগটি যেকোনো স্থানেই সৃষ্টি ও আঘাত হানতে পারে। এ অবস্থায় নিচের দিকে সৃষ্টি হওয়া শূন্যস্থান পূরণের জন্য শীতল বাতাস প্রচণ্ড বেগে ঐ শূন্যস্থানে ধাবিত হয়। এটি অল্প সময়ে সৃষ্টি হয়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করতে সক্ষম।
গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কী?
বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান কার্বন ডাইঅক্সাইডসহ ওজোন, মিথেন, সিএফ সি, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি হলো গ্রিনহাউস গ্যাস। এ গ্যাসগুলোর মূল উৎস হলো যানবাহন, শিল্পকারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া। দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এসব উৎসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গ্রিন হাউসের গ্যাস বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মানুষ গাছপালা কেটে বন উজাড় করছে কেন?
মানুষ বিভিন্ন কারণে গাছপালা কেটে বন উজাড় করছে। যেমন—
i. অধিক জনসংখ্যার বাড়তি খাদ্য উৎপাদনের জন্য মানুষ বন উজাড় করে ফসলের জমি বৃদ্ধি করছে।
ii. শিল্প-কলকারখানা, বসবাসের ঘরবাড়ি তৈরিতে বন উজাড় করছে।
এলনিনো বলতে কী বোঝায়?
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত কমে সৃষ্ট খরার জন্য পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের মেরু অঞলে সৃষ্ট এলনিনোকে দায়ী করা হয়। দীর্ঘকালীন শুষ্ক আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়াকে খরার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় । পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যার জন্য খরাকে দায়ী করা হয়।
টর্নেডো কীভাবে সৃষ্টি হয়?
টর্নেডো সৃষ্টির মূল কারণ হলো নিম্নচাপ। এর ফলে উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে যায় এবং ঐ শূন্য জায়গা পূরণের জন্য পাশবর্তী শীতল বাতাস প্রচণ্ড বেগে ঐ শূন্য জায়গার দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে টর্নেডো সৃষ্টি হয়।
এসিড বৃষ্টি কেন হয়?
এসিড বৃষ্টির জন্য প্রাকৃতিক ও মানুষের সৃষ্ট কিছু কারণ জড়িত। প্রাকৃতিক কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, বজ্রপাত, গাছপালার পাতন ইত্যাদি। এই সকল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা পরে বাতাসের অক্সিজেন ও বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড তৈরি করে এবং পরবর্তীতে যখন বৃষ্টি হয় তখন বৃষ্টির সাথে মিশে এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে।
দুর্যোগ প্রশমন বলতে কী বোঝ?
দুর্যোগের স্থায়ীত্ব হ্রাস এবং দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতিকেই দুর্যোগ প্রশমন বলা হয়।
মজবুত পাকা ভবন নির্মাণ, শস্য বহুমুখীকরণ, ভূমি ব্যবহারে বিপর্যয় হ্রাসের কৌশল নির্ধারণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শক্ত অবকাঠামো নির্মাণ, কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় লোক স্থানান্তর, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠন ইত্যাদি কার্যক্রম দুর্যোগ প্রশমনের আওতাভুক্ত।
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুটি কারণেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাকৃতিক কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অগ্নৎপাত, দাবানল ইত্যাদি। মানবসৃষ্ট কারণগুলো হলো যানবাহন, শিল্পকারখানা হতে সৃষ্ট ধোয়া, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বনভূমি ধ্বংস ইত্যাদি।
নগরায়ন বলতে কী বোঝায়?
নগরায়ণ একটি পরিবেশগত সমস্যা যা মূলত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত। শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রামীণ জনপদের একটি বিরাট অংশও শহরে ভিড় জমাচ্ছে। কর্মসংস্থানের জন্য যার ফলে শহরাঞ্চলে আবাসন সংকট দেখা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে আশেপাশের আবাদি জমি ও জলাভূমি ভরাট করে নগরায়ণ করা হচ্ছে।
বন্যা বলতে কী বোঝায়?
বন্যা বাংলাদেশের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা মাটির উর্বরতা বাড়ায়। এতে ফসল উৎপাদন ভাল হয়। বাংলাদেশে বন্যাপ্রবণ অঞ্চল নয় যশোর, ঢাকা। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষের প্রধান কারণ ছিল বন্যা। ১৯৬০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০০ কি.মি. বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ৫৮টি নদীর উৎপত্তিস্থল ভারত, নেপাল ও ভুটানে। যার মধ্যে ৫৫টির উৎপত্তিস্থল ভারত থেকে।
তথ্য কণিকা
১. অসময়ে বন্যা হওয়ার একমাত্র কারণ—জলবায়ু পরিবর্তন।
২. বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনে ব্যাহত হওয়ার কারণ—খরা ।
৩. জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হলো— উষ্ণতা।
৪. বাংলাদেশে প্রলয়ংকারী বন্যা হয়—১৯৭৪ সালে।
৫. সমুদ্রের প্রবাল নির্ভরশীল—তাপমাত্রার ওপর।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৬. বিগত ৫০ বছরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবাল বিলীন হলে গেছে—প্রায় ৭০%।
৭. ‘জলবায়‘ পরিবর্তনের কারণে ২১০০ সালের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাবে শতকরা—৩০%।
৮. সামুদ্রিক প্রবালের জীবনযাপনের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা— ২২-২৮° সেলসিয়াস।
৯. জীবাণু জন্মানোর জন্য সহায়ক তাপমাত্রা—৩৫° সে.।
১০. নদীমাতৃক বাংলাদেশে জলবায়ুর স্বাভাবিক—প্রভাব বন্যা।
১১. পৃথিবীর তাপমাত্রা গত ১০০ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে—প্রায় ০.৭৪° সেলসিয়াস।
১২. ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে— ১.১°- ৬.৪° সেলসিয়াস।
১৩. ২০৮০ সালের মধ্যে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা হবে—৩৪ সে.মি।
১৪. বনভূমি ধ্বংস হওয়ার মূল কারণ—জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
১৫. ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে—প্রায় ১০ বিলিয়ন।
১৬. প্রতি বছর খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়—৩ লক্ষ মে. টন।
১৭. ১৯৫০ সালের পর থেকে শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বনভূমি উজার হয়েছে—প্রায় ৮০ ভাগ।
১৮. ২০১০-২০১১ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের পরিমান ছিল—প্রায় ১৯.৩২ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
১৯. বর্তমানে সারা বিশ্বের জনসংখ্যা—৬.৬ মিলিয়ন।
২০. জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কম হলে বৃদ্ধি পায়— জনসংখ্যা।
২১. নদ-নদীর সীমিত পানি ধারণ ক্ষমতা একটি অন্যতম কারণ হলো— বন্যা সৃষ্টির ।
২২. ব্রিটিশরা টানা দুই সপ্তাহ ০.২৫ মি.মি এর কম বৃষ্টিপাত হলে তাকে বলে—খরা।
২৩. সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে খরা সৃষ্টির জন্য দায়ী হলো—এলনিনো।
২৪. মাটিতে পানি কম থাকলেও জন্মাতে পারে—গম ও পিঁয়াজ।
২৫. সাইক্লোন সৃষ্টির স্থান—গভীর সমুদ্র।
২৬. সুনামির সময় ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে—১০০ ফুট।
২৭. ভূমিকম্পের ফলে গতিপথ বদল হয়ে গেছে—বহ্মপুত্র নদের।
২৮. স্মরনকালে সবচেয়ে প্রলয়কারী সাইক্লোন হয়েছিল—১৯৭০ সালে।
২৯. খরা সৃষ্টির মূল কারণ বার্ষিক বৃষ্টিপাত—কমে যাওয়া।
৩০. ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করা হয়—রিখটার স্কেলে ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকাল ছাড়া কোন মাসে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে?
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকাল যা আষাঢ় ও শ্রাবণ ছাড়াও আশ্বিন মাসেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
প্রশ্ন–২. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে তাপমাত্রা 0° সেলসিয়াসের কাছাকাছি চলে আসছে?
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা 0° সেলসিয়াসের কাছাকাছি চলে আসছে।
প্রশ্ন–৩. কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগটি বাংলাদেশে স্বাভাবিক দুর্যোগ ?
উত্তর : বন্যা ও নদী ভাঙ্গন বাংলাদেশে স্বাভাবিক দুর্যোগ।
প্রশ্ন–৪. বাংলাদেশে কত সালে প্রলয়ংকারী বন্যা দেখা যায়?
উত্তর : বাংলাদেশে প্রলয়ংকারী বন্যা দেখা যায় ১৯৮৬, ১৯৯৫, ১৯৯৮ ও ২০০৫ সালে ।
প্রশ্ন–৫. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলস্বরূপ কোন কোন অঞ্চলে প্লাবিত হচ্ছে ?
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের ফল হিসেবে বাংলাদেশের বন্যা মুক্তাঞ্চল যশোর, ঢাকা ইত্যাদি প্লাবিত হচ্ছে।
প্রশ্ন–৬. বিগত তিন বছরে কত হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে?
উত্তর : প্রায় ১৮০,০০০ হেক্টর জমি শুধু পদ্মা, যমুনা ও গঙ্গা এই তিন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
প্রশ্ন–৭. বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি কোনটির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে?
উত্তর : বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বৃষ্টিপাতের উপর প্রচন্ড প্রভাব ফেলবে।
প্রশ্ন–৮. ২১০০ সালে বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন কত শতাংশ হ্রাস পাবে?
উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ২১০০ সালের মধ্যে ৩০% খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাবে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–৯. বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি জমিতে লবণাক্তার হার কত?
উত্তর: বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় খুলনা ও বাগেরহাট জেলার প্রায় ১৩% কৃষি জমি লবণাক্ততার শিকার।
প্রশ্ন–১০. ২০১০ পর্যন্ত কত ভাগ কোরাল বিলীন হয়ে গেছে?
উত্তর : ২০১০ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৭০% কোরাল বিলীন হয়ে গেছে।
প্রশ্ন–১১. পানির তাপমাত্রা কত হলে মাছ মারা যায়?
উত্তর: পানির তাপমাত্রা ৩২° সেলসিয়াসের বেশি হলে মাছ মারা যায়।
প্রশ্ন–১২. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের কোন রোগ দেখা যায়?
উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষ পানি বাহিত নানাবিধ রোগ যেমন- কলেরা, ডায়রিয়া ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়।
প্রশ্ন–১৩. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের কতভাগ জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে?
উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ৩০% জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
প্রশ্ন–১৪. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য কি গঠিত হয়?
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য গঠিত হয় Intergovernmental Panel on Climate Change TV IPCC…
প্রশ্ন–১৫. প্রতি বছরে গড়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা কতটুকু বাড়ছে?
উত্তর : ১৯৬১–২০০৩ সালের মধ্যে গাড়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি বছরে ১.৮ মিটার বেড়েছে।
প্রশ্ন–১৬. ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা কত বাড়তে পারে?
উত্তর : ১.১°– ৬.৪° সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–১৭. সাম্প্রতিককালের প্রলয়কারী ঘূর্ণিঝড়গুলো কি কি?
উত্তর : সাম্প্রতিককালে আঘাত হানা প্রলয়কারী ঘূর্ণিঝড়গুলো হলো-আইলা, সিডর, হারিকেন, নার্গিস, ক্যাটিরিনা ইত্যাদি।
প্রশ্ন–১৮. বর্তমান বিশ্বের অন্যতম পরিবেশ গত সমস্যা কোনটি?
উত্তর : বর্তমান বিশ্বের অন্যতম পরিবেশগত সমস্যা হল জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
প্রশ্ন–১৯. বর্তমানে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা কত?
উত্তর : ৬.৬ বিলিয়ন।
প্রশ্ন–২০. বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণ কি?
উত্তর : বৈশ্বিক উষ্ণতার মূল কারণ হলো কার্বন ডাইঅক্সাইড, ওজোন, মিথেন, নাইট্রাস গ্যাস ও জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
প্রশ্ন–২১. বাংলাদেশে কত সালের বন্যা দুর্ভিক্ষের কারণ ছিল?
উত্তর : ১৯৭৪ সালের বন্যায় ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি ছিল যা বাংলাদেশ দূর্ভিক্ষের একমাত্র কারণ ছিল।
প্রশ্ন–২২. খরা সৃষ্টির মূল কারণ কি?
উত্তর: খরা সৃষ্টির মূল কারণ বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাওয়া ।
প্রশ্ন–২৩. সুনামি জলোচ্ছ্বাসে রুপ নেয় কোথায়?
উত্তর : অগভীর পানিতে সুনামি ধ্বংসাত্মক রুপ নেয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে গরম অনেক বেশি পড়ছে কেন?
উত্তর : জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে ঋতুচক্রে উল্লেখযোগ্য, পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। গ্রীষ্মকালে মাঝে মাঝে দেশের কোনো কোনো এলাকার দিনের তাপমাত্রা ৪৫-৪৮° পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে, ফলে গ্রীষ্মকালে গরম অনেক বেশি পড়ছে।
প্রশ্ন–২. বাংলাদেশে বন্যা অনেকাংশেই দরকারি কেন?
উত্তর : নদীমাতৃক বাংলাদেশে বন্যা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কেননা বন্যার ফলে জমিতে পলি পড়ে যা জমির উর্বরতা বাড়ায়। এতে ফসল উৎপাদন ভাল হয়, তাই এখানে বন্যা অনেকাংশেই দরকারি।
প্রশ্ন–৩. বাংলাদেশ খাদ্য বুকিতে পড়তে পারে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। ফলে নদ-নদী ও ভূ-গর্ভস্থ পানি এবং আবাদি জমি লবণাক্ত হয়ে পড়বে। ফলস্বরুপ ফসল উৎপাদন ও ব্যাহত হবে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৮৩০,০০০ হেক্টর জমি লবনাক্ততার কারণে কৃষি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং যার ফলে বাংলাদেশ খাদ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–৪. জাতীয় অর্থনীতিতে সুন্দরবন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর : সুন্দরবন বাংলাদেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন। এটি জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ বলে বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ। এছাড়া সুন্দরবন ঐ অঞ্চলে সাইক্লোন, হারিকেন প্রতিরোধে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তাই জাতীয় অর্থনীতিতে সুন্দরবনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
প্রশ্ন–৫. বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সুন্দরবন কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে?
উত্তর : গবেষণায় দেখা গেছে যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা যদি ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়ে তাহলে বাংলাদেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের ৭৫% পানির নিচে তলিয়ে যাবে। আর যদি সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়ে তাহলে প্রায় পুরো সুন্দরবন ও তার জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
প্রশ্ন–৬. অ্যানথ্রাক্স রোগ কেন হয়?
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জ জেলার বর্ষা মৌসুমে বিগত ৩-৪ বছরে অ্যানথ্রাক্সের মতো প্রাণঘাতি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এতে মানুষ ও গবাদি পশু আক্রান্ত হয়। মানুষ উপযুক্ত চিকিৎসায় ভাল হলেও গবাদিপশুর মৃত্যু অবধারিত।
প্রশ্ন–৭. “অনেক পরিবেশগত সমস্যার মূল কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি” কিভাবে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৫০ সালের পর থেকে শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ বনভূমি উজাড় হয়ে গেছে, ফলে হাজার হাজার বনজ গাছপালা ও জীবজন্তুর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। বাংলাদেশে হাজার হাজার একর আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্য তাই বলা যায় অনেক পরিবেশগত সমস্যার মূল কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
প্রশ্ন–৮. নগরায়ণ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নগরায়ণ একটি পরিবেশগত সমস্যা যা মূলত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত। শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রামীণ জনপদের একটি বিরাট অংশও শহরে বিড় জমাচ্ছে কর্মসংস্থানের জন্য যার ফলে শহরাঞ্চলে আবাসন সংকট দেখা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে আশেপাশের আবাদি জমি ও জলাভূমি ভরাট করে নগরায়ণ করা হচ্ছে।
প্রশ্ন–৯. বনশূন্য করা বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বনশূন্য করা বা Deforestation একটি মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা, এর মূল কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, অন্নবস্ত্র ইত্যাদির চাহিদা বেড়ে যায়, আর প্রতিটি চাহিদাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বনশূন্যের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
প্রশ্ন–১০. বন্যার কারণগুলো লিখ।
উত্তর: বন্যা সৃষ্টির পিছনে কিছু জটিল কারণ আছে, কারণগুলো হলো-
i. অন্যতম কারণ নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা।
ii. নদী ভাঙ্গন, বর্জ্য অব্যাবস্থাপনাসহ নানা কারণে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ধারণ ক্ষমতা কমে যায়।
iii. ভারী বর্ষন বা উজানের অববাহিকা থেকে আসা পানি নদী ভরে দুকূল ছাপিয়ে বন্যার সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন–১১. সুনামী কিভাবে সংঘটিত হয়?
উত্তর : সুনামী পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সমুদ্র তলদেশের ভূমিকম্প আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিধ্বস এবং নভোজাগতিক ঘটনা সুনামির সৃষ্টি করে। সুনামির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মহাসাগর ও সাগরের তলদেশের প্লেট দুমড়ে দেয় যার ফলে সৃষ্টি হয় প্রচন্ড ভূমিকম্প।
প্রশ্ন–১২. স্মরণকালের ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছাকাছি ভারত মহাসাগরের তলদেশে ইউরেশিয়ান প্লেট ও অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয় মারাত্মক ভূকম্পন যা স্মরণকালের ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যার ফলে ৬০০ মাইলব্যাপী এলাকায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয় ও মহাপ্লাবনের সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানীণের মতে এই ভূকম্পনের ফলে পৃথিবী তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে কিছুটা নড়ে যায়।
প্রশ্ন–১৩.বন্যার উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কি ধরনের হয়?
উত্তর: নদীমাতৃক বাংলাদেশে বন্যা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বন্যার পানিতে ভেসে আসা পলি জমিতে পড়ে জমির উর্বরতা বেড়ে যায়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিককালে ঘন ঘন ও অসময়ের প্রলয়ংকারী বন্যা দেখা যাচ্ছে এতে জানমালের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে ও দেশের অর্থনীতির উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন ও নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–১৪. খরার দুটি ক্ষতিকর প্রভাব লিখ?
উত্তর : খরার দুটি ক্ষতিকর প্রভাব হল :
১. ফসলের উৎপাদন কমে যায় এবং এর ফলে দুর্ভিক্ষও হতে পারে।
২. গবাদি পশুরও খাদ্য সংকট দেখা দেয়।
প্রশ্ন–১৫. জলবায়ু পরিবর্তন হলে মিঠা পানির লবণাক্ততা কেন বাড়বে।
উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মিঠা পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাবে কারণ জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে পানির সাথে মিশে যাবে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি মূল ভূ-খন্ডে ঢুকে নদ-নদী ও ভূ-গর্ভস্থ পানির সাথে মিশে যাবে। ফলে মিঠা পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাবে।
প্রশ্ন–১৬. প্রকৃতি সংরক্ষণের উপায়গুলো কি কি?
উত্তর: প্রকৃতি সংরক্ষণের উপায়গুলো হলো-
- সম্পদের ব্যবহার কমানো।
- দূষণ থেকে সম্পদ রক্ষা করা।
- একই জিনিস সম্ভাব্য ক্ষেত্রে বারবার ব্যবহার করা
- ব্যবহৃত জিনিস ফেলে না দিয়ে তা থেকে নতুন জিনিস তৈরি করা
- প্রাকৃতিক সম্পদ পুরোপুরি রক্ষা করা।
প্রশ্ন–১৭. সাম্প্রতিককালের দুর্যোগগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে কেন?
উত্তর: বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ইত্যাদি নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে লেগেই আছে। এসব দুর্যোগে জানমালের অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বড় অন্তরায়। পরিবেশের উপর আমাদের হস্তক্ষেপের ফলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ সাম্প্রতিক মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
প্রশ্ন–১৮. কেন নতুন নতুন শিল্পকারখানা তৈরি করা হচ্ছে।
উত্তর: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি সব। রকমের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। কর্মসংস্থানের চাপ সামলানোর জন্য নতুন নতুন শিল্পকারখানা তৈরী করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম সমস্যা কোনটি?
ক. জলোচ্ছ্বাস খ. নদী ভাঙন
উত্তর: ঘ. খরা
২. সামুদ্রিক প্রবালের জন্য কোন তাপমাত্রা উপযোগী?
ক. ০.২-০.৩ খ. ১.১°-৬.৪°
গ. ২২-২৮° ঘ. ৪৫-৪৮°
উত্তর: গ. ২২-২৮°
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৩. নদীর পাড়ে পাথর, সিমেন্টের ব্লক, বালির বস্তা দেওয়াকে কী বলে?
ক. নদী নিয়ন্ত্রণ খ. নদী মেরামত
গ. নদী প্রতিরোধ ঘ. নদী প্রশিক্ষণ
উত্তর: ঘ. নদী প্রশিক্ষণ
৪. পরিবেশগত সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা কোনটি?
ক. বনভূমি উজার খ. নদী ভাঙ্গন
গ. জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘ. যোগাযোগ ব্যবস্থা
উত্তর: গ. জনসংখ্যা বৃদ্ধি
৫. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ কী?
ক. বন্যা খ. খরা
গ. বরফ গলা ঘ. উষ্ণতা বৃদ্ধি
উত্তর: ঘ. উষ্ণতা বৃদ্ধি
৬. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা কত ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে?
ক. ৪২-৪৩° খ. ৪৪° -৪৫°
গ. ৪৫° – ৪৮ ঘ. ৪৮° -৪৯°
উত্তর: গ. ৪৫° – ৪৮
৭. ২০৮০ সালের মধ্যে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা কত সে. মি. পর্যন্ত বাড়তে পারে?
ক. ৩৪ সে. মি. খ. ৪৩ সে. মি.
গ. ৪৪ সে. মি. ঘ. ৩৫ সে. মি.
উত্তর: ক. ৩৪ সে. মি.
৮. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২১০০ সালের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাবে–
ক. ১৬% খ. ১৮%
গ. ৮% ঘ. ৩০%
উত্তর: ঘ. ৩০%
৯. জয়বায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রভাব মূল্যায়নের জন্য গঠিত সংস্থা কোনটি?
ক. Green Peace খ. GSB
গ. IPCC ঘ. UNE
উত্তর: গ. IPCC
১০. কী কারণে বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ দেশ?
ক. জনসংখ্যা খ. ভৌগোলিক অবস্থান
গ. নদী ঘ. পরিবেশ
উত্তর: খ. ভৌগোলিক অবস্থান
১১. সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলাফল-
i. নদনদীর পানি লবণাক্ত হবে
ii. ভূগর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হবে
iii. আবাদী জমি লবণাক্ত হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
১২. ২৬০ কোটি বছর আগে বায়ুমণ্ডলে কোন গ্যাস অনুপস্থিত ছিল?
ক. মিথেন খ. অক্সিজেন
গ. কার্বন ডাইঅক্সাইড ঘ. অ্যামোনিয়া
উত্তর: খ. অক্সিজেন
১৩. সৃষ্টির শুরুতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে কী ছিল না?
ক. মিথেন গ্যাস খ. অক্সিজের গ্যাস
গ. অ্যামোনিয়া গ্যাস ঘ. কার্বন ডাইঅক্সাইড
উত্তর: খ. অক্সিজের গ্যাস
১৪. জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ বেড়ে যাওয়ার কারণ কোনটি?
ক. দাবানল খ. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
গ. শিল্প কারখানা ঘ. প্রাকৃতিকভাবে গাছপালার ক্ষয়
উত্তর: গ. শিল্প কারখানা
১৫. বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ কোনটি?
ক. ভূমিকম্প খ. অগ্ন্যুৎপাত
গ. দাবানল ঘ. গ্রিনহাউস গ্যাস
উত্তর: ঘ. গ্রিনহাউস গ্যাস
১৬. কোনটি গ্রীন হাউস গ্যাসের উৎস?
ক. রেডিও খ. টেলিভিশন
গ. রেফ্রিজারেটর ঘ. কম্পিউটার
উত্তর: গ. রেফ্রিজারেটর
১৭. খাদ্য ঘাটতির কারণে প্রতিবছর কী পরিমাণ খাদ্য আমদানী করা হয়?
ক. ২ মিলিয়ন মেট্রিক টন
খ. প্রায় ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন
গ. ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন
ঘ. প্রায় ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন
উত্তর: গ. ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন
১৮. গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে –
i. বায়ুর তাপমাত্রা বেড়ে যাবে
ii. জলবায়ুজনিত পরিবর্তন হবে
iii. বায়ুতে CO2 এর পরিমাণ কমে যাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
১৯. গ্রিন হাউস গ্যাস হচ্ছে—
i. O3
ii. CO2
iii. N2O.
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
২০. কোনটি এসিড বৃষ্টির মনুষ্য সৃষ্ট কারণ?
ক. গাছপালার পচন খ. দাবানল
গ. যানবাহনের ধোঁয়া ঘ. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
উত্তর: গ. যানবাহনের ধোঁয়া
২১. বাতাসে ঝড়ের বেগ কমাতে কোনটি ব্যবহার করা হয়?
ক. AgI খ. CO
গ. HCl ঘ. KOH
উত্তর: ক. Agl
২২. বাংলাদেশে এল নিনোর প্রভাবে কী ঘটছে?
ক. অধিক বৃষ্টি হচ্ছে খ. শীত বেশি হচ্ছে
গ. খরাপ্রবণ হচ্ছে ঘ. ভূমিকম্প হচ্ছে
উত্তর: গ. খরাপ্রবণ হচ্ছে
২৩. কোনটির কারণে সম্পূর্ণ জীবকূল নষ্ট হয়ে যেতে পারে?
ক. এসিড বৃষ্টি খ. ভূমিকম্প
গ. ঘূর্ণিঝড় ঘ. বন্যা
উত্তর: ক. এসিড বৃষ্টি
২৪. খরাপীড়িত এলাকায় নিচের কোন ফসল চাষটি অনুপোযোগী?
ক. গম খ. পেঁয়াজ
গ. কাউন ঘ. ধান
উত্তর: ঘ. ধান
২৫. মানুষের কোন রোগটি এসিড বৃষ্টির কারণে হতে পারে?
ক. ম্যানিনজাইটিস খ. জন্ডিস
গ. অ্যাজমা ঘ. ডায়াবেটিস
উত্তর: গ. অ্যাজমা
২৬. কত সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে শক্তিশালী সাইক্লোন আঘাত হানে?
ক. ১৯৭৪ খ. ১৯৮৭
গ. ১৯৯১ ঘ. ২০০৭
উত্তর: গ. ১৯৯১
২৭. ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের নাম কী?
ক. স্পিডোমিটার খ. ফ্যাদোমিটার
গ. রিখটার স্কেল ঘ. ভার্নিয়ার স্কেল
উত্তর: গ. রিখটার স্কেল
২৮. কোন দুর্যোগটি শুধুমাত্র সাগরে সংঘটিত হয়?
ক. ভূমিকম্প খ. কালবৈশাখী
গ. বন্যা ঘ. সুনামি
উত্তর: ঘ. সুনামি
২৯. সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কত বাড়লে প্রায় পুরো সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যায়?
ক. ১ মিটার খ. ১ সেন্টিমিটার
গ. ২ মিটার ঘ. ২ সেন্টিমিটার
উত্তর: ক. ১ মিটার
৩০. Coil of Snakes কাকে বলা হয়?
ক. খরা খ. বন্যা
গ. ঘূর্ণিঝড় ঘ. সুনামি
উত্তর:
৩১. ‘Kyklos’ শব্দটি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে জড়িত?
ক. অগ্ন্যুৎপাত খ. হারিকেন
গ. ভূমিকম্প ঘ. টর্নেডো
উত্তর: খ. হারিকেন
৩২. বাংলাদেশে কবে বন্যার কারণে দুর্ভিক্ষ হয়?
ক. ১৯৭৪ খ. ১৯৮৪
গ. ১৯৯৪ ঘ. ১৯৯৫
উত্তর: ক. ১৯৭৪
৩৩. ঘন ঘন এসিড বৃষ্টি হয় কোন দেশে?
ক. বাংলাদেশ খ. কানাডা
গ. ব্রাজিল ঘ. ভারত
উত্তর: খ. কানাডা
৩৪. পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্পন প্রবণ দেশ কোনটি?
ক. বাংলাদেশ খ. ভারত
গ. জাপান ঘ. নেপাল
উত্তর: গ. জাপান
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩৫ ও ৩৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
এসিড বৃষ্টিতে মাহিনের বাগান ও পুকুরের কিছু সংবেদনশীল গাছ ও মাছ মারা গেছে। এতে মাহিনের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
৩৫. উদ্দীপকের বৃষ্টির জন্য দায়ী?
ক. তাপমাত্রা খ. নিম্নচাপ
গ. দাবানল ঘ. জলীয় বাষ্প
উত্তর: গ. দাবানল
৩৬. উদ্দীপকের বৃষ্টির পানিতে রয়েছে-
i. সালফিউরিক এসিড
ii. হাইড্রোক্লোরিক এসিড
iii. নাইট্রিক এসিড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩৭. সাইক্লোন সৃষ্টি সম্পর্কিত তথ্যগুলো হলো–
i. নিম্নচাপ
ii. উচ্চ তাপমাত্রা
iii. যে কোনো স্থানে হতে পারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৩৮. সুনামির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—
i. সমুদ্রের তলদেশের প্লেট দুমড়ে দেয়
ii. টর্নেডো সৃষ্টি করতে পারে
iii. সুনামি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না
নিচের কোনটি সঠিক?
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
৩৯. সাইক্লোনের ক্ষেত্রে –
i. গভীর সমুদ্রে সৃষ্টি হয়
ii. সাগরের তাপমাত্রা ২৭° সে, এর বেশি হয়
iii. বাতাসের গতিবেগ ৬৩ কি.মি. এর বেশি হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৪০. ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী গ্যাসসমূহ হচ্ছে –
i. CO
ii. SO2
iii. NO2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৪১ ও ৪২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
ঝুমু তার পুরাতন জামা ফেলে না দিয়ে ধুঁয়ে পুনরায় ব্যবহার করল ।
৪১. ঝুমুর এই কাজকে কী বলা যায়?
ক. প্রকৃতির সংবেদনশীলতার কৌশল
খ. প্রকৃতির সংরক্ষণশীলতার কৌশল
গ. সম্পদের ব্যবহারের কৌশল
ঘ. সম্পদের নবায়নের নীতি
উত্তর: খ. প্রকৃতির সংরক্ষণশীলতার কৌশল
৪২. ঝুমুর এই কাজের ফলে –
i. প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ কমে
ii. শিল্পের ওপর চাপ বাড়ে
iii. প্রকৃতি সংরক্ষণ হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. i ও iii
৪৩. এসিড বৃষ্টির পদার্থ হলো–
i. CO
ii. SO2
iii. NO2
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন– ১ : ভোলা জেলায় বসবাসরত আকরাম সাহেবের ওখানে প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় আঘান হানে। ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে তিনি নিজের ও তার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ক. খরা কী?
খ. টর্নেডো বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক দুর্যোগটি কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আকরাম সাহেবের গৃহীত ব্যবস্থাগুলো বিশ্লেষণ করো।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাতহীন থাকার কারণে যখন মাটিতে পানির পরিমাণ কমতে কমতে মাটি পানি শূন্য হয়ে যায় এবং এর ফলে মাটি গাছপালা ও শস্য জন্মানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ফলে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়, তা-ই খরা।
খ. টর্নেডো হলো সাইক্লোনের মতো প্রচণ্ড বেগে বাতাস ঘূর্ণির আকারে প্রবাহিত হওয়ার ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ দুর্যোগটি যেকোনো স্থানেই সৃষ্টি ও আঘাত হানতে পারে। এ অবস্থায় নিচের দিকে সৃষ্টি হওয়া শূন্যস্থান পূরণের জন্য শীতল বাতাস প্রচণ্ড বেগে ঐ শূন্যস্থানে ধাবিত হয়। এটি অল্প সময়ে সৃষ্টি হয়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করতে সক্ষম।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হলো সাইক্লোন বা ঘুর্নিঝড়।
সাধারণত এটি সৃষ্টি হয় গভীর সমুদ্রে, যা উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনার সাথে মিলে যায়। সাইক্লোন সৃষ্টির কারণ মূলত দুটি। এর একটি হলো নিম্নচাপ এবং অপরটি হলো উচ্চ তাপমাত্রা। সাইক্লোন তৈরি হতে সাগরের তাপমাত্রা সাধারণত ২৭° সেলসিয়াসের বেশি হতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত বঙ্গোপসাগরে প্রায় সারা বছরই তা বিদ্যমান থাকে।
বৃষ্টিপাতের ফলে সাগরে সুপ্ততাপ ছেড়ে দেয়, যা বায়ুমণ্ডলের বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এই সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। নিম্নচাপের কারণে আশেপাশের বাতাস সেখানে ধাবিত হয়, যা বাড়তি তাপমাত্রার কারণে ঘুরতে ঘুরতে উপরে উঠতে থাকে ও সাইক্লোন বা ঘুর্নিঝড় সৃষ্টি হয়।
ঘ. আকরাম সাহেব ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর তিনি নিজের ও তার পরিবারের নিরাপত্তা বজায় রাখতে কতগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তার গৃহীত ব্যবস্থাগুলো ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে সহায়তা করে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর তিনি নিজে ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে আশ্রয়ের জন্য ইটের তৈরি পাকা ঘরবাড়ি বা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেন। কাঁচা ঘরবাড়ি বা ঘরের টিন সহজে যাতে ভেঙে না পড়ে সেজন্য মোটা রশি বা দড়ি দিয়ে মাটির সঙ্গে বাঁশের খুঁটি বেঁধে রাখেন।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে খাদ্য সংকট দূর করতে শুকনো খাবার যেমন- মুড়ি, চিড়া, গুড় ইত্যাদি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। টাকা-পয়সা, কাপড়-চোপড় ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ বড় পলিথিন ব্যাগে ভরে মাটির নিচে পুঁতে রাখেন। ঘূর্ণিঝড়ের শেষে বিশুদ্ধ পানির অভাব দূর করতে খাবার পানি বোতলে বা কলসিতে ভরে ঢাকনা দিয়ে বা পলিথিন দিয়ে বেঁধে মাটি চাপা দিয়ে রাখেন। উপযুক্ত ব্যবস্থাগুলো ছাড়াও আত্মসচেতনতার মাধ্যমে আকরাম সাহেব ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
প্রশ্ন–২ : সেলিনা ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। পড়ার টেবিলে বসে বাড়ির কাজ করছিল। হঠাৎ সে লক্ষ করল কে যেন তার চেয়ার টেবিল নাড়াচ্ছে। আশপাশে তাকিয়ে দেখলো ঘরের অন্যান্য সব জিনিসই দুলছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আবার দুলুনি থেমে গেল।
ক. সুনামি কী?
খ. টর্নেডো সৃষ্টি হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের ঘটনাটি কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাটি থেকে বাঁচতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, তা বিশ্লেষণ করো।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে সমুদ্র তলদেশের প্রচণ্ড ভূমিকম্পনের ফলে সৃষ্ট সমুদ্রের লক্ষ লক্ষ টন পানির বিশাল ঢেউ তীর ভূমির কাছে এসে আরও দীর্ঘ ও শক্তিশালী হয়ে ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসের রূপ নেয় তাই হলো সুনামি।
খ. টর্নেডো সৃষ্টির মূল কারণ হলো নিম্নচাপ। এর ফলে উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে যায় এবং ঐ শূন্য জায়গা পূরণের জন্য পার্শ্ববর্তী শীতল বাতাস প্রচণ্ড বেগে ঐ শূন্য জায়গার দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে টর্নেডো সৃষ্টি হয়।
গ. উদ্দীপকে সেলিনার দেখা ও অনুভব করা ঘটনাটি হলো ভূমিকম্প। ভূ-অভ্যন্তরে হঠাৎ সৃষ্ট কোনো কম্পন যখন ভূ-ত্বকে আকস্মিক আন্দোলন সৃষ্টি করে তখন সেটি হলো ভূমিকম্প । এটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং পর্যায়ক্রমে একাধিক বার ঘটতে পারে। যা সেলিনার দেখা ও অনুভব করার ঘটনার সাথে মিলে যায়।
আমাদের ভূ-গর্ভ কতগুলো ভাগে বিভক্ত, যাদের প্রত্যেকটি ভাগকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়। এই টেকটনিক প্লেটগুলো স্থিতিশীল নয়, বরং চলমান। ফলে প্লেটগুলো স্থান পরিবর্তনের সময় একে অপরের সাথে সজোরে আঘাত লাগে আর এই আঘাতের ফলেই সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প।
ঘ. উদ্দীপকের সেলিনার অনুভব করা প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো উপায় নেই, তবে এতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়।
সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি। ভূমিকম্প হলে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে যথাসম্ভব দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা ও উদ্ধারকাজ নিশ্চিত করতে হবে এবং তার জন্য আগাম প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ ব্যাপারে কিছু সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। সেগুলো হলো আমাদের বাসস্থান সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে এবং এতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কতটুকু তা জানতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ বড় ভবনে থাকা যাবে না। ঘরবাড়ি বা অফিসে ৩-৪ দিনের পানি, খাবার, আলো না থাকলেও যাতে বাঁচা যায়, সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। এটাও মাথায় রাখতে হবে যে শুধু নিজের পরিবার ও প্রতিবেশী ছাড়াও অন্যান্য লোকজনের ব্যাপারে সুনজর রাখতে হবে। জরুরি এবং দ্রুত সাড়া দেওয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, পুলিশ বাহিনীর কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। বিদ্যুৎ, পানি, রাস্তাঘাট, যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোন ইত্যাদি সব রকম ব্যবস্থা রাখতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা রাখতে হবে। ভূমিকম্পের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং তা মোকাবিলার জন্য একটি পরিকল্পনা আগে থেকেই গ্রহণ করতে হবে। কিছু শুকনা খাবার, পানি, টর্চলাইট, ছোট রেডিও, ব্যাটারি, প্রাথমিক চিকিৎসা কিট, কিছু ঔষধপত্র, বাঁশি, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র-এগুলো হাতের কাছে রাখতে হবে। এই পদক্ষেপগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারলে হতাহতের পরিমাণ অনেকাংশে কমালো সম্ভব হবে।
এস এস সি সকল বিষয়ের সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন–৩ : আমাদের দেশে প্রায়ই দুর্যোগ সংঘটিত হয়। ১৯৮৯ সালে মানিকগেঞ্জর সাটুরিয়াতে একটি দুর্যোগ সংঘটিত হয়েছিল। এই দুর্যোগের পূর্বাভাস ও সতর্কবাণী প্রচার না হওয়ায় গতিপথের মধ্যে প্রায় সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের দেশে আরেকটি দুর্যোগ সৃষ্টি হয়। গভীর সমুদ্রে। এটি সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে নিম্নচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রা।
ক. Tsunami শব্দের অর্থ কী?
খ. এসিড বৃষ্টি বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় দুর্যোগটি সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রথম ও দ্বিতীয় দুর্যোগের মধ্যে ভিন্নতা বিশ্লেষণ কর।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. Tsunami শব্দের অর্থ বন্দরের ঢেউ।
খ. এসিড বৃষ্টি হলো এক ধরনের বৃষ্টিপাত যাতে বেশি পরিমাণ এসিড থাকে। এ বৃষ্টিতে সালফিউরিক এসিড ও নাইট্রিক এসিড বেশি এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড অল্প পরিমাণে থাকে। প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট কারণে এসিড বৃষ্টি হয়। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, বজ্রপাত, গাছপালার পচন ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা বাতাসের অক্সিজেন ও বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড তৈরি করে।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয় দুর্যোগটি হলো সাইক্লোন। সাধারণত এটি সৃষ্টি হয় গভীর সমুদ্রে, যা উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনার সাথে মিলে যায়। সাইক্লোন সৃষ্টির কারণ মূলত দুটি। এর একটি হলো নিম্নচাপ এবং অপরটি হলো উচ্চ তাপমাত্রা। সাইক্লোন তৈরি হতে সাগরের তাপমাত্রা সাধারণত ২৭° সেলসিয়াসের বেশি হতে হয়। দুর্ভাগ্যবশত বঙ্গোপসাগরে প্রায় সারা বছরই তা বিদ্যমান থাকে। বৃষ্টিপাতের ফলে সাগরে সুপ্ততাপ ছেড়ে দেওয়া বায়ুমণ্ডলে বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এই সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। নিম্নচাপের কারণে আশেপাশের বাতাস সেখানে ধাবিত হয়, যা বাড়তি তাপমাত্রার কারণে ঘুরতে ঘুরতে উপরে উঠতে থাকে ও সাইক্লোন সৃষ্টি করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় দুর্যোগ হলো যথাক্রমে টর্নেডো ও সাইক্লোন। এই দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও এদের মধ্যে যথেষ্ট ভিন্নতা লক্ষ করা যায় ।
নিচে টনের্ডোর সাথে সাইক্লোনের ভিন্নতা বিশ্লেষণ করা হলো –
i. টর্নেডোর ও সাইক্লোনের মূল পার্থক্য হলো টর্নেডো যেকোনো স্থানেই সৃষ্টি হতে পারে ও আঘাত হানতে পারে। অপরদিকে সাইক্লোন সৃষ্টি হয় সাগরে এবং এটি উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।
ii. টর্নেডোর ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ সাইক্লোনের চেয়ে বেশি হয়। সাধারণত টর্নেডোর ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৮০-৮০০ কিলোমিটার হতে পারে। অপরদিকে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটারের উপরে হলেই তাকে সাইক্লোন হিসেবে গণ্য করা হয়।
iii. টর্নেডোর বেলায় পূর্বাভাস ও সতর্কবাণী প্রচার করা সম্ভব হয় না। অপরদিকে সাইক্লোনের ক্ষেত্রে পূর্বাভাস ও সতর্কবাণী প্রচার করা যায়।
প্রশ্ন–৪ : জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব হবে যা কি–না পরবর্তীতে মানবজাতিকে হুমকির সম্মুখে ঠেলে দিবে।
ক. কার্বন দূষণ কী?
খ. এসিড বৃষ্টি কীভাবে তৈরি হয়?
গ. বাংলাদেশে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রধান কারণ কী? কিভাবে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব?
ঘ. মানব জাতি হুমকির সম্মুখীন কেন? তোমার মতামত বিশ্লেষণ করো।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াই হলো কার্বন দূষণ।
খ. এসিড বৃষ্টির জন্য প্রাকৃতিক ও মানুষের সৃষ্ট কিছু কারণ জড়িত। প্রাকৃতিক কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, বজ্রপাত, গাছপালার পাতন ইত্যাদি। এই সকল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা পরে বাতাসের অক্সিজেন ও বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড তৈরি করে এবং পরবর্তীতে যখন বৃষ্টি হয় তখন বৃষ্টির সাথে মিশে এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে।
গ. বাংলাদেশ বা পৃথিবীর যেকোনো স্থানেরই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি।
কোনো কারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াই হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। এর প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। যেমন-
i. বৃক্ষরোপণ অভিযান জোরদার করতে হবে।
ii. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে হবে।
iii. CFC গ্যাস এর বিকল্প ব্যবহার করতে হবে।
iv. ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যেমন CO2, SO2, SO3, NO নিঃসরণ বন্ধ করতে হবে।
v. সপ্তাহ বা মাসের নির্দিষ্ট কিছুদিন তেল বা পেট্রোলচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা যেতে পারে।
vi. কলকারখানা থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর গ্যাস ফিল্টার করে নির্গত করবার ব্যবস্থা করতে হবে।
সর্বোপরি বলা যায় যে, বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করা হ্রাস করাতে হবে। তাহলে আগামী কয়েক বছরের ভেতর বৈশ্বিক উষ্ণতা অনেকাংশে কমবে।
ঘ. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে। যে কারণে মানবজাতি হুমকির সম্মুখীন।
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে লেগেই আছে। জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের ফলে ঘন ঘন প্রলয়ংকারী বন্যায়। মারাত্মক পানি দূষণ ও পানিবাহিত নানাবিধ রোগ বিশেষ করে কলেরা, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। অসময়ে বন্যা-খরার কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হয় যা খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করে, এমনকি দুর্ভিক্ষ ও হতে পারে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে এক চরম পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
পানির মতো বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রা বাড়লে রোগজীবাণু বেশি জন্মাবে ও নানা রকম রোগ সংক্রমণ বেড়ে যাবে। বিগত ৩-৪ বছর যাবৎ বর্ষার মৌসুমে বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ জেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে যা আগে বাংলাদেশে কখনও ছিল না। এতে গবাদি পশু ও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসায় ভালো হলেও গবাদি পশুর জন্য মৃত্যু অবধারিত।
জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের ফলে অ্যানথ্রাক্সের মতো অনেক প্রাণঘাতি রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে যা মানব জাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
প্রশ্ন-৫ : নিচের চিত্রের আলোকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. দুর্যোগ কী?
খ. সামুদ্রিক প্রবাল ঝুঁকি বলতে কি বোঝ?
গ. উদ্দীপকে A স্তরটি কিভাবে সৃষ্টি হয়- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটি পরিবেশের উপর কীরূপ প্রভাব ফেলে। বিশ্লেষণ করো।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দুর্যোগ হচ্ছে এরূপ ঘটনা, যা সমাজের স্বাভাবিক কাজকর্মে প্রচণ্ড বিঘ্ন ঘটায় এবং জীবন, সম্পদ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
খ. সামুদ্রিক প্রবাল তাপমাত্রার প্রতি খুব সংবেদনশীল। সাধারণত (২২-২৮)°C তাপমাত্রায় প্রবালের জীবন যাপনের জন্য উপযোগী। এই তাপমাত্রায় (১০-২°)C বেড়ে গেলেই তা প্রবালের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে কাজ করে। এই প্রভাবকে সামুদ্রিক প্রবাল ঝুঁকি বলে।
গ. চিত্রে A চিহ্নিত স্তরটি হলো গ্রিন হাউস গ্যাসের একটি স্তর।
কার্বন ডাই-অক্সাইড, ওজোন, সি.এফ.সি, নাইট্রাস অক্সাইড, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি গ্রিন হাউস গ্যাস নামে পরিচিত।
গ্রিন হাউস গ্যাসগুলোর মূল উৎস হলো যানবাহন, কলকারখানার ধোঁয়া, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, প্রাকৃতিকভাবে গাছপালার ক্ষয়, রেফ্রিজারেটরের ধোঁয়া, শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ইত্যাদি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যানবাহন, কালকারখানা, বিদ্যুৎ ইত্যাদির চাহিদা বাড়ছে এবং গ্রিন হাউস গ্যাসও বাড়ছে।
এসব গ্যাস বায়ুমণ্ডলে মিশে গিয়ে একটি ভারি স্তর তৈরি করে যা চিত্রে A চিহ্নিত স্তর দিয়ে দেখানো হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটি হলো গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া। এর ফলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। এতে খুব দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে।
বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রাণিকূল। গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে গড়ে ১০০ বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রা ০.৭৪° সেলসিয়াস বেড়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি বছরে ১.৮ সেন্টিমিটার বাড়ছে। ফলে উপকূলীয় অঞ্চল পানিতে ডুবে যাচ্ছে। লোনা পানির জলবদ্ধতার ফলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সামুদ্রিক প্রবাল ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে খরা ও বন্যা। এতে করে মারাত্মক পানি দূষণ ঘটছে। পানি, বায়ুবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। দ্রুত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক হারে সাইক্লোন, টর্নেডোসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে ।
সুতরাং, বলা যায় গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া পরিবেশ ও মানব সভ্যতার জন্য বিশাল হুমকিস্বরূপ।
প্রশ্ন–৬ : রবিউল একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভিডিও দেখছিল। যেখানে সমুদ্রের পানির ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে উপকূলের জনপদ নিশ্চিহ্ন করে দিলো। এমন সময় সে অনুভব করলো তার ঘরের আসবাবপত্রসহ বিল্ডিং কাপছে ।
ক. সাইক্লোন কাকে বলে?
খ. বৈশ্বিক উষ্ণতা বিপজ্জনক কেন?
গ. রবিউলের দেখা দুর্যোগটি কিভাবে সৃষ্টি হয় তা ব্যাখ্যা করো?
ঘ. রবিউলের অনুভব করা দুর্যোগটি মোকাবিলায় কী কী করণীয় ব্যাখ্যা করো ?
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নিম্নচাপজনিত কারণে যখন প্রচণ্ড গতিবেগে ঘূর্ণনের আকারে বাতাস বয় তখন তাকে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় বলে।
খ. বৈশ্বিক উষ্ণতার মূল কারণ অর্থাৎ গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ না কমালে, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। এতে পৃথিবীর দুই প্রান্তের মেরুর বরফ গলে যাবে এবং সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাবে। ফলে বহু দেশ এবং দ্বীপ সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যাবে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি মূল ভূ-খণ্ডের ভেতর ঢুকে খাবার ও ব্যবহার করা পানিকে লবণাক্ত করবে। এ কারণেই বৈশ্বিক উষ্ণতা বিপজ্জনক।
গ. উদ্দীপকে রবিউলের দেখা প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হলো সুনামি। নিচে সুনামি সৃষ্টির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হলো-
সাধারণত সমুদ্র তলদেশে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং নভোজাগতিক ঘটনা প্রভৃতির কারণে সুনামি সৃষ্টি হয় । সমুদ্রের তলদেশে যখন একটি প্লেটের সাথে অপর একটি প্লেটের সংঘর্ষ হয় তখন সেখানে মারাত্মক ভূকম্পন সৃষ্টি হয়। এই ভূকম্পনের ফলে একটি প্লেটের একাংশ অন্য প্লেটের আরেক অংশকে সজোরে চাপ দেয়। এই প্রবল চাপে সমুদ্রতলের কয়েকশত মাইলব্যাপী এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
এই ভাঙনের ফলে স্থানচ্যুতি ঘটে লক্ষ লক্ষ টন জলরাশির। বিশাল জলরাশি ভয়ানক বেগে ধেয়ে আসে সমুদ্রপৃষ্ঠের দিকে এবং বিশাল সব ঢেউয়ের আকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঢেউ যত বেশি তীরভূমির কাছাকাছি যায় এটি আরও দীর্ঘ হয়ে ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয়। আর তখন তাকে বলা হয় সুনামি।
ঘ. উদ্দীপকের রবিউলের অনুভব করা প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনা উপায় নেই, তবে এতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি। ভূমিকম্প হলে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে যথাসম্ভব দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা ও উদ্ধারকাজ নিশ্চিত করতে হবে এবং তার জন্য আগাম প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ ব্যাপারে কিছু সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। সেগুলো হলো-
আমাদের বাসস্থান সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে এবং এতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কতটুকু তা জানতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ বড় ভবনে থাকা যাবে না। ঘরবাড়ি বা অফিসে ৩-৪ দিনের পানি, খাবার, আলো না থাকলেও যাতে বাঁচা যায়, সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। এটাও মাথায় রাখতে হবে যে শুধু নিজের পরিবার ও প্রতিবেশী ছাড়াও অন্যান্য লোকজনের ব্যাপারে সুনজর রাখতে হবে। জরুরি এবং দ্রুত সাড়া দেওয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে।
সেক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, পুলিশ বাহিনীর কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। বিদ্যুৎ, পানি, রাস্তাঘাট, যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোন ইত্যাদি সব রকম ব্যবস্থা রাখতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ভূমিকম্পের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং তা মোকাবিলার জন্য একটি পরিকল্পনা আগে থেকেই গ্রহণ করতে হবে। কিছু শুকনা খাবার, পানি, টর্চলাইট, ছোট রেডিও, ব্যাটারি, প্রাথমিক চিকিৎসা কিট, কিছু ঔষধপত্র, বাঁশি, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র-এগুলো হাতের কাছে রাখতে হবে।
এই পদক্ষেপগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারলে হতাহতের পরিমাণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে।
প্রশ্ন–৭ : দৃশ্যকল্প–১: বাংলাদেশে প্রতিবছরই পদ্ম, ধরলা, তিস্তার পানি বেড়ে গিয়ে উত্তরবঙ্গের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়।
দৃশ্যকল্প–২: ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসী দ্বীপে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে সুনামি হয়। তাছাড়া পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশে ঘন ঘন বৃষ্টিপাত হয় এবং বৃষ্টির পানিতে এসিড থাকে।
ক. ভূমিকম্প কাকে বলে?
খ. টর্নেডো সাইক্লোনের চাইতেও ভয়াবহ কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ সৃষ্ট দুর্যোগটির কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-২ এ সৃষ্ট দুর্যোগ দুটির মধ্যে কোনটি অল্পসময়ে অধিকক্ষতি করে? বিশ্লেষণ করো।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূ-অভ্যন্তরে হঠাৎ সৃষ্ট কোনো কম্পন ভূত্বকে আকস্মিক যে আন্দোলন সৃষ্টি করে তাকে ভূমিকম্প বলে।
খ. সাইক্লোন সৃষ্টি হয় গভীর সমুদ্রে। এটি সাধারণত উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। অপরদিকে টর্নেডো যেকোনো স্থানেই সৃষ্টি হয় ও আঘাত হানতে পারে। এছাড়াও টর্নেডোর ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ বেশি তাই এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাও বেশি। তাই টর্নেডো সাইক্লোনের চেয়েও ভয়াবহ।
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ সৃষ্ট দুর্যোগটি হলো বন্যা। বন্যা সৃষ্টির অন্যতম কারণ হলো-
নদ-নদীর পানি ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া। নদীভাঙন, বর্জ্য অব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে নদ-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে ভারী বর্ষণ বা উজানের অববাহিকা থেকে আসা পানি খুব সহজেই নদী ভরে দুকূল ছাপিয়ে বন্যার সৃষ্টি করে। এছাড়া মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট জোয়ারের কারণে উজানের পানি নদ-নদীর মাধ্যমে সাগরে যেতে পারে না।
ফলে আশেপাশের এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হয়। আবার বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা সমতল হওয়ায় বৃষ্টির পানি সহজে নদ-নদীতে গিয়ে পড়তে পারে না। কাজেই ভারী বর্ষণ হলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকেও বন্যা হয়। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোনের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছাস উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দৃশ্যকল্প-২ এ সৃষ্ট দুর্যোগ দুটির প্রথমটি হলো সুনামি ও পরেরটি হলো এসিড বৃষ্টি। এই দুটি দুর্যোগের মধ্যে সুনামি অল্পসময়ের মধ্যে অধিক ক্ষতিসাধন করে থাকে। নিচে এর যথাযথ কারণসহ বিশ্লেষণ করা হলো-
সাধারণত সমুদ্রতলদেশে ভূমিকম্পের কারণে সুনামি সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করা হয়। এর ফলে সমুদ্রের পানি লক্ষ লক্ষ টনের বিশাল ঢেউ সৃষ্টি করে। অগভীর পানিতে সুনামি ধ্বংসাত্মক জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয়। এর ফলে উপকূলের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সুনামির একটি বৈশিষ্ট্য হলো ভূমিকম্পের মতো এরও পূর্বাভাস সহজে নির্ণয় করা যায় না। ফলে এ দূর্যোগে উপকূলের জনপদের লোকজনের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
অপরদিকে বৃষ্টির পানিতে এসিডের পরিমাণ বেশি থাকলে তাকে এসিড বৃষ্টি বলে। এসিড বৃষ্টি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। এর ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীর ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হয়, সংবেদনশীল উদ্ভিদ ও মাছের রেণু পোনা মারা যায়, ডিম নষ্ট হয়ে যায়।
উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, সুনামি ও এসিড বৃষ্টি উভয়েই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। তবে সুনামি, এসিড বৃষ্টির তুলনায় অল্প সময়ে তুলনামূলক বেশি ক্ষতিসাধন করে।
প্রশ্ন-৮ :

ক. বজ্র ঝড় কী?
খ. নগরায়ন বলতে কী বোঝায়?
গ. বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য ‘C’ দায়ী ব্যাখ্যা করো।
ঘ. পরিবেশ সংরক্ষণে ‘A’ নিয়ন্ত্রিত হলে ‘B’ ও ‘D এর দূষণ রোধ সম্ভব হবে।’- মূল্যায়ন করো।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. সাইক্লোনের চেয়ে বেশি গতিবেগে বাতাস ঘূর্ণির আকারে প্রবাহিত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে প্রচণ্ড ধ্বংসযজ্ঞ সাধন করলে তাকে বলা হয় বজ্র ঝড়।
খ. নগরায়ন একটি পরিবেশগত সমস্যা যা মূলত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত। শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্রামীণ জনপদের একটি বিরাট অংশও শহরে ভিড় জমাচ্ছে কর্মসংস্থানের জন্য। যার ফলে শহরাঞ্চলে আবাসন সংকট দেখা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে আশেপাশের আবাদি জমি ও জলাভূমি ভরাট করে নগরায়ন করা হচ্ছে।
গ. উদ্দীপকে বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য C তথা শিল্পকারখানাকে দায়ী করা হয়েছে। এর কারণ নিম্নরূপ:
পৃথিবীতে বর্তমানে দ্রুত গতিতে শিল্পোন্নয়ন ঘটছে। যার ফলে দেশে দেশে প্রচুর পরিমাণে শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। এ সকল শিল্প কারখানা প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক দ্রব্যাদি অতিরিক্ত বর্জ্য হিসেবে নির্গত করছে।
এ সকল রাসায়নিক পদার্থ বিভিন্ন গ্রীন হাউস গ্যাস যেমন :CO2, SO2, NO2, SO3, CFC, CO ইত্যাদি উৎপন্ন করছে। এই গ্যাসগুলো উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। এগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর ধ্বংস করে এবং অতিমাত্রায় তাপ শোষণ করে রাখে। তাই এদের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা ভীষণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অতএব বলা যায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য C অর্থাৎ শিল্পকারখানা সর্বাধিক দায়ী।
ঘ. উদ্দীপকের A অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলে B অর্থাৎ বৃক্ষ নিধন এবং D অর্থাৎ যানবাহন দ্বারা নির্গত ধোঁয়া হতে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব। নিচে এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হলো-
বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জনসংখ্যার জন্য বসতি স্থাপন করতে বাড়তি আবাসস্থলের প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে জনগণ বনভূমি উজাড় করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ বনাঞ্চলের গাছপালাই আমাদের পরিবেশকে বসবাসের উপযোগী করে রাখছে। গাছপালা হ্রাস পেলে সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়। এতে করে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতিনিয়ত তাদের চলাচলের জন্য যানবাহনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডসহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমাণও বাড়ছে। এভাবে বিশ্বে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমান্বয়ে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এছাড়া মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন-বন্যা, খরা, এসিড বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, তুষারপাত ইত্যাদি ঘটছে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কিন্তু যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় তবে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ফলে পরিবেশের বিপর্যয়ও ঘটবে না।
সুতরাং সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব।
প্রশ্ন-৯ :

ক. কার্বন দূষণ কাকে বলে?
খ. ইটের ভাটা এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. ১নং চিত্রের দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব আলােচনা করো।
ঘ. ২নং চিত্রের দুর্যোগের কারণ এবং তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়? বিশ্লেষণ করো।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কার্বন দূষণ বলতে পৃথিবীর বায়মণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে বোঝায় ।
খ. প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট কোনো কারণে যদি বাতাসে নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং সালফার ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়, তা পরে বাতাসের অক্সিজেন আর বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে নাইট্রিক এসিড এবং সালফিউরিক এসিড তৈরি করে। এই এসিডগুলো বৃষ্টির পানির সাথে মিশে এসিড বৃষ্টি তৈরি করে। ইটের ভাটা থেকে সালফার ডাইঅক্সাইড নির্গত হয় যা এসিড বৃষ্টির কারণ । তাই ইটের ভাটা এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী।
গ. উদ্দীপকে ১নং চিত্রের প্রাকৃতিক দুর্যোগটি হলো খরা। কোনো কোনো অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অথবা বর্ষাকালে একটানা অনেকদিন বৃষ্টিপাত না হলে খরা সৃষ্টি হয় ।
জলবায়ুজনিত কারণে সৃষ্ট খরায় ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। খরা একটি ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর ফলে ফসল উৎপাদন কমে যায় এবং তা দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে। খরা হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো –
দীর্ঘকালীন শুষ্ক আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়া। বাষ্পীভবন ও প্রস্বেদনের পরিমাণ বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি হলে এমনটি ঘটে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বৃক্ষনিধন ও গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাবে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত কমে সৃষ্ট খরার কারণে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের মেরু অঞ্চলে সৃষ্ট এলনিনোকে দায়ী করা হয়।
খরা হলে মাটি পানিশূন্য হয়ে যায়, ফলে মাটিতে গাছপালা ও শস্য জন্মাতে পারে না।
ঘ. উদ্দীপকের চিত্র-২ এ সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় দেখানো হয়েছে।
মূলত নিম্নচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রা এ দুটি কারণে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। সাধারণত ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে সাগরের তাপমাত্রা ২৭° সেলসিয়াসের বেশি হতে হয়। সাগরে বৃষ্টিপাতের ফলে সুপ্ততাপ ছেড়ে দেওয়ায় বায়ুমণ্ডলে বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। এ সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। এতে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সৃষ্ট নিম্নচাপে আশেপাশের বাতাস সেখানে ধাবিত হয়, যা বাড়তি তাপমাত্রার কারণে ঘূর্ণি আকারে উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণিঝড় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। প্রথমত, আমাদের ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে এবং জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর জন্য আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের আরেকটি মারাত্মক দিক হলো জলোচ্ছ্বাস। তাই এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উঁচু করে মজবুত আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। নিচু এলাকায় বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর জন্য উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ তৈরি করতে হবে এবং প্রচুর গাছপালা লাগিয়ে ক্ষতির পরিমাণ কমানো যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় পূর্বকালীন উপকূলীয় এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা যেতে পারে।
সুতরাং যথাযথ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
প্রশ্ন-১০ :

ক. খরা কাকে বলে?
খ. ভূমিকম্প কেন হয়?
গ. উদ্দীপকের কোন দুর্যোগটিকে পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের কোন দুর্যোগটির পূর্বাভাস পাওয়ার মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি কমানো সম্ভব? যুক্তি দিয়ে উত্তরের যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যখন মাটিতে পানির পরিমাণ কমতে কমতে মাটি পানিশূন্য হয়ে যায় এবং এর ফলে এতে গাছপালা ও শস্য জন্মাতে পারে না তখন সেই অবস্থাকে খরা বলে।
খ. আমাদের ভূগর্ভ কতকগুলো ভাগে বিভক্ত, যাদেরকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়। এই টেকটনিক প্লেট স্থিতিশীল থাকে না। টেকটনিক প্লেট স্থান পরিবর্তনের সময় একে অপরের সাথে সজোরে আঘাত লাগে। আর সেই আঘাতের ফলেই ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দুর্যোগ-২ হলো সুনামি, যাকে পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করা হয়। নিচে সুনামি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হলো-
সমুদ্রতলদেশে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিধ্বস এবং নভোজাগতিক ঘটনা সুনামি সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সুনামিকে পৃথিবীর তৃতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সুনামির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মহাসাগর ও সাগরের তলদেশের প্লেট দুমড়ে দেয়া, যার ফলে সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড ভূমিকম্প। সমুদ্রের পানি লক্ষ লক্ষ টনের বিশাল ঢেউ তৈরি করে।
আর এই ঢেউ যত বেশি তীরভূমির কাছাকাছি যায়, আরও দীর্ঘ হয়ে ভয়ঙ্কর জলোচ্ছাসে রূপ নেয়। এই ঢেউয়ের গতিবেগ ঘন্টায় ৫০০ থেকে ৮০০ মাইল পর্যন্ত হতে পারে। খোলা সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতা তিন ফুট পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ঢেউ যতই তীরের দিকে যায়, ততই শক্তি সঞ্চয় করে, বাড়ে উচ্চতা। তখন ঢেউয়ের এক মাথা থেকে আরেক মাথার দূরত্ব হতে পারে ১০০ মাইল পর্যন্ত, অগভীর পানিতে সুনামি ধ্বংসাত্মক জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেয়। অগ্রসরমান জলরাশি ভয়ঙ্কর স্রোত সৃষ্টি করে নেমে যাবার আগে ১০০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। উপকূলের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত করতে পারে। উপকূলীয় জনপদ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।
সুনামির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো ভূমিকম্পের মতো সুনামি সম্পর্কেও পূর্বাভাস দেওয়া যায় না ফলে সুনামির সৃষ্টি হলেও উপকূলীয় জনপদের লোকজনদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দুর্যোগ-১ হলো সাইক্লোন, দুর্যোগ-২ হলো সুনামি এবং দুর্যোগ-৩ হলো টর্নেডো।
উক্ত তিনটি দুর্যোগের মধ্যে দুর্যোগ-১ অর্থাৎ সাইক্লোনের পূর্বাভাস পাবার মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। নিচে যুক্তিসহকারে এর যথার্থতা বিশ্লেষণ করা হলো-
সুনামি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়া যায় না ফলে এ ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি নেয়া যায় না। টর্নেডো জল কিংবা স্থলভাগ যেকোনো জায়গা হতে উদ্ভূত হয় বলে এর ব্যাপারেও পূর্বাভাস ও সতর্কবানী প্রচার সম্ভব হয় না বলে ক্ষয়-ক্ষতি যথেষ্টভাবে প্রতিরোধ করা যায় না।
অপরদিকে সাইক্লোন গভীর সমুদ্রে সৃষ্টি হয় বলে এর পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। সাইক্লোন অত্যন্ত শক্তিশালী, একে পুরোপুরি প্রতিরোধ করা প্রায় অসাধ্য। কিন্তু সম্প্রতি সিলভার আয়োডাইড ব্যবহারের মাধ্যমে এর প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব, তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় আমাদের দেশে তা প্রয়োগযোগ্য নয়। কিন্তু পূর্বাভাস পাবার সাথে সাথে মানুষজন ও জানমাল নিরাপদ দূরত্বের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। এছাড়াও উপকুলে বাঁধ নির্মাণ ও গাছপালা লাগিয়েও ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমানো সম্ভব।
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে এটি স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়। একমাত্র সাইক্লোনের পূর্বাভাস পাওয়ার মাধ্যমেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।