এসএসসি জীববিজ্ঞান-Biology
পঞ্চম অধ্যায়
খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক
Food, Nutrition and Digestion
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি:
উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি : জীবনধারণের জন্য উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে বেশকিছু খনিজ লবণ আহরণ করে দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে। একেই বলা হয় উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি। খনিজ লবণগুলোই হচ্ছে খনিজ পুষ্টি উপাদান। উদ্ভিদে প্রায় ৬০টি অজৈব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছে। অবশ্য এ ৬০টি উপাদানের মধ্যে মাত্র ১৬টি উপাদান উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য একান্ত প্রয়োজন।
খনিজ পুষ্টি উপাদান : উদ্ভিদের পুষ্টিতে অপরিহার্য মৌলিক উপাদান হলো ১৬টি। প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে এগুলোকে ম্যাক্রো ও মাইক্রো উপাদানে ভাগ করা হয়েছে। উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণে দরকার হয় সেগুলোকে ম্যাক্রো এবং যেগুলো অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে দরকার হয় সেগুলোকে মাইক্রো উপাদান বলা হয়।
ম্যাক্রো উপাদান ৯টি। যথা : N, K, P, Ca, Mg, C, H, 0 এবং S। মাইক্রো উপাদান ৭টি। যথা : Zn, Mn, Fe, Mo, B, Cu এবং Cl।
খাদ্য : খাদ্য বলতে বোঝায় যা জীবের দেহগঠন, বৃদ্ধি সাধন ও শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। খাদ্য মূলত বিভিন্ন যৌগের সমন্বয়ে গঠিত। আমরা উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে মূলত খাদ্য পাই।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
পুষ্টি : পুষ্টি একটি প্রক্রিয়া যাতে খাদ্যবসাওয়ার পরে পরিপাক হয় এবং জটিল খাদ্য উপাদানগুলো ভেঙে সরল উপাদানে পরিণত হয়। এসব সরল উপাদান দেহ শোষণ করে নেয়। শোষণের পরে খাদ্য উপাদানগুলো দেহের সকল অঙ্গের প্রাপ্তি কোষের পুনর্গঠন ও দেহের বৃদ্ধির জন্য নতুন কোষ গঠন করে। তাছাড়া তাপ উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে পুষ্টি যোগায়। দেহে খাদ্যের এসব কাজই পুষ্টি প্রক্রিয়ার অন্তর্গত।
খাদ্য উপাদান : খাদ্য অনেকগুলো রাসায়নিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। এ রাসায়নিক উপাদানগুলোকে খাদ্য উপাদান বলা হয়। আমিষ, শর্করা, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি। এ ছয়টি খাদ্যের উপাদান।
শর্করা : শর্করা জাতীয় খাদ্য দেহের কাজ করার শক্তি যোগায়। শর্করার মৌলিক উপাদান কার্বন হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন। আমাদের দৈনিক খাদ্যের বিভিন্ন উপাদানগুলোর মধ্যে শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি ইত্যাদি এ জাতীয় খাদ্য।
সব শৰ্করাই কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এ তিনটি মৌলিক উপাদান নিয়ে গঠিত। রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী শর্করাকে এক, দ্বি ও বহু শর্করায় ভাগ করা হয়।
সব শর্করাই পরিপাকের পর সরল শর্করায় পরিণত হয়ে দেহের শোষণযোগ্য হয়।
1 গ্রাম শর্করা 4 কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে। আমাদের মোট ক্যালরির শতকরা 60-70 ভাগ শর্করা থেকে গ্রহণ করা দরকার। দেহে শর্করার অভাবে অপুষ্টি দেখা দেয়। ফলে বিপাক ক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আমিষ : আমিষ চারটি মৌলিক উপাদান, যথা : কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত। বেল আমিষ জাতীয় খাদ্য দেহে নাইট্রোজেন সরবরাহ করতে পারে। আমিষে 16% নাইট্রোজেন থাকে। কখনো কখনো ফসফরাস, লৌহ এবং অন্যান্য মৌলিক উপাদানও আমিষে উপস্থিত থাকে। আমিষ অ্যামাইনো এসিডের জটিল যৌগ। পরিপাক প্রক্রিয়ায় এটি সরল শোষণ উপযোগী অ্যামাইনো এসিডে পরিণত হয়। মাছ, মাংস, ডাল, দুধ ইত্যাদি আমিষ জাতীয় খাদ্য। আমিষের অভাবে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুদের কোয়াশিয়রকর ও মেরাসমাস রোগ দেখা দেয়।
স্নেহপদার্থ : স্নেহপদার্থ ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারল সমন্বয়ে গঠিত। খাদ্যবস্তুর মধ্যে স্নেহ জাতীয় পদার্থ সর্বাপেক্ষা অধিক তাপ ও শক্তি সরবরাহ করে। স্নেহপদার্থ পরিপাক হয়ে ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলে পরিণত হয়। ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারল , ক্ষুদ্রান্ত্রের লসিকানালির মাধ্যমে শোষিত হয়। মাংস, মাখন, পনির, ডালডা, বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিজ্জ তেল স্নেহ পদার্থের উত্তম উৎস। দেহে স্নেহপদার্থের ঘাটতি হলে ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে দেহের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায় ।
খাদ্যের ক্যালরি : খাদ্য থেকে দেহের ভেতর যে তাপ উৎপন্ন হয় তা আমরা ক্যালরিতে প্রকাশ করি। ১০০০ ক্যালরিতে ১ কিলোক্যালরি। খাদ্যে তাপশক্তি মাপার একক হলো কিলোক্যালরি। দেহের শক্তির চাহিদাও কিলোক্যালরিতে নির্ণয় করা হয়।
কর্মশক্তি : শর্করা, আমিষ ও স্নেহপদার্থ খাদ্যের এ তিনটি উপাদান থেকে দেহে তাপ উৎপন্ন হয়। এ তাপ আমাদের দেহে কাজ কার শক্তি যোগায়। আবার শারীরিক পরিশ্রমে আমাদের শক্তি ব্যয় হয়। আমরা খাবার থেকে শক্তি পাই। শক্তির এ রূপান্তরই কর্মশক্তি।
মৌলবিপাক : আমাদের দেহের ভেতর খাদ্য পরিপাক, শ্বসন, রক্তসংবহন ইত্যাদি কার্যক্রম বিপাক ক্রিয়ার অন্তর্গত। বিপাক ক্রিয়া চালানোর জন্য যে শক্তি প্রয়োজন তাকে মৌলবিপাক বলে।
ভিটামিন : ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ বলতে আমরা খাদ্যে কতগুলো সূক্ষ্ম উপাদানকে বুঝি। ভিটামিনসমূহ প্ৰত্যক্ষ ভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন বা দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না। গাছের সবুজ পাতা, কচি ডগা, হলুদ ও সবুজ বর্ণের সবজি, ফল ও বীজ ইত্যাদি অংশে ভিটামিন থাকে।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
দ্রবণীয়তার গুণ অনুসারে ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
(১) স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন : ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে;
(২) পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন : ভিটামিন বি-কমপেক্স এবং সি।
খনিজ লবণ : ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্লোরিন, আয়োডিন, লৌহ, সালফার ইত্যাদি লবণ জাতীয় দ্রব্য খাদ্যের সাথে দেহে প্রবেশ করে ও দেহ গঠনে সাহায্য করে। প্রতিদিন এবং প্রতিবারের খাদ্যে পর্যাপ্ত খনিজ পদার্থ থাকা দরকার। বিশেষ করে খাদ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, আয়োডিনের উপস্থিতি অপরিহার্য।
পানির প্রয়োজনীয়তা : পানি খাদ্যের একটি উপাদান। আমাদের দেহের জন্য পানি অপরিহার্য। আমাদের রক্ত, মাংস, দাঁত, হাড় ইত্যাদি গঠনের জন্য পানির প্রয়োজন। পানি খাবার হজম করতে ও দেহ থেকে ঘাম ও মূত্রের মাধ্যমে ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। পানি দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পানি ছাড়া দেহের অভ্যন্তরের কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া চলতে পারে না।
রাফেজ বা আঁশযুক্ত তন্তু : শস্যদানা, ফলমূল, সবজির অপাচ্য অংশকে রাফেজ বলে। দেহের ভেতর রাফেজের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। রাফেজ কোনো পুষ্টি উপাদান নয়। তবে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদান। আঁশযুক্ত খাবার থেকে রাফেজ পাওয়া যায় ।
সুষম খাদ্য : যে খাদ্যবস্তু দেহের ক্যালরি চাহিদা পূরণ করে, টিস্যু কোষের বৃদ্ধি ও গঠন বজায় রাখে এবং দেহের শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলিকে সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে সুষম খাদ্য বলে। বয়স, লিঙ্গভেদ, দৈহিক অবস্থা, শ্রমের পরিমাণ হিসেবে পুষ্টির প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো উপযুক্ত পরিমাণে সুষম খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত থাকে।
খাবার স্যালাইন : কলেরা বা উদরাময় রোগ হলে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজ লবণ বের হয়ে যায়। এ সময় দেহে পানি ও খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য খাবার স্যালাইন খেতে হয়, এটি কলেরা বা উদরাময়ের সবচেয়ে সহজ চিকিৎসা।
খাদ্য পিরামিড : পিরামিড আকৃতিতে একজন ব্যক্তির প্রতিনিয়ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। পিরামিডের শীর্ষে রয়েছে স্নেহজাতীয় খাদ্য আর সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে শর্করা। পিরামিডের সবচেয়ে চওড়া অংশে আছে শর্করাজাতীয় খাদ্য, এরপর শাকসবজি ও ফলমূল; তারপর প্রোটিন জাতীয় খাদ্য ও শীর্ষে স্নেহপদার্থ। প্রতিদিনের খাবার খাদ্য পিরামিড অনুযায়ী বেছে নিলে সুষম খাদ্য নির্বাচন অনেকটা সহজ হয়ে ওঠে।
শরীরচর্চা ও বিশ্রাম : নিয়মিত শরীরচর্চা শরীরের পরিপাক করার ক্ষমতা বাড়ে, রক্ত চলাচলের ক্ষমতা ভালো হয়, পাচন ক্ষমতা, শ্বাসপ্রশ্বাস, শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ আরও সুষ্ঠু হয়। সুস্থথাকার জন্য আমাদের দেহে যেমন খাদ্য ও শরীরচর্চা প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন বিশ্রাম। বিশ্রামে শরীরের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়। বিশ্রামে শ্বাসপ্রশ্বাস ও হজমশক্তির কাজ সুশৃঙ্খলভাবে চলতে থাকে। ফলে শারীরিক সুস্থতা অর্জিত হয়।
BMI : দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার সূচককে বিএমআই বা ভরসূচি বা Body Mass Index বলে।
বিএমআই = দেহের ওজন (কেজি)/ দেহের উচ্চতা (মিটার)২
খাদ্যে ভেজাল ও রঞ্জক ব্যবহার : বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যকে পচন থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের ভেজাল মেশানো হয়। এর মধ্যে মূলত বাণিজ্যিক রং, এন্টিবায়োটিক, রাসায়নিক দ্রব্য যেমন : সরবেট, কার্বাইড, কীট ও বালাইনাশক, ফরমালিন, হেভি মেটাল উল্লেখযোগ্য। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা প্রকট আকার ধারণ করছে।
BMR : মৌল বিপাকে যে পরিমাণ শক্তি ব্যয় হয় এবং তাপ বিকিরণ হয় তার হারই হলো BMR বা বেসাল মেটাবলিক রেট।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন – ১. উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি কাকে বলে?
উত্তর : উদ্ভিদ মাটি ও পরিবেশ থেকে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, শারীরবৃত্তীয় কাজ এবং প্রজননের জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে সেগুলো উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান। এসব পুষ্টি উপাদানের অধিকাংশ উদ্ভিদ মাটি থেকে সংগ্রহ করে বলে এদের খনিজ পুষ্টি বলে।
প্রশ্ন -২. উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় খনিজ পুষ্টি কয়টি?
উত্তর : উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় খনিজ পুষ্টি উপাদানের সংখ্যা ১৬টি।
প্রশ্ন– ৩. আদর্শ খাদ্য পিরামিড কী?
উত্তর : যেকোনো একটি সুষম খাদ্য তালিকায় শর্করা, শাকসবজি, ফলমুল, আমিষ, স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য। একজন কিশোর বা কিশোরী, প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ বা মহিলার সুষম খাদ্য তালিকা লক্ষ করলে দেখা যায় যে তালিকায় শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। শর্করাকে নিচুস্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বিজাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয়, তাকে সুষম খাদ্য পিরামিড বলে।
প্রশ্ন-৪. রক্ত শূন্যতার কারণ কী?
উত্তর : খনিজ লবণ লৌহের প্রধান কাজ হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করা। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা রোগ হয়। খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণের লৌহঘটিত খাদ্যের অভাব হলে এ রোগ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ॥ ৫॥ রাতকানা রোগ কেন হয়?
উত্তর : ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়।
রচনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১. চিত্রসহ দাঁতের গঠন বর্ণনা কর।
উত্তর : মানবদেহের সবচেয়ে শক্ত অংশ দাঁত। দাঁতের একটি চিত্র নিম্নরূপ:

দাঁতের গঠন : প্রতিটি দাঁতের তিনটি অংশ থাকে। যথা :
১. মুকুট : মাড়ির উপরের অংশ
২. মূল : মাড়ির ভেতরের অংশ ও
৩. গ্রিবা : দাঁতের মধ্যবর্তী অংশ।
প্রতিটি দাঁত যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তা হলো :
ক. ডেন্টিন : দাঁত প্রধানত ডেন্টিন নামক শক্ত উপাদান দ্বারা গঠিত।
খ. এনামেল : দাঁতের মুকুট অশে ডেন্টিনের উপরিভাগে এনামেল নামক কঠিন উপাদান থাকে। এনামেল ও ডেন্টিন ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম কার্বনেট ও ফ্লোরাইড দিয়ে তৈরি।
গ. দন্তমজ্জা : ডেন্টিনের ভেতরের পা নরম অংশকে দন্তমজ্জা বলে। এর
ভেতরে ধমনি, শিরা, স্নায়ু ও নরম কোষ থাকে। দন্তমজ্জার মাধ্যমে ডেন্টিন অংশে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ হয়।
ঘ. সিমেন্ট : সিমেন্ট নামক পাতলা আবরণ দাঁতের মূল অংশ ডেন্টিনকে আবৃত করে রাখে। এই সিমেন্টের সাহায্যে দাঁত মাড়ির সাথে আটকানো থাকে।
এসএসসি গণিত সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন -২. সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।
উত্তর : সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :
১. একজন মানুষের বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনের সামর্থ্য থাকতে হবে।
২. খাদ্যে আমিষ, চর্বি ও শর্কার অনুপাত হবে – ৪ : ১ : ১।
৩. খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও রাফেজ বা সেলুলোজ সরবরাহের জন্য সুষম খাদ্য তালিকায় ফল ও টাটকা শাকসবজি থাকতে হবে।
৪. খাদ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও খনিজ লবণ থাকতে হবে।
৫. সুষম খাদ্য অবশ্যই সহজপাচ্য হতে হবে। সুস্থসবল ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য সুষম খাদ্যের বিকল্প নেই। দেহের পরিপুষ্টির জন্য ছয় উপাদান বিশিষ্ট খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করে সুষম খাদ্য তালিকা বা মেন্যু পরিকল্পনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥১॥ BMR কী?
উত্তর : BMR হলো পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানব শরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ।
প্রশ্ন ॥ ২॥ অ্যাপেনডিসাইটিস কাকে বলে?
উত্তর : জীবাণু দ্বারা অ্যাপেনডিক্সের সংক্রমণ হলে যে রোগ হয় তাকে অ্যাপেনডিসাইটিস বলে। প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ ক্লোরোপ্লাস্ট গঠন ও সংরক্ষণের জন্য কোন মৌল প্রয়োজন?
উত্তর : ক্লোরোপ্লাস্ট গঠন ও সংরক্ষণের জন্য ম্যাঙ্গানিজ প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥৪॥ কোথায় পিত্তরস তৈরি হয়?
উত্তর : যকৃতে পিত্তরস তৈরি হয়।
প্রশ্ন ॥ ৫॥ মিশ্র আমিষ এর অপর নাম কী?
উত্তর : মিশ্র আমিষ এর অপর নাম সম্পূরক আমিষ।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ অজীর্ণতা কাকে বলে?
উত্তর : খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে পরিপাক না হওয়াকে অজীর্ণতা বলা হয়।
প্রশ্ন ॥৭॥ উদ্ভিদের কোন পুষ্টি উপাদানগুলো বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রহণ করে?
উত্তর : পুষ্টি উপাদানের মধ্যে কেবল C ও O উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রহণ করে।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ উদ্ভিদের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তর : উদ্ভিদের দেহে নাইট্রোজেনের অভাব।
প্রশ্ন ॥৯॥ উদ্ভিদে ফসফরাসের উৎস কোন সার?
উত্তর : উদ্ভিদে ফসফরাসের উৎস হচ্ছে ট্রিপল সুপার ফসফেট বা TSP.
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ উদ্ভিদের কোন উপাদানের জন্য আমরা কোন সার প্রয়োগ করি?
উত্তর : (১) নাইট্রোজেনের জন্য : ইউরিয়া সার প্রয়োগ করি।
(২) পটাসিয়ামের জন্য : মিউরেট অব পটাশ সার প্রয়োগ করি।
(৩) ফসফরাসের জন্য : ট্রিপল সুপার ফসফেট সার প্রয়োগ করি।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ নিউট্রিয়েন্টস কী?
উত্তর : খাদ্যের যেসব জৈব অথবা অজৈব উপাদান জীবের জীবনীশক্তির জোগান দেয়, তাদের একসঙ্গে পরিপোষক বা নিউট্রিয়েন্টস বলে। যেমন : গ্লুকোজ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে কোনগুলো দেহ পরিপোষক খাদ্য?
উত্তর : খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে শর্করা, আমিষ ও স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট দেহ পরিপোষক খাদ্য।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে কোনগুলো দেহ সংরক্ষক খাদ্য?
উত্তর : ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি দেহ সংরক্ষক খাদ্য উপদান, যারা দেহের রোগ প্রতিরোধে সহায়তাকারী।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ শর্করা কী দ্বারা গঠিত?
উত্তর : শর্করা কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ কী কী খাদ্যে স্টার্চ পাওয়া যায়?
উত্তর : ধান, গম, ভুট্টা ও অন্যান্য দানা শস্য স্টার্চের প্রধান উৎস। এছাড়া আলু, রাঙা আলু ও কচু ইত্যাদি এর প্রধান উৎস।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ গ্লুকোজ কিসে পাওয়া যায়?
উত্তর : গ্লুকোজ মধু, আঙুর, আপেল, গাজর, খেজুর ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ ল্যাকটোজ কিসে পাওয়া যায়?
উত্তর : ল্যাকটোজ গরু, ছাগল ও অন্যান্য প্রাণীর দুধে থাকে।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ শর্করা, প্রোটিন ও স্নেহের ক্যালরি মান কত?
উত্তর : শর্করা ও প্রোটিনের ক্যালরি প্রায় সমান- ৪ ক্যালরি। স্নেহ জাতীয় খাদ্যে ৯ ক্যালরি।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ চর্বি কী?
উত্তর : চর্বি হচ্ছে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড।
প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ লৌহ দেহের কোথায় সঞ্চিত থাকে?
উত্তর : লৌহ যকৃৎ, প্লিহা, অস্থিমজ্জা এবং লোহিত রক্তকণিকায় এটি সঞ্চিত থাকে।
প্রশ্ন ॥ ২১ ॥ রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে কী রোগ হয়?
উত্তর : হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা রোগ হয়।
প্রশ্ন ॥ ২২ ॥ একজন পূর্ণবয়স্কপুরুষের কত কিলোক্যালরি শক্তির প্রয়োজন হয়?
উত্তর : একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ কর্মশীল পুরুষের প্রত্যহ প্রায় ২৫০০-৩০০০ কিলোক্যালরি শক্তির প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥ ২৩ ॥ রাফেজ কী কী রোগ প্রতিরোধে সক্ষম?
উত্তর : রাফেজ কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।
প্রশ্ন ॥ ২৪ ॥ কিলোক্যালরি কী?
উত্তর : এক হাজার ক্যালরি সমান এক কিলোক্যালরি বা এক খাদ্য ক্যালরি।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ॥১॥ বিএম আর (BMR) কী নির্দেশ করে?
উত্তর : বিএমআর (BMR) বা বেসাল মেটাবলিক রেট পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানব শরীরের ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করে।
প্রশ্ন ॥ ২॥ রক্তশূণ্যতা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?
উত্তর : লৌহ সমৃদ্ধ খাবার যেমন : যকৃত, মাংস, ডিম, চিনাবাদম, শাকসবজি, বরবটি, মুসুর ডাল, খেজুরের গুড় এসব খেতে হবে। কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করে এবং প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লৌহ উপাদানযুক্ত ঔষধ সেবন করে এই রোগ প্রতিরোধ করে।
প্রশ্ন ॥ ৩॥ ডায়রিয়া হলে কী কী লক্ষণ দেখা যায়?
উত্তর : ডায়রিয়া হলে রোগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় এবং নিচে উল্লেখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়।
i) ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়।
ii) বারবার বমি হয়।
iii) খুব পিপাসা লাগে, মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যায়।
iv) দেহের চামড়া কুচকে যায় এবং চোখ বসে যায়।
v) কাঁদলে শিশুর মাথার চাঁদি বা তালু বসে যায়।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ উদ্ভিদের পুষ্টির ম্যাক্রো উপাদান ও মাইক্রো উপাদানগুলোর মধ্যে পার্থক্য লেখ। উত্তর : উদ্ভিদের পুষ্টির ম্যাক্রো ও মাইক্রো উপাদানগুলোর পার্থক্য দেওয়া হলো :
ম্যাক্রো উপাদান | মাইক্রো উপাদান |
১. এগুলো উদ্ভিদের পুষ্টিতে বেশি কম পরিমাণে প্রয়োজন। | ১. এগুলো উদ্ভিদের পুষ্টিতে খুব মাত্রায় প্রয়োজন। |
২. এগুলো কোষ গঠনে ও বৃদ্ধির অতি আবশ্যক নয়। | ২. এগুলো কোষ গঠনের জন্য জন্য অতি আবশ্যক। এগুলো এনজাইমের কার্যকারিতাকে ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করে। |
৩. অভাবজনিত লক্ষণ সুস্পষ্ট। | ৩. অভাবজনিত লক্ষণ সুস্পষ্ট নয়। |
৪. এগুলোর সংখ্যা অনেক। যেমন : কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, সালফার, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও লৌহ। | ৪. এগুলোর সংখ্যা কম। যেমন : বোরন, মলিবডেনাম, ক্লোরিন, কপার, জিঙ্ক ও ম্যাঙ্গানিজ। |
প্রশ্ন ॥ ৫॥ লৌহের অভাবে উদ্ভিদের কী কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর : লৌহের অভাবে প্রথমে কচি পাতার রং হালকা হয়ে যায়। তবে পাতার সরু শিরার মধ্যবর্তী স্থানেই প্রথম হালকা হয়। কখনো কখনো সম্পূর্ণ পাতা বিবর্ণ হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ক্যালরি বলতে কী বুঝ?
উত্তর : ক্যালরি শক্তির একক। এক গ্রাম খাদ্য জারণের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে খাদ্যের ক্যালরি বলে। এক গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১° (ডিগ্রি) সেলসিয়াস বৃদ্ধি করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয়, সে পরিমাণ তাপশক্তি হচ্ছে এক ক্যালরি।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ তেল বলা হয় কাদের?
উত্তর : যেসব স্নেহ পদার্থ তরল, সেগুলোকে তেল বলে। তেল হচ্ছে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। সাধারণ তাপমাত্রায় এগুলো তরল থাকে। যেমন : সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ ভিটামিন A এর উৎস কী কী?
উত্তর : প্রাণিজ উৎসের মধ্যে ডিম, গরুর দুধ, মাখন, ছানা, দই, ঘি, যকৃত ও বিভিন্ন তেলসমৃদ্ধ মাছে বিশেষ করে কড মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন A পাওয়া যায়।
উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শাকসবজি, যেমন : লালশাক, কচুশাক, পুঁইশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, পুদিনা পাতা, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, মটরশুটি এবং বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন : আম, পাকা পেঁপে, কাঁঠাল ইত্যাদিতে A উল্লেখযোগ্য হারে আছে। গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন A পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ উদ্ভিদের পুষ্টির ক্ষেত্রে লৌহ ও ম্যাগনেসিয়ামের উৎস ও গুরুত্ব আলোচনা কর।
উত্তর : উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য লৌহ ও ম্যাগনেসিয়ামের উৎস ও গুরুত্ব :
মৌলিক পদার্থ | উৎস | গুরুত্ব |
লৌহ | মাটির পানিতে দ্রবণীয় বিভিন্ন লৌহঘটিত লবণ (ফেরাস সালফেট) রূপে উদ্ভিদ মূল দ্বারা এগুলো শোষণ করে। | ক্লোরোফিলের সংশ্লেষে অংশহণ করে। এটি ইলেক্ট্রন বাহকের গঠনগত উপাদান। এর অভাবে শ্বসন কার্য ব্যাহত হওয়ায় বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে ক্লোরোসিস রোগ সৃষ্টি করে। |
ম্যাগনেসিয়াম | মাটির ম্যাগনেসিয়াম সালফেট লবণই এটির প্রধান উৎস। উদ্ভিদ মূল দ্বারা পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় এটি শোষণ করে। | এটি ক্লোরোফিল গঠনে সহায়তা করে। এর অভাবে ক্লোরোসিস রোগ হয় এবং পাতা ভঙ্গুর হয়। |
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ ভিটামিন C- এর অভাবে কী হয়?
উত্তর : ভিটামিন C- এর তীব্র অভাবে স্কার্ভি (দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া) রোগ হয়। এর অভাবে-
১. অস্থির গঠন শক্ত ও মজবুত হতে পারে না।
২. ত্বকে ঘা হয়, ক্ষত শুকাতে দেরি হয়।
৩. দাঁতের মাড়ি ফুলে দাঁতের এনামেল উঠে যায়।
৪. দাঁত দুর্বল হয়ে অকালে ঝরে পড়ে।
৫. রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে গিয়ে সহজে ঠাণ্ডা লাগে।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ দেহে পানির কাজ কী কী?
উত্তর : পানির দ্বারা শরীর গঠনের নানা প্রয়োজনীয় উপাদান দেহের সর্বত্র পরিবাহিত হয়। এটি জীবদেহে দ্রাবকের কাজ করে। পানি খাদ্য উপাদানের পরিপাক ও পরিশোষণে সাহায্য করে। বিপাকের ফলে দেহে উৎপন্ন ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি শরীরের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থগুলোকে পানি মূত্র ও ঘাম হিসেবে দেহ থেকে নিষ্কাশন করে । এছাড়া পানি দেহ থেকে ঘাম নিঃসরণে ও বাষ্পীভবনের দ্বারা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ সুষম খাদ্য তালিকা তৈরির সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হবে?
উত্তর : সুষম খাদ্য তালিকা তৈরির সময় মানুষের বয়স, লিঙ্গভেদ, কী রকম কাজ করে অর্থাৎ অধিক পরিশ্রমী, মাঝারি পরিশ্রমী, স্বল্প পরিশ্রমী ইত্যাদি বিবেচনা করা দরকার। শিশু ও বৃদ্ধদের খাদ্য তালিকায় সহজপাচ্য ও চর্বি বর্জিত খাদ্যের প্রাধান্য থাকতে হবে। বাড়ন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য এবং হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সমৃদ্ধ খাদ্য থাকতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকায় রক্ত উৎপাদনের জন্য ও ভ্ৰূণস্থশিশুর বৃদ্ধির জন্য বাড়তি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়োডিন থাকা খুবই প্রয়োজন।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ আমাদের রাতের খাবার কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর : রাতের খাবার সাধারণত সহজপাচ্য হওয়া উচিত। এজন্য রাতে আমিষ জাতীয় খাবার কম খাওয়া ভালো। রাতে শাক বা টক জাতীয় কোনো খাদ্য গ্রহণ স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে আর্থিক সামর্থ্য অনুসারে দুধ বা অন্য শক্তি উৎপাদক তরল খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নিচের কোনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে?
ক. দস্তা খ. ক্লোরিন
গ. বোরন ঘ. পটাসিয়াম
উত্তর: ঘ. পটাসিয়াম
২. ক্লোরোসিস হয়-
i. নাইট্রোজেনের অভাবে
ii. সালফারের ঘাটর্তিতে
iii. লৌহের অনুপস্থিতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
পাঁচ বৎসর বয়সী নীলিমা তার বইয়ের সব লেখা বুঝতে পারে। তবে রাতের বেলা পড়তে বসলে সে বইয়ের লেখাগুলো ঠিকমতো দেখতে পায় না।
৩. নীলিমার দেহে কোন ভিটামিনের অভাব রয়েছে?
ক. ভিটামিন ‘এ’ খ. ভিটামিন ‘বি’
গ. ভিটামিন ‘সি’ ঘ. ভিটামিন ‘ডি’
উত্তর: ক. ভিটামিন ‘এ’
৪. নীলিমার রোগটি প্রতিরোধে অধিক পরিমাণে খেতে হবে–
i. যকৃত
ii. গাজর
iii. মলা মাছ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫. নিচের কোনটিতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আমিষ রয়েছে?
ক. গরু ও খাসির মাংসে খ. মসুর ডাল ও মুরগীর মাংসে
গ. ইলিশ ও চিংড়ী মাছে ঘ. ডিম ও ছোলাতে
উত্তর: খ. মসুর ডাল ও মুরগীর মাংসে
৬. সুষম খাদ্যে আমিষ, চর্বি ও শর্করার অনুপাত কত?
ক. ৪ : ২ : ১ খ. ৪ : ১ : ১
গ. ৪ : ১ : ২ ঘ. ৪ : ২ : ২
উত্তর: খ. ৪ : ১ : ১
৭. কোন উপাদানটির অভাবে ডাইব্যাক রোগ হয়?
ক. নাইট্রোজেন খ. ফসফরাস
গ. সালফার ঘ. ম্যাগনেসিয়াম
উত্তর: গ. সালফার
৮. মিশ্র আমিষে কত প্রকার আবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায়?
ক. ৫ প্রকার খ. ৬ প্রকার
গ. ৭ প্রকার ঘ. ৮ প্রকার
উত্তর: ঘ. ৮ প্রকার
৯. কোন ভিটামিনের অভাবে রক্তশূন্যতা রোগ হয়?
ক. ভিটামিন- এ খ. ভিটামিন-বি১২
গ. ভিটামিন সি ঘ. ভিটামিন ডি
উত্তর: খ. ভিটামিন-বি১২
১০. রিকেটস রোগ হয় কোন ভিটামিনের অভাবে?
ক. এ খ. বি
গ. সি ঘ. ডি
উত্তর: ঘ. ডি
১১. উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ম্যাক্রো উপাদান কোনগুলো?
গ. Mn, B, Cl ঘ. C, B, N
উত্তর: খ. N, Ca, Mg
১২. উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নিচের কোনটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে?
ক. নাইট্রোজেন খ. ক্যালসিয়াম
গ. ক্লোরিন ঘ. অক্সিজেন
উত্তর: গ. ক্লোরিন
১৩. ইউরিক এসিড কোথায় তৈরি হয়?
ক. যকৃতে খ. দেহকোষে
গ. রেনাল ধমনিতে ঘ. বৃক্কে
উত্তর: ক. যকৃতে
১৪. আমিষে শতকরা কতভাগ নাইট্রোজেন থাকে?
ক.২০ খ. ১৮
গ.১৭ ঘ. ১৬
উত্তর: ঘ. ১৬
১৫. মানুষের স্থায়ী দাঁত কয় ধরনের?
ক. ৪ খ. ৩
গ. ২ ঘ. ১
উত্তর: ক. ৪
১৬. পাকস্থলীর বৈশিষ্ট্য–
ক. প্রাচীর পুরু পেশীবহুল
খ.আকৃতি গোলাকার, পেশীবহুল
গ. খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে না
ঘ. প্রাচীরে কোনো গ্রন্থিথাকে না
উত্তর: ক. প্রাচীর পুরু পেশীবহুল
১৭. আমাদের খাদ্য তালিকায় কমপক্ষে কতভাগ প্রাণিজ আমিষ থাকা দরকার?
ক. ২৫ খ. ২০
গ. ১৫ ঘ. ১০
উত্তর: খ. ২০
১৮. একজন পূর্ণবয়স্কমানুষের দৈহিক ওজনের শতকরা কতভাগ পানি থাকা প্রয়োজন?
ক. ২০-৪০ খ. ৩০-৫০
গ. ৪৫-৬০ ঘ. ৫৫-৭০
উত্তর: গ. ৪৫-৬০
১৯. নিস্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিনে পরিণত করে কোনটি?
ক. হাইড্রোক্লোরিক এসিড খ. কার্বোক্সিপেপটাইডেজ
গ. অ্যামাইলেজ ঘ. লাইপেজ
উত্তর: ক. হাইড্রোক্লোরিক এসিড
২০. অগ্ন্যাশয় রসে কোন এনজাইমগুলো থাকে?
ক. লাইপেজ, ল্যাকটেজ, সুক্রোজ
খ. অ্যামাইলেজ, লাইপেজ, মিউসিন
গ. ট্রিপসিন, অ্যামাইলেজ, লাইপেজ
ঘ. ল্যাকটেজ, ট্রিপসিন, লাইপেজ
উত্তর: গ. ট্রিপসিন, অ্যামাইলেজ, লাইপেজ
২১. মানবদেহের মিশ্রগ্রন্থি নিঃসরণ করে কোনটি?
ক. TSH খ. থাইমক্সিন
গ. টায়ালিন ঘ. অ্যামাইলেজ
উত্তর: ঘ. অ্যামাইলেজ
২২. তমাল প্রতিবেলা ৫০ গ্রাম চাউলের ভাত, ৫০ গ্রাম মাংস ও ২০ গ্রাম মাখন খেলে সে কত কিলোক্যালরি শক্তি গ্রহণ করে?
ক. ৫০০ খ. ৫৫০
গ. ৫৭০ ঘ. ৫৮০
উত্তর: ঘ. ৫৮০
২৩. চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন নিচের কোনটিতে পাওয়া যায়?
ক. মলা মাছ খ. কাঁচামরিচ
গ. কলিজা ঘ. বাঁধাকপি
উত্তর: ক. মলা মাছ
২৪. খাদ্য পিরামিডের নিচের স্তরে খাদ্য উপাদান কোনটি?
ক. ভিটামিন খ. শর্করা
গ. স্নেহ ঘ. আমিষ
উত্তর: খ. শর্করা
২৫. নিচের কোন খাদ্যের শ্বেতসার সহজে হজম হয়?
ক. ভাত ও সিদ্ধ আলু খ. গম ও চাল
গ. আলু ও আটা ঘ. ভাত ও আটা
উত্তর: ক. ভাত ও সিদ্ধ আলু
২৬. উদ্ভিদের মূল বর্ধনের প্রয়োজনীয় উপাদান কোনটি?
ক. পটাশিয়াম খ. ফসফরাস
গ. আয়রন ঘ. ম্যাংগানিজ
উত্তর: ক. পটাশিয়াম
২৭. আমাশয় রোগের জীবাণু কোনটি?
ক. Shigella খ. Streptococcus
গ. Pneumococcus ঘ. Mycobacterium
উত্তর: ক. Shigella
২৮. শস্য স্যালাইন তৈরি করতে কোনটির গুড়া ব্যবহার করা হয়?
ক. গম খ. যব
গ. ভুট্টা ঘ. চাল
উত্তর: ঘ. চাল
২৯. রাহেলার উচ্চতা ১৫৬ সে.মি. এবং দৈহিক ওজন ৫৮ কেজি। তার বি.এম.আই. এর মান কত?
ক. ১৯.৬৭ খ. ২৩.৮৩
গ. ৩১.২৯ ঘ. ৩৭.১৮
উত্তর: খ. ২৩.৮৩
৩০. কোনটির অভাবে উদ্ভিদের পাতা বেগুনি রং ধারণ করে?
ক. ফসফরাস খ. নাইট্রোজেন
গ. পটাশিয়াম ঘ. ম্যাগনেসিয়াম
উত্তর: ক. ফসফরাস
৩১. নিবিড় পরিশ্রমী, প্রতিদিন প্রচুর খেলাধুলা করে। তার বিএমআর মান ১৭৮৭.৫ কিলোক্যালরি হলে, তার দৈনিক ক্যালরি চাহিদা কত?
ক. ৩০৮৩.৪ কিলোক্যালরি
খ. ২৭৭০.৬ কিলোক্যালরি
গ. ২৪৫৭.৮ কিলোক্যালরি
ঘ. ২১৪৫.০ কিলোক্যালরি
উত্তর: ক. ৩০৮৩.৪ কিলোক্যালরি
৩২. অধিকমাত্রায় কোলেস্টেরল থাকে কোন খাদ্যে?
ক. চিংড়ি খ. ইলিশ
গ. রুই ঘ. পাবদা
৩৩. উদ্ভিদের ম্যাক্রোউপাদান কোনটি?
ক. Cu খ. Cl
গ. Ca ঘ. Mo
উত্তর: গ. Ca
৩৪. ভাইব্যাক রোগ সৃষ্টি হয় কোনটির অভাবে?
ক. বোরন খ. সালফার
গ. ফসফরাস ঘ. লৌহ
উত্তর: খ. সালফার
৩৫. ১০০ গ্রাম পরিমাপের নিচের খাদ্য থেকে ক্যালরি বেশি পাওয়া যাবে কোনটি থেকে?
ক. ভাত খ. চিনি
গ. মাছ ঘ. চর্বি
উত্তর: ঘ. চর্বি
৩৬. বিএমআই এর মানদণ্ডে সুস্বাস্থ্যের আদর্শ মান কোনটি?
ক. ১৬.৫-১৮.৪ খ. ১৮.৫-২৪.৯
গ. ২৫-২৯.৯ ঘ. ৩০-৩৪.৯
উত্তর: খ. ১৮.৫-২৪.৯
৩৭. ক্লোরোফিলের প্রধান উপকরণ নিচের কোনগুলো?
ক. আয়রন, ফসফরাস খ. পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম
গ. নাইট্রোজেন, ম্যাগনেসিয়াম ঘ. সালফার, বোরন
উত্তর: গ. নাইট্রোজেন, ম্যাগনেসিয়াম
৩৮. পিত্তথলি কোন নালির মাধ্যমে ডিওডেনামে প্রবেশ করে?
ক. পিত্তনালী খ. যকৃত-অগ্ন্যাশয় নালী
গ. আন্ত্রিক নালী ঘ. অগ্ন্যাশয় নালী
উত্তর: খ. যকৃত-অগ্ন্যাশয় নালী
৩৯. উদ্ভিদের পাতার সবুজ রং হালকা হয়ে যায় কোনটির অভাবে?
ক ক্যালসিয়াম খ. ফসফরাস
উত্তর: ঘ. ম্যাগনেসিয়াম
৪০. ক্লোরোপ্লাস্ট গঠন ও সংরক্ষণের জন্য কোনটি প্রয়োজন?
ক. দস্তা খ. ফসফরাস
গ. ম্যাংগানিজ ঘ. তামা
উত্তর: গ. ম্যাংগানিজ
৪১. অ্যালবুমিন একটি—
ক. হরমোন খ. ভিটামিন
গ. আমিষ ঘ. এন্টিবডি
উত্তর: গ. আমিষ
৪২. রহিমের উচ্চতা ১.২৫ মিটার এবং ওজন ৪০ কেজি রহিমের বিএমআই কত?
গ. ২৪.৬ ঘ. ২৩.৬
উত্তর: খ. ২৫.৬
৪৩. কোনটির মধ্যে উপাদান হিসাবে লৌহ (Fe) থাকে না?
ক. লাল শাক খ. ডিমের কুসুম
গ. কচু শাক ঘ. কলিজা
উত্তর: ক. লাল শাক
৪৪. ক্লোরোফিলের প্রধান উপাদান কোনটি?
ক. Zn খ. Fe
গ. Na ঘ. Mg
উত্তর: ঘ. Mg
৪৫. ১.৫০ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট ৫০ কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির BMI কত?
ক. ২২.২২ খ. ২৪.২০
গ. ২৬.২২ ঘ. ২৮.২০
উত্তর: ক. ২২.২২
৪৬. কোথায় পাকমন্ড তৈরি হয়?
ক. যকৃতে খ. ক্ষুদ্রান্ত্রে
গ. পাকস্থলিতে ঘ. বৃহদন্ত্রে
উত্তর: গ. পাকস্থলিতে
৪৭. মিসেস সালমার ওজন ৭০ কেজি, উচ্চতা ১৫ সেমি এবং বয়স ৪০ বছর। তিনি মোটেও পরিশ্রম করেন না। তাহলে তার দৈনিক ক্যালরি চাহিদা কত হবে?
ক. ১৩৮২.২ খ. ১৬৫৮.৪
গ. ১৬৮২ ঘ. ১৬৮২.৪
উত্তর: খ. ১৬৫৮.৪
৪৮. কোনো ব্যক্তির BMI যদি ২৭.৭৮ হয় তিনি বি.এম.আই মানদণ্ডের কোন অবস্থানে থাকবেন?
ক. সুস্বাস্থ্যের আদর্শ মান খ. শরীরের অতিরিক্ত ওজন
গ. মোটা হওয়ার ১ম স্তর ঘ. মোটা হওয়ার ২য় স্তর
উত্তর: খ. শরীরের অতিরিক্ত ওজন
৪৯. কোনটির মূল ও কাভের বৃশ্বির জন্য ক্লোরিন প্রয়োজন?
ক. টমেটো খ. সূর্যমুখী
গ. সুগারবিট ঘ. আলু
উত্তর: গ. সুগারবিট
৫০. একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দিনে কত গ্রাম চর্বির প্রয়োজন?
ক. ৩০-৪০ খ. ৪০-৫০
গ. ৫০-৬০ ঘ. ৬০-৭০
উত্তর: গ. ৫০-৬০
৫১. ক্লোরোফিলের প্রধান উপকরণ হচ্ছে–
ক. Ca ও Fe খ. Na ও Mg
গ. Fe ও N ঘ. Mg ও N
উত্তর: ঘ. Mg ও N
৫২. কোনটির অভাবে ডাইব্যাক রোগ হয়?
ক. Ca খ. K
গ. Fe ঘ. S
উত্তর: ঘ. S
৫৩. মিশ্র আমিষে অ্যামাইনো এসিড থাকে কত?
ক. ৬ খ. ৮
গ. ১০ ঘ. ১৪
উত্তর: খ. ৮
৫৪. ১৫ কিলোক্যালরি = কত জুল?
ক. ৬২,৭০০ খ. ৬২,৮০০
গ. ৬২,৯০০ ঘ. ৬৩,৭০০
উত্তর: ক. ৬২,৭০০
৫৫. পিত্ত রসের বর্ণ কোনটি?
ক. লাল খ. বাদামী
গ. গোলাপী ঘ. গাঢ় সবুজ
উত্তর: ঘ. গাঢ় সবুজ
৫৬. কোনটি পরিপাকতন্ত্রের অংশ নয়?
ক. ডিওডেনাম খ. লিভার
গ. ইলিয়াম ঘ. বৃক্ক
উত্তর: ঘ. বৃক্ক
৫৭. কোনটি মানব দেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি?
ক. অগ্ন্যাশয় খ. লালাগ্রন্থি
গ. যকৃত ঘ. গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি
উত্তর: গ. যকৃত
৫৮. দ্বি–শর্করার উৎস কোনটি?
গ. দুধ ও মধু ঘ. আটা ও চিনি
উত্তর: খ. চিনি ও দুধ
৫৯. টক্সিক গলগণ্ডর বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. বুক ধড়ফড় করা খ. আলসেমী
গ. গাঁট ফুলে যাওয়া ঘ. বক্ষদেশ সরু হয়ে যায়
উত্তর: বুক ধড়ফড় করা
৬০. গ্যাস্ট্রিক আলসার মারাত্মক হলে কোনটি ঘটে?
ক. পাতলা পায়খানা খ. মাথা ব্যথা
গ. বমি ঘ. কোষ্ঠকাঠিন্য
উত্তর: গ. বমি
৬১. লালা রসের এনজাইমের নাম কী?
ক. পেপসিন খ. মিউসিন
গ. টায়ালিন ঘ. ট্রিপসিন
উত্তর: গ. টায়ালিন
৬২. খাদ্য পিরামিডের সবচেয়ে নিচের স্তরের খাবার কোনটি?
ক. ঘি খ. মাছ
গ. আপেল ঘ. রুটি
উত্তর: ঘ. রুটি
৬৩. রাসায়নিক গবেষণাগার বলা হয় কোনটিকে?
ক. যকৃত খ. অগ্ন্যাশয়
গ. পিত্তথলি ঘ. পাকস্থলি
উত্তর: ক. যকৃত
৬৪. দুধের শর্করাকে কী বলে?
ক. ল্যাকটোজ খ. সুক্রোজ
গ. গ্লুকোজ ঘ. গ্যালাকটোজ
উত্তর: ক. ল্যাকটোজ
৬৫. পেপসিন কাজ করে কোনটির উপর?
ক. আমিষ খ. শর্করা
গ. চর্বি ঘ. খনিজ দ্রব্য
উত্তর: ক. আমিষ
৬৬. কোন গ্রন্থি ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত করে?
ক. যকৃত খ. অগ্ন্যাশয়
গ. গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি ঘ. আন্ত্রিক গ্রন্থি
উত্তর: খ. অগ্ন্যাশয়
৬৭. খাদ্য উপাদানের প্রধান কাজ হলো—
i. দেহের বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয়পূরণ করে
ii. খাদ্য পরিপাক করে
iii. দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৬৮. খাদ্য সংরক্ষণে অনুমোদিত রাসায়নিক পদার্থ হলো—
i. সোডিয়াম বাই সালফেট
ii. ডিডিটি
iii. ক্যালসিয়াম এপারনেট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৬৯. সাধারণত পাকস্থলিতে পরিপাক হয় না–
i. শর্করা জাতীয় খাদ্যের
ii. আমিষ জাতীয় খাদ্যের
iii. স্নেহ জাতীয় খাদ্যের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৭০. পরিশ্রমী পূর্ণবয়স্ক মহিলার সুষম খাদ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োজন–
i. দুধ ২০০ গ্রাম
ii. পাতাযুক্ত শাক ১৫০ গ্রাম
iii. আমিষ ২৫ গ্রাম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৭১. সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য হলো–
i. আমিষ, চর্বি ও শর্করার অনুপাত হবে ৪ : ১ : ৪
ii. সুষম খাদ্য অবশ্যই সহজপাচ্য হতে হবে
iii. খাদ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও খনিজ লবণ থাকতে হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭২. যকৃত রসের উপাদান হলো—
i. পানি
ii. কোলেস্টেরল
iii. পিত্তলবণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৩. ফসফরাস–
i. মূলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
ii. ATP-এর গাঠনিক উপাদান
iii. কোষ বিভাজনে ভূমিকা রাখে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৭৪. দাঁতে অংশ–
i. মুকুট
ii. মূল
iii. গ্রীবা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৫. রিকেটস এর ক্ষেত্রে সত্য হলো –
i. এটি ভাইরাস জনিত রোগ
ii. এ রোগ প্রতিরোধে দুধ মাখন ও ডিম খাওয়া দরকার
iii. গিঁট ফুলে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৭৬. আদর্শ খাদ্য পিরামিডের বৈশিষ্ট্য হলো—
i. পিরামিডের শীর্ষে রয়েছে স্নেহ
ii. পিরামিডের সর্ব নিম্নস্তরে রয়েছে শর্করা
iii. সবচেয়ে বেশি খাওয়া উচিত শর্করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৭. রক্তশূন্যতার লক্ষণ কোনটি?
i. মাথা ব্যথা
ii. নিদ্রাহীনতা
iii. খাবারের অরুচি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৮. ক্লোরোসিস হয়–
i. নাইট্রোজেন ও সালফারের অভাবে
ii. সালফার ও আয়রনের অভাবে
ii. নাইট্রোজেন ও ম্যাগনেশিয়ামের অভাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৭৯. ফসফরাসের অভাবের লক্ষণ–
i. কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজন হ্রাস পায়
ii. পাতা, ফুল, ফল ঝরে যায়
iii. পাতায় মৃত অঞ্চল দেখা যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৮০. লৌহের অনুপস্থিতিতে–
i. ক্লোরোফিল সংশ্লেষণ ত্বরান্বিত হয়
ii. পাতা হলুদ হয়ে যায়
iii. সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৮১. সালফারের অভাবে–
i. পাতায় ক্লোরোসিস হয়
ii. ডাইব্যাক রোগ হয়
iii. কাণ্ড খসখসে হয়ে ফেটে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৮২. ফসফরাসের ক্ষেত্রে—
i. এর অভাবে কাণ্ডের শীর্ষ মরে যায়
ii. এর অভাবে কান্ড খর্বাকার হয়
iii. এর অভাবে পাতা বিকৃত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৮৩. ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার–
i. মাছের তেল
ii. লাল আটা
iii. ডিম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৮৪. রাফেজ –
i. মূলত সেলুলোজ ও লিগনিন
ii. জটিল শর্করা
ii. মানুষ হজম করতে পারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৮৫. কৃমিরোগের ক্ষেত্রে–
i. পেটে ব্যথা হয়
ii, বারবার বমি হয়
ii. হাত পা ফুলে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৮৬. অগ্ন্যাশয় রসে উৎপন্ন উপাদান হলো—
i. অ্যামাইলেজ
ii. ট্রিপসিন
iii. পেপসিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
উদ্দীপকের আলোকে ৮৭ ও ৮৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮৭. ‘P’ অংশে কোনটি আংশিক পরিপাক ঘটবে?
ক. ডালডা খ. আটা
গ. আলু ঘ. মাছ
উত্তর: ঘ. মাছ
৮৮. P ও Q-
i. একই তন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত
ii. অন্তঃপ্রাচীরে কলামনার কোষ থাকে
iii. উভয়ই শোষণে অংশ নেয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
ছকের আলোকে ৮৯ ও ৯০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

৮৯. ছকে কোন উপাদানটি কাণ্ড দুর্বল হওয়া রোধ করে?
ক. A খ. B
গ. C ঘ. D
উত্তর: গ. C
৯০. ছকে উল্লিখিত A, B ও D উপাদানগুলোর অভাবে–
i. উদ্ভিদের বৃদ্ধি কমে যায়
ii. উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়
iii. পাতায় মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
উদ্দীপকের আলোকে ৯১ ও ৯২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
ইমরানের বয়স ৩৫ বছর। উচ্চতা ১৬০ সেমি, ওজন ৯২ কেজি। সে কোনো পরিশ্রম করে না।
৯১. ইমরানের BMI কত?
ক. ৫৭.৫০ খ. ৩৫.৯৩
গ. ২.৬২ ঘ. ১.৭৩
উত্তর: খ. ৩৫.৯৩
৯২. ইমরানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য–
i. পরিমিত খাদ্য গ্রহণ
ii. এক্সারসাইজ করা
iii. দৈনিক ২২৬৬ ক্যালরি গ্রহণ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপক থেকে ৯৩ ও ৯৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
রিনার উচ্চতা ১৫০ সে.মি. এবং ওজন ৪০ কেজি।
৯৩. রিনার BMI কত?
ক. ১৬.৭৭ খ. ১৭.৭৮
গ. ১৮.৭৭ ঘ. ১৯.৭৮
উত্তর: খ. ১৭.৭৮
৯৪. রিনার BMI আদর্শ মানে উন্নিত করতে হলে তাকে –
i. পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
ii. ওজন বাড়াতে হবে
iii. অতিরিক্ত ব্যায়াম করতে হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
চিত্রটি লক্ষ করো এবং ৯৫ ও ৯৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।

৯৫. উদ্দীপকের A চিহ্নিত অংশ হতে নিঃসৃত রস–
i. কাইমকে এসিডিক হতে ক্ষারকে পরিণত করে
ii. কাইমকে নিরপেক্ষ করে
iii. চর্বির ভাঙন ঘটায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
৯৬. B চিহ্নিত অংশ হতে কোন হরমোন নিঃসৃত হয়?
ক. ইস্ট্রোজেন খ. প্রোল্যাক্টিন
গ. ইনসুলিন ঘ. থাইরক্সিন
উত্তর: গ. ইনসুলিন
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ড. রায়হান দিনের অধিকাংশ সময় গবেষণার কাজে গবেষণাগারে সময় কাটান। এতে তার ওজন বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে তার ছোটভাই জহির দেশের জাতীয় যুব ফুটবল দলের একজন নিয়মিত খেলোয়াড়। সেজন্য তাকে প্রতিদিন অনেক সময় ধরে শারীরিক কসরত ও খেলাধুলা করতে হয়।
ক. কোন জাতীয় খাদ্য দেহে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে?
খ. উচ্চমানের আমিষ বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. জহিরের খাদ্য তালিকায় কোন ধরনের খাবার অধিক থাকা দরকার? কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জহিরের খাদ্য তালিকার কোন ধরনের খাবার ড. রায়হানের জন্য প্রযোজ্য নয়? বিশ্লেষণপূর্বক মতামত দাও।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আমিষ জাতীয় খাদ্য দেহে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে।
খ. উচ্চমানের আমিষ বলতে প্রাণিজ আমিষকে বোঝায়। মাছ, মাংস, ডিম, পনির, ছানা, যকৃৎ ইত্যাদি প্রাণিজ আমিষ। কারণ এসব আমিষে দেহের প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিডগুলো পাওয়া যায়। এসব আমিষের জৈবমূল্য বেশি তাই এদের উচ্চমানের আমিষ বলা হয়।
গ. জহির দেশের জাতীয় যুব ফুটবল দলের একজন নিয়মিত খেলোয়াড়। সেজন্য তাকে প্রতিদিন অনেকসময় ধরে শারীরিক কসরত ও খেলাধুলা করতে হয়।
এ এজন্য আমিষের জন্য জহিরের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন অধিক পরিমাণ শর্করা ও আমিষ এবং কিছু পরিমাণ স্নেহ জাতীয় খাদ্য থাকা অপরিহার্য। পুষ্টিবিদদের মতে মানুষের দৈনিক ক্যালরি চাহিদার অন্তত ৫৮-৬০% শর্করা জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করা উচিত। তাই একজন পূর্ণবয়স্কব্যক্তির দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ গ্রাম শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এতে সে ১২০০-১৮০০ ক্যালরি শক্তি পাবে।
দেহ গঠনে আমিষ অপরিহার্য। একজন স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্কব্যক্তির আমিষের চাহিদা তার দৈহিক ওজনের প্রতি কিলোগ্রামের জন্য ১ গ্রাম অর্থাৎ একজনের ওজন যদি ৫৭ কেজি হয়; তার প্রাত্যহিক আমিষের চাহিদা হবে ৫৭ গ্রাম। এ হিসাবে প্রতিদিন ১০০ গ্রাম আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে ভালো থাকা যায়। এজন্য জহিরের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন একটি ডিম, মাংস ও দুধজাতীয় খাদ্য থাকা প্রয়োজন।
একজন বয়স্কব্যক্তির মোট ক্যালরি চাহিদার ১০-১৫% স্নেহ পদার্থ থেকে আসা উচিত। এজন্য জহিরের খাদ্য তালিকায় দৈনিক ১৫ গ্রাম প্রাণিজ ও ৫ থেকে ১০গ্রাম উদ্ভিজ স্নেহপদার্থ থাকা প্রয়োজন।
এছাড়া জহিরের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে মৌসুমি শাকসবজি, ফলমূল থাকা অপরিহার্য।
ঘ. জহিরের খাদ্য তালিকাভুক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য ভাত, রুটি, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার যেমন : দুধ, মাখন, পনির, চর্বিযুক্ত মাংস ড. রায়হানকে পরিমিত পরিমাণের থেকে কম খেতে হবে।
একজন পরিশ্রমী ব্যক্তির শক্তি চাহিদার পরিমাণ অফিসে বসে কাজ করা ব্যক্তির চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এ কারণে হালকা শ্রমে লিপ্ত ব্যক্তিদের শর্করা, তেল ও চর্বিজাতীয় খাদ্য কম পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। গবেষণাগারে বসে বসে কাজ করার জন্য ড. রায়হানের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাদ্য স্বাভাবিক মানুষের যা দরকার তার থেকে তাকে কম খেতে হবে।
যদি ড. রায়হান বেশি পরিমাণে শর্করা খান তাহলে তা তার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হবে কারণ এ ধরনের খাদ্যে ক্যালরি বেশি। এ ছাড়া স্নেহ জাতীয় খাদ্য দুধ, মাখন, চর্বিযুক্ত মাংস যদি তিনি বেশি খান তাহলে তা তাঁর পেশিতে ও ত্বকে এমনকি রক্তনালিতে চিনি জমা হয়ে দেহে নানা জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
সুতরাং জহিরের খাদ্য তালিকার অধিক শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাদ্য ডা. রায়হানের জন্য প্রযোজ্য নয়।
প্রশ্ন– ২ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ইরফান আলী লক্ষ করলেন তার বাগানের গাছগুলোর মধ্যে ঘাসজাতীয় গাছের পাতা হলুদ হয়ে গেছে এবং ফুলগাছের পাতা, ফুল ও কুঁড়ি ঝরে যাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে তিনি একজন উদ্যানতত্ত্ববিদের শরণাপন্ন হলেন। তিনি তাকে তার বাগানে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় কিছু উপাদান সরবরাহের পরামর্শ দিলেন।
ক. মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট কী?
খ. উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. ইরফান আলীর বাগানের ঘাসজাতীয় উদ্ভিদের সমস্যার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উদ্যানতত্ত্ববিদের পরামর্শ মূল্যায়ন কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব খনিজ উপাদান খুব সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হয় সেগুলোই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট।
খ. উদ্ভিদের প্রায় ৬০টির মতো অজৈব উপাদান শনাক্ত করা হয়েছে। এ ৬০টির মধ্যে মাত্র ১৬টি উপাদান উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির শারীরবৃত্তীয় কাজ ও প্রজননের জন্য প্রয়োজন। এদের যেকোনো একটির অভাব হলে উদ্ভিদে সেটির অভাবজনিত লক্ষণ দেখা দেয়। এজন্য ১৬টি পুষ্টি উপাদানকে সমষ্টিগতভাবে উদ্ভিদের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান বলা হয়।
গ. উদ্ভিদের কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব হলে বিশেষ লক্ষণের দ্বারা উদ্ভিদ তা প্রকাশ করে। এ লক্ষণগুলোকে বলে খনিজ পুষ্টির অভাবজনিত লক্ষণ।
এ লক্ষণ দেখে আমরা বলতে পারি কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব হয়েছে। ইরফান আলীর বাগানের ঘাসজাতীয় উদ্ভিদগুলোর পাতা হলুদ বর্ণের হয়ে গেছে। এ ধরনের লক্ষণকে ক্লোরোসিস বলে। নাইট্রোজেন (N), ম্যাগনেসিয়াম (Mg) এবং লৌহ (Fe) এই তিনটি অথবা যেকোনো একটির অভাব হলে ক্লোরোসিস হতে পারে। নাইট্রোজেনের অভাবে পাতার ক্লোরোফিল সৃষ্টিতে বিঘ্ন ঘটে। ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরোফিলের গঠনগত উপদান। এর অভাবে ক্লোরোফিল সংশ্লেষিত হয় না। লৌহ ক্লোরোফিল সংশ্লেষণে সহায়তা করে কারণ এটি ইলেকট্রন বাহকের গঠনগত উপাদান।
সুতরাং ইরফান আলীকে একজন উদ্যানতত্ত্ববিদের পরামর্শ নিয়ে তার বাগানের ঘাসজাতীয় উদ্ভিদের সমস্যার কারণ জানতে হবে।
সুতরাং ইরফান আলীর বাগানের ঘাসজাতীয় উদ্ভিদের সমস্যার কারণ হলো ক্লোরোসিস। যা N, Mg এবং Fe এর অভাবজনিত কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ. উদ্ভিদে কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব হলে বিশেষ লক্ষণের মাধ্যমে উদ্ভিদ তা প্রকাশ করে। এ লক্ষণগুলোকে বলা হয় অভাবজনিত লক্ষণ। এ লক্ষণ দেখে বোঝা যায় উদ্ভিদে বা ফসলে কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব রয়েছে। ইরফান আলীর বাগানের ঘাস জাতীয় গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়াকে ক্লোরোসিস বলে। মাটিতে নাইট্রোজেন (N), ম্যাগনেসিয়াম (Mg) এবং লৌহ (Fe) এর অভাব হলে পাতায় ক্লোরোসিস লক্ষণ দেখা দেয়। তার ফুল গাছের পাতা, ফুল ও কুড়ি ঝরে পড়ছে। গাছের পাতা, ফুল ও কুড়ি ঝরে পড়া মাটিতে ফসফরাস (P) এর অভাবজনিত লক্ষণ।
উদ্দীপকে ইরফান আলী উদ্যানতত্ত্ববিদের শরণাপন্ন হয়ে তার বাগানের গাছগুলোর উপরোউল্লিখিত লক্ষণগুলো বলেন। লক্ষণগুলোর ভিত্তিতে উদ্যানতত্ত্ববিদ ইরফান আলীকে মাটিতে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় উপদান N, Mg, Fe ও P সরবরাহের পরামর্শ দেন।
প্রশ্ন–৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সাগর হঠাৎ একদিন লক্ষ করল যে, বাগানের কিছু কিছু গাছের পাতা হলুদ ও বেগুনি রং ধারণ করেছে। কিছু গাছের পাতায় মৃত অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে, কিছু গাছের ফুল ও ফল ঝরে যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের এসব সমস্যার কারণ ও সমাধানের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিলেন।
ক. জুল কী?
খ. পানির অপর নাম জীবন কেন?
গ. গাছগুলোতে দৃষ্ট লক্ষণগুলোর কারণ ও অভাব পূরণের উপায় চিহ্নিত কর।
ঘ. সাগরের বাগানের উদ্ভিদের পুষ্টিতে কোন উপাদানগুলোর ভূমিকা প্রবল বিশ্লেষণ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জুল খাদ্যশক্তির মূল্য নির্ণয়ের আন্তর্জাতিক একক।
খ. জীবন রক্ষার কাজে অক্সিজেনের পরেই পানির স্থান। দেহের পুষ্টির কাজে পানি অপরিহার্য। দেহের গঠন ও অভ্যন্তরীণ কাজ যেমন- রক্তসঞ্চালন, অক্সিজেন পরিবহন, খাদ্য উপাদান পরিবহন এবং দুষিত পদার্থ নির্গমন পানি ছাড়া চলতে পারে না। এজন্য পানির অপর নাম জীবন।
গ. গাছগুলোতে দৃষ্ট লক্ষণগুলোর কারণ ও অভাব পূরণের উপায় নিম্নরূপ :
১. গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার কারণ হলো নাইট্রোজেনের অভাব।
অভাব পূরণের উপায় : নাইট্রোজেন জাতীয় সার ব্যবহার করা।
২. পাতায় বেগুনি রং ধারণ এবং ফুল, ফল ঝরে যাওয়ার কারণ হলো ফসফরাসের অভাব।
অভাব পূরণের উপায় : টিএসপি সার ব্যবহার করা।
৩. পাতায় মৃত অঞ্চল সৃষ্টির কারণ হলো ফসফরাস ও পটাসিয়ামের অভাব।
অভাব পূরণের উপায় : টিএসপি এবং এমপি সার ব্যবহার করা।
ঘ. সাগরের বাগানের উদ্ভিদের পুষ্টিতে নাইট্রোজেন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফসফরাসের ভূমিকা বেশ প্রবল। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো :
১. নাইট্রোজেনের ভূমিকা : নাইট্রোজেনের অভাব হলে ক্লোরোফিল সৃষ্টি ব্যাহত হয়, আর ক্লোরোফিল সৃষ্টি বিঘ্নিত হলে খাদ্য প্রস্তুত বাধাপ্রাপ্ত হয়। খাদ্য প্রস্তুত বাধাপ্রাপ্ত হলে শ্বসন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে এবং শক্তি নির্গমন হ্রাস পায়।
২. ম্যাগনেসিয়ামের ভূমিকা : ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরোফিল অণুর একটি উপাদান। কাজেই এর অভাব হলে ক্লোরোফিল অণু সৃষ্টি এবং সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত সবই ব্যাহত হবে।
৩. পটাসিয়ামের ভূমিকা : উদ্ভিদের বহু জৈবিক ক্রিয়া বিক্রিয়ায় পটাসিয়াম সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এ জন্য উদ্ভিদের পুষ্টিতে এর বেশি প্রয়োজন হয়। কোষ বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদের বৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণ করে পটাসিয়াম।
৪. ফসফরাসের ভূমিকা : ফসফরাস জীবকোষের DNA, RNA, ATP, NADP প্রভৃতির গাঠনিক উপাদান। কাজেই এটি ছাড়া উদ্ভিদের পুষ্টি একেবারেই সম্ভব নয়।
উদ্ভিদের পুষ্টিতে উল্লিখিত খনিজ উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্যই ফসল ফলাতে নাইট্রোজেন (ইউরিয়া), পটাসিয়াম (মিউরেট অব পটাশ), ফসফরাস (ট্রিপল সুপার ফসফেট) প্রভৃতি সার জমিতে ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন– ৪ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রেশমা ইদানীং কিছুই খেতে চায় না। তার খাওয়ায় অরুচি এবং বমি বমি ভাব হয়। তার ত্বক খসখসে হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে। ডাক্তার তাকে ডিম ও দুধ বেশি করে খেতে বললেন।
ক. খাদ্য কী?
খ. পুষ্টি বলতে কী বোঝায়?
গ. ডাক্তার রেশমাকে উল্লিখিত খাবারগুলো খেতে বললেন কেন?
ঘ. ডাক্তারের পরামর্শমতো খাবার না খেলে পরবর্তীতে রেশমার আরও কী সমস্যা হতে পারে? বিশ্লেষণ কর।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীবের দেহ গঠন, ক্ষয়পূরণ, শক্তি উৎপাদন এবং বৃদ্ধি সাধনের জৈব উপাদান হলো খাদ্য।
খ. জীব পরিবেশ থেকে খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে যা পরিপাকের দ্বারা ভেঙে সরল উপাদানে পরিণত হয়। এসব সরল উপাদান দেহ শোষণ করে দেহগঠনে ও ক্ষয়পূরণে কাজে লাগায় একে পুষ্টি বলে।
গ. রেশমার দেহে আমিষের ঘাটতি দেখা যাওয়ায় ডাক্তার তাকে ডিম ও দুধ বেশি করে খেতে বললেন।
আমিষের অভাবে শিশুদের খাওয়ায় অরুচি হয়। ত্বক খসখসে ও রঙ নষ্ট হয়ে যায়। পেশি শীর্ণ ও দুর্বল হতে থাকে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে হলে বেশি করে আমিষ জাতীয় খাবার খেতে হয়। ডিম ও দুধ আমিষ জাতীয় খাদ্যের উত্তম উৎস।
এজন্য ডাক্তার রেশমাকে ডিম ও দুধ বেশি করে খেতে বললেন।
ঘ. ডাক্তারের পরামর্শমতো খাবার না খেলে পরবর্তীতে রেশমার আরও যেসব সমস্যা হতে পারে-
১. শরীর ক্রমশ শুকিয়ে অস্থিচর্মসার হয়ে পড়বে।
২. ঘন ঘন পেট খারাপ হতে থাকবে।
৩. হাত ও পা শীর্ণ হয়ে পাঁজরের হাড়গুলো স্পষ্ট দেখা যাবে।
৪. রক্তস্বল্পতার কারণে রেশমা খুব দুর্বল হয়ে পড়বে।
৫. শরীরের ওজন হ্রাস পাবে এবং দেহে পানি আসবে।
এসব লক্ষণ কোয়াশিয়রকর ও মেরাসমাস রোগের। ডাক্তারের পরামর্শমতো রেশমা ডিম ও দুধ বেশি করে না খেলে ক্রমশ এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারে।
প্রশ্ন– ৫ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অভির বয়স ৩০ বছর, উচ্চতা পাঁচ ফুট এবং ওজন ৯০ কেজি। কোনো পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করায় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস থাকায় বন্ধুরা তাকে ভোজনবিলাসী– অলস নামেই চেনে।
ক. রক্ষীকোষ কী?
খ. জটিল উদ্ভিদ কলা বলতে কী বোঝায়?
গ. অভির বিএমআই নির্ণয় কর।
ঘ. বিএমআই অনুযায়ী অভির আচরণ ও খাদ্যাভ্যাসে যেসব পরিবর্তন আনা উচিত বলে তুমি মনে কর সেগুলো লেখ।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক.পত্ররন্ধ্রের দুপাশের কোষ দুটি রক্ষীকোষ।
খ. উদ্ভিদে যে সমস্ত কলার কোষগুলো একই রকমের এবং কাজ একই রকম তাদের সরল কলা বলে।
কখন কোনো কলা একাধিক বিভিন্ন কোষ দ্বারা গঠিত হয় এবং তাদের কাজও ভিন্ন ভিন্ন হয় তখন তাদের জটিল কলা বলে। যেমন- উদ্ভিদের পরিবহন কলা জটিল কলা ফ্লোয়েম ও জাইলেম।
গ. আমরা জানি,
বিএমআই = দেহের ওজন (কেজি)/[দেহের উচ্চতা (মিটার)২]
এখানে, অভির ওজন ৯০ কেজি
উচ্চতা = ৫ ফুট = ৫ X ০.৩০৪৮ মিটার [.:. ১ ফুট = ০.৩০৪৮ মি.]
=১.৫২৪ মিটার
.:. অভির বিএমআই = ৯০/(১.৫২৪)২
= ৯০/২.৩২২২৫৭৬
= ৩৮.৭৫
ঘ. প্রাপ্ত বয়সে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য। সেজন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন। বিএমআই মানদণ্ডে সুস্বাস্থ্যের আদর্শ মান ১৮.৫২৪.৯, কিন্তুঅভির বিএমআই ৩৮.৭৫ যা বিএমআই মানদণ্ডে মোটা হওয়ার দ্বিতীয় স্তর। অভি কোনো পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করায় এবং অতিরক্ত ভোজনবিলাসী হওয়ায় তার বিএমআই অধিক বেড়ে যায়। এজন্য অভির পরিমিত খাদ্যগ্রহণ ও ব্যায়াম করা প্রয়োজন। এছাড়াও বিএমআই অনুযায়ী অভির আচরণ ও খাদ্যাভ্যাসে যেসব পরিবর্তন আনা উচিত সেগুলো হলো :
(১) উচ্চ প্রোটিনযুক্ত, ভাজাপোড়া, তেলযুক্ত এবং চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
(২) খাদ্যে আমিষ, চর্বি ও শর্করার অনুপাত হবে ৪:১:১।
(৩) খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও রাফেজ বা সেলুলোজ সরবরাহের জন্য খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণ ফল এবং টাটকা শাকসবজি খেতে হবে।
(৪) প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
(৫) নিয়মিত অধিক পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
(৬) শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি প্রতিদিন সকাল অথবা বিকালে এক ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা দৌড়াতে হবে বা ব্যায়াম করতে হবে।
প্রশ্ন– ৬ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
কাসেম সাহেব তার আট বছরের ছেলে বকুলের দৈহিক বৃদ্ধি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। বকুলের শারীরিক বৃদ্ধি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাকে বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়াতে শুরু করেন। তিনি নিজের এবং বকুলের, বকুলের দাদা ও দাদির খাদ্য তালিকায় ভিন্ন ধরনের খাবার রাখেন।
ক. মিশ্র খাদ্য কাকে বলে?
খ. সরল গলগণ্ড ও টক্সিক গলগণ্ড এর মধ্যে পার্থক্য কী?
গ. কাসেম সাহেব বকুলের খাদ্য তালিকা কীভাবে তৈরি করেন? বর্ণনা কর।
ঘ. কাসেম সাহেব পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন খাদ্য নির্বাচনের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. একের অধিক পুষ্টি উপাদানযুক্ত খাদ্যকে মিশ্র খাদ্য বলে।
খ. গলগন্ড রোগটি থাইরয়েড গ্রন্থির সাথে সম্পর্কিত। যখন থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায় তখন তাকে সরল গলগণ্ড বলে। অপরদিকে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যখন অতিমাত্রায় থাইরক্সিন হরমোন নিঃসৃত হয় তখন তাকে টক্সিক গলগণ্ড বলে।
গ. কাসেম সাহেব বকুলের খাদ্য তালিকা নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মেনে তৈরি করেন :
(১) বকুলের বয়স, গঠন ও শারীরিক অবস্থার দিকে লক্ষ রেখে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করে থাকেন।
(২) খাদ্যের ক্যালরিমূল্য বকুলের বয়স অনুযায়ী নিশ্চিত হচ্ছে কিনা সেদিকে তিনি লক্ষ রাখেন।
(৩) খাদ্যে দেহ গঠন ও ক্ষয়পূরণের উপযোগী উপাদান থাকে কিনা সেদিকে নজর রাখেন।
(৪) খাদ্যে যথাপযুক্ত ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানির উপস্থিতির দিকটি বিচার করেন।
(৫) খাদ্য তালিকা প্রস্তুতির সময় তিনি বকুলের খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর রাখেন।
(৬) পরিবারের আর্থিক সংগতির দিকটিও তিনি খাদ্য তালিকা প্রস্তুতির সময় মনে রাখেন।
ঘ. কাসেম সাহেব খাদ্য নির্বাচনের সময় পরিবারের সদস্যদের বয়স, কাজকর্ম, দৈহিক চাহিদা ইত্যাদি দিকগুলো লক্ষ রেখে খাদ্য নির্বাচন করে থাকেন। শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধদের দৈহিক চাহিদা একরকম হয় না।
আবার লিঙ্গ ও জীবিকা অনুযায়ী খাদ্য চাহিদা ভিন্ন হয়। প্রসূতি ও গর্ভবতী মায়েদের চাহিদা ভিন্ন থাকে। অসুস্থও দুর্বল ব্যক্তির জন্য ভিন্ন খাদ্য নির্বাচন করতে হয়। শিশুদের খাদ্যে আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাদ্য বেশি দরকার। কারণ এ সময় দেহ পুনর্গঠনের কাজ চলতে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাদ্য বেশি নির্বাচিত করতে হয়। বৃদ্ধদের দেহের সার্বিক পুষ্টির কথা বিবেচনা করে খাদ্য নির্বাচন করতে হয়। অসুস্থব্যক্তি সহজে যেন ক্যালরিমূল্য খাদ্য থেকে পেতে পারে এমন খাদ্য নির্বাচন করতে হয়।
অতএব, কাসেম সাহেব পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন খাদ্য নির্বাচন অত্যন্ত যথার্থ ও যৌক্তিক।
এসএসসি সকল বিষয় সাজেশন PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–৭ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মানুষের লালাগ্রন্থি কয় জোড়া?
খ. খাদ্যপ্রাণ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের চিত্রটি দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে ব্যাখ্যাসহ লেখ।
ঘ. D চিহ্নিত খাদ্য উপাদানটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিশ্লেষণ কর।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মানুষের লালাগ্রন্থিত ৩ জোড়া।
খ. জীবের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বিশেষ এক ধরনের খাদ্য উপাদান প্রয়োজন হয়। এ খাদ্য উপাদানকে খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন বলে। খাদ্যপ্রাণ সাধারণত খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে এবং বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে। প্রাণীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যপ্রাণ অপরিহার্য।
গ. উদ্দীপকের চিত্রটি একটি খাদ্য পিরামিড। এর শীর্ষে রয়েছে স্নেহ বা চর্বি জাতীয় খাদ্য আর সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে শর্করা।
সুষম খাদ্য তালিকায় শর্করা, শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ ও স্নেহ বা চর্বি জাতীয় খাদ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। একজন কিশোর বা কিশোরী, প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ বা মহিলার সুষম খাদ্য তালিকা লক্ষ করলে দেখা যায় যে, তালিকায় শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, শর্করাকে নিচু স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয় তাকে আদর্শ খাদ্য পিরামিড বলে।
আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খাবার তালিকায় যেসব খাবার থাকে তা চিত্রে পিরামিডের আকারে দেখানো হয়েছে। পিরামিডের অংশগুলো তার আকার অনুযায়ী নিচের দিকে বড়, উপরের দিকে ছোট। সবচেয়ে চওড়া অংশে ভাত, আলু, রুটি এসব। এগুলো বেশি করে খেতে হবে। তার পরের অংশে আছে শাকসবজি ও ফলমূল। এসব ভাত, রুটির চেয়ে কম খেতে হবে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, পনির, ছানা, দই আরও কম পরিমাণে খেতে হবে। তেল, চর্বি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার সবচেয়ে কম খাওয়া উচিত।
ঘ. D চিহ্নিত খাদ্য উপাদানটি হলো শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট। যা দেহে শক্তি উৎপাদন করে বলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুষ্টিবিদদের মতে, মানুষের দৈনিক ক্যালরি চাহিদার অন্তত ৫৮-৬০% শর্করা জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করা উচিত। দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ৪ থেকে ৬ গ্রাম শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ গ্রাম শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এতে ১২০০ থেকে ১৮০০ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যাবে। জীবদেহে বিপাকীয় কাজের জন্য যে শক্তি লাগে তা শ্বসনের সময় শর্করার খাদ্য জারণের ফলে উৎপন্ন হয়। প্রতি গ্রাম শর্করা জারণে ৪.১ কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়। দেহের পুষ্টিগত দিক দিয়ে শর্করার ভূমিকা অপরিহার্য। শর্করা দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে। আমরা প্রতিদিন শর্করা জাতীয় খাদ্যই সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করে থাকি।
দেহের তাৎক্ষণিক শক্তিমূল্য আমরা এ থেকেই পাই। এটি আঁশযুক্ত খাদ্য ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধক। রাইবোজ ও ডি- অক্সিরাইবোজ নামক পেন্টোজ শর্করা কোষে নিউক্লিক এসিড, ডিএনএ ও আরএনএ গঠনে অংশ নেয়। এছাড়া শর্করা থেকে প্রোটিন ও ফ্যাট সংশ্লেষ হয়। শর্কার অভাবে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়, শরীর অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
সুতরাং দেহের শক্তির জোগান দেওয়ার জন্য আমাদের প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন– ৮ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সজল দুধ, বাদাম, আটার রুটি, চর্বিযুক্ত মাংস, মধু ও সবজি খেয়ে বাড়ি থেকে বের হলো। সারাদিন না খেয়ে খেলাধুলা করল ও ঘুরে বেড়াল।
ক. মানব দেহের গড়ন ও চর্বির সূচককে কী বলে?
খ. দেহের পুষ্টির কাজে পানি অপরিহার্য কেন?
গ. সজলের গৃহীত শর্করা জাতীয় খাবারগুলোর শ্রেণিবিভাগ করে এর গুরুত্ব বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে কোন খাবারগুলো সজল দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পরেও শক্তি জোগায়? ব্যাখ্যা কর।
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মানব দেহের গড়ন ও চর্বির সূচককে বডি মাস ইনডেক্স (BMI) বলে।
খ. দেহের গঠন ও অভ্যন্তরীণ কাজ পানি ছাড়া চলতে পারে না বলে দেহের পুষ্টির কাজে পানি অপরিহার্য। দেহ কোষের গঠন ও প্রতিপালন পানি ছাড়া সম্ভব নয়। পানি ছাড়া দেহের কোনো রাসায়নিক ক্রিয়া চলতে পারে না। দেহে পানি দ্রাবক হিসেবে কাজ করে ফলে রক্ত সঞ্চালন সম্ভব হয়। পানি দেহের যাবতীয় দূষিত পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে। এজন্য দেহের পুষ্টি কাজে পানি অপরিহার্য।
গ. উদ্দীপকে সজলের গৃহীত খাবারগুলো হলো মধু ও আটার রুটি যা শর্করা জাতীয় এবং দেহে শক্তি উৎপাদন করে বলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মধুতে থাকে এক অণুবিশিষ্ট এক শর্করা গ্লুকোজ। এটি এক শর্করা যা দেহ সরাসরি শোষণ করে। আটার রুটিতে থাকে শ্বেতসার। গঠনের দিক দিয়ে এটি বহু অণুবিশিষ্ট শর্করা। এটি বিভিন্ন এনজাইম দ্বারা বিশিষ্ট হয়ে সরল শর্করা গ্লুকোজে পরিণত হয় এবং দেহ দ্বারা শোষিত হয়। অতিরিক্ত বহু শর্করা দেহে গ্লাইকোজেন হিসেবে সঞ্চিত থাকে। সুষম খাদ্য তালিকায় শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কারণ এটি শরীরের সিংহ ভাগ শক্তি জোগান দেয় এবং ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য হিসেবে দেহে গ্লাইকোজেন হিসেবে সঞ্চিত থাকে।
অতএব, মানব পরিপুষ্টির জন্য উল্লিখিত শর্করা দুটি অতিগুরুত্বপূর্ণ।
ঘ. সজল দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পরেও উদ্দীপকের আটার রুটি, দুধ, বাদাম ও মাংসের চর্বি সজলের দেহে শক্তি জোগায়। সজলের খাবারগুলোর মধ্যে দুধ, বাদাম ও চর্বিযুক্ত খাদ্যগুলো চর্বি জাতীয় খাদ্যের উৎস। চর্বি জাতীয় খাদ্য পাকস্থলিতে অনেকক্ষণ থাকে, তাই ধা পায় না। এছাড়া চর্বি দেহের ত্বকের নিচে জমা থাকে। দেহের এ সঞ্চিত চর্বি অনাহারের সময় শক্তি জোগান দেয়। শর্করা জাতীয় খাদ্য দেহের পেশিতে এবং যকৃতে গ্লাইকোজেন হিসেবে সঞ্চিত থাকে। অনাহারের সময় হাইকোজেন সরল শর্কায় পরিণত হয়ে শক্তির জোগান দেয়। তাই সজল দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলেও উদ্দীপকে উল্লিখিত সজলের খাবারগুলোর মধ্যে আটার রুটি, দুধ, বাদাম ও চর্বিযুক্ত মাংসের চর্বি তার শরীরে শক্তির জোগান দেয়।
প্রশ্ন – ৯ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : খাদ্যবস্তুপাকলিতে এসে জীবাণুমুক্ত হয়ে পরিপাক হয়। বর্তমানে বাণিজ্যিক রং, রাসায়নিক পদার্থ, ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের ফলে আমাদের পরিপাকে ব্যাঘাত ঘটছে। “প্রত্যেকেই সচেতন না হলে মানব জীবন হুমকির সম্মুখীন হবে”।
ক. ক্যালরি কী?
খ. রাফেজযুক্ত খাবার বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত খাদ্যনালীর অংশটিতে এনজাইমের কার্যক্রম ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি মূল্যায়ন কর।
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. তাপশক্তির একক হচ্ছে ক্যালরি।
খ. রাফেজ মূলত সেলুলোজ ও লিগনিন নির্মিত উদ্ভিদ কোষপ্রাচীর। রাফেজের প্রধান উৎস সম্পূর্ণ শস্য বীজ, সবজি, ফলের খোসা, শস্য দানার বহিরাবরণ, উদ্ভিদের ডাটা, ফল, মূল, পাতার আঁশ। খাদ্য তালিকায় এই ধরনের খাদ্যগুলোকে রাফেজযুক্ত খাদ্য বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত খাদ্যনালীর অংশটি হলো পাকস্থলী।
পাকস্থলির প্রাচীরে গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থিথেকে গ্যাস্ট্রিক রস নিঃসৃত হয় যা প্রধানত আমিষ জাতীয় খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। পাকলিতে পরিপাক সম্পন্ন হওয়ার জন্য গ্যাস্ট্রিক রসে প্রধানত তিনটি উপাদান থাকে। যা নিম্নরূপে পরিপাকে সহায়তা করে :
i. হাইড্রোক্লোরিক এসিড : হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্যে থাকা জীবাণু ধ্বংস করে এবং নিস্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিনে পরিণত করে। এছাড়া পেপসিনের কাজের জন্য অম্লীয় পরিবেশ তৈরি করে।।
নিস্ক্রিয় পেপসিনোজেন + HCl > সক্রিয় পেপসিন।
ii. পেপসিন : আমিষ পরিপাককারী এনজাইম যা আমিষকে ভেঙে পলিপেপটাইডে পরিণত করে।
পেপসিন+আমিষ > পলিপেপটাইড
iii. রেনিন : এ এনজাইম দুধের আমিষ জাতীয় খাদ্য ক্যাসিনকে প্যারাক্যাসিনে পরিণত করে। পেশীবহুল পাকস্থলীর সংকোচন প্রসারণে গ্যাস্ট্রিক রস খাদ্যের সাথে মিশে ক্রিয়া করে। ফলে খাদ্যবস্তু নরম ও তরল অবস্থায় পরিণত হয় যা কাইম বা পাকমণ্ড নামে পরিচিত।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি হলো, “প্রত্যেকেই সচেতন না হলে মানব জীবন হুমকির সম্মুখীন হবে” । উক্তিটি করা হয়েছে বাণিজ্যিক রঙ ও ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্যগ্রহণের ফলে পরিপাকের ব্যাঘাত ঘটার ফলে।
বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ যেমন ফরমালিন ও বিভিন্ন রকমের রঞ্জক পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে খাদ্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য। এসব মানব শরীরে প্রবেশ করলে নানা জটিল রোগ এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। বাণিজ্যিক রঙ যা কাপড় কিংবা রঙের কাজে ব্যবহার করা হয় তা বিভিন্ন প্রকার খাদ্য যেমন : আইসক্রিম, গোলা আইসক্রিম, লজেন্স, বেগুনি, বড়া ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ জাতীয় খাদ্য ধীরে ধীরে যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট করে নানাবিধ রোগের সৃষ্টি করছে। ফরমালিনে ডুবানো ফল, মাছ ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যে পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে না বলে বেশ টাটকা দেখা যায়। মজুদ খাদ্যে ও সবজিতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এর প্রভাবে মানুষ নানা রকম অসুস্থায় ভুগে থাকে। শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অতএব, দেখা যাচ্ছে খাদ্যে ফরমালিন ও অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানোর বিষয়টি সবারই জানা উচিত এবং এ বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত। এ কারণেই উদ্দীপকে শেষ বাক্যে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেকেই সচেতন না হলে উপরে উল্লিখিত রাসায়নিক পদার্থগুলোর প্রভাবে মানব জীবন হুমকির সম্মুখীন হবে।’
প্রশ্ন – ১০ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মাছ, মাংস, ডাল এগুলো আমিষ জাতীয় খাদ্য। খাদ্যের এ উপাদানটি দেহ গঠনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে।
ক. বিএমআই (BMI) কী?
খ. “ধমনি শিরা থেকে ভিন্নতর।”—ব্যাখ্যা কর।
গ. উল্লিখিত খাদ্য উপাদানটির খাদ্যমান কীভাবে বাড়ানো যায়? বর্ণনা কর।
ঘ. “উল্লিখিত খাদ্য উপাদানটির পরিপাক প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত জটিল”—বিশ্লেষণ কর।
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার সূচকই BMI (Body Mass Index) বা ভরসূচি।
খ. ধমনি শিরা থেকে ভিন্নতর। কারণ গঠনের দিক দিয়ে ধমনির প্রাচীর পুরু ও স্থিতিস্থাপক। এর নালি সরু এবং এর মধ্যে কপাটিকা থাকে না। অপরদিকে শিরার প্রাচীর কম পুরু, কম স্থিতিস্থাপক এবং কম পেশিময়। এদের নালিপথ চওড়া এবং কপাটিকা থাকে। কাজের দিক দিয়ে ধমনি কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণত O2, সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে। অপরদিকে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব শিরা CO2, সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে।
গ. উল্লিখিত খাদ্য উপাদানটি হলো আমিষ যার খাদ্যমান নিম্নলিখিত উপায়ে বাড়ানো যায়। মাছ ও মাংস প্রাণীজ আমিষ এবং ডাল উদ্ভিজ্জ আমিষ। কিন্তু উদ্ভিজ্জ আমিষ বিপাকে নিম্নমানের অ্যামিনো এসিড পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, দুই বা ততোধিক উদ্ভিজ্জ আমিষ একত্রে রান্না করে খাদ্যমান বাড়ানোর ফলে আট রকম আবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায়। বিভিন্ন আমিষের সংমিশ্রণে তৈরি এরুপ উপাদান মিশ্র আমিষ নামে পরিচিত। মিশ্র আমিষকে সম্পূরক আমিষও বলা হয়।
কীভাবে বিভিন্ন খাদ্যের সংমিশ্রণে সম্পূরক আমিষ তৈরি করা যায় তা নিচে বর্ণনা করা হলো-
১. চালের সাথে দুধ দিয়ে পায়েস, ক্ষীর ও ফিরনি রান্না করে।
২. ডাল ও চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে।
৩. ডাল, গম, মাংস মিশিয়ে হালিম রান্না করে।
৪. ভাতের সাথে মাছ ও ডাল পরিবেশন করে।
৫. দুধ ও রুটি খাওয়া যায়।
৬. রুটি ডাল খাওয়া।
এছাড়াও নানারকম ডাল সমপরিমাণ মিশিয়ে রান্না করে সম্পূরক আমিষ তৈরি করা যায়। এভাবে আমিষের খাদ্যমান বাড়ানো যায় ।
ঘ. মুখগহ্বরে আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাদ্যের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় না। মুখগহ্বর থেকে খাদ্যদ্রব্য পেরিস্ট্রালসিস প্রক্রিয়ায় অন্ননালির মধ্য দিয়ে পাকস্থলীতে প্রবেশ করে। পাকস্থলীতে খাদ্য আসার পর অন্তঃপ্রাচীরের গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি থেকে গ্যাস্ট্রিক রস ক্ষরিত হয়। গ্যাস্ট্রিক রসের প্রধান উপাদান হাইড্রোক্লোরিক এসিড পাকস্থলীর নিস্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিনে পরিণত করে এবং পেপসিনের সুষ্ঠু কাজের জন্য অম্লীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
নিস্ক্রিয় পেপসিনোজেন+ HCl > সক্রিয় পেপসিন
পেপসিন এক ধরনের এনজাইম যা আমিষকে ভেঙে দুই বা ততোধিক অ্যামাইনো এসিড দ্বারা তৈরি যৌগ গঠন করে যা পেপটাইড নামে পরিচিত।
আমিষ + পেপসিন > পলিপেপটাইড
পাকস্থলী থেকে আংশিক পরিপাককৃত খাদ্য ক্ষুদ্রান্ত্রের ডিওডেনামে প্রবেশ করে। এসময় অগ্ন্যাশয় থেকে ক্ষারীয় পাচকরস ডিওডেনামে আসে। এই পাচকরস খাদ্য মণ্ডের অম্লীয়ভাব প্রশমিত করে। অগ্ন্যাশয় রসে কয়েকটি এনজাইমের সাথে ট্রিপসিন নামক এনজাইম থাকে। এসময় আংশিক পরিপাককৃত আমিষ ক্ষুদ্রান্ত্রে ট্রিপসিনের সাহায্যে ভেঙ্গে অ্যামাইনোএসিড ও সরল পেপটাইডে পরিণত হয়।
ট্রিপসিন +পলিপেপটাইড > অ্যামাইনো এসিড + সরল পেপটাইড
সুতরাং, উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, উদ্দীপকে উল্লিখিত খাদ্য উপাদান আমিষের পরিপাক প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত জটিল। কারণ এটি পরিপাকের সময় প্রথমে অম্লীয় পরিবেশ এবং পরবর্তীতে ক্ষারীয় পরিবেশের প্রয়োজন হয়।
এসএসসি সকল বিষয় নোট PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–১১ : নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ক. পেষণ দাঁত কী?
খ. মানুষের লালাগ্রচ্ছিলোর অবস্থা লেখ।
গ. চিত্রের A অংশের কাজ লিখ।
ঘ. খাদ্য পরিপাকে চিত্রের B অংশের ভূমিকা বর্ণনা কর।
১১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে দাঁত খাদ্যবস্তু পেষণ ও চর্বণের কাজ করে তাই পেষণ দাঁত।
খ. মানুষের লালা গ্রন্থিত ৩ জোড়া। যথা-
i) দুই কানের নিচে ও সামনে- প্যারোটিড গ্রন্থি৷
ii) চোয়ালের নিচে সাব- ম্যাক্সিলারি।
iii) চিবুকের নিচে সাব- লিঙ্গুয়াল।
গ. চিত্রের A হল যকৃত। যা দেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি৷
চিত্র A এর কাজগুলো নিচে দেওয়া হলো :
i) অতিরিক্ত গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন হিসেবে জমা রাখে।
ii) অতিরিক্ত গ্লুকোজকে চর্বিতে পরিণত করে সঞ্চয় রাখে।
iii) পিত্তরস তৈরি করে পিত্তথলিতে জমা রাখে।
iv) প্লাজমা প্রোটিন তৈরি করে।
v) কোলেস্টেরল উৎপন্ন করে।
vi) স্নেহ জাতীয় পদার্থ শোষণে সাহায্য করে।
vii) রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
viii) পিত্তরস খাদ্যের অভাব প্রশমিত করে ও ক্ষারীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
ঘ. চিত্রের B হলো অগ্ন্যাশয়। অগ্ন্যাশয় একটি মিশ্রগ্রন্থি ৷ এটি একাধারে অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা গ্রন্থি৷
নিচে খাদ্য পরিপাকে অগ্নাশয়ের ভূমিকা বর্ণনা করা হলো :
অগ্নাশয়ের অধিকাংশ কোষ নালিযুক্ত যেগুলো অগ্নাশয় রসক্ষরণ করে। বহিঃক্ষরা গ্রন্থিরূপে এটি যেসব অগ্ন্যাশয় রস ক্ষরণ করে তাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্য পরিপাকের জন্যে বিভিন্ন এনজাইম (মলটেজ, অ্যামাইলেজ, ট্রিপসিন, ফসফোলাইপেজ, কোলেস্টেরল প্রভৃতি) থাকে। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস থেকে ইনসুলিন, গ্লুকাগন, গ্যাসট্রিন ও সোমাটোস্ট্যাটিন হরমোন ক্ষরণ করে। দেহের শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণে এসব হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।