সুভা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১]
‘সুভা’ গল্পের পরিচিতি
- রচয়িতা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
- উৎসগ্রন্থ— গল্পগুচ্ছ।
- কেন্দ্রীয় চরিত্র— সুভা।
- সুভার পোশাকি নাম —সুভাষিণী ।
- নামকরণ— কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম অনুসারে।
- বিষয়বস্তু— বাক্-প্রতিবন্ধী একটি মেয়ের নিজস্ব জগৎ ও সমাজ-বাস্তবতা ।
- সাহিত্যের রূপ বা আঙ্গিক— ছোটগল্প ।
* তথ্যকণিকা *
১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন — ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে।
২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন — ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ।
৩. রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান — কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি।
এসএসসি বাংলা সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম — মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহের নাম — প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।
৬. রবীন্দ্রনাথের ‘বনফুল’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় — মাত্র ১৫ বছর বয়সে।
৭. রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন — ১৯১৩ সালে ।
৮. রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার লাভ করেন — ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ।
৯. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন—১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগস্ট।
১০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন — ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২শে শ্রাবণ।
১১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম — ভানুসিংহ ঠাকুর
১২. ‘সুভা’ গল্পটির রচয়িতা — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৩. ‘সুভা’ গল্পটি সংকলিত হয়েছে — ‘গল্পগুচ্ছ’ থেকে।
১৪. ‘সুভা’ গল্পের সুভা হলো — বাকপ্রতিবন্ধী এক কিশোরী।
১৫. কিশোরী সুভার প্রতি প্রকাশ পেয়েছে — লেখকের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও মমত্ববোধ।
১৬. সুভার বাকপ্রতিবন্ধিতাকে তার মা মনে করেন— নিয়তির দোষ।
১৭. সুভা হলো — সুভাষিণী নামের সংক্ষিপ্ত রূপ।
১৮. সুভা মুখর থাকে— পোষা প্রাণীদের সাথে ।
১৯. প্রকৃতির কাছে সুভা পায় — মুক্তির আনন্দ।
এসএসসি সকল বিষেয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
২০. সুভা তার আশ্রয়ের জগৎ তৈরি করে নিয়েছে—প্রকৃতিতে।
২১. ‘সুভা’ গল্পে লেখক উম্মেষ ঘটাতে চেয়েছেন —প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি মমত্ববোধের।
২২. সুভার মতে তার জন্ম হয়েছে— বিধাতার অভিশাপরূপে।
২৩. পিতামাতার নীরব হৃদয়ভারের মতো ছিল— সুভা।
২৪. সুভার বাবার নাম— বাণীকণ্ঠ।
২৫. সুভাদের গ্রামের নাম— চণ্ডীপুর।
২৬. কাজকর্মে অবসর পেলে সুভা— নদীর তীরে গিয়ে বসত।
২৭. সুভার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল— দুটি গাভী, ছাগল এবং বিড়াল শাবক।
২৮. প্রতাপের প্রধান শখ ছিল— ছিপ ফেলে মাছ ধরা।
২৯. প্রতাপ সুভাকে ডাকত— ‘সু’ বলে।
৩০. সুভাদের চলে যাওয়া স্থির হয়— কলকাতায়।
৩১. গোসাইদের ছোট ছেলেটির নাম — প্রতাপ।
৩২. সুভার পিতামাতা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন— সুভার বিয়ে নিয়ে।
৩৩. গর্ভের কলঙ্ক বলতে বোঝায়—সন্তান হিসেবে কলঙ্ককে।
৩৪. ‘কিশলয়’ শব্দের অর্থ—গাছের নতুন পাতা।
৩৫. ‘অস্তমান’ শব্দের অর্থ— ডুবে যাচ্ছে এমন, ডুবন্ত
৩৬. ‘অনিমেষ’ শব্দের অর্থ— অপলক বা পলকহীন।
৩৭. ‘বিজন মূর্তি’ বলতে বোঝানো হয়েছে— প্রকৃতির কোলাহলমুক্ত আকর্ষণীয় দিককে।
৩৮. ‘তন্বী’ শব্দের অর্থ— ক্ষীণ ও সুগঠিত অঙ্গবিশিষ্ট।
৩৯. ধান থেকে চাল তৈরির লোকজ যন্ত্রকে বলা হয়— চেঁকি।
৪০. ‘তর্জমা’ শব্দের অর্থ— অনুবাদ।
৪১. ‘গণ্ডদেশ’ শব্দের অর্থ— গাল ।
৪২. শুক্লাদ্বাদশী’ বলতে বোঝায়— শুক্লপক্ষের চাঁদের দ্বাদশ দিন।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন–২. সুভার গ্রামের নাম কী?
উত্তরঃ সুভার গ্রামের নাম চণ্ডীপুর।
প্রশ্ন–৩. সুভার বাবার নাম কী?
উত্তর: সুভার বাবার নাম বাণীকণ্ঠ।
প্রশ্ন-৪. সুভা কী মনে করত?
উত্তর: সুভা মনে করত আমাকে সবাই ভুলিলে বাঁচি।
প্রশ্ন–৫. কে সুভার মর্যাদা বুঝত?
উত্তরঃ প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝত।
প্রশ্ন–৬. সুভার ওষ্ঠাধর ভাবের আভাসমাত্র কেমন করে কেঁপে উঠত?
উত্তর: সুভার ওষ্ঠাধর ভাবের আভাসমাত্র কচি কিশলয়ের মত কেঁপে উঠত।
প্রশ্ন–৭. গোসাইদের ছোট ছেলেটির নাম কী?
উত্তর: গোসাইদের ছোট ছেলেটির নাম প্রতাপ।
প্রশ্ন–৮. সুভার চোখের ভাষা কেমন ছিল?
উত্তরঃ সুভার চোখের ভাষা অসীম উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর ছিল।
প্রশ্ন–৯. সুভার সাক্ষাতে সকলে তার কী সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত?
উত্তর: সুভার সাক্ষাতে সকলে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত।
প্রশ্ন–১০. কী কারণে বাণীকণ্ঠ তার ছোট মেয়েটির নাম সুভাষিণী রাখেন?
উত্তর: বাণীকণ্ঠ তার বড় দুই মেয়ের নামের মিলের অনুরোধে ছোট মেয়েটির নাম সুভাষিনী রাখেন।
প্রশ্ন–১১. প্রতাপ কাদের ছোট ছেলে?
উত্তর: প্রতাপ গোসাইদের ছোট ছেলে।
প্রশ্ন–১২. প্রতাপের প্রধান শখ কী ছিল?
উত্তর: প্রতাপের প্রধান শখ ছিল ছিপ ফেলে মাছ ধরা।
প্রশ্ন–১৩. সুভা মনে মনে কী হতে চাইত?
উত্তর: সুভা মনে মনে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হতে চাইত।
প্রশ্ন–১৪. `কপোল’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘কপোল’ শব্দের অর্থ গাল।
প্রশ্ন–১৫. `সুভা‘ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
উত্তর: ‘সুভা’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ’ থেকে সংকলিত হয়েছে।
প্রশ্ন–১৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন–১৭, রবীন্দ্রনাথ কোন কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
প্রশ্ন–১৮. কত বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের ‘বনফুল‘ কাব্য প্রকাশিত হয়?
উত্তর: পনেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের ‘বনফুল’ কাব্য প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন–১৯. ‘শেষের কবিতা‘ কী ধরনের গ্রন্থ?
উত্তর: ‘শেষের কবিতা’ একটি উপন্যাস।
এসএসসি বাংলা সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন–২০. ‘বিচিত্র প্রবন্ধ‘ কার লেখা?
উত্তর: বিচিত্র প্রবন্ধ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।
প্রশ্ন–২১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বঙ্গাব্দে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে মৃত্যুণ করেন।
প্রশ্ন–২২. কে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন ও সঙ্গীহীন ছিল?
উত্তর: সুভা নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন ও সঙ্গীহীন ছিল ।
প্রশ্ন–২৩. কার মনে সুভা সর্বদাই জাগরূক ছিল?
উত্তর: পিতা-মাতার মনে সুভা সর্বদাই জাগরূক ছিল।
প্রশ্ন–২৪. প্রতাপের জন্য পান সাজিয়ে আনত কে?
উত্তর: প্রতাপের জন্য পান সাজিয়ে আনত সুভা।
প্রশ্ন–২৫. পিতা–মাতার নীরব হৃদয়ভারের মতো বিরাজ করছে কে?
উত্তর: পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভারের মতো বিরাজ করছে সুভা।
প্রশ্ন–২৬. প্রকৃতির বিবিধ শব্দ এবং বিচিত্র গতি কীসের ভাষা?
উত্তর: প্রকৃতির বিবিধ শব্দ এবং বিচিত্র গতি বোবার ভাষা।
প্রশ্ন–২৭. গোয়ালের গাভি দুটির নাম কী?
উত্তর: গোয়ালের গাভি দুটির নাম সর্বশী ও পাগুলি।
প্রশ্ন–২৮. সুভা দিনের ভেতরে কয়বার গোয়াল ঘরে যেত?
উত্তর: সুভা দিনের ভেতরে তিনবার গোয়াল ঘরে যেত।
প্রশ্ন–২৯. উন্নত শ্রেণির জীবের মধ্যে সুভার যে সঙ্গী জুটেছিল তার নাম কী?
উত্তর: উন্নত শ্রেণির জীবের মধ্যে সুভার যে সঙ্গী জুটেছিল তার নাম প্রতাপ ।
প্রশ্ন–৩০. কে মনে মনে বিধাতার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত?
উত্তর: সুভা মনে মনে বিধাতার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত।
প্রশ্ন–৩১. প্রতাপকে সাহায্য করতে চাইত কে?
উত্তর: প্রতাপকে সাহায্য করতে চাইত সুভা।
প্রশ্ন–৩২. কোন তিথির প্রকৃতি সুভার মতো একাকিনী?
উত্তর: পূর্ণিমা তিথির প্রকৃতি সুভার মতো একাকিনী।
প্রশ্ন–৩৩. বাণীকণ্ঠ ফিরে এসে কোথায় যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বলল?
উত্তর: বাণীকণ্ঠ ফিরে এসে কলকাতায় যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বলল।
প্রশ্ন–৩৪. কলকাতায় যাওয়ার প্রাক্কালে কোন তিথির রাত্রি ছিল?
উত্তর: কলকাতায় যাওয়ার প্রাক্কালে শুক্লাদ্বাদশীর রাত্রি ছিল।
প্রশ্ন–৩৫. মর্মবিদ্ধ হরিণী কার দিকে তাকায়?
উত্তর: মর্মবিদ্ধ হরিণী ব্যাধের দিকে তাকায়।
প্রশ্ন–৩৬. সুভার কয়টি বোন ছিল?
উত্তর: সুভার দুটি বোন ছিল।
প্রশ্ন–৩৭. ‘সুভা‘ গল্পে সুভাকে ‘সুভি‘ বলা হয়েছে কত বার?
উত্তর: ‘সুভা’ গল্পে সুভাকে ‘সুভি’ বলা হয়েছে একবার।
প্রশ্ন–৩৮. সুভা কী ধরনের প্রতিবন্ধী?
উত্তর: সুভা বাক্প্রতিবন্ধী।
প্রশ্ন–৩৯. বাণীকণ্ঠের ঘর কোথায়?
উত্তর: বাণীকণ্ঠের ঘর নদীর একেবারে উপরেই।
প্রশ্ন–৪০, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ।
প্রশ্ন–৪১. অবসর সময়ে সুভা কোথায় গিয়ে বসত?
উত্তর: অবসর সময়ে সুভা নদীতীরে গিয়ে বসত।
প্রশ্ন–৪২. ‘কিশলয়‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘কিশলয়’ শব্দের অর্থ গাছের নতুন পাতা।
প্রশ্ন–৪৩. শুক্লাদ্বাদশী‘ মানে কী?
উত্তর: ‘শুক্লাদ্বাদশী’ মানে শুক্লপক্ষের চাঁদের বারোতম দিন ।
প্রশ্ন–৪৪. ‘অনিমেষ‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: অনিমেষ শব্দের অর্থ অপলক।
প্রশ্ন–৪৫. ‘বিজনমূর্তি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: বিজনমূর্তি শব্দের অর্থ নির্জন অবস্থা।
প্রশ্ন–৪৬. ‘মূক‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘মূক’ শব্দের অর্থ বধির।
প্রশ্ন–৪৭. ‘নেত্রপল্লব‘ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: নেত্রপল্লব শব্দের অর্থ চোখের পাতা।
প্রশ্ন–৪৮. কে সুভাকে নিজের একটা লুটিস্বরূপ দেখতেন?
উত্তর: সুভার মা সুভাকে নিজের একটা লুটিস্বরূপ দেখতেন ।
প্রশ্ন–৪৯. প্রকৃতি কার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়?
উত্তর: প্রকৃতি সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১. ‘পিতা–মাতার নীরব হৃদয়ভার‘- কথাটি দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: প্রতিবন্ধী কন্যা সভার বিয়ে না হওয়ায় সে তার পিতামাতার নীরব। হৃদয়-ভার, অর্থাৎ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুভার বড়ো দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও তার বিয়ে হচ্ছে না। কারণ সুভা বাপ্রতিবন্ধী। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতামাতা তাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। প্রতিবন্ধী মেয়েকে কেমন করে বিয়ে দেবেন এই দুর্ভাবনা তাদের হৃদয়ে পাথরের মতো চেপে বসে।
প্রশ্ন–২. সুভার সঙ্গে সাধারণ বালক–বালিকারা খেলা করত না কেন?
উত্তর: বাক্যহীন বোবা সুভার চোখের ভাষা ও মনোভাব বুঝতে পারত না বলে সাধারণ বালক বালিকারা সুভার সঙ্গে খেলা করত না। বাক্প্রতিবন্ধী সুভার মুখে ভাব বৈ অন্য কোনো ভাষা ছিল না। তাই তার চোখের ভাষা ছিল উদার ও অতলস্পর্শ গভীর। বাক্যহীন সুভার মধ্যে বৃহৎ প্রকৃতির মতো একটা বিজন মহত্ত্ব বর্তমান ছিল। সাধারণ ছেলেমেয়েরা সুভার চোখের সেই ভাষা ও মনের ভাব বুঝতে পারত না। সে কারণে তারা সুভাকে এক প্রকার ভয় পেত। আর সেইজন্য তারা সুভার সঙ্গে খেলা করত না।
প্রশ্ন–৩. মাতা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন কেন?
উত্তর: কন্যার কোনো অপূর্ণতা দেখলে সেটা নিজের ত্রুটি ও লজ্জার কারণ মনে করে মাতা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন। সুভা বোবা হয়েই জন্মগ্রহণ করেছে। মাতা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক জ্ঞান করতেন। তাকে নিজের একটা ত্রুটিস্বরূপ দেখতেন এবং এটাকে নিজের লজ্জার কারণ বলে মনে করতেন। কন্যার এই অসম্পূর্ণ দিকের জন্য মাতা নিজেকে দায়ী মনে করতেন বলে পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন।
প্রশ্ন–৪. সুভার মা সুভাকে নিজেরত্রুটিস্বরূপ দেখতেন কেন?
উত্তর: সুভা বোবা বলে সুভার মা সুভাকে নিজের ত্রুটিস্বরূপ দেখতেন। মায়েরা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন। কন্যার কোনো অসম্পূর্ণ দেখলে সেটা যেন বিশেষরূপে নিজের লজ্জার কারণ বলে মনে করেন। সুভার মা সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক হিসেবে জ্ঞান করেন। তাই সুভা যেন তার মায়ের ত্রুটিরই স্বাক্ষর।
প্রশ্ন– ৫. “সে ভাষাবিশিষ্ট জীব”- কার সম্পর্কে কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে?
উত্তর: “সে ভাষাবিশিষ্ট জীব”- কথাটি প্রতাপ সম্পর্কে, তার কথা বলার যোগ্যতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ‘সুভা’ গল্পে বাকপ্রতিবন্ধী সুভা কল্পনায় অন্যদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। পশু, পাখি তথা অবলা প্রাণীদের সাথেই তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এর বাইরে শুধু প্রতাপের সাথে তার ভালো লাগার সম্পর্ক আছে। কিন্তু প্রতাপ সুভার অন্য সঙ্গীদের চাইতে আলাদা। কেননা সে কথা বলতে পারে। প্রতাপের এই বিশেষ দিকটির প্রতি ইঙ্গিত করেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
প্রশ্ন–৬. কিন্তু তাহার পদশব্দ তাহারা চিনিত‘ বাক্যটির প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সুভা বোবা হলেও গোয়ালের গাভি দুটি তার পায়ের শব্দে তার আগমন বুঝতে পারে। আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা এ বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। ‘সুভা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা জন্ম থেকেই বোবা। সে কথা বলতে না পারলেও অনেকেই তার মনের ভাষা বিভিন্ন উপায়ে বুঝতে পারে। এমন দুটি প্রাণী হচ্ছে সুভাদের গোয়ালের দুটি গাভি। গাভি দুটি সুভার মনের সমস্ত ভাষাই বুঝতে পারে। তারা সুভার পায়ের শব্দ শুনেই বুঝে নিত যে সুভা আসছে। কারণ তাদের কাছে সুভার পায়ের শব্দ ছিল অতি পরিচিত। আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা এ বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন–৭. ঘরে কঠিন কথা শুনে সুভা গোয়াল ঘরে যেত কেন?
উত্তর: বন্ধুস্বরূপ গাভি দুটির কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভের জন্য ঘরে কঠিন কথা শুনলে সুভা গোয়ালঘরে যেত।
কোনো ভৎসনা বা কঠিন কথা শোনার পর সুভা গোয়াল ঘরে ঢুকে তার মূক বন্ধুদুটির কাছে আসত। সুভার সহিষ্ণুতা পরিপূর্ণ বিষাদ-শান্ত দৃষ্টিপাত থেকে গোয়ালের এই দুটি গাভি কী একটা অন্ধ অনুমান শক্তির দ্বারা সুভার মর্মবেদনা যেন বুঝতে পারত এবং তারা সুভার গা ঘেঁষে তার বাহুতে অল্প করে শিং ঘষে তাকে নির্বাক ব্যাকুলতার সাথে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করত। এর ফলে সুভার মনের বেদনা কিছুটা হলেও প্রশমিত হতো।
প্রশ্ন– ৮. প্রতাপ কেমন প্রকৃতির মানুষ ছিল? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রতাপ ছিল নিতান্তই ভবঘুরে ও উদাসীন প্রকৃতির মানুষ। প্রতাপ ছিল অকর্মণ্য একজন লোক। মা-বাবা বহু চেষ্টা করেও প্রতাপের মাধ্যমে সংসারের উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করাতে পারেনি। ফলে বাবা-মা প্রতাপের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। এই সব লোকেরা যেমন অনেকেরই বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে তেমনি প্রয়োজনের সময় হয়ে ওঠে প্রিয়পাত্র। প্রতাপও সবার কাছে এমন ছিল।
প্রশ্ন–৯. অকর্মণ্য লোকেরা কীভাবে নিঃসম্পর্ক মানুষের প্রিয়পাত্র হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: অর্কমণ্য লোকের নিঃস্বার্থভাবে নিঃসম্পর্ক মানুষদের নানা উপকারে আসে বলে তারা প্রায়ই মানুষের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠে। অকর্মণ্য লোকেরা কোনো কাজে আসে না বলে আত্মীয়রা তাদের ওপর বিরক্ত থাকে। কিন্তু অনেক সময় নিঃসম্পর্ক মানুষের কাছে এই অকর্মণ্য লোকেরা প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠে। কারণ, তারা কোনো কাজ না করায় সবসময় তাদের হাতে অনেক সময় থাকে। ফলে কাজে-কর্মে, আমোদে-অবসরে যেখানে একটা লোক কম পড়ে সেখানেই তাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন–১০. সুভা কেন মনে মনে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত?
উত্তর: প্রতাপকে অভিভূত করার জন্য সুভা মনে মনে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত। সুভা মনে মনে প্রতাপকে ভালোবাসত। তাই প্রতাপ যখন নদীর তীরে বসে মাছ ধরত তখন সুভা তার পাশে বসে ভাবত সে যদি প্রতাপের কোনাে কাজে বা সাহায্যে আসতে পারত। কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না। তাই সে বিধাতার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা কত- যেন হঠাৎ মন্ত্রবলে সে এমন একটা আশ্চর্য কাণ্ড ঘটিয়ে দিতে পারে যা দেখে প্রতাপ অভিভূত হয়। বস্তুত প্রতাপের মন জয় করার জন্যই সুভা অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করত।
প্রশ্ন–১১. পূর্ণিমা প্রকৃতি কেন সুভার মতো একাকিনী?
উত্তর: পূর্ণিমা সৌন্দর্যময়ী কিন্তু শব্দময়ী নয়। তাই গভীর পূর্ণিমা রাতে একেকদিন সুভা যখন শয্যাগৃহের বাইরে এসে দাঁড়ায় তখন পূর্ণিমা প্রকৃতিকেও তার মতো একাকিনী দেখে। যেন ঘুমন্ত জগতের উপর জেগে বসে যৌবনের রহস্যে পুলকে বিষাদে অসীম নির্জনতার একেবারে শেষ সীমা পর্যন্ত, এমন কি তা অতিক্রম করেও থমথম করছে, একটি কথাও বলছে না। প্রকৃতির এই নিস্তব্দ ব্যাকুলতা যেন সুভার মতোই নিঃসঙ্গ।
প্রশ্ন–১২. কলকাতা যাবার আগের দিন সুভা বাল্যসখীদের নিকট থেকে কীভাবে বিদায় নিয়েছিল? বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: অশ্রুসজল চোখে সুভা কলকাতা যাবার আগে বাল্যসখীদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিল। কলকাতা যাবার আগের দিন সুভা তার বাল্যসখী গাভি দুটির নিকট বিদায় নিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল। সুভা গোয়ালঘরে গিয়ে তার বাল্যসখীদের কাছে বিদায় নিতে গিয়ে তাদেরকে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়। গলা ধরে একবার দুই চোখে যত পারে কথা ভরে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর তখন বাঁধভাঙা ঝর্ণার মতো সুভার দুই চোখ থেকে টপটপ করে অশ্র পড়তে থাকে।
প্রশ্ন–১৩. সুভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো কেন?
উত্তর: গ্রামের মানুষের নিন্দা ও একঘরে হওয়ার ভয়ে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে সুভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সুভার বয়স ক্রমেই বেড়ে চলছিল। তৎকালীন সমাজে তার বয়সের মেয়েদের বিয়ে না হলে তা নিয়ে নিন্দা করা হতো। সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বিয়ে করতে রাজি হয় না কেউ। ফলে তার পরিবারকে নিয়ে সমালোচনা বাড়তে থাকে। উপরন্তু সুভার বাবা সচ্ছল গৃহস্থ হওয়ায় তার কিছু শত্রুও ছিল। তাদের প্ররোচনায় পরিবারটিকে একঘরে করা হবে বলেও গুজব ছড়ায়। এ কারণেই সুভাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গৃহীত হয়।
প্রশ্ন–১৪. সুভা কলকাতায় যেতে চায় না কেন?
উত্তর: পরিচিত পরিবেশের প্রতি প্রবল মায়া অনুভব করায় সুভা কলকাতায়। যেতে চায় না। বাকপ্রতিবন্ধী সুভার মাঝে তার বাড়ির প্রতি রয়েছে গভীর মমত্ববোধ। বাড়ির চারপাশের প্রকৃতির সাথে সে করে নিয়েছে মিতালি। বোবা হওয়ার কারণে তার তেমন কোনো বন্ধু নেই। গোয়ালের দুটি গাভি, ছাগল, বিড়ালশাবক আর মানবসমাজের অন্তর্ভুক্ত প্রতাপ তার নিত্য সহচর। এদেরকে ছেড়ে কলকাতার অনিশ্চয়তাভরা জীবনকে মেনে নিতে সায় দেয় সুভার মন।
প্রশ্ন–১৫. মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকণ্ঠের কপোল অশ্রু গড়িয়ে পড়ল কেন?
উত্তর: মেয়ের প্রতি অসীম ভালোবাসার জন্য তাকে সান্তনা দিতে বাণীকণ্ঠের কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। বাপ্রতিবন্ধী সুভাকে সমাজের কেউ ভালোবাসে না। এমনকি মা-ও তার ওপর এতটাই বিরক্ত যে তিনি সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করেন। কিন্তু সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ তাকে অন্য মেয়েদের তুলনায় বেশি স্নেহ করেন। তিনি বুঝতে পারেন নিজের বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় যেতে সুভার অনেক কষ্ট হবে। মেয়ের বেদনায় নিজেও জর্জরিত হয়েছিলেন বলেই তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকণ্ঠের কপোল বেয়ে অশ্রু ঝরল।
প্রশ্ন–১৬. বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে অজানা আশঙ্কায় সুভার মন আচ্ছন্ন ছিল। বিদেশ যাওয়ার সময় কুয়াশা-ঢাকা প্রভাতের মতো সুভার সমস্ত হৃদয় অণুবাষ্পে ভরে যায়। একটা অনির্দিষ্ট আশঙ্কায় সে কিছুদিন থেকেই ক্রমাগত নির্বাক জন্তুর মতো তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সঙ্গেই থাকত। ডাগর চক্ষু মেলে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করত। কিন্তু তারা তাকে কিছুই বুঝিয়ে বলত না। ফলে একটা ধোঁয়াশাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে সুভার মন সর্বদা ঘুরপাক খেত।
প্রশ্ন–১৭. ‘দেখিস আমাদের ভুলিস নে।‘– প্রতাপ কেন বলেছিল?
উত্তর: বিয়ে হয়ে গেলে সুভা যেন তাকে না ভুলে যায়- প্রতাপ ঠাট্টাচ্ছলে সে কথাটিই বলেছিল। একদিন বিকেলে নদীর তীরে বসে মাছ ধরার সময় প্রতাপ সুভার উদ্দেশ্যে প্রশ্নে উল্লিখিত উক্তিটি করেছিল। সুভার বিয়ের খবর শুনে প্রতাপ হেসে হেসে সুভাকে বলেছিল বিয়ের পর সুভা যেন সবাইকে ভুলে না যায়। বস্তুত প্রতাপ এ উক্তির মধ্য দিয়ে সুভাকে বোঝাতে চেয়েছে, সে সুভার শুভাকাক্ষী।
প্রশ্ন–১৮. শুক্লাদ্বাদশীর রাতে সুভা শয়নগৃহ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল কেন?
উত্তর: চির পরিচিত প্রকৃতিকে শেষবারের মতো আলিঙ্গন করার জন্য শুক্লাদ্বাদশীর রাতে সূভা শয়নগৃহ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল । শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত মায়াময় চির পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে সুভা কিছুতেই অজানায় পাড়ি জমাতে চায় না। তাই শেষবারের মতো প্রিয় প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসতেই শুক্লাদ্বাদশীর রাতে শয়নগৃহ থেকে বেরিয়ে সুভা লুটিয়ে পড়েছিল ঘাসের বুকে। যেন ধরণীকে, এই প্রকাণ্ড মূক মানবতাকে দুই বাহুতে ধরে সুভা বলতে চেয়েছে, তাকে যেন ত্যাগ না করে। প্রকৃতির প্রতি অগাধ মমত্ববোধই সুভাকে শুক্লাদ্বাদশীর রাতে শয়নগৃহ থেকে বের করে এনেছিল।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. ছিপ ফেলে মাছ ধরা কার প্রধান শখ ছিল?
ক. সুভাষিণীর খ. বাণীকন্ঠের
গ. সুকেশিনীর ঘ. প্রতাপের
উত্তর: ঘ. প্রতাপের
২. বাণীকণ্ঠের শুষ্ক কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়েছিল কেন?
i. সুভাকে বিয়ে দেবেন বলে
ii. সুভা কথা বলতে পারে না বলে
iii. মেয়েটির ভবিষ্যৎ ভেবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও ii
উত্তর: খ. i ও iii
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও:
সেই ছোট্টবেলায় মর্জিনা একটি বিড়াল ও একটি কুকুর ছানা এনেছিল। নাম দিয়েছে পুষি আর পুটু। আজ পুষি আর পুটু পুরোপুরি বড় হয়েছে। নাম ধরে ডাকলে মুহুর্তেই হাজির হয়। পুষি কোলে উঠে বসে কিন্তু পুটু একটু দূরে দাড়িয়ে লেজ নাড়ায়।
৩. মর্জিনার মধ্যে সুভার যে বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়, তা হলো-
ক. ইতর প্রাণীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ
খ. ইতর প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধ
গ. একাকিত্বের সাথি ইতর প্রাণী
ঘ. সবার থেকে নিজেকে আড়ালে রাখা
উত্তর: খ. ইতর প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধ
৪. উদ্দীপকের মূলভাব ‘সুভা‘ গল্পের কোন বাক্যে প্রতিফলিত হয়েছে?
i. দিনে তিনবার গোয়ালঘরে যাওয়া
ii. দুই বাহু দ্বারা গলা জড়িয়ে ধরা
iii. মাঝে মাঝে তাদেরকে ভৎসনা করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১২৬৮ বঙ্গাব্দ খ. ১২৬৯ বঙ্গাব্দ
গ. ১২৭৮ বঙ্গাব্দ ঘ ১২৭৯ বঙ্গাব্দ
উত্তর: ক. ১২৬৮ বঙ্গাব্দ
৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক. কলকাতার জোড়াসাঁকোয় খ. চব্বিশ পরগণার কাঠালপাড়ায়
গ. বর্ধমানের চুরুলিয়ায় ঘ. পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে
উত্তর: ক. কলকাতার জোড়াসাঁকোয়
৭. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম কী?
ক. অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ. দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ. জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর ঘ. দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তর: খ. দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ কে ছিলেন?
ক. ঐশ্বর্যনাথ ঠাকুর খ. রাধানাথ ঠাকুর
গ. অশ্বিনীকুমার ঠাকুর ঘ. প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর
উত্তর: ঘ. প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর
৯. নিচের কোনটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গ্রন্থ?
ক. পদ্মরাগ খ. যুগবাণী
গ. বিচিত্র প্রবন্ধ ঘ. আরণ্যক
উত্তর: গ. বিচিত্র প্রবন্ধ
১০. মাত্র পনেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়?
গ. গীতাঞ্জলি ঘ. চিত্রা
উত্তর: খ. বনফুল
১১. রবীন্দ্রনাথ কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
ক. ১৯১৩ সালে খ. ১৯১৫ সালে
গ. ১৯১৬ সালে ঘ. ১৯১৭ সালে
উত্তর: ক. ১৯১৩ সালে
১২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পান?
ক. সোনারতরী খ. চোখের বালি
গ. গীতাঞ্জলি ঘ. মানসী
উত্তর: গ. গীতাঞ্জলি
১৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গাব্দের কত তারিখে মারা যান?
ক. ২২শে আষাঢ়, ১৩৪৮ খ. ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮
গ. ১৩ই আষাঢ়, ১৩৮৩ ঘ. ২১শে মাঘ, ১৩৪১
উত্তর: খ. ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮
১৪. সুভার পুরো নাম কী ছিল?
ক. সুভাষিণী খ. সুপ্রভাময়ী
গ. সূরানী ঘ. সূভামতি
উত্তর: ক. সুভাষিণী
১৫. সুভাষিণী নামটি সার্থক হয়নি কেন?
ক. সুভা অন্ধ হওয়ায় খ. সুভা বিকলাঙ্গ হওয়ায়
গ. সুভা নির্বাক হওয়ায় ঘ. সুভা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায়
উত্তর: গ. সুভা নির্বাক হওয়ায়
১৬. ‘মিনু জন্ম বোবা, সে কথা বলতে পারে না।‘- মিনুর সাথে কার মিল রয়েছে?
ক. সুহাসিনীর খ. সুকেশিনীর
গ. সুভাষিণীর ঘ. সুভারাণীর
উত্তর: গ. সুভাষিণীর
১৭. সুভার ক্ষেত্রে নিচের কোন কথাটি প্রযোজ্য?
ক. অন্ধ খ. খোড়া
গ. বাকহীন ঘ. কালা
উত্তর: গ. বাকহীন
১৮. ‘সুভা‘ গল্পে সুদীর্ঘ পল্লববিশিষ্ট বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. শান্ত হৃদয় খ. নির্মল ছায়ালোক
গ. চোখের পাতা ঘ. গাছের নতুন পাতা
উত্তর: গ. চোখের পাতা
১৯. পিতামাতার মনে কে সর্বদাই জাগরুক ছিল?
ক. সুহাসিনী খ. প্রসন্নময়ী
গ. সুভাষিণী ঘ. সুকেশিনী
উত্তর: গ. সুভাষিণী
২০. সুভা ছোটবেলা থেকেই কী বুঝে নিয়েছিল?
ক. সে সবার খুব আদরের খ. সে পরিবারে বোঝাস্বরূপ
গ. সে জীবনে অনেক বড় হবে ঘ. সে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে না
উত্তর: খ. সে পরিবারে বোঝাস্বরূপ
২১. সুভার পিতার নাম কী?
ক. বাণীকণ্ঠ খ. অবনীন্দ্র
গ. নীলকণ্ঠ ঘ. সুশীল চন্দ্র
উত্তর: ক. বাণীকণ্ঠ
২২. ফিরোজ উদ্দিন তার অন্য ছেলেমেয়েদের তুলনায় বাকহীন ফারহানাকে বেশি ভালোবাসেন। ফিরোজ উদ্দিনের সাথে ‘সুভা‘ গল্পের কার মিল রয়েছে?
ক. প্রতাপ খ. বাণীকণ্ঠ
গ. সুকেশিনী ঘ. সুহাসিনী
উত্তর: খ. বাণীকণ্ঠ
২৩. সুভাদের গ্রামের নাম কী?
গ. ভবানীপুর ঘ. মনোহরপুর
উত্তর: খ. চণ্ডীপুর
২৪. কাজকর্মে অবসর পেলে সুভা কোথায় এসে বসে?
ক. বৃক্ষতলে খ. কাঁঠাল তলায়
গ. নদীতীরে ঘ. বাঁধানো ঘাটে
উত্তর: গ. নদীতীরে
২৫. সুভা গাভী দুটোর খোঁজে দিনের মধ্যে নিয়মিত কয়বার গোয়ালে যেত?
ক. একবার খ. দুইবার
গ. তিনবার ঘ. চারবার
উত্তর: গ. তিনবার
২৬. গোঁসাইদের ছোট ছেলেটির নাম কী ছিল?
ক. প্রতাপ গ. বলাই
গ. ফটিক ঘ. মাখন
উত্তর: ক. প্রতাপ
২৭. প্রতাপের প্রধান শখ ছিল কোনটি?
ক. ঘুরে বেড়ানো খ. খেলাধুলা করা
গ. ঘুড়ি উড়ানো ঘ. ছিপ দিয়ে মাছ ধরা
উত্তর: ঘ. ছিপ দিয়ে মাছ ধরা
২৮. প্রতাপ নদীতীরে সাধারণত কখন মাছ ধরতে যেত?
ক. পূর্বাহ্নে খ. মধ্যাহ্নে
গ. অপরাহ্নে ঘ. সন্ধ্যায়
উত্তর: গ. অপরাহ্নে
২৯. সুভা কর্তৃক প্রতাপের জন্যে কী বরাদ্দ ছিল?
ক. একটি লজেন্স খ. একটি পান
গ. একটি মোয়া ঘ. একটি পেয়ারা
উত্তর: খ. একটি পান
৩০. সুভা কল্পনায় গভীর নিস্তব্দ পাতালপুরীর একমাত্র কী?
ক. পরি খ. রানি
গ. প্রহরী ঘ. রাজকন্যা
উত্তর: ঘ. রাজকন্যা
৩১. সুভা কখন শয়নকক্ষের দ্বার খুলে রাতের প্রকৃতি দেখতে লাগল?
ক. অন্ধকার রাতে খ. পূর্ণিমা রাতে
গ. বিয়ের রাতে ঘ. অমাবস্যার রাতে
উত্তর: খ. পূর্ণিমা রাতে
৩২. বাণীকণ্ঠ ঘুম থেকে উঠে শোবার ঘরে কী খাচ্ছিল?
ক. পান খ. তামাক
গ. ভাত ঘ. জলখাবার
উত্তর: খ. তামাক
৩৩. সুভা কখন বের হয়ে চিরপরিচিত নদীতটে লুটিয়ে পড়ল?
ক. কৃষ্ণদ্বাদশীর রাতে খ. পূর্ণিমা রাতে
গ. শুক্লাদ্বাদশীর রাতে ঘ. অন্ধকার রাতে
উত্তর: গ. শুক্লাদ্বাদশীর রাতে
৩৪. সুভার বড় দুই বোনের নাম কী?
ক. সুকেশিনী ও সুহাসিনী খ. সুহাসিনী ও সুপ্রভাময়ী
গ. সুকেশিনী ও সুপ্রভাময়ী ঘ. সুপ্রভাময়ী ও সুষমাময়ী
উত্তর: ক. সুকেশিনী ও সুহাসিনী
৩৫. পিতামাতার নীরব হৃদয়ভারের মতো বিরাজ করছিল কে?
ক. অন্ধবধূ খ. মমতাদি
গ. সুভা ঘ. কাঙালী
উত্তর: গ. সুভা
৩৬. ‘তাহার সাক্ষাতেই সকলে তাহার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করিত।‘- এখানে সুর প্রতি সকলের কোন মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে?
ক. কৌতূহল খ. উদাসীনতা
গ. উদ্বিগ্নতা ঘ. শত্রুতা
উত্তর: গ. উদ্বিগ্নতা
৩৭. সাধারণের দৃষ্টিপথ থেকে নিজেকে গোপন করে চলত কে?
ক. প্রতাপ খ. সুহাসিনী
উত্তর: ঘ. সুভাষিণী
৩৮. সুভার মা সুভার ওপর বিরক্ত ছিলেন কেন?
ক. সুভা সবাইকে এড়িয়ে চলত বলে
খ. সুভার প্রতিবন্ধিতাকে নিজের ত্রুটি মনে করায়
গ. সুভা যখন-তখন বাইরে চলে যেত বলে
ঘ. পোষা প্রাণীর প্রতি সুভার আকর্ষণের কারণে
উত্তর: খ. সুভার প্রতিবন্ধিতাকে নিজের ত্রুটি মনে করায়
৩৯. সুভকে নিজের ত্রুটিস্বরূপ দেখতেন কে?
ক. সুভার বাবা খ. সুভার বোন
গ. সুভার মা ঘ. সুভার ভাই
উত্তর: গ. সুভার মা
৪০. কচি কিশলয়ের মতো কেঁপে উঠত কী?
ক. সুভার নেত্রপল্লব খ. সুভার ওষ্ঠাধর
গ. সুভার কেশদাম ঘ. সুভার ভ্রুযুগল
উত্তর: খ. সুভার ওষ্ঠাধর
৪১. রাধার পরে খাওয়া আর খাওয়ার পরে রাধা– এতেই বন্দি এক গৃহিণীর জীবন। সে ‘সুভা‘ গল্পের কার সাথে তুলনীয়?
ক. প্রতাপের সাথে খ. সুভার সাথে
গ. ছোট নদীটির সাথে ঘ. বিড়াল শাবকের সাথে
উত্তর: গ. ছোট নদীটির সাথে
৪২. সুভার পরিবার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কেমন ছিল?
ক. ধনী খ. হতদরিদ্র
গ. অসচ্ছল ঘ. সচ্ছল
উত্তর: ঘ. সচ্ছল
৪৩. সুভার ভাষা পূরণ করে দেয় কে?
ক. সুহাসিনী খ. প্রকৃতি
গ. সৰ্বশী ঘ. প্রতাপ
উত্তর: খ. প্রকৃতি
৪৪. সুভার চোখের ভাষা –
i. অসীম-উদার
ii. দুর্বোধ্য
iii. অতলস্পর্শ গভীর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৪৫. সুভার বড় বোনের নাম –
i. সুকেশিনী
ii. সুহাসিনী
iii. সুপ্রভাষিণী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৪৬. সুভার বড় দুই বোনের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল–
i. অনেক খোঁজাখুঁজি করে
ii. অনেক অর্থ ঋণ করে
iii. অনেক অর্থ ব্যয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৪৭. চিরনিস্তব্ধ সুভার হৃদয় উপকূলে এসে ভেঙে পড়ে–
i. মাঝির গান
ii. পাখির ডাক
iii. নদীর কলধ্বনি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৪৮. সুভার বন্ধুরী হলো–
i. সর্বশী
ii. প্রতাপ
iii. পাগুলি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৪৯. গাভী ছাড়াও সুভার অন্য বন্ধুরা হলো–
i. পাখি
ii. ছাগল
iii. বিড়ালশাবক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫০. জলকুমারী সুভা পাতালপুরীতে বসে থাকবে–
i. হীরার অলংকারশোভিত পালঙ্কে
ii. রুপার অট্টালিকায়
iii. সোনার পালঙ্কে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫১. সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপস্বরূপ মনে করে –
i. অশিক্ষিত বলে
ii. পরিবারে বোঝা হিসেবে বিবেচিত বলে
iii. বাক্প্রতিবন্ধী বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
এসএসসি সকল বিষেয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৫২. সুভার মা সুভাকে নিজের ত্রুটিরুপে জ্ঞান করেন। কারণ–
i. কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন
ii. পিতা সুভাকে বেশি ভালোবাসেন
iii. তার ভুলেই মেয়ে বোবা হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৩. সুভার সামনেই সবাই তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত, কেননা –
i. সকলেই সুভার অনুভূতি সম্পর্কে উদাসীন ছিল
ii. সকলেই সুভাকে বোঝা মনে করত
iii. সকলেই সুভার দুঃখের সমব্যথী ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৫৪. বিজন মূর্তি বলতে বোঝায়—
i. একাকী কোনো কাজ করা
ii. জনমানবশূন্য অবস্থা
iii. কোলাহলমুক্ত প্রকৃতির আকর্ষণীয় দিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৫. অন্য বালক–বালিকারা সুভার সাথে খেলা করত না–
i. তাকে ভয় করত বলে
ii. তার পা খোঁড়া বলে
iii. সে নীরব ও নিঃশব্দ প্রকৃতির বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
৫৬. ‘সুভা মনে করিত আমাকে সবাই ভুলিলে বাঁচি”- এ উক্তিটির তাৎপর্য হলো–
i. সবার অবহেলা থেকে দূরে থাকা
ii. সবার অনার্দর থেকে দূরে থাকা
iii. সবার বিরক্তির কারণ না হওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৫৭–৫৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
বাবা-মা হারানো মিনু জন্ম থেকেই বোবা ও কালা কিন্তু জীবনকে তুচ্ছ মনে করে না সে। মিনুর জগৎ চোখের জগৎ। দৃষ্টির ভেতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে।
৫৭. উদ্দীপকের ‘মিনু‘ পাঠ্যবইয়ের কোন চরিত্রের সাথে তুলনীয়?
ক. প্রতাপ খ. কাঙালী
উত্তর: ঘ. সুভা
৫৮. উভয় চরিত্রের মধ্যে মিল–
i. এতিম হওয়ার দিক থেকে
ii. বাম্প্রতিবন্ধিতায়
iii. প্রকৃতির সাথে মিতালি গড়ায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৫৯. সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্র দুটি আমাদের মাঝে কোনটি জাগিয়ে তোলে?
ক. প্রকৃতিকে গভীরভাবে অনুভবের চেতনা
খ. প্রতিবন্ধীদের মর্মবেদনা অনুভবের চেতনা
গ. জীবনকে প্রবলভাবে ভালোবাসার চেতনা
ঘ. মানুষের প্রতি কর্তব্য পালনের চেতনা
উত্তর: খ. প্রতিবন্ধীদের মর্মবেদনা অনুভবের চেতনা
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৬০ ও ৬১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
টাকার অভাবে আদরের মেয়ে প্রীতির বিয়ে দিতে পারছেন না মৃত্যুঞ্জয় সাহা, এদিকে মেয়েটার বয়সও বেড়ে চলেছে। এ কারণে এলাকায় তার মুখ দেখানোই দায় হয়ে পড়েছে। অবশেষে অনেক টাকা ঋণ নিয়ে মোটা যৌতুকের বিনিময়ে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি।
৬০. উদ্দীপকের মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে ‘সুভা‘ গল্পের বাণীকন্ঠের মিল—
i. অর্থনৈতিক দুরবস্থায়
ii. পিতৃস্নেহের অনুভূতিতে |
iii. সামাজিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হওয়ায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৬১. উদ্দীপক ও ‘সুভা‘ গল্প সমানভাবে আমাদের সামনে কোনটি উপস্থাপন করে?
ক. প্রতিবন্ধীদের মর্মবেদনার স্বরূপ
খ. সমাজব্যবস্থার ত্রুটির স্বরূপ
গ. যৌতুকপ্রথার নির্মমতার স্বরূপ
ঘ. মানুষকে অবমূল্যায়নের স্বরূপ
উত্তর: খ. সমাজব্যবস্থার ত্রুটির স্বরূপ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৬২–৬৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
একবার এক অসুখে অহনার একটি পা চিকন হয়ে যায়। এখন সে ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটে। স্কুলের বন্ধুরা তাকে অনেক সময় ল্যাংড়া বলে ডাকে। কেউ কেউ সহযোগিতাও করে। অহনার মনে হয় ও যদি সবার মতো আবার দুপায়ে হাঁটতে পারত!
৬২. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু নিচের কোন গল্পের বিষয়বস্তুর সাথে সংগতিপূর্ণ?
ক. অভাগীর স্বর্গ খ. নিয়তি
গ. আম-আঁটির ভেঁপু ঘ.সুভা
উত্তর: ঘ.সুভা
৬৩. অহনাকে উক্ত গল্পের কার সাথে তুলনা করা যায়?
ক. সুভা খ. কাঙালী
গ. বেঙল টাইগার ঘ.দূর্গা
উত্তর: ক. সুভা
৬৪. অহনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্রটির তুলনার বিষয়টি যে দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচ্য তা হলো–
i. শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু
ii. মানুষের অবহেলার শিকার হওয়া
iii. অবাধ্য দুরন্ত শিশু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৬৫–৬৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
প্রীতিশ বাবু অন্য দুই মেয়ের চাইতে ছোট মেয়ে পৃথাকে একটু বেশি ভালোবাসেন। কারণ সে মেয়েটি জন্মগতভাবেই অন্ধ । পিতৃহৃদয়ের অধিক স্নেহ-ভালোবাসা ও আবেগ তাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। কিন্তু তার মা তাকে একদমই সহ্য করতে পারেন না। তাকে নিজের দুর্ভাগ্য বলে মনে করেন।
৬৫. উদ্দীপকের প্রীতিশ বাবুর চরিত্রটি ‘সুভা’ গল্পের কোন চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক. নীলকণ্ঠ খ. বাণীকণ্ঠ
গ. সুভাশিস ঘ. প্রতাপ
উত্তর: খ. বাণীকণ্ঠ
৬৬. ‘পিতৃহৃদয়ের অধিক স্নেহ–ভালোবাসা ও আবেগ তাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত’-এ কথাটি ‘সুভা‘ গল্পে যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সে হলো—
i. সুহাসিনী
ii. সুভা
iii. সুভাষিণী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
এসএসসি বাংলা সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
৬৭. নিচের কোন ক্ষেত্রে পৃথার মা এবং সুভার মায়ের মধ্যে মিল রয়েছে?
ক. উভয়ই মেয়েকে নিয়ে গর্ব করত
খ. উভয়ই মেয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল
গ. উভয়ই মেয়েকে ভালোবাসত
ঘ. উভয়ই মেয়েকে দুর্ভাগ্য মনে করত
উত্তর: ঘ. উভয়ই মেয়েকে দুর্ভাগ্য মনে করত
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন–১: দুই পুত্রসন্তানের পর কন্যাসন্তান পলাশ বাবুর পরিবারে আনন্দের বন্যা নিয়ে এলো। নাম রাখা হলো ‘কল্যাণী‘। সকলের চোখের মণি কল্যাণী বেড়ে ওঠার সাথে সাথে পলাশবাবু বুঝতে পারলেন, বয়সের তুলনায় কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঘটেনি। কিছু বললে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। কল্যাণীর বিয়ের কথাবার্তা চলছে। পলাশ বাবু কল্যাণীর সবই বরপক্ষকে খুলে বললেন। সব শুনে বরের বাবা সুবোধ বাবু বললেন, ‘পলাশ বাবু, কল্যাণীর মতো আমার ছেলেও তো হতে পারত, কাজেই কল্যাণী মাকে ঘরে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
ক. সুভার গ্রামের নাম কী?
খ. ‘পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভার’- কথাটি দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার যে বিশেষ দিকটির সংগতি দেখানো হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কল্যাণী ও সভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন – বিশ্লেষণ করো।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. সুভার গ্রামের নাম চণ্ডীপুর।
খ. প্রতিবন্ধী কন্যা সুভার বিয়ে না হওয়ায় সে তার পিতামাতার নীরব হৃদয়-ভার, অর্থাৎ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুভার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও তার বিয়ে হচ্ছে না। কারণ সুভা বাকপ্রতিবন্ধী। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতামাতা তাই চিন্তিত হয়ে পড়েন। প্রতিবন্ধী মেয়েকে কেমন করে বিয়ে দেবেন এই দুর্ভাবনা তাদের হৃদয়ে পাথরের মতো চেপে বসে।
গ. উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা উভয়েই প্রতিবন্ধিতার শিকার। বাকপ্রতিবন্ধী একটি কিশোরীর প্রতি মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পে।
স্বাভাবিকভাবে জন্মালেও নিয়তি সুভাকে একজন বাকপ্রতিবন্ধী মানুষরূপে গড়ে তোলে। উদ্দীপকের কল্যাণীর ক্ষেত্রে এই মিল লক্ষণীয়। উদ্দীপকের কল্যাণীও সুভার মতোই বয়ে নিয়ে এসেছিল আনন্দের বার্তা। কিন্তু বড় হতে হতে বয়সের সাথে তার মানসিক বিকাশ পরিপূর্ণভাবে ঘটে।
অর্থাৎ কল্যাণী বড় হয় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসেবে। প্রতিবন্ধিতাই উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছে।
ঘ. কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও গল্পের সুভার দুঃখজনক জীবন বাস্তবতার বিপরীতে উদ্দীপকের কল্যাণীর বাস্তবতাটি ইতিবাচক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের সুভা জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী। বাকপ্রতিবন্ধী হলেও তার অনুভূতিপ্রবণ হৃদয়ে ভালোবাসার অভাব ছিল না। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সূভাকে কেউ বিয়ে করতে রাজি হয়নি। লোকনিন্দার ভয়ে তাই সূভার পরিবার গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
উদ্দীপকের কল্যাণী একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। ‘সুভা’ গল্পে আমরা কিশোরী সুভার নানারকম মানসিক অনুভূতির পরিচয় পেলেও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কল্যাণীর পক্ষে তা সম্ভব ছিল না। এরপরও কল্যাণীকে ঘরের বউ করে নিতে আপত্তি করেননি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সুবোধ বাবু।
উদ্দীপকের কল্যাণী ও গল্পের সুভার প্রেক্ষাপট তাই এক নয়। দুজনের প্রতিবন্ধকতা দু ধরনের। জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও রয়েছে ভিন্নতা। তবে সুভাকে কেউ সহানুভূতির চোখে না দেখলেও কল্যাণীর প্রতি সদয় আচরণ করেছেন সুবোধ বাবু। কল্যাণীকে নিজের ছেলের বউ করে নিতে আপত্তি করেননি তিনি।
কল্যাণীর প্রতি তার হবু শ্বশুরের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিই সুভার সাথে কল্যাণীর পার্থক্য রচনা করেছে। কল্যাণীর প্রতি মানবিক আচরণ করা হলেও সুভা ও তার পরিবারকে বরণ করতে হয়েছে বেদনাদায়ক পরিণতি।
এসএসসি সকল বিষেয় সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
প্রশ্ন-২ : হেলেন কেলার (১৮৮০–১৯৬৮) বাক–শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধিত্ব নিয়ে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তার মা–বাবার সহানুভূতিশীল আচরণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পরবর্তীকালে হেলেন কেলার প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকারের প্রতি আজীবন লড়াই করেছেন।
ক. গোঁসাইদের ছোট ছেলেটির নাম কী?
খ. ‘প্রকৃতি সেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।’- বাক্যটিতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ‘সুভা’ গল্পের সুভার সঙ্গে উদ্দীপকের হেলেন কেলারের তুলনা করো।
ঘ. ‘আমাদের ভালোবাসা ও মমত্ববোধ প্রতিবন্ধীদের জীবনকে অনেকটা সহজ করে দিতে পারে।’- ‘সুভা’ গল্প ও উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্যটি বিচার করো।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. গোঁসাইদের ছোট ছেলেটির নাম প্রতাপ।
খ. প্রকৃতির সঙ্গে সুভার গভীর সম্পর্কের বিষয়টিই উন্মোচিত হয়েছে আলোচ্য মন্তব্যে। নদীর তীরে বসলে সুভা নদীর কলধ্বনি, লোকের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর সমস্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। এগুলো যেন তার হয়ে কথা বলত। প্রকৃতির এই বিবিধ শব্দ এবং বিচিত্র গতিও সুভার ভাষার মতো নীরব অথচ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। আর তাই লেখক বলেছেন, ‘প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।
গ. প্রতিবন্ধিতার দিক থেকে ‘সুভা’ গল্পের সুভা এবং উদ্দীপকের হেলেন কেলার চরিত্র দুটি তুলনীয়।
‘সুভা’ গল্পের সুভা একজন বাকপ্রতিবন্ধী। মনের কথা মুখে বলার সামর্থ্য তার নেই। অন্যদিকে হেলেন কেলার বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। ‘সুভা’ বাক প্রতিবন্ধী হলেও তার মনোজগতে চলে চিন্তাতে। প্রকৃতির ভাষা সে বোঝে, বোঝে নির্বাক প্রাণীদের ভাষাও। এ কারণে সর্বশী ও পাঙ্গুলি নামক গরুর সঙ্গে তার সখ্যতা। পিতার সহিষ্ণুতাপূর্ণ আচরণ সূভা পেলেও মা ও গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তেমন ভালো আচরণ সে পায় না। তাকে পড়াশোনা করানো কিংবা উন্নত চিকিৎসা করানোর চেষ্টা ‘সুভা’ গল্পে দেখা যায় না। এদিক থেকে হেলেন কেলার সৌভাগ্যবান।
উদ্দীপকের হেলেন কেলারও বাকশ্রবণ প্রতিবন্ধী, দৃষ্টির প্রতিবন্ধিত্বও তার ছিল। কিন্তু পরিবারের পিতা-মাতার কাছ থেকে সে অকুণ্ঠ সহযোগিতা পেয়েছে। তার প্রতি মা-বাবা উভয়ই সহানুভূতিশীল। আর সে কারণে নানা বাধা সত্ত্বেও হেলেন কেলার উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছে। যা সুভার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
ঘ. মানুষের ভালোবাসা ও মমত্ববোধ ‘সুভা’ গল্পে বাক-প্রতিবন্ধী ‘সুভা’ এবং উদ্দীপকের হেলেন কেলারের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
‘সুভা’ গল্পে সুভার প্রতিবন্ধিত্ব তার মা ভালো মনে মেনে নিতে পারেনি। পিতা বাণীকণ্ঠের আচরণ ছিল অসামান্য। তিনি সুভার মনের ব্যথা বুঝতে চাইতেন। কিন্তু বাণীকণ্ঠের পাড়া প্রতিবেশীদের অসহযোগিতা সুভার জীবনকে আরও কঠিন করে তোলে। পাড়া-প্রতিবেশীদের চাপে পড়ে যখন বাণীকণ্ঠ সুভাকে নিয়ে কলকাতায় যেতে চাইলেন তখন বেদনায় ভেঙে পড়ে সুভা।
উদ্দীপকের হেলেন কেলার পরিবারের পক্ষ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন। ফলে সুভার চেয়েও বেশি প্রতিবন্ধিত্ব থাকা সত্ত্বেও তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। এমনকি পরবর্তীকালে হেলেন কেলার নিজেই প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকারের জন্য আজীবন লড়াই করেন। ভালোবাসা ও মমত্ববোধের অভাবে সুভার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি।
উপযুক্ত আলোচনায় আমরা দেখলাম হেলেন কেলার পরিবারের মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও সমর্থন পেয়ে নিজ জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন। কিন্তু, নিজ মাতা এবং প্রতিবেশীদের অসহযোগিতার কারণে সুভার জীবন বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আর তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, আমাদের ভালোবাসা ও মমত্ববোধ প্রতিবন্ধীদের জীবনকে অনেকটা সহজ করে দিতে পারে।
প্রশ্ন-৩ : অনাথ মতি সারাক্ষণ বিষন্ন থাকে। তার মনে শান্তি নেই। কেউ তার সাথে মেশে না, সেও কারো সাথে মেশে না। প্রকৃতির সাথেই তার সখ্য ও বন্ধুত্ব। পিতামাতা হারা মতি চাচার বাড়িতে থাকলেও চাচি তাকে একদম সহ্য করতে পারে না। এজন্য মতি নদী গাছপালা পাখি ইত্যাদির মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করে সময় কাটায়।
ক. সুভার চোখে ভাষা কেমন ছিল?
খ. সাধারণ বালক-বালিকারা সুভাকে ভয় করত কেন?
গ. উদ্দীপকের মতির মাঝে ‘সুভা’ গল্পের সুভার যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. প্রকৃতি মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু-‘সুভা’ গল্প ও উদ্দীপকের আলোকে উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. সুভার চোখের ভাষা অসীম উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর ছিল।
খ. সুভা বাক্যহীন নিঃসঙ্গ থাকত বলে সাধারণ বালক-বালিকারা সুভাকে ভয় করত। সুভা ছিল বাক-প্রতিবন্ধী। কথা বলতে পারত না বলে তাকে অবহেলা করে কেউ তার সাথে মিশত না। তাই সেও সর্বদা শব্দহীন একাকিত্বকে জীবনের পরিণতি করে নিয়েছিল। তার এমন নিস্তব্ধতা দেখে সাধারণ বালক বালিকারা তাকে দেখে ভয় করত।
গ. উদ্দীপকের মতির মাঝে ‘সুভা’ গল্পের সুভার বিষন্নতা ও একাতিত্বের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।
‘সুভা’ গল্পে জন্ম থেকেই সুভা কথা বলতে পারত না। সে তার সাথে মিশত না বলে সে প্রকৃতির একাকিত্বকে সঙ্গী করে নিয়েছিল। নিজের বাবা হওয়াটাকে সে অভিশাপ মনে করে সব সময় বিষন্নও থাকত। উদ্দীপকের মতি পিতামাতা হারা অসহায় এক ছেলে । অনাথ মতি চাচার বাড়িতে থাকলেও চাচি তাকে একদম সহ্য করত না। তাই সে সারাক্ষণ বিষন্ন থাকত। সে কারো সাথে মিশত না, অন্যরাও তার সাথে মিশত না। তার মনে শান্তি ছিল না। তাই প্রকৃতির সাথেই সে সখ্যতা ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলে।
মতির এই বিষন্নতা ও একাকিত্ব যেন ‘সুভা’ গল্পের সুভার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে আছে। বোবা সুভা নিজেকে অসহায় ভেবে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করে। সে সর্বদা নিজেকে আড়াল করে রাখে এবং নিজেকে বোঝা মনে করে।
ঘ. ‘প্রকৃতি মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু’- ‘সুভা’ গল্পের সুভা ও উদ্দীপকের মতির প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব উক্তিটির সত্যতা নিরূপণ করে।
‘সুভা’ গল্পে বাকপ্রতিবন্ধী সুভা পরিবারের ছোট মেয়ে। বোবা হওয়ায় সে অবহেলার শিকার হয়। কিন্তু প্রকৃতিকে সে নিজের ভাষা বোঝার অকৃত্রিম বন্ধু বানিয়ে নেয়। উদ্দীপকের মতিও পিতামাতা হারা অনাথ ছেলে । বিষন্নতা তার চারিদিক ঘিরে রাখে। বালক বালিকারা তার সাথে মেশে না, সেও তাদের সাথে মেশে না। গাছপালা, নদী পাখির মাঝেই সে নিজেকে খুঁজে পায়। প্রকৃতির সাথেই তার সখ্যতা ও বন্ধুত্বর নিবিড় সম্পর্ক। সে বোবা হওয়ায় পরিবার ও সমাজের অবহেলার শিকার । কিন্তু প্রকৃতি তাকে অবহেলা করে না। বরং পরম যত্নে তাকে বরণ করে নেয় প্রকৃতি। নদীর ধারে নির্জন বসে থেকে সুভা যেন নিজেকে খুঁজে পায়।
নদীর কলকল ধ্বনি, লোকের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর শব্দ সবকিছু যেন তার সাথে আপন দরদে মিশে থাকে। তার জীবনের অভাব যেন প্রকৃতিই পূরণ করে দেয়। তার কথাগুলাে প্রকৃতিই প্রকাশ করে বলে মনে হয়। সভার প্রকৃতির সাথে এই অকৃত্রিম বন্ধুত্ব উদ্দীপকের মতির সাথেও বিদ্যমান।
প্রশ্ন–৪ : আনিতা যৌথ পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। পরিবারের অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার মাঝেও টিউশনি করে নিজের পড়াশোনা সে চালিয়ে যায় । খাটো ও কালো হওয়ায় তাকে নিয়ে সকলের দুশ্চিন্তা। হয়তো কেউ তাকে বিয়ে করবে না। অদম্য আনিতা এসবের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করে। এখন তাকে বিয়ে করতে অনেক বড়ঘর থেকে প্রস্তাব আসে।
ক. সুভার সাক্ষাতে সকলে তার কী সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত?
খ. ‘আমাকে সবাই ভুলিলে বাঁচি’- সুভার এমন মনোভাবের কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের আনিতার সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভার সাদৃশ্য নিরূপণ করো।
ঘ. উদ্দীপকের আনিতার অদম্য স্পৃহা ‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে কতটা বর্তমান ছিল বলে তুমি মনে করো? বিশ্লেষণী মতামত দাও।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. সুভার সাক্ষাতে সকলে তার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত।
খ. বাকপ্রতিবন্ধী ছিল বলে সুভা এমন মনোভাব পোষণ করত। বাবা মায়ের ছোট মেয়ে সুভা জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না। নিজের এমন দুর্বলতায় সুভা তাকে অসহায় মনে করত। সে সাধারণের দৃষ্টিপথ হতে নিজেকে সর্বদা গোপন করে রাখত। বাকপ্রতিবন্ধী হওয়াটাকে সে অভিশাপ মনে করে তাকে সবাই ভুলে গেলেই সে যেন স্বস্তি পায় ।
গ. উদ্দীপকের আনিতার সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাহ্যিক দুর্বলতার সাদৃশ্য রয়েছে।
‘সুভা’ গল্পের সুভা রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ হলেও তার বাহ্যিক অসংলগ্নতা ছিল। সে জন্ম থেকেই কথা বলতে পারত না। বাহ্যিক এই দুর্বলতার কারণে সে নিঃসঙ্গ থাকত এবং কারো সাথে না মেশার মনোভাব পোষণ করত।
উদ্দীপকের আনিতা পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান। তার পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ছিল না। সে টিউশনি করে পড়াশোনা করত। কিন্তু সে খাটো ও কালো হওয়ায় পরিবারের সবাই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করত। মেয়েরা সাধারণত খাটো ও কালো হলে তাদের বিয়ে দিতে যে বেগ পেতে হয় আনিতার ক্ষেত্রেও সে দুশ্চিন্তা ছিল।
উদ্দীপকের আনিতার এমন দুর্বলতার সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভার সাদৃশ্য রয়েছে । সুভাও পরিবারের ছোট মেয়ে। কিন্তু সে জন্ম থেকে বোবা হওয়ায় পরিবারের সবাই তার বিয়ে নিয়ে শঙ্কিত থাকে। সেও মানসিকভাবে নিজেকে সমাজের বোঝা মনে করে।
ঘ. উদ্দীপকের আনিতার অদম্য স্পৃহা ‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে বর্তমান ছিল না।
‘সুভা’ গল্পের সুভা নিজের কথা বলতে না পারাটাকে অভিশাপ মনে করত। তাই সে নিজেকে মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখত। প্রকৃতি ও বোবা প্রাণীর মাঝেই সে নিজের নিঃসঙ্গতাকে উপভোগ করত। উদ্দীপকের অনিতার মাঝে মানসিক শক্তি ও অদম্য স্পৃহা বর্তমান ছিল। সে সমাজের অন্য মেয়েদের বিপরীত চরিত্র দারণ করে আছে। খাটো ও কালো হওয়ায় তার পরিবারের তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও তার মাঝে সেটা ছিল না। বরং সে এসব কিছু ভ্রুপক্ষেপ না করে অদম্য স্পৃহা নিয়ে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় এবং সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করে। তখন তার জন্য অনেক বড় ঘর থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে।
‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে মানসিক শক্তি ও আত্মনির্ভরশীলতার অভাব ছিল। সে নিজের বাকপ্রতিবন্ধী অবস্থাকে অভিশাপ জ্ঞান করে দুঃখবোধ করত। সমাজের মানুষের এবং মায়ের অবহেলায় সেও অসহায়ত্ববোধ করে। তাই প্রকৃতির সাথে সে মিতালি গড়ে তোলে। মানুষের সাথে না মিশে নদীর ধারে বসে নিঃসঙ্গ সময় কাটানোই তার স্বভাব ছিল। বাড়ির পালিত বোবা গরুর সাথে সে ভাব করে। পোষা বিড়ালটিও সুভার গরম কোলে নীরবে ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে কেউ বিয়ে করবে না এমন সম্ভাবনাকে সে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে উড়িয়ে দিতে পারে না।
সে যদি উদ্দীপকের অনিতার মতো অদম্য স্পৃহা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারত তাহলে সেও জীবনের দুঃখবোধ থেকে মুক্তি পেতে পারত।
আরও গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF পেতে এখানে ক্লিক করুন
এসএসসি বাংলা সকল অধ্যায় নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল
নিয়মিত আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করুন এবং টিউটরিয়াল গুলি ধারা বাহিক ভাবে দেখতে থাকুন। এছাড়াও learn.ntbangla.com ভিডিও টিউটরিয়ালে লগইন করে ভিডিও কোর্সসমুহ সম্পন্ন করুন।