প্রথম অধ্যায় – উন্নততর জীবনধারা
ভূমিকা : খাদ্য আমাদের চেহারার, কাজকর্মে, আচরণে ও জীবনমানের ভিন্নতা ঘটাতে পারে। শ্বসন ক্রিয়ার সময় খাদ্যস্থ স্থিতিশক্তি গতি ও তাপ শক্তিরূপে মুক্ত হয়ে জীবদেহের জৈবিক ক্রিয়াসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিটি জীব তার পরিবেশ থেকে প্রয়োজনমতো এবং পরিমাণমতো খাদ্য গ্রহণ করে।
- পুষ্টি : খাদ্য দেহের পুষ্টি সাধন করে। জীবদেহ পরিবেশ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে তা পরিপাক ও শোষণ এবং আত্তীকরণের দ্বারা জীবদেহের শক্তির চাহিদা পূরণ, রোগ প্রতিরোধ, বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করাকে পুষ্টি বলে।
- খাদ্য : যেসব দ্রব্য আহার বা গ্রহণ করলে দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশ, দেহের টিস্যুগুলোর ক্ষয়পূরণ এবং শক্তি উৎপাদন সাধিত হয় তাকে খাদ্য বলে। আমাদের স্বাস্থ্য মূলত নির্ভর করে আমরা যে খাদ্য খাই তার গুণগত মানের ওপর।
- খাদ্যের কাজ : খাদ্যের কাজ প্রধানত তিনটি-
i. দেহের গঠন, বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয়পূরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ।
ii. দেহের তাপ উৎপাদন, কর্মশক্তি প্রদান।
iii. রোগ প্রতিরোধ, দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখা।
- পরিপাক : য়ে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল খাদ্যগুলো বিভিন্ন উৎসেচকের দ্বারা সরল খাদ্যে পরিণত হয় সেই প্রক্রিয়াকে পরিপাক বলে।
- অত্তিীকরণ : পরিপাককৃত খাদ্য শোষিত হয়ে দেহকোষের প্রোটোপ্লাজমে সংযোজিত হওয়াকে আত্তীকরণ বলে।
- নিউট্রিয়েন্টস : যেসব জৈব ও অজৈব উপাদান জীবের জীবনীশক্তির জোগান দেয় তাদের একত্রে পরিপোষক বা নিউট্রিয়েন্টস বলে। যেমন : গ্লুকোজ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ইত্যাদি।
- গ্লুকোজের রাসায়নিক উপাদান : গ্লকোজের রাসায়নিক উপাদানগুলো হলো কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন।
- ফ্রকটোজের উৎস : আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু প্রভৃতি মিষ্টি ফলে ও ফুলের মধুতে ফ্রকটোজ পাওয়া যায়।
- খাদ্যের মধ্যে নিহিত শক্তি পরিমাপের একক : খাদ্যশক্তি পরিমাপের একক হলো খাদ্য ক্যালরি বা কিলোক্যালরি।
- খাদ্য ক্যালরি : ১ গ্রাম খাদ্য জারণের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে খাদ্য ক্যালরি বলে।
- এক ক্যালরি : ১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয়, সে পরিমাণ তাপশক্তি হচ্ছে এক ক্যালরি।
- আমিষ বা প্রোটিন : কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন এ চারটি পদার্থের সমন্বয়ে আমিষ গঠিত। এটি একটি খাদ্য উপাদান।
- অ্যামাইনো এসিড : অ্যামাইনো এসিড হলো আমিষ গঠনের মূল একক।
- অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড : যে ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বলে। যেমন : অলিক এসিড, লিনোলিক এসিড ইত্যাদি।
- সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড : যে ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন একক বন্ধন থাকে তাকে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বলে। যেমন স্টিয়ারিক এসিড।
- তেল : যেসব স্নেহ পদার্থ তরল সেগুলোকে তেল বলে। তেল হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। যেমন : সয়াবিন তেল।
- ভিটামিন : দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বিশেষ এক ধরনের খাদ্য উপাদান প্রয়োজন হয়। এই খাদ্য উপাদানকে ভিটামিন বলে।
- কোলেস্টেরল : কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের স্নেহজাতীয় পদার্থ।
- ভিটামিন B কমপ্লেক্স : ভিটামিন B সংখ্যায় মোট ১২টি। ভিটামিনের এই দলকে একত্রে ভিটামিন B কমপ্লেক্স বলা হয়।
- BMI বা ভরসুচি : দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার সূচককে বিএমআই বা দেহের ভরসূচি বলা হয়।
- টক্সিন : ব্যাকটেরিয়া খাদ্য নষ্ট করে এক ধরনের বিষাক্ত উপাদান উৎপন্ন করে। এই বিষাক্ত উপাদানগুলোকে টক্সিন বলে।
- সুষম খাদ্য : যে খাদ্যে ছয়টি খাদ্য উপাদানই গুণাগুণ অনুসারে উপযুক্ত পরিমাণে থাকে এবং যে খাদ্য গ্রহণ করলে দেহের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়, তাকে সুষম খাদ্য বলে।
- সংরক্ষক : খাদ্যকে পচন থেকে রক্ষা করার জন্য যে রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যে প্রয়োগ করা হয় তাদেরকে সংরক্ষক বা প্রিজারভেটিভ বলে। যেমন ভিনেগার।
- ভিনেগার : এসিটিক এসিডের ৫% জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলে। আচার, চাটনি, সস ইত্যাদিতে ভিনেগার ব্যবহার করে জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করা হয়।
- ধূমপান : শুকনা তামাক পাতা থেকে উৎপন্ন হয় সিগারেট, বিড়ি ও চুরুট। এগুলোকে পুড়িয়ে তার ধোয়া ও বাষ্প সেবনকে ধূমপান বলে।
- ড্রাগ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ড্রাগ এমন সব পদার্থ যা জীবিত প্রাণী গ্রহণ করলে এক বা একাধিক স্বাভাবিক আচরণের পরিবর্তন ঘটে।
- রাফেজ বা আঁশ : রাফেজ মূলত সেলুলোজ নির্মিত উক্তিদের কোষপ্রাচীর। এটি প্রধানত উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ শস্যবীজ, ডাল, আলু, খোসার মতো টাটকা ফল ও শাকসবজি রাফেজের প্রধান উৎস। এ ছাড়া শুকনা ফল, জিরা, ধনে, মটরশুটি ইত্যাদিতেও রাফেজ পাওয়া যায়। এগুলোকে দীর্ঘ তন্তুময় রাফেজ বলা হয়।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। BMI এর পূর্ণনাম কী?
উত্তর : BMI এর পূর্ণনাম হলো Body Mass Index.
২। জাঙ্ক ফুড কী?
উত্তর : জাঙ্ক ফুড হচ্ছে এমন এক ধরনের খাদ্য, যার স্বাস্থ্যগত মূল্যের চেয়ে মুখরোচক স্বাদ বেশি। এতে বিদ্যমান রাসায়নিক পদার্থ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৩। রাফেজ কী?
উত্তর : রাফেজ মূলত সেলুলোজ নির্মিত উদ্ভিদের কোষপ্রাচীর। সম্পূর্ণ শস্যবীজ, ডাল, আলু, খোসাসমেত টাটকা ফল এবং শাক-সবজি রাফেজের প্রধান উৎস।
এসএসসি সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪। অপরিহার্য অ্যামাইনো এসিডের সংখ্যা কয়টি?
উত্তর : অপরিহার্য অ্যামাইনো এসিডের সংখ্যা ৮টি।
৫। WHO কী?
উত্তর : WHO হলো World Health Organization বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
৬। টক্সিন কাকে বলে?
উত্তর : উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ব্যাকটেরিয়া খাদ্যকে নষ্ট করে এক ধরনের বিষাক্ত উপাদান উৎপন্ন করে। এ বিষাক্ত উপাদানগুলোকে টক্সিন বলে।
৭। কোন ভিটামিনের অভাবে বেরিবেরি নামক রোগ হয়?
উত্তর : ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যকার ভিটামিন B এর অভাবে বেরিবেরি রোগ হয়।
৮। খাদ্য কী?
উত্তর : যা খেলে দেহে কর্মশক্তি সৃষ্টি হয়, দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে, তাই খাদ্য।
৯। পরিপাক কী?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জটিল খাদ্যগুলো বিভিন্ন উৎসেচকের দ্বারা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে ভেঙে সরল খাদ্যে পরিণত হয় সেই প্রক্রিয়াকে পরিপাক বলে।
১০। আত্তীকরণ কী?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় পরিপাককৃত খাদ্য শোষিত হয়ে দেহকোষের প্রোটোপ্লাজমে সংযোজিত হয় তাকে আত্তীকরণ বলে।
১১। HIV এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : HIV এর পূর্ণরূপ হলো- Human Immuno deficiency Virus.
১২। খাদ্যের সহায়ক উপাদান কয়টি?
উত্তর : খাদ্যের সহায়ক উপাদান তিনটি। যথা– ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি।
১৩। নিকোটিন কী?
উত্তর : তামাক থেকে নির্গত এক ধরনের বিষাক্ত মাদককে নিকোটিন বলে।
১৪। সুষম খাদ্য কী?
উত্তর : সুষম খাদ্য হলো বিভিন্ন খাদ্যবস্তুর এমন সমাহার, যার মধ্যে সকল খাদ্য উপাদানের সবগুলোই পরিমাণমতো থাকে এবং যা থেকে স্বাভাবিক কাজ-কর্মের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়।
১৫। আমলকীতে কোন ভিটামিন পাওয়া যায়?
উত্তর : আমলকীতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
১৬। Fruit sugar কী?
উত্তর : আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু প্রভৃতি মিষ্টি ফলে ও ফুলের মধুতে ফ্ৰকটোজ থাকে। একে Fruit sugar বলে।
জেএসসি ও এসএসসি সকল বিষয়ের নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
১৭। BMI কী?
উত্তর : দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার সূচককে Body Mass Index তথা BMI বা ভরসূচি বলে।
১৮। নিউট্রিয়েন্টস (Nutrients) কী?
উত্তর : যেসব জৈব ও অজৈব উপাদান জীবের জীবনীশক্তির জোগান দেয় তাদের একত্রে পরিপোষক বা নিউট্রিয়েন্টস বলে। যেমন : গ্লুকোজ, ভিটামিন ইত্যাদি।
১৯। শ্বেতসার বা স্টার্চ–এর প্রধান উৎস কী?
উত্তর : ধান, গম, ভুট্টা ও অন্যান্য দানাশস্য শ্বেতসার বা স্টার্চ এর প্রধান উৎস।
২০। গ্লুকোজের উৎস কী?
উত্তর : গ্লুকোজের উৎস হলো আঙুর, আপেল, গাজর, খেজুর ইত্যাদি।
২১। গ্লুকোজের রাসায়নিক সংকেত কী?
উত্তর : গ্লুকোজের রাসায়নিক সংকেত হলো: C6H12O6 .
২২। ফ্রকটোজের উৎস কী?
উত্তর : আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু প্রভৃতি মিষ্টি ফলে ও ফুলের মধুতে ফ্ৰকটোজ পাওয়া যায়।
২৩। সেলুলোজ সাধারণত কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর : বেল, আম, কলা, তরমুজ, বাদাম, শুকনা ফল এবং সব ধরনের শাকসবজিতে সেলুলোজ থাকে।
২৪। দুধের শ্বেতসার অংশকে কী বলে?
উত্তর : দুধের শ্বেতসার অংশকে ল্যাকটোজ বলা হয়।
২৫। গ্লাইকোজেন শর্করাটির উৎস কী?
উত্তর : পশু ও পাখিজাতীয় প্রাণী যেমন : মুরগি, কবুতর প্রভৃতির যকৃত ও মাংসে গ্লাইকোজেন শর্করাটি থাকে।
২৬। এদের মধ্যে নিহিত শক্তি পরিমাপের একক কী?
উত্তর : খাদ্যশক্তি পরিমাপের একক হলো খাদ্য ক্যালরি বা কিলোক্যালরি।
২৭। এক ক্যালরি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয় সে পরিমাণ তাপশক্তি হচ্ছে এক ক্যালরি।
২৮। খাদ্য ক্যালরি কাকে বলে?
উত্তর : ১ গ্রাম খাদ্য জারণের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয় তাকে খাদ্য ক্যালরি বলে।
২৯। অ্যামাইনো এসিড কী?
উত্তর : অ্যামাইনো এসিড় হলো আমিষ গঠনের মূল একক।
৩০। আমিষের মৌলিক উপাদান কয়টি ও কী কী?
উত্তর : আমিষের মৌলিক উপাদান চারটি। এগুলো হলো— কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন।
৩১। তেল কী?
উত্তর : যেসব স্নেহ পদার্থ তরল সেগুলোকে তেল বলে। তেল হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। যেমন : সয়াবিন তেল।
৩২। অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড কী?
উত্তর : যে ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বলে। যেমন: ফলিক এসিড, লিনোলিক এসিড ইত্যাদি।
৩৩। সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড কী?
উত্তর : যে ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন এক বন্ধন থাকে তাকে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বলে। যেমন : স্টিয়ারিক এসিড।
৩৪। স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবারের উৎস কী?
উত্তর : সয়াবিন ও সরিষার তেল, তিল, বাদাম, নারিকেল, ঘি, মাখন, পনির, ডিমের কুসুম, মাছের তেল ইত্যাদি।
৩৫। কোলেস্টেরল কী?
উত্তর : কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের স্নেহজাতীয় পদার্থ।
৩৬। কোলেস্টেরলের উৎস কী?
উত্তর : ডিমের কুসুম, কলিজা, মগজ, গরুর মাংস, খাসির মাংস ইত্যাদি কোলেস্টেরলের প্রধান উৎস।
৩৭। এক গ্রাম স্নেহ পদার্থ থেকে কত কিলোক্যালরি তাপশক্তি উৎপন্ন হয়?
উত্তর : এক গ্রাম স্নেহ পদার্থ থেকে প্রায় ৯ কিলোক্যালরি তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।
৩৮। স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলোর নাম লেখ।
উত্তর : স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো হলো ভিটামিন-A, ভিটামিন D, ভিটামিন E ও ভিটামিন K.
৩৯। পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলোর নাম লেখ।
উত্তর : পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো হলো ভিটামিন B কমপ্লেক্স এবং ভিটামিন C.
৪০। ভিটামিন A এর উদ্ভিজ্জ উৎসসমূহের নাম লেখ।
উত্তর : উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে ক্যারোটিনসমৃদ্ধ শাকসবজি হলো লালশাক, পুঁইশাক, পাটশাক, কলমিশাক, কচুশাক, গাজর, তেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া। এছাড়া আম, পেঁপে, কাঠাল ইত্যাদিতে
ভিটামিন A পাওয়া যায়।
৪১। ভিটামিন– এর প্রধান উৎস কী?
উত্তর : একমাত্র প্রাণিজ উৎস থেকে ভিটামিন-D পাওয়া যায় । ডিমের কুসুম, দুধ ও মাখন ভিটামিন-D এর প্রধান উৎস।
৪২। ভিটামিন D এর অভাবে কোন রোগ হয়?
উত্তর : ছোটদের রিকেটস এবং বড়দের অস্টিওমেলেশিয়া।
৪৩। ভিটামিন B কমপ্লেক্স কী?
উত্তর : ভিটামিন B কমপ্লেক্স বা ভিটামিন B সংখ্যায় ১২টি। ভিটামিনের এই দলকে ভিটামিন B কমপ্লেক্স বলা হয়।
৪৪। মুখ ও জিহ্বায় ঘা হয় কোন ভিটামিনের অভাবে?
উত্তর : ভিটামিন রাইবোফ্ল্যাভিন (B) এর অভাবে মুখ ও জিহবায় সাধারণত ঘা হয়।
৪৫। ভিটামিন C এর অভাবে কোন রোগ হয়?
উত্তর : ভিটামিন C এর তীব্র অভাবে স্কার্ভি (দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া) রোগ হয়।
৪৬। পুষ্টির উৎস কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর : পুষ্টিবিদগণ পুষ্টির উৎসকে চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। এগুলো হলো মাংস, দুধ, ফল-সবজি এবং শস্যদানা।
৪৭। সংরক্ষক (Preservative) কী?
উত্তর : পচন থেকে রক্ষা করার জন্য খাদ্যে যে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা হয়, তাদের সংরক্ষক বা প্রিজারভেটিভস (Preservative) বলে। যেমন: ভিনেগার।
৪৮। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রাসায়নিক সংরক্ষকের নাম লেখ?
উত্তর : ভিনেগার, সোডিয়াম বাই সালফেট, সোডিয়াম বেনজয়েট ইত্যাদি।
৪৯। ভিনেগার কী?
উত্তর : অ্যাসিটিক এসিডের ৫% জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলে। আচার, চাটনি, সস ইত্যাদিতে ভিনেগার ব্যবহার করে জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করা হয়।
৫০। ধুমপান কী?
উত্তর : শুকনা তামাক পাতা থেকে উৎপন্ন হয় সিগারেট, বিড়ি ও চুরুট। এগুলোকে পুড়িয়ে তার ধোঁয়া ও বাষ্প সেবনকে ধূমপান বলে।
৫১। ড্রাগ কী?
উত্তর : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ড্রাগ এমন সব পদার্থ, যা জীবিত প্রাণী গ্রহণ করলে এক বা একাধিক স্বাভাবিক আচরণের পরিবর্তন আসে।
৫২। বিশ্রাম কী?
উত্তর : সারা শরীরকে কিছুক্ষণ নিস্ক্রিয় অবস্থায় রেখে আরাম করাই হলো বিশ্রাম।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। জেরপথ্যালমিয়া বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মানবদেহে ভিটামিন A-এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। তবে এর অভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে চোখের কর্নিয়ায় আলসার সৃষ্টি হয়। চোখের এ অবস্থাকে জেরপথ্যালমিয়া রোগ বলে। এই
রোগ হলে একজন ব্যক্তি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়।
২। ড্রাগ আসক্তি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ড্রাগকে আমরা সাধারণ ভাষায় মাদক বলি। ক্রমাগত মাদকদ্রব্য সেবনের কারণে যখন এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় যে মাদকদ্রব্যের সাথে মানুষের দৈহিক ও মানসিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এবং মানুষ বাধ্যতামূলকভাবে মাদক সেবন ছাড়াই নানা সমস্যায় পড়ে তখন তাকে মাদকাসক্ত বা ড্রাগ আসক্তি বলে।
৩। কেক, বিস্কুট ও পাউরুটির ময়দার সাথে বেকিং সোডা মেশানো হয় কেন?
উত্তর : কেক, বিস্কুট ও পাউরুটির ময়দার সাথে বেকিং সোডা মেশানো হয় এগুলোকে ফোলানোর জন্য। কারণ তাপ প্রয়োগে বেকিং সোডা ভেঙে কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয় যা কেক, বিস্কুট বা পাউরুটিকে ফুলিয়ে তোলে।
৪। বডিমাস ইনডেক্স বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার। সূচককে বিএমআই বা বডিমাস ইনডেক্স বলে। তবে সাধারণত দেহে চর্বির পরিমাণের নির্দেশক হচ্ছে বিএমআই।
বিএমআইএর সূত্র হলো, বিএমআই = দেহের ওজন (কেজি)/দেহের উচ্চতা (মিটার)
অর্থাৎ দেহের ওজনকে দেহের উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যে ফল হবে, সেটিই হলো বিএমআই বা বডিমাস ইনডেক্স।
৫। আমরা আমিষজাতীয় খাদ্য খাই কেন?
উত্তর : আমিষযুক্ত খাদ্যকে বলা হয় দেহ গঠনের খাদ্য। দেহকোষের গঠনবস্তুর বেশির ভাগই আমিষযুক্ত। ফলে একজন স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আমিষের প্রাত্যহিক চাহিদা তার দৈহিক ওজনের প্রতি কিলোগ্রামের জন্য ১ গ্রাম। আবার আমিষজাতীয় খাদ্যের সাহায্যে দেহের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিডের চাহিদা নিশ্চিত করা যায়। আর এসব কারণেই আমরা আমিষ জাতীয় খাদ্য খাই।
৬। খাদপ্রাণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : জীবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বিশেষ এক ধরনের খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন হয়। ঐ খাদ্য উপাদানকে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ বলে। খাদ্যপ্রাণ প্রাণীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। খাদ্যপ্রাণের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধনসহ বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হয়। এটি সাধারণ খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে থাকে এবং বিপাকক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
৭। ক্যালরি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : এক গ্রাম খাদ্য জারণের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে খাদ্যের ক্যালরি বলে। ক্যালরি শক্তির একক। সাধারণত এক গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১° সেলসিয়াস বৃদ্ধি করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয় সে পরিমাণ তাপশক্তি হচ্ছে এক ক্যালরি।
৮। সুষম খাদ্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে খাদ্যে ছয়টি খাদ্য উপাদানই গুণাগুণ অনুসারে উপযুক্ত পরিমাণে থাকে এবং যে খাদ্য গ্রহণ করলে দেহের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়, তাকে সুষম খাদ্য বলে। অর্থাৎ সুষম খাদ্য তালিকায় শর্করা, শাক-সবজি, ফল-মূল, আমিষ ও স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য।
৯। পুষ্টি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় জীবদেহ পরিবেশ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে এবং আত্তীকরণের দ্বারা দেহের শক্তি চাহিদা পূরণ, রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে তাকে
পুষ্টি বলে।
১০। খাদ্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যেসব দ্রব্য আহার বা গ্রহণ করলে দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশ, দেহের টিস্যুগুলো ক্ষয়পূরণ এবং শক্তি উৎপাদন সাধিত হয় তাকে খাদ্য বলে। আমাদের স্বাস্থ্য মূলত নির্ভর করে আমরা
যে খাদ্য খাই তার গুণগত মানের ওপর।
১১। খাদ্যের কাজ উল্লেখ কর।
উত্তর : খাদ্যের কাজ নিচে দেওয়া হলো-
i. খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয়পূরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।
ii. খাদ্য দেহের তাপ উৎপাদন, কর্মশক্তি প্রদান করে।
iii. খাদ্য রোগ প্রতিরোধ করে দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখে।
১২। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর : শর্করা হলো কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ। শর্করাজাতীয় খাদ্য হলো মানুষের প্রধান খাদ্য। শর্করাজাতীয় খাদ্য দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে। শর্করা বর্ণহীন, গন্ধহীন ও মিষ্টি স্বাদযুক্ত হয়।
১৩। খাদ্য ও পুষ্টির মধ্যকার পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর : খাদ্য ও পুষ্টির পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো:
খাদ্য | পুষ্টি |
i. যা থেকে দেহে কর্মশক্তি সৃষ্টি হয়, দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধিত হয় তাকে খাদ্য বলে। | i. যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় পরিবেশ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু আহরণ করে জীবদেহে প্রয়োজনীয় উপাদানে এ শক্তি সংগৃহীত হয় ও জীবদেহের সুষ্ঠূ বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে তাকে পুষ্টি বলে। |
ii. বিভিন্ন ধরনের আহার্য বস্তুই হলো খাদ্য। | ii. পুষ্টি একটি সার্বিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। |
iii. প্রাণী ক্ষুধা নিবারণ ও বাঁচার তাগিদে খাদ্য গ্রহণ করে। | iii. পুষ্টি প্রাণীর দৈহিক গঠন ও সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। |
১৪। উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ আমিষের মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকর বলে তুমি মনে কর?
উত্তর : উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ দুই ধরনের আমিষই শরীরের জন্য প্রয়োজন। তবে দেহের জন্য উদ্ভিজ্জ আমিষের তুলনায় প্রাণিজ আমিষই বেশি কার্যকর। কারণ এতে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায়। প্রাণিজ আমিষের মধ্যে উদ্ভিজ্জ আমিষের তুলনায় অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় এর পুষ্টিমূল্যও বেশি।
১৫। চর্বি ও তেলের মধ্যকার পার্থক্য লেখ।
উত্তর : চর্বি ও তেলের ভেতর পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো:
চর্বি | তেল |
i. যেসব স্নেহ পদার্থ কঠিন সেগুলোকে চর্বি বলে। | i. যেসব স্নেহ পদার্থ তরল সেগুলোকে তেল বলে। |
চর্বি হলো সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। | ii. তেল হচ্ছে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। |
iii. সাধারণ তাপমাত্রায় চর্বি কঠিন অবস্থায় থাকে। | iii. সাধারণ তাপমাত্রা তেল তরল অবস্থায় থাকে। |
iv. উদাহরণ : সয়াবিন তেল, সরিষার তেল। | iv. উদাহারণ : মাছ ও মাংসের চর্বি। |
১৬। স্নেহ পদার্থসমূহের শ্রেণিবিভাগ কর।
উত্তর : উৎস অনুযায়ী স্নেহ পদার্থ দুই প্রকার। যথা-
i. প্রাণিজ স্নেহ : চর্বিসহ মাংস, মাখন, ঘি, পনির, ডিমের কুসুম ইত্যাদি প্রাণিজ স্নেহ পদার্থের উৎস।
ii. উজ্জি স্নেহ : বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিজ্জ তেল এই স্নেহ পদার্থের উদাহরণ। যেমন : সরিষা, সয়াবিন, তিল ইত্যাদি।
১৭। ভিটামিনকে জৈবিক প্রভাবক বলা হয় কেন?
উত্তর : ভিটামিনসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এদের অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন বা দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না। জীবদেহের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপ এদের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে ভিটামিন সমূহকে জৈবিক প্রভাবক বলা হয়।
১৮। ভিটামিন E কী কাজ করে?
উত্তর : মানবদেহে ভিটামিন E হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ধমনিতে চর্বি জমা রোধ করে এবং সুস্থ ত্বক বজায় রাখে। এছাড়া ভিটামিন E কোষ গঠনে সহায়তা করে এবং বেশ কিছু শারীরবৃত্তিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ভিটামিন E মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর বন্ধ্যাত্ব দূর করে।
১৯। ভিটামিন B কমপ্লেক্স–এর অন্তর্গত ভিটামিনগুলোর নাম লেখ।
উত্তর : ভিটামিন B কমপ্লেক্স-এর অন্তর্গত ভিটামিনগুলো হলো: i. থায়ামিন (B1) ii. রাইবোফ্ল্যাভিন (B2) ii. নিয়াসিন (B5) iv. পাইরিডক্সিন (B6) v. কোবালামিন (B12) ইত্যাদি।
২০। ভিটামিন B কমপ্লেক্সের কাজ উল্লেখ কর?
উত্তর : ভিটামিন B কমপ্লেক্সের কাজ নিম্নরূপ:
i. দেহের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ii. স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
iii. দেহকোষে বিপাক কাজে সাহায্য করে।
iv. প্রজনন সম্পন্ন করতে সাহায্য করে ইত্যাদি।
২১। ভিটামিন C আমাদের দেহে কী ধরনের কাজ করে?
উত্তর : ভিটামিন দেহে যেসব কাজ করে সেগুলো হলো:
i. ত্বক, হাড়, দাঁত ইত্যাদির কোষসমূহকে পরস্পরের সাথে জোড়া লাগিয়ে মজবুত গাঁথুনি প্রদান করে।
ii. শরীরের ক্ষত পুনর্গঠনে কাজ করে।
iii. দাঁত ও মাড়ি শক্ত রাখে।
iv. ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে।
v. রোগ প্রতিরোধ করে।
২২। মানবদেহে ক্যালসিয়ামের প্রভাব কীরূপ?
উত্তর : অস্থি ও দাঁতের গঠন শক্ত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম একটি অতি প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম রক্ত সঞ্চালনে, হূৎপিডের পেশির স্বাভাবিক সংকোচনে এবং স্নায়ু ও পেশির সঞ্চালনে সহায়তা করে। ক্যালসিয়ামের অভাবে আবার মানবদেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়।
২৩। সুষম খাদ্য পিরামিড বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : শর্করাজাতীয় খাদ্যকে নিচু স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফল-মূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বিজাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয় তাকে সুষম খাদ্য পিরামিড বলে। এই পিরামিডের শীর্ষে থাকে স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাদ্য এবং সর্বনিম্ন স্তরে থাকে শর্করা।
২৪। মানবদেহের জন্য পানির প্রয়োজন কেন?
উত্তর : মানবদেহের জন্য পানি অপরিহার্য। পানি খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দেহের গঠন এবং অভ্যন্তরীণ কাজ পানি ছাড়া চলতে পারে না। মানবদেহের দৈহিক ওজনের ৬০-৭৫% পানি। মানবদেহের রক্ত, মাংস, স্নায়ু, দাঁত, হাড় ইত্যাদি প্রতিটি অঙ্গ গঠনের জন্য পানি প্রয়োজন।
২৫। খাদ্য সংরক্ষণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : খাদ্য সংরক্ষণ বলতে খাদ্যকে নষ্ট হওয়া বা খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করাকে বোঝায়। বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাত করা হয় বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করে। তবে গৃহে সাধারণত সংরক্ষক দ্রব্যের ও যন্ত্রপাতির ব্যবহারে খাদ্য সংরক্ষণ করা হয়। খাদ্য সংরক্ষণের জন্য শুষ্ককরণ, রেফ্রিজারেশন, ফ্রিজিং পদ্ধতি ও সংরক্ষক দ্রব্য ব্যবহৃত হয়।
২৬। রাফেজ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : রাফেজ হলো সেলুলোজ নির্মিত উদ্ভিদ কোষপ্রাচীর। সম্পূর্ণ শস্যবীজ, ডাল, আলু, খোসাসমেত টাটকা ফল এবং শাকসবজি রাফেজের প্রধান উৎস। এগুলো ছাড়াও শুকনা ফল, জিরা, ধনে, মটরশুটি প্রভৃতিতে রাফেজ পাওয়া যায়। রাফেজ দেহে কোনো পুষ্টি না জোগালেও কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।
জেএসসি ও এসএসসি সকল বিষয়ের নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৭। ভিটামিন দেহের জন্য প্রয়োজন কেন?
উত্তর : খাদ্যে পরিমাণমতো শর্করা ও আমিষ থাকলেও জীবের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বিশেষ এক ধরনের উপাদান প্রয়োজন হয়। ঐ খাদ্য উপাদানকে ভিটামিন বলে। ভিটামিন সাধারণ খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে এবং বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কোএনজাইম হিসেবে কাজ করে। এটি প্রাণীর বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। এর অভাবে শরীরে ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনসহ বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হয়। আর এ কারণেই ভিটামিন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
২৮। দেহে পানির অভাবে কী ধরনের সমস্যা দেখা যায়?
উত্তর : দেহে পানির অভাবে পিপাসা তীব্র হয়। রক্ত সয়ালনে ব্যাঘাত ঘটে, ত্বক কুঁচকে যায়। পানির অভাবে স্নায়ু ও পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। দেহে পানির পরিমাণ কমে গেলে অম্ল ও ক্ষারের সমতা নষ্ট হয়, যা এসিডোসিস রোগের সৃষ্টি করে। এছাড়া দেহে ১০% পানি কমে গেলে সংজ্ঞা লোপ পায়, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
২৯। Food Poisoning বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ব্যাকটেরিয়া খাদ্যদ্রব্যকে নষ্ট করে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে। এই বিষাক্ত উপাদানগুলোকে টক্সিন বলে। এই টক্সিনগুলো আবার বিভিন্ন রকমের হয়। খাদ্যের এ অবস্থাকে আমরা Food Poisoning বলি। এই Food Poisoning এর কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৩০। ফরমালিনযুক্ত খাবার খেলে আমাদের কী ধরনের সমস্যা হয়?
উত্তর : ফরমালিনযুক্ত খাবার খেলে মানবদেহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। যেমন : বদহজম, পাতলা পায়খানা, পেটের নানা পীড়া, হাঁপানি, লিভার ও কিডনি নষ্ট হওয়াসহ ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ফরমালিনযুক্ত খাবার খেলে নারীদের গর্ভজাত সন্তান বিকলাঙ্গ হতে পারে।
৩১। ধূমপানের কারণে মানবদেহে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়?
উত্তর : ধূমপানের কারণে মানবদেহে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয় সেগুলো হলো:
i. ধূমপায়ীরা দ্রুত রোগাক্রান্ত হয়।
ii. ধূমপানের ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। যেমন-ফুসফুস ক্যান্সার, ঠোট, মুখ, গলা ও মূত্রথলির ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস এবং হৃদযন্ত্র ও রক্তের বিভিন্ন রোগ ইত্যাদি।
iii. বেশি ধূমপানের ফলে মানুষের আয়ু কমে যায়।
৩২। ড্রাগের ওপর কীভাবে মানুষের আসক্তি জাগে?
উত্তর : ড্রাগের ওপর মানুষের নানাভাবে আসক্তি জাগতে পারে। যেমন : কৌতূহল, সঙ্গদোষ, হতাশা দূর করার জন্য, মানসিক যন্ত্রণা লাঘব করার জন্য, নিজেকে বেশি কার্যক্ষম করার উদ্দেশ্যে, পরিবারের অশান্তি এবং পারিবারিক অভ্যাসগত কারণে ইত্যাদি। এ ছাড়া বাবা বা মার কোনো মাদকে আসক্তি থাকলে তার থেকে সন্তান ও ওই মাদকে আসক্ত হতে পারে।
৩৩। HIV মানুষের শরীরে কী ক্ষতি করে?
উত্তর : HIV মানুষের দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। HIV দেহের রক্তে প্রবেশ করে রক্তের শ্বেতকণিকার T- লিম্ফোসাইটকে আক্রমণ করে। ফলে এগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে নানা রকমের বিরল রোগের সংক্রমণ ঘটে। যেমন : শ্বাসতন্ত্রের রোগ, মস্তিষ্কের রোগ, পরিপাকতন্ত্রের রোগ এবং টিউমার।
৩৪। AIDS প্রতিরোধে আমাদের করণীয় কী?
উত্তর : AIDS প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলো HIV সংক্রমণ কীভাবে ঘটে সে সম্বন্ধে সকলকে সচেতন করা। রক্তদান বা গ্রহণ, অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক এবং ড্রাগ ব্যবহারকারীদের সিরিঞ্জের মাধ্যমে HIV সংক্রমণের ঝুঁকি সম্বন্ধে সকলকে সচেতন করা। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে মরণব্যাধি AIDS এর সংক্রমণ যেভাবে ঘটে সে সম্বন্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এ রোগ থেকে জনসাধারণকে মুক্ত করা।
এসএসসি সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৩৫। তোমার ওজন ৮০ কেজি ও উচ্চতা ১.৮ মিটার। তোমার BMI কত?
উত্তর : BMI = দেহের ওজন (কেজি)/ [দেহের উচ্চতা (মিটার)]২
এখানে ওজন = ৮০ কেজি, উচ্চতা = ১.৮ মিটার।
BMI= ৮০/ (১.৮x১.৮)
= ২৪.৭ (প্রায়)
৩৬। খাদ্য কেন গ্রহণ করতে হয়?
উত্তর : দেহের বৃদ্ধি, শক্তি উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ তথা পুষ্টি বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণের জন্য খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তাছাড়া আমরা বাঁচতে পারতাম না।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- দেহের পুষ্টি সাধন করে – খাদ্য।
- দেহের শক্তি উৎপাদক খাদ্য – শর্করা।
- পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিকে দৈনিক শর্করা খাদ্য গ্রহণ করতে হয় ন্যূনতম -৩০০ গ্রাম।
- কোষে নিউক্লিক এসিড গঠনে অংশ নেয়- রাইবোজ।
- এক গ্রাম খাদ্য জারণের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয় তাকে বলে- খাদ্যের ক্যালরি।
- প্রতি গ্রাম শর্করা জারণে শক্তি উৎপন্ন হয়- ৪.১ কিলোক্যালরি।
- দেহে তাপশক্তি উৎপাদনের কাজ করে- স্নেহ।
- আমিষকে বলা হয়- দেহ গঠনের খাদ্য।
- দেহে পরিপোষক খাদ্য হলো- শর্করা, আমিষ ও স্নেহ পদার্থ ।
- দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে – শর্করা।
- আপেল, গাজর, খেজুরে বিদ্যমান শর্করা – গ্লুকোজ
- আখের রস, চিনি, গুড়, মিসরিতে থাকা শর্করা- সুক্রোজ
- আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু, ফুলের মধুতে পাওয়া যায় – ফুকটোজ।
- বেল, আম, কলা, তরমুজ, শুকনা ফলসহ সব ধরনের সবজিতে পাওয়া যায় – সেলুলোজ
- আমাদের দেহের ওজনের — ৬০-৭৫% পানি।
- একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক পানি পান করা উচিত – ২-৩ লিটার
- BMI = দেহের ওজন (কেজি)/(দেহের উচ্চতা)২
- আমাদের দেহে চর্বির পরিমাণের নির্দেশকই হচ্ছে- বিএমআই (BMI)
- স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো হচ্ছে— A, D, E ও K
- পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন হচ্ছে— B কমপ্লেক্স ও C
- আমিষে নাইট্রোজেন থাকে- ১৬%।
- পরিপাকের পর আমিষ পরিণত হয়— অ্যামাইনো এসিডে ।
- ছানা, পনির ইত্যাদি – প্রাণিজ আমিষ।
- প্রাণীদেহের শুষ্ক ওজনের প্রায় ৫০% হলো – প্রোটিন।
- গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন প্রোটিন খাওয়া উচিত- ২-৩ গ্রাম।
- কোষের গঠন এবং কার্যাবলি নিয়ন্ত্রিত হয় – প্রোটিনের সাহায্যে।
- ১০০ গ্রাম খাসির মাংসে প্রোটিন পাওয়া যায় – ২১.৪ গ্রাম।
- সবচেয়ে বেশি পরিমান প্রোটিন পাওয়া যায়- শিংমাছে।
- মানুষের শরীরে অ্যামাইনো এসিড থাকে – ২০ ধরনের।
- ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারল এর সমন্বয়ে গঠিত – স্নেহ পদার্থ।
- কঠিন স্নেহ পদার্থগুলোকে বলে – চর্বি।
- অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড – তৈল।
- খাদ্য বস্তুর মধ্যে সর্বাধিক তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করে – স্নেহ পদার্থ।
- দেহে স্নেহ পদার্থের অভাবজনিত রোগ – একজিমা।
- দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্যে প্রয়োজন – স্নেহ পদার্থ।
- সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড – চর্বি।
- সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন অবস্থায় থাকে— চর্বি।
- উৎস অনুযায়ী স্নেহ পদার্থ – ২ প্রকার।
- এক গ্রাম স্নেহ পদার্থ থেকে তাপশক্তি উৎপন্ন হয়- ৯.৩ kCal।
- বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে – ভিটামিন।
- দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে – ভিটামিন A।
- দেহের স্বাভাবিক গঠন ও বর্ধন সুষ্টভাবে সম্পন্ন হওয়ার কাজ নিশ্চিত করে – ভিটামিন A•
- ভিটামিন D এর প্রধান উৎস হচ্ছে – ডিমের কুসুম।
- মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের বন্ধ্যাত্ব দূর করে – ভিটামিন E।
- মানবদেহে ভিটামিন E কাজ করে – অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে।
- শুধুমাত্র প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া ভিটামিন – ভিটামিন D।
- ভিটামিন-C এর অভাবে দেখা দেয় – স্কার্ভি রোগ।
- টাটকা শাকসবজি ও টাটকা ফলে পাওয়া যায় – ভিটামিন-C।
- পাম তেল উত্তম উৎস – ভিটামিন E ।
- কোষ গঠনে সহায়তাকারী খাদ্য উপাদান- খনিজ পদার্থ ।
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের লৌহের প্রয়োজন- ৯ গ্রাম।
- ফসফরাস এর অভাবে দেখা দেয়- রিকেটস, অস্থিরতা, দন্তক্ষয় ইত্যাদি রোগ।
- আমাদের দেহে পানির পরিমাণ ওজনের শতকরা ৬০-৭৫%।
- দেহের তাপকে নিয়ন্ত্রণ করে পানি।
- একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক পানি পান করা উচিত – ২-৩ লিটার।
- মানবদেহে ক্যালসিয়াম থাকে মোট ওজনের শতকরা – দুই ভাগ।
- বাড়ন্ত শিশুর প্রত্যহ খনিজ লবণের প্রয়োজন- ০.৫-১.৫ গ্রাম।
- হিমোগ্লোবিনের পরিমান কমে গেলে দেখা দেয়- রক্তশূন্যতা।
- মানুষের দেহের উচ্চতার বৃদ্ধি ঘটে – ২০-২৪ বছর পর্যন্ত।
- দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করার সূচককে বলা হয়— বিএমআই।
- আমাদের দেহের চর্বির পরিমাণের নিদের্শক হচ্ছে- বিএমআই।
- ০১ বছর বয়সের একটি শিশু প্রত্যাহিক ক্যালরির চাহিদা হচ্ছে- ৮২০ কিলো ক্যালরি।
- বিএমআই এর সূত্র হচ্ছে – দেহের ওজন / [দেহের উচ্চতা (মিটার)]২
- Quetelet Index-এর অপর নাম- BMI
- রাসায়নিক পদার্থ অধিক পরিমাণে থাকে- ফাস্ট ফুডে।
- লবণের দ্রবণকে বলা হয়- ব্রাইন।
- ফল দ্রত পাকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়- Ripen ও Ethylin।
- এসিটিক এসিডের ৫% জলীয় দ্রবণ হলো— ভিনেগার।
- খাদ্য নষ্টের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া কর্তৃক উৎপন্ন বিষাক্ত উপাদান – Toxin.
- পাউরুটিতে ধূসর বর্ণের আবরণ তৈরী করে- মোন্ড ছত্রাক।
- টক জাতীয় খাবার নষ্টের জন্যে দায়ী হলো- মিউকর।
- ঈস্ট বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে- সোডিয়াম বেনজয়েট।
- ফল পাকাতে ব্যবহৃত হয়- ক্যালসিয়াম কার্বাইড।
- হরমোন জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ হচ্ছে- কালটার।
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর:
১. গাজরে প্রধানত কোনটি পাওয়া যায়?
ক. গ্লুকোজ খ. ফুকটোজ
গ. সুক্রোজ ঘ. বিটা ক্যারোটিন
উত্তর: ক. গ্লুকোজ
২. স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো হলো—
i. A, D, E ii. A, B, C iii. A, D, K
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: খ. i ও iii
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রহিমার ওজন ৫০ কেজি ও উচ্চতা ১.৫ মিটার। গতকাল সকাল থেকে তার বমি ও পাতলা পায়খানা হওয়ায় দেহে পানির অভাবসহ ওজন হ্রাস পেয়ে ৪৭ কেজি হয়ে গেছে ।
৩. রহিমার দেহে প্রয়োজনীয় উপাদানটির অভাবে-
i. রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে
ii. পেশি নাজুক হয়ে পড়ে
iii. লবণের ভারসাম্য বজায় থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৪. অসুস্থ হওয়ার পর রহিমার সূচি (BMI) কত হয়েছে?
ক. ২২.৩ (প্রায়) খ. ২০.৯ (প্রায়)
গ. ৪৯.২৫ (প্রায়) ঘ. ৪৪.৭৫ (প্রায়)
উত্তর: খ. ২০.৯ (প্রায়)
৫. কোন রাসায়নিক পদার্থ দই, মিষ্টি ও বেকারী সামগ্রী সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়?
ক. সোডিয়াম বেনজয়েট খ. সোডিয়াম বাই সালফেট
গ. সরবেটস ঘ. ভিনেগার
উত্তর: গ. সরবেটস
৬. ফাস্ট ফুডে কোনটি অধিক পরিমাণে থাকে?
ক. খনিজ লবণ খ. রাসায়নিক পদার্থ
গ. স্নেহ পদার্থ ঘ. ভিটামিন।
উত্তর: খ. রাসায়নিক পদার্থ
৭. ভিটামিন ‘A’ এর অভাবে কোন রোগ হয়?
ক বেরিবেরি খ. রাতকানা
গ. অ্যানিমিয়া ঘ. পেলেগ্রা
উত্তর: খ. রাতকানা
৮. প্রাণিদেহের শুষ্ক ওজনের প্রায় শতকরা কতভাগ প্রোটিন?
ক. ৬০% খ. ৫০%
গ. ৪০% ঘ. ৩০%
উত্তর: খ. ৫০%
৯. কত সালে সর্বপ্রথম AIDS চিহ্নিত হয়?
ক ১৯৮০ খ. ১৯৮১
গ. ১৯৮২ গ. ১৯৮৩
উত্তর: খ. ১৯৮১
১০. কোনটি চোখের জন্য ক্ষতিকর?
ক. চা ও পান খ. কফি ও পান
গ. ধুমপান ঘ. ফাস্টফুড
উত্তর: গ. ধুমপান
১১. কোনটি খাদ্যের সহায়ক উপাদান?
ক. পানি খ. আমিষ
গ. শর্করা ঘ. স্নেহ
উত্তর: ক. পানি
১২. একজন ব্যক্তির ওজন ৬৫ কেজি এবং উচ্চতা ১.৭৫ মিটার। ঐ ব্যক্তির BMl= কত?
ক. ২৪.৭ (প্রায়) খ. ২৭.৪ (প্রায়)
গ. ২১.২৪ (প্রায়) ঘ. ২১.২২ (প্রায়)
উত্তর: ঘ. ২১.২২ (প্রায়)
১৩. উদ্ভিজ্জ আমিষ কোনটি? |
ক. ডিম খ. পনির
গ. মাছ ঘ. ডাল
উত্তর: ঘ. ডাল
১৪. প্রাণীরা খাদ্যের মাধ্যমে কোনটি গ্রহণ করে।
ক. শর্করা খ. এনজাইম
গ. তাপ ঘ. বায়ু
উত্তর: ক. শর্করা
নিজের উদ্দীপকটি পড় এবং ১৫ ও ১৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
গ্রামের ছেলে মাহিন। একদিন সন্ধ্যার পর পড়তে বসে সে তার মাকে চিৎকার করে ডেকে বলে মা আমি চোখে ঝাপসা দেখছি। মা তেমন গুরুত্ব দিলেন না। কিছুদিন পর সে অনুভব করল সন্ধ্যার পর থেকে সে কিছুই দেখতে পায় না।
১৫. মাহিন এর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যউপাদানটি হলো—
i. গাজর, কাঁঠাল
ii. আম, পাকা পেঁপে
iii. লেটুস পাতা, ডাল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
১৬. কোন ভিটামিনের অভাবে মাহিন এ রোগে আক্রান্ত হয়?
ক. ভিটামিন A খ. ভিটামিন B
গ. ভিটামিন C ঘ. ভিটামিন D
উত্তর: ক. ভিটামিন A
১৭. প্রতি গ্রাম শর্করা জারণে কত কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন হয়?
ক. ০৪.১ খ. ৬.২
গ. ৬.৬ ঘ. ৯.৩
উত্তর: ক. ০৪.১
১৮, রাফেজ এর প্রধান উপাদান কোনগুলো?
ক. চাল, আটা, চিনি খ. ডাল, আটা, শাক-সবজি
গ. আম, জাম, মিষ্টিকুমড়া ঘ. মাখন, মাছের তেল, কলিজা
উত্তর: খ. ডাল, আটা, শাক-সবজি
১৯. কোনটি পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন?
ক. A খ. E
গ. C ঘ. D
উত্তর: গ. C
২০. নিচের কোনটিকে দেহ গঠনের খাদ্য বলা হয়?
ক. আমিষ খ. স্নেহ
গ. ভিটামিন ঘ. শর্করা
উত্তর: ক. আমিষ
২১. সুপার রাইস কোন ভিটামিন সমৃদ্ধ? |
ক. ভিটামিন A খ. ভিটামিন B
গ. ভিটামিন C ঘ. ভিটামিন D
উত্তর: ক. ভিটামিন A
২২. কোনটি শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য?
ক. পনির খ. ডাল
গ. চিনি ঘ. ডিম
উত্তর: ক. পনির
২৩. নিভার ওজন ৫০ কেজি এবং উচ্চতা ১.৫ মিটার। তার ভরসূচি কত?
ক. ২২.২২ খ. ২৪.৭
গ. ২৫.৩২ ঘ. ২৭.৪৭
উত্তর: ক. ২২.২২
২৪. রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বেশি করে খেতে হবে-
ক. গাজর, পাকা পেঁপে খ. পুদিনা পাতা, করলা
গ. টেকি ছাটাচাল, অংকুরীত বীজ ঘ. লেটুসপাতা, তুলাবীজের তেল
উত্তর: ক. গাজর, পাকা পেঁপে
এসএসসি সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
২৫. কোন ভিটামিন ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে?
ক. ভিটামিন-এ খ. ভিটামিন-বি
গ. ভিটামিন-সি ঘ. ভিটামিন-ই
উত্তর: গ. ভিটামিন-সি
২৬. কোনটি খাদ্য পিরামিডের সর্বনিম্ন অবস্থিত?
ক) শাক-সবজি খ. আটা।
গ. মাছ ঘ. তেল
উত্তর: খ. আটা
২৭. নিয়নের দেহের ওজন ৬০ কেজি এবং উচ্চতা ১.৫ মিটার হলে, বিএমআই কত?
ক.২৬.৭ খ. ২৭.৭
গ. ২৮.৭ ঘ. ২২.২২
উত্তর: ক.২৬.৭
২৮. নিচের কোনটি অভাবে বয়স্ক মহিলাদের অস্টিওম্যালেসিয়া রোগ হয়?
ক. ফসফরাসের খ. লৌহের
গ. ক্যালসিয়ামের ঘ. পটাসিয়ামের
উত্তর: গ. ক্যালসিয়ামের
২৯. ৬৫ কেজি দেড়মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট একজন ব্যক্তির BMI নিচের কোনটি?
ক. ৯৭.৫ খ. ৪৩.৩৩
গ.২৮.৮৯ ঘ.৩০.০৩
উত্তর: গ.২৮.৮৯
৩০. ভিটামিন E এর অভাবে নিচের কোনটি ঘটে?
ক. ভ্রূণের মৃত্যু হতে পারে
খ. বুকে ধড়ফড় করতে পারে
গ. অস্থির গঠন মজবুত হতে পারে
ঘ. ধমনিতে ক্যালসিয়াম জমা হতে পারে।
উত্তর: ক. ভ্রূণের মৃত্যু হতে পারে।
৩১. আমিষ গঠনের একক কোনটি?
ক. হাইড্রোক্লোরিক এসিড খ. কার্বোলিক এসিড
গ. ফরমিক এসিড ঘ.অ্যামাইনো এসিড
উত্তর: ঘ. অ্যামাইনো এসিড
৩২. একটি বাড়ন্ত শিশুর প্রত্যহ কী পরিমাণ ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়?
ক. ৫০০-৬০০ mg খ. ৪৫০-৫৫০ mg
গ. ৪০০-৪৫০ mg ঘ.৩০০-৪০০ mg
উত্তর: ক. ৫০০-৬০০ mg
৩৩. দুধের শর্করার নাম কী?
ক. গ্লুকোজ খ. গ্যালাকটোজ
গ. ল্যাকটোজ ঘ. মল্টোজ
উত্তর: গ. ল্যাকটোজ
৩৪. আমিষে শতকরা কত ভাগ নাইট্রোজেন বিদ্যমান?
ক.২০% খ. ১৫%
গ. ১৬% ঘ. ২০%
উত্তর: গ. ১৬%
৩৫. HIV-এর পূর্ণ নাম কী?
ক. Human Immune deficiency virus
খ. Human Immuno deficiency
গ. Human Immuno deficiency virus
ঘ. Acquired Immune deficiency Syndrome
উত্তর: গ. Human Immuno deficiency virus
৩৬. খাদ্যে কয় ধরনের ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়?
ক. প্রায় ১৫ ধরনের খ. প্রায় ১৮ ধরনের
গ. প্রায় ২০ ধরনের ঘ. প্রায় ২১ ধরনের
উত্তর: গ. প্রায় ২০ ধরনের
৩৭. রাফেজের প্রধান উৎস হচ্ছে-
i. শাকসবজি ii. আলু iii. ডাল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ঘ. i, ii ও iii
৩৮.ভিটামিন C এর অভাবে –
i. ঠোটে ফাটল দেখা দেয়
ii. তুকে ঘা হয়, ক্ষত শুকাতে দেরি হয়।
iii. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সহজে ঠাণ্ডা লাগে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: গ. ii ও iii
৩৯. হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ কমে গেলে কী লক্ষণ প্রকাশ পায়?
i. চোখ ফ্যাকাশে, হাত পা ফোলা
ii. দুর্বলতা, মাথা ঘোরা
iii. অস্থিক্ষয়, দন্তক্ষয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
৪০. রাফেজ প্রতিরোধ করে–
i. কোষ্ঠকাঠিন্য ii. হৃদরোগ iii. ক্যান্সার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
উত্তর: ক. i ও ii
আরও গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন-১: ১৪ বছরের তনুর ওজন ৩৫ কেজি এবং উচ্চতা ১.৫ মিটার। ইদানীং তার ত্বকে লালচে দাগ পড়ছে, খাওয়ায় তেমন রুচি নেই। কিন্তু দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে।
ক. ভরসূচি কী?
খ. জেরপথ্যালমিয়া রোগ বলতে কী বোঝায়?
গ. তনুর দুই দিনের মৌল বিপাকে কত শক্তি ব্যয় হবে?
ঘ. তনুর সমস্যাগুলোর সমাধানের উপায় বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য রক্ষা করার সূচককে Body Mass Index বা ভরসূচি বলে।
খ. মানবদেহে ভিটামিন A-এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। এর অভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে চোখের কর্নিয়ায় আলসার সৃষ্টি হয়। চোখের এ অবস্থাকে জেরপথ্যালমিয়া রোগ বলে। এই রোগ হলে
একজন ব্যক্তি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়।
গ. সম্পূর্ণ দৈহিক ও মানসিক অবস্থায় (নিদ্রা অবস্থায় নয়) দেহথেকে যে ন্যূনতম তাপশক্তি নির্গত হয়, যা ঐ অবস্থায় শ্বসন, রক্ত সঞ্চালন, সমন্বয় সাধন, রেচন, পরিপাক ইত্যাদি ক্রিয়াগুলোকে পরিচালনা করে তাকে মৌল বিপাক বলে।
একজন পুরুষের মৌল বিপাকের ক্ষেত্রে প্রতি ১ কেজি ওজনে প্রতি ঘণ্টায় ১ কিলোক্যালরি শক্তি প্রয়োজন আবার একজন মহিলার মৌল বিপাকের ক্ষেত্রে প্রতি ১ কেজি ওজনে প্রতি ঘণ্টায় ০.৯ কিলোক্যালরি শক্তি প্রয়োজন হয়।
উদ্দীপকের তনুকে মহিলা হিসেবে বিবেচনা করে তার মৌল বিপাকের জন্য ব্যয়িত শক্তি হিসাব করা হলো:
দেওয়া আছে, তনুর ওজন = ৩৫ কেজি
এক দিনের (২৪ ঘন্টা) মৌল বিপাকে ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ
= দেহের মোট ওজন x ০.৯ x সময়
= (৩৫ x ০.৯ X ২৪) কিলোক্যালরি
= ৭৫৬ কিলোক্যালরি
.:. দুই দিনের মৌল বিপাকে ব্যয়িত শক্তির পরিমাণ
= (৭৫৬ x ২) কিলোক্যালরি
= ১৫১২ কিলোক্যালরি।
সুতরাং, তনুর দুই দিনের মৌল বিপাকে ১৫১২ কিলোক্যালরি শক্তি ব্যয় হবে।
ঘ. উদ্দীপকে তনুর যে দুটি সমস্যা সম্পর্কে বলা হয়েছে তা থেকে বোঝা যায় যে, তনুর ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের অভাব হয়েছে। তনুর সমস্যা দুটির মধ্যে ত্বকে লালচে দাগ পড়া যা পেলেগ্রা রোগের লক্ষণ। এই পেলেগ্রা রোগ নিয়াসিন বা নিকোটিনিক এসিডের (B5) অভাবে হয়। এক্ষেত্রে তনুকে নিয়মিত ভিটামিন (B5) যুক্ত খাবার অর্থাৎ মাংস, আটা, ডাল, বাদাম, তেলবীজ, ছোলা, শাক-সবজি ইত্যাদি খেতে হবে।
জেএসসি ও এসএসসি সকল বিষয়ের নোট পেতে এখানে ক্লিক করুন
আবার উদ্দীপকে বলা হয়েছে, তনুর খাওয়ার তেমন রুচি নেই। কিন্তু দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। এক্ষেত্রে তার শরীরে ভিটামিন পিরিডক্সিনের (B6) অভাব হয়েছে।
অতএব তনুকে নিয়মিত ভিটামিন B6 যুক্ত খাবার, যেমন : চাল, আটা, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ছোলা, বৃক্ক, ডিমের কুসুম ইত্যাদি খেতে হবে। অর্থাৎ তার সমস্যাগুলো সমাধানের উপায় হলো প্রতিদিন ভিটামিন B5 ও B6 যুক্ত খাবারগুলো গ্রহণ করা।
প্রশ্ন-২: নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. রাফেজ কী?
খ. খাদ্যপ্রাণ বলতে কী বোঝায়?
গ. খাদ্য পিরামিডের খাদ্যগুলোর বিকল্প খাদ্য ব্যবহার করে এক দিনের দুপুরের সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি কর।
ঘ. D চিহ্নিত খাদ্য উপাদানটি গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শস্যবীজ, ডাল, আলু, খোসা সমেত টাটকা ফল এবং শাকসবজি ইত্যাদির দীর্ঘ তন্তুময় অংশই হলো রাফেজ।
খ. জীবের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শর্করা ও আমিষ ছাড়াও বিশেষ যে খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন হয় তাই খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন। এটি সাধারণত খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে থাকে। বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে খাদ্যপ্রাণ কাজ করে। এটি প্রাণীর বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। এই উপাদানটি জৈব প্রকৃতির যৌগিক পদার্থ। এর অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনসহ বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হয়।
গ. উদ্দীপকে একটি খাদ্য পিরামিড দেখানো হয়েছে। উল্লিখিত খাদ্য পিরামিডে খাদ্যের উপাদানগুলোকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো-
A-স্নেহ জাতীয় খাদ্য (দুধ), B-আমিষ জাতীয় খাদ্য (মাংস), C- ভিটামিন জাতীয় খাদ্য (পুইশাক, আম) এবং D- শর্করা জাতীয় খাদ্য (শস্যদানা)। একটি সুষম খাদ্যতালিকায় শর্করা, ভিটামিন, আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য।
এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উদ্দীপকের খাদ্য পিরামিডের খাদ্যগুলোর বিকল্প খাদ্য ব্যবহার করে এক দিনের দুপুরের সুষম খাদ্য তালিকা নিচে দেওয়া হলো-
দুধের পরিবর্তে – পনির বা দই
মাংসের পরিবর্তে – মাছ বা ডাল
পুইশাক ও আমের বদলে – লাল শাক ও জাম
শস্যদানার পরিবর্তে – ভাত বা রুটি
আমাদের দেশে দুপুরের খাবারকে সাধারণত প্রধান খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই দুপুরের খাবারে অবশ্যই উপরোক্ত সুষম খাদ্য তালিকার খাদ্য থাকা ভালো।
ঘ. একটি সুষম খাদ্য পিরামিডের সর্ব নিচু স্তরে শর্করাকে রাখা হয়। আর উদ্দীপকের শস্যদানাও শর্করার উদ্ভিজ্জ উপাদান। সুতরাং উদ্দীপকের D চিহ্নিত খাদ্য উপাদানটি শর্করা। শর্করা মানুষের প্রধান খাদ্য। এটি দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে।
দেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণে শর্করার ভূমিকা অপরিহার্য। জীবদেহের বিপাকীয় কাজের জন্য যে শক্তি লাগে তা শ্বসনের সময় শর্করা জাতীয় খাদ্য জারণের ফলে উৎপন্ন হয়। শস্যদানা হতে প্রাপ্ত প্রতিগ্রাম শর্করা জারণে ৪.১ কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়। সেলুলোজ একটি অপাচ্য প্রকৃতির শর্করা। এটি আঁশযুক্ত খাদ্য যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোধক। এছাড়া শর্করা থেকে প্রোটিন ও ফ্যাট সংশ্লেষ হয়। খাদ্যে এর অভাব ঘটলে স্নেহ জাতীয় পদার্থের দহন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে না। ফলে শরীরে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থের সৃষ্টি হয়ে কিটোসিস রোগ হয়।
আবার শর্করার অভাবে দেহের ওজন কমে যায়, ক্ষুধা বেড়ে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এসকল কারণেই D চিহ্নিত খাদ্য উপাদানটির গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রশ্ন-৩: ধুমপান, মদপান, তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সিগারেটের প্যাকেটে লেখা থাকে ধুমপান মৃত্যুর কারণ তবু মানুষ এগুলো গ্রহণ করে।
ক. ড্রাগ কী?
খ. মাদকাসক্ত ব্যক্তির লক্ষণ কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বদঅভ্যাসের ক্ষতিকর দিকগুলো বিবৃত করো।
ঘ. উক্ত অভ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়? তোমার মতামত দাও।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যেসব পদার্থ জীবিত প্রাণী গ্রহণ করলে তার এক বা একাধিক স্বাভাবিক আচরণের পরিবর্তন ঘটে তাই হলো ড্রাগ।
খ. মাদকাসক্ত ব্যক্তির মধ্যে কতগুলো লক্ষণ প্রকাশ পায়। মাদকাসক্ত ব্যক্তির খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ কমে যায়, সবসময় অগোছালোভাব, দৃষ্টিতে অস্বচ্ছতা এবং চোখ লাল হওয়া, ঘুম না হওয়া, অলসতা ও উদ্বেগভাব ইত্যাদি।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বদ অভ্যাসটি হলো ধূমপান করা। উক্ত বদ অভ্যাসের কারণে মানবদেহে যেসব ক্ষতিকর অবস্থা বা রোগ দেখা যায় সেগুলো হলো-
ধূমপায়ীরা দ্রুত রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ধূমপায়ীরা কোনো না কোনো কারণে রোগে ভোগে। যেমন- ফুসফুস ক্যান্সার, মুখ, ঠোট, ল্যারিংক্স, গলা ও মূত্রথলির ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, হৃদযন্ত্র ও রক্তঘটিত রোগ। – যেসব লোক ধূমপান করে না অথচ ধূমপায়ীদের কাছাকাছি থেকে ধূমপায়ীর নির্গত ধোঁয়া প্রশ্বাসের সঙ্গে নেয় তাদের ক্ষতি বেশি হয়। – ধূমপানের ফলে দেখা দেয় ফুসফুসের ক্যান্সার, যার ফলে রোগী প্রায় ৫ বছরের মধ্যে মারা যায়।
ঘ. উক্ত অভ্যাস বা ধূমপান নিয়ন্ত্রণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়-
– বাস, রেল, খোলা স্থান, রেস্তোরা, হাসপাতাল, অফিসসহ সকল উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে।
– “যেখানে সেখানে ধূমপান করা আইনত দণ্ডনীয় আমাদের দেশে এ ধরনের আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। প্রচলিত এই আইনকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
– তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা। স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিকটে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
উপরিউক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে উক্ত অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
প্রশ্ন-৪ : নবম শ্রেণির ছাত্র তুহিন প্রায়ই ফাস্ট ফুড খায় । একদিন সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা তাকে ডাক্তারের নিকট নিয়ে গেলেন। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার পর বললেন, তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ। সুষম খাদ্য খেতে হবে।
ক. পুষ্টি কী?
খ. আমরা আমিষ জাতীয় খাদ্য খাই কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে তুহিনের অসুস্থতার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুহিন সম্পর্কে ডাক্তারের উক্তির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
এসএসসি সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. যে বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় জীবদেহ পরিবেশ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে এবং আত্তীকরণের দ্বারা দেহের শক্তি চাহিদা পূরণ, রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে তাই পুষ্টি।
খ. আমাদের দেহ কোষের গঠন এবং কার্যাবলি আমিষের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়া দেহের অস্থি, পেশি, লোম, নখ প্রভৃতি আমিষ দিয়ে তৈরি। তাই দেহ কোষের গঠন ও কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আমরা আমিষ জাতীয় খাদ্য খাই।
গ. তুহিনের অসুস্থতার কারণ তার খাদ্যাভাস। উদ্দীপক হতে দেখা যায়, তুহিন প্রায়ই ফাস্ট ফুড খায়। এটি এমন এক | ধরনের খাবার, যা এর স্বাস্থ্যগত মূল্যের চেয়ে বরং এর মুখরোচক স্বাদের জন্য উৎপাদন করা হয়। এটি খেতে খুব মজার হলেও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা একে সুস্বাদু করে তুললেও এগুলো অস্বাস্থ্যকর।
এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ চর্বি ও চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই অধিক পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে দেহে এগুলো চর্বিকলায় রূপান্তর করে। ফলে দেহ স্থূলকায় হয়ে পড়ে। এর ফলস্বরূপ দেহে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা দেখা দেয়।
এছাড়া এতে বিদ্যমান অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি দাত ও ত্বককে নষ্ট করে দেয়। এছাড়াও ফাস্ট ফুডে দেহের জন্য | দরকারি ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাব রয়েছে। তাই এগুলো খেলে | দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। উপযুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়ার কারণেই তুহিন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ঘ. উদ্দীপকে তুহিন সম্পর্কে ডাক্তারের উক্তিটি হলো- তুহিনকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাদ্য খেতে হবে। নিচে এই উক্তিটির গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা হলো :
উদ্দীপক হতে দেখা যায়, তুহিন প্রায়ই ফাস্ট ফুড খায়। এতে অতিরিক্ত রাসায়নিক, চর্বি ও চিনি থাকে, কিন্তু ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাব থাকে। তুহিন এই খাদ্য বেশি খাওয়ায় তার শরীরে খাদ্যের উক্ত উপাদানগুলো বেশি পরিমাণে থাকে। ফলে অন্যান্য খাবারের প্রতি তার চাহিদা কম থাকে। তাই তার দেহের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকে।
পুষ্টি উপাদানের এই ঘাটতির জন্য সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় ডাক্তার তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে বলেন। কেননা সুষম খাদ্যে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় | পুষ্টি উপাদানের সবগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এই খাদ্য গ্রহণ করলে দেহের আমিষ, শর্করা, স্নেহ পদার্থ, ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ হয়। ফলে দেহ সুস্থ ও সবল থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
উপযুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, তুহিনের সুস্থতার জন্য ডাক্তারের উক্তিটি যথার্থ ও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন-৫: পরাগের মা অসুস্থ। তাই সে প্রতিদিন একবার রান্না করে । প্রায় তাদের রাতের খাবার নষ্ট হয়ে যায়। এই জন্য পরাগ তার প্রিয় খাবার ফাস্ট ফুড খায়। তার বাবা একজন বিজ্ঞান শিক্ষক। তিনি খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
ক. নিকোটিন কী?
খ. খাদ্যপ্রাণ বলতে কী বুঝায়?
গ. পরাগের প্রিয় খাদ্যটির অপকারিতা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্রব্যগুলো নষ্ট হওয়ার কারণ ও সংরক্ষণের উপায় বিশ্লেষণ কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নিকোটিন হলো তামাক থেকে প্রাপ্ত এক ধরনের পদার্থ, যা নার্ভকে সাময়িকভাবে উত্তেজিত করে।
খ. জীবের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শর্করা ও আমিষ ছাড়াও বিশেষ যে খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন হয় তাই খাদ্যপ্রাণ। এটি সাধারণত খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে থাকে। বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কোএনজাইম হিসেবে খাদ্যপ্রাণ কাজ করে। এটি প্রাণীর বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। এই উপাদানটি জৈব প্রকৃতির যৌগিক পদার্থ। এর অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধনসহ বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হয়।
গ. উদ্দীপকের তথ্য অনুযায়ী পরাগের প্রিয় খাবার হলো ফাস্ট ফুড। এগুলো এমন এক ধরনের খাবার, যা স্বাস্থ্যগত মূল্যের চেয়ে এর স্বাদের দিকে বেশি লক্ষ রেখে উৎপাদন করা হয়। এ ধরনের খাদ্য খেতে খুব মজাদার হলেও স্বাস্থ্যের জন্য এগুলো একদমই ভালো নয়। জাঙ্ক ফুডে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ চর্বি ও চিনি থাকে। আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার বা জাঙ্ক ফুড খাই, তখন আমাদের দেহ এগুলোকে চর্বিকলায় রূপান্তরিত করে। এতে দেহ
স্থূলকায় হয়ে পড়ে।
তাছাড়া এসব খাদ্যে বিদ্যমান অধিক পরিমাণে | চিনি দাত ও ত্বককে নষ্ট করে দিতে পারে। এছাড়াও জাঙ্ক ফুডে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাব থাকে। | আলোচনায় স্পষ্ট যে, পরাগের গ্রহণকৃত ফাস্ট ফুড পুষ্টিগত কোনো | চাহিদা পূরণ করে না, বরং দেহের মারাত্মক ক্ষতি করে। এসব খাদ্য গ্রহণ দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
ঘ. উদ্দীপকে খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হওয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে। খাদ্য সাধারণত প্রাকৃতিক কারণে নষ্ট হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন করে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায়। খাদ্য নষ্ট হবার অন্যতম কারণ হচ্ছে এতে জীবাণু ও ছত্রাকের আক্রমণ। পরিবেশগত কারণে এগুলোর দ্রুত বৃদ্ধি সাধিত হয়, যার ফলে খাদ্যের মধ্যে বিদ্যমান উৎসেচকের পরিমাণ বাড়ে এবং একই সাথে পরিবেশের আর্দ্রতা, তাপ ও অম্নের পরিমাণও বেড়ে যায়।
যদিও উপরোক্ত কারণগুলো এককভাবে কোন খাদ্যকে নষ্ট করতে পারে না। কয়েকটি কারণ একত্রে সংঘটিত হবার ফলেই মূলত খাদ্য নষ্ট হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পরিবেশের আর্দ্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে খাদ্যবস্তুতে বিদ্যমান উৎসেচকের পরিমাণের বৃদ্ধি ঘটার কারণেই খাদ্য নষ্ট হয়ে থাকে।
তবে খাদ্যে কিছু বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন করলে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে সংরক্ষণ করা সম্ভব। যেমন- ধান, চাল, গম ও সরিষাকে রোদে শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ কমানোর মাধ্যমে, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ও এনজাইমের ক্রিয়াকে প্রতিহত করা যায়।
এছাড়া কাঁচা শাকসবজি, ফল, মাছ এবং মাংস দুত পচনশীল হওয়ায় এদেরকে রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজিং পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায়। তাছাড়াও পেয়ারা, আপেল, আনারস রেফ্রিজারেশন এবং জুস অথবা জেলি তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়।
প্রশ্ন-৬: A : [ডিমের কুসুম, সরিষার তেল, চিনা বাদাম ]
B : [লেবু, পুদিনাপাতা, ফুলকপি ]
ক. জাঙ্ক ফুড কী?
খ. ড্রাগ আসক্তি বলতে কী বুঝায়?
গ. A খাদ্য দেহে কীভাবে কাজ করে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. যদি কোনো ব্যক্তি B খাদ্য উপাদান না খায় তাহলে কী হবে? | বিশ্লেষণ কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জাঙ্ক ফুড হচ্ছে এক ধরনের কৃত্রিম খাদ্য যাতে চর্বি, লবণ, কার্বনেট ইত্যাদি ক্ষতিকারক দ্রব্যের পরিমাণ বেশি থাকে।
খ. ক্রমাগত মাদকদ্রব্য সেবনের কারণে যখন এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় যে মাদকদ্রব্যের সাথে মানুষের দৈহিক ও মানসিক সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং মানুষ বাধ্যতামূলকভাবে মাদক সেবন ছাড়াও নানা সমস্যায় পড়ে তখন এ অবস্থাকে বলা হয় ড্রাগ আসক্তি। ড্রাগের ওপর কোনো ব্যক্তির আসক্তি নানাভাবে জাগতে পারে। যেমন- কৌতুহল, সঙ্গদোষ, হতাশা দূর করার জন্য, মানসিক যন্ত্রণা লাঘব করার জন্য, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত A তালিকার খাদ্যগুলো স্নেহ জাতীয় খাদ্য। খাদ্য পিরামিডে স্নেহ জাতীয় খাদ্যের অবস্থান সব থেকে উপরে। মাংস, মাখন, ঘি, পনির, ডিমের কুসুম, সয়াবিন, সরিষা, তিল, তিসি, নারিকেল, সূর্যমুখীর তেল প্রভৃতি খাবার স্নেহ সমৃদ্ধ খাদ্যবস্তুর মধ্যে থাকা স্নেহ পদার্থ দেহে সর্বাধিক তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে। দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য এ উপাদানটি অতি আবশ্যক।
স্নেহ পদার্থ দেহ থেকে তাপের অপচয় রোধ করে এবং ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে। ত্বকের মসৃণতা ও সজীবতা বজায় রাখে এবং চর্মরোগ প্রতিরোধ করে। সর্বোপরি স্নেহ পদার্থ দ্রবণীয় ভিটামিনসমূহ, যেমন: A, D, E ও K শোষণে সহায়তা করে। দীর্ঘদিন যদি স্নেহ জাতীয় পদার্থের অভাব হয় তাহলে দেহে সঞ্চিত প্রোটিন ক্ষয় হয় এবং দেহের ওজন হ্রাস পায়। এভাবেই স্নেহ জাতীয় খাদ্য দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে কাজ করে।
এসএসসি সাজেশন পেতে এখানে ক্লিক করুন
ঘ. উদ্দীপকের B তালিকাভুক্ত খাদ্যগুলো হলো ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য। উল্লিখিত খাদ্যগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ফল, যেমন- আমলকি, পেয়ারা ইত্যাদি বিভিন্ন শাকসবজি যেমন- মুলাশাক, করলা ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি ত্বক, হাড় ও দাঁত ইত্যাদির কোষসমূহকে পরস্পরের সাথে জোড়া লাগিয়ে মজবুত গাঁথুনি প্রদান করে। দাঁত ও মাড়ি শক্ত রাখা পাশাপাশি শরীরের ক্ষত পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও দেহের রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি স্নেহ, আমিষ ও অ্যামাইনো এসিডের বিপাক কাজে ভূমিকা রাখে। |
কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি B তালিকাভুক্ত ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য উপাদান গ্রহণ না করলে এর তীব্র অভাবে তার স্কার্ভি বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্তপড়া রোগ হবে। ভিটামিন সি এর অভাবে অস্থির গঠন শক্ত ও মজবুত হতে পারবে না। তার ত্বকে ঘা হলে, সেই ক্ষত শুকাতে দেরি হবে। দাঁতের মাড়ি ফুলে দাঁতের এনামেল উঠে যাবে। ফলে দাঁত দুর্বল হয়ে অকালে ঝরে পড়বে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সহজে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বাড়বে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, কারো খাদ্য উপাদানে ভিটামিন সি এর অভাব থাকলে তার মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রশ্ন-৭: নিচের ছক অনুসরণ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
X পানি | Y ভিটামিন | Z রাফেজ |
ক. খাদ্যের সহায়ক উপাদান কয়টি?
খ. সুষম খাদ্য পিরামিড বলতে কী বোঝায়?
গ. মানবদেহের জন্য Y নির্দেশিত উপাদানটি অপরিহার্য—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের x ও Z নির্দেশিত উপাদানের গুরুত্ব কতটুকু? তোমার মতামত দাও।
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. খাদ্যের সহায়ক উপাদান তিনটি।
খ. শর্করাকে নিচু স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাক-সবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে সাজানোর মাধ্যমে তৈরি কাল্পনিক পিরামিডই হলো সুষম খাদ্য পিরামিড। এই পিরামিডের সাহায্যে একজন কিশোর বা কিশোরী, প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ বা মহিলার জন্য প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্য তালিকা বাছাই করা যায় । স্বাস্থ্য রক্ষায় এই পিরামিড অতি গুরুত্বপূর্ণ।
গ. উদ্দীপকের ছকে Y নির্দেশিত উপাদানটি হলো ভিটামিন।
ভিটামিন মানবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। সাধারণ খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে থাকে এবং বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে। এটি প্রত্যক্ষভাবে দেহ গঠনে অংশগ্রহণ না করলেও এর অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন বা দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রিয়াগুলো সুসম্পন্ন হতে পারে না। দেহের বিভিন্ন আবরণী কলাকে সজীব ও সুস্থ রাখতে ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। মানবদেহের রোগ সংক্রমণ প্রতিহত, স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কাজ, দেহকোষে বিপাক, প্রজননসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপ ভিটামিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং মানবদেহের জন্য ভিটামিনের গুরুত্ব অপরিহার্য।
ঘ. উদ্দীপকের ছকে X ও Z নির্দেশিত উপাদান দুটি হলো যথাক্রমে পানি ও রাফেজ। মানবদেহের জন্য এ দুটি উপাদানের বেশ গুরুত্ব রয়েছে।
দেহকোষ গঠন ও কোষের যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে পানির সহায়তা লাগে। পানির দ্বারা শরীর গঠনের নানা প্রয়োজনীয় উপাদান দেহের সর্বত্র পরিবাহিত হয়। খাদ্য উপাদানের পরিপাক ও পরিশোষণে পানির ভূমিকা রয়েছে। বিপাকের ফলে দেহে উৎপন্ন ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া ইত্যাদির মতো শরীরের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থগুলোকে পানি মূত্র ও ঘাম হিসেবে দেহ থেকে নিষ্কাশিত করে।
এছাড়া দেহ থেকে ঘাম নিঃসরণে ও বাষ্পীভবনের দ্বারা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। দেহে পানির অভাবে পিপাসা তীব্র হয়, রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে এবং পেশির দুর্বলতা ও অবসাদ দেখা দেয়।
প্রশ্ন-৮ : একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রফিক প্রতিদিন দুই প্যাকেট সিগারেট টানে, বন্ধুদের সাথে প্রায়ই মদ্যপান করে, এতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সুঠাম দেহের অধিকারী রফিকের এখন অসুখ–বিসুখ লেগেই থাকে।
ক. BMI কী?
খ. রাফেজ বলতে কী বোঝায়?
গ. রফিকের আচরণে কী কী অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সমাজ জীবনে রফিকের মত ব্যক্তি কী কী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বিশ্লেষণ করো।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করার সূচকই হলো BMI বা Body Mass Index.
খ. রাফেজ হলো সেলুলোজ নির্মিত দীর্ঘ স্তময় অংশ, যা প্রধানত উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। এটি আমাদের দেহে কোনো পুষ্টি যোগায় না। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গ. উদ্দীপক হতে দেখা যায়, রফিক নিয়মিত সিগারেট টানে এবং প্রায়ই মদ্যপান করে। এ সিগারেট ও মদ হলো এক ধরনের মাদক। এই মাদক গ্রহণের ফলে রফিকের আচরণে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো পরিলক্ষিত হয়-
i. খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ কমে যায়।
ii. সবসময় অগোছালো ভাব দেখা দেয়।
iii. চোখে আবছা আবছা দেখে এবং চোখ লাল হয়ে থাকে।
iv. কোনো কিছুর প্রতি আগ্রহ নষ্ট ও রাতে ঘুম কম হয়।
v. কর্মবিমুখতা ও হতাশা দেখা দেয়।
vi. শরীর থেকে অত্যধিক ঘাম নিঃসরণ হয়।
vii. সবসময় নিজেকে সবার থেকে দূরে রাখার চেষ্ট করে।
viii. আলস্য ও উদ্বেগ ভাব দেখা দেয়।
ix. কাজের প্রতি মনঃসংযোগ কম, টাকা-পয়সা চুরি করা ও বাড়ির জিনিসপত্র উধাও করা প্রবণতা তৈরি হয় ইত্যাদি।
ঘ. রফিকের মতো মাদকাসক্ত ব্যক্তি সমাজ জীবনে নানা ধরনের সমস্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। নিচে এ বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হলো:
উদ্দীপক হতে দেখা যায়, রফিক নিয়মিত ধুমপান ও প্রায়ই মদ্যপান করে। এভাবে ক্রমাগত সেবনের কারণে মাদকদ্রব্যের সাথে তার দৈহিক ও মানসিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং এক সময় এর উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠবে। এতে করে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে মাদক সেবন করতে হবে নতুবা নানা সমস্যার সৃষ্টি হবে। এভাবে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে। আর মাদকাসক্ত ব্যক্তি যে শুধু পরিবারে বড় রকমের সমস্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তা নয় বরং এরা সমাজ জীবনেও অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন-
i. মাদকাসক্ত ব্যক্তি শারীরিকভাবে কর্মবিমুখ ও অলস হয়ে পড়ে। এতে করে সে তার পরিবার ও দেশের উন্নতির পরিপন্থী হয়।
ii. মাদকাসক্ত ব্যক্তিই পরবর্তীতে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। সম্ভাবনাময় ছাত্র-ছাত্রীর উপর এ পরিবেশের প্রভাব পড়ে।
iii. মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য নিজ বাড়ি এমনকি আসে পাশের বাড়িতেও চুরি ডাকাতি করে। এতে মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং অশান্তির সৃষ্টি হয়। উপযুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, মাদকাসক্ত ব্যক্তির কারণে সমাজের পরিবেশ নষ্ট হয় এবং নানা ধরনের সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন-৯: রহমান সাহেবের বয়স ৪০ বছর। তার ওজন ৭৮ কেজি এবং উচ্চতা ১.৭৫ মিটার। তিনি প্রায়ই শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ডাক্তার তাকে ব্যায়াম করতে ও সুষম খাবার খেতে পরামর্শ দিলেন।
ক. ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স কী?
খ. রাফেজ শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. রহমান সাহেবের বিএমআই নির্ণয় করো।
ঘ. ডাক্তারের পরামর্শ সঠিক কিনা যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ১২ প্রকার ভিটামিন B-কে একত্রে ভিটামিন B-কমপ্লেক্স বলা হয়।
খ. রাফেজ মূলত আঁশযুক্ত খাদ্য। এ খাদ্য কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। রাফেজযুক্ত খাদ্য শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই খাদ্য গ্রহণে পিত্তথলির রোগ, খাদ্যনালি ও মলাশয়ের ক্যান্সার, অর্থ ও অ্যাপেন্ডিকস প্রভৃতি অনেকাংশে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য রাফেজ শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান।
গ. উদ্দীপকের তথ্য হতে পাই,
রহমান সাহেবের ওজন = ৭৮ কেজি
উচ্চতা =১.৭৫ মিটার
আমরা জানি,
বিএমআই = দেহের ওজন (কেজি) /[(দেহের উচ্চতা (মিটার)]২
=৭৮/(১.৭৫)২
= ২৫.৪৭ (প্রায়)
অতএব, রহমান সাহেবের বিএমআই =২৫.৪৭
ঘ. উদ্দীপকে রহমান সাহেবকে ডাক্তার নিয়মিত ব্যায়াম করতে ও সুষম খাবার খেতে পরামর্শ দিলেন যা অত্যন্ত জরুরী। কারণ, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য মানব শরীরের সঠিক মানের বিএমআই থাকা দরকার। মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিএমআই-র আদর্শ মান হলো ১৮.৫-২৪.৯। কিন্তু রহমান সাহেবের বিএমআই ২৫.৪৭ অর্থাৎ তার শরীরের ওজন অতিরিক্ত। শরীরের ওজন খুব বেশি বেড়ে গেলে মানুষ কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, অবসাদগ্রস্ততা ইত্যাদি নানা রকম সমস্যার প্রকোপ বাড়ে। সুস্থ জীবনযাপন করতে হলে তাকে খাবারের পরিমাণ কিছুটা কমাতে হবে, চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে তার বিএমআই কমে আদর্শ মানে পৌছাতে পারবে।
অন্যথায় স্থূলতাজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করে বিএমআই পরিবর্তন তথা আদর্শ মানে আনলেই রহমান সাহেব সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন।
অতএব, ডাক্তার রহমান সাহেবকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে ও সুষম খাবার খেতে যে পরামর্শ দিয়েছেন তা যথার্থ।